888sport app download apk latest version : আশফাক স্বপন
ছয় দফা কার্যক্রম
888sport appsের জাতীয়তার অভ্যুদয় একটি দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ঘটে।হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা ফজলুল হক এবং মওলানা ভাসানীর মতো ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।তবে বাঙালিদের মধ্যে জাতীয় চেতনাসৃষ্টির প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবার জন্য যে রাজনৈতিক উদ্যমের প্রয়োজন ছিল, সেটি বঙ্গবন্ধুর অবদান।১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা কর্মসূচির সূচনা থেকে মার্চ ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ – এই নিয়ামক দুটি বছরে অনন্য ঐতিহাসিক গুরুত্ববহ একটি নির্বাচনী অভিযানের মধ্য দিয়ে, বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের সংগ্রামকে এগিয়ে নেবার মাধ্যমে যে জাতীয় পরিচয় সৃষ্টি হয়, বঙ্গবন্ধু তাতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন।
পাকিস্তানের দুটি প্রদেশে সম্পূর্ণ স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ছয় দফা কার্যক্রম বাঙালিদের জন্য স্বতন্ত্র ভবিষ্যৎ রচনার সাংবিধানিক পূর্বশর্ত প্রদান করে।এই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে একজন বড় মাপের বাঙালি রাজনৈতিক নেতা স্বীকার করলেন যে 888sport appsের মানুষের জন্য, এমনকি একটি গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনেও, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনৈতিক সহাবস্থান রাজনৈতিক সমাধান হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্ষমতা, নীতিনির্ধারণ ও প্রশাসনিক কর্তৃত্ব এবং সেইসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পদের কর্তৃত্ব – এই সব কিছুর ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণ হলেই পাকিস্তানের দুটি প্রদেশ একটা রাষ্ট্রের অধীনে টিকে থাকতে পারে।পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতা ত্যাগ করায় অনীহা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠল।ফলে বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালের গোড়ার দিকে ছয় দফা ঘোষণা করার সময় দেখা গেল যে শুধু ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের স্বৈরতান্ত্রিক সরকারই নয়, পশ্চিম পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলোও সেটা প্রত্যাখ্যান করল, কারণ তারাও শাসকশ্রেণির অংশ। এই শাসকশ্রেণির দৃষ্টিতে ছয় দফার দাবির সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে 888sport apps) মানুষের স্বায়ত্তশাসনের দাবি অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত হয়ে গেল। ফলে ছয় দফা ঘিরে যে রাজনৈতিক আন্দোলন, তাকে দমন করবার প্রচেষ্টা এককভাবে বাঙালিদের ওপর এসে পড়ল। আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতৃত্বসহ বঙ্গবন্ধুকে ১৯৬৬ সালের জুন-জুলাই মাসে গ্রেপ্তার করা হলো, তাঁদের দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে কারারুদ্ধ রাখা হলো। অবশেষে পাকিস্তানের উভয় প্রদেশে রাজনৈতিক গণঅভ্যুত্থানের ফলে আইয়ুব খানের পতনের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সহকর্মীরা মুক্তিলাভ করেন।
১৯৬৯ সালের মার্চ মাসে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিরোধী নেতৃত্বের সঙ্গে আইয়ুব খানের গোলটেবিল বৈঠক ব্যর্থ হবার কারণেই আইয়ুব খানকে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হয়। ছয় দফা কার্যক্রমকে পাকিস্তানের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার যে-দাবি বঙ্গবন্ধু করেছিলেন, সেটা পশ্চিম পাকিস্তানের বিরোধী গোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। ফলে আইয়ুব খান জেনারেল ইয়াহিয়ার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হন। আবার ইয়াহিয়া খানকেও জাতীয় নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে পাকিস্তানের উভয় প্রদেশের বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় আসতে হয়। যদিও নবনির্বাচিত সংসদ কর্তৃক নতুন সংবিধান গ্রহণের আগ পর্যন্ত পাকিস্তানে সামরিক শাসনই বলবৎ থাকল, বঙ্গবন্ধু এই ব্যবস্থা মেনে নিলেন।তাঁর দৃঢ়বিশ্বাস ছিল যে, ছয় দফার ভিত্তিতে সংবিধান প্রণয়নের প্রচেষ্টা 888sport appsের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন লাভ করবে।
১৯৬৯-১৯৭১-এ নির্বাচনী অভিযান বাঙালিদের জাতীয় পরিচয় সম্বন্ধে সচেতনতাসৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ছয় দফা কার্যক্রম যে বিচ্ছিন্নতাবোধ থেকে উৎসারিত, তার থেকেই এই জাতীয় চেতনার উদ্ভব। বঙ্গবন্ধু হিসাব কষে দেখলেন যে, শুধুমাত্র 888sport appsের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থনই ছয় দফার ভিত্তিতে 888sport appsের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার ব্যাপারে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করতে পারবে। ভোটের মাধ্যমে অকুণ্ঠ সমর্থনের প্রমাণ পেলে পাকিস্তানের সামরিক জান্তা উপলব্ধি করবে যে, মানুষের সর্বজনীন দাবি প্রত্যাখ্যান করলে বা তা দমন করলে পাকিস্তানি রাষ্ট্রের ভিত্তিটাই টলে উঠতে পারে। বঙ্গবন্ধুর এই অনুমান পরবর্তীকালে সম্পূর্ণ সঠিক প্রমাণিত হয়।
888sport appsের জাতীয় পরিচয়গঠনে ১৯৬৯-১৯৭০ নির্বাচনী অভিযানের ভূমিকা
ছয় দফার পক্ষে বিপুল জনমতগঠনে প্রয়োজন ছিল 888sport appsের মানুষের সর্বাত্মক সমর্থন। অতীতে বাঙালি রাজনৈতিক নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব বহিরাগত পাকিস্তানি শাসকদের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিরোধের সকল প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু প্রতিদ্বন্দ্বী বাঙালি নেতাদের ডিঙিয়ে তাঁর ছয় দফার জন্য সর্বাত্মক গণসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করতে লাগলেন। এই গণ-ঐক্য গড়ার জন্য বাঙালিদের মধ্যে একটা সম্মিলিত, সামূহিক পরিচয়সৃষ্টির প্রয়োজন ছিল। ১৯৬৯ সালের মার্চের পর বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনী অভিযানের মূলমন্ত্র ছিল বাঙালিদের বোঝানো যে, তারা শুধু পাকিস্তানিদের থেকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে আলাদা তাই নয়, 888sport appsের বাঙালিরা একটি আলাদা জাতি, তাদের উচিত সকলের মিলিত ভোটের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাঁচার অধিকার ঘোষণা করা।
গণ-ঐক্য গড়ার জন্য প্রয়োজন আত্মপরিচয়ের রাজনীতির প্রতি বিশেষ ঝোঁক এবং সেই পরিচয় সম্বন্ধে 888sport appsের প্রতিটি গ্রামবাসীর মধ্যে সচেতনতা সঞ্চার করা। এতদিন যে-শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজ 888sport appsের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু ছিল, শুধু তাদের মধ্যে এই সামূহিক পরিচয় গঠন যথেষ্ট নয়। সারা দেশের মানুষকে এই ব্যাপারে একমত করা অত্যাবশ্যক ছিল যে, বাঙালিরা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার। এই মূল বক্তব্য প্রকাশিত হয় ‘পূর্ব বাংলা শ্মশান কেন?’ শীর্ষক পোস্টারে, যেটি 888sport appsের গ্রামে গ্রামে আওয়ামী লীগের কর্মীরা লাগালেন। তাতে তাঁরা সহজ ভাষায় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যের পরি888sport free betন তুলে ধরলেন।
এই দুই বছরে বঙ্গবন্ধু 888sport appsের মানুষের জাতীয় সংকল্পের প্রতিভূ হয়ে উঠলেন। তিনি হয়ে উঠলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। এই সময়ে একটি রাজনৈতিক দলের নেতা থেকে তাঁর উত্তরণ ঘটল, তিনি 888sport appsের বাঙালির জাতীয় প্রতীক হয়ে উঠলেন। যেখানেই তিনি যেতেন, 888sport promo code-পুরুষ, বয়সে বড় হোক কি ছোট হোক, সকল মানুষ ভিড় করত শুধু এই কিংবদন্তিতুল্য মানুষটিকে একঝলক দেখতে। তাঁকে ছাড়াও আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ করত, তবে একমাত্র বঙ্গবন্ধুই আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিপুল বিজয় সুনিশ্চিত করেন। কারণ ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু দলের ঊর্ধ্বে অধিষ্ঠিত, তিনি আজ সকল বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধি। তবে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা স্বীকারের সঙ্গে সঙ্গে একথা বলাও বাঞ্ছনীয় যে, তাঁর আত্মপ্রতিষ্ঠার আহ্বান দীর্ঘ সময় ধরে মানুষ ধীরে ধীরে গ্রহণ করেছে, এবং 888sport app বাঙালি নেতা এবং রাজনৈতিক কর্মীরা এই গণসচেতনতার ভিত্তি প্রস্তুত করেছেন।
১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচন এবং তার তাৎপর্য
১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর প্রতি 888sport appsের বাঙালিদের পূর্ণ সমর্থন পরিষ্কার হয়ে গেল। আওয়ামী লীগ শুধু ১৬৯ আসনের ১৬৭টিতে জয়লাভ করে তাই নয়, মোট ভোটের শতকরা ৭৫ ভাগ ভোট লাভ করে। আরো উল্লেখ্য, যেসব আসনে দলটি জয়লাভ করে, সেখানে প্রায় প্রতিটি আসনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়।
১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনের রাজনৈতিক পরিণতি হিসেবে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ 888sport free betগরিষ্ঠতা লাভ করল। সেই সাথে প্রাদেশিক আইনসভায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করল। এ-কথা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, 888sport appsের ভোটাররা আওয়ামী লীগের ছয় দফা কার্যক্রম সমর্থন করে। তবে সর্বোপরি এই নির্বাচন বিশ্বের কাছে ঘোষণা করল যে, বাঙালিরা একটি মিলিত জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছে এবং তার সর্বময় কর্তৃত্ব বঙ্গবন্ধুর ওপর ন্যস্ত করেছে, যাতে তিনি 888sport appsের স্বায়ত্তশাসনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেন। সাংবিধানিক স্বায়ত্তশাসনের রাজনৈতিক দাবি নিয়ে যে-যাত্রা শুরু হয়েছিল তার সমাপ্তি ঘটল 888sport appsের মানুষের জাতীয় পরিচয়ের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে।
জুলফিকার আলি ভুট্টোসহ পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নির্বাচনী অভিযান ও ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে তার ফলাফলের সুদূরপ্রসারী তাৎপর্য ঠিকমতো উপলব্ধি করতে পারেননি। ইয়াহিয়া এবং ভুট্টো এ-কথা বুঝতে পেরেছিলেন যে, বঙ্গবন্ধুর বিপুল নির্বাচনী বিজয় ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত ঘাঁটিগুলোকে ঝুঁকির সম্মুখীন করেছে। কিন্তু তাঁরা এই ভ্রান্তিবিলাসে ভোগেন যে, নির্বাচনের ফল বাঙালি আত্মপরিচয়ের আবেগতাড়িত নাগরিক মধ্যবিত্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ১৯৭১ সালের গোড়ার দিকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে 888sport appয় সাক্ষাতের আগ পর্যন্ত ইয়াহিয়া ও ভুট্টো দুজনই বিশ্বাস করতেন অতীতের বাঙালি নেতার মতো কেন্দ্রে ক্ষমতা ভাগাভাগির বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুও ছয় দফা দাবির ব্যাপারে আপস করবেন। ১৯৬৯-এর মার্চ আর ১৯৭১-এর মার্চের মধ্যে 888sport appsের মানুষের চেতনায় যে আমূল পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে, সেটা পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা বুঝতে ব্যর্থ হলেন। তাঁরা বোঝেননি যে, ১৯৭০ সালের ডিসেম্বর মাসের নির্বাচনের ফলে ছয় দফা দাবি পাকিস্তানের ঘনায়মান রাজনৈতিক সংকটের সাংবিধানিক সমাধানের ন্যূনতম দাবি হয়ে উঠেছে। 888sport appsে এই নবলব্ধ জাতীয় সচেতনতার ফলস্বরূপ কোথাও কোথাও খোদ আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই পূর্ণ রাজনৈতিক স্বাধীনতার দাবি উঠছিল।
888sport appয় ইয়াহিয়ার আগমন ও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতের পর ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের লারকানায় ইয়াহিয়া ও ভুট্টো এক ঐতিহাসিক বৈঠকে বসে চক্রান্ত করেন। তার ফলে যে ঘটনাচক্রের অবতারণা হয়, একটি রাষ্ট্র হিসেবে 888sport appsের অভ্যুদয়ের মাধ্যমে তার পরিসমাপ্তি ঘটে। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ 888sport appয় যে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু হবার কথা ছিল, ইয়াহিয়া ১ মার্চ সেটা অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি করার সিদ্ধান্ত নেন। আপামর বাঙালির দৃষ্টিতে এই সিদ্ধান্ত ছিল ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে তাদের গণতান্ত্রিক রায়কে অস্বীকার করবার চক্রান্ত।
মার্চ ১৯৭১ : অসহযোগ আন্দোলন থেকে স্বায়ত্তশাসন
ইয়াহিয়ার জাতীয় পরিষদের অধিবেশন মুলতবি রাখার সিদ্ধান্তের প্রত্যুত্তরে বঙ্গবন্ধু অসহযোগ কার্যক্রমের মাধ্যমে সারা 888sport apps জুড়ে রাজনৈতিক আন্দোলনের ডাক দেন। তাঁর ডাক যে বিপুল গণসমর্থন লাভ করে, তা গণতান্ত্রিক ও মুক্তি আন্দোলনের ইতিহাসে নজিরবিহীন। শুধু সাধারণ মানুষই যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেয় তাই নয়, দেশের প্রশাসন, আইন-আদালত, আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী শক্তি, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় সবাই যোগ দেয়। অসহযোগ আন্দোলনের ফলে বেসামরিক সরকারি শাসনযন্ত্রের আনুগত্য আনুষ্ঠানিকভাবে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কেন্দ্রীয় শাসন থেকে সরে আসে। সমগ্র 888sport appsে বঙ্গবন্ধুর কর্তৃত্বের প্রতি তার উত্তরণ ঘটে। ফলে 888sport appsের সেনানিবাসের বাইরে অবস্থিত সমগ্র প্রশাসনযন্ত্র সর্বসম্মতিক্রমে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে।
১৯৭০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু 888sport appsের অবিসংবাদী শাসক হয় উঠলেন। 888sport appsের সমগ্র প্রশাসনযন্ত্র তাঁর পক্ষে। আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় স্বাধীনতা ঘোষণার আগে আনুগত্যের এতখানি পরিবর্তন বিশ্বের আর কোনো স্বাধীনতা-আন্দোলনে ইতোপূর্বে দেখা যায়নি। 888sport appsের অনানুষ্ঠানিক অথচ বাস্তবক্ষেত্রে স্বাধীনতা একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ঘটে। ১ মার্চ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যবর্তী সময় 888sport apps একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের সব গুণ আয়ত্ত করে। অসহযোগ আন্দোলন এমনই সর্বব্যাপী ছিল যে, 888sport appsের অর্থনীতি ও অবকাঠামো ধসের সম্মুখীন হয়ে ওঠে, সেটা অঞ্চলের মানুষের জীবনযাপনের প্রতি ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায়। ফলে জরুরি প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলন ত্বরান্বিত করে স্বায়ত্তশাসন কায়েম করেন, যাতে অর্থনৈতিক কর্মকা- আবার চালু হয় ও আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকে।
সার্বভৌম 888sport appsের অভ্যুদয়
১৫ মার্চের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ও মূল কয়েকজন আওয়ামী লীগ সহকর্মীর পরিচালনায় একটি চালু প্রশাসন বাস্তবক্ষেত্রে প্রশাসন ও রাজনৈতিক কর্তৃত্বের উৎস হয়ে উঠল। তবে এ-কথাও বলা সম্ভব যে, শুধু বাস্তবক্ষেত্রেই নয়, বঙ্গবন্ধুর কর্তৃত্বকে বৈধও বলা চলে, কারণ তাঁর নেতৃত্বের পেছনে নির্বাচনী বৈধতা ছিল। তার প্রকাশ ঘটেছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিপুল ভোটাধিক্যে জনগণের রাজনৈতিক আস্থা প্রকাশে। 888sport appsের সমগ্র ভৌগোলিক এলাকায় বঙ্গবন্ধু যেভাবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তৃত্ব প্রয়োগ করছিলেন তাতে অনায়াসে যে-কোনো বিদেশি সরকারের কাছে সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতিলাভের পূর্বশর্ত পূরণ হয়ে গিয়েছিল।
মার্চের মাঝামাঝি যখন ইয়াহিয়া খান সংকটের সাংবিধানিক সমাধানের জন্য রাজনৈতিক বোঝাপড়া শুরু করতে আবার 888sport appsে এলেন, তখন তার প্রতিপক্ষ আর তার অনুগত প্রজা নয়, রাজনৈতিকভাবে রীতিমতো তার সমকক্ষ। বঙ্গবন্ধুর তখন 888sport appsে সার্বভৌম ক্ষমতা। শুধু তাই নয়, ইয়াহিয়ার নিজের অঞ্চলে যে-ক্ষমতা, তার চাইতে নিজের অঞ্চলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিপত্তি ঢের বেশি। 888sport appsে সেই সময়ে যে রাজনৈতিক বাস্তবতা, তার ভিত্তিতে যদি বঙ্গবন্ধু আর ইয়াহিয়ার বোঝাপড়া হতো, তাহলে রাজনৈতিক সংকটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়তো পাওয়া যেত। কিন্তু ভুট্টো ও সামরিক জান্তার উগ্রপন্থি নেতাদের প্ররোচনায় ইয়াহিয়া এই অলীক ধারণায় অনড় ছিলেন যে, জবরদস্তি শক্তিপ্রয়োগ করে এইসব মধ্যবিত্ত বাঙালি নেতার বোধোদয় ঘটানো সম্ভব। ইয়াহিয়া ভেবেছিলেন চাপের মুখে এদের কেউ কেউ সহকর্মীদের লাশের ওপর দিয়ে হেঁটে সামরিক জান্তার সাথে বোঝাপড়ায় আসবে। বাঙালিদের যে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ করার মতো রাজনৈতিক ঐক্য, সাহস, ঐতিহ্য বা সামরিক ক্ষমতা থাকতে পারে, সেটা সামরিক জান্তা বিশ্বাস করেনি। ১৯৭১ সালের মার্চে 888sport appsে যে একটি জাতিসত্তার সৃষ্টি হয়েছিল, যার ফলে মানুষ নিজ সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে লড়তে রাজি, এটা শেষ অবধি তাঁদের বোধগম্য হয়নি।
বাস্তবে যা ঘটেছিল, তা হলো ইয়াহিয়া রাজনৈতিক আলোচনাকে ছল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন, আর আড়ালে 888sport appsে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে দমন করার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সেনা এনেছিলেন। এই শক্তিপ্রদর্শনকে তিনি পাকিস্তানের একটি প্রদেশের ওপর কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখিয়েছেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে যখন ইয়াহিয়া জেনারেল টিক্কা খানকে বাঙালিদের গণহত্যার চূড়ান্ত নির্দেশ দিলেন, তখন পাকিস্তানই গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সার্বভৌম 888sport apps রাষ্ট্রের ক্ষমতা অপহরণ করেছিল। ফলে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সশস্ত্র হামলা একটি সার্বভৌম দেশের ওপর আরেকটি সার্বভৌম দেশের সামরিক আগ্রাসন হিসেবেই বিবেচিত হলো। বাঙালিরা এই আক্রমণকে তাদের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হিসেবে বিবেচনা করেছে এবং বিশ্বের অধিকাংশ দেশ একে 888sport appsের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসন হিসেবে দেখেছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যে 888sport appsে তার অধিবাসীদের চেতনায় ইতোমধ্যেই একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হয়ে গিয়েছিল। বাঙালিদের ওপর সামরিক আক্রমণের প্রত্যুত্তরে ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা একটি বৈধ বাস্তব কর্তৃত্বের আনুষ্ঠানিক আইনি স্বীকৃতি। ফলে কে 888sport appsের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল এ বিষয়ে স্বাধীনতা-উত্তর বিতর্ক অবান্তর। সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন যেকোনো ব্যক্তির কাছে এটা পরিষ্কার যে, কে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল সেটা বড় কথা নয়, বরঞ্চ আসল বিষয় হলো কখন 888sport appsিরা নিজেদের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছিল। এ কাজটি তারা ১৯৭১ সালের মার্চ মাসেই করেছিল। তাছাড়া স্বাধীনতার ঘোষণা শুধুমাত্র একটি যথাযথ বৈধ পক্ষ থেকেই আসতে পারে, না হলে পৃথিবীর যে-কোনো জায়গায় যে-কোনো মানুষ সেই স্থানের স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারে। ওই সময়ে একমাত্র বঙ্গবন্ধুরই বৈধভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করবার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা ছিল। কারণ তাঁর পক্ষে নির্বাচনী রায় ছিল, 888sport appsের মানুষের পক্ষে তাঁর কথা বলবার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক অধিকার ছিল। সমগ্র বিশ্বসমাজ এ-কথা স্বীকার করে নিয়েছিল – সেখানে সাড়ে সাত কোটি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে তাদের সার্বভৌমত্ব বিশ্বদরবারে ঘোষণার জন্য একমাত্র বঙ্গবন্ধুই উপযুক্ত ভাবমূর্তির অধিকারী ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তি সংগ্রামের বৈধতা
বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত কর্তৃত্বের ফলে মুক্তিযুদ্ধ যে বৈধতা পেয়েছিল, সেটা মুক্তিযুদ্ধ টিকিয়ে রাখার জন্য অপরিহার্য ছিল। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ যখন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষিত হয়, তখন বঙ্গবন্ধুর সপক্ষে ছিল 888sport appsের পক্ষে কথা বলবার অধিকার, যা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে প্রদত্ত বিপুল নির্বাচনী রায় থেকে উৎসারিত। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় কোনো নেতার পক্ষে এমন সমর্থন অত্যন্ত বিরল।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে যখন 888sport appsের মানুষ বিশ্বসমাজের কাছে তাদের বার্তা নিয়ে গেল, তখন সাধারণ জনতার কাছে 888sport appsের সার্বভৌমত্বের পক্ষে সমর্থন পেতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি, যদিও ওই সময়কার বিভিন্ন দেশের সরকার এ-ব্যাপারে নিমরাজি ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের এমন সব
দেশের মানুষের সমর্থন আদায় করার প্রয়োজন হয়েছে, যারা তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কখনো 888sport appsের নামই শোনেনি। সারা পৃথিবীর সাধারণ মানুষ যে 888sport appsের মানুষের ওপর ভয়াবহ অত্যাচার সম্বন্ধে সচেতন হয়েছিল, তার একটা বড় কারণ এই যে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে 888sport appsকে সারাবিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং আরেকটি কারণ ছিল 888sport appsের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তি ও জোরালো উপস্থিতি। সুতরাং 888sport appsের অভ্যুদয়কে এমন একটা অনন্য ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে স্বীকার করতে হবে, যেখানে ধাপে ধাপে একটি জোরালো রাজনৈতিক আন্দোলনের ফলে একটি জাতির অভ্যুদয় ঘটে। এর শেষপর্ব ছিল 888sport appsের অভ্যুদয়। এই পর্বটি সবচাইতে কঠিন ছিল, কারণ তার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে একটি জাতীয় পরিচয়ের উপলব্ধিকে সুপরিণত করে তোলা। এ কাজটির জন্য অত্যাবশ্যক ছিল এমন একজন অসাধারণ নেতার যিনি সকল বাঙালির কাছে তাদের জাতিসত্তার প্রতীক হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবেন এবং যাঁর কারণে তারা শুধু সেই জাতীয় পরিচয় ঘোষণা করতেই রাজি হবে না, সেই জাতীয়তা রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুত থাকবেন। **


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.