ইকবাল আজিজ
কর্নেল রিকার্ডো সান্তিয়াগো এখন বুঝতেই পারেন না, বাগদাদে কখন সকাল আর কখন সন্ধেবেলা! তার মাথার মধ্যে হিংস্র ক্ষমতার দম্ভ দলবেঁধে মার্চ করে অনবরত। মনে হয়, একা মেশিনগান চালিয়ে এই প্রাচীন দেশটির সব মানুষকে তিনি হত্যা করবেন, তারপর হয়তো তার দায়িত্ব শেষ হবে। কত সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যা তিনি দেখেছেন, বাগদাদের পথে কত অসহায় 888sport promo code, শিশু ও বৃদ্ধের লাশ পড়ে আছে। মার্কিন বাহিনীর সৈন্যদের আলজাজিরা কিংবা কোনো আরব টিভি চ্যানেল দেখা নিষেধ, হয়তো এটাই আমেরিকান গণতন্ত্র। কর্নেল রিকার্ডো পিস্তলটা বের করে নিজেই বললেন, ‘আই ফাক সিভিলাইজেশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি।’ তার মাথাটা ঘুরছিল;
টেবিলের ওপাশে বসে থাকা ক্যাপ্টেন জন ফোর্ডকে বললেন গ্লাসে আরেকটু হুইস্কি ঢেলে দিতে। তারপর শুরু হলো তরল অগ্নি গলাধঃকরণের পালা; ধীরে ধীরে তার বিষণ্ণতা কেটে গেল এবং তিনি নিজেকে যথেষ্ট উজ্জীবিত বোধ করলেন।
কর্নেল সান্তিয়াগো অনুভব করলেন, বাস্তবিকই তিনি সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী; নিদেনপক্ষে বাগদাদের এই আবুগারিব কারাগারে তিনিই সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি। বন্দিদের জীবন নিয়ে তিনি জুয়া খেলছেন প্রতিমুহূর্তে; যাকে খুশি বাঁচিয়ে রাখছেন, যাকে খুশি মেরে ফেলছেন। এ-মুহূর্তে তার ঘরে টেলিভিশনে সিএনএনের খবর হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট বুশকে ভাষণ দিতে দেখা যাচ্ছে। বুশ তাঁর ভাষণে দৃঢ়তার সঙ্গে বলছেন, ইরাকে শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই মার্কিন বাহিনীর প্রধান লক্ষ্য। আর ইরাকি বন্দি নির্যাতনের যে-খবর বেরিয়েছে, অবশ্যই সে-বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চালানো হবে।
কর্নেল রিকার্ডো টেলিভিশনে খবর দেখতে গিয়ে ফিক করে হাসলেন, তারপর আপনমনেই বললেন, ‘ফাক অল ব্লাডি সিভিলিয়ান!’ কর্নেল রিকার্ডোর নির্দেশে বাগদাদের আবুগারিব কারাগারে স্বাধীনতাকামী ও দেশপ্রেমিক ইরাকি বন্দিদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন চালানো হয়। ইরাকি মুক্তিযোদ্ধাদের তৎপরতা যত বাড়ছে, তারচেয়ে দ্বিগুণ বাড়ছে কারাগারে বন্দিদের ওপর নির্যাতন।
কর্নেল রিকার্ডো সান্তিয়াগোর এখন মাঝে মাঝে প্রচন্ড হতাশায় আত্মহত্যা করতে ইচ্ছা করে; ইরাকে ইতোমধ্যে দখলদার মার্কিন বাহিনীর চার-পাঁচজন সৈন্য আত্মহত্যা করেছে। তবে মার্কিন বাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ-আত্মহত্যার খবর প্রচার করা হয়নি। বরং মিথ্যা খবর প্রচার করা হয়েছে; বলা হয়েছে, ইরাকি গেরিলাদের সঙ্গে লড়াইয়ে এসব মার্কিন সৈন্য নিহত হয়েছে। রিকার্ডো চিন্তা করে দেখলেন, দখলদার মার্কিন বাহিনীর যেসব সৈন্য মারা গেছে, তারা আসলেই বেঁচে গেছে। প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল, গুরুতর আহত হওয়া ছাড়া ওই বাহিনীর কেউ ছুটি পায়নি। কৌশলগত কারণে তাদের ছুটি দেওয়া হয় না। ধারণা করা হয়, একবার ছুটি দিলে তারা কেউ আর ইরাকে ফিরতে চাইবে না। ছুটি দেওয়া হলে মার্কিন সৈন্যরা দেশে গিয়ে আত্মগোপন করবে।
দখলদার মার্কিন বাহিনীর অনেক সৈন্যই হতাশায় ভুগছে; বিশেষ করে 888sport promo codeসৈন্যরা। কর্নেল রিকার্ডো ভাবলেন, মার্কিন সেনাদলে বেশকিছু 888sport promo codeসৈন্য আছে বলেই হয়তো এতো হতাশার মধ্যেও কোথায় যেন আনন্দের রিনিঝিনি নৃত্য শোনা যায়। বাগদাদে মার্কিন গভর্নর পল ব্লেমার ও তাঁর সহযোগীরা মার্কিন সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামান না। তাই ইরাকে মার্কিন বাহিনী তাদের কর্মকান্ডের ব্যাপারে যথেষ্ট স্বাধীন। হত্যা, মদ্যপান এবং বিভিন্ন ধরনের নেশা মার্কিন সৈন্যদের প্রধান নেশা। এতোকিছুর পরও কেমন যেন শূন্য বোধ হয়। তাই তিনি বাগদাদের ‘আবুগারিব কারাগারে’ বন্দিদের নিয়ে নিত্যনতুন খেলা শুরু করেছিলেন। এরপর তা এই কারাগারের সব সৈন্যের অবসর কাটানোর প্রধান বিনোদন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কর্নেল রিকার্ডো মাঝে মাঝে তার সৈন্যদের নিয়ে এক অদ্ভুত প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। তিনি তার সৈন্যদের ওপর নির্যাতনের নতুন ও অভিনব কায়দা উদ্ভাবনের ভার দেন। প্রতিবারই দেখা গেছে নির্যাতনের কৌশল উদ্ভাবনের খেলায় মার্কিন 888sport promo codeসৈন্যরা তাদের সহকর্মী পুরুষ সৈন্যদের তুলনায় এগিয়ে আছে। 888sport promo codeসৈন্যদের প্রতিভার এই বিশেষ দিকটি বাইরে প্রচার করা সম্ভব হচ্ছে না। এ যেন এক গোপন আবিষ্কার; দেশ ও জাতির স্বার্থে তা চিরকাল গোপন রাখতে হবে। হঠাৎ কর্নেল রিকার্ডোর মনে পড়ল একজন বিশিষ্ট জীব888sport apkীর একটি মন্তব্য। সেই জীব888sport apkী তাঁর বইয়ে মন্তব্য করেছেন, সব প্রাণীর মধ্যেই পুরুষদের তুলনায় 888sport promo code অনেক বেশি লোভী, হিংস্র ও ভয়ংকর।
যেদিন ইরাকি মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ সহ্য করতে না পেরে ফালুজা শহর থেকে পিছু হটল মার্কিন বাহিনী, সেদিন বাস্তবিকই মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল কর্নেল রিকার্ডোর। তিনি সেদিন ডিউটি থেকে পাঁচ ঘণ্টার ছুটি নিয়েছিলেন আর একজন ইরাকি কলাবরেটর সায়িদকে নিয়ে টাইগ্রিসের ধারে বেড়াতে গিয়েছিলেন। টাইগ্রিস নদীর ধারে এক চমৎকার পার্ক আছে, সেখানে তিনি বসেছিলেন দখলদার মার্কিন বাহিনীর দালাল ইরাকি ব্যবসায়ী সায়িদকে নিয়ে। সব দেশেই দখলদার বাহিনী কিছু মানুষকে সহযোগী হিসেবে পায়; এরা হলো সেসব দেশের সবচেয়ে নিকৃষ্ট, আদর্শহীন ও সুবিধাবাদী মানুষ। ইরাকি কলাবরেটর সায়িদের দিকে সেদিন খুব ঘৃণাভরা দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলেন কর্নেল রিকার্ডো। তখন প্রাচীন টাইগ্রিস নদী দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল কিছু পালতোলা নৌকা। পালতোলা নৌকা দেখে এতো হতাশার মধ্যেও তিনি আনন্দ পেলেন। রিকার্ডো বিস্মিত হলেন, এই কম্পিউটারের যুগে পৃথিবীর কোনো কোনো দেশে এখনো পালতোলা নৌকা আছে।
মার্কিন বাহিনীর দালাল সায়িদের দিকে তাকালেন রিকার্ডো, সায়িদ বোকার মতো দাঁত বের করে হাসছে। সায়িদের হাসি দেখে রিকার্ডোর রাগ আরো বেড়ে গেল, ‘ইউ ব্লাডি বাস্টার্ড, হোয়াই আর ইউ লাফিং?’
সায়িদ এবার ভয় পেয়ে একেবারে চুপ হয়ে গেল, তারপর জোড় হাত করে ক্ষমা চেয়ে নিল। বাগদাদের ব্যবসায়ী সায়িদ বিপুল বিত্তের মালিক; যুদ্ধের বাজারে কালোবাজারি আর চোরাকারবারি করে সে কোটি কোটি ডলারের অর্থসম্পদের মালিক হয়েছে। সায়িদ অবশ্য তার বেশিরভাগ অর্থই বিদেশি ব্যাংকে পাচার করে দিয়েছে। ইরাক হলো তার অর্থ উপার্জনের জায়গা; বছরের বেশিরভাগ সময় সে থাকে ইউরোপ ও আমেরিকায়, তার পরিবারও থাকে বিদেশে। কর্নেল রিকার্ডো ইতোমধ্যে বুঝতে পেরেছেন, তৃতীয় বিশ্বের বেশিরভাগ বিত্তবান মানুষ বছরের অর্ধেক সময় বিদেশে থাকে, এরা শুধু দেশে যায় ব্যবসার নামে লুটপাটের জন্য। সায়িদ তেমনই একজন। টাইগ্রিস নদীর ধারে বিকেলে কর্নেল রিকার্ডোর মাথায় একটা অদ্ভুত খেয়াল চাপলো। তিনি হঠাৎ সায়িদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘সায়িদ, লেটস প্লে অ্যা গেম। তুমি চুপ করে বসে থাকো। একটুও নড়বে না, নড়লে তোমাকে আমি গুলি করব। বরং আমার সঙ্গে সহযোগিতা করো আর দাঁত বের করে হাসো।’ সায়িদ আগের মতো দাঁত বের করে হাসতে লাগল।
এবার কর্নেল রিকার্ডো দাঁড়িয়ে সায়িদের মুখের ওপর মুততে শুরু করলেন। আশ্চর্য সায়িদ তখনো মৃত্যুভয়ে দাঁত বের করে হাসছিল। সায়িদের মুখের ওপর তরল ঘৃণা ছড়িয়ে দিয়ে কর্নেল রিকার্ডো যেন শান্তি পেলেন। এরপর তিনি ধীরেসুস্থে সেখান থেকে চলে এসেছিলেন। আসার সময় তিনি সায়িদকে নদীর ধারে রেখে এসেছিলেন। সেদিন আবুগারিব কারাগারে তার বিরক্তি আরো বেড়ে গিয়েছিল। তার মনে পড়েছিল, নিজ শহর লস অ্যাঞ্জেলেসের কথা, ওই শহরে তার প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছে তার স্ত্রী-সন্তানরা। ওদের সঙ্গে কি এ-জীবনে আর কোনোদিন দেখা হবে?
সেদিন সন্ধ্যায় আবুগারিব কারাগারে তার নিজ অফিসকক্ষে গিয়ে অল্প সময়ে কয়েক পেগ হুইস্কি খেয়েছিলেন কর্নেল রিকার্ডো। এরপর তিনি টেলিভিশনে সিএনএনের খবর দেখলেন; ফালুজা শহর এখন পুরোপুরি ইরাকি মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে, এদিকে কারবালা শহরেও প্রচন্ড যুদ্ধ চলছে। ইরাকি জনগণ ও মার্কিন বাহিনীর ভবিষ্যৎ কী? কর্নেল রিকার্ডো এবার নিজের মনেই বিড়বিড় করে গালি দিলেন, ‘ফাক অল ইডিয়ট সিভিলিয়ান অ্যান্ড মিলিটারি অব দ্য ওয়ার্ল্ড।’ তারপর নিজেই সশব্দে হাসলেন হা-হা করে।
এখন তিনি যথেষ্ট চাঙ্গা বোধ করছেন। এখন সন্ধ্যা বিদায় নিয়েছে, বন্দিশিবিরের চারপাশে ফ্লাডলাইটগুলো জ্বেলে দেওয়া হয়েছে। কর্নেল রিকার্ডো তার কক্ষের জানালা দিয়ে দেখতে পেলেন, বন্দিশিবিরের সামনে মাঠের পাশে কাঁটাতারের বেড়া এবং সেই বেড়ার ওপাশে বসে আছে কিছু 888sport promo code ও পুরুষ। মহিলারা কালো বোরখা পরে আছে। অনেকেই সকাল থেকে অপেক্ষায় আছে, কখন তাদের পুত্র, ভাই বা কোনো আপনজন মুক্তি পাবে। কর্নেল রিকার্ডো জানেন, বন্দিদের অনেককেই কেবল সন্দেহবশত ধরা হয়েছে, এদের মধ্যে কেউ হয়তো মুক্তি পাবে, আবার কেউ হয়তো কোনোদিনই জীবিত অবস্থায় ছাড়া পাবে না। এবার কর্নেল রিকার্ডো টেলিফোনে মেজর জেনারেল জিওফ্রে মিলারের সঙ্গে বন্দি-পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করলেন। খুব সাধারণ অফিসিয়াল আলাপ। এরপর তিনি ফোন রেখে দিয়ে বন্দিশিবিরের টর্চার সেন্টারের দিকে রওনা হলেন। নির্যাতনকক্ষে বন্দিদের ওপর নির্যাতন চালানোর জন্য অনেক আধুনিক ব্যবস্থা আছে; কিন্তু তার কাছে নির্যাতনের সব প্রক্রিয়াই পুরনো বলে মনে হয়। আজ তিনি নির্যাতনের কিছু অভিনব প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের জন্য তার অধীনস্থ সৈন্যদের নির্দেশ দিলেন। রিকার্ডো বললেন, যার নির্যাতনের পদ্ধতি সবচেয়ে অভিনব হবে, তাকে 888sport app download bd দেওয়া হবে। তিনি জানেন, ইরাকি বন্দিদের ওপর অত্যাচারের ব্যাপারে মার্কিন 888sport promo codeসৈন্যদের আগ্রহই সবচেয়ে বেশি। তবে সেদিন 888sport app download bd ঘোষণার পর নির্যাতনের ব্যাপারে পুরুষ কিংবা 888sport promo code সব সৈন্যই আগ্রহ দেখাল। প্রতিযোগিতার আগে সেদিন নির্যাতনকেন্দ্রে নিহত চার ইরাকি বন্দির লাশ সরিয়ে নেওয়া হলো। এ লাশগুলো আপাতত থাকবে ডিপফ্রিজে। পরে কোনো একসময় গভীর রাতে একসঙ্গে অনেক লাশ বাগদাদের বাইরে মরুভূমিতে গোপনে পুঁতে ফেলা হবে। নিহতদের আত্মীয়দের কাছে এ লাশ দেওয়া হবে না, কারণ এর ফলে ইরাকে ব্যাপক গণবিদ্রোহ দেখা দিতে পারে।
এবার কর্নেল রিকার্ডো একের পর এক মার্কিন সৈন্যের কাছে নির্যাতনের নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলেন। যার নির্যাতনের পদ্ধতি সবচেয়ে অভিনব হবে, সে-ই পাবে প্রথম 888sport app download bd। সবাই তাদের উদ্ভাবিত নির্যাতনের পদ্ধতি সম্পর্কে বলল, কিন্তু কর্নেল রিকার্ডো বাস্তবিকই অবাক হয়ে গেলেন তার বাহিনীর 888sport promo codeসৈন্য সাবরিনা হারম্যানের উদ্ভাবনী ক্ষমতায়। সাবরিনা হারম্যান বন্দি- নির্যাতনের যে নতুন প্রক্রিয়ার কথা বলল, তাতে আপাতদৃষ্টিতে কোনো ভয়ংকর নৃশংসতা নেই। বরং তার এ-নির্যাতন কৌশলের মধ্যে একধরনের সূক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। কর্নেল রিকার্ডো এ-প্রতিযোগিতায় সাবরিনাকে বিজয়ী বলে ঘোষণা করলেন এবং বললেন, 888sport app download bd হিসেবে তাকে আজ রাতেই এক হাজার ডলার দেওয়া হবে। কর্নেল রিকার্ডো অবাকবিস্ময়ে তার বাহিনীর অন্যতম 888sport promo codeসৈন্য সাবরিনা হারম্যানের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। সুন্দরী ও সুগঠিত দেহের অধিকারিণী সাবরিনার চেহারার মধ্যে একটা অদ্ভুত ইনোসেন্ট ভাব আছে। হাসলে তাকে রীতিমতো রহস্যময়ী সুন্দরী বলে মনে হয়। রিকার্ডো অফিসের সিক্রেট ফাইল থেকে জেনেছেন, সাবরিনা নাকি 888sport app download apk লেখে! তার 888sport app download apk নাকি দু-একবার ছাপা হয়েছিল শিকাগোর পোয়েট্রি পত্রিকায়। অথচ এই লাবণ্যময়ী 888sport promo codeর আড়ালে লুকিয়ে আছে কী ভয়ংকর এক পিশাচিনী – এ-কথা ভেবে মনে মনে শিউরে উঠতেন কর্নেল রিকার্ডো। কিন্তু মনের ভাব প্রকাশ করলেন না। তিনি সাবরিনাকে তার নির্যাতনের কৌশল কোনো ইরাকি বন্দির ওপর প্রয়োগের নির্দেশ দিলেন।
সাবরিনা হারম্যান এগিয়ে এলো। তার নির্দেশে একজন ইরাকি বন্দিকে ‘নির্যাতন-কক্ষে’ নিয়ে আসা হলো। বন্দি সম্পূর্ণ নগ্ন এবং তার হাত-পা শক্তভাবে বাঁধা। ইরাকি এ-বন্দির নাম আল-মামুন। সে ছিল বাথ পার্টির একজন ভিন্নমতাবলম্বী সদস্য। আল-মামুন কখনোই প্রেসিডেন্ট সাদ্দামকে সমর্থন করেনি; কিন্তু সে মনেপ্রাণে ধর্মনিরপেক্ষ ও স্বাধীন গণতান্ত্রিক ইরাককে সমর্থন করে। দখলদার মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে ইরাকি জনগণকে সংগঠিত করার অভিযোগে আল-মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাকে আবুগারিব কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। তার ওপর অনেকবার অত্যাচার চালানো হয়েছে; কিন্তু শত নির্যাতনেও সে তার সঙ্গীদের নাম বলেনি।
সাবরিনা তার একজন সহযোগী সৈন্যকে একটি সরু রেশমি দড়ি আনতে বলল। রেশমের সরু দড়ি হাজির করা হলো। সাবরিনা দড়িটা হাতে নিয়ে বলল, ‘আমার নির্যাতনের অস্ত্র শুধু এটাই।’ বন্দি আল-মামুন হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মেঝেয় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। সাবরিনার নির্দেশে আল মামুনকে কয়েক গ্লাস পানি খাওয়ানো হলো। এরপর সাবরিনা সরু রেশমি দড়িটা নিয়ে মামুনের দিকে এগিয়ে গেল, কর্নেল রিকার্ডোসহ সবাই তাকিয়ে আছে, নির্যাতনের পদ্ধতি দেখাই তাদের উদ্দেশ্য। সাবরিনা একজন সৈন্যকে অনুরোধ করল তাকে সহায়তার জন্য। সাবরিনার নির্দেশে সৈন্যটি বন্দি মামুনের কুঁকড়ে-থাকা লিঙ্গটি হাত দিয়ে টেনে ধরে থাকল। সাবরিনা তার সরু রেশমি দড়ি দিয়ে মামুনের লিঙ্গটি খুব শক্তভাবে পেঁচিয়ে বেঁধে গিঁট দিলো। এ-সময় মামুন একবার যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠল। সব দেশেই সৈন্যদের কয়েক ধরনের গিঁট বাধার কৌশল শেখানো হয়, যা দড়ি ছেঁড়া না পর্যন্ত খোলা সম্ভব নয়; এটাও তেমনই একটা শক্ত গিঁট।
সাবরিনা তার কাজ সমাপ্ত করে চমৎকার ভঙ্গিতে ফিরে এলো, এরপর সে একটা সিগারেট ধরাল। আমেরিকায় 888sport promo codeসৈন্যদের মধ্যে সিগারেট খাওয়ার প্রবণতা পুরুষদের তুলনায় বেশি। কর্নেল রিকার্ডোর দিকে তাকিয়ে হাসল সাবরিনা। তারপর সিগারেট টানতে লাগল, ঠোঁট গোল করে ধোঁয়ার ছোট ছোট রিং তৈরি করে শূন্যে ছুড়ে দিলো।
সাবরিনা বলল, ‘নাউ দ্য গেম উড বি স্টার্টেড। আর ঠিক দুঘণ্টা পরে খেলা শুরু হবে। স্যার, চলুন আমরা একটু টিভি দেখে আসি।’
মদ্যপান ও রঙ্গ-রসিকতায় কখন যে দুঘণ্টা চলে গেল; এখন শুরু হবে সাবরিনার বন্দি নিয়ে খেলা, নির্যাতনের 888sport live chatকলা। কর্নেল রিকার্ডো সান্তিয়াগো, সাবরিনা হারম্যান এবং অন্যসব সৈন্য ইতোমধ্যে ফিরে এসেছে নির্যাতনকক্ষে। তারা নির্যাতনকক্ষে প্রবেশের সময় গোঙানির শব্দ শুনতে পেল, বন্দি মামুন করুণস্বরে গোঙাচ্ছে, তার মুখ দিয়ে ফেনা উঠে গেছে। কর্নেল রিকার্ডো দাঁড়িয়েছিলেন সাবরিনার কাঁধে হাত রেখে। মামুন তাদের দিকে তাকিয়ে সৃষ্টিকর্তার দোহাই দিয়ে বলল, তোমরা আমার এ-বাঁধনটা খুলে দাও। অথবা আমাকে মেরে ফেল।’
কর্নেল রিকার্ডো বন্দি মামুনের দিকে তাকালেন, রেশমি দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা মামুনের লিঙ্গ ফুলে উঠেছে। এ কেমন নির্যাতন, কাউকে সরাসরি নির্যাতনে অংশ নিতে হচ্ছে না। প্রস্রাবের তীব্র বেগ, অথচ সরু রেশমি দড়ি দিয়ে লিঙ্গ বাঁধা, এতটুকু প্রশ্রাব করা মামুনের পক্ষে সম্ভব নয়। মামুন গোঙাচ্ছে, চিৎকার করছে। আর মার্কিন 888sport promo codeসৈন্য সাফল্যের আনন্দে হি-হি করে হাসছে।
বাগদাদের আবুগারিব কারাগারে কী আশ্চর্য খেলা জমেছে। সাবরিনা বলল, ‘স্যার কোনো 888sport promo codeবন্দিকে এমন করে নির্যাতন করা সম্ভব নয়। এমন চমৎকার নির্যাতন কেবল পুরুষ বন্দিকেই করা যায়।’
কর্নেল রিকার্ডো সান্তিয়াগো বললেন, ‘হ্যাঁ মেয়েবন্দিদের বেলায় তোমার এ-কৌশল খাটবে না।’
এদিকে সম্পূর্ণ নগ্ন বন্দি আল-মামুন তখন করুণাময় আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে চিৎকার করছে। আবুগারিব কারাগারে ওই জীবনমৃত্যুর খেলা আর কতকাল চলবে কে জানে! আর কতদিন কর্নেল রিকার্ডো সান্তিয়াগো নিজেকেই গালি দেবেন, ‘আই ফাক মাইসেলফ অ্যান্ড সিভিলাইজেশন।’
গল্পের পরে গল্প
গল্পের পরেও গল্প কিংবা গল্পের রেশ থাকিয়া যায়। একবিংশ শতকের প্রথম দশকে মানবতার এই অপমান, এই অনাচার পৃথিবী অতীতের মতোই নীরবে সহ্য করিল, তাহার কঠিন মাটি হইতে এতটুকু আর্তনাদ প্রতিধ্বনিত হইল না। লক্ষ বছর ধরিয়া আমাদের যাবতীয় অন্যায় ও অত্যাচার সে নীরবে সহিতেছে। কিন্তু বাগদাদের আবুগারিব কারাগারে এই ভয়ংকর ও অমানবিক নির্যাতন মানবজাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্ক বলিয়া গণ্য হইবে। ২০০৪ সালের ২৫ মে এক খবর প্রচারিত হইয়াছে, এই অন্যায় যুদ্ধের মূলে নায়ক প্রেসিডেন্ট বুশ বাগদাদের আবুগারিব কারাগার চিরতরে ভাঙিয়া ফেলিবার ইচ্ছা ব্যক্ত করিয়াছেন, সুসভ্য মার্কিন বাহিনীর কলঙ্কের চিহ্ন তিনি চিরতরে মুছিয়া ফেলিতে চান; কিন্তু তাহা সম্ভব নয়, অসংখ্য ইরাকি বন্দির আত্মা এই এলাকায় অনন্তকাল ধরিয়া বেড়াইবে, তাহারা মানবজাতির দুশমনকে অভিশাপ দিবে। আগামীদিনের মানুষ অবশ্যই বাগদাদে সেই জায়গায় যাইবে, একদিন যেখানে আবুগারিব কারাগার অবস্থিত ছিল; একদিন যেখানে গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রহসন অনুষ্ঠিত হইয়াছিল।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.