নজরুলের প্রতিবাদী সত্তা ও ‘বিদ্রোহী’ 888sport app download apk

বাঁধন সেনগুপ্ত

কবি নজরুলের জীবনের প্রারম্ভিক পর্বে তাঁর ব্যক্তিজীবন ও সমকালীন প্রতিবাদী সত্তা প্রায় সমার্থক। এককথায় সমকাল আচ্ছন্ন করেছিল কবির জন্মের পরবর্তী বিংশ শতাব্দীর প্রতিবাদী হৃদয়। অনতিকাল পরেই নতুন শতাব্দীর গোড়ায় গভর্নর জেনারেল লর্ড কার্জনের প্রস্তাবিত বঙ্গভাগের সুচতুর বিন্যাস এবং পাশাপাশি বৈপ্লবিক ভাবনার সূতিকাগার সারস্বত কেন্দ্র প্রেসিডেন্সি কলেজের রাঁচিতে স্থানান্তর পরিকল্পনা শাসক ইংরেজবিরোধী শক্তিকে সংবদ্ধ করতে সেদিন সহায়তা করেছিল সন্দেহ নেই। বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে এদেশে বিধ্বংসী ঔপনিবেশিক নীতির বাস্তবায়ন সেদিন জনগণের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধের ফলেই ব্যর্থ হয়েছিল। ঐক্যবদ্ধ বাংলায় বাঙালির বিশাল ক্ষোভ ও যন্ত্রণা জনমানসে প্রতিরোধের ক্ষেত্রে অবশ্যই নবযুগ রচনা করতে সমর্থ হয়েছিল। প্রতিবাদী সেই যজ্ঞের প্রধান পুরোহিত ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাঙালির প্রতিবাদী আবেগ সেদিন প্রকাশিত হতে থাকে শাসকবিরোধী গান, 888sport app download apk, 888sport live, নাটক ও সমালোচনাসহ গ্রাম্য ও চারণকবিদের অন্তহীন রচনায়। সমকাল যেন এইভাবেই খুলে দিয়েছিল নব-নব অন্দোলনের প্রেরণার দ্বার। এরই মধ্যে দেখা দিতে লাগল নিত্যনতুন সৃষ্টির প্রেরণা। ক্রমশ সেই আন্দোলনের ফল ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের নানাপ্রান্তে। সময়ের সঙ্গে সংগতি রেখে দেশীয় সংবাদপত্রগুলোও সেই বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সমর্থন জানিয়ে সেদিন নিঃসন্দেহে তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করেনি।

বস্ত্তত তিনটি পত্রিকা সেদিন বিরোধী প্রতিবাদী ভূমিকার যথাযোগ্য নেতৃত্বদান করেছিল। ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়-সম্পাদিত সন্ধ্যা পত্রিকা, ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত-সম্পাদিত যুগান্তর পত্রিকা এবং বিপিনচন্দ্র পাল-প্রবর্তিত ও অরবিন্দ ঘোষ-সম্পাদিত পরবর্তী পর্বের বন্দে মাতরম পত্রিকার বৈপ্লবিক ধ্যানধারণার প্রচার সেদিন দেশের স্বদেশি ভাবনার ক্ষেত্রে জোয়ার এনেছিল বলা যায়। অনতিবিলম্বে এদের গ্রেপ্তারও বরণ করতে হয়। গ্রেপ্তার হলেও জেলে যাওয়ার আগেই মারা যান সন্ধ্যা-সম্পাদক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়। পরে ৭ আগস্ট ১৯০৭ সালে স্বয়ং অরবিন্দও গ্রেপ্তারবরণ করেন।

এই পর্বের অন্যতম অবদান সন্ত্রাসবাদীদের অভ্যুদয়। মৃত্যুকে বাজি রেখে দেশের সর্বত্র এ-অভ্যুদয়পর্বে যোগ দেন শতসহস্র বাঙালি কিশোর, তরুণ ও যুবকের দল। স্বয়ং বিচারপতি কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন কিশোর ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকী। ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ফাঁসি হলো স্বয়ং ক্ষুদিরামের। আত্মহননের পথে পা বাড়ালেন অসংখ্য সন্ত্রাসবাদী দেশপ্রেমিক বিদ্রোহী যুবক। হত্যার চেষ্টা হলো গভর্নর জেনারেল লর্ড মিন্টোকে। আলিপুর বোমা মামলার অন্যতম আধিকারিক শামসুল আলমকে হত্যা করা হলো। সে-ঘটনাকে স্বয়ং অরবিন্দ বলেছিলেন – Boldest of the Acts of Violence। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ এইভাবে শাসককুলের বিরুদ্ধে ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের নানাপ্রান্তে। এরই পাশাপাশি এদেশের শিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত দেশীয় সমাজ সেই প্রতিবাদে গোপন ও নীরব সমর্থন জানাতে এগিয়ে এসেছিলেন। ফলে দিকভ্রান্ত, ভীত ও আতঙ্কিত প্রশাসন ১ নভেম্বর ১৯০৭ তারিখে প্রবর্তন করল Seditious Meeting Act। এই আইনে বলা হয়েছিল, কোনো সভা করতে হলে সাতদিন আগেই তা সরকারকে জানাতে হবে। কারো বাড়িতে কুড়িজন মিলিত হলেই এই আইনের কবলে পড়তে হবে। সদ্যগঠিত পূর্ববাংলা ও আসামের সভা-সমিতিও এই পর্বে বেআইনি বলে ঘোষণা করা হলো।

কিন্তু বঙ্গভঙ্গ ও বিরোধী আন্দোলন  দেশ-বিদেশে চেতনার ক্ষেত্রে সেদিন যে-জোয়ার এনেছিল তার ব্যপ্তি বা প্রসারতায় ভেঙে পড়েছিল সেদিন ইংরেজ শাসকদের প্রশাসনিক আইনের কঠোরতা। এর পরবর্তী অধ্যায়ে দ্রুত ভেঙে পড়তে শুরু করেছিল বহুমুখী নিষেধাজ্ঞার অসংখ্য পাঁচিল। বরং নতুন করে লেখা হতে লাগল স্বাধীনতার সমর্থনে অসংখ্য 888sport app download apk ও গান, যা দেশবাসীকে রীতিমতো উদ্বেলিত করে তুলেছিল। বৈপ্লবিক জোয়ারের ঔপনিবেশিক দুর্গে হানা দেয় অসংখ্য বৈপ্লবিক কর্মসূচি। তাকে আঘাত করার জন্যে বাধ্য হয়ে প্রাশাসনও জারি করতে লাগল অসংখ্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি ও নিষেধাজ্ঞা। বিশেষ করে লেখনী-শক্তির সম্ভাব্য প্রভাব আন্দাজ করে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হলো, সরকারি দপ্তরে জমা দেওয়া গ্রন্থের ক্ষতিকারক বা রাজদ্রোহবিষয়ক অংশমাত্র খুঁজে পেলে তা তৎক্ষণাৎ সরকারের নজরে আনতে হবে। তা সত্ত্বেও অসন্তোষ ও গণবিক্ষোভকে দমন করার জন্য ১৯১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে Press Act 1 (An Act to provide for better control of the press) নামে নতুন এক কালাকানুন ঘোষিত হলো। এর উদ্দেশ্য ছিল, এই আইনের মাধ্যমে সরকারবিরোধী বক্তব্য, বিপ্লবী আদর্শপ্রচার এবং স্বদেশপ্রেম বা ভাবনার মূলোচ্ছেদ করা। তাছাড়া এ-আইনের ফলে যে-কোনো প্রাদেশিক সরকারও কোনো বই বা ইশতেহার প্রকাশ, ছবি, গান বা কোনো প্রত্যক্ষ অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ করার ক্ষমতা হাতে পেয়েছিল। ১৯১১ সালে এরই পরবর্তী স্তরে ঘৃণ্য নাট্যবিরোধী একটি বিল পাশ করা হয়। তারই প্রত্যক্ষ ফল ছিল সিরাজদ্দৌলা, মীরকাসিম, ছত্রপতি শিবাজির মতো গিরিশচন্দ্রের লেখা নাটকগুলোকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা। মোট ১৭টি নাটক সরকারবিরোধী বিবেচনায় দ্রুত নিষিদ্ধ বলে সেদিন চিহ্নিত হয়। বাজেয়াপ্ত গ্রন্থের তালিকায় প্রথম নাম Indian War of Indipendence। ২৯ মার্চ ১৯২০ থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে এ-আইনে বাজেয়াপ্ত গ্রন্থের 888sport free bet ছিল ১২৭। এছাড়া দুটি ছবিও সে-সময় নিষিদ্ধ তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। যেমন – মারাঠা নেতা নানা ফরনবিশের ছবি ও অন্যটি হলো আর্যমাতা। ১৯১৭ বিদ্রোহ ও বৈপ্লবিক ভাবনার গোপন স্ফুলিঙ্গ ক্রমশ কাব্যে, 888sport live footballে ও নাটকে লক্ষ করা গিয়েছিল। ফলে সরকারি তথ্যের ভান্ডারে নিষিদ্ধ গ্রন্থের তালিকা ও নিষিদ্ধ রচনার 888sport free betও ক্রমশ বাড়তে থাকে।

এই পর্বের নিষিদ্ধ বইয়ের মধ্যেই ছিল উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হজরত আলী, বীর হনুমানের লড়াই ও গোরু ও হিন্দু মুসলমান নামের একটি ইশতেহার। কিন্তু তাতেও প্রার্থিত ফল না পাওয়ায় বিশের দশকের শেষ পর্বে সরকারবিরোধী সমস্ত গদ্য, পদ্য, 888sport live ও গানকেই গোপনে নিষিদ্ধ ছাপ দিয়ে তা নির্বাসনে পাঠানো হলো। বিশেষ করে উত্তেজক শব্দ, উপমা ও ইঙ্গিতময় রচনাকে জনসমক্ষে কেনোমতেই আর প্রচার হতে দেওয়া হতো না। সেই অন্ধকারময় পর্বে নিষেধাজ্ঞার আড়ালে তলে তলে দেখা দিতে লাগল বিদ্রোহের ইঙ্গিত। আইন ভঙ্গের বেপরোয়া কর্মযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান দ্রুত ছড়াতে লাগল দেশের নানাপ্রান্তে। কলকাতা তখন সেই বিদ্রোহের গোপন রাজধানী। তার সঙ্গে সমগ্র গ্রামবাংলার তখন গোপন যোগাযোগ। সময়টা ১৯২০ সাল। বাংলার রাজনীতিতে প্রকাশ্যে তখন বারুদের গন্ধ। বাঙালির যৌবন মুখোমুখি সেদিন সশস্ত্র বিপ্লবের আঙিনায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষমাণ। দেশের যুবসমাজ স্বাধীনতার আন্দোলনের সেই বেদিমূলে প্রতিবাদে আত্মাহুতির জন্যে তখন প্রস্ত্তত। বিস্ফোরণের সেই প্রতীক্ষা-মুহূর্তেই কবি কাজী নজরুল ইসলামের আবির্ভাব।

১৯২০ সালে জানুয়ারির শেষদিকে নজরুল সৈন্যবাহিনী ভেঙে দেওয়ার আগে দিন সাতেকের ছুটি নিয়ে কলকাতায় এসে কয়েকদিনের জন্যে জন্মভূমি চুরুলিয়ায় যান। কয়েকদিন সেখানে কাটিয়ে অবশেষে ফিরে যান করাচিতে সৈনিকের ছাউনিতে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯২০ সালের মার্চ মাসে অবশেষে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরের পরেই ভেঙে দেওয়া হয় ৪৯নং বেঙ্গলি রেজিমেন্ট। নজরুলও পাকাপাকিভাবে সৈন্যবাহিনী ছেড়ে কলকাতায় ফিরে এলেন। মার্চ মাসের শেষদিকে দেশে ফেরার আগে পত্র-পত্রিকায় ডাকযোগে পাঠানো তাঁর ১০টি রচনা কলকাতায় পরপর প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথমদিকে তাঁর রচনা মূলত সওগাত, বঙ্গীয় মুসলমান 888sport live football পত্রিকা ও নূর পত্রিকায় ছাপা হতো। ডাকযোগে সে-সময় কবির ঠিকানা ছিল : ‘মৌলবি কাজী নজরুল ইসলাম, ব্যাটেলিয়ান কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার, করাচি’। কলকাতায় এসে থিতু হওয়ার পর ক্রমেই বাড়তে লাগল নজরুলের রচনা ও সৃষ্টির পরিমাণ। সে-তালিকায় অবশ্যই ছিল 888sport app download apk, 888sport alternative link, গল্প ও 888sport app গদ্য এবং অসংখ্য গান।

জুলাই মাসে প্রকাশিত হলো দৈনিক সান্ধ্য পত্রিকা নবযুগ। প্রকাশকাল ১২ জুলাই ১৯২০। সে-বছর সেপ্টেম্বরে কলকাতায় কংগ্রেসে বিশেষ অধিবেশনে যোগ দিতে এসেছিলেন লালা লাজপত রায়, গান্ধীজি ও তরুণ নেতা জওয়াহেরলাল নেহরু। নবযুগ তখন অবশ্য বন্ধ ছিল। কিন্তু দুই সম্পাদক নজরুল ও মুজফ্ফর আহমদ সে-অধিবেশনেও পত্রিকার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন। খিলাফত আন্দোলন সেই অধিবেশনের আলোচনায় সেবার অত্যন্ত গুরুত্ব লাভ করেছিল।

এই পটভূমিকায় নজরুলই ক্রমশ কালের যোগ্য প্রতিনিধি হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর 888sport app download apkর মধ্যে সমকালীন রাজনীতির প্রত্যক্ষ ছায়াপাত ঘটতে লাগল। দেখা দিলো তাঁর প্রতিবাদী গোপনে এতকাল লালিত বিদ্রোহী সত্তার প্রত্যক্ষ পরিচয়। অবশেষে কবি নজরুল লিখলেন তাঁর অন্যতম প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ 888sport app download apk ‘বিদ্রোহী’। রচনাকাল : ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ১৯২১ সাল। সময় মধ্যরাত্রি, স্থান : ৩/৪ তালতলা লেন, কলকাতা। একতলায় ছোট্ট একটি ঘরে কবির সঙ্গী মুজফ্ফর তখন নিদ্রামগ্ন। নজরুল পাশেই রাত জেগে ভোর হওয়ার আগেই শেষ করেছিলেন তাঁর দীর্ঘ সেই ঐতিহাসিক ‘বিদ্রোহী’ 888sport app download apk। ক্রিসমাসের প্রারম্ভে ২৪ অথবা ২৫ ডিসেম্বর সেই ঐতিহাসিক 888sport app download apk ‘বিদ্রোহী’ ভূমিষ্ঠ হয়েছিল বলেই অনেকের অনুমান। অত্যধিক চাহিদার কারণে ‘বিদ্রোহী’ ছাপা হলো পরপর তিনটি জনপ্রিয় পত্রিকা – মোসলেম ভারত (কার্তিক ১৩২৮), সাপ্তাহিক বিজলী (পৌষ ১৩২৮), প্রবাসী (মাঘ ১৩২৮)সহ ছোট-বড়ো প্রায় আটটি পত্র-পত্রিকায়। 888sport app download apkর ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তার এমন উদাহরণ আর নেই। কবির মুখে এ-888sport app download apkর আবেগময় আবৃত্তি-পরিবেশন ছিল এরপর ‘বিদ্রোহী’র অন্যতম আকর্ষণ। দেশের সর্বত্র তখন কবিকণ্ঠে ‘বিদ্রোহী’ 888sport app download apkর আবৃত্তি শোনার বিপুল চাহিদা। বাধ্য হয়ে কবি তখন নানাপ্রান্তে বিদ্রোহী 888sport app download apk নিজকণ্ঠে পরিবেশন করতে ছুটে বেরিয়েছেন। লক্ষ করলে বোঝা যাবে, নজরুলের সৃষ্টি ‘বিদ্রোহী’র প্রস্ত্ততি চলছিল তাঁর মনে বেশ কিছুকাল আগেই।

বাঁধনহারা 888sport alternative linkে এর আগেই সাবেক এক ফৌজির বয়ানে নজরুল লিখেছিলেন, বিদ্রোহী হওয়াও তো একটা মস্ত শক্তির কথা; লাখ লাখ মানুষ যে-জিনিসটাকে সত্য বলে রেখে দিয়েছে; চিরদিন তারা যে-পথ ধরে চলেছে, তাকে মিথ্যা বলে ভুল বলে তাদের মুখের সামনে বুক ফুলিয়ে যে দাঁড়াতে পারে, তার সত্য নিশ্চয়ই এই গতানুগতিক পথের পথিকদের চেয়ে বড়। এই বিদ্রোহীর মনে এমন কোনো শক্তি মাথা তুলে প্রদীপ্ত চাওয়া চাইছে, যা সংকেতে সে-যুগ যুগান্তরের সমাজ, ধর্ম, শৃঙ্খলা সবকিছুকে গা-ধাক্কা দিয়ে নিজের জন্য আলাদা পথ তৈরি করে নিচ্ছে।

ধারাবাহিক সেই পত্রোপন্যাসের মাসছয়েক আগেই (বৈশাখ ১৩২৭) মোসলেম ভারত পত্রিকাতেও নজরুল সরাসরি লিখতে পেরেছিলেন – ‘আগুন, ঝড়, ঝঞ্ঝা, বৃষ্টি, বিদ্যুৎ, বজ্র, আঘাত, বেদনা এই অষ্টধাতু দিয়ে আমার জীবন তৈরি হচ্ছে, যা হবে দুর্ভেদ্য, মৃত্যুঞ্জয় অবিনাশী। আমার এ শাশ্বত সত্যের পথ। বিশ্বমানবের জনম জনম ধরে চাওয়া পথ। আমি আমার ‘আমিত্ব’কে এ-পথ থেকে মুখ ফেরাতে দেব না।’

এই প্রত্যয়ে জাগ্রত ছিল স্বয়ং কবির হৃদয়। ‘বিদ্রোহী’ রচনা ছিল কবির দীর্ঘকালীন সেই প্রস্তুতির পরিপূর্ণ আত্মপ্রকাশ। যখন অসহযোগ আন্দোলনের ব্যর্থতাও নেতৃত্বের সংশয়পূর্ণ দোলাচল মনোভাব রাষ্ট্রীয় জীবনে হতাশার বলয় গড়ে তুলেছিল, দীর্ঘকালীন সামাজিক বঞ্চনা ও ঔপনিবেশিক শোষণ ও অত্যাচার সর্বত্র থাবা মেলে ধরেছিল, নজরুল সে-হতাশার অন্ধকার ভেদ করে মহাসৃষ্টির মহানন্দে সেদিন নতুন এক মূল্যবোধের সূচনা করতে চাইছিলেন। সাবেক ফৌজি এবার ‘বিদ্রোহী’র মাধ্যমেই তাঁর বর্ণময় জীবনের যেন এক নতুন অধ্যায় রচনা করতে সমর্থ হলেন। ধরা পড়ল কবির জীবনে নতুন এক উপলব্ধির জগৎ। দুর্বল জাতির সামনে কবি প্রথম ঘোষণা করলেন অনাগতকালের দুর্জয় শপথবাণী – ‘বল বীর, চির উন্নত মম শির’। সেদিন সেই দীর্ঘ 888sport app download apkই হয়ে উঠেছিল দেশবাসীর অকুতোভয় জীবনের মর্মবাণী। তাই আজো ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে ‘বিদ্রোহী’ যেন নজরুলের প্রতিবাদী সত্তার যোগ্য প্রতিনিধি, যা আজো অমর হয়ে আছে। আজ সেই ‘বিদ্রোহী’র ৯০তম জন্মদিন 888sport apk download apk latest versionর সঙ্গে কবির 888sport sign up bonusধন্য 888sport appsে পালিত হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এ-গৌরব ও আনন্দ সমগ্র বাঙালির অহঙ্কার।