ভাষার সীমা-সীমান্ত

হাঁটার কথাও উঠল, ভাষার কথাও উঠল। ভাষার গতি কেমন – হাঁটা, না ওড়া, না চক্কর-মারা? আমি এখানে ভাষা বলতে শুধুই মুখের কথা ধরছি। জন্ম থেকেই শুনে আসছি – ক্রোশেষু জঙ্গমতে ভাষা। সব ভাষাই কি ক্রোশে-ক্রোশে বদলায়? সংস্কৃত প্রবাদটিকে একটু ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করা যায়, ক্রোশে-ক্রোশে বদলালেই কি ভাষা? অন্তত সংস্কৃত, আরবি, ল্যাটিন – এগুলো আইন-কানুন দিয়ে এত টাইট যে ক্রোশান্তর তো দূরের কথা, দেশান্তরেও বদলায় না।

আর-একটা কথাও তো সেই প্রায় জন্ম থেকেই শুনে আসছি – নদীর বাঁক যত, কথা তত। ওই একই মানে – বাঁকে-বাঁকে কথা বদলে-বদলে যায়।

গ্রামের নানারকমের মানুষের সঙ্গে প্রথম মেলামেশার ভিতর থেকে প্রায় তিরিশ-পঁয়তিরিশ বছর আগে আমার মনে হয়েছিল, চাষির ভাষা হাঁটে না, পাক খায়। ওই ধানভানার সময় যেমন ধান ছড়িয়ে গরু ঘোরানো হয় পাক খাইয়ে, তেমন। রোজ একই পথ বা আল ধরে একই জমিতে চাষ করতে যাওয়া, সপ্তাহে দু-বার একবার একই হাটে খরচা করতে যাওয়া, কাছের ও দূরের গাছ-গাছালি নদীনালা চিনে যাওয়া – এটা তো একটা পাক। এমন কী এ-ও দেখেছি, সে যে-হাটে যায়, প্রায় তার সমদূরত্বের আরেকটা হাটের হদিসটাই জানে না।

আরো একবার, আমি একটা নদী খুঁজছিলাম – নদী পেরিয়ে-পেরিয়ে, নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে-হেঁটে, ওই ‘বড় বাঁক’ নামের নদী খুঁজছিলাম। এক আমিই আনাড়ি, আর-সকলেই কব্রেজ। কত নদীর কত-যে নাম শুনলাম, আমার নদী আর আসে না। যে যতটুকু নদী জানে, শুধু সেটুকুই জানে। শেষে আমি রেগে গিয়ে বললাম, ‘আরে, আমার নদী না পেলে চলবে কী করে? নদী পেলে তবে তো ‘বড় বাঁক’ পেরিয়ে গোঁসাইনীর হাটে উঠব!’ শুনে সকলে মিলে সে কী হাসি! ‘রো রো রো, সেই কথাখান আগত্ কহিবেন তো? যাচ্ছেন হাটত্, গোঁসাইনীর হাটত্, আর খুঁজিবার ধইচছেন নদী! কী নদী? না? বড় বাঁক। নদীত্ কি হাট বসে? চলো কেনে – হাটও পাবেন, ঘাটও পাবেন।’

ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপজাতি ভাষাবিভাগের প্রধান ভাষাবিদ কুমুদ কুণ্ডু চৌধুরী কলকাতায় অনেকেরই চেনা। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের ছাত্র। ষাটের দশকের প্রথমার্ধে ত্রিপুরার কমিউনিস্ট নেতা দাশরথি দেবের অনুরোধে তিনি ত্রিপুরায় যান ও আদিবাসীদের মুখের ভাষা ককবরকের লিপিনির্মাণের কাজে হাত দেন। কুমুদ ত্রিপুরাতেই থেকে যান ও চল্লিশ বছর ধরে সেই কাজই করে যাচ্ছেন।

ত্রিপুরা ভারতের এতই প্রান্তীয় একটি রাজ্য ও বৈষয়িক আধুনিকতার ভারতব্যাপী অভিযান থেকে এতই বিচ্ছিন্ন যে সেখানকার বিদ্যাচর্চা ও সংস্কৃতির কোনো খবর, এমনকী, কলকাতাতেও পৌঁছায় না। একমাত্র উপজাতীয় উগ্রপন্থার খবরের জন্যই ত্রিপুরা প্রাসঙ্গিক। এর সম্ভাব্য নানা কারণের মধ্যে প্রধান দুটি আন্দাজ করা যায়। একটি কারণ – ত্রিপুরার সঙ্গে একমাত্র বাস্তব-সংযোগ প্লেনে। আসাম হয়ে চব্বিশ ঘণ্টার একটা বাস-ট্রেন পথ তাত্ত্বিকভাবে আছে – বস্তুত সেটা খুব-একটা কাজে আসে না। দ্বিতীয় কারণ – ত্রিপুরার প্রধান ভাষা বাংলা, ফলে পশ্চিম-বাংলার আধিপত্য ত্রিপুরার বাংলাভাষীদের মানতেই হয়।

অথচ, এই প্রান্তীয়তার কারণেই ত্রিপুরায় বিদ্যাচর্চা ও সংস্কৃতিচর্চা যাঁরা করেন, ভিতরের ও বাইরের অনেক প্রতিবন্ধকতা তাঁদের পেরুতে হয়। সেই বাধা-অতিক্রমণ যেমন ত্রিপুরার বুদ্ধিজীবী ও লেখকদের পেশল, প্রস্তুত ও তাজা রাখে, তেমনি প্রায় অপরিবর্তিত এক নিয়ত-প্রস্তুতির ক্লান্তিও তাঁদের প্রায় শারীরিক হয়ে ওঠে।

ভারতে অজস্র মৌলিক আদিবাসী ভাষা – গ্রিয়ারসনের হিসেব-অনুযায়ী দেড় হাজারের ওপর, – তার মধ্যে বেশকিছু ভাষাভাষী শিক্ষিত মধ্যবিত্ত হয়ে উঠেছেন। তাঁরা ইতোমধ্যে নিজেদের ভাষার স্বাতন্ত্র্য দাবি করছেন, সংবিধানের অষ্টম তালিকায় তাঁদের ভাষার জায়গা চাইছেন। কর্ণাটকের তুলি, হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ি, বিহারের মৈথিলি, লাদাক থেকে গুজরাটের গজজরি ও পশ্চিম উপকূলের কোঙ্কনি এই ভাষাগুলির মধ্যে ভাষাভাষীর জন888sport free bet ও স্তরবৈচিত্র্যের দিক থেকে প্রধান। আবার, উত্তরবঙ্গের রাঙা ও টোটো আর আন্দামানের উঙ্গি ও জারোয়া ভাষাভাষীর 888sport free bet দুই-একশ মাত্র, তা-ও কমে আসছে। আদিবাসী মৌলিক ভাষার 888sport free bet, শুনেছি, এক অরুণাচলেই নাকি ৮০-র ওপরে। কিন্তু এই তথ্য সরকারের নিরাপত্তাঘটিত গোপন তথ্য, ভাষাতাত্ত্বিকদের কাছে এখনো আসেনি।

রাজনৈতিক ক্ষমতার দিক থেকে ভাষার ব্যাপারে জনসম্মতির বদল ঘটেছে। এখন ভাষানির্ভর রাজ্যের দাবিকে বিচ্ছিন্নতাবাদ বলে সন্দেহ করা হয়। হয়তো সেটা অনেকখানি সত্যও। আবার নতুন রাজ্যও তো ভাষা-অনুযায়ী তৈরি হচ্ছে। একসময় তো ভাষাভিত্তিক রাজ্য স্বাধীনতা-আন্দোলনের কর্মসূচির অন্তর্গত ছিল। এখনকার, এমনকী বিচ্ছিন্নতাবাদী, ভাষা-আন্দোলনও কিন্তু বুঝিয়ে দেয় যে স্বাধীনতার পরে সমস্ত ভাষারই চর্চা ও বিস্তার ঘটেছে, ছোট জনসমষ্টির ভাষাও নানারকম যত্ন পেয়ে আসছে আর ভাষা-আনুগত্য ছাড়াও এক-একটি ভাষাকে তাত্ত্বিকভাবে ও মানচিত্র-অনুযায়ী বুঝে নেয়া ও মাপজোক করা বিদ্যাচর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। ভারতের মতো বহুভাষিক দেশে এমন একটা বিকাশ নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের প্রতি মূল আনুগত্যেরও প্রমাণ।

ভাষা-উপভাষা বিতর্ক এখন একটু মোড় নিচ্ছে। সেই বিতর্কের প্রধান ভিত ছিল ভাষার লিপি থাকা না-থাকা। লিপি থাকার অর্থ – সে-ভাষা লেখা হয় কী না। লেখা হলে ভাষা আর লেখা না হলে উপভাষা – এমন সরল সূত্র এখন আর মানা হচ্ছে না। ইয়োরোপে একই রোমান লিপিতে কত ভাষা। ভারতেও তো একই নাগরীলিপিতে কত ভাষা। মণিপুরের ভাষার লিপি বাংলা। কারণ মণিপুরের রাজপুরোহিত ছিলেন নবদ্বীপের এক গোঁসাই – তিনিই এটা চালু করেন। অথচ মণিপুরের ভাষার সঙ্গে বাংলার কোনোরকম আত্মীয়তা নেই। ভাষাবর্গের সেকেলে মানচিত্রেও তারা এক পরিবারভুক্ত নয়।

ভাষা-সচেতনতার এই প্রায় তিন দশকেও কোনো মৌলিক ভাষা মৌলিক লিপি-নির্মাণের দিকে যায়নি। কুমুদ কুণ্ডু চৌধুরী সারা ভারতেই সেই বিরল ভাষাতাত্ত্বিক যিনি একটি ভাষাকে লিপি-উদ্ভাবনে সাহায্য করেছেন ও সেই ভাষাকে 888sport app প্রাসঙ্গিক ভাষার সঙ্গে তুলনা করে ককবরক-ভাষার স্থানাঙ্ক নির্ণয় করেছেন। এমন একটি কাজের কথা ভারতের ভাষাচর্চার তাত্ত্বিক পরিধিতে কি তেমন করে প্রাধান্য পেয়েছে? বা, কুমুদ কুণ্ডু চৌধুরী কি ত্রিপুরার বাইরের ভারতে তাঁর সন্ধান ও আবিষ্কারের কথা তেমন প্রাধান্যের সঙ্গে বলতে পেরেছেন? মানে, ত্রিপুরার বাইরের ভারতীয় বিদ্বৎসমাজ কি সেইসব কথা শুনতে চেয়েছে?

দুই

কুমুদ কুণ্ডু চৌধুরী একটি 888sport liveে ককবরক-ত্রিপুরী-বাংলা প্রবাদের সমার্থকতা ও পার্থক্য দেখিয়েছেন তুলনীয় প্রবাদগুলিকে একসঙ্গে সাজিয়ে। প্রবাদের ভাষাচর্চা ভাষাতত্ত্বের একটি এমন নিত্যবিষয় যেখান থেকে সমাজ, ইতিহাস, ভূত্বকের গঠন, জলহাওয়া, নদীগুলির ধরন-ধারণ, পশুপাখি, গাছপালা – এইসব কিছুর কাছাকাছি যাওয়া যায়। আর জীবনধারণের নানা উপায়, কৃষির নানা স্তর ও বাড়িঘরের ভিতর থেকেই তো এ-সব প্রবাদ ছড়িয়ে পড়ে। নিশ্চয়ই কোনো কোনো প্রবাদ এমন আছে যা সব দেশে সব সময়েই সত্য। প্রবাদ তো তেমনই – একেবারে সাধারণ মানুষজনের, একটু ঠেলা-খাওয়া মানুষজনের, বিশেষ করে মেয়েদের, অভিজ্ঞতাকে সাধারণ-সত্য, জেনারালাইজেশন, বা, নিত্যসত্য, ইউনিভার্সালাইজেশনের দরকারে তৈরি হয়ে যায়। কে যে কখন তৈরি করে তা কেউ টেরও যে পায় না – সেই অজ্ঞাতপরিচয় ও অনির্দিষ্টতাই তো প্রমাণ করে সামাজিক জীবনে ওই প্রবাদের প্রয়োজনবোধ নিশ্চয়ই তৈরি হয়েছিল।

এমন নয় যে মালিকরাও তাঁদের মতো করে এমন নিত্যসত্য উচ্চারণের দিকে যান না। ‘পোয়াতির ছেলে ধরো না, হেলের হাল ধরো না, বামুনবাড়ি যেও না – ওরা খাড়া মানুষ দেখতে পারে না,’ এ যেমন মালিকদের বিরুদ্ধে বলা কথা, তেমনি ‘বামুন গেল ঘর, লাঙল তুলে ধর’, এটা হাল-চালানো চাষিদের বিরুদ্ধে মালিকের তর্জন।

একসময় প্রবাদগুলির শ্রেণিভাগ করা হতো – ভাববাদী ও বস্তুবাদী পরিচয়ে। এই বিভাজনে ভাষাতত্ত্বের একটি রাজনীতি ব্যবহার করা হতো। যে-আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রবাদে ভাববাদ খুঁজে পাওয়া যেত, ধরে নেয়া হতো, সেই ভাষাগুলি ‘উন্নত’। তাঁরা তাঁদের কথাবার্তায় বিমূর্তন ঘটাতে পারেন। আর যাঁরা তা পারেন না, তাঁরা ভাষায় ‘পেছিয়ে’ আছেন – তাঁরা শুধু তাঁদের ইন্দ্রিয়গত পরিচয়কে একটা নাম মাত্র দিতে পারেন। ঐ ‘উন্নত’ ভাষাগুলিকে তখন ইন্দো-ইরানীয়, ইন্দো-ইয়োরোপীয়, ইন্দো-আর্য – এইসব প্রতিপত্তিশীল ভাষা-পরিবারের আত্মীয়তার ঘেরে টেনে আনা যায়।

উন্নত ও অনুন্নত এই বিভাজন এখন আর ভাষার বেলায় খাটে না। সব ভাষাই একইরকম উন্নত। জীবনযাপন থেকে ভাষার কাছে যে-চাহিদা তৈরি হচ্ছে, ভাষা সে-চাহিদা পূরণ করতে পারছে কী না – এটাই একমাত্র বিবেচ্য। কিন্তু এই বিবেচনাও গণ্ডগোলে। আধুনিক সাম্রাজ্য তৈরি হতে শুরু করলে কলোনি-দেশে জীবন যার, জীবনযাপন তো আর তার হাতেই থাকল না। প্রভু-দেশ জীবনযাপনের ব্যবস্থা ও উপকরণ স্থির করে দিল। তা হলে, সেই কলোনি-দেশে তো চাহিদাগুলিই ছিল না, সুতরাং চাহিদা জানানোর ভাষাও ছিল না, চাহিদা-পূরণের জিনিসটিকে নাম দিয়ে চিনে নেবার কোনো ফাঁকই থাকল না। সেই সাত-তাড়াতাড়িতে আমরা চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, পেপার, পেন, বাস, ট্রাম, ট্রেন, স্টেশন ইত্যাদি ইত্যাদিকে স্বনামে বমাল ভাষায় ঢুকিয়ে নিলাম।

কুমুদ কুণ্ডু চৌধুরী এই ভাগাভাগি মেনেই তাঁর সংগৃহীত প্রবাদগুলিকে সাজিয়েছিলেন। সেই সংগ্রহের গুণে ও সেই প্রবাদগুলিকে প্রাসঙ্গিক বোড়ো প্রবাদের সঙ্গে তুলনার জোরে – ককবরক প্রবাদ নিয়ে তাঁর কাজ এমন অতুলনীয়। প্রবাদ 888sport app download apk latest version করা যায় না। হয়তো সেই কারণেই প্রবাদ নিয়ে সমতুল্য কাজের কথা আমি জানিই না। তবে তেমন কাজ হলে তো কোনোভাবে ইংরেজিতে আসতই। যদি কারো সাম্প্রতিক এমন কোনো কাজ জানা থাকে, আমাকে জানালে জোগাড় করে নেব। যতদিন তেমন কোনো খোঁজ না পাই, কুমুদ কুণ্ডু চৌধুরীই আমার কাছে পথিকৃৎ ও কৃতকর্মা।

কিন্তু রাষ্ট্রের সীমানা কুমুদ কুণ্ডু চৌধুরীদের পথ আটকে দিয়েছে। সে-পথ চলে গেছে বর্ডারের পুলিশের হাতে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তদারকিতে। ভারতে সত্যি-সত্যি একটা ‘বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন’, সীমান্ত সড়ক সংগঠন, আছে। তাদের কাজ প্রধানত আন্তর্জাতিক সীমান্তপথ তৈরি করা, মেরামতি করা ও দেখাশোনা করা। পথ মানে তো দূরগুলিকে জুড়ে দেয়া। কিন্তু এই বিশেষ সীমান্ত পথগুলি দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়। যেমন, কুমুদ কুণ্ডু চৌধুরী পার্বত্য ত্রিপুরায় বোড়ো প্রবাদগুলি যেমন পেয়েছেন, সেই প্রবাদের পথ তো 888sport apps-ভারতের রাষ্ট্রীয় সীমান্ত উৎরে চলে গেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম দিয়ে ব্রহ্মদেশের ভিতরে। আবার সেই একই ব্রহ্মদেশের সঙ্গে ভারতের আরেক সীমান্ত তো ইমফল ছাড়িয়ে কিছু দূরে। তা হলে, এক বোড়ো ভাষা কতগুলি সীমান্তে টুকরো হচ্ছে – 888sport appsের সঙ্গে ভারতের, 888sport appsের সঙ্গে ব্রহ্মদেশের, ভারতের সঙ্গে ব্রহ্মদেশের, ভারতের সঙ্গে 888sport appsের।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিকে নিয়ে ‘সার্ক’ তৈরি হয়েছে। তার ভিতর অবিশ্যি ব্রহ্মদেশ নেই। সার্কের দেশগুলির ভিতর রাজনীতি নিয়ে নানা অমিল আছে। তা সত্ত্বেও যে মিলগুলি খুঁজে বের করা হয়েছে এই অভিজ্ঞতা থেকে – নেপাল-ভুটানের পাহাড় থেকে নদীর বন্যা নামলে রাষ্ট্রসীমা ও রাজনীতির তফাৎ ভেসে যায়, বঙ্গোপসাগরের আকাশে নিম্নচাপ ঘন হয়ে স্থলভূমির দিকে এগোলে পারাদীপ আর ভোলা একইরকম পড়ে সেই সাইক্লোনের মুখে, ওপর-নদীতে বাঁধ দিলে নিচনদীর দেশে শুখা হয়।

সার্কের দেশগুলি যদি আবহাওয়া, বন্যা, নদীর জলবণ্টন এইসব বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারে, তাহলে ভাষা নিয়ে কেন পারবে না? মুখের ভাষা নিয়ে যাঁরা খোঁজখবর করেন, তাঁদের সীমান্ত কেন আলাদা করে দেগে দেয়া হবে না? ৎ

* এই লেখাটি কালি ও কলমের প্রথম বর্ষ নবম 888sport free betয় (অক্টোবর ২০০৪/ কার্তিক ১৪১১) প্রকাশিত হয়েছিল।