888sport app বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র না হয়েও আমি সে-বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ছাত্র। বিষয়টি শুনতেই কেমন খটকা লাগে! অথচ সত্যি, নন্দনতত্ত্ব, গবেষণা পদ্ধতি, গল্প লেখার কৌশল, সমালোচনা বিদ্যা, 888sport live footballতত্ত্ব-নাট্যতত্ত্ব নানা বিষয়ে নানা প্রতিষ্ঠানে আমি মনজুরুল ইসলাম স্যারের ক্লাস পেয়েছি। শিক্ষক হিসেবে মনজুরুল স্যার কেমন ছিলেন বা তাঁর শিক্ষাপদ্ধতি কেমন ছিল, তা তাঁর বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু আমি তাঁর শিক্ষকতার বৈচিত্র্য অনুভব করেছি। এ-বৈচিত্র্য ছিল বিষয়ে, পরিবেশে ও উপস্থাপনের কৌশলে। এই নিবন্ধে সংক্ষিপ্তাকারে আমি 888sport apk download apk latest versionর সঙ্গে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারকে 888sport app download for android করতে চাই। আরো 888sport app download for android করতে চাই স্যারের শিক্ষাদানের পদ্ধতি ও তার রূপরেখা। তিনি কেমন শিক্ষক ছিলেন এবং তাঁর কোন কোন গুণ আমাদের জন্য অনুসরণীয়।
আমি বাংলা 888sport live footballের ছাত্র হিসেবে অনার্সের শুরুর দিকেই গল্পকার হিসেবে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের নাম শুনেছি। কিন্তু তখনো তাঁর কোনো গল্প পাঠ করা হয়ে ওঠেনি। গল্পকার সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারকে প্রথম চিনেছিলাম থিয়েটার স্কুলে। কিন্তু গল্পকার হিসেবে নয়, নন্দনতাত্ত্বিক হিসেবে। আমি ১৯৯৮ সালে এক বছর মেয়াদি নাট্যশিক্ষাঙ্গন ‘থিয়েটার স্কুল’-এ ভর্তি হয়েছিলাম। তখন থিয়েটার স্কুলের অধ্যক্ষ ছিলেন কবীর চৌধুরী ও উপাধ্যক্ষ ছিলেন নাট্যজন আব্দুল্লাহ আল মামুন। সে-সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নাট্যকলাবিদ্যা না-থাকায় স্কুলটি খুব জনপ্রিয় ছিল। সে-বছর আমি চার শতাধিক ভর্তিচ্ছুর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ভর্তি হয়েছিলাম। প্রথম সেমিস্টার শেষ হলে দ্বিতীয় সেমিস্টারের শুরুতেই নন্দনতত্ত্বের ক্লাস। নোটিশ হলো, আগামীকাল নন্দনতত্ত্বের ক্লাস। ক্লাস নেবেন ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। নন্দনতত্ত্ব বিষয়টি সবার কাছেই একটু কঠিন। আমার মধ্যেও ভয় ছিল। তাছাড়া আমার এক চিত্র888sport live chatী ভগ্নিপতি প্রায়ই আমাকে ভয় দেখাতেন এই বলে যে, তাঁর অসংখ্য বন্ধুই নাকি যেদিন নন্দনতত্ত্বের ক্লাস করতেন, সেদিন তাদের শরীরে জ¦র উঠতো। তবে আমার ভগ্নিপতি একবার কী একটা কারণে বাগেশ^রী 888sport live chat 888sport liveাবলীর লাবণ্য অধ্যায়টি আমাকে বুঝিয়েছিলেন। আমি খুব ভালো বুঝেছিলাম। সময় পেলেই মাঝে মাঝে লাবণ্য অধ্যায়টি পড়তাম।
১৯৯৮ সালের জুলাই মাসের কোনো এক শুক্রবার। সকাল ৯টায় ক্লাস শুরু হবে। লেট হলে ক্লাসে ঢুকতে দেওয়া হয় না বলে সাড়ে ৮টার মধ্যেই ক্লাসে বসে আছি। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। এমন সময় স্কুলের সেই সময়ের তত্ত্বাবধায়ক খুরশীদভাই ক্লাসে ঢুকলেন। সঙ্গে আরেকজন মধ্যবয়সী মানুষ। বেশ পরিপাটি। চোখে চশমা। সিøম। বয়স বোঝা যায় না। গোঁফ আছে। কালো চুলের মাঝে হালকা কিছু সাদা পাকও আছে। হাতে অনেকগুলো বই। আমাদের বুঝতে আর বাকি রইল না যে, বই-হাতে মানুষটিই আমাদের আজকের শিক্ষক। খুরশীদভাই মনজুরুল ইসলাম স্যারকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। তিনি 888sport appsের নামকরা 888sport live chatতাত্ত্বিক, 888sport app বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, নন্দনতত্ত্বের ওপর তাঁর লেখা বই আছে ইত্যাদি। থিয়েটার স্কুলের প্রত্যেক শিক্ষকের ক্লাসই আমার ভালো লাগত। কারণ তাঁদের বক্তব্য-প্রকাশ দেখে মনে হতো, তাঁরা প্রত্যেকেই সেই রক্তমাংসে গড়া মানুষ, যা তিনি পড়াচ্ছেন। নিজ বিষয়ের প্রতি তাঁদের সাধনা আমাকে বিমোহিত করত। প্রচলিত শিক্ষা-পেশা বা চাকরি করার মতো অগভীরতা তাঁদের মধ্যে ছিল না। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারকে দেখেও 888sport live chatসাধক বলে মনে হলো।
সৈয়দ মনজুরুল স্যার কথা বলা শুরু করলেন। তিনি সময়ের মধ্যেই আমাদের কল্পনার এক নতুন জগতে নিয়ে গেলেন। অপূর্ব তাঁর বাচনভঙ্গি, অপূর্ব তাঁর কল্পনাশক্তি। স্বপ্নময়, যেন সবাইকে বেঁধে ফেলেন। নন্দনতত্ত্বের মতো ভাববাদী বোধের কী যুক্তিনিষ্ঠ এবং অপূর্ব প্রাঞ্জলতা। বিষয়ের বিশ্বাস, দৃঢ়তা, তত্ত্ব-তথ্য ও কল্পনায় আমাদের নিয়ে গেলেন এক সৌন্দর্যবিদ্যার সংজ্ঞা-রূপ-রীতি ও ব্যবহার কৌশলের জগতে। 888sport live chatের নানা উপকরণ, উদাহরণ দিয়ে বোঝালেন সুন্দর কী, অসুন্দর কেন বলি, কেন ভালো লাগে – এই অভিজ্ঞতাও একধরনের বোধজাত। বিশ্ব888sport live chat ও 888sport appsের 888sport live chatকলার নানা উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করে তাঁর বক্তব্যকে জোরালো করলেন। সৌন্দর্যবিদ্যা যে আলোচনার বড় একটি ক্ষেত্র, তা তাঁর টেবিলের ওপর রাখা মোটা মোটা বই উঁচু করে তুলে ধরে বোঝালেন। তিন ঘণ্টা ক্লাস চলল। পিনপতন নীরবতায় আমরা তাঁর ক্লাস উপভোগ করলাম। ক্লাসের শেষের দিকে আমাদের শ্লোক মুখস্থ করালেন যা সুখের তা-ই সুন্দর … যা কল্যাণকর তা-ই সুন্দর ইত্যাদি ইত্যাদি।
ব্যক্তিগত জীবনে আমি এখন শিক্ষক হয়ে বুঝি নন্দনতত্ত্বের মতো জটিল ও দুর্বোধ্য বিষয়টি এই উঠতি বয়সী চঞ্চল ছেলেমেয়েদের বোঝানো বা শেখানো কত কঠিন। কিন্তু সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তা, বিষয়ের সুস্পষ্টতা, কল্পনাশক্তি, 888sport live chatের প্রতি অন্তঃপ্রাণ সংবেদনশীল হৃদয় ও বাগ্মিতায় তা সম্ভব হয়েছে। সেদিনই আমরা মনজুরুল স্যারের লেখা নন্দনতত্ত্ব বইটি কিনে ফেললাম। নন্দনতত্ত্বের ওপর সম্ভবত চার-পাঁচটা ক্লাস নিয়েছিলেন। তাঁর 888sport live chatের প্রতি অসীম প্রেম ও শেখানোর প্রতি আত্মনিবেদনই আমাদের চিন্তাজগৎকে আলোড়িত করে তুলল। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার কথা বলার সময় দুই ঠোঁটের পাশে একটু হালকা চাপ দিতেন। ফলে স্বরটা হালকা বিস্তৃত হয়ে যেত। প্রথমদিকে সেটা আমাদের খুব বিরক্ত লাগতো। কিন্তু পরে দেখলাম,
যে-শব্দগুলোতে তিনি জোর দিচ্ছেন, সেগুলোই আমার মনোযোগের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। তাঁর শিক্ষকতায় কোনো ভণ্ডামি ছিল না। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো প্রতারণাও ছিল না। যা বিশ্বাস করতেন, তাই যেন অকপটে বলে যেতেন। ভাষা, শব্দ, চিন্তা, কল্পনা একযোগে খেলা করে। অনাবশ্যক কোনো কথা বলতে কখনো শুনিনি। এভাবেই আমাদের নন্দনতত্ত্বের ক্লাসগুলো নিয়েছিলেন। ফাইনাল প্রোডাকশনের কারণে সময় দীর্ঘায়িত হওয়ায় প্রায় দেড় বছর পর থিয়েটার স্কুলের শিক্ষাজীবন শেষ করলাম। এরপর স্যার স্কুলে নানা কারণে এসেছেন, সালাম দিয়েছি, কুশলাদি জিজ্ঞেস করেছি।
২০০৮ সালে 888sport app বিশ^বিদ্যালয়ের উচ্চতর মানববিদ্যা গবেষণা কেন্দ্রের আয়োজনে গবেষণা কোর্সে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে যোগদান করি। তখন আমি 888sport appর নটর ডেম কলেজে বাংলা বিষয়ে শিক্ষকতা করছিলাম। সেই সময়ের প্রিন্সিপাল ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা আমাকে সেখানে পাঠিয়েছিলেন। যদিও আমি অনেক আগে থেকেই গবেষণা করতাম। 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের সে-গবেষণাবিদ্যা কোর্সের ক্লাসগুলো ছিল সকাল-সন্ধ্যা, অর্থাৎ সারাদিনের। সেখানে মনজুরুল ইসলাম স্যারকে পেয়ে গেলাম গবেষণা পদ্ধতির শিক্ষক হিসেবে। তিনি প্রথম যখন ক্লাসে এলেন, তখন আমি বেশ আনন্দ অনুভব করছিলাম। তাঁর আলোচনার বিষয় ছিল গবেষণায় তথ্যসূত্র ব্যবহারের পদ্ধতি। কিন্তু মনজুর স্যারের নিজেকে উজাড় করে দিয়ে শেখানোর যে-একাগ্রতা, তা-ই যেন স্পষ্ট হয়ে উঠল। তথ্যসূত্র বা সোর্সকে ছাড়িয়ে আমাকে নিয়ে গেলেন সত্য খোঁজার পরীক্ষামূলক বাস্তবতায়। বারবার মনে হচ্ছিল, মনজুর স্যার একজন সত্যদ্রষ্টা দার্শনিক। সত্য খোঁজার পথ ও পদ্ধতি কত বিচিত্র হতে পারে, তা যেন দৃশ্যমান করে তুললেন আমাদের সামনে। শুধু সোর্স নির্ধারণ বা ব্যবহার কৌশল নয়, একজন গবেষকের দায়িত্ব-কর্তব্য থেকে শুরু করে গবেষণা পদ্ধতি নির্ধারণ, ডেটা কালেকশন থেকে সিলেকশন পদ্ধতি, এমনকি গবেষণা 888sport live লেখার ক্ষেত্রেও কী করণীয় তা হাতে-কলমে শেখালেন। এক সপ্তাহের অধিক সময়ের দিবারাত্রির সে-কোর্সে খুব সম্ভবত তিনটি ক্লাস তিনি নিয়েছিলেন। এখানে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারকে দেখলাম নতুন রূপে, নতুন এক সত্যদ্রষ্টাকে। নন্দনতত্ত্ব যে তিনি ভালো জানেন তা এখানে মনেই হলো না। বরং থিয়েটার স্কুলের আবেগমুখী বক্তব্যের স্থলে এখানে যেন তাঁর পাণ্ডিত্য বিভা ছড়াচ্ছিল।
২০১৬ সাল পর্যন্ত আমি যেখানেই যেতাম সেখানেই সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারকে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছি। যেমন – বাংলা একাডেমির তরুণ লেখক প্রকল্প, আইটিআইয়ের ওয়ার্কশপ কিংবা 888sport live chatকলা একাডেমির ওয়ার্কশপ। 888sport app থিয়েটার ও গ্রাম থিয়েটারের আয়োজনে অসংখ্য সেমিনারে তাঁর বক্তব্য শোনার সুযোগ হয়েছে। নাট্যতত্ত্বের ক্লাসে দেখেছি ক্লাসিক নাটকের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ। নাট্য-সমালোচনার কোর্সে দেখেছি 888sport live chatতত্ত্বে তাঁর ব্যুৎপত্তি। বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপকগণ নাট্য-সমালোচনা বলতে নাট্যবিশ্লেষণ বা অ্যানালাইসিসকে বলে থাকেন। কিন্তু সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার মনে করতেন – বোধ ও উপকরণের সুসমন্বয়। কিন্তু আমার মনে হয় আরো ভিন্ন কিছু – নাট্য-সমালোচনার মূল দৃষ্টি হওয়া উচিত নাটকের ইমপ্যাক্ট। নাটকটির উপকরণগত ভারসাম্য আছে কি না, কতটা ভালোত্বের অনুভব ও কতটা অর্থ বয়ে নিয়ে বেড়ায় এবং নাটকের কার্যকরী ক্ষমতা কতটুকু।
সেলিম আল দীনের সেমিনারগুলোতে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের মধ্যে দেখেছি বাংলার ঐতিহ্যের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা। কিন্তু ইউরোপীয় মডার্নিজমকে তিনি অস্বীকার করতেন না। গল্প লেখার কোর্সে দেখেছি বিশ্ব888sport live footballের পাঠ তৈরিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাকুলতা তৈরির প্রচেষ্টা। তিনি ছিলেন শিক্ষার্থীদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল।
২০১৫-১৬ সালে আমি তাঁকে পেয়েছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে আমার এমফিল গবেষণার পরীক্ষক হিসেবে। সেখানেও তাঁর কাছ থেকে নানা কিছু শিখেছি। সব থেকে বেশি শিখেছি 888sport live লেখার কলাকৌশলের সঙ্গে 888sport live লেখার গুরুত্ব। তিনি আমার এত পরিচিত হওয়া সত্ত্বেও ভাইভাতে আমাকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেছেন। কীভাবে গবেষণাটি পদ্ধতিগতভাবে এগিয়েছি তা বুঝতে চেয়েছেন। এত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রশ্ন এমফিল/ পিএইচ.ডি স্তরে কেউ করে কি না তা আমার জানা নেই। আমার গবেষণার পরিধি নিয়েও তাঁর প্রশ্ন ছিল। আমি স্পষ্ট জানিয়েছি, গবেষণার বিস্তৃতি রোধ বা তা কমাতে সেলিম আল দীনের উত্তর-উপনিবেশ ভাবনাটা নিয়ে কাজ করেছি। প্রচলিত 888sport live footballের তাত্ত্বিক ধারাকে আপাতত বিশ্লেষণে রাখিনি। এমফিলের সময়ই উপলব্ধি করেছিলাম সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের ফিলোসফিক্যাল ভিউ। গ্রিক ফিলোসফি থেকে কান্ট, অধুনা ফাঞ্জ ফানো, ভাবা কিংবা এডওয়ার্ড সাঈদ সম্পর্কে ব্যুৎপত্তি দেখে বিস্মিত হয়েছি। তিনি পোস্টমডার্ন দার্শনিকও। যা হোক, এত মানসিক চাপে রেখেও ভাইভা শেষে আবার আমার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন। এমনকি পাশের রুম থেকে আমাকে ডেকে সুসংবাদ হিসেবে ডিগ্রিপ্রাপ্তির আগাম অভিনন্দন জানালেন। সে-ভাইভার সময় আমি নিজেই ক্ষোভ নিয়ে বলেছিলাম, আল্লাহ আপনার সঙ্গে আমার পরিচয়ই ঠিক করে রেখেছে ছাত্র-শিক্ষক হিসেবে। আমার বিরক্তি দেখে মনজুরুল ইসলাম স্যার খুব মজা পেয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম এই কারণে যে, আমি যেখানেই যেতাম সেখানেই দেখতাম তিনি আমার শিক্ষক। প্রতিটি বিষয়ই তিনি আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতেন। এত বিষয়বৈচিত্র্যের মধ্যেও তাঁকে ক্লাসে কখনো একঘেয়ে বা বিরক্তিকর লাগেনি। বরং প্রতিটি বিষয়েই তিনি ছিলেন আলাদা আলাদা – স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে বৈচিত্র্যময়।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারকে সর্বশেষ পেয়েছি কালি ও কলম পত্রিকায়। বাংলা ভাষার শীর্ষস্থানীয় 888sport live football পত্রিকা কালি ও কলম-এ মঞ্চনাটক নিয়ে আমি দীর্ঘদিন ধরে 888sport live লিখি। প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদক আবুল হাসনাতের সানুগ্রহে তা শুরু হয়েছিল। আবুল হাসনাত গত হয়েছেন কয়েক বছর হলো। পত্রিকাটির সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি শ্রদ্ধেয় আনিসুজ্জামান স্যারও প্রয়াত। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার সেখানে এলেন সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হয়ে। সেটাও যেন অনেকাংশে শিক্ষকই। কয়েক মাস আগে বেঙ্গলের এক অনুষ্ঠান শেষে চা খেতে খেতে আমি মনজুরুল ইসলাম স্যারের কাছে গেলে তিনি আমাকে বললেন, ‘শুধু নাটক নিয়ে 888sport appsে বোধহয় তুমিই সবচেয়ে বেশি 888sport live লিখেছ।’ ভালো অর্থে নাকি মন্দ অর্থে বললেন তা বুঝলাম না। পরে অবশ্য বুঝেছি উক্তিটি সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার ইতিবাচক অর্থেই বলেছিলেন। এটাই ছিল স্যারের সঙ্গে আমার শেষ কথা।
এত বাঁকে, এত ক্লাসে এতভাবে দেখা হলেও আমি ব্যক্তিগতভাবে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের সঙ্গে কখনো দেখা করতে যাইনি। ব্যক্তিগত গভীর সম্পর্ক স্থাপনেও কেন জানি আগ্রহ কাজ করেনি। স্যারকে দেখে বারবার আমার মনে হয়েছে, তিনি তা পছন্দও করেন না। অথচ কোনো কোনো শিক্ষকের অল্প ক্লাস করেও তাঁর বাসায় রাতের খাবারও খেয়ে এসেছি – এমনটাও হয়েছে। কিন্তু সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের ব্যক্তিত্বই ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপনে নিরুৎসাহিত করত কি না, জানি না। স্যারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল অনুসন্ধিৎসু ও জ্ঞানভাণ্ডারের সম্পর্ক। আনুষ্ঠানিক কৃত্রিম শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের বাহ্যিক আচরণগত সম্পর্ক নয়। 888sport live chatকলার সেমিনারগুলোতে তাঁকে প্রায়ই কৌতুক করতে দেখতাম। কিন্তু তাঁর কৌতুকগুলো কখনো অশ্লীল বলে মনে হতো না। উল্টো একটা নান্দনিকবোধে ছেয়ে যেত হৃদয়। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার শিক্ষকতার একজন মহান আদর্শ।
একজন শিক্ষক হিসেবে তাঁর মধ্যে দেখেছি জ্ঞান-চিন্তা, বিশ্বাস ও প্রকাশের সত্যনিষ্ঠতা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কখনো প্রতারণা করেন বলে মনে হয়নি। অসীম ব্যক্তিত্বের অধিকারী মানুষ হিসেবেই তাঁকে দেখেছি। তিনি ছিলেন সময়ের প্রতি নিষ্ঠাবান। কোনো দিন ক্লাসে লেট করতে দেখিনি। অনেক কিছুর সমন্বয়ে তিনি পরিপূর্ণ একজন শিক্ষক।
সৈয়দ মনজুুরুল ইসলাম স্যার ছিলেন আমার প্রিয় শিক্ষকদের একজন। আমি মনে করি, তিনিই প্রকৃত শিক্ষক, যে শিক্ষকের জ্ঞানানুভূতি দ্বারা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই শিক্ষার্থীদের আত্মার উদ্বোধন ঘটে। তিনি ছিলেন তেমনই একজন শিক্ষক। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার গত হয়েছেন কিছুদিন হলো। 888sport appsের 888sport live chat-শিক্ষাঙ্গনে অপরিসীম ক্ষতি হলো। সবশেষে বলবো, স্যার আপনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন। আপনার আদর্শ নিয়ে যেন 888sport appsের হাজারো শিক্ষক তৈরি হতে পারে – এ-প্রত্যাশা করি।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.