888sport app : 888sport sign up bonus বি888sport sign up bonusর নগরী

মুনতাসীর মামুন

প্রায় দুদশক আগে 888sport app : 888sport sign up bonus বি888sport sign up bonusর নগরী লেখা শুরু করি। দৈনিক সংবাদের তৎকালীন 888sport live football-সম্পাদক আবুল হাসনাত যত্ন করে ধারাবাহিকভাবে তা দীর্ঘদিন প্রকাশ করেন। 888sport app : 888sport sign up bonus বি888sport sign up bonusর নগরী সুবিন্যস্ত নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে রচনা নয়। 888sport appর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কিছু ভুক্তির সমষ্টি, গ্রন্থে যা আভিধানিকভাবে বিন্যাস করা হয়েছে। 888sport sign up bonus-বি888sport sign up bonus বলা যেতে পারে কোষগ্রন্থ।

888sport sign up bonus-বি888sport sign up bonusর নগরী ইতোমধ্যেই দুখন্ড প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে 888sport appবিষয়ক ৫০০-রও বেশি ভুক্তি সংকলিত হয়েছে। এখন আবার এ-ধরনের কিছু ভুক্তি রচনা করছি। আবুল হাসনাত বা আমাদের হাসনাতভাই এখন প্রখ্যাত সাময়িকী কালি ও কলমের সম্পাদক। তাঁর পত্রিকায়ই প্রকাশের জন্য নতুন কিছু ভুক্তি দেওয়া হলো।

ভুক্তিগুলি সম্পর্কে একটি কথা বলা দরকার। প্রতিটি ভুক্তির আকার বিভিন্ন রকম। এর কারণ, যে-বিষয়ে যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তা-ই সংযোজিত হয়েছে। বিশে�ষণমূলক কিছু নয়, তথ্যের আকর হিসেবেই ভুক্তিগুলি বিবেচনা করলে খুশি হবো।

 

অ্যাডাল্ট ফিমেল স্কুল

888sport app শহরে মহিলাদের জন্য এখনো কি আছে নৈশ বিদ্যালয় বা প্রৌঢ় মহিলাদের জন্য স্কুল? আমার জানামতে নেই। কিন্তু সেই ১৮৭৩ সালে 888sport appয় প্রৌঢ় মহিলাদের শিক্ষাদানের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল অ্যাডাল্ট ফিমেল স্কুল।

888sport appর উৎসাহী ও প্রভাবশালী ব্রাহ্ম নবকান্ত চট্টোপাধ্যায় ১৮৭১ সালে একটি সমিতি গড়ে তুলেছিলেন, যার নাম ছিল 888sport app ফিলানথ্রপিক সোসাইটি ফর সোশ্যাল রিফর্ম। বাংলায় এর নাম ছিল শুভসাধিনী সভা। এই সভা অনেক সময় ‘ফিমেল অ্যাডাল্ট স্কুল’ হিসেবে পরিচিত ছিল। আসলে ওই সময় 888sport appয় প্রতিষ্ঠিত ‘অন্তঃপুর স্ত্রী শিক্ষা সভা’র মতোই ছিল তা।

নবকান্ত চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন – ‘সর্বপ্রথম সুবিখ্যাত অভয়চন্দ্র দাস মহোদয়ের বাসাবাটিতে তাহার সুযোগ্য পুত্র প্রাণকুমার দাস ও 888sport app কতিপয় ব্রাহ্মের যত্নে একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। আমিও ঐ বিদ্যালয়ের একজন পরিচালক ছিলাম। কিছুকালের জন্য এই বিদ্যালয়ের কার্য আমার ফরাশগঞ্জস্থ বাসাবাটিতে চলিয়াছিল। পরে এই বিদ্যালয়ই বাবু বঙ্গচন্দ্র রায়, বিহারীলাল সেন, কৈলাসচন্দ্র নন্দী এবং আমার যত্নে ‘যুবতী বিদ্যালয়’-এ পরিণত হয়, শেষে এই বিদ্যালয় এবং বাবু আনন্দমোহন দাস প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয় একত্র হইয়া ‘888sport app ইডেন ফিমেল স্কুল’ নামে অভিহিত হয়।’

১৮৭৬ সালে মেরি কার্পেন্টার এই স্কুল পরিদর্শন করে অভিভূত হয়ে লিখেছিলেন – ‘Dacca, the capital of East Bengal, though somewhat remote, is considerably in advance of other places in female education, though the efforts of many enlightened gentlemen. Here I found a small adult school, unique in it character, whose husbands desire for them intellectual improvement.’

সরকার এই রিপোর্ট পেয়ে জানতে চাইল, 888sport appয় মেয়েদের জন্য একটি স্কুল খোলা যাবে কিনা। এ-ধরনের আরো কয়েকটি বিদ্যালয় ছিল 888sport appয়। নবকান্ত প্রস্তাব দিলেন, বিদ্যমান স্কুলটিকেই রূপান্তরিত করা যায়। সরকার ওইটিকে কেন্দ্র করে 888sport app ‘কতিপয় বিদ্যালয়’ নিয়ে ১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা করে একটি মিডল ভার্নকুলার স্কুল। বাংলার লে. গভর্নর ছিলেন তখন অ্যাশলি ইডেন। শিক্ষার প্রতি তাঁর আগ্রহকে 888sport apk download apk latest version জানানোর জন্য স্কুল কমিটি স্কুলের নাম রেখেছিলেন ইডেন ফিমেল স্কুল।

 

করুণাকণা গুপ্ত

888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা শিক্ষক করুণাকণা ইডেন স্কুল ও কলেজ থেকে যথাক্রমে ১৯২৭ ও ১৯২৯ সালে ম্যাট্রিক ও আই.এ. পরীক্ষা দেন। দুটি পরীক্ষায়ই তিনি প্রথম হয়েছিলেন। ১৯২৯ সালে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হন। এই বিভাগ থেকে ১৯৩২ ও ১৯৩৩ সালে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম হয়ে পাশ করেন। শতকরা ৭০ ভাগের বেশি নাম্বার পাওয়ায় বিশববিদ্যালয় তাঁকে স্বর্ণপদক প্রদান করে।

১৯৩৩ সালে ইতিহাস বিভাগে রমেশচন্দ্র মজুমদারের অধীনে গবেষক হিসেবে যোগ দেন। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে ১৯৩৪ সালের ২৪ মে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে অবশ্য জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়। ছয় মাস পর গবেষণা ত্যাগ করে তিনি কামরুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষিকার চাকরি গ্রহণ করেন। ১৯৩৫ সালে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক জ্যোতির্ময় সেন উচ্চশিক্ষার্থে লন্ডন যান। উপাচার্য অধ্যাপক রমেশচন্দ্র মজুমদার করুণাকণাকে ১৯৩৫ সালের সেপ্টেম্বরে ইতিহাস বিভাগে দ্বিতীয় গ্রেডের প্রভাষক বা লেকচারার হিসেবে নিয়োগ দেন। 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে কোনো মহিলাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আশ্চর্য যে, তৎকালীন রক্ষণশীল সমাজও বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছিল। করুণাকণা এই সময় প্রাচীন ভারত সম্পর্কে কয়েকটি 888sport live রচনা করেন।

888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে করুণাকণা বেশিদিন চাকরি করেননি। ১৯৩৬ সালে বঙ্গীয় শিক্ষা সার্ভিসে যোগ দেন। নিযুক্তি পান বেথুন কলেজে, পরে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডিডিপিআই হয়েছিলেন অবসরগ্রহণের আগে। ১৯৭৯ সালের ১৩ নভেম্বর কলকাতায় তাঁর জীবনাবসান ঘটে।

 

কাটরা প্রেস

এতদিন পর্যন্ত ধারণা ছিল, 888sport appয় মুদ্রণযন্ত্র স্থাপিত হয়েছিল ১৮৫৬ সালে, কারণ তখন 888sport app থেকে প্রকাশিত হয়ে©র্ছল 888sport app তথা 888sport appsের প্রথম ইংরেজি সংবাদপত্র সাপ্তাহিক 888sport app নিউজ এবং এ-কারণেই আমদানি করা হয়েছিল মুদ্রণযন্ত্র। আর পূর্ববঙ্গে বা বর্তমান 888sport appsে প্রথম মুদ্রণযন্ত্রটি স্থাপিত হয়েছিল রংপুরে ১৮৪৭ সালে। ওই সময় রংপুর থেকে প্রকাশিত হয়েছিল 888sport appsের প্রথম সংবাদপত্র রঙ্গপুর বার্ত্তাবহ। পত্রিকাটি প্রকাশের জন্যই আনা হয়েছিল মুদ্রণযন্ত্রটি।

বছর বিশেক আগে লন্ডনের ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরিতে কাজ করার সময় ছোট কিন্তু ঝকঝকে ছাপার একটি পুস্তিকা পাই। পুস্তিকাটির নামপত্রে লেখা আছে ‘888sport app প্রিন্টেড অ্যাট দি কাটরা প্রেস, ১৮৪৯’। এর অর্থ, ১৮৫৬ সালে নয়, আরো আগে অন্তত আট-নয় বছর আগেই 888sport appয় মুদ্রণযন্ত্রের অস্তিত্ব ছিল এবং এ-সূত্র ধরেই বলা যেতে পারে, ১৮৪৮-৪৯ সালে 888sport appর প্রথম মুদ্রণযন্ত্রটি কাজ শুরু করেছিল কাটরায়। এখানে কাটরা বলতে ছোট কাটরা বোঝানো হচ্ছে। মিশনারি অর্থাৎ ব্যাপ্টিস্ট মিশনারিদের সদর দফতর ও আবাস ছিল তখন ছোট কাটরায়। এখন পর্যন্ত এ-বিষয়ে যেহেতু আর নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি সেহেতু এই সময়টিকেই সঠিক বলা যেতে পারে এবং সে পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাপ্টিস্ট মিশন কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তকাটিই 888sport appর প্রথম প্রকাশিত মুদ্রিত নিদর্শন।

ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরির ডেপুটি ডিরেক্টর ও গবেষক গ্রাহাম শ’ এ-বিষয়ে আরো কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছেন। ১৮৫৩ সালে জার্মান ভাষায় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে তিনি এই তথ্য উদ্ধার করেছেন।

১৮৪৭ সালে, 888sport appয় ইস্ট বেঙ্গল মিশনারি সোসাইটি বা ব্যাপ্টিস্ট মিশনের দায়িত্বে ছিলেন রেভারেন্ড ড. জোহানেস হেবারলিন। তাঁকে সাহায্য করার জন্য সুইজারল্যান্ডের ব্যাসেল থেকে ইভানজেলিকাল মিশনারি সোসাইটি, ম্যানুয়েল বোস্ট ও ফ্রেডারিক লেহম্যানকে পাঠিয়েছিল 888sport appয়। সেই জার্মান রিপোর্টটিতে উলে�খ করা হয়েছে, ‘মিশন ও মুদ্রণযন্ত্রের আড়ত (গোডাউন) হলো 888sport app। এখন শুরু হবে শহরের আশপাশে প্রচার করা এবং 888sport app স্টেশনের ক্যাথেকিস্টদের শিক্ষা দেওয়া। এ কারণে, ভ্রাতা বোস্ট যিনি কাজ করেছেন আগে মুদ্রণালয়ে এবং ভ্রাতা লেহম্যান যিনি কাজ করবেন শিক্ষক হিসেবে, এখন এখানে স্থিতি লাভ করেছেন। ভ্রাতাদ্বয় এখন ভাষা শিক্ষায় ব্যস্ত।’ সেই সূত্র ধরে বলা যায়, 888sport appর প্রথম মুদ্রক হলেন সুইজারল্যান্ডের স্যামুয়েল বোস্ট, যিনি ২২ জুলাই ১৮২২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন জেনেভায়।

গ্রাহাম শ’র মতে, বোস্ট ছিলেন একজন অবিবাহিত যুবক। ১৮৪৩ থেকে ১৮৪৬ সাল পর্যন্ত ব্যাসেলের মিশন স্কুলে প্রশিক্ষণ নেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি কাজ করতেন একটি মুদ্রণালয়ে। হতে পারে, কৈশোরে তিনি একজন প্রিন্টারের নবিস ছিলেন এবং প্রশিক্ষণের পর ধর্মপ্রচারে দেখিয়েছিলেন আগ্রহ। প্রিন্টার বিধায় ব্যাসেল সোসাইটি তাঁকে লুফে নিয়েছিল। শ’র মতে, খুবসম্ভব ১৮৪৭ সালের গোড়ার দিকে বোস্টের দল ব্যাসেল থেকে একটি মুদ্রণযন্ত্র নিয়ে এসেছিল বা এমনও হতে পারে, ১৮৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় যে দল এসেছিল তারাই নিয়ে এসেছিল মুদ্রণযন্ত্রটি। শুরুতে বোস্ট ও তাঁর সঙ্গীরা কিছু বাংলা শেখা ও 888sport appর ইংরেজি স্কুল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। বোস্টকে ত্রিপুরায় পাঠানো হয়েছিল ১৮৪৭ সালে। 888sport appয় ফিরে এসেছিলেন পরের বছর। শ’ অনুমান করছেন, কাটরা প্রেসে যে বাংলা পুস্তিকাটি মুদ্রিত হয়েছিল তার অক্ষর হয়তো আনা হয়েছিল কলকাতার সার্কুলার রোডের ব্যাপ্টিস্ট মিশন প্রেস থেকে। কাটরা প্রেস থেকে প্রকাশিত এ পর্যন্ত তিনটি বইয়ের নাম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুটি বাংলায়, একটি ইংরেজিতে। ইংরেজি পুস্তকাটি ব্যাপ্টিস্ট মিশনসংক্রান্ত রিপোর্ট। বাংলা বইয়ের একটি নাম প্রহেলিকা, অপরটির নাম প্রার্থনা অনুক্রম। জোহানেস হেবারলিন-রচিত প্রার্থনা পুস্তকের সারসংক্ষেপে প্রার্থনা অনুক্রম। প্রথম বই দুটির খোঁজ পাওয়া গেছে শুধু।

১৮৫৩ সালের গোড়ার দিকে খারাপ স্বাস্থ্যের কারণে বোস্ট চলে যান। সে-সময় পর্যন্ত 888sport appয় মুদ্রণযন্ত্র সম্পর্কে তিনিই ছিলেন খুব সম্ভব একমাত্র অভিজ্ঞ লোক।

শ’ অনুমান করছেন, কাটরার প্রেসটি টিকে ছিল চার বছর এবং তারপর 888sport app নিউজ প্রকাশের উদ্দেশ্যে এটি ক্রয় করা হয়েছিল। বোস্ট অসুস্থ হয়ে কলকাতা চলে যাওয়ার পর যন্ত্রটি আর ব্যবহৃত হয়নি। এখানে উলে�খ্য, 888sport app নিউজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ‘888sport app প্রেস’ থেকে প্রকাশিত হয়েছিল আরেকটি ইংরেজি সংবাদপত্র বেঙ্গল টাইমস এবং তা টিকে ছিল শতক পর্যন্ত। বছর কয়েক আগে 888sport apk জাদুঘরে ভাঙা এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখলাম একটি মুদ্রণযন্ত্র। জাদুঘরের তৎকালীন পরিচালক ড. সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, মিশনারিরা বেশ কিছুদিন আগে এই জাদুঘরে ভাঙা মুদ্রণযন্ত্রটি দান করে গেছেন। যদি কাটরার যন্ত্রটি হস্তান্তরিতই হয়ে থাকে তাহলে তা মিশনারিদের মালিকানায় এলো আবার কীভাবে? তাতে মনে হয়, বোস্ট স্থাপিত মুদ্রণযন্ত্রটি কয়েকটি পুস্তিকা প্রকাশের কাজেই ব্যবহৃত হয়েছিল। বোস্ট 888sport app ছেড়ে চলে যাওয়ার পর খুবসম্ভব অব্যবহৃত অবস্থায়ই পড়েছিল মুদ্রণযন্ত্রটি। ১৮৪৭ সালে বোস্ট যে মুদ্রণযন্ত্রটি এনেছিলেন তা ‘অ্যালবিয়ন প্রেস’। ওই সময় এ-কোম্পানির যন্ত্রই ছিল চালু। এখন ওই মডেলের নিখুঁত ‘অ্যালবিয়ন প্রেসে’র একটি নিদর্শন দেখতে পাওয়া যাবে 888sport appর নগর জাদুঘরে। জাদুঘরের পক্ষে হাশেম সুফি এটির খোঁজ আনেন এবং 888sport live chatী হাশেম খান ও আমার উদ্যোগে ১৯৮৯ সালে জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের দানে এটি সংগ্রহ করা হয়।

 

ছহি তালেনামা

বাংলায়, কলকাতার পর 888sport app হয়ে উঠেছিল পুঁথি মুদ্রণের অন্যতম কেন্দ্র। উনিশ শতকের শেষার্ধে, চকবাজারে পুঁথি বিক্রির জন্যই ছোট একটি বাজার গড়ে উঠেছিল, যা পরিচিত ছিল কেতাবপট্টি নামে। 888sport appর পুঁথিকারদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন জনপ্রিয়। এ পর্যন্ত জানামতে 888sport appর প্রথম পুঁথি মুদ্রিত হয়ে প্রকাশিত হয় অক্টোবর ১৮৬৭ সালে। ঈশান চন্দ্র শীল সুলভ যত্নে তা মুদ্রণ করেছিলেন। পুঁথিকার ছিলেন মোহাম্মদ ফায়েজউদ্দিন। পুঁথির নাম ছহি তালেনামা। রয়েল আকারের ৯৫ পৃষ্ঠা। মুদ্রিত হয়েছিল ১০০০ কপি, দাম আট আনা। দুঃখের বিষয় ফায়েজউদ্দিনের জীবন সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায়নি। এখানে প্রথম মুদ্রিত পুঁথি ও পুঁথিকার সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়া হলো। –

ফয়েজউদ্দিনের নামের বানান বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমভাবে উলে�খ করা হয়েছে, যেমন মাহাম্মদ ফায়েজউদ্দিন, ফয়জদ্দিন, ফয়েজদ্দিন ইত্যাদি। এ পরিপ্রেক্ষিতে মান বানান হিসেবে মোহাম্মদ ফায়েজউদ্দিন লেখা হয়েছে। তালেনামা তিন খন্ডে বিভিন্ন সময় প্রকাশিত হয়েছে। তিন খন্ডের লেখক তিনজন কিন্তু পৃষ্ঠাক্রম ১-১৯৬। অর্থাৎ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। ব্রিটিশ লাইব্রেরি ক্যাটালগে তিনটি খন্ড একইভাবে উলি�খিত হলেও এখানে আলাদা আলাদাভাবে উলে�খ করা হবে।

প্রথম খন্ডের প্রচ্ছদের বিবরণ –

‘ছহি তালেনামা

অর্থাৎ বার রাশীর ছায়েত।

শ্রী মাহম্মদ ফয়েজদ্দিন

পহেলা জিল তালেনামা

তরজমা করিয়া

ও মাহাম্মদ জহরদ্দিন ছাহেবের দ্বারা দোছরা

জিল জওহুরে তালেনামা

তরজমা

করাইয়া

তিছরা জিল হায়েরা তোল আফলাক তালেনামা

হায়দারজান ছাহেবের দ্বারা তরজমা

করাইয়া আমি স্বয়ং তদারক

করিয়া সুলভ যন্ত্রে

দ্বিতীয়বার ছাপাইলাম

 

এই কেতাব ইংরাজী ১৮৬৭ সনের ২৫ আইন

অনুসারে রেজিস্টরি করা গেল।’

ব্রিটিশ লাইব্রেরির ক্যাটালগে ১৮৬৭ সালকেই প্রথম সংস্করণ হিসেবে ধরা হয়েছে। আসলে ১৮৬৭ সালে তালেনামার দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। তালেনামার বিবরণ পড়ে মনে হয়, ফয়েজউদ্দিন তিন খন্ডের ১৯৬ পৃষ্ঠার গ্রন্থটি রচনা ও রচনা করানো থেকে মুদ্রণ অব্দি যাবতীয় কাজ নিজেই করেছিলেন। ‘বিবরণ’ অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন –

‘সবর্ব সাধারণকে জ্ঞাত করা যাইতেছে যে, পূবের্ব তালেনামা ছাপিয়াছিলাম সে কেতাব তামান খতম ছিল না ছাপিতে বহুতর বাকি থাকাতে ঐ কেতাব খতমলেখাজায় না, কেননা যে তালেনামা খোলাছা করিলে অধিক বড় হয়, এইক্ষণ ছহি করিয়া পাঁচ বারে তিন জেলেদের তামাম হইল।’

শেষ পৃষ্ঠার বিজ্ঞাপনে উলে�খ করা হয়েছে- ‘এই পুথি যাহার দরকার হইবে 888sport appর সহরে মোকাম চকবাজার শ্রী যুত মুন্সী গোলাম মস্তফা ছাহেবের দোকানে তত্ত্ব করিলেই পাইবেন।

সবর্ব সাধারণকে জ্ঞাত করা যাইতেছে যে, এই কেতাবের আউয়ালে আখেরে আমার নামের মহর দেখিয়া উক্ত কেতাব খরিদ বিক্রী করিবেন। যে কেতাবে আমার মহর নাহি সে কেতাব চুরির জানিবে সে ব্যক্তি আইন মোতাবেক অপরাধ হইবেক।’

 

পুঁথিকার নিজের বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে –

‘হিন্ন ফয়জদ্দিন কহে জনাবে সভার।

ছালামের কাছে এই আরজ আমার \

পহেলাতে তালেনামা মদদে আলার।

ছাপাইয়া বিক্রী করি সহরে 888sport appর \

ছহির খাতিরে ছিল দেল পেরেশান।

আখেরাতে আলাতালা রহিম রহমান \

মুনসী নেজামদ্দিন নাম বড়া নেককার \

নেক পাক শাদা দিল মকবুল খোদার \

বহুত মেহেন্নব করি অধিনের পরে।

মেহেন্নত করিলেন গুরু ছহির খাতিরে \

তারপরে মৌলবি মনিরুদ্দিন আহাম্মদ \

কেতাবের বিচে কৈলেন মেহেন্নতের হ্রদ \

শক্ত এবারত যতকেতাবে আছিল।

লোগত দেখিয়া তিনি ছহি কৈরে দিল \

ফারছি আরবি হতে তরজমা করিয়া।

বাঙ্গালা তরজমা জবে লিনু উতারিয়া \

ফোরছদ খাতিরে আমি হইয়া লাচার।

না না পারিনু করিবারে ত্রিপদী পয়ার \

আখেরাতে আলাতালা পরাওর দেগার।

দুই ছাহেব মিলাইল কড়া নেককার \

মুনসি জহরদ্দিন নাম নেক মোছলমান।

দিতিয়ে দেলেদে সাএরি খুবির বয়ান \

মুসনী হায়দার জান মকবুল খোদার।

তেছরা দপ্তরে ছাইরি মাকুল তাহার \

এ দেনো ছাহেবের খুব মেহন্নত করিয়া।

ত্রিপদি পয়ারে পুথি দিল সাজাইয়া \

এখন কেতাবে যদি খাতা হৈয়া থাকে।

মেহের করিয়া মাপ করিবেন সবাকে।।’

তালেনামা সম্পর্কে আবদুল কাউইম বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। এখানে তা উদ্ধৃত হলো – (‘গ্রন্থটির পূর্ণ নাম ‘ছহি তালেনামা এবং ছাএতনমা ও রাশিনামা’। তিন খন্ড একত্রে প্রকাশিত। প্রথম সংস্করণ, 888sport app ১৮৬৭।’)

দ্বাদশ সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৮৮৭ সালে। বিশ বছরের মধ্যে একটি গ্রন্থের ১২টি সংস্করণ প্রকাশিত হওয়া কম কথা নয়। গ্রন্থটি তিন ভাগে বিভক্ত। মোহাম্মদ ফয়েজউদ্দিন রচনা করেন প্রথম ভাগ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগ রচনা করেন যথাক্রমে জহিরউদ্দিন ও হায়দার জান। দ্বিতীয় ভাগ জওহয়ে হালেনামার গ্রন্থের তরজমা এবং তৃতীয় ভাগ হায়েরাতোল আফলাক গ্রন্থের তরজমা।

গ্রন্থের বিষয়বস্ত্ত রাশির বর্ণনা ও তার তাৎপর্য। আরম্ভ –

হামদো ও ছেফত যত সকলি আলার।

পূজিবার লায়েক সেইদোহে নাহি আর।

হাজার শোকর সেই খোদার দরগায়।

শোকের ছেফত যার না হয় আদায় \

জিন এনছান যত ফেরেস্তার জাতে।

তাহার ছেফত কেহ না পারে করিতে \ (পৃ ১)

মোহাম্মদ ফয়েজউদ্দিন তালেনামা রচনা করেন ফএজ রওশন নামক গ্রন্থ-অবলম্বনে। ১২৭১ সালে তিনি কাব্যটি প্রথম রচনা করেছিলেন –

এক হত্তর সনে পুথি লিথিনু তামাম

আগুনে জলিল কাপি না আসিল কাম। (পৃ ৯)

অনেক কষ্ট করে কবি ১২৭৩ সনে পুনরায় কাব্যটি রচনা করেন। কিন্তু এবারো ‘রাজনগর মেলায় কিস্তি গরক হইল। মাল আছবাব কাপি নদীতে ডুবিল।’ দ্বিতীয়বার দুর্ঘটনার পরও তিনি পুঁথিটি সমাপ্ত করতে পেরেছিলেন।

 

ডনখানা

উনিশ শতকে 888sport appর সামাজিক জীবনের বা বিনোদনের একটি কেন্দ্র ছিল আখড়া। সাধারণ অর্থে আখড়া বলা হতো শরীরচর্চা কেন্দ্রকে, বিশেষ করে যেখানে কুস্তি শেখানো হতো। মুসলমানরা আখড়াকে বলতেন ডনখানা। কুস্তিগিরকে পাহলোয়ান বা ডনগির।

মুঘল আমল থেকেই খুব সম্ভব কুস্তির চর্চা শুরু হয়েছিল। সুবেদারদের সময়, সুবেদার ইব্রাহিম খানের সঙ্গী ছিলেন মীর্জা মান্না। নামকরা কুস্তিগির ছিলেন তিনি। হাকীম হাবিবুর লিখেছেন, 888sport appর কোনো কুস্তিগিরের নামে একটি এলাকাই আছে তা হলো মীর্জা মান্নার দেউড়ি।

উনিশ শতকে কুস্তি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে আখড়াও। এবং কুস্তির জায়গা তৈরির ব্যাপারেও অনেক রিচ্যুয়াল পালিত হতো। যেখানে আখড়া হতো, সেখানে প্রথমে একটি বাংলাঘর বানানো হতো। তার থেকে একটু নিচু জায়গায় কুস্তির জমি। এই জায়গাকে বলা হতো ফালকা, এখানে কমপক্ষে দেড় বিঘত লাল মাটির জমির আস্তরণ তৈরি হতো। এই মাটি আনার আবার নিয়ম ছিল। দুইজন মুত্তাকি এবং আখড়ার খলিফা বা ওস্তাদ রশীদ খানের পুকুর বা আজিমপুর মাঠের পুকুর বা ময়মনসিংহ রোডের পুকুর থেকে লাল মাটি কোদাল দিয়ে তুলতেন। তারপর গরুগাড়ি করে তা নিয়ে আসা হতো এলাকায়। এর ওপর অন্য মাটি দেওয়া হতো। এই মাটিতে কয়েক মাস তেল, ঘি বা ঘোল ঢালা হতো। প্রতিদিন সকালে নবিস বা শিষ্যের কাজ ছিল এই ফালকা কোপানো। এভাবে ছানতে ছানতে মাটি বিশেষ আকৃতি ও রং লাভ করত। ফালকার বাইরে থাকতো ব্যায়াম করার যন্ত্রপাতি যেমন মুদগর, গোলা, গনডা প্রভৃতি। ফালকার উদ্বোধন হতো বৃহস্পতি ও শুক্রবার। সাগরেদ যাঁরা হতেন তাঁদের জন্যও বিশেষ রিচ্যুয়াল ছিল। বিশ শতকেও আখড়া ছিল। পরে আস্তে আস্তে তা বিলুপ্ত হয়।

888sport app কলেজ ক্লাব

888sport appয় ক্রিকেটের শুরু গত শতকের পঞ্চাশ দশকে। খুবসম্ভব ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ দমনে এবং পরবর্তীকালে যেসব অফিসার ও সৈন্য এসেছিলেন শহরে তাঁরাই ক্রিকেট খেলা শুরু করেন। 888sport app স্টেশনেও খেলা হতো। তবে, এ খেলা ছিল নিছক বিনোদন, একঘেয়ে সময় কাটানোর উপায় মাত্র। ক্রিকেট খেলা, মাঠে পাড়া-পড়শির সঙ্গে সমবেত হওয়া, একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারা – ছুটির দিনটি কাটানোর এটি ছিল একটি উপায়। সত্তরের দিকে, ‘নেটিভ’দের অনেকেও খেলাটি রপ্ত করেন এবং তখন ‘নেটিভ’ ও ‘ইংরেজ’ মিলে খেলা শুরু হয় বিভিন্ন দল গঠন করে।

888sport appয় ক্রিকেট খেলা জোরদার হয়ে ওঠে যখন 888sport app কলেজে ‘888sport app কলেজ ক্লাব’ গঠিত হয়। এ-ক্লাবটি কখন গঠিত হয়েছিল জানা যায়নি। তবে, অনুমান করে নিচ্ছি আশির দশকে কলেজের ছাত্র-শিক্ষক মিলে এ-ক্লাবটি গঠন করে। 888sport appয় নিয়মিত ক্রিকেট চর্চা ছাড়াও তারা বিভিন্ন জায়গায় ম্যাচ খেলতে যেতো। এবং সারা বাংলায় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্লাব হিসেবে ক্লাবটি খ্যাতি অর্জন করেছিল।

১৮৮৩ সালের এক সংবাদে জানা যায়, এই ক্লাব কৃষ্ণনগর কলেজের ‘ছাত্রদিগকে’ পরাজিত করেছিল। ‘ঐ ক্রীড়ায় মাননীয় লেফটেন্যান্ট গভর্নর বাহাদুর ক্রীড়া চত্বরে উপস্থিত থাকিয়া জেতাদিগকে কেবল বাক্যতঃ উৎসাহ দান করেন নাই, কাহাকে পারিতোষিকও প্রদান করিয়াছেন।’

১৮৮৭ সালের একটি সংবাদে জানা যায়, পুরানা পল্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে 888sport app কলেজ ও জগন্নাথ কলেজের মধ্যে একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ‘উহাতে 888sport app কলেজের ৯৮ দৌড় ও জগন্নাথ কলেজের ২১ দৌড় হইয়াছিল। সুতরাং 888sport app কলেজের সর্বতোভাবে জয়লাভ হইয়াছে।’  

ওই একই বছর কলকাতায় প্রেসিডেন্সির সঙ্গে 888sport app কলেজ ক্রিকেট ক্লাবের খেলা নিয়ে বেশ তর্ক-বিতর্ক হয়। ইঙ্গিত পাওয়া যায়, এ-খেলা নিয়ে উভয়বঙ্গের পত্রিকাগুলিতে বেশ লেখালেখি হয়েছিল। খেলাটি হয়েছিল ইডেন গার্ডেনে। সংবাদপত্রের অগ্রিম খবরে জানা গিয়েছিল ওই দিন, ‘মাননীয় লেফটেন্যান্ট গভর্নর প্রভৃতি প্রধান-প্রধান রাজ পুরুষগণ ক্রীড়াস্থলে উপস্থিত থাকিবেন।’ এবং ‘888sport app কলেজের প্রিন্সিপাল মেঃ বুথ প্রফেসর মেঃ টেপার ও বাবু সারদারঞ্জন ক্রীড়ক ছাত্রগণ সমভিব্যাহারে কলিকাতায় রওয়ানা হইয়া গিয়াছেন।’ সারদারঞ্জন ছিলেন টিমের ক্যাপ্টেন।

খেলায় 888sport app জয়লাভ করে। কলকাতার কিছু পত্রিকা তখন এর সমালোচনা করে বলে, আসলে 888sport appরই হার হয়েছে। 888sport appর পত্রিকাগুলি তা মানবে কেন? 888sport appর একটি পত্রিকা এ-সম্পর্কে দীর্ঘ মতামত প্রকাশ করে। একপর্যায়ে লেখক মন্তব্য করেন – ‘সহযোগীর ৩ সংখ্যক মতগুলি সম্পূর্ণ অলীক। দ্বিতীয়দিনে প্রেসিডেন্সীর ক্রীড়কগণ প্রথম দিনের দৌড় বহাল রাখিয়া ব্যাট করিতে অগ্রসর হন। কিন্তু রো ও হুইলার (প্রেসিডেন্সীর সাহেব এবং এবং অপর কয়েকটা প্রেসিডেন্সীর ক্রীড়ক একবাক্যে স্বীকার করেন যে দ্বিতীয় দিন হাজার ভাল খেলিলেও পূবর্বদিনের ক্ষতিপূরণ প্রেসিডেন্সীর পক্ষে এক প্রকার অসম্ভব)।’ তখন সারদাবাবু রো সাহেবকে জিজ্ঞাসা করেন – ‘ওকে কি আপনারা স্বীকার করিতেছেন যে, 888sport app কলেজ ভার্সাস প্রেসিডেন্সী কলেজ ক্রীড়া পূবর্বদিনের ক্রীড়া দৃষ্টেই 888sport appর সপক্ষে নিষ্পত্তি হইল? রো সাহেব তাহাই স্বীকার করেন।

সারদাবাবু পুনরায় বলেন, ‘তাহা হইলে আমরা যে উদ্দেশ্যে 888sport app হইতে আসিয়াছিলাম তাহা ‘সিদ্ধ’ হইয়াছে এক্ষণে আর খেলা নিষ্প্রয়োজন। তৎপর সেদিনকার জন্য উভয় দলে স্ক্রাচ ম্যাচ (আপোষে খেলা) খেলিবার  প্রস্তাব হয়।’  

১৮৯১ সালে এক সংবাদে জানা যায়, কলকাতায় 888sport app কলেজ ও শিবপুর কলেজের মধ্যে দুদিনব্যাপী এক খেলা অনুষ্ঠিত হয়। 888sport app জয়লাভ করে – ‘২ বাজীতে ৪ বার খেলা হয়। উহাতে শিবপুরের পক্ষে দৌড়ের 888sport free bet ১৪৫ ও 888sport appর পক্ষে ১৯২ দাঁড়াইয়াছিল। সুতরাং 888sport app কলেজের দৌড়ের 888sport free bet ৪৭টি বেশী হইয়াছে। এই জয় বস্ত্ততঃই প্রশংসনীয় বটে।’

উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, উনিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে 888sport appয় ক্রিকেট চর্চা শুরু হলেও আশির দশকে তা বিকশিত হয়। নববই দশকে মোটামুটি তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। 888sport appয় ক্রিকেটের মাঠটি ছিল পল্টনে। খেলোয়াড়দের মধ্যে শ্বেতাঙ্গরা 888sport free betগরিষ্ঠ হলেও আশির মাঝামাঝি অশ্বেতাঙ্গের মধ্যে থেকেও যোগ্য খেলোয়াড় উঠে আসতে থাকেন। 888sport app কলেজ ক্রিকেট ক্লাব তার প্রমাণ। আশি ও নববইয়ের দশকে দুজন বাঙালি খেলোয়াড় বেশ নাম করেছিলেন। একজন বসন্ত কুমার গুহ, অপরজন সারদারঞ্জন রায়। বিক্রমপুর বজ্রযোগিনীর ‘জমিদার তনয়’ ছিলেন বসন্ত। এক সংবাদে জানা যায়, কৃষ্ণনগর কলেজকে পরাজিত করার পর লে. গভর্নর রিভার্স টমসন বসন্ত কুমারকে একটি ব্যাট 888sport app download bd দিয়েছিলেন – ‘তাহার এক পৃষ্ঠে সংলগ্ন রৌপ্যপত্রে এক কয়টি কথা লিখিত আছে ‘আমি 888sport app ক্রিকেট ক্লাবের ক্যাপটেন বাবু বসন্ত কুমার গুহের ক্রিকেট ক্রীড়ায় সন্তুষ্ট হইয়া এই ব্যাটখানি উপহার দিলাম।’

এখানে উলে�খ্য, বসন্ত কুমার ও সারদারঞ্জন – দুজনেই 888sport app কলেজ ক্রিকেট ক্লাবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

888sport appর ক্রিকেট দলকে ধনীরা সাহায্য করতেন। বিশেষ করে ‘বিদেশ’ সফরের সময়। 888sport appর দল কলকাতায় প্রেসিডেন্সির সঙ্গে খেলতে গেলে বাংলাবাজারের জমিদার প্রতাপচন্দ্র দাস ৩৫০ টাকা দান করেছিলেন। শিবপুর কলেজের সঙ্গে খেলতে গেলে – ‘888sport appর ছাত্রদিগের কলকাতায় গমন ও সেইস্থানে অবস্থানের সমস্ত ব্যয় নির্বাহার্থ ৪৫৮ টাকা চাঁদা উঠিয়াছে। শ্রীযুক্ত রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ রায় বাহাদুর ১৫০ ও বাবু অন্নদা প্রসাদ রায় চৌধুরী ৫০ টাকা দিয়েছেন। 888sport app জমিদার, ধনী, উকিল, হাকিম ও শিক্ষক প্রভৃতি ভদ্র-মহাশয়েরাও আশানুরূপ অর্থদান করিয়াছেন।’ অর্থসাহায্য ছাড়াও 888sport appর ক্লাবকে বিশেষ করে স্বদেশি খেলোয়াড়দের সমর্থন জানাতে দর্শক ও সংবাদপত্রগুলি বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেনি। একবার স্বদেশিদের সঙ্গে খেলা হচ্ছিল 888sport appর ইংরেজদের (১৮৭৬)। দর্শকরা সমর্থন জানাচ্ছিল স্বদেশিদের। ইংরেজি একটি পত্রিকা লিখেছিল –  ‘The place was densely crowded by native spectators who caused great annoyance to the players while the game was going on, by shouting and clapping at any mishap of the opposite party in a most rude and unbecoming way, while they rather too vociferously applauded any piece of good luck that attended their own countrymen. But what was even worse, they often managed to obstruct the ball from going as far it would have gone, had it not been stopped on it way by number of noisy natives.’

888sport appর খেলা ও ক্লাব সম্পর্কে কলকাতার কোনো পত্রিকা যদি তির্যক মন্তব্য করতো তাহলে 888sport appর পত্রিকা সঙ্গে সঙ্গেই তার উত্তর দিতো। শুধু ক্রিকেট নয়। সব ক্ষেত্রেই             888sport app-কলকাতা রেষারেষি ছিল। 888sport app কলেজ ও প্রেসিডেন্সি কলেজের খেলায় প্রেসিডেন্সি পরাজিত হলে কলকাতার কোনো একটি পত্রিকা কটাক্ষ করে বলে যে, আদতে হারটি 888sport appরই হয়েছিল। 888sport appর বাংলা পত্রিকা 888sport app প্রকাশ এ পরিপ্রেক্ষিতে  মন্তব্য করে –

‘দুঃখের বিষয়, প্রেসিডেন্সীর পক্ষ সূক্ষ্ম লক্ষ্য করিলে পরই সহযোগীর চক্ষে পক্ষপাতের পরদা পড়িল। 888sport appর দিক তিনি আর দেখিতে পাইলেন না। …তিনি দেখিতে পাইলেন না যে, যে সকল ব্যক্তিকে আউট করা পূবর্বদিন প্রেসিডেন্সীর পক্ষে দায় হইয়া উঠিয়াছিল 888sport appর দুর্ভাগ্যক্রমে তাহারা পরদিন রান আউট হইয়া গেলেন। হরি! হরি! পরিশেষে এ সকল দুর্ঘটনা সত্ত্বেও যখন টেলিগ্রাফ বোর্ডে 888sport appর পক্ষে ১০৩ দৌড় উঠিয়া পড়িল তখন আম্পায়ার সাহেবের চক্ষু ও মন অন্যত্র থাকাতে তিনি 888sport appর একটি ভাল খেলুড়েকে অকারণ আউট বলিয়া বসিলেন; দর্শক মাত্রই সেটি দেখিয়া আম্পায়ারকে ধিক্কার দিতে লাগিল। আমাদের সহযোগী তাহা দেখিলেন না। সহযোগীদিগকে উপসংহারে বলিয়া রাখি যে, প্রেসিডেন্সীর ভাল খেলুড়ে কয়টিই আশৈশব 888sport app ক্রিকেট ক্লাবে শিক্ষিত।…

সম্প্রতি এখানে ‘পূর্ববঙ্গ ক্রিকেট ক্লাব’ নামে একটি ক্লাব হইতেছে, আমরা স্পর্ধা করিয়া বলিতেছি পশ্চিম ও দক্ষিণবঙ্গ সমবেত হইয়া আগামী বৎসর ইহাদের সহিত প্রতিযোগিতা করুণ, তবেই পূর্ববঙ্গ অপেক্ষা ক্রিকেট খেলায় নিজ হীনতা বুঝিতে পারিবেন।’  

মধ্যবিত্তের, বিশেষ করে ছাত্ররা যাতে ক্রিকেট খেলার প্রতি মনোযোগ দেয় – এ-পরামর্শ দিয়ে একটি পত্রিকা লিখেছিল, ‘ছাত্ররা সারাদিন পড়াশোনা করে ‘অকর্মণ্য’ হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং যেন তারা খেলাধুলার প্রতি মনোযোগ দেয় বিশেষ করে ক্রিকেট ক্রীড়া উহার অন্যতর। কতিপয় বৎসর যাবৎ 888sport appর ছাত্রদিগের মধ্যে এই ক্রীড়ার অনুষ্ঠান ও উৎকর্ষ লক্ষিত হইতেছে। ইহারা পুনঃপুনঃ কলিকাতা প্রভৃতি স্থানে উপস্থিত হইয়া, এইরূপ বলবর্দ্ধক ও আমোদজনক অনুষ্ঠান করিতেছেন।’

 

888sport app সুগার ওয়ার্কস

১৮৪০ সালের দিকে, কয়েকজন ইংরেজ মিলে 888sport appয় একটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানি গঠন করেন, নাম দেন – 888sport app সুগার ওয়ার্কস। এই কোম্পানি মিল ব্যারাক এলাকায় একটি চিনির কারখানা খোলে। এটিই 888sport appর প্রথম চিনির কারখানা। তবে, ১৮৫০ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়।

উইলিয়াম ফলি ছিলেন 888sport appর আরেক ইংরেজ ব্যবসায়ী। তাঁর ব্যবসা ছিল চাল, ডাল, নীল ও কুসুম ফুলের। ১৮৫৬ সালে ফলি চিনির কারখানাটি কিনে নেন। সেখানে তিনি নিজের বাড়ি ও গুদাম করেন। আর একটি ময়দার কলও স্থাপন করেছিলেন। এটি ছিল 888sport appর প্রথম ময়দার কল। ১৮৫৭ সালে বিদ্রোহের সময় সরকারপক্ষে ফলি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এক সভায় তাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছিল –

‘One who has done more than most of us to increase the wealth of Dacca.’

 

ধানমন্ডি

ধানমন্ডি ছিল 888sport appর উপান্তে একটি গ্রাম। মুঘল আমলের চিত্রটি এভাবে নির্মাণ করা যেতে পারে। শাহসুজার আমির আবুল কাসেম ঈদগাহ তৈরি করেছেন ধানমন্ডিতে। পাশে একটি শাখা নদী, যা মিশেছে বুড়িগঙ্গার সঙ্গে। নদী তখন সাতমসজিদের পাশ দিয়ে বয়ে যেত। কিছু অমাত্য ও তাদের সঙ্গী-সাথি হয়তো ওইটুকু এলাকায় বসবাস করতেন। ঈদগাহ, সংলগ্ন মসজিদ ও সাতমসজিদ তার প্রমাণ।

মুঘল আমলের পর তা বিরান হয়ে যায়। হয়তো ফসলের মাঠ, ছোট ছোট গ্রাম ছিল এলাকায়। ঈদগাহ ও শাখা নদী তখনো ছিল সেখানে। এবং নিয়মিত একটি মেলা হতো ঈদগাহে।

বিশ শতকের ধানমন্ডি প্রায় বিরান অঞ্চল বা ফসলের মাঠ। বিশ শতকের ত্রিশ দশকে সমরেশ বসুর ছেলেবেলা কেটেছে 888sport appয়। লিখেছেন তিনি, ‘এখনকার কাগজে লেখা হয় ধানমন্ডি, আমরা বলতাম ধানমন্ডাইয়ের মাঠ। রমনার মাঠ। ধূ ধূ মাঠ, কেবল মাঠ যত বড় খেলার ক্লাবে সব সেখানে। 888sport app কলকাতার যত বড় বড় খেলা, সব সেখানেই হত। রমনাতে রেসকোর্সের মাঠ। মাঠের আরো দূর অভ্যন্তরে গোরা সৈন্যবাহিনীর ব্যারাক। পাহাড়ের টিলার মত উঁচু চাঁদমারি।

আমাদের এক নম্বর ওয়ার্ড এক্রামপুর থেকে ধানমন্ডি অনেক দূরে। একলা একলা সেখানে যাবার কোনো অনুমতি ছিল না। নিতান্ত বিশেষ কোনো খেলা থাকলে, কলকাতা থেকে কোনো নামকরা রাজনৈতিক নেতা সভা করতে গেলে, বড়দের সঙ্গে যাবার অনুমতি মিলতো। বড় বড় রাজনৈতিক সভাও ধানমন্ডাই বা রমনার মাঠে হতো। তা ছাড়া ধানমন্ডাইয়ের মাঠের ওপর দিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যাওয়া হতো। ধানমন্ডাইয়ের কোনো এক প্রান্তে সেই ঢাকেশ্বরী দেবীর মন্দির ছিল।’ হয়তো, সমরেশ বসু খানিকটা গুলিয়ে ফেলেছেন। তবে, চিত্রকলা ও 888sport app সূত্র ধরে বলা যায়, আজিমপুরের সীমানা বরাবর পুরো এলাকাটিই হয়তো ধানমন্ডি নামে পরিচিত ছিল। এবং ধান দিয়ে নাম তৈরি দেখে মনে হয়, এলাকাটিতে প্রচুর ধান হতো, সম্পন্ন কৃষকদের ধানের গোলাও ছিল – এসব মিলেই ধানমন্ডি। আরো জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এখানে একটি ছোট বিমান অবতরণ কেন্দ্রও নির্মিত হয়েছিল।

১৯৫০ সালে তৎকালীন সিঅ্যান্ডবি এখানে ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে এবং ডিআইটি স্থাপিত হলো, ডিআইটি এখানে পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গড়ে তুলতে মনস্থ করে। ইংরেজ আমলে উয়ারি ছিল প্রথম পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা। পাকিস্তান আমলে ধানমন্ডি ছিল প্রথম পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা। প্রধানত সরকারি চাকুরেরাই এখানে ৫০০০ টাকায় এক বিঘা করে জমি লাভ করেন ৯৯ বৎসরের লিজে। গত শতকের ষাট-সত্তর দশকে ধানমন্ডি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে ওঠে। এর প্রধান আকর্ষণ ধানমন্ডি লেক। খুবসম্ভব, যে-শাখা নদীটির পাশে ছিল ঈদগাহ, সেই শাখা নদীর একাংশই হচ্ছে ধানমন্ডি লেক।

 

পান

জাপানে চা তৈরি এখনো একটি বিশেষ অনুষ্ঠান। 888sport app শহরে মুঘল আমল থেকে উনিশ শতকের শেষার্ধ পর্যন্ত তেমনি আভিজাত্যের অঙ্গ ছিল পানের খিলি তৈরি খাওয়া ও বিতরণ। সামাজিকতার অঙ্গ ছিল পান।

888sport appর বাবুর বাজারে মুঘল আমলে সাঁচিপানের জন্য একটি আড়ত বা বাজারই ছিল, যার নাম ছিল সাঁচিপান দরীবা। এখন তা সাঁচিবন্দর নামে পরিচিত। মধ্যবিত্ত অভিজাত প্রায় সবাই সাঁচিপানই পছন্দ করতেন। হেকিম হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, পাঠান সুলতানদের আমলে সোনারগাঁর কাফুরী পান খুবই প্রসিদ্ধ ছিল। আকারে ছোট, পাতলা, মচমচে এবং সুগন্ধ। এই পান বিদেশে রফতানি হতো। ১৯১৯ সালের সাইক্লোনে এর সমস্ত বরজ নষ্ট হয়ে যায়।  এ-পান এখন বিলুপ্ত।

888sport appর সাঁচিপান ছাড়া ওই সময় ঘোড়াশালে উৎপাদিত পানই এবং ব্যক্তিগত বাগানে উৎপাদিত গাছপান খাওয়া হতো। গাছপান ছিল লতার মতো সুগন্ধ।

ভালো পানে ব্যবহৃত হতো লাল খয়ের, যা পরিচিত ছিল জনকপুরি নামে। এই খয়ের পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় এবং বারবার পানি বদল করতে হয় যতক্ষণ না খয়ের সাদাটে হতো। এরপর ছানা মাখিয়ে এর দানাদানা ভাব দূর করা হতো। এরপর গোলাপ কেওড়া মিলিয়ে টিকিয়া তৈরি করা হতো।

পাথুরে এবং ঝিনুকের চুনের মধ্যে শেষোক্তটিই ছিল ভালো এবং দামি। এই চুন পানির মধ্যে না ভিজিয়ে দইয়ের মধ্যে ভেজানো হতো। চুন রাখা হতো মাটির পাত্রে।

সুপারির মধ্যে ভালো ছিল মগওয়া সুপারি। কাঁচা সুপারি দুধে জ্বাল দিয়ে শুকিয়ে বিক্রি করা হতো। 888sport appর মগবাজার আর মগটুলি মগদের 888sport sign up bonus বহন করছে। অবশ্য, উনিশ শতকে তাঁরা থাকতেন দক্ষিণে। এবং দক্ষিণের মানুষরাই এই সুপারি আবার চিকন করে কাটতেন। হেকিম হাবিবুর লিখেছেন – ‘কোনো সম্ভ্রান্ত বংশের ভদ্রতা এবং সামাজিকতার পরিচয় আমাদের মুরুববীরা পানের মাধ্যমে নির্ধারণ করতেন। পান কেমন বানানো হয়েছে, কী ভাবে তা মেহমানদের সামনে পরিবেশন করা হয়েছে।’ তিনি আরো লিখেছেন, ‘পান আমাদের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতার জীবন। কেননা যুদ্ধের ময়দানে যাওয়ার সময় সরমা, পানের বিড়া সঙ্গে নেয়া হতো। বিদায়কালীন স্ত্রী স্বামীকে পান দিত, যেন স্বামী যুদ্ধের ময়দান থেকে বিজয়ী হয়ে আসে। বিবাহের একটি আনুষ্ঠানিকতার অংশই হচ্ছে পান চিনি। পানের ৪টা বিড়া নিমন্ত্রণে পাঠান হতো। যদি আমন্ত্রিত মহিলা বেড়াতে আসতেন তাহলে পুরা ৪টা বিড়া গ্রহণ করা হতো অথবা দুটো রেখে বাকি দুটো ফেরৎ পাঠান হতো।’  

পানের জন্য ব্যবহৃত হতো পানদান, খাসদান, বাটা, ডাবর, পিকদান এবং জলদান।

পুলওয়ার

অষ্টাদশ ও উনিশ শতকে 888sport appয় তৈরি একপ্রকার নৌকা খ্যাতি অর্জন করেছিল। এর নাম দেওয়া হয়েছিল 888sport app পুলওয়ার বা 888sport app পালওয়ার। এ-ধরনের নৌকা সাধারণত লম্বায় হতো ষাট ফুট, প্রস্থও খারাপ ছিল না। কীল জাহাজের তলি ব্যবহৃত হয় এ কারণে যাতে জাহাজ বা নৌকায় দুলুনি না হয়। এক মাস্ত্তলে চারকোনা  পাল ব্যবহার করা হতো। দ্রুত চলতো পুলওয়ার। এ-নৌকা সম্পর্কে বলা হতো – ‘Light maneuverable and secure’। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিয়ম করেছিল তাদের দামি পণ্যের, যেমন – রুপো, মসলিন, আফিম, নীল প্রভৃতির চালান যাবে পুলওয়ারে। ১২ থেকে ১৫ টন পর্যন্ত মালামাল বহন করতে পারত পুলওয়ার। 888sport app শহরেই বেশিরভাগ পুলওয়ার তৈরি হতো।

 

ভুট্টো হাজি

আসল নাম হাজি বদরুদ্দীন ভুট্টো। তবে, উনিশ শতকের 888sport appয় তিনি পরিচিত ছিলেন ভুট্টো হাজি নামে। থাকতেন তিনি বংশালে। পেশায় ছিলেন ব্যবসায়ী। প্রধানত চামড়ার ব্যবসা ছিল তাঁর। নওয়াব আবদুল গণির চামড়ার ব্যবসা তিনি কিনে নিয়েছিলেন। 888sport appয় আর্মেনিরা পাটের ব্যবসা শুরু করলে আর্মেনি ব্যবসায়ী লাজারসের সঙ্গে ভুট্টো হাজিও পাটের ব্যবসা শুরু করেন। অচিরেই 888sport appর ধনাঢ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন ভুট্টো হাজি।

ভুট্টো হাজি নাম করেছিলেন জনহিতকর কাজ ও তাঁর ঔপনিবেশিক শাসন বিরোধিতার জন্য। 888sport appর বাকল্যান্ড বাঁধ নির্মাণে চাঁদা দিয়েছিলেন। বংশালের বড় মসজিদটি নির্মাণ করে দিয়েছিলেন ১৮৭৪ সালে। এর পাশেই ছিল তাঁর বাড়ি। বাড়ি সংলগ্ন একটি বড় পুকুর কাটিয়েছিলেন তিনি। বংশাল পুকুর নামে এটি পরিচিত। ভুট্টো হাজি অবশ্য এই পুকুর শুধু নিজ বাড়ির প্রয়োজন মেটানোর জন্য নয়, মুসলি�দের প্রয়োজনের কথাও ভেবেছিলেন। মসজিদে নামাজ পড়ার আগে অজু করার জন্য পুকুরটি ব্যবহার করতেন।

ওহাবিদের সংস্পর্শে এসেছিলেন ভুট্টো। এই কারণেই ইংরেজরা তাঁকে চোখে চোখে রাখতেন। তুতুয়া নামে একটি বইও লিখেছিলেন তিনি। আনুমানিক ১৮৭৮ সালে তিনি মারা যান।

 

মগর চেহারা

বালথাজার সলভিনস অষ্টাদশ শতকে বাংলার নৌকোর একটি ফোলিয়ো প্রকাশ করেছিলেন। তাতে বিশেষভাবে উলে�খ করা আছে একটি নৌকার, যা পরিচিত ছিল মগর চেহারা নামে। এই নৌকা 888sport appতেই নির্মিত হতো। লম্বাটে এই নৌকার এক দিক ছিল উঁচু, তাতে যুক্ত থাকতো জলায় পাওয়া যায় এমন কুমিরের মুখ, যা পরিচিত ছিল মগর নামে। এতে অনুমান করে নিতে পারি, বাংলার বিশেষ করে 888sport app অঞ্চলের জলাতে এ ধরনের কুমির প্রচুর পাওয়া যেত।

নিম্নবর্গের মানুষ বিয়ে বা বিভিন্ন উৎসবে মগর চেহারা ব্যবহার করত। এতে বর বা কনের পালকি, বাদ্যদল নিয়ে বেশ মানুষজন এঁটে যেত।

 

সারস্বত পঞ্জিকা

888sport app থেকে প্রকাশিত পঞ্জিকার 888sport free bet খুব কম। এর একটি কারণ, কলকাতা থেকে প্রকাশিত পঞ্জিকাই বাজার দখল করে রেখেছিল। তবুও দু-একটি পঞ্জিকা যে প্রকাশিত হতো না তা নয়। তবে সেগুলির প্রকাশ অব্যাহত ছিল না। উনিশ শতকে 888sport app থেকে দুটি পঞ্জিকার খোঁজ পাই, একটি হলো নব পঞ্জিকা, অন্যটি ফতেজঙ্গ পুরিয়া পঞ্জিকা।

বিশ শতকে খোঁজ পাই আরেকটির, নাম সারস্বত পঞ্জিকা।

সারস্বত পঞ্জিকা হয়তো নিয়মিত কিছুদিন প্রকাশিত হয়েছে, এই অনুমানের কারণ, এটি প্রকাশ করতেন 888sport appর ধনাঢ্য ব্যক্তি লালমোহন সাহা শঙ্খনিধি। তাঁর সম্পদের ভিত্তি ছিল জ্বরের একটি ওষুধ, যার নাম ছিল ‘সবর্বজ্বর গজসিংহ’। যতদূর মনে পড়ে, শঙ্খনিধি হাউসের বইয়ের দেয়ালেও সবর্বজ্বর গজসিংহ শব্দটি মোজায়েকে লেখা ছিল বিজ্ঞাপন হিসেবে। সে-সময় জ্বরের খুব প্রকোপ ছিল পূর্ববঙ্গে এবং নিয়ত অনেক লোকের মৃত্যু হতো এই জ্বরে। সেজন্য এই ওষুধের চাহিদা ছিল প্রবল।

সারস্বত পঞ্জিকায় পঞ্জিকাসংক্রান্ত নানাবিধ বিষয়ের সঙ্গে ‘সবর্বজ্বর গজসিংহের’ বিজ্ঞাপন থাকতো বিভিন্ন পাতাজুড়ে। এখানে সেই সব বিজ্ঞাপনের কিছু উদ্ধৃতি করছি যাতে 888sport appর সবচেয়ে দামি ওষুধটি সম্পর্কে কিছু ধারণা করা যাবে।

 

বিজ্ঞাপন : ১

সাহস করিয়া বলিতে পারি যে, 888sport app সমস্ত প্রকার জ্বর প��হার পেটেন্ট ঔষুধ সেবনে জ্বরাদি প��হা রোগে যিনি নিষ্ফল হইয়াছেন, তিনি শ্রীলালমোহন সাহা শঙ্খনিধির সবর্বজ্বর গজসিংহ সেবনে সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য হইতে পারিবেন।

শ্রীলালমোহন সাহা শঙ্খনিধির – সবর্বজ্বর গজসিংহ সেবনে মেলেরিয়া জ্বর, কালাজ্বর, বিকারজ্বর ও নানাবিধ জ্বর আরোগ্য হয়। যদি ঐসব জ্বর হইতে মুক্তি পাইতে চাহেন, তবে গৃহে ২ সবর্বজ্বর গজসিংহ রাখুন।

শ্রীলালমোহন সাহা শঙ্খনিধির জ্বরের সবর্বজ্বর গজসিংহ 888sport app মেডিকেল কলেজের প্রফেসর শ্রীযুক্ত বাবু গোপালচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশংসা করিয়া তৎসহ একটী ঔষধ মিশ্রিত করিতে বলেন।

 

বিজ্ঞাপন : ২

কেন ভয় জ্বরে মর, কর ব্যবহার।

সবর্বজ্বর গজসিংহ, অতি উপকার।

শ্রীলালমোহন সাহা শঙ্খনিধি করছে প্রচার।

888sport appয় মিলিবে যথা বাবুর বাজার।

 

 

বিজ্ঞাপন : ৩

শঙ্খনিধি আবিষ্কৃত গজসিংহ বটী।

সবর্বজ্বর প��হা আদি বিনাশিবে খাটী।।

শঙ্খমার্কা সুশোভিত সুরম্য ভবনে।

বাবুর বাজার 888sport app পাবে সবর্বজনে।।

সবর্বলোক এক মুখে তার গুণ গায়।

জ্বর রোগ বিনাশিতে আইল ধরায়।।

 

বিজ্ঞাপন : ৪

স্তোত্র- ১

নমস্তে গজসিংহায়                        সবর্বজ্বর বিনাশিনে

নমস্তে গজসিংহায়                        প��হা যকৃৎ বিঘাতিনে

নমস্তে গজসিংহায়                        মেলেরিয়া প্রণাশিনে

নমস্তে গজসিংহায়                        কালাজ্বর বিমর্দ্দিনে

নমস্তে গজসিংহায়                        বটিকা বল্দায়িনে

নমস্তে গজসিংহায়                        ঔষধামৃত রূপিনে

নমস্তে গজসিংহায়                        পৃথিব্যাং পরিব্যাপকঃ

নমস্তে গজসিংহায়                       লালমোহন প্রচারকঃ

 

বিজ্ঞাপন : ৫

গান- ১

আয়রে আয়! নেচে আয় জ্বররোগী তোরা সবে।

তোদের জন্য আছে সেজন বিধাতা পাঠালে ভবে।

সবর্বজ্বর গজসিংহ যত্ন কৈরে সবে দিবে।

বিধাতা দিয়েছে বাণ, নাশিতে জ্বর দানবে।

লালমোহন সেনাপতি সবর্বজ্বর বিনাশিনে।

(রাগিণী কীর্ত্তনীয়া, সুর-আদ্দা)

 

বিজ্ঞাপন : ৬

গান- ২

আহাকি! দেখ দেখি কে বটে সেজন

সবর্বজ্বর গজসিংহ সৃজিল এমন।

জ্বরে জ্বরে যে ভারত, শ্মশানে ছিল শায়িত

মৃতদেহে দেয় প্রাণ,                                       এ বটিকা সুধা যেন।

নাশিতে জ্বর বিকারে,                                    মেলেরিয়া কালাজ্বরে

কিবা প��হা যকৃৎ রোগে,                  বটিকা অব্যর্থ বাণ।

শঙ্খনিধি লালমোহন,                                    ধন্বন্তরী ধরায় যেন

প্রচারিতন এ ঔষধ,                                       মৃত্যুঞ্জয় বটী হেন।

জ্বর নাশ করে বৈলে,                                     নকল ঔষধ ছলে

কত জানি লোভে পৈড়,                  বঞ্চনায় ভুলায় জন।

তাই বলি সাবধান                                         নকলে দিবে না প্রাণ

আত্মঘাতী হোতে হবে                                    নিবেদয় লালমোহন। (রাগিণী – জংলাট, তাল – একতাল)

 

বিজ্ঞাপন : ৭

গান- ৩

কত আর ভুগিবে বল না করি সন্ধান,

অস্থিসার দেহখানি, যায় যায় যায় প্রাণ!

কালজ্বরে দেহখানি, পুড়িছে কত না জানি

জীর্ণ শীর্ণ হয়ে আছে, কণ্ঠগত হয়ে পরাণ

চেয়ে আছ কোন পথে, দেখ নাকি এ জগতে

এ রোগের বিনাশিতে, আছে ঔষধ অতুলন

লালমোহন শঙ্খনিধি, ঔষধ সাগর মথি

সবর্বজ্বর গজসিংহ, তুলেছে করি যতন

সে সুধা ঔষধ ফেলে, জ্বর শান্তিকর বৈলে

নকল গরল মুখে, কেন দিতে যাও প্রাণ

(রাগিণী – বিভাস, তাল – ঠেকা)

 

হরিচরণ কর্মকার

হরিচরণ কর্মকার 888sport appয় পরিচিত ছিলেন হরি ওস্তাদ নামে। জন্ম আনুমানিক ১৮৪৭ সালে বিক্রমপুরের শেখর নগর গ্রামে। 888sport appয় আসেন যাত্রার ‘ছোকরা রূপে’। মৈষন্ডীতে তখন জমজমাট ছিল নন্দবিদায় যাত্রা। সে-যাত্রায়ই গান করতেন।

888sport appয় থিতু হন মদনমোহন বসাক রোডে। কৃষ্ণদাস কর্মকারের কাছে প্রায় আনুষ্ঠানিকভাবে গান শেখেন। সে-সময় ভারতের বিভিন্ন গায়ক গান শোনাতে যেতেন প্রায়স আগরতলার রাজদরবারে, তারপর জয়দেবপুর হয়ে 888sport appয় আসতেন। দীর্ঘদিন থাকতেন            এ-শহরে। এঁদের কয়েকজন ছিলেন যদুভট্ট, কালে খাঁ, আমিন খাঁ প্রমুখ। হরিচরণ এঁদের সবার কাছেই কিছু না কিছু শেখেন। স্বরলিপি তৈরিতে তাঁর জুড়ি ছিল না। পূর্ণ চন্দ্র লিখেছেন, ‘এ যাবৎ বঙ্গদেশে যে সকল স্বরলিপি প্রণালী প্রকাশিত হইয়াছে, আমাদের 888sport appয় উদ্ভাবিত প্রণালী তৎসর্বাপেক্ষা সহজবোধ্য। ইহাতে তালমাত্রা শিক্ষার ব্যবস্থাও অতি সুন্দর ও সরল।’

হরি ওস্তাদ বিখ্যাত ছিলেন ধ্রুপদ ও খেয়ালে। তাঁর রচিত একটি উচ্চাঙ্গসংগীতের নমুনা পাওয়া গেছে –

 

ধ্রুপদ

সুরট-চৌতাল

 

অস্থায়ী : ঝুলত মোহন মুরত শ্যামসঙ্গ প্যারী

আজ কুঞ্জমে মনিময় রতন জড়িদ হেন্দোরে।

 

অন্তরা : কৌন সখী বাজাওয়ে বীণ,

কৌন সখী গাওয়ত গুন,

কৌন সখী বাজায়ে মৃদঙ্গ

মধুর বোলে।

 

সঞ্চারী : গরজে বাদর বিমান

বারি করত বরষণ

এতে সুগন্ধ শাওনি পওয়ন

মন্দ মন্দ চলত;

 

আভোগ : হরিভনতা নন্দলাল,

সরোবর ভর হুয়ে

তীরপর হংস সারস লোলে বোলে।’

আনুমানিক ১৯০৯ সালে তিনি পরলোকগমন করেন।

 

�ডা. এম এন নন্দী (১৯১০-২০০০)

গত শতকে পঞ্চাশ দশকের 888sport appর সাংস্কৃতিক কর্মীরা এখনো 888sport apk download apk latest versionভরে উয়ারির ডা. মন্মথনাথ নন্দীর কথা 888sport app download for android করেন। 888sport appবাসীর কাছে তিনি শুধু পরিচিত ছিলেন ডা. নন্দী হিসেবে। ধন্বন্তরী হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল। গোপন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আশ্রয় ছিল তাঁর বাসা। তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যার (ইন্দিরা ও মন্দিরা) বিশেষ আগ্রহ ছিল সংস্কৃতিচর্চায়। সেই সময় মেয়েরা বাইরে বেরোতেন কম। যে-কারণে তাঁর বাসা হয়ে উঠেছিল পঞ্চাশ দশকে সংস্কৃতিকর্মীদের কেন্দ্রও।

তাঁর পিতার নাম মথুরানাথ নন্দী। মাতা প্রিয়তমা। মথুরানাথ চাকুরি করতেন পুলিশে। 888sport live football-সংস্কৃতিতে তাঁর আগ্রহ ছিল। ১৯১০ সালে ফেনীতে তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র মন্মথনাথ নন্দীর জন্ম। মন্মথনাথ রাজবাড়ী স্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেন ১৯২৬ সাল, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আইএ। এরপর ভর্তি হন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে। সেখান থেকে রসায়নে ডিগ্রি লাভ করেন। খেলাধুলায় চৌকস ছিলেন মন্মথনাথ। হকি, বক্সিং ও ফুটবলে তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব��।

রসায়নে বিএ ডিগ্রি লাভের পর ভর্তি হন কলকাতার আর. জি. কর মেডিকেল স্কুলে। ১৯৩৫ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে ডাক্তারি পাশ করেন। বিহারের ভূমিকম্পের পর সেনাবাহিনীর পক্ষে স্বেচ্ছাসেবক ডাক্তার হিসেবে কাজ করেন। তারপর সার্জন হিসেবে যোগ দেন  আর. জি. করে। পরে রেজিস্ট্রার হন সেই হাসপাতালের। ১৯৩৪ সালে বিয়ে করেন শান্তিবালা মজুমদারকে।

১৯৩৯ সালে বিক্রমপুরের ভাগ্যকূলের জমিদার কুন্ডু পরিবার শ্রীনগরে ছোট একটি হাসপাতাল খোলার উদ্যোগ নেন। ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের কাছে তাঁরা অনুরোধ জানান, গ্রামের সেই হাসপাতালের জন্য একজন ডাক্তারের খোঁজ দিতে। ডা. রায় মন্মথনাথ নন্দীর নাম প্রস্তাব করেন। কুন্ডুরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর তখন লন্ডন যাওয়ার কথা উচ্চশিক্ষার জন্য। কিন্তু প্রস্তাব পেয়ে ঠিক করলেন, গ্রামের সেই হাসপাতালেই দরিদ্রজনের সেবা করবেন। ১৯৩৯ সালে যোগ দেন শ্রীনগরের হাসপাতালে। ১৯৪২ সালের মধ্যে পিতা হন দুই পুত্র ও দুই কন্যার। হাসপাতালের নাম ছিল রাজা শ্রীনাথ হাসপাতাল।

এই সময় কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। তাদের মতাদর্শ তিনি পছন্দ করতেন। দেশত্যাগের পূর্ব পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল কমিউনিস্ট পার্টির।

১৯৪৩ সালে বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে বিক্রমপুরেও তার অাঁচ লাগে। ওই সময় মুন্সীগঞ্জের এসডিও ছিলেন অশোক মিত্র। তাঁর সঙ্গে ডা. নন্দীর যোগাযোগ ছিল, তাঁর মেয়ের চিকিৎসা করতেন তিনি। দুর্ভিক্ষের সময় ডা. নন্দীর সঙ্গে মিলে অশোক মিত্র দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের যতটা সম্ভব সেবা করেছেন। অশোক মিত্র তাঁর 888sport sign up bonusকথায় লিখেছেন, – ‘এ  দুজন আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেন এবং যাঁদের কাছে আমি সর্ব বিষয়ে বিশেষ পরামর্শ চাইতুম বিশেষ বিশেষ লোকের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করতে হবে তার ইঙ্গিত পেতুম। বিশেষত ১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষে কী  করলে সব থেকে উপকার হবে সে সম্বন্ধে সৎ পরামর্শ পেতুম, এবং যাঁরা নিজেরা অক্লান্ত কর্মী ছিলেন,  তাঁদের একজন ডা. মন্মথনাথ নন্দী। ভাগ্যকূল রাজাদের প্রতিষ্ঠিত শ্রীনগর হাসপাতালের কর্তা। একে তো ভালো ডাক্তার ও সার্জন হিসেবে নন্দী ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলের 888sport apk download apk latest versionর্হ ছিলেন। অন্যদিকে কমিউনিস্ট পার্টির সভ্যদের সঙ্গে ছিলেন ঘনিষ্ঠ। আবার কংগ্রেস  মহলেও ছিল তাঁর সম্মান-প্রতিপত্তি। চিকিৎসার হাতযশের দরুন মুসলমানদের মধ্যে ছিল তাঁর বিশেষ সম্মান এবং সেই হিসেবে মুসলিম লীগে। তারই সাহায্যে আমি দ্রুত ফুড ও রিলিফ কমিটিগুলি দাঁড় করাতে সক্ষম হই।’

মন্বন্তরে তাঁর সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে গভর্নর রিচার্ড কেসি তাঁকে রৌপ্যপদক প্রদান করেন। দুর্ভিক্ষ কমিশন রিপোর্টেও (১৯৪৫) তাঁর নাম উলে�খ করা হয়েছে।

১৯৪৭ সালে ডা. নন্দী মাতৃভূমি ত্যাগ করেননি, বরং পাকিস্তানের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে সরকার তাঁকে 888sport app মেডিক্যালে বদলি করে। 888sport appয় এসে  যুগীনগরে তিনি বাসা নেন। আগে থেকেই ডাক্তার হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছিল, ফলে 888sport appয় এসেও তাঁর অসুবিধে হয়নি। দেশভাগের রায়টের পর আবারো ১৯৫০ সালে 888sport appয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়, যুগীনগর ও আশেপাশের এলাকার হিন্দু পরিবারগুলি ডা. নন্দীর বাসায় এসে ভিড় জমায়। তাঁর অজান্তেই তাঁর নামযশের কারণে তিনি অলিখিতভাবে অসহায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিভাবকে পরিণত হন। দাঙ্গার সময় মোহামেডানের বিখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় আববাস মির্জা ও রাজনীতিবিদ শামসুদ্দিন ডা. নন্দীর বাসা পাহারা দিয়ে রাখেন।

ওই সময় (১৯৫০) সরকার তাঁকে ফরিদপুরে বদলি করলে তিনি চাকুরি ছেড়ে দিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু করেন এবং তা জমে উঠতে সময় নেয়নি। ১৯৫৩ সালে তাঁর  জ্ঞাতিভাই ভবেশ নন্দী এমএনএর ৩৭নং র‌্যাংকিং স্ট্রিটের বাড়িটি তিনি কিনে সেখানে উঠে যান।

র‌্যাংকিন স্ট্রিটে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে কমপক্ষে রাত দশটা অবধি তিনি রোগী দেখতেন বা রোগীর বাসায় যেতেন। তাঁর হাতযশের খবর এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, ভোর থেকে তাঁর বাসার সামনে রোগীদের লাইন পড়ে যেত। রোগীদের ফি ছিল পাঁচ টাকা। একই রোগের জন্য রোগীর কাছ থেকে বারবার ফি নিতেন না। নিজের বাসায় অপারেশন থিয়েটার করে নিয়েছিলেন। তাঁর অস্ত্রোপচার দেখার জন্য মেডিক্যালের ছাত্ররা আসতেন।

আগেই উলে�খ করেছি, পঞ্চাশের দশক থেকেই উয়ারির ডা. নন্দীর বাসাটি 888sport appর সংস্কৃতি জগতের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। নাচ, গান, নাটকের মহড়া চলত সেখানে নিয়মিত। আসতেন সেখানে মুনীর চৌধুরী, অজিত কুমার গুহ, সানাউল হক, জয়নুল আবেদিনসহ অনেকে। সে-সময়ের তরুণ লেখক ফয়েজ আহমদ ছিলেন নন্দী-পরিবারের ঘনিষ্ঠজন। নিষিদ্ধ কমিউনিস্ট পার্টির 888sport app নেতাও আসতেন সে-বাসায় নিয়মিত। আশ্রয় বা আলোচনা/ পরামর্শের জন্য। যেমন খোকা রায়, নেপাল নাগ, মোহাম্মদ তোহা বা অলি আহাদ। শেরেবাংলা ফজলুল হকের ছিলেন  তিনি ব্যক্তিগত চিকিৎসক। মওলানা ভাসানীর কাগমারী সম্মেলনে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। শেখ মুজিব তাঁকে ডাকতেন দাদা বলে, এমনকি পাকিস্তান সরকার তাঁকে উপাধি দিয়েছিল ‘তমঘায়ে কায়েদে আযম’।

888sport appয় তখনো মাঝে মাঝে দাঙ্গা লাগত। এবং আশেপাশের অনেকে তখনো আশ্রয় নিতেন তাঁর বাসায়। ফয়েজ আহমদ ১৯৬৪ সালে দাঙ্গার একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘888sport appর এক অসাধারণ পরিচিত ব্যক্তিত্ব ডা. মন্মথনাথ নন্দী। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে এ দেশে তাঁর নাম জানতো না, এমন লোকের 888sport free bet খুব কম ছিল। তাঁকে আমরা এ দেশ থেকে বিতাড়ন করেছি।’

১৯৬৪ সালে রায়ট শুরু হলে ফয়েজ আহমদ তাঁর বাসায় গিয়ে বললেন, তাঁকে তাঁর সঙ্গে যেতে হবে। বিস্ময়ের সঙ্গে তিনি ফয়েজ আহমদের দিকে তাকালেন : ‘রায়ট! আমাকে হত্যা? আমার এ-বাড়িতেই আমি প্রাণ দেব। আমি তো হিন্দু-মুসলমানের কিছু বুঝি না।’

ডা. নন্দীর পরিবার তখন কলকাতায়, তিনি আর শ্যালক শুধু বাসায়। ফয়েজ আহমদও থেকে গেলেন। এদিকে ডিআইজি তাঁকে উদ্ধারে পুলিশ বাহিনী পাঠিয়েছেন। তখন ডা. নন্দী ফয়েজ আহমদের সঙ্গে যেতে বাধ্য হলেন। ওদিকে গুজব রটে গেল, ডা. নন্দী খুন হয়েছেন। পরদিন হিন্দু-মুসলমান সবাই তাঁর খোঁজ নিতে লাগলো। তাঁর বাসায় ভিড় জমে গেল। ফয়েজ আহমদ তাঁকে ফের বাসায় নিয়ে এলেন।

১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ যখন শুরু হলো তখন সস্ত্রীক ডা. নন্দী গিয়েছিলেন লুধিয়ানায়। তাঁর দুই ছেলে সপরিবারের এক মোটর দুর্ঘটনায় আহত হন। লুধিয়ানার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাদের। পাকিস্তানি সরকার তাঁকে ভারতীয় গুপ্তচর হিসেবে সন্দেহ শুরু করে। যিনি মাতৃভূমি ত্যাগ করেননি, যাঁর কাছে হিন্দু-মুসলমান ছিল শুধু মানুষ, যিনি চিরদিন মানুষের সেবা করেছেন, যাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারই রাষ্ট্রীয় উপাধি দিয়েছে, তাঁকেই শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এই ছিল পাকিস্তানি মানসিকতা। ডা. নন্দীর বাড়িঘর সম্পত্তি সব শত্রুসম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এক নিমেষে তিনি  কপর্দকশূন্য হয়ে পড়েন।

ডা. নন্দী আর দেশে ফেরেননি। কলকাতা থেকে তিনি জলপাইগুড়ি চলে যান। আবার নতুন করে সব শুরু করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে 888sport appর অনেকে তাঁর ও তাঁর কন্যা-পুত্রদের আশ্রয়ে থাকেন। তাঁরা মুক্তিযুদ্ধে এপারের বাঙালিদের সর্বান্তঃকরণে সাহায্য করেন।

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু কলকাতা সফরে যান। তখন বঙ্গবন্ধুর তরফ থেকে তাঁকে একটি বার্তা তাঁকে পৌঁছে দেওয়া হয় –  দাদা-বউদি যেন 888sport appয় ফিরে তাদের র‌্যাংকিন স্ট্রিটের বাসায় ওঠেন এবং প্র্যাকটিস শুরু করেন। কিন্তু ডা. নন্দী তখন ষাটের কোঠায়। নতুনভাবে সব শুরু করার  মন আর তাঁর ছিল না। তিনি ফেরেননি। জলপাইগুড়িতেই দেহত্যাগ করেন ২০০০ সালে।