এ -বছর কথা888sport live chatী নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের (১৩২৫-৭৭) জন্মশতবর্ষ। বাংলা কথা888sport live footballের তিনি অনন্য ও বিশিষ্ট লেখক। প্রতিভাসম্পন্ন ও প্রজ্ঞাদীপ্তও বটে। মিত্র ও ঘোষ থেকে প্রকাশিত তাঁর বারো খণ্ডের রচনাবলিতে যে গল্প ও 888sport alternative link সন্নিবিষ্ট হয়েছে, তাতে জীবনদর্শনের নতুন অভিপ্রায় চিহ্নিত। ইতিহাস, রাজনীতি, আর্থ-সমাজ আখ্যানবদ্ধ হয়েছে নতুন অর্থে, নতুন প্রত্যয়ে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় সমসাময়িকদের থেকে আলাদা, নিছক গল্প লেখার জন্য নন, অনুরুদ্ধ দায়বদ্ধতার গুণে তিনি পুরনো সংঘবদ্ধ জীবনেতিহাস প্রণয়ন করেন। তাঁর কাহিনি দ্বন্দ্বময় – ইতিহাসের চরিত্রের ভেতর দিয়ে, কাঠামোয় রক্তমাংস জুড়ে দেন তিনি – তাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা পায়। আর এই প্রাণপ্রতিষ্ঠার কাজে লেখকের চরিত্রগুলো হয়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণত, উপনিবেশ 888sport alternative linkটির কথা বলি। এটি যুগের প্রতিনিধিত্বকারী 888sport alternative link – এবং তিন খণ্ডের বিস্তরমান ও প্রবহমান তরঙ্গশীল উপাখ্যানে দুর্মর হয়ে ওঠে জীবনের পলস্রোতে। প্রসঙ্গত, এ-ধারায় যুক্ত অন্য আরো একটি 888sport alternative link – পদসঞ্চার (১৯৫৪)। এতে বলা হচ্ছে : ‘এই 888sport alternative link ইউরোপীয় শক্তির প্রথম ভারতে পদার্পণের কাহিনী।’ কথাকোবিদের অনুভব-তরঙ্গ সংঘটিত হয় বহির্বাস্তবের চিত্রণে। জগদীশ গুপ্ত যেভাবে বলেন : ‘888sport live chatীমাত্র অবশ্য সমাজের প্রতিনিধি। সমাজমনের ভাববেদনা তাঁদের রচনায় বাণীবিগ্রহ লাভ করে একথা স্বীকার করেও 888sport live chatপ্রতিভাকে প্রধানত দুভাগে বিভক্ত করা যায়। এক, যাঁদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে জীবনের একটা নতুন মূল্যবোধ রচিত হয়, বহুপরীক্ষিত সত্য ও নবনিরীক্ষায় নতুন অর্থ পরিগ্রহ করে। আর, যাদের ব্যক্তিসত্তা যুগসত্তায় বিগলিত হয়ে যুগচেতনাকেই বিশেষভাবে মুক্তি দান করে। তাঁদের ব্যক্তিকণ্ঠে যেন সমগ্র যুগটিই কথা কয়ে ওঠে। দৃষ্টান্ত দিতে হলে বার্নাড শ’কে প্রথম জাতের এবং গোর্কীকে দ্বিতীয় জাতের প্রতিভা ব’লে ধরা যেতে পারে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় গোর্কীগোত্রের 888sport live chatী।’ (ভট্টাচার্য : ১৪২২, ৭) এ-কথাটি সংগতভাবে মানা যায়, উপনিবেশ ও পদচিহ্নে ব্যক্তিসত্তা যুগসত্তায় লীন হয়েছে। এ-দুটো 888sport alternative linkে গৃহীত ইতিহাস-চিন্তা প্রবলভাবে অভ্যন্তরস্থিত কাহিনিকে গতি ও নিয়ন্ত্রণ সামর্থ্য দিয়েছে। সম্রাট শ্রেষ্ঠী (১৯৫০) সামন্ত-পতন আর পুঁজি-উত্থানের কাহিনি। এ-প্রসঙ্গে 888sport app download for androidে আনা যায় মায়া ও বাস্তব গ্রন্থের স্রষ্টা ক্রিস্টোফার কডওয়েলের উক্তি : ‘888sport alternative link এবং ঐকতানের জগতে মানুষের ধ্যান-ধারণায় জেগে ওঠে এক পরিবর্তমান ও প্রসারমান বিশ্বের বহু মানুষের বিভিন্ন আবেগের সমৃদ্ধ এবং বিচিত্র গতিধারা। 888sport alternative link এবং বিবর্তনবাদী 888sport apkসমূহের পূর্ণ প্রসারের জন্য চাই প্রতিভার কাছ থেকেও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার পরিপক্বতা।’ (দাশগুপ্ত : ১৩৬৬, ১) এই পরিবর্তমান ও প্রসারমান বিশ্বের স্বরূপচিহ্ন নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 888sport alternative link। তাঁর রচিত সব 888sport alternative linkই যে মানসম্পন্ন তা বলা যাবে না, তবে প্রসারমান সমাজ-ইতিহাসের কেন্দ্রমুখ নির্ণয়ে তাঁর ঔপন্যাসিক সর্বজ্ঞ-দৃষ্টিকোণ যে স্বতন্ত্র ও চিরসম্ভাব্যতার গুণ অর্জন করেছে, তাতে দ্বিমত পোষণের অবকাশ থাকে না। এ-লক্ষ্য ইতিহাস-চেতনার অনুষঙ্গে তাঁর কয়েকটি 888sport alternative linkের আন্তর-কাঠামো বিশ্লেষণ ও বীক্ষণের প্রয়াস পাওয়া গেছে।
লেখকের প্রথম প্রকাশিত 888sport alternative link উপনিবেশ তিন খণ্ডের রচনা। প্রথম খণ্ড বেরোয় ১৩৪৮-এ, ১৩৪৯-৫০ বঙ্গাব্দে এটি ভারতবর্ষ পত্রিকায় বেরিয়েছিল। এর পটভূমি অবিভক্ত বঙ্গদেশের বার্মিজ সীমান্ত, প্রমত্ত মেঘনার চরইসমাইল। বিচিত্র প্রবণতায় বৈচিত্র্যময় চরিত্রের সমাবেশ ঘটেছে এখানে; হিন্দু-মুসলিম, সরকারি কর্মচারী, বার্মিজ-পর্তুগিজ – আগন্তুক বা স্থায়ী-অস্থায়ী বাসিন্দায় ভরপুর এ চর এলাকা। উপনিবেশের প্রথম খণ্ডে ভূমিকাসমেত পাঁচ খণ্ডের মৃত্তিকা-অংশের সঙ্গে যোগ হয়েছে ফসল-অংশের পাঁচ খণ্ড। ‘মৃত্তিকা’ ও ‘ফসল’ নামকরণে প্লটের ক্রমবৃদ্ধি তথা চরইসমাইলের স্বভাব-স্বতন্ত্র তুলে ধরা হয়েছে। বস্তুত, কাহিনির বীজ ও উত্থানেরও পর্যায় অধ্যায় দুটি। দ্বিতীয় খণ্ডে আছে ‘বিভ্রান্ত বসন্ত’ ও ‘চৈতালী’। তৃতীয় খণ্ড ‘সূর্য স্বপ্নে’ পরিসমাপ্ত।
দুই
পরিচ্ছন্ন ইতিহাস নয়, 888sport alternative link-888sport live chatটি ইতিহাসের কাঠামো বা তার ভেতরের শেকড়-বাকড় গ্রহণ করে রচিত – কাহিনির খাতিরে; কখনোবা সে কাহিনি নির্ধারিত সত্যরেখা ছাড়িয়ে যায় বা মর্জিমাফিক একটি তলে দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু মোদ্দা কথা, ‘জনজীবন’ – জনতার স্পন্দিত কল্লোল, বিচিত্র মানুষের পদচারণা, প্রজন্মের গড়ে ওঠা কিংবা তার মন-মনস্তত্ত্ব, গভীরতর হয়ে পড়া সে-মনের কাঠামো কিংবা তার পরিবেশ; প্রতিবেশ-উপযুক্ত কিছু পাওয়া না-পাওয়া, রগণ-ক্লিন্ন হতাশা বা বিপরীতে জন্ম নেওয়া আশা, অথবা ওই আশার পীঠে গড়া স্বপ্ন বা তার স্বপ্নের দ্বন্দ্বমুখর লড়াই, লড়াইয়ে অর্জিত অভিজ্ঞান-কেন্দ্র – যেখানে পূর্বপুরুষের 888sport sign up bonus-আবেগ সত্য-অনুরাগ বিধৃত; ফলত তখন ওই প্রত্যয়ে নির্ধারিত সমাজ-ভূখণ্ড তৈরি করে নির্ধারিত বিবর্তনের বাঁক, আর বিবর্তনশীল সময় পেরিয়ে তা অধিক এগিয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত উত্তীর্ণ জীবনের দিকে এবং তা বদলায়, কিংবা ওই বদলের ভেতরই আবার অঙ্কুরিত হয়ে ওঠে নতুন প্রাণবীজ, অতঃপর ক্রম-পরিবর্তনের সন্নিপাত – পূর্ব-অভিজ্ঞতায় ধরা পড়ে ওই প্রসারিত জীবনের আলোক-সম্পাত, যা বিগতকে ছাপিয়ে নতুন জীবনের সন্তাপে সম্মুখগামী হয় – তখন পরম্পরা নির্ধারিত হয়; ঘনীভূত বাস্তবতায় 888sport alternative linkের মন ও মানস বাঁক বদলায় – ঠিক নতুন প্রকৃতির মতো – সেরূপে উপনিবেশ বা পদচিহ্ন রচিত হয়। মুখ্যত সত্য ও সর্বমান্য 888sport alternative link নদীর প্রবাহের মতো – গড়ে-ভাঙে। কিন্তু 888sport sign up bonusতে বিন্যস্ত থাকে প্রবহমান স্বরূপের প্রতিশ্রুতি। শ্রুতিময় পাণ্ডুলিপিও। পূর্বের ধারা বয়ে নতুনকে সে গ্রহণ করে, লড়াইয়ে-সংগ্রামে হয় পুনর্গঠিত। ইতিহাস-চেতনা সেই স্বরূপের দিকচিহ্ন। ইতিহাসের প্রতি লেখকের দায়বদ্ধতার দৃষ্টিকোণে বাংলা 888sport live footballে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৯৯৪), তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের
(১৮৯৮-১৯৭১) এবং শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৯-১৯৭০) কথা বিশেষ করে মনে পড়ে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ও সে চেতনাকে আমলে নিয়েছেন। তিনি উপনিবেশ শুরুর আগের ভূমিকায় বলেন : ‘আমার মন দিয়ে প্রকৃতিকে আমি দেখিনি, প্রকৃতিই আমার মননকে গড়ে তুলেছে।… অহিংসার রাজনীতি থেকে বিপ্লববাদের পথেও পদক্ষেপ করতে হল একদিন… অর্থাৎ পটভূমি আগে সৃষ্টি হলো, তারপর এলো চরিত্র। আমার মাটি থেকে আত্মাকে গ্রহণ করল মানুষ।… কাঞ্চন নদীর ধার থেকে যখন বরেন্দ্রভূমির আচক্রবাল মাঠের দিকে পা বাড়ালাম, তখন এমন একটা পৃথিবীকে দেখলাম, যা আমার কল্পনাকে ছাড়িয়ে তরঙ্গিত রাঙা মাটির টিলায় টিলায় মহাশূন্যতায় অগ্রসর। আর তার ওপর চোখে পড়ল আমার দেশের মানুষকে। আমার প্রথম 888sport alternative link উপনিবেশের জন্মও এভাবেই।’ কাহিনির প্লটে পরিবর্তনশীল সময়ের ইঙ্গিতে ‘মৃত্তিকা’র উপনিবেশ সংজ্ঞার্থ নির্ণয় – সে-ধারায়
সর্বজ্ঞ-কথন শুরু : ‘অষ্টাদশ শতাব্দীর কথা মনে পড়িতেছে।’ পর্তুগিজ-বসতি অনেক হাত ঘুরে শরণ নেয় চরইসমাইলে।
উপনিবেশ-আখ্যানের কেন্দ্র চরইসমাইল। আর এই কেন্দ্রেই বসতি, পরিবর্তন, বিবর্তন ও প্রসার, পুঁজি – ব্যবসায়ীদের। সেখানে ভাগ্যান্বেষণে একসময় চট্টগ্রাম-নোয়াখালির মুসলমান বা জেলে – মগরা আসে। চরের মানুষ দেড় হাজার। এটা বাড়েও। কিন্তু এর চরিত্র আলাদা। ঔপন্যাসিক তো প্রকৃতিতে গড়া। সেই প্রকৃতি এই টুকরো চরকে ভাঙে-গড়ে, তৈরি করে, নিপতিতও করে।
ভাঙা-গড়াটা স্বতঃশ্চল, স্বাভাবিক। দুর্মর। ওতে কাহিনি উপচানো কঠোর বার্তা তৈরি, তা জীবনেরও বার্তা, ‘চর ইসমাইল নিজের স্বতন্ত্র বাঁচাইয়া নদীর নিভৃত বুকের মধ্যে’ দিন কাটায়। কিন্তু এই চর লেখকের কাছে কেন অকুস্থলরূপে পরিগণিত হলো? এই চরে পর্তুগিজরা রইবে কেন, ছিল তবে এখন নাই, আছে মাত্র কয়েক ঘর, বুঝি ‘সংকর’ জাত সৃজনের জন্য। সেখানে জীবনের সংজ্ঞা আছে, ইতিহাসের বিবরণ লিখিত :
এই চর ইসমাইলে এখনো আট-দশ ঘর পর্তুগীজ বাস করে। বাহির হইতে চট করিয়া দেখিলে তাহাদের চেনা কঠিন। নোয়াখালি এবং চট্টগ্রামের মুসলমানদের সহিত রক্ত-সম্পর্ক ঘটিয়া একটা বিচিত্র সঙ্কর জাতিতে রূপান্তরিত হইয়াছে তাহারা। পায়ে লুঙ্গি, কানে গুঁজিয়া রাখে গোলাপী বিড়ি, পিতৃপুরুষের ভাষার শেষ অক্ষরটি পর্যন্ত চাটিয়া খাইয়াছে বলা চলে। কথায় কথায় কেবল মেরীর নামে শপথ করে এবং বিবর্ণ একটা ঘর্মসিক্ত কালো কারের সহিত গলায় ঝুলাইয়া রাখা একটা নিকেলের ক্রস তাহাদের ক্যাথলিক ধর্ম-বিশ্বাসের পরিচয় দেয়।
আর বাড়তির মধ্যে যা আছে তাহা হইতেছে তাহাদের নাম।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় বরাবরই, ঠিক অতিরিক্ত একটি লাইনে, দূর ইতিহাসের প্রত্ন-সত্যটি সংলগ্ন করে দেন। এই লাইন বা উক্তিটি অর্থদায়ক – ‘to understand the present we must possess the past’ – যেমনটা প্রাচীনকালের গ্রিস বা রোমের ‘The glory that was Greece, and the grandeur that was Rome’ এর মতো এই শতাব্দীতেও যখন অতীতকে ভাবা হয়, আর প্রসঙ্গত এ-ভাবনাটা হয় কেন – কারণ ‘prototypes of virtuality’, যা ‘govern their interaction and evolution’। এমন অভিপ্রায়, কাহিনি শোনানোর আগেই নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় অনুস্যূত করেন। উপমহাদেশের শুরুতেই একটা দীর্ঘ মুখবন্ধ ট্রিপ তৈরি করেন – যেখানে ‘prototypes of virtuality’র নির্মাণ অভিমুখ রচিত হয়। এ-চেতনাটি স্থানিক ইতিহাসের। কিন্তু ঔপনিবেশিক-সত্তায় বনমর্মর তানে বিগ্রহ লাভ করতে সমর্থ হয়। ডি-সুজা, জোহান, মণিমোহন, বলরাম ভিষক রত্ন সমাচারের মাঝে লিসি – এ যেন পর্তুগিজ-বঙ্গাল-বর্মি সংকর, সমস্ত আবহাওয়া অলংকরণ করে বসে আছে। লেখকের সৃষ্টিতে প্রকৃতিই সবকিছুর রূপকার। ক্রুদ্ধ, ক্ষোভ,
পরিণাম-সংশয়-হিংস্রতা-আদিমতা সবটাই প্রকৃতির সৌন্দর্যে ঢেলে দিয়েছেন লেখক। ফলে ডি-সুজা, জোহানের ক্রুদ্ধতায় ঈষৎ উষ্মাটুকু মাপা যায়; কিন্তু তখনই খাসমহল কাছারির নতুন তহশিলদার উন্মূল মণিলালের সঙ্গে পোস্টমাস্টার মণিমোহনের প্রসঙ্গ প্রথানুগ কাহিনি প্রয়াসে সমুপস্থিতির ঘটনা ঘটিয়ে দেয়। তাদের মুখেই স্বভাবসুলভতায় নদী-প্রকৃতির প্রকাশ ও প্রভাব নিক্ষেপিত হয়। শহুরে মণিরও তাতে নতুন কোমল অভিজ্ঞতা হয়। পূর্ণ পরিচয়ই অভিব্যক্তির সনির্বন্ধ প্রকাশ, তাতেও কাহিনির সম্মুখে এগোনোর পদক্ষেপসমূহ আছে। কিন্তু কাহিনি এগোনোর পথ কী? নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় কাহিনিকে নিস্তরঙ্গ করেন না, তাতে জাতি-পেশা-বর্ণ-ধর্ম সংযুক্ত করে ইতিহাসের চেতনাকে লগ্ন করেন, অতীতকে সমকালে ফিরিয়ে আনেন, পূর্বপুরুষের 888sport sign up bonus-বেদনা বা পারস্পরিক অহংকারকে জীবিত করে তোলেন। ফলে, ডি-সুজা, মণিমোহন বা বলরাম একক নয়, সামষ্টিক ও সামগ্রিক সত্তাজাত হয়ে ওঠে। ‘উপমহাদেশ’ অভিধা-কেন্দ্র পূর্বাপর চরিত্র-পরম্পরাকে মানবসম্ভূত করে তোলে। চরইসমাইল যেমন মেঘনার বুকে একাকী, অনেক ভাঙা-গড়ার ভেতর দিয়ে তৈরি – সেখানে এর মানুষ ও জনপদও ক্রমবিবর্তনের ধারায় ‘উপনিবেশ’র স্থপতি – কারণ, ‘পোস্টমাস্টার হরিদাস সাহাকেও এখানে সঙ্গীহীন জীবন কাটাইতে হয়।’ আর লেখকের ভাষ্যে :
মিশিবার মতো লোক এখানে নাই। ভদ্রলোক যাহারা আছে তাহারা পত্নী-সঙ্গহীন প্রবাস জীবন-যাপন করে। অবশ্য তাই বলিয়া 888sport promo codeসঙ্গহীন নয়। তিন শতাব্দী আগে পর্তুগীজদের সঙ্গে যে আরাকানীর দল এখানে আসিয়াছিল, বাংলা দেশের মাটির স্যাঁতসেঁতে স্পর্শ লাগিয়া বংশক্রমে নোনা ধরিয়াছে তাহাদের। সামান্য কিছু ব্যয় করিলে তাঁহাদের মধ্য হইতে নৈশ-সঙ্গিনী সংগ্রহ করা কঠিন নয়।
এমন এক চরে সংস্কার নাই, শিথিল সমাজ-বন্ধন, জীবনের গঁৎবাঁধা সুখ আর অস্বস্তির বিপরীতে আছে গভীর জঙ্গমতার করালগ্রাসী আয়োজন।
হরিদাস ‘একাকী’ – তবে তা ঔপন্যাসিকের শ্যেন দৃষ্টিতে : ‘রণচণ্ডী একজন স্ত্রী আছেন, আর আছে কাকের মতো কালো, বকের মতো শীর্ণ একপাল ছেলেমেয়ে।’ এ এক আয়রনি। ‘Irony is always the result of a disparity of understanding. In any situation in which one person knows or perceives more or less than another, irony must be either actually or potentially present’ (Scholes & Kellogg, Oxford University Press, 240) হরিদাসের দিনান্তের প্রতিচিত্র আয়রনির প্রয়োগে চরম উৎকর্ষ লাভ করে। তার ভেতর দিয়ে বলরাম ভিষক রত্নে আর মুক্তোর জীবনের উদ্ভাস ধরা পড়ে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় গল্পের প্লটে ক্রমাগত বোধ সৃষ্টি করেন। প্রকৃতিকে অর্থ দেন, দর্শন সৃষ্টি করেন, বিপ্লববাদী চেতনাধারায়। চরিত্রের ভেতরে চিন্তাধারার প্রবৃদ্ধি ঘটান, ক্রমাগত দ্বন্দ্বের নতুন অভিমুখ সৃষ্টি করেন। সেখানে মণিমোহনের ডায়েরি নিজের কথাটুকু শুধু নয়, সকল মানুষের জন্মরহস্য, পৃথিবীপ্রতিম বাসনার উদ্বেগ আয়োজন করে।
মানুষ-ধর্মের ইতিহাস চেনা যায় – 888sport alternative linkের বৃহত্তর স্বরূপ প্রতীকময়তায় উঠে আসে, সর্বজনীনতার সৌধ রচনা করে। সরলভাবে দুটো সমান্তরাল কাহিনি নির্ধারিত হয় উপনিবেশে। একটিতে ডি-সুজার নেতৃত্ব, অন্যটিতে মণিমোহনের কাহিনি। একটা স্টাইলে ডি-সুজার অবয়ব পুনর্গঠিত। পর্তুগিজ রক্তের উদ্দামতা অভিমান বা নিরাপোষ স্বেচ্ছাচারিতা তাতে বিদ্যমান। লিসি-জোহানের সম্পর্ককে সে মানে না। সে পছন্দ করে চট্টগ্রামের শুঁটকি ব্যবসায়ী আরাকানি গঞ্জালেসকে। ইতিহাসে মোড়ানো গঞ্জালেস। ঔপন্যাসিকের চোখে গঞ্জালেস ক্রিশ্চান, আরাকানি এবং হিন্দু রক্ত মিশ্রণের সংকর সমাবেশ। পর্তুগিজ জোহানের বদলে ডি-সুজা গঞ্জালেসকে পছন্দ করার কারণ, তার পিতৃপরম্পরার 888sport sign up bonus। ব্যবসায় সে উজ্জ্বল। আস্থা ও অনুপ্রেরণায় গঞ্জালেস অনুগত। বিপরীতে জোহান চরম উদ্ধত। কিন্তু লিসি জোহানের পছন্দ। খ্রিষ্টীয় সপ্তদশ শতকের ইতিহাসধারায় অখণ্ড বঙ্গীয় অঞ্চলের সঙ্গে গঞ্জালেস, ডি-সুজা, লিসির সম্পর্কের একটা মিশ্রিত পরিণতি প্রযুক্ত চরইসমাইলের বসতি ও গৌরবগাথার সঙ্গে যুক্ত করেন লেখক। এতে চরিত্রের বৈচিত্র্য ও প্রবণতার অভিমুখসমূহ অধিক প্রকৃতিপ্রবণ ও আকর্ষক হয়ে ওঠে, যা অ্যাডভেঞ্চারাসের মধ্যে সমকালীন জীবনের রসবোধ বিপুল মাত্রায় ছড়িয়ে যায়।
এ-প্রসঙ্গে জগদীশ গুপ্তের একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করি :
888sport live chatমাত্রই অবশ্য সমাজের প্রতিনিধি। সমাজমানসের ভাববেদনা তাঁদের রচনায় বাণীবিগ্রহ লাভ করে এ কথাটা স্বীকার করেও 888sport live chatপ্রতিভাকে প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়। এক. যাঁদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে জীবনের একটা নতুন মূল্যবোধ রচিত হয়, বহুপরীক্ষিত সত্য ও নবনিরীক্ষার নতুন অর্থ পরিগ্রহ করে। আর, যাঁদের ব্যক্তিসত্তা যুগসত্তায় বিগলিত হয়ে যুগচেতনাকেই বিশেষভাবে মুক্তিদান করে। তাঁদের ব্যক্তিকণ্ঠে যেন সমগ্র যুগটিই কথা কয়ে ওঠে। দৃষ্টান্ত দিতে হলে বার্নাড শ’কে প্রথম জাতের এবং গোর্কীকে দ্বিতীয় জাতের প্রতিভা ব’লে ধরা যেতে পারে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় গোর্কীগোত্রের 888sport live chatী।
উপনিবেশ অষ্টাদশ শতকের 888sport app download for androidচিহ্নে এক যুগসত্তার ধারক। সেখানে আরাকানি-পর্তুগিজ-হিন্দু-মুসলিম অভেদরূপে চর ইসমাইলের জীবনযাপনে পরিব্যাপ্ত হলে অভ্যন্তরীণ সংস্কার-মূল্যবোধ, মানবাদর্শ বৈচিত্র্যে ঐক্যরূপ লাভ করে। স্পন্দন ছড়িয়ে পড়ে, কামনা-বাসনার সংশ্রব তৈরি হয়। সেখানে সমাজ-সংস্কৃতির পরিশীলনের চেয়ে জঙ্গম ও দুর্বার উদ্দামতার প্রাণস্পর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়। বলরাম ভিষক রত্ন-মুক্তো, মণিমোহন-মা-ফুন সম্পর্ক 888sport alternative linkে তাৎপর্যময় বাণী888sport live chat। প্রাকৃতিক স্বভাব উভয়ের প্রাণমন যেন ইতিহাসের অভিমুখ রচনা করে। উপনিবেশের দ্বিতীয় পর্ব চরইসমাইলের প্রবৃদ্ধি সন্দর্শনের পদক্ষেপ। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ‘মৃত্তিকা’ অংশকে ‘ফসলে’র সঙ্গে যুক্ত করেন। তখন পোস্টমাস্টার, মণিমোহন, ভিষক রত্ন, ডি-সুজার বয়স বৃদ্ধি ঘটেছে। আখ্যানের অভিমুখে নবতর অভিজ্ঞতা যুক্ত হয়েছে। বসত গড়া চরেরও সময় গড়ায়। ছয় মাস পরে চরের আগন্তুক জীবনযাপন, উদ্বাস্তু মন গৃহের জন্য আকুল হয়ে ওঠে। দশ বছর বয়সী বিপত্নীক বলরাম ভিষক আর পোস্টমাস্টারের সম্পর্কের রসিকতার ফাঁকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পুঁজির তথা বিনিময়-ব্যবস্থার পদক্ষেপ গোচরীভূত হয়। তহশিলদার মণিমোহন এখন কালুপাড়ায়। নদীতে নৌকা ভিড়লে সরকারি কর্মকর্তার প্রভাবে তটস্থ হয় অনেককিছু। মণিমোহনেরও এ পরিবর্তমান ও চলমান জীবনে নানা দৃষ্টিকোণ তৈরি হয়। মনের মধ্যে মায়াময় চাঞ্চল্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। লেখকের বিবরণে জানা যায়, ‘এই দূর দুর্গম দেশে প্রজারা অফিস-আদালত এবং শহরের আরো দশটা উপসর্গের চৌহদ্দী হইতে পুরোপুরি বাহিরেই আছে। এক ফৌজদারী জাতীয় আইনঘটিত বিশৃঙ্খলা ইহাদের মধ্যে যা কিছু ঘটে এবং তাহার মীমাংসা এরা নিজেরাই করিয়া লয়। সুতরাং সরকার-সম্পর্কিত একটি ক্ষুদ্র পেয়াদাও এখানে আসিয়া দর্শন দিলে ইহারা তাহাকে অতিরিক্ত সমীহ করিয়া থাকে।’ – এ পরিবেশে প্রতারক-প্রবঞ্চক মজাঃফর মিয়াকে পায়। আকস্মিক চূড়ান্ত ব্যাপারটি ঘটে মা-ফুনের স্বামীকে আঘাতের পর তার পরিচয় উন্মোচিত হলে। এমনটা ঘটে জোহান আর ডি-সুজার মধ্যেও। জোহানের পর্তুগিজ রক্ত আর আরাকানি রক্ত-মিশ্রিত ডি-সুজা আর মঙ্গোলিয়ান লিসি এবং বর্মিজ মা-ফুন উগ্রতা আর বন্যতায় ভরপুর। কাহিনিস্রোতে প্রকৃতি অনুষঙ্গ পালটায়, বসন্ত আসে, প্রয়োজনের তাগিদে হাট বসে আর সম্পর্কের ঘনত্ব তৈরি হয়। বন্য উদ্দাম জীবনে উগ্রতার বিপরীতে আদিম আনন্দও কম উপভোগ্য নয়। মুক্তোর জন্য শাড়ি কেনে বলরাম, মা-ফুনের বাড়িতে আমন্ত্রণ পায় মণিমোহন আর লিসির জন্য গঞ্জালেস অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। চরের উত্থান-পতন আর জীবনের উত্থান-পতন এক মন্থনে বয়ে চলে। জীবনের কলরোলে সংস্কার চেপে ধরে, মণিমোহনের বাড়িতে রেখে আসা স্ত্রীর কথা মনে হয়, আর বলরাম বৃদ্ধ বয়সে এক উৎসুক বঞ্চিত প্রণয়ীর নিমিত্ত গ্রহণের জন্য দ্বিধাকাতর থাকে। অনেকটা বঙ্কিমীরীতিতে পত্র-রচনাকে আখ্যানের প্রতিপাদ্য করেন লেখক। ঠিক সমান্তরাল আখ্যানও গড়েন। মণিমোহনের হাহাকার, বিচ্ছিন্ন মনের প্রাণবন্ত স্বরূপ যেমন তাতে ধরা পড়ে তেমনি একটি নতুন সম্পর্কজালে আবদ্ধ রোমান্সে অভাবিত পরিবেশ তৈরি হয়। পরিবেশ সৃজনেও লেখক যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রসঙ্গত : ‘In representational narrative the notion of specific connection between the ‘real’ world and the world of story seeins to precede the notion of a more generalized mimetic connection’ -এ 888sport alternative linkে পর্তুগিজদের ‘হার্মাদ’ সত্তাই পরিবেশিত। অত্যাচার, দমন, যুদ্ধ, ধর্মপ্রচার, উগ্রতার কথাই পুনর্বার আসে; লেখক বলেন, ‘বাহুবলে তারা সমগ্র দেশ জয় করিয়াছে, আগুন লাগাইয়াছে, লুটতরাজের সাহায্যে পৌরুষদের পরাকাষ্ঠা দেখাইয়াছে।’ একটি সময়ের সাক্ষ্যও তাই বলে :
পূর্ববঙ্গে পর্তুগীজদের ইতিহাস ছিল কালিমালিপ্ত। গনজালেসের পতন মানে তার বাহিনীর ধ্বংস হয়ে যাওয়া নয়। বাংলার বিস্তীর্ণ নদীনালা ও নদীতীর তাদের আবাস হয়ে উঠলো। এরা কখনো আইন বা কোনো কর্তৃপক্ষকে মান্য করতে শেখেনি। তাই লুটপাট আর দস্যুতা করেই তারা জীবিকা নির্বাহ শুরু করলো। প্রয়োজন থেকে শুরু হলেও ধীরে ধীরে এই দস্যুতা 888sport live chat আর বাণিজ্যে পরিণত হলো। আর তখন সময়টা ছিল এমন যে শত্রুর করা কোনো সত্যিকার অন্যায়ের শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে সর্বজনসম্মত সেরা পদ্ধতি ছিল লুটপাট করা।
এ-চিত্রই 888sport alternative linkে আছে। ইতিহাসের পটচিত্রে তা নির্ধারিত। সেখানেই আখ্যানের এক্সপজিশন তৈরি। কিন্তু উপনিবেশ তো কারো স্থির নয়। একসময় পোস্টমাস্টার হরিদাস কেরামদ্দির মায়া ছেড়ে চলে যায়, আসে বরিশালের আরেক পোস্টমাস্টার – সে-পরিবেশেই গড়া চরইসমাইল। এ এক প্রতীকী উপনিবেশ। হয়তো চলে যাওয়ার বিপরীতে আবার কেউ আসে। এই পরিক্রমা তো বহুদিনের, যা মানুষের জীবনধারার সঙ্গেও সম্পর্কিত। তাই তো লেখক বলেন :
নদীর বুকে জাগিয়া ওঠা নতুন মাটি – নতুন উপনিবেশ। ঠিক পুরনো পৃথিবীর মতো করিয়াই মানুষ এখানে ঘর বাঁধিয়াছে; কিন্তু দেখিয়া যা মনে হয়, সত্যি সত্যিই তার সঙ্গে কত ব্যবধান রহিয়াছে। পৃথিবীর প্রথম যুগের মতো গলিত ধাতুপাত্রের উপর শীতল একটা আস্তরণ পড়িয়াছে মাত্র, কিন্তু বুকের মাঝখানে অসংযমের তরল উত্তপ্ত বস্তুটা টগবগ করিয়া ক্রমাগতই ফুটিতেছে। যখন একটা বিশেষ উপলক্ষ বা ছিদ্র ধরিয়া তাহা বাহির হইয়া আসে তখনি বোঝা যায় – যা দেখা যাইতেছে সেইটাই সত্য নয়।
উপনিবেশ বটে, তবে তা তো প্রকৃতির-স্বরূপে বাধা, তাতে ঋতু বদলায়, মানুষ বদলায় সেখানে হাকিম-তহশিলদার মণিমোহনেরও ভাঙা-গড়া আছে – মনের ও মনস্তত্ত্বের। সেখানে এক প্রোষিতভর্তৃকার মনে আগুন জ্বলে, উগ্র-দাবাগ্নির মতো। উপনিবেশের বন্য-উদ্দাম কামনার আগুন আর জল সেখানে নতুন ঝড়ের তা-ব তোলে। বন্য হাওয়া আর বৃষ্টিঝড়ের তুমুল বারিপাত মণিমোহনের একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটায়। ঠিক একইভাবে
মুক্তো-বলরামের ফসল ফোটানোর সংবাদ আর বার্মিজ আঘাতে জোহানের জীবনাবসান আর ডি-সুজার অচেতনত্ব ও আত্মহত্যা, লিসির অপহরণ। তখন হরিদাসের পালেও বাতাস বয়। এ চলমান ধারায় তিন শতাব্দী আগের কামান আর বোম্বেটেদের জাহাজ ভেড়ানোর ইতিহাস গড়িয়ে চলে, বুঝি তার প্রবীণত্বের অপেক্ষা করে কোনো এক মহাকাল।
উপনিবেশের দ্বিতীয় খণ্ডে ‘চরইসমাইলের নতুন জীবন গড়ে উঠেছে। শাখায় পাতায় অন্ধকার করে হিংসার গুহা এই যে সুন্দরবন, এ আর কতোদিন দাঁড়াবে কুঠারের মুখে। তেঁতুলিয়া কালাবদর কিংবা রায়মঙ্গলের মুখের আর কি শরের জল তেমন পাহাড়ের মতো উঁচু হয়ে আসবে? পর্তুগীজদের শেষ উপনিবেশ মিলিয়ে গেল নদীবক্ষে – সিবাস্টিয়ান গঞ্জালেসের
রক্ত – ডি-সুজা, জোহান আর লিসি পর্যন্ত, এসেই যেন কাহিনী থেমে গেছে। শুধু অবশিষ্ট আছে, ডি-সিলভার জমিতে লাঙল ঠেলা আর শুঁটকি মাছের ব্যবসা।’ (ভূমিকাংশ) এ-পর্বে এক অর্থে চর ইসমাইলই মূল চরিত্র। যেখানে লেখকের ইঙ্গিত ‘আরো দশ বছর পরে যারা এখানে আসিবে, তারা দেখিবে কত বড় হইয়াছে চর ইসমাইল। সভ্য, শিক্ষিত মানুষ। নদী – শান্ত এবং অহিংস, এখানে- ওখানে চর পড়িয়া গোটা চেহারাটাই তাহার বদলাইয়া গিয়াছে। আর. এস. এন কোম্পানীর নূতন লাইনে স্টিমার যাতায়াত করে, ফার্স্ট ক্লাসের ডেকে বসিয়া প্রেমালাপ জমায় আধুনিক তরুণ দম্পতি।’ গঞ্জালেস আর লিসি তারই সন্তান। গঞ্জালেসের মন এই চরে বসত করে। হাতিয়া-লালমোহন-সাহবাজপুর পেরিয়ে সে ফিরে আসে। ‘বিভ্রান্ত বসন্ত’ ও ‘চৈতালী’ পর্বটিতে ষোলো-সতেরো-আঠারো শতকের 888sport sign up bonus ফিরে এসেছে। ‘a narrator in fiction is imbedded in a time-bound artifact. He does not ‘know’ simultaneously but consecutively. He is not everywhere at once but now here, now there, now looking into this mind or that, now moving on to other vantage points. He is time-bound and space-bound as God is not.’ (ibid, 272-73) সর্বজ্ঞ দৃষ্টিকোণটিতে ইতিহাস অনুসৃত হয়। সেভাবেই সময়গ্রন্থন ঘটে। ‘ইতিহাস রচনা করিয়াছে মানুষ। ঘুমের দেশ এই ভারতবর্ষ। কোথায় ককেসাস্ পাহাড়ের তলা হইতে প্রথম আসিয়াছিল যাযাবর মানুষের দল। দর্শন, 888sport apk, কাব্যের মধ্যে তাহাদের সমস্ত পশুশৌর্য গেল তলাইয়া। শক আসিল, হূন আসিল, গ্রীক আসিল, মুসলমান আসিল – কুম্ভকর্ণের মাটিতে পা দিয়া তিন দিনের বেশি কেউ তাহাদের জাগিয়া থাকিতে পারিল না। পর্তুগীজেরাই বা সে নিয়মের ব্যতিক্রম করিবে কি করিয়া? বর্তমানের সূর্যও তো একদিন অস্তে নামিবে, সেদিন ইতিহাসের এই ক্ষুধা যে তাহাকেও গ্রাস করিবে না – এমন ভবিষ্যদ্বাণী আজ কে করিতে পারে?’ এই ভাবনাপ্রবাহে জানা যায়, স্যামুয়েল গঞ্জালেস – যে শুঁটকির ব্যবসা করে। সন্দ্বীপ থেকে সে ফেরার পথে ডি-সুজার সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল চট্টগ্রামে। পিতৃবন্ধু ডি-সুজার সেই 888sport sign up bonus গঞ্জালেসের মনে উদ্দীপনা জাগায়। লিসিকে তার ভালো লেগেছিল। কিন্তু প্রকৃতির স্বভাব তো সহজ নয়! স্বপ্ন-অভিযান আর রহস্য – সবটুকু আদিম উদ্দামতা আর স্বভাবের জঙ্গমতার বর্মিজ বজরার আঘাত যেন সব ভেঙে যায়। তেঁতুলিয়ার মোহনার সেই ঝড়ে ডি-সিলভার চোখে পড়েছিল জোহানের রক্তাক্ত দেহ। এ-খুনের কারণ কী? পুলিশ ফাঁকি দিয়ে গোয়া থেকে কলকাতা, সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম এই চর ইসমাইল প্রায় ত্রিশ বছরের পথে এখন বর্মিজদের হাতে বন্দি ডি-সুজা ক্লান্ত। 888sport alternative linkের নির্মিত প্লটে তেঁতুলিয়া মোহনার ঝড় আর বর্মিজ আক্রমণ একসঙ্গে অনেক বিষয়ের মুখপাত ঘটায়। ডি-সুজার জীবনে বিচিত্র কারবারি, আফিমের ব্যবসা, সাহস, চ্যালেঞ্জ সবটা মিলে ভারতবর্ষে এক পর্তুগিজ প্রতিনিধির সন্ধান মেলে। ‘চট্টগ্রামের বন্দরে খালাসীদের কাছ হইতে বিপ্লববাদীদের জন্য রিভলবার সংগ্রহ করার ব্যাপারে এই নতুন পথটার সন্ধান পাইয়া গেল। যেমন অল্প পরিশ্রম তেমনিই আয়’ – এরূপে অভাবিত দুঃসাহসের কর্মগাথা অনেক; কিন্তু এই বর্মির আক্রমণটা তাকে যেন পর্যুদস্ত করে। ডি-সুজার সূত্রে প্লটে যুক্ত হয় নুরুল গাজীর পূর্বাপর ইতিহাস। নতুন পর্ব। ইতিহাসের মিশ্রিত ধারা। কিন্তু পর্তুগিজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিল আছে – ‘দিগ্বিজয়ীর বংশধর বলিয়াই বোধ করি গাজী সাহেবের সঙ্গে ডি-সুজার হৃদ্যতাটা এত জমাট হইয়া উঠিয়াছিল।’
ভিষকরত্ন-মুক্তো পর্ব আখ্যানে ক্লাইমেক্স-চূড়ায় আসীন। অসম বয়সী সম্পর্কই শুধু নয়, তাতে সংস্কার বাধা দেয়। ভয় আর পেছনের 888sport sign up bonus ভবিষ্যতের শঙ্কা আর দায় ভিন্ন স্বরূপে উঠে আসে। মুসলমান গাজী কিংবা ভিষক রত্ন কেউই মুক্তোকে স্বাভাবিক জীবন দেয়নি। ‘সে জীবন অত্যন্ত তিক্ত হয়ে উঠছে যেন দিনের পর দিন।’ ঠিক একই প্রবণতায় মণিমোহনের সম্মুখে দাঁড়ানো বার্মিজ মেয়ে মা-ফুনের অসংকোচ প্রকাশের ভেতর রানী এসে পড়ে, হানা দেয়। তখন একটি ঝড়ের রাতের অভিসার ঠিক হিন্দু-সংস্কারে বাধা পড়ে। বার্মিজ মেয়ের ভালোবাসার ভয় তাকে গ্রাস করে। শেষ পর্যন্ত সব বুঝে মা-ফুন বলেছিল : ‘আমরা মগের মেয়ে – নিজেদের ভার নিজেরাই নিতে জানি।’ প্লটের ভেতরে তেঁতুলিয়ার মোহনায় ঝড় চরের চলমান প্রতিটি মানুষের মনেই শুধু আঘাত করে না, পুরনো 888sport sign up bonus আর জীবিকার তৎপরতায়ও নবতর বার্তা আনে। গঞ্জালেস তারই স্বয়ংপ্রকাশ। সে লিসিকে উদ্ধার করার প্রত্যয় নেয় :
গঞ্জালেস অত্যন্ত আশ্চর্য হইয়া দেখিল লিসিকে না হইলে তাহার চলিবে না। পৃথিবীতে যাহাকে পাইবার কোনো সম্ভাবনা নাই, একমাত্র তাহার জন্যই সমস্ত অন্তরাত্মা আর্তনাদ করিতেছে গঞ্জালেসের। শরীরের দাবী মিটাইবার জন্য 888sport promo codeর অভাব নাই, যতদিন অর্থ আছে ততদিন সে অভাব হইবেও না। তবু লিসিকেই তাহার একমাত্র প্রয়োজন। মোহ বেশিক্ষণ থাকিবার কথা নয়, লিসির প্রতি তাহার যেটুকু চিত্তচাঞ্চল্য জাগিয়াছিল, আজ বাদে কাল তাহার আন্দোলন অতি সহজেই যাইবে শান্ত ও প্রশমিত হইয়া। কিন্তু আঘাত লাগিয়াছে তাহার পর্তুগীজ অহমিকায়। তাহার সম্মুখ হইতে তাহারই স্বজাতীয়া বাঞ্ছিতাকে ছিনাইয়া লইয়া যাইবে কোথা হইতে একদল বর্বর রেঙ্গুনী আর আরাকানী আসিয়া!
চরইসমাইলের বর্বর জীবনের ওপর যেন নেমেছে স্তিমিত আর নিরুত্তেজ সভ্যতা। দশ বছর বয়স বেড়েছে ভিষক রত্নের। লোলচর্মে মলিন সে। মুক্তো এখন বিষাক্ত 888sport sign up bonus, ঝড়ের রাতে অবাঞ্ছিত সন্তান নিয়ে সে উধাও। এখন জীবনবিমুখ বলরাম। এটা কি প্রতীকী? এই তো ‘উপনিবেশ’!
চরইসমাইল যেন লেখকের 888sport sign up bonus-সত্তা-ভবিষ্যৎ। চারশো মাইল দূরে বসিয়া দশ বছরের পরিবর্তমান চরের এই প্রতিচ্ছবি। সেখানে বসত গড়া আর ফিরে যাওয়া, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-জাতপাতের কৃষ্টি অতিক্রম করে মাটি-ফসল আর অনিরুদ্ধ প্রকৃতির মানবিক স্থাপত্য নির্মাণ – এই তো উপনিবেশ। লেখক সময়-স্থান 888sport app download for androidে রেখে আখ্যানের গতি নির্ধারণ করেন। প্রতিক্ষণ ইতিহাসের পাতায় দৃষ্টি চালান লেখক। ইতিহাসকে মিশিয়ে চরিত্রকে সত্য করে তোলেন। জীবন-সাক্ষরতা তৈরি করে সময়, অভিজ্ঞানের জন্ম দেয় জঙ্গমি কিছু মানুষ। সে-ধারাতেই এই মহাকাব্যিক 888sport alternative linkের আখ্যান বিনির্মিত। সময় তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের। সময়ের কিনারা নির্ধারিত। স্থানিক ভূগোল স্থির নয়। সময়ও তা নয়। ফলে ক্যালেন্ডারের পাতায় যুক্ত হয়ে চলে নতুন জীবনচাঞ্চল্য। দক্ষিণ বাংলার বঙ্গোপসাগর উপকূলের জনতা এখন যুদ্ধের আগুনে প্রোজ্জ্বল। পোস্টমাস্টার হরিদাস, বলরাম ভিষক রত্ন, গাজী, মজঃফর মিঞা বয়সসীমা ডিঙায়। ব্যবসা, যুদ্ধ আর কালোবাজারি একসূত্রে আটকানো। ‘জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়াছিল, ধান-চালের দর বাড়িয়াছিল। কিন্তু এবারের মতো এমন অশুভ সম্ভাবনা যেন আসিয়া দেখা দেয় নাই। এবারে কলকাতায় বোমা পড়িয়াছে, মাথার উপর দিয়া বিমান উড়িয়া যায়, ধরন-ধারণ সবকিছুই আলাদা।’
এ-পরিবর্তন সত্তরোর্ধ্ব মজঃফরের চোখে, বলরামের চোখে। ভোলার ‘দৌলত খাঁর বানের পর এমন ভয়ঙ্কর কাণ্ড আর দেখেন নাই বলরাম। এই চরইসমাইলেই কমসে কম দুশো মানুষ বেমালুম সাবাড় হইয়া গেল।’ ম্যালেরিয়া, ঝড়, বন্যা, যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ – সব সাবাড়। রুগণ ডি-সিলভার ওষুধ নেই, মহিষ মরে গেছে – এমন কাহিনিতে প্রকরণ পালটায়। খুব নির্মম বর্ণনার ছবি রচিত হয় 888sport alternative linkে :
কামান, বন্দুক, এরোপ্লেন কিছু নয় – খালি ঝনঝন করিয়া শব্দ হইতেছে। চোখ মেলিয়া সে ভালো করিয়া চাহিয়া দেখিল, কতকগুলো করোগেটেড টিন। হাত-পা কিছুই নাই – কিন্তু কি যেন একটা মন্ত্রবলে তাহারা সবাই অদ্ভুতভাবে প্রাণবন্ত হইয়া উঠিয়াছে। প্রখর রৌদ্রে টিনগুলো জ্বলিতেছে, তাহাদের দিকে তাকাইতে গেলে চোখে ধাঁধা লাগে। একটা টিন আর একটার ঘাড়ে ঝাঁপাইয়া পড়িতেছে – যেটা পড়িল সেটা আবার লাফ মারিয়া উঠিয়া দাঁড়াইতেছে – ধূলায় যেন দিগ্দিগন্ত অন্ধকার হইয়া গিয়াছে। হঠাৎ দড়াম করিয়া বিকট শব্দে কি একটা ফাটিয়া গেল – বুকের মধ্যে চমক দিয়া উঠিল ডি-সিলভার। হাওয়ায় পাখা মেলিয়া ওগুলি কি উড়িতেছে? একটা নয়, দুইটা নয়, একশো, দুশো, হাজার! কুইনাইনের পিল নাকি?
ডি-সিলভাই শুধু নয়, যুদ্ধের বাজারে এখন ওষুধের অভাবে কবিরাজ বলরাম ভিষকরত্নের মূল্য অনেক। আখ্যান-নির্মিত ভাষাকাহিনিস্রোতকে উজানের বিরুদ্ধে টানে। মণিমোহন পদস্থ সরকারি অফিসার হিসেবে পরিবার নিয়ে নতুন ‘শহর’ চরইসমাইলে এলে দশ বছর আগের সকলের কথা মনে আসে। বলরামের সামনে মুক্তোর কথা এলে কিংবা ডি-সুজা, জোহানের কথা এলে আখ্যানে তরঙ্গ তৈরি হয়। মোহ কেটে যায়। যুদ্ধজ্বরে জীবনধারা বদলায়। বলরামের ক্ষেত্রে মুক্তো কিংবা মণিমোহনের মা-ফুন, গঞ্জালেসের লিসি আখ্যানপ্রবাহে ‘ট্যাবু’সদৃশ – ক্রমশ নতুন তরঙ্গ আনে, প্রথাগত সমাজজীবনের পাড়ে এ এক নতুন তরঙ্গ। মণিমোহনের ডায়েরি যেন তারই আত্মদর্শন : ‘সেই আমি, পশ্চাতের আমি। কত কল্পনা কত আশা কত আত্মবিশ্লেষণ।’ উপনিবেশের তৃতীয় খণ্ডটিতে ঔপন্যাসিকের ভাষারও রূপান্তর ঘটেছে। বর্ণনাভঙ্গি পেয়েছে নতুন মাত্রা। বলরাম, মণিমোহন, গঞ্জালেস গতিময় নতুন প্রকরণে এটে যায়। গঞ্জালেসকে অবসাদ, অপ্রকৃতিস্থতা পেয়ে বসে। অবক্ষয় গ্রাস করে।
অস্থিরতা-উত্তেজনার নতুন অভিমুখের সন্ধিৎসা ঔপন্যাসিকের নতুন ভাষা গড়ে দেয়। মহাজনি কারবার, কালোবাজার, ব্যবসা যুদ্ধের বাজারে দালালদের দুরভিসন্ধির সুযোগ করে দেয়। নানারকম অ্যাবসকন্ডার তৈরি হয়। প্রশাসক হিসেবে মণিমোহন সকলের কথা শুনে বলেন ‘যুদ্ধটা হচ্ছে একটা জৈবিক প্রয়োজন।’ আখ্যানে জমির প্রান্তিক চরিত্র হিসেবে তৈরি হয়। যুদ্ধের বাজারে মুনাফাখোররা নতুন পুঁজির মালিক হয়। বলরাম, গাজী, মজঃফর সবরকম খাদ্য মজুত করে – ‘দেশের লোককে প্রাণে মেরে পেট বোঝাই করছে। মাটির তলায় তলায় ধান, অন্ধকার গোলাঘরে ধান। রাতে ছিপ নৌকোতে চালান দেওয়া ধান।’ এর প্রতিবাদে ‘চরইসমাইলেও আগুন জ্বলিল।’ এই দ্রোহের আগুনের ভেতর দিয়ে উপনিবেশের কথন সফল পরিণতি পায়। পরাজিত পক্ষ পলাতক ও পরাস্ত। ‘নতুন কালে, নতুন রূপে’ চরইসমাইল বিলুপ্ত ভস্মের ওপর গান গায়। লেখক বলেন : ‘সে ইতিহাস – দৈনন্দিন, সে ইতিহাস – ধারাবাহিক। তাহার সমাপ্তি নাই, উপসংহারও নাই।
উপনিবেশ এক নতুন 888sport alternative link। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্লাসিক 888sport alternative link। শ্রেষ্ঠতমও। পরিপূর্ণ ভাষারীতির মারাত্মক পদক্ষেপ। ইতিহাসের মর্মবিন্দুতে সিন্ধুর উপাখ্যান। আখ্যানের তন্তুজালে বিবর্তমান কাল যখন গড়ে ওঠে তখন পুনর্বার রাশিয়ান বিপ্লবের ঐতিহ্যশালী ‘কোজাক্স’দের কথা মনে পড়ে। কার্যত, সেটি মনে করিয়ে দিয়েছেন লেখক নিজেই, 888sport alternative linkের ভূমিকায় মিখাইল শোলোকভকে (১৯০৫-৮৪) উদ্ধৃত করে। হয়তো শোলোকভের ডন ভ্যালিতে ডিসিডান্ট মানুষদের সঙ্গে চরইসমাইলের বৈচিত্র্যময় জঙ্গমি জনগোষ্ঠীর সাদৃশ্য রয়ে যাবে – তবে সেটি নিছকই লেখকের প্রেরণামাত্র।
উপনিবেশে দশ বছরের ঘটনাক্রমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে-বাস্তবতা দৃশ্যমান তার একটি রূপ বর্ণিত হয়েছে লেখকের অন্য 888sport alternative link সূর্য-সারথিতে। এর পটভূমি কোনো গ্রাম নয়, কলকাতা শহর। তবে বরাবরই ঠিক ঐতিহ্যবাহী কোজাক্সদের মতো কখনো বাহে সম্প্রদায় কিংবা চা-বাগানের ডুয়ার্স, চরইসমাইলের
আগন্তুক-উদ্বাস্ত – সবই লেখক প্রতিপাদ্য করতে সমর্থ হন। কিন্তু কেন? মহান লেখকগণ সমাজের বিশেষ দিকে নয়, সবদিকেই আলো ফেলতে চান – তা যত তুচ্ছ বা সামান্যই হোক, মূলত মানুষের মর্যাদাটিই তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে চান – সবকিছুর ঊর্ধ্বে থেকে। সমস্ত স্বার্থপরতা, দীনতার বিরুদ্ধে লেখকের অস্ত্র। কিন্তু অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জয় হয় শুভ শক্তির, সম্মিলিত জনতার। সেজন্য আদিত্য নীলকান্ত মনির দিকে তাকায়, একটি সুন্দর সূর্য ছিনিয়ে আনার জন্য। কারণ সভ্যতা তো যুদ্ধ চায় না। ‘অন্ধকার শপথ নিল সে সুদিনের আলোর স্বপ্ন ফিরিয়ে আনবে। দুর্দিন থেকে দূরে সরে যাবে। সরে যাবে অপঘাতের অপচ্ছায়া। মৃত্যু নয়। এ ভয় ক্ষণিকের।’ প্রায় একই পদক্ষেপে রচিত শিলালিপি। অবিনাশবাবুর আলোয় রঞ্জু বা রঞ্জনের দেশপ্রেম – যেখানে সবরকম আপস এমনকি সীতার প্রেমও তুচ্ছ হয়ে গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত বৃহত্তর জনগণের শক্তিতে সীতা-মিতা সকলেই নির্ভুল লক্ষ্যে পৌঁছাতে সমর্থ হয়। ‘এরপর তো একা রঞ্জন আর কোথাও নেই। আর নয় ব্যক্তিসত্তার কাহিনী। এতক্ষণে রঙীন বুদ্বুদটা এইবারে মিলিয়ে যাচ্ছে আদিগন্ত খরপ্রবাহে। এরপর সে সকলের।’ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের অবারিত ঔৎসুক্য মানুষ – তার সমাজ-ইতিহাসের লগ্নিকৃত বাস্তবতাকে নির্মাণের মর্যাদাশীল অত্যুচ্চ পদক্ষেপ – সেখানে সাধারণ বৃহত্তর ও সামগ্রিক স্বার্থই বড় হয়ে উঠেছে, তাঁর পক্ষের ইতিহাসই তিনি প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন করেছেন। একই ধারাবাহিকতার 888sport alternative link লাল মাটি। ‘লাল মাটির কাহিনী – সে কাহিনী মায়ের -, লাল মাটি মা। অনেক ইতিহাসের রক্ত-স্বাক্ষরে সীমন্তিনী তুমি…।’ এখানে নবযুগের যে-পদধ্বনি তা জনাকীর্ণ লাল মাটির বাসিন্দাদের। এরকম প্রায় একই উৎসমুখে একটি ইতিহাসসমৃদ্ধ বিদ্রোহী কৈবর্ত (১৯৬৯) লিখেছিলেন 888sport appsের কথাকার সত্যেন সেন (১৯০৭-৮১)। কৈবর্ত বিদ্রোহের ইতিহাস, দিব্যক যার নায়ক। সেখানে সে সীমিত পরিসরে নায়ক হয়ে ওঠে। লাল মাটি দিব্যকের ইতিহাস নয়। কিন্তু সে রেণু 888sport alternative linkের পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করে দিয়েছে। লেখক বলেন : ‘দীর্ঘস্থায়ী হয়নি কৈবর্ত-রাষ্ট্র। কিন্তু শত শত বছর পরে আগামী পৃথিবীর সূচনা এঁকে দিয়ে গেছে কাল-পুরুষের অক্ষয় পান্ডুলিপিতে। স্বাক্ষর দিয়ে রেখে গেছে গণমানবতার – এই মজে আসা দিবোর দিঘীতে, আর শিলামণ্ডিত জয়স্তম্ভে, দিগবিস্তীর্ণ ভীমের জঙ্গালে। ভবিষ্যতের মানুষের কাছে পূর্বগামীদের প্রেরণা।’ শিলালিপি কিংবা উপনিবেশ থেকে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 888sport live footballদর্শের যে-রেখাটি চিহ্নিত করা যায় তা লাল মাটিতেও অনুল্লেখ্য নয়। ইতিহাসের ছায়ায় এ-কালের পুনর্গঠন। সে-লক্ষ্যে নির্মিত ভাষা। সে-ইতিহাস কীসের? কার? দিব্যক, ভীম, আদিনার সাঁওতালরা, শূদ্রশক্তির উত্থান ঠিক যেমনটা দেশমাতার স্বাধীনতার জন্য রঞ্জনের নেতৃত্বে গণশক্তির উত্থান, উপনিবেশের পরিবর্তনে শেষ পর্যন্ত উঠে আসে জনতার মুষ্টিযোগ চেতনা, সম্রাট ও শ্রেষ্ঠীতে রাজা ও প্রজার ঐক্য আর একইসঙ্গে প্রান্তিক বা নিম্নবর্গের অধিকার চেতনার অভেদ-স্বরূপ – নিজস্ব কৃষ্টির ভেতরে তাদের জয়োল্লাসের অন্তর্লীন চেতনাই ঔপন্যাসিকের সমর্থিত প্রতিপাদ্য। তাই তো লেখক বলেন :
888sport live football শুধু জীবনের প্রতিচ্ছবিই নয় – জীবনের সে অনুপ্রেরণা। বলা হয়েছে ‘Literature is the organ of a nation’ – 888sport live football জাতির মুখপাত্র। জাতিকে যদি জাগাতে হয়, তাহলে সে দায়িত্ব তার 888sport live football গ্রহণ করবে, বিশেষ ভাবে কথা-888sport live football (‘Das Capital’ এর চাইতে এক্ষেত্রে ‘Mother’-এর প্রয়োজন বেশি কারণ মুষ্টিমেয় বুদ্ধিবাদীর বাইরে রয়েছে বিরাট সাধারণ মানব-গোষ্ঠী, ভাব-প্রবণতা মিশ্রিত না হলে নিছক বুদ্ধিবাদ তার পক্ষে দুরাধিগম্য, অন্তত আবেদনহীন) সমস্ত পৃথিবীর যে প্রবঞ্চিত মানব-সংঘ আজ ধন-বণ্টনের যথেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াতে চায়, এদের এই অভিযান, এই আবেদনের বাণী দেবে কে? এই বাণী ঝঙ্কারিত হবে 888sport live footballের মধ্য দিয়ে, 888sport live football গ্রহণ করবে যুগ-জাগরণ লগ্নে চারণ-কবির ব্রতচর্যা।
(উজাগর ১৪২১ : ৬৮ পৃ)
এমন সত্যটি তিনি আরোপ করেননি, আখ্যানের দর্শনে অভিপ্রেত করেছেন। দিব্যকের দিবোর দিঘির দীপস্তম্ভ সম্মিলিত জনতার জয়ধ্বজা। প্রসঙ্গত, দিব্যকের জয় নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আছে ইতিহাসে – সেটি মুখ্য নয়, লেখক শ্রেয়োশক্তির প্রশ্নটিকে গুরুত্ববহ করেন এবং তা বক্ষ্যমাণ করেই বলেন : ‘ঝোড়া হাওয়ার পুরনো অশ্বত্থ-বটের ডালে-পালায় রুদ্র-তান্ত্রিকের জটা দুলে ওঠে। মেঘের ডাকে শোনা যায় তার গুরুগুরু স্বর : তারা আসছে।’ এই লাল মাটির চেতনাশক্তি। লেখকের ভাষার স্বর ও শক্তি সেখানেই চিহ্নিত। বর্ণনার ভেতরে সংকটের সত্য দেখানো, প্রকৃতি-চাঞ্চল্যে ব্যক্তি রঞ্জনের আশা, দ্বন্দ্ব-সংগ্রামের সূত্র নির্ধারিত। ক্রমশ কাহিনির পরত খুলে যায় এবং একে একে ঢুকে পড়ে কুমার বাহাদুর, কালোশশী, আলিমুদ্দি, ক্রু সাহেব প্রমুখ। শেষ পর্যন্ত সংগ্রামী শক্তির জয় 888sport alternative linkে উপলভ্য হয়ে ওঠে।
তিন
পদসঞ্চার নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের তাৎপর্যপূর্ণ রচনা। ইতিহাসের কংকালে নির্ধারিত আখ্যানের এমন বিরল প্রয়োগ বাংলা 888sport live footballে খুব বেশি নেই। কী আছে এতে? ডি-মেলো, ডি-কুনহা, গঞ্জালো এঁরা কারা? ভাস্কো-ডা-গামার কালের কথা। এ নিয়ে বলা হচ্ছে : ‘ইউরোপীয় জাতিগুলোর মধ্যে পর্তুগিজরাই সর্বপ্রথম বাংলায় বসতি স্থাপন করেছিল। বাংলায় পর্তুগিজরা যেসব ব্যবসাকেন্দ্র গড়ে তুলেছিল সেসব জায়গাতে অথবা তার আশেপাশেই পরবর্তীকালে আসা ইউরোপীয় জাতিগুলো তাদেরকে প্রতিষ্ঠা করেছে। পর্তুগিজরা এককালে বাংলায় যে প্রভাব বিস্তার করেছিল তা এখনও নীরবে বাংলায় বয়ে চলেছে।’ (অর্ণব ২০১৮ : ১৯) ‘পদসঞ্চার 888sport alternative link ভারতের শান্ত নিরীহ বুকের ওপর সাম্রাজ্যবাদের প্রথম পদক্ষেপের চিত্র ধরে রেখেছে।’ 888sport alternative linkটি পুনর্গঠিত ইউরোপীয় শক্তির প্রথম ভারত পদার্পণের কাহিনিতে – ‘বহুকাল আগে কালিকট বন্দরে ভাস্কো-ডা-গামার অট্টহাসির মতো সেই কামানের আওয়াজ ছড়িয়ে পড়লো পুব থেকে পশ্চিমে, উত্তর থেকে দক্ষিণে। বাঙলার পথঘাট পাহাড় নদী বন-বনান্তর পার হয়ে সেই শব্দ ভেসে চললো ইতিহাসের দিগন্তে।’ একপ্রকার দ্বন্দ্বময় তরঙ্গে আরব বণিকদের সঙ্গে বাতচিৎ, উত্তাপও। আশঙ্কা ও ভয় দিয়ে গড়া 888sport alternative linkের প্লট। মুসলিম আর পর্তুগিজ দ্বন্দ্বে নিষ্ঠুর হত্যা আর প্রতিশোধ কালিকট বন্দরে :
অমানুষিক কণ্ঠে হেসে উঠল পর্তুগীজ সেনাপতি ভাস্কো-দা-গামা। সেই হাসির শব্দেই যেন কামানের একটা অগ্নিপিণ্ড ছুটে গিয়ে সেই মসজিদের উঁচু একটা মিনারকে আঘাত করল। বণিকদের প্রবীণ নেতা দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানে। তাঁর ছিন্ন দীর্ণ দেহটাকে নিয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ মিনারের চূড়ো খসে পড়ল সমুদ্রের জলে।
অন্ধকার কাঁপিয়ে আর একবার অট্টহাসি করল ভাস্কো-ডা-গামা। কোথা থেকে জেগে উঠল একটা চকিত ঝড়ো হাওয়া – হাহাকার করে উঠলো দারুচিনি আর এলালতার বন। আর আকাশের পুঞ্জিত মেঘে বিকীর্ণ হল খর-বিদ্যুতের অসিধারা – যেন বিধ্বস্ত মূর-প্রতিষ্ঠার ভগ্ন দূর্গে অবারিত হল আর এক নতুন শক্তির তোরণ দ্বার।
সময়টা ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম ভাগ। চাই ক্রিশ্চান, চাই মসলা – এই আজ্ঞায় পর্তুগিজরা কালিকট বন্দরে পৌঁছায়। ‘নতুন দেশ চাই – নতুন পৃথিবীর অধিকার।’ – এ লক্ষ্যে আলমিডার জয়। শুকনা লংকা, মোম, আদা, মোম, লাক্ষা, আদা, হলুদ – বিক্রি করবেন শঙ্খ দত্ত। শঙ্খ দত্তের-সোম দেবের সাক্ষাৎ আর চট্টগ্রামে ক্রমশ বাণিজ্য-তরীতে ডি-মেলোর আগমন। স্বপ্নে পোর্টো গ্যান্ডি চট্টগ্রাম। সিলভিয়া কোয়েলহো, ডি মেলো, গঞ্জালো প্রভৃতির বাংলা আগমনের চেষ্টা। প্রেরণা ‘লুসিয়াদাস্’। গোয়ার শাসনকর্তা নুনো-ডি-কুনহোর উপঢৌকন গ্রহণ করেন না চকোরিয়ার নবাব। পরে তাদের বন্দি করে। 888sport alternative linkে রক্ষণশীল সোম দেব আর শঙ্খ দত্ত সমান্তরালে অন্য কাহিনি হলেও হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-বৈষ্ণব সমন্বয়ী প্রবাহে পর্তুগিজ অনুপ্রবেশ, ক্রিশ্চিয়ান ধর্ম ও বাণিজ্য বিস্তারের এক উগ্র ও নব-অভিযান পদচিহ্নে সময়ের তুখোড় ইতিহাসকে অনুস্যূত করে। ‘ইতিহাসের যে আশ্চর্য সন্ধিক্ষণে পর্তুগীজদের গৌড়বঙ্গে পদার্পণ আর তার একটি বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক মূল্য আছে’ – সেটি এ-888sport alternative linkে গুরুত্বপূর্ণ।
সপ্তগ্রামের বণিক শঙ্খ দত্ত চট্টগ্রাম হয়ে দক্ষিণ পাটনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন। তখন পর্তুগিজ হার্মাদের হাতে পড়েন। দেখলেন টুপিপরা পর্তুগিজরা মুসলিম বণিকদের আক্রমণ শুধু নয়, ধ্বংস করার তৎপরতায় লিপ্ত। যেভাবে হিন্দু বৌদ্ধদের বা মুসলিম হিন্দুদের সব কেড়ে নিয়েছে। বলা হচ্ছে, এবার মুসলমানদের পর কায়েম হবে হিন্দুরাজ। কিন্তু রাজশেখর এর অর্থ বুঝতে পারে না। মুসলমান-হিন্দু যে-বিতাড়নই হোক তা সমর্থনযোগ্য নয়। তবু কন্যা সুপর্ণর কারণেই গুরুর আদেশকে মান্য করে। শঙ্খ দত্ত বণিক হিসেবে বোঝে, আরব-পর্তুগিজ পাশাপাশি বাণিজ্য করলে তার লাভই হবে। কিন্তু জগন্নাথ মন্দিরের কাছে আশীর্বাদ নিতে গেলে তার চোখ খুলে যায়। ‘হৃতা’ শম্পার নিরাভরণ-নৃত্য তাকে বিহ্বল করে। গোপন সাক্ষাৎ ঘটে। কিন্তু বাণিজ্যদস্যুদের হাতে সর্বস্ব হারাতে হয় শঙ্খ দত্তকে। শম্পার যে ধর্মীয় কারাগার সেখানে সামন্ত ধর্মীয় ভোগ-আচার আর উন্মত্ত আর্থনীতিক ভোগ কিছুই তো এ সমাজ-কাঠামোয় সুস্থ নয় – ব্যবসায়ীরা শুধু স্বার্থ আর লোভসর্বস্ব – বস্তুর বাইরের খোলসের রূপান্তর ঘটায় – ধর্ম-রাজনীতির আড়ালে যে কর্তৃত্ব আর অশিক্ষা, সংস্কারের বেড়াজালে তা ফুরোয় না। আর 888sport alternative linkে তার প্রমাণ হয়ে আসে শম্পার সন্ন্যাসীর বেশ – 888sport alternative linkের শেষে দৃশ্যমান হয়েছে : ‘সন্ন্যাসিনীদের মধ্যে তাকে আলাদা করে চেনা যাচ্ছে না আর। শঙ্খ দত্ত একবার তাকাল আকাশের দিকে। কত দূরে আকাশ! তার মেঘ তার নক্ষত্র তার ইন্দ্রধনু! সে আকাশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা যায়, কিন্তু তাকে স্পর্শও করা যায় না।’ ক্রমশ তাদের সবকিছু হস্তচ্যুত হয়, কারণ সামন্ত মনোবৃত্তি। ‘সামন্ততন্ত্রের ভোগবিলাসিতা, ভোগোন্মত্ততা, মূঢ় অহংকার, বংশ-পরম্পরায় স্থায়ী ক্ষমতা ভোগের জড়তা, অদূরদর্শিতা থেকেও গূঢ় কারণের সন্ধানে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় পেয়েছেন মার্কসীয় বস্তুবাদ ও অর্থনীতি ঘটিত বীক্ষায়। উৎপাদন-সম্পর্কের সাথে জড়িত অর্থনীতি এক নিত্য সচল প্রক্রিয়া, নিরন্তর মূল্যমানের রূপান্তর তার স্বধর্ম। তাকে উৎপাদন সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করে গচ্ছিত করলে, মোহবশত তাকে কুক্ষিগত করে রাখতে চাইলে তাকে হারাতে হয়। সামন্ততন্ত্র তার সামন্ত রাজৈশ্বর্যকে কুক্ষিগত করেছিল মন্দির নির্মাণে, দেহসম্ভোগের পঙ্কে, ঐশ্বর্যকে মন্দির গাত্রে মিথুনমূর্তিতে কিংবা ভোগকুণ্ডের বিলাসে বৈভবে বন্দি বা অপচয় করে কাল্পনিক আদর্শের হাতে সঁপে দিয়ে লাভালাভের মূল্যমানের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকে সম্পূর্ণরূপে ভুলে বসেছিল। ফলস্বরূপ ভারতীয় সামন্ততন্ত্র আত্মরক্ষায় হয়েছে অসমর্থ। এই একই ভুল করে বসেছে 888sport alternative linkের নায়ক বণিক শঙ্খ দত্ত।’ [উজাগর, ১৪২১, ১২৮] বণিক রাজশেখর অর্থ-বিত্তে বানিয়েছেন মন্দির, কন্যা সুপর্ণকে নিয়ে তিনি শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠার আজ্ঞা নিয়ে এসেছেন সোম দেবের কাছে। শম্পার পরে সুপর্ণ শঙ্খ দত্তের অন্য মাত্রা। গঞ্জালেসের বলিদানের পর সুপর্ণ মূলত প্রতীকী সামর্থ্য অর্জন করে। ষোড়শ শতকের সমন্বয়ী ধর্মের বীক্ষণে সে মূর্তমান। এ এক চমৎকার দার্শনিক উদ্ভাসন লেখকের। ষোড়শ শতকে আলাউদ্দিন হুসেন শাহ আর শ্রীচৈতন্যদেবের যে দুর্মর মেলবন্ধন – সে এক মাহেন্দ্রক্ষণ। বস্তুত, ‘ইসলামের আবির্ভাবকে যাঁরা বিপর্যয় মনে করেছিল চৈতন্য রেনেসাঁ ঠেকাতে না পেরে তাঁরাই পর্তুগীজদের আগমনকে শুভক্ষণ মনে করে সদ্য জাগ্রত বাঙালির সমাজ ও সংস্কৃতিতে একটা অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা তৈরি করে। তার সঙ্গে যুক্ত হয় হুসেন শাহের উত্তরাধিকারীদের আত্ম-সংঘাত।’ (পূর্বোক্ত, ১৩২) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় দেখাতে চান, পর্তুগিজ বাণিজ্যযাত্রার সাফল্যের মূলে রয়েছে এদেশের শাসনকর্তাদের অন্তর্ঘাতমূলক বিদ্বেষ। গৌড়াধিপতি সামন্ত মামুদ শাহ এ অন্তর্ঘাতের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে। যিনি ফিরোজ শাহের রক্তাক্ত সিংহাসনের পথে রাজক্ষমতায় এসেছেন। মোঘল রাজদরবারে এ-কোন্দল অনেক পুরনো। বাদশাহ আকবরের সমন্বয় ধর্মে তা নিবৃত্ত হয়নি, দিল্লীশ্বর শাজাহানের পুত্রদের হানাহানিতেও কিছু হয়নি – এ-অন্তর্কলহের হতাশার চিত্র তৈরি করেন লেখক। যেখানে পর্তুগিজ বাণিজ্য এক একটি কুঠি নির্মাণই নয়, সাম্রাজ্য বিস্তারের সাফল্য অর্জন করেছে। সেজন্য ত্যাগ আর রক্তক্ষয় তাদের হলেও বিজয় তাদের দুর্লক্ষ্য হয়নি।
পদসঞ্চার সমাজ-ইতিহাসের জড়ানো-প্যাঁচানো জটিল ইতিহাস। তাতে জ্ঞান সৃজন করেছেন লেখক। এতে রূপায়িত হয়েছে বিদ্যমান ধর্মীয় বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসা শঙ্খ দত্তের মতো নায়কোচিত চরিত্র – যে-প্রশ্ন তুলেছে ধর্মীয় সামন্ত বা স্থায়ী কর্তৃত্ববাদী কূপমণ্ডূক মৌলবাদের বিরুদ্ধে আর অন্যদিকে ষোড়শ শতকের গৌড় ইতিহাসের অন্তর্কলহে জর্জরিত সিংহাসনের ভোগবাদী উল্লাস। ঔপন্যাসিক একটি সময়ের গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ দেওয়াই শুধু নয়, ইউরোপীয় বণিকবৃত্তির প্রারম্ভিক পর্বটির ইঙ্গিত করেছেন – যেখানে সাম্রাজ্যবাদের বীজ উপ্ত হয়েছিল। সামন্ত শাসনের বিপরীতে গড়ে উঠেছিল ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদ। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর সময়ের বিশ্বযুদ্ধকে দেখেছেন। অক্ষ ও মৈত্রী শক্তির দ্বৈরথে শতাব্দীর সমান বয়সী মানুষের স্বরূপচিহ্ন খুঁজে পেয়ে শেষ পর্যন্ত সমাজতন্ত্র তথা মার্কসবাদে আস্থা জ্ঞাপন করেছেন। বিষয়গুলো সমাজ-ইতিহাসের বাঁকে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করে, তার উত্তরও অস্পষ্ট নয় – যেমন মহাপ্রভু চৈতন্যধর্ম কী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল – সেটি পদচিহ্নর তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত। ঔপন্যাসিক নিছক ভাষা গড়েননি, ওই নিষ্পিষ্ট ইতিহাসের জন্য মামুদ শাহকে চিহ্নিত করতে গিয়ে তার রিয়েলিটিতে ব্যবহার করেন ইল্যুউসিভ আঙ্গিক :
মামুদ শাহর খোলা জানালা দিয়ে পড়া এক ঝলক চাঁদের আলো যেন ফিরোজের মূর্তিতে পরিণত হয়। একটা তীক্ষ্ণধার ছোরা হাতে নিয়ে সে যেন এগোতে থাকে মামুদ শা-র দিকে – তার দুটো চোখ নিষ্ঠুর হিংসায় দুখানা হীরের মতো ঝকঝক করে ওঠে।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভাষাদর্শ নিয়ে আলাদা টেক্সট তৈরি হতে পারে। সেটি তাঁর 888sport alternative link আলোচনার জন্য জরুরিও। কারণ, যে-মহাকাব্যিক 888sport alternative linkের প্লট তিনি সমাজ-ইতিহাসের বৃত্তে গড়ে নিয়েছেন তা দাঁড়িয়ে আছে নির্ধারিত ভাষারীতি দার্শনিক পরিপ্রেক্ষিতে। সে-বিচার 888sport alternative linkের গুণ নির্ধারণের জন্য যেমন জরুরি, তেমনি লেখকসত্তা যাচাইয়ের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
চার
সমাজ ও ইতিহাস-চেতনা প্রসঙ্গে সম্রাট ও শ্রেষ্ঠী গুরুত্বপূর্ণ। সরল বিবেচনায়, সামন্ত ব্যবস্থার পতন আর বিপরীতে পুঁজির উত্থানের বিষয়টি স্পষ্ট। দুটো ব্যবস্থার দুজন প্রতিনিধি। কুমার বিশ্বনাথ আর হরিশরণ লালা। আর স্থান দুটি যথাক্রমে কুমারদহ আর নবীপুর বন্দর। ইতিহাসের বাঁকে মুষড়ে পড়েছে একটি একটি ব্যবস্থার প্রতিনিধিরা। তাই তো ‘শ্রেষ্ঠীর লোভ-লোলুপ বাহুতে রাজদণ্ড তুলে দিয়ে সম্রাট চলে গেল প্রব্রজ্যা নিয়ে, তার পদধ্বনি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে বি888sport sign up bonusর পরপারে মিলিয়ে যাচ্ছে।’ কথামুখের মধ্যে পুরো কাহিনির ইতিবৃত্ত বয়ান করেন লেখক। আখ্যানের মুখপাত আলকাপ উৎসবকে ঘিরে। কুমারদহের জমিদার বিশ্বনাথের বিপরীতে নবীপুরে লালাজীর যে বিশাল পুঁজির ব্যবসা তা নিয়ে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব। এর পূর্বাপার ইতিহাস চাঞ্চল্যময়। সেই মুসলিম শাসন জারির পর থেকে – এখন যার শেষ প্রতিনিধি কুমার বিশ্বনাথ। আর এই বিশ্বনাথের বংশে প্রভুত্বের ছায়ায় অনুগত চাকর হিসেবে লালার উত্থান। গাটরি কাপড়ের ব্যবসা অতঃপর ক্রমশ নবীপুর বন্দরের সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তারও বৃদ্ধি। এ মূল কাহিনির ভেতরে ক্রমশ অনেকরকম চরিত্র উঠে এসেছে। কেশরলাল, বৈজু, ভানী, কালীবিলাস, হাবুমুচি, অনেকেই। আর আছে পতিত জমিদারের পত্নী অপর্ণা। জমাটবদ্ধ কাহিনি। সিরিয়াস তার
সমাজ-ইতিহাস। কেন্দ্র সেনাদিঘির মেলা। এই মেলা নিয়েই জমিদারের বিরুদ্ধে লালাজীর প্রতিশোধ। শত্রু-মিত্র, ক্রোধ-অহংকার, গর্ব-উপেক্ষা সর্বোপরি আক্রোশের উত্তাপে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের রক্তক্ষয় আর কালস্রোতে জমিদারের পতন লালাজীর উত্থান হলেও লেখক অপর্ণার ভেতর দিয়ে একপ্রকার প্রজা ও জমিদারকে একরেখায় মিলিয়ে দিয়েছেন। কার্যত, জমিদার যে প্রজার অনুগত সে-তত্ত্বদর্শনটি আরোপ করেন লেখক। কিন্তু তার চেয়েও বড় যেটি, সমাজ-ইতিহাসের স্বরূপটি সর্বস্তরের চরিত্রের ভেতর দিয়ে লেখক প্রস্ফুটিত করতে সমর্থ হয়েছেন। উপনিবেশের মতোই বিস্তার নেই কিন্তু জান্তব ইতিহাস নিষ্কণ্টকরূপে সমাজের নাড়িতে গেঁথে দিতে পেরেছেন লেখক। সে-বিবরণও বেশ আকর্ষণীয় :
লোভনীয় বসবার ঘরটি। লালাজীর গদী থেকে একেবারে আলাদা। গদীর প্রয়োজন ব্যবসায়িক, তার ব্যবহার স্থহূল ও সর্বজনীন। কিন্তু এ একটা ভিন্ন জগৎ। কাচের শেল্ফে বাঁধানো দামী ইংরেজি, হিন্দি, বাংলা বই ঝকমক করছে। সোফার ওপর হরিণ আর চিতাবাঘের চামড়া বিছানো, লালাজী নিজের হাতেই এদের শিকার করেছেন
টেরাই-এর জঙ্গল থেকে। কালো আবলুশ কাঠের ফ্রেমে দামী ক্লক। মেহগনীর টেবিলে ফুলের তোড়া।
বংশপরম্পরায় ‘হয়ে-ওঠা’র ইতিবৃত্ত গড়ে ওঠে – যে-রক্তবীজে জমিদার আর পুঁজিপতি চিহ্নিত কিংবা তার দ্বন্দ্ব নির্ধারিত তা নির্ধারিত ভাষারীতিতেই গড়ে দেন, খুঁজে বের করেন অহং আর অহংকারের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম তন্ত্রী। যেমন পুঁজির প্রতাপে ‘হয়তো কুমারদহকে গ্রাস করলেও চলে। হয়তো এমনিতেই আর একটা নতুন গঞ্জ প্রতিষ্ঠা করা যায় – নাম দেওয়া যায় হরিশরণপুর। কিন্তু না – ওই কুমারদহকেই তাঁর চাই। ওরই মৃতস্তূপের ওপর গড়ে উঠবে তাঁর জয়সৌধ, তাঁর কীর্তির গৌরবধ্বজা।’ ক্রোধের পরিমাপটা আরো বুঝে নেওয়া যায় এরকম
উদ্ধৃতিতে : ‘মোটকথা আত্মপ্রতিষ্ঠা চাই। এই কুমারদহকে ধ্বংস করতে হবে – দেবীকোট-কাজবংশকে লুটিয়ে দিতে হবে ধুলোর নীচে। ইতিহাসের পাতা থেকে, জনশ্রুতি থেকে, কুমারদহের আকারহীন, অর্থহীন শূন্যদম্ভ থেকে কথাটাকেই নিঃশেষ করে মুছে দিতে হবে যে রাঘবেন্দ্র রায়বর্মার ঘোড়ার সহিস ছিল রামসুন্দর লালা।’ সে-প্রতিশোধের হাত থেকে তেজি ঘোড়াটিও রক্ষা পায়নি। 888sport alternative link পরিণতি পায় লালাজীর প্রতিশোধের বহিঃপ্রকাশ রংমহল আক্রমণের ভেতর দিয়ে। সে অর্থের বিনিময়ে গভর্নর লাট থেকে শুরু করে কামারদেরও ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু লেখকের মেসেজের কেন্দ্রে থাকে জমিদারপত্নী সুপর্ণা। শেষ পর্যন্ত তারই জয় দেখান লেখক। ইতিহাসের কালসাক্ষ্য এ-888sport alternative linkের একমাত্র নির্যাস। কিন্তু এই লক্ষ্যে ও উপায় নির্ধারণে নিম্নবর্গীয় কিছু চরিত্রের চমৎকার উদ্ভাস ঘটাতে সমর্থ হন লেখক। বিশেষ করে আলকাপ গানের দলের, কামারের, জমিদারির ঐতিহ্যে অনুগত নতজানু কিছু সাধারণ প্রজাদের অকৃত্রিম কর্মপ্রয়াস। যেখানে জীবনের
সাধ-স্বপ্ন ও সাধনার টোটেম চিত্রিত। এরকম লেখকের মন্দ্রমুখর (১৯৪৫) 888sport alternative linkেও ‘অর্ধনিদ্রিত শহরের অর্ধনিদ্রিত মানব-সমাজে’র নবজাগরণের কাহিনি থাকে, আর স্বাধীনতাপিপাসু মানুষের আকাঙ্ক্ষার কথা যখন বলা হয় তখন ‘বাহে’ সম্প্রদায়ের দেহাতি মানুষ কিংবা দরিদ্র রাজবংশীরাও পিছিয়ে থাকে না। এক সামগ্রিক ছবিই তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্রোতের সঙ্গে (১৯৭৯) সমাজ ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রচিত। ১৯৬৭ সালের ক্ষমতাসীন যুক্তফ্রন্ট যে আশা ও আশাভঙ্গের দ্বন্দ্ব তৈরি করে তার সঙ্গে মিশে যায় প্রবীর-সাবিত্রীর মতো চরিত্র। কলধ্বনি (১৯৬৪) 888sport alternative linkের সৌরীন-এণাক্ষীর জটিল রসায়ন এক অর্থে পুরো আখ্যানে জমিয়ে তোলে সামন্ততান্ত্রিক মনোভাবের করাল থাবার আনখাগ্র চিহ্ন। 888sport alternative link হিসেবে এগুলো তেমন তাৎপর্যপূর্ণ না হলেও সমাজ বাস্তবতার ইঙ্গিতটি সাফল্যজনকভাবেই পাঠকের কাছে প্রকাশিত হয়। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় প্রেমের 888sport alternative link লিখেছেন। সে-প্রেম একইসঙ্গে অবসাদ ও রোমান্টিকতায় মোড়ানো। নগর মধ্যবিত্তের সহজাত চাপ ও আবেগে তা তীব্রতাজর্জর। সেখানে তাঁর আঙ্গিক আলাদা। এ-ধরনের 888sport alternative link স্বর্ণ সীতা (১৯৪৬), রোমান্স (১৯৪৭), নিশিযাপন (১৯৫২), কৃষ্ণচূড়া (১৯৫৫), ভস্মপুতুল (১৯৬০)। তবে এসব 888sport alternative linkে সমাজদ্বন্দ্ব গুরুত্বপূর্ণ। নিছক চটকদার প্রেমের 888sport alternative link তাঁর নেই। প্রসঙ্গত, রাজনীতিও নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 888sport alternative linkের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; প্রচ্ছন্ন বা প্রত্যক্ষভাবে তিনি রাজনৈতিক 888sport alternative link লিখেছেন। যেমন : অসহযোগ ও সশস্ত্র আন্দোলনের পটভূমিতে লেখা তিমির-তীর্থ (১৯৪৪), দেশভাগ নিয়ে লেখা বিদিশা (১৯৫২)। এছাড়া নিছক সমাজবৃত্তান্ত নিয়ে নতুন তোরণ (১৯৬৮), আলোকপর্ণার (১৯৬৯) মতো 888sport alternative linkও লিখেছেন তিনি। তাঁর 888sport live footballাদর্শ সম্পর্কে তিনি বলেছেন : ‘যে কোনো দৃষ্টিমান ব্যক্তিকে আজ এটা স্বীকার করতেই হবে যে ‘অংশত’ 888sport live footballে আদর্শবাদের একান্ত প্রয়োজন আছে এবং পূর্বকথিত বাস্তববাদীর দল এই আদর্শকে অচেতন বা অবচেতনভাবে পালন করে চলেছেন। যদি না করতেন, তা হলে তাদের 888sport live footballে প্রাণ থাকত না, শক্তি থাকত না।’
পাঁচ
ঔপন্যাসিক এক আর্কেটাইপ-888sport app download for androidরেখার চিহ্ন। তাঁর লেখায় অঞ্চল ও জনপদ চাঞ্চল্যে হয় শিরোধার্য । তাতে দর্শন গড়ে ওঠে। লেখা হয় উপনিবেশের পরের উপনিবেশ বা অন্য পদক্ষেপের পদচিহ্ন। এ-প্রবণতার বক্ষ্যমাণ লেখক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর অনেক আখ্যানের অকুস্তল সমাজ-ইতিহাস। এ-ইতিহাস দ্বন্দ্বশীল ও পরিবর্তমান চেতনা। বারো খণ্ডের রচনাবলিতে রাজনীতির ইতিহাস, ইতিহাসের রাজনীতি বা সমাজ-ইতিহাসের দ্বৈরথ নিয়ে কথাকারের মনন সৃজিত। তাতে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে তটস্থ দৃষ্টিকোণ (point of view)। এ লক্ষ্যে আমরা মনে করি, সমাজ ও ইতিহাসের সর্বৈব গুণ সেটি নয়, বরং তা চালিকাশক্তি – বস্তুত অর্থে এমনটা লেখকের দায় ও দর্শনও। এ-আলোচনায় এই ইতিহাস-কাঠামোয় গড়া ঘূর্ণমান জনপদকে তুলে ধরার প্রয়াস চলেছে, যা 888sport alternative link কাঠামোর স্বতঃশ্চল স্বীকারোক্তিকে নবতর বীক্ষা দেয়। লেখকের স্বরূপ-স্বাতন্ত্র্যও নির্ণীত হয়।
উৎসপঞ্জি
শানজিদ অর্ণব [অনূ], (২০১৮), হিস্ট্রি অব দ্য পর্তুগিজ ইন বেঙ্গল, 888sport app, দিব্যপ্রকাশ।
অধ্যাপক জগদীশ ভট্টাচার্য [সম্পাদিত] (১৪২২), নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প, কলকাতা, প্রকাশ ভবন।
রণেশ দাশগুপ্ত (১৩৬৬), 888sport alternative linkের 888sport live chatরূপ, 888sport app, ইস্ট বেঙ্গল পাবলিশার্স।
Scholes & Kellogg (1966), The Nature of Narrative, United States of America, Oxford University Press, 1966.
তোফায়েল আহমদ (১৯৯৪), লোক888sport live chatের ভুবনে, 888sport app, বাংলা একাডেমি।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.