আমার একলা পথের সাথি
পাপড়ি রহমান – বেঙ্গল পাবলিকেশন্স ষ 888sport app, ২০২৩ – ৫০০ টাকা
ভুলভুলাইয়ার কথা আমরা কমবেশি অনেকেই জানি। যেখানে একবার প্রবেশ করলে বেরিয়ে আসা দুঃসাধ্য। 888sport live chat-888sport live footballের পথ দুর্গম, পিচ্ছিল। অন্ধকার ও কুহকময়। এখানে গন্তব্য অনিঃশেষ। তাই এ-জগৎটাকে ভুলভুলাইয়া বললে কোনোভাবেই অত্যুক্তি হবে না।
২০২৩ সালের বইমেলায় প্রকাশিত কথা888sport live footballিক, গবেষক ও সম্পাদক পাপড়ি রহমানের আমার একলা পথের সাথি বইটির শুরুতেই তিনি বলেছেন, ‘888sport live football করতে আসা মানে অন্ধকারে ঝাঁপ দেওয়া। এমন-তেমন অন্ধকার নয়,
ঘোরঘুট্টি-নিকষকালো-অন্ধকার।’ তো এই ঘোরঘুট্টি অন্ধকারেই ঝাঁপ দিতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন। লেখক তাঁকে হতেই হবে। একেবারে ধনুক ভাঙা পণ যাকে বলে। ভুলভুলাইয়ার মন-ভুলানো পথে তিনি যাত্রা করলেন মেঘেদের উড়ে আসার শব্দ শুনবেন বলে। চিরঅধরাকে করায়ত্ত করার আকাক্সক্ষায় যাকে বলে কোমর বেঁধে নামা, তেমনই তিনি চোখ বুজে ঝাঁপ দিলেন। পা রাখলেন বেহিসেবি এক চোরাবালিতে।
তো তার খেসারত কি দিতে হবে না তাঁকে? জীবন তো এক ঘূর্ণি ওড়ানো সময়ের পারাবার। এখানে লাল নীল হলুদ চিত্ররা বাঘের নখর ছড়িয়ে দিয়ে বলে, যাও পথিক কোনদিকে যাবে? যাও। ওড়াও তোমার লক্ষ্যঘুড়ি। উড়ুক। শক্ত করে ধরো লাটাই। দেখি কতদূর ছড়ায় তোমার হরিৎ আকুতি।
পাপড়ি রহমানও তেমন করে ওড়ালেন তাঁর ঘুড়ি। চৈত্রের বাতাসে হু-হু করে উড়লেও সে বাতাস তো থমকে যাবে, বজ্রের গমকে আতঙ্কিত করবে চারধার – এটাই স্বাভাবিক। আর লেখক জীবনের তরী যে আরো বেশি ঝড়ের লক্ষ্যবস্তু হবে সে-কথা বলা বাহুল্য। এই থমকে গমকে কীভাবে পাপড়ি রহমান তাঁর পথ করে নিলেন, শক্ত করে লাটাই হাতে কীভাবে রাখলেন নিয়ন্ত্রণ সাধের ঘুড়ির, মানে তাঁর 888sport live footballযাত্রার, সেসবরই অনমনীয় ও আসক্তিময় আলেখ্য আমার একলা পথের সাথি।
এটি পড়তে পড়তে মনে হলো ‘কুহেলি ভেদিয়া জড়তা টুটিয়া এসেছে বসন্তরাজ’। লেখক তাঁর অঙ্গীকারে দৃঢ় থেকে কীভাবে গুটি গুটি পায়ে 888sport live footballে বসন্তের মৃদু বাতাসকে আরো মধুময় ও মায়াময় করে তুলেছেন বইটি হয়ে উঠেছে তাঁর সেসব অভিজ্ঞতারই বহু বর্ণময় এক আলোক-উদ্ভাস।
পৃথিবীর কোনো পথই কণ্টকমুক্ত নয়। একরৈখিক তো নয়ই। 888sport live footballের জগৎ যেন আরো জটিল; আরো দহনের রাঙা তেজ এর দিকে দিকে। যেন ‘এক সে পদ্ম তার চৌষট্টি পাখনা’। অন্তত বইটি সে-ভাবনারই এক চক্রব্যূহ যেন।
আমাদের এ-সমাজ পিতৃতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদ দ্বারা প্রবলভাবে আক্রান্ত। 888sport live footballজগৎ আরো বেশি। 888sport live chat-888sport live footballের জগতে যেন পুরুষের একচেটিয়া অধিকার কিংবা রাজত্ব। এখনো একে একান্তই তাঁরা নিজের জগৎ বলে মনে করেন। 888sport promo code যেন এখানে এক অনুপ্রবেশকারী মাত্র। লিঙ্গ-রাজনীতির তীব্র শিকার হয়ে এ-জগতে পা ফেলে অনেক 888sport promo codeই পিছু হটেন। কেউ হারিয়ে যান ভুলভুলাইয়ায়। আবার কেউ কেউ শিরদাঁড়া সোজা রেখে সকল অসমতা আর অপমান মোকাবিলা করেন প্রবল ব্যক্তিত্বের সঙ্গে। তাঁরা শেষ পর্যন্ত জিতেও যান।
পাপড়ি রহমান সে-দলেরই একজন।
আমার একলা পথের সাথি পড়তে পড়তে মনে হলো, এখানে তিনি জল আর পাথরের মিশ্রণ ঘটিয়েছেন বেশ জোরালো কৌশলে। ওপরে টলটলে জল। নিচে পাথরকুচি। পাথরের গায়ে নানাবিধ পিচ্ছিল শৈবাল। এসব পাথর কি কিংবা কারা? তারা হলো সেই যাদের দ্বারা পাপড়ি রহমান ঈর্ষা, বিদ্বেষ, তিরস্কার, অসহযোগিতা, অপ্রাপ্তি ও মানসিক পীড়নের শিকার হয়েছেন। পাশাপাশি মানবিক উদারতায় তাদেরও চিত্রিত করেছেন যারা তাঁর পথকে করেছেন মসৃণ, কণ্টকমুক্ত যেন তাঁরা স্বচ্ছ জলের মৃদু চকচকে ঢেউ।
তাঁর এ-বইটিকে নিছক আত্মজীবনী না বলে বলা যায় এ তাঁর লেখক হয়ে ওঠার বহুমুখী এক গল্পবিশেষ। কেবল লেখালেখি সংক্রান্ত হওয়ায় এর সূত্র ধরেই নানা অলিগলির গোপন ও অন্ধকার দিক যেমন, তেমনি বিভাময় হরিৎ উদ্ভাস বইটিকে বিচিত্রতর করেছে। 888sport live footballজগতে তিনি যে অনাকাঙ্ক্ষিত স্বরূপ অবলোকন করেছেন এবং তা মোকাবিলায় সচেতন ও সক্রিয় থেকেছেন তার খোলামেলা চিত্রণ এই বই। এই খোলামেলা চিত্রণ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের বেশ একটা পরিসরও অবশ্য তিনি তৈরি করেছেন। সচেতন কিংবা অসচেতন যেভাবেই হোক।
বইটির ব্যাপ্তি মোটামুটি তাঁর উত্থানকাল নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু করে ২০১০ সাল পর্যন্ত, যা তাঁর 888sport live footballে উত্থান ও বিকাশ কাল। 888sport live football অঙ্গনের নানা খুঁটিনাটি দিকসহ একজন নবীনকে কীভাবে তার প্রতিকূল সময় মোকাবিলা করতে হয়, একজন মানুষ বিশেষত একজন 888sport promo codeকে যে বাড়তি সংকটে জড়িয়ে জড়িয়ে এগোতে হয় তা তিনি অনেকটা একমাত্রিক অভিজ্ঞতার সারণি তৈরি করে আগ্রহী পাঠকের দৃষ্টিগোচর করেছেন।
মানুষ মাত্রেই সংগ্রামে লিপ্ত। এ-সমাজে একজন মানুষ বিশেষত একজন 888sport promo code লেখকের জন্যে এ-সংগ্রাম আরো সীমাহীন। দিগন্তহীন দহনের উল্লাস যেন অতিরেক হয়ে ধরা দিয়ে নাড়িয়ে দেয় তাঁর মর্মমূল। লেখককে তাই বলতে শুনি, ‘বহুকাল পোড় খেয়ে খেয়ে অঙ্গার-হয়ে-যাওয়ার পরে আমি জেনেছি – বাস্তব হলো নির্জলা সেই সোমরস, যা বুক থেকে জ্বলতে জ্বলতে অন্ত্রে নেমে যায়।’ (পৃ ১১২)
তাই তাঁর পুরো বইজুড়ে মানসিক সংবেদনা খেলা করে। আবেগের অবিমিশ্রতায় আগুন জলের খেলা চলতে চলতে পাঠকও সংবেদনশীল হয়ে ওঠেন। দেখেন তাঁর নাকানি-চুবানি অবস্থা। কি ঘরে কি বাইরে।
‘মধ্যযুগীয় বর্বর কায়দায় আমার ওপর চলতে লাগল অকথ্য নির্যাতন। শুধু আমার পার্টনার নয়, পার্টনারের মা, ভাই, ভাবিসহ সমস্ত পরিবার যুক্ত হলো সেসব নির্যাতনে। …
বোবা-চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম। দেখলাম মানুষের আসল রূপ! দেখলাম তাদের বিকৃত উল্লাস।’
(পৃ ১১৩)
পিতৃতন্ত্রের লক্ষণরেখা 888sport promo codeর চারপাশ ঘিরে যে বৃত্ত তৈরি করে তা ভাঙতে গেলেই এমন মারমুখো হয়ে ওঠে কখনো পরিবার, কখনো সমাজ। কারণ সমাজের চোখে পুরুষ কর্তা, 888sport promo code দ্বিতীয় শ্রেণির মানুষ মাত্র। এছাড়া 888sport promo codeর মননশক্তি ও মেধা নেই – প্রাচীন এ-ধারণায় আজ এ-পর্যন্ত এসে এতে কতটুকু পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে? যেটুকু লেগেছে তাতেও পাহড়ের নিচ থেকে সিসিফাসের পাথর ঠেলে চূড়ায় ওঠানোর আত্মপ্রত্যয়ী লেখককেও বারবার ভেঙে পড়তে হয়, পাড়ি দিতে হয় ভয়াবহ ক্রান্তিকাল। তার মাথার ওপর থেকেও বনস্পতির ঘন ছায়ারা দূরে সরে যেতে থাকে ক্রমাগত।
‘কত যে বিপদ আমার! কত যে লড়াই আর রক্তক্ষরণ! কত বেদনা-অভিমান! নিত্যব্যবহার্য অলংকারের মতো গায়ে জড়িয়ে রাখা বহুযুগের প্রণয় দূর চলে গেলে নিজের দিকে তাকিয়ে বিপন্ন বোধ করি। পড়ে থাকা দেহমনের ভগ্নাংশ দেখে নিজেই কেমন আঁতকে উঠি। অতঃপর হৃদয় গহিনের অতল ক্ষতকে ঢেকে রাখবার জন্য কতই না করি ছল।’ (পৃ ১২৮)
পাপড়ি রহমান কবি হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু 888sport app download apk তাঁর কাছে গহিন-বনভূমিতে মাটির-খোঁড়লে লুকিয়ে থাকা শশকের মতো হয়ে গেল। তিনি 888sport app download apk লেখা ছেড়ে দিলেন ঠিকই। কিন্তু কাব্যবোধ হারাননি। তারই দেখা মেলে বইটির ছত্রে ছত্রে। ভাষার সাংগীতিকতায় 888sport app download apkর ঝলক যেন উঁকি মারে শব্দের বিন্যাস আর পরিমাপে। আবেগ রয়েছে এখানে, আতিশয্য নেই।
এ-আবেগ মননশাসিত আবেগ। এতে রয়েছে মাধুর্যময় মায়ার টংকার। ফলে পাঠক আকৃষ্ট হবেন। নির্জলা নিরাভরণ কথাগুলি যখন 888sport live chat-প্রকরণে স্বাদু হয়ে ওঠে, পাঠক তখন এর অন্তঃসলিলা সুধায় ডুব দিতে পারবেন বলেই ধরে নেওয়া যায়।
লেখকজীবনে পাপড়ি রহমান যাদের দ্বারা মানসিকভাবে অত্যাচারিত কিংবা নিগৃহীত হয়েছেন তাদের কথা যেমন, তেমনি তাঁর বিকাশে যাদের অকৃত্রিম অবদান রয়েছে সকলের কথাই তুলে আনায় তিনি সমান মনোযোগ ঢেলেছেন।
পক্ষ-প্রতিপক্ষময় বর্ণনার ধারালো চাবুকে অনেক তিক্ত বিষয়কেও তিনি বেশ খোলামেলাভাবে উপস্থাপন করেছেন। কোনো রাখঢাকের ধার ধারেননি। দ্বান্দ্বিক সম্পর্কগুলির বর্ণনায় তিনি এতটাই অকপট ছিলেন যে পড়তে পড়তে কখনো কখনো শিউরে উঠতে হয়েছে। সমালোচিত হওয়ার ঝুঁকি নিয়েও সাহসের সঙ্গে পাপড়ি রহমান সে-কাজটুকু করেছেন নির্দ্বিধায়।
রাসসুন্দরী দেবী প্রথম আত্মজীবনী লেখেন বলেই আমরা জানি। তিনি ১৮৭৬ সালে তাঁর ৬০ বছর বয়স থেকে ৮৮ বছর পর্যন্ত আমার জীবন নামক বইয়ের আত্মকথনে সময় ও সমাজের চিত্র তুলে ধরতে পেরেছিলেন বলে আমরা আজ অনেক কিছু জানতে পারছি। এরপর একে একে সরলাদেবী চৌধুরাণী, জ্ঞানদানন্দিনী দেবী, বিনোদনী সাহা, লীলা মজুমদার, মৈত্রেয়ী দেবী, আশাপূর্ণা দেবী, ইন্দিরা দেবী, বেগম রোকেয়া, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী থেকে শুরু করে হালের তসলিমা নাসরিনের নানা খণ্ডের আত্মজীবনী থেকে আমরা নানা পর্যায়ে তাঁদের ব্যক্তিক জীবন, স্ব-সময় ও সমাজ এবং মূলত 888sport promo codeভুবনকে 888sport promo codeর দেখায় চিহ্নিত করতে পারি।
পাপড়ি তাঁর এই স্ব-কথনে সমাজ কিংবা রাজনীতির গোলকধাঁধার অমসৃণ পথের দিশা আমাদের ঠিক দেননি। হয়তো তিনি দিতে চানওনি। তবে একান্ত ব্যক্তিক কথনে তিনি তাঁর সময়ের 888sport live footballজগতের চালচিত্রটুকু অনবদ্য মুনশিয়ানায় তুলে ধরতে পেরেছেন। এটুকু নিঃসংশয়ে বলা যায়।
আর তিনি পেরেছেন বলেই আমরা স্পর্শযোগ্য নব্য ও বাস্তব এক আরশি পেয়ে যাই। যার মাঝে সময়ের প্রতিবিম্ব দেখা ছাড়াও একে ছুঁয়ে-ছেনে পরখ করতে পারি, দেখতে পারি কোন মানবিক মনস্তত্ত্বে 888sport live chatের দ্বৈরথ অবগুণ্ঠনের সীমা ডিঙিয়ে কেবলই দিগন্ত পাড়ি দিতে চায়। আপন অভিজ্ঞতার নিষ্করুণ সারাৎসারই কেবল এটি নয়, জগতের অন্তর্লোকে নিয়ত ভেসে চলা মানবীয় প্রেম, অনন্য সহমর্মিতার আলোকদিশাও বইটির পরতে পরতে ছড়িয়ে থেকে ভনিতাহীন এক নির্ভার পৃথিবীর রূপের উন্মোচন ঘটায় যার দেখা পাঠক পাবেন কেবল ঘনিষ্ঠ ও বিশ্লেষণী পাঠের মধ্য দিয়েই।
লেখকের এ-উন্মোচন ও সময়কে খুঁড়ে তোলার আগ্রাসী প্রচেষ্টা এখানেই থামার নয়। আমরাও তা চাই না কোনোভাবেই। লেখককে বলতে শুনি, ‘কিছু 888sport sign up bonusর-নুড়ি জমা রাখা গেল এই পথ-888sport slot gameে। বাদবাকী অগণন নুড়ি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়ে গেল এই ধরার বুকে। যদি আয়ু পাই, সেসব হয়তো বলা যাবে অন্য কোথাও, অন্য কোনখানে! … অজস্র গুপ্ত ও প্রকাশ্য শত্রুর ভিড়ে, গুপ্ত ও প্রকাশ্য স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীর 888sport free betও তো নেহাত কম নয়। শত্রু হোক আর মিত্র হোক, তাদের সকলের কথাই যে আমি বলে যেতে চাই।’ (পৃ ১৮৫)
ডুবন্ত সূর্যের কাঁধে মাথা রেখে আমরা, পাঠকেরাও আবারো অপেক্ষমাণ। কুয়াশার আড়ালে লুকিয়ে থাকা মায়াময় সেই সংগীতের আবাহন আবার কখন বেজে উঠবে, আবার কখন গতিশীল নদীর ছায়ায় চোখ রেখে বর্ণিত হবে দুঃসাহসী অগণিত 888sport sign up bonus-শ্লোক।
আমাদের এ-অপেক্ষা যেন তাড়াতাড়ি ফুরোয় লেখকের কাছে সে-প্রত্যাশা।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.