১৯৮৮ সালের কথা। কৃষ্ণবিবর বা ব্ল্যাকহোল নিয়ে আমাদের দারুণ আগ্রহ। এ-সম্পর্কে টুকরো টুকরো লেখা পড়েছি। দ্রুত কোনো কিছু পাওয়ার জন্য ইন্টারনেট ব্যবস্থা ছিল না তখন। ব্রিটিশ কাউন্সিল, জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ভারতীয় হাইকমিশন এবং ব্যান্সডকের মতো গ্রন্থাগারগুলো একমাত্র সহায়। এরকম একটি সময়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলে কৃষ্ণবিবর নিয়ে লেখা একটি বই পেয়ে যাই। এ-বিষয়ে এত বড় একটি বই পাব ভাবতেই পারছিলাম না। নাম ব্ল্যাকহোল, দ্য মেমব্রেন প্যারাডাইম, ইয়োলো ইউনিভার্সিটি প্রেস, লেখক কিপ থর্ন, রিচার্ড প্রাইস, ডগল্যাস ম্যাকডোনাল্ডস। ৩৭০ পৃষ্ঠার বইয়ে কৃষ্ণবিবরের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা রয়েছে। যাঁদের আপেক্ষিক তত্ত্ব নিয়ে তেমন ধারণা নেই কিন্তু চিরায়ত পদার্থবিদ্যা নিয়ে পোক্ত অবস্থান, তাঁদের জন্যই বইটি লেখা। এ-বইয়ের রেফারেন্সগুলো দেখতে গিয়ে এক জায়গায় চোখ আটকে গেল। একটি বইয়ের নাম – দ্য আলটিমেট ফেট অব দ্য ইউনিভার্স, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, কেমব্রিজ। লেখক অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম। খবর নিয়ে জানলাম, আমাদের দেশের মানুষ। হকিং, পেনরোজ, ডাইসনরা তাঁর বন্ধু। তিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গাণিতিক পদার্থবিদ ও জ্যোতির্888sport apkী এবং বিশ্ববিখ্যাত কসমোলজিস্ট (বিশ্বসৃষ্টিতাত্ত্বিক)। আন্তর্জাতিক মহলে জে. এন. ইসলাম হিসেবে পরিচিত।
কতটা পথ হাঁটলে এই মগ্নতা আসে
১৯৮৭ সালে মির পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত স্পেস টাইম অ্যান্ড গ্রাভিটেশন নামে একটি বই আমার হাতে আসে। বইটি না পেলে জ্যামিতির নাটকীয় ইতিহাস নিয়ে এত কৌতূহলী হতাম না। সমান্তরাল সরলরেখা নিয়ে পুত্রের (জেনাস বোলাই) কাছে লেখা পিতার (ফারাকাস বোলাই) সেই অসাধারণ চিঠিটির কথা আমি জানতাম না। ওই বইয়ের রেফারেন্স ধরে আরো কয়েকটি বই ঘাঁটি। সেখানেও জামাল নজরুল ইসলামের আলটিমেট ফেট অব দ্য ইউনিভার্স নামটি দেখি। আমার কৌতূহল জাগে এই মানুষটির প্রতি। একদিন এক সন্ধ্যায় (২০০০ সাল) নারায়ণগঞ্জে ২ নম্বর রেলগেট দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই পৌর পাঠাগারের দোতলা অডিটোরিয়ামে যাই। দেখি ৬০ বছরের এক মানুষ তন্ময় হয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন। একটু পরে বুঝলাম নক্ষত্রের জন্মমৃত্যু নিয়ে কথা বলছেন। ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সংগীতের মতোই ধ্রুপদী রীতিতে ধীরে ধীরে বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করছেন তিনি : ‘শকওয়েভে ঘনীভূত হয় আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূলিকণা – বেশিরভাগই হাইড্রোজেন। মহাকর্ষীয় শক্তি তখন সক্রিয় হয়ে ওঠে। জন্ম নিতে থাকে নক্ষত্রের ভ্রূণ।’ তিনি যে ধ্রুপদী রীতিতে কথা বলছিলেন তা শোনার স্থিরতা ওই দর্শকদের সামগ্রিকভাবে না থাকলেও এক ধরনের মুগ্ধতা দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে লক্ষ করছিলাম। কিন্তু আরো অনেক বক্তাই অপেক্ষা করছেন, তাঁদের জ্ঞানগর্ভ বাণী শোনাতে। তাই বেশিক্ষণ তাঁর বলা হলো না। নারায়ণগঞ্জ শ্রুতি সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠানটি হচ্ছিল। অনুষ্ঠান চলাকালে চারপাশে স্বল্প আলো বিরাজ করছিল। আয়োজকদের একজনকে জিজ্ঞেস করলে বললেন, উনি হলেন জামাল নজরুল ইসলাম। আমি বললাম, ও!! যাঁর নাম দেখি অসাধারণ সব বইয়ে। একাকী হাঁটতে হাঁটতে বোস কেবিনে যাই। আপনমনে চা খেতে থাকি। হালকা মেজাজে শীতলক্ষ্যার তীরের দিকে এগোই। অদ্ভুত সব বাতাসের ছোঁয়া অনুভব করি। আর ভাবি, কতটা পথ হাঁটার পর এই মগ্নতা আসে।
এরপর তাঁর সঙ্গে দেখা হয় ২০০৫ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মুসলিম হলে, আমার এক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে। তিনি উদ্বোধন করে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়েছিলেন। প্রায় তেরোশো লোক টিকিট কেটে এসেছিল। আমি কসমিক ক্যালেন্ডার ও দ্য এনিগমা অব টাইম শিরোনামে দুটো বিষয়ের ওপর বক্তৃতা দিয়েছিলাম। একটি 888sport apk বক্তৃতায় এত মানুষ দেখে বেশ আপ্লুুত হয়ে বলেছিলেন, ‘দেশের জন্য এটা শুভ।
সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে 888sport apkকে প্রবাহিত করতে পারলেই সমাজ এগিয়ে যাবে।’ শেষবার দেখি তাঁকে এনায়েতপুরে যমুনার তীরে মহাকাশ উৎসবে।
সাংস্কৃতিক জাগরণের অগ্রপথিক ওয়াহিদুল হক তাঁর কথা প্রায়ই বলতেন; বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেশন ধারণা নিয়ে অদ্ভুত সব আলোচনা হতো নাকি তাঁদের। আধুনিক প্রযুক্তির কোনোকিছুই তিনি ব্যবহার করতেন না। ২০১৩ সালের ১৬ই মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ফুসফুসের সংক্রমণ ও হৃদরোগে ৭৪ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু ঘটে।
এর আগে ২০১৩ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারিতে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় বোস গবেষণা কেন্দ্র-আয়োজিত দুদিনব্যাপী সেমিনারে এসেছিলেন জামাল নজরুল ইসলাম। জানা যায়, তিনি নাকি মনোমুগ্ধকর এক বক্তৃতা দিয়েছিলেন, আর এটাই তাঁর শেষ বক্তৃতা। উল্লেখ্য, কোনো সময়ই তাঁকে মাল্টিমিডিয়ার সাহায্য নিতে দেখা যায়নি। তিনি সব সময় হাতে লিখতেন। চক, ডাস্টার আর ব্ল্যাকবোর্ড – এগুলোই ছিল তাঁর বক্তৃতাদানের উপকরণ। ইন্টারনেট ঘেঁটে তাঁর কোনো পুরনো ছবি পাওয়া যায় না। একটু নিভৃতে থাকতেই পছন্দ করতেন। ২০১১ সালের অক্টোবরে এনায়েতপুরে মহাকাশ উৎসবে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা হলে তাঁকে আমার সম্পাদিত সায়েন্স জার্নাল মাসিক মহাবৃত্ত (আইনস্টাইন 888sport free bet) দিই। ফ্রিল্যান্স পদার্থবিদ শামসুদ্দিন আহমেদ কৃষ্ণবিবর ও মহাবিশ্ব সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন করলে তিনি আপন মগ্নতা নিয়ে কথা বলতে লাগলেন, যেন এই কথাগুলো বলার জন্যই তিনি চট্টগ্রাম থেকে এনায়েতপুরে এসেছেন। তিনি জানতে চাইলেন না, এই প্রশ্নটি কে করেছেন বা তাঁর যোগ্যতা কী? প্রশ্নের উত্তর দেওয়াই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিছু একটা ঘটলেই আমরা ও আমাদের গণমাধ্যমগুলো, সবসময় বিশ্বচরাচরে 888sport appsি 888sport apkী খুঁজে খুঁজে অস্থির করে তুলি। অথচ 888sport apkী জামালের মতো বিশ্বমাপের এরকম একজন মানুষ আমাদের মধ্যে কয়েক দশক বসবাস করেও অজানা থেকে গেলেন!
পদার্থ888sport apkের অধ্যাপক অজয় রায়ের একটি লেখা এ-ব্যাপারে আরো মনোযোগ বাড়িয়ে তোলে। তিনি বলেছেন, ‘এতদিন আমার মনে হতো এইসব জটিল বিষয়ে কেবল পাশ্চাত্যের পণ্ডিতরাই কাজ করেন। ধারণা ছিল মহাবিশ্বের রহস্য বুঝতে আর এর সমাধান করতে পারেন পাশ্চাত্যের গুটিকয়েক প্রথম সারির কসমোলজিস্ট। যেমন আলবার্ট আইনস্টাইন, রিচার্ড ফাইনম্যান, স্টিফেন হকিং, অ্যালেন গুথ, মাইকেল টার্নার, লরেন্স ক্রাউস প্রমুখ 888sport apkী। কিন্তু আমার ভুল ভাঙলো। হঠাৎ করেই ১৯৮৩ সালে এক বাঙালি পদার্থ888sport apkীর বই আমার নজরে এলো। বইটির শিরোনাম দ্য আলটিমেট ফেট অব দ্য ইউনিভার্স। প্রকাশিত হয়েছে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে।’
অধ্যাপক জামালের গ্রন্থগুলো
এই মানুষটির লেখা দ্য আলটিমেট ফেট অব দ্য ইউনিভার্স ((The Ultimate Fate of the Universe, 1983) বইটি
আট-নয়টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এটি বিশ্বের জ্ঞানভাণ্ডারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে থাকবে। বইটি ফরাসি, ইতালীয়, জার্মান, পর্তুগিজ, সার্বোক্রোয়েটসহ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। পৃথিবীর সব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বইটি পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয়। বইটির পেপারব্যাকও বেরিয়েছে ২০০৯ সালে। দ্য আলটিমেট ফেট অব দ্য ইউনিভার্স বইটির ভূমিকাটি পড়লে আমরা দেখতে পাব – ফ্রিম্যান জন ডাইসন (F. J. Dyson), এস জে আরসেথ (S. J. Aarseth), স্টিফেন উইলিয়াম হকিং, এস মিটন (S. Mitton), জে. ভি. নারলিকার, মার্টিন জে রিজ এবং জে সি টেইলর (J. C. Taylor)-এর মতো লব্ধপ্রতিষ্ঠ 888sport apkীর নাম, যাঁদের কাছে বইটি লেখার জন্য তিনি ঋণস্বীকার করেছেন। মহাবিশ্ব কেমন ছিল, এখন কেমন এবং ভবিষ্যতে কেমন হবে, যদি সে-সময় প্রাণ থাকে তারা কীভাবে শক্তি পাবে – এসব বিষয় নিয়েই এই গ্রন্থটি। ইনট্রোডাকশন ও এপিলগ বাদ দিলে – ইউক্লিডের এলিমেন্টস, জেকব ব্রনওস্কির অ্যাসসেন্ট অব ম্যান, কার্ল সাগানের কসমস গ্রন্থগুলোর মতোই – এ-বইটিও তেরোটি অধ্যায়ে বিভক্ত – ১. আমাদের গ্যালাক্সি, ২. বৃহৎ পরিসরে বিশ্ব-কাঠামো, ৩. মৌলিক কণার প্রাথমিক ধারণা, ৪. বিশ্ব কি আবদ্ধ না উন্মুক্ত?, ৫. তিন উপায়ে নক্ষত্ররাজির মৃত্যুবরণ, ৬. কৃষ্ণবিবর ও কোয়াসার, ৭. গ্যালাক্সীয় এবং সুপার গ্যালাক্সীয়
কৃষ্ণবিবর, ৮. কৃষ্ণবিবরের জীবন অনন্ত নয়, ৯. ধীরগতির সূক্ষ্ম পরিবর্তনসমূহ, ১০. প্রাণ ও সভ্যতার ভবিষ্যৎ, ১১. বিস্তরণশীল মহাবিশ্ব, ১২. স্থিতিশীল অবস্থার তত্ত্ব এবং ১৩. প্রোটনের স্থায়িত্ব। বিগ ব্যাং থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ
বিশ্ব-পরিণতির একটি গাণিতিক মডেল দাঁড় করিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন লেখক।
888sport apkী জামাল নজরুল ইসলাম ভূমিকাতে বলেছেন, শেষ পর্যন্ত মহাবিশ্বের কী হবে? অনাদিকাল থেকে অনুমানমূলক এই প্রশ্নটি বিভিন্নভাবে মানুষের মনে জেগেছে; প্রশ্নটি পৃথিবী এবং মানবজাতির চূড়ান্তভাগ্য কী – সে-জিজ্ঞাসায়ও রূপ নিতে পারে। এই ধরনের প্রশ্নের অন্তত যুক্তিসংগত উত্তরের জন্য জ্যোতির্888sport apk ও সৃষ্টিতত্ত্ব গত দুই বা তিন দশকে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। এই বইটিতে আমি বর্তমান জ্ঞানাবস্থার ভিত্তিতে একটি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। ১৯৮৩ সালে পৃথিবীর মানুষের সামনে ছুড়ে দেওয়া এরকম একটি প্রশ্নের উত্থাপন এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে তার উত্তর খোঁজার প্রচেষ্টা শুধু এক দুঃসাহসী অভিযাত্রীর কথা মনে করিয়ে দেয়। আর তিনি যদি বাঙালি হন তবে একটু গর্ব হয় বইকি!
এছাড়াও ক্লাসিক্যাল জেনারেল রিলেটিভিটি (১৯৮৪) তাঁর সম্পাদিত একটি বই। এ-বইয়ে তাঁর সঙ্গে সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন ডব্লিউ বি. বনর এবং এম. এ. এইচ. ম্যাককুলাম। রোটেটিং ফিল্ডস ইন জেনারেল রিলেটিভিটি (১৯৮৫), কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। অ্যান ইন্ট্রোডাকশন টু ম্যাথেমেটিক্যাল কসমোলজি (১৯৯২), কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস; এটি প্রথম বইটিরই গাণিতিক সংস্করণ; ম্যাথেমেটিক্যাল কসমোলজি বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকায় বিখ্যাত জ্যোতির্পদার্থবিদ ফ্রেড হয়েলের প্রতি জামাল নজরুল বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ১৯৮৪ সালে এনডেভার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত (১৯৮৪) ‘ফার ফিউচার অব দ্য ইউনিভার্স’ উল্লেখযোগ্য। কৃষ্ণবিবর (বাংলায় ১৯৮৫) – বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত; মাতৃভাষা, 888sport apkচর্চা এবং 888sport app 888sport live – রাহাত-সিরাজ প্রকাশনা; শিক্ষা, 888sport live football ও সমাজ – রাহাত-সিরাজ প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত।
এছাড়াও ড. জামাল নজরুলের জীবনের শেষের ১৭ বছরের গবেষণামূলক গ্রন্থ ইন্ট্রোডাকশন টু ম্যাথমেটিক্যাল ইকোনমিকস অ্যান্ড সোশ্যাল চয়েস, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশের প্রক্রিয়ায় আছে। তিনিই একমাত্র বাঙালি 888sport apkী যাঁর এ পর্যন্ত অনেকগুলি বই প্রকাশিত হয়েছে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জামাল নজরুল ২০১১ সালের এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘গণিত ছাড়া বিশ্ব অচল। গণিতের সূত্রেই এই মহাবিশ্ব সচল। আবার অর্থনীতি বলে সামাজিক গতিধারার কথা। এই দুই বিষয়কে আমার পাণ্ডুলিপিতে যুগপৎ বিদ্যা হিসেবে দেখিয়েছি।’ তিনি আরো জানান, দুই ভলিউমে প্রকাশিতব্য গ্রন্থটির প্রথম ভলিউমে ২০টি 888sport live রাখা হতে পারে। পৃষ্ঠা888sport free bet হতে পারে ১৮০ থেকে ২০০। বইটি প্রকাশিত হলে গাণিতিক অর্থনীতির ধারণা আরো সমৃদ্ধ হবে। তিনি বলেন, ‘পাণ্ডুলিপি রচনায় নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন আর জেমস মার্লির তত্ত্বাবধান আমাকে ঋণী করেছে। বিশ্বব্যাপী বহুল আলোচিত গাণিতিক অর্থনীতি ধারণাটির তাত্ত্বিক ভিত্তি হলো সোশ্যাল চয়েস থিওরি। আমি এখানে সোশ্যাল চয়েস থিওরিকে গণিতের সূত্রে ব্যাখ্যা করেছি।’ এছাড়াও আরো দু-ডজন বই তাঁর অপ্রকাশিত থেকে গেছে বলে জানা গেছে নানা সূত্র থেকে।
১৯৮৫ সালে ড. জামাল নজরুল ইসলাম 888sport apps 888sport apk একাডেমি কর্তৃক স্বর্ণপদকে ভূষিত হন। ১৯৯৪ সালে তিনি জাতীয় 888sport apk ও প্রযুক্তি পদক লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি ইতালির আব্দুস সালাম সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল ফিজিক্সের থার্ড ওয়ার্ল্ড একাডেমির লেকচার পদক লাভ করেন। ২০০০ সালে তিনি মাহবুবউল্লাহ অ্যান্ড জেবুন্নেছা পদক পান। 888sport apps সরকার তাঁকে ২০০১ সালে 888sport cricket BPL rateে পদকে ভূষিত করেন। ২০১০ সালে তিনি 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্জাক-শামসুন আজীবন সম্মাননা পদক লাভ করেন। রয়াল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি, কেমব্রিজ ফিলসফিক্যাল সোসাইটি, 888sport apps 888sport apk একাডেমি এবং এশিয়াটিক সোসাইটি অব 888sport appsের সম্মানিত সদস্য ছিলেন অধ্যাপক জে. এন. ইসলাম। আন্তর্জাতিকভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক পরিমণ্ডলে তিনি এমন এক অবস্থানে ছিলেন তাতে মনে হয়, এগুলোই যথেষ্ট নয়, আরো অনেক গুরুত্বের দাবি করে। তাঁকে নিতে না পারার কারণে আমাদের সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ-ব্যাপারে লোক888sport live footballবিদ শামসুজ্জামান খান মাসিক উত্তরাধিকার ১৪২০ বৈশাখ 888sport free betয় সম্পাদকীয়তে লিখেছিলেন, ‘তবু স্বাদেশিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যাঁরা বিশ্বের উন্নত গবেষণাগার ছেড়ে 888sport appsে এসে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা করতে চেয়েছিলেন তাঁরাও বড়ো কিছু করে যেতে পারলেন না। এমনই এক বিশ্ববিখ্যাত 888sport apkী ছিলেন জামাল নজরুল ইসলাম। দ্য আলটিমেট ফেইট অব দ্য ইউনিভার্স বা কৃষ্ণবিবরের মতো গ্রন্থ লিখেও তাঁর যে জায়গায় পৌঁছানোর কথা ছিল দেশের 888sport apkচর্চার অবকাঠামোগত দুরবস্থার জন্য তা আর হয়ে উঠতে পারেনি। আমাদের এই দেশে অতবড় 888sport apkী হয়েও তিনি যে খুব বড়ো কোনো সম্মানের জায়গা পেয়েছিলেন তা-ও না।’
কৃষ্ণবিবর গ্রন্থে জামাল নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘মহাবিস্ফোরণে যে প্রাণহীন ও জড়পদার্থ চতুর্দিকে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল, তার মধ্যে একদিন প্রাণী এবং চেতনার আবির্ভাব ঘটেছিল। এই চেতনায় 888sport apk download apk latest version জাগে প্রকৃতির বিশালতার প্রতি।’ দার্শনিক ও 888sport apkীর কী অভূতপূর্ব সমন্বয়!
শিক্ষাজীবন এবং সহপাঠীরা
জামাল নজরুল ইসলামের জন্ম যশোরের ঝিনাইদহ শহরে, ১৯৩৯ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি, এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। মাতামহ শামসুল ওলামা কামালউদ্দিন ছিলেন গত শতাব্দীর প্রথমভাগে সরকারি কলেজের প্রথম মুসলমান অধ্যক্ষ। মনীষী আবু সয়ীদ আইয়ুব তাঁর মামা। বিখ্যাত ঔপন্যাসিক এবং লাল সালু 888sport alternative linkের স্রষ্টা সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ তাঁর ফুফাতো ভাই। তাঁর পিতা খান বাহাদুর সিরাজুল ইসলাম ছিলেন বিচার বিভাগীয় একজন মুন্সেফ এবং ব্রিটিশ আমলের প্রাদেশিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা। মা রাহাত আরা উর্দু ভাষার কবি, যিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ডাকঘর নাটিকাটি সফলভাবে উর্দুতে 888sport app download apk latest version করেছিলেন। জামালের বাবার সঙ্গে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সখ্য থাকার কারণে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল জামাল নজরুল ইসলাম।
কৈশোরে প্রথমে কলকাতার মডেল স্কুলে, পরবর্তীকালে কলকাতার শিশুবিদ্যাপিঠে তিনি চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষালাভ করেন। তারপর আবার মডেল স্কুলে ফিরে আসেন। এরপর পরিবারের সঙ্গে চট্টগ্রামে এসে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে তাঁকে ডাবল প্রমোশন দিয়ে সরাসরি ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করে নেওয়া হয়। নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষালাভের পর তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে লরেন্স হয়ে তিনি সিনিয়র কেমব্রিজ ও হায়ার সিনিয়র কেমব্রিজ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
এগুলো বর্তমানে ও-লেভেল এবং এ-লেভেল পর্যায়ের। এরপর লরেন্স পাঠ সমাপ্ত করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি অনার্স শেষ করেন।
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের শিক্ষক ফাদার গোরে গণিতের জটিল বিষয়গুলি সরলভাবে বুঝিয়ে দিতেন বলে তিনি আজীবন তাঁকে মনে রেখেছিলেন। গোরের সঙ্গে জামাল তাঁর ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘গণিতকে এমনিতেই অনেকে ভয় পায়। কিন্তু এটির প্রতি আমার ছিল অসীম আগ্রহ ও ঝোঁক। এ কারণেই বোধহয় তিনি আমাকে পছন্দ করতেন।’ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে গণিতশাস্ত্রে ট্রাইপস করতে জামাল ইংল্যান্ডে যান। তিন বছরের কোর্স তিনি দুই বছরেই শেষ করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থ888sport apkে দ্বিতীয়বার স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এখান থেকেই মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৬০ সালে। সেখানে তাঁর সহপাঠী ছিলেন পরবর্তীকালে বিখ্যাত ভারতীয় গণিতবিদ জয়ন্ত বিষ্ণু নারলিকার (জে. বি. নারলিকার, জন্ম ১৯৩৮)। সহপাঠী ছিলেন ব্রায়ান জোসেফসন (জন্ম ১৯৪০), যিনি তাঁর পিএইচ.ডি থিসিসের জন্য মাত্র ৩৩ বছর বয়সে, ১৯৭৩ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল 888sport app download bd পান। সহপাঠী ছিলেন রসায়নবিদ জন পোপলও। তিনিও ১৯৯৮ সালে রসায়নে নোবেল 888sport app download bd পান।
কর্মময় জীবন
ড. ইসলাম এক কর্মময় জীবন কাটিয়েছেন। তিনি লন্ডনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড ম্যাথমেটিক্স অ্যান্ড থিওরেটিক্যাল ফিজিক্স (প্রায়োগিক গণিত এবং তাত্ত্বিক পদার্থ888sport apk বিভাগ) থেকে পিএইচ.ডি ও ডি.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন যথাক্রমে ১৯৬৪ ও ১৯৮২ সালে। কর্মজীবনে ড. ইসলাম ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল ফেলো ছিলেন। ষাটের দশকে কেমব্রিজে রিলেটিভিস্টিক কোয়ান্টাম বলবিদ্যার জনক পল ডিরাক স্বয়ং তাঁকে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার ক্লাস নিতে দেন, কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্ত্ব (ফিল্ড থিওরি) পড়েছেন জন পলকিংহর্নের কাছে, যিনি কোয়ার্ক তত্ত্বে বিশেষ অবদান রেখেছেন। ১৯৭১ ও ১৯৭২ সালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজিতে অতিথি অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে জামাল নজরুল ইসলাম লন্ডনের কিংস কলেজে ফলিত গণিতের প্রভাষক, ১৯৭৫-১৯৭৮ সালে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে সায়েন্স রিসার্চ ফেলো এবং ১৯৭৮-১৯৮৪ সালে লন্ডনের সিটি ইউনিভার্সিটিতে প্রথমে প্রভাষক ও পরে রিডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬৮, ১৯৭৩ এবং ১৯৮৪ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটনে ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও অধ্যাপনা শেষে ১৯৮৪ সালে স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে এসে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে যোগ দেন। এখানে তিনি রিসার্চ সেন্টার ফর ম্যাথমেটিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেস (RCMPS) নামে একটি বিশ্বমানের গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ছিলেন। ১৯৮৯ সালে আবদুস সালাম এই কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন। এমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করে গেছেন অধ্যাপক ইসলাম। এখানে কোনো কোনো কনফারেন্সে একসঙ্গে ১২ নোবেল লরিয়েট পর্যন্ত এসেছিলেন।
ড. ইসলাম তাঁর ফুফাত ভাই সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর উজ্জ্বল 888sport sign up bonus 888sport liveে লিখেছিলেন, ‘সারাজীবন 888sport apkের জটিল বিষয় নিয়ে গবেষণা করলেও 888sport live football-সংস্কৃতি, দর্শন-চিত্রকলা এসবের প্রতিও আমার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। এর মূলে রয়েছে আমার পারিবারিক প্রভাব। … আমার এ আগ্রহের ফলে কলকাতার অনেক বিখ্যাত গুণীর সঙ্গে আমার আত্মীয়তার মতো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই যে 888sport live chatী-888sport live footballিকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠার বিষয়টি, এর পেছনেও ওয়ালী ভাইয়ের বিশেষ প্রভাব থাকবে – এটাই স্বাভাবিক। এরই ধারাবাহিতায় রবীন্দ্রনাথের রচনার প্রতি আমার বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এরপর প্রাচ্য পাশ্চাত্যের অনেক 888sport live footballিক ও দার্শনিক আমাকে এতটাই মুগ্ধ করেছেন ও আলোড়িত করেছেন যে, আমি মহাবিশ্বের চূড়ান্ত পরিণতি নিয়ে যেমন ভাবি, তেমনি ভাবি আমাদের সমাজ সভ্যতা নিয়ে। … নিরন্তর এই ভাবনা থেকে হয়তোবা ভালো কিছু সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।’
গবেষণার ক্ষেত্র : ওয়াইডার বাট নট নেসেসারিলি ডিপার
জীবিত না থাকায় চিন্তাধারার গভীরতাকে বোঝার জন্য জামাল নজরুলকে তাঁর রচিত বই এবং প্রকাশিত 888sport liveমালা, সাক্ষাৎকারগুলো ছাড়া বিচার করার কোনো উপায় নেই। এটা অবশ্য যৌক্তিক পথও। সে-সময় বিশ্ববিখ্যাত গবেষণা জার্নালগুলির আদর্শমান বজায় রাখতেই সম্পাদকরা প্রতিষ্ঠিত 888sport apkীদের যাচাইয়ের পর গবেষণাপত্রগুলি ছাপানোর উদ্যোগ নিতেন। জামাল নজরুল ইসলাম তাঁর গবেষণা 888sport liveগুলি জমা দিয়েছেন ফ্রেড হয়েল, স্টিফেন হকিং, মার্টিন রিজের মতো বিখ্যাত 888sport apkীদের কাছে। পঞ্চাশ বছরের বৈজ্ঞানিক জীবনে তিনি ধ্রুপদী সব 888sport apkধারার ওপর কাজ করে গেছেন। তন্মধ্যে আছে কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্ব, আপেক্ষিকতার সূত্র, নক্ষত্রের গঠন, মহাবিশ্ব তত্ত্ব। তবে প্রধান বিষয় হচ্ছে আপেক্ষিকতাবাদ ও মহাবিশ্বতত্ত্ব। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমার গবেষণার ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত হয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি, ওয়াইডার, বাট নট নেসেসারিলি ডিপার।’
ড. ইসলামের পিএইচ.ডি থিসিস ছিল পার্টিকেল ফিজিক্স বা মৌলিক কণার ওপর। এর তিন-চার বছর পরই তিনি আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি বা সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীকালে এর সঙ্গে যুক্ত হয় কসমোলজি। মূলত এই তিনটিই হচ্ছে তাঁর আগ্রহ ও কাজের মূলক্ষেত্র। পরে অবশ্য ফ্লুইড ডায়নামিক্স বা প্রবাহী গতিবিদ্যা নিয়েও কাজ করেছেন। তাঁর রচিত পঞ্চাশটিরও বেশি গবেষণাপত্র রয়েছে। গবেষণাপত্রগুলি অধিকাংশই প্রকাশিত হয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠিত 888sport apk জার্নালে। পিএইচ.ডি শেষে তিনি দু-বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডে চলে যান। মেরিল্যান্ড থেকে কেমব্রিজে ফিরে ড. জামাল জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটির ওপর গবেষণা শুরু করেন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি তা অব্যাহত রাখেন।
সেখানেই কোয়ান্টাম কসমোলজির গবেষক স্টিফেন হকিংয়ের সঙ্গে পরিচয়। এই পরিচয় তাঁকে কসমোলজির প্রতি আরো আগ্রহী করে তোলে। ১৯৭১ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্বখ্যাত ক্যালটেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। সেখানেই বিশিষ্ট পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যানের সঙ্গে পরিচয় এবং তাঁর সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ কিছু সময় কাটান। তিনি এক জায়গায় বলেছেন, ‘ফাইনম্যান দম্পতি একবার আমাকে সস্ত্রীক নৈশভোজে নিমন্ত্রণ করেন। তাঁর স্ত্রী আমাদের একটি মেক্সিকান ট্যাপেস্ট্রি উপহার দেন যেটা এখনও এই বাড়িতে (চট্টগ্রামে) আছে।’ এরপর তিনি আবার ফিরে যান প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওখানে পদার্থ888sport apkী ফ্রিম্যান ডাইসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়। ডাইসন ড. জামালের কাজ সম্পর্কে খুব আগ্রহী ছিলেন। ফাইনম্যান, ডাইসন এই দুই 888sport apkী তাঁর সম্পর্কে অতি উচ্চ ধারণাই পোষণ করতেন। ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডে ফিরে এসে ইউনিভার্সিটি অব কার্ডিফে আবার আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি নিয়ে কাজ শুরু করেন। ৪০ বছরের মতো দীর্ঘ সময় ধরে আর কেউ আইনস্টাইন উপস্থাপিত সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করেননি বলে তার কাছ থেকে জানা যায়। তাঁর অবদানকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথাক্রমে তাত্ত্বিক কণা পদার্থবিদ্যা, কনফর্মাল মহাকর্ষ তত্ত্ব, মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ ও মহাজাগতিক ধ্রুবক ল্যামডা –
তাত্ত্বিক কণা পদার্থবিদ্যা : অধ্যাপক ইসলাম তাঁর গবেষণা কর্মকাণ্ড কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্ব দিয়ে শুরু করেছিলেন। নোবেল বিজয়ী পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান বিভিন্ন মৌলিক কণার পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার পদ্ধতি মাপতে এক ধরনের চিত্রের উদ্ভাবন করেছিলেন যাকে আমরা এখন বলি ফাইনম্যান ডায়াগ্রাম। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় জামাল নজরুল ফাইনম্যান ডায়াগ্রাম নিয়ে গবেষণা করেন। ফাইনম্যান ডায়াগ্রামে ক্ষুদ্র মৌলিক কণাগুলির অংশগ্রহণের বিভিন্ন তীব্রতা আছে। এই তীব্রতা পরিমাপে সোভিয়েত 888sport apkী নোবেল বিজয়ী লেভ লান্ডাউ ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্যানলি মান্ডেলস্ট্যাম কিছু কৌশলের উদ্ভাবন করেছিলেন, জামাল ইসলাম সেই কৌশলগুলির বৈশিষ্ট্যের ওপর কয়েকটি 888sport live প্রকাশ করেন।
কনফরমাল মহাকর্ষ তত্ত্ব : ষাটের দশকের শেষে হয়েল ও নারলিকারের নতুন কনফরমাল মহাকর্ষ তত্ত্বের ওপর জামাল নজরুল বেশকিছু 888sport live লেখেন। কনফরমাল তত্ত্বে আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা সূত্রগুলির সঙ্গে একটি বাড়তি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। এটি হলো বিখ্যাত অস্ট্রিয়ান 888sport apkী ও দার্শনিক আর্নেস্ট মাখের তত্ত্ব। মাখ তাঁর তত্ত্বের মাধ্যমে হিসাব করে দেখিয়েছেন যে, একটি বস্তু যে পরিমাণ জড়তা অনুভব করে তার পরিমাণ বিশ্বের সমগ্র পদার্থের সমানুপাতিক। আরেকভাবে বললে, স্থানীয় প্রাকৃতিক নিয়মাবলি মহাবিশ্বের বৃহৎ গঠনের ওপর নির্ভরশীল। মাখের তত্ত্ব আরো বলে যে, মহাকর্ষতত্ত্বে প্রাপ্ত এ-ধ্রুবকটি সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। মহাকর্ষীয় ধ্রুবকে এর মানের ওপর মহাকর্ষীয় মিথস্ক্রিয়ার তীব্রতা নির্ভর করার কারণেই সময়ের সঙ্গে মহাকর্ষীয় বলের মানের পরিবর্তন হবে। তবে এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ এই ব্যাপারটার মীমাংসা করতে পারেনি। একটি অসীম মহাবিশ্বে অসীম জড়তার উদ্ভব ঘটবে। ফলে কোনো কিছুই নড়াচড়া করবে না। বিশ্বের সসীমতা ধারণার পেছনের এটি বেশ বড় কারণ। মাখের যুক্তিতর্কে কোয়ান্টাম কসমোলজির কতগুলি প্রাথমিক ধারণা অন্তর্ভুক্তি, যার উদ্দেশ্য হলো কীভাবে শূন্যতা থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে একটি বিশ্বের উদ্ভব ঘটেছিল, তা বর্ণনা করা। এই ধরনের কিছু তত্ত্ব স্বল্প আয়তনে বিশ্বের ভবিষ্যদ্বাণী করে, যা অধিকতর সম্ভাবনাময় উচ্চ আয়তনের একটি থেকে। একটি অসীম বিশ্বেও অস্তিত্বে আসার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। হালকাভাবে বলতে গেলে, এর শক্তি অসীম হবে, এবং কোনো কোয়ান্টাম ওঠানামা এই পরিমাণ সমাবেশ ঘটাতে পারে না। ঐতিহাসিকভাবে, একটি সসীম বিশ্বের ধারণাটি তার নিজস্ব বাধার মধ্যে পড়েছিল। প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল একটি প্রান্তের। অ্যারিস্টটল যুক্তি দিয়েছিলেন যে, মহাবিশ্ব সসীম এই কারণে যে, একটি পরম রেফারেন্স ঠিক করার জন্য একটি সীমানা প্রয়োজন, যা তার বিশ্বদর্শনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সমলোচকরা আশ্চর্য হয়েছিলেন কিন্তু প্রান্তের কি ঘটে ভেবে (সায়েন্টিফিক আমেরিকান, ১৯৯৯)।
সাধারণ আপেক্ষিকতার আইনস্টাইন-ম্যাক্সওয়েল সূত্র :
১৯৭০-এর দশকে ড. জামালের গবেষণায় আবার পরিবর্তন দেখা গেল। এবার তিনি বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে সাধারণ আপেক্ষিকতার আইনস্টাইন-ম্যাক্সওয়েল সূত্র সমাধানে কৌতূহলী হলেন। আপেক্ষিকতা তত্ত্বে আইনস্টাইনের সমীকরণগুলির সঙ্গে একটি তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্র জুড়ে দিলে সেগুলিকে আইনস্টাইন-ম্যাক্সওয়েল সমীকরণ বলে। তিনি সাধারণ আপেক্ষিকতার বিচারে ঘূর্ণায়মান ব্যবস্থার ওপর পরপর পাঁচটি মৌলিক গবেষণা 888sport live লিখলেন। ১৯৭৬ সালে ‘A class of approximate rotating solutions of Einstein’s Equations’ 888sport liveটিতে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল। এগুলি হচ্ছে : যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (ক্যালটেক), লন্ডনের কিংস কলেজ, কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডনের সিটি কলেজ। এই দশকে এগুলিতেই তিনি কাজ করেছেন। ক্যালটেকে তাঁর আমন্ত্রণকারী ছিলেন বিখ্যাত আপেক্ষিকতাবিদ কিপ থর্ন। এর মধ্যে কয়েকটি বছর তিনি কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়েছিলেন যেখানে ফ্রেড হয়েলের এক ছাত্র এন. সি. বিক্রমাসিংহে কাজ করতেন, যিনি পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব সংক্রান্ত মৌলিক কাজ করেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে জামাল নজরুলের সখ্য ছিল।
নির্দিষ্ট কৌণিক গতিবেগে ঘূর্ণায়মান ধূলিকণা কি মহাবিশ্বে রয়েছে?
প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে জামাল নজরুল একটি গবেষণাপত্র তৈরি করেছিলেন। তিনি বললেন, ‘এই অবস্থাটা জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলেও সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের কিছু সূক্ষ্ম জিনিস বুঝতে এই সমস্যার সমাধান প্রয়োজন।’ তিনি অবশ্য আগেই জানতেন বিশ্বে ঘূর্ণায়মান বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি আছে, কৃষ্ণবিবরের চারদিকে চ্যাপ্টা চাকতি থেকে আরম্ভ করে ঘূর্ণায়মান নিউট্রন নক্ষত্রের চারদিকের ক্ষেত্র – এসব জায়গায় আইনস্টাইন-ম্যাক্সওয়েল সূত্রের সঠিক সমাধান দরকার। তাই ঘূর্ণায়মান ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আপেক্ষিকতা তত্ত্বের প্রয়োগের ব্যাপারে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
এই বিষয়ে তাঁর শেষ 888sport liveটি জমা পড়ে লন্ডনের সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে। এই 888sport liveটি তিনি জমা দেন স্টিফেন হকিংয়ের মাধ্যমে। কাজটিতে জামাল নজরুল ইসলাম আইনস্টাইন-ম্যাক্সওয়েল সমীকরণের সিলিন্ডার-প্রতিসাম্যযুক্ত পরিস্থিতির একটি যথাযথ সমাধান দেন। এই 888sport liveগুলির ধারাবাহিকতায় ১৯৮৫ সালে তাঁর বই Rotating Fields in General Relativity বের হয় কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে। বস্তুত এই গবেষণা প্রকাশনাগুলিই আপেক্ষিকতাবিদ হিসেবে জামাল নজরুলকে প্রতিষ্ঠিত করে।
মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ
মহাবিশ্বের পরিণতিতে প্রভাববিস্তারী গুরুত্বপূর্ণ চলক আছে সবমিলে
তিনটি –
ক. হাবলের ধ্রুবক (H) : এ থেকে আমরা মহাবিশ্ব প্রসারণের হার সম্বন্ধে জানতে পারি।
খ. ওমেগা (Ω) : এ থেকে আমরা মহাবিশ্বে পদার্থের গড় ঘনত্ব সম্বন্ধে ধারণা পাই।
গ. মহাজাগতিক ল্যামডা (Λ) : এটি শূন্যতায় থাকা বিকর্ষণ শক্তি (কিংবা যা মহাবিশ্বকে ত্বরণায়িত করে তুলছে)।
মহাজাগতিক ল্যামডা (Λ) : এটি নিয়ে প্রাথমিক কাজের জন্য আমরা এই বাঙালি 888sport apkীর কাছে ঋণী। জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৭৭ সালের দিকে তাঁর বিখ্যাত গবেষণা 888sport live ‘Possible Ultimate Fate of the Universe’ প্রকাশ করেন। মহাবিশ্বের অন্তিম পরিণতি নিয়ে এই 888sport liveটি The Quarterly Journal of Royal Astronomical Society পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। লেখাটির প্রারম্ভেই চিরপ্রসারমান মহাবিশ্বের ইঙ্গিত আছে। তারপর বলছেন, ‘আমাদের গ্যালাক্সির সমস্ত নক্ষত্রের মৃত্যু আগামী ১০০ বিলিয়ন (১০ হাজার কোটি) বছরের মধ্যেই ঘটবে। পরবর্তীকালে একটি গ্যালাক্সিপুঞ্জের মধ্যে অবস্থিত সব গ্যালাক্সি তাদের মহাকর্ষশক্তিকে তরঙ্গের আকারে বিকিরণ করে একে অপরের সঙ্গে মিশে গিয়ে একটা ১০১৪ বা ১০১৫ সৌরভরের কৃষ্ণবিবর সৃষ্টি করবে। এজন্য সময় লাগবে ১০৩৪ বছর। আর ১০৪০ বছর পর মহাজগতের তাপমাত্রা ১০-২০ কেলভিন বা পরম শূন্য তাপমাত্রার খুব কাছাকাছি থাকবে। বর্তমানে মহাবিশে^র ত্বরণায়িত প্রসারণ আবিষ্কারের পর এই ধারণার কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে। যেমন মনে করা হচ্ছে, ১০০ বিলিয়ন বছরের মধ্যে আমাদের স্থানীয় গ্যালাক্সিপুঞ্জ ছাড়া আর সব গ্যালাক্সি দৃশ্যমান দিগন্তের ওপারে হারিয়ে যাবে। তবে স্থানীয় গ্যালাক্সিগুলো, যেমন এন্ড্রোমিডা, আমাদের গ্যালাক্সি, এম৩৩ গ্যালাক্সি মিলে একটা বড় গ্যালাক্সি তৈরি হবে।
বছর দুয়েক পরে ব্রিটেনের রয়েল অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটির বিখ্যাত ভিস্টাস ইন অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে একই বিষয়ে তাঁর আরেকটি বিখ্যাত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। তাঁর 888sport liveগুলি 888sport apkমহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল। তখন জ্যোতির্বিদ্যার বিখ্যাত সাময়িকী স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ ম্যাগাজিন থেকে অধ্যাপক জামাল নজরুলকে অনুরোধ করা হলে তিনি তাঁর সাড়া জাগানো 888sport liveটির একটি ‘জনপ্রিয় ভাষ্য’ তৈরি করেন। তাঁদের অনুরোধে তিনি একটি 888sport live লেখেন ‘দ্য আলটিমেট ফেট অফ দ্য ইউনিভার্স’ বা বাংলায় ‘মহাবিশ্বের নিয়তি’, যা ১৯৭৯ সালে, স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ মাসিকে প্রকাশিত হয়। এটি স্প্যানিশ ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর কাজ আরেক প্রতিভাবান 888sport apkীকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করেছিল সে-সময়। তিনি হলেন ফ্রিম্যান ডাইসন। তিনি জামাল নজরুল ইসলামের গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে নিজের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন ‘সীমাহীন সময় : উন্মুক্ত মহাবিশ্বে পদার্থবিদ্যা এবং জীববিদ্যা’ শিরোনামে। গবেষণাপত্রের বড় অংশ জুড়ে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের কাজের উল্লেখ ছিল। ডাইসন কেবল জামালের রেফারেন্স দিয়েই ক্ষান্ত হননি, পরবর্তীকালে অধ্যাপক ইসলামকে এ-বিষয়ে একটি জনপ্রিয় ধারার বই লিখতেও উৎসাহিত করেন। এর ফলেই ১৯৮৩ সালে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের সর্বজনবোধ্য গ্রন্থ দ্য আলটিমেট ফেট অব দ্য ইউনিভার্স।
আজ থেকে ৩০ বছর আগে এই প্রসঙ্গের অবতারণা ও বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ একটি যুগান্তকারী ঘটনা। বিশেষত একজন বাঙালি যখন কাজটি করেন তখন তা চমকপ্রদ বইকি। মনে রাখতে হবে, তখনো স্টিফেন হকিং এ ব্রিফ হিস্টোরি অব টাইম লেখেননি। শুধু কার্ল সাগানের কসমস প্রকাশিত হয়েছে। সাধারণের বোধগম্য এই ধরনের বই বের করা তখন বিশাল ব্যাপার। এই বইয়ের দশম অধ্যায়টির নাম হচ্ছে ‘প্রাণ ও সভ্যতার ভবিষ্যৎ’। সেখানে আছে, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে মানবসভ্যতা যদি কোনো ঘূর্ণনশীল কৃষ্ণবিবর খুঁজে পায়, তবে সেখান থেকে পেনরোজ পদ্ধতি ব্যবহার করে শক্তি আহরণের মাধ্যমে সেই সভ্যতা বেঁচে থাকতে পারে। এই মুহূর্তে আমাদের গ্যালাক্সি একটি গতিময় বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যা কি না আগামী ১০১২ থেকে ১০২৭ বছর পর্যন্ত চলবে, এবং অমোঘ পরিণতিতে পুরো গ্যালাক্সিই একটিমাত্র কৃষ্ণবিবরে পরিণত হবে।
মহাবিশ্বের পরিণতি নিয়ে যে সময়-ব্যাপ্তির কথা আমরা জানি তাতে জীবনের ভবিষ্যৎ আলোচনা কতখানি প্রাসঙ্গিক? এরকম একটি প্রশ্নের উত্তরে জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘তা বলা খুবই মুশকিল। তবে জীবনের অন্যতম শর্ত হলো শক্তির প্রাপ্যতা। তবে এটা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। আরো কয়েকশ কোটি বছর সূর্য থাকবে এবং শক্তির অভাব হবে না। তারপর সভ্যতাকে অন্য কোনো নক্ষত্রের খোঁজে যেতে হবে। ১০১১ বছরের মধ্যে সব নক্ষত্র শেষ হয়ে যাবে। তখনো কোনো সভ্যতার পক্ষে ঘূর্ণায়মান একটি কৃষ্ণবিবর থেকে শক্তি আহরণ করা সম্ভব হবে যেমনটি পেনরোজ দেখিয়েছেন। নীতিগতভাবে, এভাবে ১০১০০ বছর কাটানো যাবে। এভাবে কোনো না কোনো কাঠামোয়, জীবনের টিকে থাকাটা অসম্ভব নয় বলেই মনে হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
জামালের রচনা ও গবেষণাপত্র ওই সময়ের 888sport apkী, দার্শনিক ও 888sport apk-কল্পকাহিনি লেখকদের খুবই প্রভাবিত করেছিল। তন্মধ্যে প্রিন্সটন বিশ^বিদ্যালয়ে কর্মরত ব্যতিক্রমী 888sport apkী ফ্রিম্যান ডাইসন জামাল নজরুল ইসলামের লেখায় অনুপ্রাণিত হয়ে ওই 888sport liveটি লেখেন ‘Time without end : physics and biology in an open universe’। নোবেল বিজয়ী স্টিভেন ওয়াইনবার্গ একবার বলেছিলেন, ‘মহাবিশ্ব যতই আমাদের বোধগম্য হচ্ছে, ততই মনে হচ্ছে এর কোন অর্থ নেই।’ ডাইসন তাঁর 888sport liveে ওয়াইনবার্গকে কটাক্ষ করে লিখেছেন, তাঁর (ডাইসন) এই অসীম সম্ভাবনাময় মহাবিশ্ব ওয়ানবার্গের নৈরাশ্যের মহাবিশ্ব থেকে একেবারেই ভিন্ন। ডাইসনের ওই 888sport live জানালো আশাবাদী রূপায়ণ : ভবিষ্যতের অন্ধকার মহাবিশ্বে মানবসভ্যতার অসীম সময়ের অবস্থানের কথাই বলা হয়েছে। উল্লেখ্য আইনস্টাইন মহাবিশ্বকে স্থিতিশীল রাখার জন্য মহাজাগতিক ধ্রুবক ল্যামডাকে (Λ) তাঁর মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র সমীকরণে ঢুকিয়েছিলেন। ১৯২৯ সালে জ্যোতির্বিদ এডউইন হাবল যখন দেখালেন যে, মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে, তখন আইনস্টাইন এই ধ্রুবকটিকে একটি বিরাট ভুল বলে অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানের ত্বরণশীল বিশ্বসৃষ্টি তত্ত্বে মহাবিশ্বের ক্রমশ দ্রুতিশীল প্রসারণের পেছনে এই ধ্রুবকটিকে দায়ী করা হয়। এই ধ্রুবকটিই হচ্ছে সেই কৃষ্ণশক্তি বা ডার্ক এনার্জির প্রতিনিধি।
১৯৮৩ সালে জামাল নজরুল ধ্রুপদী পদ্ধতিতে এই ধ্রুবকটির মান নির্ধারণ করতে চেয়েছিলেন। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে তিনি দেখালেন, মহাজাগতিক পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ল্যামডা ধ্রুবকের মান প্রতি বর্গমিটারে ১০-৫০ এর কম হবে। বর্তমান পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী এই ধ্রুবকটির মান প্রতি বর্গমিটারে ১০-৫২। দুটি মান খুব বেশি পৃথক নয়। এখানে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ও চমকপ্রদ তা হলো, তার উচ্চসীমা নির্ধারণের পদ্ধতিটি।
ড. জামাল বুধগ্রহের অনুসূরের পরিবর্তন বা চলন অবলম্বন করে এই সীমাটি বের করেছিলেন। উল্লেখ্য, কোনো গ্রহের সূর্যের নিকটতম বিন্দুকে সেই গ্রহের অনুসূর বলা হয়। এই বুধগ্রহের অনুসূর চলনকে আইনস্টাইন সাধারণ আপেক্ষিকতা দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পেরেই নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, তাঁর আপেক্ষিকতা তত্ত্ব সঠিক। তাই অধ্যাপক ইসলাম একেবারে মূলে ফিরে গিয়ে দেখাতে চাইলেন, এভাবেও মহাজাগতিক ধ্রুবক গণনা করা সম্ভব। স্টিফেন হকিংয়ের পরামর্শে তিনি কাজটি করেছিলেন। এই কাজের ওপর গবেষণাপত্রটি প্রকাশের জন্য ব্রিটিশ রাজকীয় জ্যোতির্বিদ মার্টিন রিজের কাছে সেটি জমা দেন। ১৯৮৩ সালে ফিজিক্যাল লেটার সাময়িকীতে তা প্রকাশিত হয়।
অনেক পরে, ২০০০-এর শূন্য দশকে, ‘ব্রান্স-ডিকি মহাজাগতিক তত্ত্বে’র আলোকে জামাল নজরুল মহাজাগতিক ধ্রুবক প্রসঙ্গে আবার ফিরে এসেছিলেন। ব্রান্স-ডিকি হচ্ছে হয়েল-নারলিকর কনফরমাল মহাকর্ষ তত্ত্বের মতোই একটি কনফরমাল তত্ত্ব। মহাবিশ্বের ত্বরণে ল্যামডার ভূমিকা ক্রমেই গুরুত্ব পাওয়া সম্পর্কে অধ্যাপক ইসলাম সচেতন ছিলেন। এ-সময়ে চট্টগ্রামে বসেই তিনি তাঁর সুপাঠ্য An Introduction to Mathematical Cosmology শেষ করতে পেরেছেন। এটিও প্রকাশ করেছে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি, ১৯৯২ সালে। জামাল নজরুলের বুদ্ধিবৃত্তিক গভীরতা ও সাহস অনুধাবন করা যায় এখান থেকেই যে, বিশ্বের নেতৃস্থানীয় 888sport apkী : আবদুস সালাম, সুব্রাহ্মনিয়াম চন্দ্রশেখর, রিচার্ড ফাইনম্যান, স্টিফেন হকিংয়ের সান্নিধ্যে এলেও কাজ করেছেন একা।
উল্লেখ্য, জামাল নজরুলের প্রতি ভারতীয় বংশোদ্ভূত নোবেলজয়ী জ্যোতির্পদার্থ888sport apkী চন্দ্রশেখরের স্নেহের দৃষ্টি ছিল। দু-একটি 888sport live বাদ দিলে তাঁর কোনো সহ-লেখক নেই, যদিও প্রতিটি 888sport live জমা পড়েছে খ্যাতনামা 888sport apkী দ্বারা। এই বৈশিষ্ট্যই তাঁকে নিঃসঙ্গ করে তুলেছে, 888sport appsে এসেও তাঁর নিঃসঙ্গতা ঘোচেনি। অথচ এসেছিলেন হয়তো সেজন্যই। এই উপমহাদেশের আরো দুজন খ্যাতনামা 888sport apkী আবদুস সালাম ও জয়ন্ত নারলিকরের মতো তিনিও একটি তাত্ত্বিক গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে তৃতীয় বিশ্বের গবেষকরা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। ফিরে আসার সময় যোগাযোগের প্রাযুক্তিক সুবিধা না থাকলেও কাজে বিরতি দেননি তিনি।
জামাল নজরুলের মৃত্যুর পর এক সাক্ষাৎকারে ডাইসন গোলকের জনক ফ্রিম্যান ডাইসন জামাল নজরুল ইসলামকে ‘অরিজিনাল ম্যান’ বলে অভিহিত করেন, যিনি 888sport appsকে আধুনিক 888sport apkের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে দেশে ফিরেছিলেন। ফিরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করেছেন বিশ্ব888sport apk সমাজের সঙ্গে যুক্ত হতে।
মহাকালের মঞ্চে মহাবিশ্বের অন্তিম পরিণতি আসলে কী? প্রশ্নের উত্তরে ফ্রিম্যান ডাইসন বলেছেন, মহাবিশ্বটা অবিরত অপরিবর্তনীয় ধ্রুব-গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে, তখনকার দিনে এমন ধারণাই ছিল। এমন মহাজাগতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে জামাল আর আমি মহাবিশ্বের পরিণতি নিয়ে অঙ্ক কষেছিলাম। কিন্তু সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ থেকে আমরা জানতে পেরেছি, মহাজগৎটা আরো ক্ষিপ্রগতিতে প্রসারিত হচ্ছে। সুতরাং আগের মডেল এখন ভুল। সতত পরিবর্তিত গতিতে সম্প্রসারিত মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ পরিণতিটা হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কী বা কারণ আর কী-ই বা তার পরিণতি – এই ত্বরণ সম্পর্কে অনেক জানাশোনাই বাকি। জামাল নজরুল ইসলামের মৃত্যুর পর আরেক 888sport apkী আওয়ার ফাইনাল সেঞ্চুরির লেখক ও জ্যোতির্বিদ মার্টিন রিজ বলেন : ১৯৬৯ সালে আমি লিখেছিলাম, আমাদের মহাবিশ্বটা যখন প্রসারণ থামিয়ে ধ্বংসমুখী হবে তখন ঠিক কী ঘটতে পারে। জামাল বিপরীত ভাবনাটাকে বিবেচনায় নিয়েছিলেন। সেটা হলো – মহাবিশ্বটা অনন্ত সময় ধরে প্রসারিত হতে থাকবে। অবশ্য চিরকাল প্রসারণশীল মহাবিশ্বের ধারণাটা এখন আর ধোপে টিকছে না, এটা পরিষ্কার। মার্টিন রিজ স্বীকার করেছেন, তাঁর অবদানের কথা উল্লেখ করতে হলে তাঁর গ্রন্থগুলির কথা বলতেই হয়। তাঁর গবেষণার ব্যাপারে মার্টিন রিজ আরো বলেন, জামাল যা বলে গেছেন, তার বেশিরভাগই অপরিবর্তিত থাকবে। তবে মূল তারতম্য দুটো ক্ষেত্রে। এক. জামাল যেমনটা ভেবেছিলেন তার চেয়ে মাত্রাধিক হারে হ্রাস পাবে মহাবিশ্বের গড় ঘনত্ব। দুই. দূর ভবিষ্যতে আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথ, অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথ এবং এদের ছোট্ট ছোট্ট সহচরের ধ্বংসাবশেষ ছাড়া আর সবকিছুই আমাদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যাবে।
অর্থের মাত্রাতিরিক্ত দৈন্য খারাপ, মাত্রাতিরিক্ত অর্থ আরো খারাপ
পৃথিবীতে বৌদ্ধিকভাবে যার অবস্থান এরকম, তিনি হঠাৎ করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন দেশে ফিরে আসার। জানা যায়, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে পাওয়ার জন্য এক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, 888sport app নয়, চট্টগ্রামই গন্তব্য এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে নেওয়ার জন্য কিছু করলে ভালো হয়। এদেশের অদ্ভুত সব জটিলতার কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ888sport apk বিভাগে তাঁকে নেওয়া সম্ভব হয়নি। গণিতে একটি অধ্যাপক পদ সৃষ্টি করে তাঁকে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সময়টা ছিল ১৯৮৪ সাল। ৩৫ বছরের বিদেশ বসবাসের ইতি টেনে ১৯৮৪ সালে স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে নিয়ে স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
বাড়িগাড়ি সব সম্পত্তি বেচে দিয়ে লাখ টাকা বেতনের প্রাপ্তি রেখে, কেমব্রিজ ছেড়ে তাও 888sport appয় নয়, একেবারে চট্টগ্রামে আসেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনাকে পেছনে ফেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে মাত্র দুই হাজার আটশো টাকার চাকরি নেন। ওঠেন 888sport appsের এক প্রান্ত চট্টগ্রাম শহরের সার্সন রোডে পাহাড়ি নিসর্গের মধ্যে পৈতৃক ত্রিতল আবাসে। মানতেই হবে, 888sport apkে যেকোনো পর্যায়ের গবেষকের জন্য দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত। শুধু আর্থিক নয়, সব বিবেচনাতেই এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু কেন তিনি হঠাৎ এভাবে চলে এলেন? দেশের প্রতি, ভাষার প্রতি প্রবল ভালোবাসা? কিন্তু বিদেশে থাকাকালে দেশের সবরকমের বিপর্যয় ও দুর্ঘটনায় তিনি এগিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন। এটা আসলেই এক অমীমাংসিত রহস্য! কখনো কখনো বাস্তবতা গল্পের চেয়েও অদ্ভুত মনে হয়। তা জামাল নজরুল ইসলামের জীবনের দিকে তাকালে বোঝা যায়। একটি বিষয় পরিষ্কার যে, অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্যপূর্ণ এই মানববিশ্বে বিদেশের মাটিতে তৃতীয় বিশ্বের প্রবাসী একজন মানুষকে শুধু জন্মস্থানের কারণে শত প্রতিভা থাকলেও স্বদেশ তাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয় না।
দেশে ফিরে আসার পর মুখোমুখি হওয়া সমস্যাগুলোর কথা এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন : ‘আমার পক্ষে দেশে ফিরে আসা সহজ হওয়ার আরেকটি কারণ হলো, আমাদের পরিবারের শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তি। তবে, অন্য আরেক ধরনের সংগ্রামের ভিতর দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে। সেটা হলো, দেশের বিদ্যায়তনিক ও বৌদ্ধিক পরিমণ্ডলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের সংগ্রাম। এ জন্য সত্যিই আমাকে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। এটা অবশ্য খুবই স্বাভাবিক। সব মিলিয়ে, নিজের দেশে থাকা ও কাজ করতে পারার তো আসলে কোনো বিকল্প নেই।’
প্রতিদিন কর্মস্থলে যেতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ট্রেনে, প্রবল ভিড় উপেক্ষা করে যে ট্রেনে একবার গেলে অনেককেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় – কোনোভাবেই এই বাহনে নয়। এখানে নানা আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যেও ড. ইসলাম দ্রুত আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর ম্যাথেমেটিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেস’ কেন্দ্রটি গড়ে তোলেন। এটির মাধ্যমে 888sport appsের শিক্ষিত সমাজের পরিসর বাড়াতে চেয়েছেন। এখানে সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও কনফারেন্স করেছেন, কখনো গণিত, পদার্থবিদ্যা; কখনো বা অর্থনীতির ওপর। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আগত খ্যাতিমান পদার্থ888sport apkী, আপেক্ষিকতত্ত্ববিদ এবং বিশ্বসৃষ্টি তাত্ত্বিকরা অনেক সময় কাটিয়ে গিয়েছেন। যেখানে রজার পেনরোজ, প্রফেসর সালাম, অমর্ত্য সেন, জিম মার্লিস, জাপানের আরাকিসহ অনেক নোবেলজয়ী পণ্ডিতেরও সমাগম ঘটেছে। এসব 888sport apkীকে দেখতে পাওয়া দেশের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। তাঁরা আসা-যাওয়ার মধ্যে থেকেছেন, কেউ জানতেও পারেননি। ড. জামাল মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন – বিদেশি সাহায্যে দেশের কোনো উপকার হবে না। 888sport live chatী সুলতানও বিশ্বাস করতেন, আদম সুরতে সে-কথা বিস্তারিত বলেছেন। ড. ইসলাম বলতেন, অর্থের মাত্রাতিরিক্ত দৈন্য খারাপ, মাত্রাতিরিক্ত অর্থ আরো খারাপ।
অধ্যাপক এ. এম. হারুন-অর-রশিদ তাঁর এক 888sport sign up bonusকথায় বলেছেন, ‘অধ্যাপক জে. এন. ইসলামের সাথে আমার প্রথম পরিচয়ের দিনটির কথা আমার এখনো মনে পড়ে। আমি তখন কণাপদার্থ888sport apkে বিখ্যাত ম্যান্ডেলস্টাম প্রতীকায়ন ((Mandelstam Representation) নিয়ে কাজ করছিলাম। এই প্রতীকায়নকে দ্বিত্ব বিচ্ছুরণ সম্পর্কও বলে (Double dispersion relation)। কাজটি ছিল, পায়ন-কণার ফটো-প্রোডাকশন প্রক্রিয়া নিয়ে। মজার ব্যাপার এই যে, এই কাজ করার সময়ে আমি জামাল নজরুলের একটি 888sport liveের সঙ্গে পরিচিত হই যেখানে তিনি পায়ন-নিউক্লিয়ন বিচ্ছুরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বর্ণালী আপেক্ষকের প্রান্তিক বক্ররেখার সীমা নির্ধারণ করেছিলেন। এই সীমানা জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, কেননা তা বিচ্ছুরণ আপেক্ষকের প্রসারণের অভিসারী অঞ্চল নির্ধারণ করে। এভাবেই আমার জে. এন. ইসলামের সঙ্গে প্রথম পরিচয় যা আমি এখনও ভুলতে পারি না।’
কবি প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন তাঁকে দীর্ঘদিন অনেক কাছ থেকে দেখেছিলেন এবং বলেছেন, ‘প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম ব্যতিক্রমী বাঙালি 888sport apkসাধক। তিনি গ্যালিলিও, নিউটন, আইনস্টাইনদের ধ্রুপদী ধারার এক জ্যোতির্পদার্থবিদ ও গণিতজ্ঞ। বাঙালিদের মধ্যে তাঁর পূর্বসূরি ছিলেন 888sport apkী সত্যেন্দ্রনাথ বসু। আর বিশ্ব888sport apkের আসরে অপর যে বাঙালি বিশ্বমানের মৌলিক অবদান রেখেছেন তিনি আচার্র্য জগদীশচন্দ্র বসু। পূর্বসূরি দুজনের মতোই জামাল নজরুল ইসলামও স্বদেশে থেকে মাতৃভাষায় 888sport apk সাধনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। বাংলাভাষার শ্রেষ্ঠ তিন 888sport apkসাধকের এই ঐকমত্য আমাদের জন্যে এক দিগদর্শন ও প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’
অনাবিল এক জীবন : তোমরা শুধু আমাদের পথ থেকে সরে দাঁড়াও
১৯৬০ সালের ১৩ই নভেম্বর তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। স্ত্রী ড. সুরাইয়া ইসলাম ছিলেন একজন ইতিহাসবিদ। একটি কনফারেন্সে তাঁদের দেখা, প্রেম ও পরিণয়। তাঁদের দুই মেয়ে। বড়টির নাম সাদাফ সাজ সিদ্দিকি আর ছোটটি নার্গিস ইসলাম – একজন মনোরোগবিদ, আরেকজন অণুজীববিদ। শোনা যায়, দীর্ঘ ৫৩ বছরের দাম্পত্য জীবনে জামাল নজরুল তাঁর স্ত্রীকে ছাড়া কোথাও যেতেন না। কোনো অন্ধকার সিঁড়ি দিয়ে চলার সময় সবসময় স্ত্রীর হাত ধরে রাখতেন।
তিনি ভালোবাসতেন রবীন্দ্রসংগীত, গজল আর পিয়ানোবাদন। বাবার কারণেই শৈশবে গণিত ও সংগীতে উৎসাহী হয়েছিলেন। তিনি ভালো গাইতে পারতেন, রবীন্দ্র-নজরুলের গান তো বটেই, গালিব-মীরের গজল কিংবা পুরনো দিনের গানও গেয়ে শোনাতেন। সেতার শিখতেও সময় দিয়েছেন। ওস্তাদ ইমরাত হোসেন চট্টগ্রামে তাঁর বাড়িতেই ছিলেন, পণ্ডিত বিজয় কিচলু তাঁর ঘরে গান শুনিয়ে ও আলাপ করে আনন্দিত হয়েছিলেন। ঘরে পিয়ানো ছিল। মাঝে মধ্যে বাজাতেন। বাড়িতে বন্ধুর ছোট মেয়েটিকে প্রতি শুক্রবার ‘গ্রাম ছাড়া ওই রাঙ্গামাটির পথ’ পিয়ানোতে বাজিয়ে শোনাতেন। অবাক করা ছবিও আঁকতেন। নিসর্গদৃশ্য, তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়, ফুল কিংবা অনুলিপি – সব কাজেই নৈপুণ্য চমকপ্রদ। এগুলির মধ্যে তাঁর দার্শনিক বোধের পরিচয় পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময় নিজ বক্তব্যে তিনি বারবার উল্লেখ করেছেন, ‘দেশের শিক্ষাব্যবস্থা প্রাথমিক থেকে উচ্চস্তর পর্যন্ত সংগীত শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। তাহলে দেশ পাবে পরিপূর্ণ মানুষ। উপকৃত হবে সমাজ, রাষ্ট্র। এ কারণেই সংগীত888sport live chatী ও শিক্ষকদের দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকে।’ সরল ভাবনার এই মানুষটি দিগ্বিজয়ী আলেকজান্দারের প্রতি দার্শনিক ডায়াজেনিসের বলা বিখ্যাত এক উক্তিকে পুনরাবৃত্তি করে সাহায্যকারী দেশগুলির উদ্দেশে বলতেন, ‘তোমরা শুধু আমাদের পথ থেকে সরে দাঁড়াও, আমাদের ভালোমন্দ আমাদেরকেই ভাবতে দাও। আমি মনে করি এটাই সর্বপ্রথম প্রয়োজনীয়।’
গণিত ও পদার্থ888sport apkের গবেষণায় তিনি কখনো সমাজ ও মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হননি। সম্ভবত আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির গণবিচ্ছিন্ন রূপ তাঁকে নির্জনবাসে ঠেলে দিয়েছিল। অত্যন্ত সমাজসচেতন এই 888sport apkী মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলিতে গবেষণা ও জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি মাতৃভূমির প্রতি তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য সুচারুভাবে পালন করেছিলেন। সেই দুঃসময়ে তিনি ব্রিটিশ সরকার এবং সেদেশের 888sport apkী ও বুদ্ধিজীবীদের 888sport appsের পাশে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, ছোট ছোট অর্জনেও উৎসাহ জোগাতেন অকুণ্ঠচিত্তে। ব্রিটিশ ও চীনের প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছিলেন একাত্তরে। গুরুত্ব পেয়েছিল তাঁর সেই চিঠি। কেননা, পশ্চিমে তখন তিনি প্রতিষ্ঠিত 888sport apkী। ২০০১ সালে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে একটি গুজব বাইরের এবং এদেশের কিছু গণমাধ্যম প্রবলভাবে ছড়াচ্ছিল। সে-সময় জামাল নজরুল ইসলাম গণিতের হিসাব কষে দেখান যে, প্রাকৃতিক নিয়মে সৌরজগতের সব গ্রহ এক সরলরেখা বরাবর চলে এলেও তার প্রভাবে পৃথিবীর কোনো ক্ষতি হবে না। এসব ঘটনা থেকে তাঁর গণসংশ্লিষ্টতা বোঝা যায়।
মহাবিশ্বের পথে শিকড়ের সন্ধানে
দ্য আলটিমেট ফেট অব ইউনিভার্স বইয়ের এক জায়গায় জামাল নজরুল ইসলাম লিখেছেন – ‘রাতের জীবরা দিনের আলোকে আকর্ষণীয় মনে করবে না, যেমন দূর ভবিষ্যতের অতিশীতল মহাবিশ্বের অজানা সচেতন প্রাণীরা আমাদের উষ্ণ মহাবিশ্বকে হয়তো খুব একটা আরামদায়ক হিসেবে দেখবে না। কিন্তু তবু, তাদের মধ্যে অল্প কয়েকজনকে হয়তো পাওয়া যাবে যাদের কল্পনাশক্তি প্রখর, তারা দূর অতীতের, মহাবিশ্বের দিকে ফিরে তাকাবে, দেখবে একটা সূর্যালোকপ্লাবিত পৃথিবীকে, যেখানে কয়েক কোটি বছরের শক্তি সরবরাহ নিশ্চিত, তারা সেই পৃথিবীকে এক স্বপ্নের জগৎ বলেই ভাববে। কিন্তু তাদের জন্য সেই স্বপ্নের জগৎ হারিয়ে গেছে, কোনদিন আর ফিরে আসবে না। বর্তমানে আমরা যারা এই স্বপ্নের পৃথিবীকে নিয়ে আছি, তারা কী করছি? আমরা একে অপরকে অত্যাচারে জর্জরিত করছি, নিজেদের ধ্বংসের জন্য পরমাণু মারণাস্ত্র তৈরি করছি, আর পৃথিবীর সম্পদকে অবাধে লুট করছি।’
বলা ভালো, ১৯৬৪ সালের পিএইচ.ডির বিষয়বস্তু এই ধরনের তাত্ত্বিক কণা পদার্থবিদ্যা বা কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্বের ওপরই কাজ করতেন যদি না বিখ্যাত জ্যোতির্888sport apkী ফ্রেড হয়েল ও তাঁর ছাত্র জয়ন্তবিষ্ণু নারলিকরের সান্নিধ্যে না আসতেন। তিনি ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ কেমব্রিজের ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোনমি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে গেছেন, যার পরিচালক ছিলেন ফ্রেড হয়েল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, জ্যোতির্বিদ ফ্রেড হয়েলের সঙ্গে স্টিফেন হকিং কাজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে সুপারভাইজার হিসেবে পাওয়া যায়নি; তবে, শাপে বর হয়েছিল, কেননা তার বদলে সুপারভাইজার হিসেবে পেয়েছিলেন ডেনিস সিয়ামা, আধুনিক মহাবিশ্বতত্ত্বের জনকদের একজনকে। স্টেডি স্টেট তত্ত্ব পরিত্যক্ত হলে এই তত্ত্বের প্রবক্তা ফ্রেড হয়েল ও নারলিকার সমকালীন 888sport apkীদের চাপে ছিলেন। জামাল নিজে স্টেডি স্টেট তত্ত্বের সমর্থক না হলেও ফ্রেড হয়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে তাঁর গায়েও আঁচ এসে লেগেছিল। হয়তো হয়েলের সঙ্গে সাহচর্যের কারণেই অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের মূল্যায়ন পশ্চিমে যতটা হওয়ার কথা, ততটা হয়নি। সেখানে অবস্থান করা তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছিল। শুধু এ-কারণেই তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন – তাঁর মতো মানুষের বেলায় এটা সম্ভবত সম্পূর্ণ ঠিক নয়।
কিন্তু এটাও সত্যি, তাঁর রচনা ও গবেষণাপত্র পড়ে ওই সময়ের 888sport apkী, দার্শনিক ও 888sport apk কল্পকাহিনি লেখকেরা খুবই প্রভাবিত হয়েছিলেন। তাঁর মতো এমন 888sport apkী কেন সবকিছু ছেড়ে দিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন? যেখানে অর্থনৈতিকভাবে শুধু নয়, বৌদ্ধিকভাবেও তিনি ছিলেন সেরা অবস্থানে। পৃথিবীতে তাঁর সময়ের সবচেয়ে গভীর এবং বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের সঙ্গে তাঁর আদানপ্রদান ছিল, তাঁদের কাছে তাঁর গুরুত্বও ছিল। ওখানে থাকলে কৌশলগতভাবে অনেক ধরনের সহযোগিতা পেতেন।
এ প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ফ্রিম্যান ডাইসন বলেছেন, জামাল ইসলামের একটা গবেষণা 888sport live পড়েই আমি মহাবিশ্বের অন্তিম পরিণতি নিয়ে কৌতূহলী হয়েছিলাম। এটা ১৯৭৭ সালের কথা। 888sport liveটা ছাপা হয়েছিল কোয়ার্টারলি জার্নাল অব দ্য রয়াল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটিতে। আমি জামালকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম, ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতে একটি বছর কাটানোর জন্য। এরই সুবাদে আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে জানাশোনার সুযোগ পাই। ওই সময় আমরা একে অপরের চিন্তাভাবনা বিনিময় করি। তাঁর মতো এমন 888sport apkী কেন সবকিছু ছেড়ে দিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন? যেখানে অর্থনৈতিকভাবে শুধু নয়, বৌদ্ধিকভাবেও তিনি ছিলেন সেরাদের অবস্থানে।
এই শ্যামল বাংলায় কেন তিনি ফিরে এসেছিলেন?
হয়তো বৌদ্ধিকভাবে এমন এক স্তরে দাঁড়িয়েছিলেন যেখান থেকে তিনি সম্ভবত অনুভব করতেন, কর্মস্থলে ট্রেনে যেতে যেতে আপন মনে ভাবতেনও। উপলব্ধি করতেন জন্মভূমির মাটিকে আত্তীকরণ করে যদি মহাবিশ্বকে দেখা না-যায়, আকাশের দিকে তাকানো না হয়, তাহলে শুধু নিজের ভেতরের অসম্পূর্ণতাই থাকে না, নিজের অবস্থানকেও অনুধাবন করা কঠিন হয়ে পড়ে। এটা তো কোনো চাকরি বা টেকনোক্র্যাটে অবস্থান নয়, এটা হলো নিজের জন্মভূমির পলিবাহিত বাংলার সঙ্গে বিশ্বকে সম্পর্কিত করা। সেই মন নিয়ে, যে-মনের জোরে আমাদের পূর্বপুরুষেরা নদী থেকে নদীতে, গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছে, পলিমাটির অঞ্চলে গড়ে তুলেছে তাদের আবাসভূমি। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে জীবন নিঃশেষিত করে ফসল ফলিয়েছে আর তৈরি করেছে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অপেক্ষাকৃত মসৃণ পথ। ক্ষয়িষ্ণু, কষ্টকর আর সর্পিল পথে জীবনকে প্রবাহিত করেছে পদ্মা, মেঘনা আর মধুমতির স্রোতধারায়। পলি হয়ে জমেছে নদীর বাঁকে বাঁকে।
অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সময় পেলেই তারা প্রশ্ন করেছে জীবনের উৎস, পরিণতি আর ওই নক্ষত্রগুলির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়ে। তারা নিশ্চয়ই ভেবেছে, রেখে যাওয়া প্রজন্ম সেই মাঝি আর কৃষকের মন নিয়ে মহাকাশ আর মাটির সঙ্গে জীবনের সম্পর্ককে উদ্ঘাটিত করবে।
এটাই তো শিকড়ের অনুসন্ধান। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, প্রবল ভিড়ে চলন্ত ট্রেনের পাহাড়ি পথে একাকী ধ্রুপদী সংগীতের মগ্নতায় অথবা কখনো কর্ণফুলীর স্রোতধারায় ভাসতে ভাসতে তিনি সেই শিকড়ের খোঁজ করবেন বলেই ফিরে এসেছিলেন এই বাংলায়।
তথ্যসূত্র
১. ‘আমাদের অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম’ (১৮ই মার্চ ২০১৩, বিডিনিউজ২৪, এ. এম. হারুন-অর- রশিদ, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ888sport apk বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, 888sport apkলেখক।
২. ‘অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম : বাস্তবতা গল্পের চেয়েও অদ্ভুত কল্পনা’, দৈনিক সমকাল, ‘কালস্রোত’, ২৩শে মার্চ ২০১৩, আসিফ।
৩. ‘888sport apk download apk latest versionঞ্জলি : বিশ্বনন্দিত গাণিতিক পদার্থ888sport apkী অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম’ (২৪শে মার্চ ২০১৩, মুক্তমনা ওয়েবসাইট) প্রফেসর অজয় রায় (সাবেক অধ্যাপক, পদার্থ888sport apk, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়)।
৪. ‘অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম – একটি কর্মময় জীবন’ (১লা এপ্রিল ২০১৩, বাংলানিউজ২৪) ড. দীপেন ভট্টাচার্য, প্রবাসী জ্যোতির্বিদ।
৫. ডিসকাশন প্রজেক্ট-এর ৪৫ ও ৪৬তম বক্ততা অনুষ্ঠান, চট্টগ্রাম মুসলিম হলে অনুষ্ঠিত।
৬. ‘যুক্তি তর্ক গল্প : আমাদের জামাল স্যার’, আবুল মোমেন, ২০শে মার্চ ২০১৩, প্রথম আলো।
৭. ‘সত্যিকারের সংগীত চিন্তাবিদ জামাল নজরুল ইসলাম’, স্বর্ণময় চক্রবর্তী, দৈনিক সুপ্রভাত।
৮. মাসিক উত্তরাধিকার, বৈশাখ ১৪২০, ‘বাস্তবতা গল্পের চেয়ে অদ্ভুত’, আসিফ, জুলাই ২০১৩।
৯. মাসিক উত্তরাধিকার, নবপর্যায়ে ৭৪তম 888sport free bet, জুন ২০১৮।
১০. ‘ওয়ালীউল্লাহর উজ্জ্বল 888sport sign up bonus’, জামাল নজরুল ইসলাম।
১১. ‘Quantum Cosmology and the Creation of the Universe’, by Jonathan J. Halliwell; Scientific American, December 1991.
১২. বাংলা একাডেমি স্মারক বক্তৃতা ২০২৪।
কৃতজ্ঞতা : ডিসকাশন প্রজেক্ট, দ্বিজেন শর্মা, খালেদা ইয়াসমিন।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.