তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা 888sport cricket BPL rateের উত্তাল সময়ে

তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা 888sport cricket BPL rateের উত্তাল দিনগুলোর মধ্যে, 888sport app মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল তথা ‘মেডিক্যাল ব্যারাক’ প্রাঙ্গণে – ১২ নম্বর ব্যারাকের সামনে দাঁড়ানো দুই ভাষা-আন্দোলনকর্মী – আনিসুজ্জামান ও আহমদ হোসেন। ওঁরা দুই বন্ধু, জগন্নাথ কলেজের ছাত্র। হালকা ও পাতলা, দীর্ঘকায় গড়নের তরুণ আনিসুজ্জামানের সঙ্গে সে-পরিচয় পরবর্তীকালের খ্যাতিমান, জাতীয় অধ্যাপক, সু888sport live footballিক ও গবেষক, স্বল্পভাষী, কিছুটা গম্ভীর, রসবোধসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের আনিসুজ্জামানের সঙ্গে অক্ষুণ্ন ছিল। যদিও দেখা হয়েছে মাঝেমধ্যে।
কারণ দুজনের জীবনযাত্রার পথচলা ছিল ভিন্ন দিকের। তবু দেখা কি কম হয়েছে? বিশেষ করে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, বিশেষ করে স্বাধীন 888sport apps আমলে? 888sport live football-সেমিনার, সম্মেলন বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রবীন্দ্রজন্মবার্ষিকী উদযাপন বা নানামাত্রিক প্রাতিষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে বরাবর দেখা, দু-চারটি কথা, কুশলবিনিময় ইত্যাদি।
মেধাবী, নম্রভাষী, বিনয়ী, সদালাপী আনিসুজ্জামান সেই তরুণ বয়স থেকেই, যখন ওঁরা চার বন্ধু – আনিস, আহমদ, নেয়ামাল, আমির আলীদের একসঙ্গে ঘুরতে দেখেছি, বিশেষ করে প্রথমোক্ত তিনজনকে। 888sport cricket BPL rateের ভাষা-আন্দোলন থেকে প্রগতিশীল রাজনীতি এবং 888sport live football-সংস্কৃতিচর্চায় অতীব আগ্রহী ছিলেন এঁরা তিনজনই।
তবে যদি ভুল না করে থাকি, ছাত্ররাজনীতির দিকে তুলনামূলক বিচারে আহমদ হোসেন ও নেয়ামাল বাসিরের ঝোঁকটা বোধহয় কিছুটা বেশিই ছিল। তুলনায় আনিসুজ্জামানের ঝোঁক 888sport live footballের মননশীলতার দিকে, যে প্রবণতা তাঁকে শিক্ষার্থীজীবন শেষে 888sport live footballভুবনের গবেষণায় প্রণোদিত করে, সেইসঙ্গে সাংস্কৃতিক ভুবনের দিকেও, যে-জন্য তাঁকে পরিণত বয়সে দেখি রবীন্দ্রসংগীতের প্রাতিষ্ঠানিক ভুবনের সঙ্গে গভীর সংশ্লিষ্টতায়। সেই সুরের ধারা উপলক্ষে বারকয়েক তাঁর সঙ্গে দেখা এবং স্বল্পায়তনিক আলাপ।
888sport live football-সংস্কৃতির সঙ্গে আত্যন্তিক সম্পর্কের গভীরতার কারণে ওই তরুণ বয়সে তাঁকে দেখেছি যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার (১৯৫৪) আমলে কার্জন হলে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত 888sport live football-সংস্কৃতি সম্মেলনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতে, যে-সম্মেলনে কলকাতা থেকে বড়সড় একদল কবি-888sport live footballিক যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মনোজ বসু, নরেন্দ্র দেব, রাধারানী দেবী, কাজি আবদুল ওদুদ, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, দীপেন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। এঁদের সঙ্গেও আনিসকে দেখেছি।

দুই
১৯৫৪-র ৩০ মে ৯২-ক ধারায় পূর্ববঙ্গে কেন্দ্রীয় শাসন জারি, যুক্তফ্রন্টের ফজলুল হক মন্ত্রিসভা বাতিল, দেশজুড়ে ছাত্র ও রাজনীতিকদের অঙ্গনে প্রবল দমননীতি ও গ্রেফতার গভর্নর ইস্কান্দার মীর্জার লৌহদৃঢ় শাসনে। আমি গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে, শিক্ষাজীবনের শেষলগ্নে বিপর্যয় এবং এরপর দীর্ঘ জীবনসংগ্রাম – আনিসুজ্জামানের সঙ্গে নতুন করে দেখা, বিশেষভাবে স্বাধীন 888sport appsে বাংলা একাডেমির বটতলার ভিড়ে।
পাকিস্তান আমলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা শেষ, উচ্চশিক্ষার ডিগ্রিধারী ও 888sport live footballকর্মের গবেষণায় (বিশেষ করে মধ্যযুগীয় মুসলমান 888sport live footballিকদের অবদান নিয়ে) তাঁর সময় কেটেছে একজন কৃতী শিক্ষক ও সফল গবেষক হিসেবে। এর মধ্যে তাঁর একটি বড় কাজ রবীন্দ্রজন্মশর্তবর্ষ উপলক্ষে রবীন্দ্রবিষয়ক একটি স্মারকগ্রন্থ সম্পাদনা।
এরপর তাঁর মুক্তিযুদ্ধে যোগদান মূলত সাংস্কৃতিক ধারায়, ইতিমধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা তাঁর মধ্যে প্রধান হয়ে উঠেছে, যেমন দেখা গেছে বহুসংখ্যক প্রগতিশীল চেতনার মননশীলদের মধ্যে – কি রাজনীতিক্ষেত্রে, কি সংস্কৃতিক্ষেত্রে। এসব আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বিষয় নয়; নানা সূত্রে জানা। যতটা দেখেছি, পরিণত বয়সে রাজনীতি তাঁর জীবনে প্রধান বিষয় ছিল না; ছিল আদর্শিক ক্ষেত্রে।
তাঁর ছাত্রজীবনের কিছু কথা ইতিপূর্বে উল্লেখ করেছি। করেছি 888sport cricket BPL rateের কথা। তখন আনিসুজ্জামান পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের দফতর সম্পাদক হিসেবে যুগীনগরের অফিসে কর্মব্যস্ত। সে-সময়, যতদূর জানি, পূর্ববঙ্গীয় কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে তাঁর একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, একাধিক ঘটনায় তার প্রমাণ মেলে।
পরে তাঁর রাজনৈতিক চিন্তাধারায় মতাদর্শগত কী পরিবর্তন ঘটেছিল, তা আমার জানা নেই। তবে কালের কণ্ঠে (১৬.৫.২০২০) একটি লেখায় খ্যাতিমান লেখক-সাংবাদিক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর ভাষ্য হলো : ‘আনিসুজ্জামান এবং আমি ছিলাম একই মতাদর্শে দীক্ষিত।’ এ-সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারব না। তবে যে-কথা আগে উল্লেখ করেছি তা হলো, পরিণত বয়সে রাজনীতি তাঁর জীবনে প্রধান বিষয় ছিল না বলেই দেখেছি। সেখানে প্রাধান্য পেয়েছে 888sport live football-সংস্কৃতি।
সেজন্যই বলতে হয়, আনিসুজ্জামানের প্রধান পরিচয়, তিনি মূলত একজন শিক্ষক-শিক্ষাবিদ, 888sport live footballানুরাগী, লেখক, গবেষক এবং নানামাত্রিক সংস্কৃতিচর্চায় সংশ্লিষ্ট সমঝদার ও পৃষ্ঠপোষক, সেই সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্টও বটে। বয়স যত বেড়েছে, এদিকে তাঁর আকর্ষণ বেড়েছে। এ-কারণে এদিকে তাঁর বিচরণ দৈশিক সীমানা অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক মাত্রায় প্রসারিত হয়েছে। তাঁর পরিচিতি চিহ্নিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরূপে।

তিন
সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক অঙ্গনের মানুষ, এমনকি বিশিষ্টজন আনিসুজ্জামানকে তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রের সম্পর্কের মূল্যায়ন করবেন ব্যক্তিগত সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে। তাঁদের প্রত্যেকের হিসাব-নিকাশ বলা বাহুল্য ভিন্ন হতে বাধ্য। যেমন তাঁর সহপাঠী, বন্ধু, স্বজন, ছাত্র-শিক্ষার্থীর মতো বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিদের দৃষ্টিতে আনিসুজ্জামান।
তবে এর মধ্যেও এমন কিছু সাধারণ বিষয় থেকে যায়, যেখানে ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকে না। যেমন – আলাপচারিতায় স্বল্পভাষী, বিনয়ী, বিনম্র আনিসুজ্জামান যেন এক প্রসন্ন মেজাজের মানুষ, ভিন্নমত প্রকাশের উগ্রতা তাঁর স্বভাব-বৈশিষ্ট্য বিরোধী। একই সঙ্গে শিষ্টাচারের প্রতীক আনিসুজ্জামান, যা 888sport appsের শিক্ষিত, উচ্চশিক্ষিত বা এলিট সমাজে খুব একটা বহুলদৃষ্ট ঘটনা নয়। এসব দিক থেকে তাঁকে বিশিষ্ট বলতে হবে।
অনুজদের সঙ্গে বা তরুণদের সঙ্গে তাঁর ব্যবহার সুরুচিসম্পন্ন, সেক্ষেত্রে কোনো প্রকার অহংবোধের প্রকাশ দেখা যেত না। এককথায় নিরহংকার স্বভাবের মানুষ আনিসুজ্জামান। হয়তো তাই 888sport live football- সংস্কৃতির সর্বপ্রকার অনুষ্ঠানে তাঁকে বরাবর দেখা যেত তাঁর যোগ্য ভূমিকায়। এ-গুণটি আরো ব্যাপকভাবে দেখেছি আরেক জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর মধ্যে। ‘না’ শব্দটি তাঁর অভিধানে ছিল না। আনিসুজ্জামানের আরেকটি বিরলদৃষ্ট গুণ ছিল – কি লেখায়, কি বক্তৃতায় অসাধারণ পরিমিতিবোধ।
সবশেষে তাঁর একটি ব্যতিক্রমধর্মী নান্দনিক সততার বৈশিষ্ট্যের কথা বলে লেখায় ইতি টানব। বেশ কয়েক বছর আগের কথা। ‘অন্যপ্রকাশে’র মাজহারুল ইসলাম আমাদের কয়েকজন ভাষাসংগ্রামীকে নিয়ে একটি ছোট্ট ঘরোয়া অনুষ্ঠান করেছিলেন তাঁদের পান্থপথ অফিসে। অনুষ্ঠানটি ছিল ব্যক্তিকেন্দ্রিক – এর ঘটক মফিদুল হক।
তাঁর প্রশ্ন ছিল আমাদের প্রাক্-888sport cricket BPL rateে রাজনৈতিক বিশ্বাস ও ভূমিকা নিয়ে। এই প্রশ্নোত্তরে আনিসুজ্জামান নির্দ্বিধায় জবাব দেন, ‘দেশবিভাগ-পূর্ব সময়ে কলকাতায় থাকাকালে বুঝে না বুঝে মুসলিম লীগ ও পাকিস্তানি রাজনীতির সমর্থক ছিলাম। বিভাগোত্তরকালে 888sport appয় এসে পরিবেশ, রাজনৈতিক সঙ্গ ও পড়াশোনার প্রভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত ধারায় প্রগতিবাদী হয়ে উঠি।’ আমি অবাক হয়েছিলাম, এই অপ্রিয় সত্যটি তিনি প্রকাশ না করলেও পারতেন। জানি না, প্রশ্নকর্তাও অবাক হয়েছিলেন কি না।
এই হলেন আনিসুজ্জামান। তাঁর অপ্রত্যাশিত প্রয়াণ নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক। 888sport appsের শিক্ষা, 888sport live football ও সংস্কৃতির ভুবনে অসামান্য সমাপনের কারণে 888sport app download for androidীয় হয়ে থাকবেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।