দেখেছি সূর্যের আলো…

মোবাশ্বির আলম মজুমদার

‘কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। যদি তারা স্থান পরিবর্তনও করে। গতকাল, আজ এবং আগামীকাল তাঁরা সবসময়ই আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন।’ কথাগুলো আহমেদ নাজিরের। 888sport live chatগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের কাছে নাজির পেয়েছেন পিতৃস্নেহ। 888sport live chatনির্মাণের দীক্ষা, জীবনাচরণের নির্দেশনা। চল্লিশের দশকে 888sport appsের 888sport live chatান্দোলনের পথিকৃৎ জয়নুল আবেদিনের সহযাত্রী 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদ কলকাতা থেকে ফিরে এসে 888sport appয় থিতু হন সে-সময়ে। এ-প্রদর্শনীতে 888sport live chatগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের বন্ধু, শিক্ষক, সহপাঠীদের কাজের সঙ্গে সাম্প্রতিক কিছু কাজ প্রদর্শনের আয়োজন করেছেন আহমেদ নাজির। 888sport appsের 888sport live chatান্দোলনে ছাপচিত্রের জনক সফিউদ্দীন আহমেদের প্রদর্শিত কাজগুলো আমাদের দেখা হলেও তাঁর শিক্ষক মুকুল দে, আবদুল মঈন, বন্ধু ও সহপাঠী হরেন দাস, এসএন ঘোষাল, শ্রাক্ষানান্তনাথ মিত্র, সুশীল চন্দ্র সেন, সুশীল দাশ, মুরালী ধর টালী প্রমুখের কাজ আমরা ইতিপূর্বে দেখিনি। এখানে বলা প্রয়োজন, 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদ সারাজীবন তাঁর শিক্ষক ও বন্ধুদের আঁকা কাজ আগলে রেখেছেন। চারুকলা ইনস্টিটিউটে অধ্যাপনার সময়ে সেসব কাজকে উদাহরণ হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থাপন করতেন। মুকুল দে ও আবদুল মঈনের শিক্ষকতার সময়ে 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদ সর্বভারতীয় পর্যায়ে ছাপচিত্রে বিশিষ্ট হয়ে উঠেছিলেন। সফিউদ্দীন আহমেদের আঁকা ছাপচিত্র এখনো দর্শক, 888sport live chatকলা-শিক্ষার্থী সবার কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। তাঁর আঁকা তেলরং-জলরং ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাজ এ-প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে। যেমন, ১৯৪৫ সালে আঁকা  ‘হোমওয়ার্ড’, ১৯৩৯ সালে অাঁকা ‘জড়জীবন’, ১৯৪৬ সালে আঁকা ‘সাঁওতাল রমণী’, ১৯৪৭ সালে আঁকা ‘মেলার পথে’। ছবিগুলো বাস্তবধর্মী অঙ্কনরীতির চূড়ান্ত পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে বলা যায়। 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদ নিজের সন্তুষ্টির জন্য অাঁকতেন। দর্শকদের জানাতেন না। আমরা বিশ্লেষণে দেখতে পাই, তাঁর জীবদ্দশায় তিনি খুবই কম প্রদর্শনী করেছেন। কাজের প্রতি গভীর মনোযোগ এবং 888sport live chatে রস ও নন্দনবোধ তৈরিতে তিনি ভীষণ মনোযোগী ছিলেন। প্রদর্শিত কাজে সে-আভাস দেখা যায়। তাঁর কাঠখোদাই মাধ্যমের ছাপচিত্র ‘ফেস অব অ্যা ফারমার’ ছবির অগ্রভাগে কৃষকের মুখ, গলায় তাবিজ, মুখের ভাঁজ, কপালে রেখা, চুলের ওপর আলোর উপস্থিতি বাস্তবে দেখা কৃষকেরই প্রতিচ্ছবি। ছবিটি ১৯৪২ সালে করা। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে ঘরবাড়ি, মাঠে কর্মরত কৃষক, হালচাষরত কৃষকের সঙ্গে গরুগাড়ি গ্রামীণ জনপদের প্রতিরূপ হিসেবে আমরা দেখতে পাই। এ-ছবিতে 888sport live chatীর প্রতীকী প্রকাশভঙ্গির পাশাপাশি বাস্তবধর্মী মানুষের অবয়ব নির্মাণের চূড়ান্ত পর্যায় আমরা দেখতে পাই। ‘বাঁকুড়া ল্যান্ডস্কেপ’ শিরোনামে কাঠখোদাই কাজে ঘরবাড়ি, গাছের ঝোপ, দূরের আকাশ সব বিষয়ে আলোছায়ার তীব্র উপস্থাপন স্পষ্ট। আকাশ-নির্মাণে তিনি আড়াআড়ি সূক্ষ্ম রেখায় চলমান আকাশ নির্মাণ করেছেন। ঘরের আঙিনায় মাটি ও ঘাসের পার্থক্য তৈরি করেছেন আলো ও ছায়ার ব্যবহারে। সাদাকালো কাঠখোদাই চিত্রে কালো রংই মূল রং হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৯৪৪-এ আঁকা আরো একটি চেনা ছবি ‘হোমওয়ার্ডে’র কথা আমরা আলোচনায় আনি। আকাশ, সার-সার তালগাছের দাঁড়িয়ে থাকার সঙ্গে চিত্রতলের বাঁপাশ থেকে আসা রাখাল তার মোষের দল নিয়ে এগিয়ে যায় নিজগৃহে। ঘরে ফেরার টানটান গতি। প্রকৃতির পরম যত্ন – এই দুরকম অনুভূতি দর্শককে নাড়া দেয়। 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদ প্রকৃতির চঞ্চল, স্থির, গতি অনুধাবন করতেন। ধ্যানমগ্ন থাকতেন প্রকৃতিপাঠে। তিনি এ-সময় কাজে বাস্তবরীতি ভেঙে জ্যামিতির আশ্রয়ে ক্যানভাসে নির্মাণ শুরু করেন। সরল চিত্র-রচনার মাধ্যমে পরবর্তীকালে 888sport live chatকলার নতুন গন্তব্যে পৌঁছিয়েছেন 888sport appsের 888sport live chatান্দোলনকে। 888sport live chatকলার এ নতুন পথপরিক্রমায় 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদ আমাদের নিরীক্ষার পথ দেখিয়েছেন। এ-প্রদর্শনীর উল্লেখযোগ্য ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে করা 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদের শিক্ষক মুকুল দে-র কাজে রেখার প্রয়োগ এবং ড্রাইপয়েন্ট মাধ্যমের নিখুঁত সৃষ্টি বিস্ময়কর। মুঘল মিনিয়েচার চিত্রকলার রীতিতে রেখাপ্রধান এ-কাজে চিত্রতলে স্থানের ব্যবস্থাপনা, গতি, আলোছায়ার ব্যবহার দর্শকদের বিস্মিত করে। 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদ তাঁর ছবিতে মুকুল দে-র কাজের কৌশল প্রয়োগ করেন সচেতনভাবেই। মুকুল দে-র কাজে সূক্ষ্ম রেখা আর বিষয় নির্বাচনে প্রকৃতি ও মানব দেহাবয়বের প্রাধান্য বোঝা যায়। 888sport live chatকলার ব্যাকরণ মেনে মুকুল দে 888sport live chatকর্ম সৃষ্টি করেছেন। 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদের অন্য শিক্ষক আবদুল মঈনের কাজগুলোতে নির্দিষ্ট সন-তারিখ উল্লেখ না থাকলেও পেনসিলে অাঁকা বাস্তবধর্মী রেখাচিত্রগুলো চল্লিশের দশকে সফিউদ্দীন আহমেদের ছাত্র থাকাকালীন সময়ের কাজ বলে ধারণা করা যায়। আবদুল মঈনের দুটি লিথোগ্রাফের মধ্যে ‘তিনটি খরগোশ’ ছবিটি ১৯৩৩ সালে করা। এটির প্রতিলিপি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। লিথোগ্রাফি মাধ্যমে করা নিসর্গচিত্রে আলোকচিত্রের আবহ উপস্থিত। ক্যামেরায় তোলা ছবির ইমেজকেই তিনি লিথোগ্রাফিতে রূপ দেন। প্রদর্শনীতে আবদুল মঈনের ১৯৩৪ সালে করা কাঠখোদাই কাজের মাঝে আলোর সমান বিতরণে ছবি বাস্তব হয়ে উঠেছে। ছবিটির নির্দিষ্ট শিরোনাম না থাকলেও মানুষ ও পুরনো অলংকারধর্মী দালানের অবয়ব দেখে মুঘলরীতির কাজ মনে করা যায়।

এবারে আমরা ফিরে যাই 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদের বন্ধু, সহপাঠীদের কাজের দিকে। হরেন দাশ, যিনি সর্বভারতীয় পর্যায়ে ছাপচিত্রে চল্লিশের দশকে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। সাঁওতাল পল্লির উৎসব বিষয়ে কাঠখোদাই কাজে হরেন দাশ ফিগারের মাঝে বাস্তবরীতির পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিপ্রেক্ষিত নির্মাণ করেছেন। দুই জোড়া 888sport promo codeর নৃত্যভঙ্গি, ঢোল ও বাঁশি হাতে আরো দুটি ফিগার ঢোলক ও বাঁশি বাজাচ্ছে, পেছনে শনে-ছাওয়া ঘরের আদল প্রকৃতি রচনার মাধ্যমে পাহাড়ি গ্রামের উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছে। এসএন ঘোষাল 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদের সহপাঠী। তাঁর কাজ 888sport live chatকলা অঙ্গনে কোনো অবস্থান তৈরি করেনি। কিন্তু লিথোগ্রাফি মাধ্যমের কাজে রেখা ও ফিগার ড্রইংয়ে মুনশিয়ানা বোঝা যায়। শ্রাক্ষানান্তনাথ মিত্রের লিথোগ্রাফের বিষয়ে ভিন্নতা আছে। তাঁর ১৯৭৪ সালে করা ছবিতে বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে নদীপাড়ের চায়ের দোকান, নৌযান, মানুষ। লক্ষণীয় যে, এসব বিষয়কে তিনি তুলে ধরেছেন অনেকদূর থেকে। সুশীল চন্দ্র সেন নিসর্গকে বিষয় করে লিথোগ্রাফি প্রিন্টে দেখিয়েছেন ছবি কতটা  বাস্তবধর্মী করা যায়। সুশীল দাশ, মুরালী ধর টালী দুজনই অত্যন্ত নিখুঁত অংকনরীতিতে বিষয় নির্মাণ করেছেন।

এ-প্রদর্শনীতে 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদের 888sport live chatীপুত্র আহমেদ নাজির নিজস্ব করণকৌশলে ডিজিটাল প্রিন্ট মাধ্যমে একই শিরোনামের কাজ রেখেছেন। তাঁর প্রিন্টের শিরোনাম ‘জার্নি অব অ্যা গ্রেট মাস্টার’। আমরা ইতিপূর্বে প্রিন্ট মাধ্যমে নাজিরের প্রিয় বিষয় ‘ওয়ার ফাইল’ নিয়ে কাজ দেখেছি। সে-সময়ের কাজের আলোছায়া ও চিত্রতল-সজ্জাকে অব্যাহত রেখেই এবারের প্রদর্শনীর কাজগুলো করা। বাবাকে নিয়ে 888sport live chatকর্ম সৃষ্টি প্রসঙ্গে আহমেদ নাজির মনে করেন, ‘বাবার প্রস্থানকে আমি মনে করি স্থান পরিবর্তন। কখনোই বলি না, ইহলোক ত্যাগ করেছেন। এটি হলো এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া।’ আহমেদ নাজির বাবার হাতের ছাপ, ব্যবহৃত চিরকুট, অবসরভাতা গ্রহণের রসিদ ও দুমড়ানো হিসাবের খাতার প্রতিচ্ছবি ব্যবহার করেছেন। 888sport live chatী সফিউদ্দীন আহমেদের এচিং চিত্রে ব্যবহৃত মোটিফ ব্যবহার করেছেন কোনো কোনো কাজে।  এ-প্রদর্শনীতে একসঙ্গে তিন প্রজন্মের সৃষ্ট 888sport live chatকর্মের আঙ্গিক দেখতে পাবেন দর্শক। ৯২তম জন্মদিনে 888sport live chatগুরুর প্রতি অনাবিল 888sport apk download apk latest versionর্ঘ্যের আয়োজন আমাদের সমৃদ্ধ করবে। গ্যালারি চিত্রকের আয়োজনে ২০ জুন শুরু হওয়া এ-প্রদর্শনী শেষ হয় ৫ জুলাই।