তিনিই তো বসন্তজাতক আনিসুজ্জামান

আনিসুজ্জামানের স্বরূপের সন্ধানে বইটি যে-বয়সে পড়ি তার মর্মবস্তু পুরোপুরি অনুধাবনের বয়স সেটি ছিল না। কুমিল্লা জেলার সরকারি গ্রন্থাগারে এক দুপুরে সদ্য স্কুল-পেরুনো আমি বইটির সাদামাটা নামের মধ্যেই যেন কী এক আকর্ষণ খুঁজে পেয়ে পড়তে শুরু করি। গুরুভার বিষয়ে নদীজল-তরতর ভাষার নিপুণ ব্যবহারই যে আমাকে দিয়ে বইটি শেষ অবধি পড়িয়ে নিয়েছিল তা নিশ্চিত একেবারে। এরপর সেই গ্রন্থাগারেই রক্ষিত তাঁর 888sport app download apk latest versionে অস্কার ওয়াইল্ডের নাটক আদর্শ স্বামী পড়েছি। পড়েছি জীবনীগ্রন্থ মুনীর চৌধুরী, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারকগ্রন্থ, অজিত গুহ স্মারকগ্রন্থ ইত্যাদি। বইগুলো পড়ে লেখক ও সম্পাদক আনিসুজ্জামানের নিষ্ঠা ও গবেষণা-নিপুণতার পরিচয় পেয়েছি। কলেজে পড়ছি যখন, 888sport live football-সংসারে প্রবেশ করছি একটু একটু করে তখন একটি দৈনিকের শুক্রবাসরীয় 888sport live football সাময়িকীতে তাঁর কাল নিরবধি শিরোনামের আত্মকথা পড়তে পড়তে যেন একটি শতাব্দী-সম্ভোগের অভিজ্ঞতা লাভ হতো। সাল-তারিখের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে ঘটনাপ্রবাহের নিরাসক্ত ব্যাখ্যা দিয়েও যে প্রাণস্ফূর্তিময় কালের দলিল প্রণয়ন করা যায় তার সাক্ষ্য ধরা কাল নিরবধিতে। আর সব বড় লেখকের মতোই ছিল রসচিত্ততার গুণ।
২০০১ সালে দেশে জাতীয় নির্বাচনোত্তর সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের যে-লজ্জাজনক অধ্যায় শুরু হয় তখন আনিসুজ্জামানসহ নাগরিক সমাজের অনেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে 888sport free betলঘু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন, ভরসা দিয়েছেন। আনিসুজ্জামানকে তখন পর্যন্ত চাক্ষুষ না করেও দেখা হয়ে গেছে আমার। বুদ্ধিজীবী যে শুধু কলমজীবী নন, তাঁকে যে চিন্তায় ও সক্রিয়তায় মৃত্তিকাবর্তী হতে হয় সে-উপলব্ধি আসে আমার। এর মধ্যে নীতিগত কারণে ২০০২-এ বাংলা একাডেমির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ তাঁর ব্যক্তিত্বকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে আমাদের কাছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হয়েছি তখন অনেক ‘শিক্ষিত’ মানুষকেও মৃদু কৌতুক প্রকাশ করতে দেখেছি এই বলে যে, বাংলা, ইতিহাস জাতীয় বিষয়ের ‘বাজারদর’ ভালো নয় এবং এসব বিষয়ে তারাই পড়তে আসে যাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। আমি তখন উদাহরণ টানতাম বাংলার আনিসুজ্জামান, ইতিহাসের মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান প্রমুখের যাঁরা বাংলা কিংবা ইতিহাস বিভাগে অধ্যয়ন করে আরোহণ করেছেন দেশের শীর্ষ-সম্মানের স্থানে, অসামান্য কৃতির বলে যাঁদের নাম ছড়িয়েছে দেশের সীমানা পেরিয়ে দূর-দূরান্তে। এভাবে প্রত্যক্ষ পরিচয় না থাকলেও আনিসুজ্জামান হয়ে উঠেছিলেন আমাদের উদাহরণ দেওয়ার মতো এক অহংকারের নাম।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে বিশেষ সখ্য গড়ে ওঠে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক, ষাটের দশকের কবি মোহাম্মদ রফিকের সঙ্গে। তাঁর স্ত্রী ষাটের আরেক কবি জিনাত আরা রফিকের প্রয়াণ ঘটলে আমরা 888sport appয় একটি 888sport app download for androidসভার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিই। মনে আছে সভার সভাপতি কে হবেন এই নিয়ে যখন ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে তখন আমিই মোহাম্মদ রফিককে বলি, ‘আনিসুজ্জামান স্যারকে বলে দেখবেন নাকি? জিনাত আরা রফিক তো তাঁর ছাত্রী ছিলেন।’ রফিক স্যার ইতস্তত করে বলেছিলেন, ‘স্যার এত ব্যস্ত। তিনি কি রাজি হবেন?’ অতঃপর তিনি ফোন করে বলতেই আনিস স্যার একবাক্যে বললেন, ‘তানির 888sport app download for androidসভায় আমি অবশ্যই আসবো।’ মোহাম্মদ রফিক ফোন রেখে বলেছিলেন, ‘কী আশ্চর্য! স্যার ওঁর ডাকনাম পর্যন্ত মনে রেখেছেন।’ এই এক বিরল গুণ দেখেছি তাঁর। ছাত্রছাত্রী-888sport live football-সংস্কৃতিজন সবাইকে একান্নবর্তী সংসারের সদস্য-জ্ঞানে তিনি সবার ব্যক্তিগত পরিচয়, বিশেষত্ব বিষয়ে সম্যক অবগত।
অনেকে বলেন, আনিসুজ্জামান কেন এত সভা-সমিতিতে যান, সভাপতিত্ব করেন? কিন্তু তারা একটি বিষয় ভেবে দেখেন না যে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বলার, সভাপতিত্ব করার সবিশেষ অধিকার ও অভিনিবেশ আছে বলেই উদ্যোক্তারা ফিরে ফিরে যান তাঁরই কাছে। মিতকথনের মধ্য দিয়ে, সমাগত সুধীর ধৈর্য্যচ্যুতি না ঘটিয়ে এবং মোটের ওপর একটি বাণী শ্রোতা-সাধারণের মরমে পশিয়ে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। ‘এ. টি. এম আনিসুজ্জামান’ যেমন ‘আনিসুজ্জামান’-এর সংক্ষিপ্তিতেই সৌন্দর্যের প্রমাণ রেখেছেন, তেমনি প্রদত্ত বক্তব্যেও পরিমিতিবোধে হয়ে ওঠেন প্রোজ্জ্বল।
২০১১-তে প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের সঙ্গে যুক্ততা-সূত্রে আনিসুজ্জামানের একটি মূল্যবান বই মোতাহের হোসেন চৌধুরীর পুনঃপ্রকাশের আবেদন নিয়ে যাই তাঁর কাছে। তিনি সানন্দে রাজি হন তবে একটি পুরনো বই নবপ্রকাশের সময় তিনি যেভাবে আমূল সংশোধন ও পরিমার্জন করেন তা ছিল এক শিক্ষাযোগ্য বিষয়। যারা আক্ষেপ করেন যে, ‘আনিসুজ্জামান কেন অনেক অনেক বই লিখলেন না’ তাদের জানা উচিত, একটি বইয়ের যথাযোগ্য প্রকাশমান নিশ্চিত না করে তিনি সন্তুষ্ট হতেন না। গত বছর এক সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা হলে স্যার নিজের বই সংক্রান্ত কথার ফাঁকে বলছিলেন কলকাতার এক বিশিষ্ট প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে একটি বই প্রকাশ চূড়ান্ত ছিল তাঁর; কিন্তু তথ্যনির্দেশ বিন্যস্ত করা বিষয়ে মতভেদ হওয়ায় তিনি বইটি করছেন না। আমি তখন সকরুণায় ভেবেছি গবেষণার নামে বহু উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের নির্বিচারে বই প্রকাশের কথা, যারা তথ্যনির্দেশে মনোযোগ তো দূরের কথা মূল বিষয়বস্তুতে প্রমাদপূর্ণ অসংখ্য বইয়ের জন্ম দিতে পেরে লাভ করেন সীমাহীন সন্তোষ।
বলছিলাম শুদ্ধস্বর থেকে স্যারের বই প্রকাশের কথা। সেই শুদ্ধস্বরেরই প্রকাশক আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল যখন ২০১৫-তে জঙ্গি হামলার শিকার হন তখন আনিস স্যার অনেক রাতে আমাকে ফোন করেন টুটুলভাইয়ের খবরাখবর জানতে। আমি অবাক হয়েছি যে, তিনি শুদ্ধস্বরের সঙ্গে আমার সংযোগের কথা মনে রেখে তাঁর প্রকাশকের বিপদের দিনে খোঁজখবর নিয়েছেন। এ-সহৃদয়তা তাঁর স্বভাবজাত যেন। কবি বীথি চট্টোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত তাঁর 888sport live footballকাগজ প্রথম আলোর একটি লেখক কপি আমার জন্য একবার আনিসুজ্জামানের কাছে দেন। এহেন ব্যস্ত মানুষ, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী আমার জন্য শুধু পত্রিকাটি বহন করে কলকাতা থেকে 888sport appয় নিয়ে আসেননি, বাংলা একাডেমিতে আমার কাছে পৌঁছেও দিয়েছেন। আমি অবাক হই, আবার অবাক হইও না, কারণ তিনি তো ‘শেষ অভিজাত’দের গোত্রভুক্ত মানুষ, মনীষা; যিনি মানুষকে নির্বিশেষে ভালোবাসতে ও মর্যাদা দিতে জানেন।
ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল বাংলা 888sport live footballে উচ্চশিক্ষা লাভ করব। নানা কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু আমি নিজেকে বিরল ভাগ্যবান মনে করেছি ২০১৩-তে করুণ মাল্যবান ও 888sport app 888sport live বইটির জন্য ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম 888sport app download bd’প্রাপ্তির অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে পেয়েছি বাংলা ভাষা ও 888sport live footballের ক্ল্যাসিক-মহান শিক্ষক আনিসুজ্জামানকে। তাঁকে সভাপতি হিসেবে আরো পেয়েছি ২০১৫-র ১৬ ডিসেম্বর বাংলা একাডেমিতে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলা একাডেমি’ শীর্ষক আমার মূল 888sport live উপস্থাপনের অনুষ্ঠানেও। সেই অনুষ্ঠানে পুরো 888sport live সমনোযোগ শুনে স্যার কিছু সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছেন যাতে সত্যিই উপকৃত হয়েছি আমি। সেদিন বুঝেছি, কেবল আলংকারিক সভাপ্রধান নন তিনি। উপস্থাপিত 888sport liveে প্রদত্ত বক্তব্যের পুরোটাই তিনি গুরুত্ব দিয়ে শোনেন এবং যাচাই করে নেন।
২০১৫-তে স্যারের আত্মজীবনীর এক পর্ব বিপুলা পৃথিবী গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হলে আমি তাৎক্ষণিক পাঠে আলোচনা লিখি এবং তা কালি ও কলম পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। স্যারের সঙ্গে পত্রিকার সে-888sport free betটি প্রকাশের দিন সকালেই কথা হয় ফোনে। বিকেলে 888sport free betটি হাতে পেয়ে, আমার লেখাটি পড়ে ফোনে বলেন, ‘তুমি তো আমাকে বলোনি যে তুমি আমার বইয়ের আলোচনা করেছ। ভালো হয়েছে লেখাটি।’ নিজের অকিঞ্চিৎকর লেখন-ক্ষমতার ওপর আস্থা জন্ম নেয় স্যারের স্বীকৃতিতে। তাঁকে নিয়ে এতশত লেখা হয়েছে, এর মধ্যে আমার লেখা সাধারণ একটি বই-আলোচনা পড়ে তিনি যে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের সৌজন্য প্রদর্শন করলেন তা এখন বিরল হয়ে উঠেছে আমাদের 888sport live football-পরিসরে। কবি উৎপলকুমার বসু এবং কথা888sport live chatী সুচিত্রা ভট্টাচার্যের প্রয়াণের পর আনিসুজ্জামান স্যার আমাকে তাঁদের বিষয়ে লিখেয়েছেন কালি ও কলম পত্রিকার জন্য; তাঁর আহ্বানে লিখতে পেরে লাভ করেছি অসীম গর্ব ও আনন্দ।
স্যারের কাছে গেছি কখনো কোনো লেখার আবদার নিয়েও। সৈয়দ শামসুল হকের আশিতম জন্মবার্ষিকীতে জলেশ্বরীর জাদুকর শীর্ষক সম্মাননা সংকলন প্রকাশের উদ্যোগ নিই যখন তখন আনিসুজ্জামান একটি নাতিদীর্ঘ চমৎকার লেখা দিয়েছিলেন। প্রকাশের ঠিক আগমুহূর্তে তাঁকে যখন দেখিয়ে নিতে গিয়েছি লেখাটি তিনি বললেন, ‘আমার লেখার শিরোনামটি খুব সাধারণ হয়েছে তাই না? তুমি কী মনে করো?’ আমি মনে করে কিছু বলার আগেই স্যার বললেন, ‘সৈয়দ হকের বই আছে না কথা সামান্যই লেখার শিরোনাম করে দাও ‘লেখা সামান্যই’। কী চলবে তো?’ আমি স্যারের সৃজনবোধে হয়ে উঠি বিমুগ্ধ। এক সৃজনপ্রভ বন্ধুকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তাঁর শুভেচ্ছাজ্ঞাপক রচনার শিরোনামে সৃজনী-স্বাক্ষরের কথা ভেবেছেন তিনি।
আনিসুজ্জামান স্যারের সঙ্গে আমার ও আমার প্রজন্মের দূরত্ব প্রায় পঞ্চাশ বছরের। মননের দূরত্ব তো আরো বহুগুণ। এই সেদিন পড়ন্ত সন্ধ্যায় গেন্ডারিয়ায় বাংলা একাডেমির বইমেলা উদ্বোধনশেষে যখন স্যার আর্মি স্টেডিয়ামে উচ্চাঙ্গসংগীত সম্মেলনের উদ্বোধনপর্বে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তখন আমিও এক গাড়িতে যাত্রা করি সে-সম্মেলনের শ্রোতা হিসেবে। পথে যেতে যেতে মনে হচ্ছিল স্যার পুরনো 888sport appয় বেড়ে উঠেছেন, এই নগরকে গড়তে দেখেছেন আবার পুরনো 888sport app থেকে এই নগরের বিস্তৃত অংশ নতুন 888sport appয় বসত গেড়েছেন। এ যেন তাঁর জীবনের অভিযাত্রার মতোই এক ব্যাপার। গেন্ডারিয়া থেকে আর্মি স্টেডিয়াম যেতে যেতে স্যারের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা হলো। জিজ্ঞেস করলাম শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের আত্মকথার বইটির বিষয়ে। তিনি বলছিলেন এর সম্পাদনার সময় মূল রচনায় গীতার উদ্ধৃতি মিলিয়ে দেখার জন্য কী পরিশ্রম করতে হয়েছে, বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। আবার মজা করে বললেন, ‘ফয়েজ আহমদ আমাকে বলতেন – তোমার এই করে করেই সময় চলে যায়।’ স্যার বলছিলেন, ‘এতসব কাজের ভিড়ে নিজের লেখা আর কখন হলো!’ বাংলা গদ্যের উৎপত্তি নির্দেশ বিষয়ে নতুন আবিষ্কার যে গবেষক আনিসুজ্জামানের; নিজের লেখা বিষয়ে তাঁর এতটা কুণ্ঠা আমাকে বিস্মিত করেছে। আর বিনয়ের পরিসর পণ্ডিতের প্রভা কীভাবে বাড়িয়ে চলে তা অনুধাবনে এসেছে আমার। সে-সন্ধ্যাযাত্রায় আমার প্রয়াত শিক্ষক স্বপ্না রায়ের প্রসঙ্গও উঠল। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের বাংলার এই অধ্যাপিকা পিএইচ.ডি করেছেন আনিসুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে। ছাত্রীর আকস্মিক প্রয়াণের পর 888sport apk download apk latest version জানাতে থাকতে না পারার আক্ষেপ ঝরছিল তাঁর কণ্ঠে। আর মুহূর্তেই আমার 888sport app download for androidে এলো ২০১১-তে বাংলা একাডেমির সম্মানসূচক ফেলোশিপ গ্রহণ করতে এসে স্যারের আরেক ছাত্রী শেখ হাসিনা বলছিলেন, ‘আমার একটু দ্রুত যেতে হবে। আপনারা নিশ্চয় জানেন আমাদের শিক্ষক আনিস স্যারের জামাতা সুমন হঠাৎ মারা গেছেন। আমি স্যারের বাসায় যাবো।’ ভাবছিলাম অধ্যাপক স্বপ্না রায় থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত – একজন শিক্ষক আনিসুজ্জামানের বিশাল শিক্ষার্থী-পরম্পরার কথা, যারা একজন শিক্ষককে অ্যাকাডেমিক বৃত্তের বাইরেও হৃদয়ের সুকোমল উষ্ণতায় জড়িয়ে রাখেন সারাজীবন। একজীবনে একজন শিক্ষকের এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে!
সেই যে স্বরূপের সন্ধানে পড়েছি কৈশোরে, সেই একই বিষয়ের বিস্তার ঘটতে দেখেছি নতুন উপলব্ধিতে, নতুন ব্যাখ্যায় ইহজাগতিকতা ও 888sport app বইয়ে। এতে অনুধাবনসম্ভব এক শতাব্দীসমান বয়সী আনিসুজ্জামানের অভিযাত্রা। গন্তব্য বদল হয়নি তাঁর কিন্তু পথে পথে পাথর জমেছে ঢের। আনিসুজ্জামানও নিজেকে শানিত করেছেন ক্রমশ। মৌলবাদীদের হত্যার হুমকি মাথায় নিয়ে তিনি তাই ‘আমরা কি এক সংকটের মুখোমুখি’ শীর্ষক বক্তৃতায় বলতে পারেন সময়ের সাহসদীপ্র কথামালা –
যে দেশ এরা চায়, সে-দেশ 888sport apps নয়। ১৯৭১ সালে 888sport appsের যে ভাবমূর্তি আমাদের মনে জায়গা করে নিয়েছিল, তার সঙ্গে এদের স্বদেশের ভাবমূর্তির একেবারেই কোনো মিল নেই। তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বদেশ হয়তো 888sport appsের সীমানার বাইরে গেলে পাওয়া যাবে, কিন্তু এখানে নয়। এখানে, 888sport appsে, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত 888sport appsকে রক্ষা করার জন্যে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব।
(চট্টগ্রামে আনিসুজ্জামান-প্রদত্ত ‘অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ স্মারক বক্তৃতা, ২০১৬’)
আনিসুজ্জামান চলে গেলেন। তারপর এই শীতগ্রস্ত সময়ে আমাদের প্রার্থনা আর কী হতে পারে?
অনন্য বসন্তজাতক আনিসুজ্জামানের নামে এই বাংলায় নামুক আরো বসন্ত, বহু বসন্ত।