রামকিঙ্কর : কল্লাজ থেকে কংক্রিট l মিনতি ঘোষ l এবং মুশায়েরা l কলকাতা l ৩০০ টাকা
জয়া অবশেষে ‘সুজাতা’য় রূপান্তরিত হলো। সেই সুজাতা, যার প্রেম ও করুণায় ক্ষুধা থেকে জেগে উঠেছিল অমৃত। গৌতম বুদ্ধ আর সুজাতার কাহিনি সকলেরই জানা। এই রূপান্তরণের রূপকার একজন ভাস্কর। তাঁর নাম রামকিঙ্কর। আর এই সৃজনের মধ্য দিয়ে ভারতের আধুনিক ভাস্কর্যে নতুন যুগের সূচনা হলো। রামকিঙ্কর কিন্তু এই ঐতিহাসিক পুরাণকল্পের কথা ভেবে কাজটি করেননি। যাঁর প্রজ্ঞাময় কল্পনার আলোয় কলাভবনের নতুন ছাত্রী সপ্তদশী এসথার জয়ন্তী জয়া আপ্পাস্বামীর ছিপছিপে দীর্ঘায়ত অবয়বটির সিমেন্ট-কংক্রিটের ভাস্কর্য-মূর্তি বুদ্ধের জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল, তিনি নন্দলাল বসু। রামকিঙ্কর সারাজীবন তাঁকেই পরম শিক্ষক বলে সম্মান করেছেন। আর তাঁর কাছে ঈশ্বরপ্রতিম ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। এরকম বললে কি খুব অতিরঞ্জন হয়ে যে, তিনটি প্রজ্ঞা-প্রবাহের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছিল রামকিঙ্করের ‘সুজাতা’! সময়টা খুব সম্ভব ১৯৩৭। আবারো বলি – ভারতের প্রথম আধুনিকতাবাদী ভাস্কর্য গড়ে উঠল।
রামকিঙ্কর কলাভবনে ছাত্রজীবন শেষ করে শিক্ষকতায় যুক্ত হয়েছেন কয়েক বছর আগে। কিন্তু তাঁর কোনো স্বাধীনতা নেই। আর্থিক সংগতিও প্রায় শূন্য। অনেক প্রতিরোধের মধ্যেই শিক্ষাভবনের পাশে দীর্ঘ ইউক্যালিপটাস বৃক্ষের বনানীর মধ্যে গড়লেন ‘জয়া’র আদলে এক দীর্ঘায়ত মানবী-মূর্তি। তখনকার শান্তিনিকেতনের অনেক মানুষজনই এর মধ্যে সৌন্দর্য কিছু দেখতে পাননি। তাই নিন্দেমন্দ হলো প্রচুর। অবশেষে রবীন্দ্রনাথের নজরে এলো এই মূর্তি। রামকিঙ্করকে ডেকে পাঠালেন তিনি। বললেন – ‘এই আশ্রম তুই ভরিয়ে দে তোর এরকম কাজ দিয়ে।’ রামকিঙ্কর পেয়ে গেলেন তাঁর অনাবিল সৃজনের ছাড়পত্র।
এই প্রসঙ্গটির অবতারণা করলাম আমরা একটি বইয়ের আলোচনা প্রসঙ্গে। বইটির নাম রামকিঙ্কর : কল্লাজ থেকে কংক্রিট। লেখক মিনতি ঘোষ। প্রকাশক ‘এবং মুশায়েরা’। লেখক-পরিচিতি থেকে জানি – এটিই ‘তাঁর লেখা প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ’। কিন্তু তাঁর লেখার সাধনা যে খুব কম দিনের নয় তা বোঝা যায় বইটিতে তাঁর লিখনশৈলী দেখলে। রামঙ্কিরের জীবনভিত্তিক 888sport alternative linkোপম এই গ্রন্থে 888sport live chatীর জীবনের সমস্ত তথ্য যথাযথ রেখে তিনি যে-আখ্যান বিন্যাস করেছেন তা যে-কোনো পাঠককেই হয়তো গভীরে স্পর্শ করবে। এর মন্ময়তা যথার্থই প্রজ্ঞাদীপ্ত।
এই লেখায় আমরা আলোচ্য গ্রন্থের আখ্যান-বিন্যাসের আলোকে রামকিঙ্করের সৃজনের দীপ্তি অনুধাবনের চেষ্টা করব। রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে তাঁর বিদ্যালয়ের অঙ্গ হিসেবে ‘কলাভবন’ প্রতিষ্ঠা করেন ১৯১৯ সালে। নন্দলাল বসুর ওপর অর্পিত হয় ‘কলাভবনে’ শিক্ষণের পরিপূর্ণ দায়িত্ব। এই শিক্ষাধারায় শিক্ষিত হয়ে অনেক 888sport live chatী বিভিন্নভাবে শুধু ভারত নয়, বিশ্বের 888sport live chatকে আলোকিত করেছেন। তাঁদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য – বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়, রামকিঙ্কর, সত্যজিৎ রায়, কে. জি. সুব্রহ্মণ্যন,
কৃষ্ণা রেড্ডি প্রমুখ। রামকিঙ্করের হাতেই আধুনিকতাবাদী ভাস্কর্যের প্রথম মুক্তি ঘটে। একইসঙ্গে তিনি ছিলেন একজন অতি বড়মাপের চিত্র888sport live chatীও। শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যে সংশ্লিষ্ট থেকেও তিনি একে অতিক্রম করে গেছেন। ‘সুজাতা’ ভাস্কর্যটি এই অতিক্রমণের প্রথম দিকচিহ্ন। বিশেষত ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে।
শান্তিনিকেতনের সমস্ত চিত্রী ও ভাস্করের তুলনায় রামকিঙ্করকে নিয়ে চর্চা হয়েছে সবচেয়ে বেশি। 888sport live chatতাত্ত্বিক রচনা ছাড়াও তাঁকে নিয়ে যত 888sport alternative link বা নাটক লেখা হয়েছে, আমাদের দেশে এর তুলনা বিরল। মিনতি ঘোষের আলোচ্য 888sport alternative linkোপম রচনাটি এরই শেষতম দৃষ্টান্ত। নন্দলাল বা বিনোদবিহারীকে নিয়েও এত কাজ হয়নি। কী হতে পারে এর কারণ? রামকিঙ্করের জীবনে প্রগাঢ় এক নাটকীয়তা ছিল। তাঁর জন্ম ২ মে ১৯০৬, প্রয়াণ ১ আগস্ট ১৯৮০। তাঁর এই ৭৪ বছরের জীবনে কলা888sport live chat ও মানবতার উদ্বোধনে তিনি যে অবদান রেখেছেন, সারাবিশ্বেই এর তুলনা বিরল। বাংলার বাঁকুড়া জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে তাঁর জন্ম এক নিরক্ষর, অন্ত্যজ, অতিদরিদ্র ক্ষৌরকার পরিবারে। অসামান্য প্রকৃতিদত্ত এক প্রতিভা নিয়ে জন্মেছিলেন তিনি। তথাপি সারাজীবন তুলনাহীন লাঞ্ছনা ও অবমাননা সহ্য করে সৃজনের কণ্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। উচ্চকোটির উচ্চবর্ণের হিন্দু-সমাজ, শান্তিনিকেতনের তথাকথিত বিদগ্ধ পরিশীলিত মানুষের কাছ থেকেও যে ঘৃণা, অবজ্ঞা ও উপেক্ষা তিনি পেয়েছেন, তা তাঁর মধ্যে চিরদিন এক দুঃখের আগুন জ্বেলে রেখেছিল। সেই আগুনে দগ্ধ হতে হতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে তাঁর ব্যক্তি ও 888sport live chatী সত্তা। পরিবৃত ঘৃণাকে তিনি প্রেমে রূপান্তরিত করেছেন তাঁর সৃজনের মধ্যে। এটাই হতে পারে একটা কারণ যে, জীবনের শেষ পর্যায়ে ও জীবনান্তে তিনি অজস্র মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। তাঁকে নিয়ে যত কাজ হয়েছে, তা সেই ভালোবাসারই প্রকাশ।
‘সুজাতা’তে রামকিঙ্কর রূপনির্মাণের এক স্বতন্ত্র আঙ্গিক উদ্ভাবন করেছিলেন। তা আদিমতা-সংশ্লিষ্ট অন্তর্মুখী গভীর একবোধ থেকে সঞ্জীবিত। পাশ্চাত্য 888sport live chatে আধুনিকতাবাদী ভাবধারার উন্মীলনে আদিমতার প্রগাঢ় এক ভূমিকা ছিল। ১৯০৫ সালের এক্সপ্রেশসিজম ও ১৯০৭ সালের কিউবিজমের বিকাশের আদিমতাই ছিল প্রধান এক প্রস্থানবিন্দু। আমাদের দেশের চিত্রকলায় এর প্রথম প্রকাশ ঘটেছিল রবীন্দ্রনাথের ছবিতে, সেজন্যেই তাঁকেই গণ্য করা হয় ভারতীয় চিত্রে আধুনিকতাবাদের প্রথম পথিকৃৎ বলে। আদিমতার প্রতি রামকিঙ্করের এই ঝোঁক অনেকটাই জন্মসূত্রে অর্জিত, আর কিছুটা কলাভবনে বিশ্ব888sport live chat অধ্যয়নের ফল। কলাভবনে শিক্ষা সমাপনান্তে ‘সুজাতা’র আগেও তিনি যে-কটি ভাস্কর্য করেছেন, তাতেও আদিম অভিব্যক্তির প্রকাশ ছিল। ১৯২৯-এ করা ‘কচ ও দেবযানী’ যদিও একটি পৌরাণিক বিষয় এবং অবনীন্দ্রনাথের ছবি অবলম্বনে করা, তবু এর প্রকাশেও আদিমতার বিশেষ এক মাত্রা ছিল। ১৯৩৩ সালে দিল্লির মডার্ন স্কুলে বাইরের দেয়ালে রিলিফ-পদ্ধতিতে তিনি একটি সরস্বতী-মূর্তি গড়েছিলেন। ওই সময় ছ-মাসের জন্য তিনি ওই স্কুলে শিক্ষকতায় যুক্ত ছিলেন। এই পৌরাণিক দেবী-মূর্তিতেও ধ্রুপদী উদারতার বদলে তিনি এনেছিলেন আদিমতার অভিব্যক্তি। এটিকেই বলা হয় তাঁর প্রথম মুক্তাঙ্গন ভাস্কর্য। এরপর ১৯৩৫-এ শান্তিনিকেতনের উত্তরায়নে ‘শ্যামলী’-বাড়ির প্রবেশপথের দুপাশে তিনি করেছিলেন সাঁওতাল মানব ও মানবীর দুটি দণ্ডায়মান মূর্তি। এখানেও আদিমতার সঙ্গে ঘনকবাদী (কিউবিস্ট) তল-বিভাজন লক্ষণীয়।
নির্মাণের এই ধারাবাহিকতাই স্বাতন্ত্র্যে ভাস্বর, পরিণত এক রূপ পেয়েছিল ‘সুজাতা’য়। অবয়বের এই যে দীর্ঘায়ত উপস্থাপনা, রূপের স্বাভাবিকতাকে পরিহার করে ‘গ্রটেস্ক’ বা কিমাকারের মধ্য দিয়ে নন্দনের যে ব্যতিক্রমী ভুবনের উন্মীলন বিশ্বজুড়ে প্রাচীন 888sport live chatে এর বহু দৃষ্টান্ত আছে। পাশ্চাত্যের আধুনিকতাবাদ এই রূপরীতিকে নানাভাবে কাজে লাগিয়েছে। পিকাসো এই আঙ্গিকে তাঁর ভাস্কর্য ‘স্টিক স্ট্যাচু’ করেছিলেন ১৯৩১ সালে। জ্যাকোমেত্তি এই আঙ্গিকটিকেই তাঁর ভাস্কর্যের প্রধান এক অবলম্বন করে তুলেছিলেন। রামকিঙ্কর এই আঙ্গিকের মাধ্যমে ‘সুজাতায়’ দেশীয় সংবিতের যে উদ্বোধন ঘটালেন, তা-ই পরিপূর্ণ নান্দনিক বিভায় উন্মীলিত হয়েছিল তাঁর ১৯৩৮-এর ‘সাঁওতাল পরিবার’ ভাস্কর্যে। ভারতের আধুনিকতাবাদী ভাস্কর্য সাম্প্রতিক জীবনপ্রবাহের সঙ্গে চিরন্তনের সংযোগ ঘটাতে পারল।
ভারতবর্ষ ভাস্কর্যের দেশ। কিন্তু ভাস্কর্যের সেই আলোকিত ধারাবাহিকতা ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল ত্রয়োদশ শতাব্দীর পর। লৌকিক স্তরে প্রত্ন-888sport live chatের একটি ধারাবাহিকতা অবশ্য প্রবহমান ছিল। যা থেকে ষাটের দশকে রসদ সংগ্রহ করেছেন মীরা মুখোপাধ্যায়। সেটা স্বতন্ত্র প্রসঙ্গ। ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যে আধুনিকতার উন্মীলন ঘটতে শুরু করল, তাতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক স্বাভাবিকতাবাদী আঙ্গিকই হয়ে উঠেছিল প্রধান প্রকাশভঙ্গি। তাতে আমাদের ঐতিহ্য বা দেশীয় সংবিতের কোনো প্রকাশ ছিল না। ভাস্কর্যের এই স্থবির নন্দনহীন পরিমণ্ডলে নন্দনের প্রথম আলোক শিখাটি জ্বেলেছিলেন রামকিঙ্কর। ‘সাঁওতাল পরিবারে’র পর ১৯৪৩-এর ‘ধানঝাড়াই’, ১৯৩৮ ও ’৪১-এর রবীন্দ্রনাথের দুটি মুখাবয়ব, ১৯৪১-এর ‘দীপস্তম্ভ’, ১৯৫৬-র ‘কলের বাঁশি’, ১৯৫৩-র ‘গতি’, ১৯৬০-এর দশকে দিল্লির রিজার্ভ ব্যাংক চত্বরে করা ‘যক্ষ-যক্ষী’ – এরকম আরো অজস্র ভাস্কর্যের মধ্য দিয়ে রামকিঙ্কর ভারতের ভাস্কর্যকে বিশ্ব888sport live chatের পরিপ্রেক্ষিতেই এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে গেলেন। জীবনকে তিনি কখনোই ব্যক্তিগত সাংসারিক সীমায় বাঁধতে চাননি। এই সীমান্তহীনতা তাঁর জীবনে দুঃখ এনেছে অনেক। সেই দুঃখকে মথিত করেই উঠে এসেছে তাঁর সৃষ্টি। মধ্যবিত্তসুলভ স্থিতাবস্থার গণ্ডিকে তিনি বারবারই ভেঙেছেন। শেষ জীবনে রাধারানী দেবীর সঙ্গে ‘লিভ টুগেদারে’র মধ্য দিয়েও তিনি জীবনের এক মুক্ত বাতাবরণকে তুলে ধরেছেন, যার জন্য শান্তিনিকেতন বা আমাদের দেশ তৈরি ছিল না।
প্রাক-আধুনিকতাকে যেভাবে রামকিঙ্কর উত্তর-আধুনিকতায় নিয়ে এসেছেন জীবনযাপনে, নৈতিকতায় ও 888sport live chatসৃষ্টিতে ভাস্কর্য ছাড়াও তা আরো সম্যকভাবে উন্মীলিত হয়েছে তাঁর চিত্রকলায়। ছেলেবেলায় বাঁকুড়ায় তাঁর দেশের বাড়িতে তিনি কল্লাজ-পাথর ঘষে ঘষে রং বের করে তা দিয়ে ছবি আঁকতেন। তখন ব্রিটিশ ঐতিহ্যের স্বাভাবিকতাবাদী আঙ্গিকের চলছিল। সে-ছবি যেমন তিনি দেখতেন, তেমনি নব্যভারতীয় ঘরানার ঐতিহ্য-আশ্রিত ছবি দেখারও সুযোগ হতো তাঁর বিভিন্নপত্র পত্রিকায়। রামকিঙ্কর তরুণ বয়সে স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু জীবনযাপনে বা 888sport live chatসাধনায় কখনোই কোনো সংস্কার বা বাঁধা গণ্ডিকে প্রশ্রয় দেননি তিনি। কাজেই দুই আঙ্গিকেই ছবি এঁকে গেছেন ছেলেবেলা থেকে। ১৯২৫ সালে ১৯ বছর বয়সে রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে যখন শিক্ষার্থী হিসেবে শান্তিনিকেতনের কলাভবনে পৌঁছেছিলেন, তখন নন্দলাল তাঁর ছবি দেখে বলেছিলেন, তাঁর তো নতুন করে শিখবার কিছু নেই। তবু দু-তিন বছর থেকে যেতে বলেছিলেন। সেই দু-তিন বছর তাঁর জীবনে শেষ হয়নি কখনো।
কলাভবনের প্রথম পর্যায়ে রামকিঙ্কর নন্দলালের শিক্ষার অনুষঙ্গেই হয়তো নব্য-ভারতীয় আঙ্গিকে কিছু ছবি এঁকেছিলেন। তেলরঙে তাঁর দক্ষতা ছিল। যদিও নন্দলাল বসু ছিলেন তেলরঙের একেবারেই বিরোধী, এটি একটি বৈদেশিক মাধ্যম বলে; কিন্তু রামকিঙ্করের তেলরং চর্চায় তিনি কোনো বাধা দেননি। রামকিঙ্কর নিজের মনের আনন্দে দেশীয় ও আবিশ্ব রূপরীতিকে মিলিয়েছেন তাঁর ছবিতে। ষাটের দশক তাঁর অনুশীলনের কাল। এই পর্যায়ে বাংলা তথা ভারতের চিত্রকলায় যেসব উৎসের সমন্বয় ঘটেছে Ñ তার মধ্যে প্রধান হলো স্বাভাবিকতাবাদী চিত্রধারা, অবনীন্দ্রনাথ ও নন্দলাল উদ্ভাবিত নব্যভারতীয় ধারা, আবার এই দুই প্রবাহের সীমাকে প্রসারিত করার জন্য রবীন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথ ও যামিনী রায় উদ্ভাবিত স্বতন্ত্র পথ। এই ভিত্তির ওপরই উন্মীলিত হয়েছে ১৯৪০-এর দশকের প্রতিবাদী চেতনার চিত্রধারা। রামকিঙ্কর চল্লিশের চিত্রধারার যেমন অবিচ্ছেদ্য অংশ, তেমনি এর প্রধান প্রেরণাস্থলও। বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় রামকিঙ্করের সতীর্থ। চিত্রকলায় তিনি বেছে নিয়েছিলেন ধ্রুপদী উদ্ভাসের পথ। আর রামকিঙ্কর গিয়েছিলেন আদিমতাসম্পৃক্ত প্রতিবাদী প্রকাশের দিকে। কিন্তু যেহেতু প্রকাশের ক্ষেত্রে তিনি কোনো পরিসীমায় আবদ্ধ থাকতে চাইতেন না, তাই তাঁর প্রতিবাদী রোমান্টিকতার মধ্যেও ঝলসে উঠত ধ্রুপদী উদারতা। ভাস্কর্য ও চিত্র – উভয় ক্ষেত্রেই তিনি মুক্তির দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন। এরকম একজন 888sport live chatীব্যক্তিত্বের স্বরূপ উন্মোচন করা খুব কঠিন। মিনতি ঘোষ তাঁর বইয়ে এ-কাজটি করেছেন অত্যন্ত বিদগ্ধতার সঙ্গে অন্তরের 888sport apk download apk latest version ও ভালোবাসা থেকে। আখ্যান-বিন্যাসে তাঁর দক্ষতা অনস্বীকার্য। একটার পর একটা পর্দায় রামকিঙ্করের জীবনকে তিনি যেমন উন্মীলিত করেছেন, তেমনি তাঁর 888sport live chatসৃষ্টিকেও উদ্ভাসিত করেছেন ভাষার নিপুণ কারুকাজে। পারিপার্শ্বিক যে অজস্র চরিত্র এসেছে, বাঁকুড়ার, শান্তিনিকেতনের, দিল্লির বা 888sport app স্থানের – সেইসব চরিত্র বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে সামগ্রিক জীবনপ্রবাহ ও সময়কে তিনি উদ্ভাসিত করেছেন। বইটি 888sport live footballসৃষ্টি হিসেবেও বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.