888sport promo codeর জগৎ ও অন্তর্জগতে নৈঃসঙ্গ্য চেতনা    

ইশরাত তানিয়া

জীবন হতে পারে বিশাল মহাসাগরে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো। একের পর এক বিপর্যয়ের ঢেউ এসে যেখানে আছড়ে পড়ে। ল-ভ- করে দিয়ে যায়, জীবনের যা কিছু একান্ত, একমাত্র। অতলে তলিয়ে তারপর আবারো জেগে ওঠা। সে-জীবনের সাদৃশ্যে যদি কোনো মধ্যবয়সী 888sport promo codeমুখ চিত্রিত হয় তবে সে-মুখাবয়ব রাবেয়ার। বিচ্ছিন্ন এক দ্বীপের মতোই সে ভাসছে। বেঁচে থাকার অনন্ত লড়াইয়ে রাবেয়ার দুঃসহ 888sport sign up bonusভারে একদিকে সে যেমন শোকাতুর, তেমনি অপরিমেয় আত্মশক্তির জ্বালানি জুগিয়ে দেয় কিছু সুখ888sport sign up bonus।

নিঃশব্দতার ভাঙচুর 888sport alternative link রাবেয়ার বেঁচে থাকার আলেখ্য। শহরের হাজারো বিচ্ছিন্ন মানুষের একজন রাবেয়া। রাবেয়ার প্রাত্যহিক জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ, দুঃসহ 888sport sign up bonus আর বেঁচে থাকার লড়াই এ-888sport alternative linkের মূল প্রতিপাদ্য। আনোয়ারা সৈয়দ হক পেশাগতভাবে মনোবিশ্লেষক। ফলে তিনি যখন কথা888sport live football রচনা করেন, নিশ্চিতভাবেই সেটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয়ে ওঠে। পাঠকের মনোজাগতিক এমন, কিছু অভিজ্ঞতা হয় যা দুর্গম এবং অচেনা পথ পরি888sport slot gameতুল্য। জীবনস্পৃহা, মৃত্যুস্পৃহা, লিবিডো, এমনকি ইলেকট্রা নয়, ‘মেয়েদের ইডিপাস’ কমপেস্নক্সের মতো মনো888sport apkের পারিভাষিক শব্দগুলো তিনি ব্যবহার করেছেন। চলার পথে চমকিত আর আলোড়িত হয়ে পাঠক বুঝে নেন, এই বাস্তব জীবন রাবেয়াকে মানসিক সুস্থতা দেবে না। এই জীবনে রাবেয়া দুশ্চিন্তা থেকে অব্যাহতি পাবে না।
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা-শঙ্কা, ধর্ষণ-নিপীড়নের ভয় 888sport promo codeর স্বাভাবিক জীবনযাপনেরই এক অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত লালসা আর হয়রানির আতঙ্ক নিয়ে একজন 888sport promo codeর যাপিত জীবন সমস্ত 888sport promo codeর বাস্তবতা হয়ে এ-888sport alternative linkে প্রতিফলিত হয়েছে। সেখানেই 888sport alternative link হিসেবে নিঃশব্দতার ভাঙচুর একান্তভাবে জীবনমুখী।

888sport alternative linkের কালপর্ব স্বাধীনতা-পরবর্তী কোনো এক জেনারেলের শাসনকাল। একটা পুরনো দোতলা বাড়িতে কয়েক ঘর ভাড়াটে পরিবার থাকে। এক রুম ভাড়া নিয়ে চৌত্রিশ বছর বয়সী রাবেয়া সেখানে একলা থাকে। বাড়িটা পুরনো। এলোমেলো নকশা, খুপরি ঘর, সরু চাতাল, উঁচুনিচু সিঁড়ি, অজস্র অন্ধকার কুলুঙ্গি, অসংখ্য ঘুলঘুলিসহ মোটা মোটা থাম রাবেয়াকে এক হিন্দু প্রপিতামহকে 888sport app download for android করিয়ে দেয়। কুলুঙ্গিতে লেগে থাকা শেষ প্রদীপ জ্বালানোর কালি রাবেয়াকে অন্যমনস্ক করে। কারা করেছিল এই দেশভাগ? কী লাভ হলো? বিহারিরা হানাদার বাহিনীর সাগরেদ হলো। রাবেয়া তখন রোকেয়া হলের ছাত্রী। নয় মাসের যুদ্ধে আত্মীয়-পরিজনহীন, অর্থহীন, সম্বলহীন কুমারী যুবতী রাবেয়া বারবার ঠাঁইনাড়া হয়েছে।

সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করে রাবেয়া। একটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য পড়ালেখায় মগ্ন। রাবেয়া স্বপ্নহীন নয়। ওর একান্ত ইচ্ছা এমফিল শেষ করে ইংল্যান্ডে পিএইচ.ডি করার। দিন-রাত সে লাইব্রেরি আর বাড়িতে মুখ গুঁজে পড়ালেখা করে। স্নায়ুকোষগুলো পীড়নে অস্থির হলেও রাবেয়া থামে না। পড়ার ফাঁকে সে টের পায়, অবিরাম কর্মপ্রবাহ চলছে বাইরের জগতে। সেই কর্মপ্রবাহে হাসি, কান্না, উৎসাহ আর ভালোবাসা মিশে আছে। এসব থেকে রাবেয়ার অবস্থান বহুদূরে। সে টের পায়, কেয়ার স্বামী ইউনুস তালুকদার তাকে দুচোখ দিয়ে চেটে দেয়। অথচ সে কিছু বলতে পারে না। প্রতিবাদ করতে পারে না। খালাত বোনের স্বামী এবং পরবর্তীকালে সহকর্মী কিবরিয়া নৈকট্য কামনা করলে রাবেয়া বিস্মিত হয়। উপলব্ধি করে, এই সমাজে বিবাহিত পুরুষ অঙ্গীকারবদ্ধ নয়, বিশ্বস্ততার প্রতি তার কোনো শপথ নেই।

ঈদের ছুটিতে সবাই বাড়ি ফিরে গেলে একলা রাবেয়া শূন্য বাড়িটা উপভোগ করে। এই নিস্তব্ধতাকে সে সভ্যতার আরেক রূপ মনে করে। কিন্তু এই নির্জনতাই অতীতকালের কিছু ঘটনা মনে করিয়ে দেয়। ভয়ানক সেই 888sport sign up bonus তাকে বিক্ষিপ্ত করে। তৃতীয় সন্তান প্রসব করার সময় রাবেয়ার মা মরে গেছেন। এক বছর যেতে না যেতেই ঘরে সৎমা আসে। বউ-পাগল বাবা দিন-রাত ঘরের ভেতর স্ত্রীর শয্যায়। নিজের অজান্তেই বাঘের খাঁচা খুলে ফেলেছিল সে। সেখানে মাংসাশী বাঘ ছিল তার বাঘিনিকে নিয়ে ক্রীড়ারত। ঘরে ঢুকে পড়ার জন্য বাবা চড় বসিয়ে দেয় দশ বছরের রাবেয়ার গালে। সেই ক্ষোভ আর অপমান আজো তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। কামুক বাবা এবং সৎমায়ের নগ্ন ঘনিষ্ঠ সে-দৃশ্য রাবেয়ার ব্যক্তিত্বে সৃষ্টি করে আতঙ্কের গভীর ক্ষত। দুঃস্বপ্নে দেখা সৎমায়ের ভাইয়ের লোভাতুর চোখমুখ জনকের মুখ হয়ে যায়। অস্থিরতা খুবলে খায় রাবেয়ার ভেতরটা। সৎমায়ের বিশালাকার ভাইয়ের লোলুপতায় ভীত কিশোরী রাবেয়া রাতে সাত প্যাঁচ শাড়ি জড়িয়ে ঘুমিয়ে থাকত। শাড়ির প্যাঁচ ছাড়া আত্মরক্ষার আর কোনো উপায় ওর জানা নেই। আনোয়ারা সৈয়দ হক এভাবেই এক 888sport promo codeর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জীবনের বহুস্তর দেখার সুযোগ করে দেন পাঠককে।

দুধকলা মাখিয়ে ছোটভাই খোকনকে রাবেয়া ভাত খাইয়ে দিত। বৃষ্টির মধ্যে দু-ভাইবোন হাসাহাসি করত আর উঠানময় ঘুরে বেড়াত। উচ্ছলতায় রাবেয়া আর খোকন ঠিক যেন পথের পাঁচালীর অপু আর দুর্গা। সে-ভাইটিও নির্মম প্রহারের শিকার হতো। কারণ হঠাৎ করেই সে বিছানায় প্রস্রাব করা শুরু করে। এই খোকন একদিন নিঃশেষ হয়ে গেল। সৎমা আর শ্রীদাম মাস্টারের মার খেতে খেতে। এই জীবনে খোকনের বেঁচে থাকার সুযোগ নেই। এই জীবনে রাবেয়ার মানসিক সুস্থতা নেই। শান্তি নেই। খোকনের মৃত্যু রাবেয়ার সবুজ পৃথিবী ধূসর করে দিলো।

888sport sign up bonusর ভিড় ঠেলে কখনো রাবেয়ার মনে পড়ে বাবার দেওয়া শেষ চিঠি। মৃত্যুশয্যায় তিনি কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়েছেন। একবার রাবেয়াকে বাড়ি আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। রাবেয়া বাবার মৃত্যুর পর সেই চিঠি খুলেছিল। চিঠির উত্তর লিখে ড্রয়ারে রেখে দিয়েছিল। পাঠক নেই, চিঠি পড়বেই বা কে? রাবেয়ার চরিত্রের দৃঢ়তা আর সততা সমুজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মৃতপ্রায় বাবার কাছে সে ফিরে যায়নি, ক্ষমা করে দেওয়ার ভনিতা করে শিয়রে দাঁড়ায়নি।

স্নায়ুর চাপ এমনভাবে তাকে জড়িয়ে ধরে যে সামান্য শব্দেও রাবেয়ার মাথা ধরে যায়। আত্মমুখী হতে হতে অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে সে। দরজা খোলা বন্ধের শব্দ তো নয়, এ যেন রাবেয়ার কাছে চড়ক পূজার ঢোল পেটানো। ঝগড়া কই? এ যেন রায়ট। কেয়ার চাল ঝাড়ার শব্দ যেন দেয়ালে হাতুড়ি দিয়ে পেরেক বসানো আর বাথরুমের নল দিয়ে জল পড়া মানে জলপ্রপাত। পাঠক বুঝে নেয়, কীভাবে চারপাশের ঘটনাপ্রবাহে রাবেয়ার মনে সর্বগ্রাসী প্রভাব পড়েছে। এক দীর্ঘমেয়াদি ছাপ রেখে গেছে তার ব্যক্তিত্বে।

 

অন্তর্লোক অন্বেষণ এবং বিশ্লেষণ

কথা888sport live footballিক আনোয়ারা সৈয়দ হক মনো888sport apkের জ্ঞান ও চর্চা প্রয়োগ করে রাবেয়ার চরিত্র নির্মাণ করেছেন। রাবেয়ার চরিত্রটিতে বিচ্ছিন্নতাবোধ এবং নৈঃসঙ্গ্যচেতনাবোধের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। বিশ্বজিৎ ঘোষের বক্তব্য এখানে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, ‘সভ্যতার অভিশাপজীর্ণ সমাজের অভ্যন্তর দ্বন্দ্বশাসিত আধুনিক মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা-অভিশঙ্কা-চিত্তবৈকল্য এবং বহিশ্চাপ-অন্তশ্চাপই ব্যাষ্টিবেদনে সৃষ্টি করে বিচ্ছিন্নতাবোধ।’ আলোচ্য 888sport alternative linkের ঘটনাপ্রবাহ রাবেয়ার এমনই একটি সামাজিক ও মনস্তত্মাত্ত্বিক অবস্থা নির্দেশ করে। সেখানে অস্তিত্বের বিভিন্ন দিক থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে করছে রাবেয়া।

সমাজ888sport apkী মেলভিন সিম্যান তাঁর অন দ্য মিনিং অব অ্যালিয়েনেশন গ্রন্থে বিচ্ছিন্নতার স্বরূপ ব্যাখ্যার জন্য পাঁচটি লক্ষণ শনাক্ত করেছেন – কর্তৃত্বহীনতা (Powerlessness), অর্থহীনতা (Meaninglessness), আদর্শহীনতা (Normallessness), সম্পর্কহীনতা (Isolation) এবং আত্ম-সংযোগহীনতা (Estrangement)। রাবেয়ার সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে উলিস্নখিত পাঁচটি বৈশিষ্ট্যই প্রবলভাবে বিদ্যমান। এই বিচ্ছিন্নতার অনিবার্য ফল নিঃসঙ্গতা। বিচ্ছিন্নতাবোধের কারণেই ব্যক্তিচৈতন্যে জাগ্রত হয় নৈঃসঙ্গ্যচেতনা বা একাকিত্ববোধ। আর এই একাকিত্বের ফল হিসেবে ব্যক্তিচৈতন্যে জন্ম দেয় নস্টালজিয়া বা অতীত 888sport sign up bonusকাতরতা।

নির্দ্বিধায় রাবেয়াকে বিচ্ছিন্নতাপীড়িত মানুষ বলা যায়। এই বিচ্ছিন্নতা তাকে দিয়েছে নিঃসঙ্গতা। একাকিত্বের দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তির প্রচেষ্টায় সে আশ্রয় নেয় নৈরাশ্যের আঁধার গুহায়, 888sport sign up bonusকাতরতায়। ঈদের ছুটিতে বাড়ি একদমই ফাঁকা হয়ে গেল। রাবেয়ার আত্মীয়-পরিজন এমনকি বন্ধুও নেই, তাই উৎসবে তার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। ভিটেমাটি বলেও রাবেয়ার কিছু নেই। ভাই আর বাবা মরে গেছে। সৎমা সম্পত্তি বিক্রি করে তার ভাইয়ের কাছে থাকে। খোকনকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখে সময় সময় আর চিৎকার করে ঘুম ভেঙে খাটে বসে থাকে। নিঃসঙ্গতার ভয়াবহ পরিণতি নৈরাশ্য। বিচ্ছিন্ন রাবেয়া সেই নৈরাশ্যের অতলে ডুবে যায়।

রাবেয়ার অবিবাহিত জীবন নিয়ে প্রশ্ন তোলে 888sport promo codeরাও। বয়সে ছোট রাবেয়ার সহকর্মী সহজ-সরল রেজিনা একদিন এমনও বলে দেয়, শারীরিক সম্পর্কের ভয়ে রাবেয়া বিয়ে করছে না। সমকামী 888sport promo codeরাও বিয়েতে অসম্মত হয়। অপ্রস্ত্তত রাবেয়া নিজেকে সামলে নিয়ে জানায়, এ-ধরনের কোনো সমস্যা তার নেই। রাবেয়া অবাক হয়। ‘এককোষী জীবনের অস্তিত্ব থেকে এই বিলিয়ন কোষী জীবনের অস্তিত্বের ভেতরে যে অযুত, লক্ষ, নিযুত ও কোটি বছরের বর্ষপরিক্রমা হয়েছে তা কি এখনও মুছে ফেলতে পারেনি মানুষের মনের গহিন অন্ধকারে সুপ্ত পশু মনোবৃত্তি?’ অথচ রাবেয়া বিশ্বাস করে, মানুষ প্রকৃতির ভেতর কিছু মহৎ উপাদান দেখতে পায়। সেই উপাদান তার মননে স্বপ্ন তৈরি করে। সেই স্বপ্ন জীবনকে চালিত করে।

এ-888sport alternative link  জুড়ে রাবেয়ার শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা দেখা যায়। পুরনো দোতলা বাড়িটার সব ধরনের শব্দের সঙ্গে রাবেয়ার ঘনিষ্ঠ পরিচয় আছে। বন্ধ দরজার এ-পারে থেকেও রান্নাঘরে কেয়ার ডালে ফোড়ন দেওয়ার শব্দ, স্বামী ইউনুসের সঙ্গে ঝগড়া লাগলে কেয়ার পিঁড়ি ওলটানোর শব্দ, আবুল হোসেনের দক্ষিণমুখী ঘরে বন্ধ দরজার সামনে বাতাসের দাপাদাপি, নিচতলায় বাথরুমে পানি পড়ার শব্দ, এমনকি মতলব আলী ও তার মায়ের গুনগুন কথাবার্তা সবই তার কানে ঢোকে।

সব শব্দই রাবেয়ার চেনা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একটা শব্দকে সে চিনতে পারে না। শব্দটা একবার ঊর্ধ্বমুখী বলের মতো গড়িয়ে চলে এলো। আবার যেন মনে হলো নিচে নেমে যাচ্ছে। একবার মনে হলো মানুষের পায়ের শব্দ নয়, আবার মনে হলো শরীরী, গম্ভীর ও প্রলম্বিত। তবে কি ইউনুস তালুকদার ফিরে এলো? কেঁপে ওঠে রাবেয়া, চোখের মণি সবুজ হয়ে ওঠে ক্রুদ্ধ সায়ামিজ বেড়ালের মতো। হাতে দশ জোড়া হিংস্র নখ গজিয়ে উঠল আত্মরক্ষার জন্য। রাবেয়া জানে ভয় পেলে চলবে না। ‘চিরদিন হোস্টেল, মেস, কর্মজীবী মহিলা সংস্থা ও ভাড়া বাসার নিবাস তার বেদুইন জীবনকে সাহসী করে তুলেছে, বেপরোয়া করেছে বিপদ মোকাবেলায়, হাড়ের ভেতর শক্ত করে তুলেছে মেয়েলি মজ্জা। রাবেয়া ইঞ্চি পরিমাণ দরজা ফাঁক করে তীব্র তীক্ষন স্বরে বিশাল এক হাঁক দিয়ে বলে উঠল – ‘কে ওখানে?’

জীবনটা কি ফার্স না ফ্যালাসি, রাবেয়া ভেবে উত্তর পায় না। স্বপ্ন আর বাস্তবে শেষ পর্যন্ত গোলমেলে একটা কিছু। গন্ধ-বর্ণ-শব্দে, আশা-আনুগত্য-ভালোবাসায়, ঘুমিয়ে-জেগে-কথা বলে, হতাশা-বঞ্চনা-অপ্রাপ্তিতে জীবন যেন এক অনতিক্রম্য স্বপ্ন। হঠাৎ তীব্র ভয়ে আচ্ছন্ন হয় রাবেয়া। বাথরুমের জল যেন ছায়া হয়ে ক্রমশ ওকে ঘিরে ধরে। শ্যাওলাধরা দোতলা থেকে রাবেয়াকে গ্রাস করে নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে শূন্যে। ক্রোধ, কাম, লোভ, ভ-ামি, ধর্ষণের থেকে ক্রমাগত যে দ্বন্দ্ব, ভয়, অস্বস্তি আর দুশ্চিন্তায় রাবেয়ার মনোজগৎ ক্লান্ত হয়ে ওঠে। 888sport alternative linkের শেষ অবধি মানসিকভাবে লড়াই করে গেছে রাবেয়া। সেই অর্থে রাবেয়া সংগ্রামী।

 

888sport alternative linkের 888sport live chatরূপ ও নামকরণের তাৎপর্য

বর্ণনাকৌশলের অভিনবত্বে নিঃশব্দতার ভাঙচুর 888sport alternative linkটি 888sport live chatোত্তীর্ণ হয়েছে। লেখক চৈতন্যপ্রবাহ রীতিতে ব্যক্তি রাবেয়ার গভীর জীবনবোধ এবং অন্তর্লোকের রহস্য অনুসন্ধান করেছেন। উইলিয়াম জেমস তাঁর প্রিন্সিপালস অব সাইকোলজি (১৮৯০) গ্রন্থে ‘স্ট্রিম অব কনশাসনেস’ কথাটি ব্যবহার করেছিলেন একটি জাগ্রত মনের নিরবচ্ছিন্ন ভাবনাপ্রবাহ আর সচেতনতাকে বোঝাতে। অধ্যাপক কবীর চৌধুরী এবং ড. সুধীর চন্দ্র বড়ুয়া এ-প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন – ‘এখন কথাটি আধুনিক গল্প-888sport alternative linkে ব্যবহৃত একটি বর্ণনা পদ্ধতি বা ন্যারেটিভ টেকনিককে বোঝায়। … লেখক এর মাধ্যমে চরিত্রের চেতন ও অর্ধচেতন মনে যেসব স্পষ্ট এবং অস্পষ্ট ভাবনা, অনুভূতি, 888sport sign up bonus ও নানা আপাতবিচ্ছিন্ন অনুষঙ্গ ভেসে ওঠে তার সব কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করেন।’ নিঃশব্দতার ভাঙচুর 888sport alternative linkের ন্যারেটিভ টেকনিক হিসেবে 888sport live footballের এই রীতিকে অর্থাৎ ‘স্ট্রিম অব কনশাসনেস’ ব্যবহার করার কারণে রাবেয়ার টুকরো ভাবনাগুলো উঠে এসেছে কেন্দ্রে। এখানে ঘটনা ও কালের বাস্তব ধারাবাহিকতা ও পারম্পর্য রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নয়। যৌক্তিকতা আর অযৌক্তিকতার বিষয়টিও গুরুত্বহীন। রাবেয়ার চেতনার অমত্মঃশীল প্রবাহে যেমন ধরা পড়ে, ঠিক তেমনটিই বর্ণনায় প্রতিফলিত হয়েছে।

এলিগরি বা রূপকের মাধ্যমে লেখক অত্যন্ত নান্দনিকভাবে, বলা ভালো, কাব্যিক বহিঃপ্রকাশ করে ঘটনা ও পরিবেশ তুলে ধরেছেন। যেমন – ‘কুমিরের চামড়ার মতো রাত ফুটকি কেটে এঁটে বসেছিল চারপাশে।’ কুমিরের চামড়ার কঠিন রুক্ষতা এবং ভয়াবহতা নিয়ে একটি রাতের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আরেকটি উদাহরণ দেওয়া যায় – ‘দুপুরের রোদ যেন হঠাৎ খটখট করে মেজাজ দেখিয়ে উঠেছিল। বস্ত্তত একটা বাতাসের ঝাপটা  রোদটার  মেজাজ চড়িয়ে দিয়েছিল অযথা।’ দুপুরের রোদের তীব্রতাকে মেজাজ প্রতীকের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে। মেজাজ শব্দটি আপাত অর্থকে অতিক্রম করে রোদের প্রখরতাকে অর্থবহ করে তুলেছে।

কল্পনা বা ভাবানুভূতির চিত্রকে আনোয়ারা সৈয়দ হক শব্দবিন্যাসের মাধ্যমে বিভিন্ন আকারে উপস্থাপন করেছেন।
কথা888sport live footballে চিত্রকল্প নির্মাণে তিনি কতটা পারদর্শী নিম্নোক্ত উদাহরণ দুটো পড়লে বোঝা যায় –

১. খাতা ভর্তি বড় বড় গোলাকার চক্র এঁকে চলল সে। … খুব ছোট শূন্য থেকে বৃহৎ শূন্যে মানুষের যে ক্রমাগত যাতায়াত সেই সকল ক্ষুদ্র ও বৃহৎ শূন্যদের একত্র করার দায় পড়েছে যেন রাবেয়ার। একটি ক্ষুদ্র শূন্যের সাথে সে মিলাচ্ছে, তারপর আবার একটি ক্ষুদ্র শূন্যের সাথে  আরও এক বৃহৎ শূন্য। এইভাবে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ বহু শূন্য একত্র হয়ে গড়ে তুলছে এক অভিনব শূন্যতার প্যাটার্ন।

২. দরজার ফাঁক দিয়ে রাবেয়া দেখলো থরে থরে সিঁড়ি নেমে

গেছে নিচে। সিঁড়ির ধাপগুলো পুরনো দিনের হলেও কী মসৃণ লাল সিমেন্টে বাঁধানো। দু’দিকে কালো বর্ডার। ঘরের আলোয় চিকচিক করছে চাতাল। শীতলতার একটা দূরত্বে ধাপগুলো স্থির হয়ে আছে, যেন তারাও এক ধরনের রুদ্ধশ্বাস। কে ওখানে, এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য যেন তারাও উৎকীর্ণ হয়ে আছে।

উদাহরণদুটিতে স্পষ্টতই বোঝা যায়, বিভিন্ন উপাদান মিলে একেকটি সামগ্রিকতা তৈরি করেছে। প্রথম চিত্রকল্পের উদাহরণে যে শূন্যের কথা বলা হয়েছে, সেটা মূলত অংকের শূন্য। প্রায় বৃত্তের মতোই। ছোট-বড় বিভিন্ন শূন্য জুড়ে যাচ্ছে এক এক করে আর একটা শূন্যতার প্যাটার্ন তৈরি করছে। এই দৃশ্যকল্পের বিপরীতে পাঠক ঠিক উপলব্ধি করতে পারে, সমাজে-সংসারে সবাই যেন আমরা মস্ত একটা শূন্যতার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছি। দ্বিতীয় দৃশ্যকল্পে একটা শব্দের উৎস খোঁজা হচ্ছে। সম্পূর্ণ একলা বাড়িতে তীব্র উৎকণ্ঠায় রাবেয়া বোঝার চেষ্টা করছে, শব্দটা আসলে কি মানুষের তৈরি নাকি কোনো বস্ত্তজাত শব্দ। সিঁড়ির শ্বাসরুদ্ধ ধাপগুলো সাবিস্নমিনাল এমন এক প্রভাব তৈরি করে যেটা বোধে অনুরণন তোলে এবং রাবেয়ার প্রবল উদ্বেগ আর ভীতিকে অত্যন্ত স্পষ্ট করে প্রকাশ করে।

নিঃশব্দতার ভাঙচুর নামকরণও তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, 888sport alternative linkের কেন্দ্রীয় চরিত্র রাবেয়া যখন আত্মবিশ্লেষণ করছেন তার চেতনা ক্রিয়াশীল হয়ে উঠছে। ফলে মনোজগতের অবদমন, অনিশ্চয়তা, ভয়, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার যে-স্তব্ধতা সেটা ভেঙে পড়ছে। দ্বিতীয়ত, ‘নিঃশব্দতা’ শব্দটির মধ্যে যেমন শব্দ আছে। ভাঙচুর শব্দটির মধ্যেও শব্দ (আওয়াজ অর্থে) আছে। ভাঙচুর শব্দটির শব্দগত প্রভাবই যেন প্রবলভাবে নিঃশব্দতাকে দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে দিচ্ছে। ফলে নিঃশব্দতার ভাঙচুর নামটি সক্রিয় এবং উপলব্ধিতে পূর্ণতা এনে দিয়েছে।

ভিন্নতা ও নিরীক্ষীয় লেখনীর ক্ষমতাগুণে 888sport alternative linkটি গতিময়, সাফল্যে অত্যুজ্জ্বল এবং 888sport live chatমানে সুষমাম–ত। আনোয়ারা সৈয়দ হক 888sport alternative linkটিতে 888sport promo codeর ভেতর-বাহিরজগতে আলো ফেলে চেনা-অচেনা চরিত্র-বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করেছেন। আখ্যানে এই বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রভাব ও বাস্তব পরিণতি তুলে ধরেছেন। একান্ত অনুভূতির জীবনমুখী এই 888sport alternative link পাঠক অবশ্যই পড়বেন।