‘পরম্পরা’ নিয়ে বরেণ্য 888sport live chatী রফিকুন নবীর সঙ্গে কথোপকথন

‘পরম্পরা’ শিরোনামে গ্যালারি চিত্রকের আয়োজনে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে এদেশের নামি এক 888sport live chatীপরিবারের যৌথ 888sport live chatকর্ম-প্রদর্শনী। এই 888sport live chatীপরিবারের প্রতিষ্ঠা যাঁকে কেন্দ্র করে তিনি রশিদুন নবী (১৯১৪-৯৫)। এক তৃষ্ণার্ত 888sport live chatীমন বহন করে চলেছেন আজীবন। বরেণ্য 888sport live chatী রফিকুন নবী তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র। পিতার সৃজন ও 888sport sign up bonusময়তা আর তাঁর নিজের 888sport live chatীজীবনের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে তাঁর মুখোমুখি হয়েছিলেন 888sport live chatী জাহিদ মুস্তাফা।
জাহিদ মুস্তাফা : সম্প্রতি ‘পরম্পরা’ শিরোনামে আপনার পরিবারের সদস্যদের এক চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আপনার পিতার আঁকা চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্য আমাদের 888sport live chatী ও 888sport live chatামোদীদের আকৃষ্ট ও অনুসন্ধিৎসু করেছে। আমি জানতে চাইছি, 888sport live chatী রশিদুন নবী এতদিন কেন আড়ালে থেকে গেলেন?
রফিকুন নবী : বাবা ছিলেন জাত888sport live chatী। ছবি আঁকা তাঁর প্যাশন ছিল। তবে 888sport live chatী হিসেবে নামদাম কী হবে না হবে এ নিয়ে ভাবতেন না। ছবি আঁকার পর তাঁর কাজ ভাগাভাগি হয়ে যেত, কাজ জমত না। অনেক বছর আগে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের জন্মশতবার্ষিকীতে ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে তাঁর একমাত্র একক প্রদর্শনী একটা আয়োজিত হয়েছিল বটে, তাতে তাঁর যে-কাজ ছিল তার বেশিরভাগ ভালো কাজ ভাগবাটোয়ারা হয়ে গিয়েছিল। তিনি নিজেও হয়তো 888sport live chatী পরিচয়ে সেভাবে সামনে আসতে চাননি।
জাহিদ মুস্তাফা : 888sport live chatামোদীরা মনে করছেন সময়ের নিরিখে 888sport appsের সমকালীন 888sport live chat-ইতিহাসের পাদপ্রদীপের আলোয় তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। আপনাদের তেমন কোনো উদ্যোগ আছে কি?
রফিকুন নবী : এই প্রদর্শনীর আয়োজন সে-উদ্দেশ্যেই। বাকিটা 888sport live chatের ইতিহাসবেত্তাদের কাজ। যে-কালের স্বশিক্ষিত 888sport live chatী তিনি, সেই সময়ের বিবেচনায় রশিদুন নবী অবশ্যই আমাদের 888sport live chat-ইতিহাসের অংশ। আমরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বাবার কাজ আর তাঁর জীবন নিয়ে একটি স্মারকগ্রন্থ করব।
জাহিদ মুস্তাফা : তাঁর জীবদ্দশায় এই আয়োজন করা উচিত ছিল। সেটি কি করা যেত না?
রফিকুন নবী : করা যেত, করলে ভালোও হতো। জীবিতাবস্থায় বাবাকে মর্যাদার আসনে দেখতে পেলে আমাদেরও ভালো লাগত। বলতে পারো, আমরা তখন এমন একাট্টা হতে পারিনি। আসলে আমাদের বাবার ভাগ্যটাই খারাপ! ভুল আমাদেরও আছে। বাবার সব কাজ একত্র করতে পারিনি। সময় থাকতে এ-উদ্যোগও নেওয়া যায়নি।
জাহিদ মুস্তাফা : 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিন, সফিউদ্দীন আহমেদসহ অগ্রজ 888sport live chatীদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। তাঁরা রশিদুন নবীর কাজ দেখেছেন। এসব নিয়ে তাঁদের অভিমত কেমন ছিল?
রফিকুন নবী : আমি ছাত্র থাকাকালে দেখতাম বাবা চারুকলায় নিয়মিত আসছেন, আগেও এসেছেন। আবেদিন স্যার, সফিউদ্দীন স্যারের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। 888sport live chat নিয়ে আলোচনা করতেন। তাঁরা বাবার কাজ দেখেছেন, তাঁর কাজ সম্পর্কে উৎসাহ জোগাতেন। সেই কলকাতা থেকে তাঁদের সঙ্গে বাবার বন্ধুত্ব। বিশিষ্ট অন্য 888sport live chatীদের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল।
জাহিদ মুস্তাফা : রশিদুন নবী নিজের আঁকা ও তাঁর 888sport live chatদর্শন নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলতেন কিনা?
রফিকুন নবী : ছবি আঁকাতেই ছিল বাবার আনন্দ। আঁকার পাশাপাশি ভালোবেসে ভাস্কর্যও গড়েছেন। কাজ নিয়ে তাঁর তেমন কোনো উচ্চবাচ্যও ছিল না। নিজের সৃজনশীলতার সঙ্গে থাকাটাই ছিল নিজের কাছে তাঁর 888sport live chatদর্শন। আমি তাঁর কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে বড়জোর বলতাম – বাহ্, ভালো লাগছে। এর বেশি বলার সাহস আমার ছিল না। তিনিও আমার কাজ দেখে বাহবা দিতেন। ব্যস এটুকুই। আর্ট কলেজে ভর্তির সময় বলেছিলেন, দেখিস আর যাই করিস, আমার নাম ডোবাস না। এখন ভাবি, হয়তো তাঁর নাম অন্তত ডুবিয়ে দিইনি।
জাহিদ মুস্তাফা : রশিদুন নবীর চিত্রকর্ম দেখে মনে হয়েছে আপনার 888sport live chatদর্শনে বাঙালি মধ্যবিত্তের পারিবারিক জীবন ও প্রকৃতির যে রূপ-রসের আখ্যান দেখা যায় তাতে পিতার অংকন-ভাবনার ছায়া আছে। এ বিষয়ে আপনার কী ব্যাখ্যা? শুনেছি পিতার স্বপ্নপূরণের দায় বহন করে আপনার 888sport live chatজীবন। এ-নিয়ে আপনার অভিমত জানতে চাই।
রফিকুন নবী : ছেলেবেলা থেকেই বাবার ছবি আঁকার সঙ্গে আমার চেনাজানা। আমার 888sport live chatশিক্ষা জীবনকালে তাঁর কিছুটা প্রভাব থাকা বিচিত্র নয়। তবে পরবর্তীকালে আমার চিত্রপটে স্টাইলাইজেশন করে বিষয়ের প্রকাশ করেছি। বাবা আঁকতেন নিজের মতো, আমার কাজ আমার মতো। চারুকলায় আমার পড়তে আসার পেছনে আশিভাগ ইচ্ছা ছিল বাবার, আমার ইচ্ছা ছিল বিশভাগ।
জাহিদ মুস্তাফা : আপনার মধ্যে যে রম্যচিন্তা ও রসবোধ আমরা প্রত্যক্ষ করি, সেটির উৎস সম্পর্কে জানতে চাইছি।
রফিকুন নবী : কিছুটা আমার বাবার কাছ থেকে পাওয়া। বাকিটা তাঁর মায়ের কাছ থেকে। আমার দাদির কাছে মজাদার নানা গল্প ও হাস্যরসের বিপুল ভান্ডার ছিল। তার থেকে তিনি মাঝে মাঝে আমাদের জন্য কিছু কিছু মজার গালগল্প ছাড়তেন। পরে এদিক-সেদিক গিয়ে, নানা কিছু পড়ে-টড়েও অনেক মজার খনির সন্ধান পেয়েছি। সেসবের ছিটেফোঁটা কিছু হয়তো আমার লেখায়-বলায় চলে আসে।
জাহিদ মুস্তাফা : পুলিশ কর্মকর্তার সন্তান হয়েও ষাটের দশকে ছাত্র-গণআন্দোলনে কীভাবে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন?
রফিকুন নবী : পুলিশ বলতে যা বোঝায় বাবা তেমন ছিলেন না। পোশাকধারীও ছিলেন না। তাঁর পেশাগত জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে পুলিশের বিশেষ শাখায়। আমার শিশুকালে তাঁকে পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় দেখেছি। আমার শৈশবে বাবার এক ঘটনার কথা বলি। বাবা তখন থানার ওসি। এক চোর ধরা পড়েছে। তাকে আনা হলো বাবার সামনে। বাবা তাকে দেখে বললেন, কি রে তুই আবার চুরি করেছিস! চোর হাতজোড় করে বলে, পেটের দায়ে চুরি করছি হুজুর। নইলে খাবো কী? চোরেরা যা বলে আর কী। বাবা বলেন, এবার বল কী খাবি? চোর ভীত স্বরে বলে, হুজুর মারতে হলে আপনি মারুন। হাবিলদার সাবের হাতে মার খেলে আমি শেষ!
পুলিশের পোশাকে ছোটরা বাবাকে দেখেছে তাঁর চাকরিজীবনের শেষদিকে তিনি যখন যশোরের পুলিশ সুপার হয়েছিলেন। আর সে-সময়টায় আন্দোলনের এমন এক আবহ ছিল যে, তাতে যুক্ত থাকতেই হতো। ছাত্র ইউনিয়নের হয়ে কাজ করতাম। পোস্টার কার্টুন করে হাত মকশো হয়েছে। বাবা জানতেন আমরা কী করছি। তাঁর কলিগরাও জানতেন। সে-সময়ের পুলিশরা দেশপ্রেমিক ছিলেন। বাবা বরং মাঝে মাঝে কার্যকর কিছু উপদেশনা দিতেন, বলতেন – সাবধানে করিস।
জাহিদ মুস্তাফা : আপনার 888sport live chatীজীবনের সামগ্রিকতায় আমরা প্রত্যক্ষ করেছি সৃজনে ও বিপুল কর্মযজ্ঞে নিবেদিত আপনার জীবন। প্রায়োগিক 888sport live chatের নানা ক্ষেত্রে আপনার এত সাবলীল বিচরণ কি করে সম্ভব হলো! কার্টুনে কখন কীভাবে এলেন? এতে আপনার সৃজনজীবন ব্যাহত, নাকি সহায় হয়েছে?
রফিকুন নবী : পঠন-পাঠন চারুকলায়। সে-সময়ের শিক্ষাব্যবস্থা অনেকটা কলকাতার মতো। পরিবারের সঙ্গে বিদ্রোহ করে ভর্তি হতে হয়। ভবিষ্যতে যাতে কিছু করে-টরে খাওয়া যায়, তেমন সিলেবাস ছিল। আমরাও নানা দিকের নানা কাজের উপযোগী করে নিজেদের গড়েপিটে নিয়েছি। নিজেদের পড়ালেখার খরচ চালিয়েছি। বুক ইলাস্ট্রেশন করেছি, প্রকাশক তৈরি করেছি। আবেদিন স্যার, কামরুল হাসান, কাজী আবুল কাশেম কলকাতায় এসব করেছেন, 888sport appয় পর্যায়ক্রমে এসবে যুক্ত হয়েছেন কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান প্রমুখ 888sport live chatী। সেই ধারাবাহিকতায় এসব কাজে আমারও সম্পৃক্তি।
888sport live chatী হিসেবে কোথায় যাব তার কোনো হিসাব ছিল না। ছাত্র-গণআন্দোলনের প্রয়োজনে স্বাধীনতার আগে থেকেই কার্টুন আঁকি। পত্র-পত্রিকায় কার্টুনের শুরু স্বাধীনতার পর।
888sport live chatের নানা শাখায় বিচরণ করে দেশ-বিদেশের গুণী মানুষদের সঙ্গে সহজেই আমার চেনাজানা হয়েছে, পরিচিতি হয়েছে। আমার ছবি আঁকায় এসবের প্রণোদনা এসেছে।
জাহিদ মুস্তাফা : আপনার দীর্ঘ শিক্ষকজীবনকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? নতুন প্রজন্মের 888sport live chatী, 888sport live chatের শিক্ষক ও 888sport live chatবোদ্ধা গড়ার ক্ষেত্রে আপনার শিক্ষকজীবনের সাফল্যকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
রফিকুন নবী : শিক্ষকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক। ছাত্রদের শেখাচ্ছি শুধু এমন নয়, তাঁরা যেন দাঁড়াতে পারে সে-জায়গাটা তৈরি করতে হয়েছে। আমার নিজের অবদান নিয়ে আমি ভাবিত নই। এটি ইনফিনিটি, শিক্ষকদের সবার অবদান। কোনো ছবিকে বাতিল বলি না। ছাত্রদের কাজের ভুল ধরিয়ে দিয়েছি। পাশ করে গেলে সে 888sport live chatী হয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটাও একটা ‘পরম্পরা’। আবেদিন থেকে এ পর্যন্ত।
জাহিদ মুস্তাফা : সমকালীন বিশ্ব888sport live chatে কিংবা নিদেনপক্ষে এশিয়ার নিরিখে 888sport appsের চারু888sport live chatের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনার উপলব্ধি কী?
রফিকুন নবী : বিশ্বায়নের এই যুগে আমরা পিছপা হয়ে থাকিনি। আমরা এশিয়া দ্বি-বার্ষিক প্রদর্শনী করছি, সামদানী আর্টফেস্ট হচ্ছে। বাইরের বড় বড় 888sport live chat-আয়োজনে যাচ্ছে আমাদের তরুণ 888sport live chatীরা। তারা দেখছে, নিরীক্ষা করছে। আমরাও নানা দেশের 888sport live chatীদের কাজ দেখছি। তারা আমাদেরটা দেখছে। এই দেওয়া-নেওয়ার প্রক্রিয়ায় এশিয়ায়, এশিয়ার বাইরেও এগিয়ে গেছে আমাদের চারু888sport live chat।