গোলাম মুস্তফা
বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব এখন সকল সংগীতপ্রেমীর তীর্থভূমিতে পরিণত হয়েছে। দেশ এবং বিদেশের অনেকেই এই উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকেন। এবার প্রায় বারোশো জন প্রবাসী ও বিদেশি জানিয়েছেন, তাঁরা এই অনুষ্ঠানের কথা ভেবে তাঁদের 888sport apps সফরের সময়সূচি নির্ধারণ করেছেন। ‘অল রোডস লিড টু রোমে’র মতোই নভেম্বর মাসের শেষ দিকে সকল সংগীতপিপাসুর গমত্মব্য হয়ে উঠেছে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব। দেশ-বিদেশে ধর্মান্ধদের উগ্র আক্রমণ ও হুমকির জন্য এই উৎসব অনুষ্ঠান নিয়ে অনেকের মনেই শঙ্কা ছিল। কিন্তু সকল
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাকে উপেক্ষা করে নভেম্বরের ২৭ তারিখে যথারীতি শুরম্ন হলো উচ্চাঙ্গসংগীতের এই মহা-অনুষ্ঠান। এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে বিশিষ্ট 888sport live chatী কাইয়ুম চৌধুরীর 888sport sign up bonusর উদ্দেশে। কাইয়ুম চৌধুরী ছিলেন সংগীতের একনিষ্ঠ অনুরাগী সমঝদার। গত তিন বছরের প্রতিটি অনুষ্ঠানেই তিনি উপস্থিত ছিলেন। গত বছর ৩০ নভেম্বর বেঙ্গল সংগীত উৎসবের মঞ্চেই এই গুণী 888sport live chatীর জীবনাবসান ঘটে।
এই সংগীত উৎসব নিবেদিত হয়েছে স্কয়ার গ্রম্নপের উদ্যোগে, ব্র্যাক ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং মোবাইল অপারেটর রবির সহযোগিতায়। ‘মাছরাঙা টেলিভিশন’ উৎসবের সম্প্রচার-সহযোগী। প্রতিদিন রাত বারোটা থেকে অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে এই টেলিভিশন চ্যানেলে।
প্রথম দিনে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। জনাব মুহিত সংগীতপ্রেমী। জানালেন, তাঁর ছাত্রজীবনের শেষদিকে 888sport appয় অনুষ্ঠিত সংগীত-অনুষ্ঠানে উসত্মাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁর কণ্ঠে শোনা ‘বাজুবন্দ খুলে খুলে যায়’ ঠুমরিটির কথা। সেই ঠুমরি শুনে তখন উচ্চাঙ্গসংগীতের প্রতি তাঁর আকর্ষণ জন্মায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সংগীত ও সংস্কৃতি-চর্চার মাধ্যমে উগ্রবাদীদের আগ্রাসনের প্রভাব ক্ষুণ্ণ করা যেতে পারে। বেঙ্গল গ্রম্নপের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের এই রকম অনুষ্ঠান আয়োজনে তাঁর প্রতিষ্ঠানের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানা গেল, আগামী ফেব্রম্নয়ারির ২ থেকে ১৯ তারিখ পর্যমত্ম বেঙ্গলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে সতেরো দিনব্যাপী বাংলা সংস্কৃতি উৎসব। অবশ্য বেঙ্গল গ্রম্নপের এই আয়োজনের ঘোষণা দিলেন অর্থমন্ত্রী জনাব মুহিত।
প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শুরম্ন হলো ঠিক সন্ধে ৭টায়। প্রথমে পরিবেশিত হলো ‘পলস্নবী ড্যান্স সেন্টারে’র ভরতনাট্যম। মিনু হকের পরিচালনায় এই সমবেত পরিবেশনার বিষয় ছিল ‘দেশবন্দনা’। এই পরিবেশনার মূল প্রতিপাদ্য ছিল, বহুবর্ণময় মাতৃভূমিতে
বারে-বারে ফিরে আসার আকুতি। মানুষের দেহাবসান হয়, কিন্তু
আত্মার মৃত্যু নেই – পরিবর্তিত দেহে অমর আত্মা নিয়ে যেন এই
দেশের রূপ-রস-মাধুর্য ভোগ করা যায় – এরকম প্রার্থনাই ছিল এই
নৃত্য-পরিবেশনায়। নেপথ্য কণ্ঠে গীত হয়েছে দেশবন্দনার সংস্কৃত সেত্মাত্র। গুরম্নগম্ভীর ও আকর্ষণীয় কণ্ঠের গায়কের নাম জানা যায়নি। মাঝখানে রবীন্দ্রনাথের ‘ও আমার দেশের মাটি, তোমার ’পরে ঠেকাই মাথা’র সুর বেজে উঠেছে। ভরতনাট্যমটি শেষ হয়েছে দেশাত্মবোধক গান ‘একটি 888sport apps তুমি জাগ্রত জনতার, সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার’ গানটির সুরে। বিশজনেরও অধিক 888sport live chatী অংশগ্রহণ করেছেন এই সমবেত নৃত্যে। 888sport live chatীদের আমত্মরিক প্রয়াস ছিল, কিন্তু পরিবেশনা আরো সাবলীল হতে পারত। নৃত্য-ছন্দের প্রবাহে কিছু আড়ষ্টতা ছিল। আমরা আশা করি, ক্রমাগত চর্চায় ও সাধনায় ভবিষ্যতে এই নৃত্যগোষ্ঠী আরো সার্থকতা অর্জন করবে। নৃত্যপরিকল্পনায় মিনু হককে সহযোগিতা করেছেন অনীক বসু ও কস্ত্তরী মুখোপাধ্যায়।
দ্বিতীয় পরিবেশনায় শ্রোতা-দর্শকদের চমকে দিয়েছে ‘বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ে’র তবলা-শিক্ষার্থীরা। প–ত সুরেশ তালওয়ালকারের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষার্থীর ‘তবলা কীর্তন’ শুনে মনে হয়নি, এরা নবীন শিষ্য। অথচ এদের প্রায় সকলেই এখনো কৈশোরের সীমায়। তবলার সঙ্গে অনবদ্য কণ্ঠ-সহযোগিতা করেছেন বিনয় রামদাসন। তাঁর সংগীতের সঙ্গে ত্রিতালে একটানা প্রায় চলিস্নশ মিনিট ধরে বাজিয়েছে চিন্ময় ভৌমিক, ফাহমিদা নাজনীন, নুসরাত-ই-জাহান, মীর নকিবুল ইসলাম, প্রশামত্ম ভৌমিক, এম.জে. যোসেফ, পঞ্চম সান্ন্যাল ও সুশামত্ম মজুমদার। নবীন 888sport live chatীদের বাদন-পারদর্শিতা দেখে মনে হয়েছে, 888sport apps তবলাচর্চার এক গৌরবময় অধ্যায়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তবলা বাদনে 888sport promo codeদের খুব একটা দেখা যায় না। এই অনুষ্ঠানে ফাহমিদা নাজনীন ও নুসরাত-ই-জাহান – এই দুই বোনের পরিবেশনায় যে অক্লামত্ম বলিষ্ঠতা ছিল, তা দেখে এই মাধ্যমে 888sport promo codeদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সবাই আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। তবলার সঙ্গে হারমোনিয়াম বাজিয়েছেন অজয় যোগেলকার।
এরপর মঞ্চে এলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের 888sport live chatীগণ। অধ্যাপক অসিত রায়ের পরিচালনায় পরিবেশিত হলো ধ্রম্নপদ। মালকোষ রাগে পরিবেশিত ‘জয়তী জয়তী শ্রী গণেশা’ – এই বন্দিশে গণেশ-বন্দনার যথাযথ আবহ তৈরি হয়ে গেল। গিরিজাপতি শংকর ও পার্বতীর বন্দনাও ছিল। 888sport live chatী অসিত রায়ের কণ্ঠ সুললিত, গমকে তিনি পারদর্শী। সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত ধ্রম্নপদ শুনে মনে হলো, আরো অনুশীলনের প্রয়োজন ছিল। 888sport appsে ধ্রম্নপদ চর্চা খুব একটা নেই। বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবেই 888sport appsি 888sport live chatীদের ধ্রম্নপদ শোনার সুযোগ হয়। এই ধারার সংগীত শোনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগকে ধন্যবাদ জানাতে হয়।
বাঁশিতে কর্ণাটকি সুর শুনিয়ে এই দিন সবাইকে মুগ্ধ করলেন জয়াপ্রদা রামামূর্তি। বাঁশির প্রতি জয়াপ্রদার আকর্ষণ পারিবারিক সূত্রেই। প্রমাতামহ, বেলারির জমিদার শ্রীনিবাস আইয়ার ছিলেন স্বনামধন্য বংশীবাদক। তাঁর মা প্রেমা রামামূর্তি কর্ণাটকি সংগীতের বিশিষ্ট কণ্ঠ888sport live chatী। সংগীত888sport live chatীদের আর্থিক অসংগতির কথা ভেবে তিনি চাননি তাঁর কন্যা সংগীতকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করম্নক। জয়াপ্রদা বাণিজ্য বিষয়ে পি-এইচ.ডি. ডিগ্রি লাভ করেছেন, এখন পোস্ট ডক্টরেট গবেষণা করছেন। কিন্তু সংগীতের আকর্ষণ উপেক্ষা করতে পারেননি। কর্ণাটকি ও হিন্দুসত্মানি উভয় ধারায় বাঁশি-বাদনে পারদর্শিতা থাকলেও প্রধানত কর্ণাটকি ধারাতেই তিনি বাজিয়ে থাকেন।
এইদিন প্রথমে হংসধ্বনি রাগে গণেশ-বন্দনা করলেন সপ্তদশ শতকের শ্রীমথুস্বামী-সৃষ্ট একটি সুর বাজিয়ে। এটি পরিবেশিত হয় আট মাত্রার আদি তালে। আলাপেই জয়াপ্রদা বুঝিয়ে দিলেন বাঁশিতে তাঁর নিয়ন্ত্রণ কতটা। হংসধ্বনিতে শ্রীগণেশ-বন্দনা শুনে শ্রোতারা অভিভূত। এরপর বাজালেন হিন্দোল রাগ। দক্ষেণী হিন্দোল (হিন্দোলম) রাগটি হিন্দুসত্মানি হিন্দোলের মতো নয়। মালকোষের সঙ্গেই এর মিল। ঋষভ ও পঞ্চম বর্জিত পঞ্চস্বরাশ্রিত একটি রাগ – এই হিন্দোল বা হিন্দোলম। রাগটির মিষ্টত্ব জয়াপ্রদার বাঁশিতে আরো মিষ্টি শোনাল। মর্মস্পর্শী বলা যেতে পারে এই পরিবেশনাটিকে। সতেরো বছর আগে তিনি প–ত রবিশঙ্কর ও লক্ষ্মী শঙ্করের কাছে কয়েকটি রবীন্দ্রসংগীত শিখেছিলেন। তারই দুটি – মিশ্র বেহাগে ‘সুন্দরের…’ এবং দেশরাগাশ্রিত ‘এসো শ্যামল সুন্দর’ – বাজিয়ে শ্রোতাদের প্রশংসা আদায় করে নিলেন 888sport live chatী। মধুমালতী রাগও শোনালেন খানিকটা, এটাও আদিতালে। শেষে শোনালেন একটি পলস্নবীর সুর। পলস্নবী দক্ষেণ ভারতের ভাবাশ্রিত একটি বিশিষ্ট সংগীতরীতি। প-তে পদ্ম, ল্ল-তে লয়ম, বি-তে বিন্যাসম বা বিন্যাস-বৈচিত্র্য – এই নিয়েই পলস্নবী। একটি পদ বা চরণ বহুবার পুনরাবৃত্তি ঘটে এটির পরিবেশনার সময় – যাতে সহযোগী বাদকগণ তাল-বৈচিত্র্যের সঙ্গে সংগত করতে পারেন। পলস্নবীটি পরিবেশিত হয়েছে আহির ভৈরব রাগে।
জয়াপ্রদার প্রতিটি পরিবেশনাই ছিল মনোমুগ্ধকর। তিনি ঐতিহ্যানুসারী, কিন্তু উদ্ভাবনে কুণ্ঠিতা নন। ঐতিহ্যের সঙ্গে উদ্ভাবনের সমন্বয়ই তাঁর বংশী-বাদনকে অনন্য করে তুলেছে। তিনি বললেন, তাঁর বাঁশিতে বাণী বাঙ্ময় হয়ে ওঠে, কথাটা অতিরঞ্জিত নয় মোটেও। জয়াপ্রদার সঙ্গে বাঁশিতে সহযোগিতা করেছেন ভেনকট কে.সি. মুথিবি, বেহালায় চক্রপাণি গাঙ্গুলকুর্তি ও পারম্নপালিস্ন সুব্রহ্মণ্যান।
এই রাতে সন্তুর শোনালেন রাহুল শর্মা। শততন্ত্রী এই যন্ত্রটি বাজানো সহজ কাজ নয়। পিতা শিবকুমার শর্মার কাছ থেকে যোগ্য তালিম পেয়েছেন রাহুল। বাচস্পতি রাগটি বাজিয়েছেন অত্যমত্ম কুশলতার সঙ্গে। কিন্তু 888sport live chatীর জন্য কুশলতাই সব নয়। এর সঙ্গে চাই সংবেদনশীলতা। রাহুল শর্মার বাজনায় সেই সংবেদনশীল অনুভব সঞ্চারিত হয়েছে। আলাপে নিমগ্ন হয়ে শ্রোতাদের অভিভূত করেছেন, জোড় ও ঝালায় সমান পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে তবলা সংগত করেছেন মুকুন্দরাজ দেও।
কৌশিকী চক্রবর্তী এবার শুরম্ন করলেন মালকোষ দিয়ে। কৌশিকী বড়ে গুলাম আলী খাঁ-গীত একটি মালকোষকে আশ্রয় করেই পরিবেশন করেছেন এটি। এর মধ্যে মেঘ, ভুপালি ও ভীমপলশ্রীর আভাস ছিল। বড়ে গুলাম আলী খাঁর বন্দিশ ‘আবে পি মেরা মন্দিরাওয়া’টিই গেয়েছেন কৌশিকী। এরপর তিনি শিপ্রা বসুর গাওয়া ‘মোসে ভারায়ে গাগরিয়া’ দাদরাটি গাইলেন। শ্রাবণী সেনের সঙ্গে সম্প্রতি রেকর্ড করা অ্যালবামের কয়েকটি রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে শোনালেন মূল রাগসহ। মীরার একটি ভজন – ‘ম্যায় তো দাসী জনম জনম তোমারি’ গেয়েছেন বেশ জমিয়ে। কৌশিকী
পরিবেশন-কলা আয়ত্ত করেছেন ভালোই। এই ব্যাপারে গুরম্নত্ব দিতে গিয়ে গায়ন-কৌশল হয়তো মাঝে-মধ্যে শিথিল হয়ে পড়ে। 888sport live chatীর সঙ্গে সংগত করেছেন তবলায় সত্যজিৎ তালওয়ালকার এবং হারমোনিয়ামে অজয় যোগেলকার।
প–ত কুশল দাশ সেতার বাজিয়েছেন বেশ অভিনিবেশসহকারে, তন্ময় হয়ে। তাঁর পরিবেশনায় কোনো চটকদারি ছিল না। হেমমত্মকালে তিনি বাজালেন আলাউদ্দীন খাঁ-সৃষ্ট রাগ হেমন্ত্। আলাপ করলেন বেশ সময় নিয়ে। কৌশিকীর অনুষ্ঠানের পর অনুষ্ঠানস্থল খালি হতে শুরম্ন করেছিল। কিন্তু সেদিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ ছিল না মাইহার ঘরানার এই 888sport live chatীর। নিষ্ঠার সঙ্গে সেতারে মনোনিবেশ করে বাজিয়ে গেছেন। গৎ ও ঝালায় তাঁর শৈল্পিক পারদর্শিতা ছিল মনোমুগ্ধকর। পরে তিনি একটি পাহাড়ি ধুন বাজিয়ে শ্রোতাদের তৃপ্ত করেন। তাঁর সঙ্গে তবলায় সংগত করেছেন সত্যজিৎ তালওয়ালকার। কুশল দাশের পিতা শৈলেন দাশ এস্রাজ বাজাতেন, তালিম নিয়েছিলেন প–ত রবিশঙ্করের কাছ থেকে। প–ত কুশল দাশ মধুবমত্মী ও ভীমপলশ্রীর সমন্বয়ে মধু-পলাশী নামে একটি রাগও সৃষ্টি করেছেন।
প্রথম রজনীর শেষ 888sport live chatী ছিলেন বিদুষী বোম্বে জয়শ্রী। এই 888sport live chatী জন্মেছিলেন কলকাতায়, কিন্তু বেড়ে উঠেছেন মুম্বাইয়ে। পরিবারে সংগীতের ঐতিহ্য ছিল। মাতা সীতা সুব্রহ্মানিয়ম ও পিতা এন.এন. সুব্রহ্মানিয়মের কাছ থেকেই পেয়েছেন কর্ণাটকি সংগীতের প্রাথমিক দীক্ষা। এরপর টি.আর. বালামানির মতো গুরম্নর কাছ থেকে একটানা দশ বছর ধরে শিখেছেন দক্ষেণী সংগীতের নানা বৈচিত্র্যময় বিষয়। প্রায় ছয় বছর ধরে হিন্দুসত্মানি সংগীতের চর্চা করেছেন প–ত মহাবীর জয়পুরওয়ালে ও প–ত অজয় পোহাঙ্কারের সান্নিধ্যে থেকে। এরপর বিখ্যাত সেতার গুরম্ন লালগুদি জয়ারাম রামনাথের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। প–ত জি.এন. ধনদানপানির কাছে বীণা-বাদনও শিখেছেন এই নিষ্ঠাবতী সংগীত888sport live chatী।
জয়শ্রী প্রথমে পরিবেশন করেন হংসধ্বনি রাগ। এটি মূলত দক্ষেণী রাগ। অষ্টাদশ শতকের কর্ণাটকি সংগীত গুরম্ন রামাস্বামী দীক্ষেতার এই রাগটি সৃষ্টি করেন। হিন্দুসত্মানি সংগীতে এই রাগের প্রচলন করেন উসত্মাদ আমজাদ খান। পঞ্চস্বরের এই রাগে মধ্যম ও ধৈবতের প্রয়োগ নেই। বোম্বে জয়শ্রীর পরিবেশনা শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে, সন্দেহ নেই। তখন অনেক শ্রোতাই অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে গেছেন। যাঁরা ছিলেন, তাঁরা জয়শ্রীর সংগীত উপভোগের জন্যই রয়ে গিয়েছিলেন। জয়শ্রী এই সমঝদারদের নিরাশ করেননি। উলিস্নখিত রাগে পরিবেশন করলেন গণপতি-বন্দনা। রাগম ও তানমের প্রয়োগ ও পরিবেশনা ছিল অপূর্ব। এরপর গাইলেন মায়ামালবগোলা রাগে ‘পরমপুরম্নষ শ্রীরামা’। একটি পলস্নবী পরিবেশিত হলো। শেষ করলেন ‘গোপাল গোবিন্দে রাধে কৃষ্ণমুরারি’ – মীরার এই ভজন দিয়ে। বোম্বে জয়শ্রীর সঙ্গে বেহালায় শ্রীকামত্ম ভেঙ্কটরমণ, মৃদঙ্গমে দিল্হি সায়রাম এবং ঘটমে কৃষ্ণা এসের সংগত ছিল অসাধারণ। বাদকত্রয়ীর সঙ্গে জয়শ্রীর সওয়াল-জওয়াব বেশ জমে উঠেছিল।
উৎসবের দ্বিতীয় সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের শুরম্নতে ‘বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ে’র শিক্ষার্থী-888sport live chatী অভিজিৎ কু-ু পরিবেশন করলেন ভুপালি রাগে একটি ধ্রম্নপদ। বিখ্যাত ধ্রম্নপদিয়া উসত্মাদ উদয় ভাওয়ালকারের তত্ত্বাবধানে তিনি এখন ধ্রম্নপদের তালিম নিচ্ছেন। উদয় ভাওয়ালকারের শিক্ষার ছাপ খুব স্পষ্টভাবেই বোঝা গেল অভিজিতের ধ্রম্নপদে। আলাপে 888sport live chatী ছিলেন স্বচ্ছন্দ। বিসত্মারেও তাঁর পারঙ্গমতা বোঝা গেল। ধ্রম্নপদটির বাণী পরিবেশনেও তিনি বেশ সাবলীল ছিলেন। ‘সাধরে সুরন কো, সুরভি বিখরতে সবহু পায়ি’ – এই বন্দিশটি বেশ দরদের সঙ্গেই পরিবেশন করেছেন নবীন এই ধ্রম্নপদ-888sport live chatী। স্বর-বিহারে 888sport live chatীর সাবলীল চলন শ্রোতাদের তৃপ্ত করেছে।
প্রথমবারের মতো 888sport appsে সরস্বতী বীণা বাজিয়ে শোনালেন তামিলনাড়ুর বিখ্যাত বীণাবাদিকা বিদুষী জয়মত্মী কুমারেশ। জয়মত্মীর পরিবারে ছয়পুরম্নষ ধরে সংগীতের চর্চা চলছে। প্রথমে মাতা লালগুদি রাজলক্ষ্মীর কাছে তাঁর তালিমের সূত্রপাত। পরে তাঁর মাসি পদ্মাবতী অনমত্মগোপালনের কাছ থেকে নিবিড় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বীণাগুরম্ন সুন্দরম বালাচন্দরের কাছেও বীণা-বাদন শিক্ষার সুযোগ তাঁর ঘটে। ‘বিভিন্ন বাণী এবং সরস্বতী বীণার বাদন-কৌশল’ সম্পর্কিত অভিসন্দর্ভের জন্য মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পি-এইচ.ডি. উপাধি লাভ করেন।
সরস্বতী বীণাটি মূলত দক্ষেণী বাদনযন্ত্র। তামিলনাড়ুর তানজুবরের সপ্তদশ শতকের শাসক রঘুনাথ নায়কের আমলে চবিবশ তন্ত্রীবিশিষ্ট এই বীণা উদ্ভাবিত হয়।
জয়মত্মী কুমারেশ প্রথমে বাজালেন কামবর্ধিনী রাগ। দক্ষেণী এই রাগের সঙ্গে মিল আছে হিন্দুসত্মানি পূরবী ঠাট। সন্ধ্যার সময় পরিবেশনীয় কামবর্ধিনী একটি সম্পূর্ণ রাগ। আলাপের সময় জয়মত্মী এক গভীর আবহের সৃষ্টি করেন। স্বরের গাম্ভীর্য সরস্বতী বীণার বৈশিষ্ট্য। রাগের আবহ সৃষ্টিতে বীণার এই সুযোগটুকু পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করেছেন 888sport live chatী। 888sport live chatীর সঙ্গে মৃদঙ্গম বাজিয়েছেন আর. শংকর নারায়ণান। ঘটম 888sport live chatী ছিলেন এস. কৃষ্ণাস্বামী। এঁদের কাউকেই সহযোগী 888sport live chatী মনে হয়নি। সকলেই যেন স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সার্বভৌম। পরের পরিবেশনা ছিল খাবির রাগ। হিন্দুসত্মানি পিলু রাগের সম চরিত্রের এই রাগটিও 888sport live chatী বাজিয়েছেন নৈপুণ্যের সঙ্গে। পিলুর সঙ্গে অবশ্য এর পার্থক্য আছে মেজাজে। সেটি বুঝিয়ে দিলেন জয়মত্মী তাঁর বাজনায়। এরপর তিনি শোনালেন একটি পলস্নবী। আলাপ তানে (তানম) 888sport live chatী ছিলেন তুঙ্গ মেজাজে। তাল-লয়ের গতি মনোমুগ্ধকর হয়ে উঠেছে বীণা, মৃদঙ্গম ও ঘটমের অসাধারণ সমন্বিত বাদনে। শেষ করলেন বেহাগ দিয়ে। তবে দক্ষেণী বেহাগ যে হিন্দুসত্মানি বেহাগ থেকে একটু ভিন্ন মেজাজের, সেই কথা গোড়াতেই বলে নিলেন। তাঁর ভাষায়, এ যেন ভিন্ন-ভিন্ন ধরনের কফি পানের মতো। বেহাগে তিনি বিভিন্ন লয়ের সমন্বয় ঘটিয়েছেন। জয়মত্মী অত্যমত্ম সম্পন্ন 888sport live chatী – তাঁর বাজনায় সেটি বারবারই প্রতিভাত হয়েছে।
এর পরেও বেহাগ। এবার শোনালেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের সুস্মিতা দেবনাথ শুচি। আলাপ-বিসত্মারে শুচি ছিলেন সাবলীল। ‘রাত রঙ্গিলি বিতা যায়’ বন্দিশটি গেয়েছেন চমৎকার। শুচির পরিবেশনার পর বিদুষী সঞ্জীবনী কশলকার 888sport live chatীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন। তিনি বেঙ্গলের সংগীত উৎসব আয়োজনের প্রশংসা করলেন। তবে, তাঁর মতে, এর চেয়েও সৃজনশীল কাজ হচ্ছে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ে। তিনি মনে করেন, যেভাবে বেঙ্গলের শিক্ষার্থীরা মনোযোগের সঙ্গে সাধনা করছে, কয়েক বছরের মধ্যেই তার সুফল দেখা যাবে। বছর পাঁচেকের মধ্যেই 888sport appsি 888sport live chatীরা এই উৎসবে তাঁদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করবেন।
প–ত উদয় ভাওয়ালকার ধ্রম্নপদের প্রতিষ্ঠিত 888sport live chatী। ইমন রাগ শোনালেন তিনি। আলাপ করলেন বেশ সময় নিয়ে। ‘প্রেম সে দেখনেওয়ালে লোক’ – এই বন্দিশটি গাইলেন তাঁর মধুর পেলব কণ্ঠে। স্বর-বিহারে তিনি ছন্দময়। উদয় ভাওয়ালকারের বড় সম্পদ তাঁর মসৃণ-নিখাদ কণ্ঠ। মন্দ্রসপ্তকেও তাঁর কণ্ঠ বেশ শ্রম্নতিসুখকর। এরকম 888sport live chatীর পরিবেশনা দীর্ঘ সময় ধরে শুনলেও শ্রোতাদের ক্লামিত্ম আসে না। পরে শিবের বন্দনা করলেন ‘মহাবলী শিব’ বন্দিশটি গেয়ে। উসত্মাদ ফরিদ উদ্দীন ডাগর ও উসত্মাদ মহিউদ্দীন ডাগরের কাছ থেকে যথাযথ তালিমই পেয়েছেন উদয় ভাওয়ালকার। তাঁর পরিবেশনাতেই তা প্রমাণিত।
প–ত সুরেশ তালওয়ালকারের একক তবলা-বাদন ছিল বেশ আকর্ষণীয়। প্রথমে দশমাত্রার ঝাপতালে বাজালেন। এরপর উসত্মাদ আলস্না রাখার একটি বোল বাজালেন। এটি ত্রিশ মাত্রার, তবে অনিয়মিত তালে। সাড়ে সাত মাত্রা করে তিনবার। এরপর সাড়ে চার, দেড় – এই করে ত্রিশ মাত্রার চক্র শেষ করলেন। তবলিয়া হিসেবে সুরেশ তালওয়ালকারের সামর্থ্য বোঝা গেল। তবলায় তানের মূর্ছনাও সৃষ্টি করলেন। তিনতালে রাগ সোহনির আবহ সৃষ্টি করলেন। ‘যা যারে যা বালমওয়া, ঝুটি বচন হামে ইয়ুহি না শুনাও’ বন্দিশটি বাঙ্ময় হয়ে উঠল সুরেশের তবলায়। বিভিন্ন চক্রদার ও তেহাইয়ের পরিবেশনা শ্রোতারা উপভোগ করেছেন। সুরেশ তালওয়ালকারের বাদন-শৈলী কোনো ঘরানায় আবদ্ধ নয়। বিভিন্ন ঘরানার বৈশিষ্ট্য তিনি অনায়াসে সমন্বয় করেন তাঁর তবলা-বাদনে। অনুষ্ঠানে 888sport live chatীর সঙ্গে তাঁর কন্যা সায়নী তালওয়ালকারও বাজিয়েছেন। পাখোয়াজ ও হারমোনিয়ামে সহযোগী ছিলেন যথাক্রমে ওঙ্কার দেলভি ও অজয় যোগেলকার। কণ্ঠসংগীতে বিনয় রামদাসনের পরিবেশনাও ছিল অনবদ্য। খুবই সুরেলা ও দরাজ তাঁর কণ্ঠ।
এই রাতের তারকা888sport live chatী ছিলেন কর্ণাটকি সংগীতের কিংবদমিত্মতুল্য 888sport live chatী প–ত বালামুরালিকৃষ্ণা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বংশীবাদক প–ত রণু মজুমদার। বালামুরালিকৃষ্ণার জন্ম ১৯৩০ সালে ভারতের অন্ধ্র রাজ্যের গোদাবরী জেলার সংকরাগুপ্তমে। তাঁর পিতা বেশ বিখ্যাত সংগীত888sport live chatী ছিলেন; বাঁশি, বেহালা ও বীণা-বাদনে ছিলেন পারদর্শী। তাঁর মাতাও ছিলেন একজন গুণী বীণা888sport live chatী। বালামুরালিকৃষ্ণা কর্ণাটকি সংগীতে তালিম শুরম্ন করেন প–ত পারম্নপালিস্ন রামকৃষ্ণাইয়া পানতুলুর কাছে। আট বছর বয়সে মঞ্চে প্রথমবারের মতো সংগীত পরিবেশন করেই শ্রোতাদের চমকে দেন। মুরালিকৃষ্ণার পরিবেশনায় মুগ্ধ হয়ে সেই সময়ের বিখ্যাত হরিকথা 888sport live chatী তাঁকে ‘বালা’ (বালক 888sport live chatী) উপাধিতে ভূষিত করেন। তখন থেকেই তাঁর নামের
আগে বালা বিশেষণটি যোগ হয়ে যায়। কর্ণাটকি সংগীতে বালামুরালিকৃষ্ণাকে বিস্ময়কর প্রতিভারূপে স্বীকার করা হয়। মাত্র পনেরো বছর বয়সে তিনি দক্ষেণী সংগীতের বাহাত্তরটি মেলকর্তার সবগুলো রাগ আয়ত্ত করেন। কয়েকটি কৃতিও রচনা করেন তিনি, এই রাগগুলোর ভিত্তিতে। মূলত কণ্ঠসংগীতের চর্চা করলেও বালামুরালি কাঞ্জিরা, মৃদঙ্গম ও বেহালা বাদনে পারদর্শী। একক বেহালা-বাদনের অনুষ্ঠানও করেছেন অনেকগুলো।
রণু মজুমদারের সংগীতশিক্ষা শুরম্ন হয় তাঁর পিতা ড. ভানু মজুমদারের কাছে। পরে প–ত লক্ষ্মণ প্রসাদের কাছে কণ্ঠসংগীতের তালিম নেন। লক্ষ্মণ প্রসাদই রণু মজুমদারকে বাঁশি শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করেন। বাঁশি শিক্ষা করেন তিনি প–ত বিজয় রাঘব রাওয়ের কাছ থেকে।
এই অনুষ্ঠানে বালামুরালিকৃষ্ণা ও রণু মজুমদার কর্ণাটকি এবং হিন্দুসত্মানি সংগীতের যুগলবন্দি পরিবেশন করেছেন। বালামুরালি এর আগেও ভীমসেন যোশী, কিশোরী আমোনকার ও হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার সঙ্গে মিলে কর্ণাটকি ও হিন্দুসত্মানি সংগীতের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ভারত সরকার তাঁকে পদ্মবিভূষণ উপাধিতে ভূষিত করেছেন। ফরাসি সরকার দিয়েছেন ঈযবাধষরবৎ ড়ভঃযব ঙৎফৎব ফবং অৎঃং বঃ ফবং খবঃৎবং সম্মান।
পঁচাশি বছরের বালামুরালি মঞ্চে ওঠার পর মনে হলো, তাঁর কণ্ঠে কিছুটা সমস্যা আছে। অনেকবার কাশলেন। বেশ সময় নিলেন শুরম্ন করতে। কিন্তু শুরম্ন করার পরই ঝরনাপ্রবাহের মতোই এগিয়ে চলল তাঁর কণ্ঠ। কী সুরেলা, নিখাদ কণ্ঠ – এই বয়সেও! বয়স তাঁর কণ্ঠসম্পদে একটু চিড় ধরাতে পারেনি। শুরম্ন করলেন বাগেশ্রী রাগের আলাপ দিয়ে। আলাপে রাগের আবহ অসাধারণ শৈল্পিক কুশলতায় মেলে ধরলেন। তিনি রাগের বিশুদ্ধতার দিকেই সবসময় মনোযোগী থাকেন। মুরকি, মীড় ও পুকারেও তাঁর সাবলীলতা মুগ্ধ হওয়ার মতো। ঝাপতালে গাওয়া বন্দিশটিও ছিল বেশ উপভোগ্য। এরপর আভোগী কানাড়া রাগে নিজের ‘গান সুধরে বাণে নির্গম’ রচনাটি উপস্থাপন করলেন। এরপর দক্ষেণী সংগীতের নাটা রাগে পরিবেশন করলেন ত্যাগরাজা রচিত ‘গায়ে একজনা ভুক্তি মুক্তি’। রণু মজুমদার তাঁর সঙ্গে সুর মেলালেন বাঁশিতে। রণু মজুমদারও রাগের শুদ্ধতার প্রতি নিষ্ঠাবান। এজন্যই বালামুরালি ইদানীং সহ888sport live chatী হিসেবে বেছে নিয়েছেন তাঁকে। বালামুরালি ও রণু মজুমদারের যুগলবন্দি শেষ হলো আরেকটি দক্ষেণী রাগ কদনাকুতুলাম দিয়ে। প–ত বালামুরালিকৃষ্ণার সংগীত শোনা একটি বিরল অভিজ্ঞতা বটে। এই বর্ষীয়ান গুণী 888sport live chatীকে দেখার ও শোনার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের আয়োজকদের অকুণ্ঠ চিত্তে ধন্যবাদ জানাতে হয়।
পরের 888sport live chatী শুভায়ু সেন মজুমদার এস্রাজে বাজালেন মালকোষ। শুভায়ু সেন মজুমদার রবীন্দ্রসংগীতের বিশিষ্ট গুরম্ন শৈলজারঞ্জন মজুমদারের ভ্রাতুষ্পুত্র। এস্রাজে তালিম নিয়েছেন প–ত বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের কাছে। মালকোষ রাগের মিষ্টত্ব শুভায়ু সেনের এস্রাজে পরিস্ফুট হলো ভালোভাবেই। আলাপ-জোড়-ঝালা – প্রতিটি পর্বেই 888sport live chatী বেশ সাবলীল ছিলেন। তাঁর বাদনে অভিনিবেশ ছিল। পরে তিনি বাজালেন খামাজ রাগ। এই রাগের পরিবেশনাও ছিল অনবদ্য। বাদনে কুশলতার সঙ্গে মিশে গিয়েছিল সংবেদনশীলতা। তাঁর পরিবেশনা মনে রাখার মতো। 888sport live chatীর সঙ্গে তবলা সংগত করেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
দ্বিতীয় রাতের শেষ 888sport live chatী ছিলেন প–ত অজয় চক্রবর্তী। বৈরাগী রাগে স্বরচিত বন্দিশ ‘মেরে মন মে বস আলস্না তেরে নাম, পূর্ণ হো সব কাম’ দিয়ে শুরম্ন করলেন। পরের বন্দিশটি ‘নাতা বানাও, রিসত্মা বানাও’ পরিবেশন করলেন বিলম্বিত ঝাপতালে। উসত্মাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁর বহু পুরনো বন্দিশ ‘সুর সুর সে সাধলে রসিক’ শুনিয়ে শ্রোতাদের 888sport sign up bonusকে উসকে দিলেন। অজয় চক্রবর্তী সম্পন্ন 888sport live chatী। তাঁর আলাপ, গমক, মুরকি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে, অন্য সময়ের চেয়ে এই রাতে তাঁকে একটু ক্লামত্ম মনে হয়েছে। বোধহয় মেজাজে ছিলেন না। তখন রাত এগিয়ে চলেছে ভোরের দিকে। 888sport live chatী গাইলেন মিশ্র যোগিয়ায় এই গানটি :
যামিনী হলো যে ভোর, বাঁশি বাজে যোগিয়ায়
তবু মোর পরান মম ছাড়িতে যে নাহি চায়।
পা-ুর শুকতারা এখনও হয়নি হারা
বাঁধন শিথিল হলো বাসরের মালিকায়।
এটির গীতিকার ও সুরকার অজয় চক্রবর্তীর গুরম্ন প–ত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ। এই গান দিয়েই অনুষ্ঠান শেষ হলো। যোগিয়ার অনুরণন মনে নিয়েই শ্রোতারা বাড়ি ফিরলেন।
তৃতীয় রাতের অনুষ্ঠানের শুরম্নতে ওয়ার্দা রিহাবের নৃত্যদল পরিবেশন করল মণিপুরি নৃত্য। নৃত্যের শিরোনাম ‘লেইচান’। এর অর্থ পুষ্পসম্ভার। মণিপুরের জীবন ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের সম্ভার নিয়েই এই নৃত্যায়োজন। মণিপুরিদের জীবন-ভাবনায় কৃষ্ণই ঘিরে আছে সবকিছু। কৃষ্ণের অধিষ্ঠান সবখানেই। তাঁদের সকল অনুষ্ঠানে কৃষ্ণবন্দনা অপরিহার্য, অনেকটা গৌরচন্দ্রিকার মতো। কৃষ্ণলীলার বিভিন্ন পর্ব নিয়ে পরিকল্পিত হয়েছে এই নৃত্যায়োজন। প্রথমে ছিল ‘কাথোকছাবা’ বা কৃষ্ণ-আবাহন। এরপর ব্রজধামে লোকচক্ষুর আড়ালে গোপিকাদের সঙ্গে কৃষ্ণের প্রণয় পরিবেশিত হয়েছে নৃত্যে। নেপথ্যে ছিল লোকগীতির সুর। রাধা-কৃষ্ণের অভিসার উৎকণ্ঠার বিষয়ও উপস্থাপিত হয়েছে। সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর ছিল বসমত্ম-আবাহনভিত্তিক নৃত্যটি। গোবিন্দজির মন্দিরে ‘নববৃন্দাবনে নবীন লতা, নবীন বসমেত্ম নবীন মলয়নীরে কুসুমিত নিকুঞ্জ’ এরকম রূপময় বসমত্ম বর্ণনার সঙ্গে উলস্নাসী নৃত্য-সহযোগে বরণ করা হয় বসমত্ম ঋতুকে। ঢোলকবাদ্যের সঙ্গে পরিবেশিত হয়েছে গোষ্ঠলীলা। গোঠের রাখাল কীভাবে বনরাজ হয়ে উঠল তাও উপস্থাপন করেছেন নৃত্য888sport live chatীরা। রথযাত্রার দৃশ্যও বাদ যায়নি। গোকুল ছেড়ে কৃষ্ণের
মথুরা গমনের কাহিনিও বর্ণিত হয়েছে নৃত্যের ছন্দে, ঢোলকের তালে। ওয়ার্দা রিহাব গোষ্ঠীর এই আয়োজন ছিল সাবলীল ও সার্থক। নৃত্য888sport live chatীরা যথাযথ কুশলতা দেখিয়েছেন। 888sport appsের নৃত্যের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশা জাগিয়ে তুলেছেন এই দলের 888sport live chatীরা। এই নৃত্যায়োজনের পরিকল্পনা করেছেন বিম্বাবতী দেবী।
এই রাতের দ্বিতীয় 888sport live chatী ছিলেন উসত্মাদ ফুলঝুরি খানের পুত্র মুহাম্মদ ইউসুফ খান। 888sport live chatী সরোদে বাজালেন কিরওয়ানি রাগ। বেশ নিষ্ঠার সঙ্গে বাজিয়েছেন ইউসুফ খান। রাগের প্রতি সুবিচার করেছেন। আলাপ, জোড়, ঝালা – সব পর্বেই তাঁর কুশলতা ছিল প্রশ্নাতীত। কোথাও চটকদারি প্রদর্শন করেননি। অত্যমত্ম সুসংগত ছিল তাঁর পরিবেশনা। 888sport live chatীর পরিমিতিবোধও ছিল প্রশংসনীয়। ইউসুফ খানের সঙ্গে তবলা সংগতে ইফতেখার আলম প্রধানও ছিলেন সমান পারদর্শী। 888sport live chatীর সঙ্গে তানপুরায় ছিলেন তানিয়া খান।
এরপর মঞ্চে এলেন ডাগর ঘরানার ধ্রম্নপদিয়া উসত্মাদ ওয়াসিফ উদ্দীন ডাগর। উসত্মাদ নাসির ফাইয়াজ উদ্দীন ডাগরের পুত্র ওয়াসিফ উদ্দীন ধ্রম্নপদের তালিম নিয়েছেন তাঁর পিতা এবং চাচা উসত্মাদ জহিরউদ্দীন ডাগরের কাছ থেকে। পিতার সঙ্গেই পরিবেশন করতেন ওয়াসিফ উদ্দীন। পিতার মৃত্যুর পর, এখন একাই মঞ্চে ওঠেন। এই রাতে 888sport live chatী প্রথমে পরিবেশন করলেন রাগ বিহাগ। ধ্রম্নপদের আঙ্গিকগত শুদ্ধতার প্রতিই তাঁর মনোযোগ ছিল বেশি। ডাগর ঘরানার বৈশিষ্ট্যও তাই। আলাপে ওয়াসিফ ছিলেন স্বচ্ছন্দ। গমকে অনবদ্য। তবে ধ্রম্নপদে গমকের গাম্ভীর্যের সঙ্গে কোমলতার আনুপাতিক সমন্বয় খুবই জরম্নরি। সেই কথা 888sport app download for android করিয়ে দিলেন শ্রোতাদের। তাঁর পরিবেশনায়ও এই সমন্বয় প্রদর্শিত হয়েছে। পরের রাগটি ছিল সোহনি। এই মধুর রাগটি পরিবেশনায় 888sport live chatী বেশ কুশলতার পরিচয় দিলেন। 888sport live chatীর সঙ্গে তবলা-সংগত করেছেন প–ত মোহন শ্যাম শর্মা।
এন. রাজমের মতো প্রসিদ্ধ বেহালা 888sport live chatী এবারই প্রথম এলেন 888sport appsে। এন. রাজমের জন্ম কেরালায়, ১৯৩৮ সালে। পিতা নারায়ণ আইয়ার ছিলেন কর্ণাটকি সংগীতের একজন স্বনামধন্য 888sport live chatী। তাঁর ভাই টি.এন. কৃষ্ণণ এই সময়ের একজন সেরা বেহালাবাদক। পিতার কাছে কর্ণাটকি সংগীতের তালিম নিয়েছেন অল্প বয়সেই। প–ত মুসুরি সুব্রমানিয়া আইয়ারের কাছেও সংগীত শিখেছেন বহুদিন ধরে। প–ত ওঙ্কারনাথ ঠাকুরের কাছ থেকে রপ্ত করেছেন রাগ বিসত্মারের কৌশল। কর্ণাটকি সংগীত শিক্ষা করলেও শেষ পর্যমত্ম তিনি বেহালা বাজাতে মনস্থ করলেন হিন্দুসত্মানি সংগীতে। পিতা তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন গায়কি অঙ্গে বাজাতে। তিনিও উপলব্ধি করলেন গায়কি অঙ্গ-বাদনে গভীরতা আনতে সাহায্য করে। পনেরো বছর ধরে সাধনা করে এই অঙ্গ তিনি এতটাই রপ্ত করেছেন যে, তাঁকে এখন বলা হয় ‘সিংগিং ভায়োলিন’। এম.এস. শুভলক্ষ্মীকেই তিনি প্রেরণাদাত্রী হিসেবে মান্য করেন। এন. রাজমের সঙ্গে তাঁর কন্যা সংগীতা শংকর এবং দুই দৌহিত্রী রাগিণী শংকর ও নন্দিতা শংকরও এসেছিলেন উৎসবে বেহালা বাজাতে।
888sport live chatী চতুষ্টয় তাঁদের অনুষ্ঠান শুরম্নর আগে মানুষকে সংগীত-শিক্ষিত করার ওপর গুরম্নত্ব আরোপ করেন। এন. রাজম প্রথমে শুরম্ন করলেন খামাজ রাগে বেনারসি ঘরানার একটি ঠুমরি। গায়কি অঙ্গের বাদনশৈলীর কারণে ঠুমরির কথাগুলো যেন বেজে উঠছিল বেহালার তারে। রাজমের সঙ্গে সংগীতা শংকরও যোগ দিয়েছেন। রাগিণী ও নন্দিনীও বাদ যাননি। প্রধান বাদিকা এন. রাজম হলেও বাকি তিনজনও অনেক সময় পেয়েছেন বাজানোর জন্য। ঠুমরির পর বাজালেন রাগ মালকোষ। অনবদ্য ছিল এই রাগের পরিবেশনা। পরিবেশনা শেষ করলেন কাজী নজরম্নল ইসলামের ‘ব্রজগোপী খেলে হোরি, হোরি রে’ গানটির সুর বাজিয়ে।
এন. রাজম ও তাঁর পরিবারের বাকি তিন সদস্যের সকলেই কুশলী 888sport live chatী – একথা না মেনে উপায় নেই। এঁদের অনুষ্ঠান শোনা এক বিরল অভিজ্ঞতাই বটে।
এরপর খেয়াল পরিবেশন করলেন জয়পুর আতরাউলি ঘরানার বিদুষী শ্রম্নতি সাদোলিকর। শ্রম্নতি প্রথমে তাঁর পিতা ওয়ামানরাও সাদোলিকারের কাছে সংগীত শিক্ষা লাভ করেন। পরে জয়পুর আতুরউলি ঘরানার প্রতিষ্ঠাতা উসত্মাদ আলস্নাদিয়া খান ও তাঁর পুত্র ভুরজি খানের কাছ থেকে তালিমপ্রাপ্ত হন। প–ত গুলুবাই জসদানওয়ালার কাছেও দীর্ঘদিন সংগীত শিখেছেন। তাঁর কাছ থেকে আয়ত্ত করেছেন অনেক প্রাচীন রাগ।
অনুষ্ঠানে শ্রম্নতি সাদোলিকর প্রথমে নন্দ রাগে গাইলেন, ‘এরি বারি সাইয়া, সকল বন বন’ বন্দিশটি। পরে কৌশিকী-কানাড়া রাগটি শোনালেন। উভয় রাগই পরিবেশন করলেন বেশ যত্ন ও কুশলতার সঙ্গে। আসর জমালেন বেগম আখতারের গাওয়া ‘আবকে শাওনমে ঘর আ যা বিদেশিয়া’ ঠুমরিটি গেয়ে। তিলক কমোদ রাগের এই ঠুমরিটি যে-কোনো যোগ্য 888sport live chatীর কণ্ঠেই সুখশ্রাব্য মনে হয়।
কর্ণাটকি মৃদঙ্গম888sport live chatী গুরম্ন করাইকুদি মানি এর আগেও বেঙ্গলের সংগীত উৎসবে এসেছিলেন। সেবারই তিনি শ্রোতাদের মন জয় করে গেছেন, তাঁর মৃদঙ্গম বাদনের অসাধারণত্ব প্রদর্শন করে। গুরম্ন করাইকুদি মানির সঙ্গে কাঞ্জিরা, ঘটম ও থালম বাজিয়েছেন
যথাক্রমে অমৃত এন. সুরেশ বৈদ্যনাথন ও নারায়ণান। এঁরা সকলেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে অসাধারণ পারদর্শিতা প্রদর্শন করে থাকেন।
মৃদঙ্গম, কাঞ্জিরা, ঘটম ও থালমে 888sport live chatীগণ তাল-বৈচিত্র্য প্রদর্শন করে শ্রোতা-দর্শকদের চমৎকৃত করেছেন। 888sport live chatীরা কখনো সমবেতভাবে কুশলতা দেখিয়েছেন। আবার কখনো এককভাবে স্বীয় বাদ্য বাজিয়ে নিজের পারঙ্গমতার প্রমাণ দিয়েছেন। সওয়াল-জওয়াবের দ্বৈরথ শুনিয়ে-দেখিয়ে শ্রোতাদের উৎফুলস্ন করেছেন। দক্ষিণী বাদ্যের সঙ্গে পরিচিত না হলেও শ্রোতাদের কাছে গুরম্ন করাইকুদি মানির দলগত পরিবেশনা খুবই উপভোগ্য মনে হয়েছে।
তৃতীয় রাতের শেষ 888sport live chatী ছিলেন শুভা মুডগাল। শাস্ত্রীয় সংগীতে প্রশিক্ষণ নিলেও তিনি সব ধরনের গান করতেই অভ্যসত্ম।
খেয়াল-ঠুমরি তো আছেই, লোকগীতি ও পপগানও তিনি গেয়ে থাকেন। এই ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, ‘শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নিয়েছি বলে আমার সংগীত তৃষ্ণাকে আমি দমন করবো কেন?’ শৈশবে কত্থক নাচের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পরে প–ত রামশ্রেয় ঝার কাছে হিন্দুসত্মানি শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন। প–ত বসমত্ম থাকারের কাছ থেকে কিছুদিন সংগীত শিক্ষা লাভ করেছেন।
শুভা মুডগাল তাঁর অনুষ্ঠান শুরম্ন করলেন ভাটিয়ার রাগে। এই রাগের বন্দিশ ‘সাইয়া বেদরদি দরদ নেহি জানে’ তাঁর প্রথম গুরম্ন রামশ্রেয় ঝার রচনা। বেশ দরদ দিয়েই গাইলেন 888sport live chatী। এরপর ‘সাজনা বিনে কৌন সুনে দুখদ কি বাতিয়া’ও পরিবেশন করলেন বেশ আবেগ দিয়ে। এরকম দরদমাখা বাণীর তাৎপর্য শ্রোতার সংবেদনকে যেন নাড়া দেয়, সেই চেষ্টাই ছিল 888sport live chatীর পরিবেশনায়। শুভা মুডগাল নিজেও সংবেদনশীল 888sport live chatী। সংগীত পরিবেশনায় শুদ্ধতার দিকে লক্ষ রাখেন, তবে শ্রোতার হৃদয়কে স্পর্শ করার আকুতিই তাঁর মধ্যে বেশি। আলাপে শুভা বেশ পারঙ্গম। গমকেও কুশলতা আছে তাঁর। এরপর রামকেলি রাগে পরিবেশন করলেন, ‘নেহারা লাগা মোর জিয়া’। এটিও ছিল বেশ দরদি পরিবেশনা। রামকেলির পর একটি রাগমালা পরিবেশন করেছেন কল্যাণ, জয়জয়মত্মী ও হামিরের সমন্বয়ে। বন্দিশটির চরণগুলোতে রাগগুলো পরিচয়জ্ঞাপক শব্দ ছিল। রাগ সম্পর্কে ধারণা না থাকলেও পরিচয়জ্ঞাপক বাণীর কারণে যে-কোনো শ্রোতাই রাগটি শনাক্ত করতে পারবেন। 888sport live chatীর সঙ্গে তবলা বাজিয়েছেন তাঁর স্বামী অনীশ প্রধান। হারমোনিয়ামে সংগত করেছেন সুরেশ নায়ক।
সময় ধীরে-ধীরে ভোরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। শুভা মুডগাল তখনই শুরম্ন করলেন ভৈরবী। ভোরকে আবাহনের প্রস্ত্ততি তখন সবার মনেই। সেই প্রস্ত্তটিকেই শুভা মুডগাল সংগীতময় করে তুললেন।
চতুর্থ রাতের অনুষ্ঠান শুরম্ন হলো 888sport live chatী কাইয়ুম চৌধুরীর প্রতি 888sport apk download apk latest version নিবেদনের মাধ্যমে। গত বছর এই ৩০ নভেম্বরেই বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীতের মঞ্চে বক্তৃতা করার সময় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর ওপর করা একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয় এই রাতের মূল অনুষ্ঠান শুরম্নর আগে।
মূল অনুষ্ঠান শুরম্ন হয় গুরম্ন রাজা রেড্ডি ও রাধা রেড্ডির পরিবেশনায় কুচিপুরি নৃত্যানুষ্ঠান দিয়ে। রাজা ও রাধা রেড্ডির দুই কন্যা ভাবনা ও যামিনী রেড্ডিও নৃত্য পরিবেশন করেন পিতা-মাতার সঙ্গে।
কুচিপুরি নৃত্যের উদ্ভব ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে। তবে দক্ষিণ ভারতের সর্বত্র এই নৃত্যানুষ্ঠান হয়ে থাকে। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে এই নৃত্যধারার উদ্ভব হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। কুচিপুরি মূলত নৃত্যনাট্য। কিন্তু বর্তমানে নাট্যাংশ অনেকক্ষেত্রেই পরিহার করা হয়। এই নাট্যরীতি অনেক প্রাচীন হলেও ত্রয়োদশ শতকে সিদ্ধেন্দ্র যোগী এই ধারাকে নবরূপ দান করেন। মন্দিরের পুরোহিতরা দেব-দেবীকে তুষ্ট করার জন্য এই নৃত্য পরিবেশন করতেন। 888sport promo codeদের এই কুচিপুরি পরিবেশনের কোনো অধিকার ছিল না। এখন অবশ্য এই নৃত্যে 888sport promo code 888sport live chatীদেরই প্রাধান্য।
কুচিপুরি নৃত্য পরিবেশনের আগে বেশ কিছু প্রথা অনুসরণ করতে হয়। তারপর সূত্রধর মঞ্চে এসে নৃত্যের বিষয় উপস্থাপন করেন। বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের মঞ্চে গুরম্ন রাজা রেড্ডি সেই সূত্রধরের ভূমিকা পালন করলেন। নৃত্যের শুরম্নতেই গণেশ-বন্দনা হলো কুচিপুরির রীতি অনুযায়ী। এরপর নটরাজের তা-বনৃত্য। নটরাজ পার্থব সত্তা নন। তাঁর নৃত্যে এই ধরণীতে প্রলয়কা- ঘটে। নৃত্যের মধ্য দিয়ে এই সংসারকে অস্বীকার করে মানুষের মনে পরম সত্তার অভীপ্সা জাগানো এবং মোক্ষলাভের জন্য উদ্বুদ্ধ করাই এই তা-বনৃত্যের উদ্দেশ্য। এর পর পরিবেশিত হলো কৃষ্ণতা-ব। বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণও পরমাত্মার প্রতি জীবাত্মার আকুতি সৃষ্টি করেন তাঁর নৃত্যে। এই দুটি নৃত্যই পরিবেশন করেছেন রাজা ও রাধা রেড্ডি। এরপর কালিঙ্গ নৃত্য। কালীয় নদীতে সাপের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত কৃষ্ণের নৃত্য। সাপের ফণার নিচে থেকে কৃষ্ণ সর্প বধ করলেন। নৃত্যটি পরিবেশন করেছেন ভাবনা রেড্ডি। এরপর
রাধা-কৃষ্ণের রসনৃত্য। রাধা-কৃষ্ণের বাল্যকালের ভূমিকায় ছিলেন ভাবনা ও যামিনী রেড্ডি; যৌবনকালের ভূমিকায় রাজা ও রাধা রেড্ডি। রাধা ছাড়াও প্রত্যেক গোপিকার সঙ্গে নেচেছেন
কৃষ্ণ। কুরুক্ষেত্রে কৃষ্ণের প্রতি অর্জুনের উপদেশ নিয়ে রচিত হয়েছে গীতোপদেশম। কৃষ্ণকে অর্জুন জাগতিক সকল দুঃখ ও শোক বিস্মৃত হয়ে মোক্ষম (মোক্ষ) লাভের উপদেশ দিচ্ছেন। মোক্ষই সকল দুঃখ-শোক থেকে মুক্তিলাভের উপায়। অর্জুন বলছেন কৃষ্ণকে, ‘আমি তোমাকে রক্ষা করতে পারি, যদি তুমি মোক্ষের সাধনা কর।’ নৃত্যায়োজনের শেষে ছিল ‘তরঙ্গম’। এই নৃত্যে নর্তক-নর্তকীগণ একটি থালার ওপর উঠে নৃত্য পরিবেশন করেন। থালায় উঠে নৃত্য করারও একটি তাৎপর্য আছে। জাগতিকতা থেকে ঊর্ধ্বে ওঠা। এই জগৎভূমি ছেড়ে ধর্মভূমিতে যাওয়ার ইঙ্গিত থাকে তরঙ্গমে। রেড্ডি পরিবারের সকলেই নৃত্যে অসাধারণ পারদর্শী। তা-বনৃত্যে যেমন তাঁরা ঝড় তোলেন মঞ্চে, তেমনি রসনৃত্যে প্রেমের পেলব অনুভূতিও সৃষ্টি করেন দর্শকদের মনে। অভিনয়-নিপুণ প্রতিজনই। ভরতনাট্যম ও কুচিপুরি – দুটিই ভারতের প্রাচীন নৃত্য ধারা। ভরতনাট্যম প্রধানত মুদ্রানির্ভর। কুচিপুরিতে কথার ভূমিকা প্রধান। সূত্রধর রাজা রেড্ডির কথকতায় সেই বচন-প্রাধান্য ছিল। তাঁর কথা ছিল আখ্যান বর্ণনার মতো। আখ্যানের আঙ্গিকে পরিবেশিত নৃত্য দর্শকদের বিমোহিত করে রেখেছিল। এই নৃত্য পরিবেশনার সঙ্গে কণ্ঠ সহযোগ করেছেন লাবণ্য, বাঁশি বাজিয়েছেন কিরণ কুমার এবং মৃদঙ্গমে ছিলেন ভাস্কর রাও।
সংগীতবেত্তা আলিমুর রহমান খান প্রতিবারেই কিছু কথা বলে থাকেন শ্রোতাদের উদ্দেশে। এবারো বললেন। তিনি জানালেন, বেঙ্গলের এই উৎসব তাঁকে 888sport appsের শাস্ত্রীয় সংগীতের
ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী করে তুলেছে। সংগীতকে আমাদের জীবন-সংস্কৃতির অঙ্গ করে তোলার ওপর জোর দিলেন তিনি। অষ্টম থেকে একাদশ শতকের মধ্যে অনেক মুসলমান মনীষী সংগীত নিয়ে গবেষণা করেছেন। আল কিন্দি, আল ফারাবি ও ইবনে সিনার সংগীতবিষয়ক রচনাগুলো অধ্যয়নের সুযোগ সৃষ্টির ওপর জোর দিলেন আলিমুর রহমান। মানুষের অনেক সমস্যাই সংগীত সমাধান করতে পারে – এই কথা বলে সংগীতের চর্চা ও সাধনাকে জীবনচর্যায় অঙ্গীভূত করার আহবান জানালেন তিনি।
আলিমুর রহমানের বক্তৃতার পর বেহালা নিয়ে মঞ্চে এলেন গণেশ ও কুমারেশ রাজাগোপালন। এই দুই ভাই কর্ণাটকি শাস্ত্রীয় সংগীতের একালের প্রতিষ্ঠিত 888sport live chatী। শাস্ত্রীয় সংগীতকে সমৃদ্ধ করাই তাঁদের লক্ষ্য। ইতোমধ্যেই তাঁরা কর্ণাটকি সংগীতে নতুন বিষয়, আঙ্গিক ও মেজাজ সৃষ্টির জন্য বিখ্যাত ও প্রশংসিত।
গোপালন ভ্রাতৃদ্বয় প্রথমে বাজালেন দুটি দক্ষিণী রাগ মালমাওয়াবাগোয়ালা ও শ্রীরঞ্জনী। মালমাওয়াবাগোয়ালা রাগটি খুব পরিচিত নয়। শ্রীরঞ্জনী রাগটি ছয়স্বরের। এতে পঞ্চম স্বর নেই। এই দুটি রাগ পরিবেশনায় 888sport live chatীদ্বয় বেশ পরিপক্বতা দেখালেন। পরে কুমারেশ বাজালেন বাগেশ্রী এবং গণেশ বাজিয়ে শোনালেন শিবরঞ্জনী। শিবরঞ্জনীটি বেশ মিষ্টি রাগ। গণেশ বাজালেনও রাগটির মিষ্টত্ব রক্ষা করে। 888sport live chatীদের সঙ্গে মৃদঙ্গম ও ঘটমে সহযোগ করেছেন যথাক্রমে আর. শংকরনারায়ণান ও এস. কুমারস্বামী। মৃদঙ্গম ও ঘটমের সঙ্গে বেহালার সওয়াল-জওয়াব পর্বটি ছিল উপভোগ্য।
শিবকুমার শর্মার জন্য শ্রোতারা উন্মুখ হয়ে ছিলেন। তিনি মঞ্চে এসে অবশ্য ভাবগম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি করলেন। এই উৎসব আয়োজনের জন্য বেঙ্গল ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে শুরম্ন করলেন সন্তুর বাদন। পরিবেশনের আগে বললেন, একটি রাগ পরিবেশনায় আলাপের ভূমিকাই মুখ্য। আলাপ সংগীত-অজ্ঞদেরও আকৃষ্ট করতে পারে। আলাপের মাধ্যমেই অনুভূতির নানা পর্যায়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন একজন শ্রোতা। সাংগীতিক ভাষাকে তিনি প্রেম, শামিত্ম ও সমন্বয়ের সর্বজনীন ভাষা বলেই মনে করেন।
শিবকুমার শর্মা সন্তুরে প্রথমে তুললেন রাগ যোগকোষ। যোগ ও চন্দ্রকোষ রাগের সমন্বয়ের এই রাগটি গঠিত। 888sport live chatী
আলাপ, জোড় ও ঝালা পর্বে বেশ তন্ময় হয়েই ছিলেন। সংগীতই যেন তাঁর আরাধ্য। প–ত যোগেশ সামসি তাঁর সঙ্গে সংগত করেছেন রূপক ও তিনতালে। শিবকুমার তাঁর পরিবেশনা শেষ করলেন ‘পির পরায়ি জানে নেহি বালামওয়া’ – এই বন্দিশটি বাজিয়ে।
উসত্মাদ জাকির হুসেনের তবলা-বাদন ছিল এই রজনীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় পরিবেশনা। উসত্মাদ আলস্না রাখা ও প–ত কিষণ মহারাজের প্রয়াণের পর এখন জাকির হুসেনই তবলাকুল শিরোমণি। তাঁর তবলা-বাদন শোনার জন্য এই রাতে সমবেত হয়েছিলেন ছাপ্পান্ন হাজার শ্রোতা।
জাকির হুসেন মঞ্চে উঠেই 888sport appর শ্রোতাদের অভিবাদন জানালেন। তিনতালে বাজালেন ডমরম্ন ও শঙ্খের শব্দ। এই রাতে জাকির হুসেন বিভিন্ন ধরনের ধ্বনি সৃষ্টিতেই উৎসাহী ছিলেন। ট্রেন চলার ছন্দ শোনালেন তবলায়। চলমত্ম অবস্থায়, স্টেশনে প্রবেশের সময় ট্রেনের গতি কীরকম ধ্বনি সৃষ্টি করে তবলায় তা পরিবেশন করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। কর্মঠ ও অলস – এরকম দুই বন্ধুর আচরণের ধ্বনি-চিত্রও প্রদর্শন করলেন। বাড়িতে অতিথি এলে তাঁকে কীভাবে স্বাগত জানাতে হয় তবলার বোলে তা স্পষ্ট করে তুললেন। জল-খাবার গ্রহণের আমন্ত্রণ-ধ্বনিও তুললেন তবলায়। অতিথিকে তাঁর বাড়ির পথ দেখিয়ে দেওয়ার ধ্বনিও বাদ গেল না। আকাশে বিদ্যুচ্চমক ও বজ্রপাত এবং তোপ-কামান দাগানোর শব্দ শোনালেন তবলায় ঝড় তোলে। জাকির হুসেনের তবলার বোলে ঘোড়ার চলন, শিকারির সতর্ক অনুসন্ধান দৃশ্যমান হয়ে উঠল দর্শকদের চোখে। বায়াতে বোল বাজানোর সামর্থ্য তাঁর অসাধারণ। তাঁর ‘লালকেলস্না’ ছিল অসাধারণ। তিনশো বছরের একটি লহরা বাজিয়ে মুগ্ধ করলেন শ্রোতাদের। তবলার এই অবি888sport app download for androidীয় 888sport live chatী তাঁর বাদন শেষ করলেন দ্রম্নতলয়ে তিনতাল বাজিয়ে। জাকির হুসেনের তবলা-বাদন শ্রোতাদের খুবই চমৎকৃত করেছে। তবলা যে শুধু সংগত-বাদ্য নয়, একটি স্বতন্ত্র বাদ্য হিসেবেও এর ব্যবহার করা যায় – তা-ই বোঝালেন তবলার এই ভুবনবিখ্যাত উসত্মাদ। তবলার বোলে ও তালে উদ্ভাবন ও সৃজন সম্ভবনার চরম রূপ প্রদর্শন করলেন জাকির হুসেন।
এরপর ছিল মাইহার ঘরানার প–ত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদারের সরোদ-বাদন। তিনি বাজালেন উসত্মাদ আলাউদ্দীন খাঁ সৃষ্ট হেমন্ত্ রাগ। আলাপ-জোড়-ঝালায় শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন। পরে বাজালেন মাঞ্জ খামাজ রাগ। এটি পরিবেশিত হয়েছে চোদ্দো মাত্রার দীপচান্দরি ও ষোলো মাত্রার তিনতালে। তাঁর সঙ্গে তবলা ও তানপুরা বাজিয়েছেন যথাক্রমে শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুপ্রিয়া দাস। গৎ পরিবেশনায় অনায়াস কুশলতা দেখিয়েছেন শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
উসত্মাদ সুলতান খানের পুত্র সাবির খান বাজালেন সারেঙ্গিতে মালকোষ। তাঁর পরিবেশনা মোটামুটি ভালোই লেগেছে।
এই রাতের শেষ 888sport live chatী ছিলেন প–ত উলহাস কশলকর। শুরম্ন করলেন কোমল ঋষভ আশাবরী রাগ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। বিলম্বিত তিলওয়ার তালে গাইলেন ‘বামনা শগুণ বিচারো’ বন্দিশটি। এরপর মধ্যম লয়ে পরিবেশন করলেন ‘কব ঘর আওয়ে মোরা’। এর পরের বন্দিশ ছিল ‘মিলন কো জিয়া মোরা চাহত হ্যা’। উলহাস কশলকর শেষ করলেন ভায়রো বাহার রাগে একটি খেয়াল এবং ভৈরবীতে একটি ঠুমরি গেয়ে। উলহাস কশলকারের পরিবেশনা বরাবরের মতোই পেলব, মর্মস্পর্শী। তাঁর সঙ্গে তবলায় সংগত করেছেন সুরেশ তালওয়ালকার, তানপুরা বাজিয়েছেন তাঁর পুত্র সামিহান কশলকর।
পঞ্চম ও শেষরাতের অনুষ্ঠান শুরম্ন হলো সিলেটের গীতবিতান-পরিবেশিত ধামার দিয়ে। ধামার মূলত চোদ্দো মাত্রার একটি তালের নাম। ধামার তালে পরিবেশিত ধ্রম্নপদ অঙ্গের সংগীতকেও ধামার বলা হয়। অধ্যাপক অসিত রায়ের তত্ত্বাবধানে অনিমেষ বিজয় চৌধুরী ও তাঁর দল শোনালেন ধামার। শুরম্ন হলো ‘তানানা নুম তুম’ দিয়ে। এর বোল ছিল ‘কাহে ব্রজ ছোড় চলি আয়ি’। 888sport live chatীরা গেয়েছেন দেশ রাগে। পরে একটি চতুরঙ্গ পরিবেশন করেছেন ভুপালিতে। ধ্রম্নপদের মতোই 888sport appsে ধামারের চর্চা খুবই কম। এখন এই দিকে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে – এই কারণে 888sport live chatীরা প্রশংসা দাবি করতে পারেন। এই চর্চা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলে শাস্ত্রীয় সংগীতে আমাদের সমজদারি আরো বাড়বে। এই পরিবেশনার অনিমেষ বিজয়ের সঙ্গে অন্য কণ্ঠ888sport live chatীরা ছিলেন কুমকুম ভৌমিক, নূর-ই-আফরোজ, পরেশচন্দ্র পাল, সুব্রত মিত্র ও সোনিয়া রায়। পাখোয়াজ বাজিয়েছেন আলমগীর পারভেজ।
এরপর নৃত্য পরিবেশন করলেন বিদুষী আলারমেল ভালিস্ন। ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের এই 888sport live chatী সাধারণত ভরতনাট্যমের পা-ানালুর আঙ্গিকে নৃত্য পরিবেশন করে থাকেন। এই আঙ্গিকের নৃত্য তিনি শিখেছেন পা-ানালুর চোক্কালিঙ্গম পিলস্নাই ও তাঁর পুত্র সুববরায়া পিলস্নাইয়ের কাছ থেকে। দক্ষিণী সংগীতের পদম ও জাবালিতে তালিম নিয়েছেন বিখ্যাত সংগীত গুরম্ন টি. মুকথার কাছে।
আলারমেল ভালিস্ন তাঁর নৃত্য পরিবেশনার শুরম্নতেই
শৃঙ্গার-রৌদ্র-অদ্ভুত-রৌদ্র-বাৎসল্য ইত্যাদি নয়টি রস সম্পর্কে বোঝালেন শ্রোতাদের। রসগুলোর মধ্যে শৃঙ্গার রসই সবচেয়ে উপভোগ্য – এ-কথা জানালেন ভোজ রাজার মমত্মব্য উদ্ধৃত করে। 888sport live chatীর প্রথম নৃত্যটি ছিলো শৃঙ্গার রসভিত্তিক ‘রতি-শুক-সারি’। এটি ছিল প্রেমের দেবতা মন্মথকে উৎসর্গীকৃত। শৃঙ্গার রসের আবেদন বসমত্মকালেই সবচেয়ে বেশি। কালিদাসের ঋতুসম্ভরমে বসমত্ম ঋতুর বর্ণনা আছে। এই ঋতুতে নায়িকার আকুতি বেড়ে যায়। আলারমেলের নৃত্যে মঞ্চে সৃষ্টি হয় বসমেত্মর আবহ। তাঁর মুদ্রায় এবং সঙ্গে পরিবেশিত সংগীতে গুঞ্জরিত হয় ভ্রমর, মুকুলগুলো ফুল হয়ে ওঠে। পরের নৃত্যটি ছিল ‘জল সেবন’। একটি বালিকার যুবতী হয়ে ওঠার গল্প। প্রায় দুশো বছরের প্রাচীন একটি 888sport app download apk অবলম্বনে এই নৃত্যটি পরিকল্পিত হয়েছে। একটি কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করত একটি কিশোর। অনেকদিন পর দুজনের দেখা হয়। দুজনের মনেই তখন প্রেমানুভূতির স্ফুরণ ঘটেছে। এই গল্পটিই আলারমেল ভালিস্ন সুন্দরভাবে পরিবেশন করেছেন তাঁর নৃত্যে। একজন ঈর্ষাপরায়ণ 888sport promo codeর অনুভব তুলে ধরেছেন একটি জাবালি সংগীতের পটভূমিতে। প্রতারক প্রেমিকের প্রতি ক্রুদ্ধ রমণীর কটুবাক্য প্রয়োগ, তাঁদের সম্পর্কের টানাপড়েন – এই গল্পই পরিবেশন করেছেন আলারমেল ভালিস্ন। ক্রুদ্ধ মহিলার অভিব্যক্তি, প্রতারক প্রেমিকের ছলনাময় আচরণ – সবকিছুই প্রাণবমত্ম হয়ে উঠেছে নাচের মুদ্রায় ও অভিনয়ে। শেষে পরিবেশিত হলো আভোগী রাগে একটি নৃত্য-লহরী। এস. রাজেশ্বরী-রচিত এই নৃত্য-লহরী অত্যমত্ম জটিল তাল-ছন্দে নিবদ্ধ। তবে আলারমেলের নৃত্যকুশলতার কারণে এই জটিল পরিবেশনা খুবই সাবলীল হয়ে উঠেছে। তাল-লয়-ছন্দের সাংগীতিক বুননে অনবদ্য দৃষ্টিনন্দনতা লাভ করেছ এই নৃত্য-লহরী। আলারমেলের মুদ্রা খুবই অভিব্যক্তিময়। নৃত্যের ভাব রূপায়ণে তিনি অত্যমত্ম পারঙ্গম। এই কারণে তাঁর পরিবেশনা কখনোই আড়ষ্ট মনে হয় না। আলারমেলের নৃত্যের সঙ্গে সংগীত পরিবেশন করেছেন বসুধা রবি। বসুধার কণ্ঠ খুবই সুখশ্রাব্য। বেহালা বাজিয়েছেন ঈশ্বর রামকৃষ্ণণ।
আলারমেল ভালিস্নর নৃত্যানুষ্ঠানের পরই শুরম্ন হলো পাঁচ রাতব্যাপী এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপনী অধিবেশন। এই অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী, ভারতের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত পঙ্কজ সরণ, এস.এ. সামাদ, 888sport app উত্তরের মেয়র আনিসুল হক ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আবুল খায়ের তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। গতকাল এই আসরে একই প্যান্ডেলের নিচে বসে ছাপ্পান্ন হাজার শ্রোতা সংগীত উপভোগ করেছেন। সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, 888sport live chatী, অধ্যাপক, ছাত্র সবাই এসেছেন গান শুনতে। 888sport appsের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন শ্রোতারা। আর্থিক ব্যবধান ঘোচানোর কাজ করছেন সরকার ও উদ্যোক্তারা। কিন্তু মননের ব্যবধানও ঘোচানো দরকার। আমরা সেই কাজই করার চেষ্টা করছি।’ ফজলে হাসান আবেদ তাঁর বক্তৃতায় 888sport live chatী কাইয়ুম চৌধুরীর প্রতি 888sport apk download apk latest version নিবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের এই আয়োজনের ফলে 888sport appsে উচ্চাঙ্গসংগীতের জাগরণ ঘটছে।’ পঙ্কজ সরণ বলেন, ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীতের সাফল্য এখন দক্ষিণ এশিয়ায় প্রশংসিত। ভারতে এই উৎসব সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ছে। অনেক ভারতীয় 888sport live chatীই এখন এই অনুষ্ঠানে আসতে চান।’
সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘এদেশে উচ্চাঙ্গসংগীতের চর্চা খুব একটা হয় না। বাংলা গান ভাবপ্রধান, উচ্চাঙ্গসংগীত সুরপ্রধান। আমাদের জীবন ও সংস্কৃতি যুক্ত সাধনায় সমৃদ্ধ। একটা থেকে আরেকটাকে পৃথক করা যায় না। ১৯৪৭-এর পাঞ্জাবে সংঘটিত দাঙ্গার পর উসত্মাদ আবদুল করিম খাঁ বলেছিলেন, সংগীতের চর্চা করলে দেশবিভাগ হতো না, দাঙ্গাও পরিহার করা যেতো।’
এই অধিবেশনের পর আবার শুরম্ন হয় সংগীতানুষ্ঠান। উসত্মাদ ইমরাত খানের পুত্র উসত্মাদ ইরশাদ খান বাজালেন সুরবাহার। এই বাদনযন্ত্রটি উদ্ভাবন করেছেন তাঁদের পরিবারেরই পূর্বপুরম্নষ উসত্মাদ শাহাদাত খান। সুরবাহার যন্ত্রটি বেশ ভারি, তারগুলো পুরম্ন। এইজন্য বাজানোর সময় বেশি শক্তি প্রয়োগ করতে হয়। এর ধ্বনিও বেশ গম্ভীর। ইরশাদ খান বাজালেন দরবারি কানাড়া। অনেকক্ষণ ধরে আলাপ বাজালেন। আলাপে লয়ের নিয়ন্ত্রণ নেই বলে 888sport live chatীরা অনেকটাই স্বাধীনতা নিতে পারেন, বাজানোর সময়। সেই সুযোগটুকুই নিলেন ইরশাদ খান। তাঁর বাজনায় গভীর রসের দ্যোতনা ছিল। 888sport live chatীর সঙ্গে তবলা সংগত করেছেন প–ত যোগেশ সামসি, তানপুরায় ছিলেন উৎপল রায়।
প–ত উলহাস কশলকরের পুত্র সামসেহান কশলকর খেয়াল পরিবেশন করলেন যোগ রাগে। শুরম্ন করলেন বিলম্বিত একতালে। পরে মধ্যম ত্রিতালে পরিবেশন করলেন বন্দিশ ‘ক্যায়সে কাটে দিন রাত হো’। দাদরা তালে পরিবেশন করলেন একটি ভজন, ‘তুম মাহি কাহা রহ যাও’। সামসেহান কশলকরের পরিবেশনা সুললিত। তাঁর সঙ্গে তবলায় ছিলেন প–ত সুরেশ তালওয়ালকার।
উসত্মাদ বিলায়েত খাঁর পুত্র উসত্মাদ সুজাত খান সেতারে বাজালেন রাগেশ্রী রাগটি। আলাপ, জোড়, ঝালা, বন্দিশে একটি অনুপম পরিবেশনা ছিল এটি। সেতার ও কণ্ঠসংগীতের মেলবন্ধন ছিল
সুজাত খানের পরিবেশনায়। আমির খসরম্নর ‘তুমহারা শহরকা মওসম বড়া সুহানা লাগে’ বন্দিশটি গেয়ে শ্রোতাদের উৎফুলস্ন করে তুলেছিলেন। কাহারবা তিনতালে গাইলেন,‘অব তিলক সব ছিনাইকে, মোসে নয়না মিলাইকে, প্রেম ভাটিকা মদরা পিলাইকে, মাতয়ারি কর দি’। এই গানের সঙ্গে শ্রোতারাও মাতওয়ারা হয়ে উঠল। সুজাত খানের সঙ্গে তবলা বাজিয়েছেন অমিত চৌবে ও স্বপন পরাণ আনজারিয়া।
উসত্মাদ রাশিদ খাঁ মঞ্চে উঠতেই শ্রোতারা উলস্নাস প্রকাশ করে তাঁকে স্বাগত জানালেন। রাশিদ খাঁ খেয়াল শুরম্ন করলেন যোগকোষ রাগে। আলাপ-তানে রাশিদ খাঁর জুড়ি নেই। তবে এই রাতে তিনি খুব একটা মেজাজে ছিলেন বলে মনে হলো না। বিলম্বিত তিনতালে শুরম্ন করেছিলেন তাঁর খেয়াল। পরে দ্রম্নত ত্রিতালে গাইলেন ‘প্রীত পরায়ি জানে না দো’ বন্দিশটি। রাগ পরিবেশনের পর কাহারবা তালে শোনালেন ‘নয়না পিয়াসে লাগাইরে’ ঠুমরিটি। ভালোই গেয়েছেন এটি। এরপর গাইলেন বড়ে গুলাম আলী খাঁর গাওয়া প্রসিদ্ধ ঠুমরি ‘ইয়াদ পিয়া কি আয়ে হায়’। এই ঠুমরিটি রাশিদ খাঁ প্রথম পরিবেশন করেছিলেন জগজিৎ সিংহের 888sport app download for androidে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে। তখন এটি বেশ সমাদৃত হয়েছিল। কিন্তু এই রাতে তাঁর এই ঠুমরিটি খুব একটা উৎরোয়নি। 888sport live chatীর কণ্ঠে এই রাতে যেন ক্লামিত্ম ভর করেছিল। রাশিদ খাঁর সঙ্গে তবলায় ছিলেন প–ত শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, সারেঙ্গি বাজিয়েছেন মুরাদ আলী। হারমোনিয়াম ও তানপুরায় সংগত করেছেন যথাক্রমে প–ত অজয় যোগলেকার ও অভিজিৎ কু-ু।
বরাবরের মতোই এই উৎসবের শেষ 888sport live chatী ছিলেন প–ত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। প–ত চৌরাসিয়া সচরাচর বেশি কথা বলেন না। কিন্তু এই রাতে বললেন। জানালেন, আগামী ফেব্রম্নয়ারি মাস থেকে তিনি বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের জন্য সময় দেবেন। বললেন, ‘আমি চাই এদেশের সব ছেলেমেয়ের হাতে একটি করে বাঁশি থাকুক। বাঁশি তো 888sport appsেরই।’
888sport live chatী তাঁর বংশীবাদন শুরম্ন করলেন কিরওয়ানি রাগে। সকালের এই রাগটির সুরে শ্রোতারা আচ্ছন্ন হয়ে গেলেন। তাঁর সুর অনুষ্ঠানস্থানের সীমা ছাড়িয়ে গেল। এরপর একটি বিরল বিস্মৃত রাগ – জেঠের সুর তুললেন বাঁশিতে। এটিও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে। 888sport live chatী শেষ করলেন একটি কীর্তনের সুর শুনিয়ে। এই কীর্তনের সুরের আহবানে এসে গেল আরেকটি ভোর। সাঙ্গ হলো চতুর্থ বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব। সবার প্রতীক্ষা শুরু হলো আগামী বারের জন্য।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.