কবির আহবান : 888sport live chatীর আতিথ্য
– তুমি শান্তিনিকেতনে এসে থাকো।
– আমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম. এ. পড়ছি।
– শান্তিনিকেতন থেকে প্রাইভেটে এম. এ. পরীক্ষা দিতে পারবে।
– ভালো করে ভেবে আপনাকে জানাবো।
এই কথোপকথনের সময় ছিল সম্ভবত ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ। তখন কবির বয়স প্রায় ৭০ বছর। বৃদ্ধ কবির আন্তরিক আহবান এলেও ভরসা করতে পারেননি নবীন কবি জসীম উদ্দীন (১৯০৪-৭৬)। প্রখ্যাত পুথিপ্রেমিক দীনেশচন্দ্র সেনের (১৮৬৬-১৯৩৯) কাছে রেগুলার ক্লাসে এম. এ. পড়ার জন্য প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বিশ্বকবির আহবান। নিশ্চিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুথিসংগ্রহকারীর ৭০ টাকার কাজ ছেড়ে, অনিশ্চিত শান্তিনিকেতনে যেতে চাননি তরুণ কবি জসীম উদ্দীন। পরে, অনেক পরে, বিশ্বকবির মৃত্যুর পর, অনুতাপ করেছিলেন কবি জসীম উদ্দীন।
নক্সী কাঁথার মাঠ (১৯২৯) জসীম উদ্দীনের প্রশংসাধন্য প্রথম কাহিনিকাব্য। কাব্যটি পড়ে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ প্রশংসা করেছেন – অকুণ্ঠচিত্তে। যাঁরা নক্সী কাঁথার মাঠ পড়ে কঠোর সমালোচনা করার জন্য প্রস্ত্তত হচ্ছিলেন, তাঁরা আর সাহসী হতে পারলেন না। নক্সী কাঁথার মাঠ বাংলা 888sport live footballে চিরস্থায়ী আসন লাভ করলো। বিশ্বকবির দূরদৃষ্টিতে সেদিন ধরা পড়েছিল সত্য-কাব্য জীবনদর্শন। ভূমিকা লিখেছিলেন 888sport live chatগুরু অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৭১-১৯৫১)। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রথম ভারতীয় 888sport live chatী অবন ঠাকুর ভূমিকায় লিখেছিলেন –
নকশী কাঁথার মাঠ রচয়িতা শ্রীমান জসীমউদ্দীন নতুন লেখক, তাতে আবার গল্পটি নেহাতই যাকে বলে ছোট্ট এবং সাধারণ পলস্নী জীবনের। শহরবাসীদের কাছে এই বইখানির সুন্দর কাঁথার মতো করে বোনা লেখার কতটা আদর হবে জানি না। আমি এটিকে আদরের চোখে দেখেছি। কেননা এই লেখার মধ্য দিয়ে বাংলার পলস্নীজীবন আমাদের কাছে চমৎকার একটি মাধুর্যময় ছবির মত দেখা দিয়েছে। … জানি না, কিভাবে সাধারণ পাঠক এটিকে গ্রহণ করবেন, হয়তো গেঁয়ো যোগীর মতো এই লেখার সঙ্গে রচয়িতা এবং গল্পের ভূমিকা লেখক আমিও কতকটা প্রত্যাখ্যান পেয়েই বিদায় হব।
না, নক্সী কাঁথার মাঠ কাব্যটি প্রত্যাখ্যাত হয়নি। কবিও বিদায় নিতে বাধ্য হননি। কবি জসীম উদ্দীন নক্সী কাঁথার মাঠ কাব্যের পরও সোজন বাদিয়ার ঘাট, সকিনা ও মা যে জননী কান্দে কাহিনিকাব্যগুলি লিখেও প্রশংসা পেয়েছেন। সবচেয়ে বড় প্রশংসা পেয়েছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে। রবীন্দ্রনাথ নক্সী কাঁথার মাঠ পড়ে মনোমুগ্ধকর যে মূল্যায়ন করেছিলেন, যা আজো অমস্নান – চিরভাস্বর –
জসীমউদ্দীনের 888sport app download apkর ভাব, ভাষা ও রস সম্পূর্ণ নতুন ধরনের। প্রকৃত কবির হৃদয় এই লেখকের আছে। অতি সহজে যাদের লেখবার শক্তি নেই, এমনতর খাঁটি জিনিস তারা লিখতে পারে না।
আসলে আগে মহা888sport live chatী, তারপর বিশ্বকবি। রত্ন চিনেছিলেন 888sport live chatগুরু অবন ঠাকুর। কলেস্নাল (১৯২৩) মাসিক পত্রিকায় তরুণ জসীম উদ্দীনের ‘মুর্শিদাগান’ 888sport liveটি পড়ে অবন ঠাকুর মুগ্ধ হয়েছিলেন। কলেস্নালের সম্পাদক দীনেশরঞ্জন দাশকে (১৮৮৮-১৯৪০) মুগ্ধতার কথা বলেছিলেন। সেইসঙ্গে লেখক জসীম উদ্দীনকে দেখতে চেয়েছিলেন 888sport live chatগুরু অবন ঠাকুর। তারপর ইতিহাস আর রূপকথার দেশে পৌঁছে গেলেন তরুণ জসীম উদ্দীন। যে অপার ভালোবাসা আর আতিথেয়তা পেলেন ঠাকুরবাড়িতে তা জীবনের শেষদিন পর্যন্ত অটুট ছিল। সেই যে রূপকথার গল্প বলতে ঢুকেছিলেন ঠাকুরবাড়িতে; আর তিনি বার হতে পারেননি, হয়তো বার হওয়া সম্ভব নয়। স্নেহের ডোরে বেঁধেছিলেন অবন ঠাকুর। অকৃত্রিম ভালোবাসার বন্ধনে ‘জসী মিঞা’ নন্দিত হয়েছিলেন ‘রঙের জাদুকরে’র কাছে। ঠাকুরবাড়ির বিখ্যাত বারান্দায় শুধু নয়, ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে তাঁর অবাধ অধিকার ছিল ঈর্ষণীয়। কবি ‘জসী মিঞা’ ঠাকুরবাড়ির সবার প্রিয়জন ছিলেন – শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত। ঠাকুরবাড়ির সেই ভালোবাসার ঋণ স্বীকার করেছেন তাঁর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় (১৯৬১) নামক গ্রন্থে।
গুরু দীনেশচন্দ্র ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় গ্রন্থে কবি জসীম উদ্দীন স্বীকার করেছেন – তাঁর ‘সবচাইতে আপনার জন ছিলেন ড. দীনেশচন্দ্র সেন’
(১৮৬৬-১৯৩৯)। শিক্ষাগুরু দীনেশচন্দ্রই তাঁকে শান্তিনিকেতন না যাওয়ার কথা বলেছিলেন। দীনেশচন্দ্রের মধ্যমপুত্র অধ্যাপক অরুণ সেনই প্রথম রবীন্দ্রনাথের প্রশংসা-সংবাদ জসীম উদ্দীনকে দিয়েছিলেন। নক্সী কাঁথার মাঠ ও রাখালী কাব্যগ্রন্থের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ।
কলেস্নাল পত্রিকায় ‘কবর’ 888sport app download apkটি পড়ে দীনেশচন্দ্র মুগ্ধ হয়েছিলেন। কবি জসীম উদ্দীনকে পত্র লিখলেন শিক্ষাগুরু দীনেশচন্দ্র সেন। আন্তরিক ভালোবাসায় কবিত্বময় ভাষায় বিখ্যাত সেই পত্রটি আজো পাঠককে ভাবায়। ছাত্রের 888sport app download apk পড়ে শিক্ষকের ক্রন্দনের কথা –
‘দূরাগত রাখালের বংশীধ্বনির মত তোমার 888sport app download apk আমার অন্তরকে স্পর্শ করেছে। তোমার 888sport app download apk পড়ে কেঁদেছি।’
শিশুর মতো সরল ছাত্রের পত্রেও সেই অশ্রম্ন ঝরে পড়েছিল। শিক্ষকের ক্রন্দনপত্রের প্রতি উত্তরে ছাত্রেরও অভিমানী ক্রন্দনপত্র। এ এক বিরল পত্রদ্বয়ের ক্রন্দনবৃত্তান্ত, যা 888sport live footballের ইতিহাসে দুষ্প্রাপ্য –
‘এমন কত 888sport app download apkই ত রচনা করেছি; কিন্তু কোন ভাল মাসিক পত্রিকাই তা ছাপায় না। 888sport app download apk লিখে আর কি হবে?’
প্রবাসী, ভারতবর্ষ প্রভৃতি পত্রিকা থেকে জসীম উদ্দীনের 888sport app download apk প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। সেই অশ্রম্নসিক্ত বেদনার কথা শিক্ষাগুরুকেই মনে হয় বলা যায়। ইংরেজি ফরোয়ার্ড পত্রিকায় গুরু দীনেশচন্দ্র প্রকাশ করলেন – ‘An Young Muhammedan Poet’ নামে প্রশংসিত 888sport live। বঙ্গদেশের বড় বড় মাসিক পত্রিকা থেকে আমন্ত্রণ এলো। গুরু ছাত্রের 888sport app download apkর প্রশংসা করেই ক্ষান্ত হলেন না, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে ছাত্র জসীম উদ্দীনের 888sport app download apk পাঠ্য করলেন শিক্ষক দীনেশচন্দ্র সেন। বি.এ. ক্লাসের ছাত্র থাকাকালেই জসীম উদদীনের ‘কবর’ 888sport app download apk পাঠ্য হয়েছিল; বিশ্ব888sport live footballের ইতিবৃত্তে
এ-ঘটনা এক বিরল 888sport app download for androidচিহ্ন।
চিরবিরহ : নকশি কাঁথার কান্না
কবি জসীম উদ্দীন নকশি কাঁথা সংগ্রহ করতেন। নকশি কাঁথার কথা শুনে অবন ঠাকুর তাঁর ড্রয়ার খুলে বার করলেন অসংখ্য ঝলমলে নকশি কাঁথার নমুনা। নকশি কাঁথার নানান রকমের ফোড়ন আছে – যেমন ‘বয়কা’ সেলাই, ‘তেরসী’ সেলাই, ‘বাঁশপাতা’ সেলাই। ভাবতে অবাক হতে হয় – অবন ঠাকুর কত আগে অপূর্ব পল্লিসম্পদ সন্ধান করেছিলেন। অতীব যত্নে সংগ্রহও করেছিলেন। শুধু তাই নয়, নকশি কাঁথার প্রশংসা করতে করতে অবন ঠাকুরের চোখমুখ দিয়ে নকশি
কাঁথার কান্না ফুল হয়ে ঝরে পড়ে। মহাভারত মহাকাব্যে চামড়ার নকশি কাঁথার বর্ণনা আছে। রানি ইসাবেলকে নকশি কাঁথা উপহার দেওয়া হয়েছিল। সিলেট জেলার এক বিধবা 888sport promo code একটা নকশি কাঁথা তৈরি করেছিল – যেখানে কন্যাশিশুর জন্ম থেকে স্বামীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটনা নকশি কাঁথায় অঙ্কিত ছিল।
কবি জসীম উদ্দীনের ইচ্ছা ছিল ছবিসহ নক্সী কাঁথার মাঠ কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ করবেন। কিন্তু এই ছবি কে আঁকবে? পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গের মেয়েদের কাঁথা সেলাইয়ের ধরন আলাদা। পূর্ববঙ্গের মেয়েরা সামনে মেলে ধরে, কাঁথার ওপর বসে কাঁথা সেলাই করে। আর পশ্চিমবঙ্গের মেয়েরা কোলের ওপর কাঁধা রেখে সেলাই করে। 888sport live chatী রমেন্দ্র চক্রবর্তী (১৯০২-৫৫), কলাভবনের নন্দলাল বসুর ছাত্র, নকশি কাঁথার ছবি এঁকেছিলেন। ছবিগুলো দেখে অবন ঠাকুর বলেছিলেন, ‘নকসী কাঁথার 888sport app download apk অন্য ধরনের। আমি ছাড়া এর ছবি আর কেউ আঁকতে পারবে না।’
সমরেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬৯-১৯৫১) নক্সী কাঁথার মাঠ পড়ে বলেছিলেন, ‘তোমার 888sport app download apk বড়ই ভালো লাগল। নজরুলের চাইতেও ভালো লাগল।’ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬৭-১৯৩৮) হেসে বলেছিলেন – ‘তোমার বই-এর ছবি আমি কবে দেব।’ শেষ পর্যন্ত ছবি দিয়ে নক্সী কাঁথার মাঠ ছাপা সম্ভব হয়নি। গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কিছুদিন পর মারা গেলেন। 888sport live chatাচার্য অবন ঠাকুর বললেন, প্রত্যেক অধ্যায়ের আগে গ্রামীণ কবিদের রচনা সাজিয়ে দাও, যা ছবির মতো নক্সী কাঁথার মাঠ বইটিকে চিত্রিত করবে। তাই হলো, গ্রাম্য গানগুলোর চিরন্তন ক্রন্দন, প্রত্যেক অধ্যায়ে ফিরে ফিরে এলো। – ‘লেখার ভিতরে ইঙ্গিত
থাকিবে বেশি; সব কথা বলিবে না।’
লোকনাট্য : পলস্নীবধূর পস্নট
– তুমি একটা গ্রাম্য নাটক লেখো।
– নাটক একটা লিখেছি। অবনীন্দ্রনাথ পড়ে বলেছেন – ‘আমার নাটক লেখার শক্তি নেই।’
– অবন নাটকের কী বোঝে?
– আমাকে নাটকের পস্নট দেন।
– আজ নয়। কাল এসো।
– আমি এসেছি। নাটকের পস্নট নেবার জন্য।
– তুমি দেখছি ছাড়বার পাত্র নও। চোরের মন বোচকার দিকে।
রবীন্দ্রনাথের পস্নট নিয়ে জসীম উদ্দীন একটি লোকনাট্য লিখেছিলেন। কিন্তু তা রবীন্দ্রনাথ দেখে যেতে পারেননি। 888sport app বেতারে সেই লোকনাট্য বহুবার অভিনীত হয়েছে। শত শত শ্রোতার মনোরঞ্জন করেছে। সেই লোকনাট্যের নাম পলস্নীবধূ।
একটি ছেলে ও মেয়ের প্রেমের কাহিনি। গল্পটি ট্র্যাজেডি হবে, না কমেডি! রবীন্দ্রনাথ, জসীম উদ্দীনকে বলেছিলেন, ‘যদি ট্রাজেডি করতে চাও লেখ, অন্য একটি ছেলের সঙ্গে মেয়েটিকে বিয়ে দাও। আবার একদিন ছেলেটির সঙ্গে দেখা করাও। মেয়েটি ছেলেটিকে বলবে, ‘আমাদের যা কিছু কথা রইল মনে মনে।
বাইরের মিলন আমাদের না হলেও মনের মিলন থেকে কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না।’
গুরু-শিষ্য : নন্দলালের নন্দনতত্ত্ব
888sport live chatাচার্য অবনীন্দ্রনাথের কাছে আসতেন ছাত্র নন্দনাল বসু (১৮৮৩-১৯৬৬)। গুরু কলমের ডগায় ভাষার আতশবাজি ফোটাতেন। আর ছাত্র শুধু তুলি দিয়ে মনের কথা বলতেন। গুরু তুলি ও কলম চালাতেন। শিষ্য শুধু তুলি। তবে 888sport live chatী নন্দলাল ছবির বিষয়ে, আর্টের বিষয়ে ভালো ভালো কথা বলতেন, যা 888sport live chatের নন্দনতত্ত্ব।
গাছের রূপ পরিবর্তন হয়। সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা, রাত্রিতে গাছের রূপ পালটে পালটে যায়। শান্তিনিকেতনের নন্দলালের 888sport live chatী ছাত্ররা গভীর রাত জেগে গাছের রূপ দেখতেন। 888sport live chatীর তুলিতে গাছও জীবন্ত হয়। কোন সময়ের গাছ – সকালের গাছ, না রাত্রির। তুলি ও রং সময়ের কথা বলে। নীরব গাছের হৃদয়ের ব্যথা ফুটে ওঠে। 888sport live chatীর চোখ অন্তর্ভেদী। কৃষ্ণনগরের খেলনা পুতুল রিয়ালিস্টিক। ভেঙে গেলে খেলা যায় না। গ্রামীণ পুতুল আইডিয়ালিস্টিক। ভেঙে গেলে খেলা করা যায়। 888sport live chatী নন্দলাল বসু পরম আনন্দে কবি জসীম উদ্দীনের রাখালী (১৯২৭) কাব্যের প্রচ্ছদপট এঁকেছিলেন।
শান্তিনিকেতনে 888sport live chatশিক্ষণশেষে এক ছাত্র শিক্ষক নন্দলালকে বলল, ‘আমাকে আমার সেই গ্রামে ফিরে যেতে হবে। গ্রামে আমার 888sport live chat কে বুঝবে?’ 888sport live chatশিক্ষক নন্দলাল সেই গ্রামীণ ছাত্রকে বলেছিলেন, ‘গ্রামীণ 888sport live chatের মধ্যেই আধুনিক 888sport live chatের মর্মবোধ। দেখবে, রাখাল হাতে ছুরি দিয়ে লাঠির উপর ফুলের নক্সা করছে। কিংবা গ্রামের মেয়ে রঙ-বেরঙের সুতো দিয়ে কাঁথা সেলাই করছে। নতুন নতুন নক্সী সৃষ্টি হচ্ছে – নিরন্তর। গ্রামের রাখাল কিংবা নিরক্ষর 888sport promo codeই হচ্ছে সত্যিকারের 888sport live chatী বন্ধু।’
সুধাদি ও প্রভাতদা
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় (১৮৯২-১৯৮৫)। আশ্রমের গ্রন্থাগারিক। প্রখ্যাত রবীন্দ্র-জীবনীকার। বিশ্বভারতীর গ্রন্থাগার গঠনে তাঁর অবদান চির888sport app download for androidীয়। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ অনন্য দৃষ্টি, চারখ– রচিত রবীন্দ্রজীবনী। জসীম উদ্দীনের প্রভাতদা। তাঁর স্ত্রী সুধাদি। সর্বদা হাসিমুখ। আশ্রমের ছোট ছেলেমেয়েদের সব জ্বালাতন হাসিমুখে গ্রহণ করতেন। প্রশ্রয় দিতেন। স্নেহমাখায় মমতায় ভরিয়ে দিতেন। সুধাদি এবং প্রভাতদা ছিলেন শান্তিনিকেতন আশ্রমের দাদা-বউদি। আশ্রমের আপনজন। আন্তার আত্মীয়। তরুণ জসীম উদ্দীনকে পেয়ে সুধা মুখোপাধ্যায় ও প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের স্নেহ-বাৎসল্য উৎসারিত হয়েছিল। প্রভাতদার বাড়িতে একটি ছোট্ট মেয়েকে পেয়ে কবি জসীম উদ্দীনের স্নেহক্ষুধা জাগরিত হয়েছিল। মেয়েটির নাম ‘হাসু’।
শিশু ‘হাসু’ : কিশোরী ‘হাসু’
কে ‘হাসু’! প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের ভাইঝি ‘হাসু’। শিশু হাসুর বয়স তখন পাঁচ-ছয় বছর। মমতামাখানো করুণ মুখ তার। হাসুকে ডেকে আদর করলে আদর করতে দেয়। শিশু থেকে কিশোরী – বারো-তেরো বছর বয়সের ‘হাসু’র সঙ্গে দেখা হলো প্রভাতদার বাড়ির আড্ডাতে। কিশোরী ‘হাসু’ তার 888sport app download apkর খাতাটি কবি জসীম উদ্দীনকে দেখিয়েছিল। সেই সময় সুধাদি বললেন, ‘হাসু শুধু 888sport app download apk লেখে না, ভালো গানও করে।’ কিশোরী ‘হাসু’ প্রভাতদার বাড়িতে একটি গান করে তার সুন্দর হাতদুটি দিয়ে নমস্কার করেছিল। কিশোরী ‘হাসু’র বর্ণনা দিয়েছেন – ‘হাসু’ একহারা পাতলা চেহারা। উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ। নতুন ধানের পাতার সমস্ত বর্ণসুষমা বিধাতা যেন তার অঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। অপরূপ সেই কিশোরীকে কবি জসীম উদ্দীন কোনোদিন ভুলতে পারেননি।
সোজন বাদিয়ার ঘাট কাহিনিকাব্যের নায়িকার রূপ বর্ণনায় কিশোরী ‘হাসু’র কল্পনা মিশে গেছে। আর অতুলপ্রসাদের সেই গানটি কাব্যের প্রত্যেক অধ্যায়ের আগে সংযুক্ত হয়েছিল, কিশোরী যে-গানটি গেয়েছিল –
ওগো সাথী মম সাথী, আমি সেই পথে যাব তব সাথে
শিশু ‘হাসু’কে দেখে কবি জসমী উদ্দীন ছোটদের উপযোগী 888sport app download apk লিখতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। শিশু ‘হাসু’ যখন বড় হলো – ডাকিলে কাছে আসে না। অনেক ডাকাডাকির পর যখন কাছে আসে ‘হাসু’, তখন গল্পের আড্ডা আগের মতো জমে ওঠে না। ‘হাসু’ কেন বড় হলো! বারবার এই প্রশ্ন জাগে কবি জসীম উদ্দীনের মনে। কলকাতায় ফিরে এসে কবি জসীম উদ্দীন একটি 888sport app download apk লিখলেন – নাম দিলেন – ‘পলাতকা’। একটি নয়, অনেক 888sport app download apk লিখলেন। 888sport app download apkগুলোকে সাজিয়ে নাম দিলেন – ‘হাসু’ (১৯৩৩)। শিশুদের জন্য রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম হাসু (২৫টি 888sport app download apk-ছড়ার সংকলন)। হাসু প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে শিশুচিত্ত জয় করেছিল। হাসু কাব্যটি উৎসর্গ করা হয়েছিল দুই জননীকে – একজন সুধাদি, অন্যজন ‘হাসু’র মা সুন্দরদিকে।
নীরস জগদানন্দ ও সরস ক্ষক্ষতিমোহন
শান্তিনিকেতন আশ্রমে বহু কৃতী মানুষের সম্মেলন ঘটেছিল। জগদানন্দ রায় (১৮৬৮-১৯২৬) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের পুত্র-কন্যাদের 888sport apkের গৃহশিক্ষক ছিলেন। পরে শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক হন। রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর (১৮৬৪-১৯১৯) আদর্শে সরল বাংলায় 888sport apkের সত্যপ্রচার তাঁর জীবনের প্রধান ব্রত ছিল। 888sport apkের কথা, গ্রহ-নক্ষত্রের কথা সহজ-সরলভাবে জলের মতো লিখতে পারতেন। তাঁর 888sport apkের বইগুলো আজ দুষ্প্রাপ্য। 888sport apk বিষয়কে সহজভাবে বোঝাতেও পারতেন। কিন্তু চেহারায় আর ব্যবহারে কাঠখোট্টা ছিলেন।
নীরস জগদানন্দ রায়ের ঠিক বিপরীতে ছিলেন সদাশীল ক্ষক্ষতিমোহন সেন (১৮৮০-১৯৬০)। বিশ্বভারতী বিদ্যাভবনের অধ্যক্ষ। বিখ্যাত গবেষণাগ্রন্থ বাংলার বাউল। তাঁর মতো মধুরভাষী কথক আর কোথাও পাওয়া যাবে না। তাঁর ব্যবহার আর আলাপচারিতায় সবাইকে মুগ্ধ হতে হয়। সুবক্তা, সুরসিক, সর্বোপরি তিনি সাধক। তাঁর সঙ্গে কথালাপে শ্বেতচন্দনের সুবাস পাওয়া যায়। তিনি বলতেন – ‘পৃথিবীর সমস্ত পথ অতিক্রম করে তুমি তোমার আন্তার ধর্মপথকে অনুসরণ করে চলবে।’ সরস সাধক ক্ষক্ষতিমোহনের জীবনবেদ কবি জসীম উদ্দীনকে উজ্জীবিত করেছে।
‘বন্দেমাতরম্’ : হিন্দু-মুসলমান-খ্রিষ্টান
রবীন্দ্রনাথ তখন শান্তিনিকেতন আশ্রমে ছিলেন না। হিন্দু মহাসভার এক মুসলিমবিদ্বেষী বক্তা শান্তিনিকেতনে উগ্র বক্তৃতা দিয়ে অশান্তির আগুন ছড়িয়ে দিলেন। কবি জসীম উদ্দীন সেই বক্তৃতার শ্রোতা ছিলেন। বক্তৃতার বিষয় ছিল – ‘মুসলমান গুণ্ডাদের হিন্দু888sport promo code নির্যাতন’। একতরফা এই বক্তৃতা জসীম উদ্দীন মেনে নিতে পারেননি। তারপর যা হবার তাই হলো। তখনকার শান্তিনিকেতন ছিল একটা ছোট পুকুরের মতো। একটা ঢিল ফেললে চারদিকে তার ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। স্বয়ং রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় (১৮৬৫-১৯৪৩) আশ্রমের বড় বড় কর্মকর্তার সঙ্গে জসীম উদ্দীনের বিষয় আলোচনা করলেন। এমনকি 888sport live chat-অধ্যাপক নন্দলাল বসুও জসীম উদ্দীনের বিপক্ষে গেলেন। মধুর স্বরে, গভীর মমতায় প্রভাতদা বললেন – ‘জসীম! কর্তৃপক্ষদের ইচ্ছা তুমি এখান থেকে চলে যাও।’ রবীন্দ্রনাথ জসীমকে কাছে পেলেই হিন্দু-মুসলমান সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতেন। সেইসঙ্গে বিশ্বকবি ‘বন্দেমাতরম্’ গান প্রসঙ্গে আলোচনা করলেন। বিশ্বকবি বললেন, ‘বন্দেমাতরম্ গানটি যেভাবে আছে, তাতে মুসলমানরা আপত্তি করতে পারে। কারণ বন্দেমাতরমে মুসলিম ধর্মমত ক্ষুণ্ণ হয়েছে।’ বন্ধুবর সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে (১৯০১-৭৪) বিশ্বকবির মতামত জানালে বন্ধু বলেছিলেন –
‘জহরলাল নেহরু গানটি রবীন্দ্রনাথের কাছে পাঠিয়েছিলেন। কবির পরামর্শের ফলে বন্দেমাতরম্ গানে মুসলিমদের আপত্তিজনক অংশটি কংগ্রেসের কোন অনুষ্ঠানে আর গীত হবে না।’
আসলে বিশ্বকবি হিন্দু-মুসলমান-খ্রিষ্টান সমস্যাকে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। বিশ্বকবি জসীম উদ্দীনকে বলতেন – ‘দেশলাই কাঠি জ্বালিয়ে দিলেই যে ঘরে আগুন লাগে, তার মানে সেই ঘরে আগুন সঞ্চিত ছিল। যারা বলেন, ‘আমরা মিলেমিশে ভালোই ছিলুম, খ্রিষ্টান ইংরেজ এসেই আমাদের ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে’, তারা সাম্প্রদায়িক সমস্যার সমাধান চান না।’
চন্দ্রকুমার ও মৈমনসিং গীতিকা
গ্রাম্য গান সংগ্রহ নিয়ে বিশ্বকবির সঙ্গে জসীম উদ্দীন আলোচনা করেছিলেন। বিশেষ করে মৈমনসিং গীতিকা প্রসঙ্গে জসীম উদ্দীনের মূল্যায়ন গুরুত্বপূর্ণ। জসীম উদ্দীন বিশ্বকবিকে যা বলেছিলেন – ‘গ্রাম্য গাঁথার একটা কাঠামো সংগ্রহ করে, চন্দ্রকুমার দে, তার উপর নানা রচনাকার্যের বুনট পরিয়ে দীনেশবাবুকে দিয়েছেন। তাই পলস্নীর অশিক্ষিত কবিদের নামে চলে যাচ্ছে।’
কে চন্দ্রকুমার দে! ময়মনসিংহের অধিবাসী চন্দ্রকুমার দে (১৮৮৯-১৯৪৬)। স্বভাবকবি চন্দ্রকুমার পূর্ববঙ্গের গীতিকাগুলো সংগ্রহ করে তাঁর সৌরভ পত্রিকায় প্রকাশ করেন। পুথিপ্রেমিক প্রখ্যাত দীনেশচন্দ্র সেনকে গ্রাম্য গাঁথা মৈমনসিং গীতিকা দিয়েছিলেন। মৈমনসিং গীতিকার লৌকিক প্রেমরসে মজেছিল বিশ্ববাসী। গবেষক দীনেশচন্দ্র সম্পাদনা করলেও সংগ্রাহক চন্দ্রকুমার দে-র শ্রম ও রক্ত মিশে আছে মৈমনসিং গীতিকার হৃদয়ে। গ্রাম্য গাঁথার বিশেষজ্ঞ জসীম উদ্দীন শেষ পর্যন্ত কিছু না লিখে উঠতে পারলেও বিশ্বকবির ‘সংকলন-পুস্তক’ প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে মৈমনসিং গীতিকার অংশবিশেষ আছে। বহুমুখী কর্মযজ্ঞের স্থপতি বিশ্বকবির ব্যস্ততার মধ্যেও মৈমনসিং গীতিকার কথা মনে রেখেছিলেন।
অনিলচন্দ্র থেকে অমিয় চক্রবর্তী
কবি জসীম উদ্দীন ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় গ্রন্থে বিশ্বকবির ব্যক্তিগত সচিবের প্রসঙ্গ এনেছেন। বিশেষ করে অনিলচন্দ্র (১৯০৬-৭৬), যিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিশ্বকবির ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন, বেকার জসীম উদ্দীন যখন বিশ্বকবির কাছে বারবার যেতেন চাকরির জন্য। বিশ্বকবির সুপারিশপত্রের জন্য বেকার জসীম উদ্দীনকে শান্তিনিকেতনে যেতে হয়েছে। সুপারিশপত্রগুলো টাইপ করেছিলেন অনিলকুমার চন্দ্র। আধুনিক কবি অমিয় চক্রবর্তী (১৯০১-৮৬) ১৯২৪ থেকে ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিশ্বকবির 888sport live football সচিব ছিলেন। আধুনিক বাংলা 888sport live footballের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি অমিয় চক্রবর্তী, রবীন্দ্রকাব্য জগতের সঙ্গে গভীর যোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলা 888sport app download apkয় স্বকীয়তা সৃষ্টি করেছেন। অনিলকুমার চন্দ্র এবং অমিয় চক্রবর্তী – এই দুজন সচিবের কথা 888sport app download for android করেছেন কবি জসীম উদ্দীন। একজন ছিলেন রাজনীতিবিদ, অন্যজন কবি।
বুড়ো ডাকাত : বাঁশিবাদক
জসীম উদ্দীনের সঙ্গে বিশ্বকবির দেখা হলেই যেমন হিন্দু-মুসলমান সমস্যা নিয়ে কথা বলতেন, তেমনি পূর্ববঙ্গের কথা জানতে চাইতেন। বিশ্বকবি দীর্ঘ দশ বছর (১৮৯১-১৯০০) পূর্ববঙ্গে ছিলেন। গিয়েছিলেন শাহজাদপুরেও। সেখানে রবীন্দ্রনাথের এক বুড়ো প্রজা ছিল। সেই বুড়ো একসময় প্রবলভাবে ডাকাতি করত। সেই বুড়ো প্রজার এতই প্রভাব ছিল ঠাকুর বাড়ির অন্য কোনো প্রজাকে অন্য ডাকাতরা ক্ষতি করত না। সেই বুড়ো ডাকাত তরুণ জমিদার রবীন্দ্রনাথকে খুব ভালোবাসতেন। খুব 888sport apk download apk latest versionর সঙ্গে তরুণ জমিদারকে মান্য করতেন। শাহজাদপুরে একবার সেই বুড়ো ডাকাত প্রায় পাঁচশো প্রজাকে কাছারির সামনে ডেকে এনেছিল।
– এত লোক ডেকে এনেছো কেন?
– প্রজারা জমিদারকে দেখতে এসেছে।
– আগে জানালে আপ্যায়নের ব্যবস্থা হত।
– ওরে তোরা দেখ্। প্রাণভরে সোনার চাঁদ দেখ।
ঘটনাটি বিশ্বকবি জসীম উদ্দীনকে বলেছিলেন। এই ঘটনার মধ্যে জমিদার রবীন্দ্রনাথকে কিছুটা বোঝা যায়। প্রজাদের মনের গভীরে যেতে পেরেছিলেন তরুণ জমিদার রবীন্দ্রনাথ। সেইসঙ্গে জসীম উদ্দীনের সরল ও সরস চিত্র পাঠককে মুগ্ধ করে।
কবি জসীম উদ্দীন কালু মিয়া নামে এক বাঁশিবাদককে গ্রাম থেকে কলকাতায় এনেছিলেন। বাঁশিবাদক কালু মিয়ার বাঁশির সুরে রাখালিয়া গান জীবন পেত। শুধু রাখালিয়া গান নয়, ‘বিচ্ছেদী’ আর ‘বারোমাসি’ গান তাঁর বাঁশির সুরে আকাশ-বাতাসও অশ্রম্ন ঝরাতো। তাঁর বাঁশির সুরে ‘জল ভরা সুন্দরী কন্যা’ গানটি শুনে এক যুবতী 888sport promo code ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল। সেই বাঁশিবাদকের গান কলকাতার কোনো গ্রামোফোন কোম্পানি রেকর্ড করতে চাইল না। এমনকি বিশ্বকবিকে এক সকালে কালু মিয়ার বাঁশির সুর শোনাবার ব্যবস্থা করেছিলেন জসীম উদ্দীন। বিশ্বকবি সেই কালু মিয়ার বাঁশির করুণ সুর শুনে বলেছিলেন, ‘সকালবেলা কি করুণ সুর শোনার সময়?’ গ্রামে ফিরে গিয়েছিলেন সেই গ্রামীণ বাঁশিবাদক। অতিরিক্ত শ্রমে আর অল্প আহারে সেই মধুর বাঁশিবাদক মহাকালের পথে চিরঘুমে চলে গিয়েছিলেন।
চিরপথিক কবি জসীম উদ্দীন উপলব্ধি করেছিলেন, বিশ্বকবির জীবনসুর আরো গভীর এবং ব্যাপক। বাঁশিবাদক কালু মিয়ার বাঁশির সুরের চাইতে সহস্রগুণ সুর তিনি শুনেছিলেন। বিশ্বকবির মহাসংগীত, যা বিশ্ব888sport live footballকে সমৃদ্ধ করেছে। কালু-কালা মিয়ার বাঁশির সুর থেমে গেলেও বিশ্বকবির সুর এখনো সতত ধারায় প্রবাহিত।
কলেস্নাল সম্পাদক : দীনেশরঞ্জন দাশ
কবি জসীম উদ্দীন কলকাতা এসেই কলেস্নাল অফিসে যেতেন। কলকাতা আর কলেস্নাল জসীম উদ্দীনের কাছে প্রায় সমার্থক ছিল। আর কলেস্নাল পত্রিকার মাধ্যমে কবি জসীম উদ্দীন ঠাকুরবাড়ির 888sport live footballমহলে পরিচিত হয়েছিলেন। কলেস্নাল-সম্পাদক দীনেশরঞ্জন দাশ (১৮৮৮-১৯৪১), পূর্ববঙ্গের সেই মহৎ মানুষটি, জসীমকে
নিয়ে ঠাকুরবাড়িতে প্রথম গিয়েছিলেন। কলেস্নালে প্রকাশিত জসীম উদ্দীনের ‘মুর্শিদাগান’ 888sport liveটি পড়ে অবন ঠাকুর খুশি হয়েছিলেন। দেখতে চেয়েছিলেন জসীম উদ্দীনকে। কলেস্নালের কলতানের সংযোগসূত্রে, তাঁর প্রিয় দীনেশদার সৌজন্যে। কবি জসীম উদ্দীন ঠাকুরবাড়ির মহাতীর্থে প্রবেশ করেন। সেই মহাপ্রবেশে অবনীন্দ্রনাথ থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত – জসীম উদ্দীনের মহাযাত্রা সার্থক
হয়েছিল। কলেস্নাল শুধু আধুনিক বাংলা 888sport live footballের অগ্রপথিক নয়; কলেস্নাল-সম্পাদক দীনেশরঞ্জন নবীন কবিদের মনোরঞ্জন করে আস্থাভাজন হয়ে উঠেছিলেন।
অবন-গগন-সমন (সমর) : তিন বৃদ্ধ
এমন মনোরম দৃশ্য জগতে কটা আছে। বিখ্যাত দক্ষিণের বারান্দায় তিনটে আরামকেদারায় তিনজন মহান ব্যক্তি বসে আছেন। তিনজনই বৃদ্ধ অথচ নীরব। কেউ কারো সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না। তিনজনের মধ্যে দুজন বিশ্বখ্যাত 888sport live chatী, একজন পুস্তকপ্রেমী। দুজন ছবি আঁকছেন, একজন বই পড়ছেন। তিনজন একে অন্যের সহোদর ভাই। যে দুজন ছবি আঁকছেন – একজন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অন্যজন গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। যিনি বই পড়ছেন – সমরেন্দ্রনাথ।
তিনজনের জগৎ সম্পূর্ণ আলাদা হয়েও এক। একই বারান্দায় অবস্থান করেন, কেউ কাউকে বিরক্ত করছেন না। বরং নিজের সাধনায় মগ্ন থেকে একে অন্যকে প্রাণিত করছেন। তিন বৃদ্ধ ভাই যেন তিন নীরব-নিশ্চল বালক। এমনভাবে তিন কৃতী মানুষ, একই স্থানে ধ্যানস্থ আছেন, তা সত্যিই এক আশ্চর্যের জগৎ তৈরি করেছে। ঠাকুরবাড়ির তিন জমিদার একই স্থানে পাশাপাশি অবস্থান করে, সৃষ্টি এবং মননের ভুবন রচনা করেছেন, যা এককথায় যেন বিশ্বকর্মার ত্রিধারা স্রোতবহন করছে।
ঠাকুরবাড়ির সেই দক্ষিণের বারান্দা – রঙে আর রেখায় দুই চিত্রজাদুকরের সৃজন যেন অনমেত্মর পথিকে পরিণত হয়েছে। নব আগন্তুক জসী মিঞা যেন চিত্রের জগতে এক উদাসীন বিরহের পথিক। আর যিনি গ্রন্থসমুদ্রে নিমজ্জিত তিনি যেন অনন্তকাল ধরে মননের মধু পান করে চলেছেন। তিনজনের সামনে একটি করে ‘আলবোলা’ আছে (লম্বা নলের হুঁকো)। খাম্বিয়া তামাকের সুবাসে সমস্ত দক্ষিণের বারান্দা ম-ম সুগন্ধে ভরপুর হয়ে উঠেছে।
অবন ঠাকুর সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখালেন ‘রূপকথা’ বিষয়ে। জসী মিঞাকে ‘রূপকথা’ বলার জন্য ঠাকুরবাড়িতে আমন্ত্রণ করলেন। ‘রূপকথা’ বলার আমন্ত্রণে রোমাঞ্চিত হয়ে গেলেন কবি জসীম উদ্দীন। রবীন্দ্রনাথের ‘বিচিত্রা’ ঘরে রূপকথা বলার আসরে সবার আগে হাজির হয়েছিলেন অবন ঠাকুরের দুই বৃদ্ধ ভাই গগনেন্দ্রনাথ ও সমরেন্দ্রনাথ। ঠাকুরবাড়ির বৃহত্তর পরিবারের তিন বৃদ্ধ ভ্রাতাই জসী মিঞার আপনজন।
মোহনলালের মোহনা
পুরো নাম মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায় (১৯০৯-৬৯)। মাতামহ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৭১-১৯৫১)। ঠাকুরবাড়িতেই বড় হয়ে ওঠেন মোহনলাল। বিলেত থেকে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। পরি888sport free betনবিদ হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল। তাঁর চেক স্ত্রী মিলাডা দেবী বাংলার ব্রত (১৯০৯) চেক ভাষায় 888sport app download apk latest version করেছিলেন। মোহনলালের রচনায় ও 888sport app download apk latest versionে বাংলা কিশোর888sport live football সমৃদ্ধ হয়েছে। তাঁর উলেস্নখযোগ্য গ্রন্থ দক্ষিণের বারান্দা।
জসীম উদ্দীনের চেয়ে পাঁচ বছরের ছোট মোহনলাল। তবু তাঁর সঙ্গে জসী মিঞার সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। ঠাকুরবাড়ির সবচেয়ে কাছের বন্ধুর নাম মোহনলাল। যে-কোনো সমস্যার সমাধানে বন্ধু মোহনলালের ভূমিকা জসী মিঞার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অবন ঠাকুরের দরবারে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ‘রূপকথা’ বলার। সেই আমন্ত্রণের প্রথম খবর পান মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়। মাতামহ (দাদু) অবন ঠাকুর তাঁকে খুব স্নেহ করতেন – ‘মোহনলাল কই গেলে হে, আজ জসীম উদ্দীন আমাদের এখানে রূপকথা বলবে।’
মোহনলালের পিতা মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন খুব বন্ধুবৎসল মানুষ। পিতার মতো পুত্রও হয়ে উঠেছিলেন বন্ধুবৎসল। নানা বিচিত্র ধরনের, বিচিত্র স্বভাবের মানুষের সঙ্গে মোহনলালের বন্ধুত্ব ছিল। মোহনলালের বন্ধুগোষ্ঠী এমনই বিচিত্র – পরস্পরের এমন আকাশ-জমিন পার্থক্য, ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়। এমন বিরল মনের বন্ধু মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়া আর কে আছে! ঠাকুর-পরিবারের মধ্যে মোহনের মতো নিরহংকার মিশুকে মানুষ খুবই কম ছিল। জসী মিঞার সমস্ত সমস্যার মুশকিল আসান ছিলেন মোহনলাল। সমস্ত দুষ্টুমিতে মোহনলালের পরামর্শ আলোচনা ছাড়া জসী মিঞা অগ্রসর হতেন না। মোহনলালের মন ছিল উদার আকাশের মতো। মানুষের উপকার করতে পারলেই মোহনলাল ধন্য হতেন। দুই প্রামেত্মর দুই বন্ধুর যোগাযোগ ছিল পত্রালাপে। বৃহত্তর ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় মোহনলালের মোহনায় মিলিত হয়ে জসী মিঞা প্রসারিত হয়েছিলেন। – ‘সেই আমার সঙ্গে প্রথম কথা বলিল’ – সে-কথা জীবনের শেষ পর্যন্ত বজায় ছিল।
মেছুয়াবাজারের মুসলমানি পুথি
বিশ্ববরেণ্য 888sport live chatী অবন ঠাকুরের পড়াশোনার জগৎ ছিল বহুগামী ও বিচিত্রগামী। জসী মিঞা তাঁকে পড়তে দিয়েছিলেন শহীদেকারবালার পুথি। তারপর তাঁর খেয়াল চাপলো আরো পুথি পড়বেন।
– ‘ওহে জসী মিঞা, চল তোমাদের মুসলমানী পুঁথির দোকান মেছুয়া বাজার।’
অবন ঠাকুরকে সঙ্গে নিয়ে জসী মিঞা মেছুয়াবাজারে গেলেন। কোরবান আলীর পুঁথির দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালো ঠাকুরবাড়ির গাড়ি। জোববা-পাজামা পরা এক শাহজাদা পুথির দোকানে ক্রেতা হয়ে এসেছেন। এমন সৌম্যকান্তি শাহজাদা আলিসাহেবের দোকানে এর আগে কেউ আসেননি। স্বয়ং বাদশাজাদা পুথির দোকানে পুথি নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন। পুথিওয়ালারা ভারি অবাক হলো। পুথিদোকানি বড্ড ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মেছুয়াবাজারের মালাই দেওয়া সিঙ্গেল চা আর পান দিয়ে তাঁকে আপ্যায়ন করা হলো। সঙ্গী জসী মিঞাকে অবাক করে দিয়ে অবন ঠাকুর দোকানির সিঙ্গল চায়ের পেয়ালায় মুখ দিয়ে বললেন, ‘দেখ জসী মিঞা, কেমন সুন্দর চা।’
পুথিদোকানদার বিচিত্র পুথিসম্ভার নিয়ে ঠাকুরসাহেবের সামনে উপস্থিত করলেন। আলেফ লায়লা, গাজী-কালু, জয়গুন বিবির কেচ্ছা, চম্পাবতী, ছোহি সোনাভান – আরো বিচিত্র পুথি ক্রয় করে ফিরে এলেন ঠাকুরবাড়ির শাহানশাহ অবন। তারপর কোথায় তুলি, কোথায় রং – প্রায় পাঁচ মাস ধরে শুধু পুথিপাঠ। কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ এলে তাঁর সঙ্গে চলল পুথি-পর্যালোচনা। কাকা-ভাইপো ঘণ্টার পর ঘণ্টা মুসলমানি পুথির চর্চা নিয়ে পরিকল্পনা করলেন। বিশ্বকবির প্রস্তাবে রাজি হলেন 888sport live chatী। বিশ্বভারতী থেকে প্রকাশিত হবে মুসলিম পুথি সংকলন। অবন ঠাকুরের পুথিসংকলনের বাঁধানো খাতা শান্তিনিকেতনে চলে গেল।
888sport live chatীর বিদ্যাভ্যাস এক বিরল জীবনচর্চা। অবন ঠাকুরের বিদ্যাচর্চা জীবনচর্যার অভিমুখ ধরা পড়েছে। সেই বিদ্যাভবনে ধর্ম-বর্ণ-জাত-পাতকে অতিক্রম করে বিশ্বপরিক্রমার অভিযাত্রী হয়ে উঠেছেন। বাংলা পুথিচর্চার ভিন্নমুখ মেছুয়া-পুথি।
দীনেন্দ্রনাথ ও আববাসউদ্দীন
দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৮২-৩৫) সেই অর্থে ক্ষণজীবী। মাত্র ৫২ বছর বয়সে মারা যান। পিতা দ্বিপেন্দ্রনাথ, পিতামহ দেবেন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের বহু সংগীতের সুরস্রষ্টা। বেশির ভাগ রবীন্দ্রসংগীতের স্বরলিপি তিনিই সৃষ্টি করেছেন। বিশ্বকবি তাঁর ফাল্গুনী নাটকের উৎসর্গপত্রে – ‘আমার সকল গানের ভাণ্ডারী’ আখ্যায় ভূষিত করেছেন।
দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর জসী মিঞার দীনুদা। সকলের প্রিয় দীনুদা ছিলেন সকলের কাছে অবারিত স্নেহমাখা সুধারস। কারো কোনো উপকার করতে পারলেই দীনুদা কৃতার্থ হতেন। পল্লিসংগীত888sport live chatী কবি জসীম উদ্দীনের বন্ধু শৈলেনবাবু ময়মনসিংহ থেকে কলকাতায় এসে অর্থাভাবে সংগীতচর্চা করতে পারেননি। দীনুদা শৈলেনবাবুকে একটি হারমোনিয়াম উপহার দিয়েছিলেন।
সংগীতজগতে দীনুদা যদি অন্য জীবিকায় যেতেন, তবে আরো সুনাম ও অর্থ উপার্জন করতে সমর্থ হতেন। সংগীতসাম্রাজ্যে বিশ্বকবির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দীনুদার সাফল্যে। আসলে ঠাকুরবাড়ির মহৎ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে – দুই প্রতিভা – দীনেন্দ্র ও রবীন্দ্রকে সবরকমের সাহায্য ও সুযোগ করে দেওয়ার বদান্যতা। বিশ্বকবির সুনাম-সমুদ্রে দীনুদা স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়েছিলেন। বেসুরো রবীন্দ্রসংগীত তিনি সহ্য করতে পারতেন না। রবীন্দ্রসংগীতকে বিকৃত করে গাইলে তিনি সবচেয়ে রেগে যেতেন। রবীন্দ্রসংগীত ছিল দীনুদার ধ্যান-জ্ঞান-সাধনার তীর্থসংগীত।
দীনুদার পরিচালনায় রবীন্দ্রসংগীতের মহড়া ছিল এক উপভোগ্য অপার্থিব সম্পদ। রবীন্দ্রসংগীত তিনি শান্তিনিকেতনের ছাত্রছাত্রীদের শেখাতেন, যেন তাঁর কণ্ঠ থেকে গানের পাখি বার হয়ে নানা কণ্ঠে সুরের ডানা মেলে ঘুরতো। দীনুদার অপূর্ব সংগীতসুধা শান্তিনিকেতনের এক স্বর্গীয় সম্পদ। কবি জসী মিঞার রচিত গ্রাম্যগান তিনি খুব ভালোবাসতেন – ‘তোমার গ্রাম্য-গানগুলির স্বরলিপি করিয়া আমি একটি বই তৈরি করিয়া দিব।’
দীনুদার অকালেমৃত্যুতে জসী মিঞার গ্রাম্যগানের স্বরলিপি প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু দীনেন্দ্রের অকালমৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি শোক পেয়েছিলেন গীতিকার বিশ্বকবি।
বন্ধু মোহনলালকে সব কথা বলা যায়। বন্ধু আববাসউদ্দীনকে নিয়ে মজা করা যায়। আববাসউদ্দীন আহমদ (১৯০১-৫৯) কোচবিহার থেকে কলকাতায় এসেছিলেন। প্রখ্যাত পল্লিগীতি গায়ক। কবি জসীম উদ্দীনের প্রিয় বন্ধু, তখন কলকাতার কড়েয়া রোডে থাকতেন। কাজী নজরুলের সাহায্যে গ্রামোফোন রেকর্ডে গান করেন। পল্লিগীতি গায়ক আববাসউদ্দীন ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গানই বেশি রেকর্ড করেছেন। আববাসউদ্দীনের রচিত গ্রন্থের নাম আমার 888sport live chatী জীবনের কথা। সুগায়িকা ফেরদৌসী রহমান তাঁর কন্যা। দেশভাগের পর আববাসউদ্দীন 888sport appয় চলে যান।
মোহনলাল ও জসীম উদ্দীনের বন্ধু আববাস তখন পার্ক সার্কাসের কড়েয়া রোডের এক মেসে থাকতেন। একদিন জ্যোৎস্নারাতে দুই বন্ধু মোহন ও জসী গল্প করতে করতে হঠাৎ খেয়াল চাপলো, ঘুমকাতুরে আববাসকে ঘুম থেকে জাগিয়ে বেলফুলের মালা পরিয়ে দিলেন। প্রথমে আববাস রেগে অস্থির হয়ে গেলেও পরে হেসে গড়িয়ে পড়লেন। তিন বন্ধু হাসতে হাসতে, গল্প করতে করতে, রাত শেষ করে দিলেন। কলকাতার সেই দিনগুলোর কথা 888sport app download for android করেছেন জসীম উদ্দীন তাঁর ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় গ্রন্থে।
পল্লি888sport live chat : জয়নুল আবেদিন
পল্লিকবি জসীম উদ্দীন সারাজীবন ধরে পল্লিসম্পদ সংগ্রহ করেছিলেন। পল্লিপ্রেমিক জসী মিঞা গ্রামে গ্রামে ঘুরে, রোদে-বৃষ্টিতে ঘেমে,
অপার পল্লিসম্পদ সংগ্রহ করেছিলেন। যেমন – নানান পুতুল, আলপনা-চিত্র, পিঁড়ি-চিত্র, গাজীর পট, ব্যাটন-সিকা, নকশি কাঁথা প্রভৃতি। বন্ধুরা সবাই বললো কলকাতায় প্রদর্শনী করতে। কে দেখবে পল্লি888sport live chatের প্রদর্শনী! অবন ঠাকুর পুতুল নাচের পুতুলগুলো দেখে আনন্দ পেলেন। পল্লি888sport live chatের সম্ভার দেখে বিশ্বকবি বলেছিলেন – ‘পলস্নী-888sport live chatের সংগ্রহ শান্তিনিকেতনে সংরক্ষিত হবে।’
পল্লি888sport live chatের সম্ভার দেখে বিশ্বকবির বিবৃতি সংবাদপত্রে ছাপাও হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কবি জসীম উদ্দীনের পল্লিসংগ্রহ আর সংরক্ষিত হয়নি। নন্দলাল বসুকে বিশ্বকবি শান্তিনিকেতনে নিয়ে যাবার কথা বলেও ছিলেন। 888sport live chatী নন্দলাল সেই পল্লিসম্পদকে শান্তিনিকেতনে নিয়ে যাবার সময় পাননি।
কবি জসীম উদ্দীন দুঃখ পেয়েছিলেন। কিন্তু কিছু সান্তবনা পেয়েছিলেন বন্ধু দেবপ্রসাদ ঘোষের উদ্যোগে। পল্লি888sport live chatের সংগ্রহে দুজন এগিয়ে এসেছিলেন। প্রথমজন বিশিষ্ট ভাষাবিদ দেবপ্রসাদ ঘোষ (১৮৯৪-১৯৮৫)। দ্বিতীয়জন 888sport live chatী জয়নুল আবেদিন (১৯১৪-১৯৭৬)।
বিশিষ্ট ভাষাবিদ ও দেশসেবক দেবপ্রসাদ ঘোষ জীবনে কোনো পরীক্ষায় দ্বিতীয় হননি। জীবনের সব পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন। সেই একনিষ্ঠ দেশকর্মী দেবপ্রসাদ ঘোষের উদ্যোগে কলকাতার আশুতোষ মিউজিয়ামে পল্লিসম্পদগুলো সংরক্ষিত হয়েছিল। আর 888sport live chatী জয়নুল আবেদিন ময়মনসিংহের সুসমন্তান হিসেবে উপলব্ধি করেছিলেন – পল্লি888sport live chat সম্পদকে রক্ষা করা প্রয়োজন। নিজে তিনি বিখ্যাত চিত্র888sport live chatী ছিলেন। জয়নুল আবেদিন তাঁর ‘ম্যাডোনা ১৯৪৩’ নামক ছবিতে বিশ্বখ্যাত হন। যিনি ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে 888sport appয় আর্ট কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন, পল্লি888sport live chat সম্পদকে সংরক্ষণ করেছিলেন।
সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর : নতুন কার্ল মার্কস
কবি জসীম উদ্দীন কিছুদিন ঠাকুরবাড়িতে ভাড়াও ছিলেন। ঠাকুরবাড়িতে ভাড়া থাকার সুবাদে ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলের সর্বত্র সংযোগের স্পর্শ পেয়েছিলেন। যে-ঘরে জসীম উদ্দীন
ভাড়া থাকতেন তার পাশের ঘরে থাকতেন সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯০১-৭৪)। পিতা সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রপিতামহ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঠাকুরবাড়ির সবচেয়ে ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব ছিলেন সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবি জসীম উদ্দীনের সরস বর্ণনায় সৌমেন্দ্রনাথের বর্ণময় জীবন উদ্ভাসিত হয়েছে – ‘ঠাকুরবাড়ির সব বাড়িতে আর্টের কথা, নাট্যকলার কথা। সৌমেন ঠাকুরের ঘরে কুলী মজুরের কথা। ও বাড়িতে লোক আসিত মোটরে করিয়া, তাদের সুগন্ধী প্রলেপের বাসে বাতাস সুরভিত হইত। আর সৌমেন ঠাকুরের ওখানে আসিত ছেঁড়া খদ্দর-পরা কোন প্রেসের পদচ্যুত কম্পোজিটর।’
সৌমেন্দ্রনাথ কিছুই মানতেন না। গান্ধী থেকে নাজিমুদ্দীন পর্যন্ত সবাইকে গালাগালি দিতেন। দেব-দেবী, আলস্নাহ-ভগবান, এমনকি ব্রাহ্মসমাজকে বাদ দিতেন না। কিন্তু একজনের প্রতি তাঁর গভীর 888sport apk download apk latest version ছিল। তিনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ।
ইউরোপে শিক্ষাকালে হঠাৎ খবর এলো, হিটলারকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে একজন বাঙালি যুবক ধরা পড়েছে। সেই যুবকটি আর কেউ নয়, তিনি ঠাকুরবাড়ির ব্যতিক্রমী সৌমেন। বিশ্বকবি বলেছেন, ‘সৌম্যের মধ্যে যে প্রদীপ্যমান বহ্নি দেখেছি, তাতে সে যে এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে, সে বিষয়ে আশ্চর্য হবার কিছু নেই।’ আর সৌমেন বলতেন – ‘পৃথিবীর ধার্মিক লোকেরা যত নরহত্যা করেছে, কোনো তৈমুরলঙ, নাদিরশাহরা তা করতে পারেনি।’
মানবেন্দ্রনাথ রায়ের (১৮৮৭-১৯৫৪) পর আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট জগতে ভারতীয় হিসেবে একমাত্র ছিলেন সৌমেন্দ্রনাথ। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে পারিবারিক ঐতিহ্যকে অগ্রাহ্য করে, নিখিল ভারত কমিউনিস্ট ছাত্র সম্মেলনে যোগদান করেন। শ্রমিক কৃষক দলের মুখপত্র লাঙল পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট কংগ্রেসে ভারতীয় প্রতিনিধি হয়ে মস্কো যান। ব্রিটিশ ও জার্মান সরকারের কারাগারে তাঁকে কিছুকাল থাকতে হয়। এমনকি দেশে ফেরার পরও গ্রেপ্তার হন। ভারত স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত প্রায় আট বছর জেলে ছিলেন। সৌমেন্দ্রনাথ পাঁচটি ভাষায় বহু গ্রন্থ লিখেছেন – জার্মান, ফরাসি, রাশিয়ান, ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় দক্ষ ছিলেন। তাঁর উলেস্নখযোগ্য গ্রন্থ – বিপস্নবী রাশিয়া, রবীন্দ্রনাথের গান, কমিউনিজম অ্যান্ড ফ্যাসিজম, ট্যাকটিক্স অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি অফ রেভলিউশন
প্রভৃতি।
সৌমেনের বধূ বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক ভার্গনার, নক্সী কাঁথার মাঠের পুস্তক পর্যালোচনা করেছিলেন। ব্রিটিশ পুলিশ বন্ধু বিচ্ছেদ ঘটানোর জন্য জসীম উদ্দীনকে সিআইডি তকমা দিয়েছিল। সৌম্যের মা-বোন-ভাই সবাই জসী মিঞাকে স্নেহের চোখে দেখতেন। সেই অপবাদ মুছে দিতে কবি জসীম উদ্দীনকে মোহনলালের বাড়ির খিড়কি-দরজা দিয়ে চলে যেতে হয়েছিল – ঠাকুরবাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে। কলকাতার গোবিন্দপুর থেকে ফরিদপুরের গোবিন্দপুর গ্রামে। সৌমেন্দ্রনাথের প্রভাব সকৃতজ্ঞ চিত্তে স্বীকার করেছেন কবি জসীম উদ্দীন।
আমার প্রজারা সব মুসলমান
একদিন সকালবেলা অবন ঠাকুরকে একদল হোমরা-চোমরা মানুষ ঘিরে ধরলো। তাঁদের মধ্যে কেউ মহারাজা, কেউ খবরের কাগজের সম্পাদক। তাঁদের মূল বক্তব্য হচ্ছে – মুসলমানেরা শতকরা ৫০ ভাগ চাকরির জন্য আবদার করছে। আমরা তার প্রতিবাদ করছি। অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের স্বাক্ষর করাচ্ছি – আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু থেকে আচার্য প্রফুলস্নচন্দ্র রায়সহ বহু মনীষী স্বাক্ষর করেছেন। অবন ঠাকুরকেও স্বাক্ষর করতে হবে। সেদিন সেই 888sport app download for androidীয় সভাতে অবনীন্দ্রনাথ বলেছিলেন – ‘মুসলমানেরা যদি বেশি চাকরি পায়, তাতে আমার কি? তারা যদি দুটি বেশি চাকরি পায় তাতে আমি বাদ সাধতে যাব কেন? আমার প্রজাদের মধ্যে প্রায় সবাই মুসলমান।’
সেদিন সকালে ভদ্রলোকের দল তাঁকে নানাভাবে বোঝাতে লাগলেন। কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত স্বাক্ষর করলেন না। সবশেষে তিনি বললেন, ‘আমি রাজনীতির কি বুঝি! আমি রঙ তুলি নিয়ে সময় কাটাই। আপনারা বরং রবিকাকার কাছে যান।’ অবন ঠাকুরও নিশ্চিত জানতেন তাঁর রবিকাকা এই মত সমর্থন করবেন না। পাশে বসেছিলেন জসী মিঞা। সবাইকে শুনিয়ে বললেন, জসী মিঞার একটা চাকরি হলে তিনি সবচাইতে খুশি হতেন। আসলে অবন ঠাকুর কোনো জাত-পাত-ধর্ম-বর্ণ জানতেন না। তিনি যেমন জসী মিঞাকে নিজের ঘরে বসাতেন, একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতেন। আবার মেছুয়াবাজারে মুসলমান দোকানির ভাঁড়ের চা খেয়ে তৃপ্তি বোধ করতেন। মানবিকতার আলোকে মানুষকে তিনি মূল্যায়ন করতেন। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন – সবার উপরে মানুষ সত্য। তাঁর চিত্রাবলিতেও সেই মানবতা ফুটে উঠেছে। জীবন ও কর্মে সমান ছিলেন। কবি জসীম উদ্দীন বিশ্বখ্যাত 888sport live chatী অবন ঠাকুরের মধ্যে আধুনিক মানবতাবাদের স্পর্শ অনুভব করেছেন। যা সত্য, তা প্রকাশ করতে তিনি দ্বিধাবোধ করতেন না। অকপট, নির্ভীক মনে তা শিশুর মতো সরল মনে বলে ফেলতেন। রবিকাকার ভাইপো অবনের মধ্যে বিশ্বমানবতাবোধের আলোকপ্রাপ্তি ঘটেছিল। আর সেজন্যই কবি জসীম উদ্দীনের অবন ঠাকুরও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দেখে বিশ্বদর্শনের অনুভূতি লাভ করেছিল। ঠাকুরবাড়ির বৃহৎ একান্নবর্তী পরিবার – সকলেই যেন সুরে বাঁধা বাদ্যযন্ত্র। কোনোদিন তার-যন্ত্রে বেসুরো রাগিণী বাজতে শোনেননি জসী মিঞার মন-কান।
দক্ষিণ বারান্দায় অবন : বিশ্ব888sport live chatের মুক্তাঙ্গন
সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠেই সেই বারান্দা। সিঁড়ির দুই ধারে রেলিংয়ের ওপর সুন্দর কারুকার্য। কল্পনালোকে উদ্ভাসিত করে দেখা হবে তাঁর সঙ্গে। রঙের-রেখার জাদুকরের সঙ্গে। শুধু চিত্রকর নন, তিনি তো গল্পকারও। করুণরসের গল্পের সঙ্গে হাস্যরস মিশিয়ে নতুন গল্প বানাতে পারেন। নকশি কাঁথার প্রশংসা করতে করতে তাঁর মুখ থেকে নকশি কাঁথার ফুল ঝরে পড়ে। যিনি গান শুনতে শুনতে, কথা শুনতে শুনতে চিত্রজগতের নবদৃষ্টিতে অনায়াসে যেতে পারেন। নক্সী কাঁথার মাঠ পড়ে বলেছিলেন, ‘মন্দ হয় নাই। ছাপতে দাও।’ তিনি আরো বলেছিলেন, ‘তোমার 888sport app download apk অন্য ধরনের। আমি ছাড়া এর ছবি আর কেউ আঁকতে পারবে না।’ শুধু কবি জসী মিঞার নয়, দীনেশবাবুর বঙ্গ ভাষা ও 888sport live football (১৮৯৬) বইটি পড়ে বিশ্বকোষ লেনে, সেনবাবুর জন্য একটা বাড়ি তৈরি করে দিয়েছিলেন।
অবন আর গগন। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর – সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই চিত্র-জাদুকরের একান্ত সাধনা। এঁদের বন্ধু নেই, স্বজন নেই, নেই প্রতিবেশী। নীড়হীন দুই চলমান পাখি উড়ে চলতে চলতে, পথে পথে চিত্রের রঙের ফানুস ছড়িয়ে দিচ্ছে। গগন কথা বলেন না। মাঝে মাঝে মৃদু হাসেন। সে কী মধুর মুখের আলোকঝর্ণা। আর অবন শুধু ছবি আঁকেন না, ছবি লেখেন। এমনই একান্ত সাধনার শক্তি, একান্ত তপস্যায় অংকুরিত হয়ে ওঠে।
– সবাই বলে, আপনি ওরিয়েন্টাল আর্টের জন্মদাতা।
– আমি করেছি আমার আর্ট।
– বনরানীর ছবিখানা অত বয়সের করে এঁকেছেন কেন?
– বন কত কালের পুরাতন।
অবনের দুই অস্ত্র যেন দুই হাতে। এক হাতে তুলি, অন্য হাতে কলম। রং আর কথা, আঁচড় আর আখর। তাঁকে ঘিরে শিশু মৌমাছিরা সর্বদা গুনগুন করে যায়। কোন গ্রামে মেয়েরা পিঠার ওপর নকশা আঁকতে গান করে। কোথায় এক বৈষ্ণবী গান গাইতে থাকে, তার বৈষ্ণব কেঁদে কেঁদে বৈষ্ণবীর পায়ের ওপর আছড়ে পড়ে। – তাঁর ছবিগুলো যেন জীবন্ত হয়ে কথা বলে ওঠে। জসী মিঞা কথা বলে যান, আর তিনি ছবি এঁকে চলেন। তাঁর কোনো বিরাম নেই। নেই কোনো ক্লান্তি। ক্লান্তিহীন মুখে আলো ঝরে পড়ছে।
888sport live chatীর কাছে 888sport live chat সীমাবদ্ধ, কিন্তু 888sport live chatীর জীবন – সীমাহীন, অনন্ত। সারাদিন পর সন্ধ্যায় – বারান্দা ছেড়ে ঘরে এসে বসতেন। তখন বলতেন, ‘খবর শুনতে হয়। পড়ার জন্য ভালো ভালো পুস্তক আছে।’
তাঁর শ্রেষ্ঠ ছবি ‘শাহজাহানের মৃত্যু’ সৃষ্টি হয়েছে শোকে-তাপে জর্জরিত হয়ে। মেয়ের মৃত্যুর বেদনা দিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘শাহজাহানের মৃত্যু’। ছবির মর্মর দেয়ালও যেন জীবন্ত। একটা আঘাত করলেই রক্ত বের হবে। দিল্লিতে পরাধীন ভারতে, ব্রিটিশশাসিত ভারতবর্ষে সেই ছবি প্রথম 888sport app download bd পেল।
প্রবাসী পত্রিকায় যাঁর ‘শেষ বোঝা’ ছবিটি দেখে কবি জসীম উদ্দীনের বহু সময় কেটে যেত। সেই ‘শেষ বোঝা’ ছবির উট পিঠের বোঝার ভারে শ্রান্ত হয়ে পড়ে আছে বালির ওপরে, সেই ছবি যেন মিলে যাচ্ছে রাজপুত্রের ক্ষেত্রে। আজ আর তাঁর জমিদারি নেই। মুক্তহসেত্ম দান করতে করতে সে আজ ভিখারিতে পরিণত হয়েছে। বৃহত্তর ঠাকুর পরিবার শতছিন্ন হয়ে কলকাতার অজ্ঞাত অখ্যাত গলিতে ছড়িয়ে পড়েছে। বরাহনগরের এক বাগানবাড়িতে অবন ঠাকুর চলে এসেছেন। জোড়াসাঁকোর সেই দক্ষিণের বারান্দা আজ আর নেই। ঠাকুরবাড়ির সেই ইন্দ্রপুরী শ্মশানে পরিণত হয়েছে। সেই জাঁকজমক নেই। ঠাকুরবাড়ি ভেঙেচুরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেছে। সেই গাড়িবারান্দা, সেই ওঠার সিঁড়ি, সেই দক্ষিণ-দুয়ারী বারান্দা নেই। অবন ঠাকুরও নেই। তিনি এখন ইতিহাস।
যিনি তুলির জাদুতে নতুন মহাভারত সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি যেন সেই ‘শেষ বোঝা’ পিঠে নিয়ে শ্রান্ত উট। দেশে দেশে যাঁর এত গুণগ্রাহী সে আজ একা, নিঃসঙ্গ। যিনি ইলোরা-অজমন্তা থেকে আগ্রার সমাধিক্ষেত্রের মর্মর কথা নতুন করে দেখিয়েছিলেন। সেই অবন-গগন ঠাকুরদের লীলাক্ষক্ষত্র নিলামে বিক্রি হয়ে গেল, ধনী মাড়োয়ারির হাতে। যে ঠাকুরবাড়ির মহাতীর্থ ছিল বৈদিক যুগের কোনো ঋষির আশ্রম। যেখানে একদিন বিশ্ববিদ্যার চর্চার মহাপ্রাঙ্গণ ছিল, সেখানে আজ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। সেই অশ্রম্নসজল কাহিনি যেন নক্সী কাঁথার মাঠ থেকে সোজন বাদিয়ার ঘাটে ঘুরেফিরে আসছে। শিশু ‘হাসু’রা আজ বাংলায় নেই। তারা সবাই এখন বিলেতে। কবি জসীম উদ্দীনও নেই। কিন্তু জসী মিঞার 888sport sign up bonusগ্রন্থ আছে। ঠাকুরবাড়ির সেই অজানা ইতিহাস ও ভূগোল 888sport cricket BPL rate শতকেও সমান সমাদৃত।
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষে প্রকাশিত কবি জসীম উদ্দীনের ঠাকুরবাড়ির 888sport sign up bonusগ্রন্থটি আজ দুষ্প্রাপ্য। নব কলেবরে গ্রন্থটি সম্পাদনার প্রয়োজন ছিল। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ও আজ তার কলেবর বাড়িয়ে এক নতুন ঐশ্বর্য সৃষ্টি করেছে।
কবি জসীম উদ্দীন তাঁর 888sport sign up bonusগ্রন্থে ছাত্রজীবনের তিন বন্ধুকে 888sport app download for android করেছেন। প্রথম জন বিনয়েন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বিতীয়জন বীরেন ঘোষ ও তৃতীয়জন হলেন বীরেন ভঞ্জ। বন্ধুবৎসল কবি জসীম উদ্দীন শৈশবের তিন বন্ধুকে 888sport app download for android করেছেন – তিনজনেরই নামের আদ্যাক্ষর ‘ব’। সম্প্রীতির কবি জসীম উদ্দীন তাঁর স্বজন-বন্ধুজনের বৃত্তে সমন্বয়ের সাধন করেছেন। শৈশবের স্বতঃস্ফূর্ত সম্প্রীতির বাতাবরণে সমৃদ্ধ পল্লিকবি আজীবন লালন করেছেন। যৌবনে ঠাকুরবাড়ির মহাতীর্থে সেই সমন্বয় সার্থক হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যার চর্চায় ঠাকুরবাড়ির উদার অগ্রগতি পল্লিকবিকে মুগ্ধ করেছিল। বহুমুখী বিদ্যাচর্চার পীঠস্থান ঠাকুরবাড়ি পল্লিকবিকে করেছিল ঋদ্ধ। ঠাকুরবাড়ির বহুধারার 888sport live chat-888sport live football স্রোত পল্লিকবিকে আজীবন চালিত করেছিল, উজ্জীবিত রেখেছিল। পল্লিকবির 888sport sign up bonusকথামূলক ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় গ্রন্থটি তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। দুষ্প্রাপ্য এ-গ্রন্থটি তাই পুনঃপ্রকাশের প্রয়োজন আছে। বাংলা 888sport sign up bonus888sport live footballে পল্লিকবির ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় গ্রন্থটি 888sport cricket BPL rate শতকেও মূল্যবান। অন্তত ঠাকুরবাড়ির চর্চার ইতিবৃত্তে অপরিহার্য গ্রন্থ।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.