সালেহা চৌধুরী
বাইরে যাবেন বলে শিরিন বেগম দরজার তালা ভালোমতো চেক করেন। বাড়িতে নূর মোহাম্মদ থাকলে এত বেশি খেয়াল করতে হয় না। আজ তিনি ডে-কেয়ারে গেছেন। তার মতো যাদের শারীরিক সমস্যা, তাদের হাসপাতাল থেকে বাস এসে ডে-কেয়ারে নিয়ে যায়। শিরিন বেগমের স্বামী নূর মোহাম্মদ বেশ কয়েক বছর আগে রাস্তায় একটা বড় গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন। প্রায় ছয়মাস বিছানায় শয্যাশায়ী ছিলেন। এখন চলাফেরা করেন তবে লাঠি-ভর করে। স্কুল তাকে আরলি রিটায়ারমেন্ট দিয়ে দিয়েছে। তিনি হাঁটা ছাড়াও শ্বাসকষ্টে ভোগেন। মাঝে মাঝে বিনা কারণে জ্বর আসে। বয়স বেশি নয়। বর্তমানে তেষট্টি। যখন দুর্ঘটনা হয়েছিল, বয়স ছিল সাতান্ন। ইচ্ছা ছিল তার পঁয়ষট্টি বছর পর্যন্ত স্কুলের পি ই টিচার হয়ে থাকবেন; সেটা হলো না। পি ইর সঙ্গে আরো দু-একটা বিষয় তাঁকে পড়াতে হতো। একেই কি বলে প্রহসন! তিনি ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার। এখন তার প্রাক্তন দু-একজন সহকর্মী বাড়িতে এসে নানা স্বাস্থ্যসম্মত উপদেশ দিয়ে যায়। বলে – যতটুকু পারো ব্যায়াম করবে। শুয়ে শুয়ে কেবল ভাগ্যকে অভিশম্পাত দেবে না। তিনি ব্যায়াম করেন সাধ্যমতো। লাঠিতে ভর করে বাড়ির চারপাশে হাঁটেন। কাগজ আনতে যান। বাগানে গিয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করার চেষ্টা করেন। আর শ্বাসকষ্টের জন্য ইনহেলার আছে।
পথে নেমেছেন কি নামেননি হুড়মুড় করে বৃষ্টি এলো। শিরিনের হাতেই ছিল ছাতা। মেলে ধরলেন। বেড়াল মার্কা ছাতা পেখম মেলে তাকে বৃষ্টি থেকে বাঁচায়।
কী পচা ওয়েদার। তিন বাড়ি পরের মেরি বলে।
একেবারে পচা। লন্ডনে ওয়েদার ছাড়া আর কোনো বিষয় নেই।
কোথায় যাচছ – এমন প্রশ্ন সোজাসুজি না করে মেরি বলে, গোয়িং ফার।
ইস্টএন্ড – শিরিন বলে।
শিরিন বলে আবার – কিছু 888sport free bet login আর পত্র-পত্রিকা কিনব। মেরি বলে – বেশ বৃষ্টি। এর মধ্যে যাওয়া।
শিরিন বলে, তা ঠিক। তবে বৃষ্টি গায়ে লাগবে না। প্রথমে বাস, তারপর ডকল্যান্ড ট্রেন তারপর টিউব। অলগেস্ট ইস্ট থেকে বেশিদূর নয় দোকান।
সেফ জার্নি। এই বলে মেরি বাসস্টপ পার হয়ে চলে যায়। আর শিরিন বাসে উঠে বসে। টু নাইন ওয়ান বাস একেবারে ঈশ্বরের আশীর্বাদের মতো। টুক করে উঠে পড়লে ট্রেন স্টেশনের সামনে, বাজারে, হাসপাতালের সামনে হেলতে-দুলতে নিয়ে যায় এই বাস। হাসপাতালে আজকাল একাই যায় নূর মোহাম্মদ। এই বাস না হলে কী হতো। সেজন্য শিরিন দুই লাইন ইংরাজি 888sport app download apk বানিয়েছে – দি বেস্ট থিং এভার হ্যাপেন্ড টু আস/ ইজ টু নাইন ওয়ান বাস। দু-একজনকে শুনিয়েছে। তারা বলে, ঠিক তাই। এখন আর গাড়ি ড্রাইভ করে না নূর মোহাম্মদ। বাসই সম্বল। আর শিরিন কখনো গাড়ি চালানো শেখেনি। বলে, ওটা আমার কাজ নয়। আমি নার্ভাস মানুষ। এই বলে তিনটি লেসনের পর গাড়ি চালানোয় ইস্তফা দিয়েছে।
নির্জন আর বরিষণ এখন আর বাড়িতে থাকে না। নির্জন নিজের ফ্ল্যাটে থাকে। নির্জন মেয়ে। বরিষণ ছেলে। ও লন্ডনের বাইরে। এখনো বিয়ে করেনি। তবে কোনো এক মেয়ের সঙ্গে সে থাকে। সবকিছু সে বাবা-মাকে বলে না। নির্জন মোহাম্মদ আর বরিষণ মোহাম্মদ। দুজনে ভালোই আছে। বিয়ের কথা বললে নির্জন বলে, ওইসব দেশের ছেলে বাদ দাও। এখানে থাকার পারমিশন পেলেই আমাকে ফেলে দিয়ে চলে যাবে। আমি সব জানি। ওর কথা শুনে মনে হয় ইতোমধ্যে কয়েকবার বিয়ে হয়েছে ওর আর কয়েকজন ওকে ফেলে চলে গেছে।
বিদেশের ছেলেই বা কোথায় পাওয়া যায়? শিরিন বলেন।
আমাকে নিয়ে ভাববে না, নির্জন বলে।
এখন আর ওদের নিয়ে তেমন ভাবেন না। ভেবে আর কী হবে? এটা 888sport app নয় লন্ডন। যে যার লাইফ নিয়ে ভাববে এমনই তো নিয়ম।
বাসটা খুব তাড়াতাড়ি স্টেশনের সামনে আসে। তিনি নেমে পড়েন। তারপর ডকল্যান্ডের ট্রেনে উঠে বসেন।
কিং জর্জ দ্য ফার্স্ট, লন্ডন সিটি এয়ারপোর্ট পার হয়ে ট্রেন চলতে থাকে। জানালা দিয়ে ডকল্যান্ডের সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে তিনি কী ভাবছেন। এই ডকে পৃথিবীর নানা জায়গা থেকে জাহাজ এসে থামতো। এখন আর তেমন করে এসব হয় না। তবু ডকল্যান্ডে এলেই কলোনি, ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানি এসব মনে পড়ে। এখন ডকল্যান্ড বড়লোকদের জায়গা। কতসব দালান উঠছে, কতসব মডার্ন অফিস বিল্ডিং। নির্জন বলছিল সে ডকল্যান্ডে ফ্ল্যাট কিনবে। এত টাকা পাবে কোথায় প্রশ্ন করলে উত্তর দিয়েছিল – লটারি সে একদিন অবশ্যই উইন করবে। তখন আর টাকার চিন্তা থাকবে না। আপাতত এক কামরার ছোট একটা ফ্ল্যাট বাড়ি কোনোমতে কিনেছে, ব্যাংকে কাজ করবার জন্য ‘ইন্টারেস্ট ফ্রি’ ধারে। সুদহীন ধার। পাঁচ বছর কাজ করবার পরই সুযোগটা পেয়েছে। ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করেন। আশা টেক্সট করেছে। – শিরিন আমার একটা গল্প এবারের ঈদ888sport free betয় উঠেছে।
তাহলে ‘অনন্যা’ অবশ্যই কিনতে হবে, মনে মনে ভাবেন। দেখা যাক কয়টা কিনতে পারেন। এখন তিনি মাসে ছয়শো পাউন্ড পেনশন পান। এক বছর হলো পেনশন পেতে শুরু করেছেন। স্বামীকে দেখাশোনা করতে হবে বলে সিভিল সার্ভিসের কেরানিগিরি ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। না হলে পেনশন বেশি হতো। ষাট বছরের পর পেনশন পাওয়া যায়। বেশ ভালো ঘটনা। মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা যে কতটা দরকার তিনি পেনশন পেয়ে সেটা বোঝেন। তার আগে চাকরি করতে করতে সেটা বুঝেছিলেন।
অলগেস্টইস্টে গাড়ি থামলে তিনি বুঝতে পারেন, বৃষ্টি নেই। ছাতাটা ক্যারিয়ার ব্যাগে চালান করেন। তারপর ব্রিকলেনের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনটা হঠাৎ কেমন খুশি হয়ে ওঠে। এই শাড়ির দোকান, এই তো পানের দোকান, এই তো মাছের দোকান। 888sport apps লেন নামটা বেশ মানায়। তবে এখানে বাংলাটাউন আছে। আর ব্রিকলেন নামটা এত পরিচিত ও পুরনো যে, মনে হয় না এই নাম বদলাতে চাইবে কেউ। মনিকা আলী এই নামে বই লিখে এখন বিখ্যাত। এখানকার আম্বালা, মিষ্টিদেশ, পানের দোকান, মাছের দেশ, এসব দেখতে দেখতে তিনি সঙ্গীতা পার হয়ে প্রায় তাজ স্টোরের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। আবার ফিরে আসেন। আগে ঈদ888sport free bet তারপর পয়সা থাকলে ইলিশ মাছ। ফেরার পথে মিরাতে ঢুকে বাবা জর্দা দিয়ে একটা বানানো একটা পান কিনে চিবাতে থাকেন। ইস কী যে ভালো লাগছে। মনে হয় প্রতি সপ্তাহে তিনি এখানে আসবেন। এমন করে পান খাবেন।
সঙ্গীতার মালিকের সঙ্গে দুই বছর আগে দোকানে তার আলাপ হয়েছিল। বেশ ভালো লেগেছে। বয়স খুব বেশি হলে চল্লিশ কিন্তু ব্যবসায় সাফল্য এসেছে। বই, ম্যাগাজিন, ভিডিও দোকানটায় ঢুকলেই মন ভালো হয়ে যায় শিরিনের। কোনটা ছেড়ে যে কোনটা কেনেন মাথা প্রায় খারাপ হয়ে যায় তার। – আরে মিলির বইটাও এখানে। মিলি তার মামাতো বোন। অনেকদিন পর একটা বই লিখেছে। ছায়াগাছে ঘুণপোকা। সমকামী মানুষদের নিয়ে। কঠিন বিষয়। এদেশে তো এমন ঘটনা ডালভাত। আইন করে এসব এখন নরমাল ব্যাপার করা হয়েছে। যা শুনে বলেছিল শিরিন – এই কারণে পৃথিবী একদিন ধ্বংস হবে। প্রকৃতির বিপরীতে চলেছে সবকিছু। তবে এখনো পৃথিবী ঠিক আছে। একদিন যে হবেই এই ব্যাপারে শিরিন নিশ্চিন্ত। ও ‘ছায়াগাছে ঘুনপোকা’ কেনে না। বাড়িতে বইটা আছে। তারপর তাকায় দেয়ালের দিকে। যেখানে সবচেয়ে বেশি জায়গা করে নিয়ে থাকেন হুমায়ূন আহমেদ। – ভাগ্য বটে। এক পিকাসো আর এক হুমায়ূন আহমেদ। পিকাসো একটা ছবির টাকা দিয়ে ভিলা কিনতে পারতেন আর উনি তার বইয়ের টাকা দিয়ে একটা ফ্ল্যাট কিনতে পারেন। তবে ভাগ্য তাঁকে পৃথিবীতে আর কয়টা দিন বেশি থাকতে দিলো না। দিলে কী এমন ক্ষতি হতো আল্লাহর? আর বেচারা মিলিদের মতো 888sport live footballিক! বাড়ি বাড়ি ফোন করে কাতর গলায় বলে – প্লিজ বইমেলায় গিয়ে আপনারা আমার বই কিনবেন। মিলিও এমন করে কামরুনও এমন করে। কী যে কষ্ট। কামরুন নাহার কুমকুম। বেশিরভাগই 888sport app download apkর বই লেখে। বড়লোক স্বামীর টাকায়। তারপর নিজেই কিনে নেয় দুইশো বই। একে-ওকে বিলায়। প্রিয়জনকে বলে বই কিনতে। স্বামীকে বলে – ক্যান 888sport app download apkর বই ছাপানোর টাকা দিবা না। আমি তো তোমার ভাইয়ের বউদের মতো কাঁড়ি কাঁড়ি গয়না বানাই না। ওর শেষ বই ‘দুর্বিনীত প্রেম’। একেবারে দুর্বার গতিতে প্রবাহিত খরস্রোতা 888sport app download apkগ্রন্থ। তোমার চুম্বনের জন্য, জ্বলছি আগুনে ফাগুনে, রোদ্রের স্রোতে তোমার পাশে, চুলের প্রপাত থেকে, নামের কঠিন সব 888sport app download apk। স্বামী কেবল কাতর হয়ে বলেছিল – তোমার চুম্বনের জন্য? এই তুমিটা কে?
আমার জীবনদেবতা। কামরুন নাহার কুমকুম স্বামীকে হাইকোর্ট দেখায়। টাঙ্গাইল শাড়িঘর সামলাতে ব্যস্ত ওর ভালো মানুষ স্বামী। জীবনদেবতা বোঝেন না। বোঝেন না বলেই তিনি কুমকুমের 888sport app download apkর বইগুলো ছাপানোর টাকা দেন।
এখানে ওর 888sport app download apkর বই চোখে পড়ে। শিরিন বইটা উল্টেপাল্টে দেখছে। দোকানের মালিক নূরে আলম এসে পাশে দাঁড়ায়। – আরে শিরিনআপা, খবর কী?
খবর আর কী? যে দাম লাগিয়েছেন ইদ888sport free betর দুইটার বেশি কিনতে পারব না।
নূরে আলম বিনীতভাবে হাসে – আনার খরচ ম্যালা। তেমন লাভ হয় না শিরিনআপা।
শিরিন মনে মনে বলে, লাভ হয় না। এটা একটা কথা হলো? অবশ্যই লাভ হয়। বলে – লাভ হয় না তাহলে ডালভাতের ব্যবসা করেন। বইয়ের ব্যবসা ছাড়েন।
দেখা যাক। এই বলে নূরে আলম আর একজন ক্রেতার কাছে গিয়ে কথা বলতে থাকে। একই বিষয়। আজকাল বই তেমন কেউ কেনে না। তবে এমন কথা বললেও ও কখনো বইয়ের ব্যবসা ছাড়বে না, এ-কথা শিরিন খুব ভালো করে জানে।
‘অনন্যা’ আসেনি। ফলে আশার গল্পটা পড়া হবে না। সে দুটো ঈদ888sport free bet কেনে। সাপ্তাহিক ২০০০ আর দৈনিক সমকাল। ২০০০-এ ওর সালেহাখালার একটা গল্প। আর সমকালে সেলিনা হোসেন। দুজনই তার প্রিয় 888sport live footballিক।
দাম দিতে গেলে এক পাউন্ড কম নেয় নূরে আলম। বলে, শিরিন আপা আপনি লেখালেখি করেন?
না না নূরে আলম ওসব লেখাটেখা আমার আসে না। তবে পড়তে ভালো লাগে। আপনি ‘অনন্যা’ আনেননি কেন? যে লেখালেখি ওর নিজস্ব সে নিয়ে ও নূরে আলমের সঙ্গে কথা বলে না। অনেকে ঠিক বোঝে না লেখালেখি কেন প্রয়োজন হয় এক একজনার।
ওইটা মিস হয়ে গেছে। শিরিন দোকান থেকে বের হয়নি হঠাৎ দেখা হয়ে যায় কবিরুলের সঙ্গে। লন্ডন য়ুনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে এসেছে। খুবই চেনা একজন। – কবিরুল তুমি? চাচি আপনি? এরপর দেখা যায় ওরা দুজনে গিয়ে বসেছে একটা রেস্তোরাঁর বাইরে পেতে রাখা চেয়ারে। টেবিলে ম্যাগাজিন মেলে, বইগুলো বের করে সাজিয়ে রাখে। এখানে কী করছো কবিরুল।
এখানে চাচি? জনমতে একটা পার্টটাইম কাজ করি। 888sport live footballের পাতা দেখি। চাচা কেমন আছেন?
ভালো অনেকটা।
নির্জন আপু আর বরিষণ ভাইয়া?
ওরা ভালো। কবিরুল বইয়ের পাতা ওল্টায়। একটা 888sport app download apkর বই? আপনি জয় গোস্বামী পড়েন জানতাম না। শিরিন কেবল হাসে। চাচি জয় গোস্বামী পড়ে এমন ঘটনা ওর কাছে নতুন। আর সে-ঘটনা জানা গেল ব্রিকলেনে। আসলে এখানেই অনেকের অনেককিছু জানা যায়।
ওরা তখন 888sport app download apkর কথা বলে। 888sport apps আর ওপার বাংলার কবিদের কথা।
তখনই চোখে পড়ে আবু মাকসুদ, আতাউর রহমান মিলাদ আর কাজল রশিদ। ওরা বলে – আরে আরে শিরিন আপা, কী ব্যাপার বালা নি? লেখা কোনদিন দিতা? ‘শব্দপাঠে’ একটা লেখা দিবা কইছিলা।
ওরা তিনটে চেয়ার টেনে নিয়ে বসে। চা আর শিঙাড়া এসে যায়। শব্দপাঠের 888sport app download apk latest version 888sport free betয় ও একটা 888sport app download apk latest version-888sport app download apk দেবে বলেছিল। লেখাটা শেষ হয়নি। ও লোরকার 888sport app download apk 888sport app download apk latest version করেছে। দেবে বলে।
আপনারা আমাকে না লিখিয়ে ছাড়বেন না। দেব। আর কয়টা দিন সময় দেন। তারপর। ও মনে মনে পুশকিনের 888sport app download apkর কথা ভাবছে।
খুব তাড়াতাড়ি দেবেন। মিলাদ বলে সুন্দর করে।
জনমতের ইসহাক কাজল এসে আসর জমায়। তিনি বলেন, এবার স্বাধীনতা দিবস নিয়ে একটা বিশেষ 888sport free bet করছি। আপনারা লেখো দেবেন। শিরিন হাসে। এরপর শুরু হয় লেখার কথা।
চা আর 888sport live football। কথা আর গল্প। শিরিন এবং আর সকলে ভুলেই যায় ওদের বাড়ি ফিরতে হবে। জনমত মাঝে মাঝে নানা সব 888sport free bet করে। দুই-একবার শিরিন লেখা দিয়েছে। এখানে এলে লেখার কথা মনে হয়। মনে হয় দেশের কথা। অনেকেই আসে বাজার করতে, বই কিনতে, শাড়ি কিনতে। কেউ যায় পত্রপত্রিকার অফিসে। কাছেই ব্রাডি সেন্টার। সেখানে দুইদিন পর বিরাট একটি অনুষ্ঠান। উদীচীর লোকজন নানা সব 888sport live footballিক ধরে এনে অনুষ্ঠান করে। আর তখন ব্রিকলেন দেশের মানুষের সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে। এজন্য অনেকে বলে, লন্ডন হলো তৃতীয় বাংলা।
এসেছিল সকালের পরপরই। এখন প্রায় দুপুর পার। নির্ভেজাল আড্ডায় কেটে যায় সময়।
চারপাশে ব্রিকলেনের নিজস্ব গন্ধ। বাংলা গানের সিডি বাজছে। আবার কোথায় বাজছে হাসোন রাজা। শাড়ি, ব্লাউজের দোকানের পাশে জায়নামাজ আর তসবির দোকান। তার পাশে ইলিশ মাঝের দোকান। কত সব সুন্দর রেস্টুরেন্ট। যেখানে থাকে টাকি মাছের ভর্তা থেকে আরম্ভ করে নানা সব দেশি খাবার। ও অনেকবার নির্জন আর বরিষণকে নিয়ে এখানে খেয়েছে। যখন নূর মোহাম্মদ এখানে আসতে পারতেন তাঁকে নিয়েও। দু-একবার একা।
ওয়েলসের লোকদের নিয়ে কথা আছে ওরা যেখানে যায় পর্বত কাঁধে করে যায়। তার মনে হয়, পর্বত কাঁধে না নিয়ে ঘুরলেও ওরা ঘোরে হৃদয়ে মাটির গন্ধ মেখে। আর তাইতো এখানে আসা। যেন কিছু মাটি এখানে কোথায় যেন বাতাসে বাতাসে নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়।
কাজল, মিলাদ, মাকসুদ চলে গেছে। ইসহাক কাজল বলে – আসি। বাদে দেখা হবে। শিরিন ভাবে খালি বাড়িতে নূর মোহাম্মদ। এবার ওকে ফিরতে হবে। ওর ভয় হয় যদি কখনো ওর আর চলাফেরার ক্ষমতা না থাকে ও আর এখানে আসতে পারবে না। কেবল জানালা দিয়ে দেখবে জগৎ। ব্রিটেনের বা লন্ডনের নিজস্ব জগৎ। যেখানে তুষার আর হিম না হলে পচা প্যাজপেজে বৃষ্টি। যে-বৃষ্টিতে মৌসুমি ঘ্রাণ নেই। তবে যখনই আসে তখনই যে এতসব মানুষের সঙ্গে দেখা হয় তা নয়, হঠাৎ এক-একদিন। বেশ লাগে তখন। না হলে একা একা সে পার করে সময়। বই সিডি দেখে, চা খেয়ে এবং সোনালি ব্যাংকে গিয়ে গরিব কোনো আত্মীয়কে টাকা পাঠিয়ে। সময় চলে যায় বেশ। তাই তো সময় হাতে পেলেই এখানে আসে ও।
হাতের ব্যাগ ভারী। কিনবো না কিনবো না করতে করতে বেশকিছু কেনা হয়ে যায় এখানে এলে। এর সঙ্গে বই-ম্যাগাজিন। হয়তো খুব তাড়াতাড়ি ও আর এসব টানতে পারবে না। তখন? সেই তখন কী হবে? ভাবতে ভাবতে আর সব ভাবনারা এসে ভিড় করে। কতসব ভাবনা।
ফোন বাজছে ব্যাগে। ও ফোন কানে লাগিয়ে কথা শোনে নূর মোহাম্মদের। বলেন নূর মোহাম্মদ, কোথায় তুমি শিরিন।
কোথায়? ব্রিকলেনে। আসছি।
ওখানে কী পাও তুমি?
ব্রিকলেনে? ওমা। জানো না, ব্রিকলেন ব্রিটেনের বাঙালির প্রাণভোমরা।
হোয়াট?
প্রাণভোমরা গো প্রাণভোমরা।
সেটা আবার কী?
নেভারমাইন্ড। এই তো আধঘণ্টার মধ্যে আমি আসছি।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.