আবুল মনসুর
888sport live chatী কাইয়ুম চৌধুরীর তিরোধানের বছরপূর্তিতেও তাঁর অসিত্মত্বের বিপুলতা এখনো যেন ঘিরে রয়েছে আমাদের। তাঁর মৃত্যুর ভেতর দিয়ে অসিত্মত্ব ও অনসিত্মত্বের মাঝখানে ফাঁকটুকুর অকিঞ্চিৎকরতার প্রত্যক্ষ পরিচয়টি এলো আমাদের অনেকের প্রিয় একজন মানুষের মুহূর্তে অমত্মর্হিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। কাইয়ুম চৌধুরী, – 888sport appsের আনাচে-কানাচে পরিচিত একটি নাম, বরেণ্য চিত্র888sport live chatী, এদেশে রম্নচিশীল মুদ্রণ-সংশিস্নষ্ট 888sport live chatের পথিকৃৎ, কবি ও ছড়াকার, সংগীত ও
live chat 888sport-অনুরাগী, সব প্রগতিশীল আন্দোলনে, প্রতিবাদে সর্বদা সম্মুখসারির যোদ্ধা, সর্বজনশ্রদ্ধেয় বিরল এক ব্যক্তিত্ব।
তাঁর চলে-যাওয়ার আকস্মিকতার ঘোর এখনো অনেকের মতো আমার মন থেকেও পুরোপুরি কেটে যায়নি। ফলে তাঁর 888sport live chatকৃতি নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ হয়তো
এখনো সর্বাংশে নির্মোহভাবে করার মতো মানসিক সংহতি অর্জিত হয়নি। বিশেষ করে তাঁর মৃত্যুর দিনটি সারাদিন এবং মৃত্যু-মুহূর্তে তাঁর কাছাকাছি কাটানোর পর ব্যক্তিগত বেদনাটি হয়ে উঠেছে আরো 888sport sign up bonusতাড়িত। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন-আয়োজিত উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব চলছে, সবচেয়ে উৎসাহী শ্রোতাটির নাম সম্ভবত কাইয়ুম চৌধুরী। আমিও সস্ত্রীক এ-অনুষ্ঠানমালার শ্রোতা, তবে যেতে-যেতে একটু দেরি হয়েছিল। দেখি তিনি
পুত্র-পুত্রবধূ-শ্যালক-পরিবৃত হয়ে সমাসীন, উজ্জ্বল হাসিখুশি। আমাদের দেখে হাত তুলে ডেকে নিয়ে বসালেন কাছাকাছি। সেদিন অনুষ্ঠানের ফাঁকে বক্তৃতাপর্বে অন্যতম বক্তা ছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী। চমৎকার বক্তৃতা দিলেন। একটু দীর্ঘ করেই বললেন চারম্নকলার সঙ্গে সংগীতের সম্পর্ক। তাঁর শিক্ষক 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিন কীভাবে বিশিষ্ট সংগীত888sport live chatীদের তাঁর শিক্ষালয়ে নিয়ে আসতেন এবং শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিতে চাইতেন দেশের শেকড়-সংলগ্ন গানের সঙ্গে – সেসব কথা বললেন। বললেন একসময় এদেশে রাগসংগীতের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল না, যে-কারণে সংগীতগুরম্ন আলাউদ্দিন খাঁ, ওসত্মাদ বাহাদুর হোসেন খাঁর মতো মানুষরা পাশের দেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। আজ এ-উচ্চাঙ্গসংগীতের আসরে হাজার-হাজার মানুষের উচ্ছ্বসিত উপস্থিতি দেখতে পেলে নিশ্চয় তাঁরা খুশি হতেন।
তার পরের ঘটনা সবার জানা। তাঁর সর্বশেষ না-বলা কথাটির সঙ্গে তিনিও চলে গেলেন না-বলার দেশে। হাজার-হাজার হতবাক মানুষের সামনে, সংগীতের বিশাল আয়োজনকে সত্মব্ধ করে দিয়ে তিনি বিদায় জানালেন বিরাশি বছরের বর্ণাঢ্য জীবনকে। আবার যখন অনুষ্ঠান শুরম্ন হলো চলিস্নশ-পঞ্চাশ হাজার মানুষ নীরবে দাঁড়িয়ে সম্মান জানালেন দেশের অগ্রগণ্য এই বরেণ্য মানুষটিকে। এই চকিতে চলে-যাওয়া, কোনো দীর্ঘ কষ্ট না পেয়ে, কাউকে কষ্ট না দিয়ে, হাজার-হাজার মানুষের হৃদয়-নিংড়ানো ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে – এর চেয়ে ভালো বিদায় আর কী হতে পারে, আমরা অনেকেই এমনটি বলাবলি করছি বটে, তবে যার হারায় সে-ই বোঝে আকস্মিক হারানোর বেদনা। তার কাছে কোনটি কতখানি বেদনার, তা কে বলতে পারে?
দুই
পঞ্চাশের দশকের অনেক 888sport live chatীই সাংস্কৃতিক জগতে খ্যাতিমান হয়ে উঠেছিলেন। মোহাম্মদ কিবরিয়া, আমিনুল ইসলাম, মুর্তজা বশীর, রশিদ চৌধুরী, হামিদুর রহমান, নভেরা আহমেদ, আবদুর রাজ্জাক, আবদুল বাসেত, দেবদাস চক্রবর্তী, সৈয়দ জাহাঙ্গীর, নিতুন কুন্ডু প্রমুখ। এঁদের সঙ্গে উচ্চারিত হতেন কাইয়ুম চৌধুরীও। মোহাম্মদ কিবরিয়া তাঁর পেলব সংবেদনশীল কাজ দিয়ে, আমিনুল ইসলাম তাঁর বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব ও সাহসী নিরীক্ষার কারণে, মুর্তজা বশীর রাজনৈতিক ভূমিকায় ও বিচিত্রমুখী প্রতিভার প্রকাশে, রশিদ চৌধুরী বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েও দেশজ উৎসের বিকল্প রূপনির্মাণে নিজেদের স্বতন্ত্র চরিত্র নির্মাণ করেছিলেন। কাইয়ুম চৌধুরী জ্যামিতিক রূপবন্ধে দেশজ মোটিফের ব্যবহারে গড়ে তুলেছিলেন সমকালীন চিত্রজগতে নিজস্ব পরিচয়, জিতেছিলেন সর্বপাকিসত্মান জাতীয় চিত্রপ্রদর্শনীতে শ্রেষ্ঠ 888sport app download bd। তবু তাঁর মূল পরিচয় ছিল মুদ্রণকলায়, বিশেষ করে পুসত্মকের প্রচ্ছদ ও অলংকরণে এদেশে রম্নচিনির্মাণের অগ্রপথিক হিসেবে। আমিনুল ইসলাম, মুর্তজা বশীর, রশিদ চৌধুরী বা দেবদাস চক্রবর্তীর ব্যক্তিচরিত্রের বর্ণাঢ্যতা তাঁর মধ্যে ছিল না, তিনি ছিলেন কিছুটা লাজুক, স্বল্পবাক, অনেকটাই নিয়ম-মানা পারিবারিক মানুষ। পঞ্চাশের এই একদল প্রতিভা-উজ্জ্বল প্রাণোচ্ছল 888sport live chatীর মধ্যে তিনি বরং ছিলেন কিছুটা মৃদু ও অমত্মর্মুখী স্বভাবের। অনেকের একজন থেকে কাইয়ুম চৌধুরী কী করে অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে সংস্কৃতির পরিম-লে দৃশ্যকলাজগতের প্রতিনিধি, সব মহলের কাছে শ্রদ্ধেয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব আর শেষ পর্যমত্ম বাঙালি ও 888sport appsের চেতনার এক মহীরম্নহ-প্রতীক হয়ে উঠলেন তার ভেতর দিয়ে হয়তো তাঁর বিকাশের খানিক হদিস পাওয়া যাবে। এর বাইরে ব্যক্তি কাইয়ুম চৌধুরীকে জানা যাবে পরিবারে দায়িত্বশীল স্বামীর ভূমিকায়, পিতা হিসেবে পুত্রের সঙ্গে অমত্মরঙ্গ বন্ধুতায়, চেনা-অচেনা মানুষের নানা অাঁকাঅাঁকির অবিরাম আবদার ধৈর্য ও শ্রম দিয়ে মিটিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে – যার চিত্র তুলে ধরতে পারবেন পরিবারের সদস্য আর নানা সূত্রে তাঁর সঙ্গে মেশা মানুষেরা।
পঞ্চাশের দশকে পূর্ব বাংলায় গড়ে উঠতে শুরম্ন করেছিল মুক্তচিমত্মা ও প্রগতিশীল চেতনার একটি শিক্ষেত মধ্যবিত্ত সমাজ। এর প্রত্যক্ষতায় দানা বাঁধছিল চিত্রকরদের সঙ্গে বিশেষ করে লেখক ও বামচিমত্মার বুদ্ধিজীবীদের সখ্য। কাইয়ুম চৌধুরী ও তাঁর সমবয়সী চিত্রকরদের সঙ্গে শামসুর রাহমান, হাসান হাফিজুর রহমান, সাদেক খান, সাইয়িদ আতীকুলস্নাহ, জহির রায়হান, আলাউদ্দিন আল আজাদ, সৈয়দ শামসুল হক, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর প্রমুখ কবি-গল্পকার-live chat 888sportকারের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার মধ্য দিয়েই বস্ত্তত প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার আধুনিক একটি বাঙালি শিক্ষেত মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজের চেহারাটি পরিস্ফুট হয়ে উঠতে থাকে। এটি হয়তো বলা যেতে পারে যে, পূর্ব পাকিসত্মানে একটি সংস্কৃতিবান পরিশীলিত আধুনিক জীবনযাপনের পথিকৃৎ যাঁরা, তাঁদের অন্যতম এ-মানুষগুলো। সমকালের চিত্র বা ভাস্কর্যের কোনো চর্চা বা প্রতিষ্ঠান এখানে ছিল না, এ-সম্পর্কে শিক্ষেত মানুষেরও তেমন ধারণা ছিল না। 888sport live chatগুরম্ন জয়নুল আবেদিন প্রায় একক চেষ্টায় 888sport live chatশিক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে দৃশ্যকলার গ্রহণযোগ্যতাকে অনেকটা
এগিয়ে দেন। তাঁর প্রথম কয়েক বছরের ছাত্ররা গুরম্নর অবদানকে ব্যর্থ হতে দেননি। যাঁদের নাম উলেস্নখ করা হলো এঁরা প্রত্যেকেই
888sport live chatসাধনায় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন এবং বৈরী পরিবেশ সত্ত্বেও বেশ কয়েকজন সমসত্ম পাকিসত্মানে প্রথম সারির 888sport live chatী হিসেবে প্রতিষ্ঠা আদায় করে নিয়েছিলেন, যদিও ঔপনিবেশিক আমলে প্রতিষ্ঠিত লাহোরের মেয়ো আর্ট কলেজের কল্যাণে পশ্চিম পাকিসত্মানে চিত্রকলার চর্চা অনেক আগে থেকেই চলে আসছিল। এর সর্বোচ্চ স্বীকৃতি এলো ১৯৬১ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত পাকিসত্মান জাতীয় চারম্নকলা প্রদর্শনীতে, যখন চিত্রকলায় সেরা 888sport app download bdের মাল্যটি এলো কাইয়ুম চৌধুরীর গলায়। উলেস্নখ্য, একই বছর ভাস্কর্যে শ্রেষ্ঠ 888sport app download bd পেয়েছিলেন নভেরা আহমেদ, আর একজন বাঙালি 888sport live chatী। এভাবে কয়েকজনমাত্র উৎসাহী নবীনের কৃতিত্বে সারা পাকিসত্মানে দৃশ্যকলায় পূর্ব পাকিসত্মানের 888sport live chatীদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
পঞ্চাশের অধিকাংশ 888sport live chatী চিত্রাঙ্কনেই হাত পাকিয়েছেন এবং চিত্র888sport live chatী হিসেবেই সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। আবদুর রাজ্জাক চিত্রকলার সঙ্গে ভাস্কর্য, কিবরিয়া, মুর্তজা বশীর, হামিদুর রহমান, নিতুন কুন্ডু ছাপাই ছবি করলেও এঁদের পরিচিতি মূলত চিত্রকর হিসেবে। মুর্তজা বশীর গল্পকার, কবি, live chat 888sportের চিত্রনাট্যকার ও সহপরিচালক এবং মুদ্রা-গবেষক হিসেবেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। মুর্তজা বশীর ছাড়া বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী আর একজনকে আমরা পাই – কাইয়ুম চৌধুরী। চিত্র888sport live chatের বাইরে তাঁর সাফল্যের বিশাল এলাকা গ্রাফিক ডিজাইন বা মুদ্রণ-সংশিস্নষ্ট 888sport live chat, বিশেষ করে পুসত্মকের প্রচ্ছদ ও অলংকরণ। এর বাইরে দেশীয় ও আমত্মর্জাতিক 888sport live football, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সংগীত আর live chat 888sport ছিল তাঁর আগ্রহের এলাকা। লিখেছেন ছড়া আর একেবারে শেষ জীবনে 888sport app download apk। মুর্তজা বশীর তাঁর আগ্রহের সবগুলো বিষয়ে চর্চা করেছেন, গল্পকার ও মুদ্রা-গবেষক হিসেবে তাঁর স্থান উলেস্নখযোগ্য বলে মানতে হবে। কাইয়ুম চৌধুরী তাঁর আগ্রহের সব বিষয়ে হাত দেননি, তবে যেটিতে দিয়েছেন, সেখানে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে। গ্রাফিক ডিজাইন বা মুদ্রণ-সংশিস্নষ্ট বিষয়ে আর বাংলালিপির আধুনিকায়নে 888sport appsে তাঁর অবস্থান এমনই শিখরস্পর্শী যে, কাইয়ুম চৌধুরীর ক্ষেত্রে চিত্র888sport live chat না গ্রাফিক ডিজাইন কোনটিকে এগিয়ে রাখা উচিত, সে-বিষয়ে মতানৈক্য হতে পারে। অন্যদের ক্ষেত্রে এমনটি হওয়ার নয়।
উইলিয়াম বেস্নক বা অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে 888sport app download for android করা যেতে পারে। ইংরেজ কবি বেস্নক খোদাই 888sport live chatে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আর চিত্রকলায়ও পারদর্শী ছিলেন। তাঁর কবি-পরিচিতি ও 888sport live chatী-পরিচিতি প্রায় সমান ব্যাপ্তি পেয়েছে, এখানে অগ্রপশ্চাৎ নির্ণয় করা কঠিন। অবনীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে অবশ্য তা নয়, তাঁর 888sport live chatী-পরিচয় লেখক-পরিচয়ের চেয়ে অনেকটাই অগ্রবর্তী, যদিও নিবিষ্ট পাঠক এটি অনুধাবন করতে পারবেন যে, তাঁর কালের প্রেক্ষাপটে অবনীন্দ্রনাথের গদ্য একেবারেই ভিন্ন ও অনবদ্য। চিত্রকলায় তাঁর অবদানকে উহ্য রাখলেও 888sport live footballস্রষ্টা হিসেবে তিনি 888sport app download for androidীয় হয়ে থাকবেন। এ আলোচনায় আরো অনেক বিবিধমুখী প্রতিভার নাম এসে যাবে স্বাভাবিকভাবেই। সেই লিওনার্দো দা ভিঞ্চি থেকে শুরম্ন করলে তালিকা দীর্ঘ হবে। সে-বিবেচনায় না গিয়ে আমরা বরং আরো দুজন বিভিন্নমুখী বাঙালি প্রতিভার কথা বলতে পারি – সবাই আন্দাজ করতে পারবেন যে, তাঁরা অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সত্যজিৎ রায়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর বহুমুখী প্রতিভার বিকাশে একক ও অনন্য এক ব্যক্তিত্ব, তবু এটি মানতেই হবে মূলত তিনি কবি ও গীতিকার, চিত্র888sport live chatে বা গল্প-888sport alternative link-নাটকে ও আরো অনেক ক্ষেত্রে তাঁর বিশাল অবদান সত্ত্বেও। একইভাবে বাংলা888sport live footballে সত্যজিৎ রায় একটি বিশিষ্ট নাম,
মুদ্রণ-সংশিস্নষ্ট 888sport live chatকর্মে, বিশেষ করে প্রচ্ছদ ও অলংকরণ আর লিপি888sport live chatের আধুনিকায়নে সত্যজিৎ সমগ্র ভারতবর্ষে পথিকৃৎ শুধু নন, এখনো অন্যতম। তারপরও সত্যজিৎ রায়ের বিশ্বখ্যাতি live chat 888sportকার হিসেবে, বিশ্বের সেরা কয়েকজন live chat 888sport-পরিচালকের অন্যতম তিনি। তাঁর
live chat 888sport-পরিচালকের খ্যাতির কাছে অন্য সব খ্যাতি গৌণ।
তিন
কাইয়ুম চৌধুরীর ক্ষেত্রে ব্যাপারটি একটু অন্যরকম। তাঁর কর্মের প্রধান দুটি এলাকা ছিল খুব কাছাকাছি, বলা যেতে পারে যে, প্রায় পরস্পর-সংলগ্ন। তাঁর চিত্রকর জীবনের প্রায় সূচনালগ্ন থেকেই তিনি মুদ্রণকলার সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন নানাভাবে। গ্রাফিক-ডিজাইন বলতে যা বোঝায়, সে-বিষয়ে নৈপুণ্য অর্জন করতে হলে যান্ত্রিক মুদ্রণের কারিগরি দিকগুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যক। লেটারপ্রেস মুদ্রণের কালে বস্নক-নির্মাণের মাধ্যমে প্রচ্ছদ ও অলংকরণের যুগে শুরম্ন করে কম্পিউটার-চালিত ডিজাইন প্রণয়নের কালে এসেও তিনি ছিলেন কারিগরি জানাশোনায় সর্বদা আগ্রহী আর মুদ্রণ-সংশিস্নষ্ট 888sport live chatের সব ধরনে আমৃত্যু তিনিই ছিলেন আমাদের দেশে অবিসংবাদীরূপে সবার সেরা। শুধু প্রচ্ছদ আর অলংকরণের কথা বলি কেন – পোস্টার, লোগো, ক্যালেন্ডার, ক্যাটালগ, 888sport app download for androidিকা ইত্যাকার সব কাজে তিনি রচনা করেছিলেন একটি 888sport live chatিত মানদ-। বিশেষ করে বলতে হয় কাইয়ুম চৌধুরী-রচিত আমন্ত্রণপত্রের কথা – দৃষ্টিশোভন আমন্ত্রণপত্রের অপূর্ব নজির তাঁর বিয়ে বা নানা অনুষ্ঠানের জন্য করা আমন্ত্রণপত্রের নকশা।
আর একটি কথা উলেস্নখ না করলেই নয়। বাংলা হসত্মলিপিতে আধুনিকতা ও ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য সঞ্চার করেছিলেন সত্যজিৎ রায়, তাঁর প্রেরণার শেকড় ছিল প্রাচীন বাংলার পুঁথিলিপি। কাইয়ুম চৌধুরী ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের সব ধরনের গ্রাফিক কাজের মুগ্ধভক্ত। তাঁর নিজের হসত্মলিপিতে সত্যজিৎ রায়ের প্রভাবের ছায়া শেষ পর্যমত্ম কিছুটা ছিল, যদিও ক্রমশই তিনি অর্জন করেছিলেন তাঁর নিজস্বতার স্বতন্ত্র মাত্রাও। তবে পুসত্মকের প্রচ্ছদ ও ইলাস্ট্রেশন বা অলংকরণে সত্যজিতের প্রভাব তেমনভাবে পড়তে দেননি তিনি। সে-এলাকায় কাইয়ুম চৌধুরী একক ও অনন্য। যদিও সত্যজিতের প্রচ্ছদ-ভাবনায় লোককলার অসামান্য প্রয়োগ মাঝে-মাঝে দেখা গেছে, যেমন অচিমত্ম্যকুমার সেনগুপ্তের পরমপুরম্নষ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ গ্রন্থে নামাবলির ব্যবহার কিংবা বিষ্ণু দের কাব্যগ্রন্থ নাম রেখেছি কোমলগান্ধায়ে কালীঘাটের পটচিত্রের প্রয়োগ, তবু তাঁর প্রচ্ছদ888sport live chat মূলত তাঁর লিপি-লিখনের স্বকীয়তানির্ভর। কাইয়ুম চৌধুরীর প্রচ্ছদ888sport live chatের ক্ষেত্রেও লোককলা একটি প্রধান আকর্ষণ এবং লোক888sport live chatের নানা মোটিফকে জ্যামিতিক সরলতায় জারিত করে তিনি গড়ে নিয়েছিলেন তাঁর প্রচ্ছদরূপের মূল আঙ্গিক, লিপি সেখানে অনুষঙ্গ মাত্র। তবে মোটিফ ও লিপির যা স্বাতন্ত্র্য তিনি প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছিলেন, সেটি এতটা স্পষ্টমাত্রায় প্রতিভাত ছিল যে, প্রচ্ছদ888sport live chatে কোনো সামান্য আগ্রহী মানুষের পক্ষেও এটি বলে দেওয়া সম্ভব কোন প্রচ্ছদটি কাইয়ুম চৌধুরীর।
আমরা তাঁর অন্বেষণের সূত্রটি ধরে চলে যেতে পারি তাঁর চিত্রচর্চার ভুবনটিতে। কাইয়ুম চৌধুরীর রচিত চিত্রকর্মের পরিমাণ আশ্চর্যজনকভাবে বিপুল। সম্ভবত চিত্রকর হিসেবে তাঁর চেয়ে অধিক পরিচিতিপ্রাপ্ত সমসাময়িক অধিকাংশ 888sport live chatীর চেয়ে বেশি। পঞ্চাশের সমসাময়িকদের মতো তাঁরও সূচনাপর্বে কিউবিজম আর পিকাসোর ছায়া পরিলক্ষেত। তবে অন্যদের তুলনায় খুব দ্রম্নতই তিনি নিজের শৈলী খুঁজে নেওয়ার পথে অগ্রসর হন আর সবচেয়ে উলেস্নখযোগ্য যেটি, সেটি হলো বিষয় চয়নের ক্ষেত্রে তিনি নিজের স্বাতন্ত্র্য নির্মাণে সচেতন বোধের পরিচয় দেন। বিষয় হিসেবে নদী-মাছ-জেলে-নৌকা আমাদের অনেক চিত্র888sport live chatীরই প্রিয়। তবে মোহাম্মদ কিবরিয়া, আমিনুল ইসলাম, মুর্তজা বশীরের মতো পঞ্চাশের প্রধান কয়েকজন 888sport live chatী, যাঁরা এসেছিলেন শহুরে পটভূমি থেকে, নাগরিক-জীবনের বিবিধ অনুষঙ্গকেই তাঁদের কিউবিজম-অনুপ্রাণিত চিত্রকর্মে উন্মোচিত করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। কাইয়ুম চৌধুরীর সঙ্গে ব্যতিক্রমী সূচনা দেখা যায় রশিদ চৌধুরীর মধ্যেও। কাইয়ুম চৌধুরী তাঁর অন্য সমসাময়িকদের মতো বিদেশে শিক্ষার সুযোগ পাননি। বিদেশে প্রশিক্ষণের একটি অন্যতম অভিঘাত সমসাময়িক বিমূর্ত 888sport live chat-অভিব্যক্তি দ্বারা আন্দোলিত ও প্রভাবিত হওয়া, বিমূর্ততাকে মনে করা হয়েছিল আধুনিকতার অন্যতম অভিজ্ঞান। বিমূর্ত 888sport live chatতত্ত্বে লোককলা বা কারম্ন888sport live chatের কোনো স্থান নেই, অধিকাংশের 888sport live chatকর্মে তারই অনুরণন দেখি। একমাত্র রশিদ চৌধুরী বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েও এ অভিঘাতকে সামলেছেন দেশজ প্রেক্ষাপটের আকার ও বর্ণের আধাবিমূর্ত রূপায়ণের মাধ্যমে। গ্রাম ও শহরের মিশ্র পরিবেশ থেকে উঠে-আসা রশিদ চৌধুরী লোককলার অধিক পরিচিত ভা-ারকে পাশ কাটিয়ে নিলেন প্রতিমা-রূপের আদলকে – দুর্গা, রাধাকৃষ্ণ প্রভৃতির প্রচলিত মূর্তিরূপকে ভেঙে গড়লেন তাঁর ট্যাপিস্ট্রি, গোয়াশ ও তেলচিত্রের আধাবিমূর্ত রূপকল্প। পাশাপাশি কাইয়ুম চৌধুরী তাঁর ছবির মধ্যে স্থাপন করলেন গ্রামীণ-জীবনের নানা প্রাত্যহিক ব্যবহার্য বস্ত্ত ও লোকজ888sport live chatের মোটিফকে আর এভাবে নিজের জন্য বেছে নিলেন এমন একটি পথ, যেটি বহুল ব্যবহৃত বটে, আবার অপার সম্ভাবনাময়ও।
আধুনিক 888sport live chat বলে যাকে আমরা অভিহিত করি সেখানে লোককলার প্রেরণা বা প্রভাব আজকের নয়। সেই অবনীন্দ্রনাথের কবিকঙ্কনচ-ী আর নন্দলালের হরিপুরা পোস্টার দিয়ে সূচিত হয়ে যামিনী রায়ে এসে এটি বিপুল ও প্রসারিত রূপ লাভ করে এবং ভারতের আধুনিক 888sport live chatধারায় প্রভাবশালী অনুঘটক হিসেবে দেখা দেয়। দেশ বিভাগের পর পূর্ববাংলার 888sport live chatচর্চায় জয়নুল আবেদিন লোককলায় অনুপ্রাণিত কিছু ছবি এঁকেছিলেন, এসবের মধ্যে সম্ভাবনা থাকলেও তিনি এর চর্চায় যথেষ্ট স্থিত থাকেননি। বরং কামরম্নল হাসানের সৃষ্টিতে লোক888sport live chatের ব্যবহার বিবিধ বৈচিত্র্যে বিকশিত হয়ে একটি পরিণত রূপ লাভ করেছে। কামরম্নল
হাসান-পরবর্তী পর্বে এ-ধারাটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটি হাতে নিয়েছিলেন রশিদ চৌধুরী ও কাইয়ুম চৌধুরী। রশিদ চৌধুরী তাঁর প্রতিমাকল্পের একমাত্রিকতা সত্ত্বেও বিন্যাস ও বর্ণের প্রয়োগে লোককলার সঙ্গে সমসাময়িক শৈলীর এক নিজস্ব সমন্বয় ঘটাতে পেরেছিলেন। কাইয়ুম চৌধুরীর চিত্ররচন-অভীপ্সার সূচনাকাল থেকেই চিত্রতলে একটি নকশাদারিত্ব ফুটিয়ে তোলার প্রবণতা দেখা যায়। পলিস্নজীবনের নানা অনুষঙ্গ, যেমন নদী-নৌকা, মাছ-জাল, পাখি-চাঁদ, ফুল-পাতা, কলসি-কাঁখে-888sport promo code ইত্যাকার বহুল ব্যবহৃত মোটিফ কিছুটা নকশার আদলে স্থান পেতে থাকে তাঁর চিত্রে। তবে এসব পরিচিত রূপের পাশাপাশি নৌকার গলুই ও তাতে অাঁকা চোখ, সেতু, নকশিকাঁথা, আলপনা আর জামদানি শাড়ির মোটিফ কিছুটা জ্যামিতিক সরলীকৃত চেহারায় তাঁর ছবির জমিনকে একটি স্বতন্ত্র চরিত্রের আলংকারিক চিত্র-পরিসরে পরিণত করতে থাকে। তাঁর ব্যবহৃত মোটিফগুলো তাদের নিজস্ব চেহারার পুনঃপুন উপস্থাপনে কাইয়ুম চৌধুরীরও পরিচিতি-চিহ্ন হয়ে উঠতে থাকে।
তাঁর সমসাময়িক পঞ্চাশের দশকের 888sport live chatীরা সমকালের ঘটনাপ্রবাহকে তাঁদের 888sport live chatে বিষয় হিসেবে বিশেষ গুরম্নত্ব দেননি, মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া। কাইয়ুম চৌধুরীও সূচনাতে শৈশব, 888sport sign up bonus ইত্যাদিকে বিষয় নির্বাচন করলেও তাঁর মধ্যে ক্রমশ জাগ্রত হতে থাকে সমকালের, বিশেষ করে ষাট ও সত্তরের দশকের উন্মাতাল ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে সম্পৃক্ততা। মুক্তিযুদ্ধ তাঁর আবেগকে বিশেষভাবে তাড়িত করেছে, এ নিয়ে তাঁর চিত্রের 888sport free betও কম নয়। মুক্তযুদ্ধ-পরবর্তীকালে কাইয়ুম চৌধুরী রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকা– সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে শুরম্ন করেন, তাঁর ছবির বিষয়বস্ত্তও অধিকতর সোচ্চার বক্তব্যবাহী হয়ে উঠতে শুরম্ন করে। আর এভাবে কাইয়ুম চৌধুরী সংস্কৃতির জগতে একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ ও ক্রমে-ক্রমে সমগ্র সুশীল-সমাজে সর্বজনশ্রদ্ধেয় এক বিবেকবান মানুষ হিসেবে অগ্রবর্তী ভূমিকায় চলে আসেন। ষাটের দশকের শেষ দিক থেকে তাঁর চিত্রকর্মের শিরোনাম হয়ে উঠতে থাকে প্রতিবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, শহীদ, জয়বাংলা, বঙ্গবন্ধু, জলমগ্ন-গ্রাম ইত্যাদি এবং তাঁর মৃত্যু পর্যমত্ম এ-সচেতনতা তিনি বজায় রেখেছেন। তাঁর ছবিতে বর্ণের বিভা উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে। এটি বিষয়ের প্রয়োজনে যতটা হয়তো, তার চেয়েও বেশি 888sport appsের প্রকৃতি ও পতাকার রংকে চিত্রে স্থাপনের বাসনা থেকে ঘটতে পারে। প্রচুর অন্য ব্যসত্মতা সত্ত্বেও চিত্ররচনায় কখনো ক্ষামিত্ম দেননি তিনি। তাঁর চিত্রমালা এক ধরনের মানসিক ধারাবাহিকতার পরিচয় বহন করে। একটি মৃদু ও কোমল কণ্ঠের
প্রকৃতিপ্রেমিক চিত্রকর থেকে ক্রমশ যেন কাইয়ুম চৌধুরী হয়ে উঠেছিলেন পলিস্নবাংলার আবহমান জীবনের এক অক্লামত্ম রূপকার, তাঁর চলমান ঘটনাপ্রবাহের একইসঙ্গে ভাষ্যকার ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। তাঁর চিত্রে পলিস্নবাংলার নদী-নৌকা, মাছ-জাল, পাখি-চাঁদ, ফুল-পাতা, পুরম্নষ ও 888sport promo codeরা কখনো লাবণ্যময় স্থিতিময়তায় আবার কখনোবা প্রতিবাদে-প্রতিরোধে চিত্রতলে গতিশীলতায় আলোড়ন তোলে। তবে তাঁর চিত্রে নকশাদারিত্বের বৈশিষ্ট্যটি তাঁর স্বাক্ষর হিসেবে থেকেই যায়।
চার
কাইয়ুম চৌধুরী কতটা চিত্রকর আর কতটাইবা গ্রাফিক888sport live chatের মানুষ, সে নিয়ে আলোচনা চলতে পারে। তবে এটি নির্দ্বিধায় বলা যেতে পারে, এদেশে চিত্র888sport live chatের সূচনালগ্নটি যে-কয়েকজন প্রতিভাবান 888sport live chatীর চিত্রকর্মের দ্বারা পরিপুষ্টি অর্জন করেছিল, তিনি তাঁদের অন্যতম। সেখানে তিনি অনেকের মধ্যে একজন। কিন্তু আমাদের এ-ভূখ– মুদ্রণ-সংশিস্নষ্ট 888sport live chatের সূচনায় কাইয়ুম চৌধুরী একক পথিকৃৎ এবং আজ পর্যমত্ম এ-888sport live chatের এ-শাখাটিতে পুরোধা 888sport live chatী। মুদ্রণ-সংশিস্নষ্ট বিষয়ে রম্নচি নির্মাণে তিনি ষাট বছরেরও অধিক কাল ধরে অক্লামত্মভাবে কাজ করে চলেছিলেন, মিটিয়ে গেছেন চেনা-অচেনা মানুষের আবদার থেকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাহিদা, কোথাও রম্নচি বা পছন্দের ক্ষেত্রে কোনো আপস করেননি। 888sport appsে পুসত্মকের প্রচ্ছদ-অলংকরণ শুধু নয়, প্রডাকশন বা প্রকাশনার সার্বিক রূপ বিগত শতকের ষাটের দশক থেকেই, যখন মুদ্রণ-ব্যবস্থা ছিল আজকের তুলনায় প্রায় আদিম, একটি উন্নত ও রম্নচিস্নিগ্ধ রূপ লাভ করতে সমর্থ হয়েছে মূলত কাইয়ুম চৌধুরীর হাত ধরে। আকৃতির কিছুটা সরলায়িত জ্যামিতিক রূপের যে-আদলটি তিনি নির্মাণ করেছিলেন, সে 888sport promo code, মুক্তিযোদ্ধা, পাখি, বৃক্ষ, নৌকা বা গ্রামীণ বাড়িঘর যেটিই হোক, 888sport appsে সেসব বস্ত্তর একটি নির্বিশেষ প্রতীকে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বলতে হয় 888sport appsের স্বাধীনতাযুদ্ধের গ্রামীণ কিশোর মুক্তিযোদ্ধার যে-রূপটি তিনি নির্মাণ করেছিলেন, তার কথা। আমরা জানি, মুক্তিযুদ্ধে প্রশিক্ষেত বাহিনীগুলো যেমন যুদ্ধ করেছে, তেমনি শহরের ছাত্র-যুবক-কিশোর-কর্মজীবীরাও যুদ্ধে যুক্ত হয়েছিল। হয়তো একটু কম জানি যে মুক্তিযুদ্ধে গ্রামের, অজ পাড়াগাঁয়ের কৃষক-তরম্নণ এমনকি কিশোররাও অনেকে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, প্রাণ বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিল। কাইয়ুম চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সর্বজনীন প্রতীকের পরিকল্পনায় বেছে নিলেন গ্রামের প্রায়-কিশোর এক তরম্নণের অবয়ব। পরনে গেঞ্জি-লুঙ্গি, মাথায় বাঁধা লাল ফেট্টি, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আগুয়ান এই মুক্তিযোদ্ধার মূর্তিটি আজ বাঙালির প্রতিরোধ ও মুক্তিসংগ্রামের একক আইকনে পরিণত হয়েছে।
888sport appsের সংস্কৃতি-পটে কাইয়ুম চৌধুরীর আবির্ভাব মৃদু কিন্তু পরিশীলিত আবেশে। ক্রমে-ক্রমে নিজেকে তিনি বিসত্মৃত করেছিলেন, ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন শুধু দৃশ্যকলা জগতের নয়, সংস্কৃতিজগতের প্রায় সবাইকে। আশি-ঊর্ধ্ব বয়সেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন সর্বত্রগামী, সর্বজনশ্রদ্ধেয়, অনেকটাই জাতির অভিভাবক। যখন ছেড়ে গেলেন, তখন তাঁর তিরোধান সংস্কৃতিজগতের শুধু নয়, হয়ে উঠেছে সমগ্র বাঙালি জাতির অপূরণীয় ক্ষতি। কাইয়ুম চৌধুরীর 888sport sign up bonus জাগরূক রইবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তিনি হবেন একইসঙ্গে কর্মোদ্যোগ ও সচেতনতার অনুপ্রেরণা – এ-আশাবাদ জেগে থাকুক। ৎ
বিদেশে প্রশিক্ষণের একটি অন্যতম অভিঘাত সমসাময়িক বিমূর্ত 888sport live chat-অভিব্যক্তি দ্বারা আন্দোলিত ও প্রভাবিত হওয়া, বিমূর্ততাকে মনে করা হয়েছিল আধুনিকতার অন্যতম অভিজ্ঞান। বিমূর্ত 888sport live chatতত্ত্বে লোককলা বা কারম্ন888sport live chatের কোনো স্থান নেই, অধিকাংশের 888sport live chatকর্মে তারই অনুরণন দেখি। একমাত্র রশিদ চৌধুরী বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েও এ অভিঘাতকে সামলেছেন দেশজ প্রেক্ষাপটের আকার ও বর্ণের আধাবিমূর্ত রূপায়ণের মাধ্যমে। গ্রাম ও শহরের মিশ্র পরিবেশ থেকে উঠে-আসা রশিদ চৌধুরী লোককলার অধিক পরিচিত ভা-ারকে পাশ কাটিয়ে নিলেন প্রতিমা-রূপের আদলকে – দুর্গা, রাধাকৃষ্ণ প্রভৃতির প্রচলিত মূর্তিরূপকে ভেঙে গড়লেন তাঁর ট্যাপিস্ট্রি, গোয়াশ ও তেলচিত্রের আধাবিমূর্ত রূপকল্প। পাশাপাশি কাইয়ুম চৌধুরী তাঁর ছবির মধ্যে স্থাপন করলেন গ্রামীণ-জীবনের নানা প্রাত্যহিক ব্যবহার্য বস্ত্ত ও লোকজ888sport live chatের মোটিফকে আর এভাবে নিজের জন্য বেছে নিলেন এমন একটি পথ, যেটি বহুল ব্যবহৃত বটে, আবার অপার সম্ভাবনাময়ও।
আধুনিক 888sport live chat বলে যাকে আমরা অভিহিত করি সেখানে লোককলার প্রেরণা বা প্রভাব আজকের নয়। সেই অবনীন্দ্রনাথের কবিকঙ্কনচ-ী আর নন্দলালের হরিপুরা পোস্টার দিয়ে সূচিত হয়ে যামিনী রায়ে এসে এটি বিপুল ও প্রসারিত রূপ লাভ করে এবং ভারতের আধুনিক 888sport live chatধারায় প্রভাবশালী অনুঘটক হিসেবে দেখা দেয়। দেশ বিভাগের পর পূর্ববাংলার 888sport live chatচর্চায় জয়নুল আবেদিন লোককলায় অনুপ্রাণিত কিছু ছবি এঁকেছিলেন, এসবের মধ্যে সম্ভাবনা থাকলেও তিনি এর চর্চায় যথেষ্ট স্থিত থাকেননি। বরং কামরম্নল হাসানের সৃষ্টিতে লোক888sport live chatের ব্যবহার বিবিধ বৈচিত্র্যে বিকশিত হয়ে একটি পরিণত রূপ লাভ করেছে। কামরম্নল
হাসান-পরবর্তী পর্বে এ-ধারাটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটি হাতে নিয়েছিলেন রশিদ চৌধুরী ও কাইয়ুম চৌধুরী। রশিদ চৌধুরী তাঁর প্রতিমাকল্পের একমাত্রিকতা সত্ত্বেও বিন্যাস ও বর্ণের প্রয়োগে লোককলার সঙ্গে সমসাময়িক শৈলীর এক নিজস্ব সমন্বয় ঘটাতে পেরেছিলেন। কাইয়ুম চৌধুরীর চিত্ররচন-অভীপ্সার সূচনাকাল থেকেই চিত্রতলে একটি নকশাদারিত্ব ফুটিয়ে তোলার প্রবণতা দেখা যায়। পলিস্নজীবনের নানা অনুষঙ্গ, যেমন নদী-নৌকা, মাছ-জাল, পাখি-চাঁদ, ফুল-পাতা, কলসি-কাঁখে-888sport promo code ইত্যাকার বহুল ব্যবহৃত মোটিফ কিছুটা নকশার আদলে স্থান পেতে থাকে তাঁর চিত্রে। তবে এসব পরিচিত রূপের পাশাপাশি নৌকার গলুই ও তাতে অাঁকা চোখ, সেতু, নকশিকাঁথা, আলপনা আর জামদানি শাড়ির মোটিফ কিছুটা জ্যামিতিক সরলীকৃত চেহারায় তাঁর ছবির জমিনকে একটি স্বতন্ত্র চরিত্রের আলংকারিক চিত্র-পরিসরে পরিণত করতে থাকে। তাঁর ব্যবহৃত মোটিফগুলো তাদের নিজস্ব চেহারার পুনঃপুন উপস্থাপনে কাইয়ুম চৌধুরীরও পরিচিতি-চিহ্ন হয়ে উঠতে থাকে।
তাঁর সমসাময়িক পঞ্চাশের দশকের 888sport live chatীরা সমকালের ঘটনাপ্রবাহকে তাঁদের 888sport live chatে বিষয় হিসেবে বিশেষ গুরম্নত্ব দেননি, মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া। কাইয়ুম চৌধুরীও সূচনাতে শৈশব, 888sport sign up bonus ইত্যাদিকে বিষয় নির্বাচন করলেও তাঁর মধ্যে ক্রমশ জাগ্রত হতে থাকে সমকালের, বিশেষ করে ষাট ও সত্তরের দশকের উন্মাতাল ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে সম্পৃক্ততা। মুক্তিযুদ্ধ তাঁর আবেগকে বিশেষভাবে তাড়িত করেছে, এ নিয়ে তাঁর চিত্রের 888sport free betও কম নয়। মুক্তযুদ্ধ-পরবর্তীকালে কাইয়ুম চৌধুরী রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকা– সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে শুরম্ন করেন, তাঁর ছবির বিষয়বস্ত্তও অধিকতর সোচ্চার বক্তব্যবাহী হয়ে উঠতে শুরম্ন করে। আর এভাবে কাইয়ুম চৌধুরী সংস্কৃতির জগতে একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ ও ক্রমে-ক্রমে সমগ্র সুশীল-সমাজে সর্বজনশ্রদ্ধেয় এক বিবেকবান মানুষ হিসেবে অগ্রবর্তী ভূমিকায় চলে আসেন। ষাটের দশকের শেষ দিক থেকে তাঁর চিত্রকর্মের শিরোনাম হয়ে উঠতে থাকে প্রতিবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, শহীদ, জয়বাংলা, বঙ্গবন্ধু, জলমগ্ন-গ্রাম ইত্যাদি এবং তাঁর মৃত্যু পর্যমত্ম এ-সচেতনতা তিনি বজায় রেখেছেন। তাঁর ছবিতে বর্ণের বিভা উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে। এটি বিষয়ের প্রয়োজনে যতটা হয়তো, তার চেয়েও বেশি 888sport appsের প্রকৃতি ও পতাকার রংকে চিত্রে স্থাপনের বাসনা থেকে ঘটতে পারে। প্রচুর অন্য ব্যসত্মতা সত্ত্বেও চিত্ররচনায় কখনো ক্ষামিত্ম দেননি তিনি। তাঁর চিত্রমালা এক ধরনের মানসিক ধারাবাহিকতার পরিচয় বহন করে। একটি মৃদু ও কোমল কণ্ঠের
প্রকৃতিপ্রেমিক চিত্রকর থেকে ক্রমশ যেন কাইয়ুম চৌধুরী হয়ে উঠেছিলেন পলিস্নবাংলার আবহমান জীবনের এক অক্লামত্ম রূপকার, তাঁর চলমান ঘটনাপ্রবাহের একইসঙ্গে ভাষ্যকার ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। তাঁর চিত্রে পলিস্নবাংলার নদী-নৌকা, মাছ-জাল, পাখি-চাঁদ, ফুল-পাতা, পুরম্নষ ও 888sport promo codeরা কখনো লাবণ্যময় স্থিতিময়তায় আবার কখনোবা প্রতিবাদে-প্রতিরোধে চিত্রতলে গতিশীলতায় আলোড়ন তোলে। তবে তাঁর চিত্রে নকশাদারিত্বের বৈশিষ্ট্যটি তাঁর স্বাক্ষর হিসেবে থেকেই যায়।
চার
কাইয়ুম চৌধুরী কতটা চিত্রকর আর কতটাইবা গ্রাফিক888sport live chatের মানুষ, সে নিয়ে আলোচনা চলতে পারে। তবে এটি নির্দ্বিধায় বলা যেতে পারে, এদেশে চিত্র888sport live chatের সূচনালগ্নটি যে-কয়েকজন প্রতিভাবান 888sport live chatীর চিত্রকর্মের দ্বারা পরিপুষ্টি অর্জন করেছিল, তিনি তাঁদের অন্যতম। সেখানে তিনি অনেকের মধ্যে একজন। কিন্তু আমাদের এ-ভূখ– মুদ্রণ-সংশিস্নষ্ট 888sport live chatের সূচনায় কাইয়ুম চৌধুরী একক পথিকৃৎ এবং আজ পর্যমত্ম এ-888sport live chatের এ-শাখাটিতে পুরোধা 888sport live chatী। মুদ্রণ-সংশিস্নষ্ট বিষয়ে রম্নচি নির্মাণে তিনি ষাট বছরেরও অধিক কাল ধরে অক্লামত্মভাবে কাজ করে চলেছিলেন, মিটিয়ে গেছেন
চেনা-অচেনা মানুষের আবদার থেকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাহিদা, কোথাও রম্নচি বা পছন্দের ক্ষেত্রে কোনো আপস করেননি। 888sport appsে পুসত্মকের প্রচ্ছদ-অলংকরণ শুধু নয়, প্রডাকশন বা প্রকাশনার সার্বিক রূপ বিগত শতকের ষাটের দশক থেকেই, যখন মুদ্রণ-ব্যবস্থা ছিল আজকের তুলনায় প্রায় আদিম, একটি উন্নত ও রম্নচিস্নিগ্ধ রূপ লাভ করতে সমর্থ হয়েছে মূলত কাইয়ুম চৌধুরীর হাত ধরে। আকৃতির কিছুটা সরলায়িত জ্যামিতিক রূপের যে-আদলটি তিনি নির্মাণ করেছিলেন, সে 888sport promo code, মুক্তিযোদ্ধা, পাখি, বৃক্ষ, নৌকা বা গ্রামীণ বাড়িঘর যেটিই হোক, 888sport appsে সেসব বস্ত্তর একটি নির্বিশেষ প্রতীকে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বলতে হয় 888sport appsের স্বাধীনতাযুদ্ধের গ্রামীণ কিশোর মুক্তিযোদ্ধার যে-রূপটি তিনি নির্মাণ করেছিলেন, তার কথা। আমরা জানি, মুক্তিযুদ্ধে প্রশিক্ষেত বাহিনীগুলো যেমন যুদ্ধ করেছে, তেমনি শহরের ছাত্র-যুবক-কিশোর-কর্মজীবীরাও যুদ্ধে যুক্ত হয়েছিল। হয়তো একটু কম জানি যে মুক্তিযুদ্ধে গ্রামের, অজ পাড়াগাঁয়ের কৃষক-তরম্নণ এমনকি কিশোররাও অনেকে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, প্রাণ বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিল। কাইয়ুম চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সর্বজনীন প্রতীকের পরিকল্পনায় বেছে নিলেন গ্রামের প্রায়-কিশোর এক তরম্নণের অবয়ব। পরনে গেঞ্জি-লুঙ্গি, মাথায় বাঁধা লাল ফেট্টি, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আগুয়ান এই মুক্তিযোদ্ধার মূর্তিটি আজ বাঙালির প্রতিরোধ ও মুক্তিসংগ্রামের একক আইকনে পরিণত হয়েছে।
888sport appsের সংস্কৃতি-পটে কাইয়ুম চৌধুরীর আবির্ভাব মৃদু কিন্তু পরিশীলিত আবেশে। ক্রমে-ক্রমে নিজেকে তিনি বিসত্মৃত করেছিলেন, ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন শুধু দৃশ্যকলা জগতের নয়, সংস্কৃতিজগতের প্রায় সবাইকে। আশি-ঊর্ধ্ব বয়সেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন সর্বত্রগামী, সর্বজনশ্রদ্ধেয়, অনেকটাই জাতির অভিভাবক। যখন ছেড়ে গেলেন, তখন তাঁর তিরোধান সংস্কৃতিজগতের শুধু নয়, হয়ে উঠেছে সমগ্র বাঙালি জাতির অপূরণীয় ক্ষতি। কাইয়ুম চৌধুরীর 888sport sign up bonus জাগরূক রইবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তিনি হবেন একইসঙ্গে কর্মোদ্যোগ ও সচেতনতার অনুপ্রেরণা – এ-আশাবাদ জেগে থাকুক।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.