নবনীতাদি আমার বিয়েতে একটি সাদা খাতা দিয়েছিলেন। পাতাগুলো ছিল হালকা নীল তুলোট কাগজের। ভেতরে লেখা ছিল, ‘888sport app download apkর খাতা’ আর যাওয়ার সময় কানে কানে বলেছিলেন, ‘আমার দেওয়া খাতাটা যেন ভর্তি হয়।’ বিয়ের পর এদেশেই থাকব জানলে হয়তো 888sport app download apk লেখার খাতা দিতেন না। জানতেন বিদেশে থাকব। বিদেশে থেকে আর যা-ই হোক 888sport app download apk লেখা বেশ শক্ত। কারণ কবিরা যে-ভাষায় 888sport app download apkচর্চা করেন সেই ভাষা, সেই মাটির কাছাকাছি থাকাটা খুব জরুরি। এক দশকের ওপর বিদেশবাসে এ আমি হাড়ে হাড়ে বুঝেছি। নবনীতাদিও তো বহুকাল বিদেশে ছিলেন। হয়তো একই যন্ত্রণা তিনি নিজেও ভোগ করেছেন। সুনীলদা জানি শুধু এই কারণেই আজীবন আইওয়ায় থাকার প্রস্তাব নাকচ করে ফিরে এসেছিলেন। সে যাই হোক। এই লেখায় নবনীতাদি কতবড় অ্যাকাডেমিক্স ছিলেন সে নির্ণয় করা আমার উচিত নয়। বরং তাঁর মতো একজন বর্ণময় মানুষের সঙ্গে আমার মতো চুনোপুঁটির সম্পর্ক এজন্য লিখছি যে, তাহলে ওঁর মতো একজন মানুষকে অনেকটা আন্তরিকভাবে জানার পাঠকের সুযোগ হবে। কারণ পাঠকের স্বভাব হলো প্রিয় লেখকের রান্নাঘরে উঁকি দেওয়া। নিজস্ব চৌহদ্দির মধ্যে আটপৌরে মানুষটিকে জানার। তা আমার সঙ্গে তাঁর তিরিশ বছরের ওপর সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের আলো কখনো উজ্জ্বল, কখনো অভিমানের ভারে ত্যারচা হয়েছিল। কিন্তু সম্পর্কটি আমৃত্যু ছিল।
আমি যখন বিদেশে ছিলাম, তখন টেলিফোন ছাড়া দ্রুত যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল ই-মেইল। তা নবনীতাদির সঙ্গে মাঝেমধ্যে টেলিফোনে বেশিরভাগ সময়ে ই-মেইলে যোগাযোগ হতো। সে-সময় অর্থাৎ নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে কজন বাংলা ভাষার লেখকের ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ছিল গুনে বলা যায়। কিন্তু নবনীতাদি চিরকালই আন্তর্জাতিক। আজ ম্যানহাটন তো কাল ম্যানচেস্টার। তাঁর পায়ে একটি উড়ন্ত চপ্পল ছিল বোধহয়। কাজেই সারাজীবনটাই সে লেখার কাজ হোক, কোনো বক্তৃতা হোক বা লেখকদের ওয়ার্কশপ অথবা নিছক 888sport slot game; সবকিছুতেই তিনি ডানা ছড়িয়ে দিতেন। বছরচারেক আগে আমি তুরস্ক গিয়েছিলাম। যাব শুনে কী আনন্দ। বললেন, ‘ইস! আমার আর যাওয়া হবে না বোধহয় রে। এসে ভালো করে লিখবি। পড়ব।’ কোথাও কেউ বেড়াতে যাচ্ছে শুনলেই কেমন শিশুর মতো আনন্দ পেতেন। আনন্দ তিনি জীবন থেকে কুড়িয়ে নিতে জানতেন। সারাবছর নানারকম শারীরিক অসুবিধা সত্ত্বেও তাঁর অফুরন্ত জীবনীশক্তির কাছে সেসব ফুৎকারে উড়ে যেত।
মেয়েদের নিয়ে তাঁর ভেতরে এক খাবলা নরম মাটি ছিল। যে-কোনো মেয়ের যে-কোনো জয়কে নিজেরই কিছুটা জিতে যাওয়া মনে করতেন। সেই কারণে ‘সই’য়ের মতো 888sport live footballিক মেয়েদের একটি সংগঠন করার কথা ভেবেছিলেন। বিদেশ থেকে ই-মেইল করলেই তিনি বলতেন, ‘তুই ফিরে এসেই প্রথম কাজ হবে সইতে জয়েন করা।’
দেশে ফিরে সইয়ের সঙ্গী হয়েছি। একবার আমাদের পরিকল্পনা হলো ‘সই’য়ের জন্মদিন উপলক্ষে এবার বাংলা নয়, ইংরেজিতে পত্রিকা হবে। কারণ সেবার জাতীয় স্তরের অনেক লেখিকাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাঁরা কেউ-ই বাংলা বুঝবেন না। অথচ বাংলা ভাষায় যাঁরা লিখছেন তাঁরা সেই সময়ে কী ভাবছেন, কী লিখছেন সেসব তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। কাজেই নবনীতাদি সিদ্ধান্ত নিলেন এবার পত্রিকা ইংরেজিতে হবে। ভারতবর্ষের বিভিন্ন ভাষার মূলত 888sport promo codeবাদী লেখকদের আমন্ত্রণ এবং সম্মাননা জানানো হবে। শুধু তাই নয়, তাঁদের লেখাও আমাদের সঙ্গে ওই পত্রিকায় থাকবে। শশী দেশপান্ডে, ঊর্মিলা পাওয়ারের মতো একঝাঁক শক্তিশালী লেখিকার পাশে নিজের কুণ্ঠিত লেখাটি জায়গা পাওয়ায় আমার মতো অনেক ‘সই’য়ের কাছেই খুব শ্লাঘার ব্যাপার হয়েছিল। কিন্তু আমরা তো বাংলায় লিখি। 888sport app download apk latest version করবেন কে? নবনীতাদিকে ধরলাম। ‘888sport app download apkগুলো অন্তত তুমি 888sport app download apk latest version করো।’ প্রথমে একটু ইতস্তত করলেও রাজি হয়ে গেলেন। মনে পড়ছে, আমার ছোট্ট 888sport app download apkটি 888sport app download apk latest version করার সময় আমাকে বললেন, ‘তোর 888sport app download apkটা এত ভালো, করতে গিয়ে কান্না পেয়ে যাচ্ছে রে!’ এতটাই তিনি 888sport app download apkর মধ্যে বাঁচতেন।
সামান্য একটা ঘটনার কথা বলি। একদিন দুপুরে নবনীতাদির সঙ্গে বসে ‘সই’য়েরই নানা লেখাপত্র নিয়ে কাজ করছি। হঠাৎ আমার বাড়ি থেকে ফোন। আমার পাশের বাড়ির চুপচাপ, সদা হাস্যমুখ মেয়েটি শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। বরের বন্ধুর সঙ্গে। পাঁচ বছরের ছেলেটি মা, মা করে কেঁদে আকুল হচ্ছে। ফোন রেখে নবনীতাদিকে সব বৃত্তান্ত বললাম। তিনি সমস্তটা মন দিয়ে শুনে বললেন, ‘বেশ করেছে পালিয়ে গেছে। বরটা নিশ্চয়ই পাজি। নাহলে মেয়েরা সহজে ছেড়ে চলে যায় না।’ মেয়েদের প্রতি নবনীতাদির এরকম অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল। বিয়ে, সংসার ছেড়ে আসা নবনীতাদির হৃদয়ের অন্তস্তলে একটা গভীর ক্ষত ছিল কোথাও। আমৃত্যু তার ভার বহন করেছেন। নানান কথাবার্তায় সেটা বুঝতে পারতাম। কিন্তু সেই সম্পর্ক নিয়েও জীবনের শেষদিন পর্যন্ত অসম্ভব মমতা রেখে দিয়েছিলেন। আমার সামনেই অমর্ত্য সেনের ফোন এসেছে। কিশোরীর মতো উচ্ছল হয়ে উঠলেন। কী অসম্ভব মায়ায়, 888sport apk download apk latest versionয় তাঁর শরীরের খবর নিচ্ছিলেন। তাঁর ভেতরে শিক্ষার একটা আন্তর্জাতিক আলো ছিল। সেই আলোই তাঁকে এমন একটি আধুনিক মনন দিয়েছিল। চিন্তা-চেতনায় চাপিয়ে দেওয়া কোনো সংস্কার, কোনো গোঁড়ামি কোনোদিন তাঁকে ছুঁতে পারেনি। তিনি জীবনের সমস্ত আগুন ছুঁয়ে দেখেছেন। আগুন তাঁকে সারাটা জীবন তুমুলভাবে বেঁচে থাকার পাঠ দিয়েছে।
আগুনকেও তিনি শিখিয়েছিলেন কোথায় ধিকি, কোথায় দাউদাউ।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.