888sport live chatী চিত্রনিভা চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ নভেম্বর অবিভক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জে। জিয়াগঞ্জেই ছিল
তার মা শরৎকুমারী দেবীর পৈতৃক নিবাস। তবে তাঁর পিতা রেল বিভাগের ডাক্তার ভগবানচন্দ্র বসু ছিলেন চাঁদপুরনিবাসী এবং তাঁর কর্মক্ষেত্র ছিল বিহারের গোমেতে (বর্তমান ঝাড়খন্ডে?)।
১৯২৭ সালে নোয়াখালি জেলার লামচর অঞ্চলের প্রখ্যাত জমিদার ঈশ্বরচন্দ্র চৌধুরীর পুত্র নিরঞ্জন চৌধুরীর সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার কিছুদিন পর (সম্ভবত ১৯২৯ সালে) তিনি লামচর থেকে সুদূর শান্তিনিকেতনে যান চিত্রবিদ্যায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণের উদ্দেশ্যে। ১৯৩৪ সালে শান্তিনিকেতনের কলাভবন থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ওই ভবনেই শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। অনেকের মতে তিনিই ছিলেন ১৯৩৫ সালে কলাভবনের প্রথম 888sport promo code-শিক্ষক। তবে শিক্ষক হিসেবে মাত্র এক বছর দায়িত্ব পালনের পর তিনি স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন।
চিত্রকলার প্রায় সবকটি বিষয় ছাড়াও মানব প্রতিকৃতি-অঙ্কনে তাঁর পারদর্শিতা সবাইকে মুগ্ধ করেছিল। ভাস্কর্যনির্মাণ এবং ভিত্তিচিত্র অঙ্কনেও তিনি বিস্ময়কর প্রতিভার পরিচয় রেখে গেছেন। তাঁর অঙ্কিত ভিত্তিচিত্রগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ চিত্রটি আছে 888sport appয় এবং তা ১৯৩৪ সালে অঙ্কিত হওয়া সত্ত্বেও সম্পূর্ণভাবে আমাদের অদেখা ও অজানা থেকে গেছে। 888sport appsের সমকালীন 888sport live chatকলার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই চিত্রটি খুঁজে পাওয়ার দীর্ঘ প্রচেষ্টাটুকুই শুধু এই লেখার মাধ্যমে তুলে ধরছি; তাঁর 888sport live chatকর্মের বিশ্লেষণ ও মূল্যায়নের সাধ্য আমার নেই। ১৯৯৯ সালের ১৩ নভেম্বর মৃত্যুবরণের আগে পর্যন্ত তিনি যে-888sport live chatকর্মগুলো রচনা করে গেছেন, আশা করি তা বিষদভাবে পর্যালোচনা করে অচিরেই কোনো যোগ্য গবেষক একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশের উদ্যোগ নেবেন। সেই যোগ্য উদ্যোগগ্রহণের প্রতিজ্ঞা দিয়েই শুরু হোক এই উপেক্ষিত পূর্বসূরির আসন্ন জন্মশতবর্ষে (আগামী ২৭ নভেম্বর ২০১৩) আমাদের 888sport apk download apk latest versionর্ঘ্য নিবেদনের পর্বটি।
‘চিত্রনিভা’ নামটি প্রথম শুনতে পাই ১৯৮৪ সালের শেষদিকে শান্তিনিকেতনে, 888sport live chatী সুখময় মিত্রের মুখে। সুখময় মিত্র ছিলেন কলাভবনের চিত্রকলা বিভাগের রিডার। তাঁর স্টাডিরুমটি ছিল আমার স্টুডিও লাগোয়া। প্রতিদিন যেতে-আসতে তিনি একবার আমার স্টুডিওর দরজায় উঁকি মেরে খোঁজ নিতেন আমি আছি কি-না। আমার সঙ্গে বাঙাল ভাষায় কথা বলতেন, যদিও তাঁর পৈতৃক নিবাস নোয়াখালী। সেখান থেকে দেশভাগের আগেই চলে এসেছিলেন আচার্য নন্দলাল বসুর কাছে চিত্রবিদ্যায় দীক্ষা নিতে। তারপর আর দেশে ফেরা হয়নি। প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত888sport live chatী শান্তিদেব ঘোষের ভগ্নীকে বিয়ে করে শান্তিনিকেতনেই স্থায়ী হলেন এবং কলাভবনের শিক্ষক হিসেবেই বাকি জীবনটা অতিবাহিত করলেন। আচার্য নন্দলালই ছিলেন তাঁর ধ্যান-জ্ঞান-আদর্শ। সম্ভবত পৃথিবীর আর কোনো 888sport live chatীর কাজের প্রতি তাঁর কোনো আগ্রহ ছিল না। ছবি আঁকার পাশাপাশি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, পিকনিক, স্টাডি ট্যুর, গান-বাজনা, আড্ডা-গল্পগুজব – এসব কিছুর ভেতর দিয়ে জীবনকে উপভোগ্য ও পূর্ণ করে তোলার, উপভোগ্য করে তোলার যে-ধারণা তিনি আচার্য নন্দলালের কাছে পেয়েছিলেন, সেই ধারণা বা বিশ্বাসে পরবর্তী প্রজন্মকে সমৃদ্ধ করে তুলার ব্রত নিয়েই তিনি যেন কলাভবনকে আঁকড়ে ধরেছিলেন। তাই ছাত্রছাত্রীদের কাছে সুখময়দা ছিলেন সবচেয়ে কাছের মানুষ, প্রিয় শিক্ষক। তিনি ভবনে পা রাখামাত্র আমরা জেনে যেতাম সুখময়দা এসেছেন; কারণ ভবনে ঢুকতে-ঢুকতেই অপর প্রান্তের কোনো একজনকে খুব উঁচুস্বরে ডেকে কুশল বিনিময় করতেন। সম্ভবত এটা ছিল ছাত্রছাত্রীদেরকে নিজের আগমন সম্বন্ধে জানান দেওয়ার একটা নিজস্ব পদ্ধতি কিংবা পূর্ববঙ্গের পূর্বপুরুষদের যে মেঠো ঐতিহ্য ধরে রাখার সচেতন প্রয়াস।
কলাভবনে আমার স্টুডিওটিই ছিল সবচেয়ে বড়। তাই দু-একজন ঘনিষ্ঠ সহপাঠী আর বন্ধুস্থানীয় অনুজ ছাত্র নিজেদের স্টুডিও ফেলে আমার স্টুডিওতেই কাজ করতো। কাজের চাইতে আড্ডা মারাটাই ছিল বড় আকর্ষণ। সুখময়দা তাঁর স্টাডিরুম থেকেই মাঝে-মাঝে চড়া গলায় আমাদের উদ্দেশে নানা রকম মন্তব্য কিংবা প্রশ্ন ছুড়ে দিতেন। এভাবেই একদিন কানে এলো ‘বল্ তো দেখি 888sport appsের 888sport app শহরে প্রথম জয়পুরী রীতির ভিত্তিচিত্রটি কোন 888sport live chatীর আঁকা?’ প্রশ্ন শুনে বন্ধুরা সবাই আমার মুখের দিকে চেয়ে আছে, কারণ এটা কেবল আমারই জানবার কথা। রীতিমতো ভ্যাবাচ্যাকা খেলাম। 888sport live chatীর নাম তো দূরে থাক, 888sport app শহরে যে জয়পুরি রীতির ভিত্তিচিত্র আছে তা-ই তো কস্মিনকালে কারো মুখে শুনিনি! তাহলে কি তিনি নিজেই এঁকেছেন? নাকি তাঁর প্রিয় ছাত্র শওকাতুজ্জামান, যিনি ১৯৭৪-৭৫ সালে এই কলাভবনেই এসেছিলেন এবং সুখময়দার কাছেই ধোয়া পদ্ধতির জলরং আর জয়পুরি ফ্রেসকো শিখেছিলেন। খানিকটা দ্বিধা নিয়ে উত্তর দিলাম, ‘শওকাতুজ্জামান কি?’ উত্তর শুনে সুখময়দা বোধ করি বিরক্ত হলেন, বললেন ‘ধ্যাৎ, আরে শওকাত তো সেই দিনের পোলা। তোদের জয়নুল আবেদিনও তখন 888sport app শহর দেখে নাই।’ খানিকটা বিরাম দিয়েই বলতে থাকলেন, ‘নিভাননী। আমার কাকিমা। চিত্রনিভা নামে পরিচিত। সেই নোয়াখালী থেকে শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন, মাস্টারমশাইয়ের কাছে (মাস্টারমশাই হচ্ছেন নন্দলাল বসু) ছবি আঁকা শিখে আবার নোয়াখালীতেই ফিরে গিয়েছিলেন। এখন কোলকাতায় থাকেন। তাঁরই অনুপ্রেরণায় আমার ছবি আঁকার সূচনা, শান্তিনিকেতনে আসা। তাঁর মুখেই শুনেছি, 888sport appর রমনা এলাকায় একটা বিশাল ভিত্তিচিত্র তিনি এঁকেছেন সেই তিরিশের দশকে।’ তথ্যটি জানিয়েই সুখময়দা আমায় অনুরোধ করলেন 888sport appয় ফিরে গিয়ে বাড়িটা খুঁজে বের করতে এবং সেই ভিত্তিচিত্রের আলোকচিত্র তুলে পাঠাতে। তাঁর সেই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৫ সালে 888sport appয় ফিরে এসেই শওকাতভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম এবং জানতে পেরেছিলাম যে, ভিত্তিচিত্রটি সেগুনবাগিচার কোনো এক বাড়ির বৈঠকখানার চার দেয়াল জুড়ে আঁকা। বাড়ির মালিক একবার শওকাতভাইকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন দেয়ালের ড্যাম্প রোধ করে ছবিটাকে রক্ষা করা যায় কীভাবে, সে-পরামর্শ নিতে। শওকাতভাই আমায় কথা দিলেন, কয়েকদিন পর আবার যখন ওই বাড়িতে যাবেন তখন আমাকেও সঙ্গে নেবেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যাবো-যাচ্ছি করে করে শেষ পর্যন্ত কোনোদিনই আর ওই বাড়িতে যাওয়া হয়নি। শুধু তা-ই নয়, কিছুদিনের মধ্যে গোটা বিষয়টা আমি বেমালুম ভুলেই গেলাম!
এর বহু বছর পর (প্রায় ২০ বছর পর) ২০০৪-০৫ সাল নাগাদ এশিয়াটিক সোসাইটির 888sport apps সাংস্কৃতিক সমীক্ষামালা প্রকল্পের জন্য লেখা তৈরি করতে গিয়ে কমল সরকারের লেখা ভারতের ভাস্কর ও চিত্র888sport live chatী বইটিতে চিত্রনিভা নামটি হঠাৎ করেই চোখে পড়লো। পড়ে দেখি, এই তো সেই সুখময়দার নিভাননী! পৈতৃক নিবাস চাঁদপুর, বাবা ছিলেন ডাক্তার। শান্তিনিকেতনে যাওয়ার আগেই খুব নাম করেছিলেন (নিজ এলাকায়) আলপনা আর বিয়ের পিঁড়ি এঁকে-এঁকে। সেই প্রতিভার নমুনা দেখেই শ্বশুরকুলের লোকেরা তাঁর সন্ধান পায়। বিয়ের পর-পরই তাঁকে শান্তিনিকেতনে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় এবং স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তাঁর চিত্রাঙ্কন প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে নাম রাখেন চিত্রনিভা। – এই রকম বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ওই বইটিতে পেলাম। কিন্তু 888sport appর ভিত্তিচিত্রটি সম্বন্ধে এমনকি তিনি কখনো 888sport appয় ছিলেন কিনা সেই তথ্যটুকুও পাওয়া গেল না। অথচ শওকাতভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য (যদি সঠিক হয়) অনুযায়ী ছবিটি বৈঠকখানার চারদেয়ালজুড়ে আঁকা এবং সুখময়দার ভাষ্যমতে, চিত্রনিভার আঁকা এটি সবচেয়ে বড় ভিত্তিচিত্র [পরে জেনেছি, বিনোদবিহারীর আঁকা হিন্দি ভবনের ফ্রেসকোটির আগে এটিই ছিল শান্তিনিকেতন-উত্তীর্ণ কোনো বাঙালি 888sport live chatীর সবচেয়ে দীর্ঘ ফ্রেক্সোচিত্র (প্রায় ৬০ ফুট)] বইটি পড়তে-পড়তেই নিজের ওপর প্রচন্ড ক্ষোভ সৃষ্টি হলো। কারণ ততোদিনে সুখময়দাও নেই, আর শওকাতভাইও পরপারে চলে গেছেন। আর আমিও তখন অসহায়ের মতো এমন এক ইতিহাসবিস্মৃত অভাগা দেশে বাস করছি যে-দেশে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে যা কিছু ছিল তার সবটুকুই সমকালীন 888sport live chatকলার ইতিহাস থেকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে অথবা সেই ইতিহাস রক্ষিতই হয়নি। পরিচিতজনদের মধ্যে একজনকেও খুঁজে পাচ্ছি না যিনি চিত্রনিভা কিংবা তাঁর সেই ভিত্তিচিত্রটি সম্বন্ধে তিল পরিমাণ তথ্য দিতে সামর্থ।
আসলে এশিয়াটিক সোসাইটির সেই সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রকল্পে আমি যখন জয়নুল আবেদিন বিষয়ে লিখছি, তখন এই 888sport appsে ৪৭-পূর্ব পর্যায়ের 888sport live chatচর্চা কেমন ছিল সেই তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েই হতাশ এবং বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলাম। এর প্রধান কারণ, সমকালীন 888sport live chatের ওপর 888sport apps থেকে প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য কোনো লেখাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না, যেখানে ৪৭-পূর্ব পর্যায়ের 888sport live chatচর্চা বিষয়ে গবেষণালব্ধ কোনো তথ্য রক্ষিত আছে। লোক চিত্রকলার ওপর (ওই প্রকল্পের জন্যই) লিখতে গিয়েও একই অবস্থা; এদেশের বর্তমান লেখকদের গবেষণাধর্মী 888sport free bet loginে পটচিত্র নিয়ে আলোচনায় পেলাম শুধু গাজীর পট, এবং তাও শুধু বিষয় বর্ণনায় সীমাবদ্ধ। লক্ষ্মীসরা নিয়ে ছ-লাইনের বেশি লেখা হয়নি। চালচিত্র নিয়ে তো লেখাই নেই। অথচ পুরনো দিনের (৪৭-পূর্ব) পত্র-পত্রিকা ঘেঁটে দেখি, কত কিছুরই না অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে! খোদ এই 888sport app শহরেই আচার্য সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁদের স্ব-উদ্ভাবিত বিশেষ ধরনের তেলরং দিয়ে সম্ভ্রান্ত লোকদের বাড়ির দেয়াল আর কার্নিশে ছবি আঁকতেন অন্তত উনিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত। প্রায় একই সময়ে 888sport app শহরে মুঘল রীতিতে প্রতিকৃতি অঙ্কনের একটি ধারাও টিকেছিল এবং ১৮৭৮ সালে ভারতবর্ষের 888sport live chat-সামগ্রী নিয়ে বিলেতে যে প্রদর্শনীটি হয়েছিল তাতে এই 888sport appয় আঁকা ৪টি প্রতিকৃতি যথেষ্ট গুরুত্বসহ স্থান পেয়েছিল। মুকাবিবর উপাধিধারী একটি পরিবারকে প্রতিকৃতি অঙ্কনে যথেষ্ট পারদর্শী হিসেবে গণ্যও করা হতো। অথচ নুসরত জংয়ের আমলে আঁকা মুঘল রীতি-ঘনিষ্ঠ যে-ছবিগুলো 888sport app জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে সেগুলোকে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ 888sport appর চিত্রধারা হিসেবে আজও প্রতিষ্ঠিত করা যায়নি। যাই হোক দেড়শ বছরের পুরনো প্রসঙ্গ না-হয় বাদই দিলাম, কিন্তু ১৯৪৫-৪৬ সালে কিশোরগঞ্জের গচিহাটাগ্রামে উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ 888sport live chatী হেমেন মজুমদার কি করছিলেন, সেই সংবাদটিও কেন আমাদের জানা নেই? কেনই-বা এই বাংলায় ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত মহেশ্বরপাশা আর্ট স্কুলটি ১৯৮৩ সালে এসে আমাদের 888sport live chatীদেরই সংশ্লিষ্টতায় বিলীন হয়ে গেল?
২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৬ তারিখে 888sport appয় এলেন বিশিষ্ট 888sport live chatী, কলাতাত্ত্বিক আমাদের অনেকেরই প্রিয় শিক্ষক কে. জি. সুব্রাহ্মণ্যন এবং তাঁর কন্যা উমা পদ্মনাভন। ২৯ ডিসেম্বর চারুকলা অনুষদ থেকে প্রদত্ত জয়নুল সম্মাননা গ্রহণ ছাড়াও তাঁর এই 888sport slot gameের উদ্দেশ্য ছিল পাহাড়পুর দেখা। আমরা সম্ভবত ২০১০ সালের ৩ অথবা ৪ জানুয়ারি পাহাড়পুর থেকে ফিরছি। পথে গল্পচ্ছলে তিনি আমাদেরকে নানা বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা এমনকি জটিল-কঠিন তত্ত্বকথাও সহজ ভাষায় বর্ণনা করে শোনাচ্ছিলেন। ঠিক এমনি সময়ে হঠাৎ করেই মনে পড়লো চিত্রনিভার কথা, তাঁকে মানিদা চিনতেন কি-না? উত্তর শুনে চক্ষু কপালে উঠবার দশা! মানিদা জানালেন, ১৯৯৯-২০০০ সালেই চিত্রনিভার কন্যা শান্তিনিকেতনের কলাভবন গ্যালারিতে (নন্দন গ্যালারি) একটা বড় প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন। সবগুলো ছবিই নন্দলাল আর বেঙ্গল স্কুলের শৈলীতে আঁকা, খুবই দক্ষ হাতের ছবি। তবে এরও বহু আগে, সম্ভবত চল্লিশের দশকের শেষ ভাগে চিত্রনিভার একক চিত্র-প্রদর্শনী তিনি দেখেছিলেন, ওই কলাভবনেই। কিন্তু সেই ছবিগুলো ছিল। কিছুটা রুশোর ধাঁচে অাঁকা। মানিদার কাছে সেই প্রথম প্রদর্শনীর ছবিগুলোই বেশি ভালো লেগেছিল, বেশি সৃজনশীল মনে হয়েছিল। সর্বশেষ প্রদর্শনীটিতে ওইসব ছবি স্থান পায়নি বলে মানিদা রীতিমতো আক্ষেপ করলেন। যাই হোক, বাঙালি চিত্রকরদের মধ্যে চিত্রনিভা যে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সে-বিষয়টি মানিদার অভিব্যক্তিতে সুস্পষ্ট হয়ে উঠলো। আমিও নতুনভাবে খানিকটা আশার আলোর সন্ধান পেলাম। অন্তত এটুকু জেনে নিশ্চিন্ত হলাম যে, চিত্রনিভার আঁকা বহু ছবি এখনো সুরক্ষিত আছে এবং আছে তারই সুযোগ্য কন্যার কাছে। হয়তোবা 888sport appর সেই ভিত্তিচিত্রটির খোঁজ, এমনকি সে-ছবির আলোকচিত্রও তাঁর এই কন্যার কাছে পাওয়া যেতে পারে।
এরই মধ্যে একদিন বন্ধু ঢালী আল মামুনের সুশিক্ষিত ছাত্র রেজাউল করিম সুমনের সঙ্গে পরিচয় হলো। সুমনও আমায় খুঁজে ফিরছিল ঠিক একই উদ্দেশ্যে, অর্থাৎ চিত্রনিভা সম্বন্ধে কিছু জানতে। কারণ ওর পিএইচডির বিষয়টিতে 888sport appsের মহিলা 888sport live chatীরাও অন্তর্ভুক্ত। ওর কাছ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য পেলাম। সেটি হচ্ছে, বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত888sport live chatী চিত্রলেখা চৌধুরীই চিত্রনিভার কন্যা! তাহলে কি ইনিই মানিদার দেখা সেই (১৯৯৯-২০০০ সালের) প্রদর্শনীটির আয়োজক? এবার আর হাতছাড়া হয়ে গেলে চলবে না। সুতরাং সেবার (২০১০) শান্তিনিকেতন পৌঁছেই নিকটজনদের কাছে খোঁজ নিতে শুরু করলাম চিত্রলেখা চৌধুরীর আবাসিক ঠিকানা কারও কাছে পাওয়া যায় কি-না। আমার সর্ব কনিষ্ঠ বোন মিঠু (চন্দনা হোসেন) পরামর্শ দিলো, ওর ভাসুরের স্ত্রী রেশমী রায়কে জিজ্ঞেস করতে। রেশমী কলকাতার তারা চ্যানেলের বড় কর্মকর্তা। ফলে গান-বাজনার জগতে বাঙালি গুণীজনেরা প্রায় সবাই-ই ওর চেনা। চিত্রলেখা চৌধুরীর কথা জিজ্ঞেস করতেই রেশমী বললো, ‘আমার খুবই চেনা মানুষ। আমি আজই তোমায় তাঁর ঠিকানা আর ফোন নম্বর জোগাড় করে দিচ্ছি।’
আসলে পুরো বিষয়টা একেবারেই হাতের নাগালে সাজানো ছিল। শুধু সঠিক মানুষটির কাছ থেকে সঠিক সময়ে সহযোগিতা নিতে ব্যর্থ হয়েছি। এভাবেই দিনে দিনে পুরো বিষয়টাকে নিজেই যেন নাগালের বাইরে নিয়ে গেলাম। সহজ থেকে কঠিন, কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুললাম। তবু চিত্রলেখার সন্ধান পেয়ে এতো দিনে আশার আবছা আলোটুকু রীতিমতো যেন উজ্জ্বল হয়ে উঠতে শুরু করলো।
চিত্রলেখার বাসভবনের যে-ঠিকানা পাওয়া গেল সেটা উত্তর কলকাতার, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের কাছাকাছি। ওইদিকটাতেই আমার শান্তিনিকেতনের সহপাঠী প্রখ্যাত চিত্রকর ও ভাস্কর পূর্ণেন্দু দের ফ্ল্যাট। তাই ওকেই দায়িত্ব দিলাম চিত্রলেখাদির সঙ্গে যোগাযোগ করে ঠিকানাটা বুঝে নিতে এবং একটা অ্যাপয়েনমেন্ট করে রাখতে।
চিত্রলেখাদির বাড়ির উদ্দেশে কলকাতা রওনা হওয়ার ঠিক আগের দিন দারুণ একটা সুসংবাদ পাওয়া গেল কলাভবনের শিক্ষক সৌমিক নন্দি মজুমদারের কাছে। সৌমিক জানালো, অরুণদা আমাকে খুঁজছেন (অধ্যাপক অরুণ নাগ। বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিক)।
অরুণদা নাকি চিত্রনিভার সেই ভিত্তিচিত্রটির ওপর একটি লেখার সন্ধান পেয়েছেন! এক মুহূর্ত দেরি না করে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলাম। তিনি জানালেন, সুবর্ণ রেখায় (বইয়ের দোকান) আমার জন্য চতুরঙ্গ পত্রিকার একটি কপি রাখা আছে যার মধ্যে প্রবীণ সাংবাদিক সুখরঞ্জন সেনগুপ্ত একটি 888sport sign up bonusচারণমূলক লেখা লিখেছেন। এটি একটি ধারাবাহিক লেখা। ১৯৭২-৭৩ সালে তিনি 888sport appয় অবস্থান করেছিলেন যুগান্তর পত্রিকার প্রতিনিধি হিসেবে এবং সেই সময় কোনো একদিন স্বচক্ষে চিত্রনিভার আঁকা সেই ভিত্তিচিত্রটি দেখার অভিজ্ঞতা বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন তাঁর এই লেখায়। অরুণদা আরো জানালেন যে, এই লেখাটির এটাই শেষ অংশ, এবং এর মধ্যে দিয়েই চতুরঙ্গ পত্রিকাটির প্রকাশও চিরতরে সমাপ্ত হয়ে যাচ্ছে। শুনে আশ্চর্য হবারই কথা। মানুষের জীবনের সঙ্গে পত্রিকার জীবনও দেখছি একই সমান্তরালে বহমান! রীতিমতো রূপকথার কাহিনি হয়ে উঠেছে। যিনি-ই ওই ভিত্তিচিত্রের সন্ধান দিচ্ছেন তিনিই পরপারে পারি জমাচ্ছেন। প্রথমে সুখময়দা, তারপর শওকাতভাই, আর এবার চতুরঙ্গ পত্রিকা! বিষয়টা চিত্রলেখাদি যদি জানতে পারেন তাহলেই গেছি, সব প্রচেষ্টা ভেস্তে যাবে!
শান্তিনিকেতনে গিয়ে যে-বাড়িটাতে আমি থাকি (আমার ভগ্নিপতির বাড়ি), সেটা শ্রী পল্লীতে, কলাভবন-সংগীতভবনের সীমানা ঘেঁষে দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায়। ওখান থেকে সুবর্ণ রেখা আধ কিলোমিটার পথ, তাই পায়ে হেঁটেই পৌঁছে গেলাম। আর পত্রিকাটি সংগ্রহ করে ফিরতি পথেই আমার প্রয়োজনীয় অংশটুকু পড়ে ফেললাম। চমৎকার বর্ণনা রয়েছে সেই ভিত্তিচিত্রটির ওপর। শুধুমাত্র ছবির বিষয়বস্ত্তই নয়, কে এঁকেছেন, ওটা কার বাড়ি ছিল, এখন কারা বাস করছেন ইত্যাদি সবই বিশদভাবে তুলে ধরেছেন। এ যেন সবই পেয়ে গেলাম! এবার যদি ওই ছবির কোনো সন্ধান, এমনকী আলোকচিত্রও না পাই তবু কোনো আক্ষেপ থাকবে না। কারণ সুখরঞ্জনবাবুর বর্ণনায় যেটুকু পাওয়া গেল তার সঙ্গে বেঙ্গল স্কুলের ছবিগুলো কল্পনায় মিলিয়ে নিয়ে মনের মধ্যে ওই ভিত্তিচিত্রটির একটা আদল তৈরি করে নেওয়া আমার জন্য মোটেই কঠিন কাজ নয়। সত্যি বলতে, আমি যেন রীতিমতো ওই ছবিটি দেখতে পাচ্ছি – এমন অনুভূতিই হতে থাকলো। লেখাটি থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃত করছি –
888sport appয় আমি প্রথম যে পাড়াতে বাড়ি ভাড়া করেছিলাম সেটি ছিল তোপখানা রোডে। আমার ভাড়া করা বাড়ির একেবারে গায়ে ছিল সুন্দর দোতালা বাড়ি, চারদিকে পাঁচিল তোলা। – বাড়িটার গঠন শৈলী দেখে আমি নিশ্চিত যে এটি কোনো হিন্দু পরিবারের বাড়ি ছিল। বাড়িটির গায়ে একটি নেমপ্লেট ছিল। তাতে লেখা ছিল তোফাজ্জল আলি।… তোফাজ্জল আলি সাহেব সুপুরুষ। – তিনি আমাকে ব্রেকফাস্টে ডেকে নিলেন। তাঁর বসার ঘরে ব্রেকফাস্ট খাচ্ছি। – হঠাৎ ঘরের চার দেয়ালের ওপরের অংশ থেকে সিলিং পর্যন্ত চাইতেই আমার চোখ আটকে গেল। – যদিও তুলির রং কতকটা আবছা হয়ে এসেছে, তবুও আমার বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হলো না যে, শ্রীরামচন্দ্রের বনবাস যাত্রা থেকে চতুর্দশ বর্ষ পরে তাঁর অযোধ্যায় ফিরে আসা, সিংহাসনে আরোহণ এবং সীতার পাতাল প্রবেশ পর্যন্ত দৃশ্যগুলো অঙ্কিত। প্রতিটি দৃশ্যের নিচে 888sport live chatীর নাম ‘চিত্রনিভা’ লেখা রয়েছে। আমি বিস্মিত তো বটেই বলতে গেলে আর একটু বেশি অর্থাৎ স্তম্ভিত। – তোফাজ্জল আলি এতোদিন ধরে এটা কেন চোখের সামনে রেখে দিয়েছেন? আমার প্রশ্নের উত্তরে আলি সাহেব জানালেন যে, তিনি ’৪৭ সালের শেষে তাঁর কলকাতার সম্পত্তি বন্দোবস্ত করে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হিন্দু অধ্যাপকের এই বাড়িটি কেনেন। ওই অধ্যাপকের এক মেয়ে শান্তিনিকেতনে ছবি আঁকা শিখতেন। ঘরের দেয়ালের ছবিগুলো তাঁরই আঁকা।… এইকথা বলে তোফাজ্জল আলি সাহেব তাঁর স্ত্রীকে ডাকলেন। – তিনি আমাকে আমার কৌতূহল নিবৃত্ত করতে জানালেন যে, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতে এমএ পড়েছেন। তাঁর সেই সময়কার সিলেবাসে রামায়ণ মহাভারত তো বটেই হিন্দু ধর্মের অনেক কাব্যগ্রন্থ তাঁকে পড়তে হয়েছে। – 888sport appয় এই বাড়িটি কেনার পর যখন নিজেদের মতো চুনকাম, রং করা হচ্ছিল তখন আলি সাহেবের স্ত্রী জানিয়ে দিলেন যে রামায়ণের এই দৃশ্যগুলি যেমন আছে তেমনই থাকবে। কারণ এটা তাঁর শিক্ষার্থী জীবনের একটা অংশ।… তোফাজ্জল আলি সাহেব একজন রক্ষণশীল মুসলমান। – কিন্তু তবুও তাঁদের বাড়িতে রামায়ণের ওই দৃশ্যগুলোর অবস্থান তাঁকে পীড়িত করেনি এবং এখনো করে না।
কলকাতায় গিয়ে আমি সবসময়ে হাবিব-বেলার বাড়িতেই উঠি। হাবিব এখন কলকাতার বিশিষ্ট 888sport live chatী হলেও একসময়ে আমাদের 888sport appর এই চারুকলারই ছাত্র ছিলেন। বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। 888sport live chatী শিশির ভট্টাচার্য্যের সহপাঠী। এখানেই চারুকলায় স্নাতক হয়ে ভারত সরকারের বৃত্তি পান এবং গুজরাটের বরদা এমএস ইউনিভার্সিটির ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি থেকে ছাপচিত্রে এমএ করার সময় সহপাঠী বেলা পুরোহিতকে বিয়ে করেন। এখন কলকাতাতেই স্থায়ী হয়েছেন। আমাদের ‘সময়’ চারু888sport live chatীদলের যাবতীয় দাপ্তরিক দায়িত্ব ও-ই পালন করতেন। ওর দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া আর ‘সময়ে’র কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার মধ্যে কিছুটা যোগসূত্র আছে। কারণ ওর স্থলে যাঁরা দায়িত্ব নিল তারা ‘সময়’কে সচল রাখার চাইতে ‘অচল’ করে দেওয়ার কাজেই বেশি দক্ষ ছিল। তবে ‘সময়’ দলটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লেও হাবিব এখন পশ্চিম বাংলার সবচেয়ে সক্রিয় 888sport live chatীদের অন্যতম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন, এটাও আমাদের জন্য কম গর্বের বিষয় নয়।
হাবিবকে নিয়েই ওর সন্তোষপুরের বাসা থেকে উত্তর কলকাতার দিকে রওনা দিলাম। দক্ষিণ থেকে উত্তরে। অর্থাৎ কলকাতার একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। ১০টায় পৌঁছনোর কথা, কিন্তু ১১টা বেজে গেল। ততক্ষণে চিত্রলেখাদিও কিছু একটা প্রয়োজনে তাঁর পুরনো বাড়িটায় গিয়েছেন। বলে গেছেন, আমরা যেন কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি। বসবার ঘরে ঢুকতেই দেখি দেয়ালে ছোট ছোট কিছু জলরঙে-টেম্পারায় আঁকা ছবি টাঙানো আর বেশকিছু আলোকচিত্র নানা জায়গায় সাজানো। একটা ফটোগ্রাফকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সাজিয়ে রাখা। তাই বুঝে নিতে সমস্যা হলো না যে, ইনিই চিত্রনিভা চৌধুরী। 888sport appsের সমকালীন 888sport live chatকলার একজন গুরুত্বর্পূ পূর্বসূরিকে শেষ পর্যন্ত খুঁজে পেলাম!
তখনো শীতকালের আমেজটা পুরোপুরি চলে যায়নি। বিশেষ করে দুপুরের আগে পর্যন্ত গরম কাপড় গায়ে রাখতে হয়। কিন্তু কী জানি কী কারণে গায়ে ঘামের আভাস অনুভব করছি। হাতে ছোট ক্যামেরা কিন্তু ছবি তুলবার জন্য উঁচু করে ধরবার শক্তিটুকুও যেন হারিয়ে গেছে।
এরই মধ্যে চিত্রলেখাদি ফিরে এসেছেন। আমাদেরকে পেয়ে খুবই উৎফুল্ল। শেষ পর্যন্ত ওপার বাংলার কোনো একজন 888sport live chatী চিত্রনিভাকে খুঁজে ফিরছেন তাদের সমকালীন 888sport live chatকলার ইতিহাসে স্থান দেওয়ার জন্য! আনন্দে তিনি তাঁর সংগ্রহের সমস্ত ছবি, আলোকচিত্র, প্রকাশনা, সবকিছুর কপি করে নেওয়ার অনুমতি দিয়ে দিলেন। তবে কথার ফাঁকে ফাঁকে বারবার চলে আসছিল সেই ভিত্তিচিত্রটির কথা। বললেন, খুবই ছোটবেলায় একবার দেখেছেন। বিষয়বস্ত্ত সম্ভবত পৌরাণিক নয়, দৈনন্দিন জীবনভিত্তিক। আর ওই বাড়িটা চিত্রনিভার বাবার বাড়ি নয়, ভাসুরের বাড়ি। ভাসুর জে কে চৌধুরী (যোগেন্দ্রকুমার চৌধুরী) ছিলেন 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান। এবার আবারও হতাশ হওয়ার পালা। সবই যেন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। একেই বলে একপা এগিয়ে দুপা পেছানো। তবে মনে মনে ভিত্তিচিত্রের বিষয়বস্ত্তর ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে সুখরঞ্জনবাবুর বর্ণনাকেই নির্ভরযোগ্য ভাবলাম এই কারণে যে, তিনি পরিণত বয়সে, সত্তরের দশকে ছবিটি দেখেছেন। পক্ষান্তরে চিত্রলেখা চৌধুরী দেখেছিলেন সেই শিশুকালে, চল্লিশের দশকের প্রারম্ভে। সুতরাং এখন আর সেই বাড়িটা খুঁজে বের করে স্বচক্ষে দেখে নেওয়া ছাড়া ছবির বিষয়বস্ত্ত সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়ার আর কোনো উপায়ই থাকলো না। তবে যাই হোক, পুরনো সুন্দর বাড়ি, তোফাজ্জল আলী, তোপখানা রোড, এই নামগুলো ভাবতে ভাবতে হঠাৎই মনে পড়লো বিটপীর পুরনো অফিস ভবনটার কথা এবং তার স্বত্বাধিকারী রেজা আলির কথা। রেজা আলি, তোফাজ্জল আলী, তোপখানা রোড, সবই তো মিলে যাচ্ছে! একটু ইতস্তত হয়েই জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা তোফাজ্জল আলী কি রেজা আলীর কিছু হন? চিত্রলেখাদি রীতিমতো লাফিয়ে উঠলেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমাদের রবীন্দ্রসংগীত888sport live chatী নাঈমা আলীর স্বামীই তো রেজা আলী। আরে ওদেরই তো বাড়ি!’ আমি খুশি হওয়ার চেয়ে অাঁতকে উঠলাম। সর্বনাশ! বাড়িটা তো ভেঙে ফেলেছে! বাড়ি ভাঙার কথা শুনে পাথরের মতো নির্বাক হয়ে তিনি আমার দিকে চেয়ে থাকলেন। তারপর মুখ ঘুরিয়ে বিড়বিড় করে বলতে থাকলেন, ‘ছিঃ ছিঃ, আপনারা এতো নিষ্ঠুর! মায়ের সবচেয়ে প্রিয় ছবিটা, যেটা নিয়ে তিনি বরাবর গর্ব করতেন; বলতেন, বিনোদদার হিন্দি ভবনের ফ্রেক্সোটির আগে ওটাই ছিল শান্তিনিকেতনের কোনো 888sport live chatীর আঁকা সবচেয়ে বড় ভিত্তিচিত্র। আপনি বলছেন 888sport appsেরও ওটাই প্রথম ফ্রেস্কো। (এবার আমার দিকে ক্ষুব্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে বললেন) তাহলে আপনারা কী করছিলেন? বাড়িটা রক্ষা করতে পারলেন না?’ বুঝলাম, আমার সব প্রচেষ্টার এখানেই যবনিকাপাত! তাহলে কি বিদায় নেব? কিন্তু কী জানি কী কারণে তাঁর দয়া হলো। বললেন, ‘আমার কাছে সম্ভবত ওই ছবিটারই মূল ড্রইংটা, যেটা প্রমাণ সাইজে কাগজের ওপর এঁকে নিয়ে দেয়ালে ট্রেসিং করা হয়েছিল, ওটা আছে।’ আবারও চমকে উঠলাম! ‘বলছেন কি! এতো দারুণ খবর!’ এরপর তিনি ভেতরের ঘরে গিয়ে একটি পান্ডুলিপির ফটোকপি এনে আমার হাতে দিলেন, বললেন, মায়ের লেখা ‘রবীন্দ্র-888sport sign up bonus’।
বিশ্বভারতীকে দিয়েছিলাম, কিন্তু ওরা প্রকাশ করেনি। আপনি চেষ্টা করে দেখুন 888sport app থেকে প্রকাশ করা যায় কি না।’ রীতিমতো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি! এরপর একে-একে আরো কিছু ছোটখাটো লেখা আর ইন্টারভিউর কপি দিলেন, যেগুলো নানা সময়ে পত্রপত্রিকায় বেরিয়েছে। চোখ বুলিয়ে অল্প-অল্প পড়েও নিলাম। বুঝলাম, চিত্রলেখাদির জীবনটাই গড়ে উঠেছে চিত্রনিভাকে আদর্শ ধরে নিয়ে। মায়ের গুণের যেন শেষ নেই। মায়ের কাছেই তার গান শেখা। মা যন্ত্রসংগীতের চর্চাও করতেন। বাজাতেন সেতার, এস্রাজ আর বীণা। শান্তিনিকেতনে ছাত্র থাকাকালীন সময়ে, পার্শবর্তী গ্রামগুলোর বঞ্চিত মানুষদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটানোর কাজে যুক্ত হয়েছিলেন। শান্তিনিকেতন থেকে নোয়াখালি ফিরে গিয়ে একটা স্কুলও খুলেছিলেন গ্রামের মানুষদের হাতের কাজ আর ছবি আঁকা শেখাতে। একেবারে শতভাগ রবীন্দ্র-আদর্শে গড়ে ওঠা পরিপূর্ণ সার্থক মানুষে পরিণত হয়েছিলেন। তথ্যগুলো জেনে বুক ফেটে কান্না পাচ্ছে। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। সত্যি, কী অভাগা দেশে আমার জন্ম! এতো মহান এক মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়েও এই দেশ কেন চার বছরের মাথায় মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের দখলে চলে গেল তার কারণটি এখন আর গবেষণা করে উদ্ধার করবার প্রয়োজন নেই। চিত্রনিভাকেন্দ্রিক এই অভিজ্ঞতাটুকুর মধ্যেই সব কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।
পান্ডুলিপিটা হাতে নিয়ে, খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে 888sport appয় ফিরে এসেছিলাম। নিশ্চিত ছিলাম 888sport live chatকলা একাডেমীর মহাপরিচালক শ্রদ্ধেয় কামাল লোহানী নিশ্চয়ই এ-বইটি প্রকাশ করবেন। সত্যি বলতে, তিনি আমার চাইতেও বেশি উৎসাহী হয়ে উঠলেন। চিত্রলেখাদির সঙ্গে রীতিমতো টেলিফোনে যোগাযোগ করে বিরাট পরিকল্পনা তৈরি করে ফেললেন। বই প্রকাশ তো হবেই, সঙ্গে ছবিগুলোর প্রদর্শনী, এবং চিত্রলেখার গানের অনুষ্ঠান। সবই হবে ২০১৩ সালে চিত্রনিভার জন্মশতবার্ষিকীকে উপলক্ষ করে। 888sport live chatী পূর্ণেন্দু দে-কে দিয়ে চিত্রলেখার সংগ্রহে থাকা ছবিগুলোর ফটোগ্রাফও করিয়ে আনা হলো। প্রায় সবটাই গুছিয়ে এনেছিলেন খুবই কম সময়ের মধ্যে। আমি খুব নিশ্চিন্ত বোধ করছিলাম, কিন্তু হঠাৎ করেই তাঁর স্থলে নতুন মহাপরিচালক চলে এলেন। আর তারপরই সবকিছু কেমন যেন ঢিমেতালে… না এগোয়, না পেছায়। শেষে আকারে-ইঙ্গিতে বুঝে নিলাম, নতুন এই মহাপরিচালক নতুনপন্থী, পুরনো কোনো কিছুতে তাঁর উৎসাহ নেই। গোটা উদ্যোগটা কেবল ধামাচাপা নয়, রীতিমতো মাটিচাপা পড়ে গেছে।
চিত্রনিভার চিত্র-প্রদর্শনী আয়োজনের পরিকল্পনাটি পুরোপুরি বাদ দিলাম। এবার শুধু ওই ‘রবীন্দ্র-888sport sign up bonus’, কন্যা চিত্রলেখার ছোট ছোট ইন্টারভিউ, বিভিন্ন সময়ে তোলা ফটোগ্রাফ এবং কাজের ছবিগুলো মিলিয়ে একটা বই প্রকাশ করা যায় কিনা সেই প্রচেষ্টাটুকুই অব্যাহত রেখেছি। ২০১০ সালের শেষ দিকে গ্যালারি চিত্রকে একটা প্রদর্শনীতে দেখা হয়ে গেল রেজা আলী সাহেবের সঙ্গে। তিনি এখন সাংসদ, তাই আমজনতার সঙ্গে কথা বলতে অরাজি হবেন না, এই ভরসায় প্রসঙ্গটা তুললাম। জেনে আশ্বস্ত হলাম যে, ওটা তোপখানা রোডের ভেঙে ফেলা অফিস-বাড়িটা নয়, সেগুনবাগিচার বাড়ি। (আগে এটাও তোপখানা রোড এলাকা হিসেবেই পরিচিত ছিল) এবং এখনো অফিসিয়াল নাম্বার ১২ তোপখানা রোড। বাড়িটা এখনো টিকে আছে, তবে অন্য কারো মালিকানাধীনে। ছবিটা ওরা রেখেছে না মুছে ফেলেছে তা তাঁর জানা নেই। বাড়ির ঠিকানাটা জানিয়ে আমায় বললেন, ‘কেয়ারটেকার ভালো মানুষ। অনুরোধ করলে হয়তো বা ভেতরেও ঢুকতে দেবে।’ কখনো ওই চিত্রটির ছবি তোলা হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে বললেন, ‘হ্যাঁ, অফিসের ফটোগ্রাফারকে দিয়ে তুলিয়েছিলাম। অফিসেই সম্ভবত আছে। তবে নতুন ভবনে অফিসের মালপত্র শিফটিং চলছে, তাই এখন আর খুঁজে বের করা সম্ভব নয়।’
এরই মধ্যে অসুস্থ বাবাকে দেখতে সেজোভাই সাখাওয়াত এলো কানাডা থেকে। সাখাওয়াত কানাডাপ্রবাসী হওয়ার আগে বিটপীতেই ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতো। এখনো অফিসের সবাই ওকে খুব মিস করে। বললো, ‘কাল একবার বিটপীর নতুন ভবনে যাবো।’ আমি রেজা আলীর কথায় সেই ফটোগ্রাফ খুঁজে বের করার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু সাখাওয়াত বিটপীতে যাচ্ছে শুনে বললাম, ‘দেখিস তো, বিটপীর ফটোগ্রাফি সেকশনে রেজা আলীর বাড়ির ফ্রেস্কো পেইন্টিংটার কোনো ফটোগ্রাফ পাওয়া যায় কিনা।’ সাখাওয়াতের 888sport app download for androidশক্তি মন্দ না। ওর মনে পড়ে গেল সেই ম্যুরাল বিষয়ক ক্যালেন্ডার বের করবার জন্য আমার সহযোগিতা পেতে বিটপীর দুজন কর্মকর্তাকে একবার বাসায় নিয়ে এসেছিল। জানি না কেন রাজি হইনি এমনকি ছবিগুলিও কেন দেখতে চাইনি! তখন ওই ফ্রেস্কো চিত্রের যিনি ফটোগ্রাফ তুলেছিলেন তিনি তো সাখাওয়াতের খুবই ঘনিষ্ঠজন। পরপর দুদিন খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত, কিন্তু পাওয়া গেল না। তৃতীয় দিনও একসঙ্গেই দুজন বের হলাম, কিন্তু আমি ছুটলাম সেগুনবাগিচার সেই বাড়িটা খুঁজে বের করতে আর সাখাওয়াত বিটপীর দিকে, ওই ফটোগ্রাফগুলো খুঁজে পাওয়ার আশায়।
নম্বর থাকা সত্ত্বেও যে বাড়ি খুঁজে পাওয়া যায় না এ আমার জানা ছিল না। ১১ নম্বর আছে, ১৩, ১৪, ১৫ নম্বর আছে, কিন্তু ১২ নম্বর তো পাচ্ছি না! শেষে ভাবলাম এভাবে খুঁজে লাভ নেই এবং সহজ হবে যদি পুরনো আমলের বাড়ি কোনটা সেটা বাড়ির ডিজাইন দেখে বোঝার চেষ্টা করি। সত্যি, দুই মিনিটের বেশি লাগলো না, পেয়ে গেলাম। বিশাল পাঁচিলে ঘেরা সাদা দোতলা বাড়ি। বাড়িটা এখন এক পাম্প কোম্পানির স্টোর হাউস-কাম অফিস। কেয়ারটেকার বললেন, একটু গেটের বাইরে অপেক্ষা করুন, আমি, ম্যানেজারের অনুমতি নিয়ে আসছি। কিছুক্ষণ পর ম্যানেজার নিজেই চলে এলেন। ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বললেন, ‘অনেক দেরি হয়ে গেছে। বছরখানেক আগে আমরা ওই ঘরটা রং করেছি। ছবিটার কারণে ঘরটা সবসময় অন্ধকার হয়ে থাকতো, ফলে পোকামাকড়ে আমাদের মালপত্র নষ্ট করে দিচ্ছিল। মালিক বললেন, ‘পুরো দেয়াল রং করে সাদা করে দাও, বড় বড় বাতি লাগিয়ে দাও।’
পা দুটো অবশ হয়ে আসছে, টেনে নিতে পারছি না। ম্যানেজারকে বললাম, ‘ভিতরে ঢুকে আর কী হবে, এই বারান্দাতেই একটু বসি।’ ইশ্, মাত্র একটা বছর আগে এলেও ছবিটা দেখতে পেতাম! সত্যিই তো, এদের কি-ই বা দায় পড়েছে এই ভিত্তিচিত্রটিকে আগলে রাখবার। ওরা তো আর ফ্রেস্কো-সমৃদ্ধ দেয়াল দেখে মুগ্ধ হয়ে এই বাড়িটা কোটি-কোটি টাকায় খরিদ করেনি। ম্যুরাল, ফ্রেস্কো, জয়পুরি ভিত্তিচিত্র এইসব শব্দের সঙ্গে বর্তমান মালিকের চোদ্দ পুরুষের কারোরই হয়তো কোনোদিন পরিচয় ঘটার সুযোগ হয়নি। সুতরাং এদের কাছে এই ছবি রক্ষার জন্য এক বছর আগে এসে অনুনয়-বিনয় করেও কিস্সু কাজ হতো না। তবে অন্তত ডিজিটাল ক্যামেরার বদৌলতে কিছু হাই রেজুলেশনে ছবি তুলে রাখা যেত। শুনেছি এই বাড়িতে কামরুল হাসান, নিতুন কুন্ডু প্রমুখ বড়-বড় 888sport live chatী এসেছেন। কই, তাঁদের মুখেও তো কোনোদিন এই ছবিটির কথা শুনতে পেলাম না!
বাইরে থেকে বাড়িটার কিছু ছবি তুললাম। ভাবলাম, একবার অন্তত চিত্রলেখাদিকে বাড়ির বর্তমান চেহারাটা দেখানো যাবে। ম্যানেজার বললেন, ‘ভেতরের ওই রুমটা একবার দেখেই যান।’ সাদা ডিসটেম্পারের ধবধবে প্রলেপ ভেদ করে তখনো ছবির আবছা আভা চোখে পড়ছে। ভালো রেস্টোরার লাগিয়ে এখনো হয়তোবা তলার ছবি অনেকাংশেই উদ্ধার করা যাবে। কিন্তু তার জন্য তো অনেক অর্থ আর সময়ের প্রয়োজন। বাড়ির মালিক কি আর কোম্পানির কাজে ব্যাঘাত ঘটিয়ে শুধু দেশের জন্যে এতো বড় ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি হবেন? যেখানে রেজা আলীর মতো এতো বড় দেশপ্রেমিক, শিক্ষিত, রুচিবান, সংস্কৃতিসেবকই এই ছবিটি রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো দায়-দায়িত্ব অনুভব করলেন না, সেখানে স্রেফ একজন পাম্প ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কি-ই বা আশা করতে পারি?
গেট থেকে বেরিয়ে পশ্চিমদিকে পা বাড়ালাম। ওইদিকটায় 888sport live chatকলা একাডেমী, আমাদের জাতীয় চিত্রশালাও। গুনে গুনে পা ফেলে সেদিকেই এগোচ্ছি। দুশো থেকে আড়াইশো কদমের দূরত্ব। আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীগুলোতে হাজার হাজার মাইল দূর থেকে 888sport live chatী আর কলারসিকরা এখানে আসেন 888sport live chatকর্ম দেখতে। অথচ এখানকার কর্ণধারেরা এবং আমরাও এই দুশো-আড়াইশো পা অতিক্রম করে আমাদের সমকালীন 888sport live chatকলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শনটি দেখতে পেলাম না!
একাডেমীর সংগীত বিভাগে কিছু একটা রিহার্সেল চলছে। দূর থেকেই গানের সুর ভেসে আসছে –
কাছে যবে ছিল পাশে হলো না যাওয়া, চলে যবে গেল তারি লাগিল হাওয়া …
হারানো দিনের ভাষা স্বপ্নে আজি বাঁধে বাসা, আজ শুধু আঁখি জলে পিছনে চাওয়া।
সত্যি, কী অদ্ভুত কোইনসিডেন্স!
পকেটে মোবাইল ফোনের ভাইব্রেশন অনুভব করছি। হাতে নিয়ে দেখি সাখাওয়াতের কল এসেছে। রিসিভ করতেই ওইপ্রান্ত থেকে ভেসে এলো, ‘নিসারদা সুখবর আছে। ভিত্তিচিত্রের ফটোগ্রাফগুলো পাওয়া গেছে। কিন্তু খুবই ঝাপসা…।’
এর কিছুদিন পর 888sport live chatী আবদুল মুক্তাদির সাহেবকে গ্যালারি চিত্রকেই পেয়ে গেলাম। তিনি সম্ভবত ছবি বাঁধাই করতে এসেছিলেন। আমাকে পেয়ে তিনিও চেয়ার টেনে বসে পড়লেন। আমারও মনে পড়লো মুক্তাদির কাকা তো বিটপীতেই ছিলেন (শুধু ছিলেন বললেই নয়, যুগ-যুগ ধরে ছিলেন)।
তাই কথা-প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলাম বিটপীর মালিক রেজা আলীর বাড়ির সেই ভিত্তিচিত্রটি দেখেছিলেন কি-না; দেখে থাকলে তার গুণমান কেমন ছিল বলে তাঁর কাছে মনে হয়েছে। তিনি জানালেন, যখনই কোনো কাজে কিংবা কোনো নিমন্ত্রণে যোগ দিতে তিনি ওই বাড়িতে যেতেন, তাঁর বেশিরভাগ সময়ই কাটতো ওই ভিত্তিচিত্রটি খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে দেখতে। যেহেতু ছবিটা ছিল দরজার ওপর থেকে সিলিং পর্যন্ত চার ফুট-সাড়ে চার ফুট মতো চওড়া অংশে, টানা চার দেয়ালে আঁকা, ফলে ঘাড় উঁচু করে চার দেয়ালের পুরো ছবিটা অনেকক্ষণ ধরে দেখতে বেশ কষ্টই হতো। তাই একদিন ছবি দেখতে দেখতে রেজাভাই (রেজা আলী) আর নাঈমা আপাকে (নাঈমা আলী) বলেছিলেন ‘যে ছবি দেখলে 888sport live chatীদের মাথা হেঁট হয়ে যায়, সেই ছবিই কি-না দেখতে হচ্ছে মাথা উঁচু করে।’ r
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক তথ্য :
বিটপীর ফটোগ্রাফার জনাব আবদুল হামিদের তোলা আলোকচিত্র, চিত্রলেখা চৌধুরীর সংগ্রহে থাকা সেই ভিত্তিচিত্রের মূল ড্রইং এবং প্রত্যক্ষদর্শী 888sport live chatী আবদুল মুক্তাদির, 888sport live chatী সৈয়দ ইকবাল এবং বাড়ির মালিক রেজা আলীর বক্তব্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ভিত্তিচিত্রের বিষয়বস্ত্ত দৈনন্দিন পল্লীজীবন ও প্রাকৃতিক দৃশ্যভিত্তিক। সাংবাদিক সুখরঞ্জনবাবু তোফাজ্জল আলী সাহেবের স্ত্রী সম্বন্ধে যে-তথ্যগুলো দিয়েছেন সেগুলো ঠিক নয়; অর্থাৎ আলী সাহেবের স্ত্রী কখনোই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েননি এবং তিনি সংস্কৃত ভাষাও জানতেন না। তাছাড়া কেবলমাত্র একটি দৃশ্যের নিচেই ‘চিত্রনিভা’ স্বাক্ষরটি খুঁজে পাওয়া যায়; প্রতিটি দৃশ্যের নিচে নয়।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.