জাতিস্মর অথবা নরকের গল্প

তরুণ লেখকরা মাঝে-মাঝে আমার কাছে আসেন, আসেন সাংবাদিকরাও, যদিও তাদের আসার উদ্দেশ্য এক নয়। সাংবাদিকরা আসেন পেশাগত প্রয়োজনে, কোনো বাজারচলতি বিষয়ে মন্তব্য নেওয়ার জন্য, তাদেরকে গরম গরম খবর পরিবেশন করতে হয় কি না! কেউ-কেউ অবশ্য ফোন করে বা মেসেজ করেও মন্তব্য চান – মানে এসে কথা বলার মতো সময় নেই; তাছাড়া, হাতের মুঠোয় যোগাযোগ-যন্ত্র তো আছেই। কিন্তু তরুণ লেখকরা আসেন সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। 888sport live footballের এক দুর্গম অচেনা পথে তারা যাত্রা শুরু করেছেন, যে-পথ অনেকটা পাড়ি দিয়ে আমি এখন সিনিয়র লেখকের মর্যাদায় অভিষিক্ত, তরুণরা আমার সেই বিপদসংকুল-ঝঞ্ঝামুখর যাত্রার বিবরণ শুনতে আসেন। জানতে চান অভিজ্ঞতা, অনুভূতি আর উপলব্ধির কথা। আমিও যথাসম্ভব ওদের কৌতূহল নিবৃত্ত করি। কিন্তু এ-গল্প আসলে ওদের নিয়ে নয়। ওদের প্রসঙ্গ এলো এটা বলতে যে, তরুণ লেখকরা বা সাংবাদিকরা এত কথা জানতে চান; কিন্তু কখনোই জিজ্ঞেস করেন না – আমার জন্য সবচেয়ে বিরক্তিকর কাজটি কী! যদি করতেন তাহলে আমি নিশ্চিতভাবেই বলতাম : নিয়মিত বাজার করাই আমার জীবনের সবচেয়ে বিরক্তিকর, বিব্রতকর এবং পীড়াদায়ক কাজ।

জানি, আপনাদের ঠোঁটে মুচকি হাসি ফুটে উঠেছে। ভাবছেন, এত বড় একজন লেখক, সাফল্য আর খ্যাতি যার পায়ে এসে লুটিয়ে পড়ে, তার জীবনের সমস্যা আর আপনাদের সমস্যা একইরকম! মুচকি হাসির জন্য আপনাদের দোষ দেবো না। লেখকরা এমন এক জগৎ তৈরি করেন যে সেখানে বাজারটাজারের মতো তুচ্ছ প্রসঙ্গ থাকে না। মানে, তার সৃষ্ট চরিত্ররা বাজারে যায় বটে কিন্তু স্বয়ং লেখকও যে বাজারে যেতে পারেন, অন্য সবার মতো দোকানিদের কাছে নাস্তানাবুদ হতে পারেন, দামের বাড়াবাড়ি দেখে তার মাথায়ও চক্কর দিতে পারে, নদীর মাছ বলে চাষের দুর্গন্ধযুক্ত মাছ তাকে গছিয়ে দিয়ে মাছওয়ালারা তৃপ্তির হাসি হাসতে পারেন, মাংসের এক-তৃতীয়াংশই থাকতে পারে চর্বি আর হাড়, তার কিনে আনা সবজির একাংশ থাকতে পারে পচা বা কয়েকদিনের পুরনো – এসব আপনাদের মনেই হয় না। দোষ আসলে লেখকদেরও না। তারা তাদের ব্যক্তিজীবন নিয়ে খুব বেশি কথা তো বলেন না। আবার এও সত্যি, তারা খুব একটা বাজারে যান না। আমার অধিকাংশ লেখকবন্ধুই বাজারবিমুখ। দোষ আসলে আমারই। নিজে বাজার না করলে আমার মন ভরে না। দেখেশুনে, বেছে বেছে, দীর্ঘক্ষণ ধরে বাজার করি আমি। যে কেনাকাটা এক ঘণ্টার মধ্যে সেরে ফেলা সম্ভব তা করতে আমার সময় লাগে তিন ঘণ্টা। তারপরও ঠকি। বাজারে গিয়ে না ঠকে কেউ ফিরতে পারে না, জানেনই তো! সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজারে যাই। সেদিন আবার বাজার খুব গরম থাকে, মানে, মাছ-মাংস-সবজি সবকিছুর দামই বেশি। কিন্তু উপায় কী? প্রতিদিনই তো সকাল হতে না হতে অফিসের জন্য ছুটতে হয়, বাজারে যাওয়ার কথা ভাবাই যায় না। ছুটির দিনটা রীতিমতো মহার্ঘ্য। কত কিছু করার কথা যে ভেবে রাখি! বিশেষ করে অসমাপ্ত কোনো লেখা শেষ করার চিন্তায় বিভোর হয়ে থাকি। অথচ সেদিনও আধাবেলা পার হয় বাজারেই। কী করবো বলুন! ফ্রিজে রাখলে মাছের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়, সবজিগুলোও খেতে ভালো লাগে না, আমার জিহ্বা আবার খুবই সেনসিটিভ, খুব সহজে স্বাদের পার্থক্য ধরতে পারে। নিজের রসনাবিলাসের জন্য, বা বলা যায় নিজের তৃপ্তির জন্য নিয়মিত বাজার করতে হয় আমাকে। এবং বলাই বাহুল্য, আপনাদের মতো আমাকেও নাস্তানাবুদ হতে হয়। তবে অন্য সবার সঙ্গে আমার পার্থক্য হলো, আমি হয়তো একটা লেখা নিয়ে বসেছিলাম বা লেখার কথা ভাবছিলাম, সেই ধ্যানমগ্ন অবস্থা থেকে বাজারের কোলাহল আর দামাদামির নিষ্ঠুর রসিকতার মধ্যে গিয়ে পড়তে হয় বলে মন-মেজাজও খারাপ হয়ে থাকে। যা হোক, এ-গল্প আসলে বাজার নিয়েও নয়।

ঘটনা হলো, সেদিনও বাজারে যাচ্ছিলাম। বাসার থেকে হাঁটা-দূরত্বে বাজার, কিন্তু যেরকম তীব্র রোদ আর অসহনীয় গরম, যেতে যেতেই ঘামে ভিজে চুপচুপে হয়ে যাবো। তাছাড়া, সকাল থেকে একটা লেখা নিয়ে বসেছিলাম, এরকম মগ্ন হয়ে থাকার সময় আমি খুব আনমনা হয়ে পড়ি বলে হাঁটা নিরাপদ নয়, তাই রিকশাই নিলাম। বাজারে যেতে হলে রেলগেট পেরোতে হবে। কিন্তু আমার রিকশাটা পার হওয়ার আগেই গেট পড়লো, ট্রেনের বাঁশি শোনা গেল। রইলাম বসে। রেললাইনের আশেপাশে বাজার থাকলে খুচরো কিছু দোকান রেললাইনের ওপরেও থাকে, ট্রেন আসার শব্দে উঠে যায়। নিত্যদিনের দৃশ্য, নতুন কিছু দেখার নেই, সেজন্য ততটা মনোযোগ ছিল না। কিন্তু আকস্মিকভাবে চোখের সামনে এমন একটা ঘটনা ঘটলো যে আনমনা থাকা গেল না। দেখলাম, একটা লোক ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়লো। দ্রুতগামী ট্রেন, আকস্মিক ঝাঁপ, যা হওয়ার কথা তাই হলো। চারপাশে লোকজন, রেললাইন পার হওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিল অনেকেই, তাদের মধ্যে থেকে যে একজন ঝাঁপ দেবে তা কে জানতো! রীতিমতো হইহল্লা পড়ে গেল, আমিও রিকশা ছেড়ে নেমে গেলাম। ভিড় ঠেলে এক নজর দেখেই বুঝলাম বিরাট ভুল হয়ে গেছে। লোকটা স্রেফ দুই ভাগ হয়ে গেছে, দুই অংশ পড়ে আছে দুপাশে। এই বীভৎস দৃশ্য সারাজীবনেও চোখ থেকে সরবে না। আমি এমনিতেও মৃত মানুষের মুখ দেখি না। আত্মীয়স্বজন-চেনাপরিচিত হলেও না, তাতে জীবন্ত মুখটি মনে গেঁথে থাকে। কেন যে এই ভুল করলাম! দ্রুত ওখান থেকে সরে রাস্তা পার হয়ে বাজারে ঢুকে গেলাম। রিকশাওয়ালাকে ভাড়া দেওয়া হয়নি, সেকথাও মনে পড়লো না। আসলে কিছুই মনে ছিল না। কেন যে বাজারে এসেছি তাও না। সারা বাজার কেবল চক্কর দিতে লাগলাম, বাজারের চেনা দোকানিরা ডাকাডাকি করতে লাগলো, সবসময়ই ওরা ডাকে, এক দোকানে দাঁড়ালে আশেপাশের তিন-চারটা দোকান থেকে ডাকে, না দাঁড়ালে ডাকে পাঁচ-ছটা দোকান থেকে, সবাই নিজের জিনিস গছাতে চায়, সেদিনও ব্যতিক্রম হলো না, কিন্তু আমি কিছুই কিনলাম না, কী যে কিনতে হবে তা মনেই পড়লো না। অনেকক্ষণ পর, ঠিক কতক্ষণ পর তা বলতে পারবো না, পকেটের মোবাইল ফোনটা বেজে উঠতেই যেন সম্বিৎ ফিরে এলো। হাতে নিয়ে দেখলাম, আমার স্ত্রী মিতু ফোন করেছে। বাজারে এলে সে সাধারণত ফোন করে না, হঠাৎ কিছুর দরকার হলে – যা হয়তো আগে বলেনি – মেসেজ করে জানিয়ে দেয়। আজকে হঠাৎ ফোন কেন? রিসিভ করতেই ওপাশে তার উদ্বিগ্ন কণ্ঠ শোনা গেল – এই তুমি কোথায়?

এ-প্রশ্নের কোনো মানে হয়? এমন তো নয় যে সে জানে না। বলেকয়েই তো বাজারে এসেছি। তাহলে জিজ্ঞেস করলো কেন? আমি কি তবে বাজারের বদলে ভুলে অন্য কোথাও চলে এসেছি? রীতিমতো ধন্দে পড়ে গেলাম। ওপাশ থেকে আবারো উদ্বেগ – কথা বলছো না কেন? তুমি কোথায়?

কোথায়! বাজারেই তো মনে হচ্ছে!

মনে হচ্ছে মানে কী? তুমি ঠিক আছো তো?

ঠিকই তো আছি মনে হয়।

মনে হয়? যেখানে আছ সেখানেই থাকো, আমি টুটুনকে পাঠাচ্ছি।

টুটুন মানে আমাদের ছেলে। ওটা ওর নাম নয়, আদর করে ডাকি। কিন্তু ওকে পাঠানোর দরকার কী? ও তো এখনো বাজার করা শেখেনি। কলেজে পড়ে, সামনে পরীক্ষা, পড়াশোনায় সিরিয়াস, সেজন্য ওকে সহজে কোনো কাজের কথা বলি না, বাজার করা তো দূরের কথা। কিন্তু কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন রেখে দিলো মিতু।

আমি এক দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম। কিছুক্ষণ পর টুটুন এলো, ওর কণ্ঠেও স্পষ্ট উদ্বেগ – বাবা, কী হয়েছে তোমার?

কিছু হয়নি তো!

তাহলে মা যে বললো …

কী বললো?

বললো, তুমি নাকি … না থাক। চলো বাসায় যাই। ব্যাগট্যাগ কোথায়?

কিসের ব্যাগ?

বাজার করোনি?

বাজার? বাজার করবো কেন?

টুটুন আর কিছু না বলে আমার হাত ধরলো, একটু চমকে উঠে কপালেও হাত দিয়ে দেখলো। বললো – তোমার গা এত গরম কেন বাবা? চোখও তো টকটকে লাল হয়ে আছে। কী হয়েছে তোমার? – টুটুনের গলা কেঁপে গেল এবার।

কিছু হয়নি তো!

ঠিক আছে, বাসায় চলো।

টুটুন আমাকে নিয়ে রিকশায় উঠলো, বাসায় ঢোকার আগ পর্যন্ত হাত ছাড়লো না। বয়স কম হলে কী হবে, আমার ছেলেটা বেশ শান্ত আর দৃঢ় স্বভাবের, বাসায় ওর মায়ের উদ্বিগ্ন মুখ দেখে বললো – চিন্তা করো না। বাবার বোধহয় জ¦র এসেছে।

মিতু অবশ্য অল্পতেই অস্থির হয়ে যায়। কখনো কখনো প্যানিকও করে। টুটুনের কথা শুনে আপনমনে বললো – সুস্থ মানুষ গেল, বাজারে গিয়েই জ¦র এলো কীভাবে?

বাইরে যে রোদ! তুমি বাবাকে রুমে নিয়ে যাও তো। একটু ঘুমালে ঠিক হয়ে যাবে।

তুই রেলগেটে গিয়েছিলি বাবা?

ওখানে কিছু নাই মা। সরিয়ে নিয়ে গেছে। এ নিয়ে কথা বলো না।

আমি বুঝে ফেললাম, রেলগেটের ঘটনাটা এ-পাড়ায় জানাজানি হয়ে গেছে। হওয়ারই কথা। খুব বেশি দূরে তো নয়। আত্মহত্যার খবর সবসময়ই দ্রুতবেগে ছড়িয়ে পড়ে। সেই খবর পেয়েই বোধহয় আমাকে ফোন করেছিল মিতু। এবার বললো – চলো। একটু শুয়ে থাকো।

এখন ঘুমাবো? আমি তো এখনো বাজারই করিনি।

করতে হবে না। আমি চালিয়ে নেবো!

কীভাবে যে চালিয়ে নেবে কে জানে! সপ্তাহখানেক আগে বাজার করেছি। একবারে খুব বেশি জিনিস কিনিও না। অতএব বাসায় মাছ বা সবজি থাকার কথা না। প্রাচুর্য তো নেই যে ফ্রিজভর্তি বাজার থাকবে। মধ্যবিত্তের পাঁচালি। এসব নিয়ে আর কত লেখা যায়? তবে মধ্যবিত্ত পরিবারের সুবিধা আছে কিছু। মা-বোন-কন্যা-বউরা কীভাবে যেন ভর্তা-ভাজি-ডিম ভাজা-ডাল-ভাত এসব দিয়ে দু-চারদিন চালিয়ে নেয়।

শরীরটা সত্যিই খারাপ লাগছে, মাথাটাও ঠিকভাবে কাজ করছে না। এতক্ষণ টের পাইনি, এখন মনে হচ্ছে – আসলেই বাড়াবাড়ি গরম পড়েছে। বিছানায় ফ্যানের নিচে শুয়ে শরীর জুড়িয়ে এলো। একটু একটু শীতও করতে লাগলো। মিতু থার্মোমিটার এনে জ¦র দেখলো। চিন্তার ভাঁজ পড়লো কপালে। বললো – বেশি খারাপ লাগছে?

না। তবে একটু শীত করছে।

হুম। জ্বর তো অনেক।

কত?

১০২ ডিগ্রি। গা মুছিয়ে দিই?

না। আরো শীত লাগবে।

তাহলে একটা ওষুধ খাও। পেট তো খালি। সেই কখন বেরিয়েছ! দাঁড়াও, একটু ভাত নিয়ে আসি। খেয়ে ওষুধ খাও।

ওর কথা মেনে নিলাম। জ¦র আসার কারণ বুঝতে পারছি না। ওষুধ খেয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু ঘুম এলো না। চোখ বন্ধ করলেই দৃশ্যটা চোখে ভেসে উঠছে। একজন মানুষ। দুটো টুকরো। রেললাইনের দুপাশে ভাগ হয়ে পড়ে আছে! রক্তে ভিজে গেছে জায়গাটা, মাংসের টুকরো এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে! ওহ!

অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে মাথায়। ঘুম আসছে না ঠিকই, কিন্তু আচ্ছন্নের মতো পড়ে রইলাম। মানে, চারপাশে যা হচ্ছে তা যেমন টের পাচ্ছি তেমনই ঘোরের মধ্যে চলে যাচ্ছি অন্য এক জগতে। সন্ধ্যার দিকে ঘাম দিলো। জ¦র একটু কমলো মনে হয়। উঠে গরম পানি দিয়ে গোসল করলাম, তারপর ডাল দিয়ে পেটভরে ভাত খেলাম। এক মগ চা হাতে নিয়ে নিজের রুমের দিকে এগোলাম। নিজের রুম মানে আমার লেখালেখি-পড়াশোনার রুম। অধিকাংশ সময় এখানেই কাটে আমার। বেডরুমে যাই কেবল ঘুমাতে। সকালবেলায় লেখার জন্য যে মন ছিল তা হারিয়ে গেছে কখন! তবু মনে হলো, একটু লিখতে পারলে ভালো লাগতো। অকথ্য যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য লেখার চেয়ে ভালো কোনো নিরাময় আমি অন্য কিছুতে খুঁজে পাইনি।

আচ্ছা, আজকের ঘটনাটা নিয়ে আমি কি কখনো লিখবো? ভাবছিলাম আমি। কী লিখবো? লোকটা সম্বন্ধে কিছুই জানি না, জানার চেষ্টাও করিনি। বরং তার ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ দেখে স্রেফ পালিয়ে এসেছি। তার এই আত্মহত্যা নিয়ে কীই-বা লেখা যায়? অবশ্যও চিনলেও যে লেখা যেত তা নয়। আত্মহত্যার কারণ নিয়ে মানুষ যেসব মন্তব্য করে তার সবই আন্দাজি

কথা। যে-মানুষটি আত্মহত্যা করে একমাত্র সে-ই জানে প্রকৃত কারণ। সেটা জীবনানন্দ-কথিত বিপন্ন বিস্ময়ের মতো কোনো মহৎ কারণও হতে পারে, আবার বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রিয় দলের পরাজয়ের মতো তুচ্ছ কোনো কারণও হতে পারে। এই লোকটি এভাবে মরলো কেন? তাও এমন জনবহুল রেলগেটে এসে? নির্জন কোনো জায়গায় গিয়েও ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারতো সে! তাহলে কি সে উপস্থিত সবাইকে নিজের ভয়ংকর মৃত্যুর প্রত্যক্ষদর্শী বানাতে চেয়েছে এবং কোনো মেসেজ দিতে চেয়েছে? নিবিড় হয়ে এসব ভাবছিলাম। আর তখনই ঘরের ভেতরে সেই ছিন্নভিন্ন মৃতদেহটি পড়ে থাকতে দেখলাম। ভয়ে আঁতকে উঠলাম আমি। দেখলাম, ধীরে ধীরে ছিন্ন অংশগুলো জোড়া লাগছে। একসময় পূর্ণাঙ্গ রূপ ফিরে পেল দেহটা। তারপর যেন হঠাৎই প্রাণ প্রতিষ্ঠা হলো সেটিতে। উঠে বসলো সে, কতক্ষণ বসেই রইলো চুপচাপ, তারপর উঠে দাঁড়ালো। চারদিকে তাকাতে লাগলো, সম্ভবত বোঝার চেষ্টা করছে – কোথায় আছে সে! কথা বলার শক্তি নেই আমার, কিছু জিজ্ঞেস করার তো প্রশ্নই ওঠে না। একসময় সে-ই কথা বলে উঠলো – তাহলে সত্যিই আবার আসতে হলো!

মানে?

মানে এবারো মুক্তি মিললো না। আবারো এলাম।

বুঝলাম না।

বোঝার কথাও না। আমার সঙ্গেই ঘটনাটা ঘটে চলেছে তাও আমি বুঝি না, আপনি বুঝবেন কীভাবে?

কী ঘটে চলেছে?

সে এবার আমার দিকে ভালো করে তাকালো, প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো – আচ্ছা, আপনি কি সেই লেখক?

কোন লেখক?

যার কাছে আমাকে পাঠানো হয়েছে!

আমি তা কী করে জানবো? আপনি তার নাম জানেন না?

না।

এ কেমন কথা? কে পাঠিয়েছে আপনাকে?

তাও জানি না। তবে একজন লেখকের কাছে পাঠানো হয়েছে, এটুকু জানি।

আমি একজন লেখক, কিন্তু আমার কাছেই আপনাকে পাঠানো হয়েছে কি না তা তো বুঝতে পারছি না।

এটা কি আপনারই বাসা?

হ্যাঁ।

তাহলে আপনিই সেই লেখক।

কীভাবে বুঝলেন?

আমি তো নিজে আসি না, আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, কোথায় পাঠানো হবে তাও তারাই সিদ্ধান্ত নেন।

কারা?

জানি না।

আমার প্রায় ধৈর্য হারানোর মতো অবস্থা হলো। এই হেঁয়ালির কোনো মানে হয়? বললাম, আজকে সকালে আপনি ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছিলেন কেন?

মরার জন্য।

মরেছেন তো। আবার এলেন কেন?

আমি তো একবার মরিনি। বারবার মরি, বারবার ফিরে আসি।

কতবার মরেছেন?

অসংখ্যবার। কতবার তা মনে নেই।

ফিরে আসেন কেন?

ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

ফিরে আসার পর কি আপনার আগের জীবনটাই ফের শুরু হয়? – উদ্ভট সব আলাপ হচ্ছে। তবু আমি স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে লাগলাম, যেন এরকম ঘটনা তো অহরহই ঘটে!

না। নতুন কোনো জীবন।

আগের জীবনের কথা মনে থাকে?

কিছু কিছু 888sport sign up bonus মনে থাকে, সব নয়।

এক জীবনের সব 888sport sign up bonusই মনে থাকে না, আর অনেকগুলো জীবনের 888sport sign up bonus …

জি। একেক সময় একেক 888sport sign up bonus মনে পড়ে। অনেক সময় বুঝতেও পারি না, কোন জীবনের 888sport sign up bonus কোনটা। তালগোল পাকিয়ে যায়। খুব যন্ত্রণা, খুব কষ্ট, বুঝলেন!

লোকটার জন্য মায়া হয়। ভাবতে চেষ্টা করি, আমারও যদি একাধিক জীবনের অভিজ্ঞতা এবং 888sport sign up bonus থাকতো, যদি এরকম তালগোল পাকানো 888sport sign up bonusর উৎপাত থাকতো, তাহলে আমি পাগল হয়ে যেতাম। হয়তো সেই যন্ত্রণা থেকে বাঁচতেই আত্মহত্যা করতাম। কিন্তু এ শুধু কল্পনাই। এরকম দুঃসহ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যে যায়নি, সে এর স্বরূপ বুঝতে পারবে না, যেমন আমি পারছি না। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম – আপনাকে বারবার ফিরিয়ে দেওয়া হয় কেন বলুন তো!

বলা হয়, আমার ওভাবে যাওয়ার কথা নয়। যাওয়ার সময়ও হয়নি।

মানে আপনার আত্মহত্যাকে গ্রহণ করা হয় না।

সম্ভবত তাই।

তাহলে আত্মহত্যা করেন কেন?

আমার অন্য কোনো উপায় থাকে না।

অসম্ভব। কোনো না কোনো উপায় সবসময়ই থাকে, আপনি খোঁজেন না।

কী উপায়?

মরে যাওয়ার বিকল্প হলো বেঁচে থাকা, যেকোনো পরিস্থিতিতে …

যেকোনো পরিস্থিতিতে?

হ্যাঁ।

ধরুন, আপনার একটা কন্যাশিশু আছে। ধরুন তার বয়স আট বছর। তাকে ধরে নিয়ে গেল আপনারই কোনো প্রভাবশালী প্রতিবেশী এবং ধর্ষণ করলো। মেয়েটা যেহেতু ছোট, ধর্ষণের আগে তার যৌনাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে নিল। আপনি আপনার ক্ষতবিক্ষত কন্যাকে ফেরত পেলেন। যে এখনো কিছু বুঝতেই শেখেনি, সে বুঝে গেল তার জীবন আর কখনো স্বাভাবিক হবে না। এ নিয়ে অনেক হইচই হলো, কানে তুলা দিয়ে রাখা পুলিশ প্রশাসন তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হলো। কিন্তু আদালত তাকে দুদিনের মধ্যে জামিন দিয়ে দিলেন। ফিরে এসে সে আবার চড়াও হলো আপনার ওপর। এবার আপানার স্ত্রীকে …

ওহ! এসব কী বলছেন আপনি!

কিংবা ধরুন – লোকটা থামলো না – আপনি একজন

কৃষক, কিন্তু নিজের জমি নাই, অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন, ফসলের ভাগ হয় অর্ধাঅর্ধি। খরচ সব আপনারই, জমির মালিক জমি দিয়েই খালাস। কিন্তু আপনি চাষ করবেন কীভাবে? টাকা তো নাই। এই সময় দরদি সেজে এক এনজিওকর্মী এসে সেধে ঋণ দিয়ে গেল আপনাকে। না আপনাকে নয়, তারা পুরুষদের ঋণ দেয় না, দিলো আপনার স্ত্রীকে। বললো, সাপ্তাহিক কিস্তি, আপনার তেমন একটা গায়ে লাগবে না। আপনি নিরুপায়, টাকা লাগবে, নইলে জমিটা চাষ করা হবে না, আগামী বছর বর্গাও পাবেন না। ঋণ নিলেন। এক সপ্তাহ পরেই শুরু হলো কিস্তি দেওয়া। প্রথমদিকে গায়ে লাগলোও না। কারণ তখনো হাতে কিছু টাকা আছে। কিন্তু ফসল বুনলেই তো সঙ্গে সঙ্গে ফল পাওয়া যায় না। এক মৌসুম অপেক্ষা করতে হয়। প্রতি সপ্তাহের কিস্তি আপনি দেবেন কোত্থেকে? কিন্তু একসময়ের দরদি এনজিওকর্মীকে আপনি তা বোঝাতে পারবেন না। টাকা আপনাকে দিতেই হবে, খালি হাতে ফিরে গেলে তার বস ভয়াবহ দুর্ব্যবহার করবে, হয়তো চাকরিই চলে যাবে। সেও নিরুপায়। সিস্টেমটাই ওরকম। সপ্তাহান্তে কিস্তি দেওয়ার সময় হলেই আপনি তাই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান, এনজিওকর্মী এসে আপনার স্ত্রীর সঙ্গে চোটপাট করে, ঋণটা যে তার নামেই। এনজিওওয়ালারা জানে, পুরুষরা পালিয়ে গেলেও 888sport promo codeরা সংসার ছেড়ে পালায় না। সেজন্যই তারা 888sport promo codeদের ঋণ দেয়। খুব সুচিন্তিত ব্যবস্থা, বুঝলেন? কিন্তু চোটপাট করলেই কী? টাকা থাকলে তো দেবে! একবার পোষা ছাগল নিয়ে যায় লোকটা, একবার টিনের চাল খুলে নিয়ে যায়। তারপর যখন আর কিছুই নেওয়ার থাকে না তখন হুমকি দিয়ে যায়, কালকের মধ্যে টাকা না দিলে শাড়ি খুলে নিয়ে যাবে! টাকার জন্য শাড়িতে হাত দেবে? বিশ্বাস হয় না তার, মানুষ অত নিচে নামতে পারে না। আর শাড়ি বলতে তো ওই পুরনো রংচটা কাপড়খানা, ওটা নিয়ে করবেই কী? কিন্তু সত্যিই পরের দিন তার শরীর থেকে টেনে শাড়িটা খুলে ফেলে লোকটা। পরপুরুষের হাতে শাড়ি খোলার দুঃখে, অথবা মানুষের প্রতি ন্যূনতম বিশ^াসটুকুও হারানোর বেদনায়, কিংবা লজ্জায়-লাঞ্ছনায়-গ্লানিতে ঘরের পেছনের আমগাছে ঝুলে পড়ে সে। আপনি বাড়ি ফিরে দেখতে পান, আপনার স্ত্রী আমগাছে ঝুলছে, তার আগে ব্লাউজ-পেটিকোটও খুলে ফেলেছে সে। শাড়িই নাই, ওসব দিয়ে আর কী হবে! আপনার চোখের সামনে একটা নগ্ন-ঝুলন্ত 888sport promo codeদেহ, 888sport promo codeটি আপনার স্ত্রী …

ওহ! এবার থামুন।

কিংবা ধরুন – সে থামলো না – এনজিওর হাত থেকে বাঁচার জন্য গ্রামের সুদখোর মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিলেন। কিন্তু সেবার ফসল মার খেল। ফসল তো এমনি এমনি হয় না। আবহাওয়া অনুকূলে থাকতে হয়। প্রকৃতির আশীর্বাদ লাগে। ওটা আবার সবসময় পাওয়া যায় না। আপনি পরিষ্কার বুঝতে পারলেন, সব ফসল বিক্রি করলেও মহাজনের ঋণ শোধ হবে না। সুদের যে হার তাতে এক বছরের মধ্যে এমন এক জালে আটকা পড়বেন যে কোনোদিন বাঁচতে পারবেন না। বাঁচার জন্য এক রাতের বেলা বউবাচ্চা-ঘটিবাটিসহ গ্রাম ছেড়ে শহরে এলেন, ছোট্ট ভিটেবাড়িটা গোপনে বিক্রি করে দিলেন প্রতিবেশীর কাছে। মানে আপনার ফেরার সব পথ বন্ধ। ভাবলেন, এই বিরাট শহর কাউকেই তো ফেরায় না, আপনাকেও ফেরাবে না। আপনাদের জায়গা হলো বস্তিতে। বউ কাজ খুঁজে নিল বাসাবাড়িতে, আপনি হয়তো রিকশা নিয়ে বেরোলেন অচেনা শহরে, কিংবা বাজারে গিয়ে কুলিমিন্তির কাজ ধরলেন। সকালবেলায় দুজনেই বেরিয়ে আসেন, বাচ্চাটা কিন্তু বস্তির ঘরেই থাকে। তাতে সমস্যা নেই। ওখানে সব বাচ্চাই থাকে। ওটাই ওখানকার নিয়ম। কিন্তু একদিন সেই বস্তিতে আগুন লাগানো হলো। খবর পেয়ে ছুটে আসতে আসতে দেখলেন বস্তি পুড়ে ছাই, ছাই হয়ে গেছে আপনার বাচ্চাটাও …

এসবই আপনার ঘটনা? – আমি অধৈর্য হয়ে বলি।

আরো কত ঘটনা আছে! বলবো?

না থাক। একটা কথা জিজ্ঞেস করি। আপনি তো জানেন, আত্মহত্যা করলে আপনাকে আবার ফিরিয়ে দেওয়া হবে …

ওই সময় এটা মনে থাকে না। একটা স্বাভাবিক মৃত্যু হচ্ছে না বলে এই চক্র থেকে বেরোতে পারছি না। আপনি কি আমাকে একটু সাহায্য করবেন?

আমি কী ধরনের সাহায্য করতে পারি?

একটা স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য …

বুঝতে পারছি না, কী করলে আপনি সেটা পাবেন। আচ্ছা বলেন তো, মৃত্যুর পর কী হয়?

তা তো জানি না।

জানেন না! এতবার মরেছেন তাও জানেন না কেন?

জানবো কীভাবে? আবার তো ফিরে আসি।

মাঝখানের সময়টাতে কিছুই ঘটে না?

মাঝখানের সময় মানে?

এই যে মরে যাওয়া আর ফিরে আসার মাঝখানের সময়টাতে…

সেই সময়টা খুব বেশি নয়। অবশ্য ওখানে সময়ের কোনো হিসাব নেই।

তবু শুনি।

মৃত্যুর পর এমন একটা জায়গায় যাই যেখানে কিছুই নাই। ভয়াবহ শূন্যতা। পৃথিবীর কোনো কিছু দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।

তারপর?

আর খুব শব্দহীন। অকল্পনীয়।

হুম। তারপর?

আমার খুব ভয় লাগতে থাকে। অবর্ণনীয় ভয়। মনে হয় অনন্তকাল ধরে আমি এখানে আছি।

তারপর?

একসময় কারো একজনের উপস্থিতি টের পাই।

কে?

জানি না।

কেন?

তাকে দেখিনি কখনো।

তাহলে বুঝলেন কী করে?

ওরকম মনে হয় তাই বললাম।

আচ্ছা। তারপর?

মনে হয় করুণ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

যাকে দেখাই যায় না সে তাকিয়ে থাকবে কীভাবে? তাও করুণ চোখে!

তা জানি না।

আচ্ছা। তারপর?

আমার আরো ভয় লাগতে থাকে, প্রচণ্ড ভয়, অস্বাভাবিক ভয়। সারা শরীর প্রবলভাবে কাঁপতে থাকে।

শরীর? ওই শূন্য জগতে আপনি শরীরসহই যান?

তাই তো মনে হয়।

ও আচ্ছা! তারপর?

একসময় একটা শব্দ শুনতে পাই। মনে হয় সেই অদেখা অবয়বটিই কথা বলছে।

888sport promo codeকণ্ঠ না পুরুষকণ্ঠ?

বলতে পারবো না। দীর্ঘক্ষণ শব্দহীন জগতে থাকার পর হঠাৎ ওই শব্দ শুনে মনে হয় সমস্ত জগৎ গর্জন করছে। কণ্ঠটা কেমন সে-বর্ণনা তাই দিতে পারবো না।

আচ্ছা দিতে হবে না। তিনি কী বলেন?

মনে হয় আমাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে – তুমি কি ভয় পাচ্ছ?

আমি বলি হ্যাঁ, ভীষণ ভয় পাচ্ছি।

পাওয়ারই কথা। তোমার তো এখানে আসার কথা নয়।

আসার কথা ছিল নাকি?

সবাই আসে, আসতেই হয়, তবে সময়মতো। তোমার এখনো আসার সময় হয়নি।

কখন সময় হবে?

যখন আমরা নিয়ে আসবো। কিন্তু তুমি নিজে নিজেই চলে এসেছ।

তাহলে? এখন কী হবে?

তোমাকে আবার ফিরে যেতে হবে।

কোথায়?

যেখান থেকে এসেছ সেখানে।

আমার তখন কান্না পায়। কাকুতি-মিনতি করি যেন না পাঠায়। বারবার মরি, বারবার ফিরে আসি। আর কত পারা যায়? একটা স্বাভাবিক মৃত্যু ছাড়া এই চক্র থেকে মুক্তি নাই। এবার যখন আমাকে ফের পাঠানোর কথা বলা হলো, তখন বললাম – বারবার আমাকে এক দেশেই পাঠাও কেন? তারচেয়ে নরকে পাঠাও। উত্তর আসে – তোমাকে সবসময় নরকেই পাঠানো হয়। তুমিই তাকে ভুল করে দেশ বলে ভাবো।

লোকটার জন্য আমার খারাপ লাগে। ভাবি, যেভাবেই হোক তাকে সাহায্য করবো। কিন্তু আমার কাছে কেন তাকে পাঠানো হয়েছে বুঝতে পারছি না। কী ধরনের সাহায্য তাকে করতে পারি?

জিজ্ঞেস করতেই লোকটা বললো – আপনারা নাকি জাহান্নামের আগুনে বসে পুষ্পের হাসি হাসেন?

ওটা একজনই পেরেছিলেন।

আপনারা নাকি নরকেও ঋতুবৈচিত্র্য দেখেন, ফুল ফোটান, পাখিকে দিয়ে গান গাওয়ান, শিশুদের হাসি দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন? আপনারা নাকি পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া মানুষের শরীরে সবুজ বৃক্ষচারা পুঁতে দেন? আমাকে বলা হয়েছে, আমি কখনো এসব দেখিনি বলেই বারবার মরতে হয় এবং ফিরে আসতে হয়। আমাকে আপনি শেখাবেন, কী করে দেখতে হয় এসব? কীভাব প্রেম, মায়া, আনন্দ, ফুল আর পাখির সঙ্গে দেখা হয়?

আমি মাথা চেপে ধরে বসে থাকি! তাকে কী করে বোঝাই যে, আমিও নরকেই বাস করি, পার্থক্য কেবল এই যে, আমি নরকের আগুন থেকে মুখ ফিরিয়ে লেখার টেবিলে মুখ গুঁজে দিই। এই টেবিলটা না থাকলে আমিও তার মতোই …