‘ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপ’ বা ‘ওপিএসজি’ 888sport appর আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে মে ২০২৩ সালের গত ৩রা থেকে ১৫ই মে পর্যন্ত ১৩ দিনব্যাপী ‘দুঃখ থেকে মুক্তি : বাংলার বুদ্ধ’ শিরোনামে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এই প্রদর্শনীর আয়োজকদের উদ্দেশ্যটা কী, তাঁদের ইশতাহারে স্পষ্ট করে বলা আছে। ২০০৯ সালে গঠিত ‘ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপ’-এর আয়োজন দর্শককে আহ্বান করে সচেতনতার সঙ্গে তাদের আয়োজন দেখতে এবং উপলব্ধি করতে। গ্রুপটির প্রতিষ্ঠাতা এবং কিউরেটর ড. মলয় বালা 888sport app বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক। এই বিভাগে প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই ‘প্রাচ্যরীতি’র ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়, যদিও শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুরুতেই একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায় – ‘প্রাচ্যরীতি কী?’
অধ্যাপক মলয় বালা এবং এই প্রদর্শনীর কিউরেটর ও অন্যতম পৃষ্ঠপোষক মিখাইল আই. ইসলাম – দুজনেই তাঁদের গ্রুপের প্রাচ্যরীতি ভাবনা নিয়ে একমত। তাঁরা 888sport live chatী অবনীন্দ্রনাথের 888sport live chatশৈলীকেই প্রধান বৈশিষ্ট্য এবং তাঁদের আঙ্গিক হিসেবে নির্ধারণ করেছেন, যা তাঁদের ইশতাহারে ঘোষণা করা হয়েছে। এই ভাবনাকে পাথেয় হিসেবে বিবেচনা করে একে অন্যের মধ্যে চিন্তা ও উপলব্ধিগুলি সঞ্চারের কাজটি করে চলেছেন মলয় বালা।
প্রশ্ন হলো, কেন এবং কীভাবে এই আঙ্গিক নির্ধারণের কাজটি তাঁরা করেছেন? আমরা জানি, মূলত ‘কৃষ্ণলীলা’ সিরিজ দিয়ে অবনীন্দ্রনাথের 888sport live chatসত্তার আত্মপ্রকাশ। ফলে ‘কৃষ্ণলীলা’ থেকে তাঁর জীবনের শেষ বয়সের ‘কুটুম-কাটাম’ পর্ব – সবই অবনীন্দ্রনাথের 888sport live chatবৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত। ‘ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপ’-এর প্রদর্শনীতে ওয়াশ পদ্ধতি মূলত গুরুত্ব পায়। ধারণা করা যায়, এই বোঝাপড়াটা অধ্যাপক মলয় বালার প্রাথমিক প্রাতিষ্ঠানিক জীবনের প্রাপ্তি। সেদিক বিবেচনায় আলোচ্য প্রদর্শনীতে ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। নানা মাধ্যমে দক্ষ 888sport live chatীদের কাজ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। অর্থাৎ, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক প্রাচ্যরীতির সীমায়িত ধারণাকে নিজের তৈরি করা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অতিক্রমের একটা চেষ্টা বলা যায় আলোচ্য প্রদর্শনীকে।
এ-প্রদর্শনীতে বাহান্নজন 888sport live chatীর ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন 888sport live chatকর্ম স্থান পেয়েছে। এই বিপুল 888sport live chatীর কাজ প্রদর্শনের জন্য আলিয়ঁস ফ্রঁসেজকে স্থান হিসেবে নির্বাচন বিবেচনা দুঃসাহসিক, যদিও তা 888sport appsের প্রদর্শনরীতির বিচারে স্বাভাবিকও বটে। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এই প্রদর্শনীতে মাধ্যমের বৈচিত্র্যের সঙ্গে বিষয় হিসেবে গৌতম বুদ্ধের সংলাপ বা সংশ্লেষ কেমন ছিল, তা নিঃসন্দেহে কৌতূহলের একটি বিষয় ছিল।
ফলে দর্শক এই প্রদর্শনীর উপলক্ষ (বুদ্ধপূর্ণিমা) এবং 888sport live chatের বিবেচনা আলাদা করে অথবা দুই বিবেচনার সংশ্লেষকে একসঙ্গে করে খোঁজার কাজটি করতে পারেন।
উপলক্ষের বিবেচনায় দেখতে গেলে প্রদর্শনীটি যথার্থ। বুদ্ধের দর্শনের চেয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির পাটাতনে ব্যক্তি বুদ্ধ গুরুত্ব পেতে থাকেন এবং ক্রমে দেবত্ব লাভ করেন। গুরু বা বুদ্ধকে পূজা করার এই বিবর্তিত সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটেই বেদিতে স্থাপিত বুদ্ধমূর্তির জন্ম ও বিকাশ। ফলে সামাজিক সংস্কারমূলক আন্দোলনের নেতা ও দার্শনিক থেকে বুদ্ধ ক্রমে দেবতা ও অবতাররূপে আবির্ভূত হন এবং তাঁর সত্য অন্বেষণকারী শিষ্যদলের বদলে জন্ম নেয় অনুসরণকারী নানা দল। এইসব দল দ্বারা বুদ্ধ পূজিত হন। এই পূজনীয় ব্যক্তির জীবন ও কর্ম, অর্থাৎ জীবনবৃত্তান্ত, প্রাচীন সংস্কৃতির অনুসরণে পুনরুজ্জীবিত করার চর্চা করলে বুদ্ধপূর্ণিমাকেন্দ্রিক যে-সংস্কৃতি, তার সঙ্গে এর কোনো সংঘর্ষ তৈরি হয় না। এই সংস্কৃতি রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলামসহ সব প্রধান ব্যক্তিকে নিয়েই এই অঞ্চলে গড়ে উঠেছে।
চতুর্থ 888sport live chat-বিপ্লবের যুগে বুদ্ধ প্রাসঙ্গিক কি না, কেন প্রাসঙ্গিক – এসব প্রশ্নজাগানিয়া 888sport live chatভাষা অন্বেষণ করার সুযোগ এই প্রদর্শনীতে নেই, অথচ তা থাকতে পারত। দর্শন বা ভাবনা 888sport live chatকর্মে না থাকলে তা দর্শক বা নতুন সময়ের কাউকে উদ্দীপিত করতে পারে না। আর উদ্দীপনা পাওয়ার আগেই কারো ধ্যানস্থ হওয়ার সুযোগ নেই। গুপ্ত যুগের ভাস্কর্যের বুদ্ধরূপটি এই প্রদর্শনীতে বারবার 888sport live chatীদের কাজে বিশেষভাবে ঘুরেফিরে এসেছে। বুদ্ধের নানা রূপ কুশান যুগ থেকে গুপ্ত যুগ পর্যন্ত চোখে পড়ে। তারপরও ঘুরেফিরে সকল ফর্মের ভিড়ে গুটিকয় ফর্ম গুরুত্ব পেয়েছে। এই গুরুত্ব পাওয়া ফর্ম বা রূপ এবং অবনীন্দ্রনাথের কাজের বৈচিত্র্য থেকে ওয়াশ পদ্ধতির নির্বাচন – দুটি প্রবণতাকে একসঙ্গে মিলিয়ে দেখলে ‘ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপ’-এর উদ্দেশ্য এবং প্রবণতা বা কাজের মধ্যে একটি সাংঘর্ষিক রূপ ধরা পড়ে।
‘দেশজ 888sport live chat-ঐতিহ্যের অন্বেষণ ও অবগাহন’ করার লক্ষ্য নিয়ে আয়োজিত এই প্রদর্শনীটি, যা এই প্রতিষ্ঠানেরও লক্ষ্য। অথচ এই লক্ষ্য ও কাজ বা মাধ্যম অথবা রূপ বা এমনকি 888sport live chatের বিষয়ের ভঙ্গি বা অঙ্গবিন্যাস – সবই ব্রিটিশ শাসনের সময়কালে ব্রিটিশের চোখে দেখা ‘প্রাচ্য’ ধারণা ও নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এই প্রবণতাগুলি অবনীন্দ্রনাথ দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত এবং এই উপমহাদেশে এর বিস্তার ঘটেছে তাঁর শিষ্যকুলের দ্বারা। আর তাত্ত্বিকভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গিটি অনুপ্রেরণা গ্রহণ করেছে জাতীয়তাবাদের পটভূমি থেকে।
প্রদর্শনীর শিরোনামে বলা হয়েছে ‘বাংলার বুদ্ধ’। কিন্তু চিত্র আঙ্গিকে, গবেষণায় বাংলায় বুদ্ধের রূপ বা তার গ্রহণযোগ্যতার রূপ সম্পর্কে এ-প্রদর্শনী কোনো ভাবনা জাগায় না। সার্বিকভাবে অধ্যাপক মলয় বালা-প্রতিষ্ঠিত ‘ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপ’-এর গুরু-শিষ্য পরম্পরাকেন্দ্রিক 888sport live chatচর্চার প্রকৃতি, তার নানামাত্রিক কর্মকাণ্ডের ধরন তাঁকে অবনীন্দ্রনাথের একবিংশ শতকের সুযোগ্য শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে আমাদের উদ্দীপিত করে। ১৯২০ সালে অবনীন্দ্রনাথ-প্রতিষ্ঠিত 888sport live chat-বিদ্যালয়ের প্রসপেক্টাসের কয়েকটি লেখা এই কথার আক্ষরিক প্রমাণ দেয় – ‘দি ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্টের উদ্দেশ্য ভারতীয় 888sport live chatকলার জ্ঞান ও প্রয়োগ সম্পর্কে শিক্ষাদান, আমাদের দেশবাসীকে আমাদের 888sport live chatকলার পরম্পরা সম্পর্কে সচেতন করা, 888sport live chatকলার প্রাচীন এবং সজীব ঐতিহ্য তাদের বুঝতে ও তারিফ করতে সহায়তা করা।
‘এই উদ্দেশ্য আমরা বিদ্যালয়ের মাধ্যমে, প্রদর্শনীর মাধ্যমে, দি ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্টের পত্রিকা প্রকাশনের মাধ্যমে এবং বক্তৃতাদির মাধ্যমে অর্জনে সচেষ্ট।’
888sport appsের 888sport live chatচর্চার মধ্যে ইশতাহারকেন্দ্রিক 888sport live chatচর্চার প্রবণতা খুবই নড়বড়ে। সেই দিক বিবেচনায় মলয় বালার এই প্রচেষ্টা বিশেষ বিবেচনার দাবি রাখে। একই সঙ্গে অবনীন্দ্রনাথকে গুরু হিসেবে অনুকরণ না করে প্রশ্ন করাটা জরুরি। অবনীন্দ্রনাথের সময়ের প্রেক্ষাপটে তাঁর অবদান ও অবস্থান সপ্রশ্ন পাঠের মধ্য দিয়েই শিষ্যেরা অগ্রসর হলে এই আন্দোলন একটি যথাযথ প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারবে, যা করা জরুরিও। গৌতম বুদ্ধও তাঁর শিষ্যদের অনুকরণসর্বস্ব হওয়ার বদলে নতুন করে নিজের প্রেক্ষাপটে নিজ সত্য অনুসন্ধানের কথাই বলেন। সেই সত্য অন্বেষণের দাবিদার হলে ‘ওরিয়েন্টাল পেইন্টিং স্টাডি গ্রুপ’ 888sport appsের 888sport live chat-ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে নিঃসন্দেহে। কারণ, তার সংগঠকদের মধ্যে সেই স্ফুলিঙ্গ ও শ্রমস্পৃহা আছে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.