নানা ঘটনাপ্রবাহে জীবনানন্দ দাশের ব্যক্তিজীবন ও 888sport live chatীজীবন অর্থাৎ দুই জীবনই ছিল গ্রিক ট্র্যাজেডির নায়কের মতো নিয়তিতাড়িত। নিয়মিত চাকরি আসা-যাওয়ার সাপ-লুডো খেলা চলেছে জীবনভর। জীবিকা অনিশ্চিত ছিল। এই সূত্রে দৈনন্দিনকতার সবকিছুই ছিল বেসামাল ও অনিশ্চিত। প্রত্যেক মানুষের জীবনে, এমনকি সবচেয়ে বঞ্চিত ও অবাঞ্ছিত মানুষটির জীবনেও একবারের জন্য একটি সুখের মুহূর্ত আসে। স্বসিত্ম আসে। জীবনানন্দ দাশের জীবনে এরকম একটি সুখের মুহূর্তের খবর আমাদের জানা নেই। নিয়ম করে বেকার হওয়ার কারণে চরম দারিদ্র্য পুরনো পাপের মতো পিছু তাড়া করে ফিরেছে। এ-কারণে আমৃত্যু পিছু ছাড়েনি দাম্পত্য অসমেত্মাষ। জীবনের প্রথম পর্বে এসব গস্নানি ছিল। দ্বিতীয় পর্বে যোগ হয় ছেচলিস্নশের দাঙ্গার কারণে দেশান্তরিত হয়ে কলকাতায় স্থায়ী হওয়ার মতো অনিচ্ছুক ও মর্মঘাতী গস্নানি।
কোলাহলবিমুখ শান্তিপ্রিয় এই মানুষটির আমৃত্যু আরাধনা ছিল জীবনের নির্জনতা ও সামান্য নিরাপত্তা। বাস্তবে ঘটে বিপরীত। নিয়তি বড়ই নির্মম স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল সৃষ্টিশীল এই মানুষটির ওপরে! শেষে ভেতরে-বাইরে এমনি আত্মঘাতী হয়ে উঠেছিলেন যে, স্রেফ দুর্ঘটনায় নিহত হলেও আত্মহত্যা বলে সহজেই চালিয়ে দেওয়া গেল। অবশ্য এক অর্থে আত্মহত্যা বলাই সঠিক। প্রবল মনস্তাত্ত্বিক সংকটে ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডারে’র মতো রোগ হওয়া অস্বাভাবিক ছিল না। এতে একসময় মানুষের ভেতরে মাত্রাতিরিক্ত কর্মস্পৃহা ও প্রাণানন্দ জেগে ওঠে। অন্য সময় এমনি বিষাদাক্রান্ত ও হতাশ হয়ে পড়ে যে, নিজেকে খুন করার মতো কাজটি করতে পারে নির্দ্বিধায়। অনেকেই এ-ধরনের প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন। জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুবাতিক ছিল – ভূমেন্দ্র গুহের মতো নিকটজনকেও বলতে শুনি।
শালিক-দোয়েলের মতো স্বাধীন জীবন চেয়েছিলেন জীবনানন্দ দাশ। জীবিকা ও জীবনের 888sport app আবশ্যকীয় প্রাপ্তিকে শালিক-দোয়েলের মতোই স্বাধীন বিচরণক্ষেত্র থেকে সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন। চাকরি-কর্ম নেই, দারিদ্র্য ও সাংসারিক অসমেত্মাষ চরমে, কিন্তু কোথাও আপস করেননি। চাকরি ধরেন আর ছাড়েন। কলকাতা ছেড়ে গ্রামে চলে আসেন। কোথাও অন্তরের পরাভব মেনে নেবেন না। প্রবল জেদ ও আত্মগরিমা পোষণ করেন ভেতররাজ্যে। তাই হঠাৎ কেউ কিছু একটা প্রস্তাব করলেই গ্রহণ করেন না। প্রেম-অপ্রাপ্তির অসহনীয় ভার আছে কিন্তু কোনো 888sport promo codeর কাছে প্রেম দাবি করেননি মুখ খুলে। নিকটবন্ধুদের সুপরামর্শ ছিল, 888sport app download apk লিখে অর্থ নেই, বরং গল্প-888sport alternative link লিখলে কিছু জুটবে। গল্প-888sport alternative link লিখছেন নিয়মিত কিন্তু ছাপতে দিচ্ছেন না। প্রাত্যহিক ব্যবহারিক জীবন প্রায় ভেঙে পড়ছে, কিন্তু চাকরি খোঁজার উদ্যম নেই। কি চাকরি কি 888sport promo codeর প্রেম আর কী লিখে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা, সবকিছুর দিকেই তাকিয়েছেন এক ধরনের নির্লিপ্ত চোখে। নিজের 888sport app download apk ছাড়া জীবনে আর কোনো কিছুকেই মূল্যজ্ঞান করেননি। সমস্ত দায়বদ্ধতা ছিল একমাত্র 888sport app download apkর কাছে। এক্ষেত্রে শতভাগ স্বার্থপর ছিলেন। এসবকে একজন কবির হেঁয়ালি চরিত্র বললেই শুধু বলা ফুরিয়ে যায় না। সন্দেহ নেই, অপ্রাপ্তি ও অসংগতির নিরন্তর হতাশা তাঁর সুস্থভাবে বেঁচে থাকার দুর্দম আকাঙক্ষাকে দারুণভাবে বিধ্বস্ত ও ক্রুদ্ধ করেছে। না হলে আত্মহত্যার মতো বিনাশী চিন্তার আর কী কারণ হতে পারে!
জীবনানন্দ দাশ মাত্র একশ বাষট্টিটি 888sport app download apk প্রকাশ করে যেতে পেরেছিলেন। এই 888sport free bet এই সময়ের অনেক কবির জন্য দেড়-দুই মাসের হিসাবই যথেষ্ট। কিন্তু আশ্চর্যের ঘটনাটি ঘটে গেল তাঁর মৃত্যুর পরে। পঞ্চাশ বছর অতিক্রমের পরও সে-ঘটনা ঘটেই চলেছে। কালো একটি বাক্স থেকে একের পর এক অপ্রকাশিত পা-ুলিপি বের হচ্ছে আর বই আকারে প্রকাশ পাচ্ছে। কলকাতার প্রতিক্ষণ প্রকাশনী থেকে জীবনানন্দ দাশের বারো খ- রচনাবলি প্রকাশ করে অপ্রকাশিত রচনা শেষ বলে ঘোষণা করেছিল; কিন্তু এই শেষ শেষ হয়নি। পরেও 888sport app download apk-সংকলন, গল্প-সংকলন ও 888sport alternative link বের হয়েই চলেছে। যদ্দূর জানা যায়, জীবনানন্দ দাশের লেখা ডায়েরি আছে বেশ কয়েকটি। উত্তরাধিকারগণের নিষেধের কারণে প্রকাশ হয়নি এখনো। একসময় হবে আশা করি। এরকম বিস্ময় বাংলা888sport live football কেন, বিশ্ব888sport live footballের কোনো লেখকের ক্ষেত্রে ঘটেছে কিনা আমার জানা নেই। এত বিপুল পরিমাণ অপ্রকাশিত ও অগ্রন্থিত লেখা, ভাবা যায়? প্রকাশিত থেকে অপ্রকাশিত 888sport app download apkর 888sport free bet অনেক বেশি, এরকম বিস্ময় তো আছেই। শতাধিক গল্প ও শতাধিক 888sport alternative link রয়েছে যা অক্ষর-888sport free betয় 888sport app download apkর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি! স্বল্পায়ু এক জীবনে এত সংঘাতের মধ্যেও এত শ্রম দিয়ে গেলেন মানুষটি! জীবনের আশি ভাগ সৃষ্টিই অপ্রকাশিত রয়ে গেল! অর্থাৎ পাঠকের অগোচরে থেকে গেল। কালো বাক্সে তালা দিয়ে খাটের নিচে নিতান্ত অবহেলায় তিনি ফেলে গেলেন! কোন বিশ্বাসে রেখে গেলেন? কার ওপর নির্ভর করে? প্রকাশের চেষ্টা নেই, পাঠকপ্রিয়তার আকাঙক্ষা নেই, এমন নির্লিপ্ততার কী কারণ? আমার মতো অনেকেই মানবেন, এসবের কোনো ব্যাখ্যাই সঠিক হবে না। জীবন যেমন তাঁর হেঁয়ালিপূর্ণ, রহস্যতাড়িত ও জিজ্ঞাসাচিহ্নিত, সৃষ্টির সর্বত্র তেমনি এই হেঁয়ালি, রহস্য ও জিজ্ঞাসার খেলা চলেছে। না হলে, ‘আট বছর আগের একদিন’ 888sport app download apkর আত্মহত্যাপ্রবণ ওই মানুষটির চরিত্র ধরা কীভাবে সম্ভব? অর্থসুখ, 888sport promo codeসুখ, সন্তানসুখ কোন সুখ অনুপস্থিত মানুষটির জীবনে? তার পরও কেন এত সাধ আত্মহত্যার? এই সুখ তাঁর কেন নিতেই হবে?
বেঁচে থাকতে জীবনানন্দ দাশের কবিখ্যাতি ও পরিচিতি অল্পবিস্তর হয়েছিল। মৃত্যুর পরেই মূলত কবিখ্যাতি ঘটে জাদুর বেগে। এটিকে আমি স্বাভাবিক বলেই মনে করি। বিশ্ব888sport live footballে এমন দৃষ্টান্ত আছে। দুশো বছর পরও কবি আলোচনায় উঠে আসেন; কিন্তু আকণ্ঠ 888sport app download apkর ধ্যানে মগ্ন এই নির্লিপ্ত মানুষটি এত বিপুল পরিমাণ
গল্প-888sport alternative link লিখলেন এবং তা প্রকাশের চেষ্টা না করে কালো বাক্সে তালা দিয়ে রাখলেন, এমন দৃষ্টান্ত আছে কি? কী কারণ হতে পারে এসব লেখার? এই রহস্য জীবনানন্দ দাশের স্বভাবেরই একটি অংশ। কার্যকারণ খোঁজা যাবে কিন্তু সিদ্ধান্তে পৌঁছা যাবে না। যেমন – ১. 888sport app download apk লেখার ক্লান্তি বা অবসাদ থেকে মুক্তির জন্য অবসরে এসব লিখেছেন; ২. নিজের ক্রোধ-হতাশা-অপ্রাপ্তিকে 888sport app download apkয় রূপক-সাংকেতিকতার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করলেন বটে, কিন্তু পুরোপুরি প্রকাশ হয়নি। গল্প-888sport alternative linkের বিসত্মৃত ক্যানভাসে আসতে হয়েছে; ৩. এই লেখাগুলো সম্পর্কে তাঁর নিজের মনেই দ্বিধা ও আস্থাহীনতা ছিল, যে-কারণে প্রকাশযোগ্য মনে করেননি; ৪. এমনও হতে পারে প্রথম কয়েকবার প্রকাশের চেষ্টা করে সেই আশা ত্যাগ করেছেন।
নেহাত মামুলি পয়সার জন্য জীবনানন্দ দাশ এসব লিখেছেন, তাঁর জীবনচর্চার ব্যাকরণ এই মত সমর্থন করে না। যদি তাই করতেন, তবে প্রকাশের জন্য উদ্যমী হতেন বা মরিয়া হতেন, কিন্তু তার কোনোটিই তিনি করেননি। আবার লেখাগুলো সম্পর্কে যদি তাঁর দ্বিধা ও বিশ্বাসহীনতাই থেকে থাকে এবং প্রকাশের পদবাচ্য বিবেচনা না করে থাকেন, তবে সেসব না ছিঁড়ে না ঝুড়িতে ফেলে কেন মজুদ রাখবেন? তবে কি তিনি চাইতেন লেখাগুলো একদিন প্রকাশ হোক? তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশ হোক। অর্থাৎ তিনি লেখাগুলোকে প্রকাশ করছেন না আপাতত, কিন্তু একদিন প্রকাশ হবে – এই বিশ্বাস ছিল। অথবা, বেঁচে থাকতে তিনি এবং তাঁর 888sport app download apk এত অবহেলা, প্রত্যাখ্যান আর অভিযোগে পূর্ণ ছিল যে, তিনি একদিন খ্যাতির শীর্ষে উঠবেন এবং তাঁর সামান্য লেখাটিও সমাদরে গৃহীত হবে, এই বিশ্বাস তিনি করেননি। যে-কারণে লিখেছেন আর কালো বাক্সে ঢুকিয়ে রেখেছেন। ভেবেছেন, সময় করে একসময় সেরদরে বিক্রি করে দেবেন, না হয় ডাস্টবিনে ফেলে আসবেন। অথবা এমনও হতে পারে, কষ্ট করে লিখেছেন বলে ফেলতে মায়া হচ্ছিল, তাই পড়ে আছে পড়ে থাক চুপচাপ। কত রকমের ব্যাখ্যা যে করা যায়। কোনো মহৎ 888sport live chatীই তাঁর সৃষ্টিকে অস্বীকার করেন না, জীবনানন্দ দাশও পারেননি। ভাবীকালের ওপরে ভরসা রেখেছেন। এই ব্যাখ্যাটিই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়। এখানে আরেকটি প্রশ্ন এসে যায়, তবে কি কোনো প্রকার বিতর্ক বা ঝামেলা এড়ানোর জন্য প্রকাশ করেননি? এটি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাঁর গল্প-888sport alternative linkের বিষয় তাই প্রমাণ করে। বিষয়ের প্রধান অংশই দাম্পত্য অসমেত্মাষ ও পরকীয়া প্রেম অথবা ব্যর্থ কবির ক্রোধ প্রকাশ, যা এক অর্থে তাঁর স্ত্রী, লেখক-বন্ধু, নানাভাবে প্রতারিত ও প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন যাদের দ্বারা তাদের চরিত্রকে মনের মতো করে সাজিয়েছেন।
নিজের শিক্ষা, বিনয় ও লাজুক স্বভাবের কারণে মুখফুটে বাস্তবে যে ক্রোধ-প্রতিশোধ-প্রতিবাদ সম্ভব ছিল না, গল্প-888sport alternative linkে কাহিনি ও চরিত্রের ছাঁচে তা সম্ভব ছিল। বলা যায়, ক্রোধ প্রকাশ, প্রতিবাদ ও প্রতিশোধের নীরব ও দূরপ্রসারী অস্ত্র হয়ে ওঠে কবির গল্প-888sport alternative link। তাই এগুলো প্রকাশ করতে পারেননি। এমনিতেই 888sport app download apk লেখার জন্য চাকরি খোয়ানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে। এই কারণে 888sport app download apkয় তিনি যে-পরিমাণ যত্নবান ও পরিশ্রমী, গল্প-888sport alternative linkে তার অনেকটাই অনুপস্থিত। প্রায় নির্বন্ধু-নিঃসঙ্গ ছিলেন জীবনানন্দ দাশ। তার পরেও যেহেতু রক্ত-মাংসের মানুষ, একেবারে নীরব ও নির্বিকার থাকতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথের মতো দেবতুল্য ঋষিও নিন্দুকের বিরুদ্ধাচরণে একেবারে নির্বিকার ও নীরব থাকতে পারেননি। বেনামে লিখে শোধ নিয়েছেন বা জবাব দিয়েছেন। জীবনানন্দ দাশ বেনামে কিছু করেননি। এত বৈপরীত্য ও বিরোধিতা ছিল তাঁর চারপাশে, আর তাঁর নিজের স্বভাবে, কোনোটিরই মুখোমুখি হওয়ার সামর্থ্য ছিল না। পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা করেছেন। মরে হলেও জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা আমৃত্যু করে গেছেন। গোপনে গোপনে এ-কাজটি করে অর্থাৎ পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা গল্প-888sport alternative link লিখে আপাতত বেঁচে থাকার পথ করে নিয়েছেন। যে অসহায়ত্ব, ক্রোধ ও হতাশা তাঁর ভেতরে জন্মেছিল, তা কোনো প্রকারে কলমে তুলে আনার কাজেই তাঁর শতভাগ মনোযোগ। গল্প-888sport alternative linkের ভাষার বৈচিত্র্য, আখ্যানশৈলী বা বয়ানকৌশল নিয়ে তেমন নিরীক্ষা নেই। ভাবনাও নেই। এমনকি লেখাটি শেষ করে জুতসই একটি নাম দেওয়ার মতো আকাঙক্ষাও কাজ করেনি অথবা অনেক গল্প-888sport alternative linkের নামই দেননি। পরে নানা মুনির নানা নাম নিয়ে গল্পগুলো আলোর মুখ দেখে, যে-নামগুলো প্রায়শ তাঁর 888sport app download apkর নামের সঙ্গে ঐক্য করা হয়েছে।
আধুনিক বাংলা 888sport app download apk নির্মাণের ধারণাকেই পালটে ফেলেছেন জীবনানন্দ দাশ। ভাষা, অলংকার, বিষয় কোনোটিই আগের কোনো কবির সঙ্গে মেলে না। 888sport app download apkয় নতুন নির্মাণশৈলী নির্মাণে তাঁর যে নিরন্তর শ্রম ও নিষ্ঠা তার সামান্য ছাপও নেই কথা888sport live footballে। আগাগোড়া প্রায় একই ভাষা এবং মোটামুটি একই বিষয় নিয়ে একের পর এক গল্প-888sport alternative link লিখে গেছেন। যে-শ্রম দিতে হয় একজন কথা888sport live chatীকে, প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে সামনে এগোতে হয়; যে বৃহৎ সামাজিক দায়বোধ থাকে, সমাজের নানা বৈষম্য, সংকট ও অন্তর্নিহিত পরিবর্তনের দিকে কথা888sport live footballিকের যে সজাগ জিজ্ঞাসু-চোখ বন্দুকের মতো তাক করা থাকে, এর কোনো একটিও জীবনানন্দ দাশের মধ্যে পূর্ণভাবে দেখি না। যে সুগভীর জীবনদর্শন, 888sport apkমনস্কতা ও অনুশীলন নিয়ে তাঁর কবিপ্রতিভা দুপুরের পূর্ণ ও তেজোদীপ্ত সূর্যের মতো সর্বপ্রসারী রোদ ফেলেছে আধুনিক 888sport app download apkর প্রাঙ্গণে, সেই কবির কথা888sport live football কেন এমন হবে? একটি বিশেষ দিকের প্রতি তাঁর সমস্ত মনোযোগ – প্রেমাকাঙক্ষা ও দাম্পত্যবিরোধ ও তজ্জনিত নীরব কোলাহল। দুটি-একটি ব্যতিক্রম যা আছে, বিশাল সত্মূপ থেকে বের করে আনলে মোটামুটি পদবাচ্য হবে বটে, কিন্তু তাও কি তাঁর প্রতিভার সঠিক সৃষ্টি হয়েছে? এসব কারণে জীবনানন্দ দাশের অপ্রকাশিত ঐশ্বর্য আবিষ্কার যে বিস্ময় ও তুমুল আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল সত্তর ও আশির দশকে, পরের দুই দশকে আগ্রহ কমতে কমতে এখন শুধু বিস্ময়ই অবশিষ্ট আছে।
রহস্য, বিতর্ক, বিভ্রান্তি এসব জীবনানন্দ দাশকে ছাড়েনি। অবশ্য জীবনানন্দ দাশ নিজেও ছাড়েননি। সবকিছুতে বিস্ময় ও রহস্য সৃষ্টির চেষ্টা ছিল তাঁর মজ্জাগত। শুধু নির্লিপ্ত ছিলেন বলে নয়, জীবনটাই তাঁর এমন ছাঁচে তৈরি। এ-কারণে মৃত্যুর পরেও এসব ছাড়েননি। বরং জীবিত জীবনানন্দ দাশের থেকে কয়েকগুণ বেশি বিস্ময়, রহস্য ও বিতর্কের হোতা মৃত জীবনানন্দ দাশ। তবে, মৃত্যুর পরে শাপেবর হয়েছে। মরণোত্তর অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার গূঢ়রহস্য কিন্তু ব্যক্তিজীবন এবং প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত সৃষ্টিকর্মে নিহিত বিস্ময়, রহস্য, বিতর্ক। তাঁর অপ্রকাশিত গল্প-888sport alternative link প্রকাশের ঔচিত্য বা উপযোগিতা আছে কি নেই – এই বিতর্ক শুরু থেকেই শুরু হয়েছে। বিতর্ক দুই শিবিরে বিভক্ত। সেটি আবার দুধরনের বিতর্ক। প্রথমটি হলো, মামুলি কিছু লেখা বা খসড়া লেখা অথবা হাতমকশোর লেখা এভাবে পাঠক-সম্মুখে এনে প্রকারান্তরে জীবনানন্দ দাশের কবিখ্যাতি ও প্রতিভাকে অবনমন করা হয়েছে বা হচ্ছে। জীবনানন্দ দাশ নিজে যেখানে দ্বিধান্বিত ছিলেন, লেখাগুলো প্রকাশ করেননি বা বলে যাননি অথবা স্বত্বাধিকারী পর্যন্ত নিয়োগ করেননি, সেখানে কেন এসব প্রকাশ করা হচ্ছে? এই বিতর্কের বাস্তবতা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কোনো প্রকার বাছাই না করে পাটিগণিতের গড় অংকের মতো সব এক করে প্রকাশ করা কতটা যৌক্তিক হচ্ছে? আবেগের আতিশয্যে কি? এই লেখাগুলোকে কাটাছেঁড়া করে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য জীবনানন্দ দাশের জাঁদরেল সমালোচক বা ‘মৃত সব কবিদের মাংস কৃমি খুঁটি’ খাওয়া অধ্যাপকদের দরকার পড়ে না, অতিসাধারণ পাঠকই যথেষ্ট। দেশ ও আনন্দবাজার পত্রিকায় লেখাগুলোকে বলা হয়েছে নিতান্ত ‘কাঁচা লেখা’ এবং বড় কবির লেখা বলেই কৌতূহল-উদ্দীপক। এছাড়া আলাদা কোনো মূল্য নেই। এই রচনা প্রকাশের বিরোধিতার আরো একটি কারণ বিদ্যমান। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এরকম শক্তিশালী কথা888sport live chatীর জীবিতকালে লেখা জীবনানন্দ দাশের গল্প-888sport alternative link নিতান্তই তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির কথা888sport live footballিকের লেখা হয়ে গেছে। আধুনিক বাংলা 888sport app download apkর এই দাপুটে শাসক তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির কথা888sport live footballিকের সম্মান নিয়ে বাংলা কথা888sport live footballের ইতিহাসে বেঁচে থাকবেন, এটি মানছেন না দ্বিতীয় শিবিরের সমর্থকগণ।
কথা888sport live footballিক জীবনানন্দ দাশ নেতিবাচক প্রেস-রিভিউর শিকার, এই মত অনেকের। যারা এই মত পোষণ করেন তারা বিতর্কের দ্বিতীয় পক্ষ। তবে আমি মনে করি, জীবনানন্দ দাশের মতো এত বড় প্রতিভার কোনো সৃষ্টিই মূল্যহীন নয়। সম্পূর্ণ ব্যর্থ বা নিতান্তই অগুরুত্বপূর্ণ, হতে পারে সেটা খসড়া বা অসম্পূর্ণ, সবই প্রকাশযোগ্য। এসব 888sport live chatীসত্তার স্বরূপ নির্ণয়ে সহায়ক হবে। তাঁর নির্মাণজগৎ ও মনোজগতের অজানা খুঁটিনাটি ছোটখাটো নানান বিষয় জানা যাবে। জীবনানন্দ দাশের গল্প-888sport alternative link প্রকাশের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রোত্তর আধুনিক বাংলা 888sport app download apkর কবিরাজের গুপ্তপ্রায় একটি পরিচয় উঠে আসছে, যা শুধু বিস্ময়েরই খোরাক জোগায়নি, বাংলা কথা888sport live footballে নতুন সংযোজনও বটে। বড় কথা হচ্ছে, একজন লেখকের সকল লেখাই তাঁর লেখার ইতিহাসের অংশ।
মানুষের আত্ম-অন্বেষার সার্বিক পরিণতি হচ্ছে স্ববিরোধী হতাশা। শুধু কবি, দার্শনিক বা এই জাতীয় কোনো চিন্তক নন, সাধারণ গড়পড়তার মানুষও এই স্ববিরোধী হতাশাকে ধারণ করেই বেঁচে থাকেন। পার্থক্য হচ্ছে, সৃষ্টিশীলরা একে ব্যবহার করেন, গড়পড়তার মানুষ দৈনন্দিনতার সঙ্গে মিশিয়ে ফেলেন। জীবনানন্দ দাশের সমস্ত 888sport live footballকর্মই এই স্ববিরোধী হতাশা থেকে জন্ম। শুধু জীবনানন্দ দাশ নন, প্রত্যেক কবির ক্ষেত্রেই এটি সত্য। বনলতা সেন বা আত্মহত্যা-পাগল সেই মানুষটির কথাই ভাবা যাক। পৃথিবীতে এক হাজার বছর পরি888sport slot gameের সমপরিমাণ ক্লান্তিকে শরীরে ধারণ করে ঘুরছে ক্লান্ত-বিষণ্ণ সুখসন্ধিৎসু এক মানুষ। উদ্দেশ্য একটিই ,অপেক্ষমাণ প্রিয়ার সামনে বসবে। সব সুখ আছে তবু আত্মহত্যার সুখ-পরীক্ষা করে দেখতে চায়। এসবের কোনো ব্যাখ্যা পাঠকের কেন, কবির কাছেও নেই। দরকারও নেই। বনলতা সেন আছে, সেই মানুষটিও আছে। কী অসম্ভব অবাস্তব কী দারুণ বাস্তব হয়ে উঠেছে জীবনানন্দ দাশের 888sport app download apkয়, ভাবলেই বিস্ময় জাগে।
জীবনানন্দ দাশের গল্প-888sport alternative linkের নির্মাণ-দুর্বলতা আছে। ভাষার একঘেয়েমি আছে। বিষয়বিন্যাস নিতান্তই পীড়াদায়ক, একমুখীন। তারপরও কাহিনি নির্মাণে বা বয়ান-কৌশলে তাঁর গল্প-888sport alternative link বাংলা কথা888sport live footballে আর কারো মতো হয়নি। জীবনানন্দীয়ই হয়েছে। এটি একটি বিরাট ব্যাপার। স্টাইল বলি আর লেখকের উপনিবেশ বলি, খুব শক্তিমান প্রতিভা না হলে এমনটা সম্ভব হয় না।
জীবনানন্দ দাশ এমন একটি পৃথিবীর এবং এমন একটি সময়কে ধরতে চেয়েছেন, যেখানে বাইরের শক্তিশালী উপাদানগুলো মানুষের ভেতরের উপাদানগুলোকে ক্রমশ অতিক্রম করে যাচ্ছে। সংঘাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বা পালিয়ে চলার পথ সব বন্ধ করে দিচ্ছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, যা মূলত ইউরোপের একাংশে হয়েছে, তার জন্য ভয়ানক ক্ষতি হয়ে গেল মানুষের পৃথিবীর। ‘মানুষের পৃথিবী’ উলটে হয়ে গেল ‘পৃথিবীর মানুষ’। আঞ্চলিক যুদ্ধের আগে ‘বিশ্ব’ বিশেষণ যোগ করে জানিয়ে দেওয়া হলো, পৃথিবী নামক গ্রহের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা শক্তি থাকবে। একক কোনো ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের কোনো স্বাধীনতা থাকবে না। যা ঘটবে সবই বিশ্বের ব্যাপার। আগে এক রাজ্যে না পোষালে বা বিরোধ হলে অন্য রাজ্যে পালিয়ে বেঁচে থাকার পথ ছিল। চারদিক থেকে সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। ‘ছিঁড়ে গেছি-ফেঁড়ে গেছি – পৃথিবীর পথে হেঁটে হেঁটে’ জীবনানন্দ দাশের এরকম চিৎকার শুধুই ভেতরে গুমরে মরবে। বনলতা সেনের মতো অবাস্তব শান্তির সন্ধানে ফেরা মানুষের নিয়তি। মানুষের চারদিকে নানারকম ফাঁদ তৈরি করে রেখেছে। গল্প-888sport alternative linkে পৃথিবীর ফাঁদে পড়া মানুষদের জীবন নিয়ে তদন্তই থাকবে। লেখকের জবানবন্দি নয়, লেখক নিজেও একটি জীবনকে ধারণ করেন। প্রাপ্ত জীবনকে ষোলো আনা হিসাব কষে ব্যবহার করেন। জীবনের কোনোকিছুই তাঁর কাছে মূল্যহীন নয়। প্রতিটি সচেতন মুহূর্ত, এমনকি প্রতিটি সচেতন নিশ্বাস পর্যন্ত তাঁর সৃষ্টির কাজে নিবেদিত।
জীবনানন্দ দাশ কবি। তাঁর রক্ত-মাংস-স্বভাব সমস্ত কিছুই 888sport app download apkর পঙ্ক্তিমালা দিয়ে সাজানো। কিন্তু জীবনের বাইরের উপাদানগুলো তাকে এতই কঠিন ফাঁদে ফেলেছে যে, আর সম্ভব হয়নি শুধুই 888sport app download apkয় থাকা। গল্প-888sport alternative linkের বিসত্মৃত ক্যানভাস তাকে টেনে আনে। কিন্তু যে নির্মোহ 888sport live chatশাসন কথা888sport live footballকে মান্য করতে হয়, জীবনানন্দ দাশ তা করেননি। অবশ্য, মান্য করার দরকারই তিনি মনে করেননি। ফাঁদে পড়া জীবনের সাতকাহন লিখে বুক খালি করেছেন স্রেফ।
বেকার জীবন। চাকরি নেই; কিন্তু জীবনের প্রয়োজনগুলো আছে ষোলো আনা। বিয়ে করেছেন জীবনবাদী উচ্চাকাঙক্ষী সুদর্শনা এক শিক্ষিতাকে। সন্তান আসছে প্রকৃতির নিয়মে। ঘর থেকে বাইরে গেলেও পকেট খরচা আছে, তাই ঘরেই দিনযাপন। কী করবেন? কোথাও ঘুরে বেড়িয়ে মনের ভারমুক্তির জন্যও টাকা লাগে। ভাবা যায় কী রকম বাস্তবতা তাঁর সামনে? বছরের পর বছর স্বামী বেকার, একজন শিক্ষেত যুবতীর কী ধরনের মনঃস্তাত্ত্বিক সংকট হতে পারে? কেমন আচরণ সে করবে স্বামীর সঙ্গে? স্বামীই-বা কতটুকু প্রাপ্য? তার মনই বা কতদিন টিকবে সংসারে? এক জীবনের অফুরান চাহিদার কত অংশ হজম করবে বেকার স্বামীর দিকে তাকিয়ে? সে স্বতন্ত্র একজন মানুষ। মানুষ হিসেবে কতগুলো মৌলিক দাবি আছে। আমাদের প্রচল-নিয়মে সে-দাবি পূরণের দায়ভার স্বামীর। সুতরাং যত রকমের অপূর্ণতার প্রতিবাদ, প্রত্যাখ্যান, ক্রোধ আর ঘৃণা সবই অসমর্থ স্বামীকেই বইতে হবে। বায়োস্কোপ দেখার, এমনকি এক আনার জর্দা কেনার সামর্থ্য নেই যে স্বামীর, সেই স্বামীকে উদ্দেশ করে জীবনপ্রণালী 888sport alternative linkের নায়িকা অঞ্জলির বিষবাণ :
বয়স তিরিশ পেরিয়ে গেছে – এম এ পাশ করেছো এক যুগ আগে, তবু একটা পয়সা যদি সম্বল নেই তোমার – মেয়েমানুষকে জীবনে আকাঙক্ষা করতে গিয়েছিলে কেন?
অঞ্জলি-একটা খাঁচার পাখিকে পুষতে হলেও তো নিঃসম্বল হলে চলে না! অথচ সৃষ্টির সবচেয়ে বড়ো জিনিসকে নিয়ে খেলা করলে-
নিঃশব্দে বাতাস খেতে খেতে অঞ্জলি – পরজন্মে বিশ্বাস আছে?
কী জানি, বলতে পারি না।
আজকের এই পাপে পথের পাশের কুকুরটি হয়ে যদি জন্মাও?
বেকার, অথর্ব, সামর্থ্যহীন স্বামীকে ভৎর্সনা করে স্ত্রী – এই দৃষ্টান্ত বাংলা কথা888sport live footballে শরৎ-মানিকদের গল্প-888sport alternative linkেও আছে। কিন্তু আক্রমণের ভাষা কি এমনটা হয়েছে কোথাও? 888sport promo code আকাঙক্ষা করার পাপে (আবার ধর্মমতে গ্রহণ) পরজন্মে কুকুর হয়ে জন্মাবে পুরুষ, এ কি ঘৃণ্য অভিশাপ! এ-ধরনের কথা 888sport alternative link শুরুর তিন পৃষ্ঠা পরেই। না পাঠকের প্রতি, না নিজের প্রতি, না নিজের স্ত্রীর প্রতি, না তাকে ঘিরে যারা আছেন বাবা, বন্ধু, প্রতিবেশী, নিজের প্রেমিকা আর স্ত্রীর প্রেমিক কারো প্রতি-ই সামান্য সহানুভূতির জায়গা রাখেননি কথা888sport live chatী জীবনানন্দ দাশ। বাস্তবজীবন থেকে কাউকেই তেমন বেশি নড়চড় করেননি। জীবনানন্দ দাশের প্রায় সব 888sport alternative link ও গল্পের বিষয়-বিন্যাসে এ-ধরনের প্রসঙ্গই আছে।
মানুষের জীবনে দারিদ্রে্যর মতো এমন বড় ঘাতক আর নেই। সৃষ্টিশীল জীবনকে এই ঘাতক সহজে পরাস্ত করতে পারে না। কিন্তু অস্থির, অসহায় ও দুর্বল করে ফেলতে পারে। দারিদ্র্য কবি জীবনানন্দ দাশকে পরাস্ত করতে পারেনি এবং তাঁর 888sport app download apkর ঐশ্বর্যকেও মলিন করতে পারেনি। কিন্তু মানুষ হিসেবে কতগুলো প্রয়োজনকে তো আর অস্বীকার করতে পারেননি। প্রকৃতি, সমাজ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যক্তি হিসেবে একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। একটি পারিবারিক বৃত্ত তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিণত মানুষ হিসেবে নিজের সঙ্গে নিজের একটি বন্ধন তৈরি হয়েছে। তীক্ষন অনুভূতিশীল ও সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে জীবনানন্দ দাশের জীবনে এসব বন্ধন গড়পড়তা মানুষের চেয়ে আলাদা ছিল। অবশ্য সকল সৃষ্টিশীল মানুষের তা-ই হয়। কলকাতার নাগরিক জীবনের কোলাহল ও সংকীর্ণতা তাঁর মনে যে ক্লান্তি ও বিমর্ষতার জন্ম দিত, গ্রামের নিরিবিলি পরিবেশে সেই ক্লান্তি ও বিষাদকে দূর করার জন্য বারবার ফিরে আসতেন। নদীর পাড় ধরে ঘাসের ভেতর দিয়ে প্রকৃতির ছায়া-মায়ার ভেতর দিয়ে নির্জন বিকেলে একা হেঁটে বেড়ানোর আনন্দ ছিল। কিন্তু জীবনের এই অতিসামান্য আনন্দটুকুও বিয়ের ভেতর দিয়ে বিদায় নেয়। জীবনানন্দ দাশের বিবাহোত্তর বেকার জীবনের মর্মান্তিক বাস্তবতাই তাঁর গল্প-888sport alternative linkের প্রধান বিষয়। বেকার, তাই পরিবার থেকে সর্বত্রই অপাঙ্ক্তেয়, নিজের স্ত্রীর কাছে পর্যন্ত। দাম্পত্য বিরোধ, বিবাহপূর্ব প্রেমের 888sport sign up bonusমন্থন, সমাজ ও রাষ্ট্রের সমস্ত ব্যবস্থাপনার ওপরে এক ব্যর্থ কবির ভয়ানক ক্রোধ, নিজের অসহায়ত্ব – এসবই গল্প-888sport alternative linkের বিষয়। খুব অল্পই বিষয় আছে এর বাইরে। তাঁর গল্প-888sport alternative linkের নায়ক বা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রদের অনেকেই সরাসরি কবি, সরাসরি কবি না হলে কবির মতো জীবনের প্রতি নির্লিপ্ত। প্রত্যেকের মধ্যেই স্বরূপে সক্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশ। জীবনপ্রণালী 888sport alternative link এবং দু-তিনটি গল্পের বিষয়-বিন্যাস নিয়ে আলোচনা করে এই মন্তব্যের একটি কার্যকারণ দাঁড় করানো যায়।
‘চাকুরি নেই’ গল্পের নায়ক কবি সুকুমারের বেকার জীবনের মনস্তাত্ত্বিক বিশেস্নষণের সূত্রে জীবনানন্দ দাশ নিজেরই আত্মবিশেস্নষণ করেন। বেকার, কলকাতায় থাকার সামর্থ্য নেই। টিউশনি করে কিছুদিন চললেও শেষে বিদায় জানিয়ে গ্রামে ফিরতেই হয়। আশি টাকা বেতনের চাকরি করে অতিশয় প্রবীণ পিতা একান্নবর্তী সংসারে ভাইদের কর্তৃত্ব ও শাসনের মধ্যে টিকে আছেন শুধু। কারণ তার সঙ্গে আছে সুকুমারের স্ত্রী ও রোগী মেয়েটি। এখন স্থায়ীভাবে যোগ দিতে যাচ্ছে সুকুমার। এই পরিবারে সুকুমারের অবস্থান সৈনিকের মতোই স্বাধীনতাহীন। জেঠাখুড়োদের দেবতাজ্ঞান করে নানারকম অন্যায়-অবিচারকে গভীর সহিষ্ণুভাবে হজম করতে হয় সুকুমারকে। তার বাবা-মা করছে, তার স্ত্রী-সন্তান করছে। এই পরিবার থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ সে তৈরি করতে পারেনি। বরং স্থায়ীভাবে নিজেকে সমর্পণের জন্য কলকাতা থেকে ফিরছে। কিন্তু ফেরার পরের দৃশ্যপট আমাদের কল্পিত দৃশ্যপট থেকেও মর্মান্তিক। অনেকদিন পরে স্ত্রীর সান্নিধ্যলাভের গভীর আকাঙক্ষায় স্ত্রীর বিছানায় শুয়েছিল। বেকার, সামর্থ্যহীন জীবনে 888sport promo code-সান্নিধ্যের গভীর আস্বাদ সে পেতে পারে না। তাই স্ত্রী নিজের বিছানায় গ্রহণ করেনি। শুধু কি তাই, শহরের শিক্ষেত স্ত্রীর ঘুম না আসা পর্যন্ত সুকুমারকে জেগে থেকে পাহারা দিতে হবে। এই নিশ্চয়তাই সে দাবি করে স্বামীর কাছে। নিজের কাছে ডাকার কোনো প্রয়োজন নেই। ষাটটা টাকা রোজগার হলে এমন বঞ্চনা-অপমান মানতে হয় না। সুকুমারের এই নিয়তির সঙ্গে যোগ হয়েছে 888sport app download apk লিখতে ও পড়তে না পারার নিয়তি। 888sport app download apk লিখতে না পারা তাঁর কাছে জীবনেরই অপচয়। এই অপচয়ের কারণ তাঁর অসামর্থ্য, অনিচ্ছা বা অলসতা নয়। কঠিন বাস্তবতা এই অপচয়ের কারণ। 888sport app download apk লেখা, বই পড়া আর যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ানোর লালিত সাধকে জীবনে দেবতাজ্ঞান করেন। একটি বইয়ের পা-ুলিপিকে দেবতা মনে করেন। কবি সুকুমারের এসব নির্মল আকাঙক্ষার জীবন স্ত্রী-সন্তান-সংসারের বাস্তবতার কাছে নির্মম পরাজয়ের শিকার।
জীবনানন্দ দাশের ‘888sport app download apk আর 888sport app download apk, তারপরেও আবার 888sport app download apk’ নামের গল্পটিতে নায়কের নাম নেই। ছদ্মনাম ঝ। জীবনানন্দ দাশের নামের শেষ ইংরেজি বর্ণ ঝ হতে পারে। ঝ ছদ্মনাম ব্যবহার করে গল্পের ছাঁচে ফেলে কায়দামাফিক ও নিরাপদ থেকে 888sport live footballের উমেদার, অধ্যাপক, পত্রিকার কলাম লেখক এসব মানুষকে সরাসরি আক্রমণ করেন। এঁরা জীবনানন্দ দাশের চক্ষুশূল ছিল। নিজের 888sport app download apk নিয়েও কথা বলেন। গল্প হয়নি মোটেই কিন্তু এসব মানুষের ভ-ামি, কপটতা ও 888sport live footballের প্রতি কৃত্রিম অনুরাগকে কঠিনভাবে আক্রমণ করেন। এক তরুণ কবিকে সামনে নিয়ে একের পর এক মনের ক্ষোভ প্রকাশ করেন আটান্ন বছর বয়সী কবি ঝ। সংবাদপত্রে আর্টিক্যাল লিখলে বা ইংরেজি 888sport alternative link বা 888sport app download apk latest version লিখলে টাকা পাওয়া যায়, 888sport app download apk ছেড়ে কেন এসব লিখছেন না, তরুণ কবির এ-ধরনের জিজ্ঞাসায় কবি ঝ মোটেই বিস্মিত হননি। পালটা ছেলেটিকেই আক্রমণ করেন, ‘অর্থাৎ আমার কিছু টাকা রোজগার করা উচিত? সে-ই জন্য 888sport app download apk আর নাই লিখলাম? আমার 888sport app download apk ও 888sport live footballের প্রতি তোমাদের 888sport apk download apk latest version তো এই রকম।’ ইংরেজি লিখে যে বাঙালি লেখকরা টাকা উপার্জন করেন তাদের আক্রমণ করে বলেন,
টাকার জন্য আমি বেঁচে আছি বলে মনে হয় না। বেঁচে আছি আমি সৃষ্টির জন্য। বাংলা 888sport app download apk আমার হৃদয়ে নিজের থেকেই জন্মায়, গল্পও হয়তো তেমনি জন্মাবে একদিন। কবির হৃদয় হবে পৃথিবীর মতো, তার রচনা হবে ঘাসের মতো, অরণ্যের মতো। এক লাইন ইংরেজিও আমার হৃদয়ের ভেতর ঘাসের শিষের মতো জন্মায় না।
তরুণ ছেলেটি চলিস্নশ টাকার বেতনের খবরের কাগজের চাকরি ছেড়ে, আর্টিক্যাল লেখা ছেড়ে মাসিক 888sport live football পত্রিকা করার মনোবাঞ্ছা নিয়ে এসেছে প্রবীণ কবি ঝ-এর কাছে। সে নিজের আকাঙক্ষা ও দৈন্যের কথা জানায় খোলাখুলিভাবে। এরই মধ্যে বালিগঞ্জে প্রাসাদ তৈরি করে সুন্দরী স্ত্রী নিয়ে বসবাস করে যে-বন্ধুরা তারা এই কবিবন্ধুকে আর চিনতে পারে না। তরুণ কবিকে কবি ঝ-এর প্রথম পরামর্শ হচ্ছে : ‘লেখা ছেড়ে দাও।’ দ্বিতীয় পরামর্শ হচ্ছে : ‘এক ডাক্তারকে তোমার চোখ দেখিও, এক ডাক্তারকে তোমার মাথা। গিরিন্দ্রশেখর বাবুকে দেখালেও পার।’ অবশ্য নিজের সম্পর্কে বলেন : ‘আমি নিজেই আমার মাথা ডাক্তার গিরিন্দ্রবাবুকে দেখাতে রাজি আছি, কিন্তু আমার অনেক বয়স হয়ে গেছে, দেখিয়ে লাভ নাই এখন আর। সকলের সহজ পৃথিবীতে কটা দিনের জন্য ফিরে গিয়ে কী আর করব?’ শেষে এই তরুণের প্রতি তার সুপারিশ হচ্ছে, 888sport app download apkয় জীবনকে সমর্পণ নয়, বরং 888sport live footballের অধ্যাপক বা 888sport live football সম্মেলনের মুখুয্যে সাহেব, বাঁড়ুয্যে সাহেব বা অন্য সাহেবদের মতো 888sport live footballকে জীবনের অনুষঙ্গ করে নিতে পারে। তখন এই তরুণ একদিন 888sport live football সম্মেলন শেষে তাসের আড্ডায় দামি সিগারেট টানতে পারবে, নানারকম জানোয়ারের মাংস খেতে পারবে, স্ত্রীকে চাবুক মেরে প্রণামী নিতে পারবে, গোটাদশেক স্কুলের জবরজং সেক্রেটারি হয়ে, ব্যাংক ডিরেক্টর হয়ে সুখী মানুষ হয়ে থাকতে পারবে। জীবনের কেন্দ্র থেকে বিচ্যুত হয়ে কেন এই দুর্ভোগের জীবন বেছে নেবে এই তরুণ কবি?
কবি ঝ আটান্ন বছরে একটি জীবন পেছনে ফেলে এসেছেন। তবে কবি হওয়া ছাড়া তার আর ভিন্ন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। কারণ তার বিশ্বাস, অতীত জন্মে যেমন তিনি কবি ছিলেন, ভবিষ্যতেও তাই হবেন। আর বর্তমান জীবনে তো আর কিছুই করেননি কবি হওয়ার চেষ্টা ছাড়া। কোনোদিন চাকরি করেননি বা করার চেষ্টাও করেননি। ছুতোর, কামার, মুচি যেমন জাত-ব্যবসা কখনোই ছাড়ে না, তেমনি কবি ঝ আটান্ন বছর ধরে 888sport app download apkকে ছাড়েননি। সম্পদের লোভ, 888sport promo codeর লোভ, কলকাতা শহরে প্রতিষ্ঠার লোভ অর্থাৎ ব্যবহারিক জীবনের সমস্ত আকাঙক্ষা, লোভ-লাভ তুচ্ছ তার কাছে। এত বছর পরে তরুণ কবিকে আশ্চর্য এক মনোবাঞ্ছার কথা বলেন। 888sport app download apk আর লিখবেন না, সমস্ত অতীত জীবনকে অস্বীকার করে নতুন একটি জীবন গড়বেন। শুধু 888sport app download apk ও 888sport live football যাদের জীবিকা তাদের নির্যাতন করার উদ্দেশ্যে 888sport live লিখবেন মাঝে মাঝে। বিয়ে করবেন, পনেরোটি সন্তান জন্ম দেবেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনারারি ডিগ্রি নিয়ে নেবেন। এই কারণে প্রফেসরদের নিয়ে গত দশ বছরে লেখা কোনো 888sport app download apk ছাপতে দেবেন না এবং দুর্ভাগ্যক্রমে যে-চারটি 888sport app download apkর বই বের হয়ে গেছে সেগুলো যেন প্রচল না হয় সেই চেষ্টা করবেন। এভাবেই দেশের মানুষের কাছে ‘অসামান্য মহাপুরুষ’ বা ঈশ্বরের বরপুত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করবেন। আটান্ন বছর 888sport app download apk লিখে যে-সম্মান পাননি, মাত্র তিন বছরে অনেকগুণ বেশি পাবেন। সৃষ্টির বাইরে এসে ‘সৃষ্টির জন্তু’ হিসেবে নিজেকে গড়বেন। এভাবেই জীবনানন্দ দাশ প্রতিশোধ উন্মত্ততায় মেতে ওঠেন। অসম্ভব রকমের ক্ষোভ, হতাশা, ক্রোধ ও অপ্রাপ্তি থেকে এসব অবাস্তব বাক্য বেরিয়ে এসেছে কবির মুখ থেকে। আর এসবই জীবনানন্দ দাশ করেন উদ্দেশ্যমূলকভাবে। কবি ঝ বলেন, ‘আমার 888sport app download apkকে কেউই পছন্দ করে না। এতদিন কেউ আমাকে জুতো ছুঁড়ে মারেনি সেইটিই আশ্চর্য।’ জীবনানন্দ দাশ কতটা আত্মসচেতন ছিলেন? আত্ম-অবমাননার যন্ত্রণা কী পরিমাণে নাড়া দিয়েছিল তাঁকে, এই উক্তিতেই আছে, ‘একদিন আমাকে শুয়ার মনে করে কলকাতা থেকে তাড়িয়ে দিবে।’
প্রত্যেক মানুষকেই সমস্ত জীবনে একবার হলেও নিজের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়। সাধারণত বয়স পঞ্চাশ অতিক্রম করলেই এই নিজের দিকে তাকানোর ব্যাপারটি ঘটে। জীবনানন্দ দাশকে অব্যাহতভাবেই নিজের দিকে তাকাতে হয়েছে। কেননা, বাইরের পৃথিবী তাঁকে ও তাঁর 888sport app download apkকে যেভাবে অবজ্ঞা, অবহেলা ও প্রত্যাখ্যানের আঘাতে পরাস্ত করে নিশ্চিহ্ন করেছে, সেখানে নিজের দিকে তাকানো ছাড়া কী উপায় ছিল? 888sport live footballসভায় সাধারণত যাননি। 888sport app download apkকে তিনি ‘বৃষ্টিভেজা ঘেমো’ দুর্বল মানুষের জন্য মনে করতেন। তাই রাস্তার মানুষের কাছে বা কোনো বন্ধুর কাছে বা নিজে একা 888sport app download apk পড়তেন কিন্তু 888sport live footballসভায় 888sport app download apk পাঠ তাঁর ইচ্ছাবিরুদ্ধ ছিল। বেঁচে থাকতে জীবনানন্দ দাশের 888sport app download apk পাঠক গ্রহণ করেনি। সমসাময়িক শিক্ষা ও বাস্তবতার কাছে তাঁর 888sport app download apk ‘মৃত জিনিস’ বলেই বিবেচ্য ছিল। তবে তাঁর স্থির বিশ্বাস ছিল, একদিন তাঁর 888sport app download apk সর্বজনগৃহীত হবে। পঠিত হবে। যে-অধ্যাপকরা তাঁর 888sport app download apkর সামান্য মূল্যায়ন করেননি, তারাই একদিন ক্লাসে পড়িয়ে টাকা রোজগার করবে। গল্পের ছলে কবি ঝ-এর মুখে সেই আস্থার কথাই জানিয়ে গেছেন।
হয়তো শোয়াশো বছর পরে এরা (888sport app download apk) জন্মাবে। আমি তখন অনেকদিন হয় মরে গেছি। শোয়াশো বছর কেটে গেছে কাজেই এ 888sport app download apkগুলোর পরিস্ফুট জন্ম নিতে কোনো বাধা নেই আর। এসব 888sport app download apk সম্পর্কে বড় বড় মাসিক পত্রিকায় সমালোচনা বেরুবে – কেউ তা পড়তে যাবে না। অধ্যাপকরা। তাদের ভিতর যাদের বায়ুরোগ আছে হয়তো হাত পা ছুঁড়ে মাথা নেড়ে নেড়ে মৌসুমী সমুদ্রের মতো উচ্ছ্বাসে এই 888sport app download apkগুলি ক্লাসে ক্লাসে পড়াবেন। ছেলেরা তারিফ করবে, হয়তো অগ্রাহ্য করে যাবে। প্রফেসর লেকচার শেষ করে টাকার কথা ভাববেন। নিজের বক্তৃতাশক্তির ওজস্বিতায় রক্তমুখ হয়ে থাকবেন, হয়তো 888sport app download apkর কথা মনেও থাকবে না তাঁর।
জীবনপ্রণালী 888sport alternative linkটি ১৯৩৩ সালে লেখা। উত্তমপুরুষে লেখা কাহিনির কথক নায়ক নিজে। নায়ক কবি তো বটেই, প্রায় শতভাগ কবি জীবনানন্দ দাশ। নায়িকা চরিত্রটির নামটিই শুধু পালটেছেন। লাবণ্য দাশের জায়গায় অঞ্জলি। অঞ্জলির মেজাজ, আচরণ, ক্রোধ, ঘৃণা সবই লাবণ্য দাশের। একই চরিত্র ভিন্ন নামে। লাবণ্য দাশের মতো অঞ্জলিও পিতৃমাতৃহীনা কলেজ-পড়ুয়া সুন্দরী উচ্চাভিলাষী। জীবনপ্রণালী 888sport alternative link আদতে কবি জীবনানন্দ দাশেরই জীবনচরিত।
888sport alternative link পদবাচ্য হয়েছে কিনা? 888sport alternative linkের 888sport live chat-শাসন মানা হয়েছে কিনা? এসব আমি কিছুই ভাবছি না। আমি ভাবছি, রবীন্দ্রনাথের পরে বাংলা 888sport app download apkর এই শীর্ষ কবির জীবনপ্রণালী নিয়ে। যে-জীবন তিনি পেয়েছেন, যে-জীবন ঘষে পৃথিবীর মানুষের জন্য সৃষ্টি করে গেছেন অমর সব 888sport app download apk, সেই জীবনকে এই পৃথিবী ও তার মানুষ কী দিলো! আবার জীবনের এই দুর্দৈবকে কীভাবে বহন করলেন তিনি? বাবার ৭৫ টাকা মাসের বেতনের চাকরির ওপরে নিজের প্রয়োজন ও স্ত্রীর প্রয়োজনের ভার চাপিয়ে দিয়ে কীভাবে আছেন? কীভাবে তলস্তয় পড়ছেন? চাকরির জন্য কলকাতা যেতে হবে বা কোথাও ঘুরতে হবে, এসবের আকাঙক্ষা ও প্রয়োজন দুটিই চরমে, কিন্তু যাওয়ার কোনো তাড়া নেই কেন? আবার ঘরে বসে হিসাব করেন কত টাকা বেতনের চাকরি হতে পারে। সামান্য চেষ্টা করলে আর ১০ নম্বর বেশি পেয়ে এমএ-তে ফার্স্টক্লাস পেলে ৫০০ টাকা বেতনের চাকরি করতে পারতেন। কিন্তু এমএ পরীক্ষাটাই দিয়েছেন নিতান্ত অনিচ্ছায় ও অবহেলায়। সামান্য চেষ্টায় এগিয়ে থাকা প্রফেসর বন্ধুটি তসরের স্যুট-টাই পরে গ্রাম পর্যন্ত ছুটে এসেছে বন্ধুকে সুপরামর্শ দিতে। বন্ধুর ৫০০ টাকা বেতনের চাকরি ও পোশাকি জৌলুসের বিপরীতে লেখকের ৩০ টাকার বেতনের চাকরি অন্বেষণ ও পোশাকি দৈন্য; কফি, চকোলেট, দুধ-মাংসের রোস্ট, মাটন আর বেকনের কাটলেট ইত্যাদি দামি খাদ্যে অভ্যস্ত বন্ধুপত্নীর স্থূলকায় মেদবহুল সুখী শরীরের তুলনায় নিজের স্ত্রীর রোগা ক্ষীণতনু দারিদ্র্য চেহারার বর্ণনা লেখক দিয়ে গেছেন কখনো নির্বিকারভাবে, কখনো শেস্নষাত্মক ভঙ্গিতে। কিন্তু ন্যূনতম আত্মগস্নানি নেই তাঁর নিজের মধ্যে। প্রফেসর বন্ধু, যার নামও শ্রীবিলাস, যে বিলাসবহুল জীবন গড়েছে, সেটি তার প্রাপ্য। কারণ সে প্রচ-রকমের আশাবাদী ও উচ্চাকাঙক্ষী। বরাবরই সে জীবনকে বাজিয়ে দেখেছে। 888sport app download apk-গল্পের মতো অদামি-মূল্যহীন কাজে জীবনের সামান্য সময়ও বিনিয়োগ করেনি শ্রীবিলাস। বরং মফস্বলে বসে 888sport app download apk-888sport alternative link লেখার জন্য একপ্রকার তাচ্ছিল্যই করে বন্ধুকে। এমনকি রবীন্দ্রনাথকে দেখতে গিয়ে সময় নষ্ট করার চেয়ে প্রেমিকার নরোম হাতে পিঠের ঘামাচি মারার সুখ-উপভোগ অধিকতর মূল্যবান। রবীন্দ্রনাথের বক্তৃতা শোনার চেয়ে শরীর ঠিক রাখার জন্য টেনিস খেলাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর কীভাবে আক্রমণ করলে শ্রীবিলাসের মতো জন্তুপ্রায় মানুষকে রক্তাক্ত করতে পারবেন জীবনানন্দ দাশ? এ কি ভয়ানক নির্মম প্রতিশোধ!
প্রতিষ্ঠিত বন্ধু কর্তৃক অপমান আর তাচ্ছিল্যের এখানেই কি শেষ! কোন দুর্ভাগ্যে লেখকের স্ত্রী অঞ্জলি স্যুট-টাই পরিহিত প্রফেসর শ্রীবিলাসকে দেখে ফেলেছে একনজর। তাতেই ঘটে নতুন বিপত্তি। যে উচ্চাকাঙক্ষা ও স্বপ্ন লালন করে অঞ্জলি, যে পুরুষ তার কাম্য, সেরকম পুরুষ এই প্রফেসর। মাত্র ১০ কি ১২ নম্বরের ব্যবধানের কারণে দুই বন্ধুর এরকম উঁচু-নিচুর দূরত্ব। জীবনের প্রতি এই উদাসীনতার খেসারতের অংশ স্ত্রী হিসেবে অঞ্জলিকেও কম বহন করতে হয় না। তাই দুই বন্ধুর তুলনা করে স্বামীকে ভৎর্সনা করে, ‘তবে ওর হল, তোমার হল না কেন?’, ‘তুমি ফার্স্টক্লাস পেলে না কেন?’ চসারের পেপার খারাপ হওয়ায় ফার্স্টক্লাস ছুটে গেছে, লেখকের এইরকম কৈফিয়তের জবাবে অঞ্জলি বলে, ‘এরকম হয় কেন? শ্রীবিলাসের তো হয়নি?’ শেষে যখন লেখক বারো বছর আগের কথা বলে বিষয়টিকে এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন তখনই অঞ্জলি মোক্ষম আঘাতটি করে, ‘হলই বা! এ বারো বছরে সে পাপের প্রায়শ্চিত্ত তো করলে, কিন্তু ভেবেছ ফুরিয়ে গেছে! তা ফুরায় না, কিন্তু সঙ্গে আর একজন মানুষকে জোয়াল বইতে ডাকলে কোন হিসেবে, আমি অবাক হয়ে তাই ভাবছি।’
স্বামীর ব্যর্থতা আর অসামর্থ্যকে আঘাত করে রক্তাক্ত করা যায়, নিজের দৈন্যপীড়িত ভাগ্যকে উপহাস করে নিজেও রক্তাক্ত হওয়া যায় কিন্তু যে-ফাঁদ অঞ্জলিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে, সেই ফাঁদে তার অবস্থা ‘কলে ধরা ইঁদুরে’র মতো। শিক্ষা-সামর্থ্য-যোগ্যতা থাকার পরেও শুধু লেখক স্বামীর ইচ্ছার অভাব ও ঔদাসীন্যের কারণে তার এই পরিণতি। এই ফাঁদ সে তৈরি করেনি কিন্তু এই ফাঁদে সে পড়েছে। এমএ পরীক্ষায় ফার্স্টক্লাস না পাওয়ার পাপ, সামর্থ্য নেই তবু বিবাহ করার পাপ, বেকারত্বের পাপ – লেখকের এসব পাপের প্রায়শ্চিত্তের প্রধান ভোগী অঞ্জলি। তাই অঞ্জলির ক্রোধ, আক্রমণ আর তাচ্ছিল্যের সামনে লেখক বরাবরই নতজানু। বন্ধু শ্রীবিলাসের মতো টাই পরার অভ্যাস তৈরি করা, কলকাতা গিয়ে তিরিশ টাকার বেতনের হলেও খবরের কাগজের চাকরির তদবির করা, মাসিকে গল্প বা নাটক লিখে অর্থ আয় করা, অঞ্জলির এসব পরামর্শ ন্যায়সংগতই বটে, কিন্তু এই সামান্য চেষ্টাতেও নেই লেখক। সবকিছুতেই তার এক ধরনের ভয়, দ্বিধা, সংকোচ, নিজেকে আড়াল করার নিরন্তর চেষ্টা। ইংরেজিতে এমএ পাশ উচ্চশিক্ষেত যুবক কলকাতায় চাকরির চেষ্টা না করে বরং গ্রামের বেকার জীবনকেই নিরাপদ মনে করেন। স্কুলটিচার বাবার ৭৫ টাকা বেতনের ওপরে সস্ত্রীক জগদ্দল পাথরের মতো চেপেছেন। কিন্তু কেন এতটা নিরুপায়? এই দায়ভার কে নেবে?
গড়পড়তা মানুষের চেয়ে কবিরা চিরকালই আলাদা হয়। সংসারের বাঁধা নিয়মের স্থূলতার মধ্যে তারা থাকেন না। বেঁচে থাকার জন্য যে-কাজটি না করলেই নয়, সেই কাজটি করেন বটে, কিন্তু তার প্রতিও তাঁর থাকে শ্যেনদৃষ্টি। সমস্ত মানুষ আর মানুষের পৃথিবীর প্রতি তিনি তাকান বিস্ময়, কৌতূহল আর জিজ্ঞাসু চোখে। ফাঁদে আটকেপড়া শালিকের মতো যদি বিবেক অন্ধ, অসৎ, সমর্থ ও অর্থলোলপু মানুষের পাতা ফাঁদে বা ষড়যন্ত্রে পড়ে নিয়মিত চাকরি হারাতে হয় বা ছাড়তে হয়, তবে সৃষ্টিশীল সংবেদনশীল মানুষটির পক্ষে আর কী করার থাকে? কম বেদনা নিয়ে তো আর এই কবি লেখেননি, ‘এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয়/ মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা 888sport live chat অথবা সাধনা/ শকুন আর শেয়ালের খাদ্য তাদের হৃদয়।’ সবখানে শকুন ও শিয়ালরূপী মানুষ ফাঁদ পেতে বসে আছে। না হলে, ‘ক্যাম্পে’র মতো এমন একটি মহৎ 888sport app download apk লেখার অপরাধে চাকরি হারায়! 888sport alternative linkের নায়কের মতো আত্মকেন্দ্রিকতার চরম পথ বেছে নিয়েছিলেন জীবনানন্দ দাশ।
জীবনানন্দ দাশ 888sport app download apkয় যা বলেছেন উপমা-অলংকারের সংকেতে, গল্প-888sport alternative linkে তা বলেছেন খোলাখুলিভাবে। কোথাও আবরণ রাখেননি। এমনকি নিজের আবরণ রেখে কথা বলেননি। দৈন্যের প্রকোপে পড়ে যে-মানুষটি কখনো বিবেককে ও সততাকে অপমান করেনি, সে-ই শেষ পর্যন্ত অপ্রত্যাশিতভাবে হাতে আসা একশ টাকার লোভ সামলে উঠতে পারেননি। কলকাতার পরিচিত এক ব্যবসায়ীর ভুলবশত পাঠানো একশ টাকার মানিঅর্ডার ফেরত না পাঠিয়ে অনেকগুলো যুক্তি দাঁড় করেন। ব্যবসায়ীর কাছে একশ টাকা নিতান্তই তুচ্ছ ব্যাপার, বিপরীতে তার কাছে এই টাকা অপরিসীম দরকারের। বই কেনা, স্ত্রীর জর্দা, বায়োস্কোপ দেখার খরচ, একটা বুটিদার শাড়ি, সন্তান প্রসবের কারণে সূতিকা রোগের জীর্ণ শরীরের জন্য টনিক, বাবা-মাকে দু-একটা কাপড়, কাপড় কাচার সাবান দিয়ে দাড়ি কামানোর পরিবর্তে একটা সেভিং ক্রিম, পোড়ানোর জন্য ধূপ ইত্যাদি দৈনন্দিন প্রয়োজন মিটিয়ে জীবনে সামান্য সময়ের জন্য হলেও স্বসিত্ম আনবে।
সমাজের সকলের জন্য সম্পদ আছে, ঈশ্বর বিশ্বাস আছে, কল্যাণ-আনন্দ আছে। কবির এসব কিছুই নেই। তাঁর আছে সৃষ্টির বেদনাকে ধারণ করার একটি অনুভূতিশীল হৃদয়। কিন্তু মানুষের কাছে এর কোনো মূল্য নেই। প্রেম, কল্যাণ, আনন্দ, 888sport promo code হৃদয়প্রাপ্তির একটাই যোগ্যতা – অর্থ ও বড় পদের চাকরি। শুদ্ধতার পরিমাপও হয় তাই দিয়ে। ‘কবি নষ্ট হয়ে গেছে, প্রেমিক নষ্ট হয়ে গেছে – প্রশ্নহীন দ্বিধাহীন ভালবাসা’ পেতে হলে অরণ্যের কোনো বালিকা বা চিতাবাঘ বা মানুষের ভেতরে চলাফেরা করে এমন কুকুরকেই খুঁজে নিতে হবে। কারণ এরা টাকার মানে জানে না বা টাকার মূল্যে বিকোয় না। এখনো নিঃসংকোচে ভালোবাসা ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে তারা। কবি, 888sport promo code, অভিসারিকা টাকায় বিনিময় হয়। এসব যুক্তিতে ব্যবসায়ীর মানিঅর্ডারের টাকা নিজের বৈধ বিবেচনা করেন লেখক।
পরদিনই লেখকের জন্য শার্ট, নিজের জন্য নোটবই, একটা শাড়ি, নাগড়াই একজোড়া, ভালো সাবান, পাউডার, কডলিভার অয়েল ইমালশন, এমনকি জ্বর মাপার জন্য থার্মোমিটার পর্যন্ত কিনে বিয়ালিস্নশ টাকা শোয়া সাত আনা খরচ করে অঞ্জলি। সেদিনই দুপুরের খাবারের পরে সে নিজেই দুধ এনে ইমালশন তৈরি করে হাতে তুলে দিলে মাথা হেঁট হয়ে আসে লেখকের। দুজন উচ্চশিক্ষেত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে পারস্পরিক 888sport apk download apk latest version ও সম্ভ্রমবোধ থাকে, সেই 888sport apk download apk latest version ও সম্ভ্রমবোধ জেগে ওঠে।
বাস্তবনির্মিত কোনো সিনেফিল্মের পা-ুলিপির মতো একের পর এক দৃশ্যপট সাজিয়ে গেছেন 888sport alternative linkে। দারিদ্রে্যর দুর্বিপাকে পতিত জীবনে মাত্র একশ টাকা কী পরিমাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, তা ভাবতে গেলেই আশ্চর্য হতে হয়। এসব সামান্য প্রয়োজনও জীবনানন্দ দাশের জন্য অসহনীয় যন্ত্রণা বয়ে এনেছিল। আর এই যন্ত্রণার ভার বইতে গিয়ে স্ত্রী লাবণ্য দাশ মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। সমস্ত রকমের দুর্ব্যবহার ও অশান্তির কারণও ছিল একটাই। জীবনানন্দ দাশের বাস্তবজীবনের এই ট্র্যাজেডির সবটাই এখানে এসেছে। অভাবের দৈন্যে কারণে 888sport alternative linkের লেখকের ধৈর্যচ্যুতি ও সততাচ্যুতি ঘটেছে। একই কারণে লেখকের স্ত্রীর স্বভাবচ্যুতি ঘটেছে। নগদ তিনশো টাকা ও দেড় লাখ টাকার পৈতৃক সম্পদের অধিকারী যুবক অমলের দিকে ঝুঁকেছে অঞ্জলি। প্রায় প্রকাশ্যে স্ত্রীর এই স্বভাবচ্যুতিকে একপ্রকার নিঃশব্দে অনুমোদনই দিয়ে গেছেন লেখক।
অঞ্জলিকে দীর্ঘ চিঠি লিখেছে অমল। চিঠিতে তিনশো টাকা নগদ, দু-চার মাসের মধ্যে সাড়ে সাত হাজার টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা ও ভবিষ্যতে পৈতৃক সম্পত্তির দেড় লাখ টাকা প্রাপ্তির চমৎকার একটি হিসাব কষে অঞ্জলিকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা আছে। লিখেছে ‘তোমার স্বামীও তোমার জীবনে নাই। তুমিও তার জীবনে নাই।’ অঞ্জলিও প্রত্যুত্তরে চিঠি একটা লিখেছে কিন্তু সেটা ছিঁড়ে নতুন একটা লিখেছে। দ্বিতীয় চিঠির ভাষা দ্ব্যর্থবোধক – অমলের প্রতি ভালোবাসা আছে কিন্তু স্বামীর প্রতি ঘৃণা নেই। আপাতত দেড় লাখ টাকার লোভ ছেড়ে দিয়েছে। হতে পারে, সংসারে একশ টাকার আগমন ঘটায় আপাতত এই চিন্তা মুলতবি রেখেছে। দুটি চিঠিই পড়ার পরে লেখকের মধ্যে যে নির্লিপ্ত উপহাস খেলা করে তা অবিশ্বাস্য। তরুণ ছাত্র ছেলেটি তার স্ত্রীকে ভালোবাসে, তার স্ত্রীরও তার প্রতি ভালোবাসা আছে, এরকম একটি সুন্দর সুখ-স্বপ্ন-পরিকল্পনার মধ্যে কেন এরকম টাকা-পয়সার হিসাবে ভরা চিঠি? এটি তার বিষাদের কারণ। ‘888sport promo codeর কাছে বড়ো বড়ো অঙ্কের হিসাবই যে সবচেয়ে সুন্দর জিনিস এই প্রেমিক ছেলেটি তাও জানে।’
অপ্রত্যাশিত একশ টাকার আগমনের ফলে সংসারে বেশকিছু প্রয়োজন মেটে। একশ টাকা ব্যবহারে স্ত্রীর মনে প্রাণচাঞ্চল্যও তৈরি হয় এবং হঠাৎ করেই স্বামীর প্রতি অতিশয় মনোযোগী হয়ে ওঠে। এমনকি এই একশ টাকার সুখে অমলের প্রেমকে শুধু প্রত্যাখ্যানই করেনি, উৎপাত থেকে রক্ষা পেতে ঘরের দরজা-জানালা পর্যন্ত বন্ধ করে। এই একশ টাকা সংসারে সাময়িক স্বসিত্ম এনেছিল। পরে দেখা গেল, স্বসিত্মর কয়েকগুণ যন্ত্রণা, লাঞ্ছনা ও গস্নানি ডেকে আনে এই একশ টাকা। ভুল সংশোধন করে কলকাতার ব্যবসায়ী টাকা চেয়ে ফেরত চিঠি পাঠায়। এবার তৈরি হয় নতুন এক ট্র্যাজেডি। আরো ন্যাংটা হয়ে পড়ে লেখকের দারিদ্রে্যর চেহারা। বাহাত্তর বছরের বৃদ্ধ পিতাকেই কৃষ্ণাত্রয়োদশীর অন্ধকার রাতে ঘর থেকে বের হতে হয়। পঁচাত্তর টাকা বেতনের এই স্কুলমাস্টার জীবনসায়াহ্নে এসে এমএ পাশ বেকার ছেলের (ছেলে আবার কবি) দায় নিয়ে যে মর্মান্তিক কষ্টের মুহূর্তগুলো অতিক্রম করে; টাকা ধার পেতে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে যে-যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যায়, সেই যন্ত্রণার বর্ণনায় একেবারে নির্লিপ্ত থাকতে পারেননি জীবনানন্দ দাশ। এমনকি নিজের অবস্থান ব্যাখ্যার ক্ষেত্রেও পারেননি। প্রথমে বন্ধু, পরে কিশোর বয়সের প্রেমিকার কাছে একশ টাকা ধার চাইতে গিয়ে শুধু আশাহত ও প্রত্যাখ্যাত হননি, নিদারুণ তাচ্ছিল্য ও উপহাসের পাত্রও হয়েছেন। এই তাচ্ছিল্য ও উপহাসের ভাষাকে কোনোরকম শালীন বা শৈল্পিক করার চেষ্টা করেননি। বন্ধু পা বাড়িয়ে জুতা বুরুশ করে দেওয়ার প্রস্তাব করে টাকার শর্ত হিসেবে। প্রেমিকা প্রস্তাব করে টাইপ করে দিতে। বিনিময়ে বারো আনা পয়সা পাবে। ক্ষোভ প্রকাশের এ কী ভাষা! এ কী আশ্চর্যরকমের প্রতিশোধ নেশায় মেতে ওঠেন জীবনানন্দ দাশ! জীবন যে-বিষ উদ্গিরণ করে দিয়েছে প্রতিমুহূর্তে, সেই বিষ নিঃশব্দে নির্বাক্যে নীলকণ্ঠের মতো হজম করে যাওয়া ছাড়া তার পালানোরও কোনো পথ ছিল না। সেই বিষ গলাধঃকরণ করতে গিয়ে নির্মম যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে, এসব তারই বর্ণনা। কখনো নির্লিপ্ত থেকে, কখনো নিজে সম্পৃক্ত হয়ে, কখনো মহৎ হয়ে, কখনো সংকীর্ণ হয়ে শোধ নিয়েছেন। 888sport alternative linkের চরিত্র হয়ে বলছেন এই যা।
কোনোদিক থেকেই একশ টাকা জোগাড় হয়নি। এদিকে কলকাতার ব্যবসায়ী একের পর এক চিঠি পাঠাচ্ছেন। প্রথমে ভদ্রোচিত কথাবার্তা লিখলেও শেষে আইন-আদালতের হুমকি পর্যন্ত আসছে। ডানে পুলিশ, বাঁয়ে উকিল বসিয়ে স্ট্যাম্প রেজিস্ট্রার করে তবে পাঠাচ্ছেন চিঠি। এ-ধরনের দুর্বিপাক হরহামেশাই ঘটেছে জীবনানন্দ দাশের সংসার-জীবনে। বেকারজীবন ও চাকরিজীবনের ট্র্যাজেডি তো কারো অজানা নেই। এসব কারণে অস্বাভাবিক নির্লিপ্ততার চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে নিয়েছিলেন আত্মরক্ষার কৌশল হিসেবে। কিন্তু তাঁর সংবেদনশীল মন নির্লিপ্ত ছিল না। জীবনের এই ফাঁদ ছেড়ে পালাতে চাইতেন। পৃথিবীর কোথাও তাঁর জন্য এতটুকু জায়গা ছিল না যে, পালিয়ে বাঁচবেন। মৃত্যুবাতিকও এই কারণে। তাই দেখা যায়, সম্পূর্ণ অনাকাঙিক্ষতভাবে, অশৈল্পিকভাবে ও অনেকটা জোর করেই এই কটি কথা বলে 888sport alternative linkটি শেষ করেন।
ধীরে ধীরে জ্যোৎস্নার পথের মধ্যে বেরিয়ে গেলাম। এ রকম চিরকাল চলতে পারা যায় না কি? মাঠ-প্রান্তর ভেঙে, জানা-অজানার ওপারে, জ্যোৎস্নার আকাশে-বাতাসে বুনো হাঁসের মতন, যে পর্যন্ত, যে পর্যন্ত শেষ গুলি এসে বুকের ভিতরে না লাগে!
মনে হয় জীবনানন্দ দাশের কোনো 888sport app download apkর লাইন পড়ছি। ‘জ্যোৎস্নার আকাশে-বাতাসে বুনো হাঁসের মতন’ জীবনের সাধ তাঁর চিরঅপূর্ণই থেকে গেল! এই কষ্টই ছিল তাঁর জীবিতকালে। কেন আমৃত্যু জীবন থেকে পালিয়ে বেড়িয়েছেন? কেনই-বা মৃত্যুর কাছে নিজেকে সমর্পণের জন্য উন্মুখ ছিলেন? কেন এমন অস্বাভাবিক নির্লিপ্ততা তাঁর 888sport app download apkর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কী ভাবছেন? চারদিকের এত গস্নানি, অপবাদ, বঞ্চনা, অবিচার আর অস্বীকৃতির পাদপীঠে দাঁড়িয়ে মানুষটি কী করে এমন নির্বিকার ছিলেন? বাস্তবেই কি নির্বিকার ছিলেন? কী পরিমাণ অস্থিরতা আর আত্ম-অবমাননায় ভুগেছেন? জীবনানন্দ দাশ তাঁর ভাবীকালের পাঠকের জন্য এসব জিজ্ঞাসা বা কৌতূহল নিবারণের ব্যবস্থা করে গেছেন অপ্রকাশিত গল্প-888sport alternative linkে। এ-কারণে এগুলো প্রকাশের দায় মনে করেননি। এছাড়া তাঁর দিক থেকে এত বিপুল গল্প-888sport alternative link লেখার আর কোনো দায় বা দরকার ছিল বলে আমার মনে হয় না।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.