পরবর্তী চিত্র888sport live chatীদের চোখে জয়নুল আবেদিন

হামিদ কায়সার

১৯৩২ সালে কলকাতার আর্ট স্কুলে ভর্তি হন জয়নুল আবেদিন। ময়মনসিংহের অতি সামান্য এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান কীভাবে তখনকার সময়ের সবচেয়ে সেরা 888sport live chatকলা শিক্ষার প্রতিষ্ঠানটিতে পৌঁছাতে পেরেছিলেন সেটা যেমন বিস্ময়কর, তেমনি বিপ্লবাত্মক ঘটনাও বটে। কারণ, যতটা না দারিদ্রে্যর জন্য, তারচেয়েও তখনকার মুসলিম সমাজ থেকে একটি ছেলের কলকাতার মতো জায়গার আর্ট স্কুলে ভর্তি হওয়াটা ছিল সত্যিকার অর্থেই অত্যন্ত কঠিন এক ব্যাপার। তখনো আঁকাআঁকিকে মুসলমান সমাজ ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। আর্ট করাকে রীতিমতো পাপকর্ম বলে মনে করতো। এরকম সংকীর্ণতা-ঘেরা পরিবেশ থেকে এবং দারিদ্রে্যর কশাঘাতে জর্জরিত অবস্থাতেও জয়নুল কীভাবে চিত্র888sport live chatকে নিজের মধ্যে ধারণ করলেন এবং কীভাবেই বা কলকাতার আর্ট স্কুলে ভর্তি হলেন, সেটা জানতে অনেকেই কৌতূহলী হতে পারেন। সে-কারণে সে-প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোকপাত বুঝি অপ্রাসঙ্গিক মনে হবে না।

জয়নুল আবেদিনের জন্ম হয়েছিল কিশোরগঞ্জ থানা সংলগ্ন একটি বাড়িতে। তার বাবা তখন এসআই হিসেবে পুলিশে চাকরি করতেন। এরপর বাবার চাকরিসূত্রে জয়নুলরা ময়মনসিংহে বসবাস শুরু করেন। এবং, সন্দেহ নেই যে, ময়মনসিংহে এসেই তিনি একটি 888sport live chat ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ পেয়ে যান – যা তাঁর 888sport live chatীমানস গঠনে ভূমিকা রাখে। উল্লেখ্য, সে-সময়ে ময়মনসিংহের 888sport live chat-সাংস্কৃতিক জগৎ ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বেশ কয়েকজন খ্যাতিমান কবি, 888sport live footballিক এবং 888sport live chatীর লেখা ও আঁকা ছবি ময়মনসিংহসহ জাতীয় পর্যায়ের পত্রপত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশ পেত। ময়মনসিংহের সুধী সমাজই প্রথমবারের মতো আর্ট স্কুল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল। এমন একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশে, যে ছেলের মধ্যে রয়েছে জন্মগত সহজাত 888sport live chatীবোধ, সে তো ভেতরে ভেতরে বিকশিত হয়ে উঠবেই।

চার বছর বয়সেই তাঁর মধ্যে যে ছবি আঁকার ক্ষমতা রয়েছে সেটার প্রকাশ ঘটেছিল। জেলা স্কুল এবং মৃত্যুঞ্জয়ী স্কুলে পড়ার সময় ছবি আঁকার প্রতি জয়নুলের ঝোঁক তীব্র আকার ধারণ করে। তিনি পরীক্ষার খাতায় উত্তর না লিখে ছবি এঁকে দিয়ে আসতেন। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বোম্বে ক্রনিক্যাল পত্রিকার আহবানে গলফ খেলা নিয়ে ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে 888sport app download bd অর্জন করায় স্কুলে বেশ গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছিল। মৃত্যুঞ্জয় স্কুলে পড়ার সময়ই জয়নুল মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিলেন, তিনি ভবিষ্যতে আর্ট নিয়ে পড়ালেখা করবেন। এ-সময়েই তিনি আর্ট স্কুল সম্বন্ধে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন। স্কুলে যাওয়ার পথে অগোফা স্টুডিও পড়তো, সেখানেই আড্ডা দিতেন 888sport live chatের সমঝদার কিছু মানুষ। স্টুডিওর মালিক প্রেমরঞ্জন দাসের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল 888sport live chatী হেমেন মজুমদার ও প্রহ্লাদ কর্মকারের। প্রেমরঞ্জনের এক ভাইও ছবি আঁকতেন এবং কলকাতা আর্ট স্কুলে পড়ালেখা করতেন। ছুটিতে সবাই যখন ময়মনসিংহে বেড়াতে আসতেন, যোগাযোগ হতো জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে। তাঁদের উৎসাহেই ১৯৩০-৩১ সালের দিকে পরিবারের সবার অগোচরে জয়নুল কলকাতায় গিয়েছিলেন আর্ট স্কুল দেখতে। তারপর তো সেই কিংবদন্তিতুল্য ঘটনাটি ঘটলো। জয়নুল যখন আর্ট স্কুলে পড়াশোনার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন, তাঁর বাবা আর্থিক অসামর্থ্যের কারণে অপারগতা জানালেন আর মা নিজের সমস্ত স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে ছেলেকে কলকাতা আর্ট স্কুলে পড়াশোনার অর্থের জোগান দিলেন। মায়ের সেই দান যে কিছুতেই ব্যর্থ হয়নি, বরঞ্চ 888sport appsের 888sport live chatকলার জন্যই পরম এক আশীর্বাদ হয়ে রয়েছে, সেটাই বোধহয় আজ 888sport live chatকলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হয়ে থাকবে।

সেই ১৯৩২ সালে, কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তি হয়েই নিজের মেধা এবং ব্যক্তিত্বের গুণে অধ্যক্ষসহ সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে ফেললেন জয়নুল আবেদিন। বিশেষ করে প্রিন্সিপাল মুকুল দে-র নজর কেড়েছিলেন তিনি ভর্তি হওয়ার সময়েই। 888sport live chat-888sport live footballচর্চায় পিছিয়ে থাকা মুসলিম সমাজের একটি ছেলে কোথা থেকে এসে ভর্তি পরীক্ষায় অর্জন করেছিলেন প্রথম স্থান, এটা তো কোনো সাধারণ ব্যাপার নয়! পরবর্তীকালে তিনি জয়নুলকে নানা রকম সহযোগিতা করেছিলেন। তা সত্ত্বেও জয়নুলকে আর্ট স্কুলে পড়ার দিনগুলিতে কঠিন জীবনসংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হয়েছে। একে তো ছিল অর্থকষ্ট, তার ওপর ছিল না থাকা-খাওয়ার জায়গা – তবু তাঁর প্রতিভার বিচ্ছুরণ এবং মেধার দ্যুতি এমনভাবেই ছড়িয়ে যেতে লাগলো যে, তিনি যখন পঞ্চম বর্ষের ছাত্র, তখনই তাঁকে আর্ট স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো।

১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ সাল, দেশবিভাগের আগ পর্যন্ত তিনি কলকাতা আর্ট স্কুলে গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশবিভাগের পর চলে আসেন 888sport appয়। শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজের 888sport live chatচর্চার ধারাকেও রেখেছেন প্রবহমান। তখনকার ট্রেন্ড ইউরোপীয় ধারায় নিজেকে হারিয়ে না ফেলে কীভাবে তিনি নিজস্ব আঙ্গিকে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে 888sport live chatরচনা করলেন এবং হয়ে উঠলেন দেশ ও সমাজের আত্মার অংশ – সে-ইতিহাস 888sport live chatবোদ্ধা সবারই কমবেশি জানা রয়েছে। একজন শিক্ষক হিসেবে জয়নুল আবেদিন যে কতোটা সফল, সার্থক এবং অনুসরণীয়, তা বোঝা যাবে পরবর্তীকালে তাঁর কয়েকজন ছাত্র, যাঁরা পরে নিজেরাও চিত্র888sport live chatী হিসেবে পেয়েছেন সাফল্য এবং অর্জন করেছেন প্রভূত খ্যাতি এমন কয়েকজনের মন্তব্য পাঠ করলে।

বাংলা ১৩৯৯ সনে সাগরময় ঘোষ-সম্পাদিত দেশ পত্রিকার 888sport live football888sport free betয় ২৩ জন প্রখ্যাত 888sport live chatীর 888sport live chatী হয়ে-ওঠার আত্মজৈবনিক রচনা ছিল। সেখান থেকে চারজন চিত্র888sport live chatীর জয়নুল আবেদিন সম্পর্কিত মন্তব্য উদ্ধৃত করা হলো।

কলকাতা আর্ট স্কুলে পড়ার সময় সোমনাথ হোর 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিনের কাছে আঙ্গিকগত শিক্ষা পেয়েছিলেন। সোমনাথ হোর তাঁর ‘আত্মজীবনীর অন্যদিক’ নিবন্ধে লিখেছেন, ‘আর্ট স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে হাতেখড়ি হয় – চিত্তপ্রসাদের কাছে। ভর্তি হয়েই পেলাম জয়নুল আবেদিনের মতো 888sport live chatীর কাছে শিক্ষার সুযোগ এবং অনুপম সাহচার্য। তাঁর কথোপকথন আমাদের মনে ছবির মতো করে দাগ কাটত। তাঁর হাতে-কলমে শেখানো আমাদের চোখে রঙ ধরিয়ে দিত।’

‘888sport sign up bonusসুখের মালা’ নিবন্ধে অজিত চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে ভর্তি হয়ে বড় আফসোস হয়েছিল, কেননা জয়নুল আবেদিনকে আমরা অল্প সময়ের ব্যবধান হেতু পাইনি। তিনি যে অত্যন্ত ছাত্রবৎসল দরদি মানুষ ছিলেন এ কথা আমাদের অনেকেই বলেছে। জয়নুল স্যার 888sport appয় স্থায়ীভাবে চলে গেছেন আমার ভর্তির বছরেই।’

‘নিজের কিছু কথা’ নিবন্ধে 888sport live chatী বিজন চৌধুরী লিখেছেন, ‘কলকাতায় সরকারী আর্ট স্কুলের আমার সময়কালে কয়েকজন শিক্ষকের কথা বারবারই 888sport app download for androidে আসে। আমরা প্রথম বর্ষেই পেয়েছিলাম জয়নুল আবেদিন সাহেবকে ও আনোয়ার-উল হক সাহেবকে ১৯৪৫-৪৬ পর্যন্ত। সে সময় দেশভাগ হয়নি। ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান হলে সেখানে ওঁরা চলে যান।

আবেদিন সাহেব ড্রইং ও জলরঙের কাজে খুবই দক্ষ ছিলেন। তাঁর তখনকার দুমকায় গিয়ে কিছু সাঁওতাল গ্রাম ও পরিবেশ নিয়ে জলরঙের কাজ কলকাতা একাডেমি অব ফাইন আর্টসের বার্ষিক প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয়েছিল। আমাদের ভীষণ ভালো লেগেছিল কাজগুলি। স্বচ্ছ জলরঙের কাগজের সাদা এবং আলোকে ব্যবহার করে, খুব সংযত ও পরিমিত প্রলেপ দিয়ে, আবার কোনো সময় রং করিয়ে টেক্সচার তৈরি করে তিনি এক নতুন ধরনের সৃষ্টির স্বাদ এনেছিলেন। তাঁর পঞ্চাশের দুর্ভিক্ষের ড্রইংগুলোও আমরা আগেই দেখেছিলাম। কিন্তু জলরঙের এই অভিনব রূপ আগে এ শহর প্রত্যক্ষ করেনি।’ এরপর বিজন চৌধুরী ১৯৪৯ সালে কীভাবে পূর্ব পাকিস্তানের 888sport app সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হলেন সেই 888sport sign up bonusচারণা করে লিখেছেন, ‘ঐ 888sport live chatকলা বিষয়ক আলোচনার দিনেই 888sport appর অনেক চিত্র888sport live chatী উপস্থিত ছিলেন, মূল আলোচনা ও অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেছিলেন তখনকার 888sport app সরকারী আর্ট ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ জয়নুল আবেদিন। তাছাড়া 888sport live chatকলা সম্বন্ধে লেখাপড়ায় ও আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। কামরুল হাসান, সফিউদ্দীন আহমেদ, অজিত গুপ্ত প্রমুখ অনেকেই।

অধিবেশনের শেষে জয়নুল আবেদিনের কাছে গিয়ে আমি তাঁকে প্রণাম করি। পূর্বে উল্লেখ করেছি যে, আবেদিন সাহেব দেশভাগের পূর্বে কলকাতায় সরকারী আর্ট স্কুলে শিক্ষকতা করতেন ও আমি তাঁর ছাত্র ছিলাম। কুশল জিজ্ঞাসার সঙ্গে আর্ট স্কুলের পরীক্ষার বিষয়ে কী করছি জানতে চাইলেন। তাঁকে জানালাম আর্টস্কুলের সমস্ত ঘটনা ও ফাইনাল পরীক্ষা না দেবার কারণ। তিনি সব মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। পরে অন্য আলোচনাতে বললেন, দু-চারদিন তো 888sport appয় আছ! একদিন আমাদের আর্ট ইন্সটিটিউটে নিশ্চয়ই আসবে। আমি আনন্দের সঙ্গে কিভাবে কবে যাব ঠিক করে নিলাম। সুভাষদা পাশে ছিলেন, আবেদিন সাহেব তাঁকেও আমন্ত্রণ জানালেন। কথা হল সুভাষদা ও আমি একসঙ্গেই আবেদিন সাহেবের আর্ট ইন্সটিটিউটে যাব।

সুভাষদার সঙ্গে নির্ধারিত দিনে আমি আর্ট ইন্সটিটিউটে গিয়ে জয়নুল আবেদিন সাহেবের সঙ্গে দেখা করলাম। আমি চট্টগ্রামে থাকাকালীন বেশ কয়েকবার ওখানকার কিছু মানুষের মুখাবয়বের এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের তেলরঙের ছবি এঁকেছিলাম। যেখানে থাকতাম তার চারপাশের দৃশ্য ও মানুষজনের স্কেচ করেছিলাম অনেকগুলি। আবেদিন সাহেবের সাক্ষাতের সময় ওগুলো থেকে নির্ধারিত কিছু ছবি তাঁকে দেখাবার জন্য নিয়ে যাই।

উনি খুব সহৃদয়তার সঙ্গে আমাদের গ্রহণ করলেন। আমার ছবিগুলো দেখালাম। কিছু প্রশংসাও করলেন। সুভাষদার সঙ্গে আবেদিন সাহেবের বিভিন্ন বিষয়ে কিছু আলোচনা চলাকালীন, আমার প্রসঙ্গেও কিছু কথা হলো। মনে আছে, সুভাষদা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমার 888sport app ইন্সটিটিউটে উচ্চ ক্লাসে ভর্তি হওয়া ও পরে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব কি না। উনি আমাকে 888sport app ইন্সটিটিউটে ভর্তি হওয়া সম্ভব জানালেন। বললেন, এখানে এসে ও ভর্তি হয়ে যাক, বৎসর অন্তে ও পরীক্ষা দিক। শুধু ঐ কলকাতা আর্ট কলেজে যতদূর পড়েছে তার একটি প্রমাণপত্রের প্রয়োজন হবে। বলা যায়, সে দিনই আমার 888sport appয় পড়ার ছাড়পত্র মিলে গেল। কিছু কথাবার্তার পর ফিরে এসে সুভাষদার সঙ্গে পরামর্শ করে ওখানেই পড়ার জন্য মনস্থির করে ফেললাম। কয়েকদিন বাদে কলকাতায় ফিরে এলাম। বাড়ির মতামত নিয়ে 888sport appয় ফিরে আর্ট ইন্সটিটিউটে ভর্তি হলাম। পূর্ব পাকিস্তানে আর্ট ইন্সটিটিউট কয়েক বছর পূর্বেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর জয়নুল আবেদিনের প্রযত্নেই সেটা সম্ভব হয়েছে।

888sport appয় গিয়ে অনুভব করলাম এক নতুনভাবে নতুন করে গড়ে তুলবার এবং পেলাম 888sport live chat-কলা আন্দোলনের এক আবেগময় পরিবেশ।… অধ্যক্ষ জয়নুল আবেদিন সাহেবের আমি খুব প্রিয় ছাত্র ছিলাম। তাছাড়া কামরুল হাসান ও সফিউদ্দীন আহমেদ সাহেবের সঙ্গে আমার সম্পর্কও ছিল খুব নিকট। এছাড়া আমার সহপাঠী 888sport live chatী আমিনুল ইসলাম ও অন্য 888sport live chatীবন্ধুরা যেমন রশিদ চৌধুরী, সুজাতা বশীর, দেবদাস চক্রবর্তী, কাইয়ুম চৌধুরী, ইমদাদ হোসেন খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলাম।… 888sport appয় থাকাকালীন আমার 888sport live chatীজীবনে জয়নুল আবেদিনের ব্যক্তিত্ব ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। তাঁর ছবি আঁকা ও ভাবনা প্রভাবিত করে। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি আমন্ত্রিত 888sport live chatী হিসেবে জয়নুল আবেদিন সাহেব বিদেশ গিয়েছিলেন। ফিরে এসে তিনি 888sport live chatকলায় অনেক পরিবর্তনের কথা আমাদের শোনালেন। এর পূর্বেই কিছু 888sport free bet login ও ছাপাই ছবির মারফৎ এসব নতুন ধারার সঙ্গে আমার কিছু কিছু পরিচয় ঘটেছে। কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। উনি কিছু বড়মাপের নিখুঁত প্রায় মূল ছবির মতো ছাপান ছবি বিদেশ থেকে এনেছিলেন। তিনি আমাদের সেগুলো দেখালেন। সে সম্বন্ধে কিছু বললেন, তা আমাদের কাছে নতুন মহাদেশ দেখার বিস্ময় নিয়েই হাজির হয়েছিল। তাঁর কাছে প্রশ্ন করে অনেককিছু যেমন জানতে পেরেছি আবার আধুনিক 888sport live chatকলার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তাঁর রূপ পরিবর্তন সম্পর্কেই তাঁর সুচিন্তিত বক্তব্য শুনেছি। আবেদিন সাহেব খুব সুন্দর করে বলতেন। এখনও মনে পড়ে তাঁর গল্পচ্ছলে ছোট ছোট 888sport live chat সম্বন্ধে বক্তব্য ও উপদেশের কথা। কথায় কথায় তিনি একদিন 888sport live chatকলা নিয়ে আলোচনায় বললেন – দেখ 888sport live chatকলায় অনুকরণ বর্জন করার দিকে প্রথমেই চেষ্টা করতে হবে। স্ব-সৃষ্টির প্রচেষ্টাই সৃষ্টিমূলক 888sport live chatকলার জন্ম সম্ভব করে। 888sport live chatগুণ বিভিন্নতা নিয়ে বিশিষ্ট হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া তাঁর আর একটি কথা আজও প্রাসঙ্গিক ও মূল্যবান মনে হয়। তিনি বলতেন, দেখ আমরা সবাই একভাবে দেখি না। সবকিছুর মধ্যে সমভাবে থেকেও এক একজন তার মতন করে দেখে। আর এ দেখা একটি চরিত্র পেলেই হয়ে ওঠে বিশিষ্ট ও তাৎপর্যময়। এখন বুঝতে পারি তিনি ছবিতে নিজ ব্যক্তিত্ব প্রকাশ ও বিশিষ্টতার প্রশ্নে আলোড়িত হচ্ছিলেন। আমরা পূর্বে দেখেছি তাঁর ছবিতে দৃশ্যজগৎ বন্যা, দুর্ভিক্ষ এসব বাস্তবতা তীব্র সমবেদনায় উপস্থিত। আবার পাশাপাশি অতৃপ্ত 888sport live chatী মন। পরবর্তীকালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় একটি সহজ সরল বাংলার লোকায়ত 888sport live chatরূপের বিশিষ্টতাকে অবলম্বন করতে দেখি। অতি আধুনিক মননে এইভাবে আমাদের চোখের সামনেই আবেদিন সাহেব পালটে যেতে লাগলেন। ছবিতে এলো কিছু অস্থিরতা, আধুনিক ভঙ্গি, দ্বিমাত্রিক অনুভবের সঙ্গে বাংলার গ্রাম্য পুতুল, প্রতিমার গঠনগত রূপকে আত্মস্থ করে নিজের মতন করে এক ভিন্ন রূপে প্রকাশ করতে চাইলেন। আবেদিন সাহেব ছাড়া 888sport live chatী কামরুল হাসানও ঐ ধরনের লোকায়ত 888sport live chatের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বলা যায় তুলনায় আবেদিন সাহেবের ছবি বেশি 888sport live chatগুণসমৃদ্ধ ও 888sport appsীয় চরিত্র অর্জনে সমর্থ হয়েছে। একটি ভিন্ন মাত্রা বহন করেছে।’

888sport live chatী রবীন মন্ডল ‘আমার কথা’য় লিখেছেন, ‘যুদ্ধের দামামা বাজার সঙ্গে সঙ্গে তার বিধিবদ্ধ এবং অবধারিত যা তা এসে গেল দুর্ভিক্ষের রূপ নিয়ে। সেও এক সময় গেছে। অনেক বড় বড় কথা সাজিয়ে আমরা মানবিকতার কথা বলি। কিন্তু কথার মালা দিয়ে সে পরিবেশের কথা সঠিক বর্ণনা করা নেহাতই বাতুলতা।

কাগজ বা সংবাদপত্রে সে সময় কিছু কিছু ছবি ছেপে বের হতে দেখতুম। ফোটোগ্রাফীতে দুর্ভিক্ষের যে সব ছবি ছাপা হত তা আমার মনকে টানত না। কারণ চোখের সামনে সে সব দৃশ্য দেখেছি। কিন্তু হাতে আঁকা যে সব ছবি তখন আমার মনকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছিল তা হল 888sport live chatী জয়নুল আবেদিনের দুর্ভিক্ষ সিরিজের চিত্রমালা। ভিন্ন সময়ে ভিন্ন কাগজে বের হত সে সব। তুলির মোটা মোটা টানে কালো রঙে আঁকা। এত বেশি আকর্ষণবোধ করেছিলুম যে, সে সময় সে ছবিগুলো নিয়ে আমি তার হুবহু অনুকরণ করেছিলুম একাধিকবার। মনে পড়ে পরবর্তীকালে স্কুলে থাকাকালে হাতে লেখা ম্যাগাজিনে আমার আঁকা যে-সব ছবি বের করেছিলুম তার অধিকাংশই 888sport live chatী জয়নুল আবেদিনের ছবির হুবহু অনুকরণ।

বাইরের দুর্ভিক্ষের তান্ডব থেকে আমাদের মত পরিবারও রেহাই পায়নি। নানাভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছিল খাদ্যসংকট সম্বন্ধে সচেতন হতে। মনে আছে চালের নিদারুণ অনটনে আমাদের স্থানীয় অনেক পরিবারই ভীষণ অসুবিধার মধ্যে পড়ে। এমনকি খোলাখুলিভাবে চালের বস্তা, রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়াও ভয়ের সৃষ্টি করত। কারণ লোকে জানতে পারলে হয়ত সে চাল লুট হয়ে যেত।

আমাদের বাড়ির গৃহিণী বড় জ্যাঠাইমা। শুধু আমাদের পরিবারের কেন, বলা যায় তিনি আমাদের পল্লীর বিশেষ একজন ছিলেন। মনে আছে ঐ দুর্ভিক্ষ পর্বে আমাদের বাড়িতেও চালের অভাব। বড় পরিবার। ফলে সে অভাব আরো প্রকট। একদিন জ্যাঠাইমা আমাকে বললেন তাঁর সঙ্গে যেতে। রিক্সা নিয়ে আমরা হাওড়ার কাশুন্দিয়া অঞ্চল থেকে দুখানি চালের বস্তা নিয়ে এলাম। লোকের নজরে পড়লে বিপদের সম্ভাবনা ছিল। এই দুর্ভিক্ষের চিত্র আমার মনে এত প্রভাব ফেলেছিল যে সে-বয়সে, অপরিণত মনে দু-একটা গল্প লিখে ফেলেছিলুম – যার একটার নাম মনে আছে – ‘মা একটু ফ্যান দাও’।’