সৈয়দ শামসুল হক
\ ৪৩ \
কুসমিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকতে দেখে সোলেমান বলে, কেয়ারটেকার বুঝিলেন তো? বোঝেন নাই? সরকার, সরকার, যাকে কয়। কোম্পানিতে যাকে ম্যানেজার বোলায়। এসবের একবর্ণ আর কানে যায় নাই কুসমির। সোলেমান বকবক করে বকেই চলে। – দ্যাখেন তো, দিদি, কপাল ফিরি গেলো তোমার। আর কোনো ভয়চিমত্মা নাই। তোমার ভালোমন্দ সব অ্যালা মোর মালিকের হাতে। তোমরা ঠাকুরের ঘরে পূজাআচ্চা করেন নিশ্চিমেত্ম। কাঁইও আর তোমার জমি পরে আসি চড়াও হবার নয়। আর কোনো শমশেরের ভয় না করেন। শমশের নামটা শুনেই চৈতন্য ফেরে কুসমির। শমশের ব্যাপারীই যে প্রথম এই সম্পত্তির ওপর নজর ফেলেছিলো, কত ভয়ভীতি দেখিয়েছিলো, সে-সকল মনে পড়ে না, কুসমির মনে
পড়ে যায় তার মাকে ধর্ষণ করেছিলো শমশের। তখনো সে ধর্ষণের অর্থ বোঝার মতো বয়স পায় নাই। যখন সে ঘটনাটির অভিঘাত বুঝে ওঠার মতো বয়স পায়, তখন থেকেই তার ভেতরে ভয়ের জন্ম হয়। সে-ভয় নিজে ধর্ষিত হতে পারে সেই সম্ভাবনায় নয়, সম্পত্তি আবার কেউ ছিনিয়ে নেবার জন্যে হাত বাড়াতে পারে, সেই ভয়। ভয়টাই এতদিনে সত্যি হলো তবে! কুসমি অসাড় হয়ে বারান্দায় বসে পড়ে। সেই পুরনো দিনের লাল শান-বাঁধানো বারান্দা। কী সিণগ্ধ মসৃণ তার স্পর্শ। গরমের দিনে শানের ওপর শুয়ে পড়লে অঙ্গ জুড়িয়ে যায়, আরামে চোখ আপনি বুজে আসে। সেই শানও এখন উনানের ওপর তপ্ত খোলার মতো কুসমির গায়ে ছ্যাঁকা দেয়। কুসমি পড়েই থাকে বারান্দার থাম দুহাতে ধরে। মৃত্যু সে কামনা করে। সোলেমানও চায়ের আশা ত্যাগ করে। মোড়া থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে, দিদি, তবে মুঁই চননু। ঠ্যালা আসিলে মালামাল সব বুঝি নিবেন কিন্তুক।
সেই থেকে জমি বেহাত কুসমির। সেই থেকে ভারতের কুচবিহারে মাসতুতো মামা কমলদাসের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া শিশু শ্রীচরণের সম্পত্তি আগলে রাখা জননী কুসমির ভাগ্যনাশের শুরম্ন। শ্রীচরণের কথা ভেবেই মৃত্যু-কামনা শিউরে তোলে কুসমিকে। এ কি সে ভাবছিলো! শ্রীচরণের জন্যেই তাকে বেঁচে থাকতে হবে। শুধু বেঁচে থাকা নয়, জমিজমা সহায়-সম্পত্তি সব শ্রীচরণের জন্যে তাকে নিশ্চিত করতে হবে। শ্রীচরণের হাতে সব তুলে দিয়ে তবে তার মৃত্যু। জমিজমা নিজ দখলে পাবার জন্যে তাকে যা করতে হয় সবই সে করবে।
হঠাৎ ঘরের ভেতরে ঝনঝন শব্দ ওঠে। কাপ-পিরিচ ভেঙে পড়বার শব্দ। নিশ্চয় কুসমির হাত থেকে চায়ের কাপ পড়ে গেছে। সাইদুর রহমান পিঠ সোজা করে আওয়াজ দেন, কী! কী হয় রে! উত্তর আসে না। অচিরে শ^াস টানার একটা শব্দ ওঠে। শব্দটা অচেনা ও অপ্রত্যাশিত। উদ্বিগ্ন হয়ে কন্ট্রাক্টর সাইদুর রহমান উঠে দাঁড়ান। – কুসমি! কোনঠে? বলতে বলতে তিনি ঘরের ভেতরে পা রাখেন। কুলঙ্গিতে মিটমিট করে লম্ফ জ্বলছে। তারই ক্ষীণ আলোয় সাইদুর রহমান দেখতে পান, হরিচরণের শিয়রে কুসমি দাঁড়িয়ে আছে। পায়ের কাছে ছড়িয়ে আছে ভাঙা কাপ-পিরিচ, মেঝেতে চা। সাইদুর রহমান লক্ষ করেন কুসমি মুখে অাঁচল ঠেলে ধরেছে। হাঁ, কান্না রোধের এই চেষ্টা। কিন্তু কান্নাই বা কেন? সাইদুর রহমান দ্রম্নত পায়ে বিছানার কাছে গিয়ে হরিচরণের গায়ে হাত রেখেই সাঁৎ করে হাত টেনে নেন। হরিচরণের দেহটি মৃত্যুশীতল। যেন সাপের গায়ে হাত পড়েছে কন্ট্রাক্টরের।
হতবুদ্ধি হয়ে যান সাইদুর রহমান। মুহূর্তে বিশ^ দুলে ওঠে। খাটের বাজু ধরে নিজেকে সামাল দেন তিনি। আর তার ভেতরেই কুসমির দিকে দৃষ্টিপাত করে তাঁর মনে হয় এই 888sport promo codeকে তিনি এর আগে আর দেখেন নাই। লম্ফের ক্ষীণ আলোয় 888sport promo codeর মুখখানা পদ্মের মতো ফুটে আছে বোধহয় তাঁর কাছে। নিজের হাতের ওপর যেন তাঁর বশ নাই, নিজ হাতটিকে তিনি দেখেন কুসমির দিকে ধীরে ধাবমান, যেনবা শিকারের দিকে জন্তুর নিঃশব্দ হামাগুড়ি। চমক ভাঙে যখন তিনি ফুঁপিয়ে ওঠার শব্দ পান। কুসমি মুখের ভেতরে অাঁচল আরো খানিকটা গুঁজে দিয়েছে বটে কিন্তু কান্নার দমক সামলাতে পারে নাই। কন্ট্রাক্টরের হাত কুসমির কাঁধে এসে স্থির হয়। বুঝিবা তাকে আকর্ষণ করেন তিনি, কুসমির বোধ নাই, টান কিংবা টান নয়, কুসমি হেলে পড়ে, কন্ট্রাক্টরের কাঁধে হেলে পড়ে, তখন তাকে কাঁধের পরে আলগোছে চেপে ধরে কন্ট্রাক্টর কানের কাছে মুখ নামিয়ে বলে, কান্দিস না, কুসমি। পিঠের ওপর চাপড় দিয়ে ভরসা দেয়, মুঁই তো মরি যাঁও নাই! কিন্তু তার পিঠে হাত পড়তেই সাঁৎ করে হাত টেনে নেন তিনি, কুসমির পিঠ ভেজা, বস্নাউজের ওপর দিয়ে ঘাম তাঁর তেলোকে আঠালো করে তোলে। মানুষের নানারকম পছন্দ-অপছন্দ থাকে। 888sport promo codeসঙ্গ বেলায় তো কথাই নাই। না, জীবনে একাধিক 888sport promo codeকে ছেনে-টেনে দেখছেন তিনি, কখনোই 888sport promo codeর ঘামে ভেজা গতর তাঁর পছন্দ ছিলো না। আহ, কুসমির ঘরে কি পাউডার নাই? এক ডিবা আনিয়া দিবার হয় তবে!
কুসমির পিঠে ঘামের স্পর্শে ঘোর কেটে যায় কন্ট্রাক্টর সাইদুর রহমানের। রাত নিশীথের এমন মিঠা হাওয়া, নদীর বাতাস, তবু 888sport promo code ঘামে! কন্ট্রাক্টরের 888sport app download for android হয়, হয় হয়! 888sport promo codeর শরীল যখন জাগি ওঠে তখন ঘামি ওঠে তাঁই। কুসমি তবে তৈয়ার হয়া উঠিছিলো! এই বুড়া হঠাৎ মরি যায়া দিলে সব বরবাদ করি! কুসমির দিকে মোহভরা দৃষ্টি স্থাপন করেন তিনি, পদ্মপ্রতিম মুখখানা মুঠার মধ্যে ধরে ভক্ষণ করার ইচ্ছা জাগে তাঁর। কিন্তু সমুখে সাক্ষাৎ হরিচরণের লাশ! অতএব মিঠা গলায় কুসমিকে তিনি বলেন, আয়, বাহিরে আসি বইসেক, যাবার মানুষ চলি গেইছে, আয়। কিন্তু কুসমির শরীরে সাড় নাই। হরিচরণের লাশের দিকে সে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। – আহ, বাহিরে আয়। আইসেক তো। চায়া থাকিলে তো আর মরা মানুষ খাড়া হয়া উঠিবে না। কন্ট্রাক্টর কুসমির হাত ধরে টান দেন। – আয়, মৃত্যু বলিয়া কথা। মৃত্যুর পর মানুষ ভগবানের দখলে চলি যায়। তাকে রওনা করি দিতে হয়। কবরে দিবেন কি চিতায় পুড়িবেন, যারা বাঁচিয়া আছে তাদের উপর ব্যবস্থা করিবার দায় বর্তায়। চিমত্মা না করিস, কুসমি। মুঁই আছোঁ কী করিতে?
কেয়ারটেকার সোলেমানের মোবাইল ফোন ঝনঝন করে বেজে ওঠে। জমিয়ে একটা কথা হচ্ছিলো হাফেজ আবুল কাশেম বলরামপুরীর সঙ্গে, এর মধ্যে আচমকা ফোন। কথাটা আর কিছু নয়, সেই যে কথায় বলে না – দেখাদেখি বাস, দেখাদেখি চাষ, দেখাদেখি কেটে এলাম বারো অাঁটি ঘাস! ব্যাপার হয়েছে ঠিক সেই রকম। হাফেজ আবুল কাশেম বলরামপুরীকে রাত দুপুরে জরম্নরি তলব করে নদীর পাড়ে কুসমির বাড়ির কাছে এনে মৌজুদ করে রাখা মানেই তো কন্ট্রাক্টর সাহেবের নিকা বলো বিবাহ বলো কুসমির সঙ্গে আজ রাতেই হতে চলেছে। শুধু একটা ডাকের অপেক্ষা। মনিব বলেছেন, টাইম হইলেই তোমাকে খবর দেমো, সরাস্সর্ চলি আসিবেন। সেই ফোনেরই অপেক্ষা ছিলো এতক্ষণ। বলরামপুরী কড়া কস্ত্তরি আতর মাখে। গা ভুরভুর করে গন্ধে। গন্ধটাও এমন, যার নাকে লাগে পরিস্থিতি ভেদে তার একেকরকম প্রতিক্রিয়া হয়। কারো কুলখানি কি চলিস্নশার আসরে যদি এই আতরের গন্ধ, তবে মনের মধ্যে মওতের কথা উঠে পড়ে, ঘনঘন আলস্না-আলস্না ডাক ভাঙে বুকের ভেতর। আর, বয়ানও করতে পারে বলরামপুরী – হাশরের ময়দান, মাথার আধহাত ওপরে সূর্য, মগজ গলে যায়, দোজখে সত্তর লক্ষ সাপের দংশন! তার আগে আরো আছে – দাফনকারীরা তোমাকে কবরে রেখে চলিস্নশ কদম দূরে যেতে না যেতেই এসে হাজির হয় ফেরেশতা, শুরম্ন হয় তার কঠিন সওয়াল, বলো তোমার প্রভু কে, তোমার ধর্ম কী, কলেমা কী? ঠিকঠিক জবাব দিতে না পারলেই, কাঁটা লাগানো দোর্রার ঘা মারতে শুরম্ন করে সওয়ালকারী ফেরেশতা। গা ঘেমে ওঠে ভয়ে। হাহাকার হয়ে ওঠে জীবন। বলরামপুরীর সুরেলা গলায় এমন কঠিন বয়ান শুনে কেঁদে জারেজার হয় মজলিশের মানুষ। আবার দ্যাখো, যদি হয় বিবাহ বাসর, মাথায় পাগড়ি, কাঁধে জড়ানো লাল খোপ কাটা মক্কার রম্নমাল, হাফেজ আবুল কাশেম বলরামপুরী এসেছে কলমা পড়াতে, তবে তাঁর কড়া কস্ত্তরি আতরের ভুরভুর গন্ধের টানে হাজেরানে মজলিশের মনে 888sport promo code-পুরম্নষের সহবাস জেগে ওঠে বইকি! বিশেষ করে যাদের বিবাহ এখনো হয় নাই কি যাদের স্ত্রী ছিলো কিন্তু এখন নাই, তাদের শরীর মোচড়াতে থাকে। আজ রাতে হয়েছেও তাই, সোলেমানের শরীর মোচড়াচ্ছে।
একে কস্ত্তরি আতরের গন্ধ, তার ওপর নিশুতি রাত, কুসমির সঙ্গে মনিবের নিকা হয়-হয়, এমন পরিস্থিতিতে সোলেমানের মন হামলে পড়ে 888sport promo codeর ওপরে। কল্পনায় সে হামলে পড়ে 888sport promo codeর নগ্ন শরীরের ওপর। কিন্তু কোন 888sport promo code তার নির্ণয় নাই, শুধু একটা দেহ, তার মাথা মুখ নাই, নিচের অঙ্গটাই শুধু। সোলেমানের মনে পড়ে যায় তার স্ত্রীর কথা। আয়েশার বড় চাহিদা ছিলো শরীরে। সে-কথা মনে পড়ে যায় সোলেমানের। মনে পড়ে যায়, চাহিদা বুঝি সে ষোলো আনা মেটাতে পারে নাই, তাই একদিন সে নবগ্রামের মনিহারি দোকানদার যুবকের হাত ধরে ঘর ছাড়ে। আর ফিরে আসে নাই। শোনাশোনা খবর আছে, তারা এখন 888sport appর কাছে টঙ্গীর শহরে। সেই টঙ্গী! পুঁথির কাহিনির সোনাভানের টঙ্গী। সূর্যের মতো উজাল তার মুখ। আহা, বড় রূপবতী ছিলো আয়েশা। তার মতো জগতে আর কাউকে তো সে আর পায় নাই। আবার একটা বিবাহ তার করা হয় নাই। আজ রাতে সোলেমানের মনেও আবার বিবাহের সাধ জেগে ওঠে তার মনিব কন্ট্রাক্টরের দেখাদেখি। ইচ্ছাটি সে গোপন রাখতে পারে নাই। বলরামপুরীকে সে এক সময় তোয়াজ করে বলেই ফেলে, হুজুর, আপনে কত এদিক-ওদিক যান, আপনার কাছে কি কোনো পাত্রীর খবর নাই? – কেন? কার জন্যে? – না, এমনেই পুছ করি। বলরামপুরী ভালো করে নিরিখ করে সোলেমানকে। তারপর বলে, যা গেইছে তার জন্যে পিত্যাশ রাখি লাভ নাই। 888sport promo code না থাকিলে সংসার কীসের? নমাজেই বা মন বসিবে কেনে? সারাদিনের শ্যাষে বাড়ি আইসছেন, খাওয়া-দাওয়া মিটি গেইছে, তারবাদে ল্যাম্পোর আলা নিভায়া দিছেন, ইয়ার পর বিছনায় গেইছেন, চক্ষে ঘুম নাই, শরীর খাড়া হয়া আছে, তখন বিছনা যদি খালি, বিছনায় যদি 888sport promo code নাই, তখন শয়তান আসি মনের ওপর ভর করে। তখন শরীরের খোরাক শরীরে দিবার জন্যে ব্যসত্ম হয়া মানুষ মাগিবাড়ি যায়, কামের কিষান বেটিকে ধরিয়া তার উপরে চড়াও হয়, কি মাঠেঘাটে যাকেই পায় জুলুম করে, না করিলেও মনে ওই যে অপচিমত্মা ওঠে, সেই চিমত্মাও কর্মটা করিবারই সমান পাপ জানিবেন। ইয়ার শাসিত্ম তো জানেন? দোজখে যাইবেন, পাইবেন সেথা অগ্নির 888sport promo code! প্রথমে না বুঝিবেন, তার রূপ দেখিয়া ছুটি যাইবেন কাছে, ধরিয়া তাকে উদাম করিবেন, বুকের তলে নিবেন, তারপর তোমার পুরম্নষাঙ্গ যখন তাকে দিবেন দেখিবেন ছিদ্রে তার অগ্নি! অগ্নিকু-! চিমত্মা করেন! অঙ্গ তোমার জ্বলি যাইবে, কিন্তু ছাই না হইবে, কোটি কোটি বছর অগ্নির সাথে তোমার সহবাস চলিতে থাকিবে! চলিতেই থাকিবে। বলরামপুরী দম নিয়ে বলে, ইয়ার থেকি দ্বিতীয় বিবাহ করা ভালো। মনে হয়, পাত্রী খোঁজেন! এ-কথা শুনে ঈষৎ লজ্জিত হয় সোলেমান। তারপর বলে, তবে পাই কোথায়? – কেন? পাত্রীর অভাব কি জগতে? বলরামপুরীর মনে একটা আশার আলো পড়ে। তার ছোট মেয়েটির এখনো বিবাহ হয় নাই। সোলেমানের সঙ্গে সম্পর্কটা করলে কেমন হয়! কথাটা সে মুখে উচ্চারণ করে নাই বটে, ড্রাইভার মেহেরম্নলস্না কী করে যেন অনুমান করে ওঠে। সে বলে, হুজুর, মুঁই তো কবে হতে সোলেমান দাদাকে কই তোমরা ফির সংসার করেন। তা শুনিলে তো! দ্যান একজনা জোগাড় করি। ছোটমুখে বড় কথা যদি না হয় তবে কই, আপনার ঘরে তাকে বিয়া দেন না কেনে? শুনিছিলোম আপনের এক বেটি আছে এলাও বিয়া দেন নাই।
কথাটা বেশ জমে উঠেছিলো। হয়তো আজ রাতেই সোলেমান আবার সংসার করবার ব্যাপারে মন এবং পাত্রী স্থির করে ফিরতে পারতো। তার মন বেশ রঙিন হয়ে ওঠে। বলরামপুরীর ছোট মেয়েকে সোলেমান দেখে নাই এমন নয়। মেহেরম্নলস্না তার কথা তুলতেই মেয়েটির ছবি ভেসে ওঠে সোলেমানের চোখে। আজ রাতেই তো! আজ রাতে যখন বলরামপুরীকে সে আনতে গিয়েছিলো তখন ওই মেয়েটিই তো লণ্ঠন ধরে দরোজা পর্যমত্ম এসে বাবাকে রওনা করিয়ে দিয়েছিলো। লণ্ঠনের আলো সে উঁচু করে তুলে ধরেছিলো যতটা না পথ দেখাবার জন্যে তার অধিক যেন নিজের ঘুমভাঙা মুখটি আলো করে তুলবার জন্যে। সেই মুখ এখন সোলেমানকে অধিকার করে রাখে। মেয়েটির চেয়ে তার বয়স যে প্রায় দ্বিগুণই হবে, ভেবে সে একটু চঞ্চল হয়ে পড়ে। হয়তো বয়সের এই ফারাকের জন্যেই তার বাবা রাজি হবে না। সে হাফেজ আবুল কাশেম বলরামপুরীর দিকে আড় চোখে তাকায় একবার চট করে। হাফেজ বলরামপুরী গলা খাঁকারি দেয়, যেন কিছু একটা বলবার পূর্বাভাস এটি। সোলেমান উৎকর্ণ হয়। অপেক্ষা করে। এই বুঝি সে তার ছোট মেয়ের সঙ্গে সোলেমানের বিবাহ প্রসত্মাবে রাজি হয়ে আলহামদুলিলস্নাহ বলে উঠবে। কিন্তু বলরামপুরীর গলায় ওই খাঁকারি ভিন্ন আর কোনো শব্দ ফোটে না। এরই মধ্যে ফোন বেজে ওঠে সোলেমানের পকেটে। মুহূর্তে তার ঘোর কেটে যায়। সে জানে, এ-ফোন মনিবের, এরই জন্যে বলরামপুরীকে নিয়ে জিপে সে অপেক্ষা করছিলো কখন ডাক আসে। বলরামপুরীও সন্ত্রসত্ম হয়ে কান খাড়া করে। – কোনঠে রে তুই? মনিবের ছমছমে গলা ভেসে আসে। – ক্যানে নদীর পাড়ে! জিপে! হাফেজ সায়েবও তৈয়ার। বগলেই আছে তাঁই। – চলি আয়! বলেই ফোন রেখে দেন কন্ট্রাক্টর সাইদুর রহমান। – কী? তৈয়ার সব? বলরামপুরীর প্রশ্নের জবাবে সোলেমান বলে, মনে হয়। কেতাব গুছিয়া নেন। হাফেজ আবুল কাশেম বলরামপুরী তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটিয়ে বলে, বিয়া পড়াইতে কেতাব আমার লাগে না। মেহেরম্নলস্না বলে, খালি কি শাদি বিয়া? হিন্দু বেটিকে মোছলমান করা আগে, তরপরে বিয়া কন বিয়া, নিকা কন নিকা। – হয় হয়, ভুলি গেইছিলোম। বলরামপুরী বলে, আমি ভুলি নাই। কুসমিকে আগোতে মোছলমান করা, তার বাদে বাকি সকল।
জিপ থেকে লাফ দিয়ে নামে সোলেমান। পেছনে বসে ছিলো বলরামপুরী, নামতে তার কষ্ট হয়। সামনের সিট ভাঁজ করে তবে পথ করতে হবে, তবে নামতে পারবে লোকটা। কিন্তু মেহেরম্নলস্না সেদিকে নজর দেয় না, বরং তাড়া দেয়, দেরি না করেন, হুজুর। মোর সায়েবের রাগ তো দেখেন নাই! এ-কথা শুনে তৎক্ষণাৎ নামবার জন্যে বলরামপুরী তার শরীর বাঁকিয়ে সিট টপকে লাফ দেয়। মাটিতে পা পড়বে কি, শরীর নিয়ে থপ করে পড়ে যায় মাটিতে, সোলেমান তাকে হাত ধরে তোলে। – আহাহা, ব্যথা পাইছেন কী! শরীর ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ায় বলরামপুরী। চোট একটু লেগেইছে, বয়সও তো কম হলো না, কোঁকাতে-কোঁকাতে হাঁটতে-হাঁটতে বলে, চল বাবা চল, আন্ধারে কিচ্ছু দেখা যায় না। টর্চখান ধরেন। কোনদিকে পথ?
একে তো জিপ থেকে নামতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে গড়িয়ে পড়া মাটিতে, তার ওপরে অন্ধকার পথ, কুসমির বাড়ির দিকে রাসত্মারও নির্ণয় নাই রেল সড়কের পাশ থেকে। জিপ দাঁড়ানো ছিলো রেলসড়ক বরাবর পাশ রাসত্মায়। এখন নামতে হচ্ছে রাসত্মার ঢালু বেয়ে ধানি জমির আলে, এই আল অাঁকাবাঁকা হয়ে একটা ঘন ঝোপের পাশ দিয়ে পায়ে চলা একটা পথ পেয়েছে, সেই পথের শেষেই কুসমির বাড়ি। জিপ যেখানে দাঁড়ানো ছিলো, সেখান থেকে কুসমির বাড়িতে শর্টকাটে যেতে হলে আল বেয়ে ঝোপ ঠেলে যেতে হবে। – টর্চ! টর্চখান ধরেন, সোলেমানভাই। সোলেমন টর্চ মারে, আলো ফোটে লালচে ক্ষীণ। আলোটা পথের ওপর পড়বে কি টর্চের ফোকাসের কাচে জোনাকির মতো টিমটিমে হয়ে থাকে। সখেদে সোলেমান বলে, ব্যাটারি মরি গেইছে! ইয়ার অধিক আলো হবার নয়! বলরামপুরী বলে, আন্ধারে যদি সাপের মাথায় পাও পড়ে! – না! ও-কথা না কন! মাইনষের আওয়াজ পাইলে সরি যাইবে! না, এতটা নিশ্চিমত্ম হতে পারে না বলরামপুরী। সোলেমানের ডানা অাঁকড়ে ধরে সাবধানে সে পা ফেলতে থাকে। সোলেমান বলে, কুসমিকে মোছলমান করার আগে তাকে তো ওজু করাইতে হয়, নাকি! জবাব দেয় না বলরামপুরী। সোলেমান আবার বলে, ওজু করিতে রাজি না হইলে বেটি ছাওয়াকে জোর করিবে কাঁই? ঘন-ঘন শ^াস ফেলে নীরবে পথ চলে বলরামপুরী। তার এখন পৌঁছুনো নিয়ে কথা, ভালোয়
ভালোয় ঝোপঝাড় পেরিয়ে কুসমির আঙিনা পর্যমত্ম যেতে পারলে হয়! হঠাৎ তার খেয়াল হয় চোখে চশমা নাই, জিপ থেকে নামার কালে কোথাও নিশ্চয় পড়ে গেছে। চশমা বিহনে বলরামপুরী আলুথালু
হয়ে পড়ে।
চশমা! চশমায় পাওয়ার নাই! জিরো পাওয়ার! 888sport appর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামেল পাশ করে, কোরানে হাফেজ হয়ে, মাথায় সবুজ পাগড়ি বেঁধে, চোখে নীল সুরমা দিয়ে ওই জিরো পাওয়ারের চশমাটা সে 888sport appর নিউমার্কেট থেকে কেনে। চশমা পরলে মানি দামি হুজুর ভাবটা হয়, চোখ চমৎকার থাকা সত্ত্বেও চশমাটা তাই নেওয়া হয়, ক্রমে এতটাই অভ্যেস হয়ে যায় যে এখন চশমা ছাড়া সে চলতেই পারে না। নামটাও সে জাঁকালো করে নেয় চশমার পাশাপাশি, বাবার নামটি যোগ করে নিজেকে সে জবরদসত্ম একটা নাম দেয়। তার মনে পড়ে বড় বড় পীর-মওলানা নামের শেষে জন্মস্থানের বা বিদ্যাগ্রহণের স্থানিক নামটি যোগ করেন, যেমন দেওবন্দী কি এনায়েতপুরী কি শর্ষিনা কি ফুরফুরা, আবুল কাশেমের তখন পিতার আদি বাড়ি বলরামপুর মনে পড়ে যায়, তখন সেটিকেই তার নামের অংশ করে তোলে – হাফেজ মওলানা আবুল কাশেম ইবনে আবুল হাশেম বলরামপুরী হয়। তার পাগড়িটিও অধিক পুরম্ন করে তোলে সে, এবং প্রথম স্ত্রীর পরে, তার বন্ধ্যত্ব দোষ দেখিয়ে দ্বিতীয় বিবাহও করে, এবং তৃতীয় বিবাহটিও করে এবার কোনো অজুহাত না দেখিয়েই। 888sport promo codeটি তার কাজি অফিসে তালাকের জন্যে এসেছিলো, তার খর যৌবন
রূপ-সৌন্দর্য আর স্বাধীনপ্রিয়তা দেখে আবুল কাশেম কাবু হয়ে পড়ে এবং ইদ্দতকাল পার হবার সঙ্গে সঙ্গে এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে তাকে ঘরে তোলে। এখানেই বলে রাখা দরকার, নতুন নতুন বিবাহজনিত ঝামেলা ও বিবাদ সত্ত্বেও আবুল কাশেমের এই স্ত্রী এখন তার পূর্বতন দুই স্ত্রীর সঙ্গে বড়ই মিলমিশে রয়েছে। কারণ? আর কিছুই নয়, চতুর্থ স্ত্রী! 888sport free betয় চার না হলে সংসার পুরা হয় না! আর এই নবাগত স্ত্রীটিকে যে কোথা থেকে আবুল কাশেম সংগ্রহ করেছে, পূর্ণ যুবতীও নয়, বালিকাই এখনো বলা যায় – অনেক তত্ত্ব-তালাশের পর তার আগের তিন স্ত্রী আবিষ্কার করে যে, আম্বিয়া নামে এই স্ত্রীর দেশ হচ্ছে কুচবিহার! ভারতের কুচবিহার! হাঁ, দাওয়াতি এক সফরে ভারত সীমামেত্মর লাগোয়া 888sport appsেরই হরিষাল গিয়েছিল আবুল কাশেম, সেখান থেকে এই বালিকাকে সে নিয়ে আসে, তবে সে 888sport appsের নয়, ভারতের – ইন্ডিয়ার – হিন্দুস্থানের! এবং বিনা পাসপোর্টে সে সীমামত্ম পার হয়! আজ সন্ধ্যাকালে দারোগা এসে উপস্থিত হয় বলরামপুরীর বাড়িতে। সদ্য মগরেবের নামাজ পড়ে খানায় বসবে, এমন সময় বাড়ির ওপরে দারোগা চড়াও। না, তম্বি করে নয়, বড় মধুর গলায় দারোগার ডাক, ও হাফেজ সায়েব, আছেন? অতএব, চিতল মাছের সালোনের রসালো খানা ফেলে দারোগাকে সমাদর করে বসাতেই হয়। ভেবে কূলকিনারা পায় না বলরামপুরী, তার বাড়িতে দারোগা কেন? তার আসার কারণ স্পষ্ট হতে বেশ কিছু সময় লাগে। নানা খোশগল্প, ইহকাল পরকালের কথা, যাকাতের ফজিলত ইত্যাদি অনেক কথার পরে বলরামপুরীর কিশোরী চতুর্থ স্ত্রীর কথা দারোগা বড় সমীহভরে উত্থাপন করে – পাসপোর্ট ছাড়া ইন্ডিয়ার মানুষ 888sport appsে, সরকার টের পাবার সঙ্গে সঙ্গে গলা ধাক্কা দিয়ে বর্ডারে ঠেলে দেবে! লাখ টাকাতেও এ-সমস্যার সমাধান নাই। শুনেই কুলকুল করে ঘেমে ওঠে বলরামপুরী। মেরম্নদ- বেয়ে ভয়ের শীতল ধারা ওঠানামা করে। বিছানা ফাঁকা হয়ে যাবে, আতরগন্ধী রাতটাই যে মারা যাবে। একমাত্র আশার আলো ওই লাখ টাকা! দারোগার হাতে যদি তুলে দেওয়া যায়! কিন্তু এত টাকা সে পাবে কোথায়? তবে ওপরে আলস্না আছেন, তিনিই মুখ তুলে চেয়েছেন। আজ রাতেই এলো তার হাতে হিন্দু এক 888sport promo codeকে মুসলমান করা, তারপর কন্ট্রাক্টর সাহেবের সঙ্গে তার নিকা পরানোর ডাক। আসলে কুসমির সম্পত্তির দিকে কন্ট্রাক্টরের চোখ, এ-কথা অজানা নাই বলরামপুরীর কাছে। এত টাকার সম্পত্তি, মূল্যে এখন কোটি টাকা, কুসমিকে নিকা করতে পারলেই সব হবে কন্ট্রাক্টরের হসত্মগত, নিকার কাজি বলরামপুরীকে তখন লাখ টাকা দিতে কসুর করবে না কন্ট্রাক্টর। আর, অত টাকা তিনি নাও যদি বখশিশ করেন, অমত্মত নিজের জোর খাটিয়ে দারোগাকে ঠান্ডা রাখতে পারবেন তো নিশ্চয়।
বলরামপুরীর মনের মধ্যে এসব কথার আন্দোলন আর ওঠাপড়া। রাতের ঘন অন্ধকারে আলপথে হাঁটতে গিয়ে বারবার পা পিছলে ধানি জমিতে পড়ছে। জমিতে সেচের পানি জমে আছে, পা কাদা মাখামাখি, পাম্পশুর অবস্থা নাজেহাল, কোমরে ফিক ব্যথা, থেকে থেকে মুখে কাতরধ্বনি, বলরামপুরী এ-পথ আগে কখনো মাড়ায় নাই, সে এখন জিগ্যেস করে, আর কতদূর হে? – এই আর একজলস্না পথ, ঝোপটা পার হইলেই বাড়ির আলো চোখে পড়িবে। বলরামপুরী আর্তকণ্ঠে বলে, টর্চ! টর্চ ধরেন। – আর টর্চ! ব্যাটারি শ্যাষ। সোলেমান টর্চের বোতাম টিপে দেখায়, টর্চের মুখে ক্ষীণ একরত্তি আলো জ্বলে উঠেই নিভু-নিভু হয়ে যায়। টর্চখানা বন্ধ করে জাদুকরের লাঠির মতো নাচায় সোলেমান। আর তামাশা দ্যাখো, জাদুই বটে! আকাশে একফালি বিদ্যুৎ ঝলসে ওঠে তৎক্ষণাৎ। সোলেমান বলে, বিজলির চমক! আলস্না ভরসা! কখন যে ম্যাঘ হইছে টেরও পাঁও নাই। আর দুই একবার চমকাইলেই পথ পষ্ট দেখা যাইবে, হাফেজ সায়েব। আকাশের দিকে চোখ তুলে সে বলে, নাহ্, বিষ্টি হবার দেরি আছে। হাত ধরে সে বলরামপুরীকে টান দেয়। চলেন, চলেন, আসি গেইছোঁ প্রায়। বলতে বলতে ঘন ঝোপের কাছে তারা এসে যায়।
ঝোপের ভেতরে পা রাখার আগে দম নেবার জন্যে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে বলরামপুরী। সোলেমান তাড়া দেয়, দাঁড়ান না গো, কন্ট্রাক্টর সায়েব অপেক্ষা করি বসি আছে। ঝোপটা পার হইলেই পৌঁছি যামো। বলরামপুরী নড়ে না, দাঁড়িয়েই থাকে, হাঁফাতে থাকে। হঠাৎ তার মনে পড়ে গেছে পুলসিরাতের কথা। হাশরের মাঠ থেকে পুলসিরাত পার হয়েই তো মানুষকে যেতে হবে। চিকন সুতার মতো পুলসিরাত, জগতের সবচেয়ে ধারালো তেজি তলোয়ারের চেয়েও অধিক তার ধার, যদি পাপী হও তবে তৎক্ষণাৎ দুই খ- হয়ে পড়ে যাবে দোজখে, আর যদি পার হতে পারো তবে পৌঁছে গেলে জান্নাত। সে সৌভাগ্য কি বলরামপুরীর হবে? থরথর করে সে কেঁপে ওঠে – কেন মওতের কথা, আজরাইলের কালোকিষ্টি আলখালস্নার কথা তার মনে পড়ছে এখন! হাশরের মাঠ! দাঁড়িপালস্না নিয়ে আলস্না মাপছেন পাপ-পুণ্য! আর আমার নবীজি রসুলুলস্নাহ সলেস্নলস্নাহু আলাইহেওয়াসালস্নাম ইয়া উম্মত ইয়া উম্মতি বলে কেঁদে-কেঁদে ফিরছেন। আহ, আমি কি তার পুণ্যবান বান্দা? বলরামপুরীর চোখ দিয়ে পানি ঝরতে থাকে। সে পা ফেলে সমুখে।
আর, তখনই তার মনে হয় সুঁই যেন কে ফুটিয়ে দিলো পায়ে। তীব্র জ্বালামুহূর্তে। আর পায়ের নিচেই সরসর সরসর শব্দ, ঝোপের লতা-জড়ানো জমিতে কী যেন বুক টেনে চলে যাচ্ছে। বলরামপুরী বুকভাঙা ডাক দিয়ে ওঠে, ডংশাইছে রে ডংশাইছে। টর্চের ব্যাটারি শেষ, তবু সেই চিৎকারে সোলেমানের হাত চলে যায় টর্চে, বের করে আনে টর্চ, বোতাম টেপে, ফোকাস করে, আবার সেই ক্ষীণ রক্তিম মিটমিটে আলো, সে-আলোয় চোখে পড়ে কালকেউটের ফণা। বিষ ঢেলে তারও বুঝি নেশা লেগেছে, ফণাটা মৃদু-মৃদু দুলছে। ঢলে পড়ে যায় হাফেজ আবুল কাশেম ইবনে আবুল হাশেম বলরামপুরী। পড়বি তো পড় সাপটার পাশেই, সাপটির ফণায় হাসি-হাসি ছবি, এক ঝলক দুলে উঠে সে বলরামপুরীর পড়ে যাওয়া শরীরের
গলায় দ্বিতীয়বার ছোবল কাটে। টর্চের আলো নিভে যায়। বলরামপুরীর মরণ চিৎকার ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হতে থাকে জলেশ^রীর
আকাশে-বাতাসে। ৎ (চলবে)

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.