ভাবানুবাদ : মঈনুস সুলতান
কবি-পরিচিতি : কবি রুবেন দারিওর জন্ম ১৮৬৭ সালের ১৮ জানুয়ারি নিকারাগুয়ার মেটাপা শহরে। পেশাগতভাবে কবি কিছুকাল যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সঙ্গে। কূটনীতিক হিসেবেও কাজ করেছেন কিছুদিন। হিস্প্যানিক আমেরিকার কাব্য888sport live footballে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে ‘মডার্নিজমো’ বা ‘আধুনিকায়ন’ আন্দোলনের তিনি ছিলেন পুরোধা পুরুষ। 888sport app download apkয় ছন্দ, মাত্রা ও বাক্প্রতিমার আধুনিকায়নে তাঁকে পথিকৃৎ বিবেচনা করা হয়ে থাকে। হিস্প্যানিক কাব্যকলায় তিনি সৃজন করেছেন সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র রীতি, যা আঙ্গিক ও বিষয়বস্ত্তর নিরিখে তৈরি করেছে নতুন এক ট্র্যাডিশন।
চোদ্দো বছর বয়সে রুবেন দারিও 888sport app download apk লিখতে শুরু করেন এবং ‘বালক কবি’ অভিধায় পরিচিত হয়ে ওঠেন। বিষয়বস্ত্ত হিসেবে তাঁর 888sport app download apkয় জীবনভর ফিরে ফিরে আসে ভালোবাসা, বিষণ্ণতা, বীরত্ব ও অভিযানপ্রিয়তা। শুরু থেকেই 888sport app download apkয় তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল আন্তরিক, নিজস্ব এবং কল্পনার চিত্রময় সম্পদে ভরপুর।
১৮৮৬ সালে 888sport slot gameপ্রয়াসী কবি নিকারাগুয়া ত্যাগ করে সফর করেন এল সালভাদর, কোস্টারিকা প্রভৃতি দেশ। অতঃপর চিলিতে কিছুদিনের জন্য থিতু হলে প্রকাশিত হয় গল্প, 888sport app download apk ও স্ক্যাচের সমবায়ে নির্মিত গ্রন্থ আজুল বা নীল। হিস্প্যানিক 888sport app download apkর ভাষ্যকাররা পুস্তকটিকে লাতিন আমেরিকার 888sport live footballে নবতর বার্তা বহনকারী হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। ইউরোপীয় কাব্য-নির্মাণের চলমান ধারায়ও বইটি প্রভাব ফেলে।
১৮৯৩ সালে কবি কলম্বিয়া সরকারের তরফে কূটনীতিক হিসেবে কর্মরত হন আর্জেন্টিনায়। তাঁর পরবর্তী উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে – ১৮৯৬ সালে প্রকাশিত প্রোসাস প্রোফানাস ই অতরস পোয়েমাস বা আশালীন গাথা ও 888sport app 888sport app download apk। এ-গ্রন্থের অভিব্যক্তিতে তিনি ফরাসি কেতার প্রতীকবাদের সংযোজন করে 888sport live football-সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেন। ১৮৯৮ সালে কবি রুবেন দারিও আর্জেন্টিনার সংবাদপত্র লা নাসিওনের প্রতিনিধি হিসেবে ইউরোপ যান, এবং
থিতু হন মূলত প্যারিসে। তাঁর 888sport app download apkর যে-সংকলনকে মাস্টারপিস বিবেচনা করা হয়, তা হচ্ছে ১৯০৫ সালে প্রকাশিত কানতস দে ভিদা ই এসপারানজা বা জীবন ও আশার সংগীত।
১৯১৪ সালে প্রথম মহাযুদ্ধের প্রাক্কালে কবি অসুস্থ ও দারুণভাবে দরিদ্রাবস্থায় চলে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে। পরবর্তীকালে তিনি সম্মানীর বিনিময়ে বক্তৃতাদানের উদ্যোগ নেন। অতঃপর কবি নিউইয়র্ক শহরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে অসুস্থ দেহে ফিরে যান জন্মভূমি নিকারাগুয়ায়। সেখানকার লেওন শহরে ১৯১৬ সালের ৬ ফেব্রম্নয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।
এখানে কবির নির্বাচিত কয়েকটি 888sport app download apkর ভাবানুবাদ উপস্থাপন করা হলো। কিছু আপাত-অপরিচিত শব্দের 888sport app download apk latest versionককৃত টীকা যুক্ত হলো। 888sport app download apkগুলোর তথ্যসূত্র ওয়েবসাইট।
অপঘাতের সম্ভাবনাময় অদৃষ্ট
সুখে আছে বৃক্ষ অতি সামান্য তার অনুভূতি
পাথরকে দেখায় সুখী-সংবেদন নেই তার একবারে,
যদিও ছড়ায় সে বর্ণাঢ্য দ্যুতি;
বেঁচে থাকার চেয়ে
নেই বড় কোনো বেদনা – নেই কোনো দহন,
কোনো বোঝাই ভারী নয় – সচেতন জীবনের চেয়ে
ঘানি টেনে টেনে করে যেতে হয় সহন।
ভবিতব্য সম্পর্কে জ্ঞাত না হয়ে বেঁচে থাকা
পথ খুঁজে না পাওয়া,
কী আছে ভবিষ্যতের গহবরে,
দেহমনে লাগে আতঙ্কের অনিশ্চিত হাওয়া,
এবং আগামী দিনে মৃত্যুবরণ করার ভীতি,
সারা জনমভর বেঁচে থাকার দুর্বিষহ কষ্ট
দুশ্চিন্তার অন্ধকারে সাঁতরানোর রীতি;
চলার পথে যা জানি না আমরা
এমনকী সন্দেহও করিনি কখনো,
আমাদের সাময়িক মাংস-মেদ ও মজ্জা
ধারণ করে আছে যে-সুরাময় শোণিত সঘন;
অমেত্ম্যষ্টিক্রিয়ার উপচার নিয়ে
প্রতীক্ষা করে আছে যে-কবর,
গন্তব্য কোথায় জানতে না পারা – তারপর,
কোথা থেকে এসেছি আমরা
সে-বিষয়েও তিমিরে থাকা!
অদৃষ্টের চিত্রপটে আছে কি অপঘাতের প্রতীক আঁকা?
স্পেন দেশের বাঁশরিবাদক
স্পেন দেশের বাঁশরিবাদক,
জানি – তুমি সৃজন করতে পারো
সংগীত – মরমিয়া ও করুণ,
শ্রবণে বসন্ত ঋতুতে যা শোনায় দারুণ,
প্রথমে বাজাও তুমি আনন্দলোকের তান
তারপর বিষাদে বিধুর হয়ে ওঠে তোমার গান,
গভীর স্বরনিনাদে ঋদ্ধ হয় বাদন,
ফোটে ফুল – কাকলিতে মুখর হয় বন।
সৃজন করো সংগীত
এসেছে সৃষ্টির সহজিয়া মৌসুম,
বাদনে ঝরুক বৃষ্টি – ফুটুক কুসুম,
আমার কাব্যকলায় চরাচরে তৈরি হোক নৃত্যের কোরিওগ্রাফ,
বাক্যের সুষমায় ছড়াক পুষ্পিত উত্তাপ;
প্রতিটি জিনিসের আছে নির্দিষ্ট মৌসুম
স্পেন দেশের বাঁশরিবাদক
ভাঙাও স্বপ্নে জর্জরিত ঘুম।
আছে যেমন একটি ঋতু চারা রোপণের
ও অন্য ঋতু ফসল ঘরে তোলার,
একটি ঋতু সেলাইয়ে হয় রিপু,
অন্য ঋতু বস্ত্র ছিঁড়ে ফেলার;
একটি ঋতু হাসি-গান-আনন্দের
অন্য ঋতুতে কাঁদতে হয় জেনো,
একটি ঋতুতে আশায় বুক বাঁধি আমরা
অন্য ঋতুতে ভীষণ হতাশায়
পান করতে হয় ধেনো;
একটি ঋতু কেবলই ভালোবাসার সংগমে সুস্মিত,
অন্য ঋতুতে হয় জন্ম
অদৃষ্টে লেখা অপঘাতের সম্ভাবনায় ভীত।
শরৎ ঋতুতে
তাদের সাথে আছে আমার পরিচয়,
যারা জানতে চাইবে –
কিবা তার ভয়,
কেন ছড়িয়ে চরাচরে উদ্দাম ঐকতান
আগের মতো গলা ছেড়ে সে করে না গান?
কিন্তু তারা তো দেখেনি শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি
তাতে ধ্বনি যোজনার নিবিড় মেহনত,
তাকে বলা হয় সময়ের শ্রেষ্ঠ ফসল
দেয়নি সে কিছুতে দাসখত,
থেকেছে বিনীত – করেনি ছল।
ক্রমাগত বেড়ে ওঠা আমি সে-ই বয়োবৃদ্ধ তরুবর
উচ্চারণ করেছি অস্পষ্ট সুমধুর ধ্বনি
যখন সুবাতাস ছুঁয়েছে আমার অন্তর।
তারুণ্যের স্নিগ্ধ হাসি মিলিয়ে যাওয়ার এসেছে প্রহর,
দুর্দান্ত দিনযাপন হয়েছে অতীত,
এখন কেবল ঝড়ো হাওয়ার মাগি বর
আমার হৃদয় ছুঁয়ে যা সৃজন করবে সংগীত।
নিশীথের স্বপ্নাচ্ছন্ন সেরেনাদ
রাতের গাঢ় নিস্তব্ধতা।
বিষণ্ণ স্বপ্নের রেণুকা-ছড়ানো গভীর সেরেনাদ,
আমার আত্মা কাঁপছে কেন
শঙ্কা হয় – চেতনার খাঁটি স্বর্ণে বুঝি-বা মিশবে খাদ।
শুনি আমার ধমনিতে রক্তের সঞ্চালন,
করোটিতে নাড়া দেয় মৃদু এক ঝড়
তছনছ হয়ে যায় দারুচিনি-বন।
অনিদ্রা … ঘুমাতে অক্ষম
তবে স্বপ্নে বিভোর হতে নেই কোনো প্রতিবন্ধক,
আধ্যাত্মিক কাটাছেঁড়ার গিনিপিগ আমি
ছাদের রহস্যময় অন্ধকারে ডেকে ওঠে তক্ষক,
মনে হয় আমি এক স্বয়ংক্রিয় হ্যামলেট
সদা অস্থির দিনযাপনে ঘটেছে যেন ভীষণ প্রমাদ,
রাত্রির সুরাতে মিশিয়ে হালকা করে নিই আমার বিষাদ,
অন্ধকারের মরীচিকাময় স্ফটিকে
নিজেকে জিজ্ঞেস করি আমি
কখন হবে ভোর ফুটবে আলো অনিমিখে,
কাছেই কে যেন হেঁটে যায়,
ঘড়িতে বাজে রাত তিনটা
এ-পদশব্দ যদি তার হতো
যদি নূপুর বাজতো তার পায়!
আন্তনিও মাচাদো
ভালোবাসতেন তিনি মৌনতা, মানুষটি আড়ালপ্রিয় ও লাজুক,
কখনো আত্মভোলার মতো ঘুরে বেড়াতেন উদ্দেশ্যবিহীন,
অন্তরের গহন থেকে উঠে আসতো তার দৃষ্টিপাত – কাঁপতো বুক,
এতে সঙ্গোপন আছে যে-শিখা – তা বুঝে ওঠা হতো কঠিন।
কথা বললে তাঁর বাচনভঙ্গিতে ফুটতো অভিমান
প্রকাশ পেত যুগপৎ নম্রতা ও উদ্ধত অহংকার,
তখন বাক্যের আড়ালে চিন্তার শিখা হতো দৃশ্যমান
অস্পষ্টতা করতেন তিনি সাবধানে পরিহার।
শক্ত ভূমিতে প্রোথিত ছিল তাঁর বিশ্বাস,
একসময় ছিলেন তিনি গভীরতাপ্রয়াসী
মাঝেমধ্যে ছড়াতেন উজ্জ্বল পরিহাস,
অরণ্যে পুষ্প হয়ে উঠতেন উদ্ভাসী।
সিংহ ও মেষকে একই মাঠে চরাতে পারতেন
অতি দক্ষ রাখাল,
রুখতে পারতেন ঝড়ো বাতাসের গতিপথ
বুনতে পারতেন গল্পকথার কারুকাজ করা শাল।
ভালোবাসা, জীবন ও আনন্দলোকের তাবৎ বিস্ময়
তার সংগীতে কথার সাথে সুর-ছন্দের হতো পরিণয়,
888sport app download apkর অন্তরালে থাকতো ভাবের গভীর আখ্যান
শব্দের স্ফটিকে বিম্বিত হতো বিমূর্ত রূপে তার প্রাণ;
একদিন তিনি যেন ডানাওয়ালা অশ্বে হন সওয়ার
স্রষ্টার কাছে আন্তনিওর জন্য আমার এ-প্রার্থনা,
তিনি যেন হন সম্পূর্ণ নির্ভার
মুছে যেন যায় তাঁর তাবৎ যাতনা।
- স্প্যানিশ কবি আনতোনিও মাচাদো (১৮৭৫-১৯৩৯) ‘’৯৮ সালের প্রজন্ম’ শিরোনামে একটি 888sport live football-আন্দোলনের পুরোধা হিসেবে খ্যাত।
সারভেনতেসের জন্য সংগীত
আমার নিঃসঙ্গতায় বিধুর দিনগুলোতে
আমার দুঃখের দহনে দগ্ধ দিনগুলোতে
সারভেনতেস ছিলেন সত্যিকারের বিশ্বাসী বন্ধু
তাঁর উদারতা ছিল অপার,
মনে হয়, আজ তিনি ছাড়া আর কিছু সত্য নয়
যিনি আমাকে দান করতেন নীরবতার মহার্ঘ্য উপহার;
তাঁর উদার স্বভাব ও অসাধারণ চরিত্র
মধ্যযুগের বীরেন্দ্র কেশরীর মতো
অভিযানের প্রেষণায় ছিল বিচিত্র,
আমার স্বপ্ন ছিল উদ্দাম
আমাকে পরিয়ে দিতেন সোনালি এক শিরোভূষণ,
আমার আঙিনায় বেড়ে উঠত রাজকীয় পাম,
ছিলেন তিনি দীর্ঘশ্বাস প্রার্থনা ও আনন্দের সমাহার,
কথা বললে – যেন প্রবাহিত হতো একটি প্রস্রবণ
চেতনা হতো নির্ভার;
এ বীরেন্দ্র কেশরী ছিলেন কেমন যেন অবেগপ্রবণ ও আময়িক
ছিলেন দুঃখের হোমানলে জ্বলা ভালোবাসার জীয়ন্ত প্রতীক,
ভাগ্যের নীলনকশায় কীভাবে তাঁকে ধারণ করে আছে এ-বিশ্ব,
মৃত্যুহীন দুঃখের সায়র থেকে চয়ন করতেন অনাবিল আনন্দ
হাসতে হাসতে বিলিয়ে দিয়ে সম্পদ কখনো হতেন না নিঃস্ব।
- স্প্যানিশ কবি, নাট্যকার ও লেখক সারভেনটেসের
(১৫৪৭-১৬১৬) পুরো নাম সারভেনতেস সাভেদ্রা। ১৬০৫ সালে প্রকাশিত ডন কিহোতে 888sport alternative link রচনা করে সারভেনতেস যশস্বী হন।
রুজভেল্টের প্রতি
বাইবেলের অন্তর্গত স্বর বা ওয়াল্ট হুইটম্যানের 888sport app download apkর সূত্র ধরে একদিন পৌঁছানো উচিত হবে তোমার সন্নিকটে, হে শিকারি। আদিম ও আধুনিক, সহজ ও জটিলতার সমাহারে তৈরি তুমি। খানিকটা জর্জ ওয়াশিংটন ও খানিকটা নিমরদের চরিত্র দিয়ে সৃষ্ট তুমি – যুক্তরাষ্ট্র। ভবিষ্যতের আক্রমণকারী তুমি। তুমি হচ্ছো সে সরল মহাদেশ – আমেরিকা, যার ধমনিতে প্রবাহিত হচ্ছে আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের শোণিত। যারা এখনো কথা বলে হিস্প্যানিক জবানিতে, প্রার্থনায় নতজানু হয় যিশুখ্রিষ্টের বেদিমূলে।
অহংকার ও শক্তিমত্তার সমাহারে তুমি তোমার জাতিসত্তার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। সুসংস্কৃত ও বুদ্ধিমান তুমি। বিরোধিতা করো তুমি টলস্টয়-প্রবর্তিত মতবাদের। ধ্বংস করো অশ্বযূথ, হত্যা করো বুনো ব্যাঘ্র এবং বিবর্তিত হও আলেহান্দ্রো নেবুচাদনেকাজারে।১ (হাল জামানার উন্মাদরা বলে থাকে – তুমি হচ্ছো শক্তির অধ্যাপক।) তোমার ধারণা – জীবন হচ্ছে অগ্নি এবং উদ্গিরণ হচ্ছে প্রগতি। যেখানে পৌঁছতে পারে তোমার বুলেট, মনে করো তা-ই তোমার ভবিষ্যৎ।
না।
যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে বিশাল ও শক্তিমত্ত।
যখন তা নড়ে ওঠে, বিপুল ভূমিকম্প তৈরি হয় আন্দেজ পর্বতমালায়। তুমি অস্থির হলে শোনা যায় সিংহের গর্জন। হুগো একদা গ্রান্টকে বলেছিলেন, ‘নক্ষত্ররাজির স্বত্বাধিকারী তুমি।’ (কিন্তু নীলিমায় বিকিরিত হচ্ছে, শুনছো … ঝলমল করছে, উঠছে আর্জেন্টিনার সূর্য, আকাশ ছেয়ে যাচ্ছে চিলির তারকায়।) তুমি বিত্তবান। আলোয় উদ্ভাসিত করে চলছো সহজ বিজয়ের পথরেখা। নিউইয়র্কে স্বাধীনতা-বিগ্রহজ্বালে আলোর মশাল।
আমেরিকা, তোমার সুবিশাল মহাদেশে কবিরা করে আসছে শব্দের বন্দনা, মেক্সিকোর সে যশস্বী চারণ নেটজাহোয়ালকয়োটল২-এর জমানা থেকে। অক্ষরের দীক্ষা নিয়েছো তুমি তাদের কাছ থেকে, যারা পরামর্শ করতে সমর্থ ছিলেন নক্ষত্রের পারিষদের সঙ্গে, যারা অবগত ছিলেন জলমগ্ন আটলানটিসের অবস্থান সম্পর্কে। যাদের নাম প্রতিধ্বনিত হতো পেস্নটোর চিন্তাভাবনায়। আদি যুগ থেকেই তোমার পথচলা সমৃদ্ধ হয়েছে অগ্নি ও আলোকের প্রাণবন্ত বিভায়,
ঋদ্ধ হয়েছো তুমি সৌরভ ও ভালোবাসায়। মনে পড়ে, আজটেক সম্রাট মনটেজুমা৩ কিংবা ইনকাদের শাসনপ্রণালি, সে-পথবাহী পাল তোলা জাহাজে ক্রিস্টোফার কলম্বাস নিয়ে এলেন রোমান ক্যাথলিকদের আধ্যাত্মিক নিশান। তা থেকে সৃষ্টি হলো সম্পূর্ণ হিস্প্যানিক সংস্কৃতি। মনে পড়ে, শেষ আজটেক সম্রাট কোয়াইটেমেক৪ স্প্যানিয়ার্ডদের হাতে নিহত হওয়ার আগে মন্তব্য করেছিলেন, ‘আমার শয্যা কখনো সুরভিত ছিল না প্রস্ফুটিত গোলাপের পাপড়িতে।’ এই সেই আমেরিকা, সূর্যের দুহিতা, যে সর্বদা কম্পমান হয় ঘূর্ণিবার্তায়, মানুষ এ-ভূখ–ও দিনাতিপাত করে বিপুল ভালোবাসায়। তারা স্বপ্ন দেখে, শিহরিত হয় প্রণয়ের প্রাণবন্ত রোমাঞ্চে।
সাবধান হও, জিইয়ে রাখো হিস্প্যানিক আমেরিকা। মনে রেখো, স্প্যানিশ সিংহের সহস্র শাবক ঘুরছে চরাচরে। রুজভেল্ট, হয়েছো তুমি স্বয়ংঘোষিত ঈশ্বর। ভয়ংকর শিকারি তুমি, শাসন করতে চাও শক্তহাতে, সিক্ত করতে চাও আমাদের তুমি তোমার বন্দুকের অগ্নিস্রাবী ঝড়বৃষ্টিতে।
চাইলে তুমি হিসাব মিলিয়ে দেখতে পারো – তোমার তোষাখানায় অনটন শুধু একটি দ্রব্যের – এবং তা হলো ঈশ্বর।
১. নেবুচাদনেকাজার : ব্যাবিলনের অত্যন্ত শক্তিমত্ত সম্রাট। তাঁর শাসনকাল ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৬০৫ থেকে ৫৬২ সাল অবধি।
২. নেটজাহোয়ালকয়োটল : মেক্সিকো উপত্যকার কলম্বাস-পূর্ব যুগের (আনুমানিক ১৮০২-৭১) দার্শনিক, যোদ্ধা, শাসক ও কবি। চারণকবি হিসেবে তিনি সমধিক 888sport app download for androidীয়।
৩. মনটেজুমা (১৪৬৬-১৫২০) : মেক্সিকোর কলম্বাস-পূর্ব যুগের আজটেক সম্রাট। তাঁর রাজত্বকাল ছিল ১৫০২ থেকে ১৫২০ অবধি। সে-সময় হেরম্যান করটেজের নেতৃত্বে আগত স্প্যানিশ অভিযাত্রীদের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধ হয়।
৪. কোয়াইটেমেক : সর্বশেষ আজটেক সম্রাট (১৪৯৫- ১৫২২)। স্প্যানিশদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বন্দি অবস্থায় অত্যাচারের মুখে আজটেকদের সংরক্ষিত সম্পদের গোপন অবস্থানের নিশানা বলে দিতে বাধ্য হন। পরবর্তী সময়ে স্প্যানিশরা তাঁকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.