ভূমিকা ও শ্রম্নতিলিখন : ইমরান ফিরদাউস
ঋত্বিক কুমার ঘটক live chat 888sport নির্মাতা। নবারম্নণ ভট্টাচার্য কবি ও 888sport live footballিক। দুজনের ছিল আত্মীয়তার সম্পর্ক। ছিল সৃজনশীল বুদ্ধিচর্চার সম্পর্ক। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ২০০৯-১০ সালে এক আলোচনা সভায় নবারম্নণ ভট্টাচার্য live chat 888sportনির্মাতা ঋত্বিক কুমার ঘটককে নিয়ে কথা বলেন। এখানে সেই আলাপচারিতা কালি ও কলমের পাঠকদের জন্য দেওয়া হলো।
এক
‘অথচ ঋত্বিক ঘটকের মৃত্যু কাকপক্ষীতেও টের পায় নাই।’ – ঋত্বিক ঘটক সমীপে জন এব্রাহেম :
‘পৃথিবীর শেষ কমিউনিস্ট’ নবারম্নণ ভট্টাচার্য আর ‘মেঘে 888sport app তারা’ ঋত্বিক কুমার ঘটক রক্তের সম্পর্কে আবদ্ধ। দুজনেই প্রতিষ্ঠানের ইট-পাথরে আবৃত দুনিয়ায় আমৃত্যু খোঁজ করে গেছেন মুক্তাঞ্চলের; নিজস্ব গেরিলা কায়দায়। একদিকে নবারম্নণ দেখছেন ‘পেট্রোল দিয়ে আগুন নেভাবার স্বপ্ন’; আরেকদিকে যুক্তি-তক্কো-গপ্পোর ফাঁকে-ফাঁকে ঋত্বিক বলছেন, ‘জীবন জীবিতের, জীবিতের ধর্ম বহতা অমোঘ দুর্নিবার। সব পুড়ছে, ব্রহ্মা- পুড়ছে, আমিও পুড়ছি।’
ঋত্বিক যেন-বা ইশারা দিচ্ছেন কোনো এক ফিনিক্স জন্মের; যেখানে ছাইভস্ম থেকে পুনরম্নত্থান হবে কোনো নাগরিক বা মেঘে 888sport app তারার। মাত্র পঞ্চাশ বছর বয়সে ঘটকও উনিশশো ছিয়াত্তর সালের ছয় ফেব্রম্নয়ারি চিতার আগুনে পুড়ে প্রাসঙ্গিক হয়ে যান। এরপর তিনি ফিনিক্স হয়ে ফিরে-ফিরে আসতে শুরম্ন করেন দর্শক-পাঠক-পাঠিকার
কথামালায়। বাই দ্য ওয়ে, একজন 888sport sign up bonus-শরণার্থীর নাম বলতে পারেন? আমি বলি – ঋত্বিক ঘটক! পূর্ব বাংলা থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঘটনাচক্রে মাইগ্রেট করা ঘটকের কাছে দেশ মানে মা আর মা মানে নদী। দেশভাগের মনোজাগতিক যন্ত্রণায় ট্রমাটাইজ ঋত্বিক ঘটক মায়া নদীতে তাই জীবনভর খুঁজে গেলেন জলের কংকাল। এ-কারণে বোধহয়… সুইস চিমত্মক কার্ল গুসত্মভ ইয়ুঙের একনিষ্ঠ পাঠকের মতো 888sport sign up bonusর রেসকোর্সে ছুটিয়েছেন পুরাণ-প্রতিমার ঘোড়া, চেয়েছেন আর্কেটাইপের আঘাতে-আঘাতে যৌথ অচেতনতার হেনস্থা করতে। অতি-সংবেদনশীল ঋত্বিকের উন্মত্ত আচরণে বিব্রত/ বিরক্ত/ অস্বসিত্মতে পতিত আদমিরা তাই তাঁর প্রতি সভ্যতার আঙুল তাক করেছিল সোমরসের অধিকারে। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে, যারা গেলাস-গেলাস পানি পান করেন তাদের কাজে গলদ থাকে না, শুধু ঋত্বিকই সোসাইটিতে ন্যুইসেন্স তৈরি করে থাকেন!
দূরদর্শী চাবুকের আঘাতে পাবলিকের চেতনাকে রক্তলাল করতেন বলে দুর্নাম আছে তাঁর। কিন্তু সিনেমাঘরে দর্শক মাত্রই যখন অতিথি নারায়ণ তখন কেন এমনতর আচরণ; শিক্ষিত মধ্যবিত্ত দর্শকদের বিনোদনের চকোলেট দিয়ে আপ্যায়ন না করে, কেন চাবুকের বাড়ি বরাদ্দ করেছেন?! কারণ, তিনি জেনেছিলেন, অধিকার খর্বের বাজারে অধিকারের সওদা রাজনীতি দিয়ে করতে হলে ‘নিরপেক্ষতার’ মতো মধ্যবিত্তীয় অভিমানের কোনো পার্কিং নেই। ক্যারিয়ারের আটটি সিনেমার কোনোটাতেই এ-ভাবভঙ্গির ব্যত্যয় ঘটেনি। নিম্নবর্গের কথামালাকে দৃশ্যের গাঁথায় তিনি তুলে আনতে পেরেছিলেন পরম অাঁজলা ভরে। সিনেমার পাশাপাশি মঞ্চেও রচনা করেছেন রাজনৈতিক নিরীক্ষাবাদী থিয়েটাররাজি। না জানলে ক্ষতি নেই – তাঁর দলিল নাটকটি গণনাট্য সংঘের সর্বভারতীয় বম্বে সম্মেলনে প্রথম 888sport app download bd জিতেছিল। পলিটিক্যালি কারেক্টনেসের মোড়কে অনাধুনিকতার শৈল্পিকচর্চার সময়কালে সিনেমার এই বৈদিক বান্দা চিমত্মা-চেতনা, কাজে-কথায়, কারম্ন-দক্ষতায় ছিলেন বহুত অ্যাডভান্সড!! নাগরিক থেকে যুক্তি-তক্কো-গপ্পো বা, রিফিউজি ট্রিলজি অর্থাৎ মেঘে 888sport app তারা (১৯৬০), কোমল গান্ধার (১৯৬১) ও সুবর্ণরেখার (১৯৬২) ফ্রেমে ফ্রেমে বারবার প্রশ্ন করেছেন ‘একেই কি বলে সভ্যতা!’
বই থেকে সিনেমা করায় ওসত্মাদ ঋত্বিক আখ্যান রূপে ইতিহাস নয়, বরং আমল করতেন ইতিহাসের অনিবার্যতাকে চ্যালেঞ্জ করে জেগে-ওঠা পুনর্জীবনের গল্পগুলোকে। নতুবা, অদ্বৈত মলস্নবর্মণের অ্যান্টিক-প্রায় তিতাস নদী, ঋত্বিকের উপস্থিতিতে কেন স্রোতস্বিনী হয়ে ওঠে? তিনি বলছেন, ‘তিতাস এখন আবার যৌবনবতী। আমার ছবিতে গ্রাম নায়ক, তিতাস নায়িকা।’
বিষাদ বিলাসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-আক্রামত্ম ঋত্বিকের সিনেমার নির্মাণ ও আঙ্গিকে সর্বদা গতির নৈরাজ্য বর্তমান। ‘ঋত্বিক নাশকতার উৎক্ষেপ দেখতে পান তাঁর আরাধ্যদের তালিকায়, তত্ত্বের মধ্যে মমত্মাজ নিয়ে আইজেনস্টাইন ও পুদফকিনের ‘ঝগড়া’ তাঁকে ভাবায়। বুনুয়েল তাঁর প্রিয় পাত্র। ফেলিনির অমত্মর্ঘাত, অমত্মত ‘লা দলচে ভিতা’ তাঁর পাঠসংকেত।’
অগণন ভালো নির্মাতার সমামত্মরালে সৎ888sport live chatীর অভাবের মতো ঋত্বিকের অভাব আমরা এখনো বুঝি অদ্ভুত নীরবতায়।
দুই
বাংলা 888sport live footballের খ্যাতিমান এবং ব্যতিক্রমী লেখক মনীশ ঘটক; রক্তের সম্পর্কে ঋত্বিকের বড়ভাই ছিলেন। মনীশ ঘটকের কন্যা মহাশ্বেতা দেবী স্বনামে ধন্য 888sport live footballিক, সমাজকর্মী। মহাশ্বেতা দেবী এবং নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যের পুত্র কবি ও 888sport live footballিক নবারম্নণ ভট্টাচার্য। দুই হাজার চোদ্দো সালে আন্ত্রিক ক্যানসারের চিকিৎসাধীন দশায় ছেষট্টি বছর বয়সে ধরাধাম ত্যাগ করেন। জীবদ্দশায় তাঁকে ও তাঁর যাপন নিয়ে সিনেমা করার মধ্যে ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গান্ডুখ্যাত নির্মাতা কিউ।
হারবার্ট তাঁর উলেস্নখযোগ্য 888sport alternative link, যার জন্যে তিনি 888sport live football আকাদেমি 888sport app download bd পান ১৯৯৭ সালে।
মহাশ্বেতা দেবীর কাকা ঋত্বিক ঘটকের আদরের টুকরা ছিলেন নবারম্নণ ভট্টাচার্য। ঋত্বিক ঘটকের মতো থিয়েটার ছিল তাঁরও অন্যতম আগ্রহ; দীর্ঘদিন ‘নবান্ন’ নাট্যগোষ্ঠী পরিচালনা করেছেন। শৈশব থেকে ঋত্বিকের শুটিং ইউনিটের সঙ্গে টইটই করে বেড়ানোর কারণে একদিকে যেমন পেয়েছেন জীবনের অফুরান রসদ, তেমনি জানতে ও চিনতে পেরেছিলেন আরেক ঋত্বিককে। ছোটবেলায় ঋত্বিক ঘটকের শুটিংয়ে একবার রিফ্লেক্টর ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন, একথা বলতেন গর্বভরে। ঋত্বিকের মতো উচিত কথা বলায় বা প্রামিত্মক মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে বকধার্মিক সমাজের সমালোচনায় এক ইঞ্চি ছাড় দিতেন না নবারম্নণ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত নাট্যকার দেবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আসলে আমাদের সময়ের ভাষাকে জাপটে ধরেছিলেন নবারম্নণদা। এবং তাঁর ভাবনার ও ভাষার স্বাতন্ত্র্যের জোরে তিনি পরবর্তী সময়কে শাসন করতে পেরেছেন।’
‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’র মতো 888sport app download apk, যুদ্ধপরিস্থিতির মতো গল্প, খেলনানগর, হারবার্ট বা কাঙাল মালসাটের মতো 888sport alternative link এক ধরনের প্রতিষ্ঠানবিরোধী পরিচিতি তৈরি করেছিল নবারম্নণের। জীবনযাপনেও ছিলেন অনাড়ম্বর। ঘোরতর রাজনৈতিক লেখা লিখেও বাম বা ডান, কোনো সরকারেরই কাছের মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করেননি কোনো দিন এবং মূল স্রোতের বাইরে থেকেও তরম্নণ প্রজন্মের কাছে ‘ফ্যাতাড়ু’-স্রষ্টা হিসেবে বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছিলেন।
নবারম্নণের লেখা থেকে সফল live chat 888sportায়ণ করেছেন সুমন মুখোপাধ্যায়। সুমনের তিনটি ছবি হারবার্ট, মহানগর@কলকাতা’এবং কাঙাল মালসাট নবারম্নণের রচনা অবলম্বনে। সুমন বলছিলেন, ‘যে তির্যক রাজনৈতিক অমত্মর্ঘাত নবারম্নণের লেখায় আসতো তাঁর যে অনন্য রচনাশৈলী, সমকালে তার জোড়া ছিল না। নবারম্নণ নিজেই একটা ধারার জন্ম দিয়েছিলেন, তাঁর মৃত্যুতেই সম্ভবত তার শেষ হল।’
তিন
ঋত্বিক ঘটক বা নবারম্নণ ভট্টাচার্য কাউকেই তো আর এই মানবজীবনে সাক্ষাৎ করা হয়নি। পরিচয়ের নৈকট্য বা ভালোবাসার মতো যে কসমিক বন্ধন তাদের সঙ্গে, তা পুরোটাই ওনাদের কাজের উছিলায়। তো, আগস্ট মাসে নবারম্নণের মৃত্যুর সংবাদে 888sport appর বাতাসও কেমন যেন বিষাদভারাতুর হয়ে উঠেছিল। আর সুজন হারানোর অসীম শূন্যতার মাঝে বসে ভাবতে থাকি, ‘পৃথিবীর শেষ কমিউনিস্টের’ গল্প বলা পাগলের সর্দারটা পগারপার দিয়ে কতদূর গেল?! আরো ভাবি, কী করে তাঁর থাকা-না-থাকার শোক উদ্যাপন করা যায়… এলিজি লেখার ভার থেকে রেহাই নেওয়ার তরে, তাই ইতিউতি রসদ খুঁজি। মনে-মনে পছন্দসই টেক্সট খুঁজি তর্জমা করার বাসনায়। তো, হাতড়াতে-হাতড়াতে মাউসের কারসরে এসে ঠেকল ঋত্বিককে নিয়ে নবারম্নণের এক বোম্বাস্টিং কথামালা। বক্ষ্যমাণ কথামালা নিয়ে নবারম্নণ ভট্টাচার্য হাজির হয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের আলোচনা সভায় দুই হাজার নয় বা দশ সালে। আর অনুষ্ঠান থেকে আওয়াজ ধারণ করেন সপ্তর্ষি ম-ল।
চার
বিষয়টা হলো টাইম ট্রাভেলিং। মানে নবারম্নণ যখন ঋত্বিককে নিয়ে আলাপ করেন তখন সেটা আর ব্যক্তি ঋত্বিকের ঘেরাটোপে আটকে থাকে না। বরং ঋত্বিকের মধ্যে দিয়ে সেই সময়ের একটা খোয়াবনামার বয়ানে ঘনীভূত হয়। বা আরো বলা যায়, সামগ্রিকের মাঝে ঋত্বিকের অনন্যতাও পরিস্ফুটিত হয়। এক কথায়,
‘ঋত্বিক-বিচার’ রচনা করেন অবলীলায়।
আইকোনোক্লাস্টের কালচার ভেঙে রচনা করেন চিরায়ত মানুষের টুকরো আলোর 888sport sign up bonus। বুঝিয়ে দেন, অ্যাক্টিভিস্ট মাত্রই 888sport live chatী নন, আর 888sport live chatী হলেই কেউ অ্যাক্টিভিস্ট হয়ে ওঠে না। দুটো বিষয়কেই একই দেহ-মনে ধারণ করার, সিস্টেম-সর্বস্বতাকে বারবার নাকচ করে দেওয়ার মতো কোমরের জোর থাকতে হয়। আর যিনি এই ভাব অবধারণ করেন তিনি যে-কোনো উপায়ে, যে-কোনো 888sport live chatমাধ্যমেই সমাজের শিখিয়ে-দেওয়া র্যাশনালিটিকে প্রশ্ন করবেনই করবেন! এই মানুষ (গুলি) প্রতিনিয়ত উত্তরের মধ্যে দিয়ে প্রশ্নের যৌক্তিকতা বিধান করে থাকেন না, পরন্তু প্রশ্নের ছড়ি দিয়ে উত্তরের জরম্নরত নির্মাণ করেন। আর তাই… নবারম্নণের কথামালায় ঋত্বিককে ঘিরে এক প্রয়োজনীয় ক্রিটিকের সন্ধান পাওয়া যায়। যেথায় তিনি একাধারে ঋত্বিকের শক্তির কথা বলছেন, আরেকধারে ঋত্বিকের ব্যর্থতার হিসাব দিচ্ছেন। আর বোঝাতে চাচ্ছেন, ‘ঋত্বিক’ নামের এক অনবদ্যতার গল্প; যে-গল্পে সময় হয়ে ওঠে এক অসদুপায়ী
শেরিফ আর শুভংকরের ফাঁকি ধরার দায়ে যে-কোনো সৎ888sport live chatী মাত্রই পেস্ন করে আউট ল’র ক্যারেক্টার। এই আলাপের মধ্যে দিয়ে আরো অনেক কিছুর সঙ্গে যে বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তা হলো, আপাত শিক্ষিত মানুষের মোনাফেকির নকশামালা। বা, ক্ষমতা কাঠামোর মর্মমূল আঘাতে-আঘাতে উপড়ে ফেলার অদম্য ইচ্ছা এবং সবশেষে এটিই প্রতীয়মান হয়, লোকাল সিস্টেমে সহজ মানুষের কোনো খানা নেই। কারণ, পরিবেশবাদীদের গায়েই সবসময় লেগেছে সত্যের মতো বদমাশের তকমা।
পাঁচ
যথাযথ সম্মান-প্রদর্শনপূর্বক ভূমিকার বদলে আসুন, এবার তবে বুঝে নেওয়ার কোশেশ করি সেইসব মানুষের কথা, যারা প্রচলিত সমাজের কপটতা ও ভুয়া যুক্তির সীমাহীন ব্যবহার দেখে
অপ্রকৃতিস্থ, পাগল হয়ে যায়, ‘যারা আগুন লাগায়’ সমাজের সুশীলপনার উর্দিতে। ওঁ শামিত্ম।
………………………………………………………….
একটি প্রশ্ন
সত্যিই কি তুলসী চক্রবর্তী১ পরশ পাথরে কিছু করেছিলেন নাকি হ্যামলেটে আমরা যে স্মোকনোফস্কিকে২ দেখেছি সেটা কি খুব ভালো ছিল… কীরকম যেন কনফিউজড হয়ে যাই! এই যে আমাদের দেশে এভাবে একটা লুম্পেন কালচার তৈরি হয়ে গেছে, যেখানে বিশিষ্ট live chat 888sport-পরিচালক টেলিভিশনে এই কথাও কবুল করেন যে, উনি মেঘে 888sport app তারার রিমেক করবেন! মানে অসভ্যতা, অভব্যতা যে-পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে এই সময়ে…! সত্যি, উনি যে বললেন ঋত্বিক আবিষ্কার, এই আবিষ্কার যত বেশি করে করানো যায় ততই মঙ্গল! আমার একটা কথা মনে পড়ে যাচ্ছে – সেই অসামান্য সিকোয়েন্সটি তোলা হচ্ছে কোমল গান্ধারে যেখানে
গিয়ে সেই বাফারের ট্রেনের ধাক্কাটা… সেই যে 888sport apps বর্ডার… তো ওইখানে, আমি তখন খুব ছোট আর ওই যে ট্রলিতে করে ক্যামেরা যাচ্ছে, ওই ট্রলিতে আমি বসে আছি; তা লালগোলার কোনো ফিল্মবেত্তা এসে হঠাৎ আমাকে বলল, ‘আচ্ছা খোকা শোন,
তুমি দেড়শো খোকার কা-তে ছিলে না?’ ওই ধরনের সিনেমা কোম্পানির সঙ্গেই সে সিনেমা করে বেড়ায়… আমি খুব স্মার্টলি উত্তর দিলাম – ‘হ্যাঁ আমি ছিলাম!’ কথাটা কিন্তু খুব মিথ্যে নয়, কারণ আমার বন্ধু লোকনাথ দেড়শো খোকার একটি খোকা, আমরা একসঙ্গে পড়তাম, অতএব সেই বন্ধুর গর্বে আমিও গর্বিত। যাই হোক, সেখানে সেই লোকটিই ঋত্বিককে একটা কথা জিজ্ঞেস করেছিল – ‘আচ্ছা এই ফিল্মে এমন কোনো ক্যারেক্টার আছে যাকে নিয়ে আপনার ক্যামেরা এগোচ্ছে?!’ তো, ঋত্বিক বলল – ‘কী বললে?’ তো, আবার বলল – ‘ফিল্মে…?’ ঋত্বিক বলল, ‘হোয়াট ডু ইউ মিন বাই ফিল্ম?’ এটা একটা মারাত্মক প্রশ্ন কিন্তু!! ন্যাচারালি সে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি! ওর প্রশ্নের পর পালাতে পথ পাচ্ছে না লোকটি!!
ঋত্বিক খুন
কিন্তু হোয়াট ডু ইউ মিন বাই ফিল্ম? ফিলম বলতে আমরা কী বুঝি…? ফিলম কী…? ফিলম একটা স্টেটমেন্ট হতে পারে, ফিল্ম একটা দার্শনিক তাৎপর্য বহন করতে পারে, ফিল্ম একটা ট্রিটিজ হতে পারে, ফিল্ম একটা ডাস ক্যাপিটাল৩ হতে পারে… ফিল্ম অনেক কিছু হতে পারে।
মুষ্টিমেয় live chat 888sport-পরিচালকই এই জায়গাটায় উত্তীর্ণ হন, সকলেই হন না! এবং সেখানে ঋত্বিক একজন, যেমন – তারকোভস্কি৪ একজন, বার্গম্যান৫ একজন, আকিরা কুরোশাওয়া৬ একজন – যাঁরা এই দর্শনের জায়গায় গিয়ে, ইতিহাসের জায়গায় গিয়ে অদ্ভুত একটা অবস্থান গ্রহণ করেন, যেখানে সমসত্ম 888sport live chatমাধ্যম গুলিয়ে যায়!
তা, আমি এটা নিয়ে একটা তত্ত্বে এসেছি, ঋত্বিক ঘটক বা তাঁর পাশাপাশি আমরা যাঁদের দেখতাম সেই বিজন ভট্টাচার্য৭, যতীন্দ্র মৈত্র, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, চিত্তপ্রসাদ, দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য – এঁরা কারা? আজকে কোনো লোক এঁদের চেনে না! দুদিন পর ঋত্বিককেও চিনবে না, সেটা ঠিক। কারণ, আমাকে যে নেমমত্মন্নটা করা হয়েছিল সেখানে বলা হয়েছে যে, বাঙালির আধুনিকতা কোলন ঋত্বিক কুমার ঘটক। এখন, এই বাঙালি যে রেটে আধুনিক হয়ে উঠেছে, তাতে তাঁর কাছে ঋত্বিক ঘটক একটা উদ্বৃত্ত মানুষ! তা, আমি উদ্বৃত্ত মানুষটাকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম।
আমি সোভিয়েত দূতস্থানের প্রচার বিভাগে চাকরি করতাম। পাশের ঘরে বসতেন হেমাঙ্গ বিশ্বাস। হেমাঙ্গ বিশ্বাস ছিলেন পিকিংপন্থী। মানে, মস্কোর হেডকোয়ার্টারে পিকিংপন্থী মানুষ, অতএব কেউ তাঁর সঙ্গে কথা বলত না। আমি জন্ম থেকেই ওকে দেখে আসছি। তো, আমি গিয়ে কথা বলতাম, গল্প করতাম। আর ঋত্বিক প্রায়ই আসতেন পয়সার জন্য। একটু মদ খাওয়ার জন্য পয়সা দরকার। এলেই শিবদেবের কাছ থেকে কিছু, আমার কাছ থেকে কিছু, হেমাঙ্গদার কাছ থেকে কিছু নিয়ে বেরিয়ে যেতেন। খুব কম সময়ের জন্য আসতেন।
এই মানুষটাকে কাছে থেকে দেখতে-দেখতে একদিন হলো কি – এই যুক্তি-তক্কো-গপ্পোর ফেইজটাতে বা তার আগে ঋত্বিক ফুটপাতে থাকত, রাসত্মায় থাকত। আমার বাড়ির উলটোদিকে একটা বাড়ি ছিল, তার রক ছিল, তার উপরে থাকত। শুধু ঋত্বিক নয়, ঋত্বিকের মতো আরো কিছু লোক যাদের পরিপূর্ণ উদ্বৃত্ত বলা যায়, দে ওয়্যার লুম্পেন্স, তারাও থাকত। ঋত্বিকও সেই লুম্পেনদের একজন। আমার মনে আছে, সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আমি সিগ্রেট কিনতে গিয়েছি, ঋত্বিক আমার কাছে পয়সা চেয়েছে… এক প্যাকেট চারমিনার কেনার পরে আমার কাছে আঠারো না আটাশ এরকম পয়সা আছে। তো, আমি বললাম, ‘এটা নেবে?’ ও বলল, ‘দে!’ আমি দিয়ে বললাম, ‘এই পয়সায় কী হবে?’ ও বলল, ‘চলে যাবে!’
ঋত্বিকের মৃত্যুর পর আমার বাবা একটা 888sport app download for androidসভায় বলেছিল, ‘ঋত্বিককে খুন করা হয়েছে।’
ঋত্বিককে খুন করা হয়েছে – এই কথাটা যেন আমরা না ভুলি। কারণ, এই খুন নানাভাবে করা যায়!
জাফর পানাহিকে৮ যখন বলা হয়, কুড়ি বছর তুমি ছবি করতে পারবে না, স্ক্রিপ্টও লিখতে পারবে না – এটা তাঁকে খুন করা।
বিনায়ক সেন৯কে যখন বলা হয়, তুমি ডাক্তারি করতে পারবে না, কিছুই করতে পারবে না – সেটাও তাঁকে খুন করা।
এবং ঋত্বিক ছবি করার কি সুযোগ পেয়েছিল তাঁর সময়?!
একটা স্ট্রাগিস্নং/ ফাইটিং আর্টিস্ট বলতে যা বোঝায় ঋত্বিক পরিপূর্ণভাবে তাই ছিল! আমি আপনাদের বলছি, সুবর্ণরেখার আউটডোর চাকুলিয়ায় হয়েছিল। সেখানে রোজ রাত্তিরে সাড়ে নয়টায় কলকাতা থেকে একটা ট্রেন এসে পৌঁছাতো। সাড়ে নটার আগে থেকে আমি ঋত্বিকের মধ্যে একটা অদ্ভুত টেনশন লক্ষ করতাম। টেনশনটা হচ্ছে, ওই ট্রেন এসে পৌঁছুবে কিনা! ট্রেনটা এলে তার থেকে কোনো চেনা লোক নাববে কিনা! এবং সে-ফিল্মের র’স্টক আনবে কিনা! সেইটা না আসলে শুটিং করা যাবে না! এসবের কারণে দিনের পর দিন শুটিং বন্ধ হয়ে গেছে, র’স্টক আসেনি। এইভাবে একটা মানুষকে কাজ করতে হয়েছে। ঋত্বিক যখন ছবি শুটিং করতেন তখন তাঁর মাথায় তো একটা অ্যাল্কেমি, একটা ক্যালকুলেশন সবই থাকত…। কিন্তু, আরেকটা জিনিস করতেন, অনেক এক্সেস শুট করতেন, ওগুলো সব এডিটিং টেবিলে ঠিক হবে। সুবর্ণরেখার সেই দুর্মূল্য বহু বহু ফুটেজ টালিগঞ্জে
পড়ে-পড়ে নষ্ট হয়েছে… আমাদের দেশে সত্যি কোনো আর্কাইভ, সত্যি কিছু থাকলে (হয়তোবা সংরক্ষিত হতো)… এগুলো অমূল্য সম্পদ।
যেমন, আইজেনস্টাইনের এরকমের বহু কাজ তারা নষ্ট করেনি। সেগুলো নিয়ে পরে এডিট করে অনেক কিছু বেরিয়েছে।
কিন্তু, ঋত্বিকের ভাগ্যে সেটা জোটেনি!!
এই জন্য বললাম, ঋত্বিককে খুন করা হয়েছে।
ঋত্বিকের কথা বলতে গিয়ে মনে পড়ছে, ঋত্বিক যাদের বাজনা শুনতো, খুব পছন্দ করতো তার মধ্যে একজন মোজার্ট। মোজার্টের একটা জীবনী পড়েছিলাম, সেখানে আছে যে, মোজার্ট কোথাও একটা, তার অর্কেস্ট্রা টিম দিয়ে একটা সংগীত পরিবেশন করেছেন, একটা সিম্ফোনি কম্পোজিশন, সামনে লোকের প্রচ- ওভেশন… তারা চিৎকার করছে লং লিভ মোজার্ট! আর মোজার্ট কানে শুনছেন লং স্টার্ভ মোজার্ট! তুমি না খেতে পেয়ে মরো! এইটা আমাদের দেশে হয়েছে! একাধিক 888sport live chatীর ক্ষেত্রে হয়েছে! আমি যাঁদের কথা বললাম এঁদের প্রত্যেকের হয়েছে।
যেমন, যতিরিন্দ্র মৈত্র – তিনি কী মাপের একজন 888sport live chatী এটা কেউ ভাবতে পারে না! তাঁর কাছে যখন কোনো অর্কেস্ট্রা নেই, কোনো বাদ্যবৃন্দ নেই, কিচ্ছু নেই – তিনি ফুটপাতের, বসিত্মর বাচ্চাদের নিয়ে একটা টিম বানালেন। সেখানে ইন্সট্রুমেন্ট কিথ – একটা পাউডারের কৌটার মধ্যে ইট ভরে সেইটা দিয়ে একটা ইফেক্ট, এভাবে 888sport app ইফেক্ট এবং সেটার নাম দিলেন কী – জগঝম্প!
তা জগঝম্পের সঙ্গে ঋত্বিকের যে সম্পর্ক, এই লোকটার সঙ্গে বিজন ভট্টাচার্যের যে সম্পর্ক… যেমন ধরম্নন একটা ঘটনা বলি – সুবর্ণরেখার ফাইনাল স্ক্রিপ্ট লেখা হচ্ছে, পরদিন শুটিং হবে…
হরপ্রসাদ মানে যে-চরিত্র আমার বাবা করেছিলেন, উনি সেই ডায়ালগগুলিকে আবার লিখছেন – তখন ওকে একজন জিজ্ঞেস
করেছে, এই ডায়ালগগুলি তো কালকে লেখা হয়ে গেছে আবার কেন করছেন? বললেন, ‘থামো! এশিয়ার গ্রেটেস্ট আর্টিস্ট তাকে আমায় প্রজেক্ট করতে হবে না!!’
এই বোধটা!!!
এগুলি কিন্তু সবই উদ্বৃত্ত মানুষদের নিয়ে কথা। তারা কী ছিল আজ বাঙালির জানার কোনো উপায় নেই।
ঔপনিবেশিক খোঁয়াড়ি
আমি একটা ছোট্ট কথা বলছি, আপনাদের মধ্যে যারা আমার হারবার্ট 888sport alternative linkটা পড়েছেন… তা সেই হারবার্টকে নকশালি
বুদ্ধি-টুদ্ধি শিখিয়েছিল বিনু বলে একজন। এবং সুবর্ণরেখার বিনু, ছোট বিনু, যে আমার ভাই, যে মারা যায় লেকের জলে ডুবে… সুবর্ণরেখার শেষ হচ্ছে মামার সঙ্গে সে যাচ্ছে আর বলছে, আমরা নতুন বাড়িতে যাব যেখানে প্রজাপতি আছে, গান হয়, সেখানে গেলে মাকে পাব, বাবা আছে… এই নতুন বাড়িতে যাচ্ছিল বিনু। এখানেই ছবিটা শেষ হয়। এবং এর পরবর্তী যে বিনু, আমি যাকে কনশালি হারবার্টে নিয়ে এসেছিলাম; সেই বিনু তখন বড় হয়েছে। এবার সে নতুন বাড়িটা নিজে বানাবার চেষ্টা করছে। এবং আজকেও এই চেষ্টাটা ফুরিয়ে যায়নি।
আজকে আমার যে মাওবাদী১০ বন্ধুরা জঙ্গলে বা জেলে রয়েছেন তাঁরা ওই নতুন বাড়িটার জন্যই ভাবছেন… আর কিছু নয়। এবং প্রত্যেক যুগে, সমসত্ম সময়ে বিনুদের এটা অধিকার! বিনুরা এটা করবেই, সেটা ঠিক হোক কি ভুল হোক! এবং সেইটাকে ক্যামেরায় এবং কলমে ধরবার লোকও থাকবে।
যেমন, সত্যি সত্যি অমূল্যবাবুদের দলের সঙ্গে ঋত্বিকের কনফ্রন্টেশনটা… তা একটা ঐতিহাসিক ডকুমেন্ট, অসামান্য ডকুমেন্ট। পার্টলি আপনারা এই রকম ডকুমেন্ট পাবেন বিজন ভট্টাচার্যের চলো সাগরে নাটকে। ওখানে একটা ডায়ালগ আছে যেইটা একচুয়ালি নকশালবাড়িতে১১ হয়েছিল হরে কৃষ্ণ কুমারের সঙ্গে ওইখানকার নেতৃবৃন্দের – জঙ্গল সাঁওতাল, চারম্নবাবু১২ এদের আলোচনা। এই ডকুমেন্টেশনের যে-কাজটা ঋত্বিক করে গেছেন, এটার মূল্য অপরিসীম। সেটা আজকেও টপিক্যাল। ওই যে বলছেন – তোমরা সফল ও নিষ্ফল; সেখানে তিনি মোটামুটি একটা প্র্যাকটিসিং সোশ্যালিজমের ইতিহাস বলছেন। ঋত্বিক কিন্তু সবটা জানতেন। তিনি সুসলভ১৩-এর থিসিস পড়েছিলেন, তিনি চে গুয়েভারার ‘অন গেরিলা ওয়্যারফেয়ার’ জানতেন। এগুলো জেনে এই জিনিসটাকে করা। এবং কতটা তার ডিটেইল সেন্স… অনন্যর একটা সিকোয়েন্স আছে ব্রেনগান নিয়ে উলটে-উলটে যায়, একচুয়ালি দ্যাট ইজ দ্য ওয়ে দ্যাট গান ইজ টু বি ট্যাকলড! এবং অনন্যর সঙ্গে একটা ছেলে ছিল সে 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধে ওই বন্দুকটা নিয়েই লড়াই করেছিল এবং দে ওয়্যার প্রোপারলি ট্রেইন্ড। এখানে সবটা আবেগের বিষয় নয়, একটা সায়েন্টিফিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে।
বস্ন্যাক অ্যান্ড হোয়াইট ফটোগ্রাফির এই যে সিদ্ধি দেখছি, এই যে আশ্চর্যের জায়গা ওর সিনেমায়, এরও কিন্তু একটা গুরম্ন-শিষ্য পরম্পরা আছে। ঋত্বিকের এই কাজের অনেকটাই কিন্তু শেখা বিমল রায়ের১৪ কাছে। যার মতো একজন টেকনিশিয়ান তখনকার যুগে কেন, এখনো নেই।
বিমল রায় কী মানের টেকনিশিয়ান তার একটা উদাহরণ দিই – বিমল রায় শুটিং করছেন মীনা কুমারীকে নিয়ে। এমন সময় পাশের স্টুডিও থেকে কে. আসিফ একটা নোট পাঠায় – বিমলদা একবার আসবে? উনি গেলেন আর সেটে বলে গেলেন, থাকো আমি আসছি। ওখানে গিয়ে দেখেন সবেবানেশে ব্যাপার! মুঘলে আযমের শুটিং হচ্ছে – আয়নায় মধুবালাকে দেখা যাচ্ছে, সেই সিকোয়েন্সটা… ওইটা শুট করার সময় ক্যামেরা বারবার চলে আসছে আয়নায়। তো, কে. আসিফ বলছে, ‘এখন আমি কী করে শুট করব!?’ ওইখানে ক্যামেরায় ছিলেন আর ডি মাথুর। তো, বিমল রায় ক্যামেরাম্যানকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ক্যামেরা বসাচ্ছেন কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। তখন উনি নিজের ফ্লোরে একটা নোট পাঠালেন, শুটিং প্যাকআপ করে দাও, মীনাকে বাড়ি চলে যেতে বলো। তিনি ওই ফ্লোরের দায়িত্ব নিয়ে নিলেন এবং ছয়-সাত ঘণ্টা থেকে প্রবলেমটা সলভ করেন। সেই ফিনিশড প্রোডাক্টটা আমরা দেখি এখন। সেই লোকের সঙ্গে কাজ করেছেন। এঁদের ট্রেনিং, এঁদের আউকাত, এঁদের ঘরানা – সবই অন্যরকম। কারণ, ঋত্বিক সম্বন্ধে একটা ইমেজ বাজারে দেওয়া হয়, ওই পলিটিক্যালি কারেক্ট বাঙালিরা করে…!
এ প্রসঙ্গে আরেকটা কথা বলি, ঋত্বিক সেই লোক যিনি ইংরেজি জানা ক্রিটিকদের কাল্টিভেট করত না! বেশি তালেবর লোক তার কাছে গেলে লাথ্ মেরে বের করে দিতেন, সোজা কথা। এবং আমি বাকি ডিরেক্টরদের জানি, তাঁরা এই হাফ সাহেবদের কালটিভেট করেছিলেন এবং তাঁরা তখনই বুঝতে পেরেছিলেন, সাহেবদের বাজারে কল্কে না পেলে কিছু হবে না। ঋত্বিকের এসব মাথায় ছিল না। একটা অ্যাওয়ার্ডও পায়নি, একটাও না! মানে কিচ্ছু পায়নি, কোনো ফেস্টিভালে না… কিচ্ছু না! এবং আজকে সে সমসত্ম ফেস্টিভ্যালের বাইরে চলে গেছে, অন্য জায়গায় চলে গেছে। এবং এই যে, ফাইটিং স্পিরিট… ঠিক আছে ছবি করতে পারছে না, থিয়েটারের উপর ম্যাগাজিন করছে, নাম ছিল ‘অভিনয় দর্পণ’। সেটাও উইথ ইক্যুয়াল অনেস্টি। আমি নিজের চোখে দেখেছি। শেষে হলো প্রফেশনাল থিয়েটার করবো… শালা সিনেমা করতে দিবি না… যা থিয়েটারই করব। এবং সেই প্রজেক্টও এগিয়েছিল… সাথে ছিল তিনটা ছবি করা এবং প্রত্যেকটা বানচাল হয়ে যায়। ওই মিসেস (ইন্দিরা) গান্ধী একটু স্পেশালি ফেভার করতেন বলে উনার কিছু কাজ-টাজ, তারপর ইমার্জেন্সি ফ্লাইটে করে 888sport apps থেকে নিয়ে আসা – এগুলো হয়েছিল। আদারওয়াইজ, কোনো জায়গা থেকে কোনো সহায়তা লোকটা পায়নি। আমাদের সো-কল্ড ইন্ডাস্ট্রি, সো-কল্ড বিগ নেইমস কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়নি। এবং তার সময়ও তাকে কেউ বুঝত না। ছবি তো ফ্লপ। ছবি যখন রিলিজ হতো, হলে কেউ নেই।
নির্বিকার সমাজ
বাঙালি শুধু বোঝেনি তা নয়… ঋত্বিক ওয়াজ দ্য ওনলি ম্যান যাঁর হাত থেকে কোনো ডিরেক্টর বের হয়নি। তাঁর সঙ্গে যারা ছিল তারা কোনো কাজ করতে পারেনি। এইটা একটা পিকুলিয়ার ঘটনা কিন্তু! লোকে গিয়ে শেখে অথচ অত বড় লোকের কাছে থেকেও কেউ শিখতে পারেনি। কারণ, তারা তাঁর নিজেকে নিয়ে এত বেশি আচ্ছন্ন যে, শুধু মদ খাওয়াটা শিখে নিল কিন্তু কাজের কাজটা শিখল না। যার ফলে কিছুই হয়নি। অ্যাট লিস্ট মিডিয়োক্রিটও তৈরি হয়নি। আমি ঋত্বিকের কাজের কতগুলি ধারার সাথে পরিচিত যার মধ্যে একটা স্পট ইম্প্রোভাইজেশন। ওই যে অসামান্য বহুরূপী, এয়ারপোর্টে যার সামনে সীতা গিয়ে পড়ে, এই বহুরূপীর কোনো সিকোয়েন্স স্ক্রিপ্টে ছিল না। আমরা গিয়েছিলাম ওখানে একটা বাজারে, সেইখানে ওই বহুরূপী ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তখন ওকে দেখে ইম্প্রোভাইজ করে তুলে নিয়ে যায় এয়ারপোর্টে। নিয়ে গিয়ে শুট করা হয়। এবং তখন আমি অবাক হয়ে গেছলাম, ওরে! বাবা! ওত বড় এয়ারপোর্টে আমি ঘুরে বেড়ালাম কই পেস্ননটা তো দেখিনি… কিন্তু ছবিতে পেস্ননের একটা রেকেজ ছিল… সিনেমায় তো এটাই মজা, কোথায় কিসের সাথে কী জুড়ে দেয় বোঝা যায় না! তবে, চাখলিয়ার যে এয়ারপোর্ট ওখানে ব্রিটিশ রয়েল এয়ারফোর্সের প্র্যাকটিস করার জায়গা ছিল… তারা মেশিনগান মানে পোর্টেবল গান নিয়ে মহড়া দিত। আমি ওখান থেকে মেশিনগানের অনেক বুলেট খুলে এনেছিলাম; কিন্তু বুলেটগুলো মরচে পড়ে-পড়ে খুলে খুলে নষ্ট হয়ে গেছে। এটা সুবর্ণরেখার শুটিংয়ের সময় দেখা যেত, সেখানে রয়্যাল এয়ারফোর্সের ইনসিগনিয়া লাগানো ছিল। কিন্তু সবই নষ্ট হয়ে গেছে… এখন আর কিচ্ছু নেই।
একলা ঋত্বিক
এবং এটাও ঠিক যে, বাংলায় তার কোনো ঘরানা তৈরি হলো না কেন? অন্য জায়গায় কিন্তু অন্ধভক্ত ফিল্মমেকার জুটল, বিশেষত জন এব্রাহেম১৫; কিন্তু বাংলায় কোনো কিছু হলো না। কারণ, এই এত আধুনিক বাঙালি উদ্বৃত্ত মানুষটাকে আর রাখার দরকার মনে করেনি!! কেননা, এই লোকটা খুব ঝামেলা। আপনারা লক্ষ করবেন, এই ঝামেলাবাজ লোকগুলোর হাতে আর বাঙালি কুক্ষিগত হয়ে থাকতে চাইছে না! এখন তার ফ্লাইট এত বেশি, এখন তার বহুমুখী ইয়ে এত বেশি মানে তার 888sport live footballই বলুন, live chat 888sportই বলুন, সবখানেই ওই একই কথা কে যেন যেন বলছিলেন, হরমোনাল ডিজঅর্ডার না কী যেন…! তো, যাই হোক মানে প্রবলেম বলব না… এগুলোর কোনো সোশ্যাল রিলেভেন্স আছে কি না… মানে, এক পার্সেন্ট লোকের মধ্যে কে হোমোসেক্সুয়াল আর কে নয়, তার রাইট নিয়ে উচ্চবাচ্য হচ্ছে আর এদিকে ওয়ার্কারদের রাইট নিয়ে কোনো কথা হবে না, কেউ কোনো ফিল্ম করবে না। লাখের ওপর কারখানা বন্ধ তাই নিয়ে কোনো ফিল্ম হবে না। চা-বাগানে হাজার হাজার মানুষ কাজ করে মরে গেল, সেসব নিয়ে কিচ্ছু হবে না! আর ননসেন্স, ইডিয়টিক ইস্যুজ নিয়ে যত কথা… আসল কথা কি, একটা সোসাইটি যখন ডি-পলিটিসাইজড হয়ে যায় তখন এইসব হয়। যেমন, আজকে হচ্ছে ফলস থিয়েট্রিক্যাল, ফল্স স্পেক্টাকলস ভঙ্গি; এইভাবে যখন রাজনীতিটা এগোয়, 888sport live chatীরাও এই গড্ডলিকার ভিড়ে পড়ে পয়সা খেয়ে এবং না-খেয়ে। তো, এই কারবারের মধ্যে ঋত্বিকের কথা আনা, অ্যাট অল আলোচনা করা সম্ভব কি!
ঋত্বিকের রাজনীতি
আমি ঋত্বিকের রাজনীতি নিয়ে দু-একটা কথা বলছি। মেঘে 888sport app তারার দুই ছেলে একজন কণ্ঠ888sport live chatী হবে, হয়ও, প্রতিষ্ঠিত হয়। আরেকজন ফুটবলার হবে, হতে পারে না… কারখানায় চাকরি নেয় এবং সেখানে তার অঙ্গহানি ঘটে। ওই যে আমার বাবার একটা ডায়ালগ আছে,
‘যন্ত্র গ্রাস করতে পারে নাই।’ ষাটের বা পঞ্চাশের দশকের পর থেকে আমাদের দেশে এই যে একটা নতুন দশা এলো… এবার চিমত্মা করম্নন সুবর্ণরেখায় রবিরাম – যে লেখক হবে, তাকে হতে হলো বাস ড্রাইভার। একটা বিরাট মধ্যবিত্তের জীবনে পরিবর্তন এসে গিয়েছিল; অসংখ্য বাঙালি ছেলে ওয়ার্কার হয়ে দুর্গাপুর চলে গিয়েছিল। সেই পুরো পিকচারটা, সমসত্ম কিছু ঋত্বিকের ছবিতে রয়েছে। ঋত্বিকের
মার্কস-অ্যাঙ্গেলস-প্রীতি, যেটা সে বলছে – ‘এটা কিন্তু ফেলনা নয়!’ উনি একমাত্র ডিরেক্টর যার প্রতিটি ফ্রেম পলিটিক্যাল। প্রতিটি ফ্রেম বারম্নদে ভর্তি। সে যখন একটা অপমানিত মানুষকে দেখায়… সে এই বার্তাই আমাদের কাছে পৌঁছে দেয় – মানুষের অপমানকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে!! এবং সাংঘাতিক দায়িত্ববোধ থেকে কাজগুলো করা। তার দায়িত্ববোধের চূড়ামত্ম পরিণতি হচ্ছে যুক্তি-তক্কো-গপ্পো। আমার মজাটা হচ্ছে, ছবিটা যখন তৈরি হয় আমি তখন কিচ্ছু বুঝতে পারিনি। বরং আমি ঋত্বিকের সঙ্গে একটা ফ্যানাটিক ঝগড়া করেছি। আমি বলেছি, ‘এনাফ ইজ এনাফ!! তুমি ক্যামেরার ফ্রেমে মদ ঢেলে দিবে আর যা ইচ্ছা তাই করবে… ইন ডিফেন্সে অভ ইউর অ্যালকোহলিজম – এটা আমি মানব না!’ প্রচ- ঝগড়া হয়েছিল এবং তখনকার মতো ঋত্বিক কিন্তু কনসিডারড হিজ ডিফিট। সে বলছে – ‘না, আমি আর পারছি না!’ ওই কথাটাও মনে আছে, সেটা ক্যোওট করছে ‘কিং লিয়ার’ থেকে ‘ডিনাউন্সড দ্য ওয়ার্ড’… আমি বললাম, ‘হ্যাঁ… চুপ করে থাকো আর কিচ্ছু করতে হবে না।’ এবং তারপর আমি যতবার ছবিটা দেখেছি, তার আধুনিকতার দিকটি আমাকে পাগল করে দিয়েছে। কোথায় নিয়ে গেছে একটা ছবিকে… কোথায় চলে গেছে একেকটা ইমেজ… এবং তৎকালীন বাংলায় যা কিছু ঘটেছে পলিটিক্যাল, বিশ্বে যা কিছু ঘটেছে পলিটিক্যাল সমসত্ম কিছু ওই ছবিটাতে সারাৎসার হয়ে ঢুকে গেছে। এবং ঋত্বিকের ফ্রেমের এপিক কোয়ালিটি… এটা আমাকে অসম্ভব মোটিভেট করে। কলকাতা শহরে রোজ অনেক মেয়ে নতুন করে বেশ্যা হয়, তাদের কাছে তাদের দাদারা গিয়ে পৌঁছয়, প্রমত্ত অবস্থাতেই গিয়ে পৌঁছয় কিন্তু এটা ক্যামেরার ফ্রেমে ওরকম একটা বোল্ড সিকোয়েন্সে দেখানো… এটা ঋত্বিক ছাড়া আর কারো পক্ষে করা সম্ভব ছিল না। কারণ, গ্রেট আর্টিস্টরা খুব নিষ্ঠুর হয়। ঋত্বিকও নিষ্ঠুর। মারাত্মক নিষ্ঠুর। এবং তার নিষ্ঠুরতার চাবুক দিয়ে মেরে মেরে মেরে সে সম্বিত ফেরাবার চেষ্টা করেছে মানুষের! কতটা পেরেছে আমরা জানি না।
ঋত্বিক ও মার্কস্বাদ
কিন্তু, আজকে আমার নিজের খুব ভালো লাগছে যে, এই ধরনের একটা আলোচনা সম্ভব হয়েছে। এতটা ভালোবাসা, এতটা রেসপেক্ট নিয়ে ঋত্বিকের ব্যাপারটা ডিস্কাসড হচ্ছে। ঋত্বিকের জীবনদর্শন, ঋত্বিকের রাজনৈতিক আদর্শ পস্নাস তার বহুবিশ্রম্নত ইয়ুং১৬ প্রীতি এইসব নিয়ে আরো বিশদ গবেষণা-আলোচনা করা দরকার। ঋত্বিকের দুটো বই ইনফ্যাক্ট আমার কাছে আছে, একটা হলো ‘মডার্ন ম্যান ইন সার্চ অভ স্যোওল’ – কেউ গবেষণা করলে আমি দিতে পারি। ওই বইটার পাতায় ঋত্বিকের কমেন্টস আছে। এবং আমার পরিচিত এক বন্ধুর কাছে আছে এরিখ নিউম্যানের ‘দ্য গ্রেট মাদার’। এবং সত্যি কথা বলতে কি, ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখলে – এই অমত্মর্জগতের যে-রহস্য আর বহির্জগতের যে-সমস্যা এদের মধ্যে কিন্তু ভয়ংকর বিরোধের কিছু নেই। একটা ইনডিভিজুয়ালকে বুঝতে গেলে তার প্রবলেমসকে বুঝতে গেলে, সে কীভাবে তার রিয়েলিটির সঙ্গে লড়াই করছে সেটা বুঝতে গেলে, তার এক্সিজটেনশিয়াল ফ্রেমটাকে বুঝতে গেলে আমাদের ইয়ুংকে দরকার, ফ্রয়েডকে দরকার, অ্যাডলারকে দরকার – প্রত্যেককে দরকার। ইভেন আব্রাহাম ম্যাসলোকেও দরকার। ম্যাসলো যে-সাতটা ক্যাটাগরি বলছেন অর্থাৎ সাতটা ক্রাইসিস আছে মানুষের… একটা শেল্টারের ক্রাইসিস, একটা সান্নিধ্যের ক্রাইসিস, একটা খাবারের ক্রাইসিস… এগুলো মিটআপ করতে প্রতিটি সত্মরে মানুষের লড়াই চলে।
কাজেই, এই যে ট্রেন্ডটা ঋত্বিক আমাদের চিনিয়ে দিলো, এটারও অপরিসীম মূল্য আছে। কারণ, এই মেকানিক্যাল মার্কসিজম দিয়ে (জীবন-বাসত্মবতা) বোঝা যাবে না! ইতালিতে মার্কস্বাদের প্রতিষ্ঠাতা যিনি গ্যাব্রিওলা, তিনি বলেছিলেন, দামেত্মর সময়ে গম কত দামে বিক্রি হতো আর সিল্কের কাপড়ের কী দাম ছিল – এইগুলো জানলেই সেই সোসাইটিকে এক্সপেস্নইন করা যাবে না, দামেত্মকে তো নয়ই! এই ভুল মার্কস্বাদ আমাদের দেশের অনেক বারোটা বাজিয়েছে। যার ফলে, একটা সময় এই তথাকথিত মার্কসিস্ট ক্যাম্পে আমরা দেখেছি যেটাকে আজকে ভুল রাজনীতির জন্য এক্সপেস্নায়েট করা হচ্ছে, তা হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে 888sport live chatীদের বিরোধের প্রেসনোট।
আর মজাটা ছিল – 888sport live chatীরা অনেক অ্যাডভান্সড লুকিং, তাঁরা এগিয়ে ভেবেছিলেন আর কমিউনিস্ট পার্টি ছিল ব্যাকোয়ার্ড, কমিউনিস্ট পার্টি ছিল অজিফায়েড চিমত্মাধারার বাহক; কাজেই তারা সেই 888sport live chatীকে বুঝতে পারেনি। এই একই অভিযোগ ঋত্বিকের বিরম্নদ্ধেও এসেছে, উনি কী সব গ্রেট মাদার পড়েন, আমার বাবার সম্বন্ধে এসেছে… উনিও তো মাদার-কাল্টে বিশ্বাসী…। এই মেকানিক্যাল মার্কসিজমে যেটাকে আমি ভালগার মার্কসিজমই বলি, এটা নিজেকে এনরিচ করতে পারেনি, এনরিচ করতে না পেরে দিনের পর দিন নতুন-নতুন গাড্ডায় গিয়ে পড়েছে এবং প্রচুর ভুল ব্যাখ্যা এবং ইন্টারপ্রিটেশনের সুযোগ ঘটেছে।
বাজারি-সংস্কৃতি
আমি আর কিছু বলব না… সাম্প্রতিক একটা নাটক দেবব্রত বিশ্বাসকে নিয়ে, সেখানে কতটা ঐতিহাসিক ফ্যাক্ট আছে এবং সেখানে যা-যা সমস্যার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো কোন লেভেলের সমস্যা… এগুলো একটু ভাববার দরকার। অ্যাকচুয়ালি ঋত্বিকের সঙ্গে কী হয়েছিল, হোয়াট শর্ট অভ ডিফারেন্স হি হ্যাড এবং সো ফার মাই নলেজ গোজ জর্জ বিশ্বাসের সঙ্গে এরকম ভয়ংকর কিছু টাসেল হয়েছিল বলে আমার জানা নেই! এই ইতিহাসের অনেকটার সঙ্গেই আমি জড়িত, খুব কাছ থেকে জড়িত। আমার বাবাও একজন ভুক্তভোগী পস্নাস আমি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে এসব সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি, যেমন – সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বীরেন চট্টোপাধ্যায়, অরম্নণ মিত্র, বিষ্ণু দে… আমি কোথাও বাবা এসব পাইনি! এখনসব অদ্ভুত জিনিস উঠে আসছে এবং আমি দেখছি এগুলোকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই অস্ত্রসমসত্ম যদি প্রতিপক্ষের হাতে চলে যায়, আমরা কী নিয়ে লড়ব?! এটাও একটা সমস্যা। কাজেই ঋত্বিক চান যে, আমরা তাকে সেফগার্ড করি, আমিও চাই আজকের ইয়ং ফিল্মমেকাররা অ্যাট লিস্ট একটা অটোগ্রাফ কাজ করম্নক যেখানে বলা যাবে যে, ঋত্বিক বেঁচে আছেন। সেরকম একটা অবস্থা আসবে কি কখনো, কখনো কি দেখতে পাব? নাকি বাঙালি আরো আধুনিক হতে থাকবে! এ একটা জটিল সংকটের সময়, সংকটটাকে আমি অস্বীকার করি না… ম্যাসিভ একটা মার্কেট, একটা কালচার ইন্ডাস্ট্রি আছে… কালচার ইন্ডাস্ট্রির যে-খেলা, মুনাফার যে-খেলা, সেখানে ঋত্বিক চলে না। বরং বলা হয়, ঋত্বিকের ছবির কদর এখন হচ্ছে। সত্যি কথা বলতে কি – যারা তাদের সময় থেকে অনেক এগিয়ে থাকে, তাদের লেখার কদর পরে হয় বা 888sport live chatকর্মের! যেমন, সেইদিন কাফকাকে কেউ বুঝতে পারেনি কিন্তু এখন দিনকে দিন কাফকার রেলিভেন্সি প্রত্যেকদিন বাড়ছে। এই নতুন ম্যানুস্ক্রিপ্টগুলো বেরোলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে তা বোঝা যাচ্ছে না। যেমন, আমেত্মানিও গ্রামসি১৭। তাকে কুড়ি বছরের জন্য এই ব্রেনটাকে কাজ করতে দেব না বলে জেলে দেওয়া হলো; আর তিনি টুকরা পেনসিল আর কাগজে লিখে ফেললেন ‘প্রিজনারস ডায়েরি’! সেটার রেলিভেন্স ভয়ংকরভাবে বেড়ে যাচ্ছে দিনকে দিন… সমাজকে দেখার চোখগুলো পালটে যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। এই যে চিমত্মাভাবনার ক্ষেত্রে রদবদল, এই রদবদলের যে-দর্শন সেখানে ঋত্বিক একদম প্রথম সারির সৈনিক হয়ে থাকবেন।
জ্ঞানমিতি
এবং আমি এই মানুষটাকে এত কাছ থেকে দেখেছি, তিনি আমাকে এত কিছু জানিয়েছেন, বুঝিয়েছেন, শিখিয়েছেন… যেমন ধরম্নন মিউজিক শোনা – এই লোকটা ভারতীয় মার্গ সংগীত থেকে শুরম্ন করে ওয়েস্টার্ন ক্লাসিক্যাল ইভেন জ্যাজ ইভেন বিং ক্রসবির গান – এ সমসত্ম কিছুর উপরে এনসাইক্লোপিডিক নলেজ রাখত। সেই লোকটা আমাকে মদেস মুশোভস্কির মিউজিক শোনাল। লং পেস্নয়িং রেকর্ডের উপর মদের গেলাস রাখত ফলে গোল গোল দাগ হয়ে যেত… একটা বাজিয়ে একদিন শোনালো ‘নাইট অন দ্য বেয়ার মাউন্টেন’। পরে যখন চাকরি-বাকরি করেছি তখন এগুলো সংগ্রহ করেছি। একবার বসুশ্রী কফি হাউসে ক্রিকেট নিয়ে কিছু কথা বলেছিল… সেখানে তো বাঙালির ক্রিকেট নিয়ে বিশাল আড্ডা… সব একদম ঠান্ডা হয়ে গেছে, এগুলো জানেই না! ক্রিকেটের সবচাইতে বড় যে লেখক সিএলআর জেমস – ওয়েস্ট ইন্ডিজের, হি ওয়াজ প্রোটেস্ট্যান্ট অ্যান্ড আ জায়ান্ট ইন্টেলেকচুয়াল। তাঁর লেখারও হদিস জানতেন ঋত্বিক। এই যে ব্যাপারটা… সত্যি কি জানতেন আর জানতেন না… আমি তাকে কণ্ঠস্থ শেক্সপিয়র বলতে শুনেছি ‘কিং লিয়ার’ থেকে।
আমি ঋত্বিককে স্টেজে আশ্চর্য আলোর কাজ করতে দেখেছি, কিছু না জেনে। তিনি আমার বাবার নাটক দেখতে গেছেন, সেই নাটকে আলোর কাজ করছেন তাপস সেন। ঋত্বিক গিয়ে তাপস সেনকে গলাধাক্কা দিয়ে বলল, ‘বেরো এখান থেকে! আমি আলো করব, যা শালা ভাগ!’ তাপস আর কী করবে… ইয়ে মদটদ খেয়ে এসেছে… কিন্তু তারপর ও যে-কাজটা করল অসাধারণ। জাস্ট একটা ডিমার আর একটা স্পটলাইট কমিয়ে বাড়িয়ে পুরো ডাইমেনশনটা পালটে দিলো! ঋত্বিক থিয়েটারেরও লোক, ছবি অাঁকার লোক ছিল, স্কেচ করতে পারত, সে মিউজিকের লোক…।
এইবার বলি, ঋত্বিকের ক্যামেরার কথা, ওঁর প্রত্যেকটা ছবিতে ক্যামেরাম্যানের নাম থাকত কিন্তু বেশিরভাগ কাজ ঋত্বিকের নিজের করা। ক্যামেরায় যখন লুক থ্রু করছে, সেখান থেকে বলে দিচ্ছে রোল-ক্যামেরা-অ্যাকশন… চলল! একটা লোক সবকিছু করতে পারত। আর এডিটিংটা তো রমেশ যোশীর সঙ্গে বসে ফ্রেম বাই ফ্রেম এডিট করত। যাই হোক, ঋত্বিক ঘটক কী রকম ছিল… তাঁর বন্ধুবান্ধব অনেকে নেই, দুই-একজন যারা আছেন তারা কতটুকু বলবেন তাও জানি না। কিন্তু, আবার নতুন করে তথ্য যদি কিছু পাওয়া যায় সেগুলো জোগাড় করার এখন হাইটাইম! ঋত্বিকের সিনেমার মেকআপের কাজটা করতেন মূলত শক্তি সেন, শক্তিদা নেই, আমি নিজে দেখেছি ঋত্বিক নিজে বলে দিচ্ছে, ‘এই শেডটা মার, ওইটা কর।’ মানে, এই লোকটা কী জানত আর কী জানত না, সেইটাই একটা রহস্য। বাট, অ্যাপারেন্টলি কিচ্ছু জানত না। সরোদ বাজাতে পারত, বাঁশি বাজাতে পারত। কিন্তু, কিচ্ছু নয়।
ভাষা-কারিগর
আর বাঙালি ক্রিটিকরা লিখল – এনার একটু ডিসিপিস্ননের অভাব আছে! এনার সিনেমায় কোনো গ্রামার নেই! আরে! শালা! ও গ্রামার বানাচ্ছে! ওর গ্রামারটাকে শেখ! চিরকাল এরা গোল গোল, নিটোল জিনিস মানে ওই ক্যালেন্ডার ফটোগ্রাফি টাইপ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামিয়ে গেল!! খালি চিমত্মা জিনিসটা কত নিটোল হবে! আরে, একটা বীভৎস, ভাঙাচোরা জিনিসকে নিটোল করা যায় না! দ্যাট ইজ নট দ্য নিউ অ্যাস্থেটিক! নিউ অ্যাস্থেটিক হলো মমত্মাজ, সেটাও কিন্তু পলিটিক্যাল কারণেই ওয়ার্ক করেছে। ওই যে সিকোয়েন্সটা – মা বলছে, ক্যামেরা উপরে ঘুরছে, সেখানে একটা জিনিস আছে, একটা বাচ্চা ছেলে দোলনায় দুলছে, এখানে বাচ্চা ছেলেটা হচ্ছে অনমত্ম সময়ের মধ্যে একটা পেন্ডুলাম, সে কোথায় যাচ্ছে ডাইনে না বাঁয়ে সে জানে না! কারণ, ওই ছেলেটার এখন কেউ নেই… মা নেই, বাবা নেই, প্রেমিকা নেই, কেউ নেই! ওর লেখা নেই, কিচ্ছু নেই, টোটালি লস্ট! যেকোনো সময় পেন্ডুলাম থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাবে, ও তখন ট্রাপিজের খেলোয়াড়! এই একটা সিকোয়েন্স তোলেন তিনি। আরেকটা সিকোয়েন্সে হরপ্রসাদকে যখন ঈশ্বর বলছে, ‘তুমি আমাকে কোলকাতায় নিয়া যাবা? কোলকাতায় এখন মজা, সে যে কি বীভৎস মজা!’ তখন হরপ্রসাদ বলছে, ‘নিয়ে যাব…’। ওখান থেকে কাট করছে রেসের মাঠ, একটা ঘোড়া লাফ দিয়ে বের হচ্ছে, আর সীতার গলায় একটা পোকার হার…। চিমত্মা করা যায় না! বিশব সিনেমাতে নেই, কোথাও নেই এমন একটা সিকোয়েন্স! আমাদের যা বড়-বড় নাম, যাদের নামে অ্যাকাডেমি, ইনস্টিটিউট হয়েছে তাঁদের কোনো কাজে নেই, কিচ্ছু নেই! কিন্তু, এই লোকটার আছে! এই লোকটা বিশ্বসিনেমাতে রম্নথলেসলি অটোগ্রাফ করে গেছে, খোদাই করে দিয়ে গেছে! এবং আমাদের এটা গর্বের বিষয় তিনি আমাদেরই লোক, আমরা তাকে কাছে পেয়েছি, দেখেছি।
হারাবার কিছুই নেই
তার স্পিরিটটা খুব সহজ কিন্তু – মানুষের প্রতি বিশ্বসত্ম হওয়া! গরিব মানুষের প্রতি অনেস্টি বজায় রাখা! বেশি বড়লোকের সঙ্গে মাখামাখি করার দরকার নেই – তাতে কখনো 888sport live chat হয় না, দালালি হয়! এগুলো হচ্ছে প্রত্যক্ষ শিক্ষা এবং পলিটিক্যালি অ্যালাইভ হওয়া। এবং আই স্ট্যান্ড ফর লেফট উইং আর্ট বাট নো ফারদার লেফট ইন দ্য আর্ট! এই জায়গায় দাঁড়িয়ে কবুল করা এবং কবুল করতে করতে মরে যাওয়া একসময়! এইটাই স্বাভাবিক। এইটাই একটা 888sport live chatীর জীবন! এইখানেই সে বাঁচে। এবং 888sport live chatীরা পৃথিবীর কোনো দেশে খুব একটা আনন্দে খেয়েছে আর থেকেছে এমনটা কেউ দেখাতে পারবে না! মদিলিয়ানির১৮ মতো 888sport live chatী একটা ব্রেডরোল খাবার জন্য কাফেতে বসে সাদা কাপড়ে ছবি এঁকে দিতেন। সেই ছবিগুলি পরে কোটি ডলারে বিক্রি হয়েছে। এই মার্কেট তো রয়েছে চারদিকে…।
তো, যাই হোক – আমাদের এই পলিটিক্যালি কারেক্ট ও কালচারালি কারেক্ট বাঙালিরা নিপাত যাক!! তাদের আধুনিকতা নিপাত যাক!! আমরা যারা প্রিমিটিভ, পুরনোপন্থী আমরা থাকব! আমরাও বুঝি – এই হোমোসেক্সুয়ালিটি নিয়ে দেবেশ রায়ের দাদা দীনেশ রায় একটা গল্প লিখেছিলেন, অসামান্য গল্প, সেই গল্প আমরা প্রোমোট করেছিলাম… আমরা হোমোসেক্সুয়ালিটিকে প্রোমোট করিনি, আমরা প্রমোট করেছিলাম একটা অসামান্য 888sport live chatকর্মকে – যার বিষয় হোমোসেক্সুয়ালিটি হতেই পারে!! আমরাও কিছু জানি না, বুঝি না, এমন নয়! আমরা রামছাগল এরকম মনে করো না! আমরা ‘ডেথ ইন ভেনিস’ দেখেছি। উই ক্যান টিচ ইউ হোয়াট ইজ হোমোসেক্সুয়ালিটি! এরা যেন আজকে আবিষ্কার করলো এমন ভাব! এগুলো অনেক প্রিমিটিভ ব্যাপার-স্যাপার! এসব হয়ে গেছে অনেক আগে! এগুলো আমরা জানি! কাজেই, হারাবার কিছুই নেই শৃঙ্খল এবং পলিটিক্যালি কারেক্টনেস ছাড়া!!
থ্যাঙ্কিউ !!
দোহাই
ঋত্বিক ঘটক সমীপে – জন এব্রাহেম, https://tinyurl.com/qxmt4sd
সেলুলয়েডের কবি ঋত্বিক ঘটক, https://tinyurl.com/pwavhhm
মুখোপাধ্যায়, সঞ্জয়, দেখার রকমফের : ঋত্বিক ও সত্যজিৎ https://www.parabaas.com/satyajit/articles/pSanjoy.html
নবারম্নণ ভট্টাচার্য প্রয়াত https://www.aajkaal.net/01-08-2014/news/225907/
ঋত্বিক ঘটক, https://tinyurl.com/nh3x7nh
নবারম্নণ ভট্টাচার্য প্রয়াত, আনন্দবাজার পত্রিকার শোকবার্তা, https://tinyurl.com/ktkgw5w
টীকা-ভাষ্য
১। তুলসী চক্রবর্তী : তুলসী চক্রবর্তী (৩ মার্চ, ১৮৯৯-১১ ডিসেম্বর, ১৯৬১) ১৯৪০ এবং ১৯৫০ সালের বাংলা সিনেমার এক স্বনামধন্য অভিনেতা ছিলেন। প্রধানত কমিক ভূমিকায় উনি খ্যাতি লাভ করেছিলেন। তাঁর সবচেয়ে উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা সত্যজিৎ
রায়-পরিচালিত ‘পরশপাথর’ live chat 888sportের মুখ্য অভিনেতা হিসেবে।
২। ইনোকেমিত্ম মিখাইলোভিচ স্মোকনোফস্কি : ইনোকেমিত্ম মিখাইলোভিচ স্মোকনোফস্কিকে (মার্চ ২৮, ১৯২৫-আগস্ট ৩, ১৯৯৪) সোভিয়েত রাশিয়ার ‘অভিনেতাদের সম্রাট’ বলে অভিহিত করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে ফেরত এসে যোগ দেন থিয়েটার কোম্পানিতে। উনিশশো চৌষট্টি সালে গ্রেগরি কজিমত্মসেভের পরিচালনায় এবং বরিস পাসেত্মরনাকের তর্জমায় শেক্সপিয়রের হ্যামলেটের নাম ভূমিকায় তাঁর অভিনয় দর্শক ও সমালোচকের মসিত্মষ্কে চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছে। তিনি আন্দ্রেই তারকোভস্কির মিরর সিনেমায় কথকের ভূমিকা পালন করেছেন।
৩। ডাস ক্যাপিটাল : ডাস কাপিটাল (পুঁজি) কার্ল মার্কসের লেখা পুঁজিবাদের সমালোচনামূলক একটি বই। সামাজিক ইতিহাসের ব্যাখ্যায় মার্কস দেখিয়েছেন, যে কোনো ঐতিহাসিক যুগ সমকালীন পণ্য-উৎপাদন ব্যবস্থার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
৪। আন্দ্রেই আরসেনেভিচ তারকোভস্কি : সিনেমা-করিয়ে, লেখক, সিনেমা-তাত্ত্বিক, live chat 888sport আচার্য, থিয়েটার ও অপেরা পরিচালক আন্দ্রেই তারকোভস্কি (৪ এপ্রিল, ১৯৩২-২৯ ডিসেম্বর, ১৯৮৬) বিশ্বসিনেমার ইতিহাসে নমস্য নির্মাতাদের একজন। ইমেজ, সংগীত, সংলাপের এক বাঙ্ময় সংযোজনা দেখতে পাওয়া যায় তাঁর সিনেমায়। মেটাফিজিক্যাল বা আধ্যাত্মিক আখ্যান, এক্সট্রিম লং শট আর মনে রাখার মতন সৌন্দর্যের ব্যতিক্রমী ফটোগ্রাফি দ্বারা প্রায়ই তাঁর সিনেমাকে চিহ্নিত করা হয়।
৫। ইঙ্গমার বার্গম্যান : ইঙ্গমার বার্গম্যান (১৪ জুলাই,
১৯১৮-৩০ জুলাই, ২০০৭) থিয়েটার আর সিনেমা পরিচালনায় ছিলেন সব্যসাচী। বার্গম্যানকেই একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কোন মাধ্যমটা আপনার বেশি পছন্দের? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, সিনেমা আমার স্ত্রী, আর থিয়েটার উপপত্নী। ষাট বছরের অধিক সময় ধরে তিনি নির্মাণ করেছেন বাষট্টিটি সিনেমা; তাঁর তিনটি ছবি সেরা বিদেশি ভাষার ছবির ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতেছে।
৬। আকিরা কুরোশাওয়া : আকিরা কুরোশাওয়ার (মার্চ ২৩, ১৯১০-সেপ্টেম্বর ৬, ১৯৯৮) সিনেমায় গতি নিঃসন্দেহে পায় অমায়িক ভাষা। জাপানি সিনেমার পেইন্টার বলে খ্যাতি আছে তাঁর। সিনেবাজারে একজন কর্তৃত্বপরায়ণ দৃশ্য-কারিগর হিসেবে সুপরিচিত আকিরার প্রজ্ঞা ও মেধার প্রশংসা করেছেন সত্যজিৎ রায় থেকে জর্জ লুকাস পর্যমত্ম। সিনেম্যাটিক বিউটি যদি আকিরা কুরোশাওয়ার মুদ্রার এক পিঠ হয় তবে আরেক পিঠে রয়েছে ভায়োলেন্স।
৭। বিজন ভট্টাচার্য : বিজন ভট্টাচার্য (১৯১৭-৭৮) একজন বাঙালি নাট্যব্যক্তিত্ব। বিজন ভট্টাচার্য ছিলেন ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের প্রথম সারির নাট্যকর্মী। বিজন ভট্টাচার্যের নাটক রচনা, অভিনয় এবং নির্দেশনা সাফল্য লাভ করেছিল গণনাট্য আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। বিজন ভট্টাচার্য মার্কসীয় দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন। ক্রমে মার্কসীয় দর্শনের পরিবর্তে বা সঙ্গে তাঁর রচনায় লোকায়ত ধর্ম দর্শন, হিন্দু ধর্মের সমন্বয় প্রয়াসী মানসিকতা কাজ করেছিল। চিরকালীন মাতৃকা ভাবনা তাঁর নাটকে প্রায়ই লক্ষ করা যায়।
৮। জাফর পানাহি : সত্যবাদী, সাহসী, নির্ভীক ইরানি live chat 888sport পরিচালক জাফর পানাহি সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ইরানের সামাজিক, রাজনৈতিক দৈন্যদশার স্বরূপ উদ্ঘাটন করেছেন তাঁর বহু ছবিতে। ইরান সরকারের অভিযোগ, জাফর পানাহি দেশের বিরম্নদ্ধে, প্রশাসনের বিরম্নদ্ধে প্রচারণা চালান ছবিতে। এ অপরাধে তাকে কুড়ি বছরের কারাদ- দেওয়া হয়েছে, খর্ব করা হয়েছে চিমত্মার স্বাধীনতা। তাঁর উলেস্নখযোগ্য সিনেমা – ‘সার্কেল’, ‘অফসাইড’, ‘হোয়াইট বেলুন’ প্রভৃতি।
৯। বিনায়ক সেন : বিনায়ক সেন ভারতীয় শিশুরোগ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকারকর্মী। বর্তমানে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদ– দ–ত। ছত্তীশগড় সরকারের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের সংস্কারের কাজ করার সময় তিনি নকশালবিরোধী অপারেশনে সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিনায়ক সেনকে ‘প্রিজনার অফ কনসায়েন্স’ বলে উলেস্নখ করেছে।
১০। মাওবাদী : মাওবাদ হচ্ছে চীনের রাজনৈতিক নেতা মাও জে দংয়ের শিক্ষাসমূহ থেকে পাওয়া রাজনৈতিক মতবাদ। এর অনুসারীবৃন্দ মাওবাদী নামে পরিচিত। ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে এটি বিকশিত হয়; চীনের কমিউনিস্ট পার্টি এটি বিসত্মৃতভাবে রাজনৈতিক ও সামরিক চালনামূলক আদর্শ হিসেবে বাসত্মবায়ন করে।
১১। নকশালবাড়ি : নকশাল বা নকশালবাড়ি আন্দোলন বিংশ শতাব্দীর সপ্তম দশকে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ি গ্রাম থেকে শুরম্ন হয়ে ধীরে-ধীরে ছত্তীশগড় এবং অন্ধ্র প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এ-বিপস্নবী দলের নেতৃত্বে ছিলেন চারম্ন মজুমদার এবং কানু স্যানাল। নকশাল আন্দোলন নিয়ে প্রচুর 888sport live football ও সিনেমা রচিত হয়েছে।
১২। চারম্ন বাবু : চারম্ন মজুমদার (১৯১৫-৭২) নকশাল ও মাওবাদী রাজনীতিবিদ। জন্ম রাজশাহী জেলার হাগুরিয়া গ্রামে। পৈতৃক নিবাস শিলিগুড়ি। জমিদার পরিবারে জন্ম। কৃষকদের জমির মালিকানার দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তাঁর নেতৃত্বে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরাঞ্চল, কেরালা ও পূর্ব উড়িষ্যায় সশস্ত্র আন্দোলন ব্যাপকভাবে বিসত্মর লাভ। ১৯৬৯-এর পহেলা মে কলকাতায় সিপিআই (এমএল) দলের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি।
১৩। সুসলভ : মিখাইল আন্দ্রেভিচ সুসলভ (১৯০২-৮২) বিশ শতকে স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত রাশিয়ার মন্ত্রী ছিলেন। তৎকালীন সময়ে কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা এবং ক্ষমতা কাঠামোর সঙ্গে খোদ পার্টির সম্পর্ক বিযুক্তিকরণে গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। পরিবর্তনের বিরম্নদ্ধে কট্টর মনোভাবের কারণে সোভিয়েত যুগের সংস্কারবিরোধী নেতা হিসেবে তাঁর নাম সবার আগে আসে।
১৪। বিমল রায় : বিমল রায় (১৯০৯-৬৬) আমত্মর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজক। প্রথম জীবনে আরেক প্রখ্যাত নির্মাতা প্রমথেশ বড়ুয়ার সঙ্গে চিত্রগ্রহণের কাজ করেন। তাঁর পরিচালিত সাড়া জাগানো live chat 888sportের মধ্যে উদয়ের পথে, অঞ্জনগড়, মা, দো বিঘা জমিন প্রভৃতি উলেস্নখযোগ্য। দো বিঘা জমিন কান, কার্লোভিভেরি এবং ভেনিস live chat 888sport উৎসবে বিভিন্ন পদকে সম্মানিত হয়েছিল।
১৫। জন এব্রাহেম : জন এব্রাহেম (১৯৩৭-৮৭) দক্ষিণ ভারতের একজন সিনেমা কারিগর, ছোট গল্পকার এবং চিত্রনাট্য নির্মাতা। তৎকালে তাঁর জীবনযাপন ও গণমুখী সিনেমা ভাবনার দরম্নন ভারতীয় live chat 888sport দর্শনে পেয়েছেন ‘কিংবদমিত্ম’র স্থান। বীমা কোম্পানির কেরানির চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি পুনে ফিল্ম স্কুলে ভর্তি হন; সেখানে গুরম্ন ঋত্বিক কুমার ঘটকের সাহচর্যে শুরম্ন সিনেমা অধ্যয়ন। আম্মা আরিয়ান (১৯৮৬) তাঁর অন্যতম আলোচিত
চিত্রকথা।
১৬। ইয়ুং : কার্ল গুসত্মভ ইয়ুং (১৮৭৫-১৯৬১) একজন সুইস চিমত্মক। মনঃসমীক্ষণের দার্শনিক আলোচনায় অগ্রজ সিগমুন্ড ফ্রয়েডের সঙ্গে তাঁর বাহাস এখনো তাত্ত্বিকদের আগ্রহের বিষয়। ‘যৌথ/ সামষ্টিক অচেতনতা’ ইয়ুঙের বিখ্যাত তত্ত্ব।
১৭। অ্যান্টেনিও গ্রামসি : অ্যান্টেনিও গ্রামসি একজন ইতালিয়ান লেখক : তিনি একাধারে একজন রাজনীতিবিদ, দার্শনিকও বটে। তিনি ছিলেন একজন মার্কসিস্ট।
১৮। মদিলিয়ানি : আমেদিও ক্লিমেমেত্ম মদিলিয়ানি
(১৮৮৪-১৯২০) একজন ইতালীয় চিত্রকর ও ভাস্কর। তাঁর 888sport live chatীজীবন কেটেছে মূলত ফ্রান্সে। পোর্ট্রেট ও ন্যুড পেইন্টিংয়ে আধুনিক কারম্নশৈলী প্রয়োগের জন্য সুবিদিত ছিলেন।
মদিলিয়ানি পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে যক্ষ্মায় ভুগে প্যারিসে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.