কাব্যগ্রন্থ পদাতিকের কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘রাস্তাই একমাত্র রাস্তা।’ live chat 888sport পদাতিকের পরিচালক মৃণাল সেনের বিশ্বাস ছিল, ‘সিনেমার বিকল্প সিনেমাই।’ সে-বিশ্বাস নিয়েই চলে গেছেন তিনি। আমরা জানি, আধুনিক সিনেমার প্রযুক্তিসর্বস্ব রূপ নিয়ে তাঁর অসন্তোষ আর উপলব্ধিরই প্রকাশ এই বাক্য। কিন্তু অন্য এক অর্থে, তাঁর নিজের live chat 888sport-দর্শনেরও ছায়া পড়েছে এই বাক্যে। সবসময়েই চল্তি পথের বিকল্প খুঁজে গেছেন মৃণাল সেন – এমনকি চল্তি বিকল্প পথেরও।
তাঁর সমসাময়িক কিংবা উত্তরসূরি পরিচালকদের তৈরি কাহিনিচিত্রের আদল থেকে মৃণাল সেনের তৈরি কাহিনিচিত্রের আদল প্রথম থেকেই আলাদা। তাঁর ছবিগুলো আখ্যাননির্ভর হয়েও হয়ে ওঠেনি গতানুগতিক কাহিনিচিত্র। কথকতার আকর্ষণ বা ঘটনাবর্ণনার হাতছানিকে সযত্নে এড়িয়ে মৃণাল সেন চলে গেছেন আখ্যানের এক অন্য মহলে। সেটাকে বলা চলে, আখ্যানের অন্দরমহল। আখ্যান সেখানে নিয়মিত অগ্রগতির বদলে ঘুরে বেড়িয়েছে নানা অনিয়মিত প্যাটার্নে। নির্ভর করতে চেয়েছে চরিত্রগুলোর অনুভূতির ওপর। আখ্যানের গৌরবে গরীয়ান ছিল না মৃণাল সেনের কোনো ছবিই। আখ্যান তাঁর ছবিতে কেবল উপলক্ষ। তাঁর ব্যবহৃত চরিত্রগুলোকে ধারণ করার আধার মাত্র। ছবির প্রয়োজনে 888sport live footballের দিকে যখন তিনি মুখ ফেরান, তখন খুব বেশি কিছু দাবি থাকে না তাঁর। ছবির জন্যে 888sport live footballের কাছ থেকে তিনি নিয়েছেন কিছু সামাজিক তথ্য, কোনো সামাজিক প্রক্রিয়ার আদলটুকু – সেটুকুই তাঁর ছবিতে আখ্যানের কাঠামো। তারপর চিত্রনাট্যের হাত ধরে সেই 888sport live football শুধু রূপান্তরিতই হয়নি, গোত্রান্তরও ঘটেছে তার। সেটি হয়ে উঠেছে বিভিন্ন চরিত্রের দর্পণ। এমনকি তাদের বকলমে তাঁর নিজের মানসিকতারও প্রতিফলন। আখ্যানের প্রান্তিক ভূমিকার জন্যেই তাঁর ছবিতে গুরুত্ব পেয়েছে বিশেষ বিশেষ মুহূর্ত। আখ্যান নয়, তাঁর ছবিকে ঘনত্ব দিয়েছে এইসব মুহূর্তের সংগঠন এবং সেগুলোর বিন্যাস। তাঁর ছবি 888sport live footballনির্ভর, কিন্তু 888sport live football কখনোই তাঁর ছবির ভরকেন্দ্র নয়। এই অর্থে মৃণাল সেনের সিনেমা 888sport live footballনিরপেক্ষ।
আসলে মৃণাল সেন চাননি, তাঁর ছবির 888sport live chatমূল্য আলোচিত হোক ব্যবহৃত আখ্যানের 888sport live footballমূল্যের সমান্তরালে কিংবা প্রতিতুলনায়। নিজে ছিলেন 888sport live footballের একনিষ্ঠ পাঠক। জানতেন, 888sport live footballপাঠের অভিজ্ঞতার চেয়ে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা কতখানি আলাদা। উচ্চমানের কোনো 888sport live football তার প্রবল অভিঘাতে তাঁর ছবির দর্শককে আচ্ছন্ন করুক, এটা তাঁর কাম্য ছিল না।
তবে তাঁর প্রথম জীবনের ছবিতে চরিত্রগুলোর ওপর আখ্যানের প্রলেপ ছিল তুলনায় পুরু। কিন্তু তখনো সিনেমার সংগঠনে কাহিনিকে অতিক্রম করে যাওয়ার একটা প্রবণতা দেখা গেছে মৃণাল সেনের কাজে। বর্জন করেছিলেন আখ্যানের সাবলীলতা, পরিপাটি কথকতার মুনশিয়ানা। আখ্যানের বাইরে অথবা ভেতরেও কী যেন খুঁজেছেন তিনি।
সেই অনুসন্ধানের অভিমুখ স্পষ্ট হলো উনিশশো সত্তরের দশকে এসে। ততদিনে পরিণত হয়েছে তাঁর সিনেমার ভাষা,
গভীর হয়েছে তাঁর সিনেমার দর্শন। আর তখন থেকে আখ্যানের জটিল বিন্যাস নয়, বিভিন্ন চরিত্রের অনুভব আর উপলব্ধিই হয়ে উঠল তাঁর ছবির মূল চালিকাশক্তি। এরপর তাঁর ছবিতে আখ্যান-নিরপেক্ষ কক্ষপথেই বিচরণ করেছে চরিত্রগুলো।
এভাবে সরল কাহিনি বা সুষ্ঠু আখ্যানের প্রতি এক তীব্র অনীহা নিয়েই মৃণাল সেন ধীরে ধীরে তৈরি করেছেন তাঁর নিজস্ব ঘরানা, নিজস্ব 888sport live chatজগৎ। সেই ঘরানার অনিবার্য উপাদান রুপোলি পর্দায় রূপের চলৎপ্রবাহ জুড়ে সোচ্চার-নিরুচ্চার নানা প্রশ্নের মিছিল। দর্শকের মনটাকে সজোরে নাড়া দেওয়ার আয়োজন। তৃতীয় ছবি বাইশে শ্রাবণ থেকেই এই অভ্যাসের শুরু। ফলে সেই মানুষটার গায়ে, আর তাঁর ছবির গায়ে অনিবার্যভাবে লেপ্টে থেকেছে সামাজিক দায়বদ্ধতার তকমা।
কিন্তু সেই তিনিই ৬৪ বছর বয়সে পৌঁছে, খ্যাতি ও সাফল্যের মধ্যগগনে দাঁড়িয়ে, নিজের কাজ, নিজের মেজাজকে পরতে পরতে খুলে দেখাতে দেখাতে আমায় বলেছিলেন, ‘আমি একবার লিখেছিলাম মনে আছে, এমন একটা সময় আসবে যখন হয়তো ছবি communicate Ki‡e only to yourself — personal cinema, personal level-এ। আমি হয়তো সেসব জায়গায় পৌঁছতে পারি, আমি জানি না। তবে আমি মনে করি, যদি এরকম কিছু করতে পারি, I will be happy, I wish I could do it|Õ
তিনদিন প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে চলা সেই কথোপকথন সেখানেই শেষ হয়েছিল সেদিন। কিন্তু সে-কথার রেশ আমার মনে থেকে গিয়েছিল। নানা কারণে মধ্যবর্তী তিন দশকে সেই কথোপকথনের খেই ধরা সম্ভব হয়নি। যদিও কথাবার্তা মাঝেমধ্যেই হয়েছে আর তিনি জানিয়েওছেন নিজের তাৎক্ষণিক ভাবনার কথা – সিনেমা নিয়ে ভাবনা, সিনেমা করার নানা পরিকল্পনার কথা। সেইসব পরিকল্পনার অধিকাংশই পর্দা পর্যন্ত পৌঁছয়নি। আর যতটুকু পৌঁছেছে, সেসবও কি আর আগের মতো আলোড়ন তুলেছে?
প্রশ্ন হলো, শুধু এইজন্যেই কি আপ্রসঙ্গিক, অকিঞ্চিৎকর হয়ে গেছে সেগুলো?
আমি বলতে চাইছি মৃণাল সেনের শেষ পাঁচটি ছবির কথা – জেনেসিস (১৯৮৬), এক দিন অচানক (১৯৮৯), মহাপৃথিবী (১৯৯১), অন্তরীণ (১৯৯৪) আর আমার ভুবন (২০০২)। আমার চোখে এই ছবি পাঁচটি মৃণাল সেনের সৃষ্টিভাণ্ডারে এক বিশিষ্ট অথচ ব্যতিক্রমী গুচ্ছ।
মৃণাল সেনের আগের ছবিগুলোর মতোই এই ছবিগুলিতেও 888sport live footballের ছোঁয়া আছে১, তাদের কাঠামোয় পাওয়া যায় আখ্যানের বুনট, আর চালিকাশক্তি হিসেবে আছে দৃশ্যমান কিছু চরিত্র – ছবি যত এগোয় তারা মেলে ধরে তাদের নিজস্ব অনুভব। কিন্তু এসব হলো ছবিগুলোর বাইরের দিক। পাশাপাশি এক অদৃশ্য কিন্তু নিশ্চিত উপস্থিতি, নীরব অথচ গম্ভীর এক স্বর অন্য তাৎপর্যে মহীয়ান করে তোলে ছবিগুলোকে। আমাদের টেনে নিয়ে যায় পর্দার দৃশ্য ছাড়িয়ে গভীর নির্জন এক পৃথিবীর দিকে। সেই পৃথিবীর ভাষ্যকার স্বয়ং মৃণাল সেন। সিনেমার যে-কোনো auteur-ই নিজের রুচি, মনন, বিশ্বাস আর ভাবনা চারিয়ে দেন নিজের ছবিতে। সেসব একইসঙ্গে সময়োপযোগী আবার কখনো সময়-অতিক্রমীও। কিন্তু স্রষ্টার মেজাজের একটা ছাপ ধরা থাকে তাঁদের আদ্যোপান্ত সৃষ্টিতে। ধারাবাহিকভাবে এই ছাপটা তৈরি করতে পারেন বলেই তাঁরা auteur। তবে জীবনের শেষ পাঁচটি ছবিতে মৃণাল সেন শুধু নিজের ছাপটুকুই রাখেননি, নিজের স্বরকেও প্রোথিত করেছেন নিজের সৃষ্টির মধ্যে। আমরা মনে করতে পারি, জীবনের শেষ তিনটে ছবিতে (গণশত্রু, শাখা-প্রশাখা আর আগন্তুক) সত্যজিৎ রায়ও একই কাজ করেছেন। সেখানে তিনি তুলে এনেছিলেন আধুনিক মানুষের জীবনে চিন্তার দৈন্য আর বিশ্বাসের সংকটের কথা। আর এই ছবিগুলোয় কোনো-না-কোনো চরিত্র পরিচালকের প্রতিনিধি হয়ে দেখা দেয় – আগন্তুকের মূল চরিত্রই পরিচালকের alter ego।
মৃণাল সেনের শেষ পাঁচটি ছবিতে, একমাত্র কিছুটা অন্তরীণ-এ ছাড়া, এরকম কোনো প্রতিনিধিস্থানীয় চরিত্র খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু সারা ছবিজুড়ে প্রতিটি সিকোয়েন্সে মনোযোগী দর্শক অনুভব করবেন পরিচালকের উপস্থিতি, আর-একটু সংবেদী হলে শুনতে পাবেন তাঁর স্বর – সাম্প্রতিক পৃথিবী বিষয়ে তাঁর আশঙ্কা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, যন্ত্রণা আর তার মাঝেই কিছু প্রত্যাশা ধারণ করে থাকে সেই স্বর।
এই পর্বের প্রথম ছবি জেনেসিসের মর্মার্থ বিষয়ে একটাই কথা উচ্চারণ করেছেন মৃণাল সেন বারবার, ‘A world is built or gained but a world lost to be regained, to be rebuilt, Genesis over again.’ এ হলো মানুষ আর প্রকৃতিকে ঘিরে ভাঙাগড়ার চক্রাকার আবর্তনের শাশ্বত সত্য। আর জীবনের শেষ ছবির শুরুতেই (নেপথ্যে গোলাবারুদের শব্দময় পটভূমিকায়) পর্দায় যখন লিখে দেন, ‘পৃথিবী/ ভাঙছে পুড়ছে ছিন্নভিন্ন হচ্ছে/ তবুও মানুষ বেঁচেবর্তে থাকে/ মমত্বে/ ভালবাসায়/ সহমর্মিতায়।’ তখন আর-এক সত্যে পৌঁছবার জন্যে উদ্বোধিত করেন আমাদের।২
এরই মাঝে পৃথিবীর ভাঙা, পোড়া, ছিন্নভিন্ন হওয়ার বয়ান উঠে আসে এক দিন অচানক (হিন্দি) আর মহাপৃথিবী ছবিতে দুটি মানুষের হারিয়ে যাওয়ার অভিঘাতে। প্রায় এক দশক আগে তৈরি খারিজের সঙ্গে একটা আপাত-সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যেতেই পারে এই দুটি ছবির। কিন্তু মন দিয়ে লক্ষ করলেই বোঝা যাবে, খারিজ ছবিতে মৃণাল সেন আখ্যানকে এমনভাবে বিন্যস্ত করেন যে এক শিশুশ্রমিকের মৃত্যুতে উন্মোচিত হয় মধ্যবিত্তশ্রেণির সংবেদনহীন স্বার্থপর অবস্থান। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমনই করুণ সেই অবস্থান যে, প্রশ্নে প্রশ্নে তাদের বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত করে দিতে পারেন মৃণাল। অন্য ছবি দুটির ক্যানভাস অনেক ছড়ানো, অনেক বড়ো। মৃত্যু বা অনুপস্থিতি এই ছবি দুটিতে কোনো বিশেষ কার্যকারণের ফল নয়, মানুষের অস্তিত্বের সংকট থেকে উঠে আসা একটি জাগতিক অবস্থা, যার থেকে তৈরি হয় আর-এক সংকট। বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতকে ঘিরে তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত সেটিকে অতিক্রম করেই গড়ে ওঠে ছবি দুটির বয়ান, যাকে ঘনত্ব দেয়, গাঢ় করে তোলে পরিচালকের স্বর – যে স্বর খুব উচ্চকিত নয়, কিন্তু অস্ফুটও নয়। সেই স্বরে প্রশ্নের চেয়েও বেশি করে ফুটে ওঠে আশাভঙ্গের ব্যথা।
অন্তরীণ ছবিতেও পরিচালকের যন্ত্রণার উৎস হিসেবে উঠে আসে মানুষের অস্তিত্বের সংকট। অবশ্য মৃণাল সেনের বয়ানে এই সংকটের চেহারা-চরিত্র আলাদা। মানবিক অস্তিত্বের একটা অপরিহার্য উপাদান হলো মানুষে-মানুষে সংযোগ। মৃণাল সেন দেখান, উত্তর-আধুনিক পৃথিবীতে সংযোগের মানবিক মাত্রাটি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। তাঁর কথায় :
…ছবির লেখক-নায়ক এক পুরনো বিশাল প্রাসাদোপম বাড়িতে কয়েকদিনের জন্য গেছে – যদি সেই সুযোগে কিছু লেখার বিষয়বস্তু খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পুরনো বাড়িতে যেন ক্ষুধিত পাষাণের গল্প আছে। অতীতের 888sport sign up bonus জড়িয়ে আছে, আবার টেলিফোনও আছে বর্তমানের সঙ্গে সংযোগের। সেই টেলিফোন বাজেও গভীর রাতে, শোনা যায় এক 888sport promo code কণ্ঠস্বর। ক্ষুধিত পাষাণের কাহিনীর মতো এই 888sport promo codeও অনেকটা বন্দিনী। ভেতরটা খাঁ খাঁ করে। … লেখক অতীত বর্তমান খুঁজে একই কাহিনীর সূত্র পায়।
টেলিফোনে জানা যায়, যেন ইঙ্গিতেই বোঝা যায়, সবই সেই গভীর রাতে। দু’জনেই দু’জনকে চেনে না, জানে না, একজন বলে, অন্যজন শোনে, আবার দুজনেই বলে চলে। এইভাবেই দু’জনের ফোনে শব্দের খেলা আর কথার খেলা চলতে চলতে একদিন শেষ হয়ে যায়। একই ট্রেনে ওঠা-নামা করে দু’জন, তবু কারও সঙ্গে মুখোমুখি কথা হয় না, চিনেও চিনতে চায় না একে অপরকে। যেন কোনও নির্দিষ্ট 888sport promo code নয়, নির্দিষ্ট লেখকও নয়। খেলা শেষ পর্যন্ত শেষ হয়ে যায়। …৩
কে বলতে পারে, এখানে নিজের কথাই বললেন না মৃণাল সেন? প্রথম দেখায় অন্তরীণকে একটু অসংলগ্ন লাগে বটে, কিন্তু ক্রমে কুয়াশা কেটে গিয়ে পরিচালকের বক্তব্য ফুটে ওঠে আমাদের সামনে। দ্রুত একমেরুমুখী এক বিশ্বায়িত পৃথিবীর মোহময় সাংস্কৃতিক চিহ্ন আর মোহিনী লক্ষণগুলো নিয়ে তাঁর উদ্বেগ। এগুলো তাঁকে আড়াল থেকে ডাক দেয়, ইশারা করে চলে অবিরত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অসমাপ্তই থাকে সংযোগ। নির্দিষ্ট কোনো মোহিনীমায়া নয়, বিশেষ কোনো 888sport live chatীর কথাও উঠে আসে না সংযোগহীন এই সংলাপে। অথচ দর্শকের বুঝতে কোনো অসুবিধেই হয় না যে, ঠিক কোন সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করছেন মৃণাল সেন। অর্থনৈতিক উদারীকরণের পরবর্তী যুগের ভারতে তাঁর বহুদিনের চেনা মধ্যবিত্তশ্রেণির নতুন, ঝলমলে অথচ নিজেদের আসক্তির জালে বন্দি চেহারাটিকে আর তিনি সহ্য করতে পারছিলেন না। যৌবনের সূচনায় ছোট শহর ফরিদপুর থেকে কলকাতায় এসে যে এক ধরনের পরবাসের বোধে আচ্ছন্ন হয়েছিলেন তিনি, সেই বোধই যেন ফিরে এলো তাঁর কাছে।
ফলে পরের আট বছর আর কোনো ছবিতে হাত দেননি মৃণাল সেন। তারপর জীবনের শেষ ছবিটি যখন তৈরি করলেন, তখন তাঁর বয়স আশি বছর প্রায়। লক্ষ করার বিষয়, এ-ছবির আখ্যানক্ষেত্র নগরাঞ্চলের বদলে গ্রামাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকে – অবশ্য চরিত্রগুলো সেখানকার কৃষিজীবী মানুষের নয়, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তশ্রেণির। মৃণাল সেন এতোদিনে উপলব্ধি করেছেন শহরের মানুষের চেহারাই শুধু বদলায়নি, আমূল বদলেছে তাদের মনও। মানবিকতার খোঁজে তাই হয়তো তাঁর গ্রামাঞ্চলে প্রবেশ এবং নিজের live chat 888sportজীবনে এই প্রথম 888sport free betলঘু পরিবেশে উঁকি মারা। খুব সহজে মানুষের ওপর বিশ্বাস হারাতে চাননি তিনি, যদিও বুঝতে পারছিলেন খুব বেশি ভরসার জায়গা অবশিষ্ট নেই ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়াতে থাকা এই পৃথিবীর আনাচে-কানাচেও।
সন্দেহ নেই, এই পর্বে কেবল নিজের সঙ্গেই নিজের বোঝাপড়া, নিজের সঙ্গেই নিজের সংলাপ চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। অন্য সকলেই সেখানে ছিলেন গৌণ।
সিনেমায় 888sport app download apkর স্বাদ আনতে চেয়েছিলেন মৃণাল সেন। ১৯৮৭ সালের যে-কথোপকথনের কথা বলেছি ওপরে, সেই কথোপকথনেরই একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে বলেছিলেন আমায়, ‘শঙ্খবাবুর বইটা৪ পড়ে আমি এখন ভাবছি – 888sport app download apkর জায়গায় পৌঁছতে পারে ছবি, ছবিও 888sport app download apkর মর্যাদা পেতে পারে। 888sport app download apk তো physical reality থেকে শুরু করেই একটা concept-এ চলে যায়। আমিও সেইভাবে physical reality-টাকে পেরিয়ে এসে একটা concept-এ চলে যেতে চাই — — with all my experiences about reality, with all the experiences that history has offered me — সব — এটা হবে 888sport app download apkর ধরনে।’ নানা কারণে সেই লক্ষ্যে আর পৌঁছনো হলো না তাঁর। শেষের দিকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন, কিন্তু জীবনের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেননি কোনোদিন, নিজের বিশ্বাস থেকেও সরে আসেননি আমৃত্যু। শুধু মেনে নিয়েছিলেন, সেই বিশ্বাস নিয়ে অর্থপূর্ণ তর্ক করার ক্ষমতায় ভাটা পড়েছে ভগ্নস্বাস্থ্যের কারণে। তাই আমার ভুবন – স্বপ্নভঙ্গের বেদনাকে মুছে ফেলার চেষ্টা, তাই সিনেমাজীবনের শেষ উচ্চারণটুকু ধরে রাখা গভীর বিশ্বাসের প্রতীক অমোঘ কয়েকটি শব্দে। যেগুলো ঠিক 888sport app download apk না হলেও 888sport app download apkরই মতো।
নির্দেশিকা
১। জেনেসিস ছবির অবলম্বন সমরেশ বসুর একটি বড় গল্প ‘উড়াতিয়া’, এক দিন অচানকের অবলম্বন রমাপদ চৌধুরীর গল্প ‘বীজ’, অন্তরীণের অবলম্বন সাদাত হাসান মান্টোর গল্প ‘বাদ্শাহৎ কি খৎমা’ আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, আর আমার ভুবনের অবলম্বন আফসার আমেদের 888sport alternative link ধানজ্যোৎস্না। একমাত্র মহাপৃথিবীর অবলম্বন ছিল অঞ্জন দত্তের অপ্রকাশিত কাহিনিসূত্র/ নাটক।
২। গোর্কি সদনে মৃণাল সেনের প্রথম 888sport app download for androidসভার মঞ্চে দৃশ্যমান এই লেখাগুলোর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে মনে পড়ে যাচ্ছিল একটি বিখ্যাত 888sport app download apkর শেষ ক’টা চরণ, ‘পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে/ পৃথিবী হয়তো গেছে মরে/ আমাদের কথা কে-বা জানে/ আমরা ফিরেছি দোরে দোরে।/ কিছুই কোথাও যদি নেই/ তবু তো কজন আছি বাকি/ আয় আরো হাতে হাত রেখে/ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।’
৩। তৃতীয় ভুবন, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০১১।
৪। 888sport app download apkর মুহূর্ত, কলকাতা, অনুষ্টুপ, ১৯৮৭।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.