নিমা ইউশিজের কয়েকটি 888sport app download apk

ইব্রাহিম নূরির পুত্র কবি নিমা ইউশিজের (১৮৯৭-১৯৬০) জন্ম ইরানের মাজারদারান অঞ্চলের উস নামক গ্রামে। তাঁর পিতৃদত্ত নাম আলি ইসফানডিয়ারি। ফার্সি 888sport app download apkয় আধুনিকতার প্রবর্তক হিসেবে বিবেচিত এই কবি শৈশবে তাঁর পিতাকে কৃষিকাজ ও গবাদিপশুর যত্ন নিতে সাহায্য করতেন। বালক নিমার শিক্ষাদীক্ষার সূত্রপাত হয় গ্রামীণ মক্তবে। এ-সম্পর্কে ১৯৪৬ সালে ইরানের লেখকদের কংগ্রেসে দেওয়া বক্তৃতায় কবি স্বয়ং উল্লেখ করেন :

আমার শৈশব কেটেছে রাখাল ও অশ্বপালকদের সহবতে। তাদের সাথে আমি প্রায়শ ঘুরে বেড়াতাম আশপাশের তৃণভূমি থেকে দূরদূরামেত্মর চারণভূমিতে। সন্ধ্যাবেলা আমরা হমেশা কোনো না কোনো পাহাড়ের পাদদেশে অগ্নিকু- ঘিরে বসে মেতে উঠতাম মজলিসি আলাপচারিতায়। আমার ছেলেবেলার 888sport sign up bonusর প্রধান অংশ জুড়ে আছে বন্য প্রকৃতির দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও মারামারির ঘটনা। আমাদের যাযাবর জীবনের পরিবেশ ছিল মারাত্মকভাবে অজ্ঞানতায় পরিপূর্ণ। তবে দিনযাপনের প্রচ- একঘেয়েমিতেও ছিল কিছু সাদাসিধা আমোদ-প্রমোদ। আমি পড়তে ও লিখতে শিখি আমাদের গ্রামের আকন্দ বা মোলস্নার কাছে। পড়তে আমার তেমন আগ্রহ ছিল না, মক্তবে যেতে চাইতাম না, কিন্তু আকন্দ আমাকে গলিঘুঁজির ভেতর দিয়ে দৌড়ে তাড়া করে ধরে ফেলতেন। তারপর কাঁটাগাছের সঙ্গে বেঁধে লম্বা বেত দিয়ে পেটাতেন। আকন্দ চাষীদের হাতে লেখা কিছু অক্ষর দিয়ে দীর্ঘ একটি স্ক্রল তৈরি করেছিলেন – যা তিনি আমাকে মুখস্থ করতে বাধ্য করেন।

কৈশোরে কবি তেহরান নগরীর রোমান ক্যাথলিকদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সেন্ট লুইস স্কুলে পড়াশোনার সুযোগ লাভ করেন। ওখানকার একজন শিক্ষক গীতিকবি নিজাম ভাফার সক্রিয় উৎসাহ ও সহায়তায় কবির সৃজনীশক্তির উন্মেষের পাশাপাশি কাব্যকলার আধুনিক ভাবধারার সঙ্গেও তাঁর পরিচিতি ঘটে।

কবি নিমা ইউশিজ তারুণ্যে ফার্সি 888sport app download apkর শিক্ষকের মর্যাদায় সমাসীন জনপ্রিয় কবিদ্বয় সাদী ও হাফিজ-প্রবর্তিত ধ্রুপদি আঙ্গিকে 888sport app download apk লিখতে শুরু করেন। তবে দ্রুত আকৃষ্ট হন মুক্তক ঘরানার   আধুনিক কাব্য-প্রকরণের প্রতি। ভাবপ্রধান 888sport app download apkর অনুশীলনের মাধ্যমে তিনি সৃজন করেন তাঁর অভিব্যক্তির জন্য উপযুক্ত নবতর এক পথরেখার। প্রথাগত ছন্দের সংস্কার সাধন করতে গিয়ে তিনি সচেতন হন – সনাতনীশৈলীতে নির্দিষ্ট ছত্র888sport free betর বিষয়ে। ফার্সি 888sport app download apkয় তাঁর বিশেষ অবদান হচ্ছে – 888sport app download apkর ছত্র888sport free betকে ভাবের গভীরতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করার উদ্যোগ নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক কিছু 888sport app download apk রচনা – যা ‘শের-ই নও’ বা ‘নতুন কাব্যশৈলী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠে। কালে কালে তাঁর রচিত 888sport app download apkর জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে ‘শের-ই নও’ শব্দবন্ধ বিবর্তিত হয়ে ‘নিমাইকশৈলী’ নামে ব্যাপক পরিচিতি পায়।

কবি নিমা ইউশিজের 888sport app download apkর আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বিষয়বস্তু হিসেবে সামাজিক ইস্যু – বিশেষ করে জীবনযুদ্ধ, শোষণ ও বঞ্চনাকে 888sport app download apkর থিম হিসেবে গ্রহণ করা। প্রথাগত 888sport app download apkয় বহুল ব্যবহৃত রূপক – চাঁদ, সরাইখানা ও গোলাপ বাগিচার বিপরীতে তিনি তাঁর দৃশ্যকল্পকে নির্মাণ করেন বস্ত্তনিষ্ঠ জীবনের চালচিত্রের ভিত্তিতে। বাকপ্রতিমাকে ব্যক্তিত্বের মহিমায় ঋদ্ধ করেন তিনি, যার মর্মার্থ তৈরি করে সাধারণ পাঠকদের সঙ্গে যোগাযোগের সেতু। অপ্রথাগত শব্দচয়নের মাধ্যমে কবি তাঁর পদাবলিকে রাজদরবারের রীতি-নিয়ন্ত্রিত মজলিসি আবহ থেকে বের করে নিয়ে আসেন আম-পাঠকদের সামাজিক ময়দানে। সাধারণ মানুষের বাচনভঙ্গি ব্যবহার করে 888sport app download apkতে আরোপ করেন ভিন্নতর মাত্রা। তাঁর অবদানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, পদাবলিতে জীবনঘনিষ্ঠ প্রতীকের ব্যবহার – যা ফার্সি ভাষার ধ্রম্নপদী কবিদের প্রতীকের অভিব্যক্তি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

নতুনতর প্রকাশভঙ্গি এবং সনাতনী ধারা থেকে বিচ্যুতির জন্য কবির তারুণ্যে তাঁর 888sport app download apk প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনী থেকে তেমন একটা প্রকাশিত হয়নি। তবে পরবর্তী জীবনে তিনি সংগীত নামে একটি ম্যাগাজিনের সম্পাদকম-লীর সদস্য নির্বাচিত হন, এবং ওই ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয় তাঁর অনেকগুলো 888sport app download apk। সে-যুগে বাম মতাদর্শের পতাকাবাহী তুদে পার্টির জন্ম হলে কবি তাদের রাজনৈতিক বলয়ের সংস্পর্শে আসেন এবং অনেকগুলো যুগান্তর সৃষ্টিকারী 888sport app download apk বাম মার্গের নতুন সব পত্রপত্রিকায় প্রকাশ করতে সমর্থ হন। এ-সময়ে তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে বিষয়বস্ত্তর নিরিখে বিশেষভাবে উলেস্নখযোগ্য হচ্ছে আই শাব (হে রাত), আফসানেহ (কিংবদন্তি) ও মাহবাস (কারাগার)।

ফার্সি 888sport app download apkর আধুনিকায়ন তথা মুক্তকধারা প্রবর্তনে কবিনিমা ইউশিজের সৃজনশীল অবদান এবং পরবর্তী প্রজন্মের কবিদের ওপর তাঁর প্রভাব সম্পর্কে ইরানের প্রখ্যাত ক্রিটিক মাহমুদ কিয়ানুস তাঁর রচিত গ্রন্থ মডার্ন পার্সিয়ান পোয়েট্রিতে নিম্নলিখিত মন্তব্য করেন :

ফার্সি 888sport app download apkয় তাঁর আবির্ভাব এমন এক সময়ে যখন নব্য ধ্রম্নপদী শৈলী ও পুনর্জীবনবাদ প্রভৃতি 888sport app download apkকে সনাতনীশৈলীর শক্ত নিগড় থেকে মুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে, কারণ বিষয়বস্ত্তর ওপর ছন্দরীতির নিয়ন্ত্রণের জন্য ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল ফার্সি 888sport app download apkয় সীমিত। তখন কেবলমাত্র 888sport app download apkর বিষয়বস্ত্ততে নতুনত্ব নয় বরং মুক্তকশৈলী সৃজনের মাধ্যমে নিমা তাঁর সময়ের তরুণ কবিদের মহান গুরু হয়ে ওঠেন।

১৯৬০ সালে নিউমোনিয়া রোগে মৃত্যুবরণ করলে কবিকে তাঁর পিতৃপুরুষের গ্রাম উসে সমাহিত করা হয়।

এখানে তাঁর ছয়টি 888sport app download apkর ভাষান্তর উপস্থাপিত হচ্ছে। 888sport app download apkগুলো ও প্রাসঙ্গিক তথ্য পোয়েম হান্টার নামক ওয়েবসাইট ও মাহমুদ কিয়ানুস-প্রণীত মডার্ন পার্সিয়ান পোয়েট্রি গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

নদীর পাড়ে

 

নদীতীরে ঘুরে বেড়ায় বয়স্ক কাছিম

চমৎকার উজ্জ্বল দিন আজ

সূর্যকিরণে উষ্ণ হয়ে আছে ধানের ক্ষিত

ঝলকাচ্ছে গাছ-বিরিক্ষ শিরীষ তমাল ও নিম।

বুড়ো কাছিম রোদ পোহায়

আরামে ঘুমায় সে নদীর কূলে

আর তাকায় গলা বাড়িয়ে আড়ে আড়ে

বাসনার বেদনায় ক্লান্ত আমি

বসে থাকি নদীর পাড়ে।

 

অপেক্ষা করি সুরুযের

কিন্তু আমার চোখ দেখতে পায় না আলোর নিশানা

দিবাকর আমার আত্মগোপন করে আছে সুদূরের জলধিতে

উড়ে যায় মরাল, দেখি তার প্রসারিত ডানা।

যেখানে দাঁড়িয়ে আছি ওখান থেকে

সবকিছুই দেখা যাচ্ছে পরিষ্কারভাবে

কেবলমাত্র আমার সুরুযটাতে পাচ্ছি না দেখতে

ব্যথিত আমি কিরণের অভাবে।

 

 

 

এখন নিশিরাত

 

রাতের গভীর অন্ধকারে

পুরনো ফিগ গাছের ডালে

একটি ব্যাঙ ডাকছে বারে বারে,

তার স্বরে শোনা যায় ঝড়বন্যার পূর্বাভাস

আতঙ্কে নিমজ্জিত হই আমি

হৃদয়ে পুঞ্জীভূত হয় ত্রাস।

 

এমন নিশিরাত

গভীর অন্ধকারে ঝরে যায় বৃষ্টির প্রপাত,

পৃথিবী মনে হয় কবরে প্রোথিত লাশ

আতঙ্কে আমি নিজেকে বলি

হুঁশিয়ার হও – দেখছ না প্রলয়ের আভাস।

 

কেমন বৃষ্টিপাত হচ্ছে আজ সর্বত্র

যদি ঝড়জল না থামে,

ছোট্ট নৌকাটির মতো পৃথিবী ডুবে না যাওয়া পর্যন্ত

যদি কোথাও খুঁজে না পাই বর্ষাতি ও ছত্র,

এ নিশিরাতের নিবিড় অন্ধকারে

কোথায় হচ্ছে কী – বোঝা যাচ্ছে না কোনো কিছুর আদিঅন্ত।

 

কে জানে ভোরবেলা কী হবে আমাদের পরিস্থিতি

তবে কি প্রভাতি কিরণে অপসৃত হবে তুফান – আসবে স্থিতি।

 

 

 

মেঘে আচ্ছন্ন আমার গৃহ

 

মেঘে আচ্ছন্ন আমার গৃহ

সারা পৃথিবী ছেয়ে আছে ঘন মেঘে,

সংকীর্ণ গিরিখাতের ওপর থেকে

কু-লী পাকিয়ে নামছে বাষ্প

ঝড়ো হাওয়া বইছে তীব্র বেগে।

 

ছেয়ে যাচ্ছে তামাম বিশ^ কৃষ্ণাভ মেঘে

ভারাক্রান্ত আমি আলোরিক্ত বিষণ্ণ আবেগে,

বাঁশরির সুরলহরীতে পথহারা

কোথায় তুমি হে বাঁশিওয়ালা,

মেঘে ছেয়েছে আমার ঘর

উপড়ে শিকড় ভেঙেছে ডালপালা।

 

ক্রন্দন-উন্মুখ হয়েছে মেঘ আজ

সুদিনের 888sport sign up bonus গলে যাচ্ছে আঙুলের ফাঁকে,

অশ্বত্থের শাখায় পড়েছে বাজ

বিজুলির নকশা ঝলসে যাচ্ছে দিগমেত্মর বাঁকে;

 

আমার সুরুযের তালাশে সমুদ্রের চৌকাঠে

আমি নিবদ্ধ করি দৃষ্টি,

ঝড়ো হাওয়ায় তছনছ হচ্ছে সৃষ্টি,

আর নির্জন সরণিতে বাদক বাজিয়ে যায় বাঁশরি

মেঘাচ্ছন্ন এ-বিশে^

স্বপ্নসুখের 888sport sign up bonus যাই যে পাশরি।

 

খুলে যাচ্ছে বাদকের সামনে তার নিজস্ব পথপরিক্রমা

অন্তিমে এসেছে আলো – শুরু হয়েছে অাঁধারের সীমা।

 

 

শীতল চুল্লি

 

বেঁচে আছি কোনোক্রমে

অনেক দূরের মারাত্মক সেসব রাত,

বনানীর নির্জন পথ

তুষারে জমে গেছে জলপ্রপাত।

নীরবে হিসাব মেলাই গতায়ু জীবনের টাকা-আনা-পাই

পাথরে তৈরি একটি চুলোয় রাখা আছে ঠান্ডা ছাই।

 

ধুলোয় পুঁতে রাখা আমার বিষাদ মর্মরিত ভাবনার মতো

যেন রেখাচিত্রে ধৃত হয়ে আছে দিনযাপনের বিষয় যত।

 

এমন এক গাঁথা – বেদনাদায়ক যার পরিণতি

চিত্রে বর্ণবৈষম্যই প্রধান, বর্ণনায় নেই যতি,

দারুণ শীতে জরজর – পরিবর্তিত হয়েছে পাষাণে

দাঁড়িয়ে থেকে শরতের সুবাতাসের প্রত্যাশায়

ভেসে যায় তাবৎ কিছু বর্ষার বিপুল বানে।

 

হেমমেত্মর শুরুতে পত্রালি হবে নিদারুণ হরিৎ

নিরালায় বসে নিচ্ছি হিসাব – জীবনের হারজিৎ,

বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি

দূরাগত নিশিরাতের দাপট থেকে,

একটি সড়ক চলে গেছে বনানীর ভেতরে

ঝরাপাতায় পদচিহ্নের রেখা এঁকে।

 

 

চন্দ্রকিরণ

 

চন্দ্রকিরণ!

মনে পড়ে গেস্নাওয়ার্মের কথা

দেহ থেকে যে ছড়ায় মিহি আলো অন্ধকারে,

যাতে নিদ্রাভঙ্গ হয় কদাচিৎ

কিন্তু সামান্য বিষয় নিয়ে দুশ্চিমত্মা

চোখ হয় অশ্রম্নসজল – টুটায় ঘুম বারে বারে।

 

প্রভাত নিয়ে আসে উদ্বেগ

পায়ে ফুটেছে কাঁটা – পারি না এগোতে

বিপন্ন হয় আমার শোভন আবেগ।

 

নিজ হাতে লাগিয়েছি নাজুক এ-গোলাপের চারা

জীবনের নির্যাস নিংড়িয়ে জুগিয়েছি জল,

তার কণ্টক বিঁধলো আমার দেহে

ছড়ালো হলাহল।

 

চেষ্টা করি আমি খুলতে কপাট

খামোকা প্রত্যাশা করি – কেউ হয়তো আসবে আমার সাক্ষাতে,

দেয়ালসুদ্ধ দরোজা হুড়মুড় করে ধসে পড়ে

বিক্ষত হই তুমুল আঘাতে।

 

চন্দ্রকিরণ! গেস্নাওয়ার্ম ছড়ায় আলো

সড়কটি বহুদূরে – অাঁধারে হয়ে আছে কালো।

 

পূর্ণিমার চাঁদ উড়ায় জ্যোৎস্নার ফানুস।

গাঁয়ের মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে

ব্যাকপ্যাক পিঠে নিঃসঙ্গ একজন মানুষ,

ফিসফিসিয়ে বলে – উদ্বেগে তছনছ হয়ে যাচ্ছে

অশ্রম্নতে আর্দ্র অাঁখির ঘুম,

পোষা চারাতেও ফোটে না আর সৌরভের কুসুম।

 

 

 

তুমি – শুনছ

 

হেই, সৈকতের ওখানে বসে আছ নির্লিপ্ত

হাসছো – দেখাচ্ছে তোমাকে দারুণ সুখী

দেখতে কি পাচ্ছ না তুমি

কেউ একজন ডুবে মরছে ঊর্মিমুখর জলধিতে

মানুষটি জলমগ্ন হতে হতে যুঝে যাচ্ছে ক্রমাগত

ক্রোধে অন্ধ – তরঙ্গ সংকুল অলোরিক্ত তার চেনা সমুদ্রে

জলের মাতঙ্গী যেন হয়ে উঠছে উদ্ধত

মানুষটি ডুববে নির্ঘাত

ঢেউয়ের তিরন্দাজিকে সে করতে পারছে না প্রতিহত।

 

যখন তুমি মাতাল হয়ে ভাবছ আক্রমণ করবে দুশমনকে

যখন তুমি খামোকা চিমত্মা করো

সহায়তা করবে দুর্বল একজন মানুষকে

তোমাকে কখন আমি বলব – কেউ একজন স্বপ্নভুক

জলমগ্ন হয়ে আত্মাহুতি দিচ্ছে অহেতুক।

 

 

 

 

হেই, ওইখানে

 

যে তুমি বসে আছ সৈকতে প্রফুলস্ন মেজাজে

তোমার ডাইনিং টেবিলে তাজা রুটি

শরীরে তোমার চমৎকার পোশাক-আশাক

যাও প্রতিদিন দফতরে – লিপ্ত জরুরি কাজে

কেউ একজন জলে ডুবে যেতে যেতে

আকুল হয়ে তোমাকে ডাকছে

মারাত্মক সব ঢেউ ভাঙছে সে তার ক্লান্ত বাহুতে

তার মুখ নোনাজলের ছোঁয়ায় বিশুষ্ক

চোখ দুটি বিস্ফারিত আতঙ্কে – চুল উস্কোখুস্কো

সে ডুবে যেতে যেতে দেখছে তোমার ছায়া

তার কণ্ঠনালিতে ঢুকছে কালচে-নীল নোনাজল

নিমজ্জিত হচ্ছে তার সুঠাম তনু – পুষ্টিতে ঋদ্ধ কায়া

অধৈর্য হচ্ছে সে প্রতিমুহূর্তে

জলের সাথে লড়াই করতে করতে ফেলছে দীর্ঘশ^াস

কখনো সে তুলছে একটি পা

কখনো ভেসে উঠছে তার মাথা – আধডোবা দেহের আভাস

 

হেই, বসে আছো তুমি ওইখানে নির্লিপ্ত

মানুষটি এখনো তাকিয়ে আছে পুরনো পৃথিবীর দিকে

এখনো সে আর্তচিৎকারে জানাচ্ছে সাহায্যের আর্তি

পৃথিবীতে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা তার ক্রমশ হচ্ছে ফিকে

হেই, ওইখানে সৈকতে বসে

শান্ত শীতল নিরাসক্ত ভঙ্গিতে দেখছো তুমি সবকিছু

তরঙ্গরাজি ভেঙে পড়ছে বালুকার নীরব তটে

যে-রকম মাতাল ঢলে পড়ে তার বিছানায় বেহুঁশ

মরণের খেয়াঘাটে মানুষটি পড়েছে নিদারুণ সংকটে

দূর থেকে ভেসে আসছে তার আহাজারি আবার

হেই, তুমি শুনছ কী

 

আর বাতাসের শোঁ-শোঁ শব্দ

প্রতিমুহূর্তে হয়ে উঠছে ভয়াবহ

জলমগ্ন মানুষটির কণ্ঠস্বর

তার ক্রমাগত যুঝে যাওয়া হচ্ছে দুর্বিষহ

হাওয়ার তোড়ে ম্রিয়মাণ হচ্ছে ক্রমশ

সুদূর ও কাছের সুনীল জলধি থেকে

তার আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে ফের

হেই, সৈকতে বসে থাকা নির্লিপ্ত মানুষ

তুমি শুনতে পাচ্ছো কি

দরিয়ার ওপরে ওড়া সিগাল একমনে যাচ্ছে ডাকি।