বিদায়ী শীতকে ছুঁইছুঁই করছে বসন্ত। ঋতুরাজ উষ্ণ নিশ্বাস ফেলছে গতায়ু শীতের কাঁধে। গাছপালার শাখা থেকে মলিন বিবর্ণ পাতা ঝরিয়ে দিচ্ছে থেকে থেকে বয়ে যাওয়া দমকা হাওয়ার ঝাপটা। বিমর্ষ প্রকৃতির গভীর সত্তায় জেগে উঠেছে প্রাণপ্রাচুর্যের স্পন্দন। তারই এক অনির্বচনীয় সুরলহরি বয়ে যাচ্ছে চরাচরজুড়ে। রবীন্দ্রনাথের কথা মনে পড়ে – ‘আনন্দধারা বহিছে ভুবনে…।’
সেই আনন্দকে আরো নিবিড় করে তুলেছিলেন 888sport live chatীরা কণ্ঠসুরসুধায়। কলকাতায়। বাংলাগানের সব থেকে বড় নয়দিনের উৎসবে। এ-উৎসবের বিষয়ে তো এখন সবাই অবগত। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন কলকাতার সংগীত রিসার্চ একাডেমীর (এসআরএ) সঙ্গে যৌথ আয়োজনে গত ৮-১৬ ফেব্র“য়ারি ‘এ কোন মায়ায়’ নামের এ-উৎসবের আয়োজন করেছিল। এর সার্বিক সহযোগিতায় ছিল প্রথম আলো। সহযোগিতায় ছিল দ্য ডেইলি স্টার, সম্প্রচার সহযোগিতায় মাছরাঙা টেলিভিশন। গানের সুরের জাল বুনিয়ে কেটে গেছে উৎসবের দিনগুলো।
কলকাতার সিনেমাপাড়া টালিগঞ্জ। মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রমাণ আকারের মূর্তি ট্রাম ডিপোর মোড়ে। তার পাশ দিয়ে খানিকটা সামনেই এসআরএর কার্যালয়। সেখানেই উৎসব। উদ্বোধন হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। প্রথম দিনে একটু আগেই উপস্থিত হয়েছি। আমাদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল দেশপ্রিয় পার্কের কাছে, শরৎ বোস রোডের একটি চমৎকার হোটেলে। টালিগঞ্জ সেখান থেকে মিনিট কুড়ির পথ। কুড়ি মিনিট মানে কুড়ি মিনিটই। ট্যাক্সিতে ভাড়া ৪০ টাকা। দরদামের বালাই নেই। নিয়ম হচ্ছে গন্তব্যে পৌঁছালে চালক ভাড়ার তালিকা বাড়িয়ে দেবেন। মিটার দেখে ভাড়া চুকিয়ে দিলেই হলো। কলকাতা ট্রাফিক সংকেত ছাড়া 888sport appর মতো বীভৎস যানজট থেকে তার নাগরিকদের মুক্তি দিয়েছে।
প্রথম দর্শনেই পরিবেশটি মনে ধরল। যেন একটি বাগানবাড়ি। বহুকালের পুরনো দ্বিতল ভবন। শুভ্র রাজহংসের মতো। খড়খড়ি-লাগানো লম্বা দরজা জানালায় আকাশের নীল রং। সিঁড়ির ওপর সারি করে রাখা টবে মৌসুমি ফুলের চোখজুড়ানো বর্ণালি। সামনে সবুজ ঘাস বিছানো আঙিনা। সীমানা প্রাচীরের পাশ দিয়ে ফল-ফলাদির গাছ। পথের পাশ দিয়ে ফুটে আছে ডালিয়া, মল্লিকা, গাঁদা, সালভিয়া আরো অনেকসহ। সেখানে রঙিন কাপড়ের ছাউনির তলায় কয়েকটি স্টল। মাঝখানে বৃত্তাকার টেবিলের পাশে চেয়ার পাতা। এককোণে বড় আকারের ডিজিটাল স্ক্রিন। স্টলে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত চারুকলা ও সংগীতবিষয়ক বই এবং গানের সিডির প্রদর্শনী ও বিক্রির ব্যবস্থা। অন্যপাশে 888sport appর বিখ্যাত খাবার। সঙ্গে গরম চা-কফি। পরিকল্পনাটাই এমন ছিল। উৎসবের দর্শক-শ্রোতাদের সংগীতরস তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি 888sport appর ঐতিহ্যবাহী খাবার ও প্রকাশনার সঙ্গেও যেন তাঁরা সাক্ষাৎপরিচয় পান।
গানের মঞ্চ ভবনের বিপরীত দিকে। সেখানটায় ফুটবল মাঠের মতো বিরাট উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ। সেখানেও নানা জাতের গাছপালার নিবিড় ছায়াঘন সমাবেশ। সেই মাঠ পেরিয়ে অনতি-উচ্চ প্রাচীরের ওপারে এসআরএর শিক্ষাগুরু ও শিক্ষার্থীদের আবাসন। ছোট ছোট দ্বিতল বাড়ি। পুরো এলাকাটি অনেক বড়।
প্রাঙ্গণের শেষ মাথায় স্টিল ফ্রেমের ওপর তৈরি করা মঞ্চ। সামনে উপবৃত্তাকার নীল ছাউনির তলায় সাড়ে তিন হাজার চেয়ার পাতা। পুরো মাঠই 888sport app পড়েছে তাতে, যা একই সঙ্গে তুলে ধরেছিল উৎসবের ব্যাপকতাকেও।
উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছিল আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু উদ্বোধন করেছিলেন। তবে বিশেষ অতিথি হিসেবে কবির কনিষ্ঠ পুত্র কাজী অনিরুদ্ধের স্ত্রী কল্যাণী কাজীর মর্মস্পর্শী বক্তব্য অন্যরকম ভাবাবেগের সঞ্চার করেছিল আলোচনাপর্বে। কলকাতার লোকে যখন কবিকে ভুলতে বসেছে, যখন তাঁর গানের চর্চা ও প্রচার-প্রসার প্রায় তলানিতে ঠেকেছে, সে-সময় কবিকে এই উৎসব উৎসর্গ করায় তিনি আয়োজকদের কৃতজ্ঞতা জানালেন। কলকাতায় অসুস্থতা, উপেক্ষা ও দারিদ্র্যলাঞ্ছিত কবির শেষদিনগুলোর কথা 888sport app download for android করলেন তিনি। 888sport sign up bonus হারিয়ে ‘শিশু ভোলানাথে’র মতো হয়ে পড়েছিলেন কবি। দুটি মাত্র থাকার ঘর ছিল তাঁদের। কবি, তাঁর স্ত্রী, পুত্র-পুত্রবধূরা মিলে প্রায় মানবেতর অবস্থায় থাকতেন সেখানে। গাদাগাদি করে। তারপর সেই বাড়িও ছাড়তে হলো এক সময়। প্রায় পথে পড়ে থাকার মতো অবস্থা। কেউ বাড়ি ভাড়া দিতে চায় না। বাড়িওয়ালাদের কথা ‘পাগল ঘরে রাখবে না’। অনকে বলকেয়ে যদওিবা দু-একজন প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে, কিন্তু ‘মুসলমান’ শুনে আবার অসম্মত। এমন একটা সময়ে 888sport apps থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ নিয়েছিলেন কবিকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে 888sport appsে নিয়ে যাওয়ার। কৃতজ্ঞতাভরে তিনি তা 888sport app download for android করে বলেছেন – ‘নিঃসহায় কবিকে শুধু গৃহ দিয়ে নয়, আপনারা কবি ও কবি-পরিবারকে হৃদয়ে আশ্রয় দিয়েছেন।’ কথা বলতে বলতে বাষ্পরুদ্ধ হয়েছে তাঁর কণ্ঠ, শ্রোতারাও আপ্লুত হয়েছেন ভাবাবেগে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদুষী গিরিজা দেবী, এসআরএর নির্বাহী পরিচালক রবি মাথুর ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের আলোচনায় অংশ নেন।
উৎসব সাজানো হয়েছিল পঞ্চকবির গান, রাগপ্রধান বৈঠকি গান, আধুনিক গান, জীবনমুখী গান আর লোকগান দিয়ে। যেসব গান পরিবেশিত হয়েছে কিছু বাদে, তার অধিকাংশ গানই শ্রোতারা আগেও শুনেছেন বিভিন্ন 888sport live chatীর কণ্ঠে। তবে এবার সেই গান শুনলেন 888sport appsের প্রথিতযশা এবং তরুণ প্রজন্মের 888sport live chatীদের পরিবেশনায়। এই বিষয়টিই ছিল উৎসবের মূল লক্ষ্য। কেমন গাইছেন 888sport appsের 888sport live chatীরা, এদেশে সংগীতচর্চার গুণগত মান কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা কলকাতার বিদগ্ধ সংগীত-রসিক ও বোদ্ধাদের কাছে তুলে ধরা। প্রথম দিনের অনুষ্ঠান সংগীতজ্ঞ সোহরাব হোসেন এবং দ্বিতীয় দিনের 888sport live chatী নীলুফার ইয়াসমীনকে উৎসর্গ করা হয়।
দেশের বাইরে এমন একটি বড়মাপের সংগীত আয়োজন সরকারি উদ্যোগেই হওয়া বাঞ্ছিত ছিল। সংগীতচর্চার প্রচার ও প্রসারের কল্যাণে জাতীয় সরকারি অ্যাকাডেমির তরফ থেকে তেমন কোনো প্রণিধানযোগ্য পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি। এই নিরিখে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের – বলতে গেলে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়েরের একক ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই উৎসব যেমন দেশের সংগীতচর্চার বিকাশের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ভ‚মিকা রেখেছে, তেমনি ব্যক্তিগতভাবে 888sport live chatীরাও প্রাণিত হয়েছেন।
উৎসবে অংশ নেওয়া অর্ধশতাধিক 888sport live chatীর সবাই যে খুবই উচ্চস্তরের পরিবেশনা উপহার দিয়েছেন তা নয়। তবে সবাই খুবই সযতন ছিলেন নিজ নিজ পরিবেশনার প্রতি। পূর্বপ্রস্তুতিও ছিল। কলকাতায় পৌঁছেও নিয়মিত রেওয়াজ করেছেন অনেকে। বিশেষ করে জীবনমুখী গানের দলের তরুণ 888sport live chatীরা স্থানীয় প্র্যাকটিস প্যাডে দুলো অনুশীলন করেছেন। মঞ্চে যথেষ্ট সময় পেয়েছেন প্রত্যেকে নিজের প্রতিভাকে মেলে ধরার। সবাই চেয়েছেন অন্যদের চেয়ে নিজের পরিবেশনা সুন্দর-সুচারু করে তুলতে। অঘোষিত প্রতিযোগিতার মতো ব্যাপার ছিল 888sport live chatীদের মধ্যে। ফলে একটি সার্বিক মান বজায় ছিল প্রতিদিনের অনুষ্ঠানে। শ্রোতারাও প্রভ‚ত আনন্দ উপভোগ করেছেন।
শ্রোতাদের ক্ষেত্রে একটা বিষয় উল্লেখ করার মতো। 888sport appতে বেঙ্গল-এসআরএর আয়োজনে গত বছর চারদিনের যে উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব হয়েছিল, সেখানে সন্ধ্যা থেকে ভোর অবধি গান হয়েছে। আর্মি স্টেডিয়ামে ১০ থেকে ১৫ হাজার দর্শক-শ্রোতা রাত জেগেছেন সুরে কান পেতে। উচ্ছ্বাসদীপ্ত ছিল পরিবেশ। সত্যি বলতে কী, কলকাতায় তেমনটা দেখা যায়নি। কলকাতা পুস্তক মেলা খোলা ছিল উৎসবের প্রথম তিনদিনে। সেখানে প্রচুর লোকসমাগম ঘটে। অন্যদিকে আমাদের দেশে কলকাতা তথা ভারতের কোনো 888sport live chatী-888sport live footballিকরা এলে বা তাঁরা কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিলে এখানকার পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমগুলোতে যেমন ফলাও করে তাঁর খবর, ছবি ছাপা ও সম্প্রচার করা হয়, কলকাতায় তেমন হয় না। কেমন যেন একধরনের কুণ্ঠা রয়েছে তাদের গণমাধ্যমের আমাদের প্রতি। তার প্রমাণ প্রকট হয়ে উঠেছিল এই উৎসবের ক্ষেত্রেও। আমাদের দেশের এতো খ্যাতিমান 888sport live chatী সেখানে গেলেন, এতো বড় উৎসব হলো, অথচ সে-তুলনায় তাদের গণমাধ্যমগুলোতে এর প্রচার ছিল অতিনগণ্য। হয়তো সে-কারণেও সাধারণ শ্রোতারা উৎসবটি সম্পর্কে প্রথমদিকে জানতে পারেননি। এ-বিষয়টিও চাপা থাকল না। গান শোনাতে এসে প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন ফরিদা পারভিন। তিনি বিনয়ের সঙ্গেই বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশেও তো কিছু গুণী 888sport live chatী আছেন। তাঁদের গান আপনার শুনতে পারেন না। আমরা কিন্তু আপনাদের গান শুনি। ভারতের সব টিভি চ্যানেল আমাদের দেশে দেখা যায়। অথচ এখানে আমাদের দেশের কোনো চ্যানেল দেখা যায় না। এখানে আমাদের প্রচারও সামান্য।’ যা হোক উৎসবে শ্রোতারা এসেছিলেন মূলত আমন্ত্রণপত্র পেয়ে, এবং পরে মুখে-মুখে খবর শুনে। তবে পুস্তক মেলা শেষ হওয়ার পর থেকে শ্রোতার সমাগম হয়েছে প্রচুর। কোনো কোনো রাতে আসন না পেয়ে দাঁড়িয়ে থেকেও গান শুনেছেন অনেকে।
প্রতিদিন অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে সন্ধ্যা ৬টায়, চলেছে মাঝরাত অবধি। দ্বিতীয় এবং শেষদিন বৈঠকি ও লোকগানের অনুষ্ঠান রাতভর হওয়ার কথা ছিল। তবে পুরো রাত ধরে গান শোনার আগ্রহ দেখাননি কলকাতার শ্রোতারা। রাত ২টার পর তাঁরা আর বাড়ির বাইরে থাকতে চাননি। যদিও আবহাওয়া ছিল চমৎকার। কবোষ্ণ পরিবেশও ছিল গান শোনার জন্য আদর্শ। শুধু যে 888sport appsের 888sport live chatী বলেই নয়, কলকাতার এসআরএর পণ্ডিতদের পরিবেশনায় বৈঠকি গানের রাতেও একই অবস্থা দেখে গেছে। গান যতই ভালো হোক আর 888sport live chatীর যতই যশ-খ্যাতি থাক, শ্রোতারা পুরো রাতের ঘুম বিসর্জন দিতে রাজি নন।
তবে তাঁরা অকুণ্ঠ প্রশংসাই করেছেন গান শুনে। অনন্যা ব্যানার্জি (যিনি 888sport appতেও কিছুদিন কাটিয়ে গেছেন, এখানে স্বামীর চাকরির সুবাদে) প্রতিদিনই এসেছেন উৎসবে। বলছিলেন ‘এঁদের অনেকের গানই 888sport appতে শুনেছি। এমন প্রাণখোলা গান অনেকদিন শুনি না। এখানে রবীন্দ্রসরোবরে বা নজরুলমঞ্চে মাঝে মাঝে বাংলাগানের অনুষ্ঠান হয়। তবে তা এমন বড় কিছু নয়। এখানে বাংলাগানের চর্চা তো কমেই আসছে। তাই রোজ উৎসবে এসে ছি। যা সুন্দর গেয়েছে, বাঙালি বলে গর্ব হচ্ছে।’ মনিকান্ত বিশ্বাস বলে আরেকজন, টালিগঞ্জেই তাঁর বাড়ি ও ‘সুরকার’ নামে হারমোনিয়াম তৈরির কারখানা। তিনিও তাঁর ব্যবসার সুবাদে 888sport appsের অনেক 888sport live chatীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত। ‘ওঁদের কারো-কারো সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল। তাই তাঁদের গান সম্পর্কে একটা ধারণা ছিল। উৎসবে এসেছি প্রাণভরে ওপারের 888sport live chatীদের গান শুনব বলে। এমন সুযোগ তো এখানে সবসময় পাওয়া যায় না।’
888sport live chatীরাও অভিভ‚ত ছিলেন গান করার সুযোগ পেয়ে। এসআরএতে সাধারণত বাংলাগানের অনুষ্ঠান হয় না। সেখানে বাংলাগান করা 888sport live chatীদের কাছে ছিল অনেক বড় পাওয়া। কিরণচন্দ্র রায় ও চন্দনা মজুমদার বলছিলেন, ‘সাধারণ শ্রোতাদের ভালোবাসা না পেলে কোনো 888sport live chatী দাঁড়াতে পারেন না। ওটা সব থেকে আগে দরকার। কিন্তু সংগীতগুরুদের মধ্যে গান করার আনন্দ আলাদা। নিজের অবস্থানটা তাতে ঠিকমতো বোঝা যায়। এই উৎসবে ওস্তাদ রশিদ খান, পূর্ণদাস বাউলের মতো গুণীজনরা গান শুনেছেন। এটা আমাদের জন্য অসাধারণ প্রাপ্তি।’ ফাহিম হোসেন চৌধুরী, বাপ্পা মজুমদারের কথাতেও এই প্রতিধ্বনি। কলকাতায় অনেক অনুষ্ঠানে ও এখানকার তারাবাংলাসহ কয়েকটি চ্যানেলেও তাঁরা গান করেছেন। তবে এসআরএতে গান করার আকাক্সক্ষা ছিল তাঁদের অন্য যে-কোনো 888sport live chatীর মতোই। সেটি পূরণ হলো। পাশাপাশি এই ধরনের কর্মসূচি যেন অব্যাহত থাকে সেটিও বললেন তাঁরা।
এই উৎসবে সংগীতের পাশাপাশি আরো একটি বিষয় সংযোজিত হয়েছিল। কলকাতায় যখন সুরের ঝরনাধারা 888sport appসহ সারাদেশে তখন তরুণ প্রজন্মের উত্তাল বিক্ষোভ। সংগীতউৎসবেও সেই বিক্ষোভের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সংহতি প্রকাশ করা হয়। শাহবাগের আগুন ছড়িয়ে গিয়েছিল কলকাতাতেও। 888sport live chatী রফিকুন নবীর নেতৃত্বে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয় ১৪ ফেব্র“য়ারি উৎসবের সপ্তম দিনে। পরদিন 888sport promo codeর প্রতি সহিংসতা রোধে ব্র্যাকের চেয়ারম্যান স্যার ফজলে হাসান আবেদের নেতৃত্বে করা হয় মানববন্ধন। 888sport live chatীরাও যিনি যে-ধরনেরই গান করে থাকেন না কেন, চেষ্টা করেছেন দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করতে। গানের মাঝে মাঝে তুলে ধরেছেন মহান ভাষা-আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ হয়ে শাহবাগের গণআন্দোলনের কথা। এতে ভিন্নমাত্রা পায় উৎসব।
সাধারণ শ্রোতা ছাড়াও সংগীতগুরুরা প্রতিদিন সন্ধ্যায় এসেছেন গান শুনতে। 888sport appsের 888sport live chatীদের প্রতি তাঁদের আগ্রহ কতটা ছিল সে-প্রমাণ পাওয়া গেছে ১০৫ বছর বয়সে অপটু শরীর নিয়ে ওস্তাদ রশীদ আলী খানের হুইল চেয়ারে করে রোজ অনুষ্ঠানে আসায়। সামনের সারি আলো করে বসেছেন প্রবীণ পণ্ডিত বুদ্ধদেব দাসগুপ্ত, পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি, বিদুষী গিরিজা দেবী, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, পণ্ডিত উলহাস কসলকার, ওস্তাদ মাসকুর আলী খানেরা। আরো এসেছেন ওস্তাদ রশিদ খান, পূর্ণদাস বাউল, পণ্ডিত বিজয় কিচলুসহ কলকাতার সংগীতাঙ্গনের খ্যাতনামা এবং নবীন 888sport live chatীরা। তাঁরা 888sport appsের 888sport live chatীদের গান শুনেছেন অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে। ভালো পরিবেশনার তারিফ করেছেন। এমনও হয়েছে, কোনো কোনো 888sport live chatী গান করে মঞ্চ থেকে নেমে এলে, শ্রোতার আসন থেকে সংগীতগুরুদের কেউ কেউ উঠে গিয়ে তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
কেমন লাগল 888sport appsের 888sport live chatীদের পরিবেশনা সে-সম্পর্কে বেশ খোলামেলাই মন্তব্য করেছেন তাঁরা। সমাপনী দিনের অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়েছিল ওস্তাদ রশীদ আলী খানকে। নিজের রচিত শের শুনিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলা গানের সুরমাধুর্য আমার হৃদয় স্পর্শ করেছে।’ এই অসাধারণ আয়োজনের জন্য তিনি বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়েরকে ধন্যবাদ জানান।
পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি বলেন, ‘আমি স্টেটম্যান পত্রিকায় এই উৎসব সম্পর্কে লিখেছি। প্রতিটি অনুষ্ঠান হয়েছে দেখার মতো। লিসা, ফাহিম, অদিতি, ময়না, মিতা অনেক ভালো গেয়েছে। একটা জিনিস লক্ষ করেছি, রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীতের যে-শুদ্ধতা, তা ওদেশের 888sport live chatীরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বজায় রেখেছেন। আমাদের এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে আবোল-তাবোল চলছে। নজরুল সংগীতের চর্চা তো প্রায় উঠেই গেছে। যাঁরা গাইলেন প্রত্যেকে গান-বাজনার প্রতি অত্যন্ত যতেœর সঙ্গে নিজেদের নিবেদিত রেখেছেন। শুধু গাইব বলে গাওয়া নয়। নাচেও তো খুব ভালো করেছে। ভানুসিংহের পদাবলীর যে নাচ করল ওরা তা মনে রাখার মতো।’ পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি 888sport appsে অনেকদিন থেকেই আসছেন। বলছিলেন, ‘আপনাদের ওখানে 888sport live chatকলা একাডেমীতে যখন ওমর ফারুক সাহেব ছিলেন তখন গেছি। উচ্চাঙ্গসংগীতে ওখানটা একটু পিছিয়ে। তবে নতুন ছেলেমেয়েদের মধ্যে শেখার বেশ আগ্রহ আছে। এখন বেঙ্গলের সঙ্গে চুক্তি হলো। এখান থেকে সংগীতগুরুরা গিয়ে দীর্ঘমেয়াদে প্রশিক্ষণ দেবেন। এতে ওরা সত্যিকারের শিক্ষাটা পাবে। আসলে কী, 888sport appsে গেলে মনটা অন্যরকম ভালোলাগায় ভরে ওঠে। বিশ্বে এটিই একটি আন্তর্জাতিক দেশ, যেখানে প্রাণ খুলে গাইতে পারি, মনের ভাব প্রকাশ করতে পারি আমার মাতৃভাষায়। ওখানে গেলে এই ব্যাপারটায় অভিভ‚ত হয়ে পড়ি।’
ফাহমিদা নবীর গানের অকুণ্ঠ প্রশংসা করলেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। তিনি বললেন, ‘উচ্চাঙ্গ-সংগীতের যে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কাজ তা এ-ধরনের বাংলাগানে নেই। তা সত্ত্বেও আধুনিক বাংলাগানের যে সহজ-সাবলীল সুর, তা হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এ-ধরনের গান তেমন বেশি শোনা হয় না। এই আসরে সে সুযোগ হলো। বাপ্পা, গৌরব, নবনীতারাও গেয়েছেন চমৎকার।’ তবে পশ্চিম বাদ্যযন্ত্রের সংযোগ পছন্দ নয় তাঁর। বলছিলেন, ‘আমাদের দেশে এ-ধরনের পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্রের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। আমাদের যে বাঁশি, দোতারা, খোল প্রভৃতি রয়েছে এগুলোর তুলনা হয় না। আমরা এসব বাদ্যযন্ত্রের পরিপূর্ণ ব্যবহার করে উঠতে পারিনি এখনো।’ তিনি একই সঙ্গে 888sport appয় অনুষ্ঠিত চারদিনের উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের প্রসঙ্গও তুললেন। প্রথম আলোর সহযোগিতার কথাটিও বিশেষ করে উল্লেখ করে বলেন, ‘888sport appতেও প্রথম আলো যেভাবে বিপুল প্রচারসহ বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়েছে তা উৎসবকে সফল করতে খুবই সাহায্য করেছে।’
পণ্ডিত বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের জন্ম ময়মনসিংহে। জীবনের পড়ন্তবেলাতেও নাড়িতে অনুভব করেন জন্মভ‚মির টান। ‘আমার জন্ম তো 888sport appsেই। সেখানকার মানুষ, মাটি, জল, বাতাস আমাকে টানে। নয়দিনের এই উৎসবে 888sport appsকে আবার খুঁজে পেলাম।’ ওস্তাদ রশিদ খান বলেন, ‘এসআরএতে বাংলাগানের উৎসব হলো। এটা একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। 888sport appর অনেক 888sport live chatীর গান এই কদিনে শোনার সুযোগ হলো। খুব ভালো লেগেছে আমাদের।’
888sport appর শ্রোতাদের প্রশংসা করে ওস্তাদ মাসকুর আলী খান বললেন, ‘888sport appর পরিবেশ আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। চারদিন তাঁরা যেভাবে উচ্চাঙ্গসংগীত শুনিয়েছেন, আমরা অভিভ‚ত। 888sport appয় খুব ভালো শ্রোতা আছে। আবার এখানেও 888sport live chatীরা খুবই জিম্মাদারির সঙ্গে গেয়েছেন। আমি আগেও 888sport appsে গেছি। গান শুনেছি। উচ্চাঙ্গ সংগীতচর্চায় দুর্বলতা আছে। তবে রবীন্দ্র-নজরুলের গানের চর্চায় 888sport appsের 888sport live chatীরা অনেক এগিয়েছেন। আর লোকগানের বিষয়ে তো কিছু বলার নেই। মূলধারার চর্চা তাঁরা অব্যাহত রেখেছেন।’ সবমিলিয়েই 888sport appsের 888sport live chatীদের পরিবেশনায় মুগ্ধতার কথাই বলেন সংগীতজ্ঞরা।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের সমাপনী দিনের অনুষ্ঠানে উৎসবের সহযোগী এসআরএ, গান শুনতে আসা শ্রোতা ও অনুষ্ঠানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং নেপথ্যের কর্মীদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বললেন, ‘আমাদের দেশে গানের চর্চা সম্পর্কে একটা ধারণা তুলে ধরতেই এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। কলকাতায় আগে আর নয়দিন ধরে এত বড় বাংলাগানের উৎসব হয়নি। আমরা চেষ্টা করব দুই দেশের 888sport live chatীদের নিয়ে এই সাংস্কৃতিক বিনিময়ের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে।’
888sport live chatীরা যেমন সচেষ্ট ছিলেন ভালো পরিবেশনার জন্য, তেমনি মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরীর নেতৃত্বে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কর্মীরাও অত্যন্ত পরিশ্রম করেছেন দেশের বাইরে এতো বড় আয়োজনকে ত্রুটিহীন করে তুলতে। সর্বোপরি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের 888sport live chatী-অতিথিদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে অনুষ্ঠানের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে নিজে উপস্থিত থেকে তদারক করেছেন, যেন সুষ্ঠুভাবে এই সংগীত-উৎসব সম্পন্ন হয়। সে-কারণে এই সুসমন্বিত আয়োজনও প্রশংসিত হয়েছে সবার কাছে। 888sport sign up bonus প্রতারণা না করলে এই উৎসব উজ্জ্বল হয়ে থাকবে অংশগ্রহণকারী 888sport live chatী, শ্রোতা, আয়োজক সবার মনেই।
যাঁরা গান করেছেন
দেশের প্রবীণ থেকে নবীন প্রজন্মের অর্ধশতাধিক 888sport live chatী গান শুনিয়েছেন কলকাতার শ্রোতাদের। তাদের মধ্যে ছিলেন – রামকানাই দাস, ফরিদা পারভিন, ইফ্ফাত আরা দেওয়ান, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, মিতা হক, কিরণচন্দ্র রায়, খায়রুল আনাম শাকিল, ফাহিম হোসেন চৌধুরী, শামা রহমান, বুলবুল ইসলাম, ফাহমিদা নবী, লাইসা আহমেদ লিসা, অদিতি মহসীন, ইয়াকুব আলী খান, শারমিন সাথি ইসলাম, রব ফকির, চন্দনা মজুমদার, বাপ্পা মজুমদার, সানী জুবায়ের, নন্দিতা ইয়াসমিন, ফারহানা রহমান, সিদ্দিকুর রহমান, কৃষ্ণকলি, অর্ণব, অর্ক, লাবিক কামাল গৌরব, নবনীতার সঙ্গে বুনো, পান্থ কানাই, জালাল, অঞ্জন, জীবন, সাদ, শোয়েব প্রমুখ।
ভারতের 888sport live chatীদের মধ্যে ছিলেন পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, বিদুষী কৌশিকী দেশিকান, সুচিশ্রী রায়, ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায়, সুচেতা গঙ্গোপাধ্যায়, সন্দীপ ভট্টাচার্য, শ্রীকান্ত আচার্য, শুভমিতা, অদিতি গুপ্ত, শ্রেয়া গুহঠাকুরতা, স্বাগতা লক্ষ্মী প্রমুখ।
আবৃত্তি করেছেন আসাদুজ্জামান নূর ও মাহবুবুর রহমান। 888sport appর দল ভাবনা পরিবেশন করেছে গীতিনৃত্যনাট্য ভানুসিংহের পদাবলী ও কলকাতার দক্ষিণী পরিবেশন করেছে শাপমোচন। উৎসবে 888sport appsের 888sport live chatীদের ৩০টির বেশি অডিও অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.