দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের 888sport live footballচিন্তা : কয়েকটি পুরনো প্রসঙ্গ

সৌভিক রেজা

বলা যায়, খুবই নিরীহ-ধরনে 888sport liveটি লিখেছিলেন অজিত চক্রবর্তী; 888sport liveের শিরোনাম ছিল – ‘কাব্যের প্রকাশ’; তাও আবার বেরিয়েছিল বঙ্গদর্শনে; শ্রাবণ ১৩১৩ বঙ্গাব্দে। খ্রিষ্টাব্দের হিসাবে দাঁড়ায় : ১৯০৬। কী বক্তব্য ছিল সেখানে? এই যে সাধারণ মানুষ, বলা উচিত পাঠক-পাঠিকা 888sport app download apk সম্বন্ধে যে একধরনের অস্পষ্টতার অভিযোগ করেন, সে-বিষয়টি নিয়েই একটি আলোচনা করার চেষ্টা করেছিলেন অজিত চক্রবর্তী।  888sport app download apkর দুর্বোধ্যতার এমন অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কতজনই না আলোচনা করে গেছেন! রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে বুদ্ধদেব বসু; এলিয়ট থেকে অডেন। সে-আলোচনা এখনো থামেনি। বলা যায় তার রেশ এখনো 888sport live footballে বেশ জমজমাটভাবেই রয়েছে – থাকবেও। অজিত চক্রবর্তী যেটি বলতে চেয়েছিলেন, যা কিনা সবসময়ের জন্যে সত্যি, সেটি হচ্ছে ‘888sport app download apk’ 888sport live footballের একটি স্বতন্ত্র শাখা, কাজেই তার প্রকার এবং প্রকাশ স্বাভাবিকভাবেই আলাদা হবে। এটি বোঝাতে গিয়ে চমৎকার উদাহরণ টেনেছিলেন প্রাবন্ধিক। বলছেন : ‘মনে কর, যেন আমাদের চেতনা … একটা মন্দির। তাহার বাহিরে গাছপালা, পথঘাট, লোকজনের অবিরাম যাতায়াত তুমি সুস্পষ্ট দেখিতে পাইতেছ, কিন্তু

তাহার ভিতরে কী চলিতেছে, সে-সম্বন্ধে তুমি সচেতন নও। দৈবাৎ দুটো একটা শব্দ কি ঘণ্টার শব্দে কিংবা একটা আলোর ক্ষণিক রশ্মিপাতে তুমি চম্কিয়া উঠিতেছ – অনেকগুলো অজানা জিনিসের ছবি যেন চোখের নিমিষে তোমার সম্মুখ দিয়া চলিয়া যাইতেছে।’ এরপরই অজিত চক্রবর্তী তাঁর পাঠক-পাঠিকাদের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেছিলেন : ‘(যদি) সেই ক্ষণিক উপলব্ধিগুলোর কথা তোমায় ভাষা ফুটাইয়া তুলিতে হয়, তুমি কি কর?’ উত্তরটাও তিনি পাঠকের তরফে জানিয়ে দিয়ে বলেছিলেন : ‘কেবল আভাসে-ইঙ্গিতে, তোমার কিরূপ লাগিয়াছে, এইটুকু জানান ছাড়া তোমার আর উপায় নাই।’ এটুকু হচ্ছে, যাকে আমরা বলতে পারি, ভূমিকারও ভূমিকা; তারপরই অজিত চক্রবর্তী যেন খোলস থেকে বেরিয়ে এসে জানালেন, ‘আমরা যাহা জানি, স্পষ্টই জানি, তাহার ভাষা গদ্য – কিন্তু আমরা যাহা জানি, অথচ সম্পূর্ণরূপে জানি না, যাহাকে অনুভূতির মধ্য দিয়া হাতড়াইয়া বলিতে হয়, তাহার ভাষা পদ্য।’ এর বহু বছর পরে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর 888sport app download apkকে পদ্য হিসেবে অভিহিত করে একে তাঁর নিজেকেই একেবারে নিজের মতো করে দেখার চমৎকার এক ‘জলজ দর্পণ’ বলে শনাক্ত করেছিলেন। সেইসঙ্গে এটিও পাঠক-পাঠিকাকে জানিয়ে দিতে ভোলেননি : ‘জলজ কথাটি ভেবেচিন্তেই বসিয়েছি।’ শক্তি চট্টোপাধ্যায় বলে কথা, যিনি 888sport app download apkয় (অথবা, তাঁর ভাষায় পদ্যে), কুচকাওয়াজ শেষে পুলিশকেও রবীন্দ্রসংগীত গাইয়ে ছেড়েছিলেন! যাকে বলতে পারি আইডিয়া বা কবির ভাব। শুধু ভাব দিয়ে যেমন 888sport app download apk লেখা হয় না, তেমনি শুধুই শব্দও একটি 888sport app download apkকে প্রকাশ করতে পারে না। বরং শব্দ একটি ভাবকেই ভাষায় রূপান্তর করে। কবি আর তাঁর পাঠক-পাঠিকার যোগাযোগটা এভাবেই সম্পন্ন হয়ে থাকে। অজিত চক্রবর্তীও বলেছিলেন, ‘এইজন্য আমি যে-কোন কথা লিখিতে যাই, যে-কোন ছবি অাঁকিতে যাই, যে-কোন অনুভূতিকে সঙ্গীতে প্রকাশ করিতে যাই, সে সকলেরি মধ্যে আর একটা জিনিস লাগিয়া থাকে – একটা ভাব – যে এই সমস্ত অনুভূতিজালকে, চিন্তাজালকে, অাঁকিয়া তুলিতেছে।’ অজিত চক্রবর্তীর ভাষায়, ‘কাব্যের প্রকাশ আসলে ঐ ভাবের প্রকাশ এবং ঐ ভাব আমাদের গভীর সচেতনতার মধ্যে হইতে তিলে তিলে ফুটিয়া উঠে।’ প্রাবন্ধিক পূর্বে কবি একটা বিষয় জানেন কিন্তু সম্পূর্ণ জানেন না – বলে যে-মতামত দিয়েছিলেন এবার দেখতে পাচ্ছি, সেখান থেকে সরে এসেছেন। প্রকৃত অর্থে তো তাই-ই। কোনো বিষয় সম্পর্কে গভীরভাবে সচেতনতা ছাড়া একজন কবির পক্ষে কাব্য-রচনা রীতিমতো বিপজ্জনক। যে-আইডিয়া বা ভাবের কথা বলা হয়ে থাকে, সেটি আকাশ থেকে শ্রাবণের বৃষ্টির ধারার মতো কবির মাথায় ঝরে পড়ে না। কবি যখন বলেন, ‘আমি কেবলই স্বপন করেছি বপন বাতাসে’ – তখনো তার একটা বাস্তব ভিত্তি কিন্তু থেকেই যায়, যার উৎপত্তি কবির ওই সচেতনতা থেকে। তবে বাস্তব-সত্যের সঙ্গে কাব্যের সত্যের একটা পার্থক্য রয়েছে। সেই পার্থক্য তো আমরা বাস্তব-সত্যের মধ্যেও দেখতে পাই। সত্যের রূপ তো আর একটা নয়। যে-কারণে যদি প্রশ্ন করা যায় : সত্য কাকে বলে? তাহলে উত্তর দিতে গিয়ে পদে-পদে বিপদে পড়তে হয়। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য তাঁর ‘888sport live footballের সামগ্রী’ 888sport liveে বলেছিলেন : ‘যাহাকে আমরা সত্য নাম দিয়াছি… যাহা আমাদের বুদ্ধির অধিগম্য বিষয়, তাহাকে ব্যক্তিবিশেষের নিজত্ববর্জিত করে তোলাই একান্ত দরকার।’ যে-কারণে কবিকেও বলতে হয় : ‘দিনশেষে দেখি ছাই হল সব হুতাশে।’ রবীন্দ্রনাথ-কথিত অতিদরকারি এই সত্য নিয়ে অবশ্য 888sport live footballিকের কারবার তেমন-একটা নেই। মহামানবেরও থাকে কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ থেকে যায়। প্রভু যিশু হয়তো সে-কারণেই মহামান্য পিলেতের প্রশ্নের উত্তরে চুপ থেকেছিলেন। অজিত চক্রবর্তীর অবশ্য চুপ থাকার উপায় ছিল না কিংবা যদি বলা হয় সেরকম উদ্দেশ্যও তাঁর ছিল না – তাহলেই বোধকরি তাঁর ওপর সুবিচার করা হয়! তাঁর কাছে মনে হয়েছিল যে কাব্যের সত্য ‘পরমরহস্যময়’। আর সেই রহস্যময়তাকে স্পর্শ করবার জন্যে কবিকে ‘জীবনের গভীরতায় প্রবেশ’ করতে হবে, তার ‘সুখ-দুঃখ-হর্ষশোকের বিচিত্র’ লীলাকে প্রত্যক্ষ করে যেতে হবে। স্পষ্ট করে না-বললেও, আমরা বুঝে নিতে পারি যে এখানে, অজিত চক্রবর্তী, প্রেরণার পাশাপাশি, একজন কবির অভিজ্ঞতাকেও  খানিকটা হলেও, গুরুত্ব দিতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁর মূল কথাটি ছিল এমন : ‘কাব্যের সত্য … অখন্ড … পরমরহস্যময়। কারণ, সেই সত্যের অজ্ঞাতে বাস করিয়া কবি নানা রত্নরাজি তাহার ঘর হইতে তুলিতেছেন, বুদ্ধি দ্বারা, বিচারবিতর্ক দ্বারা বাহিরের সত্যকে তিনি সত্য বলিয়া গ্রহণ করেন নাই। তিনি জানেনও না, তাঁহার মধ্যে কোন্ সত্যের প্রকাশ অহরহ কম্পিত।’

 

দুই

এই নিরীহ 888sport liveটিকেই কিনা সমালোচনার যাবতীয় অস্ত্র নিয়ে এসে ঘায়েল করার চেষ্টা করেছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। তবে সেটি ওই বঙ্গদর্শনের পাতায় নয়, তিনি বেছে নিয়েছিলেন প্রবাসীকে। দ্বিজেন্দ্রলালের কাছে মনে হয়েছিল অজিত চক্রবর্তীর 888sport liveটি মূলত ‘অস্পষ্ট কাব্যের সমর্থন’ করে লেখা। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, দ্বিজেন্দ্রলাল কবিদের দুভাগে ভাগ করেছিলেন – এক ভাগে স্পষ্ট কবি, অন্যভাগে অস্পষ্ট কবি! আর অস্পষ্ট কবিদের অগ্রণী হচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শুধু সমালোচকের কথা বলি কেন, কবিরাও পারেন বটে! অজিত চক্রবর্তী নাকি তাঁর 888sport liveে ‘যাঁহারা স্পষ্ট কবি… তাহাদিগকে… ব্যঙ্গ করিতেও ছাড়েন নাই।’ ব্যঙ্গ করেছিলেন, তাও আবার অজিত চক্রবর্তীর মতো মানুষ? কী বলেছিলেন তিনি? ‘কাব্যের প্রকাশ’ 888sport liveের শেষাংশে অজিত চক্রবর্তী এই মত প্রকাশ করেছিলেন যে, ‘এ কথা কবুল করিতেই হইবে… সকল কবিই… অত্যদ্ভুত নহেন।’ তিনি অবশ্য ‘miraculous’ অর্থেই ‘অত্যদ্ভুত’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। আর সেইসঙ্গে এটিও উল্লেখ করেন : ‘অনেকেই সাদা কথা ছন্দ মিলাইয়া মিলাইয়া বয়ান করেন – ইহাদের বর্ণিমে খুব চমৎকার। কিন্তু পৃথিবীতে ইহাদিগের স্পষ্টতা সত্ত্বেও কেহই ইহাদিগকে আজও বড় বলিল না।’ অর্থাৎ অজিত চক্রবর্তী বলতে চেয়েছিলেন যে, যাঁরা দেশ-বিদেশে বড়ো কবি হিসেবে স্বীকৃত, তাঁরা মূলত এই ভাব-প্রকাশের অস্পষ্টতারই কবি। এটাকে বলতে পারি – অজিত চক্রবর্তীর একটি পর্যবেক্ষণ। এর মধ্যে সত্য যে একেবারেই নেই তা কিন্তু নয়। যে-কারণে মালার্মে বড়ো কবি, রিলকে বড়ো কবি; আমাদের রবীন্দ্রনাথ বড়ো কবি কিংবা জীবনানন্দ-অমিয় চক্রবর্তী বড়ো কবি। এখানে অজিত চক্রবর্তীর ‘ব্যঙ্গ’ ঠিক কোথায় – সেটি অন্য কেউ না-বুঝলেও, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন। আর তাঁর সেই বুঝোনদারি দেখাতে গিয়ে তিনি তাঁর ‘কাব্যের অভিব্যক্তি’ 888sport liveে অপ্রাসঙ্গিকভাবে টেনে আনলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অন্যতম জীবনীকার নবকৃষ্ণ ঘোষ বলেছিলেন, ‘ক্ষুব্ধ বা বিচলিত হইলে দ্বিজেন্দ্র ভাষার সংযম রক্ষা করিতে পারিতেন না।’ কাব্যের অভিব্যক্তি 888sport liveে দেখা যায়, শুধু ভাষার সংযমই নয়, দ্বিজেন্দ্রলাল রুচির সীমানাও কখনো-কখনো মাত্রাহীনভাবে অতিক্রম করে গিয়েছিলেন। অজিত চক্রবর্তীর 888sport liveটিকে তিনি ‘রবীন্দ্রবাবুর মতের প্রতিধ্বনি’ হিসেবে উল্লেখ করতেও দ্বিধা করেননি। রবীন্দ্রনাথের মতামতের কথা উঠছে কেন? রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘888sport live footballের বিচারক’ 888sport liveে প্রকৃত সত্যের সঙ্গে 888sport live footballের সত্যের যে একটা বিশেষ  পার্থক্য রয়েছে সেটি বেশ জোরের সঙ্গে উল্লেখ করেছিলেন। এই 888sport liveে (প্রকাশ : আশ্বিন ১৩১০) তিনি উদাহরণ টেনে বলেছেন : ‘888sport live footballের মা যেমন করিয়া কাঁদে প্রাকৃত-মা তেমন করিয়া কাঁদে না। তাই বলিয়া 888sport live footballের মা-র কান্না মিথ্যা নহে।’ এরপরই তিনি তাঁর 888sport live football-চিন্তার সূত্রের একটা বড়ো রকমের সিদ্ধান্তের কথা সবাইকে জানিয়েছিলেন : ‘888sport live football ঠিক প্রকৃতির আরশি নহে। শুধু 888sport live football কেন, কোনো কলাবিদ্যাই প্রকৃতির যথাযথ অনুসরণ নহে। প্রকৃতিতে প্রত্যক্ষকে আমরা প্রতীতি করি, 888sport live footballে এবং ললিতকলায় অপ্রত্যক্ষ আমাদের কাছে প্রতীয়মান। অতএব এ স্থলে একটি অপরটির আরশি হইয়া কোনো কাজ করিতে পারে না।’ শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘জলজ-দর্পণ’ কথাটি এবার নিশ্চয়ই স্বস্তিশোভন পাঠক-পাঠিকাকে খানিকটা ভরসা জোগাবে। আর ঠিক এইখানটাতেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দ্বিজেন্দ্রলালের 888sport live football-চিন্তার তফাৎ।

একদিকে দ্বিজেন্দ্রলাল মনে করতেন, ‘কাব্যের জড়তা সাধারণত আইডিয়ার জড়তা হইতেই প্রসূত হয়। যেখানে আইডিয়া স্পষ্ট, সেখানে ভাষা প্রাঞ্জল। যেখানে আইডিয়া অনেকাংশে কবির নিজের নিকটেই প্রচ্ছন্ন, সেখানে ভাষা অবশ্য অস্পষ্ট হইতে হইবে। কিন্তু সেটা বৃহৎ আইডিয়ার ফল নহে, অস্পষ্ট আইডিয়ার ফল।’ অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথের ধারণা : ‘888sport live football যাহা আমাদিগকে জানাইতে চায় তাহা সম্পূর্ণরূপে জানায়… প্রকৃতির অপক্ষপাত প্রাচুর্যের মধ্যে মন যাহা করিতে চায় 888sport live football তাহাই করিতে থাকে।’ এখানেই এর শেষ না। রবীন্দ্রনাথ আরও বলেছেন : ‘মন প্রকৃতির আরশি নহে; 888sport live footballও প্রকৃতির আরশি নহে। মন প্রাকৃতিক জিনিসকে মানসিক করিয়া লয়; 888sport live football সেই মানসিক জিনিসকে 888sport live footballিক করিয়া তোলে।’ এখানে ভাবের প্রসঙ্গ অথবা তার স্বচ্ছতা-অস্বচ্ছতা রবীন্দ্রনাথের কাছে বিবেচ্য নয়; কিংবা এটিও বিবেচ্য নয় যে, 888sport live footballিকের মন তাঁর আইডিয়াকে কতটুকু ধারণ করতে পারে। বরং নিজের ভাবকে 888sport live footballিকের মন কতটুকু ‘888sport live football’ করে তুলতে পারে – সেটিই রবীন্দ্রনাথের কাছে বড়ো ব্যাপার। আর এটি কোনো-একটি প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে না; লেখকের নিরন্তর প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়েই তার সার্থকতা প্রকাশিত হতে থাকে। যে-কারণে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন শুধু একটি গাছকে প্রকৃতি বলা যায় না বরং তার চারপাশের বৈচিত্র্যকে নিয়েই প্রকৃতি একটি প্রাকৃতিক আয়তন পায়।

 

তিন

লেখাই বাহুল্য, রবীন্দ্রনাথের 888sport live football-চিন্তার একেবারে বিপরীতে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অবস্থান। এঁদের দুজনের মধ্যে কার চিন্তা সঠিক কিংবা বেঠিক সেটি আমাদের কাছে এই এতো বছর বাদে গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং তাঁদের 888sport live footballিক-চেতনার দৃষ্টান্ত তুলে ধরাটাই আমাদের প্রধান কর্তব্য হয়ে ওঠে। রবীন্দ্রনাথের 888sport live football-চিন্তা এবং তাঁর 888sport live footballকর্ম, বিশেষ করে 888sport app download apk, দ্বিজেন্দ্রলালের কাছে ‘প্রচ্ছন্ন’ ঠেকে, কখনো-কখনো হেঁয়ালি, এমনকি অত্যধিক দুর্বোধ্যতার প্রসঙ্গ তুলতে তিনি সংকুচিত নন। ‘কাব্যের অভিব্যক্তি’ 888sport liveটি প্রকাশিত হয় বাংলা ১৩১৩ সনের কার্তিক মাসে (১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে), ততোদিনে রবীন্দ্রনাথের ক্ষণিকা থেকে শুরু করে নৈবেদ্য, খেয়া – এসব কাব্য প্রকাশিত। অথচ দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তাঁর 888sport liveে উদাহরণ হিসেবে টেনে আনলেন কবির সোনার তরীকে (কাব্য হিসেবে প্রকাশ : ১৮৯৪)! সকলেরই জানা যে, ‘সোনার তরী’ 888sport app download apkটি ১২৯৮ সনের ফাল্গুনে শিলাইদহে রচিত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বেছে-বেছে এই 888sport app download apkকেই কেন দ্বিজেন্দ্রলাল রবীন্দ্রকাব্যে অস্পষ্টতার সেরা উদাহরণ হিসেবে পাঠকের সামনে হাজির করলেন? তাঁর তরফে যুক্তি হচ্ছে, দ্বিজেন্দ্রলাল বলছেন : ‘আমাদের দেশে… অস্পষ্ট কবিদের অগ্রণী শ্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।… রবিবাবুর ভক্তগণ রবিবাবুর ‘সোনার তরী’কে তাঁহার সকল 888sport app download apkর প্রায় শীর্ষে স্থান দেন। সভায় সভায় ইহার আবৃত্তি হইয়াছে। একজন সমালোচক  এইটি পড়িয়া লিখিয়াছিলেন যে, তাঁহার সোনার লেখনী অক্ষয় হউক।’ এরপর দ্বিজেন্দ্রলাল রায় 888sport app download apkটির একটি ‘গদ্যার্থ’ দাঁড় করালেন; গদ্যার্থ, নাকি সত্যের খাতিরে বলা উচিত কু-অর্থ। 888sport app download apkটির গদ্যার্থ-পদ্যার্থ আর স্বভাবসংগতি যাচাই করে দ্বিজেন্দ্রলাল এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন, ‘রবীন্দ্রবাবু এই 888sport app download apk লিখিতে যেন কলম এলাইয়া দিয়াছেন। সুর নাই, তাল নাই, অথচ এই 888sport app download apk পড়িয়া তাঁহার অন্ধ ভক্তগণ মোহিত। কেন? কারণ শেলী বোঝা যায় না, এও বোঝা যায় না।’ রবীনদ্রনাথের 888sport app download apkর 888sport live footballগুণ বিচার করতে বসে মাঝে-মাঝেই তাঁর ভক্তদের হাত ধরে টান দিয়েছেন দ্বিজেন্দ্রলাল। এর নেপথ্যের কারণ বোঝার জন্যে খুব-বেশি বুদ্ধি খরচের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিশ্রম করে দ্বিজেন্দ্রলাল জানিয়েছিলেন, ‘ওয়ার্ড্সওয়ার্থ বিলাতের এক অতি দুর্বোধ্য কবি।… পরের ভাষায় পরের দেশের প্রায় সর্বাপেক্ষা দুর্বোধ্য 888sport app download apk বুঝিতে পারি। কিন্তু আমার মাতৃভাষায় আমার বাঙ্গালীভ্রাতার 888sport app download apk বুঝিতে গলদ্ঘর্ম হইতে হয়।’ এটি মানতে পারার মানুষই নন দ্বিজেন্দ্রলাল। কারণ তিনি ছিলেন, সুরেশচন্দ্র সমাজপতির ভাষায়, ‘আমাদের জাতীয়তার পুরোহিত। তিনি বাঙালীর পথপ্রদর্শক। তিনি স্বদেশীতন্ত্রের কবি।’ সে-কারণেই দ্বিজেন্দ্রলালকে বলতে হয় : ‘এই যদি ইহাদের বৃহৎভাবের ফল ত বলিতে হইবে, যে, সে ভাব বড়ই বৃহৎ। কারণ এ 888sport app download apkটি দুর্বোধ্য নহে – অবোধ্য নহে – একেবারে অর্থশূন্য, স্ববিরোধী।’

চার

‘সোনার তরী’র এই সমালোচনাটিকে দ্বিজেনদ্রলাল নিজেই ‘একটু দীর্ঘ ও তীব্র’ হিসেবে স্বীকার করেছিলেন। তার কারণ, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় বিশ্বাস করতেন, ‘888sport app download apk হেঁয়ালী নহে। 888sport app download apk মিষ্ট ছন্দোবদ্ধ নহে। যে 888sport app download apk পড়িতে পড়িতে হৃদয় আলোড়িত হয়, উৎসাহে আনন্দে, কারুণ্যে হৃদয় ভরিয়া যায়, যাহা প্রকৃতির বা মানব-হৃদয়ের সূচিত্র, যাহা আত্মাকে প্রসারিত করে ও বহির্জগতের দিকে মহাসহানুভূতিতে টানিয়া লইয়া যায়, তাহাই কাব্য।’ আর সেই কাব্যই যদি সাধারণের কাছে দুর্বোধ্য মনে হয় তাহলে তো কাব্যের সেই উদ্দেশ্য ‘সুসাধিত হয় না’ – দ্বিজেন্দ্রলাল বরাবরই এরকম ধারণা পোষণ করতেন। তার মানে দাঁড়াচ্ছে : শুধু কাব্যরচনাই নয়, সেইসঙ্গে কাব্যের উদ্দেশ্য সম্পর্কেও, দ্বিজেন্দ্রলাল কবির তরফে একরকমের সচেতনতা প্রত্যাশা করতেন। অন্যদিকে, রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘888sport live footballের উদ্দেশ্য’ (বৈশাখ ১২৯৪) 888sport liveে বলছেন, ‘বিষয়ী লোক বিষয় খুঁজিয়া মরে। লেখা দেখিলেই বলে, বিষয়টা কী?… আমাদের বঙ্গভাষায় 888sport live footballসমালোচকেরা… লেখা পাইলেই তাহার উদ্দেশ্য বাহির করিতে চেষ্টা করেন। বোধ করি তাহার প্রধান কারণ এই, একটা উদ্দেশ্য ধরিতে না পারিলে তাঁহাদের লিখিবার তেমন সুবিধা হয় না।’ রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন, 888sport live football একপ্রকারের সৃষ্টি। আর ‘সৃষ্টির উদ্দেশ্য পাওয়া যায় না, নির্মাণের উদ্দেশ্য পাওয়া যায়।’ তাঁর এই ধারণার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘ফুল কেন ফোটে তাহা কাহার সাধ্য অনুমান করে, কিন্তু ইঁটের পাঁজা কেন পোড়ে, সুরকির কল কেন চলে, তাহা সকলেই জানে। 888sport live football সেইরূপ সৃজনধর্মী; দর্শন 888sport apk প্রভৃতি নির্মাণধর্মী। সৃষ্টির ন্যায়, 888sport live footballই 888sport live footballের উদ্দেশ্য।’ দ্বিজেন্দ্রলাল রায় যেখানে বলছেন, ‘888sport app download apk পড়িতে পড়িতে হৃদয় আলোড়িত হয়, উৎসাহে আনন্দে, কারুণ্যে হৃদয় ভরিয়া যায়, যাহা প্রকৃতির বা মানব-হৃদয়ের সূচিত্র, যাহা আত্মাকে প্রসারিত করে ও বহির্জগতের দিকে মহাসহানুভূতিতে টানিয়া লইয়া যায়’, সেখানে রবীন্দ্রনাথের ভাষ্য হচ্ছে : ‘888sport live footballের প্রভাবে আমরা হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয়ের যোগ অনুভব করি, হৃদয়ের প্রবাহ রক্ষা হয়, হৃদয়ের সহিত হৃদয় খেলাইতে থাকে, হৃদয়ের ও জীবন ও স্বাস্থ্য-সঞ্চার হয়।… 888sport live football অর্থেই একত্র থাকিবার ভাব… মানবকে স্পর্শ করা, মানবকে অনুভব করা।’ আর এভাবে ‘888sport live footballে… সহস্র উদ্দেশ্য সাধিত হয়। কাব্য তথা 888sport live footballে একরকম দ্বৈততত্ত্বকে মান্যতা দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর বিশ্বাস ছিলো এই যে, কাব্য বা 888sport live footballই শুধু নয়, ‘সকল সৃষ্টির মূলে একটা দ্বৈততত্ত্ব আছে।’ তাঁর ‘পথে ও পথের প্রান্তে’র এক জায়গায় রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘যেখানে আমি বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত সেইখানেই আমার মূল্য।’ 888sport live footballের মূল্যও যে ঠিক সেখানটায় এই বিশ্বাস রবীন্দ্রনাথের যেমন ছিল, তেমনি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ও খানিকটা সেরকম ধারণায়ই পোষণ করতেন। দুজনের 888sport live footballধর্মের মধ্যে পার্থক্য যেমন ছিল, তেমনি সাদৃশ্যও কম ছিল না।  তাঁর ‘কাব্যের অভিব্যক্তি’ শীর্ষক 888sport liveেও দ্বিজেন্দ্রলাল স্বীকার করেছিলেন যে, রবীন্দ্রনাথ ‘অনেক সত্যই উৎকৃষ্ট 888sport app download apk লিখিয়াছেন।’ আবার দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মন্দ্র কাব্যের (প্রথম প্রকাশ ১৯০২) একটি উৎকৃষ্ট সমালোচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ; যেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘দ্বিজেন্দ্রলালবাবু বাংলাভাষায় একটা নূতন শক্তি আবিষ্কার করিয়াছেন… তাহা ইহার গতিশক্তি।’ সেইসঙ্গে তিনি এ-ও যোগ করতে ভোলেননি, ‘প্রতিভাসম্পন্ন লেখকের সেই কাজ। ভাষাবিশেষের মধ্যে যে কতটা ক্ষমতা রয়েছে তাহা তাঁহারাই দেখাইয়া দেন।’ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘আষাঢ়ে’র (প্রথম প্রকাশ : ডিসেম্বর, ১৮৯৯) সমালোচনায় রবীন্দ্রনাথ ‘ছন্দ এবং মিলের ওপর গ্রন্থকারের… আশ্চর্য দখলে’র কথা অকপটে স্বীকার করে বলেছিলেন, ‘তিনি বাঙালিকে কেবল হাসাইবার জন্য আসেন নাই, সেইসঙ্গে তাহাদিগকে ভাবাইবেন এবং মাতাইবেন।’ কথাগুলি যে শুধু কথার কথা নয়, তার প্রমাণ আমরা নানাভাবে পেয়েছি : ‘দ্বিজু রায়ের হাসির গান লোকের মুখে মুখে ফিরিত।’ – এটি রীতিমতো প্রবাদবাক্যের মর্যাদা পেয়েছিল। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ও আবার রবীন্দ্রনাথের গোরা 888sport alternative linkটির (প্রথম প্রকাশ ১৯১০) একটি ‘সহৃদয় সমালোচনা’ লিখেছিলেন, যা প্রকাশিত হয়েছিল অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণ-সম্পাদিত বাণী পত্রিকায় (আশ্বিন-কার্তিক 888sport free bet ১৩১৭)। সেখানে দ্বিজেন্দ্রলাল এ-888sport alternative link সম্পর্কে লিখেছিলেন, ‘বস্ত্তত এত সুন্দর সামাজিক 888sport alternative link কদাচিৎ নয়নগোচর হয়।… জ্ঞান ও প্রেম, যুক্তি ও অনুভূতি, সহিষ্ণুতা ও বিদ্রোহ এ অপূর্ব 888sport alternative linkের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় জ্বলিয়া উঠিতেছে। আর অপরদিকে স্বার্থসেবা, ক্ষুদ্রতা, হিংসা ও নিষ্ঠুরতা… তাহাদের আরও সমুজ্জ্বল করিয়া তুলিয়াছে।’ উপসংহারে দ্বিজেন্দ্রলাল তাঁর সিদ্ধান্ত টেনেছেন এই বলে যে : ‘এ 888sport alternative link বাঙ্গলা 888sport live footballের গৌরব। সকলেরই… এই 888sport alternative linkখানি পাঠ করা উচিত।’

 

পাঁচ

সমীপসময়ের দুই স্বচিহ্নিত ব্যক্তিত্বের এই ‘অন্যোন্য 888sport apk download apk latest versionবোধের’ নিহিত কারণ সম্পর্কে জরিপযাচাই করেই সুধীর চক্রবর্তী লিখেছিলেন, ‘দুজনেরই ছিল উচ্চকুলজাত অভিজনতা।… 888sport app download apk ও গান রচনা এবং নাট্যপ্রীতি তাঁদের পরস্পরকে কাছে টেনেছিল। দুজনেই বিলাত প্রবাস করেছেন এবং প্রায় একই ইংরাজি স্কচ ও আইরিশ গানে মজেছেন।’ আবার তাঁদের দুজনার মধ্যে পিছুটান বা অগ্রসৃতির জটিল বিভাজন-রেখা যে ছিল না – সেটি বলাও আমাদের উদ্দেশ্য নয়। এই দুজনার কিছু অমীমাংসিত বিষয় শনাক্ত করতে গিয়ে রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় (১৮৯২-১৯৯৫) যুক্তিযুক্তভাবেই বলেছিলেন : ‘রবীন্দ্রনাথ তাঁহার স্বভাবসিদ্ধ অন্তর্মুখী দৃষ্টি হইতে… অতুলনীয় ভাষার ইন্দ্রজালে অনির্বচনীয় ভাবের সৃষ্টি করিতেন।’ আর অন্যদিকে, ‘দ্বিজেন্দ্রলাল ছিলেন স্পষ্টবাদী, বাস্তবপন্থী; তাই তাঁহার প্রকাশধর্মে আবেগটাই প্রধান হইয়া উঠিত, রীতিটা নহে।… লালিত্য তাঁহার কাম্য ছিল না – স্পষ্ট কথা মোটা করিয়া বলিলে সকলেই বুঝিতে পারে – এখানেই ছিল তাঁহার গর্ব।’ সেই আত্মগর্বের গরজ থেকেই দ্বিজেন্দ্রলাল লিখেছিলেন, ‘যদি স্পষ্ট করিয়া লিখিতে না পারেন, সে আপনার অক্ষমতা। তাহাতে গর্বের কিছু নাই। অস্পষ্ট হইলেই গভীর হয় না; কারণ ডোবার জলও অস্পষ্ট, স্বচ্ছ হইলে… অগভীর হয় না; কারণ সমুদ্রের জলও স্বচ্ছ।… অস্পষ্টতা একটা দোষ, গুণ নহে।’ তাঁর 888sport app download apkয়, নাটকে, গানে এই গুণটি নানাভাবে বিচ্ছুরিত হয়ে উঠেছিল :

ক. ‘বিশ্বমাঝে নিঃস্ব মোরা, অধম ধূলি চেয়ে;/ চৌদ্দশত পুরুষ আছি পরের জুতা খেয়ে;/ তথাপি ধাই মানের লাগি ধরণীমাঝে ভিক্ষা মাগি!/ নিজ মহিমা দেশবিদেশে বেড়াই গেয়ে গেয়ে।/ বিশ্বমাঝে নিঃস্ব মোরা, অধম ধূলি চেয়ে।’

(‘জাতীয় সঙ্গীত’, মন্দ্র )

খ.তারেই বলে প্রেম – /যখন থাকে না future-এর চিন্তা,/ থাকে না ক shame – / তারেই বলে প্রেম। যখন বুদ্ধিশুদ্ধি লোপ;/ যখন past all surgery আর যখন/ past all hope/ তারে ভিন্ন জীবন ঠেকে/ যখন ভারি tame – /তারেই বলে প্রেম।’

(‘প্রেমবিষয়ক : প্রেমতত্ত্ব, হাসির গান)

গ. ‘প্রথম যখন ছিলাম কোন ধর্মে অনাসক্ত/ খ্রীষ্টীয় এক 888sport promo codeর প্রতি/ হলাম অনুরক্ত; – / বিশ্বাস হল খ্রীষ্টধর্মে – / ভজতে যাচ্ছি খ্রীষ্টে, – / এমন সময় দিলেন পিতা পদাঘাত এক পৃষ্ঠে!/ – ছেড়ে দিলাম পথটা, বদলে গেল মতটা,/ (কোরাস) অমন অবস্থায় পড়লে/ সবারই মত বদলায়।’

(‘বদলে গেল মতটা’, ওই)

এইসব 888sport app download apkয় ও গানে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ব্যক্তিত্বের অভিক্ষেপ যেভাবে ফুটে উঠেছে সেটি অত্যাশ্চর্য তো বটেই, সেইসঙ্গে অপূর্বরকম উৎকৃষ্ট। বনফুল (১৮৯৯-১৯৭৯) তাঁর 888sport liveে সংগতভাবেই লিখেছিলেন : ‘ব্যঙ্গকার দ্বিজেন্দ্রলাল সত্যই অনন্য। সত্যই তিনি বাংলা 888sport live footballের রঙ্গ-ব্যঙ্গের আসরে অদ্বিতীয়। তাঁহার মতো বিশুদ্ধ গ্রাম্যতাদোষহীন অথচ শাণিত 888sport live footballিক ব্যঙ্গ ইতিপূর্বে কেহ করেন নাই।’

 

ছয়

দ্বিজেন্দ্রলাল-গ্রন্থাবলীর সম্পাদকদ্বয় (ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সজনীকান্ত দাস) তাঁদের ‘ভূমিকা’য় বলেছিলেন : ‘তিনি [দ্বিজেন্দ্রলাল রায়] স্বদেশ ও স্বসমাজ সম্পর্কে যাহা অনুভব করিয়াছেন, অকপটে তাহাই বলিয়া ফেলিয়াছেন।’ সম্পাদকেরা যে মোটেও অতিশয়োক্তি করেননি, তার সপক্ষে এই পঙ্ক্তিগুলোকেই আমরা প্রমাণ হিসেবে দাখিল করতে পারি : ‘এবার হয়েছি হিন্দু, করুণাসিন্ধু/ গোবিন্দজীকে ভজি হে।/ এখন করি দিবারাত্রি/ দুপুরে ডাকাতি/ (শ্যাম) প্রেম-সুধারসে মজি হে।/ আর মুরগী খাই না, কেন না পাই না!/ (তবে) হয় যদি বিনা খরচেই, – / আহা! জান ত আমার স্বভাব উদার/ (তাতে) গোপনে নাহিক অরুচি।’ (‘হিন্দু’)। এই দুই সম্পাদক তাঁদের সেই ভূমিকায় আরো বলেছিলেন : ‘অপ্রিয় সত্য বলিতে তিনি কুণ্ঠিত হন নাই, কাহারও সহিত আপস-মীমাংসায়ও তাঁহার প্রবৃত্তি ছিল না। তিনি ঋজু-মেরুদন্ডের লোক ছিলেন, অত্যধিক নমনীয়তা বা ন্যাকামি মোটেই বরদাশত করিতে পারিতেন না… ফলে তাঁহার শত্রুবৃদ্ধি হইয়াছে। লোকে তাঁহাকে দাম্ভিক ও অহঙ্কারী অপবাদ দিয়া প্রায় একঘরে করিয়াছে। ‘আষাঢ়ে’, ‘মন্দ্র’ ও ‘হাসির গানে’র কবি প্রায় অপঠিত থাকিয়াই বিস্মৃত হইতে বসিয়াছেন।’

 

সাত

‘শুয়ে শুয়ে কষ্টে বাঁচিয়ে/ রহিল নন্দলাল।’ আর সে-কারণেই ‘সকলে বলিল – ভ্যালা রে নন্দ,/ বেঁচে থাক চিরকাল।’ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের (১৯ জুলাই ১৮৬৩ – ১৭ মে ১৯১৩) পূর্ণায়ত জন্মদিন যাপনের গরজে তাঁকে নতুন করে পাঠ করার তাগিদটুকু যেন তৈরি হয়; পাঠক হিসেবে আমাদের নন্দলালপনা নামক কাঙালপনা দূর হয়ে গিয়ে কবির প্রতি একান্ত প্রীতি প্রকাশিত হোক – এটুকুই প্রত্যাশা। r