বিবর্ণ ভারতের অর্থনীতি-সংস্কৃতি
আবেদীন কাদের
দি লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত তেরোটি 888sport live নিয়ে অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের 888sport live-সংকলন দি কানট্রি অব ফার্স্ট বয়েজ। সময়ের ক্রমানুসারে 888sport liveগুলো বইতে স্থান পেয়েছে।
বর্তমান ভারতবর্ষের যে-সমস্যাবলি সবচেয়ে তীব্র, সেসব নিয়ে ড. সেন তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন। তাঁর 888sport app লেখার মতোই ধারাল যুক্তি ও বিদ্রূপ সহকারে নিজের মত প্রকাশ করেছেন। বইটির উল্লেখযোগ্য অলংকার গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর ‘পূর্বকথা’। ড. সেনের লেখার ওপর গান্ধীর মতামত ও তাঁর বিশেস্নষণ পাঠকদের আকৃষ্ট করে। উল্লেখযোগ্য 888sport liveের বিষয়ের মধ্যে রয়েছে – ক্ষুধা, সংবাদমাধ্যম, স্বাধীনতা ও উন্নয়ন, শিক্ষা, রবীন্দ্রনাথ এবং পঞ্জিকার মাধ্যমে ভারতবর্ষের ইতিহাস।
লিঙ্গ-অসমতা কী করে অর্থনৈতিক অসমতার সঙ্গে সম্পর্কিত, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কীভাবে একটি জাতির অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তা ড. সেন ভারতের সমাজকে বিশেস্নষণ করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। বইটির ভূমিকা লিখেছেন ড. সেন নিজেই। তাঁর ছেলেবেলার সংস্কৃত ভাষা ও 888sport live football শেখাকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করেছেন। তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও চিন্তাকে কীভাবে ভিত্তি দিয়েছিল সংস্কৃত ভাষা ও 888sport live football, তা তিনি সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। বইটির বিভিন্ন 888sport liveের মাধ্যমে ভারতের অতীত ইতিহাস, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং ধর্মান্ধতা নিয়ে অতি কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি। ভারতের স্কুলগুলোতে নতুন করে সংস্কৃত ভাষা শেখানোর উদ্যোগকে তিনি সমর্থন করেন। তবে তা যেন ‘হিন্দু’ সংস্কৃতিকে জোরালো করার জন্য না হয়, সেটা লেখক চান। লেখক মনে করেন, অন্য যে-কোনো ধ্রম্নপদী ভাষা যেমন – ল্যাটিন, হিব্রম্ন, চীনা ভাষা, আরবি বা পুরনো তামিল ভাষা উন্নত শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়। একটি জাতির শিক্ষাব্যবস্থাকে সত্যিকার অর্থে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বিদেশি ভাষা শেখানো বড় ভূমিকা পালন করে। নিজের ছেলেবেলার 888sport sign up bonusর কথা উল্লেখ করে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, তাঁর বৌদ্ধিক জীবনের ভিত্তি ছিল গণিত ও সংস্কৃত ভাষা-888sport live football শেখা। যত বেশি তিনি সংস্কৃত ও গণিত শিখেছেন, তত বেশি গভীর হয়েছিল যুক্তিপ্রবণ মনের শক্তি। এমনকি তিনি তাঁর আনন্দ ও শেখার উত্তেজনার বিষয় বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘প্রাচীন গ্রিসের জগতে প্রবেশ করে ইউক্লিডের অজানা জ্ঞানকে অধিকার করার জন্য আমি সবকিছু বিসর্জন দিতে প্রস্ত্তত ছিলাম।’ অধ্যাপক সেন জানিয়েছেন, ছেলেবেলার সেই জ্ঞানান্বেষণের ক্ষুধা এখনো তাঁর মধ্যে রয়েছে, সারাজীবন তিনি সে-ক্ষুধা বহন করে বেড়িয়েছেন। অন্বেষণের ও লক্ষক্ষ্য পৌঁছানোর প্রয়াসের যে-সৌন্দর্য, তা তাঁকে মুগ্ধ করে। নিজের ছাত্রজীবনে সংস্কৃত 888sport live footballের সৌন্দর্য ও গণিতের প্রতি গভীর আগ্রহের মধ্যে তিনি কোনো বিরোধ লক্ষ করেননি, বরং গভীর আনন্দের সঙ্গেই তিনি অধ্যয়ন করেছেন। এ-প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ড. সেন উল্লেখ করেছেন একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার
কথা। নিজের একজন সহকর্মী অধ্যাপক এরিক মাসকিনের সঙ্গে তিনি এখনো যখন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কোর্স ‘সোশ্যাল চয়েস থিওরি’ পড়ান, বা বিখ্যাত গণিতজ্ঞ ব্যারি মাজুরের সঙ্গে ‘রিজনিং বাই ম্যাথামেটিক্যাল মডেলস’ পড়ান, যাতে তিনি ছেলেবেলার মতো একই রকম আনন্দ পান। তিনি বিশ্বের অসাধারণ সব মেধাবী ছাত্রকে, বিশেষ করে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গণিত, দর্শন ও অর্থনীতির এসব জটিল বিষয় পড়িয়ে থাকেন। সেখানে বিপুল তর্কাতর্কির সঙ্গে আনন্দও থাকে বিপুল। স্কুলজীবন থেকে নিজের গভীর কৌতূহল বিমূর্ত বিষয় ও সমস্যা সমাধানের প্রতি, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনের জাগতিক সমস্যাদির বিষয়ও তাঁকে সমানভাবে আকৃষ্ট করে।
অধ্যাপক সেনের পাঠকরা সবাই জানেন যে, তিনি ক্ষুধা, অনাহার এবং দুর্ভিক্ষ নিয়ে গবেষণা করেছেন কয়েক দশক যাবৎ। কিন্তু সমাজে 888sport promo codeদের প্রতি অসাম্য আচরণ, বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্রে, তাঁকে বিচলিত করে। অথচ এই বইয়ের ভূমিকায় তিনি জানিয়েছেন যে, মানুষের ‘পরিচয়’ বা আইডেনটিটি কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে সীমাবদ্ধ নয়। প্রথম তিনি এটা বুঝতে শেখেন প্রাচীন ‘সংস্কৃত ক্ল্যাসিক’ থেকে। বিখ্যাত প্রাচীন ভারতীয় ক্ল্যাসিক 888sport promo codeচরিত্র ‘বসন্ত সেনা’, চরিত্র হিসেবে তাঁকে ভাবিয়েছে। বসন্ত সেনা সুন্দরী, বড়মাপের 888sport live chatী এবং নিবেদিত প্রণয়িনী, সমাজ-বিপস্নবের স্রষ্টা, যে ভবিষ্যৎ হন্তারককে মুক্তি দিতে চারু দত্তকে সাহায্য করে। সাধারণ মানুষের কল্যাণে পাশে দাঁড়িয়েছে চারু দত্তের, যেখানে নৈতিক ও মানবিক সমস্যার সমাধানের প্রশ্ন আসে। কিন্তু দেখা যায়, বসন্ত সেনার একটি ‘পরিচয়’কে বড় করে দেখলে, কখনোই এ-চরিত্রকে পুরোপুরি বোঝা যায় না। সমাজের প্রতিটি মানুষেরই রয়েছে ‘বহুধা পরিচয়’।
ভারতের বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষরা যে ভারতের অভাবনীয় উন্নয়নের অংশ, ড. সেন সেটা বিভিন্ন লেখার মতো এ-বইয়েও বারবার উল্লেখ করেছেন। ভারতীয়
সংস্কৃতিতে ও 888sport apk-অর্থনৈতিক উন্নয়নে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি, ইহুদি, সংশয়বাদী ও নাসিন্তকদের, সবারই অবদান রয়েছে। কিন্তু যার যে ধর্মই
থাক, ভারতীয় ‘সংস্কৃতিই’ এই উন্নয়নের চাবিকাঠি বলে ড. সেন দাবি করেন। তাঁর মতে, বিশেষ করে দুটি বিষয় – ভারতীয় পঞ্জিকা-888sport apk ও দাবা খেলা আবিষ্কার বিশ্বের সংস্কৃতি-ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
গণতন্ত্র ও সামাজিক অঙ্গীকার বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে ড. সেন জানান, ভারতের স্বাধীনতার পর উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির মধ্যে একটি ছিল দুর্ভিক্ষ রোধ করতে সমর্থ হওয়া। স্বাধীনতার মাত্র ক-বছর আগে বড় এক দুর্ভিক্ষ লাখ-লাখ ভারতবাসীর মৃত্যুর কারণ ছিল। সেটা স্বাধীন ভারতে ঠেকানো সম্ভব হয়, কিন্তু অনাহার ও অপুষ্টি নিয়ে ড. সেনের অভিযোগ বিরাট। ‘ক্ষুধা’ 888sport liveে তিনি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন ভারতে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ কীভাবে প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত। কীভাবে এটা দূর করা যায় বা কীভাবে দুর্ভিক্ষ ঠেকানো যায় সে-বিষয়ে বলতে গিয়ে যে-প্রতিষেধকের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন তা হলো, সাধারণ মানুষকে চিন্তার বা কার্যকারণ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সেটা সহজেই করা সম্ভব। যে-কোনো দেশেই দুর্ভিক্ষের শিকার জনগণের পাঁচ বা দশ শতাংশ মানুষ, কিন্তু তা ঠেকাতে অধিকাংশ মানুষের সচেতনতা জরুরি। ড. সেন লিখেছেন, ‘The political compulsion in a democracy to eliminate famines depends critically on the power of public reasoning in making non-victims take on the need to eradicate famines as their own commitment.’
ভারতের বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রেও জনগণের মাঝে যুক্তি বা রিজনিং সৃষ্টি করাকেই বড় কাজ বলে মনে করেন ড. সেন।
এছাড়া তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেছেন মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিপ্রকৃতি বিষয়ে। অর্থনীতিবিদ হিসেবে তিনি কীভাবে বারবার সংবাদমাধ্যম বা রাজনীতির কাছে ভুল বোঝার শিকার হয়েছেন সে-অনুযোগও তুলেছেন। সপ্তাহের প্রতিদিন একটি করে ‘ইচ্ছা’ 888sport liveে তিনি সমালোচনা করেছেন কীভাবে ধনীদের জন্য সাবসিডি প্রদান করে সরকার। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও 888sport app সামগ্রী, যা বেশির ভাগই ব্যবহার করে উচ্চশ্রেণি, সেখানেই সাবসিডি দেওয়া হয়। এসব বিষয়ে গণমানুষের মধ্যে সচেতনতা থাকলে তারা প্রতিবাদ করবে। তিনি আরো দেখিয়েছেন, দরিদ্র মানুষের খাদ্যশস্যের ওপর দেওয়া সাবসিডি বা চাকরির সাবসিডি নিয়ে যত বেশি প্রতিবাদ হয়, সে-তুলনায় ধনীদের দেওয়া সাবসিডির বিষয়ে সংবাদমাধ্যম ও সুশীলসমাজ প্রায় নীরব থাকে। তিনি উদাহরণ দিতে গিয়ে দেখিয়েছেন যে, ২০১২ সালে ভারতে বিদ্যুৎবিভ্রাট ঘটলে সংবাদমাধ্যম জানায়, ‘৬০০ মিলিয়ন মানুষ অন্ধকারে নিমজ্জিত’; কিন্তু তারা কোনোভাবেই উল্লেখ করে না যে, এই ৬০০ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে ২০০ মিলিয়নের ঘরে কোনোদিনই বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না, তাই নতুন করে তাদের অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ার কারণ নেই।
জনগণের জন্য বিপুলহারে শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যখাতে অধিক অর্থায়ন, সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ কী করে অতিদ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে পারে, সেটা দেখাতে গিয়ে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীন থেকে জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের কথা উল্লেখ করেছেন। এবং তিনি বিশেস্নষণ করেছেন কীভাবে এসব খাতে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন ঘটিয়ে থাকে এই দেশগুলো। মানুষের উন্নত শ্রমশক্তির সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত তার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য। ভারতের কেরালা রাজ্যের উদাহরণ টেনে লেখক দেখিয়েছেন, ভারতের অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা রাজ্য কেরালা পঞ্চাশের দশক থেকেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেটের বড় অংশ বরাদ্দ করে দ্রুত সবচেয়ে উন্নত রাজ্য হিসেবে দেখা দিয়েছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, নীরোগ জনগণ, প্রায় শতাংশ শিক্ষেত জনগোষ্ঠী হিসেবে কেরালা সর্বাগ্রে উচ্চারিত। ভারতের বুদ্ধিজীবী মহল ও সংবাদমাধ্যম ড. সেনকে ‘প্রবৃদ্ধি-বিরোধী’ অর্থনীতিবিদ হিসেবে প্রতিপন্ন করে থাকে প্রায়শই, এ-অনুযোগ তাঁর নিজের। কিন্তু ছাত্রজীবন থেকে আজ প্রায় ষাট বছরের অধিক কাল যাবৎ তিনি একই রকম অর্থনৈতিক মডেলের জন্য বলে আসছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ক্যামব্রিজের পিএইচ.ডি থিসিস, যা ১৯৬০ সালে Choice of Techniques শিরোনামে বই হিসেবে বেরিয়েছিল, সেখানেও তিনি একই কথা বলেছেন। (আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে স্নাতক শ্রেণিতে সাবসিডিয়ারি বিষয় ‘অর্থনীতি’ থাকার কারণে কিছু কিছু অর্থনীতির বই পড়েছি। এ বইটিও পড়ার চেষ্টা করেছি। মনে পড়ে বইয়ের মলাটে লেখকের নাম ছিল এ. কে. সেন। আজকাল তাঁর সব বইতেই লেখক হিসেবে নাম থাকে ‘অমর্ত্য সেন’; কিন্তু সেকালে কেন তিনি এ. কে. সেন লিখতেন জানি না। ছাত্রজীবন কেটে যাওয়ার অনেক পরে বুঝেছি, দুজন একই লেখক)। যে-অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও 888sport app নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর বিধান থাকে, সেখানে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভব। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে ১৯৭০ সালে প্রকাশিত তাঁর দ্বিতীয় গ্রন্থ Growth Economics-এ। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর অর্থনীতির মডেল বিষয়ে ভাবনার অনুপ্রেরণার উৎস ‘প্রবৃদ্ধি’ অর্জনের চিন্তা। তবে তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন সেই কর্মকা–র ওপর, যাকে বলা হয় ‘বণ্টন ব্যবস্থা’। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলেই একটি জনগোষ্ঠী উন্নত হয় তা নয়, বরং কীভাবে অর্থনৈতিক ‘প্রবৃদ্ধি’র ফলকে অধিকসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানো যায় সেটাই অধ্যাপক সেনের সারা জীবনের স্বপ্ন। এ-বইয়ের 888sport liveগুলোতে সে-কথাকেই বিভিন্নভাবে বারবার বলা হয়েছে।
ভারতের ইউপিএ এবং এনডিএ – দুটো সরকারের আমলেই গত দুই দশক যাবৎ বিপুল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে 888sport free betগরিষ্ঠ মানুষের জীবনব্যবস্থার উন্নয়নে তা তেমন বড় প্রভাব ফেলেনি, বিশেষ করে তা যদি চীন বা ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়। ড. সেনের মতে, ভারত প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে চীন ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রয়েছে। কিন্তু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফল চীন ও ইন্দোনেশিয়া বেশিসংখ্যক মানুষের দ্বারপ্রাস্তে পৌঁছতে পেরেছে, ভারতের চেয়ে অন্তত গত কুড়ি বছরে।
বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ক্যানেথ অ্যারোর গবেষণার উল্লেখ করে ড. সেন দেখাতে চেয়েছেন বীমা কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে না নিলে সত্যিকার অর্থে স্বাস্থ্যখাতে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। জনগণের এক ক্ষুদ্র ধনী অংশ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত পায়; কিন্তু দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী, যারা অর্থনীতির চাকাকে শ্রম ও মেধা দিয়ে সচল রাখে, তারা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়। যার ফলে মূল্য দিতে হয় জাতীয় অর্থনীতিকেই, কারণ সে-ব্যবস্থা প্রবৃদ্ধিতে আঘাত করে। এ-বিষয়ে তিনি বিস্তারিত লিখেছেন তাঁর লেখা Uncertain Glory গ্রন্থটিতে।
আগেই উল্লেখ করেছি ড. সেনের এই বইয়ের অন্যতম উল্লেখযোগ্য 888sport live ‘ক্ষুধা’ (Hunger)। 888sport liveটি তিনি শুরু করেছেন জর্মন কবি হাইনরিশ হাইনের একটি 888sport app download apkর উদ্ধৃতি দিয়ে। কবি হাইনে লিখেছেন, ‘It is so old a story,/ Yet somehow always new’। শতাব্দীর হতাশা ছিল জার্মানি নিয়ে, হাইনের মনে। 888sport app download apkটি ছাপা হয়েছিল ১৮২৩ সালে, হাইনে স্বেচ্ছানির্বাসনে প্যারিস চলে যান এর সাত বছর পর অর্থাৎ ১৮৩০ সালে।
ভারতের বর্তমান সংস্কৃতি-অর্থনীতির ইতিহাস নিয়ে ড. সেনও হয়তো মোহ্যমান তেমনি এক গাঢ় হতাশার মধ্যে, বলা যায় কিছুটা ক্রুদ্ধও তিনি, রাজনীতিকদের ওপর, বর্তমান অর্থনৈতিক ‘বণ্টন’ ব্যবস্থা নিয়ে, যার জন্য একে তিনি বলেছেন ‘Barbarity of old problems with new and added dimensions’। তিনি স্বীকার করেছেন, স্বাধীনতার পর গত সত্তর বছরে ভারতবর্ষ অনেকখানি এগিয়েছে, উন্নতি করেছে অনেক ক্ষেত্রে। কিন্তু যে-স্বপ্ন নিয়ে ভারতবর্ষ যাত্রা শুরু করেছিল, তার অনেকখানিই অর্জন সম্ভব হয়নি, রাজনীতি-অর্থনীতির অব্যবস্থিত সংকীর্ণতার জন্য। এ-888sport liveে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, বিপুলসংখ্যক জনসমষ্টি এখনো খাদ্যাভাবে দিন কাটায়, রাতে ঘুমুতে যায় অর্ধাহার বা অনাহারে। ভারতের বিপুলসংখ্যক মানুষের ‘অনাহার’ এতই করুণ যে, সেটা তিনি তুলনা করে দেখিয়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন, সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোর চাইতেও এর অবস্থা করুণ।
অপুষ্টিজনিত কারণে ভারতের শিশুদের স্বাস্থ্যবিষয়ে ড. সেন সত্যিই উদ্বিগ্ন। অপুষ্টিকে অর্থনীতিবিদরা নাম দিয়েছেন ‘Protein-energy malnutrition’, যা কিনা ভারতে প্রায় আফ্রিকার দেশগুলোর চাইতে দ্বিগুণ। ভারতের প্রায় অর্ধেক শিশু দীর্ঘদিনের অপুষ্টিতে দিন কাটায়, প্রায় অর্ধেক প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার রয়েছে রক্তশূন্যতা রোগ। তিনি দেখিয়েছেন যে, এসব প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার অধিকাংশ সন্তানই জন্ম নেয় স্বল্প-ওজন নিয়ে, যার ফলে এসব শিশু বড় হয়ে অধিকাংশই হৃদরোগের শিকার হয়। এ-বিষয়ে ভারতের চিত্র পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের চেয়েও খারাপ। অধ্যাপক সেন হতাশা ও ক্রোধমিশ্রিত ভাষায় লিখেছেন যে, স্বাধীনতার পর ভারত ‘ক্ষুধা’কে অতিক্রম করতে সমর্থ হয়েছে বলে যে-প্রচার অবিরাম শোনা যায়, তা আসলে শূন্যগর্ভ মিছে কথা। দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ ও ক্ষুধা নিবারণ প্রক্রিয়া অর্থনীতিতে একটি ‘জটিল ক্রিয়াকা-’ (complex task) বলে উল্লেখ করেছেন। এর সঙ্গে 888sport app বিষয় জড়িত, যেমন ন্যায়বোধ, গণতান্ত্রিক স্বচ্ছতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ইত্যাদি।
এই 888sport liveের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এখানে ড. সেন দেখিয়েছেন ক্ষুধার সঙ্গে শিক্ষার সম্পর্ক, ক্ষুধার সঙ্গে সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী 888sport promo codeর ক্ষমতায়নের সম্পর্ক। তাঁর মতে, ‘ক্ষুধা’ সমস্যাকে সমাধান না করে শিক্ষা ও লিঙ্গবৈষম্য সমস্যাকে দূর করা সম্ভব নয়। ভারতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় স্বল্প আয়, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ত্রম্নটিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং মৌলিক শিক্ষার ক্ষেত্রে উদাসীনতা, দেশের অধিকাংশ মানুষকে দরিদ্র করে রাখছে। নিজের ব্যক্তিগত একটি অভিজ্ঞতার উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি; ইতালির রোমে একদিন রাতে তিনি হোটেলকক্ষে টেলিভিশনে সংবাদ দেখছিলেন। সংবাদ-পাঠক জানান যে, বিশ্বের প্রায় নববইটি দেশে ভারত শিক্ষেত ও প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন শ্রমিক রফতানি করে। তখন তাঁর মনে হলো, কী করে এটা সম্ভব! যে-দেশের প্রায় তিরিশ শতাংশ লোক নিরক্ষর, সেখানে কি এটা সম্ভব! নিশ্চয়ই সম্ভব, যদি সে-দেশের শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত ত্রম্নটিপূর্ণ হয়। ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার গুণগত মান নিয়েও ড. সেন অত্যন্ত গভীর উদ্বেগের কথা ব্যক্ত করেছেন।
এ-888sport liveে তিনি আরো উল্লেখ করেছেন যে, শিক্ষা ও অপুষ্টি প্রলম্বিত সময়ের জন্য ভারতের জনগোষ্ঠীকে আঘাত করছে, বিশেষ করে মহিলাদের তাদের মেধা ও শক্তির সদ্ব্যবহার থেকে বঞ্চিত করছে, যার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব দেশের 888sport app ক্ষেত্রেও ক্রিয়াশীল। অপুষ্টি, বিশেষ করে মেয়েদের অপুষ্টিজনিত ভঙ্গুর স্বাস্থ্য তাদের সন্তানদেরও ক্ষতির কারণ, বিশেষ করে এটা তাদের মনোজাগতিক বা বৌদ্ধিক কর্মকা– আঘাত করে। ড. সেন যাকে বলেছেন ‘development of cognitive functions and skills’-এর জন্যও বিশেষভাবে ক্ষতিকর।
ড. সেন গ্রন্থের নাম888sport live ‘দি কানট্রি অব ফার্স্ট বয়েজ’ শুরু করেছেন একজন ইংরেজ চিকিৎসকের গ্রন্থ Religio Medici থেকে একটি উদ্ধৃতি নিয়ে। লেখক-চিকিৎসক টমাস ব্রাউন ১৬৪৩ সালে প্রকাশিত তাঁর উক্ত গ্রন্থে লিখেছেন, ‘I love to lose myself in a mystery.’ কী ধরনের রহস্যের মধ্যে এই খ্যাতিমান ইংরেজ চিকিৎসক নিজেকে হারাতে চেয়েছেন! আধুনিক ধন888sport apkী-দার্শনিক ড. সেন রসিকতা করে বলেছেন, তিনি হয়তো এ-ধরনের চিকিৎসক থেকে দূরে থাকবেন যিনি রহস্যের মধ্যে হারিয়ে যেতে চান। তবে ড. সেন যা-ই বলুন না কেন, আধুনিক শরীর-888sport apk ও চিকিৎসা-888sport apk মানবদেহের ‘রহস্য’ নিয়ে সত্যিই বিস্মিত। সম্প্রতি নির্মিত কলকাতার একটি অসাধারণ বাংলা live chat 888sport দ্বন্দ্ব, তাতে মুখ্য চরিত্র একজন নিওরো সার্জন (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) মানুষের মসিন্তষ্কের অসাধারণ রহস্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিজেকে তুলনা করেন একজন ‘কবি’র সঙ্গে। ওয়াল্ট হুইটম্যানের 888sport app download apk –
‘I am the poet of the body
I am the poet of the soul’
উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, মসিন্তষ্কের সার্জনরা মানবদেহের ‘কবির’ মতো। গভীর রহস্যম–ত মানব-মসিন্তষ্কের হাজারো শিরা-উপশিরা 888sport app download apkর শৃঙ্খলার মতোই অপার ‘রহস্য-সৌন্দর্য’ সৃষ্টি করে। সার্জন সে-রহস্যের মাঝেই ডুবে থাকেন। ড. সেনের চিকিৎসক সে-রকম রহস্যের ও তার সৌন্দর্যের কথা বোঝাতে চেয়েছেন কিনা, কে জানে! যা হোক ড. সেন কিছুটা রসিকতার ছোঁয়া দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন যে, টমাস ব্রাউন মারান্তক রহস্যের মধ্যে ডুবে থাকতে পারতেন যদি তিনি কোনোদিন ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা সম্বন্ধে জানতে পারতেন। অধ্যাপক সেনের মতে, ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা গুণগতভাবে যে শিক্ষা দিয়ে থাকে তা সত্যিই খুব নিম্নমানের। এদেশে ‘ফার্স্ট বয়েজ’রা নিজেদের শিক্ষা নিয়ে গর্ব করেন, সারাজীবন মনে রাখেন, তিনি ক্লাসে ‘প্রথম’ হয়েছিলেন, কিন্তু নিজের যোগ্যতা অর্জন ও সাফল্য তাঁর কাছে ওই সামান্য ক্লাসের পরীক্ষার ট্রান্সক্রিপ্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বহু বছর আগে ভারতের একজন শিক্ষামন্ত্রী, যিনি পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, ড. সেনকে জানিয়েছিলেন, তাঁর শিক্ষাজীবনে ‘ফার্স্ট বয়’ হওয়ার কথা। তিনি পরীক্ষার নম্বর পর্যন্ত অবিকল মনে রেখেছিলেন। ড. সেন মনে করেন, ‘At every level, Indian education is obscessed with the first boys. In the classroom, in society and in the making of public policy.’ ড. সেন এই পর্যবেক্ষণের মধ্যে দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন যে, পরীক্ষার ও ক্লাসরুমের এই ‘মহিমা’বোধ সমাজকে এমন এক শিক্ষা ও সমাজ ব্যবস্থায় আচ্ছন্ন করে রাখছে, যেখানে অধিকাংশ মানুষ
যাঁরা ‘ফার্স্ট বয়েজ’ নন, তাঁদের ‘সুযোগ’ ও ‘সম্মান’ সত্যিই সীমিত। পুরো শিক্ষাজীবনে প্রবেশিক্ষা পরীক্ষা থেকে প্রেসিডেন্সি কলেজে অর্থনীতি সম্মান (বি.এ) পরীক্ষায় ড. সেন ‘ফার্স্ট বয়’ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন, এমনকি ক্যামব্রিজে স্নাতক পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি পান। কিন্তু তিনি সারাজীবন এমন অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কথা বলে আসছেন, যেখানে সমাজের 888sport free betগরিষ্ঠ ‘অ-ফার্স্ট বয়েজ’দের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা যায়। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা কীভাবে মারান্তক অসম শিক্ষা ও সমাজ জীবনের সৃষ্টি করে। তিনি লিখেছেন, ‘It is in that structural perspective, combining considerations of efficiency with equity, that we can best understand how and how much the country loses through its extraordinary concentration on first boys.’
২০১৪ সালে জয়পুরে একটি আন্তর্জাতিক 888sport live football সম্মেলনে ড. সেন আমন্ত্রিত হয়ে বক্তৃতা করেন, যেখানে বহু গুণীজনের সামনে নিজের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে তিনি এক রূপকাশ্রিত গল্পের মাধ্যমে ভারতের কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন, যেসব বিষয় যিনি সারাজীবন ধরে চর্চা করছেন। ড. সেন জানান যে, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে অসীম আকাশে তিনি এক সুন্দরী মহিলার সাক্ষাৎ পান, যিনি নিজেকে GMT বা ‘Goddess of Medium Things’ বলে দাবি করেন। ড. সেন তাঁর কাছে জানতে পারেন যে, এই ‘দেবী’ তাঁকে বর দিতে পারেন, যাতে তিনি যা চাইবেন তা পাবেন। ড. সেন প্রতিদিন, সপ্তাহের প্রতিদিন একটি করে স্বপ্ন বাসন্তবায়নের আর্জি করতে পারেন, ‘দেবী’ তাঁকে তাই দেবেন। বিশেষ করে দেশের জন্য, দেশের কল্যাণের জন্য, তিনি এসব বর পাবেন। ড. সেন একটি একটি করে উল্লেখ করতে থাকেন তাঁর আর্জি। প্রথমত ধ্রম্নপদী শিক্ষা, 888sport live football ভাষা, সংগীত বিষয়ে ভারতীয় সমাজ একেবারেই উদাসীন। তারা এখন প্রাচীন ফার্সি, ল্যাটিন, গ্রিক, আরবি, হিব্রম্ন ও প্রাচীন তামিল ভাষা শেখে না। তাই তিনি ‘দেবীর’ কাছে এসব বিষয়ে শেখার বর চান। দ্বিতীয় আর্জি, রাজনীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করার বর। তৃতীয় – ভ্রাতৃত্ববন্ধন। বিখ্যাত রাজনীতিক মিনু মাসানীর উল্লেখ করে ড. সেন ভারতীয় সংসদে ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৪৬ সালে মাসানীর দেওয়া এক বক্তৃতার উদ্ধৃতি দিয়ে বোঝাতে চান যে, ‘ভ্রাতৃত্ববোধ’ ভারতীয় রাজনীতি থেকে একেবারে উবে গেছে। তাঁর অঙ্গুলি নির্দেশ আসলে ধর্মীয় রাজনীতির দুরাচার কীভাবে সমাজকে বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যাচ্ছে সেদিকে। চতুর্থত, ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ’, চৈনিক অর্থনৈতিক প্রসার, দক্ষিণ আমেরিকার আর্থিক দুরবস্থা সম্পর্কে কীভাবে অজ্ঞ ভারতবাসী, ‘সাম্রাজ্যবাদ’ নিয়ে তাদের সংজ্ঞা ও জ্ঞান কতটা ধোঁয়াটে সে-কথা উল্লেখ করে ড. সেন আর্জি পেশ করেন যাতে গণমাধ্যম এসব বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সঠিক বার্তা পৌঁছে দিতে পারে। পঞ্চমত, তিনি দেখাতে চান ভারতীয় আর্থিক প্রবৃদ্ধির খুব সামান্য অংশ সাধারণ মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি খাতে ব্যয় হয়ে থাকে। তাই তিনি দেবীকে জানান, তিনি চান এসব খাতে বেশি পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হোক। এছাড়া শিশুদের শিক্ষা ও পুষ্টিদান নিয়েও তিনি দাবি পেশ করেন। তাঁর ষষ্ঠ দাবি, ভারতের আইনব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে। তিনি জানান, ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা সমকামীদের জীবনযাপনবিরোধী আইন জারি করে। যার ফলে এখনো বহু মানুষের জীবনব্যাপ্তি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভারতীয় পেনাল কোডের ৩৭৭ ধারার সে-আইনটি পরিবর্তন করার আর্জি জানান তিনি। এছাড়া লিঙ্গ-অসমতা ও 888sport promo code-অধিকার নিয়ে ড. সেন তাঁর দাবি পেশ করেন। দুর্নীতি, অনাহার, অশিক্ষা, শিশু-স্বাস্থ্য-সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।
একজন অর্থ888sport apkী 888sport live football সম্মেলনে নিজের উদ্বেগ বিষয়ে অর্থনৈতিক সমস্যাকে উপস্থাপন করেন 888sport live footballের নির্মিতিতে (ফর্ম)। রূপক ও স্যাটায়ারের ভঙ্গিতে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাকে গল্পাকারে তুলে ধরেন ড. সেন। তাঁর মুন্শিয়ানায় ‘অর্থনীতি’র বিষয় হয়ে ওঠে ‘888sport live chatে’র বিষয়।
ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে যে-কয়েকজন কমিউনিস্ট নেতা অতি শ্রদ্ধেয়, অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় তাঁদের অন্যতম। কলকাতা ও অক্সফোর্ডের ইতিহাসের কৃতী ছাত্র হীরেন মুখার্জি বাঙালি পাঠকের কাছে 888sport app download for androidীয় রাজনীতিবিদ ছাড়া অন্য আরেকটি পরিচয়ে। তিনি 888sport live footballের পূজারি। অধ্যাপক আবু সয়ীদ আইয়ুবের সঙ্গে যৌথভাবে সম্পাদনা করেছিলেন আধুনিক বাংলা 888sport app download apk গ্রন্থ। চলিস্নশের দশকে প্রকাশিত সে-গ্রন্থ আলোচনার ঝড় তুলেছিল। নিজের আন্তজীবনী তরী হতে তীর গ্রন্থে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক ও ভারতীয় পার্লামেন্ট নিয়ে তিনি দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। অনেকের মতো ড. সেনের কাছেও হীরেন মুখার্জি শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। ভারতীয় পার্লামেন্টের সেন্ট্রাল হলে ২০০৮ সালের ১১ আগস্ট ‘হীরেন মুখার্জি’ স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন ড. সেন। সে-বক্তৃতার সংক্ষেপ্তরূপ ‘What should keep us awake at night’ 888sport live। হীরেন মুখার্জিকে নিজের জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী মানুষ হিসেবে তিনি বর্ণনা করেন। তিনি লেখেন, ‘Hiren Mukherjee was something of a hero of mine for a very long time. Among his remarkable qualities and virtues, there were three things in particular that moved me greatly.’ অধ্যক্ষ মুখার্জির যে-তিনটি মহৎ গুণকে তিনি উল্লেখ করেছেন, তাহলো প্রথমত, ভারতীয় দরিদ্র মানুষের জন্য গভীর মমতা; দ্বিতীয়ত, ইতিহাসের রিজনিং ও ক্রিটিক্যাল বিশেস্নষণের প্রতি মনোযোগ এবং তৃতীয়ত, সংস্কৃত ভাষা ও 888sport live footballের প্রতি গভীর অনুরাগ এবং সামগ্রিকভাবে বইয়ের প্রতি গভীর ভালোবাসা। অধ্যাপক মুখার্জির বক্তৃতামালা বিশেষ করে ভারতীয় পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তৃতার গুণমুগ্ধ শ্রোতাদের একজন ছিলেন প–ত জওহরলাল নেহরু। এসব বক্তৃতার বিশেষ অলংকার ছিল প্রাচীন সংস্কৃত 888sport live football থেকে উদ্ধৃতি। ড. সেন হীরেন মুখার্জির ‘ন্যায়বোধ’ নিয়েই মূলত আলোচনা করেছেন। কিন্তু ইতিহাসের ছাত্র এবং কিছুটা হলেও ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম সৃষ্টিকারী সন্তান হীরেন মুখার্জির রাজনীতি কীভাবে ‘ন্যায়বোধ’ ও ‘সামাজিক ন্যায়বিচার’ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো সেটাই ড. সেনের আলোচনার মূল বিষয়। এ-আলোচনায় তিনি ‘নীতি’ ও ‘ন্যায়’ নিয়ে দার্শনিক আলোচনা করেছেন যা বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে ২০০৯ সালে প্রকাশিত তাঁর The idea of Justice গ্রন্থে। সুদীর্ঘ ও গভীর চিন্তামূলক সে-দার্শনিক গ্রন্থ ড. সেনের কয়েকটি অসাধারণ গ্রন্থের একটি।
‘What should keep us awake at night’ এ-গ্রন্থের শ্রেষ্ঠ 888sport liveের একটি। ভারতীয় সমাজের প্রাচীন 888sport live football ও ইতিহাসে যেভাবে ‘ন্যায়বোধ’ ও ‘ন্যায়বিচার’ বিশেস্নষিত হয়েছে তার সঙ্গে ইউরোপীয় ‘ন্যায়বোধ ও নীতি’বিষয়ক তাত্ত্বিক তুলনামূলক আলোচনা করে ড. সেন দেখাতে চেয়েছেন যে, সমাজে কোনো বড় রকমের বিপস্নব বা পরিবর্তনের আগে সমাজ-মানসে ও চিন্তাজগতে ‘ন্যায়’, ‘নীতি’ ও ‘বিচারবোধের’ বিষয়ে বড় পরিবর্তন ঘটে থাকে। অধ্যাপক আবু সয়ীদ আইয়ুব তাঁর একটি লেখায় ভারতীয় সমাজেবিপস্নবের কথা বলতে গিয়ে একজন ভারতীয় দার্শনিক-রাজনীতিকের একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করেছিলেন, ‘Political revolution must be preceded by social revolution in India.’ ড. সেনের মন্তব্যের সঙ্গে যার সাদৃশ্য রয়েছে। ইউরোপীয় এনলাইটেনমেন্টের বিশেষ করে অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভূমিকা ছিল সমাজ-বিপস্নবে। সরাসরি প্রভাব ছিল ফরাসি ও আমেরিকার বিপস্নবে।
এ-গ্রন্থের আরেকটি উল্লেখযোগ্য 888sport live নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে লেখা ‘On Nalanda University’। এগারো বছর বয়সে মাতাসহ অধ্যাপক ক্ষেতিমোহন সেন তাঁকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষ। বালক সেনের মনে সে-888sport sign up bonus গভীরভাবে ছাপ ফেলেছিল। পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। ইউরোপ প্রায়শই গর্বের সঙ্গে উচ্চারণ করে থাকে ১০৮৮ সালে স্থাপিত ইতালির বোলোগনায় স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়কে। কিন্তু তারও ছয় শতাব্দী আগে পঞ্চম শতাব্দীর প্রথম দিকে স্থাপিত হয় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। ভারত সরকারের সিদ্ধাস্তে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন করে শুরু করার পর এর প্রথম চ্যান্সেলর নিযুক্ত করা হয় অধ্যাপক সেনকে। তাঁর ছেলেবেলার 888sport sign up bonusর প্রতি দুর্বলতার জন্য তিনি সেখানে যোগ দেন। প্রায় পনেরোশো বছর আগে একমাত্র চীনের বাইরে, নালন্দায় শুরু হয় আধুনিক শিক্ষার, বিশেষ করে চিকিৎসাশাস্ত্র, বৌদ্ধ দর্শন ও 888sport live football, মানবিক কলা ইত্যাদি বিষয়ে, এশিয়ার প্রথম আধুনিক শিক্ষালয়। চীন ও জাপান থেকে বিপুলসংখ্যক ছাত্র এখানে পড়াশোনা করতে আসতেন। প্রায় সাতশো বছর শিক্ষাদানের পর নববইয়ের দশকে বখতিয়ার খিলজি ভারত দখল করলে তাঁর সৈনিকরা মাটিতে গুঁড়িয়ে দেন এ-বিশ্ববিদ্যালয়কে। কয়েক হাজার ছাত্রের শিক্ষালয়, বিপুল পরিমাণ মূল্যবান পা-ুলিপিসহ বিশাল পাঠাগার ও শিক্ষাকলার সামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভারতীয় সভ্যতার জন্য এ ধ্বংসলীলা ছিল সত্যিই ট্রাজিক। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয় ১১৬৭ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার কয়েক বছর পরই। ড. সেন এ-বিশ্ববিদ্যালয়কে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হিসেবে দেখার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সত্যিই বড় পরিকল্পনার কাজ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার ও প্রতিষ্ঠান ভারত সরকারকে আর্থিক ও 888sport appভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন এ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। ড. সেন এখানে বেশিদিন থাকতে পারেননি। শোনা যায়, বর্তমান বিজেপি সরকার তাঁর চাকরির মেয়াদ নবায়ন করেনি। সেটাও এক বড় রাজনীতির দ্বন্দ্ব। ড. সেন প্রকাশ্যে নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করেছেন গুজরাতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর। তাঁর অনুপস্থিতিতে নালন্দা বড় একজন জ্ঞানতাপস হারাল। এ-বইয়ের অন্যতম উল্লেখযোগ্য 888sport live ‘What Difference Can Tagore Make?’ প্রায় আড়াই দশক আগে নিউইয়র্ক রিভিয়্যু অব বুকস পত্রিকায় ড. সেন রবীন্দ্রনাথ-বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি 888sport live রচনা করেন। বর্তমান 888sport liveের প্রতিপাদ্য বিষয় অনেকটা সে-888sport liveের মতোই, কিন্তু পার্থক্য হলো, বর্তমান 888sport liveটি অনেক বেশি রবীন্দ্রনাথের ‘ভাবনাজগৎ’ নিয়ে আলোচনা। কবির কাব্য-সৌন্দর্য নিয়ে যতটা না আলোচিত, তার চেয়েও বেশি আলোচিত হয়েছে তাঁর কাব্য-দর্শনের গভীরতা বা বিশ্বের 888sport app দার্শনিকের তুলনায় কোথায় তাঁর অবস্থান তা নিয়ে। সংগীত888sport live chatী রবিশঙ্করের রাগমালা গ্রন্থের একটি মন্তব্য দিয়ে লেখাটি শুরু। ড. সেন দেখাতে চেয়েছেন, পশ্চিমা পাঠকরা রবীন্দ্রনাথকে মূল্যায়ন করে তাঁর 888sport app download apkর দর্শন দিয়ে। 888sport app download apkর সৌন্দর্য বিচার করে না বা বিদেশিদের বাংলা ভাষা না জানার কারণে এ-ভাষার ‘সংগীত’, যা 888sport app download apkকে প্রাণ দেয় যা বোঝার কথাও নয়। 888sport liveটি গভীর আলোচনার বিষয়। এর পক্ষে-বিপক্ষে বড় বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে, কারণ 888sport app download apkর আলোচনা বা রবীন্দ্রনাথের মতো বড় কবির যে-কোনো সৃষ্টিই আলোচিত হতে পারে কাব্য-সৌন্দর্য বিচার দ্বারা।
সর্বোপরি ড. সেনের এই গ্রন্থ The County of First Boys অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বই। সমাজকে তিনি দেখেছেন দার্শনিক-অর্থনীতিবিদের দৃষ্টিতে শুধু নয়, বরং একজন বড় জ্ঞানতাপসের দৃষ্টিতে। r
হত্যা ও আন্তহত্যার গল্প
সুব্রত বড়ুয়া
কথা888sport live footballিক আবুল ফজল তাঁর লেখালেখির ক্ষেত্রে সত্য ও ন্যায়নিষ্ঠা এবং সামাজিক দায়িত্বকে অন্তর্নিহিত প্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। অসাম্য, অন্যায়, অবিচার ও শাসন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিজের কলমকে ক্ষুরধার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারে তিনি ছিলেন আপসহীন। ব্যক্তিগত জীবনেও তাঁর এই সাহসী অবস্থানের অন্যথা হতে কখনো তেমন দেখা যায়নি। গোঁড়ামি ও কুসংস্কারমুক্ত মনমানসিকতা নিয়ে আজীবন তিনি স্বচ্ছ দৃষ্টিতে জীবনকে অবলোকন করেছেন এবং সেই অবলোকনের অনিবার্য প্রতিফলন ঘটেছে তাঁর সব ধরনের রচনায়। সম্প্রতি প্রকাশিত (ফেব্রম্নয়ারি, ২০১৭) মৃতের আন্তহত্যা নামক গল্পগ্রন্থটি এই লেখকের প্রতিবাদী চরিত্রের আর-এক দৃষ্টান্ত। পঁচাত্তর সালের পনেরো আগস্টের ভোরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং কয়েকজন নিকটাত্মীয়ের মর্মামিন্তক মৃত্যুর ঘটনায় 888sport appsের মানুষ শোকে ও ক্ষোভে সন্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেদিনের খুনিরা যে দেশে ও বিদেশে বিসত্মৃত গভীর এক সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই সেই নারকীয় হত্যাকা- ঘটিয়েছিল তাতে আজ আর কারো সন্দেহ নেই। 888sport appsের শাসনব্যবস্থায় এরপর এক সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন সূচিত হয়। এই পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অধ্যাপক আবুল ফজল কীভাবে ‘মৃতের আন্তহত্যা’ নামে যে গল্পটি লিখেছিলেন এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে বইটির প্রথম ‘ফ্ল্যাপ’ অংশে। এতে লেখা হয়েছে :
‘মৃতের আন্তহত্যা’ নামের গল্পটি কথা888sport live footballিক আবুল ফজল তাঁর শেষ বয়সে এসে স্বাধীন 888sport appsের প্রথম সামরিক শাসনের সময় সবরকম বাক্স্বাধীনতা রুদ্ধ করা পরিবেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে রচনা করেছিলেন। উল্লেখ্য, আবুল ফজল জিয়াউর রহমানের বারবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে তিনটি শর্তে, যার অন্যতমটি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, জিয়াউর রহমানের সম্মতি নিয়ে তাঁর উপদেষ্টা পরিষদে যোগ দেন। যোগ দেওয়ার পরপরই তিনি তাঁর দেওয়া শর্ত বাসন্তবায়নের অবস্থা সম্পর্কে সুযোগ পেলেই জিয়াকে প্রশ্ন করতেন। বেশ কিছুদিন পরও যখন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের কোনো অগ্রগতি দেখতে পেলেন না তখন তিনি গল্পের আবরণে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না করার প্রতিবাদ জানিয়ে এ-গল্পটি লিখে সমকাল ম্যাগাজিনে প্রকাশের জন্য দেন। সমকালের সেই 888sport free betর সব কপি ছাপা সম্পন্ন হলে ভোরেই জিয়ার নির্দেশে পুলিশ ছাপাখানা থেকে বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায়। পরে অবশ্য ওই ইস্যুটি গোপনে অনেক কপি হয়ে সুধী সমাজের হাতে চলে যায়।…
মৃতের আন্তহত্যা বইটিতে নাম-গল্পটি ছাড়াও আরো তিনটি গল্প (‘নিহত ঘুম’, ‘ইতিহাসের কণ্ঠস্বর’, ‘কান্না’) এবং লেখকের আন্তজা মমতাজ লতিফকৃত মৃতের আন্তহত্যার নাট্যরূপ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উপর্যুক্ত তিনটি গল্পও মূলত পঁচাত্তরের সেই হত্যাকা–র পরিপ্রেক্ষিত অবলম্বনে রচিত।
গ্রন্থধৃত এ-চারটি গল্পই মূলত রূপক গল্প, প্রতীকী প্রতিবাদের উদ্দেশ্য নিয়ে রচিত গল্প। সে-কারণে গল্পের 888sport live chatোৎকর্ষ ও 888sport live footballমান বিচারকে গৌণ রেখে এসব গল্পের বক্তব্যকেই প্রধান বিষয়রূপে বিবেচনা করা সমীচীন বলে মনে হয়। কিন্তু একই সঙ্গে গল্প হিসেবেও এগুলোর মূল্য কম নয়। রূপকাশ্রয়ী এ-গল্পগুলোর যে-বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো – ইতিহাসের একটি বিয়োগান্ত অধ্যায়ের সঙ্গে এগুলোর সম্পর্ক। ‘মৃতের আন্তহত্যা’ গল্পে হত্যাকা–র পরে খুনি সামরিক অফিসারদের একজনের স্ত্রীর বিদেশে নির্বাসিত জীবনের গস্নানি ও মনোবেদনা বিবৃত হয়েছে আত্যমিন্তক বাসন্তবতাবোধের আলোকে। এ-কাহিনি বাসন্তব কিংবা কল্পনাশ্রয়ী – যা-ই হোক না কেন – এর বক্তব্য যে অনায়াসে পাঠকের মন ও চিন্তাকে স্পর্শ করতে পারে সে-বিষয়ে ভিন্ন চিন্তার কোনো অবকাশ থাকে না। এ-গল্পটির যে একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে, সে-কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই। বস্ত্তত এ-গল্প রচনার প্রেক্ষাপট ও সময়ের কথা বিবেচনা করলে 888sport live footballিক আবুল ফজলের চিরকালীন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের পরিচয়ই আমরা আরো একবার পাই। অন্য তিনটি গল্পেও রূপকের আশ্রয়ে পনেরোই আগস্টের হত্যাকা–র বিষয়টিকে নানা ভাবনার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে, কয়েকটি প্রতীকী রূপক চরিত্র সৃষ্টির সাহায্যে। এতদসত্ত্বেও কোনো গল্পই জোর করে বানানো বলে মনে হয় না, বরং এই গল্পগুলো পড়ার পর এ-দেশের কিছু মানুষের অচিন্তনীয় নির্মমতার বিষয়টি আরো গভীরভাবে মনে রেখাপাত করে, বেদনায় মন আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ‘নিহত সৈনিক’ গল্পে বর্ণিত হয়েছে এক সৈনিকের গল্প, পঁচাত্তরের পনেরো আগস্টের হত্যাকা– অংশ নিয়েছিল যে। তার মনেও নিরপরাধ মানুষদেরও যে সে হত্যা করেছে সে-ব্যাপারে প্রশ্ন জেগেছে। সৈনিকের ধর্ম কী সে-প্রশ্নও সে করেছে নিজেকে। তার চোখে ঘুম নেই। পরিণতিতে এক করুণ মৃত্যু। ‘ইতিহাসের কণ্ঠস্বর’ গল্পে এই হত্যাকা–র যাঁরা শিকার তাঁদেরই পরিবারের এক বর্ষীয়ান মানুষের রূপক চরিত্রের মাধ্যমে পঁচাত্তরের হত্যাকা- নিয়ে চিন্তাভাবনা বিবৃত হয়েছে। আর ‘কান্না’ গল্পে এই নারকীয় ঘটনার বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে একটি কিশোর ছেলের প্রতিক্রিয়া ও জবানিতে।
‘কেন এই বই’ শিরোনামে মমতাজ লতিফ এ-বইয়ের যে-প্রবেশক লিখেছেন, সেটি থেকে পাঠক এমন কিছু বিষয় জানতে পারবেন, যেগুলো হয়তো পূর্বে তাঁর অজ্ঞাত ছিল অথবা মনে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছিল। মমতাজ লতিফ মৃতের আন্তহত্যার যে-নাট্যরূপ দিয়েছেন সেটিও তাঁর প্রত্যাশামতো live chat 888sport বা নাট্যকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে আশা করা যায়। r
ভিন্ন এক পৃথিবীর প্রতিচ্ছবি
নাজিয়া ফেরদৌস
অভিজ্ঞতা-সিক্ত অনুভূতি আর কল্পনাসঞ্জাত অভিব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য বিসন্তর। এই পার্থক্যকে যাঁরা উপলব্ধিতে আনতে পারেন তাঁরাই পারেন পাঠক-হৃদয়ের গভীরতম স্থানে প্রবেশ করে পাঠকের মনঃসংযোগে আলোড়ন সৃষ্টি করতে। মানুষ মাত্রই কল্পনাপ্রবণ। কল্পনার পাখাকে মেলে দিয়ে দেশ থেকে দেশান্তরী হতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৃথিবীর জ্ঞানকে মনোগত করতে নিবিষ্ট হয়েছিলেন 888sport slot gameে। মনোনিবেশ করেছিলেন 888sport slot gameগ্রন্থে। ‘ঐকতান’ 888sport app download apkয় তার স্পষ্ট ভাষ্য ‘বিশাল বিশ্বের আয়োজন;/ মন মোর জুড়ে থাকে অতিক্ষুদ্র তারি এক কোণ।/ সেই ক্ষোভে পড়ি গ্রন্থ 888sport slot gameবৃত্তান্ত আছে যাহে/ অক্ষয় উৎসাহে’। (‘ঐকতান’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) 888sport slot gameের স্বাদ অনেকাংশে মেটাতে জুড়ি নেই 888sport slot gameগ্রন্থের। 888sport slot gameপিপাসু পাঠকদের জন্য অসাধারণ একটি সংগ্রহ হতে পারে 888sport live footballিক মঈনুস সুলতানের পুষ্পিত ফরাশ ও বেগুনি জ্যোৎসণা গ্রন্থটি। এখানে বেলজিয়াম ও প্যারিসের বিভিন্ন স্থানের অসাধারণ সব বর্ণনার পাশাপাশি রয়েছে জনজীবনের একটি অনুন্মুক্ত রূপ, যা পৃথিবীর কাছে রঙিন পর্দার আবরণে 888sport app। প্রতিটি স্থানের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনার সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে লেখকের নিজস্ব অভিব্যক্তি ও দৃষ্টিভঙ্গির অদ্ভুত সমন্বয়। 888sport slot gameগ্রন্থ হয়েও এতে ফুটে উঠেছে পৃথিবীর এক বিরূপ বাসন্তবতা। রোগের সংক্রমণ আর মানুষের নৃশংস আচরণের কাছে পরাজিত হয়েছে মানবিকতা। ব্যথাতুরা পৃথিবীর একটি ভিন্ন রূপ লেখক অঙ্কন করেছেন গ্রন্থটিতে। চিরাচরিত পৃথিবীর বাইরে তাই পুষ্পিত ফরাশ ও বেগুনি জ্যোৎসণা হয়ে উঠেছে ভিন্ন এক পৃথিবীর প্রতিচ্ছবি।
মানুষের পলায়নপর মানসিকতা তাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় প্রতিনিয়ত। শঙ্কাহীন জীবনের সন্ধানে তারা পাড়ি জমায় দেশ থেকে দেশান্তরে; কিন্তু চিরসাথির মতো প্রতিটি স্থানেই আশঙ্কা তাদের পিছু ছাড়ে না। লেখক মঈনুস সুলতান সিয়েরালিওন থেকে ইবোলার সংক্রমণ রোধে পাড়ি জমান বেলজিয়ামে। সেখানে ব্রাসেলসে কিছুদিন কাটিয়ে যান ফ্রান্সে। বেলজিয়াম ও ফ্রান্সের বিভিন্ন স্থানে 888sport slot gameের সঙ্গে সঙ্গে তার চলার সাথি হন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সুবাদে লেখক দেখতে পান পৃথিবীর কাছে আড়ালকৃত শহরের জীবন। মানুষের একাকিত্ব, পেশার ভিন্নতা আর নিয়ত পরিবর্তনশীল মনুষ্য চরিত্র। পুষ্পিত ফরাশ ও বেগুনি জ্যোৎসণা গ্রন্থটিতে তিনি বিভিন্ন স্থানের মানুষের, বিশেষ করে 888sport promo codeদের, পোশাক-পরিচ্ছদ, আচরণ ও মানসিকতাকে তুলে ধরেছেন। পাঠকের সামনে উন্মুক্ত করেছেন বিদেশে প্রচলিত লোকচক্ষুর আড়ালে পরিচালিত অবৈধ সব ব্যবসাকে। শুধু স্থানের মনোহর বর্ণনাই নয়, এখানে সংযুক্ত হয়েছে নাম-না-জানা বাহারি অসংখ্য খাবারের নাম, মূল্যবান পাথরের নাম আর অবাক করা সব স্থাপত্য888sport live chatের বর্ণনা।
গ্রন্থটির শুরুর দিকে লেখক দিচ্ছেন ইবোলা-আক্রান্ত সিয়েরালিওন থেকে বেরিয়ে ব্রাসেলস বিমানবন্দরে তার অভিজ্ঞতার পরিচয়। সেখানে প্রবেশ করতে গিয়ে তাঁকে সম্মুখিন হতে হয় কঠিন নজরদারির। তিনি ইবোলায় আক্রান্ত দেশটির মানুষের করুণ পরিণতি তুলে ধরেছেন বিভিন্নভাবে। নিজেকে ভেবেছেন বিশ্বাসঘাতক। বলেছেন, ‘আমার এ পলায়ন কি তাদের সামান্য সেবাদানের অঙ্গীকারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা নয়?’ তিনি যখন দেশ ছাড়েন, তখন সেখানে ইবোলায় প্রাণ হারিয়েছে হাজারখানেক মানুষ। একের পর এক লেখকের পরিচিত মানুষেরাও এতে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে তার বাড়ির চাকর আলী মানসরাইয়ের পরিবার। তিনি শুধু দেখেছেন ‘বিমর্ষ সুরে সাইরেন বাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে তাদের বসিন্তর দিকে।’ খাদ্যের অভাবে অসহায় মানুষগুলোর দুর্বিষহ যন্ত্রণা তিনি সঞ্চারিত করেছেন পাঠকের মধ্যেও।
এরপরই লেখক প্রবেশ করেন মূল 888sport slot gameবৃত্তাস্তে। ‘মাতংগি ও ফ্লোরাল কার্পেট’ শিরোনামে তিনি তুলে ধরেন ব্রাসেলসের অভিনব সব দৃশ্যপট। পদে পদে তিনি বর্ণনা করেন বিচিত্রসব বিষয়ের। যেমন : কৃষ্ণাঙ্গ-অধ্যুষিত কিনসাসা শহরের বর্ণনায় তিনি বলছেন, ‘সবাই কঙ্গোলিজ ভাষায় কথা বলছে, হাঁকডাক করে বিক্রি হচ্ছে তাজা মাছ, কমলালেবু, সাপখোপ ও বুনো জীবজন্তুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বয়ামভর্তি আচার।’ চমৎকার সব শিরোনামে তিনি সাজিয়েছেন প্রতিটি বিষয়কে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রয়েছে স্থানের নাম যেমন : ‘ব্রাসেলসের ট্রাম ও গৃহহীন মানুষ’, ‘ইংলিশ গার্ডেন বাতিগ্এলস স্কয়ার’, ‘তামিল টাউন’, ‘হোটেল ডে আর্টস’, ‘মোঁমাতে ওয়াকিং ট্যুর’, ‘বেসিলিকার শুভ্র পাথরের ডোম’, ‘ক্যাফে প্রকোপে’, ‘ক্যান্ডল লাইট কর্নার’ ইত্যাদি। আবার কোনোটায় ব্যক্তির নাম তিনি স্থাপন করেছেন আকর্ষণীয়ভাবে। যেমন : ‘পিনোলোপে ম্যাকবয় ও নানোমি আলগালি’, ‘টিমবাকটু ও অ্যাডেলিনার সাতকাহন’, ‘বয়স্ক হিপি রেমন্ড ও চিত্রকর ভেরোনিকা’ প্রমুখের নাম দারুণভাবে আকর্ষণ করে পাঠককে আর সে-চরিত্র সম্পর্কে অবগত হতে পাঠককে সাঁতরাতে হয় লেখকের তৈরি শব্দসমুদ্রে। কোথাও আবার তিনি দৃষ্টি আকর্ষণে শিরোনামে ব্যবহার করেছেন অদ্ভুতসব অনুষঙ্গ। যেমন : ‘বাসিন্তল ডের বিভ্রান্ত অভিসার’, ‘হালফ্যাশনের বজরায়’, ‘ছাগল ও বাঁধাকপির ঠেক’, ‘টাকুগামার ছনের বাংলো’ ইত্যাদি। শিরোনামগুলোর মাধ্যমে পাঠক ভেতরের বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ পান।
888sport slot gameগ্রন্থ মানেই নতুন পৃথিবীর স্বাদ, নতুন নতুন অদেখা বাসন্তবতার সম্মুখীন হওয়া। লেখক মঈনুস সুলতান তাঁর পুষ্পিত ফরাশ ও বেগুনি জ্যোৎসণা গ্রন্থে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেন এমনই এক অদেখা পৃথিবীর সঙ্গে। অবাক করা সব স্থাপত্য, খাবার, আর স্থানের নাম আকৃষ্ট করে যে-কাউকে। পৃথিবীর মধ্যে বহুল আলোচিত বেলজিয়ামের ব্রাসেলস আর ফ্রান্সের প্যারিস নগরীর অসামান্য স্থাপত্যকলা নতুন হয়ে ধরা পড়ে পাঠকের চোখে। পাঠককে বিস্মিত করে ব্রাসেলসের লাখো বিগোনিয়া ফুলের অপূর্ব সমাহারে মাত্র চার ঘণ্টায় একশজন ভলানটিয়ার দিয়ে তৈরি ৭৫ মিটার দীর্ঘ মনোহর ফ্লোরাল কার্পেট। কখনো পাঠক লেখকের সঙ্গে চলে যান প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ইংলিশ গার্ডেন, ক্যাবারের লাল দালান মুলান রুজ কিংবা বেসিলিকার সেক্রেড হার্ট বলে পরিচিত শুভ্র অট্টালিকায়। আবার কখনো লেখকের মতো মুগ্ধ শ্রোতা হন মালির বিস্ময়কর শহর টিমবাকটুর গল্পের। কখনো মোঁমাতের বিখ্যাত সেমিটারি কবরখানা লেখকের সঙ্গে পাঠককেও মনে করিয়ে দেয় অস্কার ওয়াইল্ড, শোঁপাও, আলেকজান্ডার ডুমা, অ্যাডগার ডেগার প্রমুখ বিখ্যাত ব্যক্তির কথা। এই গ্রন্থে লেখক পরিচয় করান অবাক করা সব পাথরের সঙ্গে। লালচে পাথর ওশেন জেসপার, সোনালি কোয়ার্টজ, নীল বৈদূর্যমণি, সবুজ অ্যাঞ্জেল স্টোন, নীল বস্নুলেস অ্যাগেট, রুপালি টোপাজ পাথরের রূপে মুগ্ধ হন পাঠক। লেখক মঈনুস সুলতান রসনাবিলাসী পাঠকের জন্য এই গ্রন্থে দিয়েছেন অচেনাসব খাবারের বর্ণনা, সাধারণ পাঠকের কাছে যা নতুন আবেদন সৃষ্টি করে। লেখক যখন তৃপ্তি নিয়ে খান ‘এক পেয়ালা কাপাচিনোর সঙ্গে তপ্ত কোঁয়াসো’, ‘লেবুর চাকতি মেশানো পিনাট সসে সিদ্ধ মুরগির মাংস দিয়ে যবের মন্ড’, ‘ফিশ চারমৌলার সঙ্গে কুসকুস’, তামিল খাবার ‘থালি ভালাই ইল্লাই সাপ্পাদু’, ‘স্টেক তারতারে’, কিংবা ‘হেলেবেথ মাছের ফ্যালে’, তখন নতুন খাবারের অতুলনীয় স্বাদ পাঠকের জিভেও জল না এনে পারে না।
এই গ্রন্থে পাঠক পাবেন ভিন্ন সংস্কৃতির পরিচয়। বিজ্ঞ লেখক বিভিন্ন স্থানে সংযুক্ত করেছেন বিভিন্ন বিখ্যাত গানের লিরিক। যেমন : কঙ্গোলিজ 888sport live chatী কাবাসেলে কালের বিখ্যাত লিরিক ‘ইনডিপেনডেন্স চাচা তো/ ওহ কিম্পওয়ানজা চাচা তুবাডিকে’ কিংবা ডুয়ো রেমব্রেন্ডসে ‘আইল বি দেয়ার ফর ইউ’ গানের মাধ্যমে ফুটে ওঠে তাদের সংস্কৃতি। এ ছাড়া মাতংগির ফ্লোরাল কার্পেট, সাঁজেলিজেতে বাসিন্তল ডে উপলক্ষে আয়োজিত একশ’ বছরের বিবর্তিত হওয়া নানা বিমানের মডেল প্রদর্শনী, তামিল টাউনে গণেশ চতুর্থীর উৎসব ইত্যাদি পরিচয় করিয়ে দেয় নতুন এক সংস্কৃতির সঙ্গে। লেখক যে শুধু বিখ্যাত নগরীর ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেছেন তা নয়, তিনি সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে থাকা তাদের নেতিবাচক দিকগুলোকেও তুলে এনেছেন লেখায়। এই গ্রন্থে তাই পাওয়া যায় বিভিন্ন স্থানে প্রচলিত সিসা হুঁকা, ক্যানোবিসের শুষ্ক মঞ্জরী-মেশানো হাতে রোল করা সিগারেট, ‘লা ফে ভেরোতে’, ক্র্যাক কোকেন, মারিজুয়ানার মতো নেশাজাতীয় দ্রব্যের পরিচয়। দেখা যায় সেখানে প্রচলিত দুর্নীতির চিত্র। সেখানেও হয় চোরাচালান, সেবার কাজে নিয়োজিত অ্যাম্বুলেন্স আর এয়ারকুলার নিয়ে চলে অবৈধ ব্যবসা। রূপোজীবা 888sport promo codeদের সেখানে বাঁচার তাগিদে খুঁজতে হয় ভিন্ন পথ। পৃথিবীর উন্নত দেশ হয়েও সেখানে অনেক মানুষ অসহায় জীবন যাপন করে, জীবিকার তাগিদে বেছে নেয় ভিক্ষাবৃত্তি।
অভিজ্ঞ পর্যটক বলা যায় লেখক মঈনুস সুলতানকে। তাঁর ব্যাপক 888sport slot game-অভিজ্ঞতার পরিচয় মেলে এ-গ্রন্থে। তাঁর উপস্থাপন- কৌশলে রয়েছে অসাধারণত্ব। পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখতে তাঁর রসবোধ চমৎকারভাবে কাজ করে। তিনি যখন বলেন, ‘কয়েকটি মেয়েলি স্যান্ডেলের জমকালো সজ্জা দেখে মনে হয় – এসব যেমন 888sport promo codeদেহের রূপ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে, ঠিক তেমনি দরকারমতো জুতাপেটার কাজেও এদের এসেন্তমাল হবে অব্যর্থ।’ (‘মাতংগি ও ফ্লোরাল কার্পেট’) তখন একধরনের হাস্যরস সঞ্চারিত হয় পাঠকের মধ্যেও। তিনি এই গ্রন্থে ব্যবহার করেছেন অপ্রচলিত কিছু শব্দ, যা 888sport appsের আঞ্চলিক ভাষার শব্দ থেকে নেওয়া। যেমন : চাপানউতোর, আউলামাড়া, থাকুমুকু, ঝ্যালঝেলে, বিলাই, খিন্ন ইত্যাদি শব্দ তাঁর ভাষাকে দিয়েছে নতুন ব্যঞ্জনা। লেখকের ব্যক্তিগত অনুভূতি ও জীবনদর্শন গ্রন্থটিকে বহুলাংশে সমৃদ্ধ করেছে। এখানে তিনি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের অদ্ভুত সব চরিত্র। এখানে বকর মানসরাই নিবেদিতপ্রাণ চাকর, বন্ধু লুকাস, বার্ড ওয়াচার অ্যাঞ্জেলিক, অবৈধ ড্রাগস ব্যবসায়ী কারমিনা ফাইরোজ, নির্জন দ্বীপের বাসিন্দা স্টিভ ম্যানিনজার, ডিংকা গোত্রের লোক নানোমি আলগালি, পুরুষালি চেহারার দেবদাসী, স্বেচ্ছাসেবক জোসেফ হুভার, সুহৃদ রেমন্ড মিলার ও লোপা, রহস্যময়ী চিত্রকর ভেরোনিকা, এরা সবাই কোনো না কোনোভাবে গল্পের প্রবহমানতাকে প্রাণবন্ত করে রেখেছে। তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, কথোপকথন আর 888sport slot gameের মাধ্যমে এগিয়ে চলেছে গল্প। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাহচর্য লেখকের অবসরের সময়কে 888sport sign up bonusময় করে রেখেছে। কোথাও তাদের বৈশিষ্ট্য ও জীবনের গল্প পাঠককে দিয়েছে নতুন চিন্তার ক্ষেত্র। যেমন সুদানের ডিংকা গোত্রের লোক নানোমি আলগালি। সুদানের সামরিক বাহিনীর সমর্থনপুষ্ট জানজায়িদ মিলিশিয়াদের আকস্মিক আক্রমণের শিকার হয় ডিংকারা। নির্মমভাবে হত্যা করা হয় অসহায় বৃদ্ধদের। গণধর্ষণ করা হয় তাদের কন্যা আর স্ত্রীদের। তরুণদের ধরে নিয়ে গিয়ে বের করে নেওয়া হয় কিডনিসহ দামি অঙ্গ। নানোমি সেখান থেকে গাধার পিঠে চড়ে কোনোমতে পালিয়ে বাঁচে। তারপর শুরু হয় তার টিকে থাকার যুদ্ধ। প্রথমে মরুভূমির দেশে পুলিশের তাড়া খেয়ে বেদুঈনদের হাতে সে বন্দি হয়। চরম অত্যাচারের মধ্যে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার দুঃসাধ্য কাজ করতে করতে একফাঁকে পালিয়ে যায় ইসরায়েলে। সেখান থেকে চোরাচালানিদের খপ্পরে পড়ে যায় রুয়ান্ডা, সেখানে খনিতে কাজ করার পর বোটে চড়ে অসহনীয় যন্ত্রণা সহ্য করে পালিয়ে আসে ফ্রান্সে। সেখানে বেঁচে থাকার জন্য বেছে নেয় অনৈতিক পথ। নানোমি ছাড়াও 888sport app চরিত্রের পেছনের গল্পও কম আর্কষণীয় নয়। গল্পগুলো মানুষের জীবনের নির্মম বাসন্তবতার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। বেঁচে থাকার জন্য তাদের বিচিত্র পেশা বিস্মিত করে পাঠককে। সেখানে 888sport promo codeদের অবস্থা ও অবস্থান বুঝিয়ে দেয় তাদের সার্বিক পরিস্থিতি। যে রংচঙে পৃথিবীর চিত্র আমরা দেখি, তার আবডালের নগ্নদৃশ্য উন্মোচিত হয়ে পাঠকের কাছে উপস্থিত হয় অভিনব আবেদন নিয়ে। অবসরের পুরো সময়টুকু বেলজিয়াম আর ফ্রান্সে কাটাতে পারেননি লেখক। তাঁর দায়িত্ববোধ তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে কর্মস্থলে। কিন্তু 888sport slot gameের দিনগুলো আর ভিন্ন পৃথিবীর বিস্ময়কর চিত্র তিনি ভুলতে পারেননি। তাই তো তাঁর মনে হয়েছে ‘তারপর ফ্রিটাউনে ফিরে এসে কর্মব্যসন্ত দিনযাপনে প্যারিস নগরীকে অনুভব করি নিজস্ব সংবেদনে।’ (‘ভূমিকা’) লেখকের নিজস্ব অনুভূতির স্পষ্ট ছাপ রয়েছে গ্রন্থটিতে। নিজের সঞ্চিত অভিজ্ঞতা আর 888sport slot gameের নতুন বৃত্তান্ত নিয়ে তিনি হাজির হয়েছেন পাঠকের সামনে। তুলে ধরেছেন ভিন্ন পৃথিবীর অচেনা প্রতিচ্ছবি। এখানে তাঁর কোনো কার্পণ্য নেই; নেই কোনো রাখঢাক। পুষ্পিত ফরাশ ও বেগুনি জ্যোৎসণা থেকে 888sport slot gameগ্রন্থের স্বাদের পাশাপাশি পাঠক তাই লাভ করেন বিচিত্র জীবনের অনুভূতি। r
