জড়জীবনের বড় প্রদর্শনী

 

স্টুডিওর ভেতর এলোমেলো হয়ে থাকা 888sport live chatীর রংসরঞ্জাম, তুলি, কৌটা, তেল-জলের পিপে, নচেৎ নানা জড়বস্ত্ত সাজিয়ে তাকে আঁকা চিত্রকরদের এক প্রিয় বিষয়। ইংরেজিতে স্টিললাইফ, বাংলায় আমরা বলি জড়জীবন।

এর উৎপত্তির ইতিহাস খুঁজলে যেতে হয় প্রাচীন মিশরীয় 888sport live chatে। তাদের চিত্রে রানির রেকাবিতে ছিল গুচ্ছের বিচিত্র ফুল, রসনা নিবৃত্তির জন্য মাছ, হাঁস, হরিণের রোস্ট। অমরত্বের ধ্যানের সঙ্গে পার্থিব সমৃদ্ধির এই ছবি কি তবে জড়জীবনের প্রাচীনতম নিদর্শন! পম্পেইয়ের ম্যুরালে আঁকা ছবিকেও বলা হয়েছে জড়জীবন। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা ‘দ্য লাস্ট সাপার’ চিত্রে খাবার টেবিলে  থাকা খাদ্যবস্ত্তও জড়জীবনের ধারণা বিকাশে সহায়ক হয়েছে। সপ্তদশ শতকে ওলন্দাজ 888sport live chatীরা জড়জীবনকে চলৎজীবন থেকে আলাদা করে একে পাদপ্রদীপের আলোয় আনেন। জড়জীবনের প্রেমে আকণ্ঠ মজে তাকে জাতে তোলেন ফরাসি 888sport live chatী পল সেজান। সেই থেকে জড়জীবন 888sport live chatের অপরিহার্য এক প্রকাশমাধ্যম।

এমনকি চিত্রকলা চর্চা ও অনুশীলনের এক প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে 888sport live chatের এই বিশেষ ধারাটি বহমান।

বস্ত্তর বিচিত্র আকার নিয়ে ভরপুর এ-পৃথিবীর সর্বত্র জ্যামিতিক ফর্মের ছড়াছড়ি। আলোছায়ার মায়ায় তার রূপকে বর্ণের চমকে তুলে আনতে যে-888sport live chatীচোখ লাগে, তাতে পর্যবেক্ষণের আলো যত গভীর সে তত প্রাজ্ঞ। নানা বস্ত্তর নানা আকার ও গড়নকে গভীর মনোনিবেশে পাঠ করলে সহজ হয়ে ওঠে বস্ত্তর 888sport live chatায়ন। বিবিধ আকার অনুশীলন ও নানা সময়ের আলোর প্রক্ষেপণ এবং বিকিরণ চিত্রায়ণই জড়জীবনের সারসংক্ষেপ। ইতালির 888sport live chatী মোরান্দি জীবনভর বিভিন্ন আকৃতির বোতল আর বাটি নিয়ে জড়জীবন এঁকে জগৎখ্যাত হয়েছেন।

সমকালীন চারু888sport live chatের সহযোদ্ধা হিসেবে সুবিদিত গ্যালারি চিত্রক এই জড়জীবনের এক প্রদর্শনী করেছিল 888sport appয় – ‘জড়জীবনের বড় আয়োজন’ শিরোনামে। গত ২৬ অক্টোবর থেকে পক্ষকালব্যাপী এ-প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন 888sport live chatী মুস্তাফা মনোয়ার।

এ আয়োজনের বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে – অ্যাক্রিলিক রঙের এই যুগে প্রায় সবকটি কাজ ক্যানভাসে তেলরঙে এঁকেছেন অংশগ্রহণকারী পঁয়তালিস্নশজন 888sport live chatী! অ্যাকাডেমিক 888sport live chatশিক্ষায় তেলরঙে জড়জীবন অনুশীলনের সেই 888sport sign up bonus যেন ফিরিয়ে আনল গ্যালারি চিত্রক কর্তৃপক্ষ।

প্রদর্শনীটির প্রকাশনার প্রচ্ছদে ১৯৫২ সালে 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিনের (১৯১৪-৭৬) আঁকা একটি জড়জীবনের ছবি। জানালার ধারের টেবিলের ওপর ফুলদানিতে ফুলের সঙ্গে নতুন কয়েকটি হকিয়ার তুলি। নিচে কাচের বোতল, এর সামনেই তেলরঙের দুটি টিউব। প্রদর্শনীটি উৎসর্গ করা হয়েছে 888sport live chatাচার্যের 888sport sign up bonusর প্রতি 888sport apk download apk latest version জানিয়ে। ভেতরে জড়জীবন নিয়ে 888sport live chat-সমালোচক মঈনুদ্দীন খালেদের সুলিখিত ভূমিকা মুদ্রিত হয়েছে।

‘জড়জীবনের আয়োজনে’ অধিকাংশ চিত্রে দেখি পাশ্চাত্যের প্রাতিষ্ঠানিক 888sport live chatচর্চার রীতির প্রতিফলন। আশার কথা, কয়েকজন সেটিকে প্রাচ্য পরশে পরিবর্তনের প্রয়াস পেয়েছেন। এ-প্রদর্শনীর ময়নাতদন্ত করলে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই ফুলদানিতে ফুলের চর্চা করেছেন। পাশ্চাত্য 888sport live chatের বোতল ও গস্নাস চর্চাও কম করেননি!

এ-আয়োজনের অগ্রজ অশীতিপর 888sport live chatী সৈয়দ জাহাঙ্গীর। গোলাকার টেবিলে রাখা পুষ্পশোভিত এক ফুলদানির ছবি এঁকেছেন তিনি, তাঁর প্রিয় রং নীল-হলুদে।

888sport live chatী সমরজিৎ রায় চৌধুরী ড্রাপারিসহ ফুলদানি, বই, বোতল ও ফলমূল সাজিয়ে জড়জীবন এঁকেছেন সবুজ ও ব্রান্টসিয়েনা রঙে।

হাশেম খান লোকজ হাঁড়ি ও তার হাঁ-মুখ এবং শূন্য অবতল নিয়ে অপার্থিব আলোছায়ায় নন্দিত এক কম্পোজিশন রচনা করেছেন। মাঝের হাঁড়ির গায় আলপনার নকশা অন্যগুলো থেকে এটিকে বিশেষ করেছে।

ওপর থেকে বৈদ্যুতিক আলো ফেলে হারমোনিয়ামের ওপর রাখা গীতবিতান, ফুলদানি, রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতি নিয়ে পরিমিত আলোছায়ার প্রয়োগে দৃষ্টিনন্দন এক জড়জীবন তেলরঙে সৃজন করেছেন 888sport live chatী রফিকুন নবী। আলো-আঁধারির প্রয়োগে নাটকীয় একটা মুহূর্ত নির্মাণ করেছেন 888sport live chatী, যা দর্শকচিত্তকে আলোড়িত করে।

888sport live chatী মনিরুল ইসলাম ক্যানভাসে প্যাকেজিং পেপার যুক্ত করে অ্যাক্রিলিক রং দিয়ে অদ্ভুত এক চিত্র গঠন করেছেন। এ-ছবিতে 888sport live chatী সাদা, কালো, ছাই আর বাদামি রং ব্যবহার করেছেন। ক্যানভাস, কাগজ, রং – সব নিয়েই তাঁর এই জড়জীবন!

হামিদুজ্জামান খান তিনটি অ্যান্টিক ভাস্কর্য সাজিয়ে ছবি এঁকেছেন। আবুল বারক আলভী অ্যাক্রিলিক রঙে এঁকেছেন কাঠ কেটে গড়া এক ভাস্কর্যের সঙ্গে বোতল ও পটের ছবি। আবদুস শাকুর শাহ তাঁর অঙ্কনবৈশিষ্ট্য অনুযায়ী চিত্রপট বিভাজন করে নানা মৃৎপাত্র, কাচের বোতল ও ফল নিয়ে একটি 888sport live chatিত গঠন তুলে ধরেছেন।

চিত্রপটের কেন্দ্রস্থলে মৃৎপাত্রের ভেতরে জীবন্মৃত এক লতানো গাছের ছড়ানো ডালপালায় সবুজ একটি পাতার আশ্বাস যেন জীবনজয়ের গল্প মেলে ধরেছে। এটি 888sport live chatী শহিদ কবীরের চিত্রকর্ম। 888sport live chatী আবদুল মান্নান এঁকেছেন দেয়ালে অর্কিড ফুলের শোভা। বীরেন সোম এঁকেছেন কাঁসার ফুলদানি ঘিরে থাকা অসংখ্য ফুলের ছবি। নাসিম আহমেদ নাদভী যা কিছু আঁকেন বর্ণ তার সাদাকালো। জানালায় তিন-চারটি পাতার ছবি এঁকেছেন তিনি। ভাঁজকরা কাগজ আর সেফটিপিন এঁকে নিরীক্ষামূলক কাজ করেছেন 888sport live chatী নাইমা হক। ফরিদা জামান দুটি ফুলদানিভরা গুচ্ছফুলের দৃষ্টিনন্দন ছবি এঁকেছেন।

এ-সময়ে বাস্তবানুগ ছবি যাঁরা আঁকেন, তাঁদের মধ্যে উলেস্নখযোগ্য কজন 888sport live chatী এ-প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা হলেন – জামাল আহমেদ, আহমেদ শামসুদ্দোহা, রেজাউন নবী, শেখ আফজাল, মনিরুজ্জামান, কনক চাঁপা চাকমা, মোহাম্মদ ইকবাল, মাকসুদুল আহসান, জহিরউদ্দিন, ফজলুর রহমান ভুটান, আলপ্তগীন তুষার, রোকসানা সাঈদা পপি, মনিরুজ্জামান শিপু, মাকসুদা ইকবাল নীপা, সোহাগ পারভেজ, আবদুস সাত্তার তৌফিক, কামালুদ্দিন, বিশ্বজিৎ গোস্বামী, সুমন ওয়াহিদ ও শাহনুর মামুন।

আবার একটু অন্য ধরনের কাজ যাঁরা করেন, তাঁদের কেউ কেউ এ-প্রদর্শনীতে বাস্তবানুগ কিংবা একটু অন্যভাবে জড়জীবনের ছবি এঁকেছেন। তাঁরা হলেন – 888sport live chatী মোহাম্মদ ইউনুস, সমর মজুমদার, নিসার হোসেন, শামিম সুব্রানা, আতিয়া ইসলাম এ্যানি, শামসুল আলম আজাদ, বিপাশা হায়াত প্রমুখ।

দুদলেই দেখা যাচ্ছে এ-সময়ের সেরা 888sport live chatীদের নাম। তাঁদের অংশগ্রহণ এ-প্রদর্শনীকে মহিমান্বিত করেছে বলেই আমার ধারণা।

স্টুডিওর রং, রঙের কৌটা, বালতি, তুলি কালার প্যালেট ইত্যাদির বাস্তবানুগ ছবি এঁকেছেন 888sport live chatী জামাল আহমেদ।

আহমেদ শামসুদ্দোহা আলোছায়ার এক টেবিলে কাত হওয়া কাচের বয়াম থেকে গড়িয়ে টেবিলে পড়ে থাকা আস্ত ও কটি ভাঙা বিস্কুট এঁকেছেন বিস্ময়কর বাস্তবানুগভাবে! প্রায় এমনই কুশলতায় মৃতপ্রায় গাছে পরগাছা হয়ে জন্মানো অর্কিডের ছবি এঁকেছেন শেখ আফজাল।

মনিরুজ্জামান আলো-আঁধারি পরিবেশে পানীয় পরিবেশনের স্থানে নানাবিধ বোতল ও গস্নাসের ছবি এঁকেছেন। রেজাউন নবী তথৈবচ বিষয় নিয়েই নিজের চিত্রকর্মটি সম্পাদন করেছেন।

কনক চাঁপা চাকমা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ধর্ম-আচার পালনের কয়েকটি পাত্র নিয়ে একটি গঠন এঁকেছেন। মোহাম্মদ ইকবাল ফুলসহ ফুলদানি এঁকেছেন। মাকসুদুল আহসান এঁকেছেন ফুলদানি, কলমদানি, বই ও রবীন্দ্র প্রতিকৃতি নিয়ে। জানালা দিয়ে ঘরে ঢোকা সাদা আলোয় মাখামাখি টেবিলে ফুলসহ ফুলদানি এঁকেছেন মনিরুজ্জামান শিপু।

দুধের দুটি পাত্র নিয়ে আলো-আঁধারিময় এক ছবি এঁকেছেন রোকসানা সাইদা পপি।

এ-প্রদর্শনীর সবচেয়ে পুরনো জড়জীবনটি জহিরউদ্দিনের। ১৯৮৯ সালে তাঁর শিক্ষাজীবনের সময় আঁকা। কালচে-নীল সিরামিক পাত্রের সঙ্গে শালগম, গাজর ও টমেটো সাজানো কাজ। ফজলুর রহমান ভুটান যান্ত্রিক মিকি আর কম্পিউটারের মাউস এঁকেছেন মজাদার হাস্যরস সৃষ্টির কায়দায়! আলপ্তগীন তুষার কঠিন বাস্তবতার আরেক গুণী চিত্রকর। কাঁসার জার, বোতল, ফলের ঝুড়ি, পাতাসহ সবুজ ডাঁসা পেয়ারা অসাধারণ এঁকেছেন! মাকসুদা নীপা একটি অ্যালুমিনিয়াম পাত্র এঁকেছেন নাটকীয় আলোছায়ায়।

কামালুদ্দিন তবলার বাঁয়া এঁকেছেন, বিশ্বজিৎ ক্যানভাসের মাঝখানে কাচের এক গস্ন­vসের হাঁ-মুখ এঁকেছেন। সোহাগ পারভেজ বড় ফুলদানির নিচে সাদা সিরামিকের চা-পাত্র ও আপেল আর স্ট্রবেরি এঁকেছেন। আবদুস সাত্তার তৌফিক নানারকম সবজি দিয়ে ও সুমন ওয়াহিদ ড্রাপারিসহ নানা রঙের আপেল, পাত্র আর পল সেজানের বই সাজিয়ে জড়জীবন তুলে ধরেছেন। শাহনুর মামুন ফুলদানি সাজিয়েছেন সূর্যমুখী ফুলে ফুলে।

মোহাম্মদ ইউনুস টেক্সচার ভরপুর বিমূর্ত আবহে একাধিক বোতল ও পিপে নিয়ে নন্দিত এক ছবি এঁকেছেন। 888sport live chatী নিসার হোসেন অসামান্য দক্ষতায় তেলরঙে এঁকেছেন পানির পস্নাস্টিক বোতল ও পাত্রে রাখা বাতাবিলেবুর ছিলা অংশ। এর হলদেটে বিচিটাও বাদ দেননি 888sport live chatী! অনেক ছাত্র বোধকরি তাঁর এমন বাস্তবধর্মী কাজ দেখার সুযোগ পাননি। এবার দেখার সুযোগ পেলেন তাঁরা।

আতিয়া ইসলাম এ্যানি এখানেও 888sport promo codeবাদী! চিত্রপটকে ভাগ করে হাতকাটা আবক্ষ এক পুতুলের সামনে সুতায় ঝোলানো কলা ও 888sport app খাবারসহ পস্নাস্টিক-সভ্যতার প্রতীক এক মামের বোতল এঁকেছেন তিনি।

আমি নিজেও মূর্তবিমূর্তের মাঝামাঝি আঁকি। এ-প্রদর্শনীর জন্য আমি হারিকেনের আলো-আঁধারির ছবি এঁকেছি। শামছুল আলম আজাদ মেঘাচ্ছন্ন আবহে শোলার তৈরি এক পাখি এঁকেছেন। শামিম সুব্রানা জ্যামিতিক ফর্মে নীল-সবুজ বর্ণে সৃজন করেছেন তাঁর জড়জীবন। সমর মজুমদার তানপুরা, কিবোর্ড ও বই নিয়ে এঁকেছেন। চিত্রপট জুড়ে চাসহ কাপ-পিরিচ এঁকেছেন বিপাশা হায়াত।

গ্যালারি চিত্রকে ‘জড়জীবনের বড় আয়োজন’ শিরোনামের বিশেষ এ-প্রদর্শনী চলে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত।