সনৎকুমার সাহা
বাতাস বিসর্জন
সৌভিক রেজা
চন্দ্রাবতী একাডেমি
888sport app, ২০১৩
১০০ টাকা
কদিন আগে বইটি হাতে পেলাম। সৌভিক রেজার বাতাসে বিসর্জন। 888sport app download apk। বেরিয়েছে এবারের, ২০১৩-র, বইমেলায়। আগে খেয়াল করিনি, সৌভিকই মনে করিয়ে দিলেন, নামটা রবীন্দ্রনাথের একটা গানের কলি থেকে নেওয়া : ‘এ শুধু অলস মায়া, এ শুধু মেঘের খেলা -।’ ভাবটা পুরো হয় পরের চরণে – ‘এ শুধু মনের সাধ বাতাসেতে বিসর্জন।’ সৌভিক ‘বাতাসেতে’র ‘তে’টা ছেঁটে দিয়েছেন। অর্থের হেরফের হয় না। এই এক অপার ভান্ডার। তাঁর গানে-888sport app download apkয় টুকরো-টুকরো কথা, ছড়ানো-ছিটানো শব্দবন্ধ হীরা-মানিকের মতো জ্বলে। কখনো কখনো আপনা থেকে উঠে এসে নিজেদের জানান দেয়। বর্ণালির মতো আলো ছড়ায়। আমাদের চেতনায় কত রকম ঘা লাগে। অনুভবের বৃত্তে অনুরণন তোলে। কোনোটা বা ছবি হয়। এমনকি নিরাকার হলেও। তবে নিষ্কল্প নয়। আমরা সেসবে মূল্য আরোপ করতে পারি। করি। যেমন সৌভিক করেছেন। গানের ভাব পুরোপুরি তাঁর 888sport app download apkর নয়। স্ফুলিঙ্গ থেকে আলো। তার চ্ছটার একটা কণা তাঁর 888sport app download apkকে চিনিয়ে দেয়। তাঁর প্রাণে গিয়েও মেশে। 888sport app download apk অবশ্য তাঁর নিজের মতো দশপ্রহরণধারিণী হয় এবং পূর্ণতা পায়। যদিও শূন্যতার পূর্ণতা। অন্তত 888sport app download apkর মেজাজে ফুটে উঠতে চায় যেন সেটিই। তা শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে না রবীন্দ্রনাথে। ওই গানেরও শেষ চরণে শুনি, ‘- যদি কিছু মনে পড়ে, যদি কেহ আসে কাছে।’ নির্বাণ এখানে শেষ কথা নয়। বরং ‘মনের সাধ’ থেকেই যায়। অথবা নির্বাণও কোনো কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা খোঁজে। হয়তো অনির্দেশে। কোথায়, কার কাছে, জানা নেই। তবু ‘বাতাসেতে বিসর্জন’, অদৃশ্যে তাকে উড়িয়ে নিয়ে চলে। তবু বাস্তব।
সৌভিক রেজার বাতাসে বিসর্জন ক্ষীণাঙ্গী। যেন বাতাসই তার পরমা-গতি। 888sport app download apkও নির্মেদ। অনুচ্ছল। যেন নিরাকৃতিই তার সাধনা। তবে নির্ভার হওয়া নয়। বিশ্বব্রহ্মান্তের মূলিভূত আদি কণা যেমন, তেমনি বুঝি সে হতে চায়। মলাটের উলটোপিঠে ইঙ্গিত পাই, ‘… প্রায় সর্বব্যাপী নেতিতে নিমজ্জিত থাকেন তিনি, তাঁর চারপাশে এক উদ্ধারহীন, পারাপারহীন অথই অকূলতা। ‘বাতাসে বিসর্জন’ সেই অকূলতারই জন্মসহোদর।’ কূল নাই, কিনারা নাই বললেই আমাদের মনে জাগে নদীর দৃশ্যমায়া। অথবা সাগরের। কিন্তু সৌভিকের 888sport app download apk এদেরও ছাড়িয়ে যেতে চায়। অনুভবের আকারহীন – আদি-অন্তহীন বিস্তারের মর্মতলে সে ডুবতে চায়। তাই বিসর্জন বাতাসে। সর্বাস্তি হয়েও নিরবয়ব তা। ধারণ করে নাস্তিকেও।
শুরুতেই একটা প্রত্যাশা নিয়ে বইটির পাতা খুলি। এ বুঝি অন্যরকম হবে। প্রত্যক্ষের রূপকলায় আবেগের ওপর এলে এর তৃপ্তি নেই। আমরা যাতে সহজে মাতি, তা থেকে সযত্নে এ নিজেকে দূরে সরায়। অথচ বাস্তবের ভূমিকে উপেক্ষা করে না। বরং তার ভেতরের যে-সারাৎসার তাকেই খোঁজে। না পেলেও পাওয়ার মায়া তৈরি করে না। আন্তরিক সততায় ওই না-পাওয়ার অনুভবই বাতাসে বিসর্জন দেয়। এতে বাইরের জগৎ লুপ্ত হয় না। বরং তার ‘মারের সাগর’ চারদিক থেকে তার মাঝখানে টানে। ‘দুঃখদিনের রক্তকমল কি ফোটে? ফুটলেও কি সন্ধ্যায় মলিন হয়ে ‘উড়ে যায় বনে বনে’? এইটিই দেখবার। নেতিরও কি আকর্ষণ তৈরির ক্ষমতা নেই? সেও কি ভোলায় না? যদি ভোলায়, তবে নেতি কি আর নেতি থাকে? সততায় অবিচল থাকলে সেও কি ভোলায় না? যদি ভোলায়, তবে নেতি কি আর নেতি থাকে? সততায় অবিচল থাকলে সে-ও কি বোধের আনন্দ জাগায় না? সৌভিকের সততায় আমার আস্থা আছে। তাই এ-প্রশ্নগুলো জরুরি হয়ে পড়ে। বিশেষ করে 888sport app download apk যখন ওই বোধের নান্দনিক প্রকাশের পথ খোঁজে; এবং সৌভিকের মাধ্যম এখানে 888sport app download apk।
888sport app download apk অনেকরকম হতে পারে, এ-কথা জীবনানন্দ আমাদের আগেই মনে করিয়ে দিয়ে গেছেন। তারপরও তার পালাবদল ঘটে। ঘট-পট এক থাকে না। বাস্তবও নানারকম ভোল পালটে বহুরূপী হয়। হয়ে চলে। ঠিকঠিক তাল মেলাতে গলদঘর্ম হতে হয় 888sport app download apkকে। একেশ্বরবাদী হয়ে নয়। 888sport app download apkয় তা অচল। অথবা 888sport app download apkকেই তা অচল করে রাখে। কারণ, জীবনের চাওয়া-পাওয়া এক থাকে না। প্রশ্ন – মীমাংসার, অথবা, অমীমাংসার নতুন-নতুন পথ খোলে। নিজেদের অজান্তেই বোধের জগতে অনেক কিছু জৌলুস হারায়, শব্দরাশিতেও জরার লক্ষণ ধরা পড়ে। সেখানে আপন অভ্যাসে স্থির থাকা মানে পিছিয়ে পড়া। সমাজ যদি অনড় হয়, এবং তার তারিফ করে, তবু।
আমরা জানি, 888sport app download apk এক সময় ছিল আখ্যাননির্ভর। পদ্যে রচনা বলে তার কদর। ছন্দে-অলংকারে তার সাজ-বাজ। কিন্তু তার প্রাণভোমরা জীবনের কোনো মৌল-উচ্চারণে, অথবা কোনো অনিবারণীয় তাগিদে। সত্ত্ব-রজ-তম, যাই হোক না কেন। মহাকাব্যে আদি-অন্তে তা মিশে থাকে। পরে ক্রমশ রচনার বিশেষ বিশেষ ক্লান্তি-মুহূর্তে, অথবা শীর্ষ চূড়ায় তা বাসা বাঁধে। তাকে ফুটিয়ে তুলতেই আগে-পরে সার্বিক আয়োজন। তা 888sport app download apkকে দাঁড় করায়। ধরে রাখে কাল থেকে কালান্তরে। এই রকম শেক্সপিয়রের ম্যাকবেথ চিরকালের হয়ে ওঠে তার ‘টু-মরো, অ্যান্ড টু-মরো, অ্যান্ড টু-মরো…’ এই মর্মভেদী সংলাপে, অথবা, হ্যামলেট, তার, ‘টু বি, অর নট টু বি, – দ্যাট ইজ দ্য কোয়েশ্চেন’, – এই দ্বিধাদীর্ণতায়। আমরা শুধু তাদেরই মনে রাখি না, মনে রাখি তাদের ওপর ভর করে নাটক দুটোর সবটুকুকেও, এবং তাদের দীপ্ত বিভায় দেখি, মানবভাগ্যের আকাশে তার অসহায়তার চলমানতাকেও। নাটক দুটোর বাকি অংশগুলো এদেরই উদ্ভাসিত করে। রবীন্দ্রনাথেরও অনেক 888sport app download apk আপাতদৃষ্টে অতিবিস্তৃত। সত্যিকারের বলার কথা হয়তো অনেক কম। অবশ্য গানে তেমন নয়। গড়নের সীমাই তাকে প্রগলভ হতে দেয় না। তাই বলে সব গানেই তিনি সিদ্ধবাক্ নন। গোটা সৃষ্টির ফলবান এক ভগ্নাংশই কেবল তেমন দাবি করতে পারে।
তবে সময় যত এগিয়েছে, 888sport app download apkয় আত্মসচেতনতা তত বেড়েছে। অহৈতুকীর, অথবা, সালংকরা হলেও অনর্থক বাগাড়ম্বরের ঝোঁক কমেছে। পরোক্ষ বার্তা শুষে নিয়েছে প্রত্যক্ষের রাগ-অনুরাগ দৃশ্যকলা। ইশারায় কাব্য হয়। প্রতীকে-উপমায় অনুভবের সারাৎসার ফোটে। এবং একবার ফুটে উঠলে সেইটে, সেইটুকুই যথেষ্ট। বর্ণনা যতই মনোগ্রাহী হোক, বিষয়ীভাবনা পূর্ণতা পাওয়ার পর তার আর কোনো দাম নেই। শুধুই তা জঞ্জাল। 888sport app download apk তাই বাড়তি ওজন ঝেড়ে ফেলতে চায়। আভাস-ইঙ্গিতে বাক্-সংযমে ও হাল্কা-শানিত শব্দের বহুমাত্রিক দ্যোতনায় সে নিজেকে চেনাবার কথা ভাবে। এ এক শুদ্ধতার দিকে যাত্রা। 888sport app download apkর শুদ্ধতা। তাই বলে তাকে পদ্য হতে হবে, ছন্দের খেলা সেখানে জমবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এদের পাশ কাটিয়েও অনুভবের বিচিত্র স্বর ধ্বনিত হতে পারে। মিশ্রণে-মিশ্রণে তারা অভিনবত্ব পেতে পারে। তাতেই তার বিশিষ্টতা। 888sport app download apkর রহস্য বাড়ে বই কমে না। কতটা সম্মোহনী, এবং সম্মোহিনী সে হবে, তা নির্ভর করে অবশ্য কবির কবিত্ব-প্রতিভার ওপর। সেইসঙ্গে দেশ-কালের প্ররোচনাও একটা ব্যাপার বটে। তাকে উপেক্ষা করা চলে না।
কথাগুলো প্রাসঙ্গিক মনে হলো বাতাসে বিসর্জন পড়তে গিয়ে। মোট চল্লিশটি 888sport app download apk। প্রত্যেকটিই শীর্ণ। সবচেয়ে বড়টির পঙ্ক্তি888sport free bet পনেরো। পাঁচ-চরণে পুরো, এমনও আছে বেশকটি। একটি তো চতুষ্পদী। তাই বলে মন্ত্রের আদলে নয়। মন্দ্রে অনুজ্ঞা থাকে, প্রার্থনা থাকে, বারবার উচ্চারণে এক ধরনের বশীকরণের চেষ্টা থাকে। এখানে সেসব কিছুই নেই। সুখদা বা শুভদা কি-না বলা মুশকিল। কারণ, সবার সাড়া একই রকম মেলে না। রুচির মানচিত্র একরঙা নয়। আর শুভ যতই নির্বিশেষ হতে চাক, পারে না। হতে পারে যা একদিক থেকে কল্যাণ, অন্যদিক থেকে অকল্যাণ, অথবা কল্যাণে উদাসীন। তবে এ প্রাণদা অবশ্যই। আমরা পড়ে নড়েচড়ে বসি। চেতনায় ঘা লাগে। সংবেদনা কিছু ছুঁতে চায়। পারলে, ধরে-রাখতে। কষ্টের ছাপ যদি অবিমোচ্য হয়, তবু। কারণ মানব-ভাগ্যের অনিবার্যতার কণা তাতে মিশে থাকে। একমাত্র না হলেও।
অথচ 888sport app download apkগুলো নিতান্তই নিচুগলায় নিজের সঙ্গে কথা। পরিপার্শ্ব অনিত্য। জীবন ডুবে থাকে অসার অকিঞ্চিৎকরতায়। স্বপ্ন সব ভেসে আসে, আর ভেসে যায়। হাতে জমে না কিছুই। অথবা, যা জমে, তা শুধুই ভোলায়। ‘মরীচিকা অন্বেষণই ঝুঝি নিয়তি। তুচ্ছ থেকে আরো তুচ্ছ হতে হতে, অগ্রসরমান শূন্যতার অপ্রতিরোধ্য ঢেউয়ে ভেসে যেতে যেতে নিরঞ্জন শলাকায় 888sport app download apkর দীপ জ্বেলে অসহায় আত্মপ্রতিবিম্ব খোঁজার চেষ্টা। বিষাদ চেতনায় চাদর বিছায়। তারই ওপর উড়ে বেড়ায় – উড়ে যায় প্রত্যক্ষের কণারাশি। তাদের নির্যাস ধরতে চায় ওই 888sport app download apk। বানানো কথা নয়। অনুভবের তারে যেমন-যেমন সাড়া জাগে, তেমন। নিরাভরণ ও নিরভিমান। তবু তার লঘুভার থেকে যায়। থেকে যায় তার পথের ধুলায়, চেনা যায় না, এমন রূপকলার উদাসীন স্বাভাবিকতা। এই উদাসীনতা অবশ্য অসচেতন নয়। 888sport app download apkর আন্তর-সত্যের সঙ্গে তাকে মিলিয়ে নেন কবি। তারপরে সবসুদ্ধ বাতাসেই বিসর্জন। কারণ, কিছুই তো থাকে না। অথচ 888sport app download apkর শুদ্ধ রূপ জানিয়ে দিতে থাকে, সে হারিয়ে যেতে চায় না। হলোই বা জাঁক-জমকহীন ‘যেমন’ আছে, ‘তেমনি’ আসা। তবু তাতে জড়িয়ে থাকে প্রতীকের আটপৌরে শাড়ি। চেনা যায়, কী যায় না। আভা কিন্তু ছড়ায়। হালকা-মৃদু; আর, স্থায়ী। উপমাও মাঝে-সাঝে ঘুরেফেরে সাধারণের ভিড়ে। তবে ‘কালের যাত্রার ধ্বনি’ ঠিকই শোনা যায়, যদিও পেছনের ‘করুণ মিনতিমাখা’ সরের রেশ যে একেবারে লুপ্ত হয়ে যায়, তা বোধহয় ঠিক নয়।
একটা 888sport app download apk পড়ি :
তুমি হারমোনিয়াম, তিনি বেহালা অন্যজন তবলা
আমি শুধু কিছুই না হে আমি তো কিছুই না
সকাল-রাতে শুকনো তরকারি দিয়ে দুটো ভাত
মাঝে মাঝে গান শোনা ফুটপাত থেকে পেপারব্যাক…
একা একা নিজের সঙ্গে কথা বলা
ভাঙা জানালা দিয়ে রাস্তার পাশে করুণ জারুলগাছটিকে কখনো-সখনো
এক নজর দেখা – সব মিলিয়ে এইসব
আর এসবের বাইরে
আমি তো কিছুই না হে কিছুই না কারোরই না…
(প্রতিধ্বনি : ২৯)
একে স্বগত-সংলাপ বলা যেতেই পারে। কিন্তু তাতেই এর সীমা টানলে বোধহয় ভুল হবে।
এই ‘আমি’ কবির আতমরূপ ছাড়িয়ে সব ‘আমি’তে ছড়ায়। অন্তত সেইটিই তার অভিলাষ। তা নইলে এ অবান্তর জৈবপদার্থ মাত্র। তার বার্তাও সমান অসার। শোনা-বা না শোনা, কোনো কিছুতেই কিছু যায় আসে না।
‘কিছুই না কারোরই না’ – এই বোধ কিন্তু সর্বজনীন। অথবা বলা চলে বিশ্ববাস্তবতায় আলাদা-আলাদা প্রত্যেকের বেলায় এক অকরুণ মৌল কথা। শুনি – বারবার শুনি – ‘তবু প্রাণ কেন কাঁদে রে!’ কাল হন্তারক। অস্তিত্বও পরস্পরবিচ্ছিন্ন। এইটিই নিয়তি। তবু চৈতন্যরেখায় যাত্রা। তবু যুগ থেকে যুগান্তরের পথচলা। ‘দিন শেষে’ যদি ‘ছাই’ হয় সব হুতাশে,’ তার পরেও। এরই পটভূমি তৈরি হয় বুঝি এখানে প্রথম 888sport app download apkয় –
তারপরও পুনর্বাসনের আশা! আহা যেন মোজেস! সমুদ্র পার হয়ে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতিময় দেশের মাটিতে নতুন বসতি… হয়তো কারও কারও জন্য নতুন রাজত্ব আর আমাদেরই তাহলে উচ্ছেদ, যেন উচ্ছেদ যেন উচ্ছেদ যেন… এই রাজত্ব কতদিনের প্রভু… বুদ্ধ হয়তো বলবেন, কতদিনের আর…
পাঁচশ কি বড়জোর হাজার বছর…
(প্রতিধ্বনি : ১)
মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতীকী ভুবন একটা আছে। সেখানে নিরবলম্ব মানুষের ‘উচ্ছেদ’ই বিষয়ের সবটা জায়গা দখল করে নেয়। এই মানুষ কিন্তু দেশকাল-নিরপেক্ষ। এবং তার উচ্ছেদে পরিপার্শ্ব সদাই, বিলীয়মান। তবে একটা বিষয় লক্ষণীয়। তিনি বলছেন, ‘- আমাদেরই তাহলে উচ্ছেদ; -’ এটা ‘আমার’ নয় – এক সামষ্টিক আক্ষেপ। অথচ আর সব 888sport app download apk একান্ত ব্যক্তিগত। ইঙ্গিতটা অস্পষ্ট থাকে না। ব্যক্তিচৈতন্য প্রতিটি চৈতন্যের প্রতিনিধি যেন। সবটার না হলেও এখানে এই বিষাদময় বিচ্ছিন্নতার বোধের।
প্রতিধ্বনি : ১৪ 888sport app download apkটি আশ্চর্য দক্ষতায় আমাদের জাতীয় অধ্যাপক সরদার ফজলুল করিমকে এক প্রতীকী বিশালতা দেয়। তাঁর উল্লেখ কিন্তু সামান্যই। এবং সেটিও শুরুতেই, নিতান্ত বৈশিষ্ট্যহীন গতানুগতিক বার্তা মাত্র : ‘সরদার ফজলুল করিমের জন্মদিনের 888sport apk download apk latest versionঞ্জলি।’ কিন্তু নামটির উল্লেখেই, এবং তারপরেই বিপরীতের বিভীষিকার ইঙ্গিতে, তা আর নামমাত্র থাকে না। সবাই জানি, ‘আমাদের সরদার স্যার’ এক কিংবদন্তি পুরুষ। তাঁর সততা, আদর্শনিষ্ঠা, শোষণমুক্তির শুদ্ধ মানবিক অভীপ্সা, সেইসঙ্গে তাঁর জ্ঞানের নির্মল জ্যোতি তাঁকে এমন এক বিরলতা দিয়েছে, যা একদিকে যেমন আমাদের অনুকরণের প্রেরণা জোগায়, অন্যদিকে তেমনই তাঁর দুরূহ অপশ্চর্যা তাঁকে এতদূরে এগিয়ে নিয়ে যায় যে, হতবিহবল আমরা শুধু পিছিয়েই পড়ি। সুবিধালাভের আশায় কোনো আপস তিনি করেননি। প্রখর মানুষী আত্মমর্যাদাবোধও এতটুকু বিসর্জন দেননি। এই নামের উচ্চারণেই এসব আমাদের চেতনায় ছবি হয়ে ফোটে। কিন্তু তারই অনুসরণে আসে :
ওগো অলিভ… অলিভ…. অলিভ প্রকৃতির আমোঘ জলপাই…
জলপাইয়ের বিষাক্ত নির্যাস কেমন – আমাদের সরদার স্যার এখনো মাঝে মাঝে বলে থাকেন -…
‘অলিভ – প্রকৃতির অমোঘ জলপাই’ – এটাও আমাদের এক দুর্ভাগ্যতাড়িত অভিজ্ঞতার – সেনাশাসনের – কটু কথায় প্রতীক। আমাদের তা নষ্ট করে, নষ্ট করে, নষ্ট করে! 888sport appsের অভ্যুদয়ের আগে ও বটেই। এমনকি পরেও, বারবার। সেŠভিক এসব কিছুই বলেন না। কিন্তু তাঁর প্রতীকী ধিক্কার আমাদের কানে অবিরাম বাজে :
জলপাইবনের সবুজে কখনো কখনো চোখ ধাঁধিয়ে যায়… যেন মরুভূমির দুপুর দহন; আমাদের পিতাগণ সেই দহনের অন্ধকারে মাঝে মাঝে পথ হারিয়ে ফেলেন… আমরা তাঁদের প্রতীক্ষায় থাকি, হয়তো সবুজের বন্যতা শরীরে বয়ে নিয়ে তাঁরা ফিরবেন… আর তার বিষ ঢেলে দেবেন আমাদের মাতাদের গমনাগমনে…
তফাৎটা সৌভিক ঠিকই বুঝিয়ে দেন। একদিকে ‘সরদার স্যার’ – ‘একা কুম্ভ রক্ষা করে’…; অন্যদিকে ‘আমাদের পিতাগণ’ – এক সামূহিক বিনষ্টির অসহিষ্ণু উন্মাদনা।
কবির আক্ষেপ হতাশায় ঝরে পড়ে :
প্রভু! শুধু এই বিশ্বাস নিয়ে থাকি : তোমার চোখে কিছুই এড়ায় না…
প্রত্যেক দিনের খাবার তুমি যেন প্রতিদিন দাও… প্রভু! আমাদের দেহভরা ক্ষুধা… আমরা যে শুধুই পশুর স্তরে নেমে যাই, এ আর বুঝতে বাকি থাকে না। সৌভিক কিন্তু তাঁর ঘৃণা উপড়ে দেন কাব্যিক সংযম এতটুকু ক্ষুণ্ণ না করে। প্রতীকী ব্যঞ্জনাতেও এ আমাদের মনোযোগ কেড়ে নেয়।
এখানে অন্য 888sport app download apk বেশিরভাগ একান্ত আত্মকেন্দ্রিক। তার বিবিক্তিবোধ, ক্রমহ্রাসমান অস্তীতির নীরব হাহাকার, উদাসীন বাস্তবতার উদ্দেশ্যহীন অভিঘাতে বারবার পরাজয়, এসবেরই কাব্যিক সংহতি আমাদের চেতনায় নাড়া দিয়ে যায়। আবেগের উচ্ছলতা কোথাও নেই। পরিমিতিবোধে আত্মকরুণাও সংযত থাকে। যদিও তার আর্তি আমরা বুঝে উঠি ঠিকই। আমাদের অনুভবের সীমাকেও তা প্রসারিত করে। আমরা তার শরিক হই। যখন পড়ি, ‘ – আমার তাড়না, আমাকেই মুখ ফিরিয়ে রাখে – চিরজীবন নির্ভরতাহীন… (স. রায়হান : ২), অথবা, ‘কারো সাথেই পাল্লা দিতে পারি না/ মুন্ডুহীন লাশ হয়ে শুধু সারাদিনরাত বিছানায় শুয়ে থাকি (প্রতিধ্বনি : ৩৬), কিংবা ‘- দুচোখ ফাঁকা আকাশ দিকবিদিক/ হা-হুতাশ নেই/ ভারী বুকে’ বিনীত দিন যায় (প্রতিধ্বনি : ৩৩), বা এই রকম আরো সব মর্মছেঁড়া পদাবলি, তখন তারা সরাসরি আমার বুকেই ঘা মারে। বাস্তবের প্রেক্ষাপট মিলিয়ে তাদের সত্যতা আমাকেও গ্রাস করে। নিছক কথার কথা কিন্তু তারা থাকে না। মন্ত্র ও নয়। কল্পনায় ছবিতে, চেতনায় মিলে শুদ্ধ 888sport app download apkই। এবং শুধু 888sport app download apk। বাড়তি বাগ-বিস্তারে তার জায়গা-জমির ফিরিস্তি দেওয়া, তার দিকে নজরকাড়া, এতটুকু নেই।
এই যে বিরূপ বিশ্বের মানচিত্রে নিঃসঙ্গ 888sport slot game, আদি-অন্তে যার নিঃসীম-নিরাসক্ত- নির্মমতা ছাড়া হাতে জমে না কিছুই, এইটিই কিন্তু 888sport app download apkয় একমাত্র হয়ে থাকে না; যদিও বিষয় হয়ে আসে বারবার, – নিরাকৃতিতে ধরা পড়ে নিদ্রাহীন অন্ধকার কালো কালো রাতে। এরই খাঁজে-খাঁজে লেগে থাকে তাঁর জারুলের গল্প, তাঁর ‘মধুরপুরে রায়হানা’র স্বপ্ন-কল্পনা। যদিও এরা পরাভব মানে; তবু থাকে। কুটি-কাটা ঝরা পালকের মতো। এবারও প্রতীকই। বোধহয় জানাতে চায়, মায়াও মূল্যহীন নয়। সর্বব্যাপ্ত অর্থহীন বিরাও তা মাথা তোলে। জীবন যাপিত হয়। হয়ে চলে।
এই সবকিছু বিসর্জন দেন কবি বাতাসেই। ছায়াহীন-কায়াহীন-দিগন্তহীন বিস্তারে। নির্বিকল্প নির্বাণ বুঝি এমনটিই। বাতাস তার সমস্তটা নিশ্চিহ্ন করবে। নাস্তিত্বের পরিপূর্ণতায় তা মিশে যাবে। কিন্তু থাকবে! হাওয়ায় হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে তার পরিচয়। জীবন বাস্তবের তুচ্ছতা তারই প্রতিবিম্ব এঁকে চলবে। অথবা তারই অভিসারী হতে চাইবে। বাতাসে বিসর্জন এই অবধারিতের মুখোমুখি যেন আমাদের দাঁড় করায়। 888sport app download apkর অন্তর্গত বিপন্নতা, অথবা তাতে অকরুণ আত্মবীক্ষা তার সমে এসে পরিণতি পায়।
তবে অন্য আরেকভাবেও বিষয়টি বোধহয় দেখা যায়। এটা মনে এলো 888sport app download apkগুলো সৌভিকের বলেই। তিনি যে ত্রিশোত্তর বাংলা 888sport app download apkয় অধ্যাত্মচেতনার ওপর গবেষণা করেছেন – এই নামে বইও আছে তাঁর – তাতে দেখি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি অমিয় চক্রবর্তীকে। কোথায় যেন মনের মিল একটা তৈরি হয়ে যায়। বাতাসে বিসর্জনের আপাত নেতি কি প্রচ্ছন্নে অগ্রজ কবির ক্যানভাসে অাঁকা ছবির রেখাকেও একটু-আধটু অনুসরণ করে না?
অমিয় চক্রবর্তীর ‘হাওয়া’ 888sport app download apkতে পড়ি, সৌভিকও পড়েন :
শূন্য আর হাওয়ার সম্বন্ধ
তাই নিয়ে জীবন আজীবন মাটির তারায়;
মুহূর্তে মুহূর্তে হাওয়ার সঙ্গে সম্বন্ধ আজীবন।
আরো মুগ্ধ হই এখানে :
প্রাণ প্রকাশের আকাশ। এবং ছন্দ। এবং গতি। আশ্চর্য \
শুধু হাওয়া নয়, জল, মাটি, আগুন, আকাশ, এদেরও কাব্যিক অনুভূতির বিস্ময়ের স্পন্দন ধ্বনিত হয় অমিয় চক্রবর্তীতে। সব মিলে পঞ্চভূত। জীবনের মৌল উপাদান। আবার সেসবেই বিলয়। তবে সেখানেও কেন্দ্রভূমিতে বাতাস। সৌভিক ছান্দোগ্য উপনিষদ থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। ‘বিসর্জনে’র ব্যাপারটা ঈশোপনিষদে আরো স্পষ্ট। – ‘প্রাণবায়ু অনিলে অমৃতে, মিলিয়ে যাক। হে মনের আগুন, আমি যা করেছি যা করতে চেয়েছি সব কিছু 888sport app download for android করো। (ঈশ, ১৭) (বিষ্ণু দে-র ‘ক্রেসিডা’ 888sport app download apkয় ভিন্নভাবে এর ছায়া আছে।) তাই বাতাসে বিসর্জনে ‘নাই’ হতে চাওয়া – ‘নাই’ করে দিতে চাওয়া – অন্তিমে জীবনের উৎসেই ফিরে আসে।
তারপরও এর বিষাদ কিন্তু মুছে যায় না, বিইং অ্যান্ড নাথিংনেসের অন্তহীন টানাটানি, অপরিমিত বাসনা আর মৌলিক তুচ্ছতা নিয়ে নিরন্তর ছোটা, সময়ের আগ্রাসনে অবিরাম ক্ষয় ও তার কাছে আত্মসমর্পণের পরও অবমাননা থেকে, অবলুপ্তি থেকে মুক্তির আকুতি, এগুলো ব্যক্তির অসহায়তা বাড়ায়। তাকে ক্লান্ত-ক্লান্ত-ক্লান্ত করে। সৌভিকের 888sport app download apkগুলোয় তা আমাদের গ্রাস করে। আমরা রেহাই পাই না। কিন্তু আত্মদর্শনও আমাদের ঘটে। এবং তা শুদ্ধ 888sport app download apkর মুকুরেই।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.