আশিস গোস্বামী
বাংলা নাট্যচর্চার ইতিহাস বললে এখন আমাদের বুঝে নিতে হয় ভারতের একটি রাজ্য এবং পার্শ্ববর্তী আর একটি দেশ, যার নাম 888sport apps। আসলে ১৯৪৭-পূর্ববর্তী নাট্য-ইতিহাস এই উলিস্নখিত ভূখ– আলাদা কিছু নয়। একই নাট্যচর্চার বহমান স্রোত বিভক্ত করল দেশভাগ। শুধু নাটক নয়, সম্পূর্ণ সাংস্কৃতিক চর্চাটারই ওলটপালট হয়ে গেল তখন। তাতে এই বাংলার লাভ হয়েছে। অপরিসীম ক্ষতি হয়েছে অপর বঙ্গের। 888sport appsকে আরো কয়েকটি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে নাট্য-ইতিহাসের পুনর্নির্মাণ করতে হয়েছে। ভাষার জন্য লড়াই, জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই, সংস্কৃতির পুনঃপ্রতিষ্ঠাও জড়িয়ে ছিল এর মধ্যে। ১৯৭৯-এর পর একটু থিতু হয়ে বাঙালি তার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশের মওকা পেল। 888sport appsের নাট্যচর্চা ক্রমবিকশিত হল। যদিও মুসলমান রাষ্ট্রের মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এখনো বিদ্যমান। তাই লড়াই জারি এখনো। নাট্যচর্চা অব্যাহত এখনো।
ভারত ভাগ হয় ১৯৪৭-এ। তবে তারও আগে দেশভাগ প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়েছিল। এই সময়েই বাঙালি নিজেদের হিন্দু আর মুসলমানে ভাগ করে নিল। ১৯০৫-এর আগে এ-ভাবনা আসেনি। তখন বাঙালির একটাই পরিচয় – সে বাঙালি। তারপর ১৯৩৫, ১৯৪৬-এর মতো সংঘটিত দাঙ্গার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান তৈরি হয়ে গেল ভারতবর্ষ থেকে ছিন্ন হয়ে। কিন্তু ১৯৪৭ এ-ই মুসলমান বাঙালি বুঝতে পেরেছিলেন, ভয়ংকর এক ভুল হয়ে গেছে। ওই বছরেরই মার্চ মাসে কলকাতায় এক প্রাবন্ধিক প্রশ্ন তুলেছিলেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে? তখনকার রাষ্ট্রক্ষমতাধারীরা কথাটা বুঝতে চাননি, কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে কথাটা গেঁথে গিয়েছিল। সত্যিই তো, একটা জাতির ভৌগোলিক অবস্থানটা ভাগাভাগি হয়ে গেল। কীসের ভিত্তিতে? ধর্মের ভিত্তিতে। কিন্তু ধর্ম তো একটা জাতিকে দ্বিখ–ত করে দিলো। তার সংস্কৃতি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেল। এই ভাষণে তারা যুক্ত হয়েছিলেন যাদের সঙ্গে তারা ধর্মে মুসলমান কিন্তু ভাষা আর সংস্কৃতিতে ভিন্ন এক জাতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন – ‘একেই কি বলে স্বাধীনতা? ভয় আমি পাই না। আরো মন শক্ত হয়েছে। যে-পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেই পাকিস্তানই করতে হবে, মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম।’ তখনো বঙ্গবন্ধু আশাবাদী পাকিস্তানেই বাঙালির স্বপ্নপূরণের। সেই আশাও খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি তাঁর। কারণ নতুন পাকিস্তান গড়ার রাজনৈতিক লড়াইয়ের চেয়েও উজ্জ্বল হয়ে উঠল ভাষা-আন্দোলন। ১৯৪৮-এর ১১ মার্চ তৈরি হল রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটেই জন্মলাভ হল 888sport live footballিক-নাট্যকার-কবি-888sport live chatীদের।
নাট্যজগতে পেলাম আবুল হোসেন, আবদুল কাদির, নুরুল মোমেন, সাঈদ আহমদ, আসকার ইবনে শাইখ, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ প্রমুখ নাট্যজনকে। ১৯৫২-র ভাষা-আন্দোলনই জন্ম দিয়েছিল কবর নাটক আর ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো 888sport cricket BPL rateে ফেব্রম্নয়ারি’র মত গান। শিক্ষিত উদারপন্থী বাঙালি সমাজ-সংস্কৃতির এই দ্বিধাবিভক্তি তখনো হতে দেননি। নাট্যজন আতাউর রহমান এক ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমরা ১৯৪৮-এ কলকাতা থেকে চলে এসেছি এই বঙ্গে। তখন সেস্নাগান শুনতাম, ‘লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান।’ কিন্তু আমরা আটচলিস্নশে এসেই বুঝলাম, It was a great mistake, আমাদের সাংস্কৃতিক বোধ ভিন্ন, স্বপ্ন দেখা ভিন্ন, আমরা কোটা ‘সিস্টেম’-এ পড়ে গেলাম। বুঝলাম এদের সঙ্গে আমাদের কোনোদিন মিল হবে না। তাই বিভক্ত হয়েও বহুদিন ধরে একটা উদার সাংস্কৃতিকচর্চা বজায় থেকেছে। সব মানুষের মধ্যে সেক্যুলার ভাবনার অভাব তখনো দেখিনি। আমরা রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মানিক-তারাশঙ্কর পড়তাম, কমলকুমার মজুমদারের ফরাসি সিনটেক্স, বুদ্ধদেব বসুর 888sport app download apk পত্রিকা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্য আড্ডার বিষয় ছিল। কিষাণচন্দ, সাদাত হোসেন মান্টো, মুজফফর আহমেদকে চিনি। অরবিন্দ-বিবেকানন্দকে জানি। ইকবালের গান শুনেছি। গান্ধীজি-নেতাজিকে নিয়ে আলোচনা করতাম। এসব কোনো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হয়নি। এসব চর্চা করতাম বাঙালিত্বের আকর্ষণবোধ থেকে। অন্যদিকে ১৯৫২-র ভাষা-আন্দোলনের পরেও বঙ্গবন্ধুকে কাতরকণ্ঠে বলতে হচ্ছে ১৯৫৫ সালের ২৫ আগস্ট করাচিতে পাকিস্তান গণপরিষদের সভায়, ‘স্যার, আপনি দেখবেন ওরা পূর্ব বাংলা নামের পরিবর্তে পূর্ব পাকিস্তান নাম রাখতে চায়। আমরা বহুবার দাবি জানিয়েছি যে, আপনারা এটাকে বাংলা নামে ডাকেন। ‘বাংলা’ শব্দটার একটা নিজস্ব ইতিহাস আছে, আছে এর একটা ঐতিহ্য। আপনারা এই নাম আমাদের জনগণের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরিবর্তন করতে পারেন। আপনারা যদি ওই নাম পরিবর্তন করতে চান তাহলে আমাদের বাংলায় আবার যেতে হবে এবং সেখানকার জনগণের কাছে জিজ্ঞাসা করতে হবে তারা নাম পরিবর্তনকে মেনে নেবে কিনা,’ এই ধরনের কোনো অনুরোধই তাদের কানে ঢুকছিল না। ১৯৪৮ থেকে ১৯৬২ – এক স্বৈরশাসনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করতে হয়েছে বাঙালি মানসকে। ১৯৫৮ সালে সমস্ত কিছু নিষিদ্ধ করে দিলেন আইয়ুব খান। আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছয় দফা দাবি তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধু – যার নাম ছিল ‘বাঁচার দাবি সনদ’ বাঙালির পূর্ব বাংলা স্থায়ীভাবে হয়ে গেল পূর্ব পাকিস্তান। উদার অসাম্প্রদায়িকের পাশাপাশি বিপরীত ভাবনার চোরাস্রোতও ছিল। ‘তখন সামরিক শাসনের প্রত্যেকটি শাখা-প্রশাখা শত শত হাত প্রসার করে অক্টোপাসের মত মধ্যবিত্ত উচ্চাকাঙক্ষী। সুলভ স্বাচ্ছন্দ্য শিকারি বুদ্ধিবাদীদের চরিত্রবিনাশ করতে স্বর্ণমৃগয়া ছেড়ে দিয়েছে।… তখন পশ্চিমবঙ্গের
888sport live football-সংস্কৃতির লেনদেন বন্ধ, 888sport app download bdের ছড়াছড়ি, অপাঠ্য আক্ষরিক 888sport app download apk latest versionের জন্য বিপুল অর্থ সমাগম, মঞ্চ থেকে
রবীন্দ্রনাথ-মধুসূদন তথা পশ্চিমবঙ্গীয় নাট্যকার নির্বাসিত, এদেশের নাট্যকাররা টেলিভিশনে স্বয়ম্বরপ্রাপ্ত, তখনকার সেই শূন্যতাকে ওইসব প্রগলভ রগরগে নাটকের নামে উনবিংশ শতাব্দীর নির্বাসিত মেলোড্রামা পুনরায় উদিত হল।’ ১৯৬১-তে ছায়ানট রবীন্দ্র
সংস্কৃতিকে নিয়ে গেল আন্দোলনের আঙিনায়। তখন ভারতের রবীন্দ্রনাথ নিষিদ্ধ ছিলেন, 888sport live football-সংস্কৃতির যে আনাগোনার ছবি আতাউর রহমান দেখালেন পূর্বোক্ত উদ্ধৃতিতে তা আর সর্বসমক্ষে করা যাচ্ছিল না ঠিকই, তবু এরই মধ্যে তাসের দেশ অভিনয় হচ্ছে। ড্রামা সার্কেল রক্তকরবী অভিনয় করছে। ব্যান্ড হয়ে যাওয়া বাংলা 888sport live football লুকিয়ে চর্চা করাটা থামিয়ে দিতে পারেনি স্বৈরশাসন। তবে বেশিরভাগ থিয়েটার ছিল মেলোড্রামায় আকীর্ণ। আর থিয়েটারের অবস্থানটা কী ছিল? 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (ডাকসু) নিয়মিত অভিনয় আয়োজন করত মূলত ড. শহীদুল্লাহ হলে। ওটাই ছিল একমাত্র সেক্যুলার হল। ১৯৫৬ সালে ড্রামা সার্কেল তৈরি হয়। শুধু বিনোদন নয়, নাটকে যে বৈজ্ঞানিক প্রয়োগের দরকার আছে সেটা প্রয়োগ করতে চেষ্টা করল। হতে পারে IPTA-এর একটা প্রভাব ছিল। তবে IPTA-তে যে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ড্রামা সার্কেলে তা ছিল না (পরে বিশদ আলোচনা হবে)। কিন্তু নাটক একটা জরুরি 888sport live chatমাধ্যম – এই চেতনাবোধ ছিল ড্রামা সার্কেলের কাজে। তখন অভিনয় হতো ব্রিটিশ কাউন্সিল, নটর ডেম কলেজ, আমেরিকান সেন্টারে; গোলাম মোস্তাফা, বুলবুল আহমেদ, মাসুদ আলি খান, বজলুল করিম – এঁরা সব বাংলা থিয়েটার চর্চা করছেন ওই বিরুদ্ধ রাজনীতির মধ্যে থেকেই। ষাটের দশকে সাঈদ আহমদের লেখা অ্যাবসার্ড নাটকগুলো অভিনয় হচ্ছে। কেন অ্যাবসার্ড? কারণ তখন আইয়ুব খানের স্বৈরশাসন ব্যবস্থা, ভাষা-আন্দোলনকে পাত্তা দিচ্ছে না তারা – এমন এক স্বৈরশাসনের মধ্যে সরাসরি কিছু বলা যাচ্ছে না, তাই অ্যাবসার্ড। মাইলস্টোন, কালবেলা, বহিপীর বহু অভিনীত নাটক তখন।
রাজনৈতিক লড়াইয়ের পাশাপাশি বাঙালির জাতিসত্তার সাংস্কৃতিক লড়াইয়ে বলীয়ান হয়েই ১৯৬৯-এর ৫ ডিসেম্বর ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নামটা অস্বীকার করে জন্ম নিল ‘888sport apps’ নামটি। বঙ্গবন্ধু ওইদিন ঘোষণা করলেন, ‘একসময় এদেশের বুক হইতে, মানচিত্রের পৃষ্ঠা হইতে ‘বাংলা’ কথাটির সর্বশেষ চিহ্নটুকু চিরতরে মুছিয়া ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।… একমাত্র বঙ্গোপসাগর ছাড়া আর কোথাও কোন কিছুর নামের সঙ্গে ‘বাংলা’ কথাটির অসিত্মত্ব খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই।… জনগণের পক্ষ হইতে আমি ঘোষণা করিতেছি… আজ হইতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম ‘পূর্ব পাকিস্তান’-এর পরিবর্তে শুধুমাত্র ‘888sport apps’।’
888sport appsের এই সামাজিক প্রেক্ষাপট মনে রেখেই সমগ্র নাট্যচর্চার দিকটি আলোচ্য হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রথমেই মনে রাখতে হবে, কোনোভাবেই নাট্যচর্চার উপযুক্ত পরিবেশ ছিল না আলোচ্য ১৯৪৭-১৯৭১ কালসীমায়। তবু বাঙালি সমাজ সমস্ত বিরোধিতা উপেক্ষা করেই সাংস্কৃতিক চর্চা তথা নাট্যচর্চা করেছে। সেই ছবিটি আরো একটু বিসত্মৃত করা যাক। প্রথমেই মেনে নিতে হবে এই কালসীমায় ১৯২১-এ প্রতিষ্ঠিত 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যচর্চাই প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। সলিমুল্লাহ হল, জগন্নাথ হল, 888sport app ড্রামাটিক সার্কেল – এই নাট্যচর্চার কেন্দ্রভূমি ছিল। এ-সময়েই একে একে এসেছিলেন নুরুল মোমেন (১৯০৬-৯০), সিকান্দার আবু জাফর (১৯১৯-৭৫), সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ (১৯২২-৭১), মুনীর চৌধুরী (১৯২৫-৭১), আসকার ইবনে শাইখ (১৯২৫-২০০৯), সাঈদ আহমদ (১৯৩১-২০১০), যত 888sport live footballিক নাট্যকার। এছাড়া এ-সময়ের উলেস্নখযোগ্য নাম শাহাদাত হোসেন, বজলুল করিম, আকবর উদ্দীন, শওকত ওসমান, আলী মনসুর, জিন্না হায়দার, আলাউদ্দীন আল আজাদ, কল্যাণ মিত্র প্রমুখ। এসব নাট্যকারের একটি তালিকা পরে উদ্ধৃত করছি।
১৯৫২ সালে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক ড্রামা সার্কেল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বজলুল করিম এবং মকসুদুল সালেহীনের নেতৃত্বে। শোনা যায়, এখানে অভিনয় করতে উৎসাহীর 888sport free bet এত বেশি ছিল যে, রীতিমত ইন্টারভিউ দিয়ে মুখোশ পেতে হতো। ড্রামা সার্কেলের দৃষ্টিভঙ্গি কতটা সমসাময়িক ছিল তার প্রমাণ বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে পাওয়া যায়। বজলুল করিম নিজেই বলেছেন, ‘সার্বিকভাবে নাটকের গভীর চেতন-অবচেতনের যে অনিরূপিত সুরগুলো বেজে যায় বলে মনে হয়, সময় এবং প্রতিবেশের পুষ্ট এই আমাদের কাছে। তাদের কিছু তুলে দিয়ে রেশ হিসেবে রেখে যাওয়ার প্রয়াস পাই আমাদের উপস্থাপনার মাধ্যমে।… আলোকায়ন, দৃশ্যাবলির রৈখিক ধাঁচ ও গতি, ত্রিমাত্রিক আকারসমূহ (ফরম), রং ইত্যাদির সবকিছুই যাতে মূল সুরের আবেষ্টনী সৃষ্টি করতে পারে যেভাবে আমাদের প্রচেষ্টা চালাই।’ দেশ বিভাগের পর বিক্ষিপ্তভাবে বেশ কিছু থিয়েটারের কাজ হয়েছে। পরে যার উলেস্নখ করব। কিন্তু যেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা তেমন ছিল না। ড্রামা সার্কেলই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের থিয়েটার চর্চায় আধুনিক মননকে জায়গা দিয়েছিল। বিশ্বের নানা প্রান্তের 888sport app download apk latest version নাটক, রূপান্তরকে নব্য-ভাবনায় প্রয়োগের কথা ভেবেছিলেন তাঁরা, সৈয়দ জামিল আহমেদ লিখেছেন, ‘… ড্রামা সার্কেলের তরফ থেকে আমরা লক্ষ করি কৌতূহলোদ্দীপক এবং পরীক্ষামূলক নতুন কাজ, যার মাধ্যমে তারা পূর্ব বাংলার নাট্যাঙ্গনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইউরোপীয় ভাবচেতনা ও নাট্যকৌশল প্রবর্তন করতে ব্রতী হন।’ এই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ড্রামা সার্কেলের প্রযোজনার তালিকাটা একটু দেখে নেওয়া যাক –
১. কবয়ঃ, পোয়োটেস্টারস অব ইস্পাহান নাটকের রূপান্তর, বনফুল, 888sport app কার্জন হল, ১৯৫৬।
২. কেউ কিছু বলতে পারে না, বার্নার্ড শ’র ইউ নেভার ক্যান টেলের রূপান্তর, করাচি কাটরাক হল, ১৯৫৭।
৩. মানচিত্র, আনিস চৌধুরী, করাচি কাটরাক হল, ১৯৫৭।
৪. সবাই আমার ছেলে, আর্থার মিলারের অল মাই সানসের রূপান্তর, বজলুল করিম ও মাহমুদ হাসান, 888sport app ইউসিস অডিটোরিয়াম, ১৯৫৯।
৫. বহিপীর, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্, 888sport app ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, ১৯৬২।
৬. কালবেলা, সাঈদ আহমদের দ্য থিং অবলম্বনে, 888sport app ইউসিস অডিটোরিয়াম, ১৯৬২।
৭. আর্মস অ্যান্ড দ্য ম্যান, বার্নার্ড শ, 888sport app ইউসিস অডিটোরিয়াম, ১৯৬৩।
৮. সপ্তশূরের থীবি আক্রমণ, ইমকাইলাসের সেভেন অ্যাগেনস্ট থীবস অবলম্বনে, বজলুল করিমের 888sport app download apk latest version, 888sport app ইউসিস অডিটোরিয়াম, ১৯৬৩।
ড্রামা সার্কেলের একটি 888sport app download for androidিকায় তাদের দৃষ্টিভঙ্গির সুন্দর প্রকাশ ঘটেছে। যেখানে লেখা হয়েছিল, ‘The Theatre arts is a mimesis granda combination and synthesis of elements of all forms of Arts… of the Arts of Letters of the auditory and the visual. It appeals directly both to the senses as well as the intellect. The Art Theatre is such a granda mimesis a unique form of Art.’ আর সুকুমার বিশ্বাস এই প্রয়াসের মূল্যায়ন করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘এই পর্যায়েই ক্ষীণ হলেও জীবনঘনিষ্ঠ মেধাবী 888sport live chatিত নাটকের মঞ্চায়ন দুর্লক্ষ নয়।’
প্রগতিশীল মুসলমান সমাজ বিশেষত 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক ছাত্রসমাজই তখন জাতিসত্তার লড়াইয়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে আঁকড়ে ধরেছিল। প্রগতিশীল এই ভাবনা থেকেই একে-একে গড়ে উঠেছিল অনেক সংগঠন। যেমন – প্রগতিশীল লেখক ও 888sport live chatী সংঘ (১৯৪২), গণআজাদী লীগ (১৯৪৭), গণতান্ত্রিক যুবলীগ (১৯৪৭), সংস্কৃতি সংসদ (১৯৫১) আর এর সঙ্গে যুক্ত হল ১৯৫২-র ভাষা-আন্দোলন। এই টালমাটাল সময়েও খুব উলেস্নখযোগ্য নাট্যচর্চা না হলেও
যে-ধরনের উদ্যোগগুলো নেওয়া হয়েছিল তা সত্যিই বিস্ময়কর। আর একটা তালিকা তৈরি করে দেওয়া যাক, যা আমাদের ধারণাকে আরো সুদৃঢ় করবে।
২১ জুলাই ১৯৪৬ : রাজার জন্ম দিনে, রচনা ও নির্দেশনা, মুনীর চৌধুরী, সলিমুল্লাহ হল।
১৪ মার্চ ১৯৪৭ : বিন্দুর ছেলে, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কার্জন হল, ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদ।
৩ এপ্রিল ১৯৪৭ : বিংশ শতাব্দী, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, কার্জন হল, 888sport app হল ছাত্র সংসদ।
১৪ এপ্রিল ১৯৪৮ : বিশ বছর আগে, বিধায়ক ভট্টাচার্য, কার্জন হল, ফজলুল হক ছাত্র সংসদ।
২৫ এপ্রিল ১৯৪৮ : সিঁথির সিঁদুর, জলধর চট্টোপাধ্যায়, কার্জন হল, 888sport app হল সংসদ।
১-২ জুলাই ১৯৪৮ : কালিন্দী, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, কার্জন হল, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।
৪-৫ ফেব্রম্নয়ারি ১৯৪৯ : ভোলামাস্টার অয়মকান্ত বক্সী, উয়ারীপাড়া মঞ্চ, উয়ারী ইয়ং ড্রামাটিক অ্যাসোসিয়েশন।
২২ ফেব্রম্নয়ারি ১৯৪৯ : দ্য ট্রাজিক্যাল হিস্ট্রি অব ড. ফাউস্ট, কার্জন হল, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।
৪ এপ্রিল ১৯৪৯ : টিপু সুলতান, মহেন্দ্র গুপ্ত, কলেজমঞ্চ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্র সংসদ।
১৪ আগস্ট ১৯৪৯ : আজাদীর পর, মহাম্মদ সোলায়মান, 888sport app প্রগতি সংঘ।
১৯৪৯ : সিরাজের স্বপ্ন, সলিমুল্লাহ হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম ছাত্র সংসদ।
১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ : ইউরেকা, সৈয়দ মকসুদ আলী, কার্জন হল, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।
২০ ডিসেম্বর ১৯৪৯ : সার্বজনীন শোকসভা, সুশীলচন্দ্র দাস, সলিমুল্লাহ হল, সলিমুল্লাহ ছাত্র সংসদ।
এরকম দীর্ঘ একটি তালিকা দেওয়া হল এই কারণে, দুই বাংলা বিভক্ত হওয়ার পরেও নাট্যচর্চার জায়গাটিতে কোনো ভেদাভেদ তখনো তৈরি হয়নি। এই তালিকা আরো দীর্ঘ করা যায়, কেবল উলিস্নখিত কয়েকটি প্রযোজনার কথাই বলা হলো, যার সময়কাল ১৯৪৭-৫১। এখানে উলেস্নখযোগ্যভাবে পরিচালক হিসেবে পাচ্ছি মুনীর চৌধুরী, নুরুল মোমেন, আসকার ইবনে শাইখ, কেশবচন্দ মুখোপাধ্যায়, হাবিবুল হক, আশরাফউজ্জামানের মত পরিচালকের নাম। সংবাদমাধ্যম এই চর্চাকে যথেষ্ট পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। বস্তুত সেই নিরিখেই এই তালিকা প্রস্ত্তত সম্ভব হল। কয়েকটি সংবাদপত্র 888sport world cup rateের দিকে চোখ রাখা যেতে পারে।
গত ১০ই এপ্রিল সোমবার ও ১১ই এপ্রিল মঙ্গলবার (১৯৫০) রাত্রি ৮টায় স্থানীয় কার্জন হলে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী সংসদের উদ্যোগে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের শেষরক্ষা নাটক অভিনীত হয়। পরিচালনা করেন আশরাফউজ্জামান, ইন্দুমতীর ভূমিকায় বাহাউদ্দীন আহমদ চৌধুরী, গদাইয়ের ভূমিকায় সাঈদ আহমদ, শিবচরণের ভূমিকায় রফিকুল ইসলাম এবং চন্দ্রকান্তির ভূমিকায় মুজিবুর রহমান খান প্রশংসনীয় অভিনয় করেন।
ওই একই বছরে যুগান্তরে একটি 888sport world cup rateে লেখা হয়,
গত ৪ঠা জুন যশোর ও ফরিদপুর জেলার বন্যাপীড়িতদের সাহায্যার্থে 888sport app মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডাক্তার ক্লাবের উদ্যোগে শরৎচন্দ্রের বিজয়া নাটক অভিনীত হয়েছে। পূর্ববঙ্গের গভর্নর ফিরোজ খাঁ নুন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
কতিপয় মহিলাও নাট্যাভিনয়ে বিশেষ ভূমিকায় অংশগ্রহণ করেন, নাটক শুরু হওয়ার পূর্বে মিস্ লিলি খানের সাপুড়ে নৃত্য দর্শকদের মুগ্ধ করে। বিজয়ার ভূমিকায় মিসেস নূরজাহান মুর্শেদ, নরেনের ভূমিকায় মুনীর চৌধুরী, রাসবিহারীর ভূমিকায় ক্যাপ্টেন আর.আই. চৌধুরী, দয়ালের ভূমিকায় ডা. কে.এস. হোসেন এবং মালিনীর ভূমিকায় মিস রাজীয়া খানের অভিনয় নিখুঁত হয়। নাটকটি পরিচালনা করেন হাবিবুল হক।
১৯৪৭ থেকে ১৯৫৭ পর্যন্ত সময়কালে এ-ধরনের নাট্যচর্চায় বিশেষভাবে লক্ষণীয়, প্রায় সমস্ত নাটকই ‘সামাজিক পেস্ন’ বলতে যা বোঝায় তারই বিক্ষিপ্ত চর্চা হয়েছে আর অতি নাটকীয় সব নাটক তার মধ্যে ধারাবাহিকতা রয়েছে একমাত্র 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের। থিয়েটার চর্চায় সেই সময়ের উত্তাল পূর্ব পাকিস্তানের চিত্র একেবারেই অনুপস্থিত। খুবই বিক্ষিপ্ত কয়েকটি নামই পাই আমরা। ১৯৫২-র কবর ছাড়াও নুরুল মোমেনের আমরা সবাই ভাই ভাই, নেমেসিস, আসকার ইবনে শাইখের বিরোধ ইত্যাদি সেই সময়ের ক্ষুব্ধ বাংলায় সামান্য প্রদীপের মত জ্বলছিল এই থিয়েটার চর্চা।
কেউ কেউ ১৯৫০ সাল থেকেই যথার্থ নাটকাভিনয়ের ইতিহাস সূচিত হয় বলে অভিহিত করেছেন। গয়লা মামাদের মত আরো কেউ কেউ একথা বলেছেন। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ১৯৫২-র ভাষা-আন্দোলন নাট্যভাষাকে এবং অভিনয় ধারাকে নতুন পথে নিয়ে গিয়েছিল। এ-সময় মূলত শিক্ষিত বাঙালির আত্মানুসন্ধানের সময়, ভাষা-আন্দোলন নিছক আর পাঁচটি আন্দোলনের মত ছিল না। এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের প্রস্ত্ততি বললেও অত্যুক্তি হবে না। এই ভাষা-আন্দোলনের পটভূমিতেই রচিত হয়েছিল কবর নাটক। মুনীর চৌধুরী নিজেই কবর রচনার প্রেক্ষাপট জানাতে গিয়ে বলেছেন, ‘রণেশদাই (দাশগুপ্ত) গোপনে চিঠি লিখেছিলেন আমাকে। সামনে 888sport cricket BPL rateে ফেব্রম্নয়ারি একটি নাটক লিখে দিতে হবে। জেলখানাতে অভিনীত হবে, রণেশদার হুকুম। আমাকে লিখতেই হল নাটক, সেটি ‘কবর’… আমি নাটকটি দেখতে পাইনি। কারণ আমি ছিলাম অন্য কক্ষে। শুনেছিলাম খুব ভাল হয়েছে, আমিও ব্যক্তিগতভাবে ওটাকে আমার এখন পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ রচনা মনে করি। আবার সেই সঙ্গে বিতর্কিত লেখাও বলতে পারি।’ বন্দি হিসেবে 888sport app সেন্ট্রাল জেলে বসে লেখা হয়েছিল নাটকটি আর একই জেলখানার অন্য সেলে হারিকেনের আলোয় অভিনীত হয় এই নাটক ১৯৫৩ সালে। নাটকটি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কবীর চৌধুরী বলেছেন, ‘একটা বিশেষ বাস্তব ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠলেও গভীর অনুভূতিময় প্রকাশের জন্য বিষয়বস্তুর উপস্থাপনায় নিরীক্ষাধর্মী অভিব্যক্তিবাদী আঙ্গিকের গুণে এবং আবেদন বিস্তারী, সংলাপের ঔজ্জ্বল্য ‘কবর’ বিশেষকে অতিক্রম করে সর্বজনীনতা অর্জন করেছে এবং আমাদের নাটকের ভুবনে একটা পালাবদলকারী দৃষ্টি উন্মোচক ভূমিকা পালন করেছে।’ এই শেষ বাক্যটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। কবরের সংলাপ সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ নতুন –
এ লাশের গন্ধ অন্যরকম। ওষুধের, গ্যাসের, বারুদের গন্ধ। এ-মুর্দা দাফন করা যাবে না। বিশ, পঁচিশ, ত্রিশ হতে যত নীচেই চাপা দাও না কেন, এ-মুর্দা থাকবে না। কবর ভেঙে বেরিয়ে আসবে। উঠে আসবে।
মুনীর চৌধুরীর কবর তৃতীয় নাটক, তার আগে তিনি লিখেছেন, রক্তাক্ত প্রান্তর, চিঠি – প্রথমটি প্রকাশিত হয় ১৯৬২-তে এবং দ্বিতীয়টি ১৯৬৬-এ। তাঁর আরো দুটি নাটক হলো মানুষ ও নষ্ট ছেলে। মানুষ ১৯৪৭, নষ্ট ছেলে ১৯৫০ এবং কবর ১৯৫৩-তে রচিত। শেষের তিনটি নাটক একটি সংকলনে প্রকাশিত হয়েছিল। রক্তাক্ত প্রান্তর রচনাকালে ইতিহাস আশ্রিত হয়ে নাটক রচনার যে প্রচলন ছিল মুনীর চৌধুরী তার বাইরে যাননি। তবে প্রচারমুখীনতাকে পরিহার করেছিলেন। তিনি নিজে এ-বিষয়ে খুবই সচেতন ছিলেন বলে লিখেছেন, ‘যুদ্ধের ইতিহাস আমার নাটকের উপকরণ মাত্র, অনুপ্রেরণা নয়। ইতিহাসের এক বিশেষ উপলব্ধি মানবভাগ্যকে আমার কল্পনায় যে বিশিষ্ট তাৎপর্যে উদ্ভাসিত করে তোলে নাটকে আমি তাকেই প্রাণদান করতে চেষ্টা করেছি। আমার নাটকের পাত্রপাত্রীরা এক বিষময় পরিবেশের শিকার। নিজেদের পরিণামের জন্য তারা সকলেই অংশত দায়ী হলেও তাদের বেশিরভাগের জীবনের রূঢ়তম আঘাত যুদ্ধের সূত্রেই প্রাপ্ত।’ তাঁর রচিত অন্য আর একটি নাটক হলো দন্তকারণ্য। কবর এবং দন্তকারণ্য নাটক দুটি সম্পর্কে নাট্যকার স্বয়ং জানিয়েছিলেন, ‘যদিও কবর এবং দন্তকারণ্য আমার নাটকীয় প্রয়োগের দুই বিপরীত প্রকৃতির প্রয়াস, উভয়ের মধ্যে আমার স্বভাব ও দৃষ্টির ঐক্য বিদ্যমান, তবে কবর ক্ষোভপূর্ণ, অভিযোগাশ্রয়ী এবং রক্তাক্ত প্রান্তর, দন্তকারণ্য কৌতুকাবহ অন্তরাশ্রয়ী এবং অদ্ভুত রসাত্মক। কবরের রচনাকাল ঊনিশ শো সাতচলিস্নশ সংলগ্ন পাঁচ-সাত বছর। দন্তকারণ্যের ঊনিশ শ ষাট-পঁয়ষট্টি।’ কিন্তু দুটি নাটক একসঙ্গে প্রকাশনার সময় তিনি আশা করেছিলেন, মূল্যায়নের জন্য দুটি নাটককে একত্রে গ্রহণ করলে তার প্রতি সুবিচার হবে। নীলিমা ইব্রাহিম নাট্যকারের এই অভিমতকে মেনে নিতে পারেননি। তিনি দুটি নাটককে সম্পূর্ণ পৃথক সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনার পক্ষপাতী ছিলেন। কালের বিচারে দন্তকারণ্য শুধু উলেস্নখ করার মত একটি নাম। কবরের ইতিহাস তার নেই। যেমন – মুনীর চৌধুরীর আরো দু-একটি 888sport app download apk latest version নাটকের নাম কেবল নাট্যতালিকা সম্পূর্ণতার জন্য উলেস্নখ করছি মাত্র। গলসওয়ার্দির দি সিলভার বকসের 888sport app download apk latest version রচনার কৌটো, বার্নার্ড শ’র ইউ নেভার ক্যান টেলের 888sport app download apk latest version মুখরা রমণী বশীকরণ, আর একটি নাটক লিখেছিলেন ছাত্র বয়সে রাজার জন্ম দিনে; কিন্তু এগুলো কোনোটিই মুনীর চৌধুরীকে ইতিহাসের স্থায়িত্ব দেয়নি, কবর সেই স্থান দিয়েছে।
একই কথা বলা যায় নুরুল মোমেন এবং তাঁর নেমেসিস নাটক সম্পর্কে। বিশ্বজিৎ ঘোষ লিখেছেন, ‘বিষয়বস্তু, জীবনদৃষ্টি, গঠনশৈলী এবং উপস্থাপনা রীতির পরীক্ষায়, …এবং সিদ্ধিতে নুরুল মোমেনের অবদান বাংলা নাটকের ধারায় বিশিষ্ট এবং ব্যতিক্রম ধর্ম চিহ্নিত। মাত্র একটি নাটক তাঁকে এনে দিয়েছে প্রাতিস্বিক-সৃষ্টি-ক্ষম-প্রজ্ঞার অভিধা। বাংলা নাটকের প্রথাস্থবির ধারায় মাত্র একটি নাটক নিয়ে এসেছে আধুনিক পাশ্চাত্য নাটকের স্বাদ-সৌরভ-স্বাধর্ম্য।’ তবু আমরা ইতিহাসের সঙ্গে তাঁর অন্য রচনাগুলির দিকেও নজর রাখতে আগ্রহী। রূপান্তর (১৯৪৮), যদি এমন হত (১৯৬০), আলোছায়া (১৯৬২), নয়া খান্দান (বাংলা ১৩৬৯), শতকরা আশি (১৯৬৭), রূপকথা, হোসেন সফদরের উইল, যেমন ইচ্ছা তেমন ১৯৭০ সালে প্রকাশিত হয় সোসাইটি ফর পাকিস্তান স্টাডিজ থেকে। শেষোক্ত চারটি ‘নাটবই’ উদ্দেশ্যমূলক রচনা। সুকুমার বিশ্বাসের মতে, ‘বাঙলাদেশে শতকরা আশিজনই অশিক্ষিত। নুরুল মোমেন সেই মূক মুখে ভাষা দিতে চেয়েছেন। জ্বালাতে চেয়েছেন জ্ঞানের আলো। শিক্ষার আলো জ্বালাতে নাট্যকার যত্রতত্র উপদেশ বিতরণ করেছেন। ফলে নাটকের স্বাভাবিক গতি হয়েছে রুদ্ধ।’
নেমেসিসের পর তাঁর দ্বিতীয় নাটক রূপান্তর প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজার শারদীয় 888sport free betয়। মোটামুটিভাবে ভালো নাটক বলা যেতে পারে। এই ভালোর তালিকায় আর একটি নাম আলোছায়া। নাটকটি পূর্ব পাকিস্তান জাতীয় পুনর্গঠন সংস্থার উদ্যোগে লেখা হয়েছিল এবং বুলবুল ললিতকলা একাডেমির উদ্যোগে ৪-৫ জুলাই ১৯৬২-তে অভিনয় হয়েছিল। অংশগ্রহণ করেছিলেন নাট্য শাখার প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রী আর একাডেমির কিছু মানুষ। এই দুটি উলেস্নখ ছাড়া বাকি নাটকগুলো একেবারেই ফরমায়েশি। কেবল নেমেসিসের নাট্যকারের নাটক হিসেবে উলেস্নখ করা যায় মাত্র। আর কোনো গৌরব নেই।
এই সময়কালের আর একজন উলেস্নখযোগ্য নাট্যকার সিকান্দার আবু জাফর। তাঁর রচিত নাটকগুলো হলো মাকড়সা (১৩৬৬ বঙ্গাব্দ), শকুন্ত উপাখ্যান (১৩৬৮ বঙ্গাব্দ), সিরাজউদ্দৌলা (১৩৭২ বঙ্গাব্দ), মহাকবি আলাওল (১৩৭২ বঙ্গাব্দ)। মাকড়সা একটি রূপক নাটক। 888sport appsের ব্যর্থ স্বপ্নের প্রতীক মাকড়সা। মঞ্চ-নির্দেশনাতেই এই প্রতীকী বিষয়টি ফুটে উঠেছে।
‘আদালতের কামরায় কৌতূহলী জনতা মামলার শুনানির জন্য উৎকণ্ঠিত এবং উত্তেজিত। একদিকে পুলিশের হেফাজতে দাঁড়িয়ে আছে আসামি, বিচিত্র বেশবাস, নরখাদকের ক্রূর দৃষ্টি তার চোখে। সারামুখে ছড়িয়ে আছে অশস্নীল উপেক্ষার হাসি। অন্যদিকে পাঁচজন সাক্ষী এক জায়গায় জড় হয়ে আছে – সবারই উন্মাদের মত চেহারা। আচরণও অসংযত, মাঝে মাঝে তাদের এক-একজন হঠাৎ চিৎকার করে উঠছে, ‘আমার স্বপ্ন ফিরিয়ে দাও’, ‘চোর চোর আমার স্বপ্ন চুরি করে নিয়ে গেছে’ ইত্যাদি।’ এই ছোট নাটকটির মধ্য দিয়ে সেই সময়কে অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্তভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন নাট্যকার। নাটকটি সম্পর্কে আবু জাফর শামসুদ্দীন লিখেছিলেন, ‘দরিদ্র জনসাধারণের সমস্ত আশা-আকাঙক্ষা পরিপূরণের পক্ষে প্রধান অন্তরায়। প্রচলিত রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার প্রতি ঘৃণা উৎপাদন এবং এ শত্রম্নকে নির্মূল করার জন্যে জনসাধারণকে সংঘবদ্ধ হয়ে আক্রমণ করার আহবান।’
সিকান্দার আবু জাফরের আর একটি রূপক নাটক শকুন্ত উপাখ্যান। সাতটি দৃশ্য-বিভাজনে এ-নাটকের আঙ্গিক অভিনবত্ব অনস্বীকার্য। নাটকের শুরুতেই ঘোষকের ঘোষণাটি বেশ অভিনব – ‘888sport app download for androidাতীত কালের কাহিনী ধরে নেওয়া যাচ্ছে যে জীবজন্তু, পশু-পাখি তখন কথা বলতে পারত। চিমত্মায়, জ্ঞানে, বিচারবুদ্ধিতে তারা ছিল আজকের মানুষের মতই উন্নত। তাদের নানা দেশ ছিল, শাসক ছিল, শাসন পদ্ধতি ছিল, মন্ত্রী ছিল, উপদেষ্টা ছিল, আর ছিল বীরত্ব ও দেশপ্রেম। সে-যুগেও কোনো না কোনো কারণে যে-কোনো দুই দেশের ভিতরে লড়াই বেধে যেত। আমাদের এ নাটক ময়ূর ও রাজহংসের অধিকারভুক্ত দুটি স্বতন্ত্র দেশের মর্মান্তিক যুদ্ধ কাহিনী।’ মাকড়সা ছিল দৃঢ়প্রত্যয় বাঙালির রূপক আর এখানে রূপকের মাধ্যমে শান্তি কামনার ছবি। যুদ্ধবাজদের উসকানিতে জাতির মর্যাদা রক্ষার অজুহাতে যে কতবড় যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে এবং তার ভয়াবহ পরিণতিই তুলে ধরা হয়েছে এখানে। দুটি নাটকই এখনো পর্যন্ত উলেস্নখের দাবিদার। 888sport appsের নাট্য-সম্ভাবনার ব্যতিক্রমী নাটক।
তাঁর আরো দুটি উলেস্নখযোগ্য নাটক মহাকবি আলাওল এবং সিরাজউদ্দৌলা। আলাওল সম্পর্কে নাট্যকারের অভিমত, ‘কবি ও সংগীতজ্ঞ হিসেবে তিনি অসাধারণ শক্তিধর 888sport live chatী ছিলেন। সেই সত্যকে জয়যুক্ত এবং মহিমান্বিত করা এই নাটক রচনার উদ্দেশ্য।’ এই উদ্দেশ্য সফল করার জন্য তিনি অনেকটাই কল্পনাপ্রবণ হয়েছেন। তার কারণ হিসেবে নিজেই বলেছেন, ‘মহাকবি আলাউলের (ওই বানান নাট্যকার ব্যবহার করেছেন) জীবন কাহিনী প্রামাণ্য ইতিহাসে লিপিবদ্ধ নয়। তাঁর জীবনের যে কয়টি ঘটনা জনশ্রম্নতি হিসেবে প্রচলিত সেগুলিও ঐতিহাসিক প্রমাণনির্ভর। তর্কাতীত তথ্য হিসেবে প্রতিপন্ন হয়েছে বলে আমার জানা নেই।’ তাই নাট্যকার আলাওলকে কবি ও সংগীতকার হিসেবে যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। সময় উপযোগী সংগীতের ব্যবহার এই নাটকটিকে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। শুধু মঞ্চসফল নয়, সুখপাঠ্য নাটক হিসেবে মহাকবি আলাওল বিশেষভাবে উলেস্নখযোগ্য।
ইংরেজ শাসনাঞ্চলে নবাব সিরাজ সম্পর্কে নানা বিভ্রান্তিমূলক আলোচনা চালু ছিল। সেই কলঙ্ক মোচনে প্রধান উদ্যোগী হন অক্ষয়কুমার মৈত্র। নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ, শচীন সেনগুপ্ত সমান উদ্যোগী হয়েছিলেন। সেই পথ অনুসরণ করে সিকান্দার আবু জাফর সিরাজকে নিয়ে নাটক রচনায় উদ্যোগী হয়েছিলেন। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘জাতীয় চেতনা নূতন খাতে প্রবাহিত হয়েছে, কাজেই নতুন মূল্যবোধের তাগিদে ইতিহাসের বিভ্রান্তি এড়িয়ে ঐতিহ্য এবং প্রেরণার উৎস হিসেবে সিরাজউদ্দৌলাকে আমি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে আবিষ্কারের চেষ্টা করেছি। একান্তভাবে প্রকৃত ইতিহাসের কাছাকাছি থেকে এবং প্রতি পদক্ষেপে ইতিহাসকে অনুসরণ করে আমি সিরাজউদ্দৌলার জীবননাট্য পুনর্নির্মাণ করেছি।’ নাট্যকার সিরাজের শাসনকালের চিত্র তুলে ধরেছেন নতুনভাবে। বস্তুত আলাওল এবং সিরাজ চরিত্রের সমকালীন পুনর্নির্মাণই ছিল নাট্যকারের উদ্দেশ্য। মাত্র চারটি নাটক লিখে আলোচ্য সময়ে
পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছিলেন এই কবি এবং নাট্যকার।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ মূলত কথা888sport live footballিক। কিন্তু তাঁর চারটি নাটক বিষয়-ভাবনায় এবং 888sport live chat প্রকরণে আধুনিক নাট্য888sport live footballেরও অন্যতম পথিকৃৎ করে তুলেছে তাঁকে। বহু অভিনীত এই চারটি নাটক হল – সুড়ঙ্গ (১৯৫৫), বহিপীর (১৯৫৭), তরফঙ্গি (১৯৬২), উজানে মৃত্যু (১৯৬৩)। এসব নাটকে পাওয়া যাবে অসিত্মত্ববাদী রীতি প্রভাবিত নাট্যজনকে, কখনো বা এক্সপ্রেশনিস্ট বা অ্যাবসার্ড নাট্যকার হিসেবেও তাঁকে সহজেই আখ্যা দেওয়া যাবে। এর মধ্যে বহিপীর সবচেয়ে বেশি আলোচিত। প্রাবন্ধিক জয়নুদ্দীন নাটকটির প্রকাশকাল বলেছেন ১৯৫৭। পরে ওরিয়েন্ট লংম্যান থেকে ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয়। প্রথম অভিনয় হয় ১৯৫৫-তে পি.ই.এন. ক্লাবের উদ্যোগে 888sport appয় আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলন আয়োজিত একটি নাট্য প্রতিযোগিতায়। নীলিমা ইব্রাহিমের মতে, মানুষের অবচেতন মনের সংকীর্ণ পরিসরে যে বৃহৎ রহস্যময় জগৎ আছে, যার তত্ত্ব-ব্যাখ্যা যুক্তি অন্তহীন, ওয়ালীউল্লাহ্ সেই পরিসরকে ধরার চেষ্টা করেছেন তাঁর নাটকে। তাই বহিপীর নাটকের মূল দ্বন্দ্বের বীজ কোনো ব্যক্তি-চরিত্রের গভীরে নেই, রয়েছে আরো বড় সামাজিক পরিসরে। সৈয়দ আবুল মকসুদের মতে, পীরের বইয়ের ভাষায় কথা বলাটা পরজীবী ও ভ- – এই শ্রেণিটির স্বভাবের কৃত্রিমতার দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করে; দ্বিতীয়ত, বজরা যা জমিদারের চলমান প্রাসাদ, পুরনো মূল্যবোধের আশ্রয়ের প্রতীক যদি হয় তা হলে সেই বজরা থেকে বেরিয়ে আসে নবীন-নবীনা। নায়ক-নায়িকা চলে যেতে থাকে, তা হয়ে ওঠে পুরনো থেকে পলায়ন, প্রাচীনের সংকীর্ণতা থেকে জনতার বিশালতায় মিশে যাওয়া। তবে মঞ্চসফল এই নাটকটির মধ্যে অনেকেই স্ববিরোধী মনোভাব খুঁজে পেয়েছেন। তাদের মতে, বহিপীর নাটকে অসিত্মত্ববাদী চেতনা বলে কিছু নেই, বরং এর বক্তব্য বিষয় বাহ্য ও বলিষ্ঠ মনে হলেও মূলত প্রতিক্রিয়াশীল। ভ-পীর দরবেশকে ওয়ালীউল্লাহ্ শেষ পর্যন্ত ভালোভাবেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর এই পক্ষপাতিত্ব মূলত চিমত্মার অস্বচ্ছতার প্রমাণ। যাই হোক, পক্ষে-বিপক্ষের এই মতামত মেনে নিলেও মানতেই হবে পটভূমি রচনা, কাহিনি, কাহিনির গতি-প্রকৃতি ও পরিণতি চরিত্র রচনার দিক দিয়ে বিচার করলে বহিপীর একটি মঞ্চসফল নাটক।
দ্বিতীয় নাটক তরঙ্গভঙ্গ নাটকটির ভূমিকায় লিখেছেন, ‘একটি বিচারকের কাহিনী নামে ত্রৈমাসিক 888sport live football পত্রিকা সংলাপে দুই কিসিত্মতে প্রকাশিত হয়েছিল। নাম পরিবর্তন ব্যতীত এখানে সেখানে সামান্য যোগ-বিয়োগও করেছি।’ এই নাটকটিকে পাকিস্তান আমলের এক অসাধারণ সৃষ্টি বলে মেনে নেওয়া হয়েছে। অনেকেই বলেন, ওয়ালীউল্লাহর ১৯৬৪-তে লিখিত চাঁদের অমাবস্যা 888sport alternative linkের বিশেস্নষণধর্মী মানসিকতার রীতির পূর্ববর্তী পদচারণা শোনা গেছে তরঙ্গভঙ্গ নাটকে। এই নাটকের চরিত্রগুলো দেশ-কাল সচেতন হলেও সমকালধর্মী। তবে সংলাপগুলো দীর্ঘ বলে নাটকের গতি মন্থর হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, বলা হয়ে থাকে, আপামর দর্শকদের জন্য এ নাটক নয়, রসবোদ্ধার জন্য নির্মিত। তবে মুহম্মদ আবদুল হাই বা সৈয়দ আলী আহসানের মত কেউ কেউ লিখেছেন, মুনীর চৌধুরীর কবর কিংবা সাঈদ আহমদের কালবেলা নাটকের সংলাপ 888sport app download for androidে রেখেও বলতে হয়, ওয়ালীউল্লাহই হচ্ছেন তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা। আর তার জ্বলন্ত উদাহরণ তরঙ্গভঙ্গ নাটক। শুধু তাই নয়, এই নাটকে তিনি সময়ের প্রবাহকে অপস্রিয়মাণ না ভেবে জীবন সত্যের ভিত্তিভূমি হিসেবে পরীক্ষা করেছেন। চরিত্রগুলোর মনোলোক যেমনভাবে প্রকাশিত, সামাজিক জীবনও সমানভাবে ফুটে উঠেছে। সুকুমার বিশ্বাস মনে করেন, তরঙ্গভঙ্গ শুধু 888sport appsের নয়, সমগ্র বাংলা নাট্যজগতের একটি ব্যতিক্রমী নাটক। পরবর্তীকালে বাদল সরকারের এবং ইন্দ্রজিৎ বা বাকি ইতিহাসের মত নাটকের সঙ্গে একসঙ্গে উচ্চারিত হয়েছে। তরঙ্গভঙ্গের সংলাপ পড়লেই এই সত্য অনুভব করা যাবে।
‘তারপর সূর্য ডুবে যায়, আকাশে উঠে চাঁদ, ধানের ক্ষেতে ঝরে যায় হাওয়া, বিশ্বভূম-লে আপন আপন চক্রপথে ঘুরতে থাকে নীরবে। আবার চাঁদ ডুবে যায়, পূর্ব আকাশে উঠে সূর্য, হাওয়া জাগে বলে ধানক্ষেতে আন্দোলন হয়। সহস্র চক্রপথে বিশ্বভূম-লের গতি শস্নথ হয় না।’ কিন্তু 888sport appsের পরবর্তী নাট্যচর্চায় এই ধারা বহন করতে পারল না কেউ।
ওয়ালীউল্লাহর আর একটি নাটক উজানে মৃত্যু। গ্রামীণ সমাজ এই নাটকের পটভূমি এবং অন্য দুটি নাটকের মতই অ্যাবসার্ডধর্মী উজানে মৃত্যু। নৌকার বাহক, সাদা আর কালো পোশাকের প্রতীকধর্মী দুটি চরিত্র। নৌবাহক মানবতার প্রতীক, সুন্দরের প্রতীক সাদা পোশাক আর কালো পোশাক অন্য চরিত্র দুটিকে ভয় পায়, উজানযাত্রায় ভীত সে। জয়নুদ্দীনের মতে, নাটকটিতে ইনার রিয়েলিটি ও অভিব্যক্তিবাদের প্রকাশ ঘটেছে। বিশ শতকের আধুনিক মানুষের মধ্যে তিনি খুঁজে পেয়েছেন নিঃসঙ্গতা, হতাশা, যন্ত্রণাবোধকে ধারণ করে বেঁচে থাকা। কিন্তু কখনো-কখনো জীবন এত ক্লান্ত হয়ে পড়ে যে তাকে বহন করে নেওয়া যায় না। তখন তার গন্তব্য উজানযাত্রায়। সাঈদ-উর-রহমান যথার্থই মন্তব্য করেছেন, ‘ওয়ালীউল্লাহের ‘উজানে মৃত্যু’ নাটকের কেন্দ্রীয় বিষয় আধুনিক জীবনের সর্বাত্মক অর্থহীনতা, শূন্যতা, ক্লান্তি, নৈরাশ্য এবং অন্তহীন প্রতীক্ষা। এখানেও তিনি অ্যাবসার্ড আবহে চেতন নয়, অবচেতনের জগতে সন্ধানী আলো ফেলেছেন এবং তুলে এনেছেন শুভ্রতা কল্যাণের সঙ্গে মলিনতা ও অকল্যাণের দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত মানুষের অন্তর্জগতের স্তরীভূত চিত্র।’
অপর একটি নাটক সুড়ঙ্গ ১৯৫৫ সালে দৈনিক সংবাদ পত্রিকার আজাদী 888sport free betয় প্রকাশিত হয় এবং ১৯৬৪-তে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত। ভূমিকায় নাট্যকার লিখেছেন, ‘নাটিকাটি প্রধানত কিশোর-কিশোরীদের জন্যে লিখিত। তবে তরুণমনা বয়স্করা – যারা সম্ভব-অসম্ভব নিয়ে তেমন মাথা ঘামায় না, তারা এটি পড়ে বা দেখে আমোদ বোধ করবেন আশা রাখি।’ নাট্যকার মানুষের মনের লোভ-লালসাকে রূপকের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। প্রধান চরিত্র রাবেয়া যার বয়স পনেরো-ষোলো, তাকে নিয়েই গড়ে উঠেছে এই নাটক। রহস্যধর্মী কাহিনির মধ্য দিয়ে নাট্যকার অন্য তিনটি নাটকের মত এখানেও অ্যাবসার্ডধর্মী হয়ে উঠেছেন।
পূর্বেই বলা হয়েছে, তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি এত জটিল ছিল যে, থিয়েটার চর্চার অ্যাবসার্ড রূপকের আবরণ নেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। থিয়েটারের সমাজ দর্পণ অন্য ধর্মের আড়ালে তৎকালীন সমাজকেই কাটাছেঁড়া করেছে। ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর
কথা888sport live footballে যেমন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্রতী ছিলেন, আলোচ্য চারটি নাটকেও তার পরিচয় স্পষ্ট। ‘ব্যক্তিক অবচেতন ভাবনাতরঙ্গ, অসিত্মত্ব অভিশঙ্কা, ভঙ্গুরতা, বিভঙ্গতা উপস্থাপনে তাঁর নাটক চতুষ্টয়ে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সিদ্ধিতে শিখর বিন্দু-স্পর্শী, প্রকরণশৈলীর আধুনিকতা শুদ্ধ, 888sport live chat অভিযাত্রায় বিশ্ব প্রসারিত।’ বিশ্বজিৎ ঘোষের এই অভিমত একইভাবে প্রযোজ্য সাঈদ আহমদের নাটকগুলোর ক্ষেত্রে। সাঈদ আহমদের বিচরণভূমি ছিল সারাবিশ্ব। পেশাগত কারণে
বিশ্বময় যাতায়াতের ফলে 888sport live chat-888sport live football-সংগীত-চিত্রকলাকে প্রাণভরে গ্রহণ করেছেন। তাই তাঁর রচনায় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের প্রভাব এবং আত্তীকরণ লক্ষণীয়। তাঁর লেখা প্রথম নাটক আমি না (Not I) ১৯৫৭-এ লিখিত। বিষয় হিসেবে ছিল বাঙালির অধিকার আর পাকিস্তান কর্তৃক বাঙালি অবদমন, কিন্তু নাটকটির অ্যাবসার্ডধর্মী গঠন এতই জটিল করে তুলেছিল যে, সবার বোধগম্যের বাইরে ছিল। তাই নিজেই একদিন ছিঁড়ে ফেলে দিলেন নাটকটি। নতুন করে লেখার ইচ্ছে থাকলেও লেখা হয়ে ওঠেনি পুনরায়। পরবর্তীকালে যুক্তিযুক্ত বিষয় অবলম্বনে লেখেন প্রতিদিন একদিন এবং বাংলার শেষ নবাবের শোচনীয় পরিণতি নিয়ে লেখেন শেষ নবাব। কিন্তু সাঈদ আহমদ দিক পরিবর্তনকারী নাট্যকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন অন্য তিনটি নাটকের জন্য – কালবেলা, মাইলপোস্ট ও তৃষ্ণায়। এই তিনটি অ্যাবসার্ড নাটক অত্যন্ত মঞ্চসফল এবং বাংলা নাট্য 888sport live footballের অন্যতম সংযোজন। কালবেলা নাটকের পটভূমি নিয়ে নাট্যকার লিখেছিলেন, ‘আমার ‘কালবেলা’ নাটকটি ১৯৬১ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পটভূমিকায় রচিত। এটি লিখতে এক বছর সময় লেগেছিল আমার। দেড় দশক আগে কালবেলা ইংরেজি ভাষায় লিখি। সেকালে কবিবন্ধু শামসুর রাহমান নাটকটির একটি অনূদিত রূপ প্রকাশের জন্য আমাকে অনুপ্রাণিত করেন। তাঁর উদ্যোগে এবং আমার সুহৃদ বজলুল করিমের অনেক প্রহরের শ্রমের ফল দ্য সিং ভাষান্তরিত হয় কালবেলায়।’ এই নাটকটিতে অসিত্মত্ববাদী এবং অধিবাস্তববাদী ভাবধারার যে প্রকাশ ঘটেছিল, তার সঙ্গে এতদঞ্চলের এক রকম বলতে গেলে প্রথম পরিচয় ঘটে ১৯৬২ সালে মঞ্চস্থ সাঈদ আহমদের কালবেলা নাটকের মাধ্যমে। কালবেলা নাটকটির স্বকীয়তা এবং বৈশিষ্ট্য, থিয়েটার আবেদনে, ওয়েটিং ফর গডো নাটকের মত অন্তের স্পর্শগ্রাসী নাসিত্মর প্রকৃতি বা রূপের দিকে সম্মোহিত না করেও অপেক্ষার মত নিষ্ক্রিয়তাকে ক্রিয়াকর্মে রূপান্তর ঘটানোকে এবং সর্বোপরি ইতিহাসপুষ্ট প্রখরভাবে সচেতন সত্তা গীতিময় প্রকাশে। এই নাটকটি প্রথম অভিনীত হয়েছিল ১৯৬২ সালে ১৯-২০ এপ্রিল মুনীর চৌধুরীর নির্দেশনায় 888sport app ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে।
সাঈদ আহমদের অন্য একটি নাটক মাইলপোস্ট। এই নাটকটিও ইংরেজিতে লিখেছিলেন এবং বাংলা 888sport app download apk latest version করেন আতাউর রহমান। নাটকটি মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকার ৬৭ বর্ষ ২-৪ 888sport free betয় প্রকাশিত হয় বাংলা ১৩৭৬-এ। প্রথম মঞ্চস্থ হয় ১৯৬৫ সালের মে মাসে বাংলা একাডেমি আয়োজিত নাট্যোৎসবে। নির্দেশনায় ছিলেন আসকার ইবনে শাইখ। নাটকটি সম্পর্কে নাট্যকার লিখেছেন, ‘এই নাটকের পটভূমি দুর্ভিক্ষ। দুর্ভিক্ষ যে শুধু নিরন্নের হাহাকার নয়, মানবাত্মার সংকটের এক তীব্র আর্তনাদও এই সত্য প্রকাশের তাগিদে ‘মাইলপোস্ট’ লেখা।’ এই নাটকেও অ্যাবসার্ডধর্মী গঠনকে বজায় রেখেছেন তিনি, দেশজ লোক-উপাদানের সঙ্গে পাশ্চাত্যের রূপকল্পকে ব্যবহার করেছেন তিনি। কালবেলা, মাইলপোস্ট যদি অ্যাবসার্ডধর্মী হয়, তৃষ্ণা একেবারেই রূপকধর্মী একটি নাটক। এই নাটকে যে সমস্যাকে তুলে ধরা হয়েছে সে বিষয়ে এর আগেই নাটক লিখেছেন ব্রজগোপাল দাস। মেশিন ও মানুষ এবং সিকান্দার আবু জাফরের মাকড়সা। কিন্তু সাঈদ আহমদ দেশজ লোককাহিনিকে রূপকের এক অসম্ভব উচ্চতায় নিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছিলেন। হংকং থেকে প্রকাশিত South China Morning Post পত্রিকায় ১৯৭৮-এর ২৭ অক্টোবর All rounder with style শিরোনামে লেখা হয়েছিল – ‘Bangladesh playwright and critic Sayeed Ahmed is a picture of urbanity. In his four plays, which have revolutionized theatre on the sub continent, the philosophy is very firmly based in the mysticism and the traditions of his Bengali heritage… one of them, ‘survival’ is based on a traditional fairy tale and is presented in the masked folk form.’
আসকার ইবনে শাইখ : ১৯৫৩ সালে ভাষা-আন্দোলন নিয়ে সামাজিক নাটক দুর্যোগ প্রকাশিত হয়। যুদ্ধকালীন সময়ে ধূর্ত ব্যবসায়ী শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে সুকৌশলে যে-সংঘর্ষ সৃষ্টি করে তারই কাহিনি আছে যাত্রী নাটকে। দুরন্ত ঢেউয়ে সংগ্রামী-সাহসী মানুষেরই প্রতিবাদ তুলে ধরেছেন। পূর্ববাংলার জনগণের স্বপ্নকে ধ্বংস করার কাজে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে পঞ্চাশের দশকে যে-আন্দোলন তারই প্রেক্ষাপটে লেখেন অগ্নিগিরি (১৯৫৯), রক্তপদ্ম (১৯৬২), অনুবর্তন (১৯৫৯), বিল বাঁওড়ের ঢেউ (১৯৫৫), এপার ওপার (১৯৬২)। আর সিপাহী বিদ্রোহের সঙ্গে পূর্ববাংলার আন্দোলনকে যুক্ত করে তুলনামূলক বিষয়ভিত্তিক নাটক অনেক তারার হাতছানিতে (১৯৬৫) প্রকাশিত হলেও লেখা হয়েছিল ১৯৫৭-তে।
১৯৫৪ সালে রচনা করেন ঐতিহাসিক নাটক অগ্নিগিরি, প্রকাশিত হয় ১৯৫৫-তে। রংপুর-দিনাজপুরের বিদ্রোহী নেতা ফকির মজনু শাহ। ফকির বিদ্রোহী ভবানী পাঠক – রানী ভবানীর সঙ্গে একইভাবে ইংরেজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী মজনু শাহর বীরত্ব নিয়েই রচিত এই নাটক। আর ১৮৫৭-র সিপাহি বিদ্রোহের পটভূমিতে লেখেন রক্তপদ্ম। নাট্যকার বিশ্বাস করতেন, ‘সে সংগ্রামের আহবান ছিল এমনি বিসত্মৃত, এমনি মনমাতানো যে, তাতে সাড়া দিয়েছিল আমির-বণিক-সেপাই-শ্রমিক, ছোট-বড় সকল শ্রেণির লোক।’
১৯৪৬-এ লেখেন বিরোধ নাটক, প্রকাশিত হয় ১৯৪৭-এ। মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর পূর্ববাংলার এটাই সেই নাটক, যাতে চিত্রিত হয়েছে মুসলিম সমাজজীবনের সুখ-দুঃখ-হাসি-কান্নার মর্মগাথা। মিথ্যে অহঙ্কারে মানুষের জীবনে যে-দুর্দশা নেমে আসে তারই কাহিনি আছে এই নাট্যে। গ্রামীণ সমাজ পটভূমিতে লেখা তাঁর আর একটি নাটক পদক্ষেপ। ১৯৪৭-এর ১৪ আগস্টের 888sport app download for androidীয় মুহূর্ত নিয়ে রচিত কংকাল নাটকটিই পরবর্তীকালে পদক্ষেপ নামে প্রকাশিত হয়। ১৯৫২-তে এই প্রকাশনার পাশাপাশি এ-বছরেই নাট্যকার তাঁর শ্রেষ্ঠ নাটকটি লেখেন – বিদ্রোহী পদ্মা প্রকাশিত হয় ১৯৫৩-তে। পদ্মা নদীর দু-কূল ভাঙার মত হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের ভাঙন রচিত হয়েছে এই নাটকে। ১৯৫৩ সালে লেখা নাটক বিল বাঁওড়ের ঢেউ। জেলে জীবনের ও জীবিকার বিষয় বেছে নিয়েছেন এখানে। নাটকটি প্রকাশিত হয় ১৯৫৫-এ।
তাঁর নাট্যকার সত্তায় স্বদেশ, স্বদেশের ইতিহাস, সমকালের ভূমিকা অনেকখানি। তিতুমীর (১৯৫৭), প্রচ্ছদপট (১৯৫৮), লালন ফকির (১৯৫৯) প্রভৃতি নাটকেও কোনো না কোনোভাবে সমকালকেই ছুঁয়ে গেছেন তিনি। একাত্তরের আগে-পরে মমতাজউদদীন আহমেদ তিনটি উলেস্নখযোগ্য নাটক লেখেন – স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা, এবারের সংগ্রাম ও স্বাধীনতার সংগ্রাম (১৯৭১)। পাকিস্তান শাসনের ছবি ফুটে ওঠে স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা নাটকে। নাটকটি প্রকাশিত হয় 888sport cricket BPL rateে ফেব্রম্নয়ারি। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস পাই এবারের সংগ্রামে।
স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা নাটক প্রসঙ্গে নাট্যকারের এক তীব্র আবেগ ধরা পড়ে – ‘স্বাধীনতার যুদ্ধে আমাদের হাতিয়ার ছিল নাটক। মঞ্চের তিন দেয়াল, আলোর ঝকমকানি, অভিনয়ের সুধা তখন বাঞ্ছিত ছিল না, নাটককে সরাসরি মাঠে নামতে হয়েছে ফাল্গুনের খোলা বাতাসের মতো, গ্রীষ্মের নিকটবর্তী সূর্যের মতো।’ এই আবেগ পরবর্তী নাটকেও বর্তমান। তাই এবারের সংগ্রাম নাটকের একটি চরিত্র বলে, ‘ভাইসব এদের চিনে রাখ, এরা ধর্মের নামে, সংহতির নামে, নানা ফন্দির জাল বিস্তার করে আমাদের শোষণ করছে। আর এদের ছেড়ে দিও না। এবার এরা ঘরে ঘরে ঢুকে প্রত্যেকের সমত্মানকে হত্যা করবে। এরা খুনি। মানুষের রক্তের বিনিময়ে এরা সাম্রাজ্যবাদীদের ডেকে আনে, তোমরা এদের নির্মূল কর।’ একইভাবে স্বাধীনতার সংগ্রাম নাটকে স্বাধীনভাবে বাঁচার স্পৃহা ব্যক্ত করেছেন নাট্যকার। ফলাফল নিম্নচাপ (১৯৭৪) নাটকে 888sport cricket BPL rateের শহীদ বরকতের কাছে প্রার্থনা করে – ‘বরকত তুমি যেও না, আমাকে আলো দাও। আলো জ্বালাও।’
মমতাজউদদীন আহমেদের সাতঘাটের কানাকড়ি (১৯৯১) নাটকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির জাগরণ, স্বজন-সম্পদহারা মানুষের দুঃখ-কষ্টই উপজীব্য। নাটকের চরিত্ররা এইভাবে কথা বলে –
যুবক-২। মুনীর চৌধুরীকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার হল না কেন?
যুবক-৩। জহির রায়হানের হত্যার তদন্ত হল না কেন?
যুবক-৪। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা ঘুরে বেড়ায় কেন?
যুবক-১। উত্তর কোথায়?
তাঁর আরো কয়েকটি নাটকের মধ্যে উলেস্নখযোগ্য স্পার্টাকাস বিষয়ক জটিলতা (১৯৭৩), রাজা অনুস্বরের পালা (১৯৮৭), হাস্য লাস্য ভাষ্য (১৯৯৭) ইত্যাদি।
পরিশেষে দুটি তালিকা এখানে উলেস্নখ করছি। তালিকা দুটি করেছিলেন মমতাজউদদীন আহমেদ। প্রথম তালিকাটি একাত্তরে যুদ্ধকালীন নাট্যচর্চার, যাতে স্বাধীন বাংলা বেতার-আশ্রয়ী নাট্যকারদের নামই সর্বাধিক। পরবর্তী নাট্যচর্চায় এঁদের কোনো হদিস নেই। তবুও ইতিহাসের স্বার্থে উলেস্নখ প্রয়োজন মনে করি। বেশিরভাগ নাটকই শেষ পর্যন্ত অপাঠ্যও বটে – তবে যুদ্ধের সময় এ-ধরনের রচনাগুলো কিছুটা প্রয়োজনসিদ্ধ করেছিল। একটি নাটকের দৃশ্যকল্পনা ছিল এইরূপ –
ফিলিপ : বন্ধুগণ, এবার আপনাদের সামনে বিগত ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণের টেপ বাজিয়ে শোনানো হচ্ছে।
(টেপে সম্পূর্ণ ভাষণ শেষ হলে মোশতাক টেবিলের কাছে এসে দাঁড়াল। বক্তৃতা দেবার জন্য নয়। আরো তিনজন বক্তাকে ভাষণদানের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। সে তিনজনের ভাষণ শেষ হলো। তারপর মোশতাক তার ভাষণ শুরু করল)।
এ-ধরনের নাটকই হতো তখন। যাই হোক, প্রথম তালিকাটি নিম্নরূপ :
স্বাধীনতাযুদ্ধের পটভূমিকায় রচিত নাটক
নাম : নাট্যকার নাটক 888sport free bet
আলাউদ্দিন আল আজাদ নিঃশব্দ যাত্রা ১
আবদুল জলিল খুনে লাল বাংলা ১
আ. ন. ম. বজলুর রশীদ রক্তকমল ১
আবদুল হাকিম (বি.এ.) বাংলা-রক্ত মঞ্চে ১
আ.স.ম. মাহবুবুল হোসাইন রক্ত দিয়ে লেখা ১
আবু হোসেন যশোরী স্বাধীন বাংলা ১
আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম বাংকার ১
এম.এ. মজিদ জল্লাদের দরবার ১
এম.এ. বারি সোনার বাংলা ১
কাজী জাকির হোসেন শান বাঁধানো ঘাট ১
কল্যাণ মিত্র একটি জাতি একটি ইতিহাস ২
জল্লাদের দরবার
কালীপদ দাশ জয় বাংলা ৪
সোনার বাংলা
বীর বাঙ্গালী
বাংলা মাটি
চমক রতন বাংলার বীর বীরাঙ্গনা ১
চৌধুরী জহুরুল হক পটভূমি ১
জালাল উদ্দিন রুমী সংগ্রামী বাংলা ১
টি. আহমদ রক্তস্বাক্ষর ১
তা. ম. আসাদুজ্জামান জল্লাদের পতন ২
এক নদী রক্ত
নীলিমা ইব্রাহিম যে অরণ্যে আলো নেই ১
দিলীপ সরকার বাংলার বিজয় ৩
বাংলার বীরাঙ্গনা
অনেক রক্তের পরে
ফিরোজ আল মুজাহিদ মুক্তি পাগল বাঙ্গালী ১
ভাস্কর বিদ্রোহী বাঙ্গালী ১
মিয়া আবদুল গণি রক্ত যখন দিয়েছে ১
মমতাজউদদীন আহমেদ এবারের সংগ্রাম ৩
স্বাধীনতার সংগ্রাম
বর্ণচোর
মাহবুবুর রহমান এবং আলোক দাশ জল্লাদের ফাঁসি ১
মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুস জাগ্রত বাঙ্গালী ১
মোহাম্মদ জালালউদ্দিন রক্তে রাঙ্গা 888sport apps ১
মোমেন খান কাল রাত্রি ১
মুশতারী শফি বিধ্বস্ত বাসনা ১
মো. আলাউদ্দিন ধানের শীষে আগুন ২
রক্ত দিয়ে আনালাম
রণেশ দাশগুপ্ত ফেরী আসছে ১
লুৎফর রহমান বঞ্চিত বাংলার উপাখ্যান ১
শহীদুল হক খান রক্ত শপথ ১
শাহজাহান ঠাকুর অমর নির্দেশ ১
শেখ হাবিবুল্লাহ রক্তের বিনিময়ে ৫
বীর বাঙ্গালী
মুজিবের বাংলা
রক্ত সূর্য
জল্লাদের কারসাজি
শেখ নুরুল ইসলাম মানুষ বাঙালী ১
এই তালিকার অন্তর্গত চারজন নাট্যকার আলাউদ্দিন আল আজাদ, কল্যাণ মিত্র, নীলিমা ইব্রাহিম এবং মমতাজউদদীন আহমেদ ছাড়া আর কেউই নাট্য-ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় তেমনভাবে নেই। আর দ্বিতীয় তালিকাটি রেখেছি এ কারণে যে, ইতোমধ্যে উলিস্নখিত নাট্যকার ছাড়া আর যাঁরা সেই পরিম-লে দু-একটি গ্রহণযোগ্য নাটক রচনা করেছিলেন তাঁদের উলেস্নখ বর্তমান আলোচনায় থাকা উচিত বলে মনে করেছি।
সাম্প্রতিক নাট্য-আন্দোলনে রচিত নাটক
নাট্যকার নাটক 888sport free bet
আল মনসুর হে জনতা আর একবার ৪
রোলার ও নিহত এল
এম-জি
বিদায় মোনালিসা রেভ্যুলিউশন
খৃষ্টাব্দ সন্ধান
আব্দুল মান্নান সৈয়দ না-ফেরেশতা না শয়তান ২
বিশ্বাসের তরু
আজমিরী ওয়ারেশ উন্মোচন ১
আখতার কমল রংহীন সিগনাল ১
আনোয়ার তালুকদার দাঁড়াবো শুধুই ২
উৎস থেকে সমুদ্দুর
আলাউদ্দিন আল আজাদ নরকে লাল গোলাপ ৪
নিঃশব্দ যাত্রা
জোয়ার থেকে বলছি
সংবাদ শেষাংশ
আহমেদুজ্জামান নিঃসঙ্গ এ যাত্রা ১
আবুল হোসেন অথচ অন্ধকার ১
আনিস চৌধুরী যেখানে সূর্য ২
হাইজ্যাকার
এম. এ. আজম এই শতাব্দী ও তারপর ১
এহ্সানউল্লাহ্ কিংশুক যে মরুতে ১
কবীর আনোয়ার পোস্টার ৩
রূপের পসরা
জনে জনে জনতা
গগন তানু দুঃশাসনের বেড়াজাল ১
জিয়া হায়দার শুভ্রা সুন্দর কল্যাণী আনন্দ ১
নাজমুল আলম উপরে উঠার সিঁড়ি ২
সারেং
নিরঞ্জন অধিকারী কালো অশোক লাল ফুল ১
নির্মলেন্দু গুণ আপন দলের মানুষ ১
নুরুল করিম নাসিম সোনার হরিণ ৪
বিজন বাড়ী নেই
সম্রাট সাবধান
মহারাজ আসবেন
বুলবন ওসমান পান্ডুলিপির আড়ত ১
ফরহাদ মযহার প্রজাপতির লীলালাস্য ১
মাহবুব তালুকদার হ্যারিকেন ১
রশীদ হায়দার তৈল সংকট ১
রবিউল হাসান জননীর মৃত্যু চাই ১
শাহনুর খান পেন্ডুলামে খুন ২
সভাপতি বলবেন
সায্যাদ কাদির সাড়ে সাতশো সিংহ ১
সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী অস্থির সুস্থিতি ১
সালে আকরাম নিরঞ্জন ফিরে এসো ১
হাবিবুল হাসান সম্রাট ও প্রতিদ্বন্দ্বীগণ ৩
কৃষ্ণচূড়ার লাল কিম্বা রজনীগন্ধার সাদা
আরেকটা শহর চাই
হাবিব আহসান কোহিনুর পলাতক পালিয়ে গেছে ৪
তরুণ ও বহমান ক্ষত
সাক্ষাৎকার
ব্যক্তিগত পৃথিবী
বিদেশি নাটক/নাটিকার রূপান্তর
নাট্যকার নাটক 888sport free bet
আলী যাকের বিদগ্ধ রমণীকুল ২
এই নিষিদ্ধ পলস্নীতে
আবুল ফজল ছদ্মবেশী ১
আবদুন নুর হুতোম প্যাঁচার দেশে ১
আবদার রশীদ দরবেশ ১
আতাউর রহমান ভেঁপুতে বেহাগ ১
কবীর চৌধুরী শত্রম্ন ৩
শহীদের প্রতীক্ষায়
অচেনা
জিয়া হায়দার প্রজাপতি নির্বন্ধ ১
মুনীর চৌধুরী ললাট লিখন ৬
গুর্গনখার হীরা
জমা খরচ ইজা
জনক
রূপার কৌটা
কেউ কিছু বলতে পারে না
মমতাজউদদীন আহমেদ দখিনের জানালায় ২
সূর্যের আলো চেয়ে
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ শৃংখলিত প্রমিথিউস ১
আতাউর রহমান মাইলপোস্ট r ১


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.