দ্বিজেন শর্মা 888sport app download apkগাছ

দ্বিজেন শর্মা ছিলেন একজন উদ্ভিদগোত্রের মানুষ – এই কথা কেউ কেউ বিশ্বাস করে আছে। আমিও বিশ্বাস করি বলে যে-কোনো গভীর জঙ্গলে গেলেই দেখতে পাই, দ্বিজেন শর্মা আকাশের দিকে মাথা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন। শর্মার শরীর থেকে ডালপালা ছড়িয়ে যাচ্ছে, হাওয়াই দোল খাচ্ছে নানান বয়েসি পাতা, হলুদ পাতারা টুপ টুপ করে ঝরে পড়ছে।

পাখিরা তো প্রধানত গাছেই বসতি গড়ে। দেখতে পাচ্ছি, দ্বিজেন শর্মা গাছ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বনের মধ্যে, তার সারাগায়ে শুধু পাখি আর পাখি : কিচিরমিচির পাখিজন্ম হচ্ছে। পাখিদের মাতৃভাষায় পাখিরা কথা বলে যাচ্ছে। মৃত্যুর পর দ্বিজেন শর্মার নোটবুকে পাওয়া গেছে একটি বাক্য, পাখিদের মধ্যেও দু-একজন কবি আছেন,  বাউল আছন। পাখিদের মধ্যে কেউ বিনয় মজুমদার আছেন! কিম্বা পাখিদের কেউ লালন ফকির আছেন! পাখিদের মধ্যেও সিমির মতো মেয়েটি আছে, যাকে আত্মহত্যা করে মরতে হয়েছে। একটি পাখি তনু, তার লাশ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করতে হয়েছিল। একটা পাখি নুসরাত, যাকে পুড়িয়ে মারা হলো। কোনো কোনো রক্তাক্ত পাখি দম্পতির নাম সাগর-রুনী। … দুপুরে, সবুজ বনের মধ্যে যে-কোনো একটি পাখিগাছ দেখলেই আমি টের পাই, গাছটির নাম দ্বিজেন শর্মা, যার সবুজ শরীরে পাখিদের জীবন্যাপনের অনেক গোপন তথ্য লেখা আছে। হয়তো হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতো কেউ একজন একদিন এই বন-দরবারে এসে সব আবিষ্কার করবেন।

ততদিন আমাদের শুধু অপেক্ষা। কেননা, জগদীশচন্দ্রের দেশে দ্বিজেন শর্মাকে চিনে উঠতে হলে আমাদের কিছু অপেক্ষা শিখতে হবে, বনের গভীরে যেতে হবে। না চিনলে চেনাজানা দু-একটি গাছকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, ‘বলেন তো কোন গাছটি দ্বিজেন শর্মা?’

আমি আজ দ্বিজেন শর্মার সঙ্গে কথা বলতে চাই। আশঙ্কা, সেই গাছটি কেউ কেটে ফেলেনি তো?