বাস্তবতার মাত্রাবিচার : 888sport alternative linkে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

888sport live football বাস্তবধর্মী, লেখক পুরোপুরি বাস্তববাদী, এ-জাতীয় কথা শুনে আমরা অনেকেই অভ্যস্ত। এমন বলাতে বিতর্ক বা বিভ্রান্তি জাগে না। চেনা ছকে live chat 888sportের-দ্রম্নততায় মনের আয়নায় তার গড়ন বা বৈশিষ্ট্য ভেসে ওঠে। প্রত্যাশার জায়গাটাও। পড়ার পর মিলিয়ে নিতে পারি, তৃপ্তি বা অতৃপ্তিতে যোগ-বিয়োগ কতটা। অবশ্য তা মনোজগতের ব্যাপার। প্রত্যক্ষ্য ইন্দ্রিয়নির্ভর কোনো মাপকাঠি তার মেলে না। তবু ধারণা করা চলে। প্রত্যেকের আলাদা-আলাদা। তারপরেও সাধারণ স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতি একটা তৈরি হয়। যাঁরা সমঝদার, তাঁদের মতামতের ভূমিকাও থাকতে পারে। প্রভাব তার কম নয়। বিশেষ করে সাধারণ পাঠক-পাঠিকাদের ওপর। নিজেদের উপলব্ধি তাঁরা মিলিয়ে নেন। কখনো-বা সারবস্ত্তর অথবা কলাকৌশলের হদিসও তা দেয়। তবে অদ্বিতীয় নাও হতে পারে। এক-একজনের চোখ পড়ে এক-এক জায়গায়। তাতে 888sport live footballের বাস্তবেরও বহুমাত্রিক বা বহুমুখী হয়ে পড়া সম্ভব। লেখকের সচেতন অভিপ্রায়কে তা অনুসরণ করতে পারে, না-ও পারে। শুধু বাস্তবতার বিচারে নয়, 888sport live chat-888sport live footballের যে-কোনো মাধ্যমে যে-কোনো বিষয়ের বেলাতেও। এখানে কিন্তু আর কিছু নিয়ে ভাবছি না। বাস্তবতার ব্যাপারটাই শুধু বোঝার চেষ্টা করছি। তার অনুসরণে বিশেষ এক অসামান্য কথা888sport live footballিকের সৃষ্টিকলাতেও চোখ রাখছি।

 

বস্ত্তবাদী বা বাস্তববাদী বলায় সাধারণত বুঝি, জগৎ-সংসারে যা যেমন ঘটে, শুধু সেখানেই চোখ রেখে সম্ভাবনার নানা দিক বিচারে এনে যাঁরা ওই সীমাতেই আপন আপন কথা বা কাজ ফুটিয়ে তোলায় প্রাধান্য দেন, পছন্দের জায়গাটা খোঁজেন, তাঁদের অকল্পনীয়-অদৃশ্য কোনো শক্তিকে তাঁরা নিয়মত্মার আসনে বসিয়ে চেতনায় তারই প্রতিফলিত শুভাশুভের বার্তা অলঙ্ঘনীয় মনে করেন না। স্বপ্নের জাল বুনে তাকেই আদর্শায়িত করে জীবনচর্চায় অর্থ খোঁজেন না। মানবভাগ্যের রূপরেখাকে তাঁরা দেখেন সামগ্রিকভাবে তারই কর্মফলের বৃত্তে। এবং এই কর্ম বিকাশ-ও-প্রসারমান ক্রমাগত রূপান্তরের ধারা বেয়ে। দ্বান্দ্বিক প্রেক্ষাপট যদি তৈরি হয় বস্ত্তজীবনে, তবে তা সমাধানের ও নতুন পর্যায়ে উত্তরণের চাবিকাঠিও খুঁজতে হয় ওই বস্ত্তজীবনে। মানুষই খোঁজে। পেছনে থাকে তার জীবসত্তার তাড়না। এই তাড়না তার মৌলিক বিশেষত্ব। প্রকাশমানতায় মর্ত্যভূমির প্রাণিজগতে অনন্য। এবং তার দৃষ্টিকোণ থেকেই বাস্তবকে দেখা – বাস্তবতার পথরেখা খোঁজা। স্পষ্টত তা ইহবাদী। অলৌকিক পরম কিছুতে আস্থাহীন। ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ, উন্নয়ন-উত্তরণ, – এদের ধারণা ক্রমবিকাশমান তার উদ্যোগ ও পরিণামফলের ধারাবাহিক বস্ত্ত-অভিজ্ঞতা থেকে। অতীতের অর্জন ও বিফলতা, দুটোই তার যে-কোনো বর্তমানে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিভূমি। সেখান থেকেই তার করা এবং হওয়ার প্রেরণা খোঁজা, অথবা বর্তমানেই নিশ্চিন্ত থেকে স্থবিরতাকে প্রশ্রয় দেওয়া। ভাবনাজগৎ তার সঙ্গে তাল মেলায়। চলমান জীবনের কর্মকা– তার নির্ভুল ছাপ পড়ে। মানুষের এই কর্ম ও ভাবনাই বস্ত্তবাদ বা বাস্তববাদের চর্চাভূমি। তা সম্পূর্ণত ওই মানবকেন্দ্রিক। যদিও তার পরিপার্শ্ব – বিশ্বভূমিতেই কাছের এবং দূরের – প্রাসঙ্গিক।

মানুষকে কেন্দ্র করে, অথবা তার ওপর নির্ভর করে যে কর্মকা-, আর তা থেকে যে সম্পর্ক-সম্বন্ধের জটাজাল, জীবনচর্চা ও
জীবন-অভিজ্ঞতা, এদের এক কথায় যদি বলি ‘বাস্তব’ তবে, অনুমান, প্রত্যেকেই এসব থেকে বিষয়টির ধারণা একটা করে নিতে পারবেন। কারণ, এমন পরিম-ল ও তার পরিসরের ভেতরেই তো সবার বসবাস। তথ্য হিসেবে একা-একা অনপেক্ষ বাঁচা ‘সম্ভব’ হলেও তা মানব-বাস্তবতার প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই বহুজনের সঙ্গে আপন আপন অভিজ্ঞতা থেকেই প্রায় প্রত্যেকে বিষয়ভাবনার কোনো আদল মনে মনে ছকে নিতে পারেন। এ নিয়ে কারো বাড়তি মাথা ঘামাবার প্রয়োজন পড়ে না। ধরে নিতে পারি, এমনটিই স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত। কিন্তু এতেই কি ওই বাস্তবের ধারণা কার্যকরভাবে গ্রহণযোগ্য
হয়? আমরা জানি, কোনো দুজন মানুষ একরকম নয়। প্রত্যক্ষের আচার-আচরণ শব্দ-গন্ধ-স্পর্শকলায় অভিন্ন হলেও দুজনের ভেতর একই সাড়া কদাচিৎ জাগে। পৃথক বলে তাদের জীবনযাপনে আপন-আপন প্রত্যাশার জগৎ একমুখো হলেও খাপে-খাপে মিলে যায় না। তাহলে এই বিশ্বে যেখানে যত মানুষ আছে তাদের চেতনায় বাস্তবের রূপ প্রত্যেকের আলাদা-আলাদা। এমনকি একই সময়ে একই অভিজ্ঞতার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়ে দুজন তার বর্ণনা দিলে হুবহু একই কথা তারা বলবে, তার সম্ভাবনা
নিতান্তই ক্ষীণ। আমরা কেউই কোনো ঘটনার পুরোটা দেখি না। দৃষ্টি-নিক্ষেপে সীমাবদ্ধতা আছে। মনোগঠনে ও মনোসংযোগে প্রত্যেকের নিজস্বতা আছে। আপনা থেকে তারা সক্রিয় থাকে। পছন্দ-অপছন্দের, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের একটা কাঠামোও তৈরি হয়। বহু মানুষের সংযোগের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া তাকে বিচিত্র করে। জীবন থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতায় রহস্যময়তাও মিশে থাকতে পারে। হতে পারে তা বহুমাত্রিক। এমনকি বহুমূলদ। ‘হাঁ-না’র মাঝখানে,
অথবা, তাদের বিভিন্ন অনুপাতে একত্রে তার অবস্থান, বা স্থান পরিবর্তন। সেইসঙ্গে বহু কৌণিক সত্য-মিথ্যার রূপ বদলায়, রং বদলায়।

বাস্তবের সীমা পেরিয়ে অতিপ্রাকৃত-অতিলৌকিক-আধ্যাত্মিক জগৎ। একটু খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যায়, তা মানুষেরই সৃষ্টি। মৃত্যু-লাঞ্ছিত সীমিত জীবন, ব্যক্তিগত বিচারে অন্তিমে নিশ্চিহ্ন হবার অনিবার্যতা, চাওয়া-পাওয়ায় অতৃপ্তি, এসবের দুঃসহ ভার থেকে সান্তবনা ও মুক্তির আকুলতা অতি স্বাভাবিক। কল্পস্বর্গ রচনা করে মানুষ পারলৌকিক আশ্রয় খোঁজে। তাতে অপরিমেয় মূল্য আরোপ করে তারই প্রতিফলিত নির্দেশনায় পার্থিব কর্মকা– ভালো-মন্দর হিসাব কষে। বহুজনের ইচ্ছার সমন্বিত তাগিদ, – যদিও চূড়ান্ত বিচারে, ভিত্তিভূমি গুণাতীত শূন্য এবং নির্বাণও ওই শূন্যেই, – দৃশ্যমান-পরিবর্তমান ইহজাগতিক স্থান-কালশাসিত মানব-কর্মকলায় মূল্য আরোপের বিরতিহীন প্রয়াস অনিবার্য বাধ্যতায় দুঃখ-সুখের গণনাতীত ধারায় চালু রাখে।

অতএব, আধ্যাত্মিক জগতের নির্মাণ প্রকৃতপক্ষে বাস্তব জগতেই। এবং তা মানবচেতনাসম্ভুত। তবে তা দেশ-কাল নিরপেক্ষ নয়। পৃথিবীতে স্থলভাগের বিস্তার বিবিধ বৈচিত্র্যে আকীর্ণ। স্বয়ং প্রকৃতি কোথাও কৃপণা, কোথাও বা মুক্তহস্তা। স্বাভাবিক আয়োজনে কোথাও ধরণি শস্যশ্যামলা, অন্য কোথাও ঊষর-নির্দয়া। নদীমাতৃক দেশ ও দিকচিহ্নহীন মরুবিস্তার বা তৃণভূমি মানবচিত্তে একই রকম আক্ষেপ বা অভাববোধ জাগায় না। অধ্যাত্ম বা নাসিত্মত্ব ভাবনাও ফলে হয়ে পড়ে অন্তর্জাত স্বপ্নকামনার বিভিন্নতায় বিচিত্র। তবে প্রত্যেকটিতেই থাকে আপন-আপন ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ুর প্রভাব।

প্রাচীন 888sport live footballে বা 888sport live chatকলায়, বিশেষ করে রূপকথায় বা পটচিত্রে, আমরা যদি কল্পনার উদ্দাম বিস্তারই শুধু দেখি, এবং মনে করি, তা অনর্থক-অযুক্তির আলস্য-বিলাস, তবে মনে হয় দেখায় ও পড়ায় আমাদের ফাঁক থেকে যাবে। মানবচিত্ত ওই সময় কী চেয়েছে, কী পেয়েছে, তার হিসাব-নিকাশ পুরো হবে না। আজকাল নৃতত্ত্ব পাঠে কালের বাস্তবতা বোঝায় এদের গুরুত্ব বেড়েছে। অবশ্য সেসবে যুক্তির সীমা পেরিয়ে মানবচিত্তের আনন্দময় অভিযাত্রা আকর্ষণ হারায় না। তবে সে-ই একমাত্র নয়।

বাস্তবতার উন্মোচন, অনুমান, অন্য বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে এখনো অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। এ হলো 888sport promo codeজীবনের প্রকৃতস্বরূপ উদ্ঘাটন। তারা শুধু মেয়ে হিসেবে কী চায় কেন চায়, এটা আমরা জানি না। জানবার উপায়ও কিছু দেখি না। রবীন্দ্রনাথ আক্ষেপ করেছিলেন, ‘888sport promo codeকে আপন ভাগ্য জয় করিবার/ কেন নাহি দিবে অধিকার/ হে বিধাতা?’ আসলে ‘বিধাতা’ অদৃশ্য কোনো শক্তি নয়। যদিও তাকে সাক্ষীগোপাল করে মানুষই যুগ-পরম্পরায় তার কীর্তি-অপকীর্তি রচনা করে চলেছে। যদি ধরে নিই আপন-আপন প্রেক্ষাপটে, অভীষ্ট লক্ষ্য প্রতিটি সময়ে সমূহ জীবনের উদ্বোধন, তবু সব মিলিয়ে 888sport promo codeজীবনের কুশল-কল্যাণ ও সার্থকতা সভ্যতার ধারাবাহিকতায় আজো আর নিজস্ব আকাঙক্ষার অনপেক্ষ রূপায়ণ নয়। পরিবার থেকে গোটা সমাজে প্রত্যাশার বিকাশ পুরুষ ভাবনাকেই অগ্রাধিকার দেয়। বড়জোর সহায়ক ভূমিকা মেয়েদের। এবং এই অভ্যাস যুগ-যুগামেত্মর ধারায় একরকম অপ্রতর্ক্য। তা এতটাই যে সর্বত্রই পারিবারিক ক্রিয়াকর্মে এই অধীনতার সম্পর্ক শক্ত হাতে বজায় রাখার দায়িত্ব নানা সংস্কারের মায়াজালে বাঁধা থেকে স্বেচ্ছায় পালন করে মেয়েরাই। এইটিই পায় গৌরবের টীকা। তাকে অবলম্বন করে গড়ে ওঠে সমাজ-সংসারের বিচিত্র সৌধ। কল্যাণ ও সুন্দরের রূপকল্পনায় এবং পারস্পরিক জীবনচর্চায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার অভিলাষে প্রেয়-ভাবনার মূলবিন্দুতে থাকে এমনটি। ভালো-মন্দর বিচার টেনে একে দেখা অনুচিত। শুধু বলবার, মেয়েরা নিজেদের সত্তার গভীর থেকে কী চায়, তার পুরোটা আমরা জানতে পারি না। হয়তো প্রত্যক্ষের রূপ ও কর্মকলার সর্বোত্তমের চাহিদা মেয়েদেরও আলাদাভাবে তা জানায় না। তবু হঠাৎ হঠাৎ মায়ার আড়াল ঘুচে যায়। আমরা মীরাবাঈয়ের কথা শুনি। রবীন্দ্রনাথের ‘স্ত্রীর পত্র’ পড়ি। কিন্তু জীবনযাপনের অভ্যাস পছন্দসূচিকে ভিন্ন বৃত্তে ঠেলে। সমাজ সংহত হয় তাতেই। আমাদের ধারণা, বা জানা অনেকটাই ফাঁকা থেকে যায়। বিবিধ বৈচিত্র্যের সম্ভাবনা অবশ্য তারপরেও ফুরোয় না। মূল্যবোধের ধারাবাহিকতায় পুরুষের সাপেক্ষে 888sport promo codeভাবনা যেভাবে বিবর্তিত হতে থাকে, তাতে চমৎকৃত হবার উপাদান বেড়ে চলে বইকি! তারপরেও 888sport promo code-বাস্তবতা সম্ভবত বেশির ভাগই প্রস্ফুটিত হয় না। কতটা তার আন্দাজও করতে পারি না।

হয়তো পুরুষ-ভাবনাতেও ঘাটতি আছে। কিন্তু আপন-আপন প্রকৃতি ও পরিবেশে এ-ভাবনা তার নিজের গড়া। তাই মূল্যবোধ গড়ে তোলায় এবং ক্রিয়াকর্মে-আচরণে তার যদি কোনো অভাব থাকে, অথবা বিকৃতি, – তবে তার দায় তারই। সম্ভাবনার গতিরেখা –  ব্যক্তিক ও সামূহিক – অনেকখানি স্পষ্ট। বহু বিভিন্নতাকে জায়গা দিয়ে প্রত্যক্ষের মানচিত্রে তার বাস্তব বিন্যাস আঁকা চলে। যদিও নিশ্চয়তার দাবি অনর্থক। প্রাথমিক বিন্দু ও সীমাশর্তের বিভিন্নতা তাকে নানাভাবে দেখাতে পারে। তবে তা গুটিকয় মাত্র। এবং সবই বাস্তবের দর্শনযোগ্য পরিসরে। সম্ভাব্যতার বিস্তার কিন্তু অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জুড়ে। যা হয়নি কিন্তু হতে পারত এবং বর্তমানের ওপর দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতে যা কিছু হতে পারে, এ-সবই আসে
স্থান-কালনির্ভর এই বাস্তবের পরিপ্রেক্ষণে। পুরুষের পরিবর্তমান কর্মকা- এখানে যতটা স্বয়ংশাসিত হয়ে আমাদের অভ্যস্ত চোখে ধরা দেয়, অথবা দেবার সম্ভাবনা জাগায়, মেয়েদের প্রকৃত বাস্তবতা আমরা সেভাবে আন্দাজ করতে পারি না। অভ্যাসে লালিত ধ্যান-ধারণাই এখানে প্রবল। অনুমান ও সিদ্ধান্ত, দুই-ই খ–ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা। এবং মেয়েরাও সাধারণত প্রত্যক্ষ জীবনাচরণের বিধিবিধানে অভ্যস্ত হয়ে তাকেই পরমার্থিক বলে মেনে চলে।

আমরা জানি পঞ্চভূতের সমাহার ধরাধামে বিপুল বস্ত্তরাশির সৃষ্টিকলায় আদিম পৃষ্ঠভূমি রচনা করে। শুরুতে শুধুই অণু-পরমাণুর নিয়ন্ত্রণহীন বিপুল বিক্ষেপ। একসময় আপন তাগিদে শুরু হয় তাদের কারো কারো পারস্পরিক সংযোগ জরায়ন ও ঘনীভবন।  এই বিশ্বে রসায়ন প্রারম্ভিক চেহারায় দেখা দেয়। মূলে থাকে স্থান-কাল-গতি-পদার্থ-আলো ও মাধ্যাকর্ষণ। সবই অনন্ত-অকল্পনীয় ভরের শূন্যাবস্থায় মহাবিস্ফোরণের ধারাবাহিক পরিণাম। বিস্ফোরণটি ঘটে সাড়ে তেরোশো কোটি বছরেরও আগে। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রাণের উদ্ভব তার লক্ষ-লক্ষ বছর পরে। আজ থেকে প্রায় দু-লাখ বছর আগে ক্রমান্বয় বিবর্তনের পথে দেখা মেলে মানুষের। আর যাকে বলি মানব-সভ্যতা, তারা প্রাথমিক চেহারা বড়জোর সত্তর হাজার বছরের প্রাচীন। মানবচৈতন্যের অগ্রাভিযান তখন থেকে। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের ও মানুষের সঙ্গে মানুষের নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম ও সহযোগের এই পথচলা তার ভাগ্যলিপি। ভাগ্যের নিয়মত্মাও এই বাস্তবতা।

কথাটা একটু বিশদ করার চেষ্টা করি। অনাদিকালে শূন্যাবস্থার বিস্ফোরণ স্বয়ংক্রিয়, একে অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। তেমনটি করতে গেলে ওই শূন্যাবস্থার বিপরীতে অনুরূপ কোনো কিছুর স্বয়ংশাসিত অবস্থান মানতে হয়। সুস্থ মসিত্মষ্কে কোনোভাবেই তাঁর ব্যাখ্যা মেলে না। বরং বিশ্বব্রহ্মা–র অন্তর্জাত শৃঙ্খলা ও প্রবণতা সমস্তটা নিয়ে তাকে গতিশীল ও প্রসারমান রেখেছে, এমনটিই নিরাবেগ বিচারে অকাট্য বলে জ্ঞানকামেত্ম প্রতিষ্ঠিত। কাছে-দূরে
চন্দ্র-সূর্য-গ্রহতারকার মহা-আয়োজনে এই পৃথিবীর অবস্থান বিন্দুবৎ। তাতে প্রাণিজগতের আবির্ভাব ও বিবর্তন সমগ্রের পরিপ্রেক্ষিতে বাইরে থেকে কোনো নিরাসক্ত কৌতূহল জাগায় না। কিন্তু জগৎবাসী মানব প্রজাতির অসিত্মত্ব ও কৃতকর্মের তাবৎ প্রশ্নমীমাংসায় তা সর্বাগ্রগণ্য। অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতে মানব-অসিত্মত্ব বহমান ধরে নিলে পূর্ণ সমাধান কখনোই আয়ত্তাধীন হয় না। কারণ চিরন্তন নশ্বরতা ও চিরন্তন প্রবহমানতা তার ভাগ্যলিপি। এবং তা শুধুই পুনরাবৃত্তি নয়, পুনর্নবায়নও। প্রতিটি মুহূর্ত ভিন্ন। এই ভিন্নতার সূত্র ধরে তার জীবনলীলার প্রকাশমান live chat 888sportও অনিবার্যত পরিবর্তমান। কর্তা ও কর্ম, উভয়েতেই এখানে মানবচৈতন্যের ভূমিকা বিশিষ্ট। তা এক নয়, বহু। যখন যত মানুষ, তত। এবং এই নশ্বর মানবপ্রবাহ যুগ-যুগামেত্ম বিরতিহীন ব্যাপ্ত। এই চৈতন্যেই প্রতিফলিত হয়, – হয়ে চলে, তার বাস্তবতার স্বরূপ। যথার্থ বলে নয়। অনিবার্য সম্ভাবনারাশির প্রতিফলন ঘটে বলে। বিবিধ দ্বন্দ্বের সমাহার ঘটায় বলেও। এমনকি স্বপ্নকল্পনার চাবিকাঠিও ওই চৈতন্যের জগতে। তা থেকে শাশ্বত সত্যের অথবা, তার তত্ত্বকাঠামোর পরিশুদ্ধ নির্যাস পাই, এ-ধারণা অসংগত। কারণ, যার ওপর নির্ভর করে ওই সিদ্ধামেত্মর প্রতিষ্ঠা, তা স্বয়ং রূপ বদলায়। রূপও বহুমাত্রিক।

তাহলে বাস্তব-অবাস্তব লৌকিক-অলৌকিক, এমন বিভাজন বার্তাবহ হলেও তা ধোপে টেকে না। উভয়েই পাই মানব-চেতনার প্রতিক্রিয়া। এবং চেতনা নশ্বর মানুষের মসিত্মষ্কে বিবিধ ক্রিয়াসঞ্জাত। ওই মানুষ স্থান-কালে নির্দিষ্ট প্রকৃতি ও মানবপরিবেশে চিহ্নিত। এর কোনো বিকল্প নেই। নিপাতনে সিদ্ধ কিছু মেলে না। দিব্যজ্যোতি মানব-বাস্তবতারই অন্যতম পরিণাম।

তবে এই বাস্তবতার মাত্রাবিচার সম্ভব। দৃশ্য-শ্রম্নত ঘটনারাশি মনোজগতে বিবিধ কা–র ঢেউ তোলে। কোনোটা পরিপার্শ্বের জীবনযাপনে উত্তর-প্রত্যুত্তরে প্রত্যক্ষানুভূতির অনুপুঙ্খেও সাড়া জাগায় এবং তারই সীমায় অনুরূপ প্রতিধ্বনি তোলে। কোনোটা বা তা থেকে সরে এসে কল্পনার দিগমেত্ম ছড়ায়। বাহ্য পৃথিবীর অভিজ্ঞতায় কার্যকারণের সম্ভাব্য সব শর্ত লঙ্ঘন করা তখন অস্বাভাবিক নয়। অলৌকিকের আগমন ঘটে এভাবে। প্রত্যক্ষের চাপই চেতনায় এমন ঘটায়। অবশ্যই সবার নয়। সুশৃঙ্ঘল যুক্তিবুদ্ধির ব্যাখ্যা যাদের উৎসাহিত করে না, অথবা কোনো ঘটনার বিপুল অভিঘাত যাদের চিমত্মাকে বিপর্যস্ত করে কল্পনাতীতের দিকে ঠেলে দেয়, তাদের। কেউ-বা আবার ইহজাগতিক কর্মব্যূহে হাত-সাফাইয়ের কারসাজিতে সহজ কিসিত্মমাতের সুযোগ খুঁজে এদিকে ভেড়ে। কিন্তু একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায়, এসবই জীবিত মানুষের মসিত্মষ্কপ্রসূত। এবং ওই মানুষ বাস্তব। তার মননও একটি বাস্তব ক্রিয়া।
কল্পনা প্রতিভার সৎ অনুশীলন বাস্তবকেও সমৃদ্ধ করে। সব যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক অভিযানের পেছনে আছে সম্ভাব্য অনুমানের কাঠামো-নির্মাণ। তা কল্পনানির্ভর। এবং অনেক সময়েই দুঃসাহসী। কিন্তু তা বাস্তবতাড়িত এবং স্বয়ংসম্পূর্ণত বাস্তব। কাজেই বাস্তবতার বিপরীতে কল্পনাবিলাস, অথবা বস্ত্তবাদের বিপরীতে অধিবিদ্যা এ-জাতীয় বিভাজন মূলত অনর্থক। মনসা-কর্মনা-বাচা সব অনুশীলনই বাস্তব। কারণ, মানবসত্তা বাস্তব। যুগ-যুগ ধরে তার রচিত সৃষ্টি-অনাসৃষ্টির দায় আর কারো নয়। তবে সবকিছু একই মাত্রার নয়। কোথাও বাহ্য বস্ত্ততে, অথবা তার প্রবণতাসমূহে, মনোযোগ প্রকট, কোথাও-বা অদৃশ্য অনুভবের জগতে প্রাধান্য। দুটোই মানব-মসিত্মষ্কের কারবার। তার সবটুকুর কর্মক্ষমতা এখনো আমাদের অজানা।

এটাও সব মর্ত-প্রাণীর অনিবার্য নিয়তি, একক সত্তায় তারা প্রত্যেকে নশ্বর। কর্তা-কর্মের বিচ্ছেদ অবশ্যম্ভাবী। ব্যক্তিজীবনে চূড়ান্তপ্রাপ্তি শূন্য। তার নিজস্বতার অবসান-ফলও শূন্য। ধর্মবকের প্রশ্নের জবাবে যুধিষ্ঠির বলেছিলেন, প্রাণিজগতে (ভূতানি) প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল। তারপরেও সবার বেঁচে থাকার ইচ্ছা। এর চেয়ে আশ্চর্য কী? কিন্তু মানববিশ্বে প্রত্যেকের নিরর্থক জিজীবিষাই দ্বন্দ্বে-মিলনে-মিশ্রণে-সৃজনে মিলিত-মানুষের নিরন্তর নতুন সম্ভাবনায় অন্তহীন অবিরাম যাত্রা নিশ্চিত করে। বিপুল ধ্বংস এড়িয়ে নয়। একক ও মিলিত উদ্বেগ ও হাহাকার সঙ্গী করেই। আর
বিশ্বপ্রকৃতির বৈচিত্র্যের মতো মানবযাত্রাও বিচিত্র। একাভিমুখী নয়, বহুমুখী। এবং তাতে জানা-অজানা, যুক্তি-অযুক্তির নিশ্ছিদ্র সমাহার। ব্যক্তির নশ্বরতা অনিবার্য হলেও মানবযাত্রার তাগিদ ও প্রত্যাশা যে-কোনো ব্যক্তির চৈতন্যকে আপন জীবনের সীমাতে অসংখ্য ভাবনায়, এমন বহু বৈপরীত্যের স্বতঃস্ফূর্ত মিশ্রণে সক্রিয় রাখে। ‘আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে’ দাঁড়িয়ে ব্যক্তি তাতে সাড়া দেয়; সমষ্টির চলমানতায় সাড়া জাগায়। যৌক্তিক বা অযৌক্তিক বলে নয়। এমনটিই বাস্তব। কারণ, উৎসে মনন ও চিন্তন বস্ত্ত-সম্ভূত খ-ক্ষুদ্র মৃত্যুতাড়িত একক একক মানব-অসিত্মত্বের আপন আপন
সমাজ-সংসারের প্রত্যক্ষ পরিবেশে জীবনযাপনের ফসল। মেধার তারতম্য জৈব-নির্দিষ্ট। জন্মসূত্রে অর্জিত। এবং তা অনির্দিষ্টভাবে ছড়ানো। বাস্তব-অনিশ্চয়তারও একটা উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা থাকে। এসব মিলিয়ে মানবজীবন যেভাবে প্রকাশমান, তাতে ‘দৈব’ কোনো কারণ নয়। যদিও দৈবে বিশ্বাস এই বস্ত্তজগতেরই একটা ব্যাপার। মানুষ যেখানে কম স্বাবলম্বী, দৈবের প্রকোপ সেখানে বেশি। হয়তো দুর্বল মানুষ তাতে নিশ্চয়তা খোঁজে। কিন্তু গোষ্ঠীবদ্ধ বিকাশের আকার নিলেও তা সমূহ দুর্গতিরও কারণ হয়। তা এই মর্ত ভুবনেই মানুষের জীবনযাপন দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। কোনো অলৌকিকে আশ্রয় খোঁজা এখানে নিরর্থক। যদিও তা অনেক সময় অনিবার্য। বেঁচে থাকার বাস্তবতাই মানুষকে সেদিকে ঠেলে।

তাহলে মানববিশ্বে বাস্তবতার মাত্রা বিচারে এই বিষয়গুলোর আপেক্ষেক গুরুত্বকে বিবেচনায় নিতে হয়। তারপরেও ফরাসি ও 888sport live chat-বিপস্নবোত্তর ইহজাগতিক কর্মকা– মানুষ যেখানে, আপন উদ্যোগেই পুরোপুরি দৃষ্টি রেখে জীবনযাত্রার প্রশ্নোত্তর খোঁজে, সেখানে তাকে বাস্তববাদী বলার একটা রেওয়াজ আমাদের
888sport live chat-888sport live footballের আলোচনায় বিশেষভাবে নজরে আসে। তাতেও অবশ্য বিভিন্নতা আছে। দৃষ্টিভঙ্গি স্বাভাবিকভাবেই সবার একরকম নয়। প্রকৃতির সংযোগ প্রত্যেকের চেতনায় একই প্রতিক্রিয়া জাগায় না। দ্বিতীয়ত পছন্দ-অপছন্দের বহুমাত্রিকতা ও বাস্তবতা তাঁদের দেখায় ও দেখানোয় নানামুখী বৈচিত্র্য আনে। তাছাড়া 888sport live chatী যেখানে কর্তা, সেখানে তাঁর নিজস্বতা তাঁর প্রকাশ-ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। অভিজ্ঞতার চাপ বাস্তবের নির্মাণকে করে তুলতে পারে ইঙ্গিতময়, অসমঞ্জস বা দুর্বোধ্য। মূল লক্ষ্য কিন্তু থাকে বাস্তবের অন্তর্গত বা অন্তর্জাত এক বা একাধিক বৃত্তির, কিংবা প্রবণতার দিকে বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করা। পরাবাস্তব, অধিবাস্তব, প্রতীক বা উদ্ভট মানবচিত্তে বাস্তবের বিশেষ বিশেষ অভিঘাত দৃষ্টিরই বাহন। 888sport live chatী-888sport live footballিক যাঁরা, আপন আপন উদ্দেশ্য ও অভিরুচি অনুযায়ী তাদের কোনো কোনোটির প্রয়োগ ঘটাতে পারেন। ঘটান।

কথাগুলো একটার টানে আর একটা এসে গেল। অগোছালোই। প্রতিমার পেছনে চালচিত্র যেমন, তেমন। আসলে দেখতে চাই বাংলা কথা888sport live footballের অন্যতম দিকপাল – এবং তাঁর ধারায় অনন্য, – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঔপন্যাসিক কীর্তিকলাকে। কঠোর বস্ত্তবাদী লেখক বলে তাঁর খ্যাতি। টান-টান গদ্য। ভেজা-ভেজা আবেগের মিশেলে পাঠক-পাঠিকাদের আকর্ষণ করে জনপ্রিয় হওয়ার বাড়তি চেষ্টা তিনি করেন না। ছিলেন 888sport apkের মেধাবী ছাত্র। এই সূত্রেও জড়বাদে দীক্ষা। 888sport live football-সাধনায় তার ছাপও যেন পড়ে। তাঁর 888sport alternative linkে বাস্তবতা-প্রকাশের যে বহুবর্ণিল আয়োজন, বিহঙ্গদৃষ্টিতে তার স্বরূপের ইঙ্গিত একটু-আধটু পাই কি না, তাই এবার দেখার চেষ্টা। অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ নয়। এবং দৃষ্টি-বিভ্রম ঘটলে তা অমার্জনীয়।

তবে তার আগে একটা বিষয় খোলাসা করে নিই। আমরা সাধারণত মন্ময় ও তন্ময়, এই দুই ভাগে আমাদের বিশ্বভাবনাকে দুদিকে সাজাতে অভ্যস্ত। অনেক বিষয়ের ধারণা ও তার প্রয়োগ তাতেও সহজ ও স্পষ্টতর হয়। মানবসত্তার প্রকাশমানতার ব্যাখ্যায়, অথবা ব্যাখ্যা নিয়ে বিরোধে বা বিরোধ-নিরসনে তা কাজে আসে। এখানে আমরা তার অনুবর্তন মাথায় রেখেও যে-জায়গায় গুরুত্ব দিই, তা হলো, দুটোই বিশ্বজাগতিক। মানুষ ও মানবচৈতন্য
এই বাস্তবতারই অন্যতম পরিণাম। স্থির নয়। ক্রমবিকাশমান। বিরোধ-মীমাংসার অথবা অমীমাংসার অসংখ্য ধারা তাতে প্রবহমান। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব-অভীক্ষা। বিচ্ছিন্নভাবে নয়। সংশিস্নষ্ট হয়ে। মৌলিক বা মায়া, এমন প্রশ্ন অবান্তর। উভয়ের উদ্ভাসই, চিমত্মায় বা কর্মে, বাস্তব। কোনোটিই অলৌকিক নয়। বরং অলৌকিকের উৎসও লোকায়ত বাস্তব। ব্যক্তিজীবনের নশ্বরতা ও সম্ভাবনার অসীমতা তাকে কল্পনায় লালন করে। যেমন লালন করে 888sport live chat-888sport live football ভাবনাকে। তাদের রূপকলা আমাদের মনে সাড়া জাগায়।

 

 

দুই

চিমত্মায় ও কর্মে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বস্ত্ততান্ত্রিক, এ-কথাটি সর্বজনগ্রাহ্য। স্বল্পায়ু, কিন্তু একটা পূর্ণবৃত্তের 888sport live footballিক জীবনে (১৯০৮-৫৬) পারম্পর্যহীন ভাবালুতাকে তিনি কখনো প্রশ্রয় দেননি। ফাঁপা আবেগে তাঁর অ888sport apk download apk latest version ছিল। শুরু থেকেই। আরো দীর্ঘায়ু হলে কী হতো, বলা যায় না। বিড়ম্বিত, বিধ্বস্ত জীবনের অন্তিম দশায় তিনিও অতিপ্রাকৃতে ভরসা খুঁজেছিলেন। সৃষ্টিকলায় অবশ্য তা ছাপ রাখার সময় পায়নি। একদিক থেকে নিষ্ঠুর শোনালেও ভালোই হয়েছে। আত্মখ-নের পরাজয় তাঁকে মানতে হয়নি। যত কথাই উঠুক, 888sport live footballে তাঁর আপোসহীন চারিত্র্য অটুট থেকেছে। অবশ্য তাতে বাঁক-বদল আছে। তা তাঁরই মননসিদ্ধ যৌক্তিকতায় সুচিন্তিত। পার্থিব লাভ-ক্ষতির, এমনকি জনপ্রিয় হবার বা থাকার প্রলোভনে তিনি গা ভাসাননি। 888sport live football, শুধু 888sport live football হিসেবে তাঁর কাছে চূড়ান্ত ছিল না। ছিল তাঁর নিজস্ব যৌক্তিক সমতায় চূড়ামেত্ম পৌঁছুবার অবলম্বন। লক্ষ্য যথার্থ ছিল কি না, শুদ্ধ 888sport live footballিকের মুক্ত দৃষ্টি প্রতিহত হয় কি না, এ-প্রশ্ন উঠতে পারে। তিনি তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। আপন প্রত্যয়-ভূমিতে অবিচল থাকেন।

বাংলা কথা888sport live footballের ইতিহাসে যাঁদের কৌতূহল, তাঁরা প্রায় সবাই জানেন, এই এলাকায় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবেশ ছিল নিতান্তই আকস্মিক। কোনো পূর্বপরিকল্পনা নিয়ে তিনি আসরে নামেননি। ছিলেন 888sport apkের উৎসুক ছাত্র। ১৯২৮ সালে অঙ্কে অনার্স নিয়ে পড়ছেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। পরে, ১৯৪৫ সালে, ‘গল্প লেখার গল্প’ নামে এক কথিকায় নিজেই জানাচ্ছেন, ‘… অঙ্কের মত এমন আর কি আছে? এত জটিলতায় এমন চুলচেরা নিয়ম! রসায়ন ও পদার্থবিদ্যা তো অভিনব কাব্য – ছ্যাবলামি, ন্যাকামি, হালকা ভাবপ্রবণতার চিহ্নও নেই। ক্লাশে বসে মুগ্ধ হয়ে লেকচার শুনি, লেবরেটরিতে মশগুল হয়ে এক্সপেরিমেন্ট করি : নতুন এক রহস্যময় জগতের হাজার সংকেত মনের মধ্যে ঝিকমিকিয়ে যায়। …’ বোঝা যায়, 888sport live footballিক হবার কোনো লাজুক স্বপ্নও তখন তাঁর ভেতরে গজায়নি। কিন্তু এইখানেই ঘটে বাস্তবে অনিশ্চয়তার এক অমস্নমধুর খেলা। সবার জীবনেই এমন কমবেশি ঢেউ তোলে। প্রতিভার ও সম্ভাবনারাশির তারতম্যে কোনোটি আমাদের চমকে দেয়। অধিকাংশই যদিও অভ্যস্ত জীবনযাপনে দোলা দেয়, আর মিশে থাকে। মাইকেলের বেলায় জনশ্রম্নতি, ছাত্রজীবনে তিনি বলেছিলেন, শেক্সপিয়র ইচ্ছা করলে নিউটন হতে পারতেন, কিন্তু নিউটন কোনোদিনই শেক্সপিয়র হতে পারতেন না। পরে বাজি ধরে নাকি তিনি অংকের এক কঠিন প্রশ্ন সমাধান করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঘটে উলটো। তাঁর ওই লেখাতেই পড়ি : ‘… একদিন কলেজের কয়েকজন বন্ধু 888sport live football নিয়ে আলোচনা করছে। … আলোচনা গড়াতে গড়াতে এসে ঠেকলো মাসিকপত্রের সম্পাদকদের বুদ্ধিহীনতা, পক্ষপাতিত্ব, দলাদলি-প্রবণতা ও উদাসীনতায়। নামকরা লেখক ছাড়া ওরা কারুর  লেখা ছাপায় না। দলের লেখক হলে ছাপায় – ব্যস। অন্য কেউ পাত্তা পাবে না। … তর্কে আমার চিরদিনের বিতৃষ্ণা। অবিবেচক ছেলেটার অন্যায় মন্তব্যে বড় রাগ হলো। বললাম, ‘কেন বাজে কথা বক্ছো? …’ তর্ক বেশ জমে ওঠে। … ‘অনেক কথা কাটাকাটির পর বাজিরাখা হলো। … বাজি হলো এই। আমি একটা গল্প লিখে তিন মাসের মধ্যে ভারতবর্ষ, প্রবাসী বা বিচিত্রায় ছাপিয়ে দেব। …’

তিনি বাজি জিতলেন। গল্প ‘অতসী মামী’। লিখছেন, ‘ভাবলাম, এই উচ্ছ্বাসময় গল্প, এই নিছক পাঠকের মন ভুলানো গল্প, এতে নিজের নাম দেবো না। পরে যখন নিজের নামে ভালো লেখা লিখবো, তখন এই গল্পের কথা তুলে লোকে নিন্দে করবে। এই ভেবে বন্ধু কজনকে জানিয়ে, গল্পে নাম দিলাম ডাকনাম – মানিক।’ আরো যোগ করলেন, তাঁর সীমাবদ্ধতা বোঝাতে, ‘কল্পনাশক্তি একটা ভালো ছদ্মনামও খুঁজে পেলো না।’

কিন্তু এই নামটিই বাংলা কথা888sport live footballের প্রকাশের ধারায় প্রবল পরাক্রমে স্থায়ী হয়ে গেল। তিনিও অংক, রসায়ন-পদার্থবিদ্যার জ্ঞানকা- থেকে অখ- মনোযোগ তুলে নিয়ে 888sport live footballের দরবারে চিরস্থায়ী আসন পাতলেন। গল্পটি ছাপা হয়েছিল বিচিত্রাতে। দয়া করে করুণা জাগিয়ে নয়। প্রাপ্য সম্মানী দিয়ে আগ্রহের সঙ্গে। তাঁর জীবনপথও আকস্মিক মোড় নিল। ‘তারপর সব ওলোটপালট হয়ে গেল।’ তিনি জানাচ্ছেন, ‘সব ছেড়ে দিয়ে আরম্ভ করলাম লেখা।’

মধুসূদনের সঙ্গে উলটো মিলের কিন্তু এইখানেই অবসান। ইচ্ছা করলে অংকও তিনি ঠিক-ঠিক করতে পারেন, এটা জাহির করেই মধুসূদন প্রবল বিক্রমে 888sport live footballে ফেরেন। বিপন্ন জীবনেও প্রতিভা তাঁর পূর্ণতা পায়। কীর্তি অক্ষয় হয়। অন্যদিকে মানিক ঝোঁকের মাথায় গল্প লেখার পর তারই টানে 888sport live footballে পাকাপাকি থিতু হন। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা আর এগোয় না। অনিশ্চিত, বিপর্যস্ত, দারিদ্র্য-লাঞ্ছিত সাংসারিক জীবনের দুর্দশা অবশ্য তাঁকেও ক্ষতবিক্ষত করে। তবে তাঁদের দুজনের কীর্তিই পূর্ণতা পায়। কোনো নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত রেখে পার্থিব জীবনরেখায় তাঁদের সমাপ্তি ঘটেনি। যদিও দুজনের বেলাতেই তা ছিল অকরুণ ও অনাকাঙিক্ষত।

অংক-রসায়ন-পদার্থ888sport apkের চর্চা থেকে সরে এলেও মানিক কিন্তু সচেতন প্রয়াসে কি না জানি না, তাঁর 888sport live footballের নির্মাণকলায় ওই পাঠের নিরাসক্ত প্রক্রিয়া অনেকখানি অনুসরণ করেন, অথবা তা পরিস্থিতির বিন্যাসে আপনা থেকে মিশে যায়। খুঁটিয়ে দেখলে ধরা পড়ে, তাঁর রচনায় বাস্তবতার প্রেক্ষাপট এইভাবে আকার পায়। মানসী কাব্যের গোড়ায় রবীন্দ্রনাথ জানাচ্ছেন, ‘আশা দিয়ে ভাষা দিয়ে, তাহে ভালবাসা দিয়ে গড়ে তুলি মানসী প্রতিমা।’ আরো বলছেন, ‘রচি শুধু অসীমের সীমা।’ এও বাস্তবের স্বর ও প্রতিস্বরের অন্বয়। তা ব্যাপক ও মুক্ত। কিন্তু মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাস্তবের অনুধ্যান এমন নয়। প্রত্যয়, অনুসিদ্ধান্ত ও সিদ্ধান্ত তাঁর একরকম গাণিতিক শৃঙ্খলে বাঁধা। কল্পনার প্রবেশ ঘটে সামান্যই। এমনকি পারিপার্শ্বিকে দৃষ্টিও তেমন পড়ে না। একটি পূর্ণাঙ্গ রচনা যেন জ্যামিতির উপপাদ্য বা সম্পাদ্যের ছাঁচে ঢালা। যদিও বিষয় ও তার বিন্যাস প্রত্যক্ষ বাস্তবনির্ভর। অথবা ঘটমান বাস্তবের দর্শনযোগ্য অনুমাননির্ভর। তবে দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর নিজের। কাহিনির গতিপ্রকৃতিতে তার ছাপ পড়ে বইকি! আগেই বলেছি, একই বিষয় আমরা নানাজন নানাভাবে দেখি। এখানেও তেমন। এতে আত্মখ-ন হয় না। ভাবালুতাও প্রশ্রয় পায় না। প্রত্যয়সিদ্ধ যুক্তির ছাঁচ বরাবর অব্যাহত থাকে। তাঁর জিদটাও কিন্তু ধরা পড়ে। শক্ত সমর্থ নির্মেদ গদ্যে জোরালোভাবে তা পাঠক-পাঠিকার সমর্থন দাবি করে। কথা-কাহিনির সংলাপে হয়তো মানিয়ে যায়। কিন্তু  লেখকের বক্তব্য তাতে মিশে থাকে। তাকে আড়াল করা যায় না। বাস্তবের একটা ইঙ্গিত আমরা পাই। অথবা, হয়তো, কোনো একটা পাশ। আমরা তাতে মজতে পারি। প্রভাবিতও হতে পারি। কিন্তু পূর্ণ প্রাণের চরিতার্থতা মেলে না। না মিললেও কথা888sport live chat প্রবল অভিঘাত হানে। চেতনালোকে শিখর স্পর্শ করে। আমরা আলোড়িত হই। এবং নশ্বর জীবনে অন্তহীন
মানব-বাস্তবতায় দ্বন্দ্ব-মিলনের নিরুপায় স্রোতে বেঁচে থাকার বহুবর্ণিল আর্ত-অভিজ্ঞতায় মৌল তাড়নার অন্বেষণের একাধিক সৎ সমর্থ ও 888sport live chatিত প্রয়াসের সামনে নতজানু হই। অব্যর্থ লক্ষ্যভেদে চমৎকৃত হই বলে নয়। অনেক জায়গাতেই হই না। কিন্তু অসংখ্য অনন্বয়ের সমাধানচিমত্মাকে তিনি যে প্রবল শক্তিমত্তায় কথা888sport live footballের অনবদ্য 888sport live chatিত নির্মাণে উত্তীর্ণ করেন, সে-কারণে। কোনো ভেজাল তিনি মেশান না। ফাঁকির কারবার করেন না। ব্যক্তিসংগ্রাম যদিও তাঁকে অকালমৃত্যুর পথে টানে।

শুধু এই কথাগুলো বলাই অবশ্য যথেষ্ট নয়। বাস্তবতার উন্মোচন তাঁর 888sport alternative linkে কোথায় কীভাবে ঘটে, অথবা তাঁর দৃষ্টি তাতে কোথাও আচ্ছন্ন হয় কিনা, কালের নির্মাণ তাঁকে বিভ্রান্ত করে কিনা – এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়াও আমাদের জন্যে অনিবার্য হয়ে পড়ে। শুধু 888sport alternative linkে চোখ রাখছি। কারণ জীবনের উপামেত্ম পৌঁছে ‘888sport alternative linkের ধারা’ নামে এক রচনায় তিনি জানান, ‘সাধ করলে কবি হয়তো  আমি হতেও পারি;  কিন্তু ঔপন্যাসিক হওয়াটাই আমার পক্ষে হবে উচিত ও স্বাভাবিক।’ (১৯৫১) এরই সূত্র ধরে আরো একটা প্রশ্ন মাথায় রাখি। 888sport alternative link রচনায় তিনি পরিপার্শ্বকে রবীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন, ‘নির্বিকার তদ্গতভাবে দেখা’, ঠিক তেমনভাবে দেখেন, নাকি, – কী দেখতে চান, তা আগে মনে মনে ঠিক করে নেন। সেটাও নান্দনিক মান্যতা পেতে কোনো বাধা নয়। তবে তর্কশাস্ত্রে যাকে বলে ‘আনডিস্ট্রিবিউটেড মিডলে’র ভ্রান্তি তা ঢুকে পড়লে সরষের ভেতরেই ভূত গজিয়ে ওঠার আশংকা থেকে যায়। তারপরেও লেখার প্রতিভায় 888sport alternative link অমরত্বের দাবি করতে পারে। কিন্তু ভেতরের বিরোধাভাস কখনো কখনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে আমাদের অনুভবের অখ-তায় চিড় ধরা অসম্ভব নয়।

আগেই বলেছি, একেবারে আকস্মিকভাবে ‘অতসী মামী’ গল্প নিয়ে মাত্র বিশ বছর বয়সে বাংলা 888sport live footballের অঙ্গনে তাঁর বাজি রেখে আত্মপ্রকাশ। তার আগে, যতদূর জানি, 888sport live footballিক হবেন, এটা তাঁর মাথায় আসেনি। 888sport apkের বিপুল কীর্তি, পেছনে তার সুশৃঙ্খল পরীক্ষা-নিরীক্ষা তাঁকে টানে। মনে হয়েছিল, ওইটিই তাঁর আপন জায়গা। কিন্তু 888sport live footballে তিনি চোখ রাখেননি, এমনটি কি বলা যায়? আমরা দেখি, বন্ধুদের যে-আড্ডায় তিনি লেখক হওয়া নিয়ে বাজি ধরেন, সেখানে তখনকার প্রধান 888sport live football-পত্রপত্রিকাগুলোর মতিগতি নিয়ে তর্ক হয়। তিনি তাতে জড়িয়ে যান। আগন্তুক হয়ে নয়, অনুমান, ওইসব পত্রপত্রিকায় যেসব লেখা ছাপা হতো, তাদের সঙ্গে পরিচয় ছিল তাঁর বিলক্ষণ।  তাদের ভালোমন্দ নিয়ে একটা ধারণাও তাঁর গড়ে উঠেছিল। তা নইলে ঝোঁকের মাথায় ওভাবে বাজি ধরতে তিনি যেতেন না। পাঠক-প্রত্যাশার জায়গাটির স্বচ্ছ ধারণা তাঁর নিশ্চয় ছিল। এছাড়াও যা জানি না কিন্তু ভাবতে ইচ্ছে করে, তিনি হয়তো অবসরের অলস মুহূর্তে ওই কৈশোরোত্তরবেলায় কখনো কখনো
খাতা-কলম নিয়ে গল্প-888sport app download apkয় অন্যমনস্কভাবে হলেও হাতেখড়ি দিয়েছেন। নিশ্চিত পরিণতির কথা না ভেবে থাকলেও। এমন অনুমানের কারণ, শুরুতেই তাঁর লেখায় যে পরিপক্বতা ও আত্মবিশ্বাস ফুটে উঠতে দেখি, তার পেছনে কোনো পর্যবেক্ষণ ও অনুশীলন ছিল না, তেমনটি মানতে হলে অতিলৌকিকে আস্থা রাখতে হয়। তিনি স্বয়ং তা অস্বীকার করে এসেছেন। অবশ্য 888sport apkের কেতাবি পাঠও তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু 888sport live football-নির্মাণে তা যথেষ্ট নয়। ভাষা ও বক্তব্যের প্রয়োজনীয়, যথেষ্ট ও পরিণত সমন্বয় মেধার স্বয়ংক্রিয় বা পরিকল্পিত ব্যায়াম ছাড়া সম্ভব – এটা মানা দুঃসাধ্য। সৃষ্টি বা জ্ঞানকা- কোনোটিই আলোকিত নয়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেলাতেও নয়। তাঁর রজনী দিবারাত্রির কাব্য একই বছর, ১৯৩৫-এ প্রকাশ পায়। আগে জননী। তবে দিবারাত্রির কাব্যর প্রথম খসড়া তৈরি
১৯২৯-এ। অনেক মাজাঘষা করেন এর প্রকাশনার আগে। অনেকে একে তাঁর প্রথমদিকের অনভিজ্ঞ চপলতা বলে এড়িয়ে যান। কিন্তু এমন কিছু প্রবণতার ইঙ্গিত এতে পাই, যা পরে আরো ঘনীভূত ও স্থায়ী হয়। তাঁর মানসবৃত্তের অনেকটা আভাসও মেলে, যদিও এ তাঁর নিজের কথাতেই বাস্তবধর্মী 888sport alternative link নয়, এবং তাঁর খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠা প্রধানত প্রত্যক্ষ বাস্তবে কঠিন বৃত্তামেত্মর মর্মমূলে নিষ্কম্প-নির্মম দৃষ্টি ফেলে তাতে স্খলনের বা গোপন বিকারের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচনে যে তিনি সাহসী হন সে-কারণেই এতে তিনি মায়ার প্রলেপ জড়ান না। এও তাঁকে আলাদা করে চেনায়। আপাতদৃষ্টে দিবারাত্রির কাব্য এমন নয়।

এখানে প্রস্তাবনাতে তিনি সতর্ক করে দেন, ‘দিবারাত্রির কাব্য পড়তে বসে যদি কখনো মনে হয় বইখানা খাপছাড়া, অস্বাভাবিক, – তখন মনে রাখতে হবে এটি গল্পও নয়,  888sport alternative linkও নয়, রূপক কাহিনী। রূপকের এ একটা নূতন রূপ। একটু চিমত্মা করলেই বোঝা যাবে বাস্তব জগতের সঙ্গে সম্পর্ক দিয়ে সীমাবদ্ধ করে নিলে মানুষের কতগুলি অনুভূতি যা দাঁড়ায়, সেগুলিকেই মানুষের রূপ দেওয়া হয়েছে। চরিত্রগুলি কেউ  মানুষ নয়, মানুষের projection – মানুষের এক-এক টুকরো মানসিক অংশ।’ আসলে যে-কোনো 888sport live footballই বস্ত্তবিশ্বের নির্বাচিত প্রাণপ্রবাহের পারস্পরিক যোগাশ্রয়ী বা যৌগিক সম্পর্ক সম্বন্ধের ‘প্রজেকশন’। রূপকে যেমন, অন্য সব শাখাতেই তেমন। এ কোনো দালিলিক উপস্থাপনা নয়। কাজেই এ-কথা বলায় দিবারাত্রির কাব্যের 888sport alternative linkের সীমা লঙ্ঘন করা হয় না। ক্যালকুলাসে ফাংশন (function) বা অপেক্ষকের ধারণা আকার পায় নিউটন-ডেকার্টেসের হাত ধরে। ফাংশন থেকে ফাংশন অফ ফাংশন, সরল যোগাশ্রয়ী থেকে মিশ্র-সম্পর্ক সমীকরণ, এ-সবই বিকশিত হয়। 888sport apkে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার প্রয়োগ বিপুল। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশ্চয় এরা মুগ্ধ করেছিল। আপন 888sport live footballকর্মের অন্তস্তলে মানববাস্তবতায় ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার কাঠামো নির্মাণে তার তলদেশে এর প্রবাহ আন্দাজ করা কঠিন নয়। তা projection নয়। বরং অন্তর্দর্শন। দিবারাত্রির কাব্য তারই পরীক্ষণ-নিরীক্ষার প্রয়াস বলে মনে হয়। তবে সবটাই তাঁর কল্পনা বা বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে।

একদিক থেকে এই 888sport alternative link খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এতে মানসবৃত্তির যে ধ্যান-ধারণা প্রতিফলিত, তা যেন পরেও তাঁর কথা888sport live footballে প্রবাহিত থাকে। সাহস করে আর একটা কথা যোগ করি। গণমানুষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুব বেশি বোধহয় ছিল না। মূলত তিনি অন্তর্মুখী। তাঁর হাইপোথেসিস বা অনুমানগুলোকে তিনি লেখার টেবিলে সাজিয়েছেন। বিপুল প্রতিভার সমর্থ প্রয়োগে সে-সবে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছেন। পদ্ধতিগতভাবে এ-কাজ 888sport apkীর। তিনি তার 888sport live footballিক রূপায়ণ ঘটিয়েছেন। সিদ্ধান্ত কিন্তু অকাট্য হয় না। 888sport live chat-শৃঙ্খলা যদিও সংহত হয়।

দিবারাত্রির কাব্যতে প্রধান চরিত্র হেরম্ব রহস্যের ‘স্পষ্টতা’য় ঘেরা। স্ত্রী তার গলায় দড়ি দিয়ে মরেছে। এতে তার অহং যৌক্তিক নিরাসক্তির তৃপ্তি পায়। অনুরাগিণী সুপ্রিয়াকে সে-ই উদ্যোগী হয়ে এক দারোগার সঙ্গে বিয়ে দেয়। সুপ্রিয়ার কাছে তার আকর্ষণ কমে না। এক প্রায় কিশোরীকন্যা আনন্দকে নিজের পরিণত যৌবনে সে আবার অতিক্ষণস্থায়ী পূর্ণপ্রেমের অনুভবে বিসর্জিত হতে টানে। তার নির্বিকারত্ব অটল। চান-বা-না-চান, মানিক কিন্তু এখানে পুরুষ-অহংকেই কেন্দ্রভূমিতে দাঁড় করান। এটা তাঁর গোটা কথা888sport live footballেরই এক সামান্য লক্ষণ।

আনন্দকে ঘিরে হেরম্বের স্বগত চিমত্মার ক্ষণিক প্রকাশ এরকম :

মেয়েরা কখনও কবি হয় না। পৌরুষ ও কবিত্ব একধর্মী। নিখিল মানবতার মধ্যে নিজেকে ছড়িয়ে দিয়ে স্তব্ধ হৃদয়ের একদা-রণিত ধ্বনির প্রতিধ্বনিকে সে কখনও খুঁজে বেড়াতে পারবে না। জগতে তার দ্বিতীয় প্রতিরূপ নেই, সে বৃহতের অংশ নয়; সে সম্পূর্ণ এবং ক্ষুদ্র। যে বংশপ্রবাহ মানবতার রূপ, সে তা বোঝে না। অতীত ভবিষ্যতের ভারে তার জীবন পীড়িত নয়, সার্থকও নয়। সৃষ্টির অনন্ত সূত্রে সে গ্রন্থির মতো বিগত ও অনাগতকে নিজের জোরে যুক্ত করে রাখে না। পৃথিবী যেমন জড় দেহকে দাঁড়াবার নির্ভর দেয়, মানুষের জীবনকে এরা তেমনি আশ্রয় যোগায়। পৃথিবীজুড়ে হেরম্বের আত্মীয় থাক, আনন্দের কেউ নেই। সে একা।

এ-সংশয় হয়তো গুরুত্বহীন হয় যে, হেরম্বের আড়ালে এখানে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ই নিজের অভিমত প্রকাশ করছেন। এবং তা অতি সীমিত বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপর দাঁড়িয়ে। তাঁর দেখা-শোনার জগৎ ছিল নিতান্তই ক্ষুদ্র। বইয়ে পড়া বিদ্যা তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে। তাকে চালিতও করেছে। এ-কথা তাঁর গোটা 888sport live footballিক-জীবনের পরিপ্রেক্ষিতেও বলা চলে।

জননী দিবারাত্রির কাব্যের আগে ছেপে বেরোয়। যা চোখে পড়ে, তা হলো, 888sport promo codeজীবনের পূর্ণতা ও সার্থকতা নিয়ে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই সময়ের ধ্যান-ধারণা। বোধহয় গভীর নয়, পরিশীলিতও নয়। জৈব তাগিদের বাইরে এখানে 888sport promo code-পরিচয় অবান্তর। নিদারুণ দারিদ্র্য দুঃখ-কষ্টের ভেতরেও স্বামীর কা-জ্ঞানহীনতা ও নির্বুদ্ধিতা মেনে নিয়ে কঠোর জীবনসংগ্রামে টিকে থেকে শ্যামার প্রশ্নহীন উৎসাহে একের পর এক মা হওয়া, স্বামীর অকর্মণ্যতায় আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়েও
খেয়ে-না-খেয়ে ছেলেমেয়ে মানুষ করা, পরে পুত্রবধূ সমত্মানসম্ভবা হলে আবার পূর্ণোদ্যমে তার পরিচর্যায় মেতে ওঠা, এইসব নিয়ে 888sport alternative linkটির পরিসর। এটা আরোপিত মূল্যবোধের একান্ত অনুসরণ, নাকি 888sport promo codeর স্বতঃস্ফূর্ত সত্য-কামনার পরিচয়, তা স্বাভাবিক কারণেই বোঝার ক্ষমতা আমার নেই। তবে প্রায় প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছেও অসুস্থ অকর্মণ্য স্বামী জেল থেকে ফিরে এলে শ্যামার আবার মা হয়ে এক অন্ধ কন্যাসমত্মান প্রসব করে নির্বিকার থাকা, এতে জননীর তৃপ্তি ও মর্যাদার হ্রাস-বৃদ্ধি কতটুকু কী হয়, তা বোঝার ও বলার অধিকার কেবল 888sport promo codeদেরই। এখানে মহিমা আরোপে মানব-বাস্তবতার যথার্থ প্রকাশ কেমন ঘটে, তা ভুক্তভোগীদেরই জানার কথা। কেউ যদি কখনো প্রকৃতিবাদী হন, তারপরেও মানবপ্রজাতি যে শুধুই
প্রকৃতিচালিত নয়, এ-কথাটা বোধহয় তাঁর মনে রাখা দরকার।

মানিকের উৎসুক পাঠক-পাঠিকাদের এটা জানা, 888sport live footballিক কর্মকা– প্রথমপর্বে আধুনিক মনো888sport apkের জনক সিগমুন্ড  ফ্রয়েড (১৮৫৬-১৯৩৯) তাঁর ওপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। ফ্রয়েডের তত্ত্ব অনুযায়ী অবচেতনার নির্জ্ঞানে ব্যক্তিমানুষের কামনা-বাসনা, হিংসা, আধিপত্য এইসব বৃত্তির বীজ অহর্নিশ পরস্পর মারামারি-জড়াজড়ি করে। এদের কাছে সচেতন যুক্তিবুদ্ধি অসহায়। কামনার আবেগ পরাস্ত করে যুক্তির সংগতিকে। সামাজিক ভালো-মন্দ-বিধি-নিষেধের সীমারেখাকে, যদিও ওইসব সীমারেখার পেছনেও থাকে সামষ্টিক অবচেতনার অন্ধনিয়তি। ফ্রয়েড তখন এতটা প্রভাব বিস্তার করেন যে, রবীন্দ্রনাথও তাঁর ছবি আঁকায় অবচেতনার ভূমিকা কী হতে পারে, এটা বোঝার আশায় একবার য়োরোপে গিয়ে ফ্রয়েডের সঙ্গে কথা বলার জন্য ব্যাকুল হন। যদ্দুর জানা যায়, এই সাক্ষাৎকার দুজনের কারো ওপরেই কোনো রেখাপাত করেনি। কিন্তু ফ্রয়েডীয় তত্ত্বের নির্যাস, বিশেষ করে নর888sport promo codeর পারস্পরিক সম্পর্কের অন্ধ তাগিদের বিচারে, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দারুণভাবে নাড়া দিয়েছিল। তাঁর ওই পর্বের কথা888sport live footballে তার ছাপ ধরা পড়ে। ফ্রয়েডের নিরাবেগ মনোবৈজ্ঞানিক তত্ত্বায়ন তাঁর 888sport live footballিক মেজাজের সঙ্গে মানিয়ে যায়। বাস্তবকেই তিনি দেখেন। প্রত্যক্ষের সীমায় তাঁর লেখার প্রতিভা তাতে সম্মোহন জাগায়। আমরা বশীভূত হই। কিন্তু তারই ভেতরে নর888sport promo codeর খাপছাড়া চালচলনের তলদেশে থাকে ফ্রয়েডীয় গোপন এষণার আঁকাবাঁকা কররেখা। আশ্চর্য মুন্শিয়ানায় তিনি তাকে 888sport live footballে মেশান। স্রষ্টার অবিসংবাদী অধিকার তাঁরই থাকে।

পরের দুটো 888sport alternative link পুতুলনাচের ইতিকথাপদ্মানদীর মাঝি  প্রায় সমসময়ে প্রকাশিত হয়, ১৯৩৬-এ। বয়স তিরিশও হয়নি, কিন্তু প্রতিভা তখন তাঁর মধ্যগগনে। এখনো তাঁর প্রধান পরিচিতি, এই বইদুটির তিনি স্রষ্টা। শক্ত মুঠিতে বিষয়কে ধরে তিনি তাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছেন। কোথাও মুঠি আলগা হয়নি। করুণ কোমল স্বপ্নমায়ায় আচ্ছন্নও হননি। তন্ত্রসাধকের অনাচ্ছন্ন দৃষ্টি তাঁর বিচলিত হয়নি। প্রকাশভঙ্গি কোথাও বা তির্যক, যদিও লক্ষ্যভেদে তুলনাহীন। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘মনুমেন্টাল’ – এই বই দুটো তাই।

পুতুলনাচের ইতিকথার শুরুটা অসাধারণ। আমাদের বাকরুদ্ধ করে দেয়। অভিনব। কিন্তু অভিঘাত স্থায়ী। বহুল আলোচিত। তারপরেও উদ্ধৃতি দিই : ‘খালের ধারে প্রকা- বটগাছটার গুঁড়িতে ঠেস দিয়া হারুঘোষ দাঁড়াইয়াছিল। আকাশের দেবতা সেইখানে তাহার দিকে চাহিয়া কটাক্ষ করিলেন। হারুর মাথার
কাঁচা-পাকা চুল আর মুখের বসমেত্মর দাগভরা রুক্ষ চামড়া ঝলসিয়া পুড়িয়া গেল। সে কিন্তু কিছুই টের পাইল না। শতাব্দীর পুরাতন তরুটির মূক অবচেতনার সঙ্গে একান্ন বছরের আত্মমমতায় গড়িয়া তোলা চিন্ময় জগৎটি তাহার চোখের পলকে লুপ্ত হইয়া গিয়াছে। -’

পরোক্ষ বর্ণনায় যা বলা হলো, তা প্রত্যক্ষ স্পষ্ট বিবরণের চেয়ে অনেক বেশি বার্তাবহা। ইঙ্গিত তার গোটা বইতে বিষয়ের ক্রমবিকাশের অন্তর্প্রবাহের দিকে। ‘মূক অবচেতনা’ ও ‘চিন্ময় জগৎ’ – এই দুইয়ের সচল স্থিতি ও সংঘাত মানব-মানবীর অসহায় অসিত্মত্বে যে-বিপন্নতা আনে তাকেই লেখক আপন অবস্থানে স্থির থেকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নিরাসক্ত অবিচলতায় মায়াহীন ক্রান্তি পুরুষের মতো নির্মমভাবে ফুটিয়ে তোলেন। শশী ও কুসুম গোটা বাংলা কথা888sport live footballে ‘আইকন’ হয়ে আছে। যেমন আছে পদ্মানদীর মাঝির  কুবের ও কপিলা। এবং তা তাদের নির্বিশেষ করে গড়ে তোলা সত্ত্বেও। তবে প্রত্যক্ষ বাস্তবের ভূমিকা এখানে অপ্রধান। লেখক তাঁর মনোজগতে এই বাস্তব নির্মাণ করেন। মূলে থাকে একটি তাত্ত্বিক ধারণা প্রধান প্রত্যয়ের মতো। তাকে অপ্রতক্য ধরে নিয়ে তিনি তার  সঙ্গে বাস্তবোপম জগতের
প্রকৃতি ও পরিবেশে তাঁর ভাবনায় জেগে ওঠা মানব-মানবীতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন। প্রত্যয়ের অনুসরণে তারা তাদের যথোচিত পরিণতি পায়। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ আরোপ করেন না। এমনকি এই প্রক্রিয়াটাও হয়তো তিনি অংক-কষে সাজান না। তবু তাঁর লেখকসত্তা তাঁকে এভাবে পরিচালিত করে।

পরে কোনো এক সময়ে পুতুলনাচের ইতিকথা প্রসঙ্গে টুকরো মন্তব্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘- যারা আজ বিশ বছর ধরে বইটাকে জীবন্ত রেখেছে, তারা টের পায় এ বইখানা মানুষকে যারা পুতুলের মত নাচায় তাদের বিরুদ্ধে দরদী প্রতিবাদ। প্রচ- বিক্ষোভ নয়, স্থায়ী দরদী প্রতিবাদ। … সামন্ততান্ত্রিক অবস্থায় হাবুডুবু খেতে খেতেও এতগুলি মানুষ চেষ্টা করছে সে অবস্থাকে অতিক্রম করতে – কুড়ি বছর আগের 888sport appsে যখন সামন্ততন্ত্র প্রধান সমস্যা বলেই গণ্য হত না, তখন মানুষের সামন্ততন্ত্রের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ, কিছু মানুষের বিরুদ্ধে পুতুল হবার বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ, সেস্নাগানের বদলে 888sport live footballসৃষ্টির মাধ্যমে রূপ নিয়েছে। …’

এ-মন্তব্য হায়, আমাদের তৃপ্ত করে না। এটা করার সময় এর প্রধান প্রত্যয় সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। তাতে আস্থা রেখে তিনি যা বলেন, তা এই বইকে এক সংকীর্ণ পাটাতনে দাঁড় করায়; ব্যাখ্যাও মানুষকে কলের পুতুল বানায়, যে-কলে মানুষ পুরোপুরি আঁটে না। যে-কোনো বাস্তবতায় অসংখ্য অনিশ্চয়তার ভেতরে মানুষের যে
বাঁচা-মরা, ইচ্ছা-অনিচ্ছার, পাওয়া-না-পাওয়ার হিসাব মেলাতে মেলাতে সফলতায় আর সবার সঙ্গে জীবনপাত করা, এমন একটি প্রেক্ষাপটই, মনে হয়, পুতুলনাচের ইতিকথায় খাপ খায়। পরবর্তী পর্বের মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ব্যাখ্যায় বইটির অপার মহিমা যে শুধু ক্ষুণ্ণ করেন, তাই নয়, তাকে বিপথেও চালিত করেন। রবীন্দ্রনাথও এমন বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছেন তাঁর ‘জীবন দেবতা’ – 888sport app download apkর ব্যাখ্যায়।

এবার অন্য প্রসঙ্গ। বহুপঠিত ও বারবার উদ্ধৃত কুসুম-শশীর এই সংলাপ : ‘কুসুম নিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, আপনার কাছে দাঁড়ালে আমার শরীর এমন করে কেন ছোটবাবু?

শরীর! শরীর! তোমার মন নাই কুসুম?’

স্পষ্টই শরীর ও মনে বিভাজনের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। আমরাও এমনটিতে অভ্যস্ত। 888sport alternative linkের এক তুঙ্গ মুহূর্তে খুব লাগসইও বটে। কিন্তু এই বিভাজন কি বাস্তবানুগ? শরীর কেমন করার পেছনে মনের সাড়া দেওয়ার – সাড়া জাগানো ক্রিয়া অবিরাম থাকে। ঘটে তা মানুষের মসিত্মষ্কে। কোটি কোটি অনুকণার সংশেস্নষণের ওপর নির্ভর করে তার সজীবতা। তাহলে এই বিভাজনের কি কোনো বস্ত্তগত সমর্থন আছে? ফ্রয়েডের তত্ত্ব অনুযায়ী অবশ্য দুটোরই উৎস অবচেতনা। অবস্থান তার যুক্তিবুদ্ধির অবতলে। 888sport alternative linkটিতে
মানব-মানবীর অসহায় অতৃপ্তির পেছনে তার সচল প্রয়োগ বোধহয় অনুমান করা যায়। তেমন হলে তা লেখকের অভিপ্রায়কেও চেনায়। ঘটনার সম্ভাব্যতাও মাথায় রাখতে হয়। লেখক আপন প্রতিভায় তার বিস্তারের একটি প্রকাশ দেখান। একটিই। এতটুকু এদিক-ওদিক হলেই তা অনিবার্যভাবে
শাখা-প্রশাখায় নানা দিকে যাবার পথ দেখায়। যেতে পারে, যদিও অন্য আর একটি পথে। একসঙ্গে একাধিক পথে নয়। জীবন বহুপথে একত্রে যাবার সুযোগ দেয় না। এবং প্রত্যেকের জীবন একটাই। 888sport alternative link অসামান্যের তিলক পরে তখনই, যখন তা এসব সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে  কথার নির্মাণে মৌল প্রতিভার অভিনব প্রকাশ ঘটায়। তেমন ঘটে পুতুল নাচের ইতিকথায়।

পদ্মানদীর মাঝি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই রকম আর-এক শিখরস্পর্শী কীর্তি। তবে ঘটমানতার সঙ্গে কল্পনাপ্রতিভার প্রায়োগিক মিশ্রণ একে অন্য মাত্রা দেয়। লেখকের মননশীলতা তাকে সংহত করে। এবং সবটাই 888sport live footballের 888sport live chatিত ভুবনে। যদি বলি, লেখক প্রত্যক্ষের প্রতিচিত্র এঁকেছেন, জেলেজীবনের বহুমুখী সংগ্রামের জীবন্ত রূপ ফুটিয়েছেন, সহানুভূতিতে ও সমবেদনায় তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন, তাহলে কিন্তু আমরা ভুল করবো। তিনি প্রকৃত জেলেজীবনের অন্তস্তলে চোখ রাখেননি। জেলেদের শোনাবেন বলেও লেখেননি। তিনি চান-বা-না-চান, লেখা তাঁর শিক্ষিত-পরিশীলিত পাঠকদের রুচি, অভিপ্রায় ও অনুভববেদ্যতার কথা বিবেচনায় রেখে। হয়তো সচেতন প্রয়াসে নয়; কিন্তু লক্ষ্য পূর্বনির্ধারিত বলে। তিনি তো তাঁর পাঠকসমাজের কাছে পৌঁছুতে চান। বিরূপ বিশ্বের অধিপতি হওয়া কোনো লেখকেরই কাম্য নয়। তাঁর ন্যায়বোধও পরিপার্শ্বের নিয়ন্ত্রণে। হোসেন মিঞার রহস্যময়তা লেখায় রূপকথার ভারসাম্য আনে। প্রতীকী তাৎপর্যও তাতে আরোপ করা যায়। ইচ্ছাপূরণ ঘটে হয়তো। কিন্তু জেলেজীবনের বাস্তব স্বরূপ বিপর্যন্ত হয়।

অদ্বৈত মলস্নবর্মণ একসময় এই রকম মন্তব্য করেছিলেন, – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেট আর্টিস্ট। কিন্তু তিনি তো বামুনের পোলা। জাউলাদের জীবনসংসার তিনি কতটুকু বুঝবেন? আমি জাউলার পোলা। – কথাটা প্রণিধানযোগ্য। তিতাস – অনেক বেশি অথেন্টিক। এ-কথা বলা যায় পদ্মানদীর মাঝির অতুল বৈভব অভিভূত চিত্তে স্বীকার করেও।

আগ বাড়িয়ে আরো একটু যোগ করি। মানিকের সমসাময়িক তারাশঙ্কর বা সতীনাথ যখন অনালোচিত-উপেক্ষিত মানবগোষ্ঠীকে 888sport alternative linkে তুলে আনেন, তখন তাঁদের পূর্ণদৃষ্টি বিষয়বাস্তবতার সবটুকুর ওপর পড়ে। তাঁরা তার ওপর খোদকারি করেন না। এমন কি বিভূতিভূষণ পথের পাঁচালীঅপরাজিততে প্রত্যক্ষ বাস্তবের যে অকরুণ ছবি আতিশয্যহীন ফুটিয়ে তোলেন, তাও তাঁর অভিজ্ঞতার সত্যকে আহরণ করে। ওই সত্যের 888sport live chatসিদ্ধ প্রকাশ ঘটে বলেই ছবিতে তা The best human document বলে নন্দিত হয়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু শুরু করেন তাঁর তাত্ত্বিক প্রত্যয় থেকে। তাকে মেলান কল্পিত ঘটনার যৌক্তিক পরম্পরায়। তাঁর প্রবল 888sport live chatপ্রতিভা তাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। পদ্ধতিগতভাবে এ অবরোহী। তত্ত্বভূমিতে স্থির থেকে বাস্তব তিনি নির্মাণ করেন,
অথবা বাস্তবের অনুরূপ বিশ্ব রচনা করেন। তাঁর সফলতা এইখানে, তিনি তাঁর তত্ত্বভূমিতে প্রাণের সঞ্চার ঘটান; এবং তাকে সম্পূর্ণ ও আকর্ষণীয় করে তোলেন। তত্ত্ব হিসেবে নয়, মর্ত-মানুষের জীবনলীলার গ্রহণযোগ্য প্রতিকূল হিসেবে। এখানে তিনি শতভাগ আন্তরিক। শিকড়ে থেকে যান যদিও ফ্রয়েড।

তাঁর সৃষ্টিকলার মূল উপাদান কিন্তু একসময় বদলে যায়। তিনি মার্কসবাদে আকৃষ্ট হন। দ্বান্দ্বিক বস্ত্তবাদের আলোকে উৎপাদন-পদ্ধতি, তার উপাদানের প্রয়োগে মানববিশ্বে মালিক ও শ্রমিক শ্রেণির দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক, পরিণতিতে প্রকৃত উৎপাদিকা শক্তি শ্রমিকশ্রেণির বিজয় ও তার ফলে শোষকহীন শ্রেণিহীন সমাজের প্রতিষ্ঠা, এই যৌক্তিক সম্ভাবনা ও সিদ্ধামেত্ম অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। চিমত্মার কাঠামো কিন্তু বদলায় না। শুধু তাত্ত্বিক প্রত্যয়ে মৌলিক রদবদল ঘটে। ফ্রয়েডের জায়গা দখল করেন মার্কস। পদ্ধতিগতভাবে একই রকম থাকে অবরোহী।

এই ছকের ভেতরে লেখা 888sport alternative linkগুলো কিন্তু অনেকটাই নিষ্প্রাণ। যদিও তাঁর প্রতিপাদ্য শ্রমজীবী মানুষের প্রতিবাদ ও সম্ভাব্য মুক্তি। ধারণাজগতে পালাবদল তাঁর শুরু হয় কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টিতে আনুষ্ঠানিক যোগ দেওয়ার আগে থেকেই। মোটামুটি বলা যায়, চল্লিশের দশকের শুরুতে। একটু-আধটু আগে-পিছেও হতে পারে। সহরতলী, সহরবাসের ইতিকথা, আদায়ের ইতিহাস, পেশা ইত্যাদি 888sport alternative link এই পর্বে লেখা। তাঁর অতিমানবিক শক্তিমত্তা ও শাণিত নিরাবেগ গদ্যের নিদর্শন এসবেও মেলে। আমরা মুগ্ধ হতে পারি। কিন্তু সবই ছাঁচে ঢালা। একমেটে। প্রকাশ্য বাস্তবের অনুভবের প্রকাশ যতটা আছে, তার চেয়ে বেশি আছে তত্ত্বসিদ্ধ বাস্তবের অনুসরণ। প্রকৃত অভিজ্ঞতার কেলাসন যেন ঘটে না। লেখকের সততা প্রশ্নাতীত। কিন্তু লেখা সত্য প্রাণের কলেস্নালে জেগে ওঠে না।

আমরা জানি পদ্মানদীর মাঝিতেও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় শুরুতেই এই রকম বিভক্তির ছক টেনে অগ্রসর হয়েছেন। জেলেপাড়াকে তিনি বিচ্ছিন্ন করে তার স্বরূপ চেনান : ‘জেলেপাড়ার ঘরে ঘরে শিশুর ক্রন্দন কোনদিন বন্ধ হয় না। ক্ষুধাতৃষ্ণার দেবতা, হাসিকান্নার দেবতা, অন্ধকার আত্মার দেবতা, ইহাদের পূজা কোনদিন সাঙ্গ হয় না। এদিকে গ্রামের ব্রাহ্মণ ও ব্রাহ্মণেতর ভদ্রমানুষগুলি তাদের দূরে ঠেলিয়ে রাখে, ওদিকে প্রকৃতির কালবৈশাখী তাহাদের ধ্বংস করিতে চায়, বর্ষার জল ঘরে ঢোকে, শীতের আওয়াজ হাড়ে গিয়া বাজে কন্কন্। … জীবনের স্বাদ এখানে শুধু ক্ষুধা ও পিপাসায়, কাম ও মমতায়, স্বার্থ ও সংকীর্ণতায়। আর দেশি মদে। তালের রস গাঁজিয়া যে মদ হয়, ক্ষুধার অন্ন পচিয়া যে মদ হয়। ঈশ্বর থাকেন ওই গ্রামে, ভদ্রপল্লিতে। এখানে তাঁহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।’

এ-স্বরূপ তাঁরই নির্মাণ। ফ্রয়েডীয় তত্ত্বকে প্রত্যয়ভূমিতে রেখে
তথাকথিত সভ্যতার খোলস ছাড়িয়ে মানববাস্তবতা ফুটিয়ে তোলাতে এর প্রয়োজন পড়ে। এর যৌক্তিক পরিণাম 888sport alternative linkে কাহিনির অনিবার্য স্রোতে অসামান্যের মোহনায় মেশে। প্রত্যক্ষ জীবনের যথার্থ রূপায়ণ হলো কি হলো না, আমরা ভাবি না। যুগ যুগ ধরে এর নিহিতার্থে মানব-মানবীর জৈব-স্বরূপের তত্ত্ববাহিত 888sport live chatসিদ্ধিতে মজি। মানিক তাঁর দ্বিতীয় পর্বের কোনো 888sport alternative linkে এমন অভিঘাত হানেন না। দলীয় হস্তক্ষেপও তাঁর সাবলীলতা ক্ষুণ্ণ করে। পুতুলনাচের ইতিকথার অন্তিমে পড়ি, ‘- শশীর চোখ খুঁজিয়া বেড়ায় মানুষ। …’ এ যেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়েরই উন্মুখ জাগ্রত চিত্তের প্রতিরূপ। দুর্দশাপীড়িত 888sport live footballিকজীবনে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর এই অন্বেষণ ছিল অন্তহীন। তবে তা তাঁর মতো করে। বাস্তবের কোনো তাত্ত্বিক প্রস্তাবকে তিনি অগ্রাধিকার দেন। পরে তারই অনুসরণে তাঁর 888sport live footballিক সৌধ নির্মাণ। ওই প্রস্তাবে পালাবদল ঘটে। কিন্তু দেখার পদ্ধতি বদলায় না। জাগর আঁখির পূর্ণ দৃষ্টি মেলে তিনি বাস্তবকে দেখেন না। তত্ত্বভূমি তাঁর দেখার চোখ নিয়ন্ত্রণ করে। তবু তাঁর তুমুল প্রতিভা আবেগের মুখাপেক্ষী না থেকে মানব-মানবীর সত্যজীবনের কথারূপ খোঁজে। অন্তর্মুখী হয়েও তিনি বাস্তবেই নিবিষ্ট থাকেন। যদিও তা সবটাই তাঁর আপন দৃষ্টিকোণের সীমায়। এতে কিন্তু বাংলা কথা888sport live footballে, বিশেষ করে 888sport alternative linkে, তাঁর কীর্তির অতুল বৈভব প্রশ্নবিদ্ধ হয় না।

 

দেখুন

১.   পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র, কলকাতা, ১৯৯৮-২০০১।

২.   যুগান্তর চক্রবর্তী, ‘সমগ্র মানিক বন্দোপাধ্যায় এবং তাঁর 888sport app download apk’, ক্ষ, ১০ম বর্ষ, চতুর্থ-পঞ্চম 888sport free bet, কার্তিকমাস ১৩৭৯ বঙ্গাব্দ।

৩.           ফ্রয়েড-রবীন্দ্রনাথ সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে W.G. Archer, India and Modern Art, London, 1959, p101.