অরুণ মিত্র : সময়ের সুখ-দুঃখের 888sport app download apk

অরুণ মিত্রের 888sport app download apk যখন পড়ি তখন তাঁর 888sport app download apkভাবনায় যে সৃজনক্রিয়ার রহস্য উঠে আসে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ‘কেন লিখি’ – এই প্রশ্নের উত্তরে লেখালেখির ব্যাপারটাকে তিনি দু-ভাগে বিন্যস্ত করতে চেয়েছেন : ১. সৃজনশীল 888sport live football, ২. সৃজনশীল নয়, এমন 888sport live football। প্রথম অর্থে সৃজনশীল 888sport live football তাঁর কাছে লেখকের নিজস্ব সৃষ্টি আর দ্বিতীয় অর্থে বক্তব্য বিষয়কে যথোচিত স্পষ্ট ভাষায় বিবৃত করা যা মস্তিষ্কপ্রসূত। তাঁর বিশ্বাস, বিদ্যা বা জ্ঞান নয়, সৃজনমুখী প্রবণতাই লেখকের ভেতর থেকে প্রাণিত করে এবং বাতলে দেয় তার লেখার সঠিক বিষয়। লেখকমনের ওপর পড়া অভিঘাতই নির্মাণ করে দেয় প্রকাশের বিশেষ ফর্ম। শূন্যতার বিরুদ্ধে এই ফর্মের সন্ধান করে গেছেন তিনি সারাজীবন।
অরুণ মিত্রের জন্ম ১৯০৯ সালের ২ নভেম্বর, যশোর শহরে। বাবা হিরালাল মিত্র, মা যামিনীবালা। ছয় পুত্রকন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। নিজের বাড়ি ও মামাবাড়ি – এই যশোরেই কেটেছে তাঁর শৈশবের দিনগুলি। ‘তিনি আমার জীবন : আমার সময়’ নিবন্ধে লিখেছেন :
আমি জন্মেছিলাম ১৯০৯ সালের শেষদিকে যশোর শহরে। অনেকেই জানে সেই কালের মফস্বল শহর মানে নগরে ও গ্রামে মেশামেশি। এখনকার মতো আধুনিকতার প্রলেপ তার ওপর পড়েনি। শহরে যেমন পাকা রাস্তা ছিল (অবশ্যি পিচঢালা নয়, খোয়াই ইটের), তেমনি ছিল মাটির কাঁচা পথ, দালানকোঠার পাশাপাশি ছিল কুঁড়েঘর, যেমন ছিল বাঁধানো ঘাটের পুকুর আর খানাডোবা, আর চারিদিকেই ঝোপঝাড় গাছগাছালি, কচুবন, বাঁশবন, নারকেল সুপুরি বন খেজুরের এক ঠেঙে জটলা। এবং শহর থেকে একটু পা বাড়ালেই নির্ভেজাল গ্রাম। ফলে আমরা গ্রামের ছেলে ছিলাম না শহরের, তা বলা কঠিন। বসবাসের অনুভূতিটাও মেলানো মেশানো ছিল।
ছোটবেলাতেই তাঁকে চলে আসতে হয়েছিল কলকাতায়। লেখাপড়া জীবনযাপন সবই এখানে। তবে কলকাতায় এলেও যশোরের প্রতি তাঁর টান ছিল তীব্র। তাই ছুটি পেলেই ছুটে যেতেন যশোরে। তাঁর মামাবাড়ির পরিবেশ ছিল সাংস্কৃতিক। সেখানে যেমন আসতো প্রবাসী, ভারতবর্ষের মতো পত্রিকা তেমনি ছিল গ্রামোফোন, গানের রেকর্ড, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকাসহ অসংখ্য বই। তাছাড়া এ-বাড়ি ছিল তরুণদের মিলনকেন্দ্র। এদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন সন্ত্রাসবাদী, গান্ধিবাদী ও সাম্যবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কেউ বা আবার 888sport live footballেও উদ্যমী ছিলেন। বিশেষ করে ফণীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন তাঁদের অন্যতম প্রেরণাদাতা। 888sport live football সম্বন্ধে তিনিই বিশেষ করে আগ্রহ জাগিয়ে তুলতেন।
যশোরের পরিবেশ অরুণ মিত্রকে নিয়ন্ত্রণ করলেও তাঁর স্থায়ী আস্তানা হয়ে উঠেছিল কলকাতা। অনেকের মতোই তাঁর প্রথম প্রেম রবীন্দ্রনাথ। নজরুল, মোহিতলাল, সত্যেন দত্তের 888sport app download apk পড়লেও তিনি অভিভূত হতেন রবীন্দ্রনাথের 888sport app download apkয়। সেই সময় থেকেই তাঁর 888sport app download apk লেখা শুরু। তিনি রাগসংগীতেরও ভালো শ্রোতা ছিলেন। ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় ও শচীনদেব বর্মণের গান শুনতেন। কল্লোল সম্বন্ধে তার কৌতূহল থাকলেও তিনি কিন্তু তেমন বিশেষ আকর্ষণ বোধ করেননি।
১৯২৬ সালে তিনি বঙ্গবাসী স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯২৮ সালে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে আইএসসি এবং ১৯৩০ সালে রিপন কলেজ থেকে ডিস্টিংশনসহ বিএ পাশ করেন। তিনি ছাত্রাবস্থায় রিপন কলেজের ম্যাগাজিনে লেখেন আলফাঁস দোদের ওপর 888sport live। এরপর ইংরেজিতে এমএ পড়তে ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু পারিবারিক কারণে তাঁকে পড়া ছাড়তে হয় এবং ১৯৩১ সালে তাঁকে চাকরি নিতে হয় আনন্দবাজার পত্রিকায়। তখন থেকেই শুরু হয় তাঁর নতুন উদ্দীপনার ক্ষেত্র। সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন এই পত্রিকার সম্পাদক। এখানেই তাঁর আলাপ হয় শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর ও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। আবার সত্যেন্দ্রনাথের সদানন্দ রোডের বাড়ির আড্ডায় পেয়েছিলেন স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য, বিজন ভট্টাচার্য, বিনয় ঘোষ, সুবোধ ঘোষ প্রমুখ তরুণ লেখকের সান্নিধ্য। সেসময়েই তিনি যুক্ত হন ‘বঙ্গীয় প্রগতি লেখক সংঘ ও সোভিয়েত সুহৃদ সমিতি’তে। ১৯৩৭ সালে প্রগতি লেখক সংঘের উদ্যোগে প্রকাশিত প্রগতি সংকলনগ্রন্থে তাঁর 888sport app download apk স্থান পায়। ১৯৩৮ সালে তাঁর বিবাহ হয় সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদারের ভাগ্নি শান্তি ভাদুড়ির সঙ্গে। সদানন্দ রোডের বাড়িতেই তাঁরা থাকতেন। এখানেই তাঁদের প্রথম সন্তান রণধীরের (গোগোল) জন্ম হয়।
১৯৩৮ সালে ‘নিখিল ভারত প্রগতি লেখক সংঘ’ পরিচালিত প্রথম সাংস্কৃতিক পত্রিকা অগ্রণী। প্রফুল্ল রায়-সম্পাদিত এই মাসিক পত্রিকাটিতে জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, সরোজ দত্ত, দিনেশ দাশ, চিন্মোহন সেহানবীশ, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনিও লিখেছিলেন। দীর্ঘ ১১ বছর চাকরি করার পর অরুণ মিত্র আনন্দবাজার ছেড়ে ১৯৪২ সালে যোগ দেন অরণি পত্রিকায়। সে-সময়ে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরিস্থিতি ছিল রীতিমতো ভয়াবহ। সমগ্র ইউরোপের প্রাঙ্গণজুড়ে তখন শুধুই ‘ফ্যাসিজমের নির্বিচার নিদারুণতা’। বিশ্বব্যাপী ফ্যাসিবাদের বর্বরতার প্লাবনে সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিপন্ন। ১৯৪২ সালের ৮ মার্চ 888sport appয় তরুণ কমিউনিস্ট কর্মী সোমেন চন্দ নিহত হলে ২৮ মার্চ কলকাতার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের লাইব্রেরি হলে বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশনের উদ্যোগে সাংবাদিক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফ্যাসিবিরোধী লেখক-888sport live chatীদের সম্মেলনে গঠিত হয় ‘ফ্যাসিস্টবিরোধী লেখক ও 888sport live chatী সংঘ’। এই সংঘের সভাপতি হন অতুলচন্দ্র গুপ্ত এবং যুগ্ম সম্পাদক কবি বিষ্ণু দে ও সুভাষ মুখোপাধ্যায়। মানবতার সেই চরম সংকটের দিনে 888sport live chatী-888sport live footballিক ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে অরুণ মিত্রও শরিক হয়েছিলেন ফ্যাসিবিরোধী আন্দোলনে। স্বভাবতই তিনিও রাজনৈতিক প্রত্যয়ে লিখেছিলেন ‘লাল ইস্তাহার’, ‘কসাকের ডাক : ১৯৪২’-এর মতো 888sport app download apk।
প্রাচীরপত্রে অক্ষত অক্ষর
তাজা কথা কয়, শোকেও;
কখন আকাশে ভ্রুকুটি হয় প্রখর
এখন প্রহর গোনো।
উপোসী হাতের হাতুড়িরা উদ্যত,
কড়া-পড়া কাঁধে ভবিষ্যতের ভার;
দেবতার ক্রোধ কুৎসিত রীতিমতো;
মানুষেরা, হুঁশিয়ার!
লাল অক্ষরে লটকানো আছে দ্যাখো
নতুন ইস্তাহার।

দুই
অরুণ মিত্র ‘কথামুখ’, স্বনির্বাচিত 888sport app download apkয় 888sport app download apkভাবনা সম্বন্ধে লিখেছেন,
মানুষ ও অন্য প্রাণীর সংস্পর্শ যখন ভেতর থেকে আমাকে নাড়ায় কিম্বা যখন কোনো নিসর্গদৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করে, তখন আমার 888sport app download apk লিখতে ইচ্ছে হয়। লিখিও প্রায়ই। তবে আমার পৃথিবী মনুষ্যকেন্দ্রিক। আমার দৃষ্টিকে সবচেয়ে প্রবলভাবে আকর্ষণ করে মানুষ, তার অস্তিত্ব তার জীবন তার আচরণ। এবং মানুষ হিসেবে অবস্থান থেকেই আমার যা কিছু দেখা, যা কিছু বলা।
‘নিছক শব্দনির্ভর লিখন চাতুর্য’ অপেক্ষা তাঁর কাছে অধিকতর সত্য হন ব্যক্তিসত্তার অনুভব ও উপলব্ধি যার নেপথ্যে রয়েছে ‘অভিজ্ঞতা ও মননে’র ভূমিকা।
তাই ‘ফ্যাসিজমের অভ্যুদয় পর্বে’ লিখেছিলেন,
প্রাচীরপত্রে পড়োনি ইস্তাহার?
লাল অক্ষরে আগুনের হল্কায়
ঝলসাবে কাল জানো!
(‘লাল ইস্তাহার’)

বা,

এবার কসাকের কড়া পাঞ্জায় চূড়ান্ত মীমাংসা
(‘কসাকের ডাক : ১৯৪২’)
সেইসঙ্গে উঠে আসছে ‘ধারালো সময়’-এর কথা : ‘পিছনে ছড়ানো ভঙ্গুর ভিড় জমাট বাঁধে/ ‘মিছিল মিলেছে জনস্রোতে’ ভূমিকা কিংবা ‘মরাগাঙে প্লাবনের কথা’ এখানে কবি বিপন্ন সভ্যতা ও সংস্কৃতির দুনিয়াজোড়া সংকটে সময়ের দায়কে এড়িয়ে যাননি। এবং তিনি দেশ, পৃথিবী, জনসাধারণের ভাবনার সঙ্গে একান্তভাবে সংসক্ত হয়েছেন প্রধানত সামাজিক দায়িত্ববোধেই।
‘প্রান্তরেখা’র (১৯৪৩) স্বরভঙ্গি কিছুটা পরিবর্তিত ‘উৎসের দিকে’ (১৯৫৫, দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থে)। জনসংগ্রামের 888sport app download apk লিখলেও বক্তব্যের ধরন এখানে বেশ অনুচ্চ। যেমন ‘বর্ষমাণ’ 888sport app download apkটি। যেখানে তিনি লেখেন :
থমথমে বাড়ির সারিকে
অসহায় ক’রে
বৃষ্টি এল।
এক বন থেকে অন্য বনে বিচ্ছুরিত সঘন গমক
এসে জোটে চৌকাঠের ধারে
মাথা কেটে বিষাক্ত গরজে
সর্বাঙ্গে আপন ক’রে তাকে ঘুম
পাড়াবার
আমার সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হল।
বা ‘সঞ্জীবনী’ ‘888sport app download apkটি। রূপকের মোড়কে গড়া – এ 888sport app download apkর শরীরে স্বস্তির আবেশ স্পন্দিত।

করাতের দাঁত আমাদের রক্তাক্ত করেছে;
চামড়া ছিঁড়েছে, ছিঁড়–ক
মাংস চিরেছে, চিরুক
হাড় পর্যন্ত আঁচড় লেগেছে, লাগুক …
আমরা বাঁচলাম।
এখান থেকে মনে হয় অরুণ মিত্র ক্রমশ সরেছেন অন্য আর এক জগতে। তত্ত্বের বদলে তিনি ধরতে চাইছেন জীবনকে। ফলে আবেগ অনেকাংশেই সংহত :
এ কোন নির্জন ভালোবাসা
আমাকে উত্তাল ক’রে রাখে
শিখরে শিখরে রক্তে রক্তোচ্চার গানে? (‘জাগর’)
প্রাধান্য পেয়েছে ‘তুমি’ যে 888sport promo codeর অমৃত চোখে তিনি খুঁজে ফিরেছেন দিশা। তাঁর অভ্যর্থনা তারই জন্য : ‘ধ্বংসের প্রান্তরে হিরণ¥য় আমার ভাবনা/ তোমাকে উৎসর্গ করলাম/ তোমাকে 888sport app download for android করলাম’ (‘উৎসর্গ’) বা ‘আমি তোমার প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করতে পেরেছি/ তুমি প্রসন্ন হও’ (‘আর এক আরম্ভের জন্য’)।

তিন
নিজের লিখনকর্ম বিশ্লেষণে অরুণ মিত্র তাঁর দুটি বিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন :
‘এক বিশ্বাস এই যে, 888sport app download apkর পক্ষে কোনো নির্দিষ্ট বহিরঙ্গ রূপ অপরিহার্য নয়। আমার অন্য বিশ্বাস এই যে, 888sport app download apkর একটা কিছু বিষয় থাকে, যা প্রত্যক্ষে বা পরোক্ষে প্রত্যাশা করাই কবিকর্ম। অর্থাৎ 888sport app download apk শুধু শব্দ চাতুর্য বা ধ্বনি বিলাস নয়।’
প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রান্তরেখার 888sport app download apkগুলি বেশির ভাগই পদ্যছন্দে। কোথাও কোথাও অন্ত্যমিলও ছিল। যেমন :
দু’-বাহু ঘেরাও করে বারবার অভ্যস্ত আহ্লাদে সোনার হরিণ আর 888sport app download for androidের বিপর্যস্ত সোনা, দু’হাতে পাথর কাটা কঠিন, কাঠামো বুঝি বাধে। হৃদয়ের আন্দোলন ঘড়ির কাঁটায় যায় শোনা। (‘দোটানা’)
তারপর প্রথাগত ছন্দমিলের কাঠামো পরিহার করে গদ্য ভেঙে ছোটবড় ছত্রে বিন্যস্ত করে 888sport app download apk লেখা শুরু উৎসের দিকে কাব্যগ্রন্থ থেকে। ‘এ জ্বালা কখন জুড়াবে’ 888sport app download apkটি প্রসঙ্গত উল্লেখ্য :
আমার এই বোবা মাটির ছাতি ফেটে চৌচির। উঠোনের ভালোবাসার ভোর একমুঠো ছাই হয়ে ছড়িয়ে যায় শুকনো লাউডগার মাচায়, খড়ের চালে কাঠবেড়ালীর মতো পালায় অনেক দিনের আশা, শুধু ভাসাভাসা, কথার শূন্যে লেগে থাকে এক জল মোছা দৃষ্টি দুপুরের সূর্য হয়ে। কোথায় সে আকাক্সক্ষাকে পোষবার সংসার, ভবিষ্যৎকে আদর করবার সংসার। গড়বার, আদর করবার, ফলে ফলে, কাকলিতে মিলিয়ে দেবার। মিলিয়ে গেল তা এই ক্ষোভে।
এই 888sport app download apkতে ‘অমরতার কথা’ বিন্যস্ত। যদিও এখানে এক প্রসঙ্গ থেকে অন্য প্রসঙ্গে যাওয়ার আর্তিও আছে। কিন্তু ‘সুকান্ত’ 888sport app download apkটি একদম আলাদা। এই গদ্য888sport app download apkটি যেন, ক্রমাগত ক্ষয়িষ্ণু এক ‘তরুণের আত্মগত কথা’র নির্যাস :
মৃত্যুর আগের দিন পড়ন্ত রোদের দিকে তাকিয়ে কী ভেবেছিল সুকান্ত? যে ছোট্ট বুকটা আর ছোট্ট মাথাটা অনবরত 888sport app download apkয় উথলে উঠত তাদের নিঃশব্দ শেষ ডাক শুনতে পাওয়া গেল না। আমি নিশ্চিত জানি না একদিন হঠাৎ চিৎকার করে উঠবে। যাদবপুর হাসপাতালের মাঠ বাড়ি পুকুর তার আওয়াজে গমগম করতে থাকবে। ভালোবাসার, আশার, নৈরাশ্যের মৃত্যুর, আরোগ্যের, সংগ্রামের সেই উদ্দাম হারানো ভাষা যাদবপুরের রোগীদের বিছানা ছাড়িয়ে আমাদের সকলের ঘরে এসে তোলপাড় বাধিয়ে দেবে। কিন্তু ততদিন আমার মাঝে মাঝে মনে হবে, মৃত্যুর আগের দিন পড়ন্ত রোদের দিকে তাকিয়ে কী ভেবেছিল আমাদের সুকান্ত? রোদের একটা ঝলক যদি সুকান্তর অন্ধকার অন্ত্র আর ফুসফুসের মধ্যে ঢুকতে পারত।
888sport app download apkটির শুরু ‘মৃত্যু’ নামক প্রশ্ন দিয়ে, আর পরিসমাপ্তি আর্ত হাহাকারে। অলংকার, স্থানিক বর্ণনা, শরীরী চিৎকারের সঙ্গে বাঁচার অনুষঙ্গরূপে ভালোবাসা, আশা-নৈরাশ্য মৃত্যু আরোগ্য ইত্যাদির মধ্যেও ‘যদি’র সংকেত আমাদের সত্যিই আবেগতাড়িত করে। তোলপাড় করে। এই 888sport app download apkটির গঠন সম্পর্কে অধ্যাপক পবিত্র সরকার বলেছেন,
অরুণ মিত্র কথ্যতার খুব কাছাকাছি থেকেছেন এ 888sport app download apkয়, সাজানো ভাষার শরণ নিয়েছেন কদাচিৎ, বিশেষণ ব্যবহার কথ্যতার সীমানা অতিক্রম করেনি। … বিশেষ্যগুলিতে নেই আভিধানিক উৎকলন। সজ্ঞান অলংকরণের চেষ্টা খুবই সামান্য, একমাত্র ‘ভাষা’-র চবৎংড়হরভরপধঃরড়হ ছাড়া। কবির প্রধান অস্ত্র বিরোধ, তাকেই তিনি নানাভাবে এখানে লাগিয়ে একটি ঋজু ও আর্ত 888sport app download apk তৈরি করেছেন।
লক্ষণীয়, কবি-জীবনের এই পর্বে শুধু 888sport app download apkর ভাষাই পালটাননি, পালটেছেন দৃষ্টিভঙ্গিও। ফলে পদ্যছন্দ থেকে দূরে সরে যাওয়াই নয়, কথনভঙ্গিকেও ব্যবহার করেছেন গদ্যভাষায়। এ-বিষয়ে বলা যেতে পারে অরুণ মিত্র তাঁর চিন্তা ও মনোভাবকে গ্রহণ করেছিলেন ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি থেকেই। ফরাসি কবিদের কাছেই প্রকরণ বিষয়ে তিনি দুটি শিক্ষা নিয়েছিলেন। এক : গদ্য পদ্য যাই হোক, ‘আত্মপ্রকাশই প্রধান কথা’। দুই : ছন্দ ও মিল 888sport app download apkর পক্ষে আবশ্যকতা নয়। তাই ছন্দ মিল আয়ত্তে থাকলেও তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন গদ্য888sport app download apkয়।
কথাগুলোর একেবারেই ভার নেই। পাতার মর্মরে মিশে যেতে পারে। অথচ তারা কল্লোল নিয়ে আসে। অথচ তারা বিস্ফোরণের স্ফুলিঙ্গ
নিয়ে আসে। অথচ তারা ফুলফলকে নিঃশ্বাসের কাছে ধরে দেয়। পালকের মতো কথা, তার মধ্যে পৃথিবীর নড়াচড়ার শব্দ।
(‘দুই বছর : মঞ্চের বাইরে মাটিতে’)
সহজ সারল্যে প্রতিষ্ঠা করা নয়, 888sport app download apkর ভাষাকে একেবারে মুখের কাছাকাছি নিয়ে আসাই ছিল কবি অরুণ মিত্রের বড় বৈশিষ্ট্য। এই কারণে গদ্য888sport app download apkর শৈলী নির্মাণে ‘তিনি ব্যবহার করেছেন আটপৌরে’ শব্দ, দেশজ ভাষা ও শব্দগুচ্ছ। যদিও তথাকথিত বাক্যগঠন বা পদবিন্যাসের অনমনীয়তায় তাঁর আস্থা ছিল না। এমন কী পল এল্যুয়ারের মতো মানেননি তিনি যতিচিহ্নের আবশ্যিকতাও।
বহকালের জ্বলনে অক্ষরগুলো পোড়া পোড়া হয়েছে এখন একটু উসকে দিলেই তারা ছাই হয়ে উড়বে দখিনা বাতাসে ঝড়ে, অন্ধকার হলে ভুতুড়ে ছোঁয়া আর একদম বোবা হঠাৎ কোনো ঝলকে চমকানো নয় শূন্যে লেপাপোঁছা। দাঁড়ি টানবার জায়গা এখানে ছিল কিন্তু কী করে টানি? (‘স্তব্ধ নয় : প্রথম পলি শেষ পাথর’)
তন্ময়তার এই বোধ পাঠককে যেমন আবিষ্ট করে, তেমনিই পৌঁছে দেয় এক নির্জন ধ্যানের জগতে। এমনিই আর একটি বিরামচিহ্নহীন 888sport app download apk ‘আমি অল্প করে বলি’ –
আমি অল্প করে বলি যদি তুমি বোঝো নইলে পাহাড় সমুদ্দুর মরুভূমি তোমাকে উদ্বাস্তু করবে নইলে মহাশূন্য তোমাকে নিয়ে চক্কর জুড়বে তুমি ছোট্ট দরজাটা দেখতে পাবে না যে তোমাকে পৌঁছে দেবে তোমার একলা পিদ্দিমের কাছে যাকে হাত দিয়ে আগলে তুমি সেই রাস্তা রাখতে পারো যেখান দিয়ে অগুনতি পাখির ওড়া আর পায়ে পায়ে ধুলোটে গন্ধ চওড়া হতে হতে চওড়া হতে হতে শেষকালে পৃথিবীর মেলা।
বিষ্ণু দে-র মতোই জীবনের প্রতি প্রগাঢ় প্রেম, বাংলার নিসর্গ-প্রকৃতি আর সমস্ত সত্তাকে উচ্ছিত করা সংগীতের অধিকার একসঙ্গে গ্রন্থিত অরুণ মিত্রের বাচনভঙ্গিতে। বাক্প্রতিমার ব্যাপকতায়, ইঙ্গিতপূর্ণ প্রয়োগকৌশলে, দৈনন্দিন আলাপচারী গদ্যভাষায় এবং ‘মৃদু স্বগতোক্তির গদ্য লিরিসিজম’-এ তিনি মগ্নচৈতন্য পাঠককে নিয়ে যান এক বোধির ভুবনে।
অরুণ মিত্রের 888sport app download apkর আর একটি বৈশিষ্ট্য ঘরোয়া কথাবার্তার চাল, যা অনেকটাই নিচুগলায়, নিজের সঙ্গে কথা বলার মতো :
এসো এবার তোমার মুখ দেখি ভোরের আলোয়, সেই আলোয় যা আমি অন্ধকারে ছেঁকে জমিয়ে রাখছিলাম তোমার হৃৎপি-ে। জীবনকে রক্তের উৎসে উড়িয়ে নিয়ে এমন ফুল তুমি ফোটালে কামিলা।
(‘কাছে এসো এবার : খরা-উর্র্বরায় চিহ্ন দিয়ে চলি’)
888sport app download apkকে তিনি, বারবার ‘একলার ভাবনা’ বলে মেনেছেন। সংগঠিত মহত্ত্বে তাঁর অবিশ্বাস মজ্জাগত বলেই কোনো 888sport live footballিক দলেও তিনি থাকেননি। এ-মনের জোর তাঁর ফরাসি 888sport live football থেকেই পাওয়া। সেই কারণেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিকে আত্মস্থ করে পথ হেঁটে গেছেন একা একা।

তথ্য
১. ‘888sport live footballে সৃজনক্রিয়া : উৎস এবং অববাহিকা’, 888sport app download apk, আমি ও আমরা; অরুণ মিত্র, দেশ পাবলিশিং, কলকাতা।
২. ‘হানাবাড়ির রহস্য’, অরুণ মিত্র, কেন লিখি?, সুভাষ মুখোপাধ্যায়-সম্পাদিত, মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স, কলকাতা।
৩. ‘বাংলা 888sport live footballের বিবর্তন ও আধুনিক 888sport app download apk’, 888sport app download apk, আমি ও আমরা, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা।
৪. ‘আমার জীবন : আমার সময়’, পরিচয়, শারদীয় ১৪০৭।
৫. ‘অরণি : একটি আন্দোলন, একটি পত্রিকা’, কার্তিক লাহিড়ী, এক্ষণ, শারদীয় 888sport free bet ১৩৮৮।
৬. ‘কথামুখ’, স্বনির্বাচিত 888sport app download apk, মডেল পাবলিশিং হাউস।
৭. ‘কাব্যে আধুনিকতা কী?’, জীবনের রঙে, মনন, ১৯৯৯।