পাবলো নেরুদার 888sport app download apk

বলা হয়, পৃথিবীতে পাবলো নেরুদার 888sport app download apkই সবচেয়ে বেশি অনূদিত হয়েছে। এখানে যেসব 888sport app download apk আলেস্টার রিডের ইংরেজি 888sport app download apk latest version থেকে বাংলায় পুনরনুবাদে দেওয়া হলো, সমস্ত 888sport app download apkই আলেস্টার রিডের মূল স্প্যানিশ থেকে ইংরেজি ‘Isla Negra’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া। একশ 888sport app download apkর এই কাব্যগ্রন্থটি আত্মজীবনীমূলক। গদ্যে রচিত নেরুদার ‘মেমোয়ার্স’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৪ সালে কবির মৃত্যুর পরে। স্বীকারোক্তিমূলক সেই গদ্যরচনা তখন সারা পৃথিবীতে তুমুল আলোড়ন তোলে।

আলোচ্য অনূদিত 888sport app download apkর সিংহভাগই নেগ্রা দ্বীপে রচিত। তাই স্প্যানিশ ভাষায় ‘Memorial de Isla Negra’ ইংরেজিতে ‘Isle Negra’ হয়ে আমাদের মনস্ক ধেয়ানে এসেছে। বন্ধু 888sport app download apk latest versionক আলেস্টার রিডকে 888sport app download apk latest versionকর্ম চলার সময় নেরুদা লেখেন ‘Don’t just translate my poems, I want you to improve them. রিডের 888sport app download apk latest version ভালো, তবে তিনি নেরুদার রচনার কতটা উন্নতি ঘটিয়েছিলেন তা বলতে পারবেন স্প্যানিশ ভাষাপ্রাজ্ঞ মল্লিনাথরা। পাশাপাশি ছাপা মূল স্প্যানিশ ও ইংরেজি তর্জমা দেখলে যা এক পলকেই বোঝা যায়, তা হলো যতিচিহ্ন বহু জায়গায়ই পরিবর্তিত ও বৃদ্ধি ঘটেছে ইংরেজির ক্ষেত্রে। ফলে বহু অসম্পূর্ণ বাক্যকে অর্থ অক্ষুণ্ণ রেখে বাংলা 888sport app download apk latest versionে আনতে আমার অল্প-বিস্তর অসুবিধেতো হয়েইছে। কয়েক ক্ষেত্রে যৌগিক বাক্য সহজবোধ্য করার জন্য, কমবেশি আপন মনের মাধুরী মেশাতেই হয়েছে। তবে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি প্রাণপ্রিয় নেরুদার মূল বক্তব্যের যেন ব্যত্যয় না ঘটে। রচনাকে বাঙালি করার জন্য ক্বচিৎ দু-একটি ক্ষেত্রে ক্রিয়া, বিশেষণ বা সমার্থবোধক শব্দ যোগ করতে হয়েছে।

পাবলো নেরুদাকে নোবেল 888sport app download bd দেবার সময়ে সাইটেশনে বলা হয়েছিল কবি নেরুদা হলেন ‘The poet of violated dignity who brings alive a continent’s destiny and dreams’-এর চেয়ে সত্যভাষণ হয় না। নেরুদার স্বদেশচেতনা, দেশের ভূগোল, ইতিহাস, রাজনীতি, নিজের বর্ণিল বহুকৌণিক জীবন, সবই এক মহান মেলবন্ধনে মিশেছে নেরুদার 888sport app download apkয়। এক জীবনেই একাধিক জীবনযাপনের অভিজ্ঞতা তাঁর 888sport app download apkয় বিধৃত। নেরুদার সক্রিয় রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৪৩ সালে। সে বছর খনি অঞ্চল থেকে তিনি দেশের সিনেটে নির্বাচিত হন কম্যুনিস্ট প্রার্থী হিসেবে। কিন্তু সহ-সিনেটরদের অসাধু কর্মপন্থায় তিনি কখনই খুশি ছিলেন না। এক সময় রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার কথাও ভেবেছিলেন। ১৯৭০ সালে চিলির কমিউনিস্ট পার্টি দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পদের জন্য তাঁকে মনোনীত করতে চাইলে তিনি সেই পদে সতীর্থ সালভাদোর আলেন্দেকে প্রার্থী করতে পার্টিকে রাজি করান এবং নিজে চিলির রাজদূত হয়ে চলে যান প্যারিসে। প্যারিসে থাকাকালীনই ১৯৭১ সালে পান নোবেল 888sport app download bd। এর আগে ১৯৫২তে পেয়েছিলেন লেনিন 888sport app download bd (তখন নাম ছিল স্ট্যালিন 888sport app download bd)।

চিলির দুর্গত অসহায় মানুষ, শ্রমজীবী নিপীড়িত মানুষ, গাছপালা, বিচিত্র নিসর্গ, সর্বোপরি প্রেম, সবই অপার মহিমায় এই কাব্যজীবনীগ্রন্থে উপস্থিত। জীবনানন্দের মতো হেমন্ত ঋতু নেরুদার প্রিয় ঋতু ছিল। 888sport app download apk latest versionক আলেস্টার ভূমিকায় লিখছেন “The books that Neruda wrote one of that (এখানে his পড়ুন) fruitful time he referred to as his “Autumn”।’

আমি পূর্বে বাংলা ভাষান্তরে প্রকাশিত হয়নি এমন 888sport app download apkরই পুনরনুবাদে চেষ্টিত ছিলাম। তবু এর দুএকটি, যেমন ‘কমিউনিস্ট’ 888sport app download apkটি নাকি শুনেছি আগেও অনূদিত হয়েছিল। সেপ্টেম্বর ২৩, ১৯৭৩ সালে সানডিয়াগোতে এক চিকিৎসালয়ে তিনি মারা যান। কিছুদিন আগে থেকেই তাঁর শরীর ভালো যাচ্ছিল না। বিশেষত অল্প আগে একটি মিলিটারি ক্যুতে চিলির নির্বাচিত সরকারের পতন হয়। সালভাদোর আলেন্দে হন অপসারিত।

আলেন্দে ছিলেন নেরুদার অত্যন্ত প্রিয় বন্ধু, এই সামরিক আধিপত্য অসুখকে বাড়িয়ে দেয় ও অনতিকালেই নেরুদার মৃত্যু হয়। কবির শতবর্ষে আমরা অনেকটা নিয়মবিনীত 888sport apk download apk latest version জানাই, তাঁকে নতুন করে পাবো বলে তাঁর 888sport app download apk, আত্মার, মুখোমুখি হবার কথা বলি। পৃথিবীর সর্বাধিক অনূদিত এই কবির জন্য সামান্য একশ বছরের পরিসর নয়, আরো অনেক অনেক বড় মানসাঙ্ক লাগবে।

ঘুম নেই

রাত্রি মধ্যযাম, ঘুম নেই, নিজেকে প্রশ্ন করি

চিলির ভাগ্যে কি আছে?

এই গরিব, ম্লান, স্বদেশের ভবিষ্যৎ কি?

যে স্বদেশকে এত দীর্ঘকাল আমি ভালোবেসে

এসেছি যে বিশাল জাহাজটি আমি পছন্দ করেছি!

ওই যে অনড় পাথর, ছোট ছোট শস্যবাগান

সমুদ্রফেনার কাছে তীরের মাটিতে ফুটে ওঠা

টাটকা গোলাপ – সবইতো আমার দেশ, আমি

এদের মধ্যেই মিশে আছি।

দেশের প্রতিটি মানুষকেই আমি চিনি

প্রতিটি ঋতুর আমি উত্তরাধিকারী,

ক্রন্দনেও চিরসঙ্গী, সঙ্গী সমস্ত ফুলের ফুটে ওঠায়।

এখন আমি বুঝি

যে-সব বছরগুলি শুধু সন্দেহে আর অবিশ্বাসে

শেষ হয়ে গেছে

যে সময় আমাদের রক্তাক্ত করেছে

সব কি তাহলে শেষ হলো! এবার আমরা

চাইতেই পারি উন্নত ও সঙ্গত জীবন!

যখনি এ-সব ভাবি, দেখি আবার দুর্দিন

উকি দিচ্ছে, চারদিকের দেয়ালে তার জেগে উঠছে ছায়া।

কমিউনিস্ট

আমরা যারা পাথরকেও দিয়েছি উত্তাপ, হয়েছি

ইস্পাতদৃঢ়, নিয়মানুবর্তিতা মেনেছি কঠোর

ভালোবাসাকেই করেছি একমাত্র প্রাণের সম্বল!

আমরাতো জানতামই রক্ত ঝরাতে হবে!

আকাশের তারায়ও যখন ভাঙন লাগে, মন

বিষণ্ণ অশান্ত হয় যে চাঁদের গ্রহণ-লাগা দেখে

তখন কি তোমরা একবারো ভাববে আমরা কারা, আমরা কি?

আমাদের ভাবনাকে চিনবে, জানবে কি হতে চাইছি আমরা?

শোনো, আমরাই এ পৃথিবীর মহার্ঘ খনিজ

সত্য-উপাদানে গড়া প্রণম্য মানুষ

সমুদ্রকে অফুরান গতির সমান উদ্বেল

আমাদের ভিত্তি সুদৃঢ়

সাময়িক অসময়, আধি, চোখকে করে না অন্ধ দেশের কারণে যদি মৃত্যুও হয়

জেনো সে মরণে চেনা কোনো সন্তাপ থাকবে না!

আমরাই শান্তি বজায় রাখছি

সব কিছু জেনে ফেলা বেদনাদায়ক, তবুতো জানতেই হয় সত্যকে, যে সত্য ছায়ার ভিতর থেকে পরিশুদ্ধ হয়ে কাছে আসে বোঝায় দুর্গতি অনিবারণীয়,

তখনতো গুজবকেও সত্য মনে হয়

ধর্মান্ধকারেও দেখা যেতে পারে আলো, যা নাকি আসলে আলেয়া।

দুঃখ-দুর্দশাও বাস্তব, সত্যের দিক থেকে তারা চলে আসে মৃত্যুর দিকে, তখনো পাশেই থাকে জীবন, যে জীবন স্তব্ধতার গুরুভারে ভারি।

জীবনের জন্য রক্তের মূল্যতো দিতেই হবে অতীতের সব কঠোর পাথর, যারা ছিল 888sport free betয় বেশি তারাওতো আমাদের জয় পারেনি আটকাতে! আমাদের উজ্জ্বল ধারালো আলো যেন ছুরি টুকরো করেছে সব আঁধার মহিষ, আর সমঝোতার গোলটেবিল শুরু হয়ে গেছে,

তার ঘূর্ণন ছড়িয়ে পড়েছে স্বদেশের প্রতিটি কোণায়!

ওই দেখ সূর্যের বিশাল আলো এসে পড়েছে আমাদের মুকুটের ফুলে আবার কমরেডরা একে অন্যের প্রশ্নে দিচ্ছে সহাস্য উত্তর!

আমার শত্রু

আমার তরফ থেকে শুধু একটা গাছ বসাবো আমি!

যে গাছ সবরকম প্রতিকূল আবহাওয়ায় থাকবে অটল, আর

নির্ভয়ে উচ্চারণ করবো সব শত্রুদের নাম

সেইসব শত্রু যারা মৃত্যু দিতে চেয়েছিল আমাকে, আমিতো জানতাম

এরা কখনোই ভালোবাসে নি আমাকে, হায়! তারা শুধু ভাবছিল, কবে

এই পৃথিবী নামক গ্রহ আমার মাথায় নামবে, এ-শরীর টুকরো করে দেবে!

কবি

হ্যাঁ, এই সেই কবি যে তাঁর দুস্থ স্বদেশকে অক্ষর করেছিল,

শস্যকে ভেবেছিল জননী, দেশরক্ষী সৈন্যদের সাহস যুগিয়েছিল

সেই সব সৈন্যরা যারা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে স্বদেশের গলিপথে চলেছে দুরূহ রাত্রির ভিতরেও পরিশ্রমী রয়েছে!

সুতরাং আমাকে ফেরাতে পারবে না আর পিছু ডেকে, আমিতো তেমন কবি নই, যে সামান্য ভয়ের পিছু-ডাকে কখনই ফিরে এসেছে, বা আসবে!

888sport app download apk

ওরা যাদের মারছিল

সে-সব ভাইয়ের জন্যই কবি 888sport app download apk লিখেছিল,

লিখেছিল তাদের জন্য, যারা নীরবে দেশের জন্য কাজ করে গেছে, পাথরের সঙ্গে সংগ্রাম করতে করতে স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছে এনেছে উজ্জীবন, নিঃসঙ্গ হয়ে তারপর গিয়েছে কবরে।

সম্মান

সমুদ্রের তীরে এলে অন্য সবকিছু মনে হয় অর্থহীন! চারদিকই আজ অশুভ ইচ্ছায় দীন,

কিন্তু যারা চেয়ে আছে ভবিষ্যতের দিকে

তাদের নয়ন অন্যরকম, তারা সময়কে মাপে শুধু নিজস্ব আঙ্গিকে, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিতে দাঁড়িয়েও আমি বলবো

নির্ভয় যে মানুষ তাকে আমি প্রণাম জানাই।

নির্বাসন

রাজপ্রাসাদের ক্লান্ত পাথরগুলির পাশে

প্রাগের সুন্দর রাস্তা,

হাসি, উৎসব আর সাইবেরীয় বার্ডের পল্লব কাপরির আগুনলাগা সমুদ্রের ফসফরাস জল

রোজমেরি ফুলের কর্কশ গন্ধ

আর সবকিছুর ওপরে আমার প্রেম

অমোঘ প্রেমই আমার আয়ুকে দেশের মাটিতে প্রোথিত রেখেছে। শান্তিকে দিয়েছে কান্তি

আমার এক হাতে স্বদেশ-বান্ধব, অন্য হাতটিতে

কেউ কালো গর্ত খুঁড়ে গেছে, কিন্তু সেখানেও

বজায় রয়েছে প্রাণাবেগ, যার পাশে জ্বলছে স্বদেশ

পুড়ছে আর ডাকছে আমাকে, আমার জন্যই তার প্রতীক্ষা, তাড়না, সব যেন ডাকছে এসো, ফিরে এসে দেশকে বাঁচাও

নির্বাসন গোলাকার, অনেকটা আংটির মতো তোমরাওতো হাঁটছো গোল ঘুরপথে, গোলাকার পৃথিবীর যত দেশে যাও, সে-সব দেশতো তোমার নিজের নয়! রাত্রি আসে, অথচ আকাশে কোনো নিজস্ব নক্ষত্র নেই। তুমি অনেকটাই বিচলিত ভূতের মতন!

তোমাকে দারুণ যারা ভালোবাসে, তুমিতো তাদের একই রকম কেন ভালোবাসতে পারো না?

এটা কি তাজ্জব বিস্ময় নয়। কিছু কিছু স্বদেশবাসীরা হয়তো

বিরুদ্ধতা করে, বিদ্ধও করে, তাদেরতো কখনো গ্রাহ্যই করো নি। তারাতো 888sport free betয় স্বল্প, অসহায় বিরুদ্ধতা নামতো ওপর থেকে

সে-সব তিক্ততা এক প্রাক্তন বিষয়, তোমার জন্যই দেশ অপেক্ষায় থাকে, সবই তুমি ফিরে এলে দেখো জড়ো হবে তোমার দরজায়।

হৃদয়গভীরে আমি জানি

এখনো যে-সব চিহ্ন ঐতিহ্যবিহীন,

কোনো কিছুই যারা শনাক্ত করতে পারে না,

স্বদেশের বৃক্ষে যত মধু

পাখিদের সুদূরসঞ্চারী যে কূজন

শ্রবণের প্রত্যাশা বাড়ায়, যে পাখিরা আমাকে শৈশবে সূর্য-লাগা আলোর সকালে নিদ্রাকে ভাঙাতো

সে দেশতো আমারই গরিব দেশ, প্রাণাধিক প্রিয়।

দেশের আগ্নেয়গিরিও আমার, মরুভূমিতেও রয়েছিতো আমি, গ্লাসভর্তি-তরল-যা আমারই স্বাস্থ্যপানের ছলে

দেশবাসীরা দিচ্ছে চুমুক।

আমি বড় একা, যেন হারিয়ে গিয়েছি কোনো নিঃসঙ্গ বাতাসে, তখনোতো আমি ফাঁপা আভিজাত্যের চরম শত্রু!

অনেক শতাব্দী চকচকে মৌমাছির গুঞ্জন শুনতে শুনতে অনেকেই ক্ষয় লেগে শুতে গিয়েছে কবরে।

হে নির্বাসন! তুমি কি আমার দূরত্ব ক্রমে বাড়িয়ে তুলছো। ক্ষতের ভিতর দিয়ে আমি শ্বাস নিচ্ছি

তবু অবশ্য দায়িত্ব নিয়ে বেঁচেও রয়েছি।

যে দায়িত্ব শিকড়হীন তা অবশ্যই অন্যায়ের সর্বনাম

আর তা সৌন্দর্যের নিবেদন সর্বদা বর্জন করে,

কিন্তু যে প্রতিটি জাগ্রত পলে খোঁজে নিজের স্বদেশ

সেই নিজস্ব অভাগা দেশ

একমাত্র সেখানেই সে শুনতে পারে

‘হয় নিজেই শহীদ হও, না পারলে বোবা হয়ে যাও

বিষয় : ঈর্ষা

যারা ঈর্ষাপরায়ণ, তাদের আমি এক এক করে তুলে নিই।

জামা থেকে, চামড়া থেকে, যারা প্রতিদিনই আমার চারদিকে থাকে,

একবিন্দু জলের সাম্রাজ্য থেকেও আমি ঈর্ষা টের পাই।

আমি ঈর্ষাকে যতটা সম্ভব পারি ভালোবাসি,

তাদের বিফলতাকেও লক্ষ করি, পরিশ্রমেরও হিসাব নিই।

এমনকি এখন, যখন আমার কোনো ধারণাই নেই

কি করে কখন

সামান্য গা-ঝাড়া দিয়ে ঈর্ষা এসে লিলিফুল এবং লেবু গাছকেও সরিয়ে

দেয়।

যেখানে সহজ হাসির থাকার কথা

সেখানেই ঈর্ষার ভ্রুকুটি ঢোকে!

আর যা ছিল মধুর সব দূরে সরে গেল!

বয়সের ভারবাহী বাতাস

উড়িয়ে আনলো ধুলো, খাদ্যও ফুরালো, ভালোবাসা থেকে ছিন্ন হলো ফসলের বীজ সাপরাও জাগালো ক্ষত ফুলের পাপড়িতে হত্যা আর ঘৃণা জড়ো হয়ে জেগে উঠল ছাই! আমার আহত মুখে নক্ষত্ররা বেড়ে ওঠে মাকড়সার জালের মতো লিপ্সার বুনন শুরু হয় বিস্তৃত হবার ভয় চূড়ান্ত পর্যায়ে জেগে ওঠে, শুরু গুলতাগুলির নিচেও জাগে ঈর্ষার শিকড়, ঈর্ষার ধরন ধারণা এ-রকমই হলুদ!

পেড্রো! তুমি যখন মাছ ধরো-কি কর তখন?

মাছকে ডাঙায় তুলে আবার কি জলে ছেড়ে দাও?

নাকি জাল ছিঁড়ে ফ্যালো?

কামনা বাসনা ভুলে চোখ বুজে থাকো!

নিজের পাপকে আমি অস্বীকার করি না!

যা নিয়েছি সমুদ্র থেকে

প্রবাল, মাছের আঁশ, রামধনুপুচ্ছ থেকে,

মাছ হোক, শব্দ হোক, হোক না বৃক্ষের কোনো রুপা-রঙ পাতা

এমনকি জলের নিচের কোনো ডুবন্ত পাথর হোক

সব নিয়ে আসি মনের আলোর কাছাকাছি।

আমিতো নিজেই ধীবর, যা নাকি হারিয়ে গেছে জলে

তাদের আবার ফিরিয়ে আনতে চাই,

সে প্রয়াসে কারো ক্ষতি তো হয় না।

অপকারী নই আমি

মৃত্যু আমাকে বিন্দু ভয় দেখাতে পারে না

যে-মানুষ নিজে চায় আলো, সে আমাকে পাবেই

আমি নিজেকে ফুরাচ্ছি মানুষের গানে,

কিন্তু আমার সে গান কি ভুল পথ থেকে ঈর্ষাকে ফিরাবে? যে আমার বুকে এসে ভাসতে চায় না

নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথুল পন্থায়

বাতাস কি ভাসাবে তাদের কণ্ঠের ভাষা,

যারা আলো চায় তারা এ-রকম জন্মে জন্মাবে না!

যে-কোনো বৃক্ষই বনের অঙ্গ, কিন্তু যে না-মানুষ

সে পরিপার্শ্ব এড়িয়ে বেড়ে উঠতে পারে

তারপর হঠাৎ একদিন বোঝে

দুপায়ের নিচে তার আর শিকড় নেই, সে ডুবে গিয়েছে আঁধারে

ফুলে নয় ফলে নয়, ছায়া- সে তখন কেবলি ছায়ায়,

সেই ছায়া, রাত্রির আঁধার, এমন কি গাছের ডালপালা

সব দূরে সরে যাবে, ঈর্ষা বাড়বে যতো।

যে-সব বীজের কবোষ্ণ উত্তাপে স্ফুরণের কথা ছিল

তারাও আর আলোর আদর পাবে না, তাই ফুটেও উঠবে না, কেননা সূর্যের বাৎসল্য ছাড়া

বীজ কখনো ফুল হতে পারে না।

জানি না, যা বলছি আমি সত্যিই তা নিজে জানি কিনা !

আমিতো কখনোই এ-সব জানতে চাইনি

নানান কাজের ভীড়ে সময় ছিল না

এইসব, এতসব, ভালো করে দেখার, শোনার,

বিষয়গুলিকে সম্যক অনুভব করার!

আমি জানতাম ভালোবাসার গান আমাকেই গাইতে হবে,

বিশ্বাস করতাম আমি গান গাইবো আর বেড়ে উঠবো,

এভাবেই আয়ুকে ফুরাবো যার

বেঁচে থাকার লড়াই, ব্যথার গভীর সমর্পণ থেকে উঠে আসবে

আত্মার উৎসর্গ থেকে স্বদেশের কাজে।

আমিইতো সেই খুব ভোরে উঠে কাজ শুরু করা কাঠের মিস্তিরি

অথবা রাত্রির ক্লান্ত সব ঘোড়সওয়ার, যাদের সঙ্গে আমি

মদ্যপান করি, এভাবেই আমি আমার গানকে নির্মাণ করি

আর ভাবি আমি হয়তো দেশকে পেয়েছি,

হয় নিজেই আগুন হবো, না হয় আগুন থেকে

বহু দূরে যাব চলে, চাইবো

ভস্ম থেকেই উৎসে পৌঁছাতে।

আমার তো মনে হয়েছিল যা আমার আছে তার সব কিছু দিলে

বিবেক আমাকে উদগ্র রাখবে

দেবে সর্বাঙ্গসম্পূর্ণ এক দেশ—দেখার চোখ

আমার জীবন হয়ে উঠবে দেশবাসীর জীবন,

আমার মুহূর্ত পল, আমার শোণিত

যা কিছু চিন্তন, বস্তুর বাস্তব থেকে

সহৃদয় রঙের বর্ণালী,

নির্জন অরণ্যপথে অফুরান শান্তির সুঘ্রাণ,

আর ভালোবাসাতো নিজেই নদী, এমনকি মরণ,

এ-সব ইচ্ছার ভিতরেই জেগেছে শহর, এমনকি তাবৎ পৃথিবী,

সবুজের নির্জন তরঙ্গ থেকে যা বুকে উঠে আসে।

যে-সব সংসার ফুরিয়ে গেছে যুদ্ধের ক্ষতিতে

হেমন্তদিনের আশ্রয়ে যে শিখা এখনো জ্বলছে,

এবং শেষ অবধি মানুষ

তাদের নানান যন্ত্র এবং যন্ত্রণা, শ্রমিক আর তাদের সমস্যাগুলি,

কিংবা কুয়াশা ছিঁড়ে যে জাহাজ এগিয়ে চলেছে

সব কিছু, অথবা তাদের চেয়েও বেশি

যা কিছু, সে-সবের জন্যই আমি জীবনের কাছে ঋণী, ঋণী আমি মানুষের কাছে, কিন্তু তাদের জীবনস্পন্দন পেরেছি কি বদলে দিতে – হায়, নিজের রুধির ছাড়া আজ আমার আর কিছু নেই

যা দিয়ে শুধতে পারি স্বদেশের ঋণ!

কি করবো এখন নিজেকে নিয়ে, দেশ-জনতাকে নিয়ে?

যা আমি কখনো করি না হরণ

কি করে ফিরিয়ে দেবো তাকে?

এখন বসন্ত পরাতে চায় হলুদ মুকুট!

ওই যারা প্রবঞ্চিত হতবুদ্ধি শেষ অবধি বনে গিয়ে

খুঁজতে চাইছে জীবন? তারা কি তা পারে!

বড় দেরি হয়ে গেল পরিশুদ্ধ সত্যকে পেতে

পেলেও কি করে ঢালতাম পিপাসা পাত্রে

যে পাত্র আগেই এঁটো হয়ে আছে!

হয়তো কালের করাল লেগে কণ্ঠ হয়েছে কর্কশ

প্রাক্তন মুখ আর সত্যসাধন মন

কিছুইতো ফিরিয়ে যাবে না আনা!

ঘড়ির কাঁটাকে আবার উল্টো দিকে ঘোরানো যাবে কি

যাতে আবার কোমল মিলনহাস্যে আমরা সব এক হয়ে যাবো!

উলঙ্গ প্রকট ঘৃণা তার নখ দেখিয়েছে

রাগ আমাদের ব্যস্ত ও সংকীর্ণ করেছে

শেষ অবধি আমার জন্য বানিয়েছে এক

ঈর্ষার জান্তব কাঁটার মুকুট,

যে মুকুটে মৃত্যুর মরিচা আর রক্ত লেগে আছে।

এটা কোনো গর্ব নয় যে আমি

একেবারেই পাচ্ছি না ভয়

কিংবা প্রতিশোধ নেব বলে অপেক্ষায় আছি

অথবা ক্ষমতালোভ তাও আমার নেই

যা আসে ঈর্ষা আর স্বার্থলোভ থেকে,

আমার রয়েছে এক অফুরান আনন্দ-ভাণ্ডার

আসলে আমার যা আছে তা একধরন অসহায়তা।

আসলে প্রতিটি বিদ্রুপ, প্রতিটি কাকলি ভোর

আমাকে আলাদা করে, নতুন নতুন প্রত্যাখ্যাত থেকে

হাতকে বাঁচায়, এবং যে দেয়াল

এ-বুকে পাথর হয়ে বসে সে দেয়ালে

বাইরে গিয়ে আমিই লতা উঠিয়ে দিই,

তাদের ছোট কচি হাতগুলি আমাকে জড়ায়

আমি মুক্ত বনের বিপিনে যাই

অথবা ঘুমাই কোনো গাছের ছায়ায়!

হ্যাঁ! আমি জানি আমার তরবারি ঠিক কতটা ধারালো

জেনেই যথেষ্ট সাবধানী আমি,

প্রচণ্ড ক্রোধেও সুস্থির থাকি

নিজের চরিত্রধর্মে আমি অবিচল,

কিন্তু যখন গম্বুজশীর্ষে পায়রারা ডাকে

কুম্ভকার যখন ভেজা মাটিকে নির্মাণে গড়তে বাড়ায় দু’হাত

আমি কেঁপে উঠি, হৃদয় আটকে যায় তীক্ষ্ম বাতাসে,

মানসভ্রণে আমি পায়রার সঙ্গে উড়ি!

বৃষ্টি নামে, এবার বাইরে যাবো, বর্ষাধারায় ভিজে আকাশকে পাবো!

যাদের ভালোবাসি আমি, তাদের সঙ্গেই বাইরে যাবো,

আমি নগ্ন অস্তিত্ব এক

যেমন পাথরে উলঙ্গ সূর্য,

যারা এর মধ্যে বড় হয়, তারা নিজেরা জানে না

এই গোপন নির্মাণরীতি, তাই থামতেও পারবে না।

গম যেমন একসময় পাউরুটি হবেই,

যুক্তির বাইরে বা ভিতরে

তাদের ফলন বাড়বেই-সুতরাং বৃদ্ধিই নিয়তি

সেখানে আদেশ নেই, নির্দেশও অনুপস্থিত,

বস্তুর এই হলো ইচ্ছাবাসনা।

রুটির কারণে সংগ্রাম, সংগ্রাম ভিটেমাটির জন্য,

নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে অন্যের ওপরে জোর করে চাপানো

দেখলেই আমি আর আমাতে থাকি না

জ্যান্ত হই, প্রতিবাদে টগবগিয়ে ফুটি, তার নিজস্ব পদ্ধতি গড়ে ওঠে

প্রতিটি দিনের পরিপূর্ণতার ভিতরে।

সম্ভবত তখনো ঈর্ষা তার তর্জনি ও লাঠি

তুলে ধরবে আমার দিকে, এবং সেটাই হয়তো কারো কারো

উঠবে জীবিকা হয়ে,

উঠুক, কিন্তু সেটাই আমার শরীরকে জোগাবে

দেবে অতিরিক্ত উজ্জীবনী, গাঢ় প্রাণরস,

যা আমার 888sport app download apkর জন্য প্রয়োজন ছিল!

তখনতো অক্ষরের তীব্র ঝাঁঝালো স্বাদ

অসময়েও আমাকে জাগাবে

আমার প্রতিবাদী ভাষাকে তখন কেউ আর জল ভাববে না।

সুতরাং ঈর্ষা নক্ষত্র হোক বা ভঙ্গুর কাঁচ হোক

সে জন্ম থেকেই অধঃপতিত,

ভীষণ এক বিরক্ত রাস্তায়

রুটির দাবিতে আমি এভাবেই গান গাইবো

আমার হৃদয় এক সৎ রুটিওয়ালার।

অপেক্ষা করো পৃথিবী

হে সূর্য আমাকে ফিরিয়ে নাও!

হে আমার স্বদেশ

প্রাচীন বনানী

আমার আত্মায় তুমি বৃষ্টিগন্ধ ফিরিয়ে আনো,

সেই তরবারিগুলি যারা

ফিরে আসবে আকাশ থেকে, ঝরে পড়বে তারা নেমে আসুক,

ফিরে আসুক গোচারণ ভূমির নির্জন শান্তি,

অথবা একলা কোনো প্রান্তপাথর

নদীর আর্দ্র তীর

লার্চ গাছটির গন্ধ

গম্বুজের নিচে মানুষের ভীড়

হৃদয়ের জ্যান্ত বাতাস।

পৃথিবী, আমাকে ফিরিয়ে দাও

তোমার আদিম উপহার

দাও শান্তির স্থাপত্য যা নাকি গোলাপ থেকে

জন্ম নিয়ে শিকড়ে পৌঁছেছে!

আমি যা ছিলাম আবার তাই হতে চাই,

আমি বেঁচে থাকবো বা থাকবো না

তা ঠিক জানি না, তবু শিখতে চাই

বস্তু ও বিষয়ের ভিতরদেহলী গভীরতা।

কোনো নতুন কালো পাথর হতেও আমার আপত্তি নেই

যে পাথর খাঁটি, যাকে নদীও নেয় মেনে।

ভবিষ্যতের ডাক না সময়

ভবিষ্যতের দ্বিতীয় নাম সময়ের পরিসর

পৃথিবীর নানা বর্ণের পরিসর।

যে রঙটি লেগে আছে মেঘে

জলদর্পণে, বাতাসে,

অনেক স্বপ্নে ঘেরা গৃহস্থ কুটিরে

যেখানে তুষারসাদার জন্যও জায়গা রাখা থাকে

সঙ্গীতেরও থাকে অবসর।

কোনো ব্যর্থ প্রেমেই চুম্বনের সম্ভাবনা থাকে না,

অরণ্য গভীরে কিন্তু প্রতি মানুষের জন্য

স্থান রাখা থাকে,

রাস্তার ওপরে কিংবা ঘরের ভিতরে

ডুবোজাহাজের মতো আছে এক পাতাল লুকানো।

আসল কথাটা হলো শুধু নিজের স্বার্থের জন্যই সজাগ না থাকা, পর্বতমালার রুক্ষ পাথরের ভিতরে দাঁড়িয়ে আর্তনাদ করা

যেন তা পৌঁছে অন্য এক পর্বত শিখরে

যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সদ্য পদচিহ্ন জাগানো এক 888sport promo code।

এসো না এই শ্বাসবিচলিত নদী থেকে যাই দূরে

যে নদীর জলে মাছের সঙ্গে আমরা একদিন কেটেছি সাঁতার

ভোর থেকে রাত্রির প্রহরে প্রহরে সাজিয়েছি প্রাণ।

এখন এই সময়ের আবিষ্কৃত নয়া পরিসরের দিকে

এসো আমরা উড়ে যাই খাঁটি শান্তিবাসনায়।

উঁচু খনি অঞ্চল থেকে

উঁচু খনি অঞ্চল থেকে নির্বাচিত হয়ে

আমি সিনেটে এসেছি। আসন গ্রহণ করলাম

অন্যসব নামী দামি সিনেটরিদের সঙ্গে।

শপথ নেবার সময় ‘আমি দেশের নামে শপথ নিচ্ছি

শব্দধ্বনিটি নিজের কানেই যেন ফাঁপা শোনালো!

যে-কোনো প্রতিজ্ঞাই নেওয়া হোক না কেন,

অনেক ক্ষেত্রেই রক্তের গভীর বিশ্বাস থেকে তা উঠে আসে না।

তখনতো মনে হয় আসলে পরিহিত স্যুটের

টাইটিই শপথ নিচ্ছে, কিংবা জিভ, ঠোঁট, দাঁত – এরাই

উচ্চারিত বাক্যকে যতটা দূরত্বে পাঠানো যায় পাঠাচ্ছে!

আমি যে ভূমিখণ্ড থেকে নির্বাচিত হয়ে সিনেটে এসেছি

সেখানকার মাটি ধূসর রাত্রিতে কিন্তু দারুণ চওড়া চাঁদ,

শান্ত খনি শ্রমিকদের শ্রমও সঙ্গে নিয়ে এসেছি, এনেছি

আয়ু-ক্ষয় পরিশ্রমী জল্লাদ দিনের রুধিরপিপাসা,

মলিন বাসনপত্র, গোজামিল স্যুপ

ও স্যুপ খাবার ময়লা চামচ

আর তাদের নীরবতাও আমার সঙ্গে এসেছে,

তাছাড়া রয়েছে দেশের উত্তরপ্রান্তের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ,

প্রায় বন্ধ হবার মুখের খনিগুলি,

তবু যে-সব খনিমজুর এখনো অপ্রতিবাদী পরিশ্রমে

কাজ করে যাচ্ছে, আমিতো তাদেরও।

আমিতো শপথ নিলাম সাধারণ মানুষ আর আমার জন্মমাটির সপক্ষে,

তাদের ক্ষুধা, উৎপন্ন খনিজ, যার আড়ালে রয়েছে

প্রতীক্ষিত গোপন বারুদ, সেই গরিব শ্রমিক

মানুষগুলির জন্যই আমার শপথ!

নিজেকে যখন শোনাই এই যে তুমি দেশের নামে শপথ নিয়েছো!

তা কি পরে ভুলে যাবার জন্যই নিয়েছো!

অথবা তুমিও অন্যায় মেনে নেবে

সম্মান, শিরোপা, খ্যাতি পাবে তার জন্যই নির্বাচিত হতে চেয়েছো

আমার ম্লান হয়ে আসা গ্রন্থগুলির ওপর

জ্বলন্ত ডানহাতটি রাখবো কি শুধু পুড়িয়ে ফেলতেই?

নিঃসঙ্গ দীর্ঘশ্বাসের ভিতরে

আজকাল কখনো কখনো আমার ঘুম পায়,

শুনতে হয় স্বার্থপর জনপ্রতিনিধিদের অনিঃশেষ কোলাহল,

যাদের দেখলেই বোঝা যায়

তারা অনেকেই মানুষ নামের যোগ্য নয়

আসলে তাদের পরিচয় হলো শুধু ‘শূন্য’ কিংবা ‘সাত’ অথবা

 ‘পঁচিশ’

অপুংশক তারা গুণিতকেই ঘুস চায়,

ওরা বাজারের শর্করা চিনি লুকিয়ে ফেলে

কালো টাকায় বানায় নিজের অট্টালিকা,

কেউ সবজির মূল্য ঠিক করে

সিমেন্টের বন্টন সামলায় কেউ,

কেউ বা বাড়িয়ে দেয় কয়লার দাম,

কেউ আবার তামা কিংবা পশুচর্মের বিপণন নিয়ন্ত্রণ করে

এমনকি বিদ্যুৎ, যুদ্ধবারুদ, রেলপথ, মোটরগাড়ি,

সবকিছুরই নিয়ন্ত্রক সিনেটর।

দক্ষিণের বনাঞ্চলে ভোটদাতাদের মধ্যে

আমি প্রায় মমি হয়ে ওঠা এক বৃদ্ধকে দেখেছি,

দেখেছি এক জাহাজ মালিককেও, যারা নিজেরাই জানে না

কখন বলবে ‘হ্যাঁ’ কখন চীৎকারে বলতে হবে ‘না’।

এরা সকলেই প্রাচীন ফুরিয়ে যাওয়া

ভোট-ক্ষমতার শীতকাতর অধিকারী!

কারা ভুল কারণে পেল সিনেটে বসার নরম চেয়ার!

তারা জানে না দামাল ঢেউয়ের বুকে যে লবণ

কিংবা যারা দ্বিপদ হয়েও পুরোপুরি মানুষ হয়নি,

যারা কেবলিই দাম্ভিক

ক্ষমতাকে ব্যবহার করে দরিদ্র (স্বদেশবাসীর) বিরুদ্ধে

আইন নিজের হাতে তুলে নেয়

মানুষের ক্ষুধা, দুর্দশাকেও

স্বেচ্ছাচারে নিয়ন্ত্রণ করে

মৃত্যুও যাদের কাছে এক সহজ বিষয়,

সব কিছু নষ্ট করে।

শুধু নিজ নিজ পকেটকে করে তোলে ভারি!

যে-আলোর নিচে এলে সব কিছু স্পষ্ট আর ফাঁস হয়ে যায়

সেখানেও অলজ্জিত নির্ভয় তারা!

বলে যা করছে তারা সেটাই সঠিক।

আমার গরিব দেশকে নিয়ে বাণিজ্যে মেতেছে

অথচ দেখতে তারা আপাত-সম্ভ্রান্ত ফিটফাট

চকচকে চেয়ারে বসে পকেট সামলায়

যে পকেট ভর্তি শুধু অসাধু টাকায়,

ওই টাকাতো পারতোই হতে উন্নতির মূল, প্রধান অঙ্কুর।

আমিতো আলাদা

অবস্থানই বেছে নিয়েছিলাম!

আমি পাথরগুহায় থাকলেও

বঞ্চিত স্বদেশবাসীরা সেখানেও তাদের অভিযোগ পাঠাতো!

শত্রুমুখ কমরেডরা

888sport promo codeরা যারা চুল আঁচড়াবারও সময় পায় না,

পুরুষ, যারা শুধু খনির কাজেই জীবন ফুরিয়ে এনেছে

তাদের জন্যই আমি সিনেটে এসেছি!

যারা অন্যায়কারী, তারা কি জেনেছে

ক্ষয়িষ্ণু প্রাসাদ দেয়ালে তারা একেকটি ফোকলা পেরেক মাত্র,

কড়িবর্গা ভেঙে যাচ্ছে, তবু ভাবছে!

অনড় স্তম্ভ তারা!

গরিব দেশবাসীকে কারাগার চেনাবার জন্য নির্যাতন,

এমন কি নির্বাসন দণ্ডের জন্য

বন্দিশিবিরের মানুষগুলিকে ইচ্ছে হলেই তারা মৃত্যু দিতে পারে

এ-সব ভেবেছে যারা, তারাই এখন আমাকে সিনেটে দেখে ক্ষুণ্ণ!

যে-সব বন্ধুরা দূরে আছে, আছে খরা-অঞ্চলে

এইসব সিনেটররা তাদের পুনর্বাসন দিতে চাইছে

পিসাগুয়ার রুক্ষ সমুদ্রবালুতীরে

যে মাটি বন্ধ্যা, নিষ্প্রাণ, জনশূন্য

বেদনার মাটি, সেই তীরভূমি কি কখনই

মানুষের বাসযোগ্য হবে!

না হয় ঝরানো হলো ঘাম, তবু ওই মাটি কি উর্বর হবে

ওখানে নিশ্চিত উপবাস,

প্রতিদিনের ক্ষুধার যৎসামান্য রুটি

পাবে কি আমার দেশবাসী!

এখন এখানে, আমার নতুন পরিচয়ের ভিতরেও

আমি যেন দেখতে পাই মাছেরাও নির্জীব

দেখি রঙ-মলিন লাল অক্টোপাশ,

বুঝি, কেন চিহ্নিত লাইনের নিচে

শুধুমাত্র একটা সই-এর জন্য

জনতাকে দেওয়া হচ্ছে জামাকাপড় আর ঘড়ি উপহারের আশ্বাস।

এরাইতো গরিব খনি মজুর, আমার প্রকৃত ভাই।

ক্ষমতাকে হাতে পেতে সকলেই ভাবে

ইচ্ছে হলেই তারা যে কাউকেই শাস্তি দিতে পারে।

অস্ত্রের দাম্ভিক ধার, ইচ্ছে হলেই গলা টিপে

হত্যা করা যেতে পারে স্বদেশবাসীকেও!

চিলিকে একশো বছর পিছিয়ে দিতে চায় তারা,

না-হলে দিতে চাইতো

এমন চরম পুনর্বাসন?

আন্দেসের শিরদাঁড়া আজ সবখানেই প্রকট,

গোপন বিনাশ দেখতে হলেও এখন

মানচিত্রে আতশকাচ বসাতেই হবে!

শুধু একটা কাগজ হলুদ,

সোনালী পেন্সিল এক- হ্যাঁ, মাত্র এটুকু সম্বল নিয়েই

সিনেটররা ভূগোলকে করছে প্রতারণা!

পিসাওয়ার জলের ভিতরে, নৃশংস পাথরেও তা জেগে উঠছে

এরা জাগাতে চাইছে এক নিষ্ঠুর দংশনক্ষত

সে দংশন আসলে

চিলির পায়রানরম বুকে রক্তের সূচনা!

প্রথম 888sport app download apk কিভাবে এলো

এবং ঠিক সেই বয়সেই 888sport app download apk এলো।

সন্ধানে আমার! আমি চিনতে পারিনি, জানতে পারিনি

কোন স্থান থেকে তার আসা — শীত থেকে, নাকি নদী থেকে

কি করে সে আসে কখনই বা আসে,

888sport app download apk কণ্ঠ নয়, শব্দও নয়,

এমন কি নীরবতাকেও বলা যাবে না 888sport app download apk,

কিন্তু সে আমাকে ডেকেছে রাস্তা থেকে,

রাত্রির লতাপাতা থেকে হঠাৎ আলাদা করে,

আগুনের প্রবাহ কিংবা নিসঙ্গ প্রত্যাবর্তনের পথ

সম্ভবত সেখানেই 888sport app download apk ছিল, তবে তার মুখে দেখা যাচ্ছিল না,

সেখানেই সে আমাকে স্পর্শ করল।

আমি জানতাম না কি বলতে হবে, মুখে কোনো

সম্বোধনও আসেনি,

চোখ ছিল অন্ধ-বন্ধ

তবু কি যেন ধাক্কা দিয়েছে আত্মায়!

সে ধাক্কা কি স্বর, নাকি কোন বিহঙ্গের ডানা,

আমি নিজের পথটি নিজে বানিয়ে নিলাম,

যে আগুন জ্বলছিল বুকে সে আগুন সরিয়ে লিখলাম প্রথম পঙক্তি, অস্পষ্ট একটি লাইন

সেই আবছা লেখায় কোনো বস্তু ছিল না

তা ছিল এক শুদ্ধ অর্থহীন বোকামি,

যে কিছুই জানে না তার কাছে পরিশুদ্ধ জ্ঞান ভাষ্য পায় না, কিন্তু হঠাৎই দেখলাম আমার জন্য অবিমুক্ত আকাশ তার

সোন্দর্য খুলে দিল আর

স্পন্দিত নক্ষত্রদল এসে অন্ধকার ছিদ্র করে

আলোকবিন্দুর প্রহেলিকা জাগালো

যেন তারা জ্বলজ্বল বর্ণা, এবং কুসুমগুচ্ছ

অধিকার করে ফেলল সমস্ত পৃথিবী।

আর আমি, এক ক্ষুদ্রমানব, সেই মহান নক্ষত্র শূন্যতার আলো তখন

পান করেছি, তার রহস্যময়তা অনুভব করেছি, মনে হচ্ছে

এক অতল গহ্বরে যেন

নক্ষত্রপুঞ্জের সঙ্গে ঘুরছি আর আমার হৃদয় হাওয়ায় ভেঙেচুরে যাচ্ছে!