তাঁর কথা : তাঁদের কথা

হাসনাতভাইকে আমি প্রথম দেখি ১৯৬৮-র এপ্রিলের কোনো এক সময়ে সংবাদের ২৬৩ বংশালের বার্তাকক্ষে।

পুরনো 888sport appর নিশাত সিনেমার উলটো দিকের ইউ-আকৃতির চুন-সুরকির ওই দোতলা দালানটির কী এক সম্মোহনী শক্তি ছিল! প্রগতিশীল তরুণ থেকে বিপ্লবী 888sport live chatী-888sport live footballিক সবাইকে কেমন যেন গ্রাস করে ফেলত! এর দোতলাতে মাঝের ঘরে আসর জমিয়ে বসতেন শহীদুল্লা কায়সার, সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্তের মতো মানুষরা। পাশের ঘরে বজলুর রহমান, মীর মাহবুব আলী আর মহিলাপাতার সম্পাদক কবি দিলওয়ার। একেবারে কোনার ঘরে আমরা খেলাঘরের কর্মীরা। নিচের তলায় প্রথম ঘরটিতে প্রুফ-সংশোধন বিভাগ। তার পাশে সবচেয়ে বড় ঘরটিতে শেষ প্রান্তে বার্তা-সম্পাদকের টেবিল; আর মাঝখানে বিশাল আকারের নিউজ টেবিল। টেলিপ্রিন্টারে আসা খবরের 888sport app download apk latest version, রিপোর্টারদের তাৎক্ষণিক খবর তৈরি, অবিরাম নিউজপ্রিন্ট-প্যাডের পাতা ছেঁড়ার খসখসে শব্দ, শিফট-ইন-চার্জের বকাঝকা – সব মিলিয়ে সে-এক মজার পরিবেশ। আর উপরি হিসেবে আছে রঙ্গ-রসিকতা আর পরস্পরকে ল্যাং মারা। আজকের কম্পিউটারমুখো বার্তাকক্ষের সঙ্গে তার কোনো তুলনা হয় না। এরকম টেবিলেই বসে বার্তা তৈরি করছেন আবুল হাসনাত – দৃশ্যটা এখনো চোখে ভাসছে।

সংবাদ বরাবরই ছিল সাংবাদিক তৈরির সূতিকাগার। এর কিছুদিন আগে তোয়াব খানসহ একদল সংবাদ ছেড়ে সরকারি ট্রাস্টের পত্রিকা দৈনিক পাকিস্তানে পাড়ি দিয়েছেন, সন্তোষ গুপ্ত চলে গেছেন আজাদে, আবেদ খানরা ইত্তেফাকেসংবাদের বার্তাকক্ষ আবার ভরে উঠেছে তারুণ্যে। শিফট-ইন-চার্জ হাসান আলী কিংবা গোলাম সারওয়ার, মাঝখানে শহীদুল ইসলাম অথবা প্রতিবেদক এম. আর. বাদল। সেই টেবিলেই চুপচাপ কাজ করে যাচ্ছেন অতি মৃদুভাষী হাসনাতভাই।

স্বাধীন 888sport appsে সংবাদের নতুন যাত্রা শুরু হলো ধ্বংসস্তূপের ওপর। মার্চের শেষে হানাদার পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণে ২৬৩ বংশালের সেই দালানটার সামান্যই অবশিষ্ট রইল। তার ওপরেই দ্রুত কিছু দেয়াল তুলে ওপরে টিন দিয়ে নতুন ঘর তোলা হলো। আহমেদুল কবিরের আগ্রহে কিছু অংশ ফলস-ছাদ দিয়ে নিয়ন বাতি লাগানো হলো। একপাশে আবার সেই বিরাট নিউজটেবিল; তবে আগেরটা কি না জানি না! হাসনাতভাই আবার সেই নিউজটেবিলে। সেই মৃদুভাষী কর্মীপুরুষ। শুনেছি, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কলকাতায় কমিউনিস্ট পার্টির দফতর সামলেছেন তিনি। এত কম কথা বলে সেটা কী করে করলেন?

বার্তাকক্ষের ওই স্বল্পভাষী মানুষটির সম্পাদনায় ’৭২-এর আগস্ট মাসে বেরোল গণ888sport live football। একদিকে 888sport live chat-888sport live football, অন্যদিকে সাম্যবাদী রাজনীতি – এই দুয়ের সংশ্লেষণ গণ888sport live football। এর আগে এ-ধরনের পত্রিকার জন্য আমরা কলকাতার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। নিজেদের এ-ধরনের একটা পত্রিকা পেয়ে খুব খুশি লাগল। বার্তাকক্ষে সাব-এডিটর আর একটি 888sport live chat-888sport live football বিষয়ক পত্রিকার সম্পাদক – হাসনাতভাই দুটো দায়িত্বই সুচারুরূপে পালন করে গেছেন। দু-888sport free bet বের হওয়ার পরে প্রায় বছরখানেক পার্টির প্রশিক্ষণে সোভিয়েত ইউনিয়নেও কাটিয়ে এসেছেন।

’৭৫-এর মর্মান্তিক ঘটনার বেশ কিছুদিন পর রণেশ দাশগুপ্ত কলকাতা যান। তাঁর অবর্তমানে সংবাদের 888sport live footballপাতার দায়িত্ব দেওয়া হয় সে-সময়ের উঠতি কবি দাউদ হায়দারকে। দাউদের এক 888sport app download apkকে ঘিরে মুসলমান-ধর্মের ওপর আঘাতের অভিযোগ এবং সে-সংক্রান্ত বিক্ষোভ এত মারাত্মক হয়ে ওঠে যে, দাউদ দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। সংবাদ কর্তৃপক্ষ বোধহয় তখন 888sport live footballপাতা সম্পাদনার জন্য একজন পরিপক্ব সম্পাদক খুঁজছিলেন। এ-দায়িত্ব পড়ে আবুল হাসনাতের ওপর।

হাসনাতভাই সংবাদের 888sport live footballপাতার এক নতুন চেহারা দেন। আমরা প্রায় সারাদিন সংবাদে কাটালেও তিনি কীভাবে লেখা সংগ্রহ করতেন তা বুঝতে পারতাম না। সব কাজ করতেন খুব নীরবে। শুধু শুক্রবারে 888sport live chatী সুবীর চৌধুরীকে নিয়ে পাতা সাজানোর সময়ই যা একটু হাঁকডাক শুনতাম। রোববারে বেরোত সেই পাতা। তাতে লেখার একটা উচ্চমান তো ছিলই। সঙ্গে ব্লকের ওই যুগে রঙিন ইলাস্ট্রেশন আর লেটারিংয়ের একটা বাড়তি আকর্ষণ। বিশেষ 888sport free betয় কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন নবীর মতো 888sport live chatীদের ইলাস্ট্রেশন থাকত।

আশির দশকের মাঝামাঝি আমি আফ্রিকার সংস্কৃতির সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক এবং সঙ্গে কয়েকটি 888sport app download apkর 888sport app download apk latest version দিয়ে একটা লেখা তৈরি করি। তখন পত্রিকা অফিসের বিভিন্ন বিভাগের লেখা রাখার জন্য বক্স ফাইল ব্যবহার হতো। লেখাটি আমি 888sport live football সম্পাদকের বক্স ফাইলে ফেলে দিই। তখনকার খেলাঘরকর্মীদের সঙ্গে হাসনাতভাইয়ের একটা দূরত্ব ছিল নানা কারণে। তাই তাঁকে কিছু বললাম না। মাসখানেকের মধ্যে লেখাটা 888sport live footballপাতায় ছাপা হলো সুন্দর একটা লেটারিং দিয়ে। কয়েকদিন পর দেখা হলে বললেন, ‘লেখাটা আমার হাতে দিলে ভালো হতো। বক্স ফাইল তো আর প্রতিদিন দেখি না।’

ওই সময়েই আমি সংবাদের প্রকাশনা সংস্থা লালন প্রকাশনীর সঙ্গে যুক্ত হই। ‘দরবার ই জহুর’ ও ‘বৈহাসিকের পার্শ্বচিন্তা’র পাণ্ডুলিপি তৈরির পাশাপাশি তখন আমি সংবাদের 888sport live footballপাতার কিছু লেখা সংগ্রহেও জড়িয়ে পড়ি। তখন হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে কিছুটা কাজের সম্পর্ক হলো; তবে কথার সম্পর্ক আগের মতো স্বল্পই রয়ে গেল।

হাসনাতভাই কালি ও কলমের সম্পাদক হলেন; প্রায় তিন যুগ পর সংবাদ ছাড়লেন। আনিসুজ্জামানের প্রাজ্ঞ তত্ত্বাবধানে, হাসনাতভাইয়ের দক্ষ সম্পাদনা আর আবুল খায়েরের আন্তরিক যত্নে কালি ও কলম এক ঈর্ষণীয় মান ও মাত্রায় পৌঁছে গেল স্বল্প সময়ের মধ্যে। আমাদের দেশে 888sport live football-888sport live chat সাময়িকপত্র বের হয় ঝলক দিয়ে, কিন্তু বেশিদিন তার মান থাকে না। কালি ও কলম প্রায় দু-দশক পার করল মোটামুটি একই মানে। এর কৃতিত্ব উল্লিখিত তিনজনকেই দেওয়া যায়; সঙ্গে লুভা নাহিদ চৌধুরীর প্রশাসনিক সহায়তা। কালি ও কলমে আমার কয়েকটি লেখা বেরিয়েছে; তবে তা মূলত অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের আহ্বানে। তবে দেখা হলে হাসনাতভাই বলতেন, ‘লেখা দেবেন।’

বেঙ্গলের স্থাপত্য ইনস্টিটিউটে আমার মেয়ের কাজে একদিন যেতে হলো। সেদিন আনিসুজ্জামান স্যার ছিলেন না। একইভাবে কর্মরত হাসনাতভাই-ই ওঁদের সঙ্গে পরিচয়ের ব্যবস্থা করে দিলেন। কাজশেষে তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে গেলাম। তিনি এ-নিয়ে কোনো কথাই বললেন না। মনে হলো যেন এর কিছুই তিনি জানেন না। নিজেকে নিজের ভেতর গুঁজে রাখার জন্য এ-এক আশ্চর্য নীরবতা! আমাদের নিয়ে চা খেতে বসালেন লুভা নাহিদ চৌধুরীর ঘরে; নিজে বসলেন না। শুধু একবার এলেন জীবনানন্দ-ভূমেন্দ্র গুহ 888sport app download bdের সম্মতিপত্র স্বাক্ষর করাতে। হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে আমার শেষ আলাপ টেলিফোনে। আনিসুজ্জামান স্যারের ওপর কালি ও কলম বিশেষ 888sport free bet করবে, তার জন্য লেখা নিয়ে। আমার লেখাটা দিতে একটু সময় লাগছিল। তখনো ভাবিনি বছর না-পেরোতেই হাসনাতভাইয়ের ওপর লেখার তাগাদা আসবে!!