বিবিধ আলোয় সাইদা খানম

বাঙালির একজন রবীন্দ্রনাথ আছেন। যাঁকে ছাড়া বাঙালির সুরুচির নির্মাণ কঠিন হতো। যাঁকে ছাড়া বাংলা ভাষা ব্যবহারের অপরূপ সৌন্দর্য উন্মোচিত হতো না। যাঁকে ছাড়া জীবনের গভীরতম দর্শন প্রতিদিনের বাস্তব অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে কীভাবে উপলব্ধ হতে পারে তা জানা হতো না। সেই রবীন্দ্রনাথ কবি, সেই রবীন্দ্রনাথ গীতিকার, সেই রবীন্দ্রনাথ ছোটগল্প-888sport alternative link লেখক, সেই রবীন্দ্রনাথ চিত্র888sport live chatী, সেই রবীন্দ্রনাথ দার্শনিক, সেই রবীন্দ্রনাথ শিক্ষাবিদ, সেই রবীন্দ্রনাথ সংগঠক, সেই রবীন্দ্রনাথ প্রেমিক, সেই রবীন্দ্রনাথ এক অনন্য উচ্চতার মানুষ। এতো বিবিধ মাত্রা ধারণ করে আছেন বাঙালির একজন প্রণম্য পথনির্দেশক, তবু কেন বাঙালির পক্ষে একক মানুষের ভেতরে বহুগুণের সমাহার দেখার ক্ষেত্রে এতো অন্ধত্ব থাকে! কেন কবিকে ঔপন্যাসিক হিসেবে, ঔপন্যাসিককে live chat 888sportকার হিসেবে, সংগঠককে লেখক হিসেবে অথবা লেখককে সংগঠক হিসেবে সমমর্যাদায় গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাঙালির এমন দ্বিধা, এমন কার্পণ্য থাকে! এই প্রশ্নটি ভাবায় আমাকে। কেননা এই দ্বিধা, এই অনাগ্রহ, এই যুক্তিবিরুদ্ধ মনন, এই বৈচিত্র্যে অনাস্থা আমাদের বঞ্চিত করে অনেক প্রতিভা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের স্বাদ থেকে।

১৯৬৩ সালে পূর্ব পাকিস্তানে প্রকাশিত হয় একটি গল্পসংকলন ধুলোমুঠি। গল্পকার সাইদা খানমের প্রথম গ্রন্থ, যার পরিচিতি 888sport appsের প্রথম পেশাদার 888sport promo code আলোকচিত্রী হিসেবে। এটি একটি ছোটগল্পের সংকলন। গত শতাব্দীর ষাটের দশক তখন, এবং সে অবধি খুব বেশি মুসলিম 888sport promo code 888sport live footballরচনায় সক্রিয় হয়ে উঠতে পারেননি। শিক্ষায় 888sport promo codeর সামাজিক অধিকারও সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অবশ্য, তারও আগে, পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি – যখন সাইদা খানমের বয়স মাত্র ১৭-১৮, তখন থেকেই তিনি শুরু করেছেন ভিন্ন এক মাধ্যমে তাঁর সৃজনশীল পদযাত্রা। আলো আর অন্ধকারের খেলার ভেতরে সূচনা হয়েছে তাঁর 888sport live chatযাত্রা। ১৯৫৬ সালে 888sport appয় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে তিনি প্রথম অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে জার্মানি থেকে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড কোলন প্রাপ্তির মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর জয়যাত্রা।

একইভাবে, যখন মুসলিম 888sport promo codeর জন্য সামগ্রিকভাবে শিক্ষার অধিকারই নিশ্চিত হয়নি – পেশাদারিত্বের জগতে 888sport promo codeর প্রবেশাধিকার তো ছিল অতি সীমিত, সে-সময় সাইদা খানম একজন পেশাদার আলোকচিত্রী হিসেবে নিয়মিতভাবে কাজ শুরু করেছেন। অবিভক্ত ভারত ও পাকিস্তান হয়ে 888sport appsের পথপরিক্রমায় পেশাদার স্থিরচিত্রী হিসেবে দীর্ঘকাল তিনিই একমাত্র 888sport promo code। বলা যায়, তাঁর পরিচিতি গত শতাব্দীর ষাটের দশকের আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে আলোকচিত্রী হিসেবে। হয়তো তাই, এই পরিচয়টিই কালক্রমে তাঁর একমাত্র পরিচয় হিসেবে সর্বজনজ্ঞাত তথ্য হয়ে ওঠে। তাঁর সৃজনশীলতার অন্য দিকগুলি আর সমানভাবে আলোকিত হয়ে ওঠে না, যদিও সমগ্রজীবন তিনি অব্যাহতভাবে 888sport live footballচর্চায়ও ব্রতী থেকেছেন।

নূরজাহান বেগমের সম্পাদনায় যখন থেকে বেগম পত্রিকা 888sport appয় পথচলা শুরু করে, এই পত্রিকা হয়ে উঠলো এ অঞ্চলের 888sport promo codeদের 888sport live footballচর্চার এক অনিবার্য ক্ষেত্র। সাইদা খানম নিয়মিত লিখেছেন এই পত্রিকায়। গল্প লিখেছেন, লিখেছেন 888sport alternative linkও। তাঁর জীবনের শেষপ্রান্তে যখন বেগম পত্রিকাটি সাময়িক বিরতির পর পুনরুজ্জীবিত হয়, তখনো তিনি লিখেছেন এতে। এ ছাড়া চিত্রালী, ঝিনুক ইত্যাদি নানা পত্রিকায় একাধারে লিখেছেন সাইদা খানম। বেগমসহ বিভিন্ন পত্রিকায় যেমন নিয়মিত তাঁর ধারণকৃত আলোকচিত্র ব্যবহৃত হয়েছে, মুদ্রিত হয়েছে; তেমনি তাঁর লেখা গল্প-888sport alternative linkও প্রকাশিত হয়েছে প্রায় নিয়মিত।

‘আমি প্রায়ই অসুস্থ থাকতাম। অসুস্থ অবস্থায় দোতালায় জানালার পাশে বিছানায় শুয়ে নিম গাছে পাখিদের আনাগোনা, প্রকৃতির রঙবদল, আকাশের তারা দেখতে দেখতে ভাবতাম, এসব কি ধরে রাখা যায় না!!

সে-সময় ছবি তোলার জন্য আমি যে ক্যামেরা দেখেছিলাম, তা দেখে ভয় পেতাম। আমার কবি খালা (কবি মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা) নিজের ছবি ও অন্যদের ছবি তোলাতে খুব ভালবাসতেন। ক্যামেরাম্যান বাড়িতে আসতেন। বিরাট ক্যামেরা কালো কাপড় দিয়ে 888sport app। চকচকে গোল লেন্স। আমি কী তখন জানতাম, এ ক্যামেরাই হবে একদিন আমার স্বপ্ন, কর্মসাথী!’ (888sport sign up bonusর পথ বেয়ে, ২০১৩)

ছোটবেলায় খুব দুর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন সাইদা খানম। রোগে ভুগতেন বলে তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা যথাযথভাবে এগোচ্ছিল না। খানিকটা বিরতি দিয়ে শেষ পর্যন্ত অবশ্য 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা 888sport live football ও লাইব্রেরি সায়েন্স – দুই বিষয়ে স্নাতকোত্তর অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন তিনি। এ ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতায় তখনকার দিনে তাঁর পক্ষে বড় কোনো চাকরিতে যোগ দেওয়া বিশেষ কঠিন ব্যাপার ছিল না, কিন্তু ছবি তোলার নেশা এমন প্রবল ছিল যে, সাইদা খানম ভেবেচিন্তে একটা সাধারণ চাকরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যেখানে তাঁর হাতে ছবি তোলার জন্য থাকবে অনেক সময়। এইসব ভেবে তিনি যোগ দিলেন 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরির লাইব্রেরিয়ান হিসেবে। একবেলা লাইব্রেরিতে চাকরির দায়িত্ব পালন আর বাকি সময় ব্যয় করতেন ছবি তোলার নেশায় ঘুরে বেড়িয়ে। নিয়মিত চাকরির বাইরে ছবি তোলার কাজটাও তিনি সমান অথবা আরো বেশি পেশাদারিত্বের সঙ্গেই করেছেন। আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে বেগম পত্রিকার সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত ছিলেন। ছিলেন চিত্রালীর সঙ্গেও। প্রেস ফটোগ্রাফার হিসেবেও কাজ করেছেন সাইদা খানম। 888sport appsে তো ছবি তুলেছেনই, ভারতের বিভিন্ন স্থানেও তুলেছেন প্রচুর ছবি। কখনো কাশ্মীরে, কখনো কলকাতায়। ঘনিষ্ঠ বন্ধু বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতজ্ঞ ড. সন্জীদা খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে কখনো পুরান 888sport appর অলিগলি কিংবা বুড়িগঙ্গার ধারে, অথবা কখনো বন্ধু অভিনেত্রী আলেয়া ফেরদৌসীকে নিয়ে সোনারগাঁর প্রাচীন শহর পানাম নগরে।

এভাবেই একদিন তিনি সেকালের খুবই জনপ্রিয় সাপ্তাহিক পত্রিকা চিত্রালীর প্রতিনিধি হিসেবে কলকাতায় যান বিশ্বখ্যাত live chat 888sport পথের পাঁচালীর পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ করতে। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন – ‘… সেই সময়ে 888sport appয় যেসব পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হতো, তার মধ্যে সাপ্তাহিক সিনেমা ও 888sport live football পত্রিকা চিত্রালীও ছিল। এই চিত্রালীর প্রতিনিধি হয়ে আমি মানিকদার সাক্ষাৎকার নিতে যাই। উৎসাহ আমারই ছিল বেশি। চিত্রালীর সম্পাদক মরহুম [সৈয়দ] মোহাম্মদ পারভেজের কাছে আমি যখন বিশ্ববরেণ্য live chat 888sport নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের নাম উচ্চারণ করেছিলাম, সত্যজিতের সঙ্গে পারভেজভাইয়ের ঘনিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও তখন তিনি আমাকে তেমনভাবে উৎসাহিত করেননি, যেমন অন্যদের বেলায় করতেন। কলকাতায় এসে কারণটা অনুভব করলাম। আমার মন দমে গেল। শুনলাম সত্যজিৎ রায় অহঙ্কারী, দাম্ভিক ও রাশভারী মানুষ। বেশি কথা বলেন না। ছবি তুলতে দেন না।

পথের পাঁচালী ১৯৫৫ সালে কলকাতায় রিলিজ হওয়ার অল্পদিন পরেই বাণী সিনেমা হলে সবান্ধব ছবিটা দেখি। সেদিন সিনেমা হল প্রায় খালিই ছিল। সাধারণ দর্শক হিসেবে ছবিটা দেখে এত অভিভূত হয়ে পড়ি যে, কয়েক দিন-রাত ছবির সেই অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হয়ে থাকি। কলকাতায় এসে সত্যজিৎ রায় সম্পর্কে উক্তিগুলো শুনে নিরাশ হলেও আমার মন কেবলই বলতে থাকে মানবদরদি স্রষ্টা কি এত কঠোর হতে পারেন? আশা-নিরাশা নিয়ে কাঁপা কাঁপা বুকে ফোনের ডায়াল ঘোরাতেই ওপাশ থেকে ভেসে আসে অপূর্ব গম্ভীর কণ্ঠস্বর। যেন বর্ষার মেঘের প্রতিধ্বনি। মানিকদা সময় দিলেন। দুদিন পরে।

‘দরজার কাছে এসে আমি থমকে দাঁড়ালাম। দরজার একটা পাল্লা খোলা। ভেতরের দিকে তাকিয়ে আমার মনে হলো – সাদা শাল জড়িয়ে যিনি লিখে চলেছেন নিবিষ্ট মনে তার সামনে গিয়ে আমি কখনো দাঁড়াতে পারব না। কী যোগ্যতা আছে আমার তাঁর সাক্ষাৎকার নেবার? নিজেকে আমি বিচার করে দেখিনি। বিশ্ববিখ্যাত পরিচালকের সাক্ষাৎকার নিতে আসে দেশ-বিদেশ থেকে ঝানু ঝানু দক্ষ সাংবাদিক। সে-তুলনায় আমি অতি নগণ্য, অতি সাধারণ। ফিরে যাওয়ার কথা ভাবতেই মানিকদা আমার উপস্থিতি টের পেয়ে বললেন’ – ‘কে?’

    (আমার চোখে সত্যজিৎ রায় থেকে অংশবিশেষ)

মজার ব্যাপার যে, প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থটির প্রায় অর্ধশতক পর সাইদা খানমের দ্বিতীয় গ্রন্থ আলোর মুখ দেখতে পেল বিশ্বখ্যাত live chat 888sportকার সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে এই সংযোগের ভেতর দিয়েই। তাঁর দ্বিতীয় গ্রন্থটি কোনো গল্পসংকলন বা 888sport alternative link হলো না, হলো তাঁর নিজস্ব ক্যামেরায় ধারণকৃত সত্যজিৎ রায়ের ছবি ও ব্যক্তিগত 888sport sign up bonusকথার অ্যালবাম। দীর্ঘদিন তিনি যাতায়াত করেছেন সত্যজিৎ রায়ের বাসায়, তাঁর কর্মক্ষেত্রে, সিনেমার লোকেশনে। পারিবারিক পর্যায়ে গড়ে তুলেছেন সখ্য। বিজয়া রায়ের ঘনিষ্ঠতা লাভ করেছেন। দিনের পর দিন সত্যজিৎ রায়ের কাজ ও ব্যক্তিজীবনকে ফ্রেমবন্দি করেছেন গভীর নিষ্ঠায়। সত্যজিৎ রায়কে কেন্দ্র করে তাঁর ধারণকৃত সেইসব আলোকচিত্র নিয়ে 888sport app এবং কলকাতায় আয়োজিত হয়েছে প্রদর্শনী। তাঁর একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে তিনবার। এই কর্মকাণ্ডের পরিণতিতে সৃষ্টি হয় যে অমূল্য 888sport sign up bonusভাণ্ডার, তাই নিয়ে নির্মিত তাঁর 888sport sign up bonusকথা ও আলোকচিত্রের অ্যালবাম  – আমার চোখে সত্যজিৎ রায়। সাইদা খানমের সবচেয়ে পাঠকনন্দিত দ্বিতীয় গ্রন্থ। ২০০৪ সালে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের একাধিক সংস্করণ হয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের শতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সাইদা খানমের প্রয়াণের তিন বছর পর তাঁর ৮৬তম জন্মদিন উপলক্ষে ২৯ শে ডিসেম্বর ২০২৩-এ প্রকাশনা সংস্থা যুক্ত প্রকাশ করেছে এই গ্রন্থের বিশেষ পরিবর্ধিত সংস্করণ।

আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি লেখার জগতেও তিনি সক্রিয় থেকেছেন একইরকম নিরবচ্ছিন্নভাবে, যদিও গ্রন্থাকারে তাঁর সব লেখা এখনো প্রকাশিত হয়নি। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ 888sport sign up bonusর পথ বেয়ে প্রকাশিত হয়েছে ২০১০ সালে। এটি ধারাবাহিকভাবে লেখা সম্পূর্ণ কোনো আত্মজীবনী নয়, বরং বলা যায়, তাঁর জীবনের উজ্জ্বলতর 888sport sign up bonusগুলিকে মলাটবন্দি করার একটি প্রয়াস। এই প্রয়াস নিঃসন্দেহে পাঠককে আলোকচিত্রী ও লেখক সাইদা খানমের কাছাকাছি নিয়ে যায়। নিয়ে যায় তাঁর বেড়ে ওঠার দিনগুলিতে, তাঁর আলোকচিত্রী হয়ে ওঠার দিনগুলিতে। তাঁর ছোটবেলার অনেকটা সময় কেটেছে পাবনা শহরে। নানাবাড়িতে, ইছামতির ধারে। সেখানেই তাঁর জন্ম। ২৯ শে ডিসেম্বর ১৯৩৭-এ। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সাইদা খানম সর্বকনিষ্ঠ। বড়ভাই বিশিষ্ট সুরকার আবদুল আহাদ শান্তিনিকেতনে অধ্যয়নরত, বড় বোন মহসিনা আলী চারুকলায় জয়নুল আবেদীনের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্রী, পরবর্তীকালে 888sport appর গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মেজ বোন হামিদা খানম উচ্চতর শিক্ষায় বিদেশে। উচ্চতর সরকারি কর্মকর্তা বাবা চাকরিসূত্রে ভিন্ন অবস্থানে। মায়ের সঙ্গে বেশিরভাগ সময় তিনি থাকছেন নানা-বাড়িতে। মাঝে মাঝে নানার স্বাস্থ্যোদ্ধারের সঙ্গী হয়ে যাচ্ছেন ভিজাগাপত্তম, রাঁচি, গিরিডি কিংবা কলকাতা। যাচ্ছেন 888sport appয়ও। সমৃদ্ধ হচ্ছে অভিজ্ঞতার ঝুলি।

যদিও সেই সময়ের নৈঃসঙ্গের কথা ফিরে ফিরে বলেছেন তিনি; কিন্তু আমরা দেখি তাঁর ছোটবেলা বিচিত্র বর্ণময় ঘটনায় ভরপুর। খুব সাবলীল সহজ গদ্যে তিনি বিবরণ দিয়েছেন তাঁর জীবনের বিবিধ ঘটনাপ্রবাহের।

‘888sport app থেকে ফিরে আসার কয়েক মাস পরে মার সঙ্গে রাজশাহীতে যাই। সেই সময় বাবা বদলি হয়ে সেখানে ছিলেন।
যে-বাড়িতে বাবা থাকতেন সেটা ছিল নানার দালানবাড়ি। বরেন্দ্র মিউজিয়াম থেকে কিছুটা দূরে। কাছেই তৈরি হতো
রুটি-বিস্কুট। বাতাসে ভেসে বেড়াত তার মিষ্টি গন্ধ। বাড়িটা আমার ভালো লাগে, গাছপালা ঘেরা। রান্নাঘরের পাশের ঘরে থাকে কয়েকজোড়া পেঁচা। সন্ধ্যা হতেই তারা উড়ে যায়। দিনের বেলায় সেই ঘরের মধ্যে ঢুকলে দেখতে পেতাম তাদের জ্বলজ্বলে চোখ।

তখন গ্রীষ্মকাল। বাবার আদেশমতো সকাল বেলায় খেতাম দই, চিড়ে – পাকা আম দিয়ে মাখিয়ে। এখানে আসার কিছুদিন পরেই মায়ের গায়ে জলবসন্ত বের হওয়ায় আমি একেবারে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ি। আমার কোনো খেলার সাথি ছিল না। একদিন বাবা কাজে বাইরে যাচ্ছিলেন। আমি জেদ শুরু করি আমাকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বাবা বোঝালেন আমাকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। শেষকালে আমার জেদ থামে না দেখে বাধ্য হয়ে বাইরের ঘরের দরজাটা বাইরের দিক থেকে বন্ধ করে চলে যান। কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর বাইরের ঘরের যে জানালার শিকটা শক্ত ছিল না, তুলে ফেলা যেত – আমি সেই শিকটা তুলে ফেলে ঝাঁপ দিয়ে নেমে পড়ি। বাবাকে খোঁজার জন্য প্রথমে আমি বড় রাস্তা দিয়ে চলতে থাকি। তারপরে পদ্মার চরে নেমে পড়ে বালির মধ্যে দিয়ে দৌড়াতে থাকি। আমার কেন যেন মনে হলো বাবা নৌকা করে কোথাও যাবেন। চারিদিকে রোদে বালু চিকচিক করছে। পদ্মা নদীকে দেখতে পাই অনেক দূরে। তার ওপরে নৌকাগুলো মনে হয় অনেক ছোট ছোট।

দৌড়াতে দৌড়াতে মনে হলো কে যেন আমার হাত চেপে ধরেছে। তাকিয়ে দেখি রাজু। ও আমাদের পাড়ার ছেলে। বাবা ওকে খুব স্নেহ করেন। রাজু কোনো কথা না বলে আমাকে ঘাড়ে তুলে নেয়। বাড়ি আসার পর বুঝতে পারি – মা আমাকে দেখতে না পেয়ে ওকে বলেছিলেন খুঁজতে। মার সামনে এসে দাঁড়াতেই মা আমার গালে ঠাস ঠাস করে চড় মারেন। আমাদের পাশের বাড়িতে দূর সম্পর্কের যে আত্মীয় ছিল, তাদের বড় মেয়ে রানু একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিল। ও আমার চড় খাওয়া দেখল। আমি কাঁদছি দেখে ও আমাকে কাছে টেনে নিতেই মা ওকে দায়িত্ব দিলো আমার দেখাশোনা করার, যত দিন না মা ভালো হচ্ছেন।’

(888sport sign up bonusর পথ বেয়ে, পরিবর্ধিত সংস্করণ, যুক্ত)

২০১০-এ ‘যুক্ত’ থেকে প্রথম প্রকাশিত 888sport sign up bonusর পথ বেয়ে গ্রন্থটির পরিবর্ধিত সংস্করণ প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে। এর পরপরই সাইদা খানমের তিনটি 888sport alternative link নিয়ে যুক্ত থেকেই প্রকাশিত হয় 888sport alternative linkত্রয়ী। এই 888sport alternative linkগুলিও বিভিন্ন সময়ে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে নানা পত্রিকায়। আপাতদৃষ্টে তাঁর লেখার বিষয়বস্তু রোমান্টিক ধাঁচের মনে হলেও, বোঝা যায় তাঁর গল্পের চরিত্ররা পার হয় জীবনের কঠিন সংগ্রাম, সমাজের অনাকাক্সিক্ষত বাস্তবতা। তাদের যুদ্ধ নানা ক্ষেত্রে। কখনো পরিবারের মধ্যে, কখনো রাষ্ট্রের মধ্যে। বড্ড সংবেদনশীল মন নিয়ে তিনি তুলে আনেন তাঁর পরিচিত জগতের 888sport promo codeদের জীবনের বিপর্যয়। একাত্তরে নির্যাতিত 888sport promo codeদের যুদ্ধোত্তর 888sport appsের অভিজ্ঞতাসহ আরো নানামাত্রার সামাজিক সংকটচিত্র।

মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরই এক বন্ধুসহ তিনি একাত্তরে নির্যাতিত 888sport promo codeদের জীবন ও স্বাস্থ্যসংকট উদ্ধারের চলমান কাজে যোগ দেন। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। এই সময় দেখা নির্যাতিত 888sport promo codeদের জীবন অভিজ্ঞতার প্রতিফলন পাওয়া যায় তাঁর 888sport alternative linkে। তাঁর গল্পে।

‘নরেনদা আমাকে প্রায়ই বলতেন, নিজেকে প্রকাশ করার দুটো পথ যখন খুঁজে পেয়েছো, থেমে যেও না। থেমে আমি যাইনি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আমার লেখা গল্প, 888sport alternative link, ফিচার, সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে, তেমনি ছবিও। তবে বই ছাপা ও প্রদর্শনী করার ব্যাপারে চিরদিনই আমি উদাসীন।’ (888sport sign up bonusর পথ বেয়ে, ২০১৩)

উল্লিখিত ‘নরেন’ হলেন বিখ্যাত ছোটগল্পকার নরেন্দ্রনাথ মিত্র। সাইদা খানমের আলোকচিত্রীজীবনে সত্যজিৎ রায় যেমন এক হিমালয়সদৃশ উপস্থিতি, তেমনি 888sport live footballিক নরেন্দ্রনাথ মিত্র তাঁর লেখকজীবনে এক অনুপম প্রণোদনা। তাঁদের গভীর সখ্য সাইদা খানমকে অনুপ্রাণিত করেছিল 888sport appsে একটি 888sport live footballপত্রের সংগঠন গড়ে তোলার প্রচেষ্টায়। তথাকথিত কিছু লেখকের নানা বিরুদ্ধতায় শেষ পর্যন্ত সে-চেষ্টা নিষ্ফল হয়। সাইদা খানম এতে গভীর আঘাত পান এবং পরবর্তীকালে আর এ-ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। তবে কলম তিনি কখনো থামাননি। যেমন করে তিনি ক্যামেরাকে আঁকড়ে ছিলেন, তেমনি করে কলমকেও চিরসঙ্গী করেছিলেন। 

সামস রশিদ যখন 888sport live football সংগঠন লেখিকা সংঘের সভানেত্রী, তখন সাইদা খানম লেখিকা সংঘের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নানা কাজে তিনি নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন সবসময়। তরুণদের উৎসাহ দিয়েছেন এগিয়ে যেতে। শেষ জীবনে চেয়েছিলেন তরুণ প্রজন্মের 888sport promo code আলোকচিত্রীদের নিয়ে গড়ে তুলবেন একটি সংগঠন। সেটা অবশ্য সম্ভব হয়নি; কিন্তু তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের 888sport promo code আলোকচিত্রীরা সাইদা খানমকে তাঁদের পথনির্মাতা হিসেবেই 888sport apk download apk latest version করেন, ভালোবাসেন। এটা যেমন তাঁর অর্জন, তেমনি তিনি যে তাঁর লেখার দ্বারা সহজভাবে পাঠকের হৃদয়ে পৌঁছেছেন – এ-ও তাঁর অর্জন।

অনন্যা সাইদা খানমকে আমরা যেন দেখি তাঁর সমগ্রতায়। সৃজনশীলতার বিবিধ আলোয়। আলোয় এবং ছায়ায়। ছায়ার ফুলে আলোর নকশায়। তাঁর আলোকচিত্রী জীবন – 888sport appsে এই পেশায় 888sport promo codeর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে নিঃসন্দেহে অনন্য। তাঁর দীর্ঘ লেখকজীবনও যেন আমাদের কাছে ঔজ্জ্বল্য না হারায়। আমরা যেন সমগ্র সাইদা খানমকে পাই তাঁর সকল সৃজনশীলতায়।