888sport free bet login

খাপড়া ওয়ার্ডে হত্যা ১৯৫০

সুব্রত বড়ুয়া

 

আজ থেকে পঁয়ষট্টি বছর আগে ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলের খাপড়া ওয়ার্ডে এক বর্বর হত্যাকা- ঘটেছিল। জেলপুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণে নিহত হন সাতজন রাজবন্দি। আহত হন বত্রিশজন। সেদিন এ-হত্যাকা–র কী প্রতিক্রিয়া ঘটেছিল বাইরে? মুক্ত দুনিয়ায়?

খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকা- ১৯৫০ বইটির লেখক মতিউর রহমান লিখেছেন, ‘রাজশাহী জেলের অভ্যমত্মরে গুলি চালানোর পর জেলগেটে কোনো মানুষের ভিড় হয়নি। এদেশের কোনো সংবাদপত্রে এ-সম্পর্কে কোনো মমত্মব্য বা 888sport world cup rate প্রকাশিত হয়নি। দেশের কোথাও কোনো সভা-সমাবেশ থেকে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের জন্য শোক বা সহানুভূতি প্রকাশ করা হয়নি। তবে জেলখানায় রাজবন্দিদের ওপর গুলিবর্ষণের এই খবর নানা সূত্রে আসেত্ম আসেত্ম সারা দেশে বিভিন্ন মহলে পৌঁছে গিয়েছিল। তবু বড় রকমের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। জানা যায়, ১৯৫০ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে এক সরকারি প্রেসনোটে বলা হয়েছিল, ‘রাজশাহী জেলে কয়েকজন কয়েদি জেলপুলিশের রাইফেল কেড়ে নিতে গেলে অপারগ হয়ে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে কয়েকজন কয়েদি মারা যান এবং কয়েকজন আহত হন। এই ঘটনার খবর অবশ্য কলকাতার স্টেটসম্যান পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। সংবাদটি পাঠিয়েছিলেন রাজশাহীর রয়টার্সের প্রতিনিধি ধীরেন মৈত্র (উকিল)। এজন্য ধীরেন মৈত্রকে যথেষ্ট হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল।’ (পৃ ৬৭)

খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকা–র ঠিক পঁয়ষট্টি বছর পরে ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত হয়েছে মতিউর রহমানের বইটি। মতিউর রহমান এদেশের একজন নন্দিত সাংবাদিক। সাংবাদিকতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ১৯৭০ সাল থেকে, যখন তিনি ছিলেন সাপ্তাহিক একতার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক  (১৯৭০-৭৩)। পরে সম্পাদক ছিলেন ১৯৭৩ থেকে ১৯৯১ পর্যমত্ম। এর পরে সম্পাদক ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার (১৯৯২-৯৮)। বর্তমানে দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক (১৯৯৮ সাল থেকে)। বইটির ভূমিকায় তিনি উলেস্ন­খ করেছেন, ১৯৬২ সালের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিসত্মানের কমিউনিস্ট পার্টির গোপন পত্রিকা শিখার একটি বিশেষ 888sport free bet তাঁকে পড়তে দিয়েছিলেন গোপন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা অধ্যাপক আবদুল হালিম। ‘888sport free betটি বের করা হয়েছিল মূলত ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলের খাপড়া ওয়ার্ডের বন্দিদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে শহীদ সাত কমিউনিস্ট রাজবন্দী এবং আহত রাজবন্দীদের প্রতি 888sport apk download apk latest version-স্মারক হিসেবে।’ ১৯৬১ সালের ১৮ এপ্রিল প্রকাশিত শিখার এই 888sport free betটি তিনি বিশেষ মর্যাদায় তাঁর সংগ্রহে রেখেছেন দীর্ঘকাল ধরে। শুধু তাই নয়, 888sport free betটি তিনি বিশেষ যত্নের সঙ্গে পড়েছেন। খাপড়া ওয়ার্ডের সাতজন শহীদ এবং আহত রাজবন্দিদের ‘মহান আত্মত্যাগের ঘটনাবলি’ তাঁকে ‘বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত’ও করে। খাপড়া ওয়ার্ডের শহিদদের নিয়ে তাঁর প্রথম লেখাটি প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালের ২৪ এপ্রিলের দৈনিক বাংলায়।

মতিউর রহমান শুধু একজন নিরাসক্ত গবেষকের দৃষ্টিতেই এই বই লিখতে প্রবৃত্ত হননি। তাঁর বিবেচনায় – ‘এই সময়ের ইতিহাস, রাজনৈতিক ঘটনাবলির বিসত্মারিত পর্যালোচনা ও শিক্ষা আমাদের জন্য জরম্নরি। তা শুধু অতীত জানার জন্য নয়, ভবিষ্যতের পথ সন্ধানের প্রয়োজনেও।’

(পৃ ১১)

এই ভাবনা থেকেই তিনি আশির দশকের মধ্যভাগ থেকে খাপড়া ওয়ার্ডের ঘটনায় আহত হয়েছিলেন যাঁরা, সেই কমরেডদের খোঁজ করতে শুরম্ন করেন এবং তখনো পর্যমত্ম যাঁরা 888sport appsে জীবিত ছিলেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল খাপড়া ওয়ার্ডে জেলপুলিশের নৃশংস আক্রমণ ও গুলির ঘটনায় যে-সাতজন রাজবন্দি নিহত হয়েছিলেন তাঁরা হলেন – কম্পরাম সিংহ, হানিফ শেখ, আনোয়ার হোসেন, সুধীন ধর, দিলওয়ার হোসেন, সুখেন্দু ভট্টাচার্য ও বিজন সেন। তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই ছিলেন তরম্নণ বয়সী এবং সাম্যবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত। গুরম্নতরভাবে আহতদের মধ্যে ছিলেন নূরম্নন্নবী চৌধুরী (তাঁর বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়েছিল), অনমত্ম দেব (তিনি সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যান), আবদুল হক (যশোর), আবদুশ শহীদ (বরিশাল), শ্যামাপদ সেন (বগুড়া), আমিনুল ইসলাম বাদশা (পাবনা), ভূজেন পালিত (দিনাজপুর), শ্যামাপদ ঘোষ (সিলেট), বাবর আলী (দিনাজপুর) প্রমুখ। মুর্শিদাবাদের সৈয়দ মনসুর হাবিবুলস্ন­vহর (পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার স্পিকার) শরীরে আমৃত্যু দশটি ছররা গুলি ছিল। কুষ্টিয়ার সত্যেন সরকার সারা জীবন গুলিবিদ্ধ ডান হাত বয়ে  বেড়িয়েছেন।

খাপড়া ওয়ার্ডের সেদিনকার ঘটনার বিবরণ জানার জন্য লেখক 888sport appsের বাইরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং আসাম ইত্যাদি রাজ্যে বসবাসকারী খাপড়া ওয়ার্ডের তৎকালীন রাজবন্দিদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। তিনি তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

এ-বইটিতে আছে ছয়টি অধ্যায়। এ-অধ্যায়গুলো হচ্ছে যথাক্রমে – খাপড়া ওয়ার্ডের সাত শহীদ, জেলের অবস্থা ও রাজবন্দীদের সংগ্রাম, তৎকালীন কমিউনিস্ট পার্টির নীতি, রাজশাহী জেল এবং ২৪ এপ্রিল-পূর্ব ঘটনাবলি, খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকা- এবং খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকা–র প্রভাব। এই ছয়টি অধ্যায়ের বাইরে পরিশিষ্ট অংশে আছে এক. খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকা- – নিবন্ধ, 888sport sign up bonusচারণা ও 888sport app download apk, দুই. আহত রাজবন্দীদের লেখা চিঠি, তিন. পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত 888sport world cup rate, সম্পাদকীয় ও উপ-সম্পাদকীয়, চার. শহীদদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি এবং পাঁচ. আহত রাজবন্দীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।

অধ্যায়গুলোর নামকরণ থেকেই স্পষ্ট, কোন অধ্যায়ের বিষয় কী। খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকা- ঘটনার পূর্বাপর রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগোত্তর পূর্ব বাংলার পরিস্থিতির বাসত্মবতার পরিপ্রেক্ষিতে কমিউনিস্ট পার্টির আন্দোলন-সংগ্রাম ইত্যাদি বিষয় লেখকের আলোচনায় উঠে এসেছে প্রাঞ্জলভাবে। তাঁর ভাষা প্রত্যক্ষ ও সহজ। তাত্ত্বিক আলোচনার নামে ধূম্রজাল সৃষ্টির

কোনো প্রয়াসও তাতে নেই। তাঁর প্রধান লক্ষ্য খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকা–সংশিস্ন­ষ্ট তথ্য উপস্থাপন। এই তথ্য উপস্থাপন করতে গিয়ে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিসত্মানের বাম রাজনীতি ও বামপন্থী রাজনীতির নেতা ও কর্মীদের ত্যাগ-তিতিক্ষা, সাহস, মনোবল ও আদর্শবাদী মানসিকতার দিকগুলির কথাও বলেছেন। তাই তথ্য ও তত্ত্বসর্বস্বতার গ– অতিক্রম করে বইটি পাঠকের মনে আরো গভীরভাবে রেখাপাত করবে বলেই আমার মনে হয়।

এ-বইটির একটি মূল্যবান অংশ এর পরিশিষ্ট, বিশেষত নিবন্ধ ও 888sport sign up bonusচারণা। বিশেষত 888sport sign up bonusচারণার কোনো কোনো অংশ পাঠকচিত্তকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করার মতো। একটি দৃষ্টামত্ম হিসেবে বলতে পারি এম এ হালিমের ‘যে ফুল না ফুটিতে’ লেখাটির কথা। 888sport app লেখা পড়তে গিয়েও অনুভব করতে পারি তাঁদের হৃদয়ের গভীর প্রেরণা ও দুঃখবোধকে। পরিশিষ্ট অংশের আরেকটি গুরম্নত্বপূর্ণ সংযোজন ‘শহীদদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি’ এবং ‘আহত রাজবন্দীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি’। খাপড়া ওয়ার্ডে সংঘটিত নির্মম হত্যাকা- এদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক নির্মম অধ্যায়। সে-অধ্যায়ের বিসত্মারিত বিবরণও বইটিতে পাওয়া যাবে, মিলবে অনেক অজানা তথ্য। লেখকের অনুসন্ধান ও শ্রম বহুলাংশে সার্থক। নিঃসন্দেহে বলতে পারি, তিনি একটি প্রয়োজনীয় কাজ করেছেন এবং সে-কাজটি করেছেন মূলত অমত্মরের তাগিদ থেকে, নিছক গবেষণার তাড়না থেকে নয়। ৎ

 

 

 

 

এক ছবি-অাঁকিয়ের 888sport sign up bonusচিত্র

সৌভিক রেজা

 

রেখা-রঙের তীরে, রূপের গভীরে এক অরূপ ছবির রহস্যের কথা বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেই অরূপ রহস্যকে সৈয়দ জাহাঙ্গীরের চিত্রকর্মে কতভাবেই-না দেখতে পাওয়া গেছে। নিজেকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেখতে চেয়েছেন বলেই হয়তো তাঁর পক্ষে এটি করা সম্ভব হয়েছে। এর সঙ্গে চিত্রকলার যোগ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে জীবনেরও যোগ। মহত্তম এক সংযোগ এটি, যা কিনা সবার সাধ্যে কুলোয় না। আবের-সুর-ওয়াজ (অাঁবৎং-ংঁৎ-ঙরংব) থেকে ভাই থিওকে লেখা এক চিঠিতে ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ একই সঙ্গে 888sport live chat আর জীবনকে ভালোবাসার কথা বলেছিলেন। সেই ভালোবাসাটাই অন্যভাবে প্রকাশ করতে চেয়েছেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর তাঁর 888sport sign up bonusকথায়।

এই 888sport sign up bonusকথায় প্রথমেই যেটি নজরে পড়ে, তা হচ্ছে লেখক অত্যমত্ম যত্ন করে নিজের পূর্বপুরম্নষ থেকে শুরম্ন করে তাঁর পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্যদের পরিচয় লিপিবদ্ধ করেছেন। সৈয়দ জাহাঙ্গীরের পিতামহ মৌলানা সৈয়দ আলম শাহ অবিভক্ত ভারতের (বর্তমানে পাকিসত্মানের) উত্তর-পশ্চিম সীমামত্ম প্রদেশের বাফাহাজারা থেকে প্রথমে কলকাতা, পরে সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার অমত্মর্গত তেঁতুলিয়া গ্রামে আসেন। এখানেই জন্ম নেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর। তাঁরা ছিলেন তিন ভাই – বড় ভাই সিকান্দার আবু জাফর, যিনি কবি-সম্পাদক, গীতিকার-নাট্যকার হিসেবে সবার কাছে পরিচিত; মেজো ভাই সৈয়দ কোহিনূর জাফর – যাঁর সমত্মান-সমত্মতিকে নিজের সমত্মান-সমত্মতির মতো করেই মানুষ করেছেন নিঃসমত্মান

জাহাঙ্গীর-আনিস দম্পতি। আর সবার ছোট 888sport live chatী সৈয়দ জাহাঙ্গীর।

 

দুই

গ্রামের আর-দশটা ছোট ছেলেমেয়ের মতো তিনিও ছিলেন ডানপিটে স্বভাবের। খেলাধুলা, গাছে উঠে ফল পাড়া, মাছ ধরা – এসবেতে ওসত্মাদ। বাড়িতে গল্পের বই পড়ার চল ছিল। কলকাতা থেকে নিয়মিত বই, পত্র-পত্রিকা আসত। গ্রামের রক্ষণশীল পরিবার হলেও বাড়িতে গ্রামোফোন ছিল, কলকাতা থেকে গানের রেকর্ড আসত। বাড়ির সবাই মিলে শুনতেন কাননবালা, সায়গল, পঙ্কজ মলিস্ন­ক, কেসি দে, ধনঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, হেমমত্ম প্রমুখ সেকালের বিখ্যাত গায়ক-গায়িকার গান। শুধু গানই নয়, রেকর্ডে নাটকও শোনা হতো। বোঝা যায়, গ্রামের বাড়িতেই রম্নচিবোধের শিক্ষাটা বেশ ভালোভাবেই পেয়েছিলেন। অবশ্য সেইসঙ্গে স্কুলের পড়াশোনাটাও করতে হতো ঠিকমতো। এসবের পাশাপাশি তাঁর বাড়তি যে-জিনিসটি ছিল তা হচ্ছে ছবি-অাঁকার ঝোঁক। তাঁর চাচা কংগ্রেসি-রাজনীতিবিদ সৈয়দ জালালউদ্দীন হাশমী অফিসের কাজে লাল-নীল পেনসিল ব্যবহার করতেন, যা 888sport live chatী সৈয়দ জাহাঙ্গীরের মনে বিস্ময়ের সৃষ্টি করত। চাচার উৎসাহে তিনিও ডানাওয়ালা দুলদুল ঘোড়ার ছবি অাঁকার চেষ্টা করতেন। আবার কখনো কাঠকয়লা দিয়ে মাটির দেয়ালে ছবি অাঁকতেন। প্রতিবেশীদের তকতকে-ঝকঝকে বাড়িঘরও তাঁর কাঠকয়লার অাঁকিবুঁকি থেকে রেহাই পেত না। সেসব বাড়ি থেকে বাবার কাছে নালিশও আসত। পিটুনিও জুটত। কিন্তু তাতে তাঁর ‘মনে এতটুকুও আঘাত লাগেনি।’ ছবি-অাঁকা চলতে থাকল। স্কুলের অঙ্কের শিক্ষক হরেনবাবুর ভাই গগনবাবুর কাছে একটানে প্রোফাইল অাঁকার শিক্ষাটা পেয়েছিলেন, ড্রইংটাও তাঁর কাছ থেকেই শেখা। আবার প্রবোধ দত্ত নামে এক 888sport live chatী তাঁদের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এলে তাঁর কাছ থেকেও তিনি মূল্যবান কিছু শিক্ষা আর উপদেশ পেয়েছিলেন। প্রবোধ দত্তই তাঁকে বলেছিলেন : ‘আগে লেখাপড়া শিখতে হবে। তারপর ছবি-অাঁকা শেখা।’ তাঁর সেই উপদেশ সৈয়দ জাহাঙ্গীর বিফলে যেতে দেননি। স্কুলে লেখাপড়ার সূত্রে তাঁদের সময়কার সমাজের একটি চিত্রও খুঁজে পাই। 888sport live chatী জানিয়েছেন : ‘আমাদের ক্লাসে ফার্স্ট হতো একটা হিন্দু ছেলে। আমি হতাম সেকেন্ড। সে-সময় স্কুলের শতকরা ৯৫ ভাগ ছাত্রই ছিল হিন্দু পরিবার থেকে আসা। সত্যি বলতে কি, জনাদশেক মুসলমান ছাত্র ছিল গোটা স্কুলে। তার ভেতর আমাদের পরিবারেরই সদস্য বেশি।’ তাঁর ছবি-অাঁকার উৎসাহের নেপথ্যের কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন দুর্গাপূজা আর গ্রামীণ মেলার কথা। তার 888sport sign up bonusচারণ করছেন এভাবে : ‘পুজোর সময় প্রতিমা বানানোর কাজ দেখতাম মনোযোগ দিয়ে। একটি দুর্গা এবং 888sport app মূর্তির জন্য বাঁশ আর কাঠ দিয়ে একটা কাঠামো তৈরি হতো, মাটিও প্রস্ত্তত করা হতো, আর লাগত বিচালি বা খড়। সবশেষে রঙ অবলেপন। পুরো প্রক্রিয়াটিই শৈল্পিক, বিশেষ করে দেবী দুর্গার মুখাবয়ব – চোখ, কান, নাক, চুল অাঁকার পারদর্শিতা আমাকে মুগ্ধ করত। খুব কাছে থেকে এগুলো লক্ষ করতাম। এমনকি বিসর্জনের সময় ওদের সঙ্গে কখনো কখনো কপোতাক্ষ নদে একই নৌকায় যেতাম।’ মেলার বিবরণ দিয়েছেন, দিয়েছেন গজা, কদমা, বাতাসা, রসগোলস্ন­v প্রভৃতি মুখরোচক খাবারের বিবরণ। তবে, বিশেষ করে, জিলাপির নকশা বানানোটা যে তাঁর কাছে খুবই আকর্ষণীয় মনে হতো, সেটি উলেস্ন­খ করতে ভোলেননি। আরো বলতে ভোলেননি যে, মায়ের সঙ্গে তিনিও বিভিন্ন নকশার কাঁথা সেলাই করতেন। এই ঘটনাগুলোই তাঁকে ধীরে-ধীরে ছবি-অাঁকার দিকে নিয়ে গেছে।

১৯৫০ সালে তালার বি.দে. (ব্রজলাল দত্ত) ইনস্টিটিউট থেকে সৈয়দ জাহাঙ্গীর ম্যাট্রিক পাশ করলেন। বড় ভাই সিকান্দার আবু জাফরের উৎসাহে ও উদ্যোগে 888sport appয় আর্ট স্কুলে ভর্তি হলেন। তিনি ছিলেন থার্ড ব্যাচের ছাত্র। এই ব্যাচের অন্যদের মধ্যে ছিলেন ‘মবিনুল আজিম, মীর মুসত্মাফা আলী, আবদুস সবুরসহ জনাবিশেক।’ আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে দাদাভাইয়ের (সিকান্দার আবু জাফর) কাছ থেকে উৎসাহ পেলেও তাঁর পিতার কিন্তু এ-ব্যাপারে তেমন-একটা সায় ছিল না। সৈয়দ জাহাঙ্গীর এ-প্রসঙ্গে জানিয়েছেন : ‘আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়াটা আববা খুব ভালো করে মেনে নিতে পারেননি। প্রথমত তিনি বুঝতেন না আর্ট কী এবং আর্ট কলেজে পড়ে ভবিষ্যতে কী হবে। আর্ট কলেজে পড়ে ভবিষ্যতে কী হবে তার জবাব আমিও দিতে পারিনি। কারণ আমিও জানতাম না ভবিষ্যতে কী হবে। আববার বিশ্বাস ছিল, আমি স্কুলের মেধাবী ছাত্র ছিলাম। উচ্চশিক্ষা অর্থাৎ বিএ, এমএ পাশ করে আমি একটা ভালো চাকরি নিয়ে ভালোভাবে উপার্জনক্ষম হব। গ্রামে বাস করা স্বল্পশিক্ষিত একজন পিতার পক্ষে এধরনের চিমত্মা খুবই স্বাভাবিক।’ প্রায় একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন আর্ট কলেজের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র মুর্তজা বশীর। তাঁর পিতা অবশ্য সৈয়দ জাহাঙ্গীরের পিতার মতো স্বল্পশিক্ষিত ছিলেন না – তিনি ছিলেন সর্বজনশ্রদ্ধেয় ড. মুহম্মদ শহীদুলস্ন­vহ। মুর্তজা বশীর তাঁর 888sport sign up bonusকথায় বলেছেন : ‘ম্যাট্রিক পাশ করার পর… বাবা অবশ্য চেয়েছিলেন আমি আলিগড়ে পড়াশোনা করি। তখনকার দিনে মুসলিম সমাজে এটা ছিল একধরনের বাসনা। কিন্তু আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা যখন তাঁকে বলি, তিনি বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, তিনি প্যারিসে ছিলেন, তিনি দেখেছেন আর্টিস্টদের জীবন অত্যমত্ম কষ্টের এবং অনিশ্চয়তায় ভরপুর। তাঁর সমত্মান অভুক্ত বা অনাহারে থাকবে, দুঃখকষ্টে দিনযাপন করবে, এটা পিতা হিসেবে তাঁর কাছে অশোভনীয়। আমায় সিদ্ধামেত্ম অনড় থাকতে দেখে… প্রথম কয়েকদিন তিনি আমার সঙ্গে কথা বললেন না, তাঁর সঙ্গে নামাজ পড়তে ডাকলেন না।’

এই ঘটনাগুলো থেকে এইটি পরিষ্কার বোঝা যায় যে, 888sport live football-চিত্রকলা বা নাট্যকলা-সংগীত বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে আমাদের সমাজে কতটা হেয়ভাবে দেখা হতো। এত বছর পরেও, আজকের দিনে, এই অবস্থার যে খুব-একটা উন্নতি হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। ভবিষ্যতে আয়-রোজগার কেমন হতে পারে, প্রধানত সেই হিসাব করেই আমাদের অভিভাবকরা তাদের সমত্মানদের জন্যে উচ্চশিক্ষার পথ ঠিক করে দেন। সেখানে সমত্মানদের মতামত খুব-একটা যে প্রাধান্য পায়, তা বলা যাবে না। সমত্মানরাও অনেকটা বাধ্য হয়েই অভিভাবকদের মতামত মেনে নেয়, যা একটি স্বাধীন জাতির জন্যে অত্যমত্ম পরিতাপের বিষয়।

এখানে বলে নেওয়া ভালো যে, আর্ট কলেজ থেকে পাশ করার পরে সৈয়দ জাহাঙ্গীর যুক্তরাষ্ট্রে যান। এক বছর পর যখন দেশে ফিরে আসেন, তখন তাঁর সেই মা-বাবাই তাঁর মাথায় ফুল দিয়ে তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন। এরকম ঘটনাও আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়।

 

তিন

888sport appর আর্ট কলেজের শিক্ষা-পদ্ধতি সম্পর্কে সৈয়দ জাহাঙ্গীর বলেছেন : ‘888sport app আর্ট কলেজে আমাদের চিত্রশিক্ষা ছিল ব্রিটিশ আঙ্গিকের। ব্রিটিশরা ভারতবর্ষে প্রায় একই সময়ে তিনটি আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। একটা বোম্বে (বর্তমানে মুম্বাই), একটা লাহোর ও অন্যটা কলকাতায়। কলকাতা আর্ট কলেজ থেকে শিক্ষা সমাপ্ত করে এখানে শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছিলেন জয়নুল আবেদিন, সফিউদ্দীন আহমেদ, আনোয়ারম্নল হক, কামরম্নল হাসান প্রমুখ 888sport live chatী। তাঁরা যেভাবে এবং যেটুকু শিখেছিলেন তা একটা নতুন দেশের নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবীন ছাত্রদের মধ্যে উজাড় করে দিতে চেয়েছিলেন। এখানে অ্যাকাডেমিক বিষয়টাই বেশি গুরম্নত্ব পেত স্বাভাবিকভাবে। ড্রইং, ফিগার ড্রইংয়ের ওপর গুরম্নত্ব দেওয়া হতো বেশি। জলরং শেখানো হতো সতর্কতার সঙ্গে। তাই আমরা বাসত্মবধর্মী কাজই বেশি করতাম, যার ভেতর ছিল নৈসর্গিক দৃশ্য ও মানুষের জীবন। সে-সময় তেলরঙের উচ্চমূল্য আমাদের জলরঙে কাজ করতে বাধ্য করত। সেইসঙ্গে একথাটাও যোগ করতে হবে যে, কাগজের ওপর জলরঙে 888sport appsের প্রাকৃতিক দৃশ্য ফুটে উঠত সহজ ও সুন্দরভাবে।’

আর্ট কলেজের শিক্ষকদের সম্পর্কে সৈয়দ জাহাঙ্গীর যেমন 888sport apk download apk latest version দেখিয়েছেন তেমনি তাঁর আবেগ আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখি তাঁর সহপাঠী ও বন্ধুদের সম্পর্কে। এই বন্ধুদের মধ্যে  যেমন ছিলেন চিত্র888sport live chatী, তেমনি কবি-888sport live footballিকদেরও একটা বড় অংশ। সৈয়দ জাহাঙ্গীরের 888sport sign up bonusকথায় তার একটি টুকরো অংশ এইভাবে পেয়ে

যাই : ‘নবাবপুর রেলক্রসিংয়ের কাছেই ছিল তখনকার জনপ্রিয় ক্যাপিটাল রেস্টুরেন্ট। আমরা প্রায়ই আড্ডা দিতাম। আসতেন হাসান হাফিজুর রহমান, আমিনুল ইসলাম, কাইয়ুম চৌধুরী, মুর্তজা বশীর, দেবদাস চক্রবর্তী, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, সাইয়িদ আতীকুলস্নাহ, খালেদ চৌধুরী, সঞ্জীব দত্ত প্রমুখ।  তরম্নণ কবি-888sport live footballিক-888sport live chatীদের আড্ডায়, আলাপচারিতায় মুখর থাকত ক্যাপিটাল  রেসেত্মারাঁ। কবিরা কী লিখছেন, তাঁদের চিত্রকল্প, মনন প্রকাশ সম্পর্কে আমরা চিত্র888sport live chatীরা যেমন সম্যক ধারণা লাভ করতাম, কবি-888sport live footballিকরাও তেমনি চিত্র888sport live chatের মৌলিক গুণাবলি, বিবর্তন ও অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত হতেন। বাসত্মবতার নিরিখে ভাবের আদান-প্রদান-বিতর্ক অব্যাহতভাবে চলত ওখানে। উভয়পক্ষই উপকৃত হতাম।’

আজকের দিনে এমনসব আড্ডার কথা আমরা ভাবতেও পারি না। সংযোগহীন-এক সমাজে বসবাস করছি। কবি-888sport live footballিকদের সঙ্গে কবি-888sport live footballিকদের সংযোগ নেই। চিত্র888sport live chatীদের সঙ্গে তো নেই-ই। আবার চিত্র888sport live chatীদের সঙ্গেও কবি-888sport live footballিকদের

সংযোগ নেই।

 

চার

সৈয়দ জাহাঙ্গীর আর্ট কলেজ থেকে পাশ করে বেরোন ১৯৫৫ সালে। তখনই সিদ্ধামত্ম নেন চাকরির বদলে ছবি-অাঁকাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করার – ‘অনেক মেহনত করে ছবি অাঁকা শিখেছি, ছবিই অাঁকব, যা থাকে কপালে।’ ভাগ্যদেবী তাঁর প্রতি সুপ্রসন্নই ছিলেন বলতে হবে। 888sport appস্থ  ব্রিটিশ কাউন্সিল আর ইউএসআইএসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৈয়দ জাহাঙ্গীরের ভালো সম্পর্ক ছিল। তাঁদের উদ্যোগেই তাঁর ছবি বিক্রির ব্যবস্থা হতো। ইউএসআইএসের উদ্যোগেই ১৯৫৮ সালে তিন মাসের ফেলোশিপ নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-888sport slot gameের সুযোগ পান। যুক্তরাষ্ট্রের বড়-বড় শহরের আর্ট গ্যালারি দেখে, সেখানকার মানুষজনের সঙ্গে মিশে সৈয়দ জাহাঙ্গীর যে-অভিজ্ঞতা লাভ করেন তাকে তিনি বলেছেন তাঁর ‘888sport live chatীজীবনের অভিজ্ঞতা ও অগ্রগতির সোনালি সোপান।’ হার্ভার্ডেই আকস্মিকভাবে দেখা হয়ে যায় মুনীর চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি তখন সেখানে বাংলা টাইপরাইটারের ওপর কাজ করছেন। ফিলাডেলফিয়ায় দেখা হয় 888sport live chatী হামিদুর রাহমানের সঙ্গে, তিনিও তখন ম্যুরালের ওপর উচ্চতর শিক্ষার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের কালো মানুষগুলো সম্পর্কে সৈয়দ জাহাঙ্গীরের প্রতিক্রিয়া মিশ্র; কখনো তাদের প্রতি একধরনের বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পুষেছেন আবার কখনো দেখিয়েছেন সহানুভূতি, ভালোবাসা। সাদা মানুষগুলোর প্রতি সেখানকার আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের বিরক্তিকর মনোভাবের কারণ উলেস্নখ করতেও তিনি ভোলেননি। যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালে বিচিত্র ধরনের মানুষের সঙ্গে 888sport live chatীর পরিচয় ঘটেছে। এদের কেউ-কেউ প্রকৃত রসিকের মন নিয়ে তাঁর 888sport live chatকর্মকে বুঝতে চেয়েছেন, জানতে চেয়েছেন। আবার কেউ-কেউ তাঁর 888sport live chatকর্মকে সামনে রেখে তাঁদের ব্যবসায়িক স্বার্থ চরিতার্থ করতে চেয়েছেন। সৈয়দ জাহাঙ্গীর এক নামহীন ভদ্রলোকের কথা জানিয়েছেন, যিনি কিনা ‘আমার বৃত্তামত্ম শুনে বললেন, তুমি যদি আমেরিকায় থাকো তবে তোমার জন্য একটা প্রোগ্রাম তৈরি করে দিতে পারি। ছয়টা মিউজিয়ামে তোমার চিত্রপ্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে দেব। শেষ প্রদর্শনী হবে নিউইয়র্কের মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে। এসবের যাবতীয় ব্যয় আমার। তোমার যত ছবি বিক্রি হবে তার সব পয়সাও তোমার। শুধু শেষ প্রদর্শনীতে (অর্থাৎ মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে) যা বিক্রি হবে তার শতকরা পঞ্চাশ ভাগ আমাকে দিতে হবে।’ এ-ঘটনার এখানেই শেষ নয়, ওই ‘ভদ্রলোক আমার প্রদর্শনীর একজন এজেন্ট ও আর্ট প্রমোটর হিসেবে ভূমিকা রাখার কথা বললেন। এছাড়া সাধারণ দর্শকদের আকৃষ্ট করার কৌশলও তিনি বাতলে দিলেন। বললেন, 888sport apps থেকে জামদানি শাড়ি এনে দেয়ালে ঝুলিয়ে দিতে হবে। পেইন্টিং থাকবে ওই শাড়ির ওপরে, দেয়ালে। লোকে জামদানি শাড়ির আকর্ষণেই

চিত্র-প্রদর্শনীতে আসবে, ওই শাড়ি দেখা শেষ হলে তোমার ছবি দেখবে। যদি পারো, একটা হাতির বাচ্চা এনে প্রদর্শনীর প্রধান ফটকে রেখে দিতে পারো।… শহরে অভিনব প্রচারণার সৃষ্টি হবে।’ এসব কাজে সৈয়দ জাহাঙ্গীর সম্মতি দিতে পারেননি। কারণটাও জানিয়েছেন, এতে করে ‘যে প্রেরণা ও শামিত্ম এবং সুস্থিতি নিয়ে আমি 888sport live chatচর্চা করি, তা বিঘ্নিত হবে।’

২০১০ সালে তিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। দু-সময়ের তুলনা দিতে গিয়ে বলছেন : ‘দেখলাম সেখানে আমূল পরিবর্তন। ’৫৮ সালে যখন আমেরিকায় ছিলাম তখন বলতে গেলে কোনো বাঙালিকেই দেখিনি, দূতাবাসের দু-একজন ছাড়া। আর এবার দেখলাম হাজার হাজার বাঙালি। আগের দিনের মার্কিনিরা এখন আর তেমন উদারমনা নন।’ শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, এই উদারহীন মানসিকতা এখন পৃথিবীজুড়েই ভয়াবহরূপে পরিব্যাপ্ত।

 

পাঁচ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে ১৯৬০ সালে তিনি তৎকালীন পশ্চিম পাকিসত্মানে বসবাসের সিদ্ধামত্ম নেন। কারণ তখন ছবির বাজার বলতে যা বোঝায় সেটা ছিল পশ্চিম পাকিসত্মানেই। এখানে কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজের সঙ্গে পরিচয় হয়, যিনি তাঁর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। নতুন করে হৃদ্যতা ঘটে ড. দানীর সঙ্গে। পরিচয় হয় সাংবাদিক-সামরিক-বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে, যাঁরা ছিলেন চিত্রকর্মের বড় ক্রেতা। এছাড়া বিদেশি বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তারা তো ছিলেনই। পশ্চিম পাকিসত্মানের চারটে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল তাদের ডেকোরেশনের জন্য বিভিন্ন সময়ে সৈয়দ জাহাঙ্গীরের কয়েকশো ছবি কিনেছিল। স্বাধীনতার বেশ ক-বছর পর তিনি লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডির সেই হোটেলগুলোতে তাঁর পুরনো ছবি খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন, সব ছবি উধাও। ওগুলো আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। 888sport live chatী বলছেন, ‘এটা আমার জন্য এক দুঃখজনক অভিজ্ঞতা।’ শুধু তাঁর জন্যই নয়, যে-কোনো 888sport live chatীর ক্ষেত্রেই এটি সত্য। এই 888sport sign up bonusকথা পাঠ করে আমরা বুঝতে পারি যে, পশ্চিম পাকিসত্মানে সৈয়দ জাহাঙ্গীরের বসবাস ছিল সতত সুখের ও স্বসিত্মর। এই সময় তিনি যেমন প্রচুর ছবি এঁকেছেন, তেমনি ওখানকার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে বন্ধু-বান্ধবসহ ঘুরে বেড়িয়েছেন। এতে তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলি প্রতিনিয়তই সমৃদ্ধ হয়েছে। এমনকি তাঁর পূর্বপুরম্নষের ভিটে বাফাহাজারায়ও যেতে ভোলেননি। সেই

888sport slot game-কাহিনি পাঠকের মনে অনবদ্য এক শিহরণ জাগায়। একজন 888sport live chatীকে তাঁর নিজের শেকড় বোধহয় এভাবেই চিনে নিতে হয়; নানাভাবে, বারেবার। পশ্চিম পাকিসত্মানিদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো হওয়া সত্ত্বেও একাত্তরে এসে দেখা গেল বাঙালি হওয়ার ‘অপরাধে’ ওখানে অনেকের কাছেই তিনি বহিরাগত হয়ে পড়লেন। অবস্থার এতটাই অবনতি হয়েছিল যে, দেশ স্বাধীনের পরে সবকিছু পেছনে ফেলে রেখে, দুই কন্যাসহ পাকিসত্মান থেকে তাঁকে পালিয়ে কাবুলে চলে আসতে হয়। সেখান থেকে দিলিস্ন­-কলকাতা হয়ে অবশেষে 888sport appয় পৌঁছান। তাঁর পাকিসত্মানি স্ত্রী আনিস জাহাঙ্গীর দেশে আসেন ১৯৭৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে।

 

ছয়

দেশে ফিরে আসার পর ১৯৭৭ সালে 888sport live chatকলা একাডেমীর চারম্নকলা বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব অত্যমত্ম যোগ্যতার সঙ্গে পালন করেন। যদিও চাকরি করার ক্ষেত্রে তিনি সবসময়ই বিমুখ ছিলেন। কারণ এতে 888sport live chatীসত্তার ক্ষতি হয়, ছবি-অাঁকার কাজে ভাটা পড়ে। ১৯৯১ সালে 888sport live chatকলা থেকে অবসরগ্রহণ করেন। তারপর থেকে এখনো পর্যমত্ম ছবিই এঁকে চলেছেন। এই ৮০ বছর বয়সেও তিনি সমান কর্মশীল। এরকম দৃষ্টামত্ম আমাদের দেশে খুব বেশি নেই।

 

সাত

এই 888sport sign up bonusকথায় জীবনে ঘটে-যাওয়া ঘটনার বিবরণ দেওয়ার পাশাপাশি ছবি-অাঁকার বিভিন্ন ব্যাপার নিয়েও তিনি নানা মমত্মব্য করেছেন, যেগুলো খুব প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে। ‘ছবির ভুবনে’ অধ্যায়ের এক জায়গায় সৈয়দ জাহাঙ্গীর বলেছেন : ‘আমি একসময় পুরোপুরি বিমূর্ত ধারায় কাজ করতাম, তখন আনন্দের সঙ্গেই করতাম। আমাদের দেশে খুব কমসংখ্যক দর্শকই বিমূর্ত ধারার ছবির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন। আমি দেখেছি আমার বিমূর্ত ছবি সেভাবে বিপুলসংখ্যক দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। এটা কি কেবল আমার বেলায়? বিদেশের গ্যালারিতে দেখেছি দর্শকেরা বিমূর্ত ছবি পছন্দ করছেন, বলছেন এটা সুন্দর ছবি। কিন্তু একই সঙ্গে বলছেন এটা বুঝতে পারা যাচ্ছে না। এই ছবি আমি বুঝছি না। তার মানে মানুষ ছবি দেখে কেবল আনন্দ নয়, ছবি বুঝতেও চায়। দর্শকের সঙ্গে আমার ছবি পুরোপুরি সংযোগ স্থাপনে সমর্থ হচ্ছে না। এটা আমাকে চিমত্মায় ফেলে দিলো। পরে তাই ফিগারেটিভ বা আধা বিমূর্ত কাজের ধারায় ফিরে এলাম। এখন দেখছি আমার ছবি শতভাগ দর্শকের কাছে পছন্দনীয় না হলেও শতকরা নববই জন দর্শক আমার ছবি পছন্দ করছেন।’ এই মতের সঙ্গে অনেকেই হয়তো একমত হবেন না। বরং প্রশ্ন উঠবে, দর্শকের ছবি বুঝতে পারা, তাদের ছবি পছন্দ করাটাই কি একটি 888sport live chatকর্মের সবচেয়ে বড় সার্থকতা? ১৯৩৪ সালে কলম্বোয় তাঁর ছবি প্রদর্শনীর প্রাক্কালে এক বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন : ‘আপনারা জিজ্ঞাসা করিতে পারেন এই ছবিগুলির অর্থ কি? আমি বলি, ইহাদের কোনও অর্থ নাই। প্রাচীন কাব্য ও 888sport live footballের অর্থ আছে, কিন্তু… 888sport live chatকলার কোনও অর্থ নাই। এই কথা 888sport app download for android রাখিয়া আপনারা এই চিত্রগুলির মর্ম উপলব্ধির চেষ্টা করিবেন।’

ছবি-অাঁকার পাশাপাশি 888sport live chatীর সামাজিক দায়-দায়িত্বের কথাও তিনি 888sport app download for android করিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন : ‘আমরা 888sport live chatীরা একটা-দুটো ছবি এঁকেই আমাদের মানবিক দায়িত্ব এবং সামাজিক কর্তব্য পালন করার মানসিকতা লালন করি। কিন্তু অনেক সময় শারীরিক শ্রমদানও যে অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে সেটা আমাদের মাথায় আসে না।’ উদাহরণ দিতে গিয়ে সৈয়দ জাহাঙ্গীর ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। সেই সময় এদেশের 888sport live chatীদের মধ্যে সরাসরি ত্রাণকাজে তিনি ও জয়নুল আবেদিনই শুধু অংশ নিয়েছিলেন। এসব ঘটনা যে একজন 888sport live chatীকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেয়, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমাদের 888sport live chatীরা এখনো সেই প্রবণতা থেকে মুক্ত হতে পারেননি। খুব কমজনকেই দেশের কোনো সংকটকালে সামাজিক দায়-দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। কিন্তু 888sport live chatীরও যে একটি সামাজিক দায় আছে সেটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই।

‘আর্ট-ক্যাম্প’ সম্পর্কে সৈয়দ জাহাঙ্গীরের মমত্মব্য এরকম : ‘এখন খুব আর্ট ক্যাম্প হচ্ছে। দেশে এবং বিদেশেও। এই আর্ট ক্যাম্প নিয়ে আমার পর্যবেক্ষণ হলো, এসব ক্ষেত্রে 888sport live chatী যেন ভাড়াটে 888sport live chatীতে পরিণত হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের প্রসত্মাব 888sport live chatীদের কাছে

এমন : তোমাকে চার-পাঁচ দিনের জন্য নিয়ে যাব, ভালো খাওয়া-দাওয়া ড্রিংকস-ট্রিংকস দেব, আর ২০-২৫ হাজার টাকা দেব। যে ছবিগুলো ওখানে অাঁকবে সেগুলো আমাদের। এটা একটা ব্যবসাই বটে। এটা আমার পছন্দ নয়। আর্ট ক্যাম্পে তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে হয়, তাই চাপ থাকে, কাজও মনমতো হয় না।’ তবে এর পাশাপাশি তিনি আর্ট ক্যাম্পের ইতিবাচক দিকের কথাও বলতে ভোলেননি। তাঁর মতে, ‘আর্ট ক্যাম্পের একটা ইতিবাচক দিক হচ্ছে, এতে ভিন্ন ভিন্ন ধারার 888sport live chatীদের কর্মরত অবস্থায় কাজ দেখার সুযোগ মেলে। একে অপরের 888sport live chatসৃষ্টির কৌশল প্রত্যক্ষভাবে অবলোকনের সুযোগ মেলে। 888sport live chatীদের ভেতর মিথস্ক্রিয়া হয়, পারস্পরিক ভাববিনিময়ের সুযোগ ঘটে।’ সৈয়দ জাহাঙ্গীর তাঁর মতামত প্রকাশে অনেকখানি বিনয়ী, কখনো চরমপন্থার দ্বারস্থ হননি। 888sport live chatের ক্ষেত্রে চরমপন্থা বলে যে কিছুই নেই – এইটি তাঁর জানা। সেইসঙ্গে আমরা এ-ও খেয়াল করি, ছবি অাঁকার পাশাপাশি কলমের গতিকে আয়ত্তে রাখার কৌশলও তিনি ভালোভাবেই রপ্ত করেছেন।

 

আট

সৈয়দ জাহাঙ্গীর তাঁর 888sport sign up bonusকথায় বলেছেন, ‘আজো দোয়েলের ডাক শুনলে সেই ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে। এখনো যখন দেখি নানা বর্ণের সবুজ গাছের গা ঘেঁষে  বিসত্মীর্ণ ধানক্ষেত যার মাঝে মাঝে পাকা ধানের সোনালি বিসত্মার, নিমেষেই 888sport sign up bonusর আয়নায় ভেসে ওঠে পৌষের বিকেলে কৃষকের ধান কাটা শেষে গরম্নর গাড়িতে তুলে নেওয়ার সেই দৃশ্য। সেই সোনালি ধানক্ষেত, আলট্রামেরিন আকাশ, মাটি আর মানুষ এখন আমার ক্যানভাসে।’

এই 888sport sign up bonusকথাটির উৎসারণও ঠিক সেইখান থেকেই। যার প্রতিটি পাতায় মানুষ আর প্রকৃতি, জীবন আর 888sport live chatের প্রতি ভালোবাসা এক সুমিতি-চেতনায় এক হয়ে রয়েছে।

পরিশেষে একটি কথা না বললেই নয়, বইটির ভূমিকা লিখেছেন বেঙ্গল পাবলিকেশন্সের নির্বাহী পরিচালক আবুল হাসনাত। এতে 888sport live chatীর সৃজন, ব্যক্তিস্বরূপ ও স্বভাবধর্ম সম্পর্কে ক্ষুদ্র অথচ জ্ঞানদীপ্ত আলোকপাত আমাদের অভিজ্ঞতার দিগমত্মকে প্রসারিত করে। সৈয়দ জাহাঙ্গীর আমাদের চিত্রচর্চার অঙ্গনে যে কতভাবে প্রাসঙ্গিক সে-কথা উন্মোচিত হয়। বইটির বহুল প্রচার কামনা করি। ৎ

 

 

 

 

 

যাপিত জীবনের সারাৎসার

তুষার কবির

 

 

আত্মহননের প্ররোচনা – বহুমাত্রিক লেখক ফারম্নক মঈনউদ্দীনের দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ। ভিন্ন এক লিখনভঙ্গিমায় সাতটি ছোটগল্পের ভেতর এ-বইটিতে ফারম্নক মঈনউদ্দীন পাঠককে নিয়ে গেছেন তাঁর টানটান গদ্যশৈলীর কুহকলাগা ভুবনে! কাহিনির মুহুর্মুহু বাঁক ফেরানোর পাশাপাশি লেখক আত্মহননের প্ররোচনায় ছড়িয়ে দিয়েছেন ইমেজের এক জাদুবিভ্রম – যাতে পাঠক ঘুরপাক খেতে থাকে অবিরাম তলিয়ে যেতে থাকে আখ্যানের চোরাস্রোতে! ফলে এ-গদ্যভাষা উসকে দেয় পাঠকের পাঠমনোবৃত্তি – পুরো বইটি পড়ে উঠতে পাঠক পায় এক গাঢ় প্ররোচনা – যাপিত জীবনের সারাৎসারে ঠাসা এ-লিখনকৌশলে পাঠক খুঁজে পায় ভিন্ন এক প্রণোদনা! পরিণামে পাঠক অভিজ্ঞতা লাভ করে এক তাড়িত, পীড়িত ও সংবেদনশীল লেখকের ভাবনাবলয়ের সঙ্গে – চেতন ও অবচেতনের আশ্চর্য উদ্ভাসে – কখনো-কখনো এ-গল্পপাঠে খুলে যায় ইন্দ্রিয়সমূহের দরজা – পাঠক হারিয়ে যেতে থাকে এক অভাবিত অভিঘাতে – টানা গদ্যের ঠাসবুনটে পাঠক পরি888sport slot game করতে থাকে খ–খ- ঘটনাপ্রবাহে!

আত্মহননের প্ররোচনা বইটির প্রথম গল্প ‘দখলে’ খুঁজে পাওয়া যায় এক শ্বাসরম্নদ্ধকর উত্তেজনা; এ-দখল শুধু সীমাবদ্ধ থাকে না বস্ত্তগত বিষয়ে, কাহিনির ক্রমশ বাঁক ফেরার সঙ্গে সঙ্গে তা আবর্তিত হয় এক 888sport promo codeশরীর দখলেও! গল্পের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই চরিত্র হাশেম সর্দার ও ইসরায়েল শেখের গোডাউন দখলের দ্বন্দ্ব ক্রমান্বয়ে তীব্র রোষানলে ঘুরপাকে খেতে থাকে; যাতে আরো প্রণোদনা জোগায় জ্বলজ্যামত্ম এক 888sport promo code – মোমেনা। আর ‘দখল’ গল্পটিতে লেখক তুলে ধরেছেন এ-দখললিপ্সা, সম্ভোগলালসা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি যার জন্য তারা নিরমত্মর লড়াই করে চলে, যা এ-গল্পের প্রধান চরিত্র হাশেম সর্দারের পিতামহের সংলাপে আরো প্রগাঢ়ভাবে উঠে আসে – ‘টাহাপয়সা, মাইয়ে মানুষ আর বড় মাছ – এই তিনডে জিনিসের লোভ বড় কঠিন লোভ। এই লোভ নেই ইরহম মানুষ তুমি দুডো খুঁইজে পাবা না।’ এ গল্পটিতে লেখক অনবদ্য মুন্শিয়ানায় বেশকিছু উপমা ও দৃশ্যকল্প হাজির করেছেন :

ক) দালানটার দেয়ালে কঙ্কালের পাঁজরের মতো উন্মুক্ত ইট ভেঙে গুঁড়ো হয়ে খসে যাওয়া আসত্মরের বালির সাথে ঝুরঝুর করে অন্ধকারের ভেতর ঝরে পড়তে থাকে।

খ) গরমে শিমুল ফল ফাটার মতো টাশ শব্দে বুলেট অন্ধকার বিদীর্ণ করে ঊর্ধ্বমুখে ছুটে যায়।

গ) ঘুম ভাঙার পর টের পায় ওর মাথাটা সিসের মতো ভারী হয়ে আছে। মনে হয়, ভেতরে একটা বড়সড় তামার পাত্র ঢোকানো, এদিক-ওদিক মাথা নাড়াতেই ঠং করে তীব্র ব্যথা গেঁথে যাচ্ছে মগজে।

ঘ) সাথে সাথে বুকের ভেতর হৃৎপি-টা মেঝের ওপর হাত থেকে ছেড়ে দেওয়া বলের মতো সজোরে লাফাতে থাকে।

ঙ) দেশি মদের তিতকুটে নেশার চাদরটার ফিকে রঙ ধীরে ধীরে গাঢ় হয়ে চোখের সামনে নামতে থাকে অবিশ্রামত্ম প্রপাতের মতো।

চ) ওর হাতের বাঁধনের ভেতর মোমেনাকে খুব শক্ত কাঠ কাঠ মনে হয়, অন্যদিনের মতো গরম কড়াইতে ছেড়ে দেওয়া ডালডার মতো গলে যায় না।

এ-বইটির আরেকটি গল্প ‘অপাপবিদ্ধা’য় লেখক সার্থকভাবে চিত্রণ করেছেন এক পাগলির চরিত্র – যে কিনা এ সভ্য সমাজেরই কোনো কামলিপ্সু পুরম্নষের দ্বারা গর্ভবতী হয়, যার খোঁজ আর পাওয়া যায় না। আর এ-গল্পের ‘সতী পাগলি’ – যার গর্ভবতী হয়ে-ওঠার লক্ষণগুলো লেখক বর্ণনা করেছেন তেজেন্দ্র ডাক্তারের বয়ানে – ‘আর পাপবোধহীন জীবনবোধশূন্য নিরপরাধ পাগলিটার অপ্রতুল রক্ত-মাংসের খোঁদলে বেড়ে উঠবে মানুষের ভেতর মিশে থাকা কোন এক অমানুষের অবাঞ্চিত বীজ।’ এ-গল্পে লেখকের তীক্ষ্ম পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে কামারশালার পরিপার্শ্ব; ‘শশী কামার যখন বাঁ-হাতে হাপরের সঙ্গে বাঁধা ঝোলানো জংধরা চেনখানা ধরে জোরে জোরে টানতে থাকে, আর সোঁ-সোঁ শব্দ করে লাল কয়লার ভেতর ততোধিক লাল লোহার টুকরোটা ঝলসে ওঠে, পাগলিটা নির্নিমেষ তাকিয়ে থাকে লাল কয়লার দিকে, ওর চোখে কোনো অভিব্যক্তি থাকে না, মনে হয় কয়লার দগদগে লাল আগুনের অসহ্য উত্তাপের ভেতর ওর দৃষ্টিরেখা গলে গিয়ে ফাঁকা হয়ে গিয়েছে।’ গল্পটির পরিশেষে লেখক এ-সভ্যসমাজের চোয়ালে সার্থকভাবে চপেটাঘাত করেছেন – মানুষের ইতরতা যে কতটা মর্মন্তুদ হতে পারে তা দেখিয়েছেন। ফলে এ সতী পাগলি আর এক গর্ভবতী কুকুর যখন পাশাপাশি শুয়ে থাকে তা লেখকের বর্ণনায় উঠে আসে এভাবে, ‘ওদিকে তাকাতে কিছুই চোখে পড়ে না, শুধু বটগাছটার পুরো অবয়ব জমাট বাঁধা অন্ধকারের সত্মূপ হয়ে রাতের গায়ে লেপ্টে থাকে। তারপর আরো একটু এদিকে ফণীর চা দোকানের আলোটা যেখানে মাটির ওপর লুটিয়ে পড়েছিল, সেখানে সতী পাগলিকে দেখা যায় অদ্ভুত ভঙ্গিতে উবু হয়ে বসা, পাশে রান্নার মেটে হাঁড়িটাও কাত হয়ে পড়ে আছে। নতুন উদয় হওয়া গাভিন কুকুরটা ওর সামনে আধশোয়া হয়ে বসে মাটিতে ঢেলে দেওয়া ভাত খাচ্ছে। আরো একটু এগোলে বোঝা যায় সতী পাগলি খুব হাসি হাসি মুখ করে নিবিষ্টমনে কুকুরটার খাওয়া দেখছে। মাটিতে পড়ে থাকা অপ্রতুল আলোর প্রামেত্ম থেকেও পাগলিটার কালো ময়লা ধরা মুখাবয়ব কী এক অপার্থিব আলোয় জ্বলজ্বল করছিল তখন।’

নিরীক্ষামনস্ক লেখক ফারম্নক মঈনউদ্দীন ভিন্ন এক কনটেন্টস নিয়ে হাজির হয়েছেন তাঁর ‘পাওনা’ গল্পটিতে – ইদ্রিস শিকদারের মৃত্যুর পর তা নিয়ে ডিটেইলড এক স্কেচ এঁকেছেন যাতে উঠে এসেছে মৃত্যু-পরবর্তী যাপিত অনুষঙ্গ – ‘শিকদারবাড়ির সামনে গেলে মনে হয় মৃত্যুও বুঝি এক ধরনের উৎসব। সাদা পাঞ্জাবি-টুপি পরা লোকজন আসছে দল বেঁধে। বাড়ির সামনে গাড়ির ভিড় লেগে গেছে। মনে হচ্ছে বড়সড় কোনো ধর্মীয় উৎসব চলছে।’ পাশাপাশি লেখক আরো তুলে ধরেছেন ধনী আর দরিদ্রের মৃত্যুশোক প্রকাশের পার্থক্যটাও – ‘অথচ গরিবগুর্বোদের মওতা-বাড়ির দূর থেকেই শোনা যায় মহিলাদের বুক চাপড়ানো বিলাপের শব্দ, গলার রগ ফুলিয়ে, আলজিব পর্যমত্ম দেখা যায়, এমন চিৎকার করে কাঁদতে থাকে মেয়েরা।… কিন্তু বড়লোকদের মৃত্যুর আবহ হয় ভিন্নতর, তাদের মওতাবাড়িতে উচ্চস্বরে কান্নার রোল নেই, মহিলাদের বুক চাপড়ানো বিলাপ নেই। তারা কেবল পাথরের মতো চুপচাপ বসে থাকে, আর চোখ থেকে নিঃশব্দে গড়াতে থাকে পানি।’ এ-গল্পটির শেষে নাটকীয় এক মোড় ঘুরিয়ে লেখক দেখান যে, ইদ্রিস শিকদারের জানাজা শুরম্ন করার আগে তার পাওনাদাররা এক-এক করে এগিয়ে আসে – তারা তাদের পাওনা টাকা আদায়ে সোচ্চার হয়ে ওঠে – ‘তখন পেছনের বিভিন্ন সারি থেকে মলিন কাপড়ের কয়েকজন এক এক করে বেরিয়ে সামনে চলে যায়, ধীরে ধীরে তাদের 888sport free bet বাড়তে থাকে, কেউ-কেউ এমনভাবে খাটিয়ার ধার ঘিরে দাঁড়ায়, যেন পাহারা দিচ্ছে লাশ। আরো কয়েকজন দ্বিধান্বিত পায়ে বেরিয়ে এসে দাবিদারদের দলে যোগ দেয়। তখন বৈকালিক হাওয়ার একটা স্রোত সেখান দিয়ে বয়ে গেলে শিকদারের কাফনের ওপর দিকটা মৃদু ঢেউয়ের মতো আন্দোলিত হয়, যেন প্রাণহীন হিমঠান্ডা শরীরটা শিউরে উঠছে বারবার।’

আত্মহননের প্ররোচনা – বইটির নামকরণ করা হয়েছে এর শেষ গল্পটির নামে – যাতে কেন্দ্রীভূত হয়েছে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ। প্রধান চরিত্র হাতেম শেখ যিনি একদা কম্পাউন্ডার থেকে খোদ ডাক্তার বনে গেছেন, যার ওষুধের দোকানে বসেই যিনি পুরো অবলোকন করতে থাকেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিশদ কাহন। চিত্রকল্পঋদ্ধ বর্ণনায় লেখক দেখিয়েছেন তাঁর ক্র্যাফ্টম্যানশিপ; ‘বাজারটা ছিল প্রেতপুরীর মতো জনহীন। বাজারের কাছাকাছি গ্রামগুলো থেকেও লোকজন ভেতর দিকে সরে গিয়েছিল। মিলিটারি যখন আসে, তখন শিকার করার মতো কোনো লোক ওরা সত্যিই খুঁজে পায়নি, পড়মত্ম বেলা ছিল বলেই হয়তো রাত নামার আগেই শহরের সেনাছাউনিতে ফেরার তাগিদে ওরা বাজার ছেড়ে গ্রামের পথে নামেনি। তবে তাই বলে গোলাগুলি ব্যয় করতে কার্পণ্য করেনি ওরা। সালেক বহুদূরে ওর মায়ের নানাবাড়িতে পুকুরপাড়ে অনেকের সাথে বসে অজস্র গুলি ছোড়ার অস্পষ্ট আওয়াজ পেয়েছিল। বাজার বরাবর সোজা ওপরে কু-লী পাকিয়ে ওঠা কালো ধোঁয়ার মেঘ দেখে যা বোঝার বোঝা হয়ে গিয়েছিল সবার।’ এ গল্পটিতেও লেখক মুন্শিয়ানার সঙ্গে বেশকিছু উপমা ও দৃশ্যকল্প হাজির করেছেন :

ক) সেই অবিশ্রামত্ম খই ফোটার আওয়াজ মনে হয় মাথার ওপরের আকাশটাকে এক টানে ফড়ফড় করে ছিঁড়ে ফেলে। বাজারের পশ্চিম প্রামেত্ম ঝাঁকড়া অশ্বত্থগাছটার আড়াল থেকে কুৎসিত একটা বিশাল পাখির মতো বিমানটাকে তীব্র বেগে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।

খ) তরমুজের সত্মূপের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকা দেহটার ঘাড়ের কাছের ক্ষত থেকে বলকে রক্ত বেরিয়ে সবুজ তরমুজের শরীর বেয়ে নামতে থাকে। গুলিবিদ্ধ ফেটে যাওয়া তরমুজের লাল রস আর মৃত লোকটির রক্ত মিশে গড়িয়ে সত্মূপটার নিচ থেকে বেরিয়ে আসছিল।

গ) মু–ত চুল একটা কিশোর খুলি মসত্মকবিচ্ছিন্ন হয়ে দূরে পড়ে ছিল অবিকল ভাঙা বেলের মালার মতো।

ঘ) নতুন কাঁচা বাঁশের ফকফকে সাদা বুকের পাশ থেকে আধখানা পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া খুঁটিগুলো ভেংচি কেটে দাঁড়িয়ে থাকে। চারদিকে ছড়ানো পোড়া কয়লা ও ছাই সন্ধ্যা নামার আগেই চারপাশে অন্ধকার চাদর বিছিয়ে দেয় যেন।

সারাৎসারে বলা যায়, আত্মহননের প্ররোচনা বইটিতে ফারম্নক মঈনউদ্দীন নিজেকে উন্মীলিত করেছেন তাঁর টানটান গদ্যভাষায়; কাহিনির স্বতঃস্ফূর্ত বাঁক ঘুরিয়ে জন্ম দিয়েছেন ঘটনা পরম্পরা,

যাতে পাঠক তলিয়ে যায় এক গাঢ় প্ররোচনায়, যা নাড়িয়ে দেয় সংবেদন-মনন-চৈতন্য, যা জাগিয়ে দেয় চিরায়ত হাহাকার-আর্তি-প্রেম-কাম-নৈঃশব্দ্য! ৎ

 

 

 

 

 

কবিতীর্থ 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়

অংকুর সাহা

 

আলোচ্য গ্রন্থের লেখক প্রণব চৌধুরীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় নেই। কেবল পরোক্ষভাবে জানতাম তিনি 888sport live footballের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং এক অনুভবী বুদ্ধিজীবী। আরো পরে জেনেছি যে, তিনি এক সুদক্ষ প্রম্নফ-পরীক্ষক, সামান্যতম ত্রম্নটিও তাঁর নজর এড়ায় না। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমি অবগত

ছিলাম না তাঁর 888sport live footballচর্চা ও 888sport live football-ভাবনা সম্পর্কে।

সেই অজ্ঞতার অবসান ঘটল ২০১৪ সালের হেমমেত্ম যখন একটু দেরিতে হলেও হাতে পেলাম সেই বছরের কবি সম্মেলন 888sport app download apk মাসিকপত্রের শারদ 888sport free bet। চোখ আটকে গেল তাঁর অনতিদীর্ঘ 888sport liveে – ‘কবিতীর্থ 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়’ – নামের দৃষ্টিকটু মুদ্রণপ্রমাদটি অগ্রাহ্য করলে একটি সুপাঠ্য রচনা। অনেক অজানা তথ্য ও অনুভবের সমাহার সেখানে। 888sport liveটি পড়ে আপস্নুত হয়েছিলাম – ভালো লেগেছিল লেখকের সজীব চিমত্মন এবং সাবলীল প্রকাশভঙ্গি।

২০১৫ সালের বইমেলায় এই রচনাটির সঙ্গে আরো নটি সংক্ষেপ্ততর 888sport live যোগ করে প্রকাশিত হয়েছে কবিতীর্থ 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় এবং 888sport app নামে 888sport liveগ্রন্থ। 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারের এবং মুক্তিযোদ্ধার 888sport sign up bonusসৌধের আলোকচিত্র দুটি বাদ গিয়েছে, কিন্তু পিছনের প্রচ্ছদে যুক্ত হয়েছে রবীন্দ্র আখরে তাঁর বিখ্যাত 888sport app download apk ও গান ‘বাসমিত্মকা’, যেটি প্রকাশিত হয়েছিল জগন্নাথ হলের 888sport app download for androidিকায় – ‘এই কথাটি মনে রেখো’। একটি ঝলমলে প্রকাশনা – চোখে দেখলেই হাতে নিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে।

 

দুই

১৯৭১ সালে স্বাধীন 888sport appsের প্রতিষ্ঠার পরে দেশটিকে চারটি প্রশাসনিক বিভাগে ভাগ করা হয় – চট্টগ্রাম, 888sport app, খুলনা এবং রাজশাহী। তারপর দেশের জন888sport free bet বৃদ্ধির সঙ্গে-সঙ্গে বিভাগের 888sport free betও বাড়ে – যুক্ত হয় খুলনা, সিলেট, রংপুর এবং ময়মনসিংহ। বর্তমানকালে সব মিলিয়ে আটটি বিভাগ এবং ৬৪টি জেলা। ভবিষ্যতে চট্টগ্রামের উত্তর-পশ্চিমের জেলাগুলি নিয়ে কুমিলস্না বিভাগ এবং 888sport app বিভাগের দক্ষেণের পাঁচটি জেলা নিয়ে ফরিদপুর বিভাগ প্রতিষ্ঠার প্রসত্মাব রয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগের একটি জেলার নাম নেত্রকোনা – সেখানে প্রায় এক হাজার বর্গমাইলের মধ্যে তিন হাজারের বেশি মসজিদ, প্রায় এক হাজারটি মন্দির, ৮৩টি গির্জা আর আটটি

বৌদ্ধ চৈত্য।

পূর্ব পাকিসত্মানের সেই নেত্রকোনায় প্রণব চৌধুরীর জন্ম ১৯৫০ সালের ১১ ফেব্রম্নয়ারি – মায়ের নাম সুচারম্ন এবং বাবার নাম ফণিভূষণ চৌধুরী। তিনি ১৯৬৫ সালে নেত্রকোনার দত্ত হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপরে ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স এবং ১৯৭২ সালে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি। নামকরা ব্যারিস্টার এবং ভারতবর্ষের আদি রাজনৈতিক নেতাদের অন্যতম আনন্দমোহন বসুর (১৮৪৭-১৯০৬) জন্ম ময়মনসিংহে। তিনি ১৮৭৮ সালে কলকাতায় সিটি কলেজ প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পরে ময়মনসিংহে তার একটি শাখা খোলেন। তাঁর পৈতৃক ভিটেয় সিটি কলেজিয়েট স্কুলের সূচনা ১৮৮৩ সালে। ১৯০৮ সালে সেটি কলেজে রূপামত্মরিত হয় এবং তার নামকরণ হয় প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতার নামে। এই কলেজ থেকেই প্রণববাবুর স্নাতক ডিগ্রি এবং পরে বাংলা বিভাগের অধ্যাপনা দিয়ে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা।

কিন্তু প্রিয় বিষয়ের অধ্যাপনা অসমাপ্ত রেখেই তাঁকে কলেজ ছাড়তে হয় আর উৎপাটিত হতে হয় জন্মভূমি থেকে। নতুন দেশে এসে আবার প্রথম ধাপ থেকে জীবন আর জীবিকাকে নতুন করে গড়ে তোলা – এই নতুনভাবে বাঁচার চেষ্টা তিনি চালিয়েছেন সম্মান ও সাফল্যের সঙ্গে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতে তাঁর স্থায়ী বসবাস।

১৯৬০-এর দশকের শেষ পর্বে তাঁর 888sport live footballচর্চার সূচনা – ছড়া, 888sport app download apk আর 888sport live। ছন্দ নিয়ে তাঁর আজীবন অনুসন্ধান এবং বেশ কয়েকটি গ্রন্থ – ছড়ার ছন্দ, ছন্দ ও অলংকার পরিচয়, ধ্বনিতত্ত্ব। এ ছাড়া 888sport live football সমালোচনার গ্রন্থ – পর্বামত্মরের 888sport app download apk, জীবনানন্দ নিয়ে 888sport live, বাংলা গদ্যের বিশেষ যুগ। ছড়াও লিখেছেন নিয়মিত – নাছোড়বান্দা, রাজার ঘোড়া, মেঘের কোলে চাঁদের মতো, নির্বাচিত ছড়া – তাঁর কয়েকটি প্রকাশিত গ্রন্থ। পশ্চিমবঙ্গে এসেও তিনি 888sport live footballচর্চা অব্যাহত রেখেছেন নানান অভিজাত পত্রপত্রিকায়। সম্প্রতি লাটসাহেবের জুতো নামে তাঁর একটি ছড়া সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। যতদূর জানি, আলোচ্য গ্রন্থটি পশ্চিমবঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় প্রকাশনা। গদ্য ও পদ্যের আরো কয়েকটি গ্রন্থের পরিকল্পনা রয়েছে।

 

তিন

ব্রিটেনের লোকসভার উদারপন্থী সদস্য চার্লস উড (১৮০০-৮৫) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অছি পরিষদের সভাপতির পদ গ্রহণ করেন ১৮৫২ সালে। দুবছর পরে তিনি গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসিকে (১৮১২-৬০) একটি জরম্নরি বার্তা পাঠান – সেই ‘উডের বার্তা’ (উড্স        ডিসপ্যাচ) ভারতবর্ষের উচ্চশিক্ষার ‘ম্যাগনা কার্টা’ – লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়কে মডেল করে দেশের প্রতিটি প্রদেশে এক-একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনা করতে হবে। সেই অনুযায়ী শিক্ষা সচিব ড. ফ্রেডরিক জন ১৮৫৭ সালে কলকাতা, বম্বে এবং মাদ্রাজে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনা করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধি ছিল দেশের একপ্রামত্ম থেকে অন্যপ্রামত্ম – লাহোর থেকে রেঙ্গুন – এক হাজার মাইলের বেশি। প্রতিষ্ঠানটির প্রথম আচার্য গভর্নর জেনারেল লর্ড ক্যানিং (১৮১২-১৮৬২) এবং প্রথম উপাচার্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জেমস কলভিল (১৮১০-১৮৮০)। ১৮৫৮ সালে প্রথম দুজন স্নাতক যদুনাথ বসু এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৮৮২ সালের প্রথম দুজন মহিলা স্নাতক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়

(১৮৬১-১৯২৩) এবং চন্দ্রমুখী বসু (১৮৬০-১৯৪৪)।

বঙ্গ প্রদেশের দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতে-হতে কেটে যায় ৬৪ বছর। ১৯২১ সালের ১ জুলাই তার প্রতিষ্ঠা। গ্রন্থের প্রথম ও

নাম-888sport liveে প্রণব চৌধুরী স্বাদু গদ্যে আলোচনা করেছেন সেই প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস এবং তার সঙ্গে জড়িত কবিদের কথা। অসংখ্য তার চরিত্র এবং অনন্য তার ঐতিহ্য। ১৯২৬ সালে সেখানে রবীন্দ্রনাথের আগমন ও অভ্যর্থনার বিবরণ জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট এবং বিখ্যাত ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের জবানিতে। যে-কোনো পরিবেশেই রবীন্দ্রনাথ করতে পারেন মনকাড়া মমত্মব্য। সিলিং ফ্যানের থেকে পুষ্পবৃষ্টি দেখে তিনি বললেন, ‘কালিদাস বর্ণনা করেছেন যে ফুলের মালা মাথায় পড়ায় ইন্দুমতীর মৃত্যু হল। এটা কি করে হতে পারে আমার মনে এই একটা সমস্যা ছিল। আজ তার সমাধান হ’ল – দেখছি ফুলের আঘাতেও মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে।’

এরপরে মোহিতলাল, নজরম্নল, বুদ্ধদেব থেকে শুরম্ন করে কবিদের মিছিল – তাঁদের কবিত্ব ও প্রেরণা, তাঁদের সাহস ও আত্মত্যাগ, তাঁদের দেশপ্রেম ও মুক্তিসংগ্রামের লড়াই। তার সঙ্গে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ – ১৯৪৭-এর স্বাধীনতা, উর্দুভাষার দমনপীড়ন,

ভাষা-আন্দোলন, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, মৌলবাদবিরোধী সংগ্রাম, ২০১৩-এর শাহবাগ। ঐতিহাসিক পটভূমিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও তার দুর্দামত্ম কবিদের কথা।

তবে ১৯৭১ প্রসঙ্গে একটি তথ্যভ্রামিত্ম বেদনাদায়ক – ‘প্রায় এক লক্ষ শরণার্থী আশ্রয় নিল ভারতে।’ (পৃষ্ঠা ১৯) আসলে শরণার্থী এসেছিলেন প্রায় এক কোটি এবং তাঁদের মধ্যে প্রায় পনেরো লাখ আর ফিরে যাননি 888sport apps স্বাধীন হওয়ার পরেও। সব মিলিয়ে শতবর্ষের দ্বারপ্রামেত্ম উপনীত এই পুণ্যতীর্থের এক অনন্য ইতিহাস। লেখকের নিজের ভাষায়, ‘নানা ঘটনার কেবল সাক্ষী নয়, চেতনার উৎস থেকে উৎসারিত জাতীয় জীবনের এক-একটি ইতিহাস।’

888sport appsের 888sport app শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও জড়িত আছেন প্রতিভাবান কবি ও 888sport live footballিকেরা – তাঁদের নিয়ে লেখা হলেও পাঠক সমৃদ্ধ হবেন।

 

চার

ছন্দ নিয়ে লেখকের ভাবনাচিমত্মা আর গবেষণা চলেছে দুই দশকের বেশি সময়। এই সংকলনে রয়েছে ছন্দবিষয়ক তিনটি 888sport live। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বড়োদের কবি, না ছোটদের কবি, সেই তর্কের মধ্যে অনুপ্রবেশ না করে লেখক তাঁর ছোটদের জন্য রচিত কাব্যগ্রন্থগুলির গভীর ও বিশদ আলোচনা করেছেন। প্রকৃতির কথা, জীবজন্তুর কথা, সমাজ-বাসত্মবতার কথা, মানবিক সম্পর্কের কথা – যে কোনো বয়েসি পাঠকেরই হৃদয়গ্রাহ্য এই বিষয়গুলি। ‘ছোটোদের তিনি দারম্নণ ভালোবাসেন, এই ভালোবাসা থেকে নিরমত্মর লেখা।’

সত্যি কথা বলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই শঙ্খ ঘোষের 888sport app download apkয় – এ-কথা তাঁর ছোটদের জন্য লেখা 888sport app download apkর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। জানা গেল অনেক নতুন তথ্য আর ভাবনা ‘শঙ্খ ঘোষের ছোটোদের 888sport app download apk : বোধ ও শৈলীর স্বতন্ত্রজগৎ’ 888sport liveটি থেকে। ‘প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধের বিতরণেও তিনি শিশুদের নিয়ে যান অন্য জগতে, কল্পনার বিশাল ক্যানভাসে।’ গোধূলির এই দৃশ্য যে-কোনো বয়েসের পাঠকের কাছেই রমণীয় :

আকাশ জুড়ে এক্ষুনি এক ঈশ্বর :

চমকে দেবেন লক্ষ রঙের দৃশ্যে।

কিন্তু যেহেতু উদ্দিষ্ট পাঠক কম বয়েসিরা, খেলাধুলো সেরে বাড়ি ফেরার পরে,

মা বলবে, ঠ্যাং দুটো কী কুচ্ছিৎ

এক গঙ্গা জল দিয়ে তাই ধুচ্ছি।

লেখকের অনুভবী সিদ্ধামেত্মর – ‘তাঁর ছোটোদের 888sport app download apk

কিশোর পাঠ্য, নাগরিক-বুদ্ধিদীপ্ত-চিমত্মনীয়।’ – সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। এটি গ্রন্থের অন্যতম শ্রেষ্ঠ 888sport live – নিবিড় পাঠে ঋদ্ধ হবেন পাঠক।

তৃতীয় রচনাটির বিষয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের 888sport app download apkয় ছন্দ। বিষয়টি বহুচর্চিত। সুপাঠ্য রচনা, তবে তার মধ্যে আমি নতুন

কোনো ভাবনা খুঁজে পাইনি।

 

পাঁচ

আরো ছটি স্বল্পপরিসরের 888sport live রয়েছে এই গ্রন্থে – তাদের নিয়ে অল্প কিছু কথা বলে নিই।

বুদ্ধদেব বসুর 888sport app download apk নিয়ে আলোচনা ও গবেষণা হয়েছে প্রচুর। কিন্তু তাঁর কৈশোরক কাব্যগ্রন্থ মর্মবাণীর ওপর খুব একটা আলোকপাত হতে দেখিনি। লেখককে ধন্যবাদ এই বিষয়টি হাতে নেওয়ার জন্য। প্রথম কাব্যগ্রন্থটি কবিকে অনুধাবনের জন্য

জরম্নরি – ‘পূর্বসূরিদের অনুসৃতি সত্ত্বেও তাঁর নিজেরটুকু হারিয়ে যাওয়া নয়।’

একটি অনুপম রচনা ‘888sport appsে রবীন্দ্রসংগীত চর্চা’ – বিষয়টি সম্পর্কে আমরা পশ্চিমবঙ্গের মানুষেরা খুব অল্পই জানি। ১৯৯৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় সুচিত্রা মিত্রের দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল তাঁর কন্যা ও জামাতা সুদেষ্ণা-তৃণাঞ্জনের অ্যাপার্টমেন্টে। তাঁর শামিত্মনিকেতনের 888sport sign up bonusচারণে উঠে এসেছিল আবদুল আহাদের কথা, তিনি ক্ষক্ষাভ প্রকাশ করেছিলেন কলিম শরাফীর গান পশ্চিমবঙ্গের মানুষ শুনতে পান না বলে। সেসব 888sport sign up bonusকে আবার উসকে দিলেন লেখক।

ভাষা বিষয়ে দুটি রচনা – ‘অভিন্ন বাংলা ভাষার এপার ওপার’ 888sport liveটি আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। দুই বাংলার শব্দ ব্যবহারের পার্থক্যের একটি তালিকা দিয়েছেন তিনি – সেটি আমাকে সাহায্য করবে খুব। 888sport appsের মানুষ যে কেন ভারতবর্ষকে ‘ইন্ডিয়া’ বলেন তার কোনো সম্যক ব্যাখ্যা এখনো পর্যমত্ম পাইনি। আর একটি উলেস্নখযোগ্য নিবন্ধ – ‘মৈমনসিংহ-গীতিকার ভাষাবিভ্রম’। – কাজী আবদুল অদুদের (১৮৯৪-১৯৭০) বিষয়ে আমার কিছুই জানা ছিল না, তাই আমাকে প্রাণিত করল ‘কাজী আবদুল ওদুদ : বুদ্ধির মুক্তি’ 888sport liveটি। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলি সংগ্রহ করে পড়ার ইচ্ছে রইল।

গ্রন্থের অমিত্মম রচনাটি জনপ্রিয়তম বাঙালি লেখক হুমায়ূন আহমেদের (১৯৪৮-২০১২) প্রয়াণলেখ। দ্যাশের মানুষের বিষয়ে সংবেদী 888sport sign up bonusচারণ। একটা বিষয়ে ধন্দ থেকেই যায়। ‘নেত্রকোণা’ অথবা ‘নেত্রকোনা’ – কোনটা সঠিক। আমি জানতাম ‘নেত্রকোনা’; লেখক লিখেছেন ‘নেত্রকোণা’। যেহেতু লেখকের জন্মস্থান, তাঁর লেখা বানানই শিরোধার্য।

 

ছয়

888sport liveগ্রন্থের একটা থিম অথবা ফোকাস থাকা সমীচীন, তাতে পাঠকের সুবিধে হয় এক 888sport live থেকে পরের 888sport liveে উত্তরণে। একটা উদাহরণ দিই – 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে এক অনুপম আলেখ্য রচনা করেছেন প্রণব চৌধুরী – সেই কাজটি চালিয়ে গেলে কেমন হয়? যতদূর জানি ১৯৪৭-এর আগে পূর্ববাংলায় আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, কিন্তু পরবর্তীকালে তো সেখানে উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটেছে অনেক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়েস ষাট পেরিয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাব্দী হতে চলেছে। এ ছাড়া রয়েছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি ও প্রযুক্তিবিদ্যার বিশ্ববিদ্যালয়। সেগুলির ইতিহাস একে-একে লিখলে কেমন হয়? ‘888sport appsে উচ্চশিক্ষার সূতিকাগার’ নামে ভবিষ্যতে একটি 888sport liveগ্রন্থ রচিত হলে পাঠক নিশ্চয়ই সমৃদ্ধ হবেন।

১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে দেখেছি, ক্যালিফোর্নিয়ায়

দুই বাঙালির প্রথম পরিচয়ের পরেই প্রশ্ন, ‘আপনে কোখ্ থিকা?  বুয়েত থিকা?’ তখন জানতাম না বুয়েত কী জিনিস – আরবি/ফারসি ভাষায় এক-একটি শেস্নাককে বলে ‘বয়েত’, ভেবেছিলাম সেই রকম কিছু – পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি সেটি প্রযুক্তিবিদ্যায় একটি উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র – ইটঊঞ – 888sport apps ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি – তার গত পাঁচ দশকের ইতিহাস লেখা যেতেই পারে।

ছোটদের 888sport app download apkর ছন্দ আর একটি গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয় এবং যতদূর জানি, স্বল্প আলোচিত। ছোটদের 888sport app download apk 888sport live footballপত্রটি এই বিষয়ে অগ্রণী – প্রণব চৌধুরী সেখানে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং শঙ্খ ঘোষের ছোটদের 888sport app download apkর ছন্দ নিয়ে গভীর ও সংবেদী আলোচনা করেছেন, সেগুলি এই গ্রন্থে সংকলিত। 888sport live দুটি পড়তে-পড়তে আমার মনে হয়েছে যে, লেখক একটা নতুন পথ দেখাচ্ছেন এবং ছোটদের 888sport app download apkর ছন্দ নিয়ে আলোচনা চলবে। রবীন্দ্রনাথ দিয়ে সূচনা করলে কেমন হয়? আমাদের আধুনিক 888sport live footballের যে-কোনো আলোচনাই তাঁকে ঘিরে শুরম্ন হয়। তার পরে সুকুমার রায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র, অন্নদাশঙ্কর রায়, বুদ্ধদেব বসু – ছন্দ-আলোচনার শতপুষ্প প্রস্ফুটিত হোক! তারপরে এখলাসউদ্দীন আহমদ, সুনির্মল চক্রবর্তী – ছন্দের আলোচনা চলুক! শ্যামলকামিত্ম দাশ, অপূর্ব দত্ত হয়ে তারপর তরম্নণতর কবিদের পালা। ভেবে দেখবেন, প্রণব চৌধুরী, ‘ছন্দের বারান্দা’ তো রয়েছেই, এবার ছোটদের ‘ছন্দের খেলাঘর’ বানালে কেমন হয়?

কয়েকটি ছাপার ভুল থাকলেও কবিতীর্থ একটি সুন্দর প্রকাশনা। যুধাজিৎ সেনগুপ্তের প্রচ্ছদে রঙের পরিশীলিত ব্যবহার প্রশংসনীয়। গ্রন্থটির সাফল্য ও জনপ্রিয়তা কামনা করি। ৎ

 

 

 

 

888sport alternative linkে সমাজ ও রাজনীতি

পলাশ মজুমদার

 

 

সমসাময়িককালে বাংলাভাষার কথা888sport live footballিকদের মধ্যে তরম্নণ লেখক স্বকৃত নোমানের সৃষ্টি নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম, যা ইতোমধ্যে পাঠকমহলকে কৌতূহলী করে তুলেছে। দৃষ্টিগ্রাহ্য মাত্রা সংযোজন করে 888sport alternative linkে তিনি সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছেন নিজস্ব 888sport live chatরীতি ও নির্মাণশৈলী। বলা যায়, পূর্বসূরি কাউকে অনুসরণ বা অনুকরণ না করে সম্পূর্ণ নিজস্ব একটি ধারা তৈরি করতে তিনি নিভৃতে সাধনা করে চলেছেন। কালকেউটের সুখ স্বকৃত নোমানের তেমনি এক ব্যতিক্রমধর্মী প্রয়াস। তাঁর 888sport app 888sport alternative linkের মতো এটিও বিষয়বস্ত্ত, ঘটনার বিশেস্নষণ, চরিত্রচিত্রণ, বর্ণ888sport promo codeতি ও গ্রামীণ প্রেক্ষাপটসহ সব বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। উপস্থাপনার সাবলীলতা ও বিশেস্নষণধর্মী গতিময়তা 888sport alternative linkটিকে করে তুলেছে প্রাণবমত্ম ও সুখপাঠ্য।

লেখকের মানবিক মূল্যবোধ, ইতিহাস-সচেতনতা, অসাম্প্রদায়িক ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি, ভিন্নমতের প্রতি 888sport apk download apk latest version, সব মত ও পথের প্রতি নিরপেক্ষ বিচারবোধ 888sport alternative linkটিকে প্রতিষ্ঠা করেছে অনন্য উচ্চতায়। ইতিপূর্বে বা বর্তমানে আর কারো 888sport alternative linkে এমন বিষয় এভাবে উঠে আসেনি। 888sport alternative linkের ভূমিকায় উলেস্নখ আছে, ‘কালকেউটের সুখ মূলত 888sport appsের সাম্প্রদায়িকতা, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নীরব দেশত্যাগ

এবং… প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর উত্থানকেন্দ্রিক একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক 888sport alternative link। গরানপুরের পটভূমিকায় লেখক ধরেছেন 888sport appsের বাসত্মবতা। 888sport live chatিত ভাষা ও আঙ্গিকে বাসত্মবতাকে দিয়েছেন 888sport live chatরূপ।’

সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানাধীন সুন্দরবন-ঘেঁষা গ্রাম গরানপুর, যেখানে মূলত বাস করে মৌয়াল বাওয়ালি জেলে কিষান, যাদের জীবিকার প্রধান অবলম্বন সুন্দরবন। শিক্ষা ও সভ্যতাবিবর্জিত 888sport appsের এই প্রামিত্মক জনপদের মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ও জীবনযাপন চিত্র কালকেউটের সুখ 888sport alternative linkটির উপজীব্য। মুক্তিযোদ্ধা কেশবচন্দ্র ম-ল ও তার পরিবারকে কেন্দ্র করে 888sport alternative linkটির কাহিনি এগিয়ে গেছে। কেশব মাস্টারকে 888sport alternative linkটির মূল চরিত্র বললেও অতিশয়োক্তি হবে না। চরিত্রটি 888sport alternative linkের অন্য চরিত্রগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে, যেন কেশব মাস্টারই 888sport alternative linkটির প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। অন্যসব চরিত্র তাঁকে কেন্দ্র করে আবর্তিত।

একটি জনপদের মানুষের জীবন-সংগ্রামের কাহিনি চিত্রায়ণ করতে গিয়ে লেখক 888sport alternative linkটির নামকরণে কিছুটা অপারদর্শিতার প্রমাণ দিয়েছেন। যে-স্বাধীনতাবিরোধীদের তিনি কালকেউটে বলে অভিহিত করেছেন এবং এ-নামে 888sport alternative linkটির নামকরণ করেছেন তাদের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে কেশব মাস্টার, তার পরিবার ও পরিবারকেন্দ্রিক

ঘাত-প্রতিঘাত, একই সঙ্গে অত্রাঞ্চলের     হিন্দু-মুসলমান জনগোষ্ঠীর জীবমত্ম সমাজচিত্র।

পিতা অনমত্মচন্দ্র ম-লকে মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান না হওয়ার অপরাধে পাকসেনাদের হাতে প্রাণ দিতে হয়। অথচ তার দুই মেয়ে প্রেমে পড়ে পূর্বপুরম্নষের ধর্ম ছেড়ে মুসলমান ছেলে বিয়ে করে হয়ে যায় মুসলমান। তিনি নিজেও শেষ পর্যমত্ম কোনো রহস্যজনক কারণে মুসলমান হয়ে নাম নিয়েছিলেন ‘কিশোয়ার ম-ল’, যদিও বিষয়টি 888sport alternative linkের শেষ পর্যমত্ম রহস্যাবৃত ছিল। ‘পুরো ব্যাপারটাই রহস্যঘেরা। যে মানুষ হিন্দু সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি 888sport apk download apk latest versionশীল, রামায়ণ-মহাভারত আর উপনিষদের শত শত শেস্নাক যার মুখস্থ, যার বাবা মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও ধর্ম ত্যাগ

করতে রাজি হননি, দুই মেয়ে মুসলমান হয়ে যাওয়ায় যিনি তাদের মেয়ে বলে স্বীকার করতে রাজি নন, তার হঠাৎ মুসলমান হয়ে যাওয়াটা রহস্যের বৈকি।’

অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী, সংস্কারমুক্ত, প্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী এই মানুষটির বৈচিত্র্যময় জীবনে একের পর এক ধাক্কা লাগলেও তিনি ভেঙে পড়েননি, হয়তো ভেতরে ভেতরে কষ্টের বাণে জর্জরিত ছিলেন, যার কোনো বহিঃপ্রকাশ ছিল না। তার দুই মেয়ের ধর্ম ত্যাগ তার হৃদয়কে খানখান করে দিলেও তিনি নিজের আদর্শে অটল ছিলেন এবং তখন স্ত্রী চারম্নবালাকে মনোবল জুগিয়ে অসীম দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। 888sport alternative linkের শুরম্নতেই লেখক জানিয়েছেন, ‘মানুষ হিসেবে তিনি কিছুটা ভিন্ন ধাঁচের। এই কাহিনির পটে যেসব মানুষ দেখা যাবে তাদের চেয়ে তিনি আলাদা, অথবা তারা তার চেয়ে আলাদা। দূর গ্রামের একটা মানুষ, যে কোনোদিন তাকে দেখেনি, লোকমুখে কেবল তার নাম শুনেছে, সেও তাকে আলাদা করে চিনে নিতে পারবে।’

নিজের বাড়ির আঙিনায় গ্রামের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য পাঠশালা খুলে, বিনে পয়সায় চিকিৎসা দিয়ে তিনি সমাজের এক অনন্য ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন, যা হিন্দুবিদ্বেষী ও স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মান্ধগোষ্ঠী মেনে নিতে পারেনি। চৌষট্টির দাঙ্গায় নিহত তার আত্মীয় প্রসূন মাইতির পরিত্যক্ত ভিটায় স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে শুরম্ন হয় তার বিরম্নদ্ধে বিভিন্নমুখী ষড়যন্ত্র। নিজের গোয়ালের গরম্ন খোয়ানো ও নদীর চরে গরম্নর রক্তের দাগ দেখা, বাড়ির খড়ের গাদায় আগুন, বাড়ির চালে ঢিল এবং সর্বোপরি বেনামি চিঠি দিয়ে দেশত্যাগের ও জীবননাশের হুমকি তার মনোজগতে এমন পরিবর্তন আনে যে, তিনি ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে যান। তবু এক রাতে তিনি গুম হয়ে যান। দোষ চাপানো হয় এলাকার হিন্দুদের ওপর, হিন্দুধর্ম ত্যাগ করায় তারাই কুখ্যাত মোছলেম ডাকুকে দিয়ে তাকে খুন করায়। এই অজুহাতে ধর্মান্ধ উগ্রবাদীরা শুরম্ন করে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা। শুরম্ন হয় দেশত্যাগের স্রোত। 888sport alternative linkটি এখানে শেষ হয়ে যেতে পারত, কিন্তু তার স্ত্রী চারম্নবালার মৃত্যুর পর পুত্র গোপেশচন্দ্র ও ছোট মেয়ে তাপসীর জীবন-সংগ্রামের মাধ্যমে লেখক যবনিকা টানতে গিয়ে পাঠককে এক অতৃপ্তির মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন, যেন শেষ হয়েও হলো না শেষ।

এমন পরিসমাপ্তি ছোটগল্পে প্রযোজ্য হলেও 888sport alternative linkের ক্ষেত্রে কাম্য নয়। অস্পষ্টতায় উপসংহার, ‘আমরা জানি না তাপসী আর কোনোদিন গরানপুরে ফিরবে কি না। গোপেশ ফিরবে কি না তারও কিছু জানি না। জানার মধ্যে জানি শুধু এটুকু, চুনকুড়িতে জোয়ার আসবে, ভাটা পড়বে। প্রতি জ্যোৎস্নার রাতে মুকনোলির প্রামত্মরে এক অপার্থিব মায়া খেলা করবে। আর অনুমান করতে পারি, তখন সেই মায়াবী জ্যোৎস্নার রাতে অনমত্ম ম-ল ও কেশব ম-ল ওরফে কিশোয়ার মাস্টারের অশরীরী আত্মা চুনকুড়ির আড়ায় দাঁড়িয়ে বিরান ম-লবাড়ি বা বেদখল ম-লবাড়ির দিকে তাকিয়ে গুমরে গুমরে কাঁদবে।’

লেখকের অসাধারণ তুলির অাঁচড়ে প্রতিটি ঘটনা এমন জীবমত্ম হয়ে উঠেছে, যা পাঠকের হৃদয়কে আন্দোলিত করে, কখনো করে রোমাঞ্চিত, বেদনাহত। তবে প্রতিটি ঘটনার আকস্মিকতা পাঠককে হঠাৎ একটু ধন্দে ফেলে দেয়। যেমন 888sport alternative linkের শুরম্নতে কেশবচন্দ্রের স্কুল প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ থেমে যায় পরপর দুটি ঘটনায় : বড় মেয়ে নমিতার প্রাইভেট মাস্টার হালিমের সঙ্গে পলায়ন এবং তার কিছুদিন পরই মেজো মেয়ে দীপিকার নিজ স্কুলের শিক্ষক কাদিয়ানি মতাদর্শী দিদারের সঙ্গে গৃহত্যাগ ও ধর্মামত্মর। সেই ঘটনাগুলো টানতে গিয়ে তিনি এমনভাবে তার পেছনের ঘটনা নিয়ে এসেছেন যেন প্রয়োজনীয়তাই ঘটনাগুলো সৃষ্টি করেছে। মনে হলো, কেবল 888sport alternative linkের কলেবর বৃদ্ধির জন্য তিনি কাহিনি সৃষ্টি করেছেন।

কেশব ম-ল নিখোঁজ হওয়ার পর ধর্মামত্মরিত মেয়েদের জামাইসহ বাড়িতে এসে অবস্থান নানা ঘটনার জন্ম দেয়। হিন্দু, মুসলমান, কাদিয়ানি, সুন্নি ও আহমদিয়া মতবাদকে একসঙ্গে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে লেখক কারো পক্ষাবলম্বন না করে খুব সচেতনভাবে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করেছেন। লেখকের উদার দৃষ্টিভঙ্গি বিভিন্ন মতবাদীদের স্বরূপ উদ্ঘাটন করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। ধর্ম যে অত্যাবশ্যকীয় ব্যাপার নয় বরং একটা অভ্যাস ও অনুসরণের ব্যাপার তাই যেন তিনি সচেতনভাবে তুলে ধরতে প্রয়াস চালিয়েছেন, যদিও লেখকের উদ্দেশ্য অস্পষ্ট।

ছবেদালি মোড়ল যে ১৯৭১ সালে শামিত্ম কমিটির নেতা ছিল ও ডেয়ারিং ছবু নামে এলাকায় পরিচিত ছিল, এটি 888sport alternative linkটির একটি উলেস্নখযোগ্য চরিত্র। তার গুরম্ন জিয়ারত আলী ও তার প্রচেষ্টায় গরানপুরে ধীরে ধীরে স্বাধীনতাবিরোধীদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। যুদ্ধের পর পালিয়ে গিয়ে পাঁচ বছর গা-888sport app দিয়ে হঠাৎ একদিন তারা এলাকায় আবির্ভূত হয় এবং সাধারণ মানুষকে ধর্মের আফিম খাইয়ে হেদায়াতে ইসলামির শাখা প্রতিষ্ঠা করে। একে একে পুরো জেলায় কমিটি গঠন করে কর্মী-সমর্থকদের 888sport free bet বাড়াতে থাকে। দীর্ঘদিনের ইউপি চেয়ারম্যান খসরম্ন চেয়ারম্যানকে পরাজিত করে ছবেদালি মোড়ল নিজেদের প্রভাব আরো জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করে। গরানপুরের দেশামত্মরিত হিন্দুদের ভিটে জাল দলিলের মাধ্যমে দখলকারী ও কুচক্রী আলাউদ্দিন হয়ে উঠে তার ডান হাত।

কেশব মাস্টার নিখোঁজ হওয়ার পর তারা মাস্টারের ধর্মামত্মরের কারণকে দায়ী করে হিন্দুদের বাড়িঘর লুট করে, মন্দিরে আক্রমণ করে। অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অজুহাতে গরানপুর-হরিনগরে তারা দাঙ্গা বাধায়। হিন্দুরের বাড়িঘর ও মন্দিরে যে হামলা হয় তার নেতৃত্বে থাকে হেদায়াতে ইসলামির নেতা ছবেদালি, মসজিদের ইমাম গোফরান মৌলানা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নীরব দেশত্যাগের কাহিনি লেখকের সংবেদনশীল কলমের অাঁচড়ে মানবতাবাদী মানুষকে ব্যথিত করে। অমানবিক সমাজেও আতা মৌলভি, জাবেদ খান ও খসরম্ন চেয়ারম্যানদের মতো মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ থাকে, যাদের মন প্রতিবেশী হিন্দুদের দেশত্যাগে ব্যথিত হয়।

বন্ধুপুত্র বিপিন যেদিন কেশব মাস্টার হত্যা-মামলার হাত থেকে বাঁচতে দেশত্যাগ করে সেদিন হরিনগর বাজারে আতা মৌলভির বক্তব্য মানুষকে অশ্রম্নসিক্ত ও বেদনাহত করে। আতা মৌলভি, যিনি আগুনি হুজুর নামে পরিচিত, যাকে এলাকার লোকজন ভালো চোখে দেখে না, তার একাত্তরে চারজন পাকসেনা পুড়িয়ে মারার ঘটনা ও মানবতাবাদ নিঃসন্দেহে সংকীর্ণতার মাঝে সাহসিকতা ও শৌর্যের প্রকাশ।

মোছলেম তালুকদার 888sport alternative linkটির আরেকটি উলেস্নখযোগ্য চরিত্র। মুক্তিযোদ্ধাপুত্র হয়েও হেদায়াতে ইসলামির নেতা খুন করে সে হয়ে ওঠে দুর্ধর্ষ বনদস্যু, যার রয়েছে শত শত সাগরেদ। তার ছত্রছায়ায় সুন্দরবনের আশপাশে ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা হয়েছে এবং তার নাম শুনলে

দিনে-দুপুরে মানুষের গা কাঁপে। অথচ কেশব মাস্টার অপহরণ-ঘটনায় তার ভূমিকা একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রতি 888sport apk download apk latest versionর নিদর্শন। জেলখানায় কেশব ম-লের পুত্র গোপেশকে পেয়ে সে কিছু বলতে গিয়েও না বলা একজন অপরাধীর ভেতরকার মহত্ত্ব প্রকাশ করে।

ঘটনার প্রয়োজনে অসংখ্য চরিত্রের আবির্ভাব ঘটিয়েছেন লেখক। অনেক ক্ষেত্রে 888sport alternative linkটিকে চরিত্র-ভারাক্রামত্ম বলে প্রতীয়মান হয়। আবার প্রায় সব চরিত্র কিছু কৃতিত্ব দাবি করে ঘটনা পরম্পরায়। জাবেদ খান, খসরম্ন চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা চৈতনদাস, ভক্তদাস, নিবারণ সাধক, মাজেদ গাইন, আজিবর বাওয়ালি, রাখাল ময়রা, মহেশ্বর, রাধামাধব, বিপিন, জগতী বেওয়া, শৈলেন, মোতালেব, জিয়ারত আলী, গোফরান মৌলানা, মহববত সাজুনি, কোবাত মাঝি, গোলাপ গাজী, পচাব্দী গাজী, ছেরম্ন, চারম্নবালা, নমিতা, দীপিকা, তাপসী, গোপেশ, হালিম, দিদার, খালেক ব্যাপারী, জালালুদ্দিন, নাজমুল দারোগাসহ আরো অনেক চরিত্রই 888sport alternative linkে কোথাও না কোথাও গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। হয়তো এটা লেখকের নিজস্ব ঢং বা বর্ণ888sport promo codeতি। তথাপি পাঠকের মনে কখনো তা বিরক্তির উদ্রেক করে।

অসংখ্য মিথ, উপমা, লোকজ প্রবাদ, স্থানীয় বিশ্বাস ও ধ্যান-ধারণা 888sport alternative linkটিতে একটা ভিন্নযাত্রা সংযোজন করেছে, যেন লেখক দীর্ঘদিন ওই সমাজে বসবাস করে সমাজচিত্রকে তুলে ধরায় ব্রতী হয়েছেন। হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের শাস্ত্রীয় বিষয়গুলোকে তিনি প্রয়োজনানুযায়ী এমন স্থানে ব্যবহার করেছেন, যা পাঠকের মনে তার অধীত জ্ঞানের প্রতি 888sport apk download apk latest versionশীল করে তোলে। ওই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাপন প্রণালিতে বনবিবি, দক্ষেণ রায় ও শাজঙ্গলীর ভূমিকা অতি সুনিপুণভাবে তিনি তুলে ধরেছেন। যেমন – পুবের বনে বাঘের পিঠে চড়ে আঠারো ভাটি শাসন করে বনবিবি। দক্ষেণ রায় বাঘের পালকে তাড়িয়ে দক্ষেণের জঙ্গলে জড়ো করে। শাজঙ্গলী মানুষের রূপ ধারণ করে বাঘ চালানের মন্ত্র দিয়ে যায়। তবু বনজীবীরা হারিয়ে যায়, গুম, খুন হয়ে যায়। বাঘ কুমিরের শিকারে পরিণত হয়।

মূলত কালকেউটের সুখ একটি সমাজভিত্তিক রাজনৈতিক 888sport alternative link। স্বাধীন 888sport appsের গ্রামীণ সমাজে ধর্মীয় অনুভূতি ও উন্মাদনা কাজে লাগিয়ে কীভাবে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা হয় – তাই স্বকৃত নোমান 888sport alternative linkটিতে তুলে ধরতে সচেষ্ট ছিলেন। 888sport free betগুরম্ন মুসলমানের দেশে 888sport free betলঘু হিন্দুরা কীভাবে নির্যাতিত হয়, কেন ধর্মামত্মরিত হয়ে

বাপ-ঠাকুরদা চৌদ্দপুরম্নষের ধর্ম ত্যাগ করে, ধর্ম ছাড়তে না পারলে কীভাবে নীরবে দেশ ছাড়ে, তাদের পরিত্যক্ত ভিটেমাটি কীভাবে বেদখল হয়ে যায়, কীভাবে কালকেউটের মতো বিষধর স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে 888sport appsে, তারই একটি খ-চিত্র ঔপন্যাসিক 888sport alternative linkটিতে অাঁকতে চেয়েছেন। এখানে প্রকাশ পায় লেখকের অসীম সাহসিকতা, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি দায়বদ্ধতা, মানবিকতা এবং ধর্মের নামে সমাজে প্রচলিত নোংরামি তুলে ধরার সদিচ্ছা। যে

সৎ-সাহসের ওপর ভর করে তিনি এমন একটি বাসত্মবভিত্তিক ও সময়োপযোগী 888sport alternative link রচনা করেছেন তা নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। ৎ

 

 

 

মেধা ও প্রজ্ঞার অমেয় যুগলবন্দি

অনুপম আচার্য

 

মূলত live chat 888sportকার হিসেবেই তানভীর মোকাম্মেলের খ্যাতি ও পরিচিতি। সেই পরিচিতির ব্যাপ্তি এখন তাঁর নিজের দেশ 888sport apps পেরিয়ে আমত্মর্জাতিক। তাঁর অশেষ মেধাসম্পন্ন প্রামাণ্য তথা কাহিনিচিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে তিনি 888sport appsের live chat 888sportধারায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। মূলধারার প্রতিকল্পে এ-ধরনের সাহসী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের live chat 888sportবোদ্ধা তথা সুস্থধারার দর্শকবৃন্দ। সফল live chat 888sportকার ছাড়াও তাঁর যে একটি লেখকসত্তা আছে, সেই পরিচিতিও তাঁকে বোদ্ধামহলে কমবেশি আদরণীয় করে তুলেছে। তাঁর live chat 888sportবিষয়ক 888sport liveের বই live chat 888sportকথা, live chat 888sportনন্দনতত্ত্ব ও বারোজন ডিরেক্টর, সিনেমার 888sport live chatরূপ ও চার্লস চ্যাপলিনকে নিয়ে গ্রন্থ ভবঘুরের দিগ্বিজয় ইতোমধ্যেই পাঠকমহলে আদৃত। এছাড়া তাঁর দীর্ঘ গবেষণালব্ধ সৈয়দ ওয়ালীউলস্নাহ, সিসিফাস ও 888sport alternative linkে ঐতিহ্যজিজ্ঞাসা ছাড়া গ্রম্নন্ডভিগ ও গণশিক্ষা, মার্কসবাদ ও 888sport live football, ক্ষেতমজুর আন্দোলন : শ্রেণীগত ও রাজনৈতিক তাৎপর্য ইত্যাদি গ্রন্থে ছড়িয়ে আছে তাঁর প্রজ্ঞা ও মেধার ছাপ।

অতিসম্প্রতি বিশিষ্ট প্রকাশনা ‘আদম’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে তানভীর মোকাম্মেলের 888sport live শীর্ষক দশটি মননশীল 888sport liveের এক মূল্যবান সংকলন। নানা সময়ে লেখা ও প্রকাশিত 888sport liveগুলোর এই সংকলন তার বিষয়বৈগুণ্যে ইতোমধ্যেই বুধজনতার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। লালন থেকে রবীন্দ্রনাথ, শেক্সপিয়র থেকে শরৎচন্দ্র-তারাশঙ্কর হয়ে কার্ল মার্কস – আমেত্মানিও গ্রামসি অবধি তাঁর এই পরিক্রমা শুধু কৌতূহলোদ্দীপকই নয়, ভাবারও।

প্রথম 888sport liveেই তানভীর মোকাম্মেলের মুক্ত উদার মার্কসবাদী মনন ও চেতনার আভাস মেলে। বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্তের চেতনার বিকাশ প্রসঙ্গে তিনি ইতিহাসের চুলচেরা বিশেস্নষণ করে অত্যমত্ম মোহমুক্ত মনে পিছিয়ে-পড়া বাঙালি মুসলমানদের একটি স্বচ্ছ চিত্র উপহার দিয়েছেন। এই উপমহাদেশের দুই সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিভেদ ও বিদ্বেষের কারণগুলো সন্ধান করে তিনি দেখিয়েছেন বিভ্রামত্ম বাঙালি মুসলমান সম্প্রদায়ের আত্মবঞ্চনার স্বরূপ। এমনকি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের 888sport free betগুরম্ন হওয়া সত্ত্বেও সঠিক রাজনৈতিক পরিবেশের অভাবে কীভাবে তাঁরা পিছিয়ে পড়ছেন, তারও একটি চিত্র আমরা এই 888sport liveে পাই। তানভীরের লেখার প্রধান জোর তাঁর যুক্তিগ্রাহ্যতা ও সত্যানুসন্ধানের মোহমুক্ত মানসিকতায়। তাঁর ঝোঁক মুক্তবুদ্ধি ও 888sport apkমনস্কতায়। বস্ত্তত 888sport appsের বিকাশোন্মুখ অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতির কোন ধারা সমাজকে পুষ্ট করবে, সে-কথা বলবে আগামী দিন। লেখকের সঙ্গে আমরাও একটি স্বাধীন বঙ্গভূমির একটি বৃহৎ জনজাতির সমৃদ্ধি ও প্রগতির অপেক্ষায় আছি।

শিক্ষা প্রসঙ্গে বারবার রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ আসে। রবীন্দ্রনাথ সঠিকভাবেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার গলদ ধরতে পেরেছিলেন। তাঁর সারাজীবনের কর্মকৃতির মধ্যে শিক্ষা নিয়ে দেশজ অথচ উন্নত এক ব্যবস্থার ঝোঁক ছিল। গোটা শামিত্মনিকেতনটাই তার একটা বড় উদাহরণ। বিশ্বায়নের ফলে একধরনের লোভ ও জিগীষা মানুষকে গ্রাস করেছে, যার ফলে লক্ষণীয়ভাবে এক ভোঁতা সংস্কৃতি দুনিয়া জুড়ে তার ডালপালা মেলছে। এরই মধ্যে তানভীর অনুভব করেছেন রবীন্দ্রনাথের উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার প্রায়োগিকতাকে। তিনি লিখেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিমত্মার বহুবৈচিত্র্যময় সকল দিকগুলোকে সামগ্রিকভাবে বুঝতে আমাদের হয়তো আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেগে যাবে, সেসব বাসত্মবায়ন করা তো আরো দূরের ব্যাপার। তবে সেটা বাসত্মবায়ন করতে পারলে তা হবে এমন এক স্বপ্নযাত্রা যে এষণা মূল্যবান এবং এক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্যে যে সম্পদ ও সময়ের ত্যাগের প্রয়োজন পড়বে, সঠিক মানবসম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে তার মূল্যটা সুদে-আসলেই একদিন ফেরৎ আসবে, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।’

লালন সম্পর্কে তানভীরের সন্ধিৎসা ও জুগুপ্সা এক উত্তুঙ্গ বোধ ও প্রজ্ঞার দাবিদার। লালনকে নিয়ে তাঁর প্রামাণ্যছবি অচিনপাখি এবং পূর্ণদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্র লালন তার বড় প্রমাণ। দুটি ছবি নির্মাণের মধ্যকার ব্যবধান আট বছর। এই ব্যবধান তাঁর আগ্রহের প্রাবল্য জ্ঞানপিপাসু চেতনার পরিচায়ক। প্রখ্যাত লালন-বিশেষজ্ঞ সুধীর চক্রবর্তী তানভীরের এই অন্বেষা ও নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তানভীর মোকাম্মেল এখনকার জাগ্রত চেতনার 888sport apps খ– একজন প্রকৃত শিক্ষেত লোকায়তের সত্যান্বেষী। তাঁর মুক্তমনের চর্যা ধর্মশাস্ত্রমুক্ত ও বিচারপ্রবণ। লালনের জীবন ও গান তাই তাঁর কাছে একটা গ্রন্থপাঠের মতো সজীব আর আবিষ্কারের আততিতে ভরা, সেজন্য তাঁর সৃজিত লালন চিত্রায়ণ ঠিক লোক-দেখানো ছায়াবাজি নয়, একটা জায়মান ও পরম্পরিত ডিসকোর্স।’ এই গ্রন্থে সন্নিবেশিত তানভীরের ‘লালন ফকিরের উপর সুফিবাদের প্রভাব’ 888sport liveে সেই আবিষ্কারের আততি এবং মেধার এক অমেয় উদাহরণ। দুই সম্প্রদায়ের আচার-আচরণ, মিল-অমিল ও বিশ্বাসের অনুপুঙ্খ এই আলোচনাটি এই গ্রন্থের সম্পদ।

এই  গ্রন্থের একটি গুরম্নত্বপূর্ণ 888sport live ‘শেক্সপিয়র ও তাঁর নাটকের মেঠো দর্শক’। এই মেঠো দর্শক কারা? স্বয়ং শেক্সপিয়র যাঁদের বলেছেন, ‘দি মোস্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং মেন’ তাঁদের সম্পর্কে লেখক বলেছেন, ‘…তাদের ছিল না কোনো বসার আসন। স্রেফ মাটিতেই বসতে হত। ‘মেঠো’ কথাটির উৎপত্তিও সেখান থেকেই। তবুও দেখা গেছে, এই নিতামত্ম অশিক্ষেত খেটে খাওয়া মানুষেরাই ছিল শেক্সপিয়রের নাটকের সবচেয়ে সমঝদার দর্শক।’ প্রকৃত অর্থে এঁরা কারা? সত্যি-সত্যি কী পেত তাঁরা ওইসব নাটকে, যার জন্যে রাতের পর রাতের ওই নাটকগুলো দেখতেন নিজের শ্রমলব্ধ বহু কষ্টের অর্থের বিনিময়ে। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে লেখক ‘এলিজাবেথীয়’ যুগের আর্থসামাজিক যুগের পরিকাঠামো নিয়ে একটি মূল্যবান আলোচনা করেছেন। উত্তর খুঁজেছেন তাঁর সেই প্রগাঢ় প্রশ্নের – কেন নিজ মাতৃভূমি ব্রিটেনের চেয়েও শেক্সপিয়র জনপ্রিয় সোভিয়েত ইউনিয়ন বা চীনে। বুর্জোয়া বুদ্ধিজীবীদের প্রাতিষ্ঠানিকতার কবল থেকে মুক্ত করে শেক্সপিয়রকে বাঁচিয়ে রাখবেন এই তথাকথিত ‘মেঠো’ দর্শক – এ-কথাটাও বেশ জোরের সঙ্গেই বলেছেন লেখক।

আমাদের দেশে ‘অর্ধেক আকাশ’ অর্থাৎ 888sport promo codeর অবস্থান নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। মনুসংহিতায় যেখানে 888sport promo codeকে বলা হয়েছে ‘নরকের দ্বার’ সেখানে পুরম্নষশাসিত সমাজে 888sport promo codeর জায়গা একেবারে তলানিতে, সে তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে যেসব বিধান পুরম্নষের রচনা – সেখানে তো 888sport promo codeকে রাখা হয়েছে দাসি-বাঁদীর অনাদরে। আজো যে-দেশে কন্যাভ্রূণ হত্যা থেকে সতীদাহের পক্ষে সওয়াল করা হয় সেখানে চিত্রাঙ্গদার ‘নহি দেবী, নহি সামান্যা 888sport promo code’ যে একটি হাস্যকর সংলাপ, সে তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রবীন্দ্রনাথ 888sport promo codeকে দেখেছিলেন অন্যরূপে, তাই চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাটকের শেষে অমন অসাধারণ সংলাপ দিতে পেরেছিলেন,

সে নহি নহি,                              পূজা করে মোরে রাখিবে ঊর্ধ্বে,

সে নহি, নহি,                             হেলা করে মোরে রাখিবে পিছে,

সংকটে সম্পদে,         যদি পার্শ্বে রাখো মোরে

সহায় হতে                 সম্মতি দাও যদি কঠিন ব্রতে,

মোরে …                   পাবে তবে তুমি চিনিতে

কিন্তু 888sport live footballের 888sport promo code আর বাসত্মবের 888sport promo code যে আলাদা, তা আমরা প্রতিনিয়ত বুঝি বধূহত্যা তথা অ্যাসিডদগ্ধ 888sport promo codeদের দুরবস্থা দেখে। তানভীর পুরাণ ও 888sport live footballের নানা উদাহরণ টেনে আমাদের দেশের 888sport promo codeদের ক্ষীয়মাণ আত্মবিশ্বাস ও মর্যাদাবোধের দিকটিকে চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের মানসিক দীনতার উন্মোচনে পুরাণ ও 888sport live footballের নতুন মূল্যায়ন করে 888sport promo codeর ওপর চাপানো সমসত্ম শোষণ-বঞ্চনার সূক্ষ্ম সত্মরগুলোকে চিহ্নিত ও অনাবৃত করতে চেয়েছেন তাঁর এই মূল্যবান 888sport live ‘মিথলজি চিত্রাঙ্গদা কমপেস্নক্স ও আমাদের 888sport live footballে 888sport promo code’-এ। এটি এই গ্রন্থের একটি মূল্যবান সংযোজন।

সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে তানভীর এই গ্রন্থে তারাশঙ্কর ও শরৎচন্দ্রের 888sport live footballের মূল্যায়ন করেছেন দুটি আলাদা 888sport liveে। তারাশঙ্করের প্রথম ত্রিশ বছরের 888sport live footballকর্মে তাঁর যে রাজনৈতিক চেতনা ও দেশজ গভীরতা প্রকাশ পেয়েছিল তানভীর তার চুলচেরা বিশেস্নষণ করে দেখিয়েছেন – এই তারাশঙ্করই প্রকৃত সৃষ্টা। বীরভূমের লালমাটির স্পর্শে যার লেখা হয়ে উঠেছে প্রাণবমত্ম। অন্যদিকে শরৎচন্দ্রের পথের দাবী 888sport alternative linkটিকে সামনে রেখে তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও তাঁর সীমাবদ্ধতাকে স্পষ্ট করেছেন তানভীর। যুগের দাবি মেটানো এসব 888sport live footballকর্ম যে শেষ পর্যমত্ম চিরায়ত একটি মূল্য বহন করে না, সে-কথা জানাতে কসুর করেননি লেখক।

এই গ্রন্থের অন্যতম সম্পদ তানভীরের মার্কসবাদ-সংক্রামত্ম তিনটি 888sport live। 888sport liveগুলোর নামকরণেই এর বিষয়বস্ত্ত বিধৃত – ১) এলিয়েনেশন, মার্কসবাদ ও প্রসঙ্গ 888sport live football, ২) মার্কসীয় নন্দনতত্ত্ব ও প্রসঙ্গ 888sport live football, ৩) গ্রামসি, মার্কসবাদ ও প্রসঙ্গ সংস্কৃতি। তিনি একসময় যে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকেও পড়াশোনার ব্যাপারটা চালিয়ে গেছেন এবং নিজের বোধ-বুদ্ধিকে শাণিত করেছেন, এগুলো পড়লেই তা বোঝা যায়। তবে মার্কসবাদের প্রসঙ্গ এখানে এসেছে মূলত 888sport live football ও সংস্কৃতির যোগসূত্র নিয়ে। তিনটি 888sport liveেই তাঁর স্বচ্ছ চিমত্মাচেতনার ছাপ স্পষ্ট। বিষয়গুলো এতই গভীর ও ব্যাপক যে, এ নিয়ে বহুসত্মরীয় আলোচনা পাঠক আশা করেন। বলা বাহুল্য, লেখক সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছেন। লেখাগুলো পড়লেই তাঁর চিমত্মাচেতনা তথা মনোভঙ্গির একটি স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায়।

পরিশেষে লেখকের কাছে আমাদের দুটি লেখার জন্যে আবেদন জানাতে চাই। এক) 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধ ও দুই) দেশভাগ – এই দুটি বিষয়ে আমরা তাঁর সুচিমিত্মত মতামত জানতে আগ্রহী। অতিসম্প্রতি তিনি ১৯৭১ নামে একটি উচ্চাঙ্গের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। এছাড়া দেশভাগ নিয়ে তিনি বর্তমানে আরেকটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করছেন। অনুমান করি, এই দুটি বিষয়েই তিনি যথোপযুক্ত গবেষণা করেছেন। তাই এই গ্রন্থের পরবর্তী সংস্করণে আমরা এই দুটি বিষয়ে তাঁর সুচিমিত্মত লেখন দেখতে পেলে খুশি হব।

এই গ্রন্থের জন্যে একটি অপরূপ প্রচ্ছদ এঁকেছেন হিরণ মিত্র। তাঁকে সাধুবাদ জানাতেই হবে। আর অঙ্গসৌষ্ঠব, কাগজের মান ও মুদ্রণের জন্যে ‘আদম’ প্রকাশনকে ধন্যবাদ জানিয়েও মুদ্রণ প্রমাদের দায় থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করা যাবে না। ৎ

 

 

 

 

 

আভিজাত্যময় গদ্যভাষা ও নাটকীয় আবহ

পিন্টু রহমান

 

 

মানুষের ইতিহাস বস্ত্তত পরিবর্তনের ইতিহাস। সময়ের সঙ্গে পালস্না দিয়ে সমাজ, পরিবেশ-প্রতিবেশ নিরমত্মর বদলে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনাচার, রম্নচিবোধ, অনুভূতিবোধ। বদলে-যাওয়া সময় একজন লেখকের ওপর নিবিড় প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। ফলে ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক সব ধরনের অনুভব লেখকের হাতে ইতিহাসের খ-াংশ হয়ে যায়। সময়ের ওই ধারাবাহিকতায় কবি ও কথা888sport live footballিক সরকার মাসুদ তাঁর তৃতীয় গল্পগ্রন্থ অপমানের দিন রচনা করেছেন।

888sport app download apk, 888sport alternative link, নাটক, 888sport live, নিবন্ধ, ছড়া – 888sport live footballের মাধ্যমে যাপিত সময়ের অভিজ্ঞতাই মুখ্য। তবে সময়কে ধারণ করার ক্ষেত্রে গল্পের গুরম্নত্ব অন্যরকম। লেখকের জীবনবোধ, ভাষাবোধ ও পরিমিতিবোধের ওপর নির্ভর করে গল্পের সার্থকতা। গল্পকার গল্প লেখেন তাঁর বিবেকের তাড়না থেকে। রম্নচিভেদে একেকজন লেখক একেকরকম ক্ষেত্রে অবগাহন করেন। তাই গল্পকারের জীবনবোধ মূল্যবান। গল্পের কোথাও-কোথাও লেখকের ছায়া লক্ষ্য করা যায়। ‘অপমানের দিন’ শিরোনামের গল্পটির

কথাই ধরা যাক। উত্তমপুরম্নষে লেখা এ-গল্পে প্রথম থেকে শেষ পর্যমত্ম লেখক নিজেই উপস্থিত রয়েছেন। সাদামাটা কাহিনি। আড্ডাবাজ কয়েকজন বন্ধুর ঠিকানাহীন পথচলা এবং পথের বাঁকে-বাঁকে অর্জিত তিক্ত অভিজ্ঞতা লেখকের ভাষাবিন্যাস এবং বলার কৌশলে গল্পময় হয়ে উঠেছে। একজন সরকার মাসুদ খুবই আড্ডাবাজ। বন্ধুদের পালস্নায় পড়লে সময়জ্ঞান তাঁর কাছে তুচ্ছ। রাত্রিযাপনের অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও বন্ধু মুজিবকে সঙ্গে নিয়ে রাতের রাজপথে ঘুরতে থাকেন। একদিকে ক্ষুধা, অন্যদিকে প্রত্যাশিত ঠিকানায় অপ্রত্যাশিত আচরণ। ভেতরে-ভেতরে তিনি দুমড়ে-মুচড়ে যান। অপমানিত বোধ করেন। নিজের মনের মধ্যে চলতে থাকে ভাঙাগড়ার খেলা। সামান্য কিছু টাকার জন্য বন্ধুর অফিসের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তথাপি টাকা মেলে না; মেলে কেবলই বিরক্তি। সময় এবং ব্যক্তির এই পরিবর্তন তিনি দার্শনিক চেতনা দিয়ে উপলব্ধি করেন। গল্পে লেখক উলেস্নখ করেছেন, ‘মুজিবের এই হাসিটা বড় রহস্যময়। রহস্যময় সুন্দর হাসি। হাসি এমন এক এক্সপ্রেশন যার ভিতর দিয়ে আপনি ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ যে-কোন একটা বোঝাতে পারেন। যদি কাউকে পাত্তা না দিতে চান স্মিত হাসুন। কারোও বিব্রত প্রশ্নের জবাব এড়াতে চান? রহস্যময় হাসুন। নিঃশব্দ হাসির মতো বহুরূপী উত্তর আর কি আছে?’

‘ভেতরে বাইরে’, ‘একদিন সুব্রত’, ‘অপমানের দিন’, ‘আতঙ্কের রাত’, ‘জোনাকি, রূপালী, শোয়েব ও রঞ্জিতের গল্প’, ‘আলেয়ার কথা’, ‘মৃধা বাড়ির রূপছবি’ ও ‘এ জার্নি বাই ট্রেন’ শিরোনামে মোট আটটি গল্প গ্রন্থভুক্ত করা হয়েছে। গল্প নির্বাচনে লেখক পাঠকরম্নচি বিবেচনায় রেখেছেন। প্রেম-ভালোবাসা, দ্রোহ-বিদ্রোহ, মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, সমাজনীতি, 888sport slot game প্রভৃতি অনুষঙ্গ গল্পে এসেছে।

ক. রেস্টুরেন্টের ভেতরে, খ. রেস্টুরেন্টের বাইরে, গ. রেস্টুরেন্টের ভেতরে-বাইরে – এই তিন পর্বে বিন্যসত্ম ‘ভেতরে বাইরে’ নামের গল্পটিতে মফস্সলের সমাজচিত্র ও মানুষের

সুখ-দুঃখের দিনলিপি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জীবন বিষয়ে মানুষের চিমত্মাধারার পরিবর্তন লক্ষ্য করি। সাধারণ শিক্ষার চেয়ে হাতে-কলমে শিক্ষার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। এই ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষণীয়। গ্রামসমাজ আমূল বদলে গেছে। যে-কোনো পর্যায়ের নির্বাচন তাদের কাছে উৎসবের মতো ছিল। রাজনৈতিক হানাহানি ছিল বিরল ঘটনা। পরস্পরের প্রতি 888sport apk download apk latest versionবোধের

কমতি ছিল না। মানুষ শামিত্মপূর্ণ মিছিল-মিটিং এবং সহাবস্থানে বিশ্বাস করত। রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্র-বিষয়ে এ-গল্পের একটি চরিত্রকে বলতে শুনি, ‘আরেএ হ্যারা হইল গিয়া বড় লিডার। হ্যাগো লাজ-শরম নাই। আমরা অইলাম চুনাপুঁটি। ইজ্জতই আমাগো বড় সম্পদ।’ দেশের ভবিষ্যৎ ভাবনায় আক্কাছ আলী ভাবিত। সে বলে, ‘মাইনষের আইজকাল ঈমান-আমান নাই। আর ন্যাতারা আছে খালি নিজেগো স্বার্থ লইয়া। দ্যাশের উন্নতি অইবো ক্যামনে!’

গল্পটিতে জীবনের অভিজ্ঞতার বাসত্মব চিত্র অংকনের প্রচেষ্টা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। বিশ্বায়নের অনিবার্য কুফল হলো মধ্যবিত্ত জীবনের সংকট। ‘একদিন সুব্রত’ শিরোনামের গল্পটিতে গল্পকার সরকার মাসুদ ওই সংকট দৃষ্টির অগোচরে রাখেননি, পাঠকের সম্মুখে ছবির মতো দৃশ্যমান করে তুলেছেন। পারিবারিক সংকট ও তাদের মানসিকতার পরিবর্তন তুলে ধরা হয়েছে। নানামুখী সংকটের মধ্যেও একটু বিনোদনের আশায় মানুষ সিনেমা হলে যায়। সাময়িক প্রশামিত্মর ঢেঁকুর তুলতে চায়; কিন্তু সেখানেও হতাশার ফাঁদ। সমকালীন সিনেমা রম্নচিশীল দর্শকদের মন জোগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। ঘরে-বাইরে সর্বত্রই সংকট। অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং অভিভাবকের উদাসীনতার কারণে ইতি পিসির বিয়ের ক্ষণ ক্রমশ দীর্ঘ হয়; কিন্তু যৌবনের উন্মাদনা তো আর থেমে থাকে না! অনৈতিক সম্পর্কের প্রতি মেয়েটি আগ্রহী হয়ে ওঠে। সুব্রতর বন্ধু মাকিদের দৃষ্টি আকর্ষণে তাকে তৎপর হতে দেখা যায়। মুক্তিযুদ্ধের একটু আগের সময়ের পটভূমিকায় রচিত হয়েছে ‘আতঙ্কের রাত’ শিরোনামের গল্পটি। জীবনঘনিষ্ঠ গল্প এটি। ‘আতঙ্কের রাত’ গল্পটিতে মার্চের কালরাত্রি, বিশেষত যুদ্ধ শুরম্নর দিনগুলোর চিত্র পরিলক্ষেত হয়। কয়েকজন সরকারি চাকরিজীবী ও তাদের পরিবারকে কেন্দ্র করে গল্পের কাহিনি পথ হেঁটেছে। যুদ্ধ যে সন্নিকটে তার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। বদলে যাচ্ছিল প্রতিদিনকার জীবনাচার। ছেলে-বুড়ো সবার মুখে আতঙ্কের ছাপ। নিরাপদ জীবনের প্রত্যাশায় কেউ-কেউ পরিবার-পরিজনকে গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধামত্ম নেন। গল্পটির আলোকিত দিক হচ্ছে ইঙ্গিতময়তা। যুদ্ধকে মোকাবেলা করার যে প্রস্ত্ততি তা আমাদের রক্তে শিহরণ জাগায়।

পরিণত বয়সের দুজন মানব-মানবীর ভালোবাসার পটভূমিকায় রচিত হয়েছে ‘মৃধা বাড়ির রূপছবি’ গল্পটি। কিন্তু ওই প্রেম শেষ পর্যমত্ম দিশা খুঁজে পায়নি। মুরাদ সুদর্শন যুবক। ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা। আলাপচারিতায় মুখর হয়ে ওঠে দুটি প্রাণ। সাথী ও তার বোন যূথী সৃজনশীলতার প্রতীক। তাদের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে মফস্সলের জীবনাচার-অনুভূতি। গল্পকারের পরিমিতিবোধ আমাকে মুগ্ধ করে। আবেগের আতিশয্যে গা না ভাসানোয় সাথী চরিত্রটি হয়ে উঠেছে আরো মোহনীয়। লেখককে নস্টালজিয়ায় ভুগতে দেখি – ‘ছোটবেলায় নানা রঙের ছোট ছোট প্রজাপতি ধরতাম আমি। পাটখড়ির ডগায় জিগার আঠা লাগিয়ে বড় বড় লাল ফড়িং ধরার ব্যর্থ চেষ্টা করতাম। ধরা পড়তো কেবল নিরীহ নিরপরাধ

ছোট্ট নীল ফড়িং। ভেবে এখন মনে কষ্ট লাগে।’ অন্যরকম জীবনবোধ। ‘ঠিক ওই রকম আলোর মধ্যে দাঁড় করিয়ে সাথীকেও আমি বুঝতে চেয়েছি। তাকে আবার বুঝতে চাই সমুদ্রের কলেস্নাল এবং নির্জন বনভূমির ভারাক্রামত্ম নৈঃশব্দ্যের মাঝখানে।’ এবং ‘পানির পাহাড় ভেঙে পড়ছে পানিতে’ – এসব বাক্যে রয়েছে কাব্যিকতা। অবশ্য পাঠককে ভুলে গেলে চলবে না, সরকার মাসুদ একজন কবিও।

‘আলেয়ার কথা’ শিরোনামের গল্পটিতে সংগ্রামী জীবনের চিত্র অংকিত হয়েছে। পারিবারিক ঐতিহ্যের টানাপড়েন, অনাকাঙিক্ষত ঘটনাপ্রবাহ ও অমত্মর্গত দহনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আলেয়ার জীবন। কিন্তু এ-জীবন মোটেও কুসুমাসত্মীর্ণ নয়; ফুলে-ফসলে মোড়ানো নয় বরং অভিশপ্ত! কৈশোরে দেখা স্বপ্নগুলো যৌবনের চরম বাসত্মবতায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়। সুখ তার জীবনে রয়ে যায় অধরা। জীবনের চরম নির্মমতায় একদিন সে স্বামী-সমত্মান ফেলে বাবার বাড়ি রওনা হয়। জীবনের প্রয়োজনেই মেয়েটি পুনরায় বিয়ের পিঁড়িতে বসে। সেখানেও নিয়তি সরলরেখায় চলে না। শাশুড়ির অসহযোগিতা, স্বামী আজহারের নিষ্ঠুরতা ও উদাসীনতা এবং আজহারের সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রীর সম্পর্কের অবিচ্ছিন্নতা আলেয়ার মনে জীবনের প্রতি সীমাহীন বিতৃষ্ণার জন্ম দেয়। ‘আলেয়ার কথা’ গল্পটি সমকালীন সমাজবাসত্মবতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আমাদের চারপাশে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে। অসাধারণ দক্ষতায় লেখক তাঁর গল্প বলা শুরম্ন করেছেন। আভিজাত্যময় গদ্যভাষা ও নাটকীয়তার আবহে সমৃদ্ধ তাঁর গল্প। দীর্ঘ পাঠ শেষে ক্লামিত্ম আসে বটে, দীর্ঘশ্বাসও পড়ে। তবে ওই দীর্ঘশ্বাস শেষ পর্যমত্ম পাঠকের মানবতাবোধে লীন হয়। আলেয়ার কথা ভেবে আমরা ব্যথিত হই। মনে কৌতূহল জাগে, মেয়েটি কি সত্যি-সত্যি বাঁচতে পেরেছিল?

‘এ জার্নি বাই ট্রেন’ গ্রন্থের শেষ গল্প। আলম, শফিক ও মিজানের 888sport slot gameজনিত অভিজ্ঞতা লেখক সরসভাবে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন। গল্পটির নাম হতে পারত, ‘এ জার্নি বাই ট্রেন ফ্রম আমনুরা টু রাজশাহী।’ দীর্ঘ এই চলার পথে বিচিত্র ঘটনা আমাদের নাড়া দেয়। ট্রেনের যান্ত্রিক ত্রম্নটি, অপ্রতুল আসন ও যাত্রীর দুরবস্থা দেশের অনগ্রসরতার বিষয়টি মনে করিয়ে দেয়। চুয়ালিস্নশজনের বসার কথা উলেস্নখ থাকলেও আদতে তা হয় না; বসতে হয় ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। ‘মিতালী বুক স্টল’ ও ক্লিপে ঝোলানো সিনে ম্যাগাজিনের পাতা আমাদের নস্টালজিয়ায় ভোগায়। বুকস্টল এবং রেলস্টেশন একসূত্রে বাঁধা ছিল। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে সব বদলে গেছে। বইয়ের দোকানগুলো ইতোমধ্যে বিলুপ্তির পথে। আমরা যেন ক্রমশ যান্ত্রিক হয়ে উঠছি।

অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার এত সব ব্যসত্মতার ভিড়ে 888sport slot gameের অবসর কোথায়? অথচ গল্পকার সরকার মাসুদের মগজে 888sport slot gameের বুদ্বুদ। নানা কিসিমের মানুষকে একত্রিত করে অসাধারণ আলাপচারিতায় ‘এ জার্নি বাই ট্রেন’ সাবলীল গতিতে এগিয়ে চলেছে। গল্পের শেষ দৃশ্যে খানিকটা বিস্ময় জন্মে। লেখক জটিল অন্ধকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেন পাঠককে। ট্রেনের অভ্যমত্মরের ওই বিশেষ মেয়েটির পরিচয় কী? কোথায় তার গমত্মব্য! কিংবা লাইটপোস্টের গোল আলোয় মেয়েটির ভরা নিতম্বে হাত রাখা কাঁচাপাকা গোঁফওয়ালা লোকটিই বা কে?

888sport live football যদি নির্মল এবং সৃজনশীল বিনোদনমাধ্যম হয়, তবে সরকার মাসুদের গল্পগ্রন্থ ‘অপমানের দিন’ সৃজনশীলতার ভালো উদাহরণ হতে পারে। গুরম্নগম্ভীর আবহ ও তাত্ত্বিক জটিলতা সৃষ্টি না করে লেখক পাঠককে স্বসিত্ম দিয়েছেন। হালকা আলাপচারিতায় তৈরি হয়েছে কাব্যময় গদ্যভাষা। গল্পের চরিত্ররাও আমাদের অচেনা নয়। তাদের প্রায় সকলেই আটপৌরে জীবনের প্রতিনিধিত্ব করে। তাদের মুখে উচ্চারিত আঞ্চলিক ভাষা শ্রম্নতিমধুরতার জন্ম দেয়। ফলে পাঠকহৃদয় আরো বেশি পরিতৃপ্ত হয়ে ওঠে। ৎ

 

 

 

 

অশেষ জনযুদ্ধের এক বিশেষ 888sport sign up bonus-আলেখ্য

হামীম কামরম্নল হক

 

 

মুসত্মাফা পান্না 888sport appsের বিশিষ্ট ছোটগল্প লেখক। তাঁর গল্পগ্রন্থের ভেতরে লোকসকল, কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ, মঘা আশেস্নষা বোদ্ধা পাঠকের কাছে বিশেষভাবে আদৃত হয়েছে। এছাড়া তিনি শিশু888sport live football ও 888sport live-নিবন্ধ লিখে থাকেন। তাঁর আরেকটি পরিচয় তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে বর্তমান বরগুনা জেলার বামনা-পাথরঘাটা ও মঠবাড়িয়া অঞ্চলে প্রগতিশীল তরম্নণদের নিয়ে যে গেরিলা বাহিনী গড়ে উঠছিল, তিনি ছিলেন এর অন্যতম সংগঠক। মুক্তিযুদ্ধের সে-অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি লিখেছেন এক গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা। একজন 888sport live footballিক হওয়ার জন্য এ-বইয়ের গদ্য, বর্ণনা এবং পর্যবেক্ষণে এমন মেজাজ আছে, যাতে এ-রচনাটি একটি 888sport sign up bonusকথা হলেও যেন 888sport alternative link পড়ার স্বাদ দেয়। কেবল তাই নয়, মাঝে মাঝে মনে হয় ছোট ছোট সত্যিকারের যেসব গল্পের সমাহার তিনি এখানে ঘটিয়েছেন, তাতে সেই বিখ্যাত প্রবাদটি মনে না পড়ে পারে না – ট্রুথ ইজ স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন।

মুক্তিযুদ্ধ 888sport appsের প্রকাশনাজগতের জন্য অশেষ কিন্তু বিশেষ একটি ব্যাপার। এদেশের প্রকাশনার একটি বর্গই হয়ে উঠেছে ‘মুক্তিযুদ্ধের বই’। 888sport liveমূলক বই রক্তাক্ত বাংলা এবং আনোয়ার পাশার 888sport alternative link রাইফেল রোটি আওরাত একেবারে একাত্তরের যুদ্ধের সময়ে লেখা দুটো উলেস্নখযোগ্য বই। আদতে মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই 888sport app download apk, গল্প, 888sport alternative link, নাটক, 888sport live, গবেষণাসহ বহুবিচিত্র 888sport free bet login প্রকাশিত হয়ে আসছে। মুসত্মাফা পান্নার এ-বইটি সে-ধারারই  একটি সাম্প্রতিকতম প্রকাশনা।

স্বীকার করতেই হয়, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিপুল পরিমাণ 888sport free bet login ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। নানা দৃষ্টিকোণ থেকে একে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে এবং হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নিয়ে সামরিক ও অসামরিক ব্যক্তিবর্গের লেখা 888sport free bet loginও কম নেই। সেখানে মুসত্মাফা পান্নার এই ছোট বইটি, মাত্র ৬৪ পৃষ্ঠার, নতুন কীই-বা যোগ করতে পারে? এই প্রশ্ন উঠলে উত্তরটা এ-বই পড়তে শুরম্ন করলেই পাঠক পেতে শুরম্ন করবেন। সেটি হলো, মুক্তিযুদ্ধের একটা মূলধারা তো আছে, সেইসঙ্গে আছে নানা শাখা-প্রশাখা। সেইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধটারও একটা ধারাগতি আছে। কী করে মানুষের ভেতরে প্রতিরোধের প্রেরণা এলো, পাকিসত্মানি বাহিনীর গণহত্যায় যে-যুদ্ধ এদেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলো, তার পেছনের প্রেক্ষাপটও সুদীর্ঘ।

আমরা জানি, মুক্তিযুদ্ধ শুরম্ন হওয়ার পরপর অনেকেই ভারতে পাড়ি দিয়েছিলেন, অনেকেই ভারতে বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের একটি অংশ ছিল যারা ভারতে না গিয়ে নিজ নিজ এলাকায় নিজেদের মতো সংগঠিত হয়েছেন, প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং পাকিসত্মানি বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই করেছেন – মুসত্মাফা পান্না হলেন সেই মুক্তিযোদ্ধাদেরই একজন।

এক গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা বইটি বিন্দু-বিন্দু ঘটনাপঞ্জিতে সাজানো; কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মতো মহাসিন্ধুতুল্য ঘটনার সার বিষয়গুলির প্রায় প্রতিটি দিক এতে উপস্থাপিত। ‘কথার আগের কথা’ শিরোনাম দিয়ে শুরম্ন করে তিনি যখন এ-বইয়ের ইতি টানেন ‘শেষ কথা নয়’ শিরোনামে, এতে বোঝা যায়, মুক্তিযুদ্ধের বিপুল অভিজ্ঞতার সার বিষয়গুলি এ-বইয়ে হাজির করলেও, যে-অসংখ্য ছোট ছোট বিষয় ওই সময় ঘটেছিল, তার কোনোটিই অসার নয়। সেই ক্ষুদ্র ঘটনাগুলির তাৎপর্যের প্রায় সব আভাস এ-বইয়ে আছে।

মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ পটভূমি তো আছেই, সেইসঙ্গে আছে এর সংক্ষেপ্ত পটভূমি। ১৯৭০-এর নির্বাচন তার একটি। সেইসঙ্গে যুক্ত ওই বছরের নভেম্বরে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় এবং বিপুল পরিমাণ মানুষের মৃত্যু। পূর্ব পাকিসত্মানের প্রতি পশ্চিম পাকিসত্মানের মনোভাব ওই দুটো ঘটনার ভেতর দিয়ে আরো স্পষ্ট হয়ে দেখা দেয়। একদিকে পাকিসত্মান নামক রাষ্ট্রের সাম্প্রদায়িক চেহারা, অন্যদিকে ‘দুই অর্থনীতি’-র তত্ত্বের বাসত্মবতা প্রকট হয়ে ওঠে। বদরম্নদ্দীন উমর ও রেহমান সোবহান যথাক্রমে ওই দুটো বিষয়কে বোদ্ধামহল ও রাজনীতি-সচেতন ব্যক্তিদের কাছে তুলে ধরতে 888sport app download for androidীয় ভূমিকা পালন করেছেন বলে অনেকেই মনে করেন। এরই সঙ্গে এদেশের প্রায় সর্বত্র যে প্রতিরোধ সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল, ১৯৬৯ সালে আইয়ুববিরোধী গণআন্দোলন থেকে যার প্রকৃত সূচনা, তাতে নানান জায়গায় যে অসংখ্য তরম্নণ, বলতে গেলে কিশোর বয়সীদের পুলিশি নির্যাতন ও জেলবাস ঘটেছিল, মুসত্মাফা পান্না ছিলেন তাদেরই একজন। বহু লোকের বিরম্নদ্ধে সামরিক আইনে মামলা এবং হুলিয়া জারি হয়েছিল যে ১৯৭০ সালে, তারও দুর্ভোগের শিকার ছিলেন পান্না। ফলে মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই তাঁর মতো ব্যক্তি যে সংগ্রামী পথ বেছে নিয়েছিলেন, সেই পথেরই একটি পর্যায়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করবেন এবং নিজের এলাকার তরম্নণ-যুবক-কিশোরদের সংগঠিত হতে ভূমিকা পালন করবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক ছিল।

যুদ্ধের একটি দেশীয় প্রেক্ষাপটের সঙ্গে থাকে এতে অংশ নেওয়ার প্রতিটি ব্যক্তির নিজস্ব প্রেক্ষাপট। মুসত্মাফা পান্নার বইয়ে সে-প্রেক্ষাপটটি এসেছে ‘একটু পেছন ফেরা, আমরা কথা’ শিরোনামে, আর সেটি এসেছে যখন, ততদিনে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ দিনগুলির সূচনা হয়ে গেছে, সেইসঙ্গে শুরম্ন হয়ে গেছে প্রতিরোধের লড়াইও। আমরা দেখি, নিজের ব্যক্তিগত প্রেক্ষাপটের আগে তিনি দেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটের কথাই আগে হাজির করেছেন, কারণ মুক্তিযুদ্ধ যদি সমুদ্রতুল্য হয়, তাহলে ব্যক্তির প্রেক্ষাপট সেখানে একবিন্দু জল। আমরা তো সমুদ্রের সামনে গেলে আগে সমুদ্রটাকেই দেখি, তারপর হাতে তুলে নিই এক অাঁজলা জল। মুসত্মাফা পান্না বইটিতে তাই নিজের প্রেক্ষাপটটির কথা বলেছেন দেশের সামগ্রিক অবস্থাটি আগে বলে নিয়ে। ‘কথার আগে কথা’, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ যেভাবে শুনেছিলাম’, ‘আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে’, ‘পতপত করে উড়ছে স্বাধীন 888sport appsের পতাকা’, ‘ট্রেনিং শুরম্ন’, ‘888sport appয় গণহত্যা’, ‘মেজর জিয়া বলছি’, ‘আমাদের এলাকায় পাকিসত্মানি সেনাদের প্রথম আক্রমণ’ – এসব ঘটনার পরই আসে পান্নার নিজের প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা অংশটি ‘একটু পেছন ফেরা, আমার কথা’। – ‘আমি ও আমার চাচাতভাই আফজাল বরিশাল এ. কে. স্কুলে ভর্তি হই নবম শ্রেণিতে ১৯৬৭ সালে। থাকতাম বেল ইসলামিয়া হোস্টেলে। ১৯৬৯ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। ছাত্র ও গণআন্দোলন শুরম্ন হলে তাতে যোগ দেই। মিছিলে যাই। সবার সাথে সেস্নাগান দেই, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা – তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি। চালের মণ দশ টাকা চাই। আমরা বাঙালি ভুট্টা খাবো না, গম খাবো না। আইয়ুবের কালো হাত গুঁড়িয়ে দাও ভেঙে দাও, আইয়ুবের গদিতে লাথি মার একসাথে।’ মিছিল-মিটিংয়ে যাওয়ার অপরাধে হোস্টেল সুপার আমাকে হোস্টেল থেকে বের করে দেন।’ (পৃ ১৭) এখানে লক্ষণীয়, এই বাঙালির একটি অংশ যেমন প্রতিরোধ লড়াইয়ে নেমেছে, তেমনি আরেকটি অংশ সক্রিয় ছিল এতে নানান অসহযোগিতা করার। যেমন পান্নার ওই হোস্টেল সুপার। পান্না যদিও উলেস্নখ করেননি তিনি বাঙালি না অবাঙালি ছিলেন, কিন্তু আমরা বুঝে নিতে পারি বরিশালের মতো শহরে সে-সময়ে কোনো হোস্টেল সুপার হিসেবে কোনো পাকিসত্মানি উর্দুভাষী অমত্মত কাজ করছিলেন না, তিনি বাঙালিই হবেন; কিন্তু তা হওয়া সত্ত্বেও তিনি আইনের ভয়ে বা চাকরি রক্ষায় এ-অসহযোগিতাটি করেছেন। – এভাবেই পান্না বলার আড়ালে ঢেকে দিয়েছেন অনেকানেক না বলা

কথা। আবার যেমন বামনার উত্তর কাকচিড়া বাজারে বিভিন্ন চায়ের দোকানে রেডিও শোনা, এলাকায় রেডিও কেনার হিড়িক পড়ে যাওয়া, হাটের দিন সভা করা, সেখানে সেস্নাগান তোলা, এবং পরে স্কুলে-স্কুলে পাকিসত্মানি জাতীয় সংগীতের বদলে ‘আমার সোনার বাংলা’ বা ‘ধনধান্যপুষ্পভরা’ গান চালু করার মতো ঘটনাগুলি এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যে, পাঠকের চোখের সামনে live chat 888sportের মতো ভেসে উঠবে প্রতিটি দৃশ্য। প্রতিটি মুহূর্তের উৎকণ্ঠা আর উদ্বেগকে এত সংক্ষেপ্তভাবে কিন্তু অত্যমত্ম দক্ষতার সঙ্গে পান্না বর্ণনা করছেন তার স্বাদু, প্রাঞ্জল, সরল ও স্পষ্ট গদ্যে।

মুসত্মাফা পান্নার মুক্তিযুদ্ধের মূল দিক হলো নিজের এলাকার লোকজন সংগঠিত করে নিজেরাই নিজেদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং পরবর্তীকালে হানাদারদের আক্রমণ প্রতিহত করতে গেরিলাযুদ্ধ শুরম্ন করা। এর সঙ্গে আরো একটি বিষয় এখানে আসে – সেটি হলো সিরাজ শিকদারের হাতে যে বাহিনী তৈরি হয়েছিল, তাদের কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগের ভেতর দিয়ে নতুন মাত্রা যোগ হয় পান্নাদের অভিজ্ঞতায়। একদিকে পাকিসত্মানি ও রাজাকারদের লুটতরাজ, গণডাকাতি আর হত্যা-ধর্ষণ, অন্যদিকে প্রশিক্ষণ নিয়েও  কোনো পথের দিশা পান্না এবং তার সহযোগীরা যখন পাচ্ছিলেন না, একরকম হতাশায় ভুগছিলেন, তখন পাশের গ্রাম গোলককাশির সুখরঞ্জন বিশ্বাসের মাধ্যমে আলোচনা হয় শিশির, সুবীর, অমূল্যসহ পাঁচ তরম্নণের সঙ্গে, যারা ঝালকাঠির আটঘর কুড়িয়ানার পেয়ারাবাগানে সিরাজ শিকদারের সহযোগী হিসেবে পাকিসত্মানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। তাদের সঙ্গে শলাপরামর্শ ও বৈঠকের মাধ্যমেই ঠিক হয়, পাকিসত্মানি বাহিনীর সঙ্গে প্রথাগত যুদ্ধ করে পেরে ওঠা যাবে না। এর জন্য চাই গেরিলাযুদ্ধ। অতঃপর শুরম্ন হয় পরিকল্পনা। গ্রামের আরো কিছুর লোকের সঙ্গে পরামর্শ করে কৌশল নির্ধারণ করা হয়। পান্না এখানে সেসব কৌশলের ষোলোটি বিধিবিধানের উলেস্নখ করেছেন। এরপর লোক সংগ্রহ এবং পরপরই অস্ত্র সংগ্রহ। জুনের মধ্যে তাদের সঙ্গে শতাধিক যোদ্ধা যোগ দেয়। আর কিছুদিনের ভেতরে ৫০টির মতো একনলা ও দোনলা বন্দুক সংগ্রহ করা হয়। তৈরি করা হয় প্রচুর হাতবোমা। সব যোদ্ধা

পাঁচ-ছয়টি দলে ভাগ হয়ে কাজ শুরম্ন করে।

নদী ও সমুদ্রঘেরা অঞ্চল পটুয়াখালী ও বরগুনায় পান্নাদের দলটিকে বিপুল সমস্যায় পড়তে হয়েছিল যাতায়াত নিয়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিরভাগ সময় হেঁটে নয়তো নৌকায় চলাচল করতে হয়েছে। এসময় তাদের সহযোগিতা করেছেন এলাকার মাঝিরা। লেখক এর ভেতরে মফিজ মাঝির কথা বিশেষভাবে উলেস্নখ করেছেন। কারণ যুদ্ধের পুরোটা সময় মফিজ মাঝি তার একমালস্নাই নৌকা নিয়ে তাদের সঙ্গে ছিলেন। তারা সামরিক লোকজনের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। ক্যাপ্টেন মেহেদি, সুন্দরবনে ক্যাপ্টেন জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়। জিয়াউদ্দিন তাদের ২৪টি অস্ত্র আর কয়েকজন যোদ্ধাও দেন। চলে যুদ্ধের প্রস্ত্ততি আর অন্যদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তাহীনতা চরমে ওঠে। ভয় দেখিয়ে অনেক হিন্দুকে মুসলমান হতে বাধ্য করা হয়, এজন্য এফিডেভিট ফরমও ছাড়া হয়, যার বিক্রি সে-সময় দশ হাজার টাকা পর্যমত্ম উঠেছিল। ওই অঞ্চলে কোনো কোনো বাজার ও গ্রামে মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করা হয়, সেইসঙ্গে উলেস্নখ্য, ১৯৭১ সাল জুড়ে ওই অঞ্চলে কোথাও কোনো ধরনের পূজা হয়নি, কোনো আশ্রম-আখড়ায় হরিসভা কিংবা কীর্তন হয়নি, কোনো বাড়িতে কাঁসার ঘণ্টা, শাঁখ এবং ঢোল বাজেনি। উলুধ্বনি শোনা যায়নি। – অতি অল্পকথায় এ-পরিস্থিতির বর্ণনা করেছেন লেখক; কিন্তু যে ভয়াবহ আতঙ্ক আর চাপের ভেতর দিয়ে তখন জীবন অতিবাহিত হচ্ছিল, সেটি এতটুকু আড়ালে পড়েনি। হিন্দু সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগগুলিও প্রসঙ্গত বর্ণিত হয়েছে। ‘শরণার্থী পারাপারে সহযোগিতা’, ‘ইয়ে মুসলিমকা মাকান’সহ বহু স্থানে এর উলেস্নখ আছে।

মুক্তিযুদ্ধের ভেতরেই আবার ‘দুই কুকুরের লড়াইয়ের’ তত্ত্ব নিয়ে তৈরি হয় যুদ্ধের নতুন অভিমুখ। সর্বহারাদের এই তত্ত্বতে ভিন্নরকমের এক বিভেদ তৈরি হয়। পান্নার ‘গণআদালত’, ‘নিজেদের মধ্যে লড়াই’ অংশদুটি সে-অবস্থার নিদারম্নণ বর্ণনা।

এ বইয়ের পাকিসত্মানি বাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে প্রত্যক্ষযুদ্ধের একটি হলো ঝাঁটিবুনিয়ার যুদ্ধ। একেবারে 888sport live footballিকের দক্ষতায় কিন্তু অলংকারহীনভাবে সে-যুদ্ধের বর্ণনা পড়লে যে-কোনো পাঠক সহজেই সেটি কল্পনা করতে পারবেন। পান্না এভাবে প্রায় সর্বত্র সমসত্ম দৃশ্য ও ঘটনাকে ভাসিয়ে তুলেছেন।

ঝাঁটিবুনিয়ার যুদ্ধে পাকিসত্মানি বাহিনী ও রাজাকারদের সম্পূর্ণ পরাসত্ম করে দেওয়ার পর ধারণা করা হয় যে, বিপুল শক্তি নিয়ে পাকবাহিনী ফিরে আসবে। ফলে নিজেদের সুরক্ষা করতে এবং যথাযথ প্রশিক্ষণ নিতে পান্নাদের দল সুন্দরবনের ভেতরে দিয়ে ভারতে যায়।

আমরা দেখেছি, যুদ্ধ শুরম্ন হওয়ার পর থেকেই পান্না ও তার সহযোগীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তারা প্রায় সবাই তক্ষুনি ভারতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, কারণ নেতারাও ভারতে যাওয়ার সিদ্ধামত্ম নিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু পান্নারা ভারতে না গিয়ে প্রথমে নিজেরাই যুদ্ধের জন্য তৈরি হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ কীভাবে একটি জনযুদ্ধ বা ‘পিপলস ওয়ার’ হয়ে উঠেছিল, তা পান্নার এ-বই থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়।

পান্নারা ভারতের কলকাতা হয়ে গিয়েছিলেন আসাম। সেখানেই তাদের প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছিল। কিন্তু প্রশিক্ষণ নিয়ে 888sport appsে ঢুকে যুদ্ধ করার আগেই এসে পড়ে ষোলোই ডিসেম্বর। বিজয় অর্জিত হয় বাঙালিদের। ‘ভারতের মাটিতে’, ‘আমরা চলেছি অজানায়’, ‘পাহাড়ঘেরা তেজপুর-সালোনবাড়ি’, ‘মুক্ত স্বাধীন দেশের খবর’, ‘সবাই যায় স্বাধীন বাংলায়’, ‘স্বাধীন 888sport appsে মায়ের কাছে যাচ্ছি’ শিরোনাম দেওয়া অংশে পান্নাদের ভারতে যাওয়া ও প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর দেশে ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে। এর পরই বইয়ের ‘শেষ কথা নয়’ ছোট্ট শিরোনামে পান্না বিনীতভাবে স্বীকার করেছেন তার ভূমিকার কথা, তিনি কেবল এক সামান্য সংগঠকের ভূমিকা পালন করেছিলেন মাত্র। মুক্তিযুদ্ধের মূল কৃতিত্ব সাধারণ মানুষ, খেটে-খাওয়া শ্রমিক-কৃষক, যুবক-যুবতী এবং ছাত্রছাত্রীদের।

বইয়ের একবারে শেষে প্রথমে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম-পরিচয় দেওয়া হয়েছে, সর্বশেষে দেওয়া হয়েছে সেখানকার ‘কয়েকজন কুখ্যাত স্বাধীনতাবিরোধী’র নাম ও পরিচয়।

বিসত্মৃত বর্ণনার বদলে অসংখ্য ঘটনার বিন্দু-বিন্দু জলে তিনি এমন অশেষ এক মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ-বিশেষ দিক যেভাবে হাজির করেছেন তাতে তার দক্ষতাকে প্রশংসা করতেই হয়। আমাদের মনে হয়েছে, দক্ষেণবঙ্গের নদীবিধৌত ও উপকূলীয় অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই বইটি একটি গুরম্নত্বপূর্ণ সংযোজন। বইটি পড়লে যে-কোনো পাঠক বোধ করি আমাদের সঙ্গে একমত হবেন। ৎ

 

 

 

 

 

জোরাল ও স্বচ্ছ শব্দগুচ্ছ

কমল তরফদার

 

888sport app download apk latest version-888sport live footballের প্রয়োজনীয়তা যে আছে, তা সারাবিশ্বের বিভিন্ন ভাষার 888sport live footballের দিকে দৃষ্টি ফেরালে আমরা উপলব্ধি করি। নিজ সমাজের চিমত্মাভাবনা যখন একটি গ–র মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে, তখন সেই প্রাচীর ভাঙার জন্যে নতুন চিমত্মাভাবনার আবশ্যক। মানবসমাজে বিভিন্ন প্রকারের সংঘাত-প্রতিক্রিয়া, ধর্মপ্রচার, প্রেমের ভাবনা, যুদ্ধবিগ্রহ ও লুণ্ঠন, পরস্ব গ্রাসের লোলুপতা আছে; আবার সেসব কাজকে বৈধতাদানের কৌশলী প্রয়াসও বর্তমান। দেখা যাচ্ছে যে, একটা দেশ যখন অন্য একটা দেশের দ্বারা আক্রামত্ম হয়, পরাজিত ও নিপীড়িত হয়, তখন বিজয়ী দেশের ভাষা ও সংস্কৃতি, আচার-আচরণ, চিমত্মাধারা বিজিত দেশের মানুষের ওপর প্রভাব বিসত্মার করে। এই ব্যাপারটা ভারতবর্ষ, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানি, স্পেন, ইরাক, রাশিয়া, জাপান, আফ্রিকা ও দক্ষেণ আমেরিকার দেশগুলোতে ঘটেছে। কেউ-কেউ বলতে পারেন, কোনো দেশ আক্রামত্ম ও পরাজিত হলে তার একটা সুফলও পাওয়া যায়। সেটা হচ্ছে এই যে, পরাজিত ও নিপীড়িত দেশগুলোর সমাজে নতুন চিমত্মাধারার বাতায়ন খুলে যায়।

888sport app download apk latest version 888sport live footballের কথায় আসি। পৃথিবীতে অনেক উন্নত ভাষা আছে। সব ভাষাকে আয়ত্ত করা কোনো একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই জন্যে বিশেষীকরণের প্রবণতা। তবে বর্তমান সময়ে একটা ব্যাপার এই ঘটেছে যে, ইংরেজি ভাষা বিশ্বের এক নম্বর ভাষায় পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর সমসত্ম ভাষার 888sport live football ইংরেজিতে অনূদিত হচ্ছে। ফলে, ইংরেজি পড়ে অন্য সমাজের চিমত্মাভাবনাকে আমরা হৃদয়ঙ্গম করতে পারি। চীনা ভাষা না জানলেও ইংরেজি পড়ে আমরা চীনা 888sport live football বিষয়ে জানতে পারি। ইরানের ফারসি, আফ্রিকার সোয়াহিলি, দক্ষেণ আমেরিকার গুযারানি বা আইমারা, আরব দেশের আরবি 888sport live football বিষয়ে অনেক কিছু আমরা জেনে যাই। তাই এক ভাষা থেকে আর এক ভাষায় 888sport app download apk latest versionের চলন যথেষ্টই।

বাংলাভাষায় ইউরোপীয় ভাষাগুলো থেকে 888sport app download apk latest version শুরম্ন হয়েছে এদেশে ব্রিটিশ শাসন শুরম্ন হওয়ার পর থেকে। তার আগে সংস্কৃত থেকে বাংলায় 888sport app download apk latest version হয়েছে। পালি থেকে হয়েছে। আরবি-ফারসি থেকেও হয়েছে। রামায়ণ-মহাভারত মূল সংস্কৃত থেকে কিছুটা স্বাধীনতার সঙ্গে অনূদিত হয়েছে। বেশ কয়েকজন করেছেন।

কৃত্তিবাস ওঝা ও কাশীরাম দাসের কথা সব বাঙালি জানেন। ব্রিটিশ যুগে রবীন্দ্রনাথ তরম্নণ বয়সে অল্প কিছু 888sport app download apk ইংরেজি থেকে বাংলায় 888sport app download apk latest version করেছিলেন – শেলি, ক্রিস্টিনা রসেটি, সুইনবান, এলিজাবেথ ব্রাউনিং, এলিয়ট, এমি লোয়েল প্রমুখ কবির 888sport app download apk। চীনা কবিদের বিষয়েও রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টি ছিল। তিনি লি-পোর চারটি 888sport app download apkংশের 888sport app download apk latest version করেছিলেন। এছাড়া চৈনিক কবি য়ুয়ান চেনের ইংরেজি 888sport app download apk latest version ‘দ্য পিচার’ শীর্ষক 888sport app download apk বাংলায় 888sport app download apk latest version করেছিলেন।

রবীন্দ্রনাথের পর 888sport app download apk latest versionক হিসেবে সুনামের অধিকারী হয়েছেন যেসব বাঙালি কবি তাঁদের মধ্যে আছেন সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, সুধীন্দ্রনাথ, বিষ্ণু দে, বুদ্ধদেব বসু, অরম্নণ মিত্র। আরো পরে এসেছেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, শঙ্খ ঘোষ, দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। উলেস্নখ করা যেতে পারে, সত্যেন্দ্রনাথ ইংরেজি, ফরাসি, জাপানি, বেলুচি, নেপালি, তেলেগু, তামিল, কসাক, মু-ারি, মেক্সিকান প্রভৃতি ভাষার বহু 888sport app download apkর 888sport app download apk latest versionক। ষাটের দশকে আমরা বিচ্ছিন্নভাবে পাই পুষ্কর দাশগুপ্ত, আশিস সান্যাল ও আর দু-তিনজনকে। কুশল মিত্র (সমেত্মাষ কুমার ব্রহ্ম) ষাটের দশকে নিগ্রো 888sport app download apkর 888sport app download apk latest version করেছিলেন। পরে তিনি কিছু জার্মান 888sport app download apk 888sport app download apk latest version করেন। ষাটের দশকেই কবি আশিস সান্যাল নিগ্রো 888sport app download apkর 888sport app download apk latest version করেছিলেন। পরে তিনি হিন্দি ও অন্য কয়েকটি ভাষা থেকে বাংলায় 888sport app download apk 888sport app download apk latest version করেন।

২০১৪ সালে কবি আশিস সান্যাল চীনা ভাষার কবি জিদি মাজিয়ার ১১৩টি চীনা 888sport app download apkর বাংলা 888sport app download apk latest version করেছেন ইংরেজি ভাষা থেকে। কাব্যগ্রন্থের নাম আগুনের অক্ষর। জিদি মাজিয়া ১৯৬১ সালে চীনের সিচুয়ান প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নউসু উপজাতীয় কবি ও বর্তমানে চীনা লেখক সংঘের সম্পাদকম-লীর সদস্য। জিদি মাজিয়া দেশ ও জাতির গ–কে এড়িয়ে যেতে পেরেছেন। আবার নিজের উপজাতীয় সত্তার প্রতিও তাঁর আছে এক গর্ববোধ। জিদি মাজিয়া সম্পর্কে কবি আশিস সান্যালের অবলোকন এই প্রকার – ‘প্রথম আস্বাদনেই তাঁর 888sport app download apkর বৈচিত্র্য ও গভীরতায় আমি বিস্মিত হয়েছিলাম। মাটি ও মানুষের এক জীবমত্ম প্রতিধ্বনি শুনতে

পেয়েছিলাম তাঁর 888sport app download apkয়। তাঁর আগুনের অক্ষর কাব্যগ্রন্থটি 888sport app download apk latest version করতে-করতে আমি ক্রমশ গভীর থেকে গভীরতর বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম।’ এই মমত্মব্য সঠিক।

জিদি মাজিয়ার লেখাগুলো পরিণত 888sport app download apk। তাঁর 888sport app download apkয় আছে 888sport sign up bonus, ঈশ্বর, প্রেম, অগ্নি, মায়ের 888sport sign up bonus, বিখ্যাত 888sport promo code-পুরম্নষের সমাধিফলক দেখে মানসিক আলোড়ন, শিলালিপির লেখা নিয়ে ভাবনা, আমত্মর্জাতিকতা ও ঐতিহ্যসচেতনতা। নিজের 888sport app download apk সম্বন্ধে তিনি বলছেন –

(ক) আমি 888sport app download apk লিখি

কারণ, আমি খুব ছোটবেলা থেকেই

মৃত্যু সম্বন্ধে সচেতন ছিলাম। (‘এক ধরনের কণ্ঠস্বর’)

(খ) আমি 888sport app download apk লিখি

কারণ, বহুসংখ্যক মানুষ লালের অমত্মর্নিহিত অর্থ

বুঝতে পারে না

পীত ও কালো বর্ণ মিলে নউসুদের তিনটি মৌলিক রং রয়েছে।

(ওই)

 

চীনা কবি জিদি মাজিয়ার আরো কয়েকটি ব্যাপার লক্ষণীয়। তিনি

প্রথম থেকে মানুষের জন্ম, মৃত্যু ও আত্মা বিষয়ে চিমত্মান্বিত। তিনি বলছেন –

জানতে চাও, কেন এত কল্পনায় আমি পরিপূর্ণ?

এর কারণ, আমার দেহ এবং আত্মা

আমাকে নিক্ষেপ করেছে

প্রেম ও মৃত্যুর অগ্নিপরীক্ষায়। (‘অবশ্যই দিন আসবে’)

এবং

দেখো, জন্ম থেকে আরম্ভ করে

দেহ এবং আত্মা ভাগ্যকে একসঙ্গে ছুড়ে দেয় (ওই)

জিদি মাজিয়ার 888sport app download apkয় রাশিয়া, লিথুয়ানিয়া, সার্বিয়া, ইতালি, পেরম্ন, মেক্সিকো, কলম্বিয়া, চিলি প্রভৃতি দেশ উঠে এসেছে। একটা বিষয় লক্ষ করার আছে, এই কবি চীনের মূল ভূখ–র অধিবাসী এবং উপজাতি শ্রেণির মানুষ; কিন্তু তাঁর চেতনায় আমত্মর্জাতিকতা প্রবলভাবে সঞ্চারিত। তিনি পেরম্নর কেনটুটা ফুল নিয়ে, আলপাকা পশু নিয়ে, চিলির রেড ইন্ডিয়ান ঠাকুমা রোস্সাকে নিয়ে 888sport app download apk লিখেছেন, আবার ইতালির মহাকবি দামেত্মকে নিয়ে, রাশিয়ার কবি আন্না আখমাতোভাকে নিয়েও 888sport app download apk লিখেছেন। এই ব্যাপ্তি কিন্তু বর্তমান সময়ের অনেক বাঙালি কবির নেই। চীনের একজন উপজাতির এই ব্যাপকতা বিস্ময়কর। উদাহরণ দেওয়া যাক –

(ক) এই গভীর গিরি খাতে

একজন রেড ইন্ডিয়ান, এক শত, হাজার

যাত্রা করেছে নির্জনতায়।

মুখাবয়ব তাদের গম্ভীর

চোখ পরিপূর্ণ অশ্রম্নতে, নির্বাক (‘টিয়াওয়ানক’)

(খ) আশ্চর্যের কিছু নেই

খোসে মার্তি একবার বলেছিলেন

যখন একটি আলপাকা

পড়ে মরে যায়

তা প্রায়শ

জীবনের মর্যাদা রক্ষার জন্যে। (‘আলপাকা’)

(গ) হয়তো এটি স্বর্গের দরজা

হয়তো নরকের দরজা এটাই।

 

বেশ, তাহলে ঘণ্টা বাজান ও অপেক্ষা করম্নন

কারণ, এটি খুলতে হবে।

 

সময় এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কোনো শব্দ নেই।

(‘দামেত্মর কাছে 888sport slot game’)

 

লক্ষণীয় এই যে, জিদি মাজিয়া কমিউনিস্ট চীনের কবি হলেও তাঁর 888sport app download apk একপেশে নয়, লেনিন ও মাও জে দঙের প্রশংসায় ভরপুর ও বিগলিত নয়। তাঁর দৃষ্টি ব্যাপক ও সব ধরনের ভাব ও রস গ্রহণের জন্যে প্রস্ত্তত। তাঁর 888sport app download apkয় প্রকৃতি, প্রেম, মানবহিতৈষণা, পরিব্রাজকের দৃষ্টিভঙ্গি, জন্ম-মৃত্যুর ভাবনা, মায়ের প্রতি ভালোবাসা, পঠন-পাঠনের চিহ্ন, আমত্মর্জাতিকতা সবই আছে। তিনি ছন্দে 888sport app download apk লিখেছেন কি না, 888sport app download apk latest versionে বোঝা যায়নি। কিন্তু তাঁর বক্তব্য জোরাল ও স্বচ্ছ। কোথাও-কোথাও 888sport app download apk বর্ণনামূলক ও আমিত্বগন্ধী, কিন্তু সব মিলিয়ে বলা যায় যে, পাঠক এই 888sport app download apkগুলো পড়লে এক নতুন দিগমেত্মর সন্ধান পাবেন। কবি আশিস সান্যাল নিষ্ঠা ও পরিশ্রমসহকারে দুশো পৃষ্ঠার এই গ্রন্থটি 888sport app download apk latest version করেছেন। ভাষা পরিচ্ছন্ন ও সহজ। এরকম একটি কাব্যগ্রন্থ পাঠকের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যে তিনি ধন্যবাদার্হ। প্রচ্ছদপটটি আকর্ষণীয়। কাগজ, ছাপা ও বাঁধাই মনোরম।