বঙ্গবন্ধু ও 888sport apps

রাশিদ আসকারী
‘আমি হিমালয় দেখিনি। কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্বে এবং সাহসে মানুষটি হিমালয়ের মতো। এভাবেই আমার হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে।’ ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে দেখে কিউবার কমিউনিস্ট বিপ্লবী রাজনীতিক এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফিদেল কাস্ত্রো এভাবেই তাঁর মূল্যায়ন করেছিলেন। কাস্ত্রো মোটেও বাড়িয়ে বলেননি। ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল নিউজউইক ম্যাগাজিনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে-কভার স্টোরি করা হয়, সেখানেও তাঁর দৈহিক ও মানসিক বিশালতার কথা বলা হয়েছে : ÔTall for a Bangali (He stands 5 feet 11 inches), with a touch of greying hair, a bushy moustache and alter black eyes, Mujib can attract a crowd of a million people to his rallies and hold them spellbound with great rolling waves of emotional rhetoric. He is a poet of politics, so his style may be just what was needed to unite all the classes and ideology of the region.Õ ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল মানুষকে সংঘবদ্ধ করে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন তিনি এবং তা সফলও করেন। আর ঠিক সেখানটাতেই বঙ্গবন্ধুর বিশিষ্টতা। অগ্রজ ও সমকালের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সেখানেই তাঁর পার্থক্য। ড. হুমায়ুন আজাদ যথার্থই বলেছেন : ‘বঙ্গবন্ধুর তুলনায় তাঁর অগ্রজ রাজনীতিবিদেরা মাঝারি আর অনুজেরা তুচ্ছ ও হাস্যকর।’ বাঙালি জাতির সহস্র বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় তিনি রচনা করেছেন। বস্তুত, একাত্তর-পূর্ব বাঙালি জাতি কখনো প্রকৃত অর্থে স্বাধীন ছিল না। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত 888sport appsের অভ্যুদয়ের যে-পটভূমি, তাতে সর্বাধিক দায়, দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে পদচারণা একমাত্র বঙ্গবন্ধুর। বঙ্গবন্ধু বায়ান্নর ভাষা-আন্দোলনের অন্যতম বীর সেনানী; বাষট্টির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথিকৃৎ; ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলনের ঋত্বিক; ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণা-পুরুষ; সত্তরের নির্বাচনের ঈর্ষণীয় বিজেতা; একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক; বাঙালি জাতীয়তাবাদের রূপকার; সর্বোপরি স্বাধীন-সার্বভৌম 888sport appsের মহান স্থপতি এবং সে-কারণেই বাঙালি জাতির জনক, অবিসংবাদিতভাবেই।

আমেরিকার যেমন ওয়াশিংটন-লিংকন, রাশিয়ার লেনিন-স্ট্যালিন, ইংল্যান্ডের চার্চিল, ফরাসির দ্য গলে, চীনের সান ইয়াৎ সেন-মাও সে তুং, ভিয়েতনামের হো চি মিন, ইন্দোনেশিয়ার সুকর্ন, তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক, কঙ্গোর প্যাট্রিস লুমুম্বা, কেনিয়ার জোমো কেনিয়াত্তা, আলজেরিয়ার বেনবেল্লা, দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যান্ডেলা, কিউবার কাস্ত্রো, ভারতের মহাত্মা গান্ধী, 888sport appsের তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যথার্থই তিনি বঙ্গবন্ধু। বাংলার বন্ধু। বাঙালির বন্ধু। তাই প্রাণসংশয়ের চরম মুহূর্তেও তাঁর কণ্ঠে উচ্চারিত হতে পেরেছে : ‘ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি বলব আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা।’ বাংলার সঙ্গে তাঁর বন্ধুতা, বাংলার মানুষের জন্য তাঁর ভালোবাসা যে কতটা নিবিড়, বিখ্যাত ইংলিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টের সঙ্গে কথোপকথনে তা খানিকটা আঁচ করা যায়; ফ্রস্ট ÔWhat is your qualification?Õ বঙ্গবন্ধু : ÔI love my people.Õ ফ্রস্ট : ÔWhat is your disqualification?Õ বঙ্গবন্ধু : ÔI love them too much.’ প্যারাডক্সের মতো শোনালেও বাস্তবিকই বঙ্গবন্ধুর যোগ্যতা ও অযোগ্যতা-নির্বিশেষে তাঁর অস্তিত্ব-চেতনার অস্থিমজ্জায় মিশে ছিল দেশপ্রেম ও জাতিপ্রেম। তাই জাতির সবচেয়ে বড় ক্রান্তিলগ্নে ফল্গুধারার মতো তাঁর চেতনারা ভাষা হয়ে বেরিয়েছিল : ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো। তবু এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।’ ২৫শে মার্চের কালরাতে পাকসেনাদের ভয়ে আত্মগোপন করার এক প্রস্তাবের উত্তরে তাঁর আবেগময় কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল : ÔI must share the suffering of my people along with them. I must share, I can not leave them on the face of fire. I can not.Õ সত্যিই তিনি সমগ্র দেশ ও জাতিকে অগ্নিকুণ্ডের মুখে ঠেলে দিয়ে কাপুরুষের মতো আত্মগোপন করেননি। বরং দখলদার বাহিনীর আক্রমণের প্রথম শিকারে পরিণত হয়েছেন ইচ্ছাকৃতভাবেই। নির্ভেজাল দেশপ্রেমের জারকে জারিত তাঁর ভালোবাসা তাঁকে এরকম দুঃসাহসিক ঝুঁকি নিতে প্রাণিত করেছে। এরপর দীর্ঘ নয় মাসে দেশ ও জাতিকে যেমন সহ্য করতে হয়েছে অমানবিক অত্যাচার; সন্তানের লাশ বাবাকে বহন করতে হয়েছে; কন্যা বলাৎকারের পৈশাচিক দৃশ্য স্বচক্ষে দেখতে হয়েছে হাত-পা বাঁধা বাবাকে; স্ত্রীর ওপরে বিজাতীয় পশুর আদিম উল্লাসকে নির্বিবাদে সহ্য করতে হয়েছে স্বামীকে; অবৈধ গর্ভের ভার বয়ে বেড়ানো যুবতীদের অবাঞ্ছিত সন্তানের আগমন-আশঙ্কায় সর্বদা বিপর্যস্ত থাকতে হয়েছে; লাশের ভাগাড়ে শকুনের মেলার নারকীয় দৃশ্য নিত্য দেখতে হয়েছে; তেমনি সেই দীর্ঘ সময় প্রতি পদে পদে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে পাঞ্জাবের মিলানওয়ালি কারাগারে। কিন্তু কারাগারের সেই বদ্ধ প্রকোষ্ঠে বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম তিলার্ধ পরিমাণও হ্রাস পায়নি। বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন 888sport appsে ফিরে এসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল জনসভায় তিনি তাই আবারো বলতে পেরেছেন : ‘888sport apps স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এখন যদি কেউ 888sport appsের স্বাধীনতা হরণ করতে চায়, তাহলে সে স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য মুজিব সর্বপ্রথম প্রাণ দেবে।’ দেশই ছিল তাঁর কাছে সবকিছুর ঊর্ধ্বে। দেশাত্মবোধের কথা বলতে গেলে তিনি প্রায়ই উদ্ধৃত করতেন ৩৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির বিখ্যাত উক্তিটি : ÔAsk not what your country can do for you. But ask what you can do for your country.Õ

শুধু কথায় নয়, কাজেও বঙ্গবন্ধু প্রমাণ করেছেন তাঁর দেশপ্রেম, তাঁর স্বাজাত্যবোধ। প্রত্যক্ষে দেখিয়েছেন কী করতে পারেন তিনি স্বদেশের জন্য। আর তা কেবল এক আধবার নয়। অসংখ্যবার।কারাজীবন ভোগ করেছিলেন দীর্ঘ ৪৬৮২ দিন। বস্তুত, গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলপড়ুয়া সেই কিশোর ছেলেটি যেদিন স্কুলের প্রধান ফটকে হক-সোহরাওয়ার্দীর (আবুল কাসেম ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী) পথ আগলে দাঁড়িয়েছিলেন, নিঃশঙ্কচিত্তে জানিয়েছিলেন তাঁর দাবি, সেদিন তাঁর ভেতর যে নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক ক্ষমতার স্ফুরণ দেখা গিয়েছিল, তা-ই সেদিনকার সেই অকুতোভয় মুজিবকে পরবর্তী সময়ে সাড়ে সাত কোটি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বানিয়েছিল। আর সেই মহান নেতা দীর্ঘপ্রতীক্ষিত জাতিকে উপহার দিলেন পরম কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা, দিলেন একটি ভূখণ্ড, একটি পতাকা, একটি জাতীয়সংগীত। টুঙ্গিপাড়ার দামাল ছেলেদের নিয়ে গড়ে তোলা এক খুদে সংগঠনের খুদে স্থপতি হলেন একটি দেশের স্থপতি। নির্মাণ করলেন পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইলের একটি স্বাধীন দেশ। যার নাম তিনি রেখেছেন 888sport apps। ১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে 888sport app হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন : ‘এই ভূখণ্ডটির নাম হবে 888sport apps।’ আর তখন থেকেই মূলত ‘888sport apps’ নামের রাষ্ট্রটির গোড়াপত্তন হয়েছিল।

বস্তুত, 888sport apps সৃষ্টির এক রাজনৈতিক ভিশন নিয়েই বঙ্গবন্ধু কাজ করে গেছেন শুরু থেকে। তাঁর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বই ভীতু বাঙালিদের অদম্য মুক্তিযোদ্ধায় পরিণত করেছে; তারা ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলেছে; যার যা ছিল তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করেছে; সেবারের সংগ্রামকে স্বাধীনতার সংগ্রামে, মুক্তির সংগ্রামে পর্যবসিত করেছে। আর শুধু প্রকাশ্য সংগ্রামই নয়, গোপন ব্যালটেও বাঙালিরা প্রমাণ করেছে দল-মত নির্বিশেষে প্রায় একশ ভাগ মানুষ মুজিব-নেতৃত্বের পতাকাতলে সমবেত হতে চায় (সত্তরের নির্বাচন)। স্বাধীনতা-উত্তরকালে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, একটি ধ্বংসোন্মুখ জাতির দ্রুত পুনর্গঠনে প্রশাসনিক দায় নিতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। কিন্তু তারপরও নতুন সমাজ ও দেশ গঠনে তাঁর গতিশীল নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তার কথা দেশ-বিদেশে স্বীকৃত হয়েছে। মাইকেল বার্নস লন্ডনের নিউ স্টেটসম্যান পত্রিকায় ১৯৭৩ সালের ২১ ডিসেম্বর 888sport free betয় ‘Prospects for Bangladesh’ শিরোনামে একটি নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুর ‘বঙ্গবন্ধুত্ব’ স্বীকার করে তাঁর গতিশীল নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন : : ÔFor the moment Bangladesh’s greatest asset remains Bangabandhu himself. Sheikh Mujib’s extraordinary dynamism and charisma is still there, may be slightly dented by the sheer intractability of the problems, but still the force that inspires and unites his people. With a dangerous and difficult few years ahead, Bangladesh is going to need Mujib’s brand of leadership more than ever;Õ বিদেশি গবেষকের আশঙ্কা প্রমাণিত হয়েছিল। পঁচাত্তর-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুবিহীন 888sport appsকে অস্তিত্বনাশক প্রতিকূলতার কাল কাটাতে হয়েছে। শুধু গবেষকের নিরাবেগ গবেষণাতেই নয়, কবির আবেগী কাব্যে এবং 888sport live chatীর দরদি কণ্ঠে নানাভাবে নন্দিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু। জসীমউদদীন, অন্নদাশংকর রায়, শামসুর রাহমান, কামাল চৌধুরী, নির্মলেন্দু গুণ, সিকান্দার আবু জাফরের মতো কবিদের কাব্যে এবং গৌরীপ্রসন্ন, হাফিজুর রহমান, শ্যামল গুপ্ত, সিরাজুল ইসলাম, আলী আজম, মমতাজ উদ্দীন, লোকমান হোসেন ফকির প্রমুখের সংগীতে বঙ্গবন্ধু অমরত্ব লাভ করেছেন।

আজ 888sport apps স্বাধীন। একটি রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত। এই স্বাধীনতা একটি সশস্ত্র বিপ্লবের প্রসূন। সবাই জানে সংগ্রামে লাগে নেতা, বিপ্লবে লাগে নেতৃত্ব। 888sport appsের স্বাধীনতাসংগ্রামেও লেগেছে নেতা-নেতৃত্ব। কিন্তু প্রশ্ন হলো – কে সেই নেতা, যাঁর নেতৃত্বে দুইশো বছরের হারানো স্বাধীনতা পুনরুদ্ধৃত হয়েছে। ওপরের আলোচনা দ্ব্যর্থহীন সিদ্ধান্ত দেবে : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই হলেন আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্যারামাউন্ট লিডার। তাহলে তাঁকে নিয়ে অহেতুক বিতর্ক কেন? স্থপতিকে তাঁর স্থাপত্যকর্মের মর্যাদা দিতে কেন-ই বা এত কুণ্ঠা? আজ বিশ্বব্যাপী এই সংস্কৃতি সচেতনতার যুগে এই প্রশ্নের সদুত্তর সন্ধান অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। বাঙালি জাতির পিতৃপরিচয় নির্ণয়ের প্রয়োজন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। না হলে পিতার মর্যাদায় জেঁকে বসতে পারে অন্য কেউ। সে-সম্ভাবনা না থাকলেও তা নিয়ে দুর্ভাবনা তো আছেই। কারণ জাতীয়তাবাদ, স্বাধীনতা ঘোষণা, জাতির পিতা ইত্যাদি নিয়ে বিরোধ বাড়ছে বই কমছে না। এসবের মূল কারণ হলো আগস্ট ট্র্যাজেডি। একটি কাপুরুষোচিত প্রতিবিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র বিপ্লবের মহান নেতাকে হত্যা করে। এরপর তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ছদ্ম জাতীয়তাবাদ, ছদ্ম নেতৃত্ব দাঁড় করায়। এই প্রতিক্রিয়াশীল শ্রেণিটি অত্যন্ত হাস্যকর ও নির্লজ্জভাবে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব অপাত্রে দান করতে চায়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শুরু হয় রাজনীতি। তাঁর সামগ্রিক কর্মকাণ্ডকে দলীয় ভেবেই আত্মপ্রসাদ বেশি পেতে চায় একদল। বিরোধীরাও সেই সুযোগ হাতছাড়া করে না।

বাংলা-বাঙালি-বঙ্গবন্ধুকে এক করে না দেখে তাঁকে স্রেফ একজন আওয়ামী নেতা জ্ঞান করে। আর তাই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পুনর্ভাবনা দরকার। দরকার নতুন চৈতন্যোদয়। বঙ্গবন্ধু কোনো দলের নয়, বঙ্গবন্ধু বাংলার-বাঙালির-888sport appsের এবং বিশ্বের – এই সর্বজনীন সাংস্কৃতিক চেতনাকে সামাজিকীকৃত করতে হবে। দুইশো বছরের হারানো স্বাধীনতার পুনরুদ্ধার করে একটি নতুন দেশ ও জাতি গঠনে তাঁর ভূমিকাকে বড় করে দেখতে হবে। ১৭৫৭তে পলাশীর আম্রকাননে যে স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, তা পুনরোদয়ে এই ভূখণ্ডের অগণিত সন্তান প্রাণ দিয়েছে। সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, ফকির বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ বাঙালিরাই করছে। ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকী, হাজী শরীয়তুল্লাহ, বাঘা যতীন, মাস্টারদা সূর্য সেন, নেতাজি সুভাষ বসু, রাসবিহারী বসু প্রমুখ বাঘা বাঙালি স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছেন, অনেকে প্রাণ দিয়েছেন। তাঁরা ভারতবর্ষের স্বাধীনতার ইতিহাসে চিরশ্রদ্ধেয়।

888sport appsের স্বাধীনতার জন্য যাঁরা লড়াই করেছেন তাঁদের মধ্যে সফলতম হলেন বঙ্গবন্ধু। ২৪ বছরের পাকিস্তানি শোষণের বিরুদ্ধে যখন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি ঐক্যবদ্ধ, যুদ্ধের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত, ঠিক তখনই তাদের রাজনৈতিক মুখপাত্র বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিলেন তাদের সমবেত রাজনৈতিক ইচ্ছার : এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু একদেশ মানুষের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের মুক্তির দিকদর্শন দিয়েছেন, গোলামির নাগপাশ থেকে মুক্ত করেছেন। তাই তাঁর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি ক্ষুদিরাম-মাস্টারদাদের যোগ্যতম উত্তরাধিকারী। তাঁকে কোনোমতেই ক্ষুদ্রতর দলীয় বলয়ে বিবেচনা করা ঠিক নয়। তিনি ছিলেন সাড়ে সাত কোটি বাঙালির কণ্ঠস্বর। স্বাধীনতাপাগল বাঙালি জাতির ‘বাতিঘর’। 888sport appsের অভ্যুদয়ের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু উপাখ্যান এমনভাবে মিশে আছে যে বাংলা-বাঙালি-বঙ্গবন্ধু বলা চলে একই সমান্তরালে। আজ বঙ্গবন্ধুর মূল্যায়ন দরকার ঠিক সেইভাবেই। বঙ্গবন্ধু 888sport apps আওয়ামী লীগের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, কিংবা 888sport appsের প্রথম রাষ্ট্রপতি – এই জাতীয় মূল্যায়ন আজ বঙ্গবন্ধুর মূল্যায়নের মাপকাঠি হওয়া উচিত নয়। এই ধরনের রাজনৈতিক কিংবা প্রশাসনিক পরিচয় বঙ্গবন্ধুর মতো বড় মাপের একজন মানুষের জন্য নিতান্তই অকিঞ্চিৎকর। কিন্তু যখন জানতে পারি তাঁর ওপর জেল-জুলুম আর অত্যাচারের কাহিনি, তৎকালীন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপনীয় নথি থেকে, জানতে পারি ছয় দফা আন্দোলন; আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা; গণ-অভ্যুত্থান, অসহযোগ, সত্তরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জনসমর্থন; যখন শুনতে পাই একাত্তরের ৭ই মার্চের সেই বজ্রকণ্ঠ হুঙ্কার; ‘আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোকেদের হত্যা করা হয় …; তখন বাংলার ইতিহাসে, বাঙালির ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতার বিচারে তাঁকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী মেনে নেওয়া নিশ্চয়ই অমূলক নয়।

ঐতিহাসিক গুরুত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ না থাকলেও তাঁর শত্রুপক্ষ সৃষ্টির সুযোগ সর্বদাই রাখা হয়েছে। সত্যিই হিসাব মেলা ভার। দুইশো বছরের দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে জীবন্ত কিংবদন্তির মহানায়ক হলেন যিনি; মাত্র চার বছরেই তাঁকে হত্যা করা হলো, সপরিবারে। অসহায় শিশুপুত্রটিও রেহাই পেল না সেই পৈশাচিক বর্বরতা থেকে। জাতির পিতার এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড তাই আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বিয়োগান্ত অধ্যায়। এই শোক এত গভীর ও মর্মস্পর্শী যে, এর 888sport sign up bonus মনে হলে আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বিজয়ের সকল গৌরব ম্লান হয়ে আসতে চায়। বারবার মনে হয়, যে-দেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে, সে-দেশের স্বাধীনতার মূল্য কী? বাস্তবিকই বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দীর্ঘ 888sport cricket BPL rate বছরে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা; পদদলিত হয়েছে গণতন্ত্র; অনিশ্চিত হয়েছে স্বাধীনতা আর বিজয়ের সুফল; অন্যদিকে লালিত হয়েছে স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা; উৎসাহিত হয়েছে প্রতিবিপ্লবী শক্তি। তাই আগস্ট ট্র্যাজেডি একদিকে যেমন জাতির পিতা হারানোর ট্র্যাজেডি; অন্যদিকে তেমনি জাতীয় আদর্শ হারানোর ট্র্যাজেডি, আর এই বিশাল শোক সইবার শক্তি অর্জনের মাধ্যমেই ঘটাতে হবে পুনর্জাগরণ। কে বলে বঙ্গবন্ধু নেই। বঙ্গবন্ধু অমর, অজর, অবিনাশী। ঘৃণ্য ঘাতকের কটি তপ্ত বুলেট তাঁর নশ্বর দেহকে শেষ করে দিতে পারে; কিন্তু তাঁর কীর্তি অবিনশ্বর। তাঁর আদর্শ অম্লান। তাঁর নবজাগরণ অনিবার্য। সেই জাগরণের জোয়ারে প্লাবিত করতে হবে 888sport appsের সাধারণ রাজনৈতিক সংস্কৃতি। বঙ্গবন্ধু আমাদের রাজনৈতিক মানস বিনির্মাণের প্রেরণাপুরুষ। রাজনৈতিক ভাবাদর্শে দেশপ্রেম, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ইহজাগতিকতার প্রেরণা আমরা পাব বঙ্গবন্ধুর কাছে। বঙ্গবন্ধুই হতে পারেন আজকের বিভক্ত সমাজ ও রাজনীতি-উপদ্রুত 888sport appsে ঐক্যের আমব্রেলা। বঙ্গবন্ধু ও 888sport apps এক ও অভিন্ন সত্তা। বঙ্গবন্ধুকে বিয়োগ করে 888sport appsকে নিয়ে ভাবা দুঃস্বপ্ন। [ড. রাশিদ আসকারী : লেখক, কলামিস্ট, কথা888sport live footballিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও উপাচার্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া, 888sport apps।]