অভিজিৎ দাশগুপ্ত
জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি। উত্তর কলকাতার একটি সরু গলি পার হয়ে এই অট্টালিকার সামনে এসে দাঁড়ালে লোমকূপগুলো খাড়া হয়ে ওঠে। সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র এই বাড়িটি শুধু 888sport appsের নয়, সমগ্র দেশের মধ্যে প্রতিনিধিস্থানীয় ছিল। ‘রবীন্দ্রনাথ’ নামে এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক বিশ্বকে নিয়ে এসেছিলেন গৃহাভ্যন্তরে। তাঁর আলোয় আলোকিত হয়েছে বঙ্গদেশ, সেইসঙ্গে ভারতভূমি। কিন্তু প্রশ্ন আসে মনে, শুধুই কি একজন মানুষের মহত্ত্ব এই বাড়িকে স্বাতন্ত্র্যের অধিকারী করেছিল, নাকি পূর্বাপর রয়ে গেছে আরো-আরো অনেক ঐশ্বর্য, যাদের দ্যুতি একপ্রকার 888sport appই পড়েছে বিশ্বকবির পূর্ণতার কাছে।
‘দ্বারকানাথ করেছিলেন লক্ষ্মীর সাধনা। তাঁর তীক্ষè ব্যবসাবুদ্ধি তাঁকে ঐশ্বর্যবান প্রগতিশীল সমাজ-নেতার পদে অধিষ্ঠিত করেছিল। দেবেন্দ্রনাথ দেশের মানুষের হৃদয় জয় করেছিলেন ভিন্ন পথে। তিনি ছিলেন একান্তভাবে ঈশ্বরের চরণে নিবেদিত-প্রাণ ভক্ত।’ (ঠাকুরবাড়ীর কথা, হিরণ¥য় বন্দ্যোপাধ্যায়, ভূমিকা)। পিতা ও পুত্রের এই বিপরীত ভাব অভিমুখ তৈরিতে সাহায্য করেছে। তাই জ্যেষ্ঠ পুত্র দ্বিজেন্দ্রনাথই হোক বা কন্যা স্বর্ণকুমারী দেবী, সবার মধ্যেই একক এক 888sport live chatসত্তা বারবার উঁকি দিয়েছে। সত্যেন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ প্রত্যেকেই এবং তাঁদের সন্তান-সন্ততির ভেতরেও উত্তরণের প্রচেষ্টা কমবেশি লক্ষ করা গেছে। যেমন – সুরেন্দ্রনাথ, ইন্দিরা দেবী, ক্ষিতীন্দ্রনাথ, ঋতেন্দ্রনাথ, বলেন্দ্রনাথ, সরলা দেবী, মাধুরীলতা, রথীন্দ্রনাথ প্রমুখ। গিরীন্দ্রনাথের (মহর্ষির ভাই) পরিবারেও ছিলেন গগনেন্দ্রনাথ, সমরেন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথের মতো ভারতের আধুনিক চিত্রকলার দিকপালরা।
জীবনের এমন সর্বোত্তম বৃত্ত থেকে আমাদের সময় এসেছে উপজীব্যে প্রবেশের। এই পরিবারে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে চিন্তাভাবনায় অনেকটাই মিল ছিল বীরেন্দ্রনাথ এবং প্রফুল্লময়ীর একমাত্র সন্তান বলেন্দ্রনাথের। ঠাকুরবাড়ির প্রিয় বলু তাঁর মাত্র ঊনত্রিশ বছরের (১৮৭০-৯৯) জীবনের 888sport live footballচর্চায়, ধর্মপ্রচারে, শিক্ষাবিষয়ে নতুন-নতুন ভাবনার পরিচয় দিয়ে গেছেন ভাবীকালকে। তবু তিনি যেন কাব্যে (বঙ্গ 888sport live football-সমাজে) উপেক্ষিত।
খ
‘যখন (সে) আট-নয় বছরের, সেই সময় আমাকে প্রায় বলিত যে, সে লেখাপড়া শিখিয়া ইঞ্জিনিয়ার হইবে। লেখাপড়া তাহার নিকট একটা প্রিয় বস্তু ছিল, কোনোদিন তাহাতে অবহেলা করে নাই। যখন ওর তেরো বছর বয়স, সেই সময় আমরা একবার শ্রীরামপুর যাই। সেখানে থাকিবার সময় একদিন একটা মাঝি নৌকায় চড়িয়া গান গাহিতে গাহিতে যাইতেছিল, ‘আমার খুড়ো-খুড়ি পায় না মুড়ি’ ইত্যাদি। এই গান শুনিবার পর হইতেই ওর মনে কী একরকম ভাব উপস্থিত হয়, তখন হইতে সে প্রায়ই এক-একটা 888sport live লিখিয়া আমাকে শোনাইত।’ (888sport sign up bonusকথা, প্রফুল্লময়ী দেবী)। ছোট বয়স থেকেই 888sport live footballের প্রতি বলেন্দ্রনাথের দিন-দিন অনুরাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই যে মাঝির গাওয়া গান ‘আমার খুড়ো-খুড়ি পায় না মুড়ি’ ইত্যাদি শুনে তাঁর মনের ভাবের পরিবর্তন ঘটে, এর মধ্যেই সেই আকাক্সক্ষা লুকিয়ে রয়েছে, যা অনিবার্যভাবে ধাক্কা লাগায়। যেমন একদিন তাঁর খুল্লতাত সদর স্ট্রিটের বাড়িতে অনুভব করেছিলেন। ‘আজি এ প্রভাতে রবির কর/ কেমনে পশিল প্রাণের ’পর,/ কেমনে পশিল গুহার আঁধারে প্রভাতপাখির গান…।’ শেষে কবি একটি অবুঝ সমাধানে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন। ‘কী জানি কী হল আজি, জাগিয়া উঠিল প্রাণ – / দূর হতে শুনি যেন মহাসাগরের গান।’ ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কৈশোর আর তারুণ্যের দ্বারে দাঁড়ানো কবিকে আকুল করে তুলেছিল। এর পনেরো বছর পর অর্থাৎ প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে কবি আরো স্পষ্ট, আরো তাৎপর্যপূর্ণভাবে উচ্চারণ করলেন –
ওহে অন্তরতম
মিটেছে কি তব সকল তিয়াষ আসি অন্তরে মম?
(‘জীবনদেবতা’)
বলেন্দ্রনাথের 888sport live footballজীবনেও 888sport live footballের প্রতি অক্লান্ত সেবাধর্মকে দেখা যায়। তিনিও জীবনদেবতার অন্তঃশীল ধারাকে মেনে নিয়ে হাতে তুলে নিয়েছিলেন লেখনী। ‘বলেন্দ্রনাথের যে এই সংযম প্রচুর পরিমাণে ছিল, তাহা তাঁহার ভাষাতেও যেমন বুঝা যায়, তাঁহার ভারগ্রাহিতাতেও তেমনই বুঝা যায়। তিনি ভাবের রাজ্যে বিচরণ করিতেন ও ভাবের বায়ুভরে উড়িয়া বেড়াইতেন; অথচ আপনাকে একান্ত পরবশ করিয়া মেরুদ-হীনের মত ভাবের স্রোতে আপনাকে ভাসাইয়া দিয়া আপনাকে শোচনীয় ও কৃপাপাত্র করিয়া তুলেন নাই।’
(বলেন্দ্র-গ্রন্থাবলী, সজনীকান্ত দাস, ভূমিকা)।
ভাবের রাজ্যে বিচরণ করলেও বলেন্দ্রনাথ তার স্রোতেই যে নিজেকে ভাসিয়ে দেননি তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ 888sport liveগুলোর বিষয়-ভাবনা। পারিবারিক ও পরিচিত ব্যক্তিবর্গের পত্রিকায় তিনি নানা বিষয় নিয়ে 888sport live রচনা করে গেছেন। একবার বিষয়গুলোর দিকে দৃষ্টি ফেরালেই মূর্ত হয়ে ওঠে মৌলিক চিন্তাভাবনার স্তরটি।
ক. প্রাচীন 888sport live football – ‘উত্তরচরিত’, ‘কালিদাসের চিত্রাঙ্কনী প্রতিভা’, ‘মৃচ্ছকটিক’, ‘মালবিকাগ্নিমিত্র’ ইত্যাদি।
খ. মধ্য ও আধুনিক 888sport live football – ‘কৃত্তিবাস ও কাশীদাস’, ‘বিদ্যাপতি ও চ-ীদাস’, ‘ভারতচন্দ্র রায়’, ‘বঙ্গ888sport live football : রামপ্রসাদের গান’, ‘কুন্দনন্দিনী ও সূর্য্যমুখী’ ইত্যাদি।
গ. প্রকৃতিবিষয়ক – ‘আষাঢ় ও শ্রাবণ’, ‘ঊষা ও সন্ধ্যা’, ‘গোধূলি ও সন্ধ্যা’, ‘শ্রাবণের বারিধারা’ ইত্যাদি।
ঘ. 888sport slot gameবিষয়ক – ‘চন্দ্রপুরের হাট’, ‘লাহোরের বর্ণনা’, ‘বোম্বায়ের রাজপথ’ ইত্যাদি।
ঙ. স্থাপত্য-চিত্রকলাবিষয়ক – ‘রবিবর্ম্মা’, ‘কণারক’, ‘নগ্নতার সৌন্দর্য’, ‘খ-গিরি’, ‘দিল্লীর চিত্রশালিকা’ ইত্যাদি।
চ. 888sport apkবিষয়ক – ‘রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ক্রিমিনাল্-তত্ত্বের প্রয়োগ’, ‘লোক888sport free bet বৃদ্ধি ও আহার্য সংস্থান’, ‘ক্রিমিনাল্ মানব-তত্ত্ব’ ইত্যাদি।
এছাড়া আরো বিচিত্র বিষয় বলেন্দ্রনাথের লেখায় উঠে এসেছে। প্রতিটি রচনায় লেখকের ভাবনার গভীরতা অনুসন্ধিৎসু পাঠকমাত্র বুঝতে পারবেন। শেক্সপিয়রের প্রকৃতি প্রতিভাকে অস্বীকার করে তিনি সংস্কৃত 888sport live footballের বিজয় পতাকা তুলে ধরেছেন যথেষ্ট যুক্তিসহ। ‘শেক্সপীয়রের নাটক পড়িতে পড়িতে একটা কথা মনে হয় যে, শেক্সপীয়র সমস্ত হৃদয়ে প্রকৃতিকে ভালবাসিলেও প্রকৃতির সহিত তাঁহার সামাজিকতা বড় নাই।… কিন্তু সংস্কৃত দৃশ্য কাব্যে প্রকৃতি মানবের সহিত সমান আসন পাইয়াছে এবং পরস্পরের প্রতি প্রীতিতে উভয়ের মধ্যে একটি সুমধুর গার্হস্থ্য বন্ধন সংস্থাপিত হইয়াছে।’ (‘কাব্যে প্রকৃতি’)। অর্থাৎ শেক্সপিয়রে প্রকৃতি নয়, জয়ী হয়েছে মানুষ। সে প্রকৃতির ওপর কর্তৃত্ব করে, তাকে ঘরে ডাকে না। কিন্তু আধুনিক পাশ্চাত্য 888sport app download apkয় ভারতীয় সৌন্দর্যের এই অদ্বৈতবাদ গৃহীত হয়েছে। তাকে তিনি ‘অদ্বৈতবাদ না বলিয়া ঐক্যবাদ’ বলেছেন। ‘ঋতুসংহার’ 888sport liveে তাঁর এই ভাবনার সমর্থন পাবেন পাঠককুল। কালিদাস গ্রীষ্মকাল, প্রচ- সূর্যতাপ, বর্ষায় বজ্রবিদ্যুৎ, বসন্তের মলয়পবন ইত্যাদির মধ্য দিয়ে সহজ ভাবকে সরল ভাষায় পরিস্ফুট করেছেন। লেখক বলেন্দ্রনাথ তাঁর অন্তর্দৃষ্টি প্রয়োগ করেছেন যথারীতি –
কালিদাস যাহা বর্ণনা করিয়াছেন, তাহা অসাধারণ কিছুই নহে – এই গ্রীষ্মকালে প্রচ- সূর্য্য, পুরুষ পবনবেগ, বরাহ মহিষ প্রভৃতি বিবিধ বন্য জীবজন্তুর ক্লান্তিভাব, দাবানল, আর আদিরসে প্রবাসী, বিরহী বা স-সখীর মনানল, বর্ষায় বজ্রবিদ্যুৎ মেঘ, বিরহিণীর বিজন বিলাপ, দুই চারিটা কেতকী কদম্বের নীরব কাহিনী; না হয় বসন্তে মলয়পবন, কোকিল কূজন, বড় জোর নবযৌবনা প্রিয়তমার সুখের কথা এবং কুসুমশরের উল্লেখে গোটাকতক ফুলের নাম; – কিন্তু সাধারণ কথা হইলেও প্রত্যেক ঋতুর অন্তরের ভাব ফুটিয়াছে, কেবলি তাপে, বৃষ্টিতে বা নবকুসুমিত সহকারে বর্ণনা অবসিত হয় নাই।
এবার একটু পিছন ফিরে দেখার সময় এসেছে। বলেন্দ্রনাথ সম্বন্ধে 888sport live footballবোদ্ধা প্রিয়নাথ সেন আশ্বিন-কার্তিক, ১৩০৬ বঙ্গাব্দে প্রদীপে লিখেছিলেন – ‘বলেন্দ্রনাথের ইহা কম প্রশংসার কথা নয় যে, প্রথম হইতেই তাঁহার রচনাপ্রণালী তাঁহার নিজের এবং তাঁহার অসাধারণ ক্ষমতার ইহা অপেক্ষা আর স্পষ্ট নিদর্শন কি থাকিতে পারে যে, যখন সমস্ত বঙ্গদেশ রবীন্দ্রনাথের বীণাঝঙ্কারে কম্পিত উচ্ছলিত – যখন যে কোন আধুনিক 888sport app download apk পড়িবে, তাহারই ভিতর অল্প বা অধিক পরিমাণে রবীন্দ্রনাথের ছন্দ, ভাব, ভাষা বা ভঙ্গীর, প্রতিবিম্ব দেখিতে পাইবে, বলেন্দ্রনাথ তাঁহার ঘরের – তাঁহার সেই শিক্ষা-গুরুর প্রভাব হইতে আপনার স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করিতে পারিয়াছেন।’ বলেন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর প্রিয়নাথের এই পর্যবেক্ষণ পুরোটা মেনে নিতে না পারলেও অনেকটাই ঠিক। তবে তিনি এর পরে স্বীকার করেছেন, বলেন্দ্রনাথের গদ্যে বা পদ্যে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব কিছু পরিমাণে লক্ষিত হয়। রথীন্দ্রনাথও তেমনই শোনাচ্ছেন –
বলুদাদাকে বাবাও অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাঁর 888sport live footballচর্চার একনিষ্ঠতা দেখে বাবার খুব ভালো লাগত।… বলুদাদার যখনই কোনো 888sport live লেখা শেষ হত বাবাকে দেখাতে নিয়ে আসতেন। ভাব ও ভাষা দুদিক থেকেই তন্ন তন্ন করে বিচার করে বাবা তাঁকে বুঝিয়ে দিতেন কি করে বিষয়টি লিখতে হবে। বলুদাদা পুনরায় লিখে নিয়ে এলে যে-দোষত্রুটি বাবার তখনো চোখে পড়ত সেগুলি সংশোধন করে নিয়ে আসতে বলতেন। যতক্ষণ-না সম্পূর্ণ মনঃপূত হত, বাবা ছাড়তেন না, বলুদাদাও অসীম ধৈর্য সহকারে লেখাটি বারবার অদলবদল করে নিয়ে আসতেন। এইরকম কঠোর শিক্ষার ফলে বলুদাদার লেখার মধ্যে ভাব ও ভাষার আশ্চর্য বাঁধুনি দেখতে পাওয়া যায় – না আছে একটুও অতিরঞ্জন, না আছে অনাবশ্যক একটি কথা।
(পিতৃ888sport sign up bonus)
গ
‘বেশ-ভূষাতেও সন্ধ্যা ও ঊষার মধ্যে কেমন একটা ঐক্য আছে। ঊষা সিন্দূর পরে – সন্ধ্যাও সিন্দূর পরে। ঊষার রক্তিম অধরে হাসি উথলিয়া উঠে – সন্ধ্যারও রক্তিম অধরে হাসি মাখান। কিন্তু উভয়ের হাসি যেন এক না। দুই জনের হাসি দুই রকমের। একজনের হাসি কতকটা যেন বালিকার মত। ঊষা বালিকা।… সন্ধ্যার যেন কিছু গম্ভীর হাসি। ঊষাপেক্ষা সন্ধ্যা যেন জগতের সুখ দুঃখ বুঝে বলিয়া মনে হয়।’ ‘ঊষা ও সন্ধ্যা’ 888sport liveটি ভারতী ও বালকে যখন প্রকাশ পায় তখন বলেন্দ্রনাথের বয়স ১৬-১৭। কিন্তু ওই বয়সেই ভাবনার এই গভীরতা, তাকে প্রকাশ করার মার্জিত অথচ উজ্জ্বল ভাষা আমাদের অনুভবকে গাঢ় করে। কাকা রবীন্দ্রনাথ কতখানি শুধরে দিয়েছেন তা আলোচনা করা তর্কসাপেক্ষ, কিন্তু এতখানি যে ভাবনা, তা-ই বা কম কি। ঊষা ও সন্ধ্যাকে জীবনের সঙ্গে গভীর দর্শনে অন্তর্ভুক্ত করে বলেন্দ্রনাথ তাকে চিত্রময় করেছেন। বাড়ির অপর সদস্য অবনীন্দ্রনাথ তাঁর রং-তুলি নিয়ে যেন অলক্ষ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন এই লেখাগুলোর মুহূর্তে।
১২৯২-তে রচিত ‘এক রাত্রি’ আরো একটি প্রকৃতিবিষয়ক নিবন্ধ। বালকের জ্যৈষ্ঠ 888sport free betয় প্রকাশিত সেই রচনাটির একটি জায়গায় বালক রচয়িতা বেশ স্নিগ্ধভাষায় নিজেকে চিনিয়েছেন।
আকাশে মেঘ না থাকাতে পূর্ণিমার চাঁদ আবার হাসিতে আরম্ভ করিয়াছে, তাহার সেই স্নিগ্ধ আলোকের জ্যোতি বৃক্ষের পত্রে, ঘাসের শ্যাম মখমলের উপর প্রতিফলিত হইতেছে। নালা নর্দ্দমায় জল দাঁড়াইয়াছে, সেই জলের মধ্যে জ্যোৎস্নালোক ঝিকিমিকি করিয়া খেলা করিতেছে।
এটুকুতেই বোঝা যায়, তাঁর শোষণ ক্ষমতা কতখানি। আলোকিত জ্যোৎস্না, বৃক্ষপত্র, শ্যাম মখমলসদৃশ ঘাসের সঙ্গে তিনি যুক্ত করেছেন ‘নালা নর্দ্দমার জল’। পরে পরে এসেছে কাদা। কিন্তু তাকেও তুলির (লেখনীর) টানে তিনি অসুন্দরের সঙ্গে সুন্দরের তফাৎ বুঝতে দেননি। – ‘কাদার উপরে পা পড়াতে পথিকের পদতল, পথিকের পাঁচটি অঙ্গুলি কর্দ্দমের উপর অঙ্কিত হইয়া যাইতেছে।’ কতখানি পর্যবেক্ষণ শক্তির অধিকারী ছিলেন তিনি। তাই, কর্দমের ভেতর পাঁচ আঙুলের অঙ্কনছাপ – লেখকসত্তাকে অতিক্রম করে 888sport live chatীসত্তার জন্ম দেয়।
এ প্রসঙ্গে বলার, বলেন্দ্রনাথের এ-ধরনের লেখায় একটি বৈপরীত্য ভাব তৈরি করার চেষ্টা রয়েছে। যেমন – ‘আষাঢ় ও শ্রাবণ’, ‘গোধূলি ও সন্ধ্যা’ ইত্যাদি। এমন আরো কিছু 888sport live আছে যেগুলো এই বিপরীত ভাবকে উস্কে দেয়। ‘বোল্তা ও মধ্যাহ্ন’, ‘কবি ও সেন্টিমেন্ট্যাল’, ‘প্রেম : প্রাচ্য ও পাশ্চাত্ত্য’, ‘স্ত্রী ও পুরুষ’, ‘রঙ্ ও ভাব’ ইত্যাদি। 888sport liveগুলোর নামকরণের বৈপরীত্য শুধু নয়, বিষয়বৈচিত্র্যও আমাদের আশ্চর্য করে। ‘কবি ও সেন্টিমেন্ট্যাল্’-এ প্রকৃত কবিকুলের বিপরীত বিন্দুতে দাঁড়ানো ‘ফেসানানুসারী’ সেন্টিমেন্ট্যাল পদবাচ্যদের উপভোগ্য ভাষায় বর্ণনা করেছেন লেখক –
মৃদু চাহনিতে, অধরের ঈষৎ চাপা হাসিতে, কথাবার্ত্তার ভাবে, দাঁড়াইবার কেতায়, বসিবার ধরনে, আলস্যে, ঔদাস্যে, যথাসাধ্য কবিয়ানা করা চাহি – সর্ব্বদাই ভয়, পাছে লোকে নীরস অকবি ঠাহরাইয়া বসে, পাছে কেহ বলে, লোকটা যথেষ্ট কবি নয়, পৃথিবীর সাধারণ মানবের মত কাজের লোক, ঘর সংসারের বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে, বেশ কাজকর্ম্ম বুঝে। যেন সাংসারিক কাজকর্ম্ম বুঝিলেই বুদ্ধির হ্রাস হইয়া আসে, হৃদয় সহৃদয়তা হারায়, মানব দানব হইয়া দাঁড়ায়।
আজকের দিনে দাঁড়িয়েও একথা কত সত্য। কতটা নিষ্ঠুর বাস্তব। সত্যি কথা বলতে, কবি হলেন ভাবের রাজা। ভাব ও ভাষা তাঁর করায়ত্ত। তাই ‘প্রভু হইয়া তিনি সেন্টিমেন্টের উপর আধিপত্য করেন। সেন্টিমেন্ট্যালেরা প্রভু না হইয়া দাস হইয়া দাঁড়ায়।’
888sport slot gameপিয়াসী ঠাকুরবাড়ি। পরিবারের প্রতিটি সদস্য একাধিকবার 888sport slot gameে বের হয়েছেন। কাছে-দূরে। বীরেন্দ্রপুত্র বলেন্দ্রনাথও তার ব্যতিক্রম নন। বোম্বাইয়ের (বর্তমান মুম্বাই) রাজপথের সুচিত্রিত আধুনিক সত্তাটিকে বুঝতে তাঁর কিছুমাত্র বিলম্ব হয়নি। ‘সমুদ্রের উপকূলে বৃহৎ বোম্বাইপুরী যেন পাশ্চাত্য 888sport live chatীর অঙ্কিত বিস্তীর্ণ পটের উপরে প্রাচ্য 888sport alternative linkের একখানি মায়াচিত্র। মালাবার শৈলশিখর হইতে তরুণ শ্যামিমা নামিয়া আসিয়া নিম্নভূমির নারিকেল তরুকুঞ্জে নিঃশব্দে মিশিয়া গিয়াছে এবং এই মোহময়ী প্রকৃতির নিবিড় কুঞ্জবনমধ্য হইতে সহস্র অভ্রংলিহ প্রাসাদশিখররাজি উঠিয়া বোম্বাইয়ের রবিকরদীপ্ত সমুদ্রবেলায় একটি চিত্রার্পিত রমণীয়তা অর্পণ করিয়াছে।’ অথচ এখানেও ভ্রামণিকের ঝোলা থেকে বেরিয়ে এসেছে বিজাতীয় ভাবনা। অর্থাৎ সেই বৈপরীত্য যা তাঁকে এবার বিপন্ন করেছে। বোম্বাইয়ের সঙ্গে তিনি তুলনা টেনেছেন কলকাতার। তিনি নিজেই প্রশ্ন করেছেন – ‘কলকাতার নগ্নশির দীনবেশ কৃষ্ণকান্তি জনপ্রবাহ হইতে আসিয়া বোম্বাইয়ের এই বিচিত্র বর্ণতরঙ্গের মধ্যে উ™£ান্ত চিত্ত প্রশ্ন করিয়া উঠে, এ সমস্ত সত্য, কি স্বপ্ন – কায়া, কি ছায়া – বাস্তব, কি চিত্রার্পিত মাত্র।’
অসমাপ্ত ‘লাহোরের বর্ণনা’তেও প্রকৃতি ও মানুষের এক দুর্লভ সহাবস্থান আমরা দেখি। সেখানে এসেছে স্বচ্ছ আকাশ, মৃদু উত্তাপ, উটের গাড়ি, মেঠায়ের দোকান, গেরুয়াবসন সাধু, পথের ধারে ছাতের নিচে ইঁদারা, অশ্বারোহী বর, রুটি পোলাও দধি ইত্যাদি কত কি। সব-ই খোলা চোখে দেখা। যেমন ‘খ-গিরি’ রচনায় তিনি অকপটে জানাচ্ছেন – ‘পথের পাথরকে সিন্দূর দিয়া যাহারা দুই বেলা পূজা করিয়া থাকে, তাহাদের সেই ভক্তি-উন্মুখ হৃদয় খ-গিরির আশ্চর্য্য গুম্ফাবলী দেখিয়া দেবপ্রভাব অনুভব করিবে না ত কি?’
বলেন্দ্রনাথের আত্মা 888sport live chatীসাধনার আত্মা। মগ্ন, ধ্যানী, সেই মন্ত্রই তিনি উচ্চারণ করেন যেখানে তাঁর প্রতিটি ক্রিয়া বাস্তব। এবং কেন্দ্রবিন্দুতে মানুষ। ‘দিল্লীর চিত্রশালিকা’, ‘নগ্নতার সৌন্দর্য’, ‘দেয়ালের ছবি’, ‘রঙ্ ও ভাব’, ‘রবি বর্ম্মা’ ইত্যাদি 888sport live এক আবর্তে ঘুরপাক না খেয়ে তা ছড়িয়ে পড়েছে সহজাত 888sport live chatবোধকে ধারণ করে। অবনীন্দ্রনাথের 888sport live chatচর্চার পাশাপাশি ঠাকুরবাড়ির অপর এক সদস্যের 888sport live chatশিক্ষা যে কিছুমাত্র কম ছিল না, তা বুঝতে পারি যখন তাঁর সাবলীল লেখায় 888sport live chatীর তন্ময়তা ফুটে ওঠে। ‘প্রকৃতিতে ভাববিহীন রঙ্ নাই – রঙ্ মাত্রেরই সঙ্গে এক একটা ভাবের বিশেষ রকম যোগ আছে। ঊষার রঙ্ েকেমন একরকম বিমল পবিত্রতার ভাব – সে ভাবে সংসারের কলঙ্ক কোথাও স্পর্শ করে নাই; সন্ধ্যার রঙে স্নেহমাখা শান্তিময় ভাব – প্রাণ যেন জুড়াইয়া যায়; বাসন্তী রঙে ভাব ঢলঢল টলমল – প্রাণ বদ্ধ থাকিতে পারে না, বাহির হইবার জন্য ব্যাকুল হইয়া উঠে।’ (‘রঙ্ ও ভাব’)
রবি বর্মাকে নিয়ে তিনি দ্বিতীয় একটি লেখা লিখতে শুরু করেছিলেন। যেটুকু লিখেছিলেন তাতেই তাঁর দৃষ্টির তীক্ষèতা, ভাবের গভীরতা বোঝা যায়। ‘রবি বর্ম্মার চিত্রকলার মূল উৎস আমাদের হৃদয়ে। হয় পৌরাণিক বিষয় – রাধাকৃষ্ণ, নলদময়ন্তী, শকুন্তলা, সুভদ্রার্জ্জুন, তপোভঙ্গ, নয় আধুনিক দাক্ষিণাত্যের গোপবালা, তন্বঙ্গী, ব্রাহ্মণ-বিধবা, শুচিস্নাতা পূজায়োজনরতা; সে কালে এ কালে আমাদের অন্তরের সহিত সকলগুলিরই একটি নিরবচ্ছিন্নতা আছে।’ কিন্তু তা বলে কি রবি বর্মার ছবিতে কোনোই ত্রুটি নেই। আছে। ‘বিরহিণী যেখানে করতলে কপোল বিন্যস্ত করিয়া একান্তমনে ধ্যান করিতেছেন, সেখানে তাঁহার পার্শ্বের আলিসাটি হয় ত নিতান্তই আধুনিক স্থাপত্যানুযায়ী ইতালীয় কলসসজ্জিত। সে কাল তাহাতে সহসা মনে আসে না।’
বলেন্দ্রনাথের চিন্তা-চেতনা কাকা রবীন্দ্রনাথের মতই বহু বিষয়মুখী ছিল। তাই লোক888sport free bet বৃদ্ধি ও আহার্য সংস্থান নিয়ে যেমন তিনি ভাবিত ছিলেন, পাশাপাশি মানব-শরীরে ‘ক্রিমিনাল্’ বৈশিষ্ট্য কেমন হতে পারে, তা তিনি আধুনিক গবেষকদের ভাবনাকে তুলে নিয়ে আমাদের জানাচ্ছেন, –
রসি সাহেব এক শত জন ক্রিমিনালের দেহ পরীক্ষা করিয়া যে ফল পাইয়াছেন, এখানে উল্লেখযোগ্য। ৮৮ জন ক্রিমিনালের দৈর্ঘ্য, দুই বাহু সম্পূর্ণ বিস্তার করিয়া যত দীর্ঘ হয়, তাহাপেক্ষা কম এবং ১১ জনের বেশি। ৩০ জনের দক্ষিণ চরণ বড় এবং ৫৮ জনের বাম চরণ। ১২ জনের দুই চরণ সমান। শতকরা ৪৩ জনের দক্ষিণ বাহু বাম বাহু অপেক্ষা দীর্ঘ এবং ৫৪ জনের বিপরীত।
সাধনায় (১২৯৮) প্রকাশিত এই 888sport liveে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ক্রিমিনাল তত্ত্বের প্রয়োগ দেখিয়েছিলেন লেখক। ‘এনাকিষ্টদিগের আকারপ্রকারে ফরাসী বিপ্লবের নিরপিশাচগণের সহিত বড় ঘনিষ্ঠ সাদৃশ্য। – রীতিমত ক্রিমিনাল্ ছাঁচ যাহাকে বলে।’ আবার ‘টি ও খান’ 888sport liveে বাংলা ভাষাতত্ত্বের একবচন ও বহুবচনের প্রয়োগ বিষয়ে অনুসন্ধানমূলক লেখা লিখেছিলেন তিনি। ‘সেলাই করা কাপড়ের – যাহাতে দর্জ্জির হস্ত আবশ্যক – নামের সঙ্গে টা বসে, খান বসে না। যেমন – কোটটা, একটা কোট, একটা চাপকান, একটা পিরান, পিরানটা ইত্যাদি।’
রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্য কাব্য-সাধনার প্রতিও একপ্রকার আগ্রহী করে তোলে বলেন্দ্রনাথকে। মাধবিকা ও শ্রাবণী নামে দুটি কাব্যগ্রন্থের রচয়িতাও তিনি। প্রথমটিতে পঁচিশটি ও দ্বিতীয়টিতে চব্বিশটি 888sport app download apk নিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থ দুটি তরুণ কবিমনের সম্পূর্ণ পরিচয় বলা যায়। রমণী-প্রেম তাঁর 888sport app download apkর মূল উপজীব্য। অধিকাংশ 888sport app download apkই সনেট। তবে ‘কলবেদনা’, ‘অগ্নিহোত্র’ দীর্ঘ 888sport app download apk। ভাষার গঠন সমাস-বদ্ধ (888sport liveেও), শব্দঝংকার ও অলংকারের প্রতি অনুরাগ 888sport app download apkকে কিছুটা ভারী করেছে। কিন্তু বিদ্যুচ্চমকের মতো কিছু পঙ্ক্তি মনকে নাড়া দিয়ে যায়।
সকলি তোমার, সখি, হেরি অভিনব,
দেখিতে এসেছি আজি চুলবাঁধা তব।
এক হস্তে কঙ্কতিকা, অপরে সম্বরি’
দীর্ঘ কৃষ্ণ কেশপাশ সারাবেলা ধরি’
বিনায়ে বিনায়ে বেণী কি করি’ কেমনে
নিবিড় কবরীবন্ধ বাঁধ আনমনে।
(‘চুলবাঁধা’)
বলেন্দ্রনাথের লেখার ভেতরেও একধরনের দ্বিমুখী শৈলী লক্ষ করা যায়। 888sport liveের ভাষা অলংকারবহুল, অথচ ‘পারিবারিক 888sport sign up bonus-লিপি-পুস্তক’ বা ‘পারিবারিক খাতা’য় তিনি মুখের ভাষা ব্যবহার করে তার ভেতরেই সততার সঙ্গে অনুভূতিগুলো জুড়ে দিয়েছেন। এই খাতাতেই ‘রবিকাকার 888sport app download apk’ শিরোনামে তাঁর লেখাটি রবীন্দ্র888sport live footballের প্রবেশক হয়ে ওঠে।
আজকাল রবিকাকার যে সকল 888sport app download apk বাহির হয় তাহার সহিত কিছুদিন পূর্ব্বের 888sport app download apk তুলনা করিয়া দেখিলে আমার যেন মনে হয় যে, দুই রবিকাকার মধ্যে মিল থাকিলেও যথেষ্ট তফাৎ হইয়াছে।… প্রথমতঃ রবিকাকার লিখিবার ঝঃুষব। প্রভাত সঙ্গীত, সন্ধ্যা সঙ্গীতের সহিত কড়ি ও কোমলে এমন একটা তফাৎ দেখা যায় যে, সহসা একই কবির রচনা বলিয়া ঠাহরাইয়া উঠা যায় না।… রবিকাকার আজকালকার লেখায় একটা সংযত উচ্ছ্বাস অনুভব হয়। মনে হয়, তাহার মধ্যে লেখকের একটা সমালোচনা আছে।… সমস্ত লেখা দেখিয়া আমার মনে হয়, কিছু দিন পূর্ব্বে রবিকাকা সমাজের ছিলেন, এখন সমাজও কতকটা রবিকাকার।
ঘ
‘888sport app download apk রচনায় ছন্দের আবশ্যকতা আছে; বলেন্দ্রের গদ্য রচনাতেও সেই ছন্দের ঝঙ্কার শুনিতে পাওয়া যায়; এই ছন্দ ভাবের সহিত মিলিয়া, মিশিয়া অপরূপ কলাকৌশলের উৎপত্তি করিয়াছে।’ বলেন্দ্র-গ্রন্থাবলীর ভূমিকায় তোলা হয়েছে আচার্য রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর ভাবনা। হয়তো তার একটা কারণ রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা। কারণ কবি নিজেই উল্লেখ করেছেন, ‘বলেন্দ্রনাথ কোন রচনায় প্রবৃত্ত হইবার পূর্ব্বে তাহার বিষয়প্রসঙ্গ লইয়া আমার সহিত আলোচনা করিতেন।’ স্বাভাবিক কারণেই রবীন্দ্রনাথও বলেন্দ্রনাথের ওপর পত্রিকা পরিচালনাই হোক বা ব্যবসা-সংক্রান্ত কাজ – অনেকটাই নির্ভর করতেন। এই নির্ভরতা 888sport live footballিক নির্ভরতার সমতুল্যই ছিল। কাকার মতই ভাইপোর ভেতরেও প্রবল প্রাণশক্তি। রবিকাকার সঙ্গে পত্রিকার অনেকখানি দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া ছাড়াও যৌথ ব্যবসায় (রবীন্দ্রনাথ-বলেন্দ্রনাথ-সুরেন্দ্রনাথ) যুক্ত হয়ে পাট, ভুসিমাল, আখমাড়াই ইত্যাদির কারবার শুরু করেন। আবার এই একই উৎসাহ নিয়ে ‘তত্ত্ববোধিনী পাঠশালার আদর্শে বলেন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন-সাধনাশ্রমে ছয় শ্রেণীর ব্রহ্মবিদ্যালয়ের পরিকল্পনা করিলেন।’ (বলেন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথ, শোভন সোম)। এই কাজের পশ্চাতে ছিল পিতামহের ধর্মবিশ্বাসকে আন্দোলনের চেহারা দেওয়া। তাই কাজের দায়িত্ব নিয়ে কখনো প্রার্থনা সমাজ, কখনো আর্যসমাজের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য তিনি ছুটে যেতেন দেশের নানা স্থানে। প্রফুল্লময়ী দেবী জানাচ্ছেন – ‘পঞ্জাবে আর্যসমাজের সহিত আমাদের ব্রাহ্মসমাজের মধ্যে যাহাতে মিলন স্থাপন হয় সেইজন্য তাহার প্রাণের প্রবল ইচ্ছা ছিল এবং তাহারই জন্য বলু আর্যসমাজে যাতায়াত করিতে থাকে, তাঁহারাও তাঁকে প্রাণের সহিত ভালোবাসিতেন।’ সারা দিন-রাত হিসাবপত্র নিয়ে ‘বলু এত ব্যস্ত থাকিত’ যে, নিয়ম করে স্নানাহারের সময় পেতেন না। এমন অনিয়মেই তাঁর শরীর দুর্বল হতে থাকে। স্ত্রীর (সাহানা দেবী) কাতর আর্তি, মায়ের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে হরদেব চট্টোপাধ্যায়ের দৌহিত্র মাত্র ঊনত্রিশ বছর বয়সে যেন কিছু স্বেচ্ছায় তাঁর জীবনের দীপ নিভিয়ে দিলেন।
আমার বলুকে আমি হারাইয়াও হারাই নাই, বরং তাহাকে আরও নিকট পাইয়াছি বলিয়া মনে হয়, এক সে আমার বহু হইয়া অহরহ আমার সম্মুখে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, আজ সে অনন্তরূপে অনন্ত বাহু মেলিয়া আমার বুকে ঝাঁপাইয়া পড়িয়াছে।
– 888sport sign up bonusকথা, প্রফুল্লময়ী দেবী
গ্রন্থঋণ
১. বলেন্দ্র-গ্রন্থাবলী, সম্পাদক ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সজনীকান্ত দাস।
২. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খ-, প্রধান সম্পাদক সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত।
৩. সঞ্চয়িতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
৪. পারিবারিক 888sport sign up bonus-লিপি-পুস্তক, সংকলন : প্রশান্তকুমার পাল।
৫. রবিজীবনী, প্রশান্তকুমার পাল।
৬. জীবনের ঝরাপাতা, সরলাদেবী চৌধুরানী।
৭. পিতৃ888sport sign up bonus, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
৮. ঠাকুরবাড়ীর লেখা, সম্পাদক অশোককুমার মিত্র।
৯. বলেন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথ, শোভন সোম।
১০. ঠাকুরবাড়ির কথা, হিরণ¥য় বন্দ্যোপাধ্যায়।
১১. ঠাকুরবাড়ীর দুই বধূ, মুনমুন গঙ্গোপাধ্যায়।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.