নবনীতা দেবসেন (১৩ জানুয়ারি ১৯৩৮ – ৭ নভেম্বর ২০১৯) বাঙালি কবি, লেখক এবং শিক্ষাবিদ। দক্ষিণ কলকাতায় হিন্দুস্থান পার্কে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা নরেন্দ্র দেব ও মাতা রাধারানী দেবী সে-যুগের বিশিষ্ট কবি-দম্পতি। বাংলা, ইংরেজি ছাড়াও হিন্দি, ওড়িয়া, অসমিয়া, ফরাসি, জার্মান, সংস্কৃত, হিব্রু ভাষা জানতেন। ১৯৭৫-২০০২ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক 888sport live footballের অধ্যাপক ও বেশ কিছুকাল বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপেরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। তিনি কবি বুদ্ধদেব বসু ও সুধীন্দ্রনাথ দত্তের স্নেহধন্য ছাত্রী ছিলেন। ১৯৯৯ সালে আত্মজীবনীমূলক রম্যরচনা নটী নবনীতার জন্য 888sport live football আকাদেমি 888sport app download bd পান। ২০০০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন। ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর ৮১ বছর বয়সে কলকাতায় নিজ বাড়িতে প্রয়াত হন।
নবনীতা দেবসেনের বাবা নরেন্দ্র দেব, মা রাধারানী দেবী ছিলেন কলকাতার এলিট ঘরানার মানুষ। গত শতকের ত্রিশের দশক বাংলা 888sport live footballে আধুনিক যুগ বলে কথিত। ওই যুগের কবি তাঁরা। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ছিল সুসম্পর্ক। রাধারানী দেবী একসময় ‘অপরাজিতা দেবী’ নামে লিখতেন। ওই নামে রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ হয়, যা বাংলা 888sport live footballে বহুল আলোচিত। তাঁদের কন্যা নবনীতা অধিকতর আধুনিকতায় দীপ্ত হবেন, খুব স্বাভাবিক।
একজন 888sport promo codeর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে 888sport live footballকে বিচার-বিশ্লেষণ করার রসদ নবনীতা পেয়েছিলেন মায়ের জীবন এবং 888sport live footballচর্চা থেকে। রাধারানী দেবীর মাত্র ১৩ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল এলাহাবাদে কর্মরত সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত নামে একজন ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে। ঘটনাচক্রে কয়েক মাসের মধ্যেই এশিয়াটিক ফ্লুতে তাঁর মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর শাশুড়ির উৎসাহে লেখালেখি আর বিদ্যাচর্চা শুরু করেন রাধারানী দেবী – সে-সময় যা ছিল অভাবনীয়। প্রথমদিকে নিজের নামেই 888sport app download apk ছাপা হলেও এক সময় অপরাজিতা দেবী নামে তাঁর নানা লেখা বেরোতে শুরু করে। সে-888sport app download apk এতটাই তীক্ষè ছিল যে, অনেকেরই মনে হয়েছিল 888sport promo codeর ছদ্মনামে কোনো পুরুষ লিখছেন। রবীন্দ্রনাথকে এই মতামত জানিয়েছিলেন কেউ কেউ। তবে তিনি বিশ্বাস করেননি। সেই পর্যায়েই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আলাপ হয় রাধারানী দেবীর। এরপর ঘনিষ্ঠতা এতটাই হয়েছিল যে, বিধবা হয়েও 888sport live footballচর্চার সূত্রে পরিচিত কবি নরেন্দ্র দেবকে যখন বিয়ে করতে মনস্থির করেছিলেন তখনো অনুমতি নিতে গিয়েছিলেন কবিগুরুর কাছেই। শরৎচন্দ্র আর প্রমথ চৌধুরীর অনুমতিও নিয়েছিলেন।
একজন বিধবা 888sport promo code নিজের ইচ্ছায় দ্বিতীয়বার বিয়ে করছেন, ১৯৩১ সালে এ ছিল এক অভাবনীয় ঘটনা। তাই বিয়ের পরই কাগজে শিরোনাম হয়েছিল ‘রাধারানী-নরেন্দ্রদেব বিবাহ : কন্যার আত্মসম্প্রদান’! সেই বিয়েতে সম্পূর্ণ মদদ ছিল তাঁর প্রথম স্বামীর মায়ের।
নরেন্দ্র দেবের সঙ্গে সংসার পাতার কিছুদিন পর রাধারানীর প্রথম পুত্রসন্তান মারা যায়। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শে ৭২ নম্বর হিন্দুস্থান পার্কে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেন নরেন্দ্র দেব। বাড়ির নাম দেওয়া হয় ‘ভালো-বাসা’। সেখানেই ১৯৩৮-এর ১৩ জানুয়ারি জন্ম হয় নবনীতার। ডাকনাম খুকু। শেষ শয্যায় শুয়ে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্নেহের রাধুর (রাধারানী দেবী) মেয়ের নাম রেখেছিলেন অনুরাধা। নামকরণের তিনদিন পরই প্রয়াত হন শরৎচন্দ্র। তবে রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নবনীতা নামটাই আনুষ্ঠানিক নাম হয়ে যায়। নিজের নামকরণ সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নামটা তাঁর মাকে দিয়েছিলেন। ‘বাবার সঙ্গে যখন মায়ের বিয়ে হয় তখন। কবিগুরু মাকে লিখেছিলেন, ‘আজ থেকে তুমি নতুন জীবনে আনীতা হলে তাই তোমার নাম নবনীতা।’ মা খুব তেজি মহিলা ছিলেন। তিনি উত্তরে লিখেছিলেন, ‘আমি আপনার আশীর্বাদটুকু নিলাম। কিন্তু নামটা নিতে পারলাম না। আমি ২৮ বছর ধরে রাধারানী। ওই নামে আমার দুটো বই আছে। কাজেই আমি এই নাম নিতে পারব না।’ পরে আমি যখন জন্মেছি আমার মা-বাবার বিয়ের আট বছর পর তখন কবিগুরু চিঠি লেখেন, ‘কল্যাণীয়া নবনীতা নামে’। লেখেন, ‘তুমি যেহেতু এখনো কোনো উপহার প্রত্যাখ্যান করার মতো বড় হওনি, তাই উত্তরাধিকারসূত্রে তোমার এই নাম নবনীতা হলো।’ নবনীতার বয়স তখন তিনদিন।
গোখলে মেমোরিয়াল গার্লস, লেডি ব্রেবোর্ন, প্রসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা করেছেন। মাত্র বিশ বছর বয়সে স্নাতক করেন তিনি। এরপর যাদবপুর হয়ে চলে যান বিদেশে। হার্ভার্ড, ইন্ডিয়ানা (ব্লুমিংটন) ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেছেন। পোস্ট ডক্টরেট করেন বার্কলে থেকে। লেখাপড়া শেষ করে ফিরে আসেন দেশের মাটিতে। ১৯৭৫-২০০২ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কিছুকাল বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। তাঁকে তুলনামূলক 888sport live footballের একজন অথরিটি মানা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন।
বুদ্ধদেব বসুর প্রচেষ্টায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক 888sport live football বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভাগটি শুরু হয় পাঁচজন ছাত্র নিয়ে। একমাত্র ছাত্রী নবনীতা দেবসেন। তাঁকে নিয়ে ছাত্রকুলে কৌতূহল ছিল। নবনীতা দেখতে অসাধারণ সুন্দরী। নবনীতার কথায়, ‘বহু ছাত্র কলা বিভাগের সামনে ঘুরঘুর করত। কাউকে পাত্তা দিইনি। কেউ কাছে ঘেঁষলে বকে দিতাম।’
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিয়ে হয় ১৯৫৯ সালে। ১৯৭৬-এ তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। তবে আমৃত্যু তাঁরা ভালো বন্ধু ছিলেন। সাংবাদিক-সম্পাদক অন্তরা ও অভিনেত্রী-সমাজকর্মী নন্দনা দেবসেন তাঁদের কন্যা।
অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিয়ে এবং বিচ্ছেদ সম্পর্কে রসিকতার ছলে এক হৃদয়গ্রাহী রচনায় তিনি লিখেছিলেন, ‘সংসারের কোনো কোনো বাসন কোসন, কাপ পিরিচ সম্ভাব্য বন্ধুরতা অতিক্রম করে বিস্ময়করভাবে বহুদিন টিকে থাকে, কিন্তু একদিন হয়ত দেখা যায় যে জন্য এত আয়োজন, সেই সংসারটাই টেকে না, সম্পর্ক ভেঙে যায়।’
নবনীতা ছিলেন ভার্সেটাইল লেখক। বিংশ-একবিংশ শতকের বাংলা 888sport live footballে নবনীতা দেবসেন একজনই। তিনি উচ্ছল, সহাস্য, সুদূরপিয়াসী, কখনো তির্যক, কখনো ক্রুদ্ধ, প্রয়োজনে কঠোর। ছেলেভোলানো রূপকথা থেকে অচঞ্চল 888sport app download apk, সরস ট্রাভেলগ থেকে প্রশ্নাত্মক অ্যাকাডেমিক রচনা – সবকিছুতেই তাঁর অনায়াস বিচরণ। তিনি ঠিক যতটাই ধ্রুপদি, ততটাই আধুনিক বা সমকালীন।
কলকাতার একটি পত্রিকার রোববারের ম্যাগাজিনে ‘ভালো-বাসার বারান্দা’ নামে তাঁর ধারাবাহিক রচনা অতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, যেটি পরে বই হিসেবেও প্রকাশিত হয়। ৭০-৮০টি বই লিখেছেন নবনীতা। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই : 888sport app download apk – প্রথম প্রত্যয়, স্বাগত দেবদূত, তুমি মনস্থির করো; 888sport alternative link – আমি অনুপম, প্রবাসে দৈবের বশে, অন্য দ্বীপ; গল্প – মঁসিয়ে হুলোর হলিডে, গল্পগুজব, খগেন বাবুর পৃথিবী, নাটক – অভিজ্ঞান দুষ্মন্তম; শিশু-কিশোর – পলাশপুরে পিকনিক, চাকুম চুকুম, স্বপ্নকেনার সওদাগর; গবেষণা – ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী, সীতা থেকে শুরু।
888sport slot game আর 888sport slot game রচনায় সিদ্ধপা, সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ট্রাকবাহনে ম্যাকমাহনে তাঁর একটি অসাধারণ 888sport slot gameবিষয়ক গ্রন্থ। নবনীতার পায়ের নিচে যেন সর্ষে ছিল। তাঁর মতো এত বিদেশ 888sport slot game খুব কম লেখকই করেছেন। সারা পৃথিবী ঘুরেছেন। দুরারোগ্য অসুখ ছিল। তারপরও ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছেন লাঠি নিয়ে, হুইলচেয়ারে। শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন। ইনহেলার সঙ্গে নিয়ে ঘুরতেন। তাই নিয়ে আলাস্কা গেছেন অনেকবার। অকুতোভয়। শরীর নিয়ে আহা-উহু ছিল না। পা-িত্য, রুচিবোধ, জেদ, সবই ছিল। হাসতে আর হাসাতে পারতেন। কোনো অভিযোগ ছিল না। প্রচুর কথা বলতেন, কাজের কথা।
বর্ণময় জীবন নবনীতার। আমন্ত্রণেই ঘুরেছেন বেশি। নবনীতাই একমাত্র বাঙালি লেখক, যিনি ভারতীয় নানা 888sport live football 888sport app download bd কমিটির বিচারক-সদস্য ছিলেন।
যেমন জ্ঞানপীঠ, 888sport live football অ্যাকাডেমি, বিশ্ববিদ্যালয় (কেন্দ্রীয়) গ্রান্টস কমিশন। বাংলা একাডেমির সঙ্গেও তিনি আমরণ যুক্ত ছিলেন।
888sport slot game-888sport live footballে যেমন ছিলেন অনন্য, তেমনি ছিল তাঁর অসাধারণ রসবোধ। রসজ্ঞান ছিল রুচিসম্মত। ‘সেন্স অব হিউমার’ শব্দটার বোধহয় একটাই সংজ্ঞা, নবনীতা দেবসেন। নিজেকে নিয়েও রসিকতা করতেন। সংস্কারমুক্ত ছিলেন বলেই নিজেকে নিয়ে রসিকতা করতে তাঁর অসুবিধা হতো না। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পরও রসিকতা করতেন নিজেকে নিয়ে। লিখেছিলেন, ‘এই যে এত লম্বা জীবনটা কাটালুম, এর
একটা যথাযথ সমাপন তো দরকার।
পাঁজি-পুঁথি দেখে শুভদিন, শুভলগ্ন স্থির করে, স্বজন-বান্ধব খাইয়ে তবেই তো শুভযাত্রা।’ নিজের মৃত্যু নিয়ে এমন রসিকতা অল্প মানুষই করতে পারে। তাঁর প্রাণ ভরপুর ছিল রসের স্ফূর্তিতে, সঙ্গে ছিল বুদ্ধির দীপ্তি। আর কী আশ্চর্য, চলেও গেলেন পাঁজি-পুঁথি দেখে ক্যানসার সচেতনতা দিবসে।
লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের সাউথ এশিয়ান লিটারেরি রেকর্ডিংস প্রজেক্ট নবনীতা দেবসেনের লেখা সম্বন্ধে মন্তব্য করেছে, ‘তাঁর রসবোধ আর মজা করার ক্ষমতা, একই সঙ্গে নিঃস্পৃহতা আর হৃদয়ে ছুঁয়ে যাওয়ার মানসিকতা তাঁর লেখাগুলোকে অনন্য করে তুলেছে।’
নবনীতা ছিলেন আমেরিকার কলোরাডো কলেজের তুলনামূলক 888sport live footballের ‘মেট্যাগ প্রফেসর’। নবনীতাই প্রথম ভারতীয় মহিলা, যিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রাধাকৃষ্ণন স্মারক লেকচারার হন।
এত লেখাপড়া, এত পাণ্ডিত্য, কখনো তার প্রকাশ করেননি। যেন নিতান্তই সাধারণ মানুষ। বলতেন, ‘ভালো করে মাতৃভাষা শেখো। ভারতীয় 888sport live football সংস্কৃতি জানো।’
১৯৯৯ সালে আত্মজীবনীমূলক রম্যরচনা নটী নবনীতা বইটির জন্য 888sport live football অকাদেমি 888sport app download bd লাভ করেন। ২০০০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন। মহাদেবী ভর্মা, ভারতীয় ভাষা পরিষদসহ 888sport app প্রতিষ্ঠান থেকেও 888sport app download bd পেয়েছেন তিনি।
তাঁর লেখার বড় অংশ জুড়ে আছে 888sport promo code। কি 888sport app download apk, কি গল্প-888sport alternative link, কি 888sport slot game বা গবেষণা – সর্বত্র। তাঁর গল্পের কথা বলি। গল্পসমগ্রতে রয়েছে অসাধারণ কিছু গল্প। তাঁর গল্পের অধিকাংশ 888sport promo code মধ্যবিত্ত শ্রেণির। তারা একদিকে আজন্ম-লালিত সংস্কারকে আঁকড়ে থেকেছে আবার সেই সংস্কারের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে উত্তরণের পথ খুঁজেছে। যেমন ‘বিমাতা’ গল্পের তাপসী। স্বামী-পরিত্যক্ত হওয়ার পরও দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভাবেনি। বরং স্বামীর মাকে নিজের মা জ্ঞানে সম্মান করেছে। তাই বাবা তাকে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা বললে বাবাকে মেয়ে জানায়, ‘শাশুড়িমাকে একলা বাড়িতে রেখে যাই কী করে? তার একমাত্র সন্তান হারিয়ে গেছে। আমি তা হলে মাকেও সঙ্গে নিয়ে যাব। ওঁকে দেখার কেউ তো নেই। তো শাশুড়িকে টেঁকে গুঁজে মেয়ে তো বাপের বাড়ি ফিরে এলো।’ অর্থাৎ প্রতিহিংসা নয়, মানবিক মূল্যবোধের চর্চা। এমনকি স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানকেও নিজের করে নিতে চাইল তাপসী।
তাঁর গল্পের 888sport promo codeরা জীবনের কথা বলে। ‘গদাধরপুর উইমেন্স কলেজ’ গল্পের কথক একজন 888sport promo code। সে চায় আত্মপ্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক মুক্তি। স্বামীর সংসারে অস্তিত্বহীন স্ত্রীর চরিত্র
প্রথমদিকে তার ভালো লাগলেও একসময় খারাপ লাগতে থাকে। সে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়; কিন্তু সংসার ভেঙে নয়, সংসারে থেকেই।
‘এক্সপেন্স একাউন্ট’ গল্পটিতে একজন ছোট পিসিকে পাই আমরা, যিনি বৈশ্বিক আবহাওয়ায় বদলে যাওয়া কলকাতাকে দেখে ব্যথা পান। মেনে নিতে পারেন না। সুকৌশলে তিনি চারপাশের মানুষগুলোকে পুরনো দিনের ঐতিহ্যের কথা শোনান।
‘দাদামনির আংটি’ এক সাধারণ গৃহবধূর অসাধারণ হয়ে ওঠার কাহিনি। দাদামনির আংটি চুরি গেলে এই বধূ থানায় ডায়েরি করতে যায়। থানা ডায়েরি নিতে আপত্তি করে। বধূ প্রতিবাদ করে। সাফ সাফ বলে দেয়, ডায়েরি না নিলে তিনি নিজেই কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তার নামে এফআইআর করবেন।
‘পরীর মা’ গল্পের মা নিজের সন্তানকে ঘটনাচক্রে হারিয়ে ফেললেও অন্যের সন্তানকে বুকে টেনে নেন।
‘শুভমিতা প্রোপ্রাইটার’ গল্পে শুভমিতা দ্বিতীয়বার বিয়ে করলেও প্রথম সন্তান শুভকে ভুলতে পারে না।
এমন অনেক মানবিক বার্তা আছে তাঁর গল্পে। আবার আধুনিক গল্পও রয়েছে। ‘আর্টিফিশিয়াল ইনসেমিনেশন’ তেমন একটি গল্প। এ-গল্পে এলিজাবেথ এক অসাধারণ 888sport promo code। সে অন্য পন্থায় সন্তান ধারণ করে কারো বাধা না মেনে। একটি অসাধারণ বাক্য আছে এ-গল্পে, ‘মায়ের মুখের একটা কথার ওপরে বাবার বাবাত্ব টলমল করছে। আর তো কেউ জানে না প্রকৃত বাবাটি কে!’
তাঁর গল্পে 888sport promo codeর বহুমাত্রিক রূপ আমরা দেখি। গল্পের 888sport promo codeরা হিংস্র নয়। পুরুষের ব্যাপারে তাদের অনীহা বা অ888sport apk download apk latest version নেই। প্রতিহিংসাও তারা দেখায় না। তাদের প্রতিবাদ পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে। যা কিছু পুরনো তার বিরুদ্ধে। পুরনো ঐতিহ্যের মাঝে যে ভালো থাকে সেই ভালো বার্তাই পাই আমরা তাঁর 888sport live footballে।
অসাধারণ রূপকথা লিখতেন। তাঁর প্রিয় বিষয় রূপকথা। আদর্শ জীবন, আদর্শ মানুষ, আদর্শ সমাজ তৈরির সুযোগ আছে রূপকথায়। তাঁর রূপকথায় মেয়েরা কুশীলব। রানি এসে রাজাকে উদ্ধার করে। রূপকথায় পুরুষরাই চিরদিন মেয়েদের উদ্ধার করে। মেয়েদের বন্দি করে, পেটায়, কাটে আবার উদ্ধারও করে। পুরুষই তাদের কষ্ট দেয়, আবার তারাই উদ্ধার করে। মেয়েদের আসল চেহারা নেই, তারা শুধুই বন্দিনী। ছেলেদের তুলনায় প্যাসিভ। তাঁর রূপকথায় মেয়েদের পজিটিভ ও অ্যাকটিভ রোল তুলে ধরা হয়েছে। তারা উদ্ধার করে যুদ্ধ করে নয়, অস্ত্রবলে নয়, বুদ্ধির অস্ত্রবলে। ছোট থেকেই মেয়েদের বোঝানো দরকার তাদের মধ্যে শক্তি আছে। শুধু রূপ নয়, বুদ্ধি চাই। রূপবতী রাজকন্যা নয়, বুদ্ধিমতী রাজকন্যা চাই। বুদ্ধি, আবেগ, ভালোবাসা দিয়ে জয় করতে হবে। রয়েছে অসাধারণ বেশকিছু রূপকথা নিয়ে তাঁর বই রূপকথাসমগ্র।
আসি তাঁর 888sport app download apkয়। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রচিত ‘নাজমা’ 888sport app download apkটি পড়লে শিহরিত হতে হয়। নাজমা-আজিজ দম্পতির বিয়ে হয়নি বেশি দিন। সন্তান আসছে সামনে। তিরিশ কিলোমিটার দূরে অফিস। তাছাড়া সামনে অনেক ছোটাছুটি তাই লোন নিয়ে স্কুটি কিনেছে। আজ অফিস থেকে ফিরে রঙিন টিভি কিনতে যাবে। সেজন্য নাজমা প্রতীক্ষারত। স্বামী ফেরে না। তাকে স্কুটি থেকে টেনে নামিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানো হয়। সাময়িক ধাক্কা সামলে উঠে দাঁড়ায় নাজমা। সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে হবে। একটা নিরাপদ পৃথিবীতে। এই 888sport app download apkর শেষাংশের লাইন, ‘আমরা তোকে আস্ত আকাশ দেব।’
তিনি দীর্ঘদিন রামকথা নিয়ে কাজ করেছেন। সীতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তিনি রামকথার বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণার জন্য তিনি বেছে নিয়েছিলেন ষোড়শ শতাব্দীর দুই 888sport promo codeকবিকে – একজন বাংলার, অন্যজন অন্ধ্র প্রদেশের। একেবারে সাধারণ, কিন্তু ব্রাহ্মণ পরিবারের ওই দুই 888sport promo codeকবি কীভাবে রামায়ণ 888sport app download apk latest version করেছিলেন বাংলা আর তেলেগু ভাষায়, সেই গবেষণা করেছিলেন নবনীতা দেবসেন। চন্দ্রাবতী রামায়ণ তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ।
বাংলা 888sport live footballের প্রথম 888sport promo codeকবি চন্দ্রাবতীকে ওই রামায়ণ রচনা নিয়ে গবেষণার কাজেই খুঁজে পেয়েছিলেন নবনীতা। একইভাবে মোল্লা নামে সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা তেলেগু ভাষার 888sport promo codeকবির 888sport live footballকীর্তিও খুঁজে বের করেছিলেন তিনি। তারপর দুই 888sport promo codeকবির লেখা রামায়ণের বিশ্লেষণ করেছিলেন।
স্ত্রীকে নির্বাসন দেওয়ার পর রামের কী হলো মোল্লা সেটি একটি মারাঠি গানে লিখেছেন। রামকে বিলাপ করতে দেখা যায়। কিসের বিলাপ তার? শালের খুঁটে চোখ মুছে রাম হাহাকার করেন :
‘সীতার মতো রানী আমি কোথায় পাই
আর কে তার মতো জল দিয়ে মেঝে ধোয়াবে?
কে আমাকে আমার ধুতি এনে দেবে?
সীতার মতো সুস্বাদু রান্না রেঁধে কে খাওয়াবে আমায়?
সীতা এখন বনবাসে, কে পেতে দেবে আমার রাজশয্যা?
কে জোগাবে চন্দনবাটা?
ভাই লক্ষ্মণ, বন্ধ করে দাও এই বিলাসপ্রাসাদ।’
যেভাবে বৃষ্টির জল পড়ে, ঠিক সেভাবে চোখের জল ফেলতে ফেলতে রাম পায়ের ধাক্কায় খাট উলটে দেন। সীতাকে বনবাসে পাঠিয়ে অনেক কিছু হারিয়েছেন তিনি। সীতা তাঁর কাজের লোক, রাঁধুনি, বিছানা পাতার লোক, দক্ষ গৃহকর্মী এবং রতিসুখদাত্রী। এসব হারানো এক বিরাট ক্ষতি, সন্দেহ নেই।
অন্যদিকে সীতা কীভাবে বনবাসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারও উল্লেখ আছে মারাঠি গানে। সীতার জন্য রথ এসে অপেক্ষা করছে। তিনি শেষ মুহূর্তেও কিছু দরকারি টুকিটাকি কাজ সেরে নিচ্ছেন।
গৃহকর্মীকে নির্দেশ দেন কাপড় শুকোনোর দড়ি থেকে রামের শাল সময়মতো তুলে আনতে এবং রাম যখন খাবেন পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে। গৃহকর্মীর হাতে একটুকরো সাবান দিয়ে সীতা বলেন, তা দিয়ে যেন রামের কাপড় কাচা হয়। মুদিখানার দোকানে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন দোকানিকে। ভারীকে বলেন প্রতিদিন নিয়ম করে রামের স্নানের জল ভরে রাখতে, তিলিকে বলেন রামের বাতিদানে তেল ভরে রাখতে। যখন রথ প্রায় চলতে শুরু করেছে, সে-সময়ও তিনি মুখ ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘আমার রামের কাচা পোশাক স্নানাগারে রাখা আছে তো?’
বিশ্বের মহাকাব্য রচয়িতারা সবাই পুরুষ। তাঁরা নিজেদের কাব্যে বন্দনাও করেছেন পুরুষের, অস্ত্রধারী বীরদের। অপহৃত হওয়া, উদ্ধার হওয়া, জুয়ার পণ হওয়া, নির্যাতিত হওয়া বা অপমানিত হওয়া ছাড়া 888sport promo codeর সেখানে বিশেষ কিছু করার নেই।
শুধু লেখা দিয়ে নয়, 888sport promo codeর জন্য সংগঠনও করেছেন নবনীতা। ২০০০ সালে মা রাধারানী দেবীর জন্মদিনে নবনীতা গড়েছিলেন বাংলা ভাষায় 888sport promo code লেখকদের নিজস্ব গোষ্ঠী ‘সই’।
888sport promo code লেখক-প্রকাশকদের নিয়ে ‘সইমেলা’ নামে 888sport promo code বইমেলা নবনীতা দেবসেনেরই সৃষ্টি। তৈরি করেছেন ওয়েবসাইট আর 888sport promo code লেখকদের জন্য ব্লগ।
888sport promo codeর প্রতি অবিচারের প্রশ্নে নবনীতা ছিলেন অদম্য। জ্ঞানপীঠ বাংলা ভাষার মনোনয়ন কমিটির সদস্য হিসেবে আশাপূর্ণা দেবীর প্রথম প্রতিশ্রুতি 888sport alternative linkের নাম প্রস্তাব করলে অপর দুজন পুরুষ সদস্য তাতে আপত্তি করেন। অথচ ওই দুজন পুরুষ সদস্যের কেউই তখনো প্রথম প্রতিশ্রুতি পড়েননি। নবনীতা দেবসেনের শক্ত অবস্থানের জন্য জ্ঞানপীঠ 888sport app download bd পান আশাপূর্ণা দেবী। নবনীতা না থাকলে পুরুষতান্ত্রিকতার বেড়াজালে 888sport promo codeর 888sport live football মার খেতে পারত। এ-তথ্যটি দেশ পত্রিকায় উল্লেখ করেছিলেন নবনীতা।
৮১ বছর বয়সে চলে যান তিনি। কিন্তু ৮১-এর ভেতর থেকে উঁকি দিতেন যেন ২১ বছরের এক উচ্ছল তরুণী। সংসারে কিছু কিছু মানুষ থাকেন যাঁদের বয়স কখনো বাড়ে না, সময় তাঁদের চুলে পাক ধরায়, যোগ-বিয়োগের হিসাবে তাঁদের ৮০-র কোঠায় পৌঁছে দেয়, শুধু তাঁদের ভেতরের কোনো অবোধ শিশু তখনো আড়াল থেকে চোখ টিপে জানান দিয়ে যায় তিনি কিন্তু সেই ছোট্টটিই আছেন। তেমনই সরল, তেমনই কাঁচা, তেমনই আদুরে, তেমনই কৌতূহলী। বয়সের হিসাব যাঁদের কাছে শুধুই কিছু 888sport free betমাত্র।
কল্যাণময় জীবনে বিশ্বাসী নবনীতা সেন বলেছেন, ‘এমন কিছু লিখব না যাতে সমাজের ক্ষতি হয়। এমন কোনো লেখা লিখে লাভ নেই যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কোনো উপকার না হয়। আমার লেখা থেকে যেন কোথাও কোনো অকল্যাণ না হয়।’ পাঠক তাঁর ভালোবাসার, পাঠক তাঁর ‘বন্ধু’। দীর্ঘ আশি বছর ভালোবাসা কুড়োতে কুড়োতে তাঁর কথায় বারবার তাই উঠে আসত পাঠকের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা।
লেখকদের জন্য নবনীতা বলেছেন, নিজের লেখার প্রেমে পড়ে যেতে নেই। দারুণ কিছু করে ফেলেছি ভাবলে আর কিছু হবে না।
অসুস্থ ছিলেন কিন্তু সচল ছিল কলম। তাঁর শিরায়, রক্তে, শ্বাসপ্রশ্বাসে প্রসারিত লেখার ক্ষমতাকে অসহ্য যন্ত্রণায়ও
লালন করে চলে ছিলেন এই ধরাধাম ছেড়ে যাওয়ার দিনটি পর্যন্ত। কিন্তু যাওয়ার বেলাতেও শক্তি জুগিয়ে গেছেন অসংখ্য মানুষকে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.