লারা ভ্যাপনাইয়ার
888sport app download apk latest version : হাসান ফেরদৌস
তাঁর সর্বশেষ 888sport alternative link, বৃহৎ তাঁবুতে লুদমিলা ইউলিৎস্কাইয়া তাঁর গ্রন্থের শিরোনামের মতোই এক সুবিশাল বিষয়বস্ত্ত তাঁর বিবেচনায় এনেছেন। লুদমিলা এই গ্রন্থে এমন নিরাসক্ত ও ব্যাপক আয়োজনে সোভিয়েত ইউনিয়নে ভিন্নমতাবলম্বীদের অভিজ্ঞতার বিষয়টি তাঁর কাহিনির কেন্দ্রবিন্দু করেছেন, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। 888sport cricket BPL rate শতকের রম্নশ-888sport live footballের একজন সেরা লেখক লুদমিলা। সোভিয়েত আমল থেকেই নিজের ভিন্ন মতামতের জন্য তিনি সুপরিচিত। সোভিয়েত-উত্তর আমলেও তাঁর রাজনীতি বদল হয়নি। তিনি এখনো ভিন্নমতাবলম্বী, ভস্নাদিমি পুতিনের তিনি একজন কট্টর সমালোচক।
লুদমিলার গ্রন্থটি, যা পলি গ্যাননের যোগ্য হাতে অনূদিত হয়ে আমাদের হাতে এসেছে, তার শুরম্ন পঞ্চাশের দশকের সোভিয়েত ইউনিয়নে। সে-কাহিনি বিসত্মৃত হয়েছে পরবর্তী তিন দশক জুড়ে। নববইয়ের দশকে এই আন্দোলন যখন তুঙ্গে, সে-সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়। এই দীর্ঘ সময়ে যারা ভিন্নমতাবলম্বী আন্দোলনে যুক্ত হন, তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য অভিন্ন ছিল না। সে-কথার ব্যাখ্যায় লুদমিলা লিখেছেন, ‘এদের কেউ কেউ ছিলেন ন্যায়বিচারের পক্ষে, কিন্তু কখনো তারা দেশের স্বার্থ-বিরম্নদ্ধ অবস্থান নিয়েছিলেন। আবার কেউ কেউ ক্ষমতাসীন মহলের বিপক্ষে ছিলেন, অথচ কম্যুনিজমকে সমর্থন করতেন। কেউ কেউ খ্রিষ্টবাদের পক্ষে, কেউবা জাতীয়তাবাদের। লিথুনিয়া বা পশ্চিম ইউক্রেনের মুক্তি চায়, এমন লোকও ছিল। আর ছিল ইহুদিরা, যাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল দেশত্যাগ।’
ভিন্নমতাবলম্বী এসব ব্যক্তি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গোপনে তাদের কার্যক্রম চালাতেন, যদিও প্রকাশ্য জমায়েত যে একেবারে হতেন না, তা নয়। সোভিয়েত বুদ্ধিজীবীদের একাংশ তাঁদের অপ্রকাশিত গ্রন্থের খসড়া বা পা-ুলিপি গোপনে বিদেশে পাচার করতেন, কখনো-কখনো তা ‘সামিজদাত’ প্রক্রিয়ায় নিজেরা ছেপে গোপনে বিলির ব্যবস্থা করতেন। মূল লক্ষ্য ছিল নিজেদের পক্ষাবলম্বন করে এমন মানুষের 888sport free bet বৃদ্ধি, প্রতিরোধের চক্রটি বাড়ানো। এতে বিপদের নানা সম্ভাবনা ছিল। জেল-জুলুম তো ছিল, আরো ছিল সাইবেরিয়ায় নির্বাসন, বা পাগলাগারদে নির্জনাবাস। রাজনৈতিক প্রতিরোধের প্রতি অকৃত্রিম এমন লোকের অভাব ছিল না, তবে সবাই যে খুব সাহসী ছিলেন, সে-কথা ভাবারও কোনো কারণ নেই। কেউ-কেউ শুধু ফ্যাশন হিসেবে,
সোভিয়েত-ব্যবস্থা থেকে খানিকটা দূরত্ব নির্মাণে ভিন্নমতাবলম্বনের পথ অনুসরণ করতেন। রসুইঘরে রাজনৈতিক তর্কে মেতে উঠলেও তাঁদের মাথায় রাখতে হতো সে-ঘরের দেয়ালের নিচে লুকানো গোপন মাইক্রোফোনের কথা।
লুদমিলা এই গ্রন্থে সামিজদাতের পেছনে সে-সময়ের রাজনৈতিক কর্মীরা কী পরিমাণ যত্ন ও পরিশ্রম দিতেন, তার বিসত্মারিত বিবরণ দিয়েছেন। এ এমন এক সময়ের কথা, যখন ফটোকপির সুযোগ ছিল না, ডিজিটাল ফটোগ্রাফির তো প্রশ্নই ওঠে না। কার্বন পেপারের নিচে অতিপাতলা কাগজ রেখে টাইপ করা হতো, সব মিলিয়ে বড়জোর গোটাবিশেক কপি বানানো হতো এভাবে। এখন ভাবুন, সলঝেনিৎসিনের ‘গুলাগ আরখিপেলাগো’র মতো ঢাউস বই, তার বিশ কপি বানাতে কী পরিমাণ সময়, যত্ন ও পরিশ্রম করতে হয়েছিল। এর ওপর ছিল বিপদের সম্ভাবনা। আপনার অ্যাপার্টমেন্টে হয়তো কোনো কেজিবির এজেন্ট হঠাৎ সে-বইয়ের দু-এক পাতা খুঁজে পেল, তখন জেলে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প থাকত না। সন্দেহ নেই, এই বিপদ সত্ত্বেও সোভিয়েত ভিন্নমতাবলম্বীরা লিখিত বা মুদ্রিত শব্দের শক্তিতে প্রবল রকম আস্থাবান ছিলেন।
গঠনগতভাবে তার এই ‘বৃহৎ তাঁবু’ একটি গাছের মতো। নাতিদীর্ঘ ভূমিকার পর রয়েছে ছয়টি অধ্যায়, যাকে বলা যায় এই বৃক্ষের গুঁড়ি, গ্রন্থের বাকি অধ্যায়গুলো এই গুঁড়িকে অনুসরণ করে ভিন্ন-ভিন্ন দিকে বিসত্মৃত।
এই গুঁড়িতে আমরা পরিচিত হই তিন বন্ধুর সঙ্গে। ইলিয়া, মিখা ও সানিয়া, এই তিন আবাল্য বন্ধু, তাদের অনুসন্ধিৎসু মনের জন্য যেমন, তেমন সমাজে অন্য সবার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না-পারার জন্য একে অপরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। মিখা চশমা-পরিহিত ইহুদি কবি। সানিয়া এতটা অনুভূতিপ্রবণ যে, একবার স্কুলের এক দাঙ্গাবাজ ছেলে তার মুখের ওপর নোংরা কার্পেট ছুড়ে দিলে খেলার মাঠে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আর ইলিয়া এদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘদেহী। সবকিছুতেই সে বিশাল আয়তনে, ব্যক্তিত্বে, এমনকি শিশ্নের মাপেও। তেরো বছরের ইলিয়া সত্মালিনের মৃত্যুর পর তার অমেত্ম্যষ্টিক্রিয়ায় ঠেলাঠেলিতে ঘেমে একশা হয়ে সানিয়ার অ্যাপার্টমেন্টে এসে তার স্নানঘরে ঢুকলে ১৩ বছরের সানিয়ার প্রথমে যা চোখে পড়ে তা হলো ইলিয়ার বৃহদাকার পুরম্নষাঙ্গ। ‘এই পুরম্নষাঙ্গ তো শুধু জলত্যাগের জন্য নয়।’ এমনকি সানিয়ার বৃদ্ধা মাতামহ পর্যমত্ম লক্ষ করে, রোগা পটকা এই বালক ইতোমধ্যে পুরম্নষ হওয়ার সব যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো শ্বাসরম্নদ্ধকর সমাজে ভিন্ন মাত্রার এই তিনজন কীভাবে, কী অবলম্বন করে বয়ঃপ্রাপ্তি অর্জন করবে? স্কুলের এক উৎসাহী শিক্ষকের মাধ্যমে তাদের হাতেখড়ি হয় 888sport live footballের সঙ্গে, যার ভেতর দিয়ে নিজেদের আবেগ ও ভিন্ন চিমত্মার প্রবাহে তারা অভ্যসত্ম হয়ে ওঠে। লুদমিলার 888sport alternative linkের প্রথম অংশে রয়েছে এই তিন বালকের বয়ঃপ্রাপ্তির কাহিনি। ষষ্ঠ অধ্যায়ের সমাপ্তি হয় এই তিন বালকের – ততদিনে তারা কিশোর – প্রথমবারের মতো নিষিদ্ধ গ্রন্থের সঙ্গে পরিচিতির মাধ্যমে। সেই গ্রন্থটি ছিল অরওয়েলের ‘১৯৮৪’। 888sport alternative linkটির সরলরৈখিক বিবরণ এখানেই শেষ। পরবর্তী অধ্যায়গুলিতে – সে-গাছের শাখা-প্রশাখাগুলোকে লুদমিলা কিছুটা অবিন্যমত্মভাবে বিভিন্ন সময় ও স্থানে নিয়ে যান, কোনো নির্দিষ্ট সময়রেখা অনুসরণ না করেই। এই গঠনগত জটিলতা সত্ত্বেও লুদমিলা তাঁর চরিত্রগুলোকে অকারণে জটিল করে তোলেন না। বস্ত্তত, তাঁর প্রতিটি প্রধান চরিত্র এত সরল যে, তাদের আলোকভেদ্য স্বচ্ছ মনে হয়। এই গ্রন্থে লুদমিলার মূল লক্ষ্য সরল, সরাসরি গল্প বলা বা অনেক
গল্প-পাঠকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়া। অধিকাংশ গল্পই বৈঠকি ঢঙে, লেখক যেন বলছেন, আরে শুনেছিস কী কা- হয়েছে?
গল্পের মধ্য পর্যায়ে রয়েছে ইলিয়া ও তার স্ত্রী ওলগার সম্পর্কের বিবরণ, তবে সে-সম্পর্কের কেন্দ্রেও রয়েছে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিভিন্ন কার্যক্রম। এই গ্রন্থের 888sport app 888sport promo codeচরিত্রের মতো ওলগাও পার্শ্বচরিত্র, অথবা সহযোগী চরিত্র। মিখা, যার চরিত্র প্রায় একজন সমেত্মর মতো, সে গণকল্যাণের লক্ষ্যে যে নিজেকে আত্মাহুতি দিতে প্রস্ত্তত। আর তৃতীয় চরিত্র সানিয়া, তার আশ্রয় হয় গানে। এই তিনজন ছাড়াও আরো একগুচ্ছ চরিত্রের সঙ্গে পাঠকের পরিচয় হয়, যারা এই তিনজনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত না হয়েও কাহিনির প্রয়োজনে গুরম্নত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
যেমন, এদের একজন হলেন এক মনোচিকিৎসক, নিজের ইচ্ছার বিরম্নদ্ধে যে একজন সামরিক বাহিনীর ভিন্নমতাবলম্বী জেনারেলকে পাগলাগারদে পাঠায়। সেই জেনারেলের একমাত্র অপরাধ, সোভিয়েত সরকারের কার্যাবলির প্রতি তার অসমেত্মাষ। আমরা আরো পরিচিত হই এক ‘র্যা ডিকাল’ চিত্রকরের সঙ্গে, এক দূর গ্রামে কেজিবি থেকে লুকিয়ে থাকার সময় সে সরোবরে স্নানরতা অতি বৃদ্ধা তিন রমণীকে লুকিয়ে-লুকিয়ে দেখে। ‘কিঞ্চিত বিব্রত, কিন্তু তবু এই তিন বুড়ির দিকে থেকে চোখ সরাতে পারে না সে।’ এই দৃশ্যে সে হঠাৎ এতটাই অনুপ্রাণিত হয়ে পড়ে যে, একের পর এক তাদের ছবি এঁকে ফেলে। সেই ছবি বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে ‘পর্নোগ্রাফি’ বিদেশে পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করে। আমরা আরো পরিচিত হই এক রমণীর সঙ্গে, যে নিজের নপুংসক প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সহোদরার বিয়ের ব্যবস্থা করে। তারপর ‘গুলাগ আরখিপেলাগো’র এক মাইক্রোফিল্ম পাঠানোর ব্যবস্থা করে। অনুমান করম্নন তো কীভাবে সে মাইক্রোফিল্ম পাঠানো হয়?
এসব গল্প রম্নশ পাঠকদের কাছে সম্ভবত পরিচিত, কারণ অনেক গল্পই সত্য কাহিনির ভিত্তিতে লিখিত। আবার অনেক চরিত্র রয়েছে যারা ইতিহাসের পরিচিত নাম, অনেক পাঠকই তাদের সহজেই চিনতে পারেন। এসব নানা চরিত্রের সমাবেশে এমন এক ভৌতিক ভূদৃশ্য নির্মিত হয় যেখানে একসময় যারা মৃত ছিল তারা যেন অনায়াসে হেঁটে বেড়ায়। প্রতিটি চরিত্রের ক্ষেত্রেই অন্য যে-জিনিসটি লক্ষণীয় তা হলো তারা প্রত্যেকেই জীবনের একটা পর্যায়ে এক ত্রিমুখী সড়কের সামনে এসে দাঁড়ায়, যেখান থেকে তাদের যার-যার নিজের পথ নির্বাচন করে নিতে হয়। কিন্তু বর্হেসের ‘গার্ডেন অব ফর্কিং পাথে’ যেমন চরিত্রগুলো
ওপর-নিচ দুদিকে প্রবাহিত এমন সড়কে গমনে সমর্থ হয়, লুদমিলার 888sport alternative linkে সে-রাসত্মার মুখ কেবল একদিকে। চরিত্রগুলোকে
যার-যার মতো করে সেই একমুখী পথই নির্বাচন করতে হয়।
যদি আপনি কেজিবির সঙ্গে দালালি করার সিদ্ধামত্ম নিয়ে থাকেন, তাহলে আজীবন সে-পথই আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। নিজের বন্ধুকে প্রতারণা করেননি, এমন বিকল্প কোনো
পৃথিবী আপনার জন্য অবশিষ্ট থাকবে না। আর আপনি যদি দালালি না করার পথ বেছে নেন, তাহলে কর্তৃপক্ষ আপনাকে নিশ্চিহ্ন করার সব পথ অনুসরণ করবে, আপনার জন্যও কোনো বিকল্প পৃথিবী নেই যেখানে আপনি লুকাবেন।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.