দ্বিতীয় প্রস্থ
রুমির 888sport sign up bonusতে
প্রথম প্রস্থ এই পত্রিকারই গত, অর্থাৎ পঞ্চদশ, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী 888sport free betয় (ফাল্গুন ১৪২৪) বেরিয়েছিল। এগুলোও মোটামুটি একই সময়ে লেখা, ১৯৬১-তে বিদেশ থেকে, ১৯৬২-তে দেশের এক ঠিকানা থেকে অন্য ঠিকানায়, ১৯৬৩-তে যখন আমি বিদেশগামী ও সেখানে পাঠ নিতে শুরু করেছি এবং, কিছু পরে, বুদ্ধদেব বসুরাও সেদেশে পৌঁচচ্ছেন, ১৯৬৪-তে সেদেশেরই এক থেকে অন্য ঠিকানায়, ১৯৬৫-তে দেশে ফিরছেন, পরে (১৯৬৫-৬৬-৬৭) কলকাতা থেকে বিদেশে আমাকে। (যাঁরা এই প্রস্থই প্রথম পড়বেন তাঁদের অবগতির জন্য বলছি, আমি যাদবপুরে বুদ্ধদেব বসুর ছাত্র ছিলাম, পরে তাঁর অধীনে তুলনামূলক 888sport live footballের শিক্ষক হই, এবং ধীরে ধীরে তাঁর স্নেহে বৃত হই। চিঠিগুলি সেই স্নেহেরই স্মারক।)
চিঠি ১
পিকচার পোস্টকার্ড : উল্টোপিঠে হাকোনে-র আকাশ (কোমাগাতাকে পর্বতশৃঙ্গ থেকে দেখা)।
টোকিও
২০ জানুয়ারি ১৯৬১
অমিয়,
কেমন আছো সবাই? ছাত্রছাত্রী, অলোকরঞ্জন, নরেনবাবু, ম্যাকুচেন – সকলের কী খবর? ডক্টর সত্যেন রায়ের ক্লাশ আশা করি ছেলেদের ভালো লাগছে। জর্নাল বোধহয় প্রেসে গেছে এতদিনে, ভালো ক’রে প্রম্নফ দেখার বন্দোবস্ত কোরো, ছাপা সুন্দর হওয়া চাই। সব খবর দিয়ে নিউ ইয়র্কের ঠিকানায় চিঠি লিখো। ফাদার ফাঁলকে প্রীতিনমস্কার জানাই।
বু.ব.
চিঠি ২
পিকচার পোস্টকার্ড : উল্টোপিঠে লস এঞ্জেলেস সিটি হল।
অমিয়,
কিছুক্ষণ আগে আন্তর্জাতিক তারিখ-রেখা পার হলাম, বেলা সাড়ে-তিনটেতে কালো হয়ে রাত্রি নামলো, তেইশ তারিখ বদলে হয়ে গেল বাইশে। সত্যি এ-রকম হয় বিশ্বাস করা শক্ত, কিন্তু তা না-হ’লে তোমার অঙ্ক মেলে না। জাপানে একটা হিশেব করার কল কেনা হয়েছে, কিন্তু সেটার ব্যবহার – আমি তো কোন ছার, তোমার মাসিমাও আয়ত্তে আনতে পারছেন না, ফিরে গিয়ে তোমার কাছে শিখে নেব। (পেস্ননে চিঠি শেষ করতে পারিনি, হনলুলুতে এসে ডাকে দিলাম)
[স্বাক্ষর করেননি]
চিঠি ৩
এয়ারোগ্রাম, নিউ ইয়র্ক থেকে পাঠানো : ভিতরের অংশ প্রতিভা বসুর লেখা, বুদ্ধদেব বসু লিখেছেন বাইরের অংশে।
৫/২/৬১
কল্যাণীয়েষু
অমিয়, জর্নালের লেখাগুলো তুমি যে-ভাবে সাজাবে ভাবছো তা-ই কোরো, বেশ ভালোই হবে। সুধীন্দ্রর বিষয়ে পাতাখানেক আমিই লিখে দিতে চাই – কিন্তু তোমাদের সবুর সইবে কি? কতদিন সময় দিতে পারো? এখানে দারুণ সময়ের অভাব অনুভব করছি; তুচ্ছতম কাজের জন্যও নিজেদের বেরোতে হয়; বড্ড হাঁটুনি, বড্ড খাটুনি, এখানে সুবিধে আছে বিস্তর কিন্তু আরাম নেই – তা জেনেই এসেছি। যেটুকু সময় পাই চিঠিপত্র লিখতেই কেটে যায় – অন্তত এখনো তা-ই হচ্ছে। আর-এক আপদ হয়েছে বেলা দশটার আগে ঘুম ভাঙতে চায় না, ভাবছি একটা অ্যালার্ম-ঘড়ি কিনবো, এ-ভাবে চললে সব প- হ’য়ে যাবে। যে-সব বিষয় আমাকে পড়াতে হবে সে-বিষয়ে আমার জ্ঞান অল্পই – সেও এক দুশ্চিমত্মা, এক ভরসা ছাত্রদের জ্ঞান আমার চেয়েও অল্প হবে। কাল কীথ-এর সংস্কৃত 888sport live football আর Perry ব’লে এক মার্কিন লেখকের গ্রীক 888sport live footballের ইতিহাসের পাতা উল্টিয়ে বড্ড মেজাজ খারাপ হ’লো – কীথ জানেন শুধু তারিখ আর ব্যাকরণ (অথচ মহাভারতের তারিখ নেই!) আর Perry হোমরের তুলনায় মহাভারতকে বলেন, অতিকায় প্রাগৈতিহাসিক জন্তু! এরা ভারতবর্ষকে কিছুতেই বোঝে না, বুঝতে পারে না – গ্রীস বললেই মূর্ছো যাবার দশা হয়।
এখানে জর্মান ভাষায় ফাউস্ট অভিনয় হচ্ছে, ফরাশি ভাষায় রাসীন মলিয়ের – আকাদেমি ফ্রাঁসেস আর জর্মানির দল। ট্র্যানজিস্টর রেডিওতে প্রত্যেক দর্শককে ইংরেজি 888sport app download apk latest version ব’লে দেবে। আমি লোভে কম্পমান, কিন্তু হয়তো শেষ পর্যন্ত এগুলো বাদ দিয়ে হবাগনারে যাবো। এখনো সাব-ওয়ের সাহায্যে শহরটাকে রপ্ত করতে পারিনি, অথচ ভেবে দেখতে গেলে খুব বেশি সময়ও নেই।
ঐ যাঃ – আসল কথাই লিখতে ভুলেছি। সুধীন্দ্রর বিষয়ে জর্নালের লেখাটা তুমি আর জ্যোতি মিলে লিখে দাও না। শুধু তো খবর দেবে ওখানে – মুশকিলটা কী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও আমাদের বিভাগের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের কথা ভালো ক’রে লিখবে, আর তাঁর 888sport live footballের কথা তো জানোই। কেমন, রাজি? ছবি নিশ্চয়ই দেবে – ‘888sport app download apk’র বস্নকটাই ব্যবহার করতে পারো। বিরামবাবুকে বলো এইবার কাজ আরম্ভ ক’রে দিন – মার্চ মাস আসন্ন।
যে-বাসা পেয়েছি তা সম্পূর্ণ দিবালোকবর্জিত, বিছানায় কাৎ হ’য়ে একটু দিনের আলোয় ঘাড় ব্যথা ক’রে তোমাকে এই ক-লাইন লিখলাম। বাইরে নীল আকাশ, ঝকঝকে রোদ্দুর, ঘরে আমরা আলো জ্বেলে আছি। এই আঁধার আলোর চাইতে অধিক ব’লে মনে হচ্ছে না। জ্যোতিকে বোলো।
বুব
চিঠি ৪
এয়ারোগ্রাম, নিউ ইয়র্ক থেকে পাঠানো : চিঠিটা মুখ্যত প্রতিভা বসুর লেখা, বাইরের একাংশে লিখেছেন বুদ্ধদেব বসু।
২০ এপ্রিল ’৬১
অমিয়,
এই চিঠিটা তিন দিন ধ’রে ডাকে দেয়া হয়নি – আমারই দোষে। কিন্তু এক হিশেবে ভালোই হ’লো, এই চিঠিতেই তোমাকে জানাতে পারলাম যে নবনীতা ও অমর্ত্যর সঙ্গে ইতিমধ্যে আমাদের দেখা হয়েছে – পরশু বিকেলে ও কাল রাত্রে অনেকক্ষণ আড্ডা দেয়া গেলো ওদের সঙ্গে। নরেশ চিনু আমাদের এখানে বেড়াতে এসেছে; হোটেল চেলসীতে আমাদের ঘর এমনিতেই 888sport app download apkভবনের একটি ছোটো সংস্করণে রূপান্তরিত হয়েছে – তার উপর নবনীতা অমর্ত্য এসে পড়ায় আমাদের হাসির শব্দে প্রায় পুলিশ ছুটে আসার মতো অবস্থা হয়েছিল। মাঝে ভয় হচ্ছিল নবনীতার সঙ্গে বুঝি দেখা হ’লো না – এখন আমাদের এই প্রবাস সব দিক থেকেই সার্থক হওয়ায় ভাগ্যের কাছে কৃতজ্ঞ আছি। ওরা ভালো আছে – রাধারানী দেবীকে বোলো। তিনি ও নরেনদা আশা করি দেহে মনে সুস্থ ও প্রফুলস্ন আছেন। তুমি কি এই ছুটিতে শিলচরে যাবে একবার?
বুবসু
চিঠি ৫
পিকচার পোস্টকার্ড : উল্টোপিঠে চ্যাপেল হিল-এর ‘কোকার’ বৃক্ষবীথি।
অমিয়,
চ্যাপেল হিল-এ বন্ধু ফ্রীডরিখ-এর আতিথ্যে দু-রাত্রি কাটিয়ে গেলাম। কাল ফিরবো নিউ ইয়র্ক, তেইশ তারিখ আবার ‘‘বড়ো শহর’’ ছেড়ে বেরোতে হবে। জর্নাল ছাপা শুরু হ’ল কি? সুধীন্দ্রর অন্য ছবি দাও না কেন – যেটা কলেজ-ম্যাগাজিনে বেরিয়েছিল, বা নতুন বস্নক করাতে দোষ কী।
বুব
১৭/৩/৬১
চিঠি ৬
পিকচার পোস্টকার্ড : উল্টোপিঠে সেন নদীতীরের বিখ্যাত বইয়ের দোকানের সারি।
প্যারিস
৮ জুন ১৯৬১
অমিয়,
ছবির জায়গাটাকে বেশ লোভনীয় মনে হচ্ছে না? – কিন্তু আসল কথা এই যে আমাদের ক্ষুদ্র শক্তি নিয়ে জগৎটাকে গ্রাস করা অসম্ভব। Quest-এ জ্যোতির 888sport live এইমাত্র পড়লুম।
বুবসু
চিঠি ৭
ইনল্যান্ড লেটার : পাঠানো বম্বাই থেকে।
৮ মার্চ ১৯৬২
অমিয়,
তোমার ঘড়িটি খোয়া যাবার খবর পেয়ে ব্যথিত হয়েছি। এই লোকশানগুলো শুধু আর্থিক নয়, মনের উপরে এদের প্রভাব বেশ বড়ো মাপের। এক-একটা জিনিশ ব্যবহারের ফলে বেশ অন্তরঙ্গ হ’য়ে ওঠে, কেমন আত্মীয়-মতো মনে হয় – হঠাৎ সেটি চুরি হ’লে বা হারিয়ে গেলে সান্তবনা পাওয়া সহজ হয় না। প্রাকৃত বাংলায় যাকে বলে মায়া প’ড়ে যাওয়া – এ হ’লো ঠিক তা-ই। আমার জীবনে ঘড়ি, কলম অনেকবার হারিয়েছি, সে-সব দুঃখ ক্রমশ কম দুঃসহ হ’য়ে এলেও নতুন ক’রে পেতে চাই না। রুমি যে-রকম লিখেছে তাতে মনে হ’লো তোমার বাড়ি থেকেই খোয়া গেছে – কোনো ভৃত্যের কাজ ব’লে সন্দেহ করো কি? কিন্তু ও-বাড়িতে সবই তো পুরোনো লোক। কিন্তু অকস্মাৎ প্রলোভনের ভূত যে-কোনো লোকের স্কন্ধেই অবতীর্ণ হতে পারে – একটু তদ্বির কোরো।
বম্বাইতে আমার ভালো লাগছে বললে বেশি বলা হয়, খারাপ লাগছে বললেও ঠিক বলা হয় না। বিশ্রামের আশা করেছিলুম, কিন্তু বিশ্রামের মতো ক্লান্তিকর আর কিছু নেই। বক্তৃতাগুলো একে-একে প’ড়ে যাচ্ছি, কিন্তু তার ফলাফল বই না-বেরোনো পর্যন্ত অনুভূত হবে না।
জর্নালের আরো প্রম্নফ নিশ্চয়ই পেয়েছ?
বুবসু
চিঠি ৮
খাম।
Kavitabhavan : 202 Rashbehari Avenue, Calcutta 29
Telephone : 46-1204
৩১ মে, ১৯৬২
কল্যাণীয়েষু,
অমিয়, দিল্লির মিনিস্ট্রি থেকে এক সপ্তাহ হ’লো তোমার চিঠি এসে প’ড়ে আছে। তোমাদের সেমিনার হবে ড্যালহুসি পর্বতে, ১৫ই জুন থেকে ১৪ই জুলাই। ১৪ই জুন সেখানে তোমার পৌঁছবার কথা, অর্থাৎ কলকাতা থেকে ছাড়তে হবে অন্তত বারোই। ট্রেনের টিকিট পাওয়া বহু সাধ্যসাধনার ব্যাপার, তা জানো। অতএব তোমার কর্তব্য, যদি বিশেষ কোনো বাধা না থাকে, অবিলম্বে পেস্ননে কলকাতায় ফিরে আসা। বিভাগীয় দু-একটা খুচরো কাজও তোমার জন্য অপেক্ষা ক’রে আছে। হয়তো তুমি দু-একদিনের মধ্যেই বেরিয়ে পড়বে, তা-ই ভেবে চিঠিটা তোমাকে পাঠালুম না। আশা করি ভালো আছো।
বুবসু
চিঠি ৯
খাম।
888sport app download apkভবন
২০২ রাসববিহারী এভিনিউ
কলকাতা ২৯
৩০/৬/৬২
কল্যাণীয়েষু
অমিয়, চিঠির বিষয়ে সম্প্রতি তুমি মহাজন হ’য়ে উঠছো – আমরা সকলেই তোমার খাতক। এ-ক’দিন ঘাড় গুঁজে মার্কিনী লেখাটা নিয়ে প’ড়ে ছিলুম – কাল কোনোরকমে শেষ করেছি, মানে, আপাতত – পরে আরো তিনটে পরিচ্ছেদ যোগ করতে হবে। কাল সন্ধ্যায় ইন্ডো-মার্কিনী সংঘে, আমার বক্তৃতা হ’য়ে গেল – আর-একটা কর্তব্য চুকলো। পঁচিশে খুব বৃষ্টি ছিল ব’লে সুধীন্দ্রর
888sport app download for android-সভা শেষ মুহূর্তে বাতিল করা হ’লো; কিন্তু আমি গিয়ে দেখি, তাঁর আত্মীয়-আত্মীয়া ও মানব ইত্যাদি কয়েকজন উপস্থিত; বাসমত্মী মিত্রের পরামর্শে কিছু 888sport app download apk পড়া ও কথাবার্তা হ’লো। জুলাই মাসে সত্যেন বসুকে নিয়ে আবার বড়ো সভা ডাকতে কল্যাণ সিংহকে বলেছি। রেজিস্ট্রার ফিরে এসেছেন; ফিশার-এর বিদায়-সভায় তাঁর সঙ্গে দেখা হ’লো। বীট-যুগল কলকাতায় বেশ জমিয়ে আছে; কাল শক্তি-সুনীল-সমভিব্যাহারে তারা গেছে জামসেদপুরে 888sport live footballসভায়, আমি তাদের পুনর্বার কলেরার টিকে নেবার উপদেশ দিয়েছি। মানবের লেখার প্রম্নফ এসেছে, অনেকটা ছাঁটতে হ’লো। রুমির ভিসা পর্যন্ত হ’য়ে গেছে – এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দয়া হ’লেই হয়। পাপ্পার পরীক্ষা মোটামুটি ভালোই হয়েছে, তার চিঠি লেখাটা বড়ো আসে না, যথাসম্ভব আড্ডা দিয়ে সময় কাটাচ্ছে। দীঘার বিনোদ বেরা এখানে উপস্থিত, তার জীবন সমস্যাভারাতুর! সাংঘাতিক গরম চলছে কলকাতায়; বসিত্মতে কলেরা; আম, ইলিশ মাছ শস্তা।
মনে হচ্ছে সব খবরই দেয়া হ’লো। কিন্তু না – কাল রাত্রে নরেশের টেলিগ্রাম – ‘‘Thesis defended. Leaving Evanston Second.’’ ওর ফেরার পাকা খবর পেয়ে মনটা বেশ ভালো লাগছে। ডেভিডও লিখেছে দক্ষিণ ফ্রান্স থেকে।
তোমার এই পাঁচমাড়িতে যাওয়াটা খুব ভালো হ’লো। ছুটি, বিশ্রাম, আনন্দ, উৎসাহ, নতুন মানুষের সংস্পর্শ – সব পেলে একসঙ্গে। মাঝে-মাঝে এই রকম বেরিয়ে পড়লে মনের অনেক মস্নানিমা কেটে যায়। তোমার বয়সে আমার অনেকবার মনে হয়েছে যে শুধু বই বা বুদ্ধির চর্চা শেষ পর্যন্ত তৃপ্তি দিতে পারে না – যদি সেই সঙ্গে না থাকে মানুষের সঙ্গ। মানুষ মানুষকে চায় – অতি পুরোনো, অতি সত্য এই কথা। অনেক স্বাস্থ্য ও আনন্দ সঞ্চয় ক’রে ফিরে আসবে – আর যে-নতুন বিদ্যে শিখছ তা যে যাদবপুরে কখনোই কাজে লাগবে না তা কেমন ক’রে জানলে?
তোমরা কি শুনেছো যে ছবি বিশ্বাস মোটর-দুর্ঘটনায় মারা গেছেন? বড়ো হৃদয়-বিদারক এই মৃত্যু।
দীপকের অবস্থা, ধ’রে নিচ্ছি, সমুদ্রে মাছের মতো, বা প্যারিসে হাইনের মতো? তুমিও, র্যাঁবোকে 888sport app download for android ক’রে, এ-ক’দিন আকাশে পাখির মতো হবার চেষ্টা করো – বেশ একটা গা-ভাসানো গোছের আরাম – কিন্তু আর লিখবো না, কেননা উপমায় ভুল হচ্ছে, পাখিকে পরিশ্রম ক’রে উড়তে হয়।
প্র.ব. তোমার চিঠি পেয়ে খুব খুশি হয়েছে [ন], কিন্তু তাঁর সনাতন শিরঃপীড়া তাঁকে দু-তিনদিন শয্যাশায়ী ক’রে রেখেছিলো; আজ একটু ভালো। তোমাদের অভিনয়ের খবর জানতে উৎসুক থাকবো।
বু.ব.
চিঠি ১০
ইনল্যান্ড লেটার : পাঠানো কলকাতা থেকে।
৭ জুলাই ’৬২
অমিয়,
বিধানচন্দ্র রায়ের আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা অভিভূত হ’য়ে পড়েছি – দেশের এই দুর্দিনে আরো পাঁচ-সাত বছর তাঁর বেঁচে থাকা উচিত ছিলো – কিন্তু শেষ ডাক এলে তার উপর আর কথা নেই।
কী বিরাট ভিড় হয়েছিল তাঁর সৎকারের দিন – সে এক দৃশ্য।
যাদবপুর তিন দিন ছুটি ছিল – বেস্পতিবারে খুলে শোকসভা ক’রে ছুটি হ’য়ে গেল। গতকাল আর আজ পরীক্ষা – সোমবার থেকে ক্লাশ। এখন খুব কমই ক্লাশ চলছে – তোমার উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। জর্নাল-এর ‘‘অনিবার্য কারণে’’ দেরি হচ্ছে – মানবের লেখা এখনো ছাপা হয়নি।
আমার মার্কিনী লেখাটা – আপাতত – শেষ ক’রে একটা ছোটোগল্প ধরেছি। খুব কষ্ট হচ্ছে লিখতে। রুমি মাঝে-মাঝে আমাকে প্রশ্নবাণে জর্জর ক’রে দিচ্ছে – তুমি এসে তার জ্ঞানতৃষ্ণা কিঞ্চিৎ মেটাতে পারবে। কম্প-লিট পরীক্ষা আরম্ভ ছাবিবশে – শেষ তেরোই অগস্ট। ‘-’ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উত্তরের জন্য দুরুদুরু বুকে অপেক্ষা করছি। অন্য সব ব্যবস্থা হ’য়ে গেছে।
আমার কল্যাণকামনা জানাই।
বু.ব.
চিঠি ১১
খাম।
BUDDHADEVA BOSE
202 RASHBEHARI AVENUE
CALCUTTA 29
১৬ জুন, ১৯৬৩
অমিয়,
সেদিন সকালে তোমার ভাগ্যে রোদ্দুর ছিলো – সময়মতো শিলং পৌঁছতে পেরেছিলে। কলকাতায় এখন রীতিমতো বর্ষা।
আমরা কিছুদিন আগে উলস্নসিত হয়েছিলুম যে ডিপথেরিয়ার সেরাম-এর কোনো প্রতিক্রিয়াই রানুর হ’লো না, তখন দেবতারা অলক্ষ্যে হাসছিলেন। কাল বিকেল থেকে হঠাৎ প্রতিক্রিয়া আরম্ভ হ’লো – তার ধরনটা এমন যে চোখে দেখাও কষ্টকর। কাল সারা রাত চিনু নরেশ ছিলো এখানে – কত ভাগ্যে কলকাতায় ছিলো ওরা – চিনু আজও সারাদিন আছে, সে-ই করছে সব। আজ ভোর থেকে ডাক্তার দাশগুপ্তর চিকিৎসা চলছে – এখন বিকেলবেলা কিছুটা উপশম দেখছি। পর্যায়ক্রমে এতগুলো শারীরিক কষ্ট রানুকে বহুদিন পর সহ্য করতে হলো – এর পরে আরোগ্যের আশা করলে অন্যায় হয় কি?
যাদবপুর নিঃশব্দ – আবার মীটিং হবে এ-মাসের শেষে – আশান্বিত হবার কোনো লক্ষণ দেখছি না। ভেবে দেখছি, এই বিভাগের প্রতি আমি যে অত্যন্ত আসক্ত ছিলুম সেটাও একরকমের হূব্রিস – এই উপলক্ষে আমার মোহমুক্তি ঘটলে আখেরে হয়তো ভালোই হবে। তুমি চিন্তিত হোয়ো না – জীবন দীর্ঘ, কাল দীর্ঘতর, দু-একটি পুঁথিপত্র ছাড়া সবই বুদ্বুদ।
পাপ্পা ভালো আছে – তুমি যাবার পর তোড়জোড় ক’রে পড়তেও বসেছিল, মা-র অসুখে এই দু-দিন কিছু করতে পারেনি। আমি আশা করছি, মা-কে এতখানি কষ্ট পেতে দেখে ওর নিজের মনের মস্নানিমা কিছুটা কেটে যাবে। শঙ্কু একই রকম আছে (এটা পাপ্পার খবর), দীপক শান্তিনিকেতনে। জ্যোতি-মিমির কাল রাত্রে ফেরার কথা।
যাদবপুর জর্নালের সব ফর্মা প্রিন্ট-অর্ডার হয়ে গেছে। নরেনবাবুর লেখাটায় কিছু গোলমাল ছিল – আমি সাধ্যমতো শুধরে দিয়েছি। রাধারানী দেবী টেলিফোনে বললেন, নবনীতা কলকাতায় আসবে অগস্টের মাঝামাঝি, অর্থাৎ তোমার সঙ্গে দেখা হবে না।
খুব ধীরে [-ধীরে?] হোমর পড়ছি – অনেক কথা মনে হচ্ছে, তুমি এলে কথা বলা যাবে।
মনে হচ্ছে আমার জীবনে আবার এক সন্ধিক্ষণ আসন্ন। দেখা যাক।
তুমি ভালো আছো তো?
বু.ব.
চিঠি ১২
ইনল্যান্ড লেটার : পাঠানো কলকাতা থেকে।
২১ জুন, ১৯৬৩
অমিয়,
এইমাত্র তোমার চিঠি পেলাম। এখন বলা যায় যে রানুর ফাঁড়া কেটে গেছে, কিন্তু সত্যি যে ফাঁড়া একটা এসেছিল তা আমরা অনেক দেরিতে বুঝেছিলাম। এখনো ডাক্তার দু-বেলা আসছেন, মিলু অহোরাত্র পরিচর্যা করছে, আর চলছে অতুলনীয়া চিনুর শুশ্রূষা। এখন শরীরে কোনো উদ্বেগ বা গস্নানি নেই, কিন্তু ক্লান্তি ও দুর্বলতা পরিব্যাপ্ত – কাটাতে সময় লাগবে।
জ্যোতি মিমি ফিরেছে, কিন্তু মিমির স্কুল আজই খুলে গেলো।
পাপ্পার দেখছি সম্প্রতি পড়াশুনায় একটু মন গেছে – বোধহয় তোমার চিঠিই তার প্রেরণাস্থল। আমি বলছি তোমার চিঠির উত্তর দেয়া ওর কর্তব্য, কিন্তু তোমার উপদেশ-মতো অধ্যয়ন করাই আসল কাজ – এই হ’লো পাপ্পার যুক্তি। আজ সকালে গিয়েছিল পিণাকীর কাছে অলোকরঞ্জনের ‘‘নোট’’ আনতে – সেই জ্ঞানমঞ্জুষা নাকি পাশের পক্ষে অপরিহার্য।
ইন্ডিয়ানা থেকে পাপ্পার ভর্তির কার্ড এসে গেছে। এখনো আসেনি শুধু আমার ভিসা-ফর্ম, এলেও এ-মুহূর্তে কাজে লাগতো না, কেননা রানু সুস্থ হ’য়ে না-ওঠা পর্যন্ত ভিসা-সংগ্রহ সম্ভব নয়।
কলেজ খুলবে ভাবতে একটুও উৎসাহিত হচ্ছি না – ভরসা তুমি, তা তোমারও তো যাবার দিন আসন্ন।
ভালো থেকো।
বু.ব.
‘‘দি ইলিয়াড’’ খুব খারাপ লাগছে।
চিঠি ১৩
ইনল্যান্ড লেটার : পাঠানো কলকাতা থেকে।
১২ জুলাই, ১৯৬৩
অমিয়,
আমাদের অনুমান ভুল হয়নি – রাস্তাটার নাম rue Boileau। আমার ভ্রাতৃবধূ অজিত দামকে চিঠি লিখে দেবেন – তুমি জাহাজে ওঠার আগেই নিজের পরিচয় দিয়ে এবং আমার নাম উলেস্নখ ক’রে একটা চিঠি ছেড়ে দিয়ো।
প্রণবেন্দুর ঠিকানা কাল হঠাৎ খুঁজে পেলাম –
Pranabendu Dasgupta
Apt. 805, 6104 S. Woodlawn
Chicago 37, Ill
রাজেশ্বরীর চিঠি এখনো ফেরার।
‘তুমি যাবার পরের দিন রানুর মাথা ধরা ছেড়ে গেলো -’ ‘আপাতত একটু ভালোর দিকে মনে হচ্ছে, কিন্তু কিছু বলার ভরসা পাই না। ভাবছি আগামী সপ্তাহে আমাদের ভিসাগুলোর জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে ফেলবো।’
ইতিমধ্যে একজন গলার স্পেশালিস্টকে ডাকা হয়েছিল, তিনি বললেন, হয়তো আদৌ ডিপথেরিয়া হয়নি। যা-কিছু কষ্ট সেরাম-এর প্রতিক্রিয়ার জন্যই হচ্ছে।
বম্বাইতে তোমার সময় আশা করি নেহাৎ খারাপ কাটছে না। এলিফ্যান্টা দেখার সময় পাবে নিশ্চয়ই? আমরা সব সময় তোমাদের কথা ভাবছি। ভালো থেকো।
বু.ব.
পাছে তুমি ব্রিফ-কেস হারিয়ে ফ্যালো, নরেশ সেই চিমত্মায় উদ্বিগ্ন। কিন্তু আমার মতো রোমান্টিকও যখন একদিনও কলেজের চাবি হারায়নি, তখন তোমার উপর নির্ভর করা যেতে পারে।
চিঠি ১৪
এয়ারোগ্রাম : পাঠানো কলকাতা থেকে।
২৫ জুলাই ১৯৬৩
অমিয়,
তোমার জাহাজ এখন বোধহয় ভূমধ্যসাগর ধরো-ধরো, নিশ্চয়ই তোমার নির্বেদ তেমন পরাক্রান্ত আর নেই? আরব সাগরে সামুদ্রিক পীড়ায় কষ্ট পাওনি তো?
আমাদের ভিসা পর্যন্ত হ’য়ে গিয়েছে, এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্মতি জানালেই নিশ্চিন্ত হওয়া যায়। আমাদের কলকাতা থেকে যাত্রার তারিখ ঠিক হয়েছে বাংলা মতে 888sport cricket BPL rateে অগস্ট রাত্রি আর
বিলেতি মতে বাইশে ভোর একটার সময়; এক রাত লন্ডনে কাটিয়ে ন্যু ইয়র্ক পৌঁচচ্ছি ২৩শে বিকেল আড়াইটেয়। ন্যু ইয়র্কে যাবার ফ্লাইট-নম্বর হ’লো QF-531 (Qantas)। সেখানে আমাদের ঠিকানা – Joe Weinstein Residence Halls, 5 University Place, New York 3, N.Y. – সেপটেম্বরের তেসরা পর্যন্ত সেখানে থাকবো আশা করছি, তারপর বস্নূমিংটনের দিকে যাত্রা করবো। শেষ মুহূর্তে তারিখ বা ফ্লাইট-নম্বর বদল হ’লে তোমাকে জানাবার উপায় রইলো না – মার্শালদের জানিয়ে দেব। তোমার ‘ওরিয়েন্টেশন’ যদি ইয়েল-এ পড়ে তাহ’লে খুব চেষ্টা কোরো ২৫শের পর এবং ৩১শের আগে অন্তত একদিনের জন্য ন্যু ইয়র্কে আসতে – নিউ হেভেন এত কাছে যে সকালে এসে বেশি রাত্রেও ফিরে যেতে পারো। প্রণবেন্দুকেও লিখে দিচ্ছি যাতে আসার চেষ্টা করে – রুমি নিশ্চয়ই আসবে, সম্ভব হ’লে প্রদীপও। প্রণবেন্দুর একটা চিঠি পেলাম কাল – তার থীসিস সমাপ্ত ও অনুমোদিত হয়েছে, এখন শুধু টাইপ ক’রে ‘সরকারি’ভাবে দাখিল করা বাকি। ওদের জাহাজ সেপটেম্বরে, কাজেই ন্যু ইয়র্কে আসার বোধহয় বিঘ্ন হবে না – যাওয়া-আসার মুখে ক্ষণিকের জন্য যদি দেখা হয় তোমার সঙ্গে।
আমাদের ট্রাঙ্কটা মার্শালদের কাছে রেখে এসো – আমরা সেখান থেকে বস্নূমিংটন পাঠাবার ব্যবস্থা করবো। আশা করি বম্বাইয়ের কাস্টমস-এ কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি তোমাকে।
রানু এখনো অ্যালার্জিতে কষ্ট পাচ্ছে – সেদিন আর-এক বড়ো ডাক্তারকে দেখিয়ে এলো, তাঁর ওষুধে কিছুটা উপশম হয়েছে।
সেরে গেছে – এ-কথা বলতে এখনো সাহস পাচ্ছি না – পাছে দেবী আথেনী কূপিত হন। পাপ্পা আর যাদবপুরে যায় না – বাড়ি ব’সে-ব’সে কনান ডয়েল ও 888sport app গোয়েন্দা-888sport alternative link পড়ছে। বার্ষিক পরীক্ষার দুটো পেপারেই ওর পঞ্চাশের উপরে নম্বর আছে – যদিও টায়ে-টুয়ে – ‘বানান ভুল কম হ’লে নম্বর বেশি হ’তো। তু.সা.বি.-র বি.এ. অনার্সে ফার্স্ট হয়েছে ছন্দা – তারপর যথাক্রমে আরতি, নারায়ণ, গীতা। প্রথম দু-জন মাঝারি গোছের সেকেন্ড ক্লাশ, শেষ দু-জন নিচের দিকে।
প্যারিসে তোমার সঙ্গে অজিত দাম এবং অন্য কারো সঙ্গে দেখা হ’লো কিনা, জানতে উৎসুক থাকবো। যদি রটারডামের পথে আমস্টারডাম পেরোতে হয় তাহ’লে যে ক’রে হোক রেমব্রান্টগুলো দেখে নিয়ো। রটারডামেও চিত্রশালা থাকা সম্ভব – খোঁজ নিয়ো। তোমার ন্যু ইয়র্কে পৌঁছবার সঠিক তারিখ ও সময় মার্শালদের জানিয়ে দিয়েছো নিশ্চয়ই?
কাল বিকেলে ঝর্না এসেছিলো, তাকে দেখামাত্র আমার মনে হ’লো সে বিয়ে করেছে, তারপর দেখি সিঁথিতে সিঁদুর। গত রবিবার রেজিস্ট্রি ক’রে বিয়ে করেছে। পাত্রের নাম আশিস দাস, ব্যবসা করে, তোমারই স্বদেশীয়, তার বাবা শিলচর ইলেকট্রিক সাপস্নাইয়ের স্বত্বাধিকারী বা কিছু। এ-বছর তরুণতরুণীরা যে-রকম দুমদাম বিয়ে ক’রে ফেলছে এমন যেন আর কখনো হয়নি। হিন্দু বিবাহ নামক প্রতাপান্বিত অনুষ্ঠান নগরে আর জলচল রইলা না এটাও লক্ষণীয়। … তোমার চিঠি পাবার আশায় আছি।
বু.ব.
চিঠি ১৫
খাম।
Campus View House
Apt. 708
Bloomington, Indiana
৩ সেপটেম্বর ১৯৬৩
অমিয়,
আমরা এখনো রুমির কাছে আছি; আজ রাত্রে বা কাল সকালে ক্যাম্পাস ভিউতে বদলি হবো। রুমির ফ্ল্যাটটি চমৎকার; ছোট্ট, ছিমছাম, একতলায়; চারদিকে গাছপালা নিবিড়, মাঝে-মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে মেঘও ডাকছে এমনকি – যদিও মেঘও এখানে লোকেদের মতোই নিচু গলায় কথা বলে। ফ্রেন্ৎস ও রেমাক-এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে – এই সপ্তাহটা পুরো ছুটি, সামনের সোমবার থেকে ব্যস্ততা শুরু হবে। আমরা ফ্ল্যাট পেয়েছি সাত তলায়, পুবের দিকে দৈগন্তিক দৃশ্য, লিভিংরুমের সোফাটাকে রাত্রে বিছানায় পরিণত করা শক্ত নয়; তুমি এলে হাত-পা ছড়িয়ে শুতে পারবে। পাপ্পা যে-ঘরে থাকবে সেটি মনোমুগ্ধকর।
তোমাকে বলেছিলুম আমাদের ট্রাঙ্কটা ব্যালেন্টাইনে পাঠাতে, কিন্তু তা পাঠিয়ো না, ট্রাঙ্কটা পাঠিয়ো রুমির নামে রুমির ঠিকানায় (404 S. Fess) – প্রদীপ গাড়ি ক’রে নিয়ে আসতে পারবে। গ্রেহাউন্ডেও মাল পাঠানো যায়, একটু মাশুল কম পড়বে। তাতে – একেবারে বস্নূমিংটন পর্যন্ত বুক কোরো। বস্নূমিংটনে রেলগাড়ি পৌঁছয় না, এখানকার বাস্-টার্মিনাল পর্যন্ত যাতে মালটা আসে সে-বিষয়ে নিশ্চিন্ত হ’য়ে নিয়ো। ট্রাঙ্কটা শিগগির পাওয়া দরকার – মহাভারত এবং আরো দরকারি জিনিশ র’য়ে গেছে তাতে।
আসবার সময় ফিলাডেলফিয়ার ভিতর দিয়ে এলুম; বিকেলের আলোয় বড়ো সুন্দর লাগলো। ঘনসবুজ বৃক্ষবহুল নগর, পার্কে য়োরোপীয় ধরনে ফোয়ারা চলছে – মনে হয় যেন শান্তি বিরাজ করছে চারদিকে। দেবী আথেনী এবারে প্রসন্ন হয়েছেন, আমেরিকার খুব ভালো শহরে তুমি স্থান পেয়েছো। বস্নূমিংটনের এখনো বেশি কিছু দেখিনি – দেখারও বিশেষ নেই কিছু – একেবারে খাঁটি মার্কিনী মফস্বল শহর, পথে লোক নেই, সারি-সারি বাড়ি, সারি-সারি গাড়ি, মাইল দুই পর-পর দোকানের পুঞ্জ – আশা করছি গুণীজনসঙ্গ আমাকে এই বৈচিত্র্যের অভাব ভুলিয়ে রাখতে পারবে। তোমার সঙ্গে ন্যু ইয়র্কের পথে-পথে বেশি ঘোরা হ’লো না, দেখা হ’লো না বেশি রাত্রে গ্রীনিচ গ্রাম – পরে কোনো সুযোগে এই ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করবো, ততদিনে তুমি হয়তো ন্যু ইয়র্ক বিষয়ে আমার চেয়েও বেশি পাকা হ’য়ে গিয়েছো। অনেক বেদনার পর তোমাকে এখানে প্রফুলস্ন দেখে খুব ভালো লাগলো; তুমি কৃতী হও, যশস্বী হও এই আমার প্রার্থনা – এ-দেশে তোমার যোগ্যতা যথাস্থানে ধরা পড়বে সে-বিষয়ে আমার সন্দেহ নেই। পাপ্পা এখানে এসে অনেক বেশি খুশি মনে আছে – তার কারণ ছোড়দি ও প্রদীপের সাহচর্য – সমবয়সি বাঙালির অভাবে ন্যু ইয়র্কে সে স্বভাবতই কষ্ট পেয়েছে। আমাকে চিঠি লিখো ক্যাম্পাস ভিউর ঠিকানায় – তোমার সব খবর লিখো। ইন্ডিয়ানায় থ্যাঙ্কসগিভিং-এর ছুটি ২৮, ২৯, ৩০ নবেম্বর ও পয়লা ডিসেম্বর – সর্বসাকুল্যে চারদিন – তোমারও হয়তো কাছাকাছি সময়েই ছুটি হবে – যাতে সে-সময়ে শিকাগো-বস্নূমিংটন ঘুরে যেতে পারো, সেই রকম চেষ্টা কোরো। সেদিন আমাদের তুলে দেবার পর কি মেট্রোপলিটান দেখলে?
বু.ব.
চিঠি ১৬
খাম।
Apt. 708, Campus View House
Bloomington, Ind.
১১/৯/৬৩
অমিয়,
এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পাপ্পার জন্য দেড়শো ডলার ঋণ সংগ্রহ করা গেছে – তোমাকে আর এ নিয়ে বিব্রত হতে হলো না। এত সহজে ব্যবস্থা হয়ে যাবে ভাবিনি।
তোমার চিঠি নেই কেন? ভালো আছো তো, গুছিয়ে বসেছো ফিলাডেলফিয়ায়? প্রত্যহই বহু-প্রত্যাশিত ট্রাঙ্কের প্রতীক্ষা করছি – আশা করি ওটা নিয়ে নতুন কোনো ভ্রান্তিবিলাস ঘটেনি।
প্রণবেন্দুর চিঠি নিশ্চয়ই পেয়েছিলে – ওদের দু-জনকে জাহাজে তুলে দিতে পেরেছিলে কি?
এখানে জনৈক ডীন পাপ্পার উঁচু ক্লাশে ভর্তি হওয়া বিষয়ে অদ্ভুত বিরোধিতা করছেন (ডীনেরা দেখছি সর্বত্রই ভয়াবহ), কিন্তু ফ্রেন্ৎস ও হবাইস্টাইনের সহৃদয় চেষ্টায় খুব সম্ভব ফাঁড়া কেটে যাবে। ওঁরা দুজনেই চমৎকার মানুষ, রেমাককেও খুব ভালো লাগলো। স্টলনেখট-এর এখনো দেখা পাইনি।
কলকাতার খবর বেশি ভালো না – দীপকের ছেলেটি মারা গেছে। বিভাগের ভবিষ্যৎ ভেবে নরেশ, দীপক দু-জনেই চিমত্মাকুল – আমি বাইরে চলে এসেছি, এখন ওদের জন্য কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কিছুই আমি পারি না। প্রণবেন্দুও ভাঙা মন নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমি ওকে বিশেষভাবে ব’লে দিয়েছি গিয়ে যেন সেখানেই যোগ দেয়।
সেদিন একটা অলিম্পিয়া টাইপরাইটার কিনলুম, তাতে জর্মান ফরাশি সবগুলো অ্যাকসেন্ট আছে – তোমার পক্ষে সেটা বিশেষ উপযোগী হবে মনে হয়। মল্লিকমশাই রুমিকে একখানা অতি সুন্দর চিঠি লিখেছেন – সেটি প’ড়ে আমার মনে যেন সান্তবনা ছড়িয়ে পড়লো, এই বিশ্বে শুভও আছে – সেই শুভ যে একেবারে অক্ষম তলিয়ে দেখলে তাও হয়তো বলা যায় না। শিগগির চিঠি লিখো।
বু.ব
চিঠি ১৭
খাম।
Apt. 708
Campus View House
Bloomington, Indiana
১৩ সেপটেম্বর, ১৯৬৩
অমিয়,
তোমার দুটো চিঠি, চেক সবই পেয়েছি। আজ ট্রাঙ্কও পৌঁছলো – আমি বাড়ি ছিলুম না, ফিরে এসে ঘরে ট্রাঙ্ক দেখে অবাক। কিন্তু সেই হর্ষ বিষাদে পরিণত হতে দেরি হ’লো না, যখন শুনলুম ট্রাঙ্কের চাবি আসেনি। আসেনি মানে ভুল চাবি এসেছে। পাপ্পার তালা ভাঙার চেষ্টা বিফল হ’লো – অর্থাৎ ট্রাঙ্ক এসেও এলো না। এখন কথা হচ্ছে, তোমার কাছে যে-চাবি আছে সেটা যদি পরীক্ষিত ও অভ্রান্ত হয়, তাহ’লে পত্রপাঠ খামে ভ’রে পাঠিয়ে দাও – এ-দেশে খামের মধ্যে চাবি বা অন্য ছোটোখাটো জিনিশ পাঠাবার বাধা নেই। (আমেরিকার মধ্যে সাধারণ ডাকে নির্ভয়ে চেক পাঠাতে পারো – আমার তো তা-ই অভিজ্ঞতা – বিদেশযাত্রী হ’লেই রেজিস্ট্রির প্রয়োজন।)
ভেবে দেখছি, তোমার চেকটা আপাতত রেখে দেয়াই সমীচীন হবে। সামনের মাসে তোমাকে একশো ডলার পাঠাবো (বা হয়তো এ-মাসেই), বাকিটা কিছু পরে। কোনো অসুবিধে বোধ করলে তক্ষুনি জানাতে ভুলো না। আমার ঋণের পরিমাণ সর্বসাকুল্যে পাঁচশো ডলার ছাড়িয়ে গেলো, ফ্ল্যাটটায় জরুরি কয়েকটা আসবাব নেই – সেগুলো না-হ’লে বাঁচা যায় না; তাই, এই বাসা আমাদের ক্ষণিক হ’লেও, কিনতেই হবে। তোমার বাসায় সব পেয়েছো তো? জানলায় পর্দা, চাদর, কম্বল, বালিশ? অনেকদিন আগে পিটসবার্গে আমি যে-ঘরে ছিলুম তারও একটা অংশে ছাদ এত নিচু ছিল যে আমারও প্রায় মাথা ঠেকে যায়। চায়ের সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছো আশা করি, আহারাদি কলেজের কাফেটেরিয়ায়?
তোমাকে লিখেছি কিনা মনে পড়ছে না – আমাদের এই সাততলার ফ্ল্যাটে অসহ্য আলো আর রোদ, প্রকা- আকাশ, দিগন্ত অবারিত। তাছাড়া শুধু বিবাহিতদের বাসস্থান ব’লে অনবরত শিশু আর গর্ভিনী 888sport promo code চোখে পড়ে। এতদিন পরে প্রকৃতি প্রতিশোধ নিচ্ছে আমার উপর, তার হাতে বিধ্বস্ত হচ্ছি বলতে পারো। গরম চলছে, তাই আসন্নপ্রসবারও অধোবাস শুধু জাঙিয়া (আমরা যাকে
হাফ-প্যান্ট ব’লে থাকি তার চেয়েও হ্রস্ব); – এই দৃশ্য কামরিপুর উত্তম চিকিৎসক, অন্তত আমার মতে। অথচ সন্ধেবেলা সেজেগুঁজে বেরোলে তাদেরই মনে হয় দর্শনযোগ্য। আইয়ুব যা-ই বলুন না, বোদলেয়ারই যথার্থ ঋষি।
আজ লাইব্রেরিতে কার্ড-ইনডেক্স ঘেঁটে-ঘেঁটে মেরুদ- টাটিয়ে বাড়ি ফিরেছি। উদ্দেশ্য : ‘‘গ্যেটে ও প্রাচী’’ বিষয়ে কোনো বই আছে কিনা। অনেক তুচ্ছ বিষয়েও আছে – কিন্তু এটা নেই। শুধু একটিমাত্র 888sport live পাওয়া গেল – সাম্প্রতিক। প্রাচী-প্রতীচী দিওয়ান বিষয়ে স্বতন্ত্র কোনো আলোচনা য়োরোপের কোনো ভাষাতেই চোখে পড়লো না। তোমার পরামর্শমতো ‘‘পাশ্চাত্ত্য 888sport live footballে প্রাচী’’ নামক বিষয় দিয়ে দিলুম তো – কিন্তু মনে হচ্ছে সমস্তটাই নিজেকে তৈরি ক’রে দিতে হবে। খাটুনি – বাজে খাটুনি। মাঝে-মাঝে তোমার সাহায্য প্রার্থনা করবো; জানি, তুমি বিফল করবে না।
পাপ্পার রেজিস্ট্রেশন কাল। আশানুরূপ রেমিশন পেয়েছে, টিকে থাকতে পারলে দু-বছরে বি.এ. উপাধি লাভ হবে তার। সে নিজেই বিস্তারিতভাবে লিখবে তোমাকে – যাদবপুরে যেমন নরেশ, তেমনি এখানে ওর উপাস্য হয়েছেন হবাইস্টাইন। বিভাগের সবাই সত্যি খুব ভালো।
শিকাগো থেকে অমস্নানের চিঠি পেলুম – তাদের বাসায় দু-এক রাত কাউকে আতিথ্য দিতে পারে লিখেছে, তোমার বিষয়ে উলেস্নখ করতে ভোলেনি।
বু.ব.
পুনশ্চ –
আমার অলিম্পিয়া টাইপরাইটারে সেমি-কোলন নেই, সেটা করিয়ে নেয়া আর-এক ঝামেলা। ভাবছি সেই সঙ্গে একটা bar (-) ও বসিয়ে নেব – সংস্কৃত বাংলা লেখা সহজ হবে।
চিঠি ১৮
খাম।
বস্নূমিংটন, ইন্ডিয়ানা
৩ অক্টোবর, ১৯৬৩
অমিয়,
কাল এখানে পান্নার জন্মদিন সম্পন্ন হলো। একটি পূর্ব-পাকিস্তানি দম্পতি, রুমির ইটালিয়ান বন্ধু মারিয়া গ্রাৎসিয়া, মার্কিনী বন্ধু হ্যারি ও তার স্ত্রী – এঁরা ছিলেন অতিথি। চায়ের সঙ্গে শিঙাড়া ও স্যান্ডুইচ, পায়েস ও কেক পরিবেষিত হ’লো। সন্ধেটা মন্দ কাটলো না মোটের উপর – কলকাতার মতো কেন হ’লো না ও-সব আক্ষেপ ক’রে লাভ নেই।
তোমার সঙ্গে দেখা হবার জন্যে ব্যাকুল আছি। থ্যাঙ্কসগিভিং-এ আসতে পারবে তো ঠিক? আমার শিকাগোর বক্তৃতার তারিখ এখনো [ঠিক] হয়নি, যে-ভদ্রলোক সেখানে এখন ভারপ্রাপ্ত তাঁর সঙ্গে পত্রবিনিময় ক’রে পুলকিত হইনি, ডিমক্ যে আমাকে শিকাগোতে পড়াবার জন্য প্রস্তাব করেছিলেন তা তিনি স্বীকারই করলেন না – যদিও ডিমক্-এর সেই চিঠির কপি তাঁর কাছে আছে। যা-ই হোক, বক্তৃতাগুলো ঠিকই আছে মনে হয়। ইতিমধ্যে পল এঙ্গল ও সুনীলের চিঠি পেয়েছি আওয়া থেকে – এঙ্গল জ্যোতি-মিমিকে আনার জন্য বিশেষ চেষ্টা করছেন, হয়তো আগামী জুন নাগাদ ওদের আসা হবে। কিন্তু আমরা ততদিনে কোথায় থাকবো তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না।
কলকাতা থেকে আর-একটা খারাপ খবর – দীপকের মামা শুভময় হঠাৎ মারা গেছেন। জল থেকে কী-একটা ভাইরস-ইনফেকশন হয়েছিল – অজ্ঞান অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে আনা হয়, কিছুই করা যায়নি। তরুণ বয়সে কী সাংঘাতিক মৃত্যু বলো দেখি। আমি শুভময়কে দেখিনি কখনো, কিন্তু এই সেদিন সাগরময়ের সঙ্গে আমার ওখানে আসতে চেয়েছিল – সেই 888sport sign up bonus মনে লেগে আছে।
বস্নূমিংটনেও একটা মৃত্যু ঘটলো ইতিমধ্যে : তু.সা.বি.-র হবাইস্টাইন দুটি শিশু সমত্মান সমেত বিপত্নীক হলেন। ভদ্রমহিলা দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগছিলেন, শুনলাম। তাঁকে চিনতাম না, কিন্তু খবরটা শুনে আমরা সবাই খুব ব্যথিত হয়েছি। সবচেয়ে আশ্চর্য এই যে হবাইস্টাইন পরের দিন থেকেই যথারীতি ক্লাশ নিচ্ছেন – এটা আমাদের পক্ষে অকল্পনীয় এবং মার্কিনীরাও কেউ-কেউ এতে বিস্মিত হয়েছে। যাদবপুরে যেমন নরেশের, তেমনি এখানে হবাইস্টাইনের ভক্ত হ’য়ে পড়েছে পাপ্পা – মানুষটি সত্যি চমৎকার।
ফিলাডেলফিয়ায় হৈমন্তিক শোভা কেমন দেখছো? এই দক্ষিণী পাড়ায় সবেমাত্র দু-একটা গাছ লাল হচ্ছে, সূর্যদেব অনাবিলভাবে উজ্জ্বল এবং সন্ধের আগে বাতাস হিমস্পৃষ্ট হয় না। ভাবতে গেলে খুবই সুন্দর এই দিনগুলো – আমি যে আনন্দ পাচ্ছি না সে-দোষ প্রকৃতির নয়। কিংবা প্রকৃতির।
বু.ব.
আজ একশো ডলার পাঠাচ্ছি – একটা প্রাপ্তিসংবাদ দিয়ো।
চিঠি ১৯
খাম।
বস্নূমিংটন, ইন্ডিয়ানা
৯ নভেম্বর ১৯৬৩
অমিয়,
শিকাগোতে আমার প্রথম দুটো বক্তৃতা হ’য়ে গেল – আগামী সপ্তাহে আবার যেতে হবে। লোক মন্দ হয়নি – অবশ্য তার মধ্যে প্রায় সকলেই বাঙালি, ভারতীয় অথবা আমাদের কলকাতা-ফেরৎ মার্কিনী বন্ধুরা। রাজেশ্বরীকে এবারে অনেকটা প্রফুলস্ন দেখলাম, অমস্নানকেও মনে হ’লো কলকাতার তুলনায় বেশি সজীব – সেটা হয়তো বিবাহের এবং বিদেশের প্রভাব। ইংরেজ-দুহিতা কিটির আমেরিকায় এই প্রথম আসা – খারাপ লাগছে না তার, কেনই বা লাগবে – কোর্স নিতে হচ্ছে না তাকে, কোনো বাধ্যতা নেই, আর শিকাগো শহরে 888sport live football সংগীত নাটক ইত্যাদির ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত। বন্ধুদের সাহচর্যে আমার সময়টা বেশ মসৃণভাবে কেটে গেছে, আগামী সপ্তাহে রানুকে নিয়ে যাবো ভাবছি, উপরন্তু থ্যাঙ্কসগিভিং-এর পরিকল্পনা তো আছেই। অমস্নানের বাড়িতে দুটো ঘর ফাঁকা প’ড়ে আছে, শার্লি ড্রাইয়ের আতিথ্যও আশাতীত নয়, অতএব আমরা সবাই গেলেও আকাশের তলায় রাত কাটাতে হবে না। তুমি সঙ্গে একখানা কম্বল এনো – হয়তো কাজে লেগে যাবে। ওভারকোট কিনেছো তো?* এখন পর্যন্ত ঋতু প্রসন্ন, কিন্তু বিশেষজ্ঞ মত হ’লো যে-কোনোদিন হুড়মুড় ক’রে শীত নেমে যাবে।
বীবারের চিঠি পেয়েছো শুনে খুব ভালো লাগছে। Eugene Falk মিনেসোটা ছেড়ে Dartmouth College-এ গেছেন (Hanover, New Hampshire) সেখানে তু.সা. খুব ক্ষীণ ব’লে গুজব শুনছি। তোমার তালিকা থেকে কলম্বিয়াকে কিন্তু বাদ দিয়ো না – ঐ বিশ্ববিদ্যালয় আকারে বিরাট এবং প্রকারে সম্মানভাজন। lowa State University-তে লিখলে ক্ষতি নেই – চেয়ারম্যান-এর নাম Ralph Freedman, ঠিকানা lowa City। (সেখানেই আগামী জুনে জ্যোতি-মিমির আসার সম্ভাবনা।) Rockefeller Foundation সাধারণত ছাত্রদের সাহায্য করে না, (অবশ্য নরেশের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটেছিলো), তবু একটা চিঠি লেখা ভালো। Asia Foundation বিশেষ ক্ষেত্রে ছাত্রদের বৃত্তি দিয়ে থাকে, তাঁদের মূল কার্যালয় সান ফ্রানসিস্কোতে; কিন্তু আমি অন্য একটা ঠিকানা দিচ্ছি – ভদ্রলোকের সঙ্গে ন্যু ইয়র্কে আমার দেখা হয়েছিলো। Mr. James R. Basche, Jr., The Asia Foundation, 200 East 42nd Street, New York City। কিন্তু এগুলো হচ্ছে যাকে বলে ‘‘হাতের পাঁচ’’। আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলোশিপের উপরেই জোর দিতে হবে – সেটাই সবচেয়ে সুবিধের (non-teaching হ’লে) এবং তোমার পাবার সম্ভাবনাও বেশি। ফ্রেন্ৎসের সঙ্গে শিগগিরই তোমার বিষয়ে কথা বলবো – ইন্ডিয়ানাতে হ’লে নানা দিক থেকে চমৎকার হয়। অবশ্য যেখানেই যাও, পড়াশুনো ক’রে আনন্দ পাবে, এমন মোহ মনে রেখো না। কিন্তু এদের ‘‘পদ্ধতি’’র দ্বারা সংক্রমিত না-হ’য়েও যদি ডিগ্রি উপার্জন করতে পারো তাহ’লে পরোক্ষভাবে লাভবান হবে সন্দেহ নেই।
‘‘এলিয়ট ও ভারত’’ তো রুমির ভাগে পড়লো – এখানে সকলেরই ওটাই পছন্দ। আমার ধীরে-ধীরে ধারণা হচ্ছে যে পশ্চিমী 888sport live footballে প্রাচ্য (ও ভারতীয় প্রভাব) – আমরা এতদিন যা ভেবেছি তার চেয়ে অনেক বেশি গভীর ও ব্যাপক। সেটা যে এখনো স্বীকৃত হচ্ছে না তার কারণ জোসেফ ক্যাম্বেল বলেছেন ‘‘Occidental megalomania’’। ‘‘Oriental Sources of the Renaissance’’, ‘‘… of Romanticism’’, এই দুটো বিষয় আমার মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে, কিন্তু থীসিসের পক্ষে হয়তো বড়ো বেশি ব্যাপক – এঁরা আজকাল খুব সংকীর্ণ বিষয় পছন্দ করেন, এর কোনো-একটা অংশ (দেশ বা বিশেষ লেখক) বেছে নিলে হয়তো চলতে পারে। যা-ই হোক, তোমার মনে এটা যদি সাড়া জাগায় তাহ’লে ভেবে দেখো। তোমার সঙ্গে দেখা হবার প্রত্যাশায় আছি।
বু.ব.
Ohio State Univ, (Columbus, Ohio) আর Univ. of Colorado (Boulder, Col.)-তেও তু.সা.বি. আছে।
* এ-দেশে অধিকাংশ দোকানে বাকিতে জিনিশ কেনা যায় – অতএব এ-মুহূর্তে হাতে টাকা নেই ব’লে কোনো জরুরি বিষয়ে নিজেকে বঞ্চিত কোরো না।
চিঠি ২০
খাম।
বস্নূমিংটন, ইন্ডিয়ানা
১৪ ডিসেম্বর, ১৯৬৩
অমিয়,
যত ভাবছি ততই মনে হচ্ছে যে দ্বিতীয় সেমেস্টারে ইন্ডিয়ানাতে আসার সুযোগ পেলে তোমার আসাই উচিত; এতে তোমার লোকশান কিছু হতেই পারে না, বরং লাভের সম্ভাবনা আছে। এলে, যতদূর মনে হয় গ্রীস্মের শেষ অবধি কাটাতেই পারবে (ফ্রেন্ৎস তো তোমাকে সামার স্কুল বৃত্তির কথা বলেছিলেন), ফলত পরবর্তী হেমমেত্ম ফেলোশিপের আশা একটু পুষ্ট হ’তে পারে। অবশ্য পরবর্তী হেমমেত্মর জন্য 888sport app আশাপ্রদ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা নিতান্ত কর্তব্য – কিন্তু আপাতত ইন্ডিয়ানাতে চ’লে এসো।
তোমার আসার সম্ভাবনায় রুমি, পাপ্পা, প্রদীপ পুলকিত ও উত্তেজিত; – সবচেয়ে বেশি খুশি পাপ্পা, কেননা সে দ্বিতীয় সেমেস্টার এখানেই কাটাচ্ছে – আমরা একটা চেষ্টা ক’রে দেখছি তাকে এখান থেকেই বি.এ. পাশ করানো যায় কিনা। (এ-বিষয়ে পরে তোমাকে বিস্তারিতভাবে লিখছি – এটা জরুরি, তোমার পরামর্শও চাই।) পাপ্পা ভাবছে রুমির কাছাকাছি একটি ঘর নিয়ে তোমার সঙ্গে ভাগাভাগি ক’রে থাকবে – সে-ব্যবস্থা আমাদেরও মনঃপূত, আশা করি তোমার পক্ষেও অরুচিকর হবে না। বাসন্তিক ছুটিতে তুমি আর পাপ্পা আমাদের কাছে ব্রম্নকলিনে চ’লে আসতে পারবে।
সম্প্রতি মিমির চিঠিতে জানলাম প্রণবেন্দু যাদবপুরে যোগ দিয়েছে – অদ্ভুত ছেলে, গিয়ে এক ছত্র চিঠি লিখলে না। ডেভিডের চিঠিও পেয়েছি – তরুণ বাঙালি কবি অবিরল গুলিগোলা চালাচ্ছে – সে-সবের লক্ষ্য হলেন নরেশ ও ডেভিড। – ভাগ্যিশ দূরে আছি ও আছো। এখানে প্রখর শীত, পৃথিবী তুষারে আচ্ছন্ন – আর এই সব নিয়ে আশ্চর্য রৌদ্রোজ্জ্বল দিন। মনে হয় এ-রকম দিনেই মালার্মে তাঁর ‘‘রাজহাঁসে’’র প্রথম পংক্তি ভেবেছিলেন। এমন দৃশ্যমান কৌমার্য আর কিছুতে সম্ভব নয়।
সব খবর দিয়ে চিঠি লিখো।
বু.ব.
চিঠি ২১
খাম।
বস্নূমিংটন, ইন্ডিয়ানা
৯ জানুয়ারি, ১৯৬৪
অমিয়,
কাল রাত্রে তোমার টেলিফোন পেয়ে আমরা সবাই কত যে খুশি হয়েছি তা তুমি অনুমান করতে পারবে। আমরা আশান্বিতভাবে তোমার আর পাপ্পার জন্য অগ্রিম ফ্ল্যাট খুঁজছিলাম – এবার সুবিধেমতো কিছু পেলেই ঠিক ক’রে ফেলবো। আমাদের ক্যাম্পাস ভিউ ছেড়ে দিতে হবে পঁচিশে জানুয়ারি – কিন্তু তক্ষুনি তো আর ব্রম্নকলিনে যাত্রা করবো না, দুই বাসায় ভাগাভাগি ক’রে কয়েকটা দিন কাটানো যাবে। হয়তো তোমাকে আগে লিখেছিলাম, আমি আগামী গ্রীষ্মে পাঁচ সপ্তাহ কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবো; সেখানকার তারিখ ২০শে জুলাই থেকে ২৪শে অগস্ট পর্যন্ত – এদিকে ব্রম্নকলিনের কাজ শেষ হচ্ছে জুনের আরম্ভে; মাঝে দেড়মাস কোথায় থাকবো কী করবো এখনো জানি না – আর কোনো ব্যবস্থা না-হ’লে বস্নূমিংটনেই তোমার ও পাপ্পার আতিথ্য গ্রহণ করা যাবে। নানা দিক থেকে তোমারও এখানে বেশি ভালো লাগবে, সন্দেহ নেই। খুব ভালো হ’লো।
তুমি ঠিক কোন তারিখে বস্নূমিংটনে পৌঁছবে, আগে জানিয়ো।
ইন্ডিয়ানাতে আগামী গ্রীষ্মে ফেলোশিপ বিষয়ে ফ্রেন্ৎস তোমাকে কিঞ্চিৎ আশা দিয়েছিলেন – সে-কথা মনে আছে তো? তার জন্য যথাযোগ্য চেষ্টা কোরো – এবং আগামী হেমমেত্মর জন্যেও।
কালিকার আর-একটি চিঠি পেয়েছি – এত যোগ্যতা নিয়েও কেন যে ওর কোথাও কোনো আর্থিক সুরাহা হচ্ছে না ভেবে পাই না। আশা করতে ইচ্ছে করে যে তার নিষ্ঠা ও অধ্যবসায় জয়ী হবে – কিন্তু নিশ্চিতি কোথায়?
বু.ব.
চিঠি ২২
পিকচার পোস্টকার্ড : উল্টোপিঠে ‘ওয়াইকিকির হুলা সুন্দরীরা’, হাওয়াই।
হনলুলু
২৪ জুন, ১৯৬৫
আমিয়,
তোমাদের সকলকে ছেড়ে অনেক দূরে চ’লে এসেছি। না-আমেরিকা, না-এশিয়া, জাতিগোত্রহীন নিশ্চরিত্র এক জগৎ – গগ্যাঁর সোনালি সুন্দরীরা বহুকাল নির্বংশ হয়েছে, প্রতীচীর বিশ্বভুক্ তীব্রতাও নেই – ও-পিঠে যাদের ছবি দেখছ তারা নিতান্তই ট্যুরিস্টের বিকৃত কল্পনার পুতুল, বাস্তবে তারা নকল মার্কিনী মাত্র। এখনো এখানে কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না যার সঙ্গে মনকে মেলাতে পারি। তবে দৈবাৎ বাসাটা ভালো পাওয়া গেছে ব’লে অন্তত শারীরিক আরামে আছি, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও দু-চারজনের চোখে-মুখে সাড়া পাওয়া যায় – হয়তো শেষ পর্যন্ত ভালোই লাগবে। রানুর পৌঁছ-খবর টেলিগ্রামে পেয়েছি – চিঠি এখনো আসেনি।
শুল্জ্ কেমন আছে? তাকে আমার শুভেচ্ছা জানিয়ো।
বু.ব.
চিঠি ২৩
এয়ারোগ্রাম
কলকাতা
২৩ অগস্ট, ’৬৫
কল্যাণীয়েষু,
অমিয়, তোমার চোদ্দ তারিখের চিঠি কয়েকদিন আগে পৌঁছলো – আর আজ পেলাম পাপ্পার তেরো তারিখের স্পেশল ডেলিভারি চিঠি, সেটা অবশ্য ডাকে দেয়া হয়েছিল ১৭ই। পাপ্পার চিঠি অনেক দিন পরে এলো – লিখেছে, রাত-জাগা পিল্ খেয়ে অনেকগুলো ‘‘অসমাপ্ত’’ শেষ করেছে, বাকি শুধু কিম্-এর পেপার, সেটা শেষ করতে পারলো কিনা জানার জন্য উদ্বিগ্ন আছি। পাপ্পা যে-রকম অস্থিরতার মধ্যে আছে, হয়তো আবার কয়েকদিন চিঠি লেখার সময় পাবে না – তুমি ওর ডিগ্রি শেষ হবার খবরটা আমাকে জানিয়ো। ওই চিঠিতে লিখেছে – ‘ডিগ্রি হাতে এসে গেছে বলা যায়’ – আমারও মনে হয় ইন্ডিয়ানা ছেড়ে যাবার আগে কিম্-এর পেপার শেষ করতে পারবেই – মার্কিনী বিশ্ববিদ্যালয় অন্ততপক্ষে অমানুষিক খাটতে শেখায়।
মল্লিক মশাই সস্ত্রীক এসেছিলেন একদিন, অন্য অনেকে ছিলেন ব’লে খুব খোলাখুলি কিছু কথা হলো না, তবু অনেক-কিছু জানা গেল। যাদবপুর বাইরের দিকে বিস্তারলাভ করছে – খোলা হয়েছে সান্ধ্য এম.এ. কোর্স, লাইব্রেরি সায়ান্স ইত্যাদি – কিন্তু ভিতরকার অবস্থা ভালো নয় – তবে যে-দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ একটা রাজনৈতিক চাকরিমাত্র, সরকারি খেয়াল-খুশির উপর নির্ভরশীল, সে-দেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েরই অবস্থা ভালো হতে পারে না। তু.সা. বিভাগ-এর বি.এ. কোর্স তুলে দেবার জন্য নানারকম ধূর্ত চেষ্টা চলছে – মল্লিক ও নরেশ শক্ত ক’রে হাল ধরে আছেন। বি.এ.-তে ছাত্র888sport free betও ক্ষীয়মাণ, এবারে নাকি একটিমাত্র মেয়ে অনিশ্চিতভাবে ঝুলে আছে। একটা সুখের ও দুঃখের কথা এই যে মেলবার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটা বৃত্তি দেয়া হয়েছে যাদবপুরের তু.সা.বি.র কোনো আন্ডারগ্রাজুয়েট ছাত্রের জন্য – কিন্তু বার-বার বিজ্ঞাপন দেয়া সত্ত্বেও আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। বৃত্তিটার ব্যবস্থা করেছেন অবশ্য শিবনারায়ণ, যিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারা দু-দুবার প্রত্যাখ্যাত ও অসম্মানিত হয়েছিলেন। তাঁর এই মহানুভবতায় আমি মুগ্ধ হয়েছি, (…)।
ভালো খবরও আছে। নরেশ বলছে এবার তু.সা.বির এম.এতে প্রায় একশো অ্যাপ্লিকেশন পড়েছে – এ-রকম আগে কখনো হয়নি। আমার অবস্থাটা একটু অদ্ভুত ও কৌতুকাবহ – যাদবপুরের সঙ্গে কোনোই যোগ নেই, অথচ ঐ বিভাগ বিষয়ে ভাবতে হয় ও কথা বলতে হয়।
তা-ই ব’লে ভেবো না আমি আর-কিছু করছি না। এখানে আসার পরে দুটি ছোটো 888sport live শেষ করলাম – এমনকি একটি 888sport app download apkও লিখেছি। একটি 888sport liveের বিষয় আমস্টার্ডাম – আসলে রেমব্রান্ট; অন্যটির, রোম – আসলে শেলি ও কীটস। ‘‘দেশান্তর’’ লেখা শেষ হ’লো, পুজোর পরে বই প্রেসে যাবে। কলকাতার আবহাওয়ার প্রভাবে আরো লিখতে ইচ্ছ করছে – ভালো লাগছে রা.বি. এভিনিউর শাড়িপরিহিতা মহিলাদের দেখতে। আমি একটা বিষয়ে প্রাদেশিক থেকে গেলাম – বঙ্গললনা ভিন্ন 888sport promo code জাতির অন্য কোনো প্রতিভূ আমার মনে সাড়া তোলে না।
তোমাকে কি লিখেছিলাম ‘যে-আঁধার আলোর অধিক’-এর এতদিনে সংস্করণ ফুরিয়েছে? বিরামবাবু নতুন একটি প্রকাশনীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন – তিনি আমার কাছে চাচ্ছেন একটি নতুন 888sport app download apkর বই, আর 888sport live সংকলন, আর কাব্যসংগ্রহ। দেখতে পাচ্ছ কয়েক মাসের মতো কাজ আমার হাতে আছে এখন – জীবিকার সংস্থান থাক বা না-ই থাক।
তুমি বার-বার ‘বিপন্ন বিস্ময়ে’র কথা বলো – তাতে আমি অবাক হই, খুশিও হই, কেননা 888sport appsে অন্য কেউ স্বীকার করে না যে আমি 888sport alternative link লিখতে পারি। ভাবছি একদিন সময় ক’রে লেখাটা প’ড়ে ফেলবো – দেখা যাক মনে কোনো সাড়া পাই কিনা। যদি কখনো শেষ করতে পারি তোমাকে উৎসর্গ করবো বইটা – ওটা তোমার প্রাপ্য।
আমাদের সান্ধ্য আড্ডায় আজকাল এত ভিড় হচ্ছে যে চেয়ার ছেড়ে কার্পেটে বসতে হয়। USIS-এর স্টীলকে তুমি কি চিনতে? তিনি বদলি হ’য়ে যাচ্ছেন – স্ত্রী ও ছেলেপুলে আমেরিকায় – একা এই শেষের দিনগুলি কলকাতায় উদ্দামভাবে ভোগ ক’রে নিচ্ছেন। জ্যোতি-মিমির সঙ্গে তার গলায়-গলায় ভাব, আমাদের এখানে
ঘন-ঘন আসছে এবং আঙুল চালিয়ে ভাতমাছ খাচ্ছে – নিয়ে আসছে নানারকম পানীয় ও বরফের ঝুড়ি – দিলখোলা চমৎকার মানুষটি। ডেভিডও অনেক ভালো আছে আগের চাইতে – আর নালিশ নেই, হাসিখুশি, বেশ ভালো বাংলা বলে আজকাল, মন্দির বিষয়ে বক্তৃতা করছে। আমাদের অনেক অভাব ও পাপ সত্ত্বেও কলকাতার আস্বাদ এখনো মনোমুগ্ধকর।
পরিমল দাসকে তোমার কৃতিত্বের কথা জানিয়ে দিয়েছি। চিঠি লিখো।
বু.ব.
চিঠি ২৪
এয়ারোগ্রাম
পি-৩৬৪/১৯ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু রোড
কলকাতা ৪৭
২৭ জুলাই, ১৯৬৬
কল্যাণীয়েষু
অমিয়, আমরা নাকতলায় এসেছি প্রায় দু-মাস হ’লো; প্র.ব.র বাড়িটা বেশ আরামের হয়েছে, কিন্তু আমি নিসর্গের চাপে ও নাগরিকতার অভাবে কাতর। আমি এ-বছর দুটো ছোটো 888sport alternative link লিখলাম ‘‘উল্টোরথ’’ ও ‘‘জলসা’’র পূজা-888sport free betর জন্য, ‘‘দেশ’-এ একটা নাট্যাকারে বড়ো গল্প দিয়েছি। এর আগে ‘‘দেশ’-এ বেরিয়েছিল আমার ‘‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’’ – ঋষ্যশৃঙ্গের কাহিনী অবলম্বনে পূর্ণাঙ্গ নাটক, আমার কন্যাদ্বয়কে কপি পাঠিয়ে বলেছিলাম ওদের পড়া হ’লে তোমাকে পাঠিয়ে দিতে, কিন্তু মনে হচ্ছে ওরা ভুলে গেছে। ওটা অবশ্য শিগগিরই বই হ’য়ে বেরোচ্ছে, তোমাকে পাঠাতে পারি যদি না পৌঁছবার আগেই তোমার দেশে ফেরার সময় হয়। ঐ নাটকটা তোমাকে পড়াবার খুব ইচ্ছে আমার – মিমিকে লিখে দেখতে পারো যদি পাঠিয়ে দেয়।
এখানে আসার পর রানুকে কুকুরে কামড়েছিল (বাড়ির পোষা কুকুর), তাই নিয়ে কষ্ট পেলো কয়েকদিন, তারপর কলেরার টিকে নিয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় ভুগে উঠলো। ওর নতুন বই বেরিয়েছে ‘‘অগ্নিতুষার’’ – মার্কিনী পটভূমিতে লেখা 888sport alternative link – অনেকদিন আগে ‘‘অমৃতে’’ ধারাবাহিক বেরিয়েছিল, হয়তো তোমার মনে আছে। এখন ‘‘দেশে’’ বেরোচ্ছে ওর ‘‘আলো, আমার আলো’’ – উদ্বাস্ত্তজীবন নিয়ে 888sport alternative link – বিশেষ সমাদৃত হচ্ছে লেখাটা।
পাপ্পা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এম.এ. পড়ছে। জঘন্য লাগছে পাপ্পার – আমি ওকে দোষ দিই না সেজন্য – সম্প্রতি ক.বি.-র এতদূর অধঃপতন হয়েছে যে বাইরে বললে কেউ বিশ্বাস করবে না। ‘‘আধুনিক চিত্রকলা’’ বিষয়ে পাপ্পা একটা সীরিজ লিখছে ‘‘দেশে’’ – প্রতি সপ্তাহে একটা ক’রে সচিত্র 888sport live; এতে ওর
হাত-খরচাটা চ’লে যাচ্ছে, তাছাড়া একটা নিয়মিত কাজ পেয়ে ক.বি.-প্রসূত বিপুল নির্বেদ থেকেও নিষ্কৃতি পেয়েছে খানিকটা। বহুদিন পরে রুমিরও একটা ‘‘ওয়াশিংটনের চিঠি’’ বেরিয়েছে ‘‘দেশে’’ – l.s.d নেশা বিষয়ে।
যাদবপুর তু.সা.বি.র একটি বোহেমিয়ান ছাত্র ‘‘888sport app download apk-পরিচয়’’ নাম দিয়ে একটা পত্রিকা বের করেছে; দুটো বিখ্যাত পত্রিকার নামের এই সমন্বয়ের অর্থ হ’লো Explication। নরেশ, প্রণবেন্দু, অলোকরঞ্জন, সুনীল, শঙ্খ ইত্যাদি অনেকেই নিয়মিত লিখছে, (…) – সম্পাদকের অনুরোধ এড়াতে না-পেরে আমিও একটা এক্সপ্লিকাসিয়ঁ লিখলাম, সুধীন্দ্রনাথের ‘‘নৌকাডুবি’’ (‘দশমী’র দ্বিতীয় 888sport app download apk) বিষয়ে। অমরেন্দ্র (সম্পাদক) বললে সে তোমাকে এয়ারমেলে পত্রিকা পাঠিয়েছে – পেয়েছ কি? পারলে ওদের একটা লেখা দিয়ো।
কলকাতায় দুঃখকষ্ট অনেক, তবু জীবন এখানে চঞ্চল, কিছু-না-কিছু ঘটছেই সব সময়; তুমি ফিরে এসে একটা সংসর্গ যদি রচনা করে নিতে পারো তাহ’লে তোমার ভালো লাগবে – আর এখানে তোমার করণীয়ও অনেক-কিছু আছে। কবে থীসিস শেষ হবে? কবে নাগাদ ফিরবে ভাবছো? যাদবপুরে নতুন উপাচার্য হলেন হেম গুহ – (…) নরেশ সম্প্রতি একটি বিভাগীয় লাইব্রেরি স্থাপন করেছে (অন্য কোনো বিভাগের তা নেই) – পাপ্পা দেখে এসে বলেছে লাইব্রেরিটি চমৎকার। এই বিভাগ নিয়ে নিঃসঙ্গভাবে যুদ্ধ ক’রে যাচ্ছে নরেশ, আমি খুব আশা করছি যে তুমি ফিরে এসে ওর পাশে দাঁড়াবে। – তোমার ‘‘বিপন্ন বিস্ময়’’ এখনো মুলতবি রেখেছি, কিন্তু ‘‘কোনো-একদিন’’ শেষ করার আশাও ছাড়িনি। রুমিরা ফিরছে এ-বছরের শেষে – কানপুরে চাকরি হ’লো প্রদীপের – কিন্তু সেখানে যাবার আগে কলকাতায় থাকবে কিছুদিন – আমরা পথ চেয়ে ব’সে আছি।
বু.ব.
চিঠি ২৫
এয়ারোগ্রাম।
কলকাতা ৪৭
৭/২/৬৭
কল্যাণীয়েষু
অমিয়, নরেশের চিঠিতে জেনেছ তোমার আরো দু-মাস ছুটি মঞ্জুর হয়েছে। নরেশ আর আমি দু-জনেই ভাবছিলাম যে তোমার পক্ষে অনেকটা বেশি সুবিধে হ’তো ৩০শে জুন অবধি ছুটি চাইলে – জোর ক’রে চাইলে খুব সম্ভব পেয়ে যেতে (কেননা মে জুন দু-মাস গ্রীষ্মের ছুটি – মাত্রই তিন সপ্তাহের তফাৎ হ’তো) – তাহ’লে ধীরে সুস্থে য়োরোপে থেমে ১লা জুলাই যোগ দিতে পারতে। কিন্তু তা যখন করোনি তখন আটুই এপ্রিলের আগে কলকাতার মাটি ছোঁবার সংকল্পই নিতে হবে তোমাকে (পেস্ননে ফিরলে তা সম্ভব হবার বাধা নেই) – নরেশ বলছে এর পরেও ছুটির মেয়াদ বাড়াতে গেলে ফলাফল অত্যন্ত অনিশ্চিত। অতএব সেই অনুপাতে তৈরি হও।
থীসিসের কাজ, ফেরার তাড়া – আগামী কয়েক সপ্তাহ তুমি উদ্ভ্রান্ত থাকবে, তবু একটা কাজের কথা লিখি। আমাদের একটা ইলেকট্রিক পাখা পাপ্পা ফেলে এসেছিলো – সেটা কি তোমার কাছে? যদি তোমার কাছে থাকে তাহ’লে তোমার 888sport app পার্সেলের সঙ্গে ওটা কার্টনে ক’রে পাঠাতে পারবে কি? ট্রান্সফর্মার দিয়ে এ-দেশে চালানো যায়, আর নাকতলায় ঘর বেশি ব’লে পাখাও বেশি দরকার। যদি পাঠানো অসম্ভব হয় বিক্রি করা যাবে কি শেষ মুহূর্তে? সেই টাকায় দু-একটা বই বা অন্য জিনিশ হ’তে পারে হয়তো।
আমার সবচেয়ে দরকার অন্তত এক বোতল Jet Black SKRIP কালি (permanent) – সেই স্তম্ভতুল্য বোতলগুলির কথা বলছি। (রুমি এ-জিনিশটা আনতে ভুলে গেছে।) এ ছাড়া খান দুই রেক্সিনে বাঁধাই সরু রুল টানা খাতা যদি আনতে পারো – আমি 888sport app download apk লেখার জন্য যেগুলো ব্যবহার করি। কয়েকটা ডটপেন যেগুলোকে Auditor’s fine point বলে – refill হয় না। লাল রঙের চাই – প্রম্নফ দেখার জন্য। খাতা আর SKRIP কালি হয়তো ন্যুয়র্কে বা শিকাগোতে কিনতে হবে – ও-রকম খাতা ক্লমিংটনে কখনো দেখিনি। যদি টাকায় না কুলোয় অন্যগুলো বাদ দিয়ে শুধু কালিটাই এনো।
তুমি নিজের জন্য একটা College Webster নিয়ে এসো – আমার জন্যে মিমিকে একটা পাঠাতে লিখেছি। শুধু অক্সফোর্ডে আজকাল আর কাজ চলে না। আশা করছি তুমি অনেক আধুনিক নাটকের বই নিয়ে আসবে – পড়তে পাবো।
তোমার 888sport liveটি পেয়ে খুব খুশি হয়েছি। তোমার বিশেস্নষণের পদ্ধতি চমৎকার, কিন্তু সাধারণ পাঠকের জন্য (আমিও তার মধ্যে পড়ি) আরো একটু খোলা হাওয়ার লেখা প্রয়োজন হয়। মনে হচ্ছে তোমার গবেষণা মূল্যবান হবে, আশা করি বইটা বেরোবে কোনো সময়ে – আর কালক্রমে বাংলাতেও এটা লিখবে। নরেশ এতদিনে তোড়জোড় করছে ওর থীসিস ছাপাবার জন্য।
যাদবপুরের বিভাগ অত্যন্ত খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে চলছে, একমাত্র ভরসা ডেভিড, কিন্তু সেও শিগগিরই চ’লে যাচ্ছে – তোমার ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে নরেশ, এবার তুমি তার পাশে দাঁড়ালে সে নিশ্বাস নিতে পারে। বিশেষভাবে আশা করছি তুমি সব কাজ সুসম্পন্ন ক’রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বিঘ্নে পৌঁছতে পারবে। তোমার মাসিমা তোমাকে কল্যাণ কামনা জানাচ্ছে – পাপ্পা, ভালোবাসা।
বু.ব.
সূত্র
চিঠিসমূহের পাঠে আমি দুটি সাধারণ চিহ্ন ব্যবহার করেছি : অনন্তর্ভুক্তি বোঝাতে (…), আর সংযোজন বোঝাতে [ ]।
যাঁরা এই পত্রগুচ্ছের প্রথম কিসিত্ম পড়েছেন তাঁদের কাছে বেশ কিছু সূত্র পুনরাবৃত্ত ঠেকবে – তার জন্যে মার্জনা চাইছি।
চিঠি ১
রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাপানে আমন্ত্রিত।
ছাত্রছাত্রী : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক 888sport live football বিভাগের ছাত্রছাত্রী।
অলোকরঞ্জন : অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, কবি। তখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক 888sport live football বিভাগের অধ্যাপক, পরে বাংলা বিভাগের। (এখন থাকেন হাইডেলবার্গে ও বছরের দু-তিন মাস কলকাতায়।)
নরেনবাবু : নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, তুলনামূলক 888sport live footballের পাঠক্রমে মুখ্যত সংস্কৃতের অংশ পড়াতেন।
ম্যাকুচেন : ডেভিড ম্যাকাচ্চন, ইংরেজ, কেম্রিজের ‘মডার্ন গ্রেটস’ ডিগ্রিধারী। তুলনামূলক 888sport live footballের পাঠক্রমে ইউরোপীয় অংশ পড়াতেন। পরে বাংলা টেরাকোটা মন্দির নিয়েও প্রামাণ্য কাজ করেন। ১৯৭২-এ তাঁর কলকাতায় অকালমৃত্যু হয়।
ডক্টর সত্যেন রায় : 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে বুদ্ধদেব বসুর শিক্ষক ছিলেন, ইংরেজি ভিক্টোরীয় 888sport live footballের বিশেষজ্ঞ। তখন তুলনামূলক 888sport live football বিভাগে আংশিক সময়ের পাঠ দিচ্ছিলেন।
জর্নাল : Jadavpur Journal of Comparative Literature (JJCL)। সূচনা হয় ১৯৬১-তে। সেই সূচনা-888sport free betর কথাই বলছিলেন।
ফাদার ফালঁ : ফাদার পিয়ের ফালঁ, এস.জে., কলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্সের শিক্ষক। তখন তুলনামূলক 888sport live football বিভাগে সপ্তাহে দু-দিন করে পড়াচ্ছেন।
চিঠি ২
জাপান থেকে সান ফ্রান্সিসকোর পথে হনলুলুতে থেমেছিলেন। সেখানে ওয়াটুমল ফাউন্ডেশনের আতিথ্যে বক্তৃতা করেন।
মাসিমা : প্রতিভা বসু।
চিঠি ৩
নিউ ইয়র্ক (নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন অতিথি অধ্যাপক) থেকে লেখা।
সুধীন্দ্র : সুধীন্দ্রনাথ দত্ত গোড়া থেকেই সপ্তাহে দুদিন করে তুলনামূলক 888sport live football বিভাগে পড়াতেন। তিনিই প্রথম বিভাগীয় আলোচনাসভায় বক্তৃতা করেন। তাঁর সেই বক্তৃতা, ‘The Necessity of Poetry’ তাঁর মৃত্যুর (২৫ জুন ১৯৬০) পর JJCL-এর প্রথম 888sport free betয় (১৯৬১) ছাপা হয়।
জ্যোতি : জ্যোতির্ময় দত্ত, বুদ্ধদেব বসুর জ্যেষ্ঠ কন্যা মীনাক্ষীর (মিমি) স্বামী, কবি ও সাংবাদিক। তখন স্টেটসম্যানে কর্মরত। সুধীন্দ্রনাথের স্নেহধন্য।
‘888sport app download apk’র বস্নক : 888sport app download apk পত্রিকার সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-888sport sign up bonus888sport free betয় (আশ্বিন-পৌষ ১৩৬৭) যে-ছবি ছাপা হয়েছিল তার বস্নক।
বিরামবাবু : বিরাম মুখোপাধ্যায় (১৯১৫-৯৮), বাংলা প্রকাশনা জগতে তাঁর রুচি ও যত্নের জন্য 888sport app download for androidীয়। তখন নাভানার সঙ্গে যুক্ত। JJCL-এর প্রথম 888sport free bet সেখানেই ছাপা হচ্ছিল।
‘এই আঁধার …’ : প্রসঙ্গ যে-আঁধার আলোর অধিক, তাঁর আপন কাব্যগ্রন্থ।
চিঠি ৪
নবনীতা : [এখন, দেব সেন] যাবদপুরে বুদ্ধদেব বসুর প্রথম ছাত্র, আমার সহপাঠী বন্ধু। তুলনামূলক 888sport live footballে আমেরিকার ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচ.ডি.। পরে যাদবপুরে তুলনামূলক 888sport live footballের অধ্যাপক। কবি ও 888sport live footballিক। ‘সই’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা।
অমর্ত্য : [এখন, নোবেল-খ্যাত] অমর্ত্য সেন তখন নবনীতা দেবের স্বামী।
নরেশ : নরেশ গুহ, বুদ্ধদেব বসুর প্রাক্তন ছাত্র ও তদানীন্তন সহকর্মী। কবি। (প্রয়াত)
চিনু : অর্চনা গুহ, নরেশ গুহের স্ত্রী; তখন ক্যালকাটা গার্লস বি.টি. কলেজের অধ্যাপিকা।
হোটেল চেলসী : আগের ‘প্রায়ান্ধকার’ ফ্ল্যাট থেকে বুদ্ধদেব বসুরা উঠে এসেছেন এই বিখ্যাত হোটেলে।
রাধারানী দেবী : (১৯০৩-৮৯), বিখ্যাত লেখিকা (স্বনামে তো বটেই, অপরাজিতা দেবী ছদ্মনামেও লিখেছেন) – নবনীতা দেব সেনের মা।
নরেনদা : নরেন্দ্র দেব (১৮৮৮-১৯৭১), বিখ্যাত লেখক – নবনীতা দেব সেনের বাবা। (মেয়ে নবনীতা উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশ যাবার পর তার মা ও বাবার সস্নেহ আগ্রহে আমি কয়েক বছর তাঁদের সঙ্গে ৭২ হিন্দুস্থান পার্কে থাকি – মাসিমা ও মেসোমশাইয়ের সেই স্নেহের ঋণ ভুলবার নয়।)
শিলচরে তখন আমার বৃদ্ধ মা-বাবা ও দুই দাদা থাকেন।
চিঠি ৫
ফ্রীডরিখ : হেবর্নার ফ্রীডরিখ, চ্যাপেল হিলে অবস্থিত নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক 888sport live football বিভাগের প্রধান ও তখনকার মার্কিন তুলনামূলক 888sport live football সংস্থার যেমন তেমনি আন্তর্জাতিক তুলনামূলক 888sport live football সংস্থার এক বিশেষ কর্মকর্তা। যাদবপুরে এসেছিলেন এবং JJCL-এর প্রথম 888sport free betয় লিখেওছিলেন।
চিঠি ৬
Quest-এ জ্যোতির 888sport live : জ্যোতির্ময় দত্তের সেই 888sport liveের নাম ছিল ‘On Caged Chaffinches and Polyglot Parrots’।
চিঠি ৭
রুমি : বুদ্ধদেব বসুর কনিষ্ঠ কন্যা দময়মত্মী [বসু সিং], তুলনামূলক 888sport live footballে ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচ.ডি। কানপুরের এক কলেজে ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। বিকল্প প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার – তিনি বুদ্ধদেব বসুর বহু বিসত্মৃতপ্রায় বই ও রচনার পুনঃপ্রকাশ করেছেন। বুদ্ধদেব বসু জন্মশতবর্ষও ঘটিয়ে তুলেছিলেন তিনিই। আর পরিবারের পক্ষ থেকে বুদ্ধদেব বসু ও প্রতিভা বসু স্মারক 888sport app download bdেরও উদ্যোগ তিনিই নেন। সম্প্রতি আকস্মিক অসুস্থতায় তিনি প্রয়াত হয়েছেন।
‘বম্বাইতে’ : রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকী বক্তৃতার জন্য বুদ্ধদেব বসু বম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত হন। পাঁচটি বক্তৃতা করেন। পরে (১৯৬২তেই) সেই বক্তৃতামালা বম্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বই হয়ে বেরোয় : Tagore : Portrait of a Poet।
চিঠি ৮
‘সেমিনার’ : এক মাসের এই থিয়েটার ওয়ার্কশপ শেষ পর্যন্ত হয় মধ্যপ্রদেশের পাঁচমাড়িতে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাতে প্রতিনিধি এসেছিলেন। যাদবপুর থেকে আর যিনি গিয়েছিলেন তিনি হিমেন্দু বিশ্বাস, ডিরেক্টর অব ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার। ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেছিলেন হাবিব তনবীর। ব্রেখটের ‘সেৎসুয়ানের ভালোমানুষ’ নিয়ে কাজ চলে ওয়ার্কশপে এবং তা শেষ হলে এক উপস্থাপনাও হয় স্থানীয় দর্শকদের সামনে।
চিঠি ৯
‘মার্কিনী লেখাটা’ : Concise Encyclopedia of English and American Poets and Poerty-তে ‘Indian Poetry In English’। বেরোয় ১৯৬৩-তে।
মানব : বুদ্ধদেব বসুর ছাত্র মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, আমার সহপাঠী বন্ধু। পরে যাদবপুরে তুলনামূলক 888sport live footballের অধ্যাপক। 888sport app download apk latest versionক ও কবি।
বাসমত্মী মিত্র : ধীরেন্দ্রনাথ মিত্রের কন্যা, যাদবপুরে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস বিভাগে অধ্যাপিকা। (প্রয়াত)
কল্যাণ সিংহ : ‘ফ্রীডম হাউস’-এর পরিচালক।
রেজিস্ট্রার : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রবীরচন্দ্র বসু মল্লিক।
ফিশার : গ্যোয়টে ইনস্টিট্যুটের তরফে যাদবপুরে জার্মান ভাষা পড়াতেন।
বীট-যুগল : বীটনিক কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ ও তাঁর বন্ধু পিটার অর্লভস্কি।
শক্তি-সুনীল : কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। (উভয়েই প্রয়াত)
রুমির ভিসা : মার্কিন ভিসা।
পাপ্পা : পুত্র শুদ্ধশীল বসু। উল্লিখিত পরীক্ষা যাদবপুরের প্রেপারেটরি আর্টসের। (অকালপ্রয়াত)
বিনোদ বেরা : কবি।
ডেভিড : ডেভিড ম্যাকাচ্চন।
দীপক : দীপক মজুমদার, বুদ্ধদেব বসুর ছাত্র। নাট্যকর্মপ্রবণ। পাঁচমাড়ির থিয়েটার ওয়ার্কশপে আসেন বিশ্বভারতীর (তখন শ্রীনিকেতনের ইনস্টিট্যুট অব রুর্যাল এডুকেশনে পড়াচ্ছেন) প্রতিনিধি হয়ে। এবং অভিনয় করেন এক মুখ্য ভূমিকায়। পরে যাদবপুরে তুলনামূলক 888sport live footballের অধ্যাপক। (প্রয়াত)
চিঠি ১০
‘জর্নালের’ : এটা JJCL-এর দ্বিতীয় 888sport free bet।
কম্প-লিট পরীক্ষা : কম্পারেটিভ লিটারেচারের এম.এ. পরীক্ষা।
চিঠি ১১
রানু : প্রতিভা বসু।
ডাক্তার দাশগুপ্ত : ডাক্তার অতুলানন্দ দাশগুপ্ত (আনন্দকিশোর মুনশি ছদ্মনামে যিনি লিখতেনও)।
‘যাদবপুর নিঃশব্দ’ : ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম সেমেস্টারে ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবার আমন্ত্রণ পেয়ে যে-ছুটির আবেদন করেছিলেন বুদ্ধদেব বসু, তা নিয়ে তখনো কোনো সিদ্ধান্ত করেনি যাদবপুর।
শঙ্কু : সত্রাজিৎ দত্ত, ২০২ রাসবিহারী এভিনিউর তিনতলাবাসী কবি অজিত দত্তের মেজো ছেলে, প্রখর বুদ্ধির অধিকারী।
চিঠি ১২
মিলু : প্রতিভা বসুর ভাইঝি সংহিতা সোম (এখন, শ্রীমানী), যাদবপুরের তুলনামূলক 888sport live footballের ছাত্রী।
মিমির স্কুল : মিমি (মীনাক্ষী দত্ত) তখন মডার্ন গার্লস হাই স্কুলে পড়াচ্ছেন।
পিণাকী : যাদবপুরের তুলনামূলক 888sport live footballে বি.এ. প্রথম বর্ষে পাপ্পার (শুদ্ধশীল) সহপাঠী।
পাপ্পার ভর্তির কার্ড : বি.এ.তে ভর্তির।
ভিসা ফর্ম : মার্কিন ভিসা।
চিঠি ১৩
অজিত দাম : প্যারিসবাসী সাংবাদিক।
প্রণবেন্দু : প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত, বুদ্ধদেব বসুর ছাত্র, আমার সহপাঠী বন্ধু। কবি। তখন আমেরিকায় পিএইচ.ডি. অর্জনের শেষ ধাপে। পরে যাদবপুরে তুলনামূলক 888sport live footballের অধ্যাপক। (প্রয়াত)
রাজেশ্বরী : প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত গায়িকা রাজেশ্বরী দত্ত (১৯১৮-৭৮)। স্বামী সুধীন্দ্রনাথ দত্তের মৃত্যুর পর এক সময় শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার 888sport apk অধ্যয়ন করেন।
বম্বাইতে : জাহাজে ওঠার আগে USEFI (United States Educational Foundation in India) আয়োজিত ভারতীয় ফুলব্রাইট বৃত্তিধারীদের আমেরিকা-যাত্রার প্রস্ত্ততি।
চিঠি ১৪
মার্শালদের : ন্যু ইয়র্ক-বাসী অধ্যাপকদম্পতি রডারিক ও মার্গারেট ওয়াইলি মার্শাল, ভারতে এসেছিলেন – রডারিক মার্শাল ফুলব্রাইট অধ্যাপক রূপে যাদবপুরে তুলনামূলক 888sport live football বিভাগে পড়ান। আমি ন্যু ইয়র্ক পৌঁছে তাঁদের বাড়িতে উঠেছিলাম।
‘ওরিয়েন্টেশন’ : নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হবার আগে নানা দেশের ফুলব্রাইট বৃত্তিধারীদের এক বিশদ ‘ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে’ যোগ দিতে হত। একাধিক জায়গায় তা হত। আমার ‘ওরিয়েন্টেশন’ হয়েছিল ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
ঝর্না : বুদ্ধদেব বসুর ছাত্রী ঝর্না বসু, এখন ভট্টাচার্য। যে-বিয়ের কথা বলা হয়েছে তা টেকেনি। দ্বিতীয় বিয়ে দেবেন ভট্টাচার্যের সঙ্গে। (প্যারিসবাসী ছিলেন, এখন মুখ্যত কলকাতায়।)
চিঠি ১৫
ফ্রেন্ৎস : হোর্স্ট ফ্রেন্ৎস, ইন্ডিয়ানায় তুলনামূলক 888sport live footballের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান।
রেমাক : হেনরি এইচ. এইচ. রেমাক, ইন্ডিয়ানায় তুলনামূলক 888sport live footballের অধ্যাপক।
প্রদীপ : প্রদীপ ঘোষ, রুমির প্রথম স্বামী – বস্নূমিংটনেই তাঁদের পরিচয় ও বিবাহ – তখন ইন্ডিয়ানায় রসায়নশাস্ত্রে পিএইচ.ডি. করছেন।
ফিলাডেলফিয়া : আমার জন্য স্থির করা ছিল (তখন সরকারি বৃত্তিধারীদের ক্ষেত্রে এইসব স্থির করত ইনস্টিট্যুট অব ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন) ফিলাডেলফিয়ার পেন্সিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানেই আমার ১৯৬৩-৬৪-র প্রথম সেমেস্টার কাটে।
গ্রীনিচ গ্রাম : ন্যু ইয়র্কের বিখ্যাত ‘ভিলেজ’।
ছোড়দি : রুমি।
থ্যাঙ্কসগিভিং : আমেরিকার হেমন্তশেষের ছুটি।
মেট্রপলিটান : ন্যু ইয়র্কের মেট্রোপলিটান ম্যুজিয়াম অব আর্ট।
চিঠি ১৬
‘ওদের দু-জনকে’ : প্রণবেন্দু ও তাঁর স্ত্রী মেরিআন দাশগুপ্তকে।
হবাইস্টাইন : উলরিখ হবাইস্টাইন, ইন্ডিয়ানায় তুলনামূলক 888sport live footballের অধ্যাপক।
স্টলনেখট : নিউটন পি. স্টলনেখট, ইন্ডিয়ানার ‘স্কুল অব লেটার্সে’র অধ্যক্ষ ও তুলনামূলক 888sport live footballের অধ্যাপক।
মল্লিকমশাই : যাদবপুরের রেজিস্ট্রার প্রবীরচন্দ্র বসু মল্লিক।
চিঠি ১৭
আইয়ুব : আবু সয়ীদ আইয়ুব। তাঁর ‘আধুনিকতা’ নিয়ে সংশয় যাদবপুরে দেওয়া ‘Poetry and Truth’ বক্তৃতাতেই জ্ঞাপিত হতে শুরু করেছে।
অমস্নান : অমস্নান দত্ত তখন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি-অধ্যাপক। (প্রয়াত)
চিঠি ১৮
পাপ্পার জন্মদিন : ২ অক্টোবর।
ডিমক্ : এডওয়ার্ড ডিমক্, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দক্ষিণ এশীয় ভাষা ও সভ্যতা’ বিভাগের অধ্যাপক, বৈষ্ণব পদাবলী (ডেনিস লেভেরটভের সঙ্গে) ও চৈতন্যচরিতামৃতের ইংরেজি 888sport app download apk latest versionক, কলকাতাপ্রেমী। (প্রয়াত)
পল এঙ্গল : আওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পোয়েট্রি ওয়ার্কশপের ডিরেক্টর। কবি।
সুনীল : সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তখন আওয়ার পোয়েট্রি ওয়ার্কশপে অতিথি।
শুভময় : শুভময় ঘোষ, তাঁর রুশ প্রবাস থেকে প্রত্যাবৃত।
চিঠি ১৯
কিটি : কিটি স্কুলার [বিয়ের পর দত্ত], ব্রিটিশ। কলকাতা এসে স্কটিশ চার্চ কলেজে ইংরেজি পড়ান, পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। (এখন অনেকদিন অক্সফোর্ড-বাসী)
শার্লি ড্রাই : প্রতিভা বসু ও বুদ্ধদেব বসুর মার্কিন বন্ধু।
বীবার : কনরাড বীবার (ঠিক কোথায় ছিলেন তা আর মনে পড়ছে না)।
চিঠি ২০
জর্নাল : JJCL।
ব্রম্নকলিন কলেজ : ১৯৬৩-৬৪-র দ্বিতীয় সেমেস্টার বুদ্ধদেব বসু ন্যু ইয়র্কের ব্রম্নকলিন কলেজে পড়াতে যাচ্ছেন।
‘মালার্মের ‘রাজহাঁসে’র প্রথম পংক্তি’ : ‘Le vierge, le vivace et le bel aujour’hui’।
চিঠি ২১
‘তোমার টেলিফোন’ : টেলিফোনে জানিয়েছিলাম যে ইনস্টিট্যুট অব ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন ১৯৬৩-৬৪-র দ্বিতীয় সেমেস্টারে আমার প্রার্থিত বিশ্ববিদ্যালয়-বদলে – পেন্সিলভেনিয়া থেকে ইন্ডিয়ানা – রাজি হয়েছে।
কালিকা : কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য (?), বুদ্ধদেব বসুর ছাত্র। আমেরিকায় পিএইচ.ডি. করতে এসেছেন।
চিঠি ২২
‘রানুর পৌঁছ-খবর’ : প্রতিভা বসু বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে হাওয়াই যাননি।
শুল্জ্ : হান্স শুল্জ্, ইন্ডিয়ানায় তুলনামূলক 888sport live football পাঠরত জার্মান ছাত্র, সম্ভবত মার্কিন অভিবাসীও। বুদ্ধদেব বসুর কোর্স নিয়েছিলেন। ইন্ডিয়ানায় আসবার আগে ভারতে কিছুদিন দর্শন পড়ে গিয়েছিলেন। পাপ্পার ও আমার বন্ধু।
চিঠি ২৩
কিম : তাই য়ুল কিম, কোরীয়; ইডিয়ানার ইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ বিভাগে টীচিং ফেলোশিপ-ধারী। তাঁরই এক কোর্স নিয়েছিল পাপ্পা।
শিবনারায়ণ : শিবনারায়ণ রায় তখন অস্ট্রেলিয়ার মেলবার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন।
‘বিরামবাবু নতুন একটি প্রকাশনীর সঙ্গে’ : গোপীমোহন সিংহরায়-এর ‘ভারবি’।
স্টীল : স্টার্লিন স্টীল।
পরিমল দাস : USEFI-র তদানীন্তন রিজিওনাল ডিরেক্টর।
চিঠি ২৪
অমরেন্দ্র : অমরেন্দ্র চক্রবর্তী। পরবর্তী জীবনে আরো পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা, পুস্তক প্রকাশক, এবং কবি ও 888sport live footballিক।
চিঠি ২৫
‘সেও শিগগিরই চ’লে যাচ্ছে’ : ডেভিড ম্যাকাচ্চন ছুটিতে দেশে যাচ্ছেন, বিদায় নিচ্ছেন না।
মীনাক্ষী দত্ত এই চিঠিগুলি পড়ে দিয়েছেন। তাঁকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা। তথ্য নির্ধারণে ও অনুপুঙ্খ সংযোজনেও তিনি আমার কৃতজ্ঞতাভাজন। আর কৃতজ্ঞতাভাজন সুকান্ত চৌধুরী, যিনি এক তথ্য যাচাই করে দিয়েছেন।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.