888sport promo code-আন্দোলনের সুদীর্ঘ পথপরিক্রমায় ষাটের দশকে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ির আবিষ্কার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। যৌনতা ও সন্তানধারণ, 888sport promo codeর যে-দুটি বিষয়কে পুঁজি করে আদিকাল থেকে 888sport promo codeকে শোষণ ও বঞ্চনার শিকার করা হচ্ছে, সেই যৌনতাকে সন্তানধারণ থেকে আলাদা করার সুযোগ করে দিয়েছে এই জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বা ‘পিল’। যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা ও যৌনসুখ উপভোগ করা মানুষের অতি স্বাভাবিক একটি প্রবৃত্তি বা আকাক্সক্ষা। এই অতি মৌলিক ও জৈবিক বাসনা চরিতার্থ করতে গিয়ে 888sport promo codeর অবধারিত পরিণতি যে সন্তানধারণ, সন্তানপ্রসব আর সন্তানের রক্ষণাবেক্ষণ নয়, এই সত্য যেদিন অন্তরে ধারণ করল 888sport promo code, সেদিন সে তার বহুমাত্রিক রূপ ও ক্ষমতা-সম্পর্কে আরো সচেতন, আরো আস্থাশীল হয়ে উঠল। ‘পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভার্যা’র মতো অবমাননাকর প্রাচীন শ্লোকের অসাড়তা প্রমাণ করতে সমর্থ হলো 888sport promo code বিবিধ বিষয়ে তার পারদর্শিতা ও নৈপুণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পেয়ে। প্রকৃতির কাছে, ভবিতব্যের কাছে নিজেকে সঁপে না দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত জীবন, শিক্ষাদীক্ষা, কর্মজীবনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ সে নিজের হাতে গ্রহণ করতে শিখল। 888sport promo code তার কর্মক্ষমতা ও ভূমিকা বিস্তার করার সুযোগ পেল। সন্তানধারণ যেহেতু 888sport promo codeর একক ক্ষমতা ও দায়িত্ব, যতদিন সে নিজে এ-বিষয়টির নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব গ্রহণ করতে না পেরেছে, ততদিন শুধু মাতৃত্বজনিত ব্যাপারেই নয়, জীবন ও জগতের আনুষঙ্গিক অন্য অনেক বিষয়ের সিদ্ধান্তের জন্যেও তাকে পুরুষের মুখাপেক্ষী থাকতে হয়েছে। পিল অবশেষে তৈরি করে দিল স্বাধীন মানুষ হিসেবে 888sport promo codeর পথচলার জন্য প্রশস্ত ও অপেক্ষাকৃত মসৃণ এক রাস্তা।

যৌনতাকে প্রজনন থেকে আলাদা করার আকাক্সক্ষা মানুষের আদিকাল থেকেই। জন্মনিয়ন্ত্রণ-প্রচেষ্টার ইতিহাস তাই স্বভাবতই সুদীর্ঘ। বাইবেলের সর্বপ্রথম পরিচ্ছেদ জেনেসিসে শীর্ষসুখের আগেভাগে শিশ্ন-অপসারণের উল্লেখ রয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব ঊনবিংশ শতাব্দীতে মিশরের মেয়েরা অ্যাকাসিয়া পাতার সঙ্গে মধু যোগ করে অথবা জীবজন্তুর মল থেকে সাপোজিটরি তৈরি করে জরায়ুতে স্থাপন করত গর্ভরোধের প্রচেষ্টায়। খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে গ্রিসে অলিভ অয়েলের সঙ্গে সিডার তেল মিশিয়ে মলম তৈরি করে তা জরায়ুর ভেতর ব্যবহার করত মেয়েরা। খ্রিষ্টপূর্ব তিন শতাব্দীতে দার্শনিক অ্যারিস্টটল বীর্য নির্মূল করার জন্যে বিভিন্নরকম তেল ও মলম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। খ্রিষ্টের জন্মের কয়েক বছর পর থেকেই রোমান লেখক ও দার্শনিকরা জন্মরোধে যৌনসম্পর্ক পরিহারের গুণগান করতে থাকেন। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ক্যাসানোভা লেবুর অর্ধেক খোসা জরায়ুর ভেতর প্রতিস্থাপন করে জন্মরোধের প্রচেষ্টা চালান। ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়াতে বিশেষ এক ধরনের কাপড় অথবা মাছের অন্ত্রনালি দিয়ে তৈরি কনডম ও ডায়েফ্রাম ব্যবহারের প্রচলন ছিল।

আঠারোশ সাতাশ সালে 888sport apkীরা 888sport promo codeর শরীরে ডিম্বাশয়ের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। এরপর আরো দুই দশক লাগে ডিম্বাণু আর শুক্রাণুর মিলনে ভ্রƒণ-সৃষ্টির সঠিক রূপরেখা নির্ণয় করতে। এর আগে পর্যন্ত মনে করা হতো পুরুষের বীর্য 888sport promo codeর শরীরে সঠিকভাবে প্রবেশ করলেই সন্তান উৎপাদিত হয়। ভ্রƒণের শরীর-গঠনে 888sport promo codeর কোনো অবদান তখন পর্যন্ত স্বীকৃত ছিল না। 888sport promo codeকে তখন মনে করা হতো শুধু সন্তানধারণ করার একটা আধার। ডিম্বকোষ ও নিষেকক্রিয়া-আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে প্রজনন-প্রক্রিয়ার সঠিক রূপটাই শুধু উদ্ঘাটিত হলো না, সন্তান-জন্মে 888sport promo codeর সক্রিয় ভূমিকা ও সমান অংশীদারিত্বের সঠিক চিত্রটাও প্রকাশিত হলো। এই সময় থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারেও দ্রুত অগ্রগতি শুরু হলো। সঙ্গমের পর প্রক্ষালনের মাধ্যমে বীর্যমুক্ত হবার উপযোগী বিভিন্নরকম পরীক্ষামূলক তরল পদার্থে বাজার ছেয়ে গেল। এসব দ্রব্য সহজভাবে ব্যবহারের জন্যে সিরিঞ্জও আবি®কৃত হলো। ১৮৩৮ সালে জার্মান ডাক্তার ফ্রেডেরিক ওয়াইল্ড দুই মাসিকের অন্তর্বর্তী সময়টাতে জরায়ু ঢেকে রাখার জন্যে একরকম পাতলা ও ছোট পর্দা আবিষ্কার করেন, যা ‘জরায়ুর ঘোমটা’ বা ‘টুপি’ বলে পরিচিত ছিল তখন। ১৮৩৯ সালে চার্লস গুডইয়ার রাবার-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটালে একে একে বাজারে আসে রাবারের তৈরি কনডম, আইইউডি, ডায়েফ্রাম। ১৮৮৬ সালে লন্ডনে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রক সাপোজিটরি তৈরি হতে শুরু হয়। কুইনাইন ও কোকো বাটার দিয়ে তৈরি এই সাপোজিটরির কার্যকারিতা একেবারে মন্দ ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় পর্যন্ত বিলাতে এই সাপোজিটরি খুবই প্রচলিত ছিল। প্রাক 888sport live chatবিপ্লবকালে, বিশেষ করে তিরিশের দশকের ভয়ানক মন্দাকালে আমেরিকান মেয়েরা বিভিন্ন গাছগাছালি থেকে আহরিত দ্রব্যাদি দিয়ে তৈরি তরল পদার্থের সাহায্যে নিজেদের বীর্যমুক্ত করার চেষ্টা করতেন। ১৮৯০ সালে 888sport apkীরা প্রথম মানুষের শরীরে হরমোন জাতীয় পদার্থের অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন হন। ১৯০৫ সালে এর নামকরণ হয় হরমোন যা গ্রিকশব্দ ‘যড়ৎসধড়’ (উত্তেজিত বা উদ্দীপ্ত করা) থেকে এসেছে। ভুয়া এবং অনিরাপদ খাদ্য ও ওষুধ থেকে জনগণকে রক্ষা করার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯০৬ সালে আমেরিকায় স্থাপিত হয় ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। ১৯২৪ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যবর্তী সময়টাতে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করে জাপান ও অস্ট্রিয়ার 888sport apkীরা আবিষ্কার করেন যে, মেয়েদের দুই মাসিকের মধ্যবর্তী খানিকটা সময়ে যৌনসম্পর্ক পরিহার করলে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মনিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাদের উদ্ভাবিত ‘ৎযুঃযস সবঃযড়ফ’আজো পৃথিবীতে জনপ্রিয়, যদিও হিসেব-নিকেশ করা এই ‘নিরাপদ সময়’ জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে সবসময়ে নির্ভরযোগ্য নয়। ১৯২৮-২৯ সালে আবি®কৃত হয় মেয়েদের শরীরের প্রধান দুটি হরমোন-প্রজেস্টারোন ও এস্ট্রোজেন। এই হরমোনদুটির অস্তিত্ব ও ভূমিকা-সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানঅর্জন প্রজনন888sport apk ও জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতিকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। বলা বাহুল্য, এই হরমোনদুটির কার্যকারিতা-নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বা পিলের উদ্ভব হয়। পিল ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু-নির্গমনে অন্তরায় সৃষ্টি করে। যেহেতু ভ্রƒণের সৃষ্টির জন্যে প্রয়োজন একটিমাত্র শুক্রাণুর সঙ্গে একটি ডিম্বাণুর মিলন, কোটি কোটি শুক্রাণু ধ্বংস করার চেয়ে একটি ডিম্বাণুর গতিরোধ করা অনেক বেশি কার্যকর ও ফলপ্রসূ। পিলের কার্যকারিতা তাই প্রায় শতকরা একশ ভাগ।

পিল-আবিষ্কারের কাহিনী বলার আগে এর পেছনে যাঁদের মৌলিক ও নিরলস অবদান রয়েছে সেই কয়েকজন ব্যক্তিত্বের নাম না করলে নয়। জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ির আবিষ্কার একটি সফল ও সমবেত প্রচেষ্টার গল্প। একজন অসাধারণ মানুষের জীবন-আহরিত অভিজ্ঞতাসঞ্চিত এক বিশাল ও মহৎ স্বপ্নের গল্প। এই মানুষটি স্বপ্ন দেখতেন মাথাধরার বড়ি অ্যাসপিরিনের মতো সহজভাবে একটা ‘পিল’ খেয়ে 888sport promo code একদিন তার জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন যে-দূরদৃষ্টিসম্পন্ন 888sport promo code, তাঁর নাম মার্গারেট সেঙ্গার (১৮৭৯-১৯৬৬)। মার্গারেট 888sport apkী ছিলেন না। তিনি জানতেন না ঠিক কীভাবে কী উপায়ে এটা সম্ভব হবে। কিন্তু তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন জন্মনিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব মেয়েদের নিজেদের হাতে নিতে হবে। মার্গারেটের স্বপ্ন-বাস্তবায়নের অর্থ যুগিয়েছিলেন তাঁর সহযোদ্ধা সহস্বাপ্নিক ক্যাথরিন ম্যাককরমিক (১৮৭৫-১৯৬৭)। আর জন্মনিরোধ-পিল আবিষ্কারের জন্যে তাঁরা যাঁকে পেয়েছিলেন, সেই মেধাবী 888sport apkীর নাম গ্রেগরি পিনকাস (১৯০৩-১৯৬৭)। পিনকাসের আবিষ্কার মানুষের শরীরেও যে কার্যকর তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যে যে-চিকিৎসকের প্রয়োজন হয়েছিল, সেই সাহসী চিকিৎসক-গবেষক হলেন রোমান ক্যাথলিক ডাক্তার জন রক (১৮৯০Ñ১৯৮৪)। এছাড়া কৃত্রিম উপায়ে ও কম খরচে প্রোজেস্টারোন-তৈরির সাফল্য এনে সহযোগিতা করেছিলেন প্রফেসর রাসেল মার্কার। এরপর দুই ওষুধের কোম্পানি সার্ল ও সিন্টেক্সের দুই গবেষক যথাক্রমে ফ্র্যাঙ্ক কোল্টন ও কার্ল জেরোসি ভিন্ন ভিন্নভাবে কাজ করে মুখে খাবার-উপযোগী কৃত্রিম প্রজেস্টারোন তৈরি করে এই দুই ওষুধের কোম্পানিকে ‘জাদুর বড়ি’ তৈরির পথ উন্মুক্ত করে দেন। তাতে দেখা যায়, পিল-আবিষ্কারের জন্যে ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় এক অভূতপূর্ব মিলন ঘটেছিল বেশ কয়েকজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তির, যাদের যৌথপ্রচেষ্টার সুফল ভোগ করছে আজ বিশ্বের

সিংহভাগ 888sport promo codeকুল।

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কর্নিং শহরে এক খেটে-খাওয়া আইরিশ ক্যাথলিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মার্গারেট সেঙ্গার। তিনি চোখের সামনে মাত্র পঞ্চাশ বছর বয়সে তাঁর মাকে যক্ষ্মা রোগে মারা যেতে দেখেন। মার্গারেটের বয়স তখন মাত্র উনিশ। তিনি গভীর বেদনার সঙ্গে লক্ষ করেন, এগারোটি জীবিত ও সাতটি মৃত সন্তান প্রসব করার ধকল ও ক্লান্তিতে তাঁর মায়ের শরীর এতটাই অবসন্ন ছিল যে যক্ষ্মার মতো মহাব্যাধির সঙ্গে যুদ্ধ করার ক্ষমতা তার একেবারেই ছিল না। মায়ের কফিন সামনে রেখে বাবাকে উদ্দেশ্য করে কঠিনভাবে বলতে দ্বিধা করেননি মার্গারেট, ‘তুমিই এর জন্যে দায়ী, আমাদের মা এতগুলো সন্তানধারণ করার জন্যেই এভাবে অসময়ে মরে গেল।’

মায়ের জীবনের পুনরাবৃত্তি নিজের জীবনে ঘটতে দেবেন না – এই ব্যাপারে মনস্থির করে মার্গারেট কর্নিং ছেড়ে নিউইয়র্ক শহরে চলে আসেন। সেখানে নার্সিংয়ে পড়াশুনা শেষ করে একটি ক্লিনিকে কাজ নেন। নিউইয়র্ক শহরের অনেক গরিব ও অভিবাসী মেয়ে আসত সেই ক্লিনিকে। অল্প বা বিনা পয়সায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গোপনে গর্ভপাত করাতে গিয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় কেউ কেউ এসে উপস্থিত হতো এই ক্লিনিকে। অবাঞ্ছিত সন্তানধারণ করতে করতে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত এইসব 888sport promo codeর সেবা করতে গিয়ে মার্গারেট স্থির করেন তাঁর বাকি জীবন তিনি ব্যয় করবেন মেয়েদের এই চূড়ান্ত ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেওয়ার কর্মকাণ্ডে। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ও তিন সন্তানের জননী হওয়া সত্ত্বেও স্বামী-সন্তান ঘর-সংসারের চেয়ে তিনি প্রাধান্য দেন জন্মনিয়ন্ত্রণে মেয়েদের কর্তৃত্ব-স্থাপনের বিভিন্ন প্রকল্পে। মার্গারেটই প্রথম ‘জন্মনিয়ন্ত্রণ’ (birth control) শব্দটি চালু করেন। তিনি Women rebel (প্রতিবাদী 888sport promo code) নামে মেয়েদের জন্যে একটি কাগজ বের করেন। সেখানে লিখতে শুরু করেন কোন কোন সময় মেয়েদের গর্ভবতী হতে নেই, যেমন-অসুস্থতায় অথবা অভাবের সময়। যদিও এইসব দুর্যোগকালে গর্ভরোধ করার জন্যে মেয়েরা কী করবে সে-সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো পন্থার উল্লেখ করেন না মার্গারেট। তা সত্ত্বেও অশ্লীলতার অভিযোগে ‘কমস্টক আইনে’ তাঁর কাগজটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এই প্রসঙ্গে কমস্টক আইন-সম্পর্কে কিছু বলা দরকার। অ্যান্থনি কমস্টক (১৮৪৪-১৯১৫) আমেরিকার গৃহযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী এক সৈনিক। আঠারোশ ষাট দশকের শেষের দিকে নিউইয়র্ক শহরে এসে রীতিমতো চমকে যান কমস্টক। শহরের আনাচে-কানাচে যৌনকর্মীদের অবাধ আনাগোনা। রাস্তায়, দেয়ালে জন্মনিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতির খোলামেলা বিজ্ঞাপন। এসব দেখেশুনে গোঁড়া খ্রিষ্টান কমস্টকের চোখ ছানাবড়া। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এইসব জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতি ও সামগ্রীর খোলামেলা বিজ্ঞাপনই সমাজের স্খলন, ব্যভিচার ও পতিতাবৃত্তির জন্যে দায়ী। তিনি কেবল স্থানীয় পুলিশদের যৌনকর্মী ও যৌন-ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে সহযোগিতা করেই ক্ষান্ত হন না, ১৮৭২ সালে অশ্লীলতার বিরুদ্ধে তিনি রচনা করেন এক দলিল। একদিন সকালে সেই দলিলটি নিয়ে ওয়াশিংটন গিয়ে কংগ্রেসে সেটা পেশ করেন বিল হিসেবে। এই বিলের সারমর্ম হলো: জন্মনিয়ন্ত্রণের সামগ্রী ও পদ্ধতি অত্যন্ত অশ্লীল, অবক্ষয়ী ও ব্যভিচারের প্ররোচক। ফলে সমাজের ক্ষতিকর এইসব পদ্ধতি বা দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, বিতরণ বা ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা বাঞ্ছনীয়। ১৮৭৩ সালে আমেরিকার কংগ্রেস কমস্টক বিলটি পাস করে আইনের মর্যাদা দেয়। শুধু তা-ই নয়, এই আইনটির আদলে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আরো কড়া আরো কঠিন সব আইন-প্রণয়ন শুরু হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে কড়া আইন ছিল কানেকটিকাট ও ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে। কানেকটিকাটের আইন-অনুযায়ী কোনো বিবাহিত দম্পতিও যদি তাদের শোবার ঘরের নিভৃতিতে কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, তার জন্যেও তাদের অন্তত একবছর কারাদণ্ডের শাস্তি হতে পারে। কমস্টক-আইনের আওতায় ফেলে মার্গারেট সেঙ্গারের কাগজটিই শুধু বন্ধ করে দেওয়া হয় না, মার্গারেটের নামেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। জেলে বসে সময় নষ্ট করা সম্ভব নয় বলে মার্গারেট দেশ ছেড়ে বিলাতে পালিয়ে এসে সেখানে বসে জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কাজ শুরু করেন। ১৯১৫ সালে অ্যান্থনি কমস্টক মারা যান। কিন্তু তাঁর প্রণীত আইন বহাল তবিয়তে দাপটের সঙ্গে আমেরিকায় রাজত্ব করতে থাকে। ১৯১৬ সালে মার্গারেট নিউইয়র্কে ফিরে এসে তাঁর বিরুদ্ধে জারিকৃত মামলার মোকাবিলা করেন। শুনানির পর মার্গারেটের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে কমস্টক-আইনের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করে নতুন এক কাগজ বের করেন তিনি, যার নাম Birth Control Review একই বছর তিনি তাঁর এক বোন ও মেয়ে-বন্ধুকে নিয়ে আমেরিকার প্রথম জন্মনিয়ন্ত্রণ-ক্লিনিক খোলেন নিউইয়র্ক শহরের ব্রুকলিনে। এই প্রথমবারের মতো আমেরিকার মেয়েরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সম্পর্কে সরাসরি জানার ও জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতি গ্রহণ করার সুযোগ পান। কিন্তু ক্লিনিকটি খোলার মাত্র দশ দিনের মাথায় ওখানে হামলা হয়। সঙ্গে সঙ্গে ক্লিনিকটি জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া ক্লিনিকে মজুত যত কনডম ও ডায়েফ্রাম ছিল, সব বাজেয়াপ্ত করা হয়। মার্গারেট তখন উপায় না দেখে স্থানীয় ক্লিনিক ও ডাক্তারখানাগুলোতে লুকিয়ে লুকিয়ে ইউরোপ থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সামগ্রী এনে সরবরাহ করা শুরু করেন। কিন্তু কিছুদিনের ভেতরেই গোপনে ইউরোপ থেকে ডায়েফ্রাম আমদানি করার অপরাধে মার্গারেটকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এই মামলাতেও মার্গারেটের জয় হয়। শুধু তা-ই নয়, বিশেষ বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে চিকিৎসার খাতিরে পরিমিত পর্যায়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সামগ্রীর আমদানি বৈধ বলে রায় দেওয়া হলো। মার্গারেট আবার তাঁর জন্মনিয়ন্ত্রণ-ক্লিনিকের কাজ শুরু করেন।

১৯১৭ সালে এক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে। এই সময় বস্টনে মার্গারেটের বক্তৃতা শুনে অভিভূত হয়ে নিজে থেকে আলাপ করতে এগিয়ে আসেন আরেক অসাধারণ 888sport promo code ক্যাথারিন ম্যাককরমিক (১৮৭৫-১৯৬৭)। তাঁদের এই বন্ধুত্ব ও যৌথ কর্মপ্রকল্প আজীবন স্থায়ী হয়েছিল। শিকাগোর এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করা ক্যাথরিন এমআইটি থেকে প্রাণি888sport apkে ডিগ্রি নিয়ে বিয়ে করেছিলেন ধনকুবের স্ট্যানলি ম্যাককরমিককে। কিন্তু বিয়ের দুবছর পরেই ক্যাথরিনের স্বামী মারাত্মক মানসিক রোগ স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বোধশক্তি অনেকটাই হারিয়ে ফেলেন। যেহেতু এই অসুখটি বংশানুক্রমিক, ক্যাথরিন আজীবন সন্তানহীন থাকার সংকল্প নেন। মার্গারেটের সঙ্গে আলাপের পর মার্গারেটের বহুদিনের লালিত সেই ‘জাদুর বড়ি’র স্বপ্নে ক্যাথরিনও বিমোহিত হন যে বড়ি খেয়ে মেয়েরা তাদের অনাকাক্সিক্ষত

সন্তানের জন্মরোধ করতে পারবে। ক্যাথরিন যেহেতু প্রাণি888sport apkে পড়াশুনা করেছেন, তিনি জানতেন পোলিওর টিকা ও জীবাণু-ধ্বংসকারী বিভিন্ন ফলপ্রসূ ওষুধের মতো মার্গারেটের স্বপ্নের আবিষ্কারও সম্ভব। এমন একটা সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ-পিলের স্বপ্ন দেখতেন মার্গারেট ও ক্যাথরিন, যখন আমেরিকায় কালো লোকেরা ভিন্ন বাথরুম, ভিন্ন স্কুল, বাসে বিশেষভাবে চিহ্নিত ভিন্ন আসন গ্রহণ করতে বাধ্য হতো, যখন আমেরিকায় মেয়েরা ভোট দেবার অধিকার পর্যন্ত অর্জন করেনি। মার্গারেট ও ক্যাথরিন দুজনেই অবশ্য মেয়েদের ভোটের অধিকার-আদায়ের আন্দোলনেও সোচ্চার ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯২০ সালে অবশেষে ভোট দেবার অধিকার পেল আমেরিকান 888sport promo code, যেখানে 888sport app কয়েকটি দেশের মেয়েরা এ-মৌলিক অধিকারটি আরো আগেই অর্জন করেছিল।

মার্গারেট ও ক্যাথরিন জন্মনিয়ন্ত্রণ-ক্লিনিকে কাজ করে যাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁরা দুজনেই খুব হতাশ। কেননা সেই প্রাচীন, অকার্যকর অথবা বিদঘুটে এবং অস্বস্তিকর সব জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতির মধ্যেই মেয়েদের আজো সীমাবদ্ধ রাখতে হচ্ছে। ডায়েফ্রাম যদিও খুবই কার্যকরী, কিন্তু যেহেতু মেয়েরা নিজেরা তা শরীরে স্থাপন করতে পারে না, ডাক্তারের সাহায্যে গোপনাঙ্গে তা সংস্থাপনের বিড়ম্বনা ও শরমে জর্জরিত 888sport promo codeদের আর নতুন কোনো পন্থার সন্ধান দেওয়া যাচ্ছে না। মার্গারেটের স্বপ্নের বড়ি বুঝি স্বপ্নেই থেকে যাবে।

অবশেষে ১৯৫১ সালে মার্গারেটের সঙ্গে দেখা হয় গ্রেগরি পিনকাসের। পিনকাস তখন খুবই নামকরা 888sport apkী। কিন্তু আর্থিক দিক দিয়ে তাঁর অবস্থান কিছুটা বেকায়দায়। ১৯৩৪ সালে মাত্র একত্রিশ বছর বয়সে প্রথম টেস্টটিউবে খরগোশের বাচ্চা তৈরি করে সমস্ত পৃথিবীতে হইচই বাধিয়ে দিয়েছিলেন রাশিয়া থেকে আগত ইহুদি ইমিগ্র্যান্ট পরিবারের সন্তান পিনকাস। ততদিনে অ্যালডাস হাক্সলির ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড বাজারে সাড়া ফেলে দিয়েছে। লোকেরা পিতৃপরিচয়হীন, মনুষ্যত্বহীন টেস্টটিউব শিশুর ভয়ংকর সামাজিক প্রভাবের কথা চিন্তা করে আতঙ্কিত। ফলে পিনকাসের এত বড় আবিষ্কার সুনামের চাইতে বিতর্কেরই জন্ম দেয় বেশি। জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অভিযোগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরি চলে যায় পিনকাসের। তখন তিরিশের দশকের ভয়ানক মন্দা চলছে পুরো আমেরিকায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একটা জীবিকার আশায় এখানে-সেখানে ধরনা দিতে শুরু করেন পিনকাস। এইসময় তাঁর এক বন্ধু তাঁকে খণ্ডকালীন পড়াবার একটি চাকরি দেন বস্টনের অদূরবর্তী উরস্টার শহরের ক্লার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া দুই বন্ধু মিলে নিকটবর্তী শহর স্রুজবেরিতে একটা গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন। অর্থের অভাবে পিনকাস 888sport apk-গবেষণা ছাড়াও নিজেদের গবেষণাগার ও বাথরুম পরিষ্কারের কাজটাও নিজের হাতেই করতে থাকেন। ঠিক তখুনি তাঁর পরিচয় হয় মার্গারেট সেঙ্গারের সঙ্গে। মার্গারেটের ধারণা হয় পিনকাসই পারবেন এ-কাজটি করতে। এর আগে মার্গারেট ও ক্যাথরিন দুজনেই ঠিক করেছিলেন যথাযথ যোগ্য ব্যক্তির দেখা না মিললে শুধু গবেষণার জন্যে গবেষণা করার টাকা যোগাবেন না ক্যাথরিন। পিনকাসও খুবই আগ্রহের সঙ্গে প্রকল্পটি গ্রহণ করতে রাজি হন। মার্গারেট তখন ক্যাথরিনকে সঙ্গে করে এনে পিনকাসের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন। এর চার বছর আগে ক্যাথরিনের স্বামী মারা গেছেন এবং ক্যাথরিন তার স্বামীর যাবতীয় সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। পিনকাসের সঙ্গে কথা বলে ক্যাথরিনও মনে করলেন এ-কাজ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব। সঙ্গে সঙ্গে ক্যাথরিন চল্লিশ হাজার ডলারের প্রাথমিক চেকটি লিখে দিলেন পিনকাসের গবেষণার জন্যে। যদিও এটি এই ‘জাদুর বড়ি’ প্রকল্পের জন্যে ক্যাথরিনের অনেক চেকের একটি চেক, তবু এটা সত্য, তখনকার দিনে চল্লিশ হাজার ডলার অনেক টাকা। শুধু টাকা দিয়েই ক্ষান্ত হলেন না ক্যাথরিন। পশ্চিম উপকূলের তাঁর বাসস্থানের পাট গুটিয়ে তিনি সোজা চলে এলেন পিনকাসের গবেষণাগারের কাছাকাছি, যাতে সার্বক্ষণিকভাবে এই গবেষণার কাজ তদারকি করতে পারেন। ততদিনে পিনকাস জানতেন প্রজেস্টারোন ইনজেকশন দিলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুর নির্গমন (ওভুলেশন) রোধ করা যায়। তিনি কয়েক মাসের মধ্যেই জীবজন্তুর ওপর গবেষণা করে প্রমাণ করলেন প্রজেস্টারোন ইনজেকশন দিয়ে ওভুলেশন বন্ধ করে গর্ভরোধ করা সম্ভব। কিন্তু মার্গারেটের স্বপ্ন-বাস্তবায়নে এখনো দরকার আরো দুটি জিনিসের। এক, পিনকাসের এই গবেষণা যে মানবদেহে কার্যকরী তার নিশ্চয়তা। দুই, মুখে খাবার প্রজেস্টারোন-আবিষ্কার। পিনকাস একজন মৌলিক গবেষক হলেও পেশাগতভাবে তিনি ডাক্তার নন। ফলে মানবদেহে গবেষণা চালাবার অনুমতি বা যোগ্যতা তাঁর নেই। তিনি তাই শরণাপন্ন হলেন ড. জন রকের। যদিও ব্যক্তিগত জীবনে একজন রোমান ক্যাথলিক, জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে একটি প্রগতিশীল মনোভাব ছিল রকের। তাঁর কর্মজীবনের শুরুতে তিনি এতটাই রক্ষণশীল ছিলেন যে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যায়ের মেডিক্যাল কলেজে মেয়েদের ভর্তির বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এই রকই ম্যাসাচুসেটসে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সামগ্রীর বিক্রির অনুমতি চেয়ে মার্গারেটের উত্থাপিত পিটিশনে অন্য বিশিষ্ট পনেরো জন চিকিৎসকের সঙ্গে নিজেও সই করতে দ্বিধা করেননি। রকই ছিলেন এই দলে একমাত্র রোমান ক্যাথলিক। রক যখন ছোট ছিলেন তখন তাঁর গির্জার পাদরি তাঁকে একটা কথা বলেছিলেন যা সারাজীবন ছায়ার মতো সঙ্গী হয়ে ছিল রকের। তিনি বলেছিলেন, ‘জন, সবসময়ে বিবেকের কথা শুনো। নিজের বিবেককে কারো কাছে জিম্মি রেখো না।’ বিবেকের কথা শুনেই পাঁচ সন্তানের জনক জন রক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদের জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে শিক্ষা দিতে শুরু করেন। বিবেকের কথা শুনেই গ্রেগরি পিনকাসের প্রস্তাবে রাজি হন রক। সেই সময় বস্টনে একটি মেয়েদের ক্লিনিক চালাতেন রক। বহু জায়গা থেকে মেয়েরা আসত সেখানে চিকিৎসার জন্যে। প্রধানত সন্তানধারণে অসমর্থ মেয়েরাই আসত গর্ভধারণে সক্ষমতা-অর্জনের আশায়। পিনকাসের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পের কাজ অতি গোপনীয়তার সঙ্গে করে যেতে হয় রককে। ম্যাসাচুসেটসে তখনো জন্মনিয়ন্ত্রণ যেহেতু আইনত সিদ্ধ নয়, এই গবেষণাকালে রক ও পিনকাসকে এমন ভাব দেখাতে হয় যেন তারা বন্ধ্যাত্ব ঘুচাবারই চেষ্টা করছেন, যদিও গবেষণায় ব্যবহৃত মহিলাদের বা তাদের আত্মীয়দের কাছ থেকে গবেষণায় অংশগ্রহণ করার সম্মতিপত্র গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ঠিক যেভাবে সেই সম্মতিপত্রগুলো লেখা হয় তা আজকের বিচারে যথেষ্ট পরিষ্কার বা নৈতিক বলে দাবি করা যাবে না। রক তাঁর সীমিতসংখ্যক 888sport promo codeর ওপর গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করলেন যে, পিনকাসের আবিষ্কার মনুষ্যদেহেও সমান প্রযোজ্য। অর্থাৎ প্রজেস্টারোন ওভুলেশনকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে জন্মরোধ করতে সক্ষম। কিন্তু এফডিএ থেকে প্রজেস্টারোনকে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র পাবার আগে আরো বড় আকারের গবেষণা দরকার, যা আমেরিকায় সম্ভব নয়। তাছাড়া মনুষ্যদেহে এই বড় গবেষণাটি করার জন্যে রক ও পিনকাসকে আরো বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হলো এজন্যে যে, তখন পর্যন্ত মুখে খাবার-উপযোগী সস্তাদামের কৃত্রিম প্রজেস্টারোনের উদ্ভাবন সম্ভব হয়নি। এ-ব্যাপারে সহযোগিতা করলেন পেনস্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও 888sport apkী রাসেল মার্কার। মার্কার বিভিন্ন গাছপালা থেকে মালমশলা নিয়ে কৃত্রিম উপায়ে প্রজেস্টারোন বানাতে সক্ষম হন। যথেষ্ট পরিমাণে ও কম খরচে প্রজেস্টারোন তৈরি করার জন্যে নানারকম উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করতে করতে মার্কার মেক্সিকোর একরকম মিষ্টি আলুর খোঁজ পান যা তাঁর আশা পূরণ করে। কিন্তু এই প্রজেস্টারোন কেবলমাত্র ইনজেকশনে সক্রিয়। মুখে খেলে এর কার্যকারিতা থাকে না। কৃত্রিম উপায়ে প্রজেস্টারোন তৈরির মার্কারের কাজকে তখন আরো এগিয়ে নিয়ে যান দুটি ওষুধ-কোম্পানির দুই 888sport apkী, যাঁরা ভিন্ন ভিন্নভাবে কৃত্রিম উপায়ে মুখে খাবার-উপযোগী প্রজেস্টারোন তৈরি করেন। আমেরিকার ওষুধের কোম্পানি সার্লের ফ্র্যাঙ্ক কোল্টন ও মেক্সিকোর ওষুধ-কোম্পানি সিন্টেক্সের কার্ল বোরাসি কৃত্রিম যে-প্রজেস্টারোন তৈরি করেন তা মুখে খাবার-উপযোগীই শুধু নয়, প্রাকৃতিক প্রজেস্টারোন থেকে আটগুণ বেশি শক্তিশালী। তাঁদের তৈরি প্রজেস্টারোন দিয়েই এই দুই কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি তৈরি করে যা রক ও পিনকাস তাঁদের বড় গবেষণায় ব্যবহার করেন। যেহেতু আামেরিকায় এই গবেষণা সম্ভব নয়, তাই ১৯৫৬ সালে পোর্তোরিকোতে গিয়ে এটা করা হয়। ফলাফল শতকরা একশ ভাগ গর্ভরোধ। রাতারাতি পৃথিবীতে তোলপাড় পড়ে যায়। কিন্তু রক ও পিনকাস হঠাৎ আবিষ্কার করেন সার্লের তৈরি করা প্রজেস্টারোন পিলে কেমন করে যেন অতি সামান্য পরিমাণ এস্ট্রোজেনের অস্তিত্ব রয়ে গেছে। সার্ল অতঃপর সম্পূর্ণ এস্ট্রোজেনমুক্ত খাঁটি প্রজেস্টারোন বড়ি বানিয়ে দিলে তা পুনরায় ব্যবহার করে রক ও পিনকাস নিশ্চিন্ত হন যে, যদিও দুটো বড়িই গর্ভরোধে সমান কার্যকর, সামান্য এস্ট্রোজেনের উপস্থিতি প্রকৃতপক্ষে প্রজেস্টারোনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাবার সহায়ক। ফলে আজো অধিকাংশ জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িতে প্রজেস্টারোনের সঙ্গে থাকে সামান্য এস্ট্রোজেন।

১৯৫৭ সালে সার্ল ওষুধের কোম্পানি পিলকে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি হিসেবে নয়, মেয়েদের মাসিক নিয়মিত করার চিকিৎসার জন্যে ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করে। সরাসরি জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বাজারজাত করা সমাজ কতখানি গ্রহণ করবে এ-ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল তখন। এফডিএ অবশ্য প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মাসিক নিয়মিতকরণে হরমোন পিলের ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে দেয়। সার্লের ধারণা হয়েছিল, গর্ভরোধের জন্যে প্রতিদিন ওষুধ খেতে মেয়েরা রাজি হবে না। কিন্তু সার্ল এবং পৃথিবীর অন্য সকলকে স্তম্ভিত করে হঠাৎ সারা আমেরিকা জুড়ে মহামারির মতো দেখা দেয় মাসিকের গন্ডগোল। হাজার হাজার মেয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়ে ধরনা দেয় পিলের প্রেসক্রিপশনের জন্যে। দেখা যায়, দু-বছরেরও কম সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ মেয়ে পিল ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। কারো বুঝতে বাকি থাকে না, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যেই এই পিল ব্যবহৃত হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ১৯৫৯ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট আইজেনআওয়ার ঘোষণা দেন জন্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকার বা রাজনীতির কোনো বিবেচ্য বা করণীয় বিষয় নয়। তিনি আরো বলেন, এ-ব্যাপারে সরকারের কোনো দায়িত্ব বা মাথাব্যথাও নেই। ১৯৬০ সালে সার্লের অনুরোধে এফডিএ পিলকে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র দেয়। এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। কেননা এটিই প্রথম সুস্থ শরীরে দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রেসক্রিপশন ওষুধ-ব্যবহারের অনুমতিপত্র। জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িই একমাত্র ওষুধ যা চিকিৎসার জন্যে নয়, কেবল সামাজিক প্রয়োজনে বাজারজাত হয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে অনুমতি পাবার দুবছরের মধ্যেই বারো লাখ মহিলা পিল-ব্যবহার শুরু করেন। পাঁচ বছরের মধ্যে সেই 888sport free bet গিয়ে দাঁড়ায় পঞ্চাশ লাখে। ততদিনে সার্ল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টারোনের পরিমাণ খানিকটা কমিয়ে আরো উন্নতমানের পিল তৈরি করতে শুরু করেছে যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অপেক্ষাকৃত কম। ষাট দশকের শেষের দিকে সাতটি ওষুধের কোম্পানি পিল তৈরি শুরু করে এবং তাদের মোট বিক্রির পরিমাণ ১৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ততদিনে আমেরিকায় এক কোটি বিশ লাখ মেয়ে পিল-ব্যবহার শুরু করেছে এবং পিল সবচেয়ে জনপ্রিয় জন্মনিরোধ-পদ্ধতি বলে পরিচিতি পেয়েছে। দেখতে দেখতে আমেরিকার এক-চতুর্থাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণে পিলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

পিলের উদ্ভাবন ঘটে আমেরিকার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক পটপরিবর্তনের সময়ে। বর্ণবাদ ও ভিয়েতনাম-যুদ্ধের বিপক্ষে গণবিক্ষোভ ও নাগরিক-অধিকার-আদায়ের আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ষাটের দশকের আগে পুরো এক যুগ ধরে আমেরিকায় ঘরমুখী

সন্তানমুখী হবার যে অদম্য এক স্রোত প্রবাহিত ছিল, যা ঐতিহাসিকভাবে ‘Baby boom’ বলে পরিচিত, তা কিছুটা থিতু হয়ে আসতে শুরু করেছে তখন। পঞ্চাশের দশকে সেখানে বিবাহের হার সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দেয়। যুদ্ধোত্তর আমেরিকায় মেয়েদের মধ্যে খুব অল্পবয়সে বিয়ে করার হিড়িক পড়ে যায়। তখন সেখানকার জন্মের হার ভারতের জন্মের হারকে পিছনে ফেলে দিতে চায়। আমেরিকার মূলধারার সংস্কৃতিতে তখন প্রচণ্ডভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, গৃহ এবং স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার করাই আমেরিকার মেয়েদের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য এবং একমাত্র গতি। গণমাধ্যমগুলো তখন ফলাও করে প্রচার করছে, আঁটোসাঁটো ফিটফাট 888sport promo codeসুলভ পোশাক পরে সুন্দর পরিপাটি করে চুল আঁচড়ে আমেরিকান গৃহবধূরা যখন ঘরে বসে স্বামী-সন্তানদের যত্ন করছে, তখন কম্যুনিস্ট-সমাজে রাশিয়ায় মায়েরা তাদের সন্তানদের সরকার-পরিচালিত মলিন ডে-কেয়ার সেন্টারে ফেলে রেখে ঢিলেঢালা ধূসর পোশাক পরে অসুখী মুখে কল-কারখানার কাজে যাচ্ছে। এ-ধরনের অপপ্রচারে দেশ তখন একেবারে ছেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-ফেরত স্বামীর সঙ্গে চুটিয়ে সংসার করে পরপর চার-পাঁচটি সন্তান জন্ম দিয়ে রান্নাবান্না ঘর-সংসার করতে করতে আমেরিকান গৃহবধূরা তখন ক্লান্ত-বিধ্বস্ত। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার তারা জানত, তখনো তারা আরো বিশ-ত্রিশ বছর সন্তান-উৎপাদনে সক্ষম। নিজেদের স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বস্তির কথা চিন্তা করে আমেরিকান মেয়েরা তখন খুবই বিব্রত, হতাশ ও চিন্তিত। ততদিনে বেটি ফ্রিডেনের ‘ফেমিনিন মিস্টিক’ বাজারে চলে এসেছে। ফলে পিল-আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে তাকে একেবারে লুফে নিল আমেরিকার 888sport promo codeকুল। আস্তে আস্তে তা ছড়িয়ে পড়ল সারাবিশ্বে। মেয়েরা হঠাৎ আবিষ্কার করল ইচ্ছে করলেই তারা মানুষ বানাবার মেশিনের পরিচয় থেকে নিজেদের বের করে নিয়ে আসতে পারে। পুনঃপুনঃ

সন্তানধারণের কারণে এতদিন কর্মজীবী 888sport promo codeরা যথেষ্ট দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত হতে পারতো না, ছোটখাট কাজেই সীমাবদ্ধ থাকতে হতো তাদের। পিলের আবিষ্কার 888sport promo codeমুক্তির দরজা খুলে দিল। যেহেতু

সন্তান-জন্মের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ 888sport promo codeর হাতে এখন, পুরুষের মতো 888sport promo codeও তার কর্মজীবন নিয়ে পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়িত করতে শিখল। লেখাপড়া, ডিগ্রি ও পেশার মাঝখানে অথবা পরে সে কখন কটা সন্তান ধারণ করবে অথবা আদৌ সে সন্তানবতী হবে কি-না এ-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ এসেছে তার। পিল-আবিষ্কারের কুড়ি বছরের ভেতর ৬০% সন্তান-উৎপাদনে সক্ষম আমেরিকান 888sport promo codeদের কর্মজীবী হতে দেখা যায়। এছাড়া ছোট পরিবার ও স্বামী-স্ত্রী দুজনের রোজগারের ফলে অনেক সংসারেই নেমে আসে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা ও স্বস্তি। আর্থিক স্বাবলম্বিতা অর্জনের ফলে পরিবারে সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণও বেড়ে যায়।

১৯৬৬-১৯৬৭ সালে পিলের সাফল্য যখন আকাশছোঁয়া, তখন একে একে পিলের যৌথ-জননী মার্গারেট সেঙ্গার ও ক্যাথরিন ম্যাককরমিক এবং পিলের পিতা গ্রেগরি পিনকাস মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম জীবনে ব্যক্তি-888sport promo codeর দুর্দশায় পিলের স্বপ্ন দেখলেও শেষজীবনে এসে মার্গারেট ও ক্যাথরিন উভয়েই পৃথিবীর জন888sport free bet স্ফীতির কারণেও পিলের উপযোগিতার কথা ভেবেছেন। মার্গারেট, ক্যাথরিন ও পিনকাসের মৃত্যুর পর শুধু বেঁচে থাকেন জন রক, যিনি পিলকে রোমান ক্যাথলিকদের কাছে গ্রহণীয় করার জন্যে অমানবিক পরিশ্রম করতে শুরু করেন। ভ্যাটিকানের অনুমতি পাবার আশায় জন রক পিলকে একটি প্রাকৃতিক পন্থা (যেহেতু মেয়েদের শরীরের স্বাভাবিক হরমোন দিয়ে পিল তৈরি) বলে অভিহিত করেন যা ‘নিরাপদ সময়কে’ দীর্ঘায়িত করে কেবল। কিন্তু এত প্রচেষ্টার পরও ভ্যাটিকান জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িকে অনুমোদন করে না। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অননুমোদিত থাকলেও আশির দশকের মধ্যে আমেরিকার ৮০% ক্যাথলিক মহিলা পিল ব্যবহার শুরু করেন এবং মাত্র এক-তৃতীয়াংশেরও কম ক্যাথলিক পাদরি পিল গ্রহণ করাকে প্রকাশ্যে অনৈতিক কাজ বলে দাবি করেন। পিলের ব্যবহার শুধু যে রোমান ক্যাথলিক-সমাজেই বিতর্কের সৃষ্টি করে তা নয়, কিছু 888sport promo codeবাদীও পিলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। তারা যুক্তি দেখান, জন্মনিয়ন্ত্রণ কেন মেয়েদের একতরফা দায়িত্ব হবে? পুরুষ কেন তার ভার নেবে না? তারা মেয়েদের স্বাস্থ্যের ওপর জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ির প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হন। বলতে থাকেন, কতগুলো পুরুষ 888sport apkী ও আইনপ্রণেতা গুটিকয়েক লোভী ও অবিবেচক ওষুধ-কোম্পানির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মেয়েদের জীবন ও স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তাদের আপত্তির প্রেক্ষাপটে পিলের নিরাপত্তাজনিত কংগ্রেসনাল শুনানিতে 888sport promo codeপক্ষের অভিযোগ ও পরামর্শগুলো গভীরভাবে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে আরো অল্প পরিমাণ এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টারোন-সংবলিত পিল বাজারজাত হয় যা অনেক বেশি নিরাপদ ও যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম। এছাড়া পিলের প্যাকেটে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি-সম্পর্কে হুঁশিয়ারি যোগ করা হয়। 888sport promo codeবাদীরা ছাড়াও পিলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ-ঘোষণা করে আমেরিকার নিগ্রো সম্প্রদায়। ততদিনে তারা তাদের নাগরিক-অধিকার আদায়ে সোচ্চার এবং বেশ খানিকটা সফলও। পিলকে তারা ‘ইষধপশ এবহড়পরফব’ বলে অভিহিত করে। গরিব অঞ্চলের ক্লিনিকগুলোতে পিলের যথেচ্ছ ব্যবহারকে তারা সুচিন্তিতভাবে বর্ণবাদ ও কালো মানুষের 888sport free bet-হ্রাসের অভিসন্ধিতে সুপরিকল্পিত গণহত্যা বলে বর্ণনা করে। কিন্তু অতি উৎসাহী 888sport promo codeবাদী বা বর্ণবাদবিরোধীদের আপত্তি আস্তে আস্তে থিতিয়ে আসে। উভয় দলই মোটামুটি সিদ্ধান্তে আসে 888sport promo codeর বৃহত্তর কল্যাণে Ñ বর্ণ ও অর্থনৈতিক বৈষম্যরোধে পিল ক্ষতিকর নয় বরং গঠনমূলক ভূমিকাই রাখতে পারে।

পিলকে নিয়ে অন্য যে-বিতর্ক তা পিল-ব্যবহারকারীর শারীরিক নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপার। প্রাথমিকভাবে আবি®কৃত পিলের তুলনায় আজকের পিলে প্রজেস্টারোনের পরিমাণ মাত্র এক-দশমাংশ এবং এস্ট্রোজেনের পরিমাণ মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। ফলে এ-পিল গ্রহণকালে দৈনন্দিন অস্বাচ্ছন্দ্যের প্রকোপ ও পরিমাণ খুবই অল্প। মেয়েদের স্বাস্থ্যে পিলের প্রভাব নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বেশকিছু বড় আকারের দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা করা হয়েছে। চল্লিশ বছর ধরে এই সকল গবেষণার ফলকে সংক্ষেপে বলতে গেলে বলতে হয় পিল সার্বিকভাবে বেশ নিরাপদ একটি ওষুধ। নব্বইয়ের দশকে এসে তাই এফডিএ জন্মনিয়ন্ত্রণ-পিলকে নিরাপদ বলে আখ্যায়িত করেছে। কোনো কোনো গবেষণায় অবশ্য দেখা গিয়েছে যে, পিল ব্যবহার করার সময়ে স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সারের হার ও রক্তজমাট বাঁধা ও স্ট্রোকের হার কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই এইসব পিল-ব্যবহারকারীদের একই সময়ে ধূমপান করতেও দেখা গিয়েছে। আর ধূমপানের সঙ্গে ক্যান্সারের বা স্ট্রোকের সম্পর্ক আগে থেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত। বিশ বছর আগে পিল-ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন এমন বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলাদের ওপর আরেকটি বিশাল গবেষণায় দেখা যায়, পিল-ব্যবহারের দীর্ঘমেয়াদি তেমন কোনো স্বাস্থ্যগত কুফল নেই। পিল মৃত্যুর হার বা আয়ুর ওপরও কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে ডিম্বাশয়ের ও জরায়ুর দেয়ালের ওপরের স্তরের (endomatrium) ক্যান্সাররোধে পিলের একটা উপকারী ভূমিকা রয়েছে। বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর জন888sport free bet-নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ছাড়াও পিলের আরেকটি সুফল হলো মাতৃত্বজনিত জটিলতায় স্বাস্থ্যহানি, অপুষ্টি ও মৃত্যুর হার কমানো। 888sport appsের মতো উন্নয়নশীল দেশে যেখানে মেয়েদের শতকরা কুড়ি ভাগের মৃত্যু ঘটে মাতৃত্বজনিত কারণে, সেখানে সম্পূর্ণ 888sport promo code-নিয়ন্ত্রিত জন্মনিরোধপন্থা পিলের গুরুত্ব অপরিসীম। পিলের কার্যকারিতার সঙ্গে তুলনীয় রয়েছে আর মাত্র দুটি জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতি : এক, যৌন-সম্পর্ক পরিহার। দুই, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বন্ধাত্ব্যকরণ। প্রথমটি অবাস্তব, দ্বিতীয়টি ঘটায় স্থায়ী জন্মরোধ, যা সবসময়ে গ্রহণীয় নয়। তাই পিল আজো অদ্বিতীয় ও সবচাইতে জনপ্রিয়। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণে প্রায় একশ ভাগ কার্যকরী হওয়া সত্ত্বেও পিল যেহেতু যৌনসংক্রামক ব্যাধিরোধে পুরোপুরি অক্ষম, জগৎ জুড়ে এইডসের ব্যাপক 888sport free betবৃদ্ধির কারণে আজ শুধুমাত্র পিল-ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ যৌন-সম্পর্কের জন্যে যথেষ্ট নয়। সঙ্গে কনডম ব্যবহার অপরিহার্য।

ষাটের দশকে আমেরিকায় বর্ণবিরোধী নাগরিক-স্বাধিকার-আন্দোলন ও ভিয়েতনাম-যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুদ্ধবিরোধী যে-আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, পিল-আবিষ্কারের পরবর্তী সময়ে তার সঙ্গে এসে যোগ হয়েছিল 888sport promo code-আন্দোলনের আরেকটি অধ্যায় যা যৌনবিপ্লব বলে পরিচিত। যৌনবিপ্লবের মূল কথা হলো, মেয়েরা পুরুষদের মতোই যৌন-আনন্দ পেতে সক্ষম এবং পুরুষদের মতোই তাদের যৌন-চাহিদা রয়েছে। তারা এটাও জানাতে সক্ষম হয় যে, অবিবাহিত মেয়েদেরও যৌনক্ষুধা রয়েছে এবং অবিবাহিত পুরুষদের মতোই তাদেরও তা মেটাবার অধিকার আছে। এ-ধরনের কথা এর আগে জনসম্মুখে কেউ স্বীকার বা প্রকাশ করত না। 888sport promo codeবাদীদের কাছে এই যৌনবিপ্লব নিজের শরীরকে জানা, বোঝা এবং তার নিয়ন্ত্রণের অধিকার-প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। রক্ষণশীলদের কাছে এই যৌনবিপ্লব ব্যভিচার ও নৈতিক অধঃপতনের শামিল। প্রাচীনপন্থিরা মনে করতেন, পিল যেহেতু ১০০% জন্মরোধে সক্ষম, এই বস্তুটি অবিবাহিত মেয়েদের যৌন-সচল করে রাখতে এবং বিবাহিত মহিলাদের বিবাহ-বহির্ভূত যৌনসম্পর্ক-স্থাপনে প্ররোচিত করবে। তারা ভয় করতেন এই যৌন-স্বাধীনতা সমাজ ও পরিবারের ভিত ভেঙে দেবে – অবক্ষয় নেমে আসবে চারদিকে। পিনকাস ও রক বহুভাবে বোঝাবার চেষ্টা করেছেন যে, প্রযুক্তি মানুষের ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করে না। সমাজে যে-আচরণ বা প্রবৃত্তি আগেও প্রচলিত ছিল, সেটাই আজো বিদ্যমান। পিলের আবিষ্কার কেবল যা এতদিন গোপনীয় ছিল তা চোখের সামনে বের করে আনতে সাহায্য করেছে। তবে এটাও সত্য, পঞ্চাশের দশকের বিয়ে এবং মাতৃত্বের জয়গানে মুখর সমাজ ষাটের দশকে এসে অবিবাহিত জীবনযাপন ও যৌন-অনুসন্ধান-আনন্দযজ্ঞে ভীষণভাবে মেতে উঠেছিল। অনেকের কাছেই তখন বিয়ে, সন্তান, ঘর-সংসারের চাইতে নিজেদের স্বাধীন যৌনজীবন, ডিগ্রি পেশা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। হিউ হাফনারের Playboy পত্রিকা বের হয় তখন। হেলেন গার্লি ব্রাউনের Sex and Single Girl বইতে থাকে কর্মজীবী 888sport promo codeদের যৌন-স্বাধীনতার গুণগান ও কলাকৌশলের বর্ণনা। ব্রাউন লিখেছেন, ‘বিয়ে হলো একটা বীমার মতো যার প্রয়োজন কেবল জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়টাতে। জীবনের ভালো সময়গুলোতে স্বামীর দরকার নেই।’ তাঁর মতে, স্বামীর দরকার নেই, কিন্তু প্রেমিকের দরকার আছে এবং সেই প্রেমিক ধনী ও একাধিক হলে আরো ভালো হয়। ঐতিহাসিক ও সমাজ888sport apkীরা অবশ্য আজো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি যে, ষাটের দশকের যৌনবিপ্লব কি পিলের আবিষ্কারেরই উত্তরাধিকার না-কি তা ঘটনাচক্রেই এক সঙ্গে ঘটেছে। কেউ কেউ এ-কথাও মনে করেন যে, শুধু পিল নয়, পঞ্চাশের দশকের Baby Boom এবং ষাটের দশকের বর্ণবাদ ও যুদ্ধবিরোধী-আন্দোলনের সম্মিলিত ফসল এই যৌনবিপ্লব।

পৃথিবীতে আজ ছয় থেকে নয় কোটি মেয়ে পিল-ব্যবহার করে জন্মনিয়ন্ত্রণ করে। ১৯৪৫ সালের পরে জন্মগ্রহণকারী আমেরিকান মেয়েদের আশি শতাংশ জীবনের কোনো-না-কোনো সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে পিল ব্যবহার করেছে। ষাটের দশকে এক জনপ্রিয় লেখক পিলের গুরুত্বকে সভ্যতার ইতিহাসে আগুন ও যন্ত্রপাতি-আবিষ্কারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। নব্বইয়ের দশকে বিলাতের সাপ্তাহিক পত্রিকা The Economist পিলকে আধুনিক জগতের সপ্ত-আশ্চর্যের এক আশ্চর্য বলে অভিহিত করেছেন। ষাটের দশকে চাঁদে মানুষের প্রথম অবতরণের গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছিল, ‘ব্যক্তি-মানুষের জন্যে এটি একটি ছোট্ট পদক্ষেপ, কিন্তু মনুষ্যজাতির জন্যে এটি একটি বিরাট উল্লম্ফন। 888sport free betতত্ত্বের দিক দিয়ে বিচার   করলে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বা পিলের আবিষ্কার বাজারে শত শত কার্যকরী বড়ির সাথে আরেকটি বড়ির সংযোজন মাত্র। কিন্তু পৃথিবীর  অর্ধেক মানুষের জীবনের মান উন্নয়ন করতে, তাদের চিন্তা ও  চেতনাকে শানিত করতে এই ছোট্ট পিলটির অবদান অপরিসীম। পিল-আবিষ্কারের মাধ্যমে কী আশ্চর্যভাবে বদলে গিয়েছে মেয়েদের অবস্থা ও অবস্থান, 888sport promo codeপুরুষ-নির্বিশেষে মানুষের জীবনে ঘটেছে এক   বিশাল গুণগত পরিবর্তন, সভ্যতা নিঃসন্দেহে এগিয়ে গিয়েছে অনেকখানি। য়আস্থাশীল হয়ে উঠল। ‘পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভার্যা’র মতো অবমাননাকর প্রাচীন শ্লোকের অসাড়তা প্রমাণ করতে সমর্থ হলো 888sport promo code বিবিধ বিষয়ে তার পারদর্শিতা ও নৈপুণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পেয়ে। প্রকৃতির কাছে, ভবিতব্যের কাছে নিজেকে সঁপে না দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত জীবন, শিক্ষাদীক্ষা, কর্মজীবনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ সে নিজের হাতে গ্রহণ করতে শিখল। 888sport promo code তার কর্মক্ষমতা ও ভূমিকা বিস্তার করার সুযোগ পেল। সন্তানধারণ যেহেতু 888sport promo codeর একক ক্ষমতা ও দায়িত্ব, যতদিন সে নিজে এ-বিষয়টির নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব গ্রহণ করতে না পেরেছে, ততদিন শুধু মাতৃত্বজনিত ব্যাপারেই নয়, জীবন ও জগতের আনুষঙ্গিক অন্য অনেক বিষয়ের সিদ্ধান্তের জন্যেও তাকে পুরুষের মুখাপেক্ষী থাকতে হয়েছে। পিল অবশেষে তৈরি করে দিল স্বাধীন মানুষ হিসেবে 888sport promo codeর পথচলার জন্য প্রশস্ত ও অপেক্ষাকৃত মসৃণ এক রাস্তা।

যৌনতাকে প্রজনন থেকে আলাদা করার আকাক্সক্ষা মানুষের আদিকাল থেকেই। জন্মনিয়ন্ত্রণ-প্রচেষ্টার ইতিহাস তাই স্বভাবতই সুদীর্ঘ। বাইবেলের সর্বপ্রথম পরিচ্ছেদ জেনেসিসে শীর্ষসুখের আগেভাগে শিশ্ন-অপসারণের উল্লেখ রয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব ঊনবিংশ শতাব্দীতে মিশরের মেয়েরা অ্যাকাসিয়া পাতার সঙ্গে মধু যোগ করে অথবা জীবজন্তুর মল থেকে সাপোজিটরি তৈরি করে জরায়ুতে স্থাপন করত গর্ভরোধের প্রচেষ্টায়। খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে গ্রিসে অলিভ অয়েলের সঙ্গে সিডার তেল মিশিয়ে মলম তৈরি করে তা জরায়ুর ভেতর ব্যবহার করত মেয়েরা। খ্রিষ্টপূর্ব তিন শতাব্দীতে দার্শনিক অ্যারিস্টটল বীর্য নির্মূল করার জন্যে বিভিন্নরকম তেল ও মলম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। খ্রিষ্টের জন্মের কয়েক বছর পর থেকেই রোমান লেখক ও দার্শনিকরা জন্মরোধে যৌনসম্পর্ক পরিহারের গুণগান করতে থাকেন। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ক্যাসানোভা লেবুর অর্ধেক খোসা জরায়ুর ভেতর প্রতিস্থাপন করে জন্মরোধের প্রচেষ্টা চালান। ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়াতে বিশেষ এক ধরনের কাপড় অথবা মাছের অন্ত্রনালি দিয়ে তৈরি কনডম ও ডায়েফ্রাম ব্যবহারের প্রচলন ছিল।

আঠারোশ সাতাশ সালে 888sport apkীরা 888sport promo codeর শরীরে ডিম্বাশয়ের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। এরপর আরো দুই দশক লাগে ডিম্বাণু আর শুক্রাণুর মিলনে ভ্রƒণ-সৃষ্টির সঠিক রূপরেখা নির্ণয় করতে। এর আগে পর্যন্ত মনে করা হতো পুরুষের বীর্য 888sport promo codeর শরীরে সঠিকভাবে প্রবেশ করলেই সন্তান উৎপাদিত হয়। ভ্রƒণের শরীর-গঠনে 888sport promo codeর কোনো অবদান তখন পর্যন্ত স্বীকৃত ছিল না। 888sport promo codeকে তখন মনে করা হতো শুধু সন্তানধারণ করার একটা আধার। ডিম্বকোষ ও নিষেকক্রিয়া-আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে প্রজনন-প্রক্রিয়ার সঠিক রূপটাই শুধু উদ্ঘাটিত হলো না, সন্তান-জন্মে 888sport promo codeর সক্রিয় ভূমিকা ও সমান অংশীদারিত্বের সঠিক চিত্রটাও প্রকাশিত হলো। এই সময় থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারেও দ্রুত অগ্রগতি শুরু হলো। সঙ্গমের পর প্রক্ষালনের মাধ্যমে বীর্যমুক্ত হবার উপযোগী বিভিন্নরকম পরীক্ষামূলক তরল পদার্থে বাজার ছেয়ে গেল। এসব দ্রব্য সহজভাবে ব্যবহারের জন্যে সিরিঞ্জও আবি®কৃত হলো। ১৮৩৮ সালে জার্মান ডাক্তার ফ্রেডেরিক ওয়াইল্ড দুই মাসিকের অন্তর্বর্তী সময়টাতে জরায়ু ঢেকে রাখার জন্যে একরকম পাতলা ও ছোট পর্দা আবিষ্কার করেন, যা ‘জরায়ুর ঘোমটা’ বা ‘টুপি’ বলে পরিচিত ছিল তখন। ১৮৩৯ সালে চার্লস গুডইয়ার রাবার-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটালে একে একে বাজারে আসে রাবারের তৈরি কনডম, আইইউডি, ডায়েফ্রাম। ১৮৮৬ সালে লন্ডনে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রক সাপোজিটরি তৈরি হতে শুরু হয়। কুইনাইন ও কোকো বাটার দিয়ে তৈরি এই সাপোজিটরির কার্যকারিতা একেবারে মন্দ ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় পর্যন্ত বিলাতে এই সাপোজিটরি খুবই প্রচলিত ছিল। প্রাক 888sport live chatবিপ্লবকালে, বিশেষ করে তিরিশের দশকের ভয়ানক মন্দাকালে আমেরিকান মেয়েরা বিভিন্ন গাছগাছালি থেকে আহরিত দ্রব্যাদি দিয়ে তৈরি তরল পদার্থের সাহায্যে নিজেদের বীর্যমুক্ত করার চেষ্টা করতেন। ১৮৯০ সালে 888sport apkীরা প্রথম মানুষের শরীরে হরমোন জাতীয় পদার্থের অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন হন। ১৯০৫ সালে এর নামকরণ হয় হরমোন যা গ্রিকশব্দ ‘যড়ৎসধড়’ (উত্তেজিত বা উদ্দীপ্ত করা) থেকে এসেছে। ভুয়া এবং অনিরাপদ খাদ্য ও ওষুধ থেকে জনগণকে রক্ষা করার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯০৬ সালে আমেরিকায় স্থাপিত হয় ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। ১৯২৪ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যবর্তী সময়টাতে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করে জাপান ও অস্ট্রিয়ার 888sport apkীরা আবিষ্কার করেন যে, মেয়েদের দুই মাসিকের মধ্যবর্তী খানিকটা সময়ে যৌনসম্পর্ক পরিহার করলে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মনিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাদের উদ্ভাবিত ‘rhythm method’ আজো পৃথিবীতে জনপ্রিয়, যদিও হিসেব-নিকেশ করা এই ‘নিরাপদ সময়’ জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে সবসময়ে নির্ভরযোগ্য নয়। ১৯২৮-২৯ সালে আবি®কৃত হয় মেয়েদের শরীরের প্রধান দুটি হরমোন-প্রজেস্টারোন ও এস্ট্রোজেন। এই হরমোনদুটির অস্তিত্ব ও ভূমিকা-সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানঅর্জন প্রজনন888sport apk ও জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতিকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। বলা বাহুল্য, এই হরমোনদুটির কার্যকারিতা-নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বা পিলের উদ্ভব হয়। পিল ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু-নির্গমনে অন্তরায় সৃষ্টি করে। যেহেতু ভ্রƒণের সৃষ্টির জন্যে করে এই দুই ওষুধের কোম্পানিকে ‘জাদুর বড়ি’ তৈরির পথ উন্মুক্ত করে দেন। তাতে দেখা যায়, পিল-আবিষ্কারের জন্যে ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় এক অভূতপূর্ব মিলন ঘটেছিল বেশ কয়েকজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তির, যাদের যৌথপ্রচেষ্টার সুফল ভোগ করছে আজ বিশ্বের সিংহভাগ 888sport promo codeকুল।

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কর্নিং শহরে এক খেটে-খাওয়া আইরিশ ক্যাথলিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মার্গারেট সেঙ্গার। তিনি চোখের সামনে মাত্র পঞ্চাশ বছর বয়সে তাঁর মাকে যক্ষ্মা রোগে মারা যেতে দেখেন। মার্গারেটের বয়স তখন মাত্র উনিশ। তিনি গভীর বেদনার সঙ্গে লক্ষ করেন, এগারোটি জীবিত ও সাতটি মৃত সন্তান প্রসব করার ধকল ও ক্লান্তিতে তাঁর মায়ের শরীর এতটাই অবসন্ন ছিল যে যক্ষ্মার মতো মহাব্যাধির সঙ্গে যুদ্ধ করার ক্ষমতা তার একেবারেই ছিল না। মায়ের কফিন সামনে রেখে বাবাকে উদ্দেশ্য করে কঠিনভাবে বলতে দ্বিধা করেননি মার্গারেট, ‘তুমিই এর জন্যে দায়ী, আমাদের মা এতগুলো সন্তানধারণ করার জন্যেই এভাবে অসময়ে মরে গেল।’

মায়ের জীবনের পুনরাবৃত্তি নিজের জীবনে ঘটতে দেবেন না – এই ব্যাপারে মনস্থির করে মার্গারেট কর্নিং ছেড়ে নিউইয়র্ক শহরে চলে আসেন। সেখানে নার্সিংয়ে পড়াশুনা শেষ করে একটি ক্লিনিকে কাজ নেন। নিউইয়র্ক শহরের অনেক গরিব ও অভিবাসী মেয়ে আসত সেই ক্লিনিকে। অল্প বা বিনা পয়সায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গোপনে গর্ভপাত করাতে গিয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় কেউ কেউ এসে উপস্থিত হতো এই ক্লিনিকে। অবাঞ্ছিত সন্তানধারণ করতে করতে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত এইসব 888sport promo codeর সেবা করতে গিয়ে মার্গারেট স্থির করেন তাঁর বাকি জীবন তিনি ব্যয় করবেন মেয়েদের এই চূড়ান্ত ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেওয়ার কর্মকাণ্ডে। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ও তিন সন্তানের জননী হওয়া সত্ত্বেও স্বামী-সন্তান ঘর-সংসারের চেয়ে তিনি প্রাধান্য দেন জন্মনিয়ন্ত্রণে মেয়েদের কর্তৃত্ব-স্থাপনের বিভিন্ন প্রকল্পে। মার্গারেটই প্রথম ‘জন্মনিয়ন্ত্রণ’ (birth control) শব্দটি চালু করেন। তিনি Women rebel (প্রতিবাদী 888sport promo code) নামে মেয়েদের জন্যে একটি কাগজ বের করেন। সেখানে লিখতে শুরু করেন কোন কোন সময় মেয়েদের গর্ভবতী হতে নেই, যেমন-অসুস্থতায় অথবা অভাবের সময়। যদিও এইসব দুর্যোগকালে গর্ভরোধ করার জন্যে মেয়েরা কী করবে সে-সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো পন্থার উল্লেখ করেন না মার্গারেট। তা সত্ত্বেও অশ্লীলতার অভিযোগে ‘কমস্টক আইনে’ তাঁর কাগজটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এই প্রসঙ্গে কমস্টক আইন-সম্পর্কে কিছু বলা দরকার। অ্যান্থনি কমস্টক (১৮৪৪Ñ১৯১৫) আমেরিকার গৃহযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী এক সৈনিক। আঠারোশ ষাট দশকের শেষের দিকে নিউইয়র্ক শহরে এসে রীতিমতো চমকে যান কমস্টক। শহরের আনাচে-কানাচে যৌনকর্মীদের অবাধ আনাগোনা। রাস্তায়, দেয়ালে জন্মনিয়ন্ত্রণের

বিভিন্ন পদ্ধতির খোলামেলা বিজ্ঞাপন। এসব দেখেশুনে গোঁড়া খ্রিষ্টান কমস্টকের চোখ ছানাবড়া। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এইসব জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতি ও সামগ্রীর খোলামেলা বিজ্ঞাপনই সমাজের স্খলন, ব্যভিচার ও পতিতাবৃত্তির জন্যে দায়ী। তিনি কেবল স্থানীয় পুলিশদের যৌনকর্মী ও যৌন-ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে সহযোগিতা করেই ক্ষান্ত হন না, ১৮৭২ সালে অশ্লীলতার বিরুদ্ধে তিনি রচনা করেন এক দলিল। একদিন সকালে সেই দলিলটি নিয়ে ওয়াশিংটন গিয়ে কংগ্রেসে সেটা পেশ করেন বিল হিসেবে। এই বিলের সারমর্ম হলো: জন্মনিয়ন্ত্রণের সামগ্রী ও পদ্ধতি অত্যন্ত অশ্লীল, অবক্ষয়ী ও ব্যভিচারের প্ররোচক। ফলে সমাজের ক্ষতিকর এইসব পদ্ধতি বা দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, বিতরণ বা ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা বাঞ্ছনীয়। ১৮৭৩ সালে আমেরিকার কংগ্রেস কমস্টক বিলটি পাস করে আইনের মর্যাদা দেয়। শুধু তা-ই নয়, এই আইনটির আদলে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আরো কড়া আরো কঠিন সব আইন-প্রণয়ন শুরু হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে কড়া আইন ছিল কানেকটিকাট ও ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে। কানেকটিকাটের আইন-অনুযায়ী কোনো বিবাহিত দম্পতিও যদি তাদের শোবার ঘরের নিভৃতিতে কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, তার জন্যেও তাদের অন্তত একবছর কারাদণ্ডের শাস্তি হতে পারে। কমস্টক-আইনের আওতায় ফেলে মার্গারেট সেঙ্গারের কাগজটিই শুধু বন্ধ করে দেওয়া হয় না, মার্গারেটের নামেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। জেলে বসে সময় নষ্ট করা সম্ভব নয় বলে মার্গারেট দেশ ছেড়ে বিলাতে পালিয়ে এসে সেখানে বসে জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কাজ শুরু করেন। ১৯১৫ সালে অ্যান্থনি কমস্টক মারা যান। কিন্তু তাঁর প্রণীত আইন বহাল তবিয়তে দাপটের সঙ্গে আমেরিকায় রাজত্ব করতে থাকে। ১৯১৬ সালে মার্গারেট নিউইয়র্কে ফিরে এসে তাঁর বিরুদ্ধে জারিকৃত মামলার মোকাবিলা করেন। শুনানির পর মার্গারেটের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে কমস্টক-আইনের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করে নতুন এক কাগজ বের করেন তিনি, যার নাম Birth Control Review| একই বছর তিনি তাঁর এক বোন ও মেয়ে-বন্ধুকে নিয়ে আমেরিকার প্রথম জন্মনিয়ন্ত্রণ-ক্লিনিক খোলেন নিউইয়র্ক শহরের ব্রুকলিনে। এই প্রথমবারের মতো আমেরিকার মেয়েরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সম্পর্কে সরাসরি জানার ও জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতি গ্রহণ করার সুযোগ পান। কিন্তু ক্লিনিকটি খোলার মাত্র দশ দিনের মাথায় ওখানে হামলা হয়। সঙ্গে সঙ্গে ক্লিনিকটি জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া ক্লিনিকে মজুত যত কনডম ও ডায়েফ্রাম ছিল, সব বাজেয়াপ্ত করা হয়। মার্গারেট তখন উপায় না দেখে স্থানীয় ক্লিনিক ও ডাক্তারখানাগুলোতে লুকিয়ে লুকিয়ে ইউরোপ থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সামগ্রী এনে সরবরাহ করা শুরু করেন। কিন্তু কিছুদিনের ভেতরেই গোপনে ইউরোপ থেকে ডায়েফ্রাম আমদানি করার অপরাধে মার্গারেটকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এই মামলাতেও মার্গারেটের জয় হয়। শুধু তা-ই নয়, বিশেষ বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে চিকিৎসার খাতিরে পরিমিত পর্যায়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সামগ্রীর আমদানি বৈধ বলে রায় দেওয়া হলো। মার্গারেট আবার তাঁর জন্মনিয়ন্ত্রণ-ক্লিনিকের কাজ শুরু করেন।

১৯১৭ সালে এক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে। এই সময় বস্টনে মার্গারেটের বক্তৃতা শুনে অভিভূত হয়ে নিজে থেকে আলাপ করতে এগিয়ে আসেন আরেক অসাধারণ 888sport promo code ক্যাথারিন ম্যাককরমিক (১৮৭৫-১৯৬৭)। তাঁদের এই বন্ধুত্ব ও যৌথ কর্মপ্রকল্প আজীবন স্থায়ী হয়েছিল। শিকাগোর এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করা ক্যাথরিন এমআইটি থেকে প্রাণি888sport apkে ডিগ্রি নিয়ে বিয়ে করেছিলেন ধনকুবের স্ট্যানলি ম্যাককরমিককে। কিন্তু বিয়ের দুবছর পরেই ক্যাথরিনের স্বামী মারাত্মক মানসিক রোগ স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বোধশক্তি অনেকটাই হারিয়ে ফেলেন। যেহেতু এই অসুখটি বংশানুক্রমিক, ক্যাথরিন আজীবন সন্তানহীন থাকার সংকল্প নেন। মার্গারেটের সঙ্গে আলাপের পর মার্গারেটের বহুদিনের লালিত সেই ‘জাদুর বড়ি’র স্বপ্নে ক্যাথরিনও বিমোহিত হন যে বড়ি খেয়ে মেয়েরা তাদের অনাকাক্সিক্ষত সন্তানের জন্মরোধ করতে পারবে। ক্যাথরিন যেহেতু প্রাণি888sport apkে পড়াশুনা করেছেন, তিনি জানতেন পোলিওর টিকা ও জীবাণু-ধ্বংসকারী বিভিন্ন ফলপ্রসূ ওষুধের মতো মার্গারেটের স্বপ্নের আবিষ্কারও সম্ভব। এমন একটা সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ-পিলের স্বপ্ন দেখতেন মার্গারেট ও ক্যাথরিন, যখন আমেরিকায় কালো লোকেরা ভিন্ন বাথরুম, ভিন্ন স্কুল, বাসে বিশেষভাবে চিহ্নিত ভিন্ন আসন গ্রহণ করতে বাধ্য হতো, যখন আমেরিকায় মেয়েরা ভোট দেবার অধিকার পর্যন্ত অর্জন করেনি। মার্গারেট ও ক্যাথরিন দুজনেই অবশ্য মেয়েদের ভোটের অধিকার-আদায়ের আন্দোলনেও সোচ্চার ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯২০ সালে অবশেষে ভোট দেবার অধিকার পেল আমেরিকান 888sport promo code, যেখানে 888sport app কয়েকটি দেশের মেয়েরা এ-মৌলিক অধিকারটি আরো আগেই অর্জন করেছিল।

মার্গারেট ও ক্যাথরিন জন্মনিয়ন্ত্রণ-ক্লিনিকে কাজ করে যাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁরা দুজনেই খুব হতাশ। কেননা সেই প্রাচীন, অকার্যকর অথবা বিদঘুটে এবং অস্বস্তিকর সব জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতির মধ্যেই মেয়েদের আজো সীমাবদ্ধ রাখতে হচ্ছে। ডায়েফ্রাম যদিও খুবই কার্যকরী, কিন্তু যেহেতু মেয়েরা নিজেরা তা শরীরে স্থাপন করতে পারে না, ডাক্তারের সাহায্যে গোপনাঙ্গে তা সংস্থাপনের বিড়ম্বনা ও শরমে জর্জরিত 888sport promo codeদের আর নতুন কোনো পন্থার সন্ধান দেওয়া যাচ্ছে না। মার্গারেটের স্বপ্নের বড়ি বুঝি স্বপ্নেই থেকে যাবে।

অবশেষে ১৯৫১ সালে মার্গারেটের সঙ্গে দেখা হয় গ্রেগরি পিনকাসের। পিনকাস তখন খুবই নামকরা 888sport apkী। কিন্তু আর্থিক দিক দিয়ে তাঁর অবস্থান কিছুটা বেকায়দায়। ১৯৩৪ সালে মাত্র একত্রিশ বছর বয়সে প্রথম টেস্টটিউবে খরগোশের বাচ্চা তৈরি করে সমস্ত পৃথিবীতে হইচই বাধিয়ে দিয়েছিলেন রাশিয়া থেকে আগত ইহুদি ইমিগ্র্যান্ট পরিবারের সন্তান পিনকাস। ততদিনে অ্যালডাস হাক্সলির ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড বাজারে সাড়া ফেলে দিয়েছে। লোকেরা পিতৃপরিচয়হীন, মনুষ্যত্বহীন টেস্টটিউব শিশুর ভয়ংকর সামাজিক প্রভাবের কথা চিন্তা করে আতঙ্কিত। ফলে পিনকাসের এত বড় আবিষ্কার সুনামের চাইতে বিতর্কেরই জন্ম দেয় বেশি। জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অভিযোগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরি চলে যায় পিনকাসের। তখন তিরিশের দশকের ভয়ানক মন্দা চলছে পুরো আমেরিকায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একটা জীবিকার আশায় এখানে-সেখানে ধরনা দিতে শুরু করেন পিনকাস। এইসময় তাঁর এক বন্ধু তাঁকে খণ্ডকালীন পড়াবার একটি চাকরি দেন বস্টনের অদূরবর্তী উরস্টার শহরের ক্লার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া দুই বন্ধু মিলে নিকটবর্তী শহর স্রুজবেরিতে একটা গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন। অর্থের অভাবে পিনকাস 888sport apk-গবেষণা ছাড়াও নিজেদের গবেষণাগার ও বাথরুম পরিষ্কারের কাজটাও নিজের হাতেই করতে থাকেন। ঠিক তখুনি তাঁর পরিচয় হয় মার্গারেট সেঙ্গারের সঙ্গে। মার্গারেটের ধারণা হয় পিনকাসই পারবেন এ-কাজটি করতে। এর আগে মার্গারেট ও ক্যাথরিন দুজনেই ঠিক করেছিলেন যথাযথ যোগ্য ব্যক্তির দেখা না মিললে শুধু গবেষণার জন্যে গবেষণা করার টাকা যোগাবেন না ক্যাথরিন। পিনকাসও খুবই আগ্রহের সঙ্গে প্রকল্পটি গ্রহণ করতে রাজি হন। মার্গারেট তখন ক্যাথরিনকে সঙ্গে করে এনে পিনকাসের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন। এর চার বছর আগে ক্যাথরিনের স্বামী মারা গেছেন এবং ক্যাথরিন তার স্বামীর যাবতীয় সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। পিনকাসের সঙ্গে কথা বলে ক্যাথরিনও মনে করলেন এ-কাজ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব। সঙ্গে সঙ্গে ক্যাথরিন চল্লিশ হাজার ডলারের প্রাথমিক চেকটি লিখে দিলেন পিনকাসের গবেষণার জন্যে। যদিও এটি এই ‘জাদুর বড়ি’ প্রকল্পের জন্যে ক্যাথরিনের অনেক চেকের একটি চেক, তবু এটা সত্য, তখনকার দিনে চল্লিশ হাজার ডলার অনেক টাকা। শুধু টাকা দিয়েই ক্ষান্ত হলেন না ক্যাথরিন। পশ্চিম উপকূলের তাঁর বাসস্থানের পাট গুটিয়ে তিনি সোজা চলে এলেন পিনকাসের গবেষণাগারের কাছাকাছি, যাতে সার্বক্ষণিকভাবে এই গবেষণার কাজ তদারকি করতে পারেন। ততদিনে পিনকাস জানতেন প্রজেস্টারোন ইনজেকশন দিলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুর নির্গমন (ওভুলেশন) রোধ করা যায়। তিনি কয়েক মাসের মধ্যেই জীবজন্তুর ওপর গবেষণা করে প্রমাণ করলেন প্রজেস্টারোন ইনজেকশন দিয়ে ওভুলেশন বন্ধ করে গর্ভরোধ করা সম্ভব। কিন্তু মার্গারেটের স্বপ্ন-বাস্তবায়নে এখনো দরকার আরো দুটি জিনিসের। এক, পিনকাসের এই গবেষণা যে মানবদেহে কার্যকরী তার নিশ্চয়তা। দুই, মুখে খাবার প্রজেস্টারোন-আবিষ্কার। পিনকাস একজন মৌলিক গবেষক হলেও পেশাগতভাবে তিনি ডাক্তার নন। ফলে মানবদেহে গবেষণা চালাবার অনুমতি বা যোগ্যতা তাঁর নেই। তিনি তাই শরণাপন্ন হলেন ড. জন রকের। যদিও ব্যক্তিগত জীবনে একজন রোমান ক্যাথলিক, জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে একটি প্রগতিশীল মনোভাব ছিল রকের। তাঁর কর্মজীবনের শুরুতে তিনি এতটাই রক্ষণশীল ছিলেন যে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যায়ের মেডিক্যাল কলেজে মেয়েদের ভর্তির বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এই রকই ম্যাসাচুসেটসে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সামগ্রীর বিক্রির অনুমতি চেয়ে মার্গারেটের উত্থাপিত পিটিশনে অন্য বিশিষ্ট পনেরো জন চিকিৎসকের সঙ্গে নিজেও সই করতে দ্বিধা করেননি। রকই ছিলেন এই দলে একমাত্র রোমান ক্যাথলিক। রক যখন ছোট ছিলেন তখন তাঁর গির্জার পাদরি তাঁকে একটা কথা বলেছিলেন যা সারাজীবন ছায়ার মতো সঙ্গী হয়ে ছিল রকের। তিনি বলেছিলেন, ‘জন, সবসময়ে বিবেকের কথা শুনো। নিজের বিবেককে কারো কাছে জিম্মি রেখো না।’ বিবেকের কথা শুনেই পাঁচ সন্তানের জনক জন রক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদের জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে শিক্ষা দিতে শুরু করেন। বিবেকের কথা শুনেই গ্রেগরি পিনকাসের প্রস্তাবে রাজি হন রক। সেই সময় বস্টনে একটি মেয়েদের ক্লিনিক চালাতেন রক। বহু জায়গা থেকে মেয়েরা আসত সেখানে চিকিৎসার জন্যে। প্রধানত সন্তানধারণে অসমর্থ মেয়েরাই আসত গর্ভধারণে সক্ষমতা-অর্জনের আশায়। পিনকাসের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পের কাজ অতি গোপনীয়তার সঙ্গে করে যেতে হয় রককে। ম্যাসাচুসেটসে তখনো জন্মনিয়ন্ত্রণ যেহেতু আইনত সিদ্ধ নয়, এই গবেষণাকালে রক ও পিনকাসকে এমন ভাব দেখাতে হয় যেন তারা বন্ধ্যাত্ব ঘুচাবারই চেষ্টা করছেন, যদিও গবেষণায় ব্যবহৃত মহিলাদের বা তাদের আত্মীয়দের কাছ থেকে গবেষণায় অংশগ্রহণ করার সম্মতিপত্র গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ঠিক যেভাবে সেই সম্মতিপত্রগুলো লেখা হয় তা আজকের বিচারে যথেষ্ট পরিষ্কার বা নৈতিক বলে দাবি করা যাবে না। রক তাঁর সীমিতসংখ্যক 888sport promo codeর ওপর গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করলেন যে, পিনকাসের আবিষ্কার মনুষ্যদেহেও সমান প্রযোজ্য। অর্থাৎ প্রজেস্টারোন ওভুলেশনকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে জন্মরোধ করতে সক্ষম। কিন্তু এফডিএ থেকে প্রজেস্টারোনকে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র পাবার আগে আরো বড় আকারের গবেষণা দরকার, যা আমেরিকায় সম্ভব নয়। তাছাড়া মনুষ্যদেহে এই বড় গবেষণাটি করার জন্যে রক ও পিনকাসকে আরো বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হলো এজন্যে যে, তখন পর্যন্ত মুখে খাবার-উপযোগী সস্তাদামের কৃত্রিম প্রজেস্টারোনের উদ্ভাবন সম্ভব হয়নি। এ-ব্যাপারে সহযোগিতা করলেন পেনস্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও 888sport apkী রাসেল মার্কার। মার্কার বিভিন্ন গাছপালা থেকে মালমশলা নিয়ে কৃত্রিম উপায়ে প্রজেস্টারোন বানাতে সক্ষম হন। যথেষ্ট পরিমাণে ও কম খরচে প্রজেস্টারোন তৈরি করার জন্যে নানারকম উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করতে করতে মার্কার মেক্সিকোর একরকম মিষ্টি আলুর খোঁজ পান যা তাঁর আশা পূরণ করে। কিন্তু এই প্রজেস্টারোন কেবলমাত্র ইনজেকশনে সক্রিয়। মুখে খেলে এর কার্যকারিতা থাকে না। কৃত্রিম উপায়ে প্রজেস্টারোন তৈরির মার্কারের কাজকে তখন আরো এগিয়ে নিয়ে যান দুটি ওষুধ-কোম্পানির দুই 888sport apkী, যাঁরা ভিন্ন ভিন্নভাবে কৃত্রিম উপায়ে মুখে খাবার-উপযোগী প্রজেস্টারোন তৈরি করেন। আমেরিকার ওষুধের কোম্পানি সার্লের ফ্র্যাঙ্ক কোল্টন ও মেক্সিকোর ওষুধ-কোম্পানি সিন্টেক্সের কার্ল বোরাসি কৃত্রিম যে-প্রজেস্টারোন তৈরি করেন তা মুখে খাবার-উপযোগীই শুধু নয়, প্রাকৃতিক প্রজেস্টারোন থেকে আটগুণ বেশি শক্তিশালী। তাঁদের তৈরি প্রজেস্টারোন দিয়েই এই দুই কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি তৈরি করে যা রক ও পিনকাস তাঁদের বড় গবেষণায় ব্যবহার করেন। যেহেতু আামেরিকায় এই গবেষণা সম্ভব নয়, তাই ১৯৫৬ সালে পোর্তোরিকোতে গিয়ে এটা করা হয়। ফলাফল শতকরা একশ ভাগ গর্ভরোধ। রাতারাতি পৃথিবীতে তোলপাড় পড়ে যায়। কিন্তু রক ও পিনকাস হঠাৎ আবিষ্কার করেন সার্লের তৈরি করা প্রজেস্টারোন পিলে কেমন করে যেন অতি সামান্য পরিমাণ এস্ট্রোজেনের অস্তিত্ব রয়ে গেছে। সার্ল অতঃপর সম্পূর্ণ এস্ট্রোজেনমুক্ত খাঁটি প্রজেস্টারোন বড়ি বানিয়ে দিলে তা পুনরায় ব্যবহার করে রক ও পিনকাস নিশ্চিন্ত হন যে, যদিও দুটো বড়িই গর্ভরোধে সমান কার্যকর, সামান্য এস্ট্রোজেনের উপস্থিতি প্রকৃতপক্ষে প্রজেস্টারোনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাবার সহায়ক। ফলে আজো অধিকাংশ জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িতে প্রজেস্টারোনের সঙ্গে থাকে সামান্য এস্ট্রোজেন।

১৯৫৭ সালে সার্ল ওষুধের কোম্পানি পিলকে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি হিসেবে নয়, মেয়েদের মাসিক নিয়মিত করার চিকিৎসার জন্যে ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করে। সরাসরি জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বাজারজাত করা সমাজ কতখানি গ্রহণ করবে এ-ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল তখন। এফডিএ অবশ্য প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মাসিক নিয়মিতকরণে হরমোন পিলের ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে দেয়। সার্লের ধারণা হয়েছিল, গর্ভরোধের জন্যে প্রতিদিন ওষুধ খেতে মেয়েরা রাজি হবে না। কিন্তু সার্ল এবং পৃথিবীর অন্য সকলকে স্তম্ভিত করে হঠাৎ সারা আমেরিকা জুড়ে মহামারির মতো দেখা দেয় মাসিকের গন্ডগোল। হাজার হাজার মেয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়ে ধরনা দেয় পিলের প্রেসক্রিপশনের জন্যে। দেখা যায়, দু-বছরেরও কম সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ মেয়ে পিল ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। কারো বুঝতে বাকি থাকে না, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যেই এই পিল ব্যবহৃত হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ১৯৫৯ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট আইজেনআওয়ার ঘোষণা দেন জন্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকার বা রাজনীতির কোনো বিবেচ্য বা করণীয় বিষয় নয়। তিনি আরো বলেন, এ-ব্যাপারে সরকারের কোনো দায়িত্ব বা মাথাব্যথাও নেই। ১৯৬০ সালে সার্লের অনুরোধে এফডিএ পিলকে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র দেয়। এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। কেননা এটিই প্রথম সুস্থ শরীরে দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রেসক্রিপশন ওষুধ-ব্যবহারের অনুমতিপত্র। জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িই একমাত্র ওষুধ যা চিকিৎসার জন্যে নয়, কেবল সামাজিক প্রয়োজনে বাজারজাত হয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে অনুমতি পাবার দুবছরের মধ্যেই বারো লাখ মহিলা পিল-ব্যবহার শুরু করেন। পাঁচ বছরের মধ্যে সেই 888sport free bet গিয়ে দাঁড়ায় পঞ্চাশ লাখে। ততদিনে সার্ল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টারোনের পরিমাণ খানিকটা কমিয়ে আরো উন্নতমানের পিল তৈরি করতে শুরু করেছে যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অপেক্ষাকৃত কম। ষাট দশকের শেষের দিকে সাতটি ওষুধের কোম্পানি পিল তৈরি শুরু করে এবং তাদের মোট বিক্রির পরিমাণ ১৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ততদিনে আমেরিকায় এক কোটি বিশ লাখ মেয়ে পিল-ব্যবহার শুরু করেছে এবং পিল সবচেয়ে জনপ্রিয় জন্মনিরোধ-পদ্ধতি বলে পরিচিতি পেয়েছে। দেখতে দেখতে আমেরিকার এক-চতুর্থাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণে পিলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

পিলের উদ্ভাবন ঘটে আমেরিকার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক পটপরিবর্তনের সময়ে। বর্ণবাদ ও ভিয়েতনাম-যুদ্ধের বিপক্ষে গণবিক্ষোভ ও নাগরিক-অধিকার-আদায়ের আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ষাটের দশকের আগে পুরো এক যুগ ধরে আমেরিকায় ঘরমুখী

সন্তানমুখী হবার যে অদম্য এক স্রোত প্রবাহিত ছিল, যা ঐতিহাসিকভাবে ‘Baby boom’ বলে পরিচিত, তা কিছুটা থিতু হয়ে আসতে শুরু করেছে তখন। পঞ্চাশের দশকে সেখানে বিবাহের হার সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দেয়। যুদ্ধোত্তর আমেরিকায় মেয়েদের মধ্যে খুব অল্পবয়সে বিয়ে করার হিড়িক পড়ে যায়। তখন সেখানকার জন্মের হার ভারতের জন্মের হারকে পিছনে ফেলে দিতে চায়। আমেরিকার মূলধারার সংস্কৃতিতে তখন প্রচণ্ডভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, গৃহ এবং স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার করাই আমেরিকার মেয়েদের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য এবং একমাত্র গতি। গণমাধ্যমগুলো তখন ফলাও করে প্রচার করছে, আঁটোসাঁটো ফিটফাট 888sport promo codeসুলভ পোশাক পরে সুন্দর পরিপাটি করে চুল আঁচড়ে আমেরিকান গৃহবধূরা যখন ঘরে বসে স্বামী-সন্তানদের যত্ন করছে, তখন কম্যুনিস্ট-সমাজে রাশিয়ায় মায়েরা তাদের সন্তানদের সরকার-পরিচালিত মলিন ডে-কেয়ার সেন্টারে ফেলে রেখে ঢিলেঢালা ধূসর পোশাক পরে অসুখী মুখে কল-কারখানার কাজে যাচ্ছে। এ-ধরনের অপপ্রচারে দেশ তখন একেবারে ছেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-ফেরত স্বামীর সঙ্গে চুটিয়ে সংসার করে পরপর চার-পাঁচটি সন্তান জন্ম দিয়ে রান্নাবান্না ঘর-সংসার করতে করতে আমেরিকান গৃহবধূরা তখন ক্লান্ত-বিধ্বস্ত। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার তারা জানত, তখনো তারা আরো বিশ-ত্রিশ বছর সন্তান-উৎপাদনে সক্ষম। নিজেদের স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বস্তির কথা চিন্তা করে আমেরিকান মেয়েরা তখন খুবই বিব্রত, হতাশ ও চিন্তিত। ততদিনে বেটি ফ্রিডেনের ‘ফেমিনিন মিস্টিক’ বাজারে চলে এসেছে। ফলে পিল-আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে তাকে একেবারে লুফে নিল আমেরিকার 888sport promo codeকুল। আস্তে আস্তে তা ছড়িয়ে পড়ল সারাবিশ্বে। মেয়েরা হঠাৎ আবিষ্কার করল ইচ্ছে করলেই তারা মানুষ বানাবার মেশিনের পরিচয় থেকে নিজেদের বের করে নিয়ে আসতে পারে। পুনঃপুনঃ সন্তানধারণের কারণে এতদিন কর্মজীবী 888sport promo codeরা যথেষ্ট দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত হতে পারতো না, ছোটখাট কাজেই সীমাবদ্ধ থাকতে হতো তাদের। পিলের আবিষ্কার 888sport promo codeমুক্তির দরজা খুলে দিল। যেহেতু সন্তান-জন্মের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ 888sport promo codeর হাতে এখন, পুরুষের মতো 888sport promo codeও তার কর্মজীবন নিয়ে পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়িত করতে শিখল। লেখাপড়া, ডিগ্রি ও পেশার মাঝখানে অথবা পরে সে কখন কটা সন্তান ধারণ করবে অথবা আদৌ সে সন্তানবতী হবে কি-না এ-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ এসেছে তার। পিল-আবিষ্কারের কুড়ি বছরের ভেতর ৬০% সন্তান-উৎপাদনে সক্ষম আমেরিকান 888sport promo codeদের কর্মজীবী হতে দেখা যায়। এছাড়া ছোট পরিবার ও স্বামী-স্ত্রী দুজনের রোজগারের ফলে অনেক সংসারেই নেমে আসে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা ও স্বস্তি। আর্থিক স্বাবলম্বিতা অর্জনের ফলে পরিবারে সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণও বেড়ে যায়।

১৯৬৬-১৯৬৭ সালে পিলের সাফল্য যখন আকাশছোঁয়া, তখন একে একে পিলের যৌথ-জননী মার্গারেট সেঙ্গার ও ক্যাথরিন ম্যাককরমিক এবং পিলের পিতা গ্রেগরি পিনকাস মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম জীবনে ব্যক্তি-888sport promo codeর দুর্দশায় পিলের স্বপ্ন দেখলেও শেষজীবনে এসে মার্গারেট ও ক্যাথরিন উভয়েই পৃথিবীর জন888sport free bet স্ফীতির কারণেও পিলের উপযোগিতার কথা ভেবেছেন। মার্গারেট, ক্যাথরিন ও পিনকাসের মৃত্যুর পর শুধু বেঁচে থাকেন জন রক, যিনি পিলকে রোমান ক্যাথলিকদের কাছে গ্রহণীয় করার জন্যে অমানবিক পরিশ্রম করতে শুরু করেন। ভ্যাটিকানের অনুমতি পাবার আশায় জন রক পিলকে একটি প্রাকৃতিক পন্থা (যেহেতু মেয়েদের শরীরের স্বাভাবিক হরমোন দিয়ে পিল তৈরি) বলে অভিহিত করেন যা ‘নিরাপদ সময়কে’ দীর্ঘায়িত করে কেবল। কিন্তু এত প্রচেষ্টার পরও ভ্যাটিকান জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িকে অনুমোদন করে না। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অননুমোদিত থাকলেও আশির দশকের মধ্যে আমেরিকার ৮০% ক্যাথলিক মহিলা পিল ব্যবহার শুরু করেন এবং মাত্র এক-তৃতীয়াংশেরও কম ক্যাথলিক পাদরি পিল গ্রহণ করাকে প্রকাশ্যে অনৈতিক কাজ বলে দাবি করেন। পিলের ব্যবহার শুধু যে রোমান ক্যাথলিক-সমাজেই বিতর্কের সৃষ্টি করে তা নয়, কিছু 888sport promo codeবাদীও পিলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। তারা যুক্তি দেখান, জন্মনিয়ন্ত্রণ কেন মেয়েদের একতরফা দায়িত্ব হবে? পুরুষ কেন তার ভার নেবে না? তারা মেয়েদের স্বাস্থ্যের ওপর জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ির প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হন। বলতে থাকেন, কতগুলো পুরুষ 888sport apkী ও আইনপ্রণেতা গুটিকয়েক লোভী ও অবিবেচক ওষুধ-কোম্পানির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মেয়েদের জীবন ও স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তাদের আপত্তির প্রেক্ষাপটে পিলের নিরাপত্তাজনিত কংগ্রেসনাল শুনানিতে 888sport promo codeপক্ষের অভিযোগ ও পরামর্শগুলো গভীরভাবে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে আরো অল্প পরিমাণ এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টারোন-সংবলিত পিল বাজারজাত হয় যা অনেক বেশি নিরাপদ ও যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম। এছাড়া পিলের প্যাকেটে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি-সম্পর্কে হুঁশিয়ারি যোগ করা হয়। 888sport promo codeবাদীরা ছাড়াও পিলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ-ঘোষণা করে আমেরিকার নিগ্রো সম্প্রদায়। ততদিনে তারা তাদের নাগরিক-অধিকার আদায়ে সোচ্চার এবং বেশ খানিকটা সফলও। পিলকে তারা ‘Black Genocide’ বলে অভিহিত করে। গরিব অঞ্চলের ক্লিনিকগুলোতে পিলের যথেচ্ছ ব্যবহারকে তারা সুচিন্তিতভাবে বর্ণবাদ ও কালো মানুষের 888sport free bet-হ্রাসের অভিসন্ধিতে সুপরিকল্পিত গণহত্যা বলে বর্ণনা করে। কিন্তু অতি উৎসাহী 888sport promo codeবাদী বা বর্ণবাদবিরোধীদের আপত্তি আস্তে আস্তে থিতিয়ে আসে। উভয় দলই মোটামুটি সিদ্ধান্তে আসে 888sport promo codeর বৃহত্তর কল্যাণে – বর্ণ ও অর্থনৈতিক বৈষম্যরোধে পিল ক্ষতিকর নয় বরং গঠনমূলক ভূমিকাই রাখতে পারে।

পিলকে নিয়ে অন্য যে-বিতর্ক তা পিল-ব্যবহারকারীর শারীরিক নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপার। প্রাথমিকভাবে আবি®কৃত পিলের তুলনায় আজকের পিলে প্রজেস্টারোনের পরিমাণ মাত্র এক-দশমাংশ এবং এস্ট্রোজেনের পরিমাণ মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। ফলে এ-পিল গ্রহণকালে দৈনন্দিন অস্বাচ্ছন্দ্যের প্রকোপ ও পরিমাণ খুবই অল্প। মেয়েদের স্বাস্থ্যে পিলের প্রভাব নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বেশকিছু বড় আকারের দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা করা হয়েছে। চল্লিশ বছর ধরে এই সকল গবেষণার ফলকে সংক্ষেপে বলতে গেলে বলতে হয় পিল সার্বিকভাবে বেশ নিরাপদ একটি ওষুধ। নব্বইয়ের দশকে এসে তাই এফডিএ জন্মনিয়ন্ত্রণ-পিলকে নিরাপদ বলে আখ্যায়িত করেছে। কোনো কোনো গবেষণায় অবশ্য দেখা গিয়েছে যে, পিল ব্যবহার করার সময়ে স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সারের হার ও রক্তজমাট বাঁধা ও স্ট্রোকের হার কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই এইসব পিল-ব্যবহারকারীদের একই সময়ে ধূমপান করতেও দেখা গিয়েছে। আর ধূমপানের সঙ্গে ক্যান্সারের বা স্ট্রোকের সম্পর্ক আগে থেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত। বিশ বছর আগে পিল-ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন এমন বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলাদের ওপর আরেকটি বিশাল গবেষণায় দেখা যায়, পিল-ব্যবহারের দীর্ঘমেয়াদি তেমন কোনো স্বাস্থ্যগত কুফল নেই। পিল মৃত্যুর হার বা আয়ুর ওপরও কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে ডিম্বাশয়ের ও জরায়ুর দেয়ালের ওপরের স্তরের (endomatrium) ক্যান্সাররোধে পিলের একটা উপকারী ভূমিকা রয়েছে। বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর জন888sport free bet-নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ছাড়াও পিলের আরেকটি সুফল হলো মাতৃত্বজনিত জটিলতায় স্বাস্থ্যহানি, অপুষ্টি ও মৃত্যুর হার কমানো। 888sport appsের মতো উন্নয়নশীল দেশে যেখানে মেয়েদের শতকরা কুড়ি ভাগের মৃত্যু ঘটে মাতৃত্বজনিত কারণে, সেখানে সম্পূর্ণ 888sport promo code-নিয়ন্ত্রিত জন্মনিরোধপন্থা পিলের গুরুত্ব অপরিসীম। পিলের কার্যকারিতার সঙ্গে তুলনীয় রয়েছে আর মাত্র দুটি জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতি : এক, যৌন-সম্পর্ক পরিহার। দুই, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বন্ধাত্ব্যকরণ। প্রথমটি অবাস্তব, দ্বিতীয়টি ঘটায় স্থায়ী জন্মরোধ, যা সবসময়ে গ্রহণীয় নয়। তাই পিল আজো অদ্বিতীয় ও সবচাইতে জনপ্রিয়। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণে প্রায় একশ ভাগ কার্যকরী হওয়া সত্ত্বেও পিল যেহেতু যৌনসংক্রামক ব্যাধিরোধে পুরোপুরি অক্ষম, জগৎ জুড়ে এইডসের ব্যাপক 888sport free betবৃদ্ধির কারণে আজ শুধুমাত্র পিল-ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ যৌন-সম্পর্কের জন্যে যথেষ্ট নয়। সঙ্গে কনডম ব্যবহার অপরিহার্য।

ষাটের দশকে আমেরিকায় বর্ণবিরোধী নাগরিক-স্বাধিকার-আন্দোলন ও ভিয়েতনাম-যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুদ্ধবিরোধী যে-আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, পিল-আবিষ্কারের পরবর্তী সময়ে তার সঙ্গে এসে যোগ হয়েছিল 888sport promo code-আন্দোলনের আরেকটি অধ্যায় যা যৌনবিপ্লব বলে পরিচিত। যৌনবিপ্লবের মূল কথা হলো, মেয়েরা পুরুষদের মতোই যৌন-আনন্দ পেতে সক্ষম এবং পুরুষদের মতোই তাদের যৌন-চাহিদা রয়েছে। তারা এটাও জানাতে সক্ষম হয় যে, অবিবাহিত মেয়েদেরও যৌনক্ষুধা রয়েছে এবং অবিবাহিত পুরুষদের মতোই তাদেরও তা মেটাবার অধিকার আছে। এ-ধরনের কথা এর আগে জনসম্মুখে কেউ স্বীকার বা প্রকাশ করত না। 888sport promo codeবাদীদের কাছে এই যৌনবিপ্লব নিজের শরীরকে জানা, বোঝা এবং তার নিয়ন্ত্রণের অধিকার-প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। রক্ষণশীলদের কাছে এই যৌনবিপ্লব ব্যভিচার ও নৈতিক অধঃপতনের শামিল। প্রাচীনপন্থিরা মনে করতেন, পিল যেহেতু ১০০% জন্মরোধে সক্ষম, এই বস্তুটি অবিবাহিত মেয়েদের যৌন-সচল করে রাখতে এবং বিবাহিত মহিলাদের বিবাহ-বহির্ভূত যৌনসম্পর্ক-স্থাপনে প্ররোচিত করবে। তারা ভয় করতেন এই যৌন-স্বাধীনতা সমাজ ও পরিবারের ভিত ভেঙে দেবে – অবক্ষয় নেমে আসবে চারদিকে। পিনকাস ও রক বহুভাবে বোঝাবার চেষ্টা করেছেন যে, প্রযুক্তি মানুষের ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করে না। সমাজে যে-আচরণ বা প্রবৃত্তি আগেও প্রচলিত ছিল, সেটাই আজো বিদ্যমান। পিলের আবিষ্কার কেবল যা এতদিন গোপনীয় ছিল তা চোখের সামনে বের করে আনতে সাহায্য করেছে। তবে এটাও সত্য, পঞ্চাশের দশকের বিয়ে এবং মাতৃত্বের জয়গানে মুখর সমাজ ষাটের দশকে এসে অবিবাহিত জীবনযাপন ও যৌন-অনুসন্ধান-আনন্দযজ্ঞে ভীষণভাবে মেতে উঠেছিল। অনেকের কাছেই তখন বিয়ে, সন্তান, ঘর-সংসারের চাইতে নিজেদের স্বাধীন যৌনজীবন, ডিগ্রি পেশা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। হিউ হাফনারের Playboy পত্রিকা বের হয় তখন। হেলেন গার্লি ব্রাউনের Sex and Single Girl বইতে থাকে কর্মজীবী 888sport promo codeদের যৌন-স্বাধীনতার গুণগান ও কলাকৌশলের বর্ণনা। ব্রাউন লিখেছেন, ‘বিয়ে হলো একটা বীমার মতো যার প্রয়োজন কেবল জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়টাতে। জীবনের ভালো সময়গুলোতে স্বামীর দরকার নেই।’ তাঁর মতে, স্বামীর দরকার নেই, কিন্তু প্রেমিকের দরকার আছে এবং সেই প্রেমিক ধনী ও একাধিক হলে আরো ভালো হয়। ঐতিহাসিক ও সমাজ888sport apkীরা অবশ্য আজো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি যে, ষাটের দশকের যৌনবিপ্লব কি পিলের আবিষ্কারেরই উত্তরাধিকার না-কি তা ঘটনাচক্রেই এক সঙ্গে ঘটেছে। কেউ কেউ এ-কথাও মনে করেন যে, শুধু পিল নয়, পঞ্চাশের দশকের Baby Boom এবং ষাটের দশকের বর্ণবাদ ও যুদ্ধবিরোধী-আন্দোলনের সম্মিলিত ফসল এই যৌনবিপ্লব।

পৃথিবীতে আজ ছয় থেকে নয় কোটি মেয়ে পিল-ব্যবহার করে জন্মনিয়ন্ত্রণ করে। ১৯৪৫ সালের পরে জন্মগ্রহণকারী আমেরিকান মেয়েদের আশি শতাংশ জীবনের কোনো-না-কোনো সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে পিল ব্যবহার করেছে। ষাটের দশকে এক জনপ্রিয় লেখক পিলের গুরুত্বকে সভ্যতার ইতিহাসে আগুন ও যন্ত্রপাতি-আবিষ্কারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। নব্বইয়ের দশকে বিলাতের সাপ্তাহিক পত্রিকা The Economist পিলকে আধুনিক জগতের সপ্ত-আশ্চর্যের এক আশ্চর্য বলে অভিহিত করেছেন। ষাটের দশকে চাঁদে মানুষের প্রথম অবতরণের গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছিল, ‘ব্যক্তি-মানুষের জন্যে এটি একটি ছোট্ট পদক্ষেপ, কিন্তু মনুষ্যজাতির জন্যে এটি একটি বিরাট উল্লম্ফন। 888sport free betতত্ত্বের দিক দিয়ে বিচার করলে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বা পিলের আবিষ্কার বাজারে শত শত কার্যকরী বড়ির সাথে আরেকটি বড়ির সংযোজন মাত্র। কিন্তু পৃথিবীর  অর্ধেক মানুষের জীবনের মান উন্নয়ন করতে, তাদের চিন্তা ও  চেতনাকে শানিত করতে এই ছোট্ট পিলটির অবদান অপরিসীম। পিল-আবিষ্কারের মাধ্যমে কী আশ্চর্যভাবে বদলে গিয়েছে মেয়েদের অবস্থা ও অবস্থান, 888sport promo codeপুরুষ-নির্বিশেষে মানুষের জীবনে ঘটেছে এক  বিশাল গুণগত পরিবর্তন, সভ্যতা নিঃসন্দেহে এগিয়ে গিয়েছে অনেকখানি। য়মার্গারেটের বক্তৃতা শুনে অভিভূত হয়ে নিজে থেকে আলাপ করতে এগিয়ে আসেন আরেক অসাধারণ 888sport promo code ক্যাথারিন ম্যাককরমিক (১৮৭৫-১৯৬৭)। তাঁদের এই বন্ধুত্ব ও যৌথ কর্মপ্রকল্প আজীবন স্থায়ী হয়েছিল। শিকাগোর এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করা ক্যাথরিন এমআইটি থেকে প্রাণি888sport apkে ডিগ্রি নিয়ে বিয়ে করেছিলেন ধনকুবের স্ট্যানলি ম্যাককরমিককে। কিন্তু বিয়ের দুবছর পরেই ক্যাথরিনের স্বামী মারাত্মক মানসিক রোগ স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বোধশক্তি অনেকটাই হারিয়ে ফেলেন। যেহেতু এই অসুখটি বংশানুক্রমিক, ক্যাথরিন আজীবন সন্তানহীন থাকার সংকল্প নেন। মার্গারেটের সঙ্গে আলাপের পর মার্গারেটের বহুদিনের লালিত সেই ‘জাদুর বড়ি’র স্বপ্নে ক্যাথরিনও বিমোহিত হন যে বড়ি খেয়ে মেয়েরা তাদের অনাকাক্সিক্ষত সন্তানের জন্মরোধ করতে পারবে। ক্যাথরিন যেহেতু প্রাণি888sport apkে পড়াশুনা করেছেন, তিনি জানতেন পোলিওর টিকা ও জীবাণু-ধ্বংসকারী বিভিন্ন ফলপ্রসূ ওষুধের মতো মার্গারেটের স্বপ্নের আবিষ্কারও সম্ভব। এমন একটা সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ-পিলের স্বপ্ন দেখতেন মার্গারেট ও ক্যাথরিন, যখন আমেরিকায় কালো লোকেরা ভিন্ন বাথরুম, ভিন্ন স্কুল, বাসে বিশেষভাবে চিহ্নিত ভিন্ন আসন গ্রহণ করতে বাধ্য হতো, যখন আমেরিকায় মেয়েরা ভোট দেবার অধিকার পর্যন্ত অর্জন করেনি। মার্গারেট ও ক্যাথরিন দুজনেই অবশ্য মেয়েদের ভোটের অধিকার-আদায়ের আন্দোলনেও সোচ্চার ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯২০ সালে অবশেষে ভোট দেবার অধিকার পেল আমেরিকান 888sport promo code, যেখানে 888sport app কয়েকটি দেশের মেয়েরা এ-মৌলিক অধিকারটি আরো আগেই অর্জন করেছিল।

মার্গারেট ও ক্যাথরিন জন্মনিয়ন্ত্রণ-ক্লিনিকে কাজ করে যাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁরা দুজনেই খুব হতাশ। কেননা সেই প্রাচীন, অকার্যকর অথবা বিদঘুটে এবং অস্বস্তিকর সব জন্মনিয়ন্ত্রণ -পদ্ধতির মধ্যেই মেয়েদের আজো সীমাবদ্ধ রাখতে হচ্ছে। ডায়েফ্রাম যদিও খুবই কার্যকরী, কিন্তু যেহেতু মেয়েরা নিজেরা তা শরীরে স্থাপন করতে পারে না, ডাক্তারের সাহায্যে গোপনাঙ্গে তা সংস্থাপনের বিড়ম্বনা ও শরমে জর্জরিত 888sport promo codeদের আর নতুন কোনো পন্থার সন্ধান দেওয়া যাচ্ছে না। মার্গারেটের স্বপ্নের বড়ি বুঝি স্বপ্নেই থেকে যাবে।

অবশেষে ১৯৫১ সালে মার্গারেটের সঙ্গে দেখা হয় গ্রেগরি পিনকাসের। পিনকাস তখন খুবই নামকরা 888sport apkী। কিন্তু আর্থিক দিক দিয়ে তাঁর অবস্থান কিছুটা বেকায়দায়। ১৯৩৪ সালে মাত্র একত্রিশ বছর বয়সে প্রথম টেস্টটিউবে খরগোশের বাচ্চা তৈরি করে সমস্ত পৃথিবীতে হইচই বাধিয়ে দিয়েছিলেন রাশিয়া থেকে আগত ইহুদি ইমিগ্র্যান্ট পরিবারের সন্তান পিনকাস। ততদিনে অ্যালডাস হাক্সলির ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড বাজারে সাড়া ফেলে দিয়েছে। লোকেরা পিতৃপরিচয়হীন, মনুষ্যত্বহীন টেস্টটিউব শিশুর ভয়ংকর সামাজিক প্রভাবের কথা চিন্তা করে আতঙ্কিত। ফলে পিনকাসের এত বড় আবিষ্কার সুনামের চাইতে বিতর্কেরই জন্ম দেয় বেশি। জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অভিযোগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরি চলে যায় পিনকাসের। তখন তিরিশের দশকের ভয়ানক মন্দা চলছে পুরো আমেরিকায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একটা জীবিকার আশায় এখানে-সেখানে ধরনা দিতে শুরু করেন পিনকাস। এইসময় তাঁর এক বন্ধু তাঁকে খণ্ডকালীন পড়াবার একটি চাকরি দেন বস্টনের অদূরবর্তী উরস্টার শহরের ক্লার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া দুই বন্ধু মিলে নিকটবর্তী শহর স্রুজবেরিতে একটা গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন। অর্থের অভাবে পিনকাস 888sport apk-গবেষণা ছাড়াও নিজেদের গবেষণাগার ও বাথরুম পরিষ্কারের কাজটাও নিজের হাতেই করতে থাকেন। ঠিক তখুনি তাঁর পরিচয় হয় মার্গারেট সেঙ্গারের সঙ্গে। মার্গারেটের ধারণা হয় পিনকাসই পারবেন এ-কাজটি করতে। এর আগে মার্গারেট ও ক্যাথরিন দুজনেই ঠিক করেছিলেন যথাযথ যোগ্য ব্যক্তির দেখা না মিললে শুধু গবেষণার জন্যে গবেষণা করার টাকা যোগাবেন না ক্যাথরিন। পিনকাসও খুবই আগ্রহের সঙ্গে প্রকল্পটি গ্রহণ করতে রাজি হন। মার্গারেট তখন ক্যাথরিনকে সঙ্গে করে এনে পিনকাসের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন। এর চার বছর আগে ক্যাথরিনের স্বামী মারা গেছেন এবং ক্যাথরিন তার স্বামীর যাবতীয় সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। পিনকাসের সঙ্গে কথা বলে ক্যাথরিনও মনে করলেন এ-কাজ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব। সঙ্গে সঙ্গে ক্যাথরিন চল্লিশ হাজার ডলারের প্রাথমিক চেকটি লিখে দিলেন পিনকাসের গবেষণার জন্যে। যদিও এটি এই ‘জাদুর বড়ি’ প্রকল্পের জন্যে ক্যাথরিনের অনেক চেকের একটি চেক, তবু এটা সত্য, তখনকার দিনে চল্লিশ হাজার ডলার অনেক টাকা। শুধু টাকা দিয়েই ক্ষান্ত হলেন না ক্যাথরিন। পশ্চিম উপকূলের তাঁর বাসস্থানের পাট গুটিয়ে তিনি সোজা চলে এলেন পিনকাসের গবেষণাগারের কাছাকাছি, যাতে সার্বক্ষণিকভাবে এই গবেষণার কাজ তদারকি করতে পারেন। ততদিনে পিনকাস জানতেন প্রজেস্টারোন ইনজেকশন দিলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুর নির্গমন (ওভুলেশন) রোধ করা যায়। তিনি কয়েক মাসের মধ্যেই জীবজন্তুর ওপর গবেষণা করে প্রমাণ করলেন প্রজেস্টারোন ইনজেকশন দিয়ে ওভুলেশন বন্ধ করে গর্ভরোধ করা সম্ভব। কিন্তু মার্গারেটের স্বপ্ন-বাস্তবায়নে এখনো দরকার আরো দুটি জিনিসের। এক, পিনকাসের এই গবেষণা যে মানবদেহে কার্যকরী তার নিশ্চয়তা। দুই, মুখে খাবার প্রজেস্টারোন-আবিষ্কার। পিনকাস একজন মৌলিক গবেষক হলেও পেশাগতভাবে তিনি ডাক্তার নন। ফলে মানবদেহে গবেষণা চালাবার অনুমতি বা যোগ্যতা তাঁর নেই। তিনি তাই শরণাপন্ন হলেন ড. জন রকের। যদিও ব্যক্তিগত জীবনে একজন রোমান ক্যাথলিক, জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে একটি প্রগতিশীল মনোভাব ছিল রকের। তাঁর কর্মজীবনের শুরুতে তিনি এতটাই রক্ষণশীল ছিলেন যে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যায়ের মেডিক্যাল কলেজে মেয়েদের ভর্তির বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এই রকই ম্যাসাচুসেটসে জন্মনিয়ন্ত্রণ-সামগ্রীর বিক্রির অনুমতি চেয়ে মার্গারেটের উত্থাপিত পিটিশনে অন্য বিশিষ্ট পনেরো জন চিকিৎসকের সঙ্গে নিজেও সই করতে দ্বিধা করেননি। রকই ছিলেন এই দলে একমাত্র রোমান ক্যাথলিক। রক যখন ছোট ছিলেন তখন তাঁর গির্জার পাদরি তাঁকে একটা কথা বলেছিলেন যা সারাজীবন ছায়ার মতো সঙ্গী হয়ে ছিল রকের। তিনি বলেছিলেন, ‘জন, সবসময়ে বিবেকের কথা শুনো। নিজের বিবেককে কারো কাছে জিম্মি রেখো না।’ বিবেকের কথা শুনেই পাঁচ সন্তানের জনক জন রক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদের জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে শিক্ষা দিতে শুরু করেন। বিবেকের কথা শুনেই গ্রেগরি পিনকাসের প্রস্তাবে রাজি হন রক। সেই সময় বস্টনে একটি মেয়েদের ক্লিনিক চালাতেন রক। বহু জায়গা থেকে মেয়েরা আসত সেখানে চিকিৎসার জন্যে। প্রধানত সন্তানধারণে অসমর্থ মেয়েরাই আসত গর্ভধারণে সক্ষমতা-অর্জনের আশায়। পিনকাসের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পের কাজ অতি গোপনীয়তার সঙ্গে করে যেতে হয় রককে। ম্যাসাচুসেটসে তখনো জন্মনিয়ন্ত্রণ যেহেতু আইনত সিদ্ধ নয়, এই গবেষণাকালে রক ও পিনকাসকে এমন ভাব দেখাতে হয় যেন তারা বন্ধ্যাত্ব ঘুচাবারই চেষ্টা করছেন, যদিও গবেষণায় ব্যবহৃত মহিলাদের বা তাদের আত্মীয়দের কাছ থেকে গবেষণায় অংশগ্রহণ করার সম্মতিপত্র গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ঠিক যেভাবে সেই সম্মতিপত্রগুলো লেখা হয় তা আজকের বিচারে যথেষ্ট পরিষ্কার বা নৈতিক বলে দাবি করা যাবে না। রক তাঁর সীমিতসংখ্যক 888sport promo codeর ওপর গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করলেন যে, পিনকাসের আবিষ্কার মনুষ্যদেহেও সমান প্রযোজ্য। অর্থাৎ প্রজেস্টারোন ওভুলেশনকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে জন্মরোধ করতে সক্ষম। কিন্তু এফডিএ থেকে প্রজেস্টারোনকে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র পাবার আগে আরো বড় আকারের গবেষণা দরকার, যা আমেরিকায় সম্ভব নয়। তাছাড়া মনুষ্যদেহে এই বড় গবেষণাটি করার জন্যে রক ও পিনকাসকে আরো বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হলো এজন্যে যে, তখন পর্যন্ত মুখে খাবার-উপযোগী সস্তাদামের কৃত্রিম প্রজেস্টারোনের উদ্ভাবন সম্ভব হয়নি। এ-ব্যাপারে সহযোগিতা করলেন পেনস্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও 888sport apkী রাসেল মার্কার। মার্কার বিভিন্ন গাছপালা থেকে মালমশলা নিয়ে কৃত্রিম উপায়ে প্রজেস্টারোন বানাতে সক্ষম হন। যথেষ্ট পরিমাণে ও কম খরচে প্রজেস্টারোন তৈরি করার জন্যে নানারকম উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করতে করতে মার্কার মেক্সিকোর একরকম মিষ্টি আলুর খোঁজ পান যা তাঁর আশা পূরণ করে। কিন্তু এই প্রজেস্টারোন কেবলমাত্র ইনজেকশনে সক্রিয়। মুখে খেলে এর কার্যকারিতা থাকে না। কৃত্রিম উপায়ে প্রজেস্টারোন তৈরির মার্কারের কাজকে তখন আরো এগিয়ে নিয়ে যান দুটি ওষুধ-কোম্পানির দুই 888sport apkী, যাঁরা ভিন্ন ভিন্নভাবে কৃত্রিম উপায়ে মুখে খাবার-উপযোগী প্রজেস্টারোন তৈরি করেন। আমেরিকার ওষুধের কোম্পানি সার্লের ফ্র্যাঙ্ক কোল্টন ও মেক্সিকোর ওষুধ-কোম্পানি সিন্টেক্সের কার্ল বোরাসি কৃত্রিম যে-প্রজেস্টারোন তৈরি করেন তা মুখে খাবার-উপযোগীই শুধু নয়, প্রাকৃতিক প্রজেস্টারোন থেকে আটগুণ বেশি শক্তিশালী। তাঁদের তৈরি প্রজেস্টারোন দিয়েই এই দুই কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি তৈরি করে যা রক ও পিনকাস তাঁদের বড় গবেষণায় ব্যবহার করেন। যেহেতু আামেরিকায় এই গবেষণা সম্ভব নয়, তাই ১৯৫৬ সালে পোর্তোরিকোতে গিয়ে এটা করা হয়। ফলাফল শতকরা একশ ভাগ গর্ভরোধ। রাতারাতি পৃথিবীতে তোলপাড় পড়ে যায়। কিন্তু রক ও পিনকাস হঠাৎ আবিষ্কার করেন সার্লের তৈরি করা প্রজেস্টারোন পিলে কেমন করে যেন অতি সামান্য পরিমাণ এস্ট্রোজেনের অস্তিত্ব রয়ে গেছে। সার্ল অতঃপর সম্পূর্ণ এস্ট্রোজেনমুক্ত খাঁটি প্রজেস্টারোন বড়ি বানিয়ে দিলে তা পুনরায় ব্যবহার করে রক ও পিনকাস নিশ্চিন্ত হন যে, যদিও দুটো বড়িই গর্ভরোধে সমান কার্যকর, সামান্য এস্ট্রোজেনের উপস্থিতি প্রকৃতপক্ষে প্রজেস্টারোনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাবার সহায়ক। ফলে আজো অধিকাংশ জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িতে প্রজেস্টারোনের সঙ্গে থাকে সামান্য এস্ট্রোজেন।

১৯৫৭ সালে সার্ল ওষুধের কোম্পানি পিলকে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি হিসেবে নয়, মেয়েদের মাসিক নিয়মিত করার চিকিৎসার জন্যে ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করে। সরাসরি জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বাজারজাত করা সমাজ কতখানি গ্রহণ করবে এ-ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল তখন। এফডিএ অবশ্য প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মাসিক নিয়মিতকরণে হরমোন পিলের ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে দেয়। সার্লের ধারণা হয়েছিল, গর্ভরোধের জন্যে প্রতিদিন ওষুধ খেতে মেয়েরা রাজি হবে না। কিন্তু সার্ল এবং পৃথিবীর অন্য সকলকে স্তম্ভিত করে হঠাৎ সারা আমেরিকা জুড়ে মহামারির মতো দেখা দেয় মাসিকের গন্ডগোল। হাজার হাজার মেয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়ে ধরনা দেয় পিলের প্রেসক্রিপশনের জন্যে। দেখা যায়, দু-বছরেরও কম সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ মেয়ে পিল ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। কারো বুঝতে বাকি থাকে না, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যেই এই পিল ব্যবহৃত হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ১৯৫৯ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট আইজেনআওয়ার ঘোষণা দেন জন্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকার বা রাজনীতির কোনো বিবেচ্য বা করণীয় বিষয় নয়। তিনি আরো বলেন, এ-ব্যাপারে সরকারের কোনো দায়িত্ব বা মাথাব্যথাও নেই। ১৯৬০ সালে সার্লের অনুরোধে এফডিএ পিলকে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র দেয়। এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। কেননা এটিই প্রথম সুস্থ শরীরে দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রেসক্রিপশন ওষুধ-ব্যবহারের অনুমতিপত্র। জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িই একমাত্র ওষুধ যা চিকিৎসার জন্যে নয়, কেবল সামাজিক প্রয়োজনে বাজারজাত হয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে অনুমতি পাবার দুবছরের মধ্যেই বারো লাখ মহিলা পিল-ব্যবহার শুরু করেন। পাঁচ বছরের মধ্যে সেই 888sport free bet গিয়ে দাঁড়ায় পঞ্চাশ লাখে। ততদিনে সার্ল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টারোনের পরিমাণ খানিকটা কমিয়ে আরো উন্নতমানের পিল তৈরি করতে শুরু করেছে যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অপেক্ষাকৃত কম। ষাট দশকের শেষের দিকে সাতটি ওষুধের কোম্পানি পিল তৈরি শুরু করে এবং তাদের মোট বিক্রির পরিমাণ ১৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ততদিনে আমেরিকায় এক কোটি বিশ লাখ মেয়ে পিল-ব্যবহার শুরু করেছে এবং পিল সবচেয়ে জনপ্রিয় জন্মনিরোধ-পদ্ধতি বলে পরিচিতি পেয়েছে। দেখতে দেখতে আমেরিকার এক-চতুর্থাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণে পিলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

পিলের উদ্ভাবন ঘটে আমেরিকার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক পটপরিবর্তনের সময়ে। বর্ণবাদ ও ভিয়েতনাম-যুদ্ধের বিপক্ষে গণবিক্ষোভ ও নাগরিক-অধিকার-আদায়ের আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ষাটের দশকের আগে পুরো এক যুগ ধরে আমেরিকায় ঘরমুখী

সন্তানমুখী হবার যে অদম্য এক স্রোত প্রবাহিত ছিল, যা ঐতিহাসিকভাবে ‘Baby boom’ বলে পরিচিত, তা কিছুটা থিতু হয়ে আসতে শুরু করেছে তখন। পঞ্চাশের দশকে সেখানে বিবাহের হার সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দেয়। যুদ্ধোত্তর আমেরিকায় মেয়েদের মধ্যে খুব অল্পবয়সে বিয়ে করার হিড়িক পড়ে যায়। তখন সেখানকার জন্মের হার ভারতের জন্মের হারকে পিছনে ফেলে দিতে চায়। আমেরিকার মূলধারার সংস্কৃতিতে তখন প্রচণ্ডভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, গৃহ এবং স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার করাই আমেরিকার মেয়েদের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য এবং একমাত্র গতি। গণমাধ্যমগুলো তখন ফলাও করে প্রচার করছে নিজের বিবেককে কারো কাছে জিম্মি রেখো না।’ বিবেকের কথা শুনেই পাঁচ সন্তানের জনক জন রক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদের জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে শিক্ষা দিতে শুরু করেন। বিবেকের কথা শুনেই গ্রেগরি পিনকাসের প্রস্তাবে রাজি হন রক। সেই সময় বস্টনে একটি মেয়েদের ক্লিনিক চালাতেন রক। বহু জায়গা থেকে মেয়েরা আসত সেখানে চিকিৎসার জন্যে। প্রধানত সন্তানধারণে অসমর্থ মেয়েরাই আসত গর্ভধারণে সক্ষমতা-অর্জনের আশায়। পিনকাসের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পের কাজ অতি গোপনীয়তার সঙ্গে করে যেতে হয় রককে। ম্যাসাচুসেটসে তখনো জন্মনিয়ন্ত্রণ যেহেতু আইনত সিদ্ধ নয়, এই গবেষণাকালে রক ও পিনকাসকে এমন ভাব দেখাতে হয় যেন তারা বন্ধ্যাত্ব ঘুচাবারই চেষ্টা করছেন, যদিও গবেষণায় ব্যবহৃত মহিলাদের বা তাদের আত্মীয়দের কাছ থেকে গবেষণায় অংশগ্রহণ করার সম্মতিপত্র গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ঠিক যেভাবে সেই সম্মতিপত্রগুলো লেখা হয় তা আজকের বিচারে যথেষ্ট পরিষ্কার বা নৈতিক বলে দাবি করা যাবে না। রক তাঁর সীমিতসংখ্যক 888sport promo codeর ওপর গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করলেন যে, পিনকাসের আবিষ্কার মনুষ্যদেহেও সমান প্রযোজ্য। অর্থাৎ প্রজেস্টারোন ওভুলেশনকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে জন্মরোধ করতে সক্ষম। কিন্তু এফডিএ থেকে প্রজেস্টারোনকে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র পাবার আগে আরো বড় আকারের গবেষণা দরকার, যা আমেরিকায় সম্ভব নয়। তাছাড়া মনুষ্যদেহে এই বড় গবেষণাটি করার জন্যে রক ও পিনকাসকে আরো বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হলো এজন্যে যে, তখন পর্যন্ত মুখে খাবার-উপযোগী সস্তাদামের কৃত্রিম প্রজেস্টারোনের উদ্ভাবন সম্ভব হয়নি। এ-ব্যাপারে সহযোগিতা করলেন পেনস্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও 888sport apkী রাসেল মার্কার। মার্কার বিভিন্ন গাছপালা থেকে মালমশলা নিয়ে কৃত্রিম উপায়ে প্রজেস্টারোন বানাতে সক্ষম হন। যথেষ্ট পরিমাণে ও কম খরচে প্রজেস্টারোন তৈরি করার জন্যে নানারকম উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করতে করতে মার্কার মেক্সিকোর একরকম মিষ্টি আলুর খোঁজ পান যা তাঁর আশা পূরণ করে। কিন্তু এই প্রজেস্টারোন কেবলমাত্র ইনজেকশনে সক্রিয়। মুখে খেলে এর কার্যকারিতা থাকে না। কৃত্রিম উপায়ে প্রজেস্টারোন তৈরির মার্কারের কাজকে তখন আরো এগিয়ে নিয়ে যান দুটি ওষুধ-কোম্পানির দুই 888sport apkী, যাঁরা ভিন্ন ভিন্নভাবে কৃত্রিম উপায়ে মুখে খাবার-উপযোগী প্রজেস্টারোন তৈরি করেন। আমেরিকার ওষুধের কোম্পানি সার্লের ফ্র্যাঙ্ক কোল্টন ও মেক্সিকোর ওষুধ-কোম্পানি সিন্টেক্সের কার্ল বোরাসি কৃত্রিম যে-প্রজেস্টারোন তৈরি করেন তা মুখে খাবার-উপযোগীই শুধু নয়, প্রাকৃতিক প্রজেস্টারোন থেকে আটগুণ বেশি শক্তিশালী। তাঁদের তৈরি প্রজেস্টারোন দিয়েই এই দুই কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি তৈরি করে যা রক ও পিনকাস তাঁদের বড় গবেষণায় ব্যবহার করেন। যেহেতু আামেরিকায় এই গবেষণা সম্ভব নয়, তাই ১৯৫৬ সালে পোর্তোরিকোতে গিয়ে এটা করা হয়। ফলাফল শতকরা একশ ভাগ গর্ভরোধ। রাতারাতি পৃথিবীতে তোলপাড় পড়ে যায়। কিন্তু রক ও পিনকাস হঠাৎ আবিষ্কার করেন সার্লের তৈরি করা প্রজেস্টারোন পিলে কেমন করে যেন অতি সামান্য পরিমাণ এস্ট্রোজেনের অস্তিত্ব রয়ে গেছে। সার্ল অতঃপর সম্পূর্ণ এস্ট্রোজেনমুক্ত খাঁটি প্রজেস্টারোন বড়ি বানিয়ে দিলে তা পুনরায় ব্যবহার করে রক ও পিনকাস নিশ্চিন্ত হন যে, যদিও দুটো বড়িই গর্ভরোধে সমান কার্যকর, সামান্য এস্ট্রোজেনের উপস্থিতি প্রকৃতপক্ষে প্রজেস্টারোনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাবার সহায়ক। ফলে আজো অধিকাংশ জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িতে প্রজেস্টারোনের সঙ্গে থাকে সামান্য এস্ট্রোজেন।

১৯৫৭ সালে সার্ল ওষুধের কোম্পানি পিলকে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি হিসেবে নয়, মেয়েদের মাসিক নিয়মিত করার চিকিৎসার জন্যে ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করে। সরাসরি জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বাজারজাত করা সমাজ কতখানি গ্রহণ করবে এ-ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল তখন। এফডিএ অবশ্য প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মাসিক নিয়মিতকরণে হরমোন পিলের ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে দেয়। সার্লের ধারণা হয়েছিল, গর্ভরোধের জন্যে প্রতিদিন ওষুধ খেতে মেয়েরা রাজি হবে না। কিন্তু সার্ল এবং পৃথিবীর অন্য সকলকে স্তম্ভিত করে হঠাৎ সারা আমেরিকা জুড়ে মহামারির মতো দেখা দেয় মাসিকের গন্ডগোল। হাজার হাজার মেয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়ে ধরনা দেয় পিলের প্রেসক্রিপশনের জন্যে। দেখা যায়, দু-বছরেরও কম সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ মেয়ে পিল ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। কারো বুঝতে বাকি থাকে না, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যেই এই পিল ব্যবহৃত হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ১৯৫৯ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট আইজেনআওয়ার ঘোষণা দেন জন্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকার বা রাজনীতির কোনো বিবেচ্য বা করণীয় বিষয় নয়। তিনি আরো বলেন, এ-ব্যাপারে সরকারের কোনো দায়িত্ব বা মাথাব্যথাও নেই। ১৯৬০ সালে সার্লের অনুরোধে এফডিএ পিলকে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি হিসেবে ব্যবহারের ছাড়পত্র দেয়। এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। কেননা এটিই প্রথম সুস্থ শরীরে দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রেসক্রিপশন ওষুধ-ব্যবহারের অনুমতিপত্র। জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িই একমাত্র ওষুধ যা চিকিৎসার জন্যে নয়, কেবল সামাজিক প্রয়োজনে বাজারজাত হয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে অনুমতি পাবার দুবছরের মধ্যেই বারো লাখ মহিলা পিল-ব্যবহার শুরু করেন। পাঁচ বছরের মধ্যে সেই 888sport free bet গিয়ে দাঁড়ায় পঞ্চাশ লাখে। ততদিনে সার্ল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টারোনের পরিমাণ খানিকটা কমিয়ে আরো উন্নতমানের পিল তৈরি করতে শুরু করেছে যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অপেক্ষাকৃত কম। ষাট দশকের শেষের দিকে সাতটি ওষুধের কোম্পানি পিল তৈরি শুরু করে এবং তাদের মোট বিক্রির পরিমাণ ১৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ততদিনে আমেরিকায় এক কোটি বিশ লাখ মেয়ে পিল-ব্যবহার শুরু করেছে এবং পিল সবচেয়ে জনপ্রিয় জন্মনিরোধ-পদ্ধতি বলে পরিচিতি পেয়েছে। দেখতে দেখতে আমেরিকার এক-চতুর্থাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণে পিলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

পিলের উদ্ভাবন ঘটে আমেরিকার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক পটপরিবর্তনের সময়ে। বর্ণবাদ ও ভিয়েতনাম-যুদ্ধের বিপক্ষে গণবিক্ষোভ ও নাগরিক-অধিকার-আদায়ের আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ষাটের দশকের আগে পুরো এক যুগ ধরে আমেরিকায় ঘরমুখী

সন্তানমুখী হবার যে অদম্য এক স্রোত প্রবাহিত ছিল, যা ঐতিহাসিকভাবে ‘ইধনু নড়ড়স’ বলে পরিচিত, তা কিছুটা থিতু হয়ে আসতে শুরু করেছে তখন। পঞ্চাশের দশকে সেখানে বিবাহের হার সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দেয়। যুদ্ধোত্তর আমেরিকায় মেয়েদের মধ্যে খুব অল্পবয়সে বিয়ে করার হিড়িক পড়ে যায়। তখন সেখানকার জন্মের হার ভারতের জন্মের হারকে পিছনে ফেলে দিতে চায়। আমেরিকার মূলধারার সংস্কৃতিতে তখন প্রচণ্ডভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, গৃহ এবং স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার করাই আমেরিকার মেয়েদের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য এবং একমাত্র গতি। গণমাধ্যমগুলো তখন ফলাও করে প্রচার করছে, আঁটোসাঁটো ফিটফাট 888sport promo codeসুলভ পোশাক পরে সুন্দর পরিপাটি করে চুল আঁচড়ে আমেরিকান গৃহবধূরা যখন ঘরে বসে স্বামী-সন্তানদের যত্ন করছে, তখন কম্যুনিস্ট-সমাজে রাশিয়ায় মায়েরা তাদের সন্তানদের সরকার-পরিচালিত মলিন ডে-কেয়ার সেন্টারে ফেলে রেখে ঢিলেঢালা ধূসর পোশাক পরে অসুখী মুখে কল-কারখানার কাজে যাচ্ছে। এ-ধরনের অপপ্রচারে দেশ তখন একেবারে ছেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-ফেরত স্বামীর সঙ্গে চুটিয়ে সংসার করে পরপর চার-পাঁচটি সন্তান জন্ম দিয়ে রান্নাবান্না ঘর-সংসার করতে করতে আমেরিকান গৃহবধূরা তখন ক্লান্ত-বিধ্বস্ত। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার তারা জানত, তখনো তারা আরো বিশ-ত্রিশ বছর সন্তান-উৎপাদনে সক্ষম। নিজেদের স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বস্তির কথা চিন্তা করে আমেরিকান মেয়েরা তখন খুবই বিব্রত, হতাশ ও চিন্তিত। ততদিনে বেটি ফ্রিডেনের ‘ফেমিনিন মিস্টিক’ বাজারে চলে এসেছে। ফলে পিল-আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে তাকে একেবারে লুফে নিল আমেরিকার 888sport promo codeকুল। আস্তে আস্তে তা ছড়িয়ে পড়ল সারাবিশ্বে। মেয়েরা হঠাৎ আবিষ্কার করল ইচ্ছে করলেই তারা মানুষ বানাবার মেশিনের পরিচয় থেকে নিজেদের বের করে নিয়ে আসতে পারে। পুনঃপুনঃ সন্তানধারণের কারণে এতদিন কর্মজীবী 888sport promo codeরা যথেষ্ট দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত হতে পারতো না, ছোটখাট কাজেই সীমাবদ্ধ থাকতে হতো তাদের। পিলের আবিষ্কার 888sport promo codeমুক্তির দরজা খুলে দিল। যেহেতু সন্তান-জন্মের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ 888sport promo codeর হাতে এখন, পুরুষের মতো 888sport promo codeও তার কর্মজীবন নিয়ে পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়িত করতে শিখল। লেখাপড়া, ডিগ্রি ও পেশার মাঝখানে অথবা পরে সে কখন কটা সন্তান ধারণ করবে অথবা আদৌ সে সন্তানবতী হবে কি-না এ-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ এসেছে তার। পিল-আবিষ্কারের কুড়ি বছরের ভেতর ৬০% সন্তান-উৎপাদনে সক্ষম আমেরিকান 888sport promo codeদের কর্মজীবী হতে দেখা যায়। এছাড়া ছোট পরিবার ও স্বামী-স্ত্রী দুজনের রোজগারের ফলে অনেক সংসারেই নেমে আসে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা ও স্বস্তি। আর্থিক স্বাবলম্বিতা অর্জনের ফলে পরিবারে সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণও বেড়ে যায়।

১৯৬৬-১৯৬৭ সালে পিলের সাফল্য যখন আকাশছোঁয়া, তখন একে একে পিলের যৌথ-জননী মার্গারেট সেঙ্গার ও ক্যাথরিন ম্যাককরমিক এবং পিলের পিতা গ্রেগরি পিনকাস মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম জীবনে ব্যক্তি-888sport promo codeর দুর্দশায় পিলের স্বপ্ন দেখলেও শেষজীবনে এসে মার্গারেট ও ক্যাথরিন উভয়েই পৃথিবীর জন888sport free bet স্ফীতির কারণেও পিলের উপযোগিতার কথা ভেবেছেন। মার্গারেট, ক্যাথরিন ও পিনকাসের মৃত্যুর পর শুধু বেঁচে থাকেন জন রক, যিনি পিলকে রোমান ক্যাথলিকদের কাছে গ্রহণীয় করার জন্যে অমানবিক পরিশ্রম করতে শুরু করেন। ভ্যাটিকানের অনুমতি পাবার আশায় জন রক পিলকে একটি প্রাকৃতিক পন্থা (যেহেতু মেয়েদের শরীরের স্বাভাবিক হরমোন দিয়ে পিল তৈরি) বলে অভিহিত করেন যা ‘নিরাপদ সময়কে’ দীর্ঘায়িত করে কেবল। কিন্তু এত প্রচেষ্টার পরও ভ্যাটিকান জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িকে অনুমোদন করে না। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অননুমোদিত থাকলেও আশির দশকের মধ্যে আমেরিকার ৮০% ক্যাথলিক মহিলা পিল ব্যবহার শুরু করেন এবং মাত্র এক-তৃতীয়াংশেরও কম ক্যাথলিক পাদরি পিল গ্রহণ করাকে প্রকাশ্যে অনৈতিক কাজ বলে দাবি করেন। পিলের ব্যবহার শুধু যে রোমান ক্যাথলিক-সমাজেই বিতর্কের সৃষ্টি করে তা নয়, কিছু 888sport promo codeবাদীও পিলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। তারা যুক্তি দেখান, জন্মনিয়ন্ত্রণ কেন মেয়েদের একতরফা দায়িত্ব হবে? পুরুষ কেন তার ভার নেবে না? তারা মেয়েদের স্বাস্থ্যের ওপর জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ির প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হন। বলতে থাকেন, কতগুলো পুরুষ 888sport apkী ও আইনপ্রণেতা গুটিকয়েক লোভী ও অবিবেচক ওষুধ-কোম্পানির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মেয়েদের জীবন ও স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তাদের আপত্তির প্রেক্ষাপটে পিলের নিরাপত্তাজনিত কংগ্রেসনাল শুনানিতে 888sport promo codeপক্ষের অভিযোগ ও পরামর্শগুলো গভীরভাবে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে আরো অল্প পরিমাণ এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টারোন-সংবলিত পিল বাজারজাত হয় যা অনেক বেশি নিরাপদ ও যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম। এছাড়া পিলের প্যাকেটে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি-সম্পর্কে হুঁশিয়ারি যোগ করা হয়। 888sport promo codeবাদীরা ছাড়াও পিলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ-ঘোষণা করে আমেরিকার নিগ্রো সম্প্রদায়। ততদিনে তারা তাদের নাগরিক-অধিকার আদায়ে সোচ্চার এবং বেশ খানিকটা সফলও। পিলকে তারা ‘Black Genocide’ বলে অভিহিত করে। গরিব অঞ্চলের ক্লিনিকগুলোতে পিলের যথেচ্ছ ব্যবহারকে তারা সুচিন্তিতভাবে বর্ণবাদ ও কালো মানুষের 888sport free bet-হ্রাসের অভিসন্ধিতে সুপরিকল্পিত গণহত্যা বলে বর্ণনা করে। কিন্তু অতি উৎসাহী 888sport promo codeবাদী বা বর্ণবাদবিরোধীদের আপত্তি আস্তে আস্তে থিতিয়ে আসে। উভয় দলই মোটামুটি সিদ্ধান্তে আসে 888sport promo codeর বৃহত্তর কল্যাণে – বর্ণ ও অর্থনৈতিক বৈষম্যরোধে পিল ক্ষতিকর নয় বরং গঠনমূলক ভূমিকাই রাখতে পারে।

পিলকে নিয়ে অন্য যে-বিতর্ক তা পিল-ব্যবহারকারীর শারীরিক নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপার। প্রাথমিকভাবে আবি®কৃত পিলের তুলনায় আজকের পিলে প্রজেস্টারোনের পরিমাণ মাত্র এক-দশমাংশ এবং এস্ট্রোজেনের পরিমাণ মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। ফলে এ-পিল গ্রহণকালে দৈনন্দিন অস্বাচ্ছন্দ্যের প্রকোপ ও পরিমাণ খুবই অল্প। মেয়েদের স্বাস্থ্যে পিলের প্রভাব নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বেশকিছু বড় আকারের দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা করা হয়েছে। চল্লিশ বছর ধরে এই সকল গবেষণার ফলকে সংক্ষেপে বলতে গেলে বলতে হয় পিল সার্বিকভাবে বেশ নিরাপদ একটি ওষুধ। নব্বইয়ের দশকে এসে তাই এফডিএ জন্মনিয়ন্ত্রণ-পিলকে নিরাপদ বলে আখ্যায়িত করেছে। কোনো কোনো গবেষণায় অবশ্য দেখা গিয়েছে যে, পিল ব্যবহার করার সময়ে স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সারের হার ও রক্তজমাট বাঁধা ও স্ট্রোকের হার কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই এইসব পিল-ব্যবহারকারীদের একই সময়ে ধূমপান করতেও দেখা গিয়েছে। আর ধূমপানের সঙ্গে ক্যান্সারের বা স্ট্রোকের সম্পর্ক আগে থেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত। বিশ বছর আগে পিল-ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন এমন বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলাদের ওপর আরেকটি বিশাল গবেষণায় দেখা যায়, পিল-ব্যবহারের দীর্ঘমেয়াদি তেমন কোনো স্বাস্থ্যগত কুফল নেই। পিল মৃত্যুর হার বা আয়ুর ওপরও কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে ডিম্বাশয়ের ও জরায়ুর দেয়ালের ওপরের স্তরের (endomatrium) ক্যান্সাররোধে পিলের একটা উপকারী ভূমিকা রয়েছে। বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর জন888sport free bet-নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ছাড়াও পিলের আরেকটি সুফল হলো মাতৃত্বজনিত জটিলতায় স্বাস্থ্যহানি, অপুষ্টি ও মৃত্যুর হার কমানো। 888sport appsের মতো উন্নয়নশীল দেশে যেখানে মেয়েদের শতকরা কুড়ি ভাগের মৃত্যু ঘটে মাতৃত্বজনিত কারণে, সেখানে সম্পূর্ণ 888sport promo code-নিয়ন্ত্রিত জন্মনিরোধপন্থা পিলের গুরুত্ব অপরিসীম। পিলের কার্যকারিতার সঙ্গে তুলনীয় রয়েছে আর মাত্র দুটি জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতি : এক, যৌন-সম্পর্ক পরিহার। দুই, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বন্ধাত্ব্যকরণ। প্রথমটি অবাস্তব, দ্বিতীয়টি ঘটায় স্থায়ী জন্মরোধ, যা সবসময়ে গ্রহণীয় নয়। তাই পিল আজো অদ্বিতীয় ও সবচাইতে জনপ্রিয়। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণে প্রায় একশ ভাগ কার্যকরী হওয়া সত্ত্বেও পিল যেহেতু যৌনসংক্রামক ব্যাধিরোধে পুরোপুরি অক্ষম, জগৎ জুড়ে এইডসের ব্যাপক 888sport free betবৃদ্ধির কারণে আজ শুধুমাত্র পিল-ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ যৌন-সম্পর্কের জন্যে যথেষ্ট নয়। সঙ্গে কনডম ব্যবহার অপরিহার্য।

ষাটের দশকে আমেরিকায় বর্ণবিরোধী নাগরিক-স্বাধিকার-আন্দোলন ও ভিয়েতনাম-যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুদ্ধবিরোধী যে-আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, পিল-আবিষ্কারের পরবর্তী সময়ে তার সঙ্গে এসে যোগ হয়েছিল 888sport promo code-আন্দোলনের আরেকটি অধ্যায় যা যৌনবিপ্লব বলে পরিচিত। যৌনবিপ্লবের মূল কথা হলো, মেয়েরা পুরুষদের মতোই যৌন-আনন্দ পেতে সক্ষম এবং পুরুষদের মতোই তাদের যৌন-চাহিদা রয়েছে। তারা এটাও জানাতে সক্ষম হয় যে, অবিবাহিত মেয়েদেরও যৌনক্ষুধা রয়েছে এবং অবিবাহিত পুরুষদের মতোই তাদেরও তা মেটাবার অধিকার আছে। এ-ধরনের কথা এর আগে জনসম্মুখে কেউ স্বীকার বা প্রকাশ করত না। 888sport promo codeবাদীদের কাছে এই যৌনবিপ্লব নিজের শরীরকে জানা, বোঝা এবং তার নিয়ন্ত্রণের অধিকার-প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। রক্ষণশীলদের কাছে এই যৌনবিপ্লব ব্যভিচার ও নৈতিক অধঃপতনের শামিল। প্রাচীনপন্থিরা মনে করতেন, পিল যেহেতু ১০০% জন্মরোধে সক্ষম, এই বস্তুটি অবিবাহিত মেয়েদের যৌন-সচল করে রাখতে এবং বিবাহিত মহিলাদের বিবাহ-বহির্ভূত যৌনসম্পর্ক-স্থাপনে প্ররোচিত করবে। তারা ভয় করতেন এই যৌন-স্বাধীনতা সমাজ ও পরিবারের ভিত ভেঙে দেবে – অবক্ষয় নেমে আসবে চারদিকে। পিনকাস ও রক বহুভাবে বোঝাবার চেষ্টা করেছেন যে, প্রযুক্তি মানুষের ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করে না। সমাজে যে-আচরণ বা প্রবৃত্তি আগেও প্রচলিত ছিল, সেটাই আজো বিদ্যমান। পিলের আবিষ্কার কেবল যা এতদিন গোপনীয় ছিল তা চোখের সামনে বের করে আনতে সাহায্য করেছে। তবে এটাও সত্য, পঞ্চাশের দশকের বিয়ে এবং মাতৃত্বের জয়গানে মুখর সমাজ ষাটের দশকে এসে অবিবাহিত জীবনযাপন ও যৌন-অনুসন্ধান-আনন্দযজ্ঞে ভীষণভাবে মেতে উঠেছিল। অনেকের কাছেই তখন বিয়ে, সন্তান, ঘর-সংসারের চাইতে নিজেদের স্বাধীন যৌনজীবন, ডিগ্রি পেশা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। হিউ হাফনারের চষধুনড়ু পত্রিকা বের হয় তখন। হেলেন গার্লি ব্রাউনের Sex and Single Girl বইতে থাকে কর্মজীবী 888sport promo codeদের যৌন-স্বাধীনতার গুণগান ও কলাকৌশলের বর্ণনা। ব্রাউন লিখেছেন, ‘বিয়ে হলো একটা বীমার মতো যার প্রয়োজন কেবল জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়টাতে। জীবনের ভালো সময়গুলোতে স্বামীর দরকার নেই।’ তাঁর মতে, স্বামীর দরকার নেই, কিন্তু প্রেমিকের দরকার আছে এবং সেই প্রেমিক ধনী ও একাধিক হলে আরো ভালো হয়। ঐতিহাসিক ও সমাজ888sport apkীরা অবশ্য আজো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি যে, ষাটের দশকের যৌনবিপ্লব কি পিলের আবিষ্কারেরই উত্তরাধিকার না-কি তা ঘটনাচক্রেই এক সঙ্গে ঘটেছে। কেউ কেউ এ-কথাও মনে করেন যে, শুধু পিল নয়, পঞ্চাশের দশকের ইধনু ইড়ড়স এবং ষাটের দশকের বর্ণবাদ ও যুদ্ধবিরোধী-আন্দোলনের সম্মিলিত ফসল এই যৌনবিপ্লব।

পৃথিবীতে আজ ছয় থেকে নয় কোটি মেয়ে পিল-ব্যবহার করে জন্মনিয়ন্ত্রণ করে। ১৯৪৫ সালের পরে জন্মগ্রহণকারী আমেরিকান মেয়েদের আশি শতাংশ জীবনের কোনো-না-কোনো সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে পিল ব্যবহার করেছে। ষাটের দশকে এক জনপ্রিয় লেখক পিলের গুরুত্বকে সভ্যতার ইতিহাসে আগুন ও যন্ত্রপাতি-আবিষ্কারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। নব্বইয়ের দশকে বিলাতের সাপ্তাহিক পত্রিকা The Economist পিলকে আধুনিক জগতের সপ্ত-আশ্চর্যের এক আশ্চর্য বলে অভিহিত করেছেন। ষাটের দশকে চাঁদে মানুষের প্রথম অবতরণের গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছিল, ‘ব্যক্তি-মানুষের জন্যে এটি একটি ছোট্ট পদক্ষেপ, কিন্তু মনুষ্যজাতির জন্যে এটি একটি বিরাট উল্লম্ফন। 888sport free betতত্ত্বের দিক দিয়ে বিচার   করলে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বা পিলের আবিষ্কার বাজারে শত শত কার্যকরী বড়ির সাথে আরেকটি বড়ির সংযোজন মাত্র। কিন্তু পৃথিবীর  অর্ধেক মানুষের জীবনের মান উন্নয়ন করতে, তাদের চিন্তা ও  চেতনাকে শানিত করতে এই ছোট্ট পিলটির অবদান অপরিসীম। পিল-আবিষ্কারের মাধ্যমে কী আশ্চর্যভাবে বদলে গিয়েছে মেয়েদের অবস্থা ও অবস্থান, 888sport promo codeপুরুষ-নির্বিশেষে মানুষের জীবনে ঘটেছে এক বিশাল গুণগত পরিবর্তন, সভ্যতা নিঃসন্দেহে এগিয়ে গিয়েছে অনেকখানি। ঐতিহাসিক ঘটনা। কেননা এটিই প্রথম সুস্থ শরীরে দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রেসক্রিপশন ওষুধ-ব্যবহারের অনুমতিপত্র। জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িই একমাত্র ওষুধ যা চিকিৎসার জন্যে নয়, কেবল সামাজিক প্রয়োজনে বাজারজাত হয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে অনুমতি পাবার দুবছরের মধ্যেই বারো লাখ মহিলা পিল-ব্যবহার শুরু করেন। পাঁচ বছরের মধ্যে সেই 888sport free bet গিয়ে দাঁড়ায় পঞ্চাশ লাখে। ততদিনে সার্ল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টারোনের পরিমাণ খানিকটা কমিয়ে আরো উন্নতমানের পিল তৈরি করতে শুরু করেছে যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অপেক্ষাকৃত কম। ষাট দশকের শেষের দিকে সাতটি ওষুধের কোম্পানি পিল তৈরি শুরু করে এবং তাদের মোট বিক্রির পরিমাণ ১৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ততদিনে আমেরিকায় এক কোটি বিশ লাখ মেয়ে পিল-ব্যবহার শুরু করেছে এবং পিল সবচেয়ে জনপ্রিয় জন্মনিরোধ-পদ্ধতি বলে পরিচিতি পেয়েছে। দেখতে দেখতে আমেরিকার এক-চতুর্থাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণে পিলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

পিলের উদ্ভাবন ঘটে আমেরিকার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক পটপরিবর্তনের সময়ে। বর্ণবাদ ও ভিয়েতনাম-যুদ্ধের বিপক্ষে গণবিক্ষোভ ও নাগরিক-অধিকার-আদায়ের আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ষাটের দশকের আগে পুরো এক যুগ ধরে আমেরিকায় ঘরমুখী

সন্তানমুখী হবার যে অদম্য এক স্রোত প্রবাহিত ছিল, যা ঐতিহাসিকভাবে ‘Baby boom’ বলে পরিচিত, তা কিছুটা থিতু হয়ে আসতে শুরু করেছে তখন। পঞ্চাশের দশকে সেখানে বিবাহের হার সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দেয়। যুদ্ধোত্তর আমেরিকায় মেয়েদের মধ্যে খুব অল্পবয়সে বিয়ে করার হিড়িক পড়ে যায়। তখন সেখানকার জন্মের হার ভারতের জন্মের হারকে পিছনে ফেলে দিতে চায়। আমেরিকার মূলধারার সংস্কৃতিতে তখন প্রচণ্ডভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, গৃহ এবং স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার করাই আমেরিকার মেয়েদের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য এবং একমাত্র গতি। গণমাধ্যমগুলো তখন ফলাও করে প্রচার করছে, আঁটোসাঁটো ফিটফাট 888sport promo codeসুলভ পোশাক পরে সুন্দর পরিপাটি করে চুল আঁচড়ে আমেরিকান গৃহবধূরা যখন ঘরে বসে স্বামী-সন্তানদের যত্ন করছে, তখন কম্যুনিস্ট-সমাজে রাশিয়ায় মায়েরা তাদের সন্তানদের সরকার-পরিচালিত মলিন ডে-কেয়ার সেন্টারে ফেলে রেখে ঢিলেঢালা ধূসর পোশাক পরে অসুখী মুখে কল-কারখানার কাজে যাচ্ছে। এ-ধরনের অপপ্রচারে দেশ তখন একেবারে ছেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-ফেরত স্বামীর সঙ্গে চুটিয়ে সংসার করে পরপর চার-পাঁচটি সন্তান জন্ম দিয়ে রান্নাবান্না ঘর-সংসার করতে করতে আমেরিকান গৃহবধূরা তখন ক্লান্ত-বিধ্বস্ত। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার তারা জানত, তখনো তারা আরো বিশ-ত্রিশ বছর সন্তান-উৎপাদনে সক্ষম। নিজেদের স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বস্তির কথা চিন্তা করে আমেরিকান মেয়েরা তখন খুবই বিব্রত, হতাশ ও চিন্তিত। ততদিনে বেটি ফ্রিডেনের ‘ফেমিনিন মিস্টিক’ বাজারে চলে এসেছে। ফলে পিল-আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে তাকে একেবারে লুফে নিল আমেরিকার 888sport promo codeকুল। আস্তে আস্তে তা ছড়িয়ে পড়ল সারাবিশ্বে। মেয়েরা হঠাৎ আবিষ্কার করল ইচ্ছে করলেই তারা মানুষ বানাবার মেশিনের পরিচয় থেকে নিজেদের বের করে নিয়ে আসতে পারে। পুনঃপুনঃ সন্তানধারণের কারণে এতদিন কর্মজীবী 888sport promo codeরা যথেষ্ট দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত হতে পারতো না, ছোটখাট কাজেই সীমাবদ্ধ থাকতে হতো তাদের। পিলের আবিষ্কার 888sport promo codeমুক্তির দরজা খুলে দিল। যেহেতু সন্তান-জন্মের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ 888sport promo codeর হাতে এখন, পুরুষের মতো 888sport promo codeও তার কর্মজীবন নিয়ে পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়িত করতে শিখল। লেখাপড়া, ডিগ্রি ও পেশার মাঝখানে অথবা পরে সে কখন কটা সন্তান ধারণ করবে অথবা আদৌ সে সন্তানবতী হবে কি-না এ-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ এসেছে তার। পিল-আবিষ্কারের কুড়ি বছরের ভেতর ৬০% সন্তান-উৎপাদনে সক্ষম আমেরিকান 888sport promo codeদের কর্মজীবী হতে দেখা যায়। এছাড়া ছোট পরিবার ও স্বামী-স্ত্রী দুজনের রোজগারের ফলে অনেক সংসারেই নেমে আসে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা ও স্বস্তি। আর্থিক স্বাবলম্বিতা অর্জনের ফলে পরিবারে সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণও বেড়ে যায়।

১৯৬৬-১৯৬৭ সালে পিলের সাফল্য যখন আকাশছোঁয়া, তখন একে একে পিলের যৌথ-জননী মার্গারেট সেঙ্গার ও ক্যাথরিন ম্যাককরমিক এবং পিলের পিতা গ্রেগরি পিনকাস মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম জীবনে ব্যক্তি-888sport promo codeর দুর্দশায় পিলের স্বপ্ন দেখলেও শেষজীবনে এসে মার্গারেট ও ক্যাথরিন উভয়েই পৃথিবীর জন888sport free bet স্ফীতির কারণেও পিলের উপযোগিতার কথা ভেবেছেন। মার্গারেট, ক্যাথরিন ও পিনকাসের মৃত্যুর পর শুধু বেঁচে থাকেন জন রক, যিনি পিলকে রোমান ক্যাথলিকদের কাছে গ্রহণীয় করার জন্যে অমানবিক পরিশ্রম করতে শুরু করেন। ভ্যাটিকানের অনুমতি পাবার আশায় জন রক পিলকে একটি প্রাকৃতিক পন্থা (যেহেতু মেয়েদের শরীরের স্বাভাবিক হরমোন দিয়ে পিল তৈরি) বলে অভিহিত করেন যা ‘নিরাপদ সময়কে’ দীর্ঘায়িত করে কেবল। কিন্তু এত প্রচেষ্টার পরও ভ্যাটিকান জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়িকে অনুমোদন করে না। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অননুমোদিত থাকলেও আশির দশকের মধ্যে আমেরিকার ৮০% ক্যাথলিক মহিলা পিল ব্যবহার শুরু করেন এবং মাত্র এক-তৃতীয়াংশেরও কম ক্যাথলিক পাদরি পিল গ্রহণ করাকে প্রকাশ্যে অনৈতিক কাজ বলে দাবি করেন। পিলের ব্যবহার শুধু যে রোমান ক্যাথলিক-সমাজেই বিতর্কের সৃষ্টি করে তা নয়, কিছু 888sport promo codeবাদীও পিলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। তারা যুক্তি দেখান, জন্মনিয়ন্ত্রণ কেন মেয়েদের একতরফা দায়িত্ব হবে? পুরুষ কেন তার ভার নেবে না? তারা মেয়েদের স্বাস্থ্যের ওপর জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ির প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হন। বলতে থাকেন, কতগুলো পুরুষ 888sport apkী ও আইনপ্রণেতা গুটিকয়েক লোভী ও অবিবেচক ওষুধ-কোম্পানির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মেয়েদের জীবন ও স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তাদের আপত্তির প্রেক্ষাপটে পিলের নিরাপত্তাজনিত কংগ্রেসনাল শুনানিতে 888sport promo codeপক্ষের অভিযোগ ও পরামর্শগুলো গভীরভাবে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে আরো অল্প পরিমাণ এস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টারোন-সংবলিত পিল বাজারজাত হয় যা অনেক বেশি নিরাপদ ও যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম। এছাড়া পিলের প্যাকেটে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি-সম্পর্কে হুঁশিয়ারি যোগ করা হয়। 888sport promo codeবাদীরা ছাড়াও পিলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ-ঘোষণা করে আমেরিকার নিগ্রো সম্প্রদায়। ততদিনে তারা তাদের নাগরিক-অধিকার আদায়ে সোচ্চার এবং বেশ খানিকটা সফলও। পিলকে তারা ‘Black Genocide’ বলে অভিহিত করে। গরিব অঞ্চলের ক্লিনিকগুলোতে পিলের যথেচ্ছ ব্যবহারকে তারা সুচিন্তিতভাবে বর্ণবাদ ও কালো মানুষের 888sport free bet-হ্রাসের অভিসন্ধিতে সুপরিকল্পিত গণহত্যা বলে বর্ণনা করে। কিন্তু অতি উৎসাহী 888sport promo codeবাদী বা বর্ণবাদবিরোধীদের আপত্তি আস্তে আস্তে থিতিয়ে আসে। উভয় দলই মোটামুটি সিদ্ধান্তে আসে 888sport promo codeর বৃহত্তর কল্যাণে – বর্ণ ও অর্থনৈতিক বৈষম্যরোধে পিল ক্ষতিকর নয় বরং গঠনমূলক ভূমিকাই রাখতে পারে।

পিলকে নিয়ে অন্য যে-বিতর্ক তা পিল-ব্যবহারকারীর শারীরিক নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপার। প্রাথমিকভাবে আবি®কৃত পিলের তুলনায় আজকের পিলে প্রজেস্টারোনের পরিমাণ মাত্র এক-দশমাংশ এবং এস্ট্রোজেনের পরিমাণ মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। ফলে এ-পিল গ্রহণকালে দৈনন্দিন অস্বাচ্ছন্দ্যের প্রকোপ ও পরিমাণ খুবই অল্প। মেয়েদের স্বাস্থ্যে পিলের প্রভাব নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বেশকিছু বড় আকারের দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা করা হয়েছে। চল্লিশ বছর ধরে এই সকল গবেষণার ফলকে সংক্ষেপে বলতে গেলে বলতে হয় পিল সার্বিকভাবে বেশ নিরাপদ একটি ওষুধ। নব্বইয়ের দশকে এসে তাই এফডিএ জন্মনিয়ন্ত্রণ-পিলকে নিরাপদ বলে আখ্যায়িত করেছে। কোনো কোনো গবেষণায় অবশ্য দেখা গিয়েছে যে, পিল ব্যবহার করার সময়ে স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সারের হার ও রক্তজমাট বাঁধা ও স্ট্রোকের হার কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই এইসব পিল-ব্যবহারকারীদের একই সময়ে ধূমপান করতেও দেখা গিয়েছে। আর ধূমপানের সঙ্গে ক্যান্সারের বা স্ট্রোকের সম্পর্ক আগে থেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত। বিশ বছর আগে পিল-ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন এমন বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলাদের ওপর আরেকটি বিশাল গবেষণায় দেখা যায়, পিল-ব্যবহারের দীর্ঘমেয়াদি তেমন কোনো স্বাস্থ্যগত কুফল নেই। পিল মৃত্যুর হার বা আয়ুর ওপরও কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে ডিম্বাশয়ের ও জরায়ুর দেয়ালের ওপরের স্তরের (endomatrium) ক্যান্সাররোধে পিলের একটা উপকারী ভূমিকা রয়েছে। বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর জন888sport free bet-নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ছাড়াও পিলের আরেকটি সুফল হলো মাতৃত্বজনিত জটিলতায় স্বাস্থ্যহানি, অপুষ্টি ও মৃত্যুর হার কমানো। 888sport appsের মতো উন্নয়নশীল দেশে যেখানে মেয়েদের শতকরা কুড়ি ভাগের মৃত্যু ঘটে মাতৃত্বজনিত কারণে, সেখানে সম্পূর্ণ 888sport promo code-নিয়ন্ত্রিত জন্মনিরোধপন্থা পিলের গুরুত্ব অপরিসীম। পিলের কার্যকারিতার সঙ্গে তুলনীয় রয়েছে আর মাত্র দুটি জন্মনিয়ন্ত্রণ-পদ্ধতি : এক, যৌন-সম্পর্ক পরিহার। দুই, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বন্ধাত্ব্যকরণ। প্রথমটি অবাস্তব, দ্বিতীয়টি ঘটায় স্থায়ী জন্মরোধ, যা সবসময়ে গ্রহণীয় নয়। তাই পিল আজো অদ্বিতীয় ও সবচাইতে জনপ্রিয়। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণে প্রায় একশ ভাগ কার্যকরী হওয়া সত্ত্বেও পিল যেহেতু যৌনসংক্রামক ব্যাধিরোধে পুরোপুরি অক্ষম, জগৎ জুড়ে এইডসের ব্যাপক 888sport free betবৃদ্ধির কারণে আজ শুধুমাত্র পিল-ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ যৌন-সম্পর্কের জন্যে যথেষ্ট নয়। সঙ্গে কনডম ব্যবহার অপরিহার্য।

ষাটের দশকে আমেরিকায় বর্ণবিরোধী নাগরিক-স্বাধিকার-আন্দোলন ও ভিয়েতনাম-যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুদ্ধবিরোধী যে-আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, পিল-আবিষ্কারের পরবর্তী সময়ে তার সঙ্গে এসে যোগ হয়েছিল 888sport promo code-আন্দোলনের আরেকটি অধ্যায় যা যৌনবিপ্লব বলে পরিচিত। যৌনবিপ্লবের মূল কথা হলো, মেয়েরা পুরুষদের মতোই যৌন-আনন্দ পেতে সক্ষম এবং পুরুষদের মতোই তাদের যৌন-চাহিদা রয়েছে। তারা এটাও জানাতে সক্ষম হয় যে, অবিবাহিত মেয়েদেরও যৌনক্ষুধা রয়েছে এবং অবিবাহিত পুরুষদের মতোই তাদেরও তা মেটাবার অধিকার আছে। এ-ধরনের কথা এর আগে জনসম্মুখে কেউ স্বীকার বা প্রকাশ করত না। 888sport promo codeবাদীদের কাছে এই যৌনবিপ্লব নিজের শরীরকে জানা, বোঝা এবং তার নিয়ন্ত্রণের অধিকার-প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। রক্ষণশীলদের কাছে এই যৌনবিপ্লব ব্যভিচার ও নৈতিক অধঃপতনের শামিল। প্রাচীনপন্থিরা মনে করতেন, পিল যেহেতু ১০০% জন্মরোধে সক্ষম, এই বস্তুটি অবিবাহিত মেয়েদের যৌন-সচল করে রাখতে এবং বিবাহিত মহিলাদের বিবাহ-বহির্ভূত যৌনসম্পর্ক-স্থাপনে প্ররোচিত করবে। তারা ভয় করতেন এই যৌন-স্বাধীনতা সমাজ ও পরিবারের ভিত ভেঙে দেবে – অবক্ষয় নেমে আসবে চারদিকে। পিনকাস ও রক বহুভাবে বোঝাবার চেষ্টা করেছেন যে, প্রযুক্তি মানুষের ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করে না। সমাজে যে-আচরণ বা প্রবৃত্তি আগেও প্রচলিত ছিল, সেটাই আজো বিদ্যমান। পিলের আবিষ্কার কেবল যা এতদিন গোপনীয় ছিল তা চোখের সামনে বের করে আনতে সাহায্য করেছে। তবে এটাও সত্য, পঞ্চাশের দশকের বিয়ে এবং মাতৃত্বের জয়গানে মুখর সমাজ ষাটের দশকে এসে অবিবাহিত জীবনযাপন ও যৌন-অনুসন্ধান-আনন্দযজ্ঞে ভীষণভাবে মেতে উঠেছিল। অনেকের কাছেই তখন বিয়ে, সন্তান, ঘর-সংসারের চাইতে নিজেদের স্বাধীন যৌনজীবন, ডিগ্রি পেশা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। হিউ হাফনারের চষধুনড়ু পত্রিকা বের হয় তখন। হেলেন গার্লি ব্রাউনের Sex and Single Girl বইতে থাকে কর্মজীবী 888sport promo codeদের যৌন-স্বাধীনতার গুণগান ও কলাকৌশলের বর্ণনা। ব্রাউন লিখেছেন, ‘বিয়ে হলো একটা বীমার মতো যার প্রয়োজন কেবল জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়টাতে। জীবনের ভালো সময়গুলোতে স্বামীর দরকার নেই।’ তাঁর মতে, স্বামীর দরকার নেই, কিন্তু প্রেমিকের দরকার আছে এবং সেই প্রেমিক ধনী ও একাধিক হলে আরো ভালো হয়। ঐতিহাসিক ও সমাজ888sport apkীরা অবশ্য আজো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি যে, ষাটের দশকের যৌনবিপ্লব কি পিলের আবিষ্কারেরই উত্তরাধিকার না-কি তা ঘটনাচক্রেই এক সঙ্গে ঘটেছে। কেউ কেউ এ-কথাও মনে করেন যে, শুধু পিল নয়, পঞ্চাশের দশকের ইধনু ইড়ড়স এবং ষাটের দশকের বর্ণবাদ ও যুদ্ধবিরোধী-আন্দোলনের সম্মিলিত ফসল এই যৌনবিপ্লব। পৃথিবীতে আজ ছয় থেকে নয় কোটি মেয়ে পিল-ব্যবহার করে জন্মনিয়ন্ত্রণ করে। ১৯৪৫ সালের পরে জন্মগ্রহণকারী আমেরিকান মেয়েদের আশি শতাংশ জীবনের কোনো-না-কোনো সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে পিল ব্যবহার করেছে। ষাটের দশকে এক জনপ্রিয় লেখক পিলের গুরুত্বকে সভ্যতার ইতিহাসে আগুন ও যন্ত্রপাতি-আবিষ্কারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। নব্বইয়ের দশকে বিলাতের সাপ্তাহিক পত্রিকা The Economist পিলকে আধুনিক জগতের সপ্ত-আশ্চর্যের এক আশ্চর্য বলে অভিহিত করেছেন। ষাটের দশকে চাঁদে মানুষের প্রথম অবতরণের গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছিল, ‘ব্যক্তি-মানুষের জন্যে এটি একটি ছোট্ট পদক্ষেপ, কিন্তু মনুষ্যজাতির জন্যে এটি একটি বিরাট উল্লম্ফন। 888sport free betতত্ত্বের দিক দিয়ে বিচার  করলে জন্মনিয়ন্ত্রণ-বড়ি বা পিলের আবিষ্কার বাজারে শত শত কার্যকরী বড়ির সাথে আরেকটি বড়ির সংযোজন মাত্র। কিন্তু পৃথিবীর   অর্ধেক মানুষের জীবনের মান উন্নয়ন করতে, তাদের চিন্তা ও  চেতনাকে শানিত করতে এই ছোট্ট পিলটির অবদান অপরিসীম। পিল-আবিষ্কারের মাধ্যমে কী আশ্চর্যভাবে বদলে গিয়েছে মেয়েদের অবস্থা ও অবস্থান, 888sport promo codeপুরুষ-নির্বিশেষে মানুষের জীবনে ঘটেছে এক  বিশাল গুণগত পরিবর্তন, সভ্যতা নিঃসন্দেহে এগিয়ে গিয়েছে অনেকখানি।