দুই হাজার চৌদ্দোয় পৌঁছে শিকদার হাসান ফেরদৌস উনিশশো একাত্তরে ফিরে এলো।
স্ত্রীকে চড়-গুঁতা মেরে, টেনে-ধাক্কিয়ে বাসা থেকে বের করে গলিতে ঠেলে দিতে দিতে চরম উৎকণ্ঠা কিংবা কামজ বিগারে ও চিল্লায় – সহেলি, সহেলি …
এমন এক সিনে শিকদার সাহেবকে আশপাশের বাসাবাড়ি-দোকানপাটের লোকজনের ভারি অশোভন ঠেকে, তারা তার এমন জ্বলে ওঠার কারণ যেমন বুঝে উঠতে পারে না, অনেকে আবার ধন্ধেও – কে ওই সহেলি!
নাহিয়ানের দাদিতে অধুনালুপ্ত সহেলিই প্রথম টের পায় স্বামী তার কখনো উদ্বেগ, কখনো কামজ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে অদ্দিশায় সাঁতরাচ্ছে। কিশোরীকালে ও তিতিজাম খেতে তার পাশের বাড়ির তিতিজাম গাছে উঠতে উঠতে কেউ তাকে দেখছে কিনা তা বুঝতে অদূরের জানালা দিয়ে চোরা নজর ছুড়ে দেখে আশিবর্ষী জোতদারের সঙ্গে এক ষোড়শীর পারস্পরিকভাবে সক্রিয় সম্ভোগ। অথচ ফেরদৌসের সঙ্গেই, বিশেষত তাকে যখন বুড়োটে লাগতে শুরু করে তখন তো বটেই, ওটা করতে গেলে যেখানে সিনেমা-নাটক বা অফিস-পথঘাটে দেখা কাউকে প্রতিস্থাপন বা তার দেহজাগানিয়া কোনো বিশেষ অঙ্গ, ভঙ্গির সিকোয়েন্স চেতনে না এনে পরম পুলকের বিস্তারটা ঠিক তার হয়ই না।
ফেরদৌস যখন তাকে ফেলে চিলিস্নয়ে তারই নাম ডাকতে ডাকতে গলির মাথায় বাঁক নিয়ে উধাও তখন কেউ তা বোঝে কিনা কে জানে তার বোঝে আসে ও কার খোঁজে – উদ্ধারে নেমেছে।
রাস্তায় নেমে শিকদার হাসান ফেরদৌসের চোখে পড়ে তার হিজরতের শহর ময়মনসিংহ পাক আর্মি ঢোকার সময় যেমন মরাখলার মতো ফাঁকা হয়ে গেছিল, এরই মধ্যে তা মিলিটারি-রাজাকারের দম্ভ – দৌরাত্ম্য, খুন-খারাবি, সাধারণের টানটান আতঙ্ক, গেরিলাদের চোরাগোপ্তা হামলা, গুলি-বিস্ফোরণ মারদাঙ্গায় সিনেমার ক্লাইমেক্সে। তবে নঠিপাড়া বুঝি একদম ফাঁকাই – দেহ দিয়েই যাদের বাঁচা তাদেরও কে ধর্ষণে, কে যে ভয়ে কোথায় গিয়ে ভাতাবানে মরেছে! তো ওই মৃতরা কি ফিরতে পারে! বিখ্যাত সুধীর ঘোষ মিষ্টান্ন ভা-ারের গদিতে সুধীরের সুস্বাস্থ্যের গদি দখল করে যেমন বসে আছে পেট্কোয়া এক বিহারি তো গৌরহরী বস্ত্র বিতান, রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সের মতো হিন্দুদের সব বড়-ছোট দোকানপাট, বাসাবাড়ি ওদেরই দখলে। কাউকে মুক্তিযোদ্ধা বলে সন্দেহ হলে তো বটেই আওয়ামী লীগার বা হিন্দু বলে মনে হলেও তুলে দিচ্ছে মিলিটারি ট্রাকে বা ইশারায় ডেকে আনছে রাজাকার-আলবদর!
কয়েক বছর আগে তাদের দোকানের বিহারি ভাড়াটে লেকত বাড়াবাড়ি করার মুহূর্তে তার ছোটভাই শিকদার মোহাম্মদ রাজ্জাকের মনে পড়ে বঙ্গবন্ধু রুটি খেতে খেতে বলেন, আর পারতেছি না, এইবার ভাত দে – বাঙালি দিয়া বিহারি চাপা দিই, সহসাই রাজ্জাক তেমন চাপা দিতে এক থাপ্পড় কষে খড়িঅলা লেকতকে। তার জের ধরে মিলিটারি আসার পর সে আর তাদের ভাড়া তো দেয়ই না উপরন্তু আরো দুটি, মালামালসহ ভাড়াটে সুবল দাসের মইন্নারি দোকান আর কানাই শীলের গদিঅলা তিন চেয়ার, বেশ বড়সড় দুই আয়না, কয়েকটা ক্ষুর-কেঞ্চিসমেত সেলুন দখল করে নিয়েছে। তা নিছে নেউকগা কিন্তু লেকত আর তার ২০-২২ বছরের পোলা মজ্জেম সহেলিরে দেখলে যা ভাবভঙ্গি দেহায়!
বাইরে যতই পাষাণ দেবতার ভাব দেহাও তুমি আমারে কী ভালাডাই-যে-বাস তার প্রমাণ, কিঞ্চিৎ বিব্রতবোধ ফেরদৌসকে বোবা করে রাখলে সহেলি পরিহাসের সুরে কয়, যখন কেউ আমার দিকে চায়া থাহে তহন তুমি হের দিকে এমুন ক্ষক্ষইপা চাও যে …
লেকত, মজ্জেম এখন তার সামনেই যহন সহেলিরে টার্গেট করে অশস্নীল ভঙ্গি করে, চায় তার মাথায় খুন চাপে।
কী করব, পালাবইবা কোথায়! তো তারা ওপার বাংলায় যেমন লতায়-শেকড়ে কচুবন-বেতবনের বিসত্মৃত ঝাড়বংশে ছিল না এখানে তো তার প্রশ্নই আসে না। এখানে যে তারা একই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বসবাস করেও তেমনই 888sport free betলঘু – ঘটি, আপন খোলসে গুটানো শামুক, ফলত তথাকথিত অসংস্কৃত। তো পঁচিশে মার্চের পর যখন খবর এলো মিলিটারি 888sport app ম্যাসাকার করে এখন অবশিষ্ট পূর্ব পাকিস্তানে সার্বভৌমত্ব জারি রাখতে বা আধিপত্যে ফিরিয়ে নিতে এখন জেলামুখী। আর তাদের জেলা বলতে প্রাদেশিক রাজধানী থেকে এই ময়মনসিং কেন্নু-বিচ্ছু ট্রেনে সাঁই সাঁই ছুটে মাত্র তিন-চার ঘণ্টার ব্যাপার। এটা এই শহর, এমন কী তার উপকণ্ঠে চাউর হলে ঘরবাড়ি লুটপাট বা পুড়ে ছারখারের আশংকা মাথায় নিয়েই শুধু সম্ভ্রম ও প্রাণ রক্ষার্থে লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটে।
ফেরদৌস নিরুপায়, তাদের যে যাওয়ার মতো কোনো জাগাই নেই, গেলে হিন্দু বা আওয়ামী লীগারদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ইন্ডিয়া কিন্তু ওই গাঁটছড়া বাঁধার গাঁটই তার খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। ফেরদৌসের বোবাধরা দশা – দুঃস্বপ্নে নিজের মধ্যে ছোটে।
দুঃস্বপ্নের তাড়ায় ও তারই গলির মাথার মুসলিম লীগের সাবেক এমএলএ অ্যাডভোকেট মো. সোলায়মানের খান্দানি দ্বিতল বাড়ি। ছুল্মান সাব লোকজন জোগাড় করে প্রস্ত্ততি নিচ্ছে মিলিটারি বরণের। কাঙিক্ষত জনবল এখনো না পেয়ে ব্যাটা সেইসব বিহারির জন্য আফসোস করে যারা সান্কিপাড়া বিহারি কলোনি ম্যাসাকারে হত কিংবা আত্মরক্ষার্থে অজ্ঞাতবাসে।
পরিতাপ তার উপচেপড়ে সেইসব যুবতীর জন্যও, যারা দুর্বৃত্তের খপ্পরে পড়েছে বা ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে কিংবা উপর্যুপরি ধর্ষণের মধ্যে আজরাইল যাদের উদ্ধার করেছে। বুঝি তারা থাকলে হারামজাদা এদের বউ ফেলে আসা সেনাদের যৌনসেবী করত। কিন্তু এখন …
আপন বিন্দুতে ছুটতে ছুটতে দম প্রায় ফুরিয়ে আসা হাসান ফেরদৌস তার কাছেই ভেঙে পড়ে।
কিন্তু ফেরদৌসকে তার কোনো পদার্থের তৈরি বলে মনে হয় না, তবু বলে, পাকিস্তানে থাকতে হলে পাকিস্তানরে ভালোবাসতে হবে।
ভালোবেসেই না ভিটাবাড়ি-জমিজমা ফালাইয়া শিকড়সুদ্ধা উপড়াইয়া ওইপার বাংলা থেইকা এইপার বাংলায় …
বাংলা না পাকিস্তান। ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে উকিল, আর ভালোবাইসা না হিন্দুগর ঠেলায়, ঠেলায় জান লইয়া না হইলে যাইন্না অহন অই আপনের চইদ্দ পুরুষের ভিডাত! যাক, অহন তাগর পাওনা মিটায়া দেওয়ার দিন আইছে – খাড়া হইন।
শিকদার হাসান ফেরদৌস তার আমন্ত্রণে মুক্তিদের বোমা-গুলির আতঙ্কের মধ্যে টাউনহল চত্বর জনসভায়।
যারা ইন্দিরা গান্ধীর আঁচলের নিচে আশ্রয় নিছে ইন্দিরা তাদের কয়দিন আগলে রাখবে! গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে গোহারা হারা মুসলিম লীগের সাবেক এমএলএ অ্যাডভোকেট মো. সোলায়মান ডায়াসে ভারি উত্তেজিত, আমরা ওইসব বেইমানের বাচ্চা, মুরগির পাখনার নিচে আশ্রয় নেওয়া দুষ্কৃতিকারীদের ছিনায়ে আনব, আর যদি নাও আনি তারা যেভাবে চোরের মতো হানা দিতাছে, ঠুক্কর মারতাছে, আমরা তাদের হিন্দের মুখে পিইষা মারব।
উপস্থিত জনাকয়েকের জনসভা শেষে ছুল্মান তাকে সুপ্রস্তাব প্রদানের ভঙ্গিতে – শান্তি কমিটিতে আপনেরে ভালো একটা পদ দিতেছি।
আপনে যেহানে আছুইন হেইহান আমার আর কী দরকার!
আছে। সমষ্টিগত শক্তি বলে কথা।
সহসাই এক কৌশল এলো তার মাথায়, কিন্তু আমার চাকরি! আমি সরকারি চাকরি …
সরকার কেডা! আমরাই তো – নাকি!
আমি তো আপনের লগে আছিই, আবার …
বাইসানি! হাঁতার কাটবাইন কিন্তু কাপড় ভিজাইতাইন না –
আমারে মাপ করুইন বাইসাব।
এ বেলায় ছুল্মান আর তারে প্যাঁচানোর চেষ্টা করল না।
কিন্তু দূর্বাই তারে প্যাঁচায়, কথিত ঠান্ডা মাথার প্যাঁচি যদি তারে শত্রুদের দলে ঠেলে …
পরদিনই তবু ছুল্মানই তার বাসায়!
শিকদার সাহেব, এবার যে ফসকে যাওয়ার পথ নেই এমন এক ভঙ্গি নিয়ে শান্তি কমিটির সেক্রেটারি কয়, আমাদের সেনাদের তো ভালো খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা রাখা চাই –
তো?
চাল-ডাল-গরু-খাসি সাপস্নাইয়ের ব্যবস্থা করবেন। টু পাইস কামাইয়ের উপায়ও …
বাইসাব, আমার বড় বেয়াদ্দবি অইয়া যাইতাছে। এইবার তো আর বেয়াদ্দবির সুযোগঅ নাই, রেজ্জাক যেহানঅ আছে।
রাজ্জাক স্বার্থপরের মতো চলে গেল মুক্তিযুদ্ধে।
আপনের কফিনে শেষ পেরাগটা যে মারল আপনের মার পেডের ভাইয়েই! ছুল্মান চরম হুঁশিয়ারি সংকেতের ঢংয়ে কয়, আর উপায় নাই।
পাকসেনাসমেত রাজাকার-আলবদরের একটা বিশাল দল দিনদুপুরে আসে তাদের বাসায়। রাজ্জাকরে খোঁজে! তারা কি জানে না – যোদ্ধা যুদ্ধের সময় ঘরে থাকে না! রাজ্জাকের বউরেও। ও হানাদার আসার ঠিক আগমুহূর্তে কী আঁচ করে কে জানে কই যে যায়!
এর মধ্যে এক সেনা ফেরদৌসকে রাইফেলের বাঁট দিয়ে গুঁতো দেয় আর এক আলবদর তাকে প্রশ্ন করে, আপনের ভাই দুষ্কৃতিকারীদের দলে গেছে কি গেছে না?
হ্যাঁ …
তার মুখ থেকে শব্দটা বের হতেই ওরা তা-ব শুরু করে – শুধু বাসার রাজ্জাকের অংশ ম্যাসাকার। আগুন দেওয়াটা যেন মুলতবি রাখে।
আপাতত তোমার বউরে বা তোমারে রেহাই দেওয়া হইল কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে যদি তোমার ভাইডারে ধরায়া না দেও …
স্বাধীনতার জন্য জীবনবাজি রাখতে আমি মোটেই পিছপা না কিন্তু সহেলি তোমারে আমি কই থনে কই লইয়া যাই!
সহেলির একমাত্র ভাই আজম জয়বাংলা, জয়বাংলা কইয়া গলা ফাডায়া এখন আত্মরক্ষার্থে 888sport appর ভাড়া বাসা ফেলে নিজের বউঝিসমেত অজ্ঞাতবাসে। ভায়রা আসাদ পাকপন্থীদের সঙ্গে দহরম-মহরমে আছে বহাল তবিয়তে এই শহরেই। কিন্তু হারামজাদা যে তার সামনেই সহেলির গাল টেনে কয়, আও ছোটগিন্নি তোমার রস বাইর করি আর সহেলিও যে দেখা যায় তা উপভোগ করে – তার কাছে বউ রাখা সেইম টু এক মেজর সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ায় তার বউরে পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক আইন প্রশাসক রাও ফরমান আলীর মুরুবিবয়ানায় আরেক পাঞ্জাবি মেজরের জিম্মায় রাহা।
এমন দজ্জালের হাতে সময় নিশ্চয়ই থাকবে না কিন্তু এরই মধ্যে সহেলির …
অজপাড়াগাঁয় যেখানে পাঞ্জাবি-রাজাকার পৌঁছতে পারে না সেখানে যদি তাদের একটা বাড়ি থাকত, অন্তত আত্মীয়স্বজন! মেদেনীপুরের সাত পুরুষের ভিটে? প্রথম স্বাধীনতার রক্তারক্তিতে যেভাবে ভিটেবাড়ি, জমিজমা ফেলে পালাইতে হইছিল বেহাত সে জন্মভূমে ফেরা হইতে পারে তাদের বধ্যভূমে ঢোকা।
আতঙ্কের এক অনিঃশেষ কালরাতে হাসান ফেরদৌস স্বপ্ন দেখে, ব্রহ্মপুত্রের ওপারে পূর্বাকাশে রাজ্জাকের খুনরাঙা স্বাধীনতার সূর্য।
শেষতক অধর্ষিত বউ এবং অক্ষত মেয়ে, ছেলেসমেত বেঁচেবর্তে তো রইলাম!
কইন, স্টেনগান হাতে বিক্ষুব্ধ মিন্টু, আমার বাবা সাংবাদিক নজিবর রহমান কই? ওই বেঁচে থাকাকে জিন্দাবাদ বলব কিনা ভাবতে না ভাবতেই টের পাই এখনো ঘুমে আমি বোবাধরা!
হুন্ছি আলবদর খইল্লা পাঞ্জাবি লইয়া তারে ধইরা নিছিল।
নেয়া কী করছে!
তার আমি কী জানি!
কী জানি মাইনে! সহসাই মিনটু তার দিকে থ্রি নট থ্রি তাক করে, আপনে সব জানুইন। ছুল্মান উকিলের চেলা না আপনে!
খইল্লা তারে এই থ্রি নট থ্রি দেয়াই গুলি কইরা মারছে।
মারলে লাশ কই!
আগস্টের ব্রহ্মপুত্র তারে ভাসাইয়া কই যে নিছে!
কিন্তু আমি তা জানার আগেই যে মুক্তিরা কাফেরের পাওনা মৃত্যুদ- খইল্লারে বুঝায়া দিলো! তাইলে অহন আমি কার বিচার করি!
মিন্টুর ক্ষোভ জীবন্ত খইল্লার ওপর ঠাডার মতো বর্ষিত না হতে পেরে তার ওপরই আছড়ে পড়ল বলে!
এর মধ্যে মাথা তুলে তবু হাসান ফেরদৌস 888sport app download apkই খোঁজে – খোঁজে সবুজ – সোনালি ধানক্ষিত, পাখির গান, বনবাদাড় – মেদিনীপুর! দালান-কোঠা-রাস্তা-টাওয়ারের আগ্রাসনে যাওয়া শহরের উপকণ্ঠে কাটা হয়ে যাওয়া তার লাগানো একটি শিমুল গাছের শূন্যতাকে খুঁজে পেয়ে উদ্ভ্রান্ত বলাই 888sport sign up bonusর গাছটির সঙ্গে কথা বলে, তুমি কি জানো আমার মেদিনীপুরের ওক ক্ষিত, বুট ক্ষিত, ওরির গোরি, ছইতান-অরবরই-রইন্না গাছেরা কোথায়!
তার বোনকে কে বা কারা তুলে নিল কয়েক বছরেও তার সঠিক কোনো তথ্য না পেয়ে সফুর কার কাছে কী শুনে শেষে হাসান ফেরদৌসের মুখোমুখি – আমার বুইন আস্মারে পাঞ্জাবির হাতে কেডা তুইলা দিলো – কেডা? ছুল্মান, রেজা রেজাকার না মজ্জেম?
হ্যাঁ, আস্মারে যখন হানাদার বাহিনী তুইলা নিতাছিল তার ছবি সে তুলছিল। তার একটা সাদা-কালা ক্যামেরা আছে, তার বাসা থেকে ঘাপটি মেরে সে যেমন মজ্জেম, লেকতদের মোভমেন্ট তুলে রাখত, তেমনি রাজাকার-আলবদরের লুটপাট-জুলুম-জবরদস্তি। কিন্তু আস্মার ঘটনাডা ঘডার রাতে সে যখন আর কিছু না করতে পেরে একের পর এক এর স্ন্যাপ নিচ্ছিল তখন তার মনেই ছিল না ফ্ল্যাশলাইটহীন এই ক্যামেরা কোনোরকম দৃশ্য ধারণ করছে না।
নূতনচন্দ্র সিংহের মতো এক মহান সমাজসেবককে যখন খুন করা হয়, এমন কী খুনের পর লাশ যখন কয়েকদিন খলায় পড়েছিল তখনো কেউ এর কোনো দৃশ্য তুলে রাখতে পারেনি। আমি পেরেছিলাম – ছুল্মান উকিল যেভাবে এই গলির মাঝের দিকের একটা মেসে আত্মগোপনে থাকা জয় বাংলার গায়ক নূরুল হককে মিলিটারির হাতে ধরিয়ে দিয়ে বধ্যভূমিতে পাঠায় তার রৌদ্রোদ্ভাসিত একটা দৃশ্যে ক্লিক করতে।
তবে সফুরকে যে তার এখন এও দেখানোর উপায় নেই।
আস্মারে কে তুইলা দিলো, কে রেপ কইরা মারল আজ এত বছর পর তুমি তা জাইন্না কী করবা! বরং তুমি যদি হেগরে চিন হেরা তা জানলে নিজেগর জীবন ঝুঁকিমুক্ত করতে তোমারেই আর বাঁচতে দিত না।
এসব ও যতই গোপন রাখতে চাক তো তা হয়তো গর্ব করে সহেলি দুই-এক মহিলা পড়শির কানে তোলে, অতঃপর সত্যমিথ্যায় তথ্য বিস্ফোরণ!
ধর্ম শিবির এক গ্রম্নপ তাকে মাইক্রোয় করে তুলে নিয়ে যায় তাদের অফিসে। খলিল সাহেব, অ্যাডভোকেট সোলায়মান সাহেব কে কী করছেন সে বিষয়ে আপনে ছবি-দলিলপত্রসহ ভিডিও সাক্ষাৎকার দিছেন কোন সাহসে? এক যুবক তার মাথায় পিস্তল ঠেকায়। সানকিপাড়া বিহারি কলোনি ম্যাসাকারে মানবিক বিপর্যয়, খাগ্ডর বিডিআর ক্যাম্পে খোনাখুনি, মুক্তি মারার ফায়ারিং স্কোয়াড – ব্রহ্মপুত্রর চর, শম্ভুগঞ্জ ঘাট, মরাখলা … সবকিছুর তথ্য-প্রমাণাদি যা তোমার কাছে আছে জানে বাঁচতে চাইলে সব আমাদের কাছে জমা দিবা, কোনো কিছু গোপন রাখার চালাকি করছ ত মরছ।
তা সে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, প্রশাসন, গোয়েন্দা, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি কাউকে কোনো ছবি, দলিল, সাক্ষাৎকার দেয়নি। ধর্মগ্রন্থে যতই লেখা থাক সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে প্রকৃত সত্যটা গ্যালিলিও তার টেলিস্কোপে দেখে প্রকাশ করে যখন দেখল তার ফাঁসি হয়ে যাচ্ছে তিনি আরো আবিষ্কারের স্বার্থে বেঁচে থাকার জন্য আবিষ্কৃত সত্যকে এবার পালটা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন; কিন্তু জীবনের অন্তিম মুহূর্তে সত্য তিনি ঠিকই প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু আমি সুন্দরী আস্মা অপহরণ, 888sport live chatী নূরুল হক হত্যার সত্য প্রকাশের সুযোগ কখনো নিতে পারিনি – কাওয়ার্ড অ্যান্ড অ্যান্ড ইডিয়ট।
তার মেয়ে রূপা এখন যুবতী, একাত্তরে সহেলি যেমন, ইদানীং দুজনাই নেকাপ পরে – একি ওদের ভয়ে, নাকি মগজ ধোলাই! তারা নাহিয়ানের হাতে আত্মঘাতী বোমা তুলে দিতে পারে!
একই সঙ্গে, একই কৌশলে সারাদেশের অজস্র সিনেমা হলের সঙ্গে পূরবী সিনেমা হলে বোমা ফাটিয়ে কাফের দল কত মানুষ মারল, পঙ্গু করল! আত্মঘাতী বোমা তারা ফাটাল শাহজালালের মাজার, আজমির শরিফে, আত্মঘাতী বিমান হামলায় ধসে গেল টুইন টাওয়ার, পেট্রোল বোমা 888sport appর বহু যাত্রীবাহী বাসে …
তা তার লেখা 888sport app download apkর কোনটার কী মানে করে কবে যে তারে খতম লাইনে পাঠায়! অথচ যে জীবনকে ও বাস্তবে পায়নি তাই শুধু ও 888sport app download apkয় খুঁজে পেতে চাইছিল! বাট 888sport appর কোনো ভালো 888sport live football পাতায়ই তার 888sport app download apk ছাপা হয় না – হয় তার ব্যক্তিত্বের মতো জীবনানন্দের 888sport app download apkর ঘোরে পড়ে 888sport app download apk স্বাতন্ত্র্যে দাঁড়ায় না, কিংবা এখানকার সাংস্কৃতিক সম্পর্ক কীভাবে তৈরি হয় ও তা বোঝে না! নাকি মাৎসায়নে 888sport app download apkই হয় না। কিংবা ব্যাড রাইটার বেস্নইম্স হিজ পেন! আমি বুকের জ্বালা কী করে জুড়াই, ও আমার সহেলি, আমার নেই তো কোথাও কোনো ঘর …
তো সহেলি, আমি যদি বনপাপিয়ার গান হতাম, হতাম
শোক-জ্বালাহীন বউকথাকওয়ের নিটোল সুখের ডাক
সেই ডাকে তুমি উতলা পাখা মেলে
হঠাৎ এই বনেও গ্রেনেড বিস্ফোরণ
কিন্তু 888sport app download apkয় যাই বলুক গুরুত্বপূর্ণ বা বিপজ্জনক এবং ছাপাক কিন্তু কোনো ছবিরই পজেটিভই কিন্তু ও করায়নি, এমন কী সব ফিল্ম ওয়াশ।
আর দিনে দিনে তো সব স্টুডিও থেকে সেসব ফিল্ম ওয়াশ, তা থেকে ছবি করার পদ্ধতিই বিলুপ্ত। কোথায় ফৌজি কালার ল্যাব, কোথায় … সর্বোপরি ফিল্ম ওয়াশের, তা ছবি করার দশায় থাকলে তো!
কিন্তু কেউ জানে না, আমার গোপন আর্কাইভে সব সংরক্ষিত। আমি নিয়মিত ওই আর্কাইভে ঢুকে সংরক্ষণবিদের মতোই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য পদ্ধতি প্রয়োগ করে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণাদি ঠিকঠাক রাখছি, মিওজোলজিস্টরা যেমন।
গোগলের চে প্রাগ্রসর এক ডিভাইস ও তৈরি করে নিয়েছে যাতে সার্চ দিয়ে সে সারা দুনিয়ার কোথায় কী হচ্ছে তা দেখতে পারে, এমন কী সুদূর অতীতও! ভবিষ্যতে কী ঘটবে!
এই সব অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ বাজার অর্থনীতির দৌরাত্ম্যের মতো অবাধে তার সার্ভারে ডাউনলোড হয়ে ততদিনে তা যন্ত্রণার সীমাহীন আকর।
দেখা যাচ্ছে এসব আমি যতই চেপে রাখতে চাই তা স্থানীয় সাংবাদিক থেকে বিশ্বজোড়া জাল ফেলা ঘাগু তথ্য সংগ্রাহকরা এরই মধ্যে অবগত।
অমূল্য ওই প্রমাণাদির জন্য উভয় পক্ষই শেষে আমার ওপর হামলে পড়ে!
একপক্ষ আমার পা জোড়া, অন্যপক্ষ আমার হাত জোড়া ধরে, যখন আমি এই আতঙ্কে যে দুদল দুদিক থেকে টেনে আমাকে ছিঁড়ে ফেলল বলে তখন ওরা আমায় ঝোলাতে ঝোলাতে – দোল দিতে দিতে একটা শাঁখের করাতে ফেলে দেয়!
ওই পাঞ্জাবি আইতাছে আমারে হিবার … পলাই পলাই, আগুন আগুন, ছুট্ ছুট্ … আত্মীয়স্বজনের কেউ যখন বেশ গুরুত্ব দিয়ে ভিকটিমের এইসব অদ্ভুত আচরণ ধারাবর্ণনার মোশানে সবিস্তারে বলতে লাগে ইতোমধ্যে এমন কেইস স্টাডি বহুলচর্চিত বলে সাইকিয়াট্রিস্ট তা আগাম বুঝে বিরক্তি নিয়ে তার ব্রেক কষে। জেনেটিক্যাল কারণেই হোক কিংবা পারিপাশি^র্ক প্রথমে হালকা ডিম্যানশিয়া, পরে ছিটেফোঁটা পাগলামি থেকে বদ্ধ উন্মাদ। স্ট্রোকের একটা বাড়ি খেয়ে তার এটি হয় – সাতাত্তর বছর বয়সে বেশ ধীরে হাঁটা শুরু করে গতি বাড়িয়ে পালাতে ছোটে আর ধরা পড়ে – এভাবে চক্রবৃদ্ধি হারের দ্রুতিতে ছুটে মাত্র কয়েক মাসে তার এই ফেরা।
কেউ মিছে রাইফেল হাতে আত্মীয়স্বজনের বেষ্টনী ছিঁড়ে সামনে যাকে পায় পাকসেনা-রাজাকার জ্ঞানে গুলি করে, খালি হাতে যখন মারধর শুরু করে সামাল দিতে দিতে যারে ধরে সে হয়তো ধরাশায়ী! সবচে বড় বিপত্তি প্রায়শঃ ধর্ষিতাকে নিয়ে, সিজোফ্রেনিয়ার চূড়ান্ত অভিঘাত থেকে বারকয়েক ফিরে এলেও শেষে পার্মানেন্টলি যা তাকে গ্রাস করে তার ডাকনাম ম্যাডনেস। শঙ্খিনী ট্রমার বিষাক্ত দংশন থেকে এ-ই তবে রেহাই!
পাকসেনা-রাজাকাররা দরজা ভেঙে ফেরদৌসের বাসায় ঢোকে। বিকট মানবদেহে রাক্ষসের ভয়াল, বীভৎস, আগ্রাসী রূপ। তাকে ডিঙিয়ে ওরা সরাসরি সহেলিরেই ধরে। রাজ্জাকের অংশের মতো এখানে কেউ এখন কোনো লুটপাটে নেই, সহেলিরে টেনেহিঁচড়ে কাঁধে তুলতে গেলে ও দেহের সর্বাত্মক শক্তি দিয়ে রুখতে লাগে। ওরা ঘুসি, রাইফেলের বাঁট, বুটপরা পায়ে তারে আঘাত করে – ও ধরাশায়ী। উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে ওরা সহেলিরে ট্রাকে তুলে সগৌরবে ইঞ্জিন স্টার্ট দেয়।
সে পিছে দৌড়ায়।
ট্রাক থেকে তাকে লক্ষ করে গুলি হচ্ছে; কিন্তু তার একটাও তাকে ভেদ করে না – তাকে বাঁচিয়ে রাখার ফাঁকা গুলি!
সহেলি প্রথমে তাকে ডাকে কিন্তু তাতে তার স্থিরবিন্দুতে প্রচ- দৌড়, চাপা চিৎকার আরো ভয়াল রূপ নিলে আতঙ্কে সহেলি তাকে জাপটে ধরে, ততক্ষণে অক্টোপাস তার ভেতর থেকে ভয়াল সব কর্ষিকা বের করে তাকে জড়িয়ে পেঁচিয়ে ফেললে সবসমেতই ও ছোটে, সহেলি, সহেলি …
এবার যে সহেলিরে হেরা হাছাই তুইল্লা লইয়া গেল – তো নিজে তার রক্ষায় থেকেও, থেকে আমার করারইবা আছে কী, শেষ পর্যন্ত সহেলির রক্ষা অইলই না! হেরা যে হেরে কোহানো লইয়া গেল আমি যে তার কোনো পাত্তাই পাইতাছি না!
সহেলিরে কই রাখছ! খাগ্ডর বিডিআর ক্যাম্প যার নিয়ন সাইন ললাট আমায় বিজিবি দেখিয়ে বিভ্রান্তিতে ফেলার চেষ্টা করে আসলে যা এখন পাকসেনার ঘাঁটি তার মুখে এসে চেনা চেনা লাগে এমন এক রেজাকারকে দেখে আমি সহেলিরে কোথায় রাখছে জানতে গিয়া কীতে যেন কী প্যাঁচায়া ফালাই!
যুবতী তুইলা নেওয়ার কতাই কন আর কোনোহানো মুক্তিসেনার গ্রেনেড হামলার কতাই কন, রেজাকার তার প্রশ্নের প্রেক্ষেতে কয়, আপনেই না হুনছি ঘাপটি মাইরা সব সবতে ভালা দেহেন, আম্রার আর্মি আপনের খবরাখবরের ওপর ভর কইরা অনেক অপারেশন করছে!
ঢাহা মিছা!
আমি আর কিছুই না, বগলে ঝোলানো একটা সাদা-কালোর বাতিল ক্যামেরা – কোডাগ, আগ্ফা দূরে এখন আর কোনো কোম্পানি যার ফিল্মই বানায় না।
কিন্তু 888sport sign up bonusর বিন্যাস থেকে যে ক্যামেরা ছবি তুলে নিতে পারে তেমন একটা ক্যামেরা আপনি আবিষ্কার করেছেন আর সেসব থেকে ছবি প্রিন্ট করে আপনি থরে থরে আপনার আর্কাইভে নাকি সার্ভারে সাজিয়ে রেখেছেন, কাউকে দিচ্ছেন না, এ নিয়ে জগৎ তোলপাড়।
সাংবাদিকরা ইদানীং তাকে কোনো স্বস্তি দিচ্ছে না।
আপনি এখন এইসব নিয়েই আছেন!
থাকলে আছি, তাতে আপনার কী, আপনের বাপের কী! যদিও আমি তেমন থাকতে চাই না!
আপনি আমাদের কিছু ছবি দেন। সিএনএনের দক্ষক্ষণ এশিয়া বিষয়ক সংবাদদাতা তাকে ইনসিস্ট করে।
আমার কাছে বিশ্বাস করেন কিচ্ছু নাই।
কিন্তু আদতে তো এসব আমি দিতেই চাই – প্রশাসন, অন্তত তার আর্কাইভে। দিয়ে দায়মুক্ত হতে চাই। আমার ছেলেমেয়ে থাকা সত্ত্বেও, কানাঘোষায় প্রভাবিত হয়ে অনেকে তা নিতে চাইলেও আমি নিরাপদ, উপযুক্ত কাউরে এহনো পাইতাছি না।
কিন্তু … ফেরদৌস বলে, ছবি থাকলেও আপনাকে সেসব কেন দিতাম!
আপনার ছবি দেখবে সারা দুনিয়া।
আর আপনি সাদা-কালোকে রঙিন করেন – তা বস্ন্যাকমেইলিং করে দুনিয়াকে আপনার প্রভুর স্বার্থে বিকিয়ে জাতীয়-আন্তর্জাতিক ম্যাডেল জিতেন।
অবশ্য সোর্সের জন্য কোনো রাষ্ট্রীয় বা আন্তর্জাতিক 888sport app download bd নেই কিন্তু …
888sport app download bd কে চাইছে! চিনেন আমারে? আমি বনমানুষ, বনমানুষ হয়েই থাকতে চাই!
বনমানুষের তো এখানে থাকার জায়গা নেই।
অবশিষ্ট রাতারগুল, মধুপুর-গাজীপুর শালবন, সুন্দরবন বিনাশের মুখে এই ভূগোলে বনমানুষের আমি অন্তিম বিচরণ।
কিন্তু আপনার বয়স কত! আর বনমানুষ বাঁচে কত!
আমি কি বেঁচে আছি! মরণের অধিক যন্ত্রণা আমাকে মেরে মেরে মরণযন্ত্রণায় …
আর বনমানুষ হলে তো অসুখ-বিসুখ কী পশুর এক হামলাতেই কেল্লা ফতে!
তবু তো শান্তিময় কিছু সময় জুটত।
তা তো আমরা এখনো জুটাই।
সে অন্যকে ঠকিয়ে-ওষুধে-বিষুধে স্রেফ ধাপ্পাবাজি।
ওফ্, তুমিই বরং বনমানুষের বেশে এক প্রতারণা কিংবা বিভ্রান্তি।
অ্যাবসার্ড! উত্তরবঙ্গে একটা নীলগাই ধরা পড়ে!
হিমালয় – দূরদেশ থেকে নদীতে ভেসেভুসে এসেছিল আর কী।
ইডিয়ট। আমি সত্যি এক বনমানুষ।
তাহলে আপনাকে ছুঁয়ে দেখি, ধরে দেখি আপনার পরিচ্ছদ কাপড় না লতাপাতার! নাকি এ আপনার জটিল তত্ত্বের মতো মানসিক দুর্দশা!
কিছুই না। তোমাদের বাজারের মতো ঠাসা ভিড়ের জনপদে আমার বনমানুষী হারিয়ে গেছে।
তাই! দাঁড়ান আমি আমার ক্যামেরা … ওই তো দূরে ছায়ার কায়ায় এখন আমি তাকে দেখতে পাচ্ছি – আপনি সম্পন্ন কায়ায় ধরা দিন না।
আপনারা আগে আপনাদের এই জঘন্য ক্যামেরাটা বন্ধ করেন। কারণ ক্যামেরাই তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আর সহেলি ছুটছে।
ওয়েট! একবার ক্যামেরাবন্দি করতে পারলে তার আর পালানোর উপায় থাকবে না।
আপনেরে আমি বাস্টার্ড, বেখাইচ্চৎ বলে টিভির মনিটর এমন মাতিয়ে তুলব যে লাইভ দেখানো বন্ধ করা ছাড়া আপনার কোনো উপায় থাকবে না।
সরি … পিস্নজ আপনি … দুনিয়ার মানুষ যে দেখছে আপনি এমন এক মানব যে যন্ত্রণায় এমন এক জীবন চান …
আপনারা দেখাচ্ছেন আপনাদের মতো করে। পরিস্থিতি পরিকল্পিতভাবে আরো ঘুলাটে করে ঘোলা পানিতে …
মাই গড! আপনার রোলটা আপনি পেস্ন করুন না!
আর তার সুবাদে উদ্ধারের নামে আপনারা সব ধুলায় আন্ধার করে লুটপাট, হয়রানি, নির্যাতন, উচ্ছেদ, দখল …
আপনার কাছে যেমন আছে তথ্য-প্রমাণের এমন স্বর্ণখনি তেমনি আছে পরম এক জীবনের …
আপনারা সর্বহারাকেও যেখানে মাইক্রোক্রেডিটে ফেলে পিষে-শুষে খেয়ে ছ্যাবড়া করে শেষে …
আপনি তো তাদের দলের নন – আপনি অনন্য। আর এতসব নিয়ে মরে যাবেন আপনি!
নো, কী করে মরব! আপনারা আমায় বারবার খুন করছেন লাশে প্রাণ ঢুকিয়ে, যত্রতত্র ধর্ষণের পর ধর্ষণ করে …
হারজেগোবিনায় আগ্রাসনবাদীরা অসংখ্য 888sport promo codeর মধ্যে সহেলিকেও আটকে রেপ করেই বা রেপ করে প্রেগন্যান্ট হলেই ছেড়ে দেয় না এরপরও ততদিন আটকে রাখে যতদিন পর্যন্ত তার এমআর, ডিঅ্যান্ডসির সুযোগ আছে – এথনিক ক্লিনজিং।
এনজিওর ডাক্তার অ্যাসেসমেন্ট করে প্রায় একই সময় শরণার্থী শিবিরে অনেক 888sport promo codeর ডেলিভারির যে ডেট দেয় তার মধ্যে সহেলি! আমার কিছু করার ছিল না, শুধু প্রাণে বাঁচতে অন্য পুরুষদের সঙ্গে আমিও বউকে বাড়িতে ফেলে সরে থাকি যতক্ষণ-না পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী সেনারা এসে আমার বউকে রেপ করে ফিরে যায়।
কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবিরে এই ডেলিভারি ডেটের তিক্ত প্রতীক্ষার মধ্যেই ও শোনে, ভূমিষ্ঠের আগেই খুন হওয়া সন্তানের সঙ্গে কুমারী মাতার কথোপকথন।
আইয়ামে জাহেলিয়াত কিনা আরো জঘন্য রূপ নিয়ে দুনিয়ায় ফিরে এলো! নাকি ভিন্ন ভিন্ন রূপে ও সবসময় জারি ছিল! কিংবা সে সেখান থেকে উলটাবাজি মেরে হেথায়! না, এ তার এক জঘন্যতর আবির্ভাব। ও দেখে, সারা আরবে মরণবসন্ত! আততায়ী আইয়ামে জাহেলিয়াত ভারি ভয়াল ভার্চুয়াল জগতে। তার সার্ভারে ঢুকে সব শেষ করে দিচ্ছে নিশ্চয়ই!
এই যন্ত্রণার মধ্যে কী করে যে তার দুর্মর আকাঙক্ষা নিয়ে অস্তিত্বমান হয়ে ওঠে ৩০-৩৫ বছরের ফেরদৌস, বয়স্ক ফেরদৌসের কাছে ওইসব ভারি তুচ্ছবোধ হইলেও সে তা ইগনোর করতে অপারগ – সালোয়ার পরা যুবতীর সালোয়ারের নেওরের ফস্কা গেরো অনায়াসে খোলা বা ইলাস্টিকের ফিতা টাইন্না অনায়াসে সালোয়ার নামানো কিংবা শাড়ি-পেটিকোট পরা যুবতীর শাড়ি-পেটিকোট উলটানো, বস্নাউজের বুতাম, ব্রার হুক খোলা, খুলে … এইসব টুকরা-টাকরা অসাধারণ সুখ নিতে নিতে তারে সম্পূর্ণ নগ্ন করা – এমন এক ন্যাংটোতায় নামানো যেন কোনো পোশাক ও জন্মাবধি পরেনি – হে এক বনমানুষী, সহেলির মতো আধাকেচরা মাল না!
সহসাই তার বোধোদয় ঘটে, সহেলি উদ্ধারে কেন ও নেমেছে, সহেলিই তো তাকে ফেলে ভেগেছে, যেমন লিউ পোল্ড ভিলকে ফেলে … সে বরং জেমস জয়েসই হবে, এই বেশ্যাপাড়ার প্রত্যেকটি মেয়ে চাপা-খাওয়া তাকে নামে চিনবে, আর প্রত্যেককে ও ডাকবে নাম ধরে।
তার ছেলে জুয়েল বন্ধুবান্ধব নিয়ে এবার তাকে যেখান থেকে পাকড়াও করে সেখানকার কথা কাউকে বলা দূরে গোপন রাখার গস্নানির ভার বওয়াও তার দুরূহ।
জুয়েল মাকে রাগ দেখায়, বৃদ্ধাশ্রম থাকতে বাপরে এখন আর কেউ ঘরে বওয়ায়া খাওয়ায়! তার ওপর …
আরে চেষ্টা ত কইরা দেখলাম। অনেক আগেই ও বুঝেছে তাড়া খেয়ে জন্মভূমি ফেলে আসা মানুষ তথা পুরুষ কখনো পৌরুষ নিয়ে দাঁড়াতে পারে না, তাই ও তার সঙ্গে যতই মানিয়ে চলুক কিন্তু নিশ্চয়ই ভালোবাসতে পারেনি, সে তাকে যতই বাসুক।
বাবার হাতে লাঞ্ছিত হতে হতে মা বুঝি শেষে এখন রাজি! কিন্তু রাজি যে তোমার আগে হওয়া উচিত ছিল আম্মা হুজুর। তাতে মানসম্মান …
তবে তার এই একাত্তরে যখন শুধু বিখাউজের লাহাইন মজার নঠিপাড়াই আছে আর সেখানে ঢুইকা যহন হে সহেলিরেই খোঁজে তহন সহেলি বোঝে তার এক ডাসা সহেলিই চাই। এখন বৃদ্ধাশ্রম দূরে পাগলাগারদ তারে আগলে রাখতে পারে কিনা! হের ঘরই চাই!


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.